بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
কানযুল ঈমান
০. আল্লাহ্র নামে আরম্ভ, যিনি পরম দয়ালু, করুণাময় (১)
ইরফানুল কুরআন
০. আল্লাহর নামে শুরু, যিনি পরম করুণাময়, সতত অসীম দয়ালু।
الٓمَّٓ ۙ﴿۱﴾
কানযুল ঈমান
১. আলিফ লা------ম মী------ম;
ইরফানুল কুরআন
১. আলিফ, লা-ম, মীম। (প্রকৃত অর্থ আল্লাহ্ এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামই অধিক অবগত।)
اللّٰہُ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا ہُوَ ۙ الۡحَیُّ الۡقَیُّوۡمُ ؕ﴿۲﴾
কানযুল ঈমান
২. আল্লাহ্ হন, যিনি ব্যতীত কারো উপাসনা নেই, স্বয়ং জীবিত এবং অন্যান্যদেরকে অধিষ্ঠিত রাখেন।
ইরফানুল কুরআন
২. আল্লাহ্! তিনি ব্যতীত ইবাদতের যোগ্য কেউ নেই। (তিনি) চিরঞ্জীব, চিরন্তন (সমগ্র বিশ্ব-জগতকে স্বীয় কৌশলে) অধিষ্ঠিত রাখেন।
نَزَّلَ عَلَیۡکَ الۡکِتٰبَ بِالۡحَقِّ مُصَدِّقًا لِّمَا بَیۡنَ یَدَیۡہِ وَ اَنۡزَلَ التَّوۡرٰىۃَ وَ الۡاِنۡجِیۡلَ ۙ﴿۳﴾
কানযুল ঈমান
৩. তিনি আপনার উপর এ সত্য কিতাব অবতীর্ণ করেছেন, পূর্ববর্তী কিতাবাদির সমর্থনকারী এবং তিনি এর পূর্বে তাওরীত ও ইন্জীল অবতীর্ণ করেছেন।
ইরফানুল কুরআন
৩. (হে হাবীব!) তিনিই আপনার প্রতি (এ) কিতাব সত্যসহ অবতীর্ণ করেছেন, (এটি সমস্ত কিতাবের) সত্যায়নকারী যা এরপূর্বে অবতীর্ণ হয়েছিল। আর তিনিই তাওরাত এবং ইঞ্জিল (অর্থাৎ বাইবেল) অবতীর্ণ করেছিলেন।
مِنۡ قَبۡلُ ہُدًی لِّلنَّاسِ وَ اَنۡزَلَ الۡفُرۡقَانَ ۬ؕ اِنَّ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا بِاٰیٰتِ اللّٰہِ لَہُمۡ عَذَابٌ شَدِیۡدٌ ؕ وَ اللّٰہُ عَزِیۡزٌ ذُو انۡتِقَامٍ ﴿۴﴾
কানযুল ঈমান
৪. মানবজাতিকে সৎ পথ প্রদর্শনের জন্য; এবং ফয়সালা অবতারণ করেছেন। নিশ্চয় ঐ সব লোক, যারা আল্লাহ্র আয়াতসমূহকে অস্বীকারকারী হয়েছে তাদের জন্য কঠোর শাস্তি রয়েছে এবং আল্লাহ্ মহা পরাক্রমশালী, প্রতিশোধ গ্রহণকারী।
ইরফানুল কুরআন
৪. (যেভাবে) এরপূর্বে মানব জাতির হেদায়াতের জন্যে (কিতাবসমূহ অবতীর্ণ হয়েছিল) এবং (এখন, একইভাবে) তিনি সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী (কুরআন) অবতীর্ণ করেছেন। নিশ্চয়ই যারা আল্লাহ্র আয়াতসমূহ অস্বীকার করে, তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি। আর আল্লাহ্ মহাপরাক্রমশালী, দন্ডবিধায়ক।
اِنَّ اللّٰہَ لَا یَخۡفٰی عَلَیۡہِ شَیۡءٌ فِی الۡاَرۡضِ وَ لَا فِی السَّمَآءِ ؕ﴿۵﴾
কানযুল ঈমান
৫. আল্লাহ্র নিকট কিছুই গোপন নেই- যমীনের মধ্যে, না আসমানের মধ্যে।
ইরফানুল কুরআন
৫. নিশ্চয়ই আল্লাহ্র নিকট জমিন ও আসমানের কিছুই গোপন নেই।
ہُوَ الَّذِیۡ یُصَوِّرُکُمۡ فِی الۡاَرۡحَامِ کَیۡفَ یَشَآءُ ؕ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا ہُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ ﴿۶﴾
কানযুল ঈমান
৬. তিনিই হন যিনি তোমাদের আকৃতি গঠন করেন মাতৃগণের গর্ভের মধ্যে যেরূপ চান, তিনি ব্যতীত কারো ইবাদত নেই, মহা-মর্যাদাবান, প্রজ্ঞাময়।
ইরফানুল কুরআন
৬. তিনিই মাতৃগর্ভে যেভাবে ইচ্ছা তোমাদের আকৃতি গঠন করেন। তিনি ব্যতীত ইবাদতের যোগ্য কেউ নেই। (তিনি) মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাবান।
ہُوَ الَّذِیۡۤ اَنۡزَلَ عَلَیۡکَ الۡکِتٰبَ مِنۡہُ اٰیٰتٌ مُّحۡکَمٰتٌ ہُنَّ اُمُّ الۡکِتٰبِ وَ اُخَرُ مُتَشٰبِہٰتٌ ؕ فَاَمَّا الَّذِیۡنَ فِیۡ قُلُوۡبِہِمۡ زَیۡغٌ فَیَتَّبِعُوۡنَ مَا تَشَابَہَ مِنۡہُ ابۡتِغَآءَ الۡفِتۡنَۃِ وَ ابۡتِغَآءَ تَاۡوِیۡلِہٖ ۚ وَ مَا یَعۡلَمُ تَاۡوِیۡلَہٗۤ اِلَّا اللّٰہُ ۘؔ وَ الرّٰسِخُوۡنَ فِی الۡعِلۡمِ یَقُوۡلُوۡنَ اٰمَنَّا بِہٖ ۙ کُلٌّ مِّنۡ عِنۡدِ رَبِّنَا ۚ وَ مَا یَذَّکَّرُ اِلَّاۤ اُولُوا الۡاَلۡبَابِ ﴿۷﴾
কানযুল ঈমান
৭. তিনিই হন যিনি আপনার উপর এ কিতাব অবতারণ করেছেন, এ কতেক আয়াত সুস্পষ্ট অর্থবোধক; সেগুলো কিতাবের মূল এবং অন্যগুলো হচ্ছে ঐ সব আয়াত, যেগুলোর মধ্যে একাধিক অর্থের সম্ভাবনা রয়েছে। ঐসব লোক, যাদের অন্তরসমূহে বক্রতা রয়েছে, তারা একাধিক অর্থের সম্ভাবনাময় আয়াতগুলোর পেছনে পড়ে পথভ্রষ্টতা চাওয়ার ও এর ব্যাখা তালাশ করার উদ্দেশ্যে এবং এর সঠিক ব্যাখা আল্লাহ্রই জানা আছে। আর পরিপক্ক জ্ঞান-সম্পন্ন লোকেরা বলে, ‘আমরা সেটার উপর ঈমান এনেছি; সবই আমাদের রবের নিকট থেকে’ এবং উপদেশ গ্রহণ করেনা কিন্তু বোধ শক্তিসম্পন্নরা।
ইরফানুল কুরআন
৭. তিনিই আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছেন কিতাব, যার কিছু আয়াত ‘মুহ্কাম’ (বা সুদৃঢ় অর্থাৎ আক্ষরিক অর্থেই সুস্পষ্ট অর্থ ধারণকারী), এ সবগুলোই কিতাবের (বিধিবিধানের) ভিত্তি। আর অন্যগুলো ‘মুতাশাবিহ্’ (বা সাদৃশ্যপূর্ণ অর্থাৎ অর্থগতভাবে একাধিক সম্ভাবনা ও সামঞ্জস্যতা ধারণকারী)। সুতরাং যাদের অন্তরে বক্রতা রয়েছে তারা এর মধ্য থেকে কেবলমাত্র ‘মুতাশাবিহ্’-এর অনুসরণ করে (নিছক) ফিৎনা অন্বেষণের নিমিত্তে এবং মূল ভাষ্যের পরিবর্তে মনগড়া অর্থ গ্রহণের উদ্দেশ্যে। আর এর প্রকৃত উদ্দেশ্য আল্লাহ্ ছাড়া কেউই জানে না। আর যারা জ্ঞানে সুগভীর তারা বলেন, ‘আমরা এতে ঈমান আনয়ন করেছি। সমস্ত (কিতাবই) আমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ।’ আর কেবলমাত্র জ্ঞানী ও অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্নরাই উপদেশ গ্রহণ করে।
رَبَّنَا لَا تُزِغۡ قُلُوۡبَنَا بَعۡدَ اِذۡ ہَدَیۡتَنَا وَ ہَبۡ لَنَا مِنۡ لَّدُنۡکَ رَحۡمَۃً ۚ اِنَّکَ اَنۡتَ الۡوَہَّابُ ﴿۸﴾
কানযুল ঈমান
৮. হে আমাদের রব! আমাদের অন্তর বক্র করো না এরপর যে, তুমি আমাদেরকে হিদায়ত প্রদান করেছো এবং আমাদেরকে তোমার নিকট থেকে রহমত দান করো। নিশ্চয় তুমি হও মহান দাতা।
ইরফানুল কুরআন
৮. (আর আরজি পেশ করে,) ‘হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি আমাদেরকে হেদায়াতের মাধ্যমে সম্মানিত করার পর আমাদের অন্তরে বক্রতা সৃষ্টি করে দিও না। আর আমাদেরকে বিশেষ করে স্বীয় সান্নিধ্য হতে রহমত দান করো। নিশ্চয়ই তুমিই মহান দাতা।
رَبَّنَاۤ اِنَّکَ جَامِعُ النَّاسِ لِیَوۡمٍ لَّا رَیۡبَ فِیۡہِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَا یُخۡلِفُ الۡمِیۡعَادَ ﴿۹﴾
কানযুল ঈমান
৯. হে রব আমাদের! নিঃসন্দেহে তুমি সমস্ত মানুষকে একত্রে সমাবেশকারী সেদিনের জন্য, যার মধ্যে কোন সন্দেহ নেই। নিঃসন্দেহে, আল্লাহ্র প্রতিশ্রুতি পরিবর্তিত হয় না।
ইরফানুল কুরআন
৯. হে আমাদের প্রতিপালক! তুমিই সমস্ত মানুষকে সমবেত করবে সেদিন, যে দিনের ব্যাপারে কোনো সন্দেহ্ নেই। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ (স্বীয়) অঙ্গীকারের ব্যতিক্রম করেন না।’
اِنَّ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا لَنۡ تُغۡنِیَ عَنۡہُمۡ اَمۡوَالُہُمۡ وَ لَاۤ اَوۡلَادُہُمۡ مِّنَ اللّٰہِ شَیۡئًا ؕ وَ اُولٰٓئِکَ ہُمۡ وَقُوۡدُ النَّارِ ﴿ۙ۱۰﴾
কানযুল ঈমান
১০. নিশ্চয় ঐসব লোক, যারা কাফির হয়েছে, তাদের ধন-সম্পদ ও তাদের সন্তান-সন্ততি আল্লাহ্ থেকে তাদেরকে যৎসামান্যও রক্ষা করতে পারবে না এবং তারাই হচ্ছে দোযখের ইন্ধন।
ইরফানুল কুরআন
১০. নিশ্চয়ই যারা কুফরী করে তাদের ধনসম্পদ এবং তাদের সন্তান-সন্ততি আল্লাহ্র (শাস্তির) বিপক্ষে কোনোক্রমেই তাদেরকে রক্ষা করতে পারবে না। আর এরাই জাহান্নামের ইন্ধন।
کَدَاۡبِ اٰلِ فِرۡعَوۡنَ ۙ وَ الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِہِمۡ ؕ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا ۚ فَاَخَذَہُمُ اللّٰہُ بِذُنُوۡبِہِمۡ ؕ وَ اللّٰہُ شَدِیۡدُ الۡعِقَابِ ﴿۱۱﴾
কানযুল ঈমান
১১. মন ফিরআউনের অনুসারীরা ও তাদের পূর্ববর্তীদের রীতি। তারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে। অতঃপর আল্লাহ্ তাদের গুনাহ্র উপর তাদেরকে পাকড়াও করেছেন এবং আল্লাহ্র শাস্তি কঠিন।
ইরফানুল কুরআন
১১. ফেরাউন ও তাদের পূর্ববর্তী সম্প্রদায়ের কর্মপন্থার মতো তারাও আমাদের আয়াতসমূহকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছিল। সুতরাং আল্লাহ্ তাদের পাপের কারণে তাদেরকে পাকড়াও করেছিলেন। আর আল্লাহ্ শাস্তিদানে অত্যন্ত কঠোর।
قُلۡ لِّلَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا سَتُغۡلَبُوۡنَ وَ تُحۡشَرُوۡنَ اِلٰی جَہَنَّمَ ؕ وَ بِئۡسَ الۡمِہَادُ ﴿۱۲﴾
কানযুল ঈমান
১২. (হে হাবীব! আপনি) বলে দিন কাফিরদেরকে, অনতিবিলম্বে তোমরা পরাজিত হবে এবং তোমাদেরকে দোযখের দিকে হাঁকিয়ে নেওয়া হবে, আর সেটা খুবই মন্দ বিছানা।
ইরফানুল কুরআন
১২. কাফেরদেরকে বলে দিন, ‘তোমরা অচিরেই পরাজিত হবে আর তোমাদেরকে জাহান্নামের দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। আর তা খুবই নিকৃষ্ট ঠিকানা।’
قَدۡ کَانَ لَکُمۡ اٰیَۃٌ فِیۡ فِئَتَیۡنِ الۡتَقَتَا ؕ فِئَۃٌ تُقَاتِلُ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ وَ اُخۡرٰی کَافِرَۃٌ یَّرَوۡنَہُمۡ مِّثۡلَیۡہِمۡ رَاۡیَ الۡعَیۡنِ ؕ وَ اللّٰہُ یُؤَیِّدُ بِنَصۡرِہٖ مَنۡ یَّشَآءُ ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَعِبۡرَۃً لِّاُولِی الۡاَبۡصَارِ ﴿۱۳﴾
কানযুল ঈমান
১৩. নিশ্চয় তোমাদের জন্য নিদর্শন ছিলো দু’দলের মধ্যে, যারা পরষ্পর মুখোমুখি হয়েছিলো। একদল আল্লাহ্র পথে যুদ্ধ করছিলো এবং অন্যদল কাফির তাদেরকে চোখ-দেখায় নিজেদের অপেক্ষা দ্বিগুণ মনে করতো; এবং আল্লাহ্ স্বীয় সাহায্য দ্বারা শক্তি দান করেন যাকে ইচ্ছা করেন। নিশ্চয় এর মধ্যে বিবেকবানদের জন্য অবশ্যই চাক্ষুষ শিক্ষা রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
১৩. নিশ্চয়ই তোমাদের জন্যে (বদরের যুদ্ধক্ষেত্রে) দু’দলের পরস্পরে মুখোমুখি হওয়ায় রয়েছে এক নিদর্শন। এক দল (অর্থাৎ মুসলমানদের দল) আল্লাহ্র পথে (প্রতিরক্ষামূলক) যুদ্ধ করছিল এবং অপরদল ছিল (মদিনার শান্তিপ্রিয় মুসলমানগণকে আক্রমণকারী) কাফের, যারা (নিজেদের) চোখে তাদেরকে নিজেদের চেয়ে দ্বিগুণ দেখছিল। আর আল্লাহ্ নিজ সাহায্য দ্বারা যাকে ইচ্ছা শক্তি সরবরাহ করেন। অবশ্যই এ ঘটনায় অন্তর্দৃষ্টি-সম্পন্নদের জন্যে রয়েছে (গুরুত্বপূর্ণ) উপদেশ।
زُیِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ الشَّہَوٰتِ مِنَ النِّسَآءِ وَ الۡبَنِیۡنَ وَ الۡقَنَاطِیۡرِ الۡمُقَنۡطَرَۃِ مِنَ الذَّہَبِ وَ الۡفِضَّۃِ وَ الۡخَیۡلِ الۡمُسَوَّمَۃِ وَ الۡاَنۡعَامِ وَ الۡحَرۡثِ ؕ ذٰلِکَ مَتَاعُ الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا ۚ وَ اللّٰہُ عِنۡدَہٗ حُسۡنُ الۡمَاٰبِ ﴿۱۴﴾
কানযুল ঈমান
১৪. মানুষের জন্য সুশোভিত করা হয়েছে এসব প্রবৃত্তির মায়া-মহব্বত-নারীগণ, পুত্রগণ, উপরে-নীচে রাশি রাশি স্বর্ণ রৌপ্য, চিহ্নিত অশ্বরাজি, গবাদি পশু এবং ক্ষেত-খামার। এসব হচ্ছে ইহজীবনের পুঁজি এবং আল্লাহ্ হন, যাঁর নিকট উত্তম আশ্রয়স্থল রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
১৪. মানুষের জন্যে (অত্যধিক) সুশোভিত করা হয়েছে নারী, সন্তান-সন্ততি, স্বর্ণরৌপ্যের জমানো ভান্ডার, চিহ্নিত অশ্বরাজি, গবাদিপশু ও শষ্যক্ষেত্রের প্রতি আসক্তি ও মোহ। এ (সব) হলো পার্থিব জীবনের ভোগ্যসামগ্রী, আর আল্লাহ্ তা’আলার নিকট রয়েছে উৎকৃষ্ট ঠিকানা।
قُلۡ اَؤُنَبِّئُکُمۡ بِخَیۡرٍ مِّنۡ ذٰلِکُمۡ ؕ لِلَّذِیۡنَ اتَّقَوۡا عِنۡدَ رَبِّہِمۡ جَنّٰتٌ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہَا الۡاَنۡہٰرُ خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَا وَ اَزۡوَاجٌ مُّطَہَّرَۃٌ وَّ رِضۡوَانٌ مِّنَ اللّٰہِ ؕ وَ اللّٰہُ بَصِیۡرٌۢ بِالۡعِبَادِ ﴿ۚ۱۵﴾
কানযুল ঈমান
১৫. (হে হাবীব!) আপনি বলুন, আমি কি তোমাদেরকে এগুলো অপেক্ষা উৎকৃষ্টতর বস্তুর কথা বলে দেবো? খোদাভীরুদের জন্য তাদের রবের নিকট জান্নাতসমূহ রয়েছে, যেগুলোর পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত; (তারা) সেগুলোর মধ্যে স্থায়ীভাবে থাকবে এবং পবিত্র স্ত্রীগণ ও আল্লাহ্র সন্তুষ্টি (রয়েছে); আর আল্লাহ্ বান্দাদেরকে দেখেন।
ইরফানুল কুরআন
১৫. (হে হাবীব!) আপনি বলে দিন, ‘আমি কি তোমাদেরকে এসব কিছুর চেয়ে উৎকৃষ্ট বিষয়ের সংবাদ দেবো? (হ্যাঁ,) পরহেযগারদের জন্যে তাদের প্রতিপালকের নিকট রয়েছে (এমন) জান্নাত, যার তলদেশে স্রোতধারা প্রবাহিত। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে, (তাদের জন্যে) থাকবে পবিত্র স্ত্রীগণ এবং (সবচেয়ে বড় বিষয়,) আল্লাহ্র নিকট থেকে সন্তুষ্টি লাভ।’ আর আল্লাহ্ বান্দাদের সম্যক দ্রষ্টা।
اَلَّذِیۡنَ یَقُوۡلُوۡنَ رَبَّنَاۤ اِنَّنَاۤ اٰمَنَّا فَاغۡفِرۡ لَنَا ذُنُوۡبَنَا وَ قِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿ۚ۱۶﴾
কানযুল ঈমান
১৬. ঐসব লোক যারা বলে, ‘হে রব আমাদের! আমরা ঈমান এনেছি, সুতরাং আমাদের গুনাহ ক্ষমা করো এবং আমাদেরকে দোযখের শাস্তি থেকে রক্ষা করো।’
ইরফানুল কুরআন
১৬. (তারা সেসব লোক) যারা বলে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা অবশ্যই ঈমান আনয়ন করেছি, সুতরাং আমাদের গোনাহ্সমূহ ক্ষমা করে দাও এবং আমাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা করো।’
اَلصّٰبِرِیۡنَ وَ الصّٰدِقِیۡنَ وَ الۡقٰنِتِیۡنَ وَ الۡمُنۡفِقِیۡنَ وَ الۡمُسۡتَغۡفِرِیۡنَ بِالۡاَسۡحَارِ ﴿۱۷﴾
কানযুল ঈমান
১৭. ধৈর্যশীলগণ, সত্যনিষ্ঠগণ, শিষ্টগণ, আল্লাহ্র রাহে ব্যয়কারীগণ এবং রাতের শেষভাগে ক্ষমাপ্রার্থীগণ।
ইরফানুল কুরআন
১৭. (তারা) ধৈর্যশীল, কথায় ও কাজে সত্যবাদী, শিষ্টাচার ও আনুগত্যে বিনম্র, আল্লাহ্র পথে ব্যয়কারী এবং রাতের শেষ প্রহরে (জাগ্রত হয়ে) আল্লাহ্র নিকট ক্ষমা প্রার্থী।
شَہِدَ اللّٰہُ اَنَّہٗ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا ہُوَ ۙ وَ الۡمَلٰٓئِکَۃُ وَ اُولُوا الۡعِلۡمِ قَآئِمًۢا بِالۡقِسۡطِ ؕ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا ہُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ ﴿ؕ۱۸﴾
কানযুল ঈমান
১৮. আল্লাহ্ সাক্ষ্য প্রদান করেছেন যে, তিনি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই আর ফিরিশ্তাগণ এবং জ্ঞানীগণও ন্যায়নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়ে। তিনি ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত নেই, মহা মর্যাদাবান, প্রজ্ঞাময়।
ইরফানুল কুরআন
১৮. আল্লাহ্ সাক্ষ্য দেন যে, তিনি ব্যতীত ইবাদতের যোগ্য কেউ নেই; ফেরেশতাগণ এবং জ্ঞানীগণও (অধিকন্তু সাক্ষ্য দিয়েছেন যে,) তিনি সকল পরিকল্পনা ন্যায় সঙ্গত পন্থায় বাস্তবায়নকারী; তিনি ব্যতীত ইবাদতের যোগ্য কেউ নেই; তিনি মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাবান।
اِنَّ الدِّیۡنَ عِنۡدَ اللّٰہِ الۡاِسۡلَامُ ۟ وَ مَا اخۡتَلَفَ الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡکِتٰبَ اِلَّا مِنۡۢ بَعۡدِ مَا جَآءَہُمُ الۡعِلۡمُ بَغۡیًۢا بَیۡنَہُمۡ ؕ وَ مَنۡ یَّکۡفُرۡ بِاٰیٰتِ اللّٰہِ فَاِنَّ اللّٰہَ سَرِیۡعُ الۡحِسَابِ ﴿۱۹﴾
কানযুল ঈমান
১৯. নিঃসন্দেহে আল্লাহ্র নিকট ইসলামই (একমাত্র) ধর্ম; এবং পরষ্পর বিরোধে পড়েনি কিতাবীরা কিন্তু এর পরে যে, তাদের নিকট জ্ঞান এসেছে; নিজেদের অন্তরের বিদ্বেষবশতঃ; এবং যারা আল্লাহ্র আয়াতসমূহকে অস্বীকারকারী হয়, তবে নিশ্চয় আল্লাহ্ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী।
ইরফানুল কুরআন
১৯. নিশ্চয়ই ইসলাম আল্লাহ্র নিকট একমাত্র দ্বীন (ধর্ম)। আর আহলে কিতাব তাদের নিকট জ্ঞান আগমনের পর যে মতবিরোধ করেছিল তা ছিল কেবলমাত্র পারস্পরিক হিংসা ও বিদ্বেষ বশতঃ। আর কেউ আল্লাহ্র আয়াতসমূহকে অস্বীকার করলে আল্লাহ্ অবশ্যই হিসাব গ্রহণে তৎপর।
فَاِنۡ حَآجُّوۡکَ فَقُلۡ اَسۡلَمۡتُ وَجۡہِیَ لِلّٰہِ وَ مَنِ اتَّبَعَنِ ؕ وَ قُلۡ لِّلَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡکِتٰبَ وَ الۡاُمِّیّٖنَ ءَاَسۡلَمۡتُمۡ ؕ فَاِنۡ اَسۡلَمُوۡا فَقَدِ اہۡتَدَوۡا ۚ وَ اِنۡ تَوَلَّوۡا فَاِنَّمَا عَلَیۡکَ الۡبَلٰغُ ؕ وَ اللّٰہُ بَصِیۡرٌۢ بِالۡعِبَادِ ﴿۲۰﴾
কানযুল ঈমান
২০. অতঃপর হে মাহবুব! যদি তারা আপনার সাথে বিতর্কে লিপ্ত হয়, তবে বলে দিন, ‘আমি আপন চেহারা আল্লাহ্র সামনে অবনত করেছি এবং যারা আমার অনুসারী হয়েছে, আর কিতাবী সম্প্রদায় ও পড়াবিহীন লোকদেরকে বলে দিন, ‘তোমরা কি গর্দান অবনত করেছো?’ সুতরাং তারা যদি গর্দান অবনত করে থাকে, তবেই তো সঠিক পথ পেয়ে গেছে। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে (হে হাবীব!) আপনার কর্তব্য তো এই নির্দেশ পৌঁছিয়ে দেয়া মাত্র। এবং আল্লাহ্ বান্দাদেরকে দেখছেন।
ইরফানুল কুরআন
২০. (হে হাবীব!) যদি তারা পুনরায় আপনার সাথে ঝগড়ায় লিপ্ত হয় তবে বলে দিন, ‘আমি এবং যারা(ই) আমার আনুগত্য করে, আমাদের চেহারা আল্লাহ্র সমীপে অবনত করেছি’। আর আপনি আহলে কিতাব এবং নিরক্ষর লোকদেরকে বলে দিন, ‘তোমরাও কি আল্লাহ্র সমীপে অবনত হয়েছো (অর্থাৎ ইসলাম কবুল করছো)?’ অতঃপর যদি তারা আনুগত্য করে, তবে তারা বাস্তবিকই সৎপথপ্রাপ্ত হবে। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে আপনার দায়িত্ব তো কেবল নির্দেশ পৌঁছে দেয়া। আর আল্লাহ্ বান্দাদের সম্যক দ্রষ্টা।
اِنَّ الَّذِیۡنَ یَکۡفُرُوۡنَ بِاٰیٰتِ اللّٰہِ وَ یَقۡتُلُوۡنَ النَّبِیّٖنَ بِغَیۡرِ حَقٍّ ۙ وَّ یَقۡتُلُوۡنَ الَّذِیۡنَ یَاۡمُرُوۡنَ بِالۡقِسۡطِ مِنَ النَّاسِ ۙ فَبَشِّرۡہُمۡ بِعَذَابٍ اَلِیۡمٍ ﴿۲۱﴾
কানযুল ঈমান
২১. ঐসব লোক, যারা আল্লাহ্র আয়াতসমূহকে অস্বীকারকারী হয় এবং পয়গাম্বরগণকে অন্যায়ভাবে শহীদ করে, আর ন্যায়পরায়ণতার নির্দেশদাতারদেরকে হত্যা করে, তাদেরকে সুসংবাদ দিন বেদনাদায়ক শাস্তির!
ইরফানুল কুরআন
২১. অবশ্যই যারা আল্লাহ্র আয়াতসমূহকে প্রত্যাখ্যান করে, নবীগণকে অন্যায়ভাবে হত্যা করে এবং মানুষের মধ্যে যারা সুবিচার ও ন্যায়ের নির্দেশ দেয় তাদেরকে হত্যা করে, তবে তাদেরকে আপনি যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সংবাদ দিন।
اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ حَبِطَتۡ اَعۡمَالُہُمۡ فِی الدُّنۡیَا وَ الۡاٰخِرَۃِ ۫ وَ مَا لَہُمۡ مِّنۡ نّٰصِرِیۡنَ ﴿۲۲﴾
কানযুল ঈমান
২২. এসব লোক তারাই, যাদের কার্যাবলী বিনষ্ট হয়েছে দুনিয়া ও আখিরাতে এবং তাদের কোন সাহায্যকারী নেই।
ইরফানুল কুরআন
২২. তারাই সেসব লোক যাদের ইহকাল ও পরকালের (উভয় জাহানের) কার্যাবলী বিনষ্ট হয়ে গিয়েছে, আর তাদের কোনো সাহায্যকারীও থাকবে না।
اَلَمۡ تَرَ اِلَی الَّذِیۡنَ اُوۡتُوۡا نَصِیۡبًا مِّنَ الۡکِتٰبِ یُدۡعَوۡنَ اِلٰی کِتٰبِ اللّٰہِ لِیَحۡکُمَ بَیۡنَہُمۡ ثُمَّ یَتَوَلّٰی فَرِیۡقٌ مِّنۡہُمۡ وَ ہُمۡ مُّعۡرِضُوۡنَ ﴿۲۳﴾
কানযুল ঈমান
২৩. (হে হাবীব!) আপনি কি তাদেরকে দেখেন নি, যারা কিতাবের একটা অংশ প্রাপ্ত হয়েছে? আল্লাহ্র কিতাবের প্রতি আহবান করা হচ্ছে যেন সেটা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেয়, অতঃপর তাদের মধ্যেকার একটা দল তা থেকে পরান্মুখ হয়ে ফিরে যায়।
ইরফানুল কুরআন
২৩. আপনি কি তাদেরকে দেখেননি যাদেরকে কিতাবের (জ্ঞানের) কিছু অংশ প্রদান করা হয়েছিল? তাদেরকে আল্লাহ্র কিতাবের দিকে আহ্বান করা হয়েছিল যাতে তা তাদের মাঝে (বিবাদের) ফায়সালা করে দেয়; অতঃপর তাদের একদল মুখ ফিরিয়ে নেয়, আর তারাই বিচ্যুত হয়ে প্রত্যাবর্তনকারী।
ذٰلِکَ بِاَنَّہُمۡ قَالُوۡا لَنۡ تَمَسَّنَا النَّارُ اِلَّاۤ اَیَّامًا مَّعۡدُوۡدٰتٍ ۪ وَ غَرَّہُمۡ فِیۡ دِیۡنِہِمۡ مَّا کَانُوۡا یَفۡتَرُوۡنَ ﴿۲۴﴾
কানযুল ঈমান
২৪. এ দুঃসাহস তাদের এ জন্য হলো যে, তারা বলে, ‘অবশ্যই আমাদেরকে আগুন স্পর্শ করবে না, কিন্তু (হাতে গোনা) দিন কতেক’ এবং তাদের ধর্মের মধ্যে তাদেরকে ধোকা দিয়েছিলো সেই মিথ্যা, যা তারা রচনা করছিলো।
ইরফানুল কুরআন
২৪. (অবাধ্যতার সাহস) এ জন্যে যে তারা বলে, ‘মাত্র কিছুদিন ব্যতীত জাহান্নামের অগ্নি আমাদেরকে স্পর্শ করবে না’। আর তারা (আল্লাহ্র প্রতি) যে মিথ্যা অপবাদ রচনা করে, তা তাদেরকে তাদের দ্বীনের ব্যাপারে প্রবঞ্চিত করেছে।
فَکَیۡفَ اِذَا جَمَعۡنٰہُمۡ لِیَوۡمٍ لَّا رَیۡبَ فِیۡہِ ۟ وَ وُفِّیَتۡ کُلُّ نَفۡسٍ مَّا کَسَبَتۡ وَ ہُمۡ لَا یُظۡلَمُوۡنَ ﴿۲۵﴾
কানযুল ঈমান
২৫. সুতরাং কেমন হবে, যখন আমি তাদেরকে একত্রিত করবো ওই দিনের জন্য, যাতে সন্দেহ নেই এবং প্রত্যেককে তার উপার্জন পূর্ণ মাত্রায় প্রদান করা হবে; আর তাদের উপর যুলুম করা হবে না।
ইরফানুল কুরআন
২৫. সুতরাং তাদের অবস্থা কেমন হবে যখন আমরা তাদেরকে সেদিন সমবেত করবো, যেদিনের (সংঘটিত হওয়ার) ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই? আর প্রত্যেককেই তার পুরোপুরি বিনিময় দেয়া হবে (আমল হিসেবে) সে যা কিছুই উপার্জন করবে এবং তাদের প্রতি কোনো অবিচার করা হবে না।
قُلِ اللّٰہُمَّ مٰلِکَ الۡمُلۡکِ تُؤۡتِی الۡمُلۡکَ مَنۡ تَشَآءُ وَ تَنۡزِعُ الۡمُلۡکَ مِمَّنۡ تَشَآءُ ۫ وَ تُعِزُّ مَنۡ تَشَآءُ وَ تُذِلُّ مَنۡ تَشَآءُ ؕ بِیَدِکَ الۡخَیۡرُ ؕ اِنَّکَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ ﴿۲۶﴾
কানযুল ঈমান
২৬. এরূপ আরয করো, ‘হে আল্লাহ্, বিশ্ব-রাজ্যের মালিক! তুমি যাকে চাও সম্রাজ্য প্রদান করো এবং যার থেকে চাও সাম্রাজ্য ছিনিয়ে নাও। আর যাকে চাও সম্মান প্রদান করো এবং যাকে চাও লাঞ্চনা দাও। সমস্ত কল্যাণ তোমারই হাতে। নিঃসন্দেহে তুমি সব কিছু করতে পারো।
ইরফানুল কুরআন
২৬. (হে আমার হাবীব! এভাবে) আরজি পেশ করুন, ‘হে আল্লাহ্, রাজত্বের মালিক! তুমি যাকে ইচ্ছা রাজত্ব দান করো এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজত্ব ছিনিয়ে নাও; আর তুমি যাকে ইচ্ছা সম্মান দান করো এবং যাকে ইচ্ছা অপদস্ত করো। সমস্ত কল্যাণ তোমারই কুদরতী হাতে। নিশ্চয়ই তুমি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান।
تُوۡلِجُ الَّیۡلَ فِی النَّہَارِ وَ تُوۡلِجُ النَّہَارَ فِی الَّیۡلِ ۫ وَ تُخۡرِجُ الۡحَیَّ مِنَ الۡمَیِّتِ وَ تُخۡرِجُ الۡمَیِّتَ مِنَ الۡحَیِّ ۫ وَ تَرۡزُقُ مَنۡ تَشَآءُ بِغَیۡرِ حِسَابٍ ﴿۲۷﴾
কানযুল ঈমান
২৭. তুমি দিনের অংশ রাতের মধ্যে প্রবিষ্ট করো এবং রাতের অংশ দিনের মধ্যে প্রবিষ্ট করো। আর মৃত থেকে জীবিত বের করো এবং জীবিত থেকে মৃত বের করো। আর যাকে চাও অগণিত দান করো।
ইরফানুল কুরআন
২৭. তুমিই রাত্রিকে প্রবিষ্ট করাও দিবসে এবং দিবসকে প্রবিষ্ট করাও রাত্রিতে; আর তুমিই জীবন্তকে বের করো মৃত থেকে এবং মৃতকে বের করো জীবন্ত থেকে এবং যাকে ইচ্ছা (স্বীয় অনুগ্রহরাজি থেকে) অপরিসীম জীবনোপকরণ দিয়ে সৌভাগ্যবান করো।’
لَا یَتَّخِذِ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ الۡکٰفِرِیۡنَ اَوۡلِیَآءَ مِنۡ دُوۡنِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ۚ وَ مَنۡ یَّفۡعَلۡ ذٰلِکَ فَلَیۡسَ مِنَ اللّٰہِ فِیۡ شَیۡءٍ اِلَّاۤ اَنۡ تَتَّقُوۡا مِنۡہُمۡ تُقٰىۃً ؕ وَ یُحَذِّرُکُمُ اللّٰہُ نَفۡسَہٗ ؕ وَ اِلَی اللّٰہِ الۡمَصِیۡرُ ﴿۲۸﴾
কানযুল ঈমান
২৮. মুসলমান কাফিরদেরকে যেন আপন বন্ধু না বানিয়ে নেয় মুসলমানগণ ব্যতীত। আর যে ব্যক্তি এরূপ করবে, আল্লাহ্র সাথে তার কোন সম্পর্ক রইলোনা; কিন্তু এ যে, তোমরা তাদেরকে কিছুটা শঙ্কা করবে; এবং আল্লাহ্ তোমাদেরকে আপন ক্রোধ সম্পর্কে ভয় প্রদর্শন করছেন; আর আল্লাহ্রই প্রতি প্রর্ত্যাবর্তন করতে হবে।
ইরফানুল কুরআন
২৮. মুসলমানগণ যেন ঈমানদারগণকে ছেড়ে কাফেরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করে; আর যারাই এরূপ করবে তাদের সাথে আল্লাহ্র (মিত্রতার) কোনো সম্পর্ক থাকবে না, তবে ব্যতিক্রম, যদি তোমরা তাদের (অনিষ্ট) থেকে আত্মরক্ষা করতে চাও। আর আল্লাহ্ তোমাদেরকে স্বীয় সত্তার (ক্রোধের) ব্যাপারে সতর্ক করছেন। আর আল্লাহ্রই দিকে প্রত্যাবর্তন।
قُلۡ اِنۡ تُخۡفُوۡا مَا فِیۡ صُدُوۡرِکُمۡ اَوۡ تُبۡدُوۡہُ یَعۡلَمۡہُ اللّٰہُ ؕ وَ یَعۡلَمُ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الۡاَرۡضِ ؕ وَ اللّٰہُ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ ﴿۲۹﴾
কানযুল ঈমান
২৯. (হে হাবীব!) আপনি বলে দিন, ‘যদি তোমরা আপন অন্তরের কথা গোপন করো কিংবা প্রকাশ করো-আল্লাহ্ সবই জানেন; এবং জানেন যা কিছু আসমান সমূহে রয়েছে আর যা কিছু যমীনে রয়েছে; এবং প্রত্যেক কিছুর উপর আল্লাহ্র ক্ষমতা রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
২৯. বলুন: ‘তোমাদের অন্তরে যা কিছু আছে তা গোপন করো অথবা প্রকাশ করো, আল্লাহ্ তা অবগত এবং তিনি তাও সম্পূর্ণ অবগত যা কিছু আকাশমন্ডলীতে ও পৃথিবীতে রয়েছে। আর আল্লাহ্ সব কিছুর উপর সর্বময় ক্ষমতাবান।’
یَوۡمَ تَجِدُ کُلُّ نَفۡسٍ مَّا عَمِلَتۡ مِنۡ خَیۡرٍ مُّحۡضَرًا ۚۖۛ وَّ مَا عَمِلَتۡ مِنۡ سُوۡٓءٍ ۚۛ تَوَدُّ لَوۡ اَنَّ بَیۡنَہَا وَ بَیۡنَہٗۤ اَمَدًۢا بَعِیۡدًا ؕ وَ یُحَذِّرُکُمُ اللّٰہُ نَفۡسَہٗ ؕ وَ اللّٰہُ رَءُوۡفٌۢ بِالۡعِبَادِ ﴿۳۰﴾
কানযুল ঈমান
৩০. যে দিন প্রত্যেকে, যেই ভাল কাজ করেছে তা উপস্থিত পাবে এবং যে কোন মন্দ কাজ করেছে (তাও উপস্থিত পাবে), সেদিন কামনা করবে, ‘হায়! যদি আমার এবং সেটার মাঝখানে দূর ব্যবধান থাকতো!’ এবং আল্লাহ্ তোমাদেরকে আপন শাস্তি থেকে ভয় প্রদর্শন করছেন; আর আল্লাহ্ বান্দাদের প্রতি দয়ার্দ্র।
ইরফানুল কুরআন
৩০. যে দিন প্রত্যেকে (তার সামনে) সেসব পূণ্য বিদ্যমান পাবে যা সে করেছিল এবং সেসব মন্দও যা সে করেছিল; তখন সে কামনা করবে, যদি তার এবং এ মন্দের (অথবা এ দিনের) মাঝে অনেক দূর ব্যবধান হতো! আর আল্লাহ্ তোমাদেরকে স্বীয় সত্তার (ক্রোধের) ব্যাপারে সতর্ক করছেন এবং আল্লাহ্ বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত দয়াময়।
قُلۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تُحِبُّوۡنَ اللّٰہَ فَاتَّبِعُوۡنِیۡ یُحۡبِبۡکُمُ اللّٰہُ وَ یَغۡفِرۡ لَکُمۡ ذُنُوۡبَکُمۡ ؕ وَ اللّٰہُ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۳۱﴾
কানযুল ঈমান
৩১. হে মাহবুব! আপনি বলে দিন, ‘হে মানবকুল, যদি তোমরা আল্লাহ্কে ভালবেসে থাকো তবে আমার অনুসারী হয়ে যাও, আল্লাহ্ তোমাদেরকে ভালবাসেন এবং আল্লাহ্ তোমাদের গুনাহ ক্ষমা করবেন; আর আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, দয়ালু।’
ইরফানুল কুরআন
৩১. (হে হাবীব!) বলে দিন: ‘যদি তোমরা আল্লাহ্কে ভালোবাসো তবে আমাকে অনুসরণ করো, অতঃপর আল্লাহ্ তোমাদেরকে (তাঁর) প্রিয়তররূপে গ্রহণ করবেন এবং তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করবেন। আর আল্লাহ্ তা’আলা অত্যন্ত ক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু।’
قُلۡ اَطِیۡعُوا اللّٰہَ وَ الرَّسُوۡلَ ۚ فَاِنۡ تَوَلَّوۡا فَاِنَّ اللّٰہَ لَا یُحِبُّ الۡکٰفِرِیۡنَ ﴿۳۲﴾
কানযুল ঈমান
৩২. আপনি বলে দিন, ‘হুকুম মান্য করো আল্লাহ্ ও রসূলের।’ অতঃপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে আল্লাহ্ পছন্দ হয় না কাফির।
ইরফানুল কুরআন
৩২. বলে দিন, ‘আনুগত্য করো আল্লাহ্ ও রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-এঁর’; অতঃপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে আল্লাহ্ অবিশ্বাসীগণকে পছন্দ করেন না।
اِنَّ اللّٰہَ اصۡطَفٰۤی اٰدَمَ وَ نُوۡحًا وَّ اٰلَ اِبۡرٰہِیۡمَ وَ اٰلَ عِمۡرٰنَ عَلَی الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿ۙ۳۳﴾
কানযুল ঈমান
৩৩. নি:সন্দেহে আল্লাহ্ মনোনিত করেছেন আদম, নুহ, ইব্রাহীমের বংশধর এবং ইমরানের বংশধরদেরকে সমগ্র বিশ্ব-জগত থেকে।
ইরফানুল কুরআন
৩৩. অবশ্যই আল্লাহ্ (সম্মানীয় মর্যাদায়) মনোনীত করেছেন আদম (আলাইহিস সালাম)-কে, নূহ (আলাইহিস সালাম)-কে, ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)-এঁর বংশধরকে এবং ইমরান (আলাইহিস সালাম)-এঁর বংশধরকে, বিশ্ব জাহানের অধিবাসীদের উপরে।
ذُرِّیَّۃًۢ بَعۡضُہَا مِنۡۢ بَعۡضٍ ؕ وَ اللّٰہُ سَمِیۡعٌ عَلِیۡمٌ ﴿ۚ۳۴﴾
কানযুল ঈমান
৩৪. এটা একটা বংশানুক্রম, একে অপর হতে এবং আল্লাহ্ শুনেন, জানেন।
ইরফানুল কুরআন
৩৪. তারা একই বংশজাত, একে অপরের বংশধর। আর আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সম্যক অবগত।
اِذۡ قَالَتِ امۡرَاَتُ عِمۡرٰنَ رَبِّ اِنِّیۡ نَذَرۡتُ لَکَ مَا فِیۡ بَطۡنِیۡ مُحَرَّرًا فَتَقَبَّلۡ مِنِّیۡ ۚ اِنَّکَ اَنۡتَ السَّمِیۡعُ الۡعَلِیۡمُ ﴿۳۵﴾
কানযুল ঈমান
৩৫. যখন ইমরানের স্ত্রী আরয করলো, ‘হে আমার রব, আমি তোমার জন্য মান্নত করেছি যা আমার গর্ভে রয়েছে যে, একান্ত তোমারই সেবায় থাকবে। সুতরাং তুমি আমার নিকট থেকে কবুল করে নাও। নিঃসন্দেহে, তুমিই শ্রোতা, জ্ঞাতা।’
ইরফানুল কুরআন
৩৫. আর (স্মরণ করুন) যখন ইমরানের স্ত্রী আর্জি পেশ করলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমার গর্ভে যা রয়েছে, তাকে আমি (অন্যান্য দায়-দায়িত্ব থেকে) মুক্ত করে একান্ত তোমারই জন্যে মান্নত করছি, সুতরাং তুমি আমার পক্ষ থেকে (এ নযরানা) কবুল করো। নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা, সম্যক অবগত।’
فَلَمَّا وَضَعَتۡہَا قَالَتۡ رَبِّ اِنِّیۡ وَضَعۡتُہَاۤ اُنۡثٰی ؕ وَ اللّٰہُ اَعۡلَمُ بِمَا وَضَعَتۡ ؕ وَ لَیۡسَ الذَّکَرُ کَالۡاُنۡثٰی ۚ وَ اِنِّیۡ سَمَّیۡتُہَا مَرۡیَمَ وَ اِنِّیۡۤ اُعِیۡذُہَا بِکَ وَ ذُرِّیَّتَہَا مِنَ الشَّیۡطٰنِ الرَّجِیۡمِ ﴿۳۶﴾
কানযুল ঈমান
৩৬. অতঃপর যখন তাকে প্রসব করলো, তখন বললো, ‘হে রব আমার! এ’তো আমি কন্যা প্রসব করলাম।’ এবং আল্লাহ্র সম্যক জানা আছে যা সে প্রসব করেছে। আর ওই পুত্র সন্তান, যা সে চেয়েছিলো, এ কন্যা সন্তানের মতো নয়। ‘এবং আমি তার নাম মরিয়ম রাখলাম। আর তাকে এবং তার বংশধরকে তোমার আশ্রয়ে দিচ্ছি বিতাড়িত শয়তান থেকে।’
ইরফানুল কুরআন
৩৬. অতঃপর যখন তিনি কন্যা সন্তান প্রসব করলেন তখন আর্জি পেশ করলেন, ‘মাওলা! আমি তো কন্যা সন্তান প্রসব করেছি’। অথচ তিনি যা প্রসব করেছিলেন আল্লাহ্ তা অবগত ছিলেন। (তিনি বললেন,) ‘আর কোনো পুত্রসন্তান (যা আমি কামনা করেছিলাম) কখনো এ কন্যাসন্তানের মতো (হবার) নয়, (যা আল্লাহ্ দান করেছেন), আর আমি তাঁর নাম রেখেছি মারইয়াম (যার অর্থ ইবাদতকারিণী)। আর নিশ্চয় আমি তাঁকে এবং তাঁর বংশধরকে বিতাড়িত শয়তানের (অনিষ্ট) থেকে তোমার আশ্রয়ে সমর্পণ করছি।’
فَتَقَبَّلَہَا رَبُّہَا بِقَبُوۡلٍ حَسَنٍ وَّ اَنۡۢبَتَہَا نَبَاتًا حَسَنًا ۙ وَّ کَفَّلَہَا زَکَرِیَّا ۚؕ کُلَّمَا دَخَلَ عَلَیۡہَا زَکَرِیَّا الۡمِحۡرَابَ ۙ وَجَدَ عِنۡدَہَا رِزۡقًا ۚ قَالَ یٰمَرۡیَمُ اَنّٰی لَکِ ہٰذَا ؕ قَالَتۡ ہُوَ مِنۡ عِنۡدِ اللّٰہِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ یَرۡزُقُ مَنۡ یَّشَآءُ بِغَیۡرِ حِسَابٍ ﴿۳۷﴾
কানযুল ঈমান
৩৭. অতঃপর তাকে তার রব উত্তমরূপে কবূল করলেন এবং তাকে উত্তমরূপে প্রতিপালন করলেন আর তাকে যাকারিয়ার তত্ত্বাবধানে দিলেন। যখন যাকারিয়া তার নিকট তার নামায পড়ার স্থানে যেতো তখন তার নিকট নতুন রিয্ক্ব পেতো। বললো, ‘হে মরিয়ম! এটা তোমার নিকট কোত্থেকে আসলো?’ বললো, ‘সেটা আল্লাহ্র নিকট থেকে।’ নিশ্চয়, আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা অগণিত দান করেন।
ইরফানুল কুরআন
৩৭. অতঃপর তাঁর প্রতিপালক তাঁকে (অর্থাৎ মারইয়ামকে) উত্তমরূপেই গ্রহণ করলেন এবং তাঁকে উত্তমরূপে প্রতিপালন করলেন। আর দেখাশুনার জন্যে তাঁকে যাকারিয়্যা (আলাইহিস সালাম)-এঁর তত্ত্বাবধানে সমর্পণ করলেন। যখনই যাকারিয়্যা (আলাইহিস সালাম) তাঁর ইবাদতস্থলে প্রবেশ করতেন, তখনই তিনি তাঁর নিকট (নিত্য-নতুন) খাদ্যসামগ্রী বিদ্যমান পেতেন। তিনি বললেন, ‘হে মারইয়াম! এগুলো তোমার কাছে কোথা থেকে আসে?’ তিনি বললেন, ‘এ (রিযিক) আল্লাহ্র নিকট থেকে আসে। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা অগণিত রিযিক দান করেন।’
ہُنَالِکَ دَعَا زَکَرِیَّا رَبَّہٗ ۚ قَالَ رَبِّ ہَبۡ لِیۡ مِنۡ لَّدُنۡکَ ذُرِّیَّۃً طَیِّبَۃً ۚ اِنَّکَ سَمِیۡعُ الدُّعَآءِ ﴿۳۸﴾
কানযুল ঈমান
৩৮. এখানে প্রার্থনা করলো যাকরিয়া আপন রবের নিকট। আরয করলো, ‘হে রব! আমাকে তোমার নিকট থেকে প্রদান করো পবিত্র সন্তান। নিশ্চয়, তুমিই প্রার্থনা শ্রবণকারী।’
ইরফানুল কুরআন
৩৮. সেখানেই যাকারিয়্যা (আলাইহিস সালাম) স্বীয় প্রতিপালকের নিকট দোয়া করলেন। তিনি আর্জি পেশ করলেন, ‘হে মাওলা! আমাকে তোমার পক্ষ থেকে পবিত্র বংশধর দান করো। নিশ্চয়ই তুমি প্রার্থনা শ্রবণকারী।’
فَنَادَتۡہُ الۡمَلٰٓئِکَۃُ وَ ہُوَ قَآئِمٌ یُّصَلِّیۡ فِی الۡمِحۡرَابِ ۙ اَنَّ اللّٰہَ یُبَشِّرُکَ بِیَحۡیٰی مُصَدِّقًۢا بِکَلِمَۃٍ مِّنَ اللّٰہِ وَ سَیِّدًا وَّ حَصُوۡرًا وَّ نَبِیًّا مِّنَ الصّٰلِحِیۡنَ ﴿۳۹﴾
কানযুল ঈমান
৩৯. তখন ফিরিশ্তাগণ তাকে সাড়া দিলো এবং সে আপন নামাযের স্থানে দণ্ডায়মান অবস্থায় নামায পড়ছিলো, ‘নিশ্চয়, আল্লাহ্ আপনাকে সুসংবাদ দিচ্ছেন ইয়াহ্য়ার, যে আল্লাহ্র পক্ষ থেকে একটা কলেমার সত্যায়ন করবে এবং সরদার ও সব সময়ের জন্য নারীদের থেকে বিরত থাকবে এবং নবী, আমার খাস বান্দাদের মধ্য থেকে।’
ইরফানুল কুরআন
৩৯. তিনি খাস কামরায় দাঁড়িয়ে নামায পড়ছিলেন (অথবা দোয়া করছিলেন), তখন ফেরেশতাগণ তাঁকে ডাকলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্ আপনাকে (সন্তান) ইয়াহ্ইয়া (আলাইহিস সালাম)-এঁর সুসংবাদ দিচ্ছেন, যিনি হবেন আল্লাহ্র বাণীর (অর্থাৎ ঈসা আলাইহিস সালামের) সত্যায়নকারী, নেতা এবং নারীদের (আসক্তি) থেকে মুক্ত এবং (আমাদের) বিশিষ্ট পূণ্যবান বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত নবী।’
قَالَ رَبِّ اَنّٰی یَکُوۡنُ لِیۡ غُلٰمٌ وَّ قَدۡ بَلَغَنِیَ الۡکِبَرُ وَ امۡرَاَتِیۡ عَاقِرٌ ؕ قَالَ کَذٰلِکَ اللّٰہُ یَفۡعَلُ مَا یَشَآءُ ﴿۴۰﴾
কানযুল ঈমান
৪০. বললো, ‘হে আমার রব! আমার সন্তান কোত্থেকে হবে? আমার তো বার্দ্ধক্য এসে পৌঁছেছে এবং আমার স্ত্রীও বন্ধ্যা।’ এরশাদ করলেন, ‘আল্লাহ্ এভাবেই করেন, যা চান।’
ইরফানুল কুরআন
৪০. (যাকারিয়্যা আলাইহিস সালাম) আর্জি পেশ করলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! কিভাবে আমার পুত্রসন্তান হবে, যখন আমাকে বার্ধক্য পেয়ে বসেছে এবং আমার স্ত্রী(ও) বন্ধা?’ তিনি বললেন, ‘এরূপেই, আল্লাহ্ যা ইচ্ছা তা করেন।’
قَالَ رَبِّ اجۡعَلۡ لِّیۡۤ اٰیَۃً ؕ قَالَ اٰیَتُکَ اَلَّا تُکَلِّمَ النَّاسَ ثَلٰثَۃَ اَیَّامٍ اِلَّا رَمۡزًا ؕ وَ اذۡکُرۡ رَّبَّکَ کَثِیۡرًا وَّ سَبِّحۡ بِالۡعَشِیِّ وَ الۡاِبۡکَارِ ﴿۴۱﴾
কানযুল ঈমান
৪১. আরয করলেন, ‘হে আমার রব! আমার জন্য কোন নির্দশন করে দিন!’ এরশাদ করলেন, ‘তোমার নিদর্শন এই যে, তিনদিন পর্যন্ত তুমি লোকজনের সাথে কথাবার্তা বলবে না, কিন্তু ইঙ্গিতে-ইশারায় এবং আপন রবকে খুব স্মরণ করো; আর বিকেলে ও প্রভাতে তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করো।’
ইরফানুল কুরআন
৪১. (যাকারিয়্যা আলাইহিস সালাম) আর্জি পেশ করলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমার জন্যে কোনো নিদর্শন নির্ধারণ করে দিন’। আল্লাহ্ বললেন, তোমার নিদর্শন এ যে, তিন দিন তুমি মানুষের সাথে ইশারা-ইঙ্গিত ব্যতীত কথা বলতে পারবে না। আর নিজ প্রতিপালককে অধিক পরিমাণে স্মরণ করবে এবং সকাল-সন্ধ্যা তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করবে।’
وَ اِذۡ قَالَتِ الۡمَلٰٓئِکَۃُ یٰمَرۡیَمُ اِنَّ اللّٰہَ اصۡطَفٰکِ وَ طَہَّرَکِ وَ اصۡطَفٰکِ عَلٰی نِسَآءِ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۴۲﴾
কানযুল ঈমান
৪২. এবং যখন ফিরিশ্তাগণ বললো, ‘হে মরিয়ম! নিশ্চয় আল্লাহ্ তোমাকে মনোনীত করে নিয়েছেন, খুব পবিত্র করেছেন এবং আজকার সমগ্র বিশ্বের নারীদের থেকে তোমাকে মনোনীত করেছেন।’
ইরফানুল কুরআন
৪২. আর যখন ফেরেশতারা বলেছিল, ‘হে মারইয়াম! নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তোমাকে মনোনীত করেছেন, তোমাকে পবিত্রতা দান করেছেন এবং তোমাকে আজ বিশ্ব-জগতের নারীদের ঊর্ধ্বে মহিমান্বিত করেছেন।
یٰمَرۡیَمُ اقۡنُتِیۡ لِرَبِّکِ وَ اسۡجُدِیۡ وَ ارۡکَعِیۡ مَعَ الرّٰکِعِیۡنَ ﴿۴۳﴾
কানযুল ঈমান
৪৩. ‘হে মরিয়ম! স্বীয় রবের সম্মুখে আদব সহকারে দণ্ডায়মান হও এবং তাঁর জন্য সাজদা করো ও রুকু’কারীদের সাথে রুকু’ করো !’
ইরফানুল কুরআন
৪৩. হে মারইয়াম! তুমি অতিশয় বিনয়ের সাথে তোমার প্রতিপালকের ইবাদত করো, সেজদা করো এবং রুকুকারীদের সাথে রুকু করো।’
ذٰلِکَ مِنۡ اَنۡۢبَآءِ الۡغَیۡبِ نُوۡحِیۡہِ اِلَیۡکَ ؕ وَ مَا کُنۡتَ لَدَیۡہِمۡ اِذۡ یُلۡقُوۡنَ اَقۡلَامَہُمۡ اَیُّہُمۡ یَکۡفُلُ مَرۡیَمَ ۪ وَ مَا کُنۡتَ لَدَیۡہِمۡ اِذۡ یَخۡتَصِمُوۡنَ ﴿۴۴﴾
কানযুল ঈমান
৪৪. এগুলো অদৃশ্যের সংবাদ, যেগুলো আমি গোপনভাবে আপনাকে বলে থাকি এবং আপনি তাদের নিকট ছিলেন না যখন তারা তাদের কলমগুলো দ্বারা লটারী টানছিলো (এ বিষয়ে) যে, মরিয়ম কার লালন-পালনের দায়িত্বে থাকবে! আর আপনি তাদের নিকট ছিলেন না যখন তারা বাদানুবাদ করছিলো।
ইরফানুল কুরআন
৪৪. (হে প্রিয়তম!) এগুলো অদৃশ্যের সংবাদ, যা আমরা আপনার প্রতি প্রত্যাদেশ করছি। কিন্তু আপনি (সে সময়) তাদের নিকট ছিলেন না যখন তারা (লটারীর মাধ্যমে) তাদের কলম নিক্ষেপ করছিল যে, তাদের মধ্যে কে মারইয়াম (আলাইহাস সালাম)-এঁর তত্ত্বাবধান করবে; আর আপনি সে সময়ও তাদের নিকট ছিলেন না যখন তারা পরস্পরে ঝগড়া করছিল।
اِذۡ قَالَتِ الۡمَلٰٓئِکَۃُ یٰمَرۡیَمُ اِنَّ اللّٰہَ یُبَشِّرُکِ بِکَلِمَۃٍ مِّنۡہُ ٭ۖ اسۡمُہُ الۡمَسِیۡحُ عِیۡسَی ابۡنُ مَرۡیَمَ وَجِیۡہًا فِی الدُّنۡیَا وَ الۡاٰخِرَۃِ وَ مِنَ الۡمُقَرَّبِیۡنَ ﴿ۙ۴۵﴾
কানযুল ঈমান
৪৫. এবং স্মরণ করুন! যখন ফিরিশ্তারা মরিয়মকে বললো, ‘হে মরিয়ম! আল্লাহ্ তোমাকে সুসংবাদ দিচ্ছেন তাঁর নিকট থেকে একটা কলেমার, যার নাম হচ্ছে মসীহ্ ঈসা, মরিয়মের পুত্র, মর্যাদাবান হবে দুনিয়া ও আখিরাতে এবং নৈকট্যপ্রাপ্ত;
ইরফানুল কুরআন
৪৫. যখন ফেরেশতারা বললো, ‘হে মারইয়াম! নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তোমাকে নিজের পক্ষ থেকে একটি (বিশেষ) বাণীর সুসংবাদ দিচ্ছেন, যার নাম হবে ‘মারইয়াম তনয় মাসীহ্ ঈসা’ (আলাইহিমাস সালাম), তিনি হবেন (উভয় জাহান) ইহকালে ও পরকালে সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী এবং গণ্য হবেন আল্লাহ্র বিশেষ নৈকট্যপ্রাপ্ত বান্দাদের মধ্যে।
وَ یُکَلِّمُ النَّاسَ فِی الۡمَہۡدِ وَ کَہۡلًا وَّ مِنَ الصّٰلِحِیۡنَ ﴿۴۶﴾
কানযুল ঈমান
৪৬. এবং মানুষের সাথে কথা বলবে দোলনায় ও পরিপক্ক বয়সে আর খাস বান্দাদের অন্যতম হবে।
ইরফানুল কুরআন
৪৬. আর তিনি মানুষের সাথে (একইভাবে) কথা বলবেন দোলনায় এবং পূর্ণ বয়সে এবং তিনি গণ্য হবেন (আল্লাহ্র) সান্নিধ্যপ্রাপ্ত বান্দাদের মধ্যে।’
قَالَتۡ رَبِّ اَنّٰی یَکُوۡنُ لِیۡ وَلَدٌ وَّ لَمۡ یَمۡسَسۡنِیۡ بَشَرٌ ؕ قَالَ کَذٰلِکِ اللّٰہُ یَخۡلُقُ مَا یَشَآءُ ؕ اِذَا قَضٰۤی اَمۡرًا فَاِنَّمَا یَقُوۡلُ لَہٗ کُنۡ فَیَکُوۡنُ ﴿۴۷﴾
কানযুল ঈমান
৪৭. বললো, ‘হে আমার রব! আমার সন্তান কোত্থেকে হবে? আমাকে তো কোন পুরুষ স্পর্শ করেনি।’ এরশাদ করলেন, ‘আল্লাহ্ এভাবেই সৃষ্টি করেন যা ইচ্ছা করেন। যখন কোন কাজের হুকুম করেন তখন তাকে এটাই বলে থাকেন, ‘হয়ে যাও!’ সেটা তৎক্ষণাৎ হয়ে যায়।’
ইরফানুল কুরআন
৪৭. (মারইয়াম আলাইহাস সালাম) আর্জি পেশ করলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! কিভাবে আমার পুত্রসন্তান হবে, আমাকে তো কোনো পুরুষ স্পর্শ পর্যন্ত করেনি?’ তিনি বললেন, ‘এভাবেই, আল্লাহ্ যা ইচ্ছা তা সৃষ্টি করেন’। যখন তিনি কিছু (সম্পাদনের) সিদ্ধান্ত নেন, তখন একে কেবল বলেন, ‘হও’, তখন তা হয়ে যায়।
وَ یُعَلِّمُہُ الۡکِتٰبَ وَ الۡحِکۡمَۃَ وَ التَّوۡرٰىۃَ وَ الۡاِنۡجِیۡلَ ﴿ۚ۴۸﴾
কানযুল ঈমান
৪৮. ‘এবং আল্লাহ্ তাকে শিক্ষা দেবেন কিতাব, হিকমত, তাওরীত এবং ইন্জীল।
ইরফানুল কুরআন
৪৮. আর আল্লাহ্ তাঁকে (সমস্ত কিছু) শিক্ষা দেবেন, কিতাব, প্রজ্ঞা, তাওরাত ও ইঞ্জিল।
وَ رَسُوۡلًا اِلٰی بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ ۬ۙ اَنِّیۡ قَدۡ جِئۡتُکُمۡ بِاٰیَۃٍ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ ۙ اَنِّیۡۤ اَخۡلُقُ لَکُمۡ مِّنَ الطِّیۡنِ کَہَیۡـَٔۃِ الطَّیۡرِ فَاَنۡفُخُ فِیۡہِ فَیَکُوۡنُ طَیۡرًۢا بِاِذۡنِ اللّٰہِ ۚ وَ اُبۡرِیٴُ الۡاَکۡمَہَ وَ الۡاَبۡرَصَ وَ اُحۡیِ الۡمَوۡتٰی بِاِذۡنِ اللّٰہِ ۚ وَ اُنَبِّئُکُمۡ بِمَا تَاۡکُلُوۡنَ وَ مَا تَدَّخِرُوۡنَ ۙ فِیۡ بُیُوۡتِکُمۡ ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیَۃً لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ مُّؤۡمِنِیۡنَ ﴿ۚ۴۹﴾
কানযুল ঈমান
৪৯. আর রসূল হবে বনী ইস্রাইলের প্রতি, এ কথার ঘোষণা দিয়ে যে, ‘আমি তোমাদের নিকট একটা নিদর্শন নিয়ে এসেছি তোমাদের রবের পক্ষ থেকে যে, আমি তোমাদের জন্য মাটি দ্বারা পাখী সদৃশ আকৃতি গঠন করে থাকি, অতঃপর সেটার মধ্যে ফুৎকার করি। তখন সেটা তৎক্ষণাৎ পাখী হয়ে যায় আল্লাহ্র নির্দেশে এবং আমি নিরাময় করি জন্মান্ধ ও সাদা দাগসম্পন্ন (কুষ্ঠ রোগী)-কে আর আমি মৃতকে জীবিত করি আল্লাহ্র নির্দেশে; এবং তোমাদেরকে বলে দিই, যা তোমরা আহার করো আর যা নিজ নিজ ঘরে জমা করে রাখো। নিশ্চয়ই এসব কথার মধ্যে তোমাদের জন্য মহান নিদর্শন রয়েছে যদি তোমরা ঈমান রাখো।
ইরফানুল কুরআন
৪৯. আর তিনি হবেন বনী ইসরাঈলের জন্যে প্রেরিত রাসূল, (তাদেরকে বলবেন,) ‘নিশ্চয়ই আমি তোমাদের নিকট তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে এক নিদর্শন নিয়ে এসেছি। আমি তোমাদের জন্যে কাঁদামাটি দ্বারা পাখির আকৃতির ন্যায় (একটি পুতুল) তৈরী করবো; অতঃপর আমি তাতে ফুঁক দেবো, ফলে তা আল্লাহ্র নির্দেশে তৎক্ষণাৎ পাখি হয়ে উড়তে সক্ষম হবে। আর আমি জন্মগতভাবে অন্ধ ও কুষ্ঠরোগীকে সুস্থ করে তুলবো, আল্লাহ্র নির্দেশে মৃতকে জীবিত করবো এবং তোমাদেরকে (সবকিছু) অবহিত করবো যা কিছু তোমরা আহার করো এবং যা কিছু তোমরা তোমাদের গৃহে জমা করে রাখো। নিশ্চয়ই এতে তোমাদের জন্যে রয়েছে নিদর্শন, যদি তোমরা ঈমান রাখো।
وَ مُصَدِّقًا لِّمَا بَیۡنَ یَدَیَّ مِنَ التَّوۡرٰىۃِ وَ لِاُحِلَّ لَکُمۡ بَعۡضَ الَّذِیۡ حُرِّمَ عَلَیۡکُمۡ وَ جِئۡتُکُمۡ بِاٰیَۃٍ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ ۟ فَاتَّقُوا اللّٰہَ وَ اَطِیۡعُوۡنِ ﴿۵۰﴾
কানযুল ঈমান
৫০. এবং সত্যায়নকারীরুপে এসেছি আমার পূর্বেকার কিতাব তাওরীতের, আর এ জন্য যে, হালাল করবো তোমাদের জন্য এমন কিছু বস্তুকে যেগুলো তোমাদের ওপর হারাম ছিল এবং আমি তোমাদের নিকট তোমাদের রবের নিকট থেকে নিদর্শন নিয়ে এসেছি। সুতরাং আল্লাহ্কে ভয় করো এবং আমার হুকুম মান্য করো!
ইরফানুল কুরআন
৫০. আর আমি আমার পূর্বে অবতীর্ণ (কিতাব) তাওরাতের সত্যায়নকারী এবং তা এ জন্যে, যাতে তোমাদের জন্যে বিশেষ কিছু বস্তু বৈধ করি যা তোমাদের জন্যে অবৈধ করা হয়েছিল। আর আমি তোমাদের নিকট আগমন করেছি তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে নিদর্শন নিয়ে। সুতরাং আল্লাহ্কে ভয় করো এবং আমার আনুগত্য করো।
اِنَّ اللّٰہَ رَبِّیۡ وَ رَبُّکُمۡ فَاعۡبُدُوۡہُ ؕ ہٰذَا صِرَاطٌ مُّسۡتَقِیۡمٌ ﴿۵۱﴾
কানযুল ঈমান
৫১. নিশ্চয় আমার ও তোমাদের সবার রব হচ্ছেন আল্লাহ্। সুতরাং তাঁরই ইবাদত করো। এটাই হচ্ছে সোজা পথ।’
ইরফানুল কুরআন
৫১. নিশ্চয়ই আল্লাহ্ আমার প্রতিপালক এবং (তিনি) তোমাদেরও প্রতিপালক, কাজেই তাঁরই ইবাদত করো, এটিই সরল পথ।’
فَلَمَّاۤ اَحَسَّ عِیۡسٰی مِنۡہُمُ الۡکُفۡرَ قَالَ مَنۡ اَنۡصَارِیۡۤ اِلَی اللّٰہِ ؕ قَالَ الۡحَوَارِیُّوۡنَ نَحۡنُ اَنۡصَارُ اللّٰہِ ۚ اٰمَنَّا بِاللّٰہِ ۚ وَ اشۡہَدۡ بِاَنَّا مُسۡلِمُوۡنَ ﴿۵۲﴾
কানযুল ঈমান
৫২. অতঃপর যখন ঈসা তাদের মধ্যে কুফর পেলো তখন বললো, ‘কারা আমার সাহায্যকারী আল্লাহ্র প্রতি?’ সাহায্যকারীরা (হাওয়ারী) বললো, ‘আমরা খোদার দ্বীনের সাহায্যকারী। আমরা আল্লাহ্র উপর ঈমান এনেছি এবং আপনি সাক্ষী থাকুন যে, আমরা মুসলমান।’
ইরফানুল কুরআন
৫২. অতঃপর যখন ঈসা (আলাইহিস সালাম) তাদের অবিশ্বাস অনুভব করলেন তখন তিনি বললেন, ‘আল্লাহ্র পথে কে আমার সাহায্যকারী হবে?’ তখন তাঁর একনিষ্ঠ সঙ্গীগণ বললো, ‘আমরা আল্লাহ্র (দ্বীনের) সাহায্যকারী। আমরা আল্লাহ্র প্রতি ঈমান আনয়ন করেছি এবং আপনি সাক্ষী থাকুন যে, আমরা অবশ্যই আত্মসমর্পণকারী।
رَبَّنَاۤ اٰمَنَّا بِمَاۤ اَنۡزَلۡتَ وَ اتَّبَعۡنَا الرَّسُوۡلَ فَاکۡتُبۡنَا مَعَ الشّٰہِدِیۡنَ ﴿۵۳﴾
কানযুল ঈমান
৫৩. হে আমাদের রব! আমরা সেটার উপর ঈমান এনেছি, যা তুমি অবতারণ করেছো এবং রসূলের অনুসারী হয়েছি। সুতরাং আমাদেরকে সত্যের পক্ষে সাক্ষ্য প্রদানকারীদের মধ্যে লিপিবদ্ধ করো।’
ইরফানুল কুরআন
৫৩. হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা সেসব কিতাবের প্রতি ঈমান আনয়ন করেছি, যা তুমি অবতীর্ণ করেছো এবং আমরা এ রাসূলের আনুগত্য করেছি; সুতরাং আমাদেরকে (সত্যের) সাক্ষ্য বহনকারীদের সাথে লিপিবদ্ধ করো।’
وَ مَکَرُوۡا وَ مَکَرَ اللّٰہُ ؕ وَ اللّٰہُ خَیۡرُ الۡمٰکِرِیۡنَ ﴿۵۴﴾
কানযুল ঈমান
৫৪. এবং কাফিররা প্রতারণা করেছে আর আল্লাহ্ তাদেরকে ধ্বংস করার গোপন কৌশল অবলম্বন করেছেন এবং আল্লাহ্ সর্বাপেক্ষা উত্তম গোপন তদ্বীরকারী।
ইরফানুল কুরআন
৫৪. অতঃপর (ইহুদী) কাফেরেরা (ঈসা আলাইহিস সালামকে হত্যার) গোপন ষড়যন্ত্র করলো আর আল্লাহ্ও (ঈসা আলাইহিস সালামকে রক্ষার জন্যে) প্রচ্ছন্ন পরিকল্পনা করলেন। আল্লাহ্ সবচেয়ে উত্তম প্রচ্ছন্ন পরিকল্পনাকারী।
اِذۡ قَالَ اللّٰہُ یٰعِیۡسٰۤی اِنِّیۡ مُتَوَفِّیۡکَ وَ رَافِعُکَ اِلَیَّ وَ مُطَہِّرُکَ مِنَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا وَ جَاعِلُ الَّذِیۡنَ اتَّبَعُوۡکَ فَوۡقَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡۤا اِلٰی یَوۡمِ الۡقِیٰمَۃِ ۚ ثُمَّ اِلَیَّ مَرۡجِعُکُمۡ فَاَحۡکُمُ بَیۡنَکُمۡ فِیۡمَا کُنۡتُمۡ فِیۡہِ تَخۡتَلِفُوۡنَ ﴿۵۵﴾
কানযুল ঈমান
৫৫. স্মরণ করুন! যখন আল্লাহ্ বলেন, ‘হে ঈসা! আমি তোমাকে পরিপূর্ণ বয়সে পৌঁছাবো, আমার প্রতি তোমাকে উঠিয়ে নেবো, তোমাকে কাফিরদের থেকে পবিত্র করে দেবো এবং তোমার অনুসারীদেরকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত তোমার অস্বীকারকারীদের উপর বিজয় দান করবো।’ অতঃপর তোমরা সবাই আমার প্রতি ফিরে আসবে। অতঃপর আমি তোমাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেবো যে বিষয়ে তোমরা মতবিরোধ করছো।
ইরফানুল কুরআন
৫৫. যখন আল্লাহ্ বললেন, ‘হে ঈসা! নিশ্চয়ই আমি তোমাকে পূর্ণ বয়সে পৌঁছাবো, তোমাকে আমার নিকট (আকাশে) তুলে নেবো, তোমাকে কাফেরদের থেকে রক্ষা করবো এবং তোমার অনুসারীদেরকে কিয়ামত পর্যন্ত (এসব) কাফেরদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করবো। অতঃপর আমারই দিকে তোমাদের প্রত্যাবর্তন, সুতরাং আমি তোমাদের মাঝে সে বিষয়ে মীমাংসা করবো যে বিষয়ে তোমরা মতোভেদ করতে।’
فَاَمَّا الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا فَاُعَذِّبُہُمۡ عَذَابًا شَدِیۡدًا فِی الدُّنۡیَا وَ الۡاٰخِرَۃِ ۫ وَ مَا لَہُمۡ مِّنۡ نّٰصِرِیۡنَ ﴿۵۶﴾
কানযুল ঈমান
৫৬. অতঃপর ঐসব লোক, যারা কাফির হয়েছে, আমি তাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতে কঠিন শাস্তি প্রদান করবো এবং তাদের কোন সাহায্যকারী হবে না।
ইরফানুল কুরআন
৫৬. অতঃপর যারা সত্য প্রত্যাখ্যান করেছে তাদেরকে ইহকালে ও পরকালে (উভয় স্থানে) কঠোর শাস্তি প্রদান করবো, আর তাদের কোনো সাহায্যকারী থাকবে না।
وَ اَمَّا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ فَیُوَفِّیۡہِمۡ اُجُوۡرَہُمۡ ؕ وَ اللّٰہُ لَا یُحِبُّ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۵۷﴾
কানযুল ঈমান
৫৭. এবং ঐসব লোক, যারা ঈমান এনেছে ও সৎ কাজ করেছে, আল্লাহ্ তাদের প্রতিদান তাদেরকে পূর্ণমাত্রায় প্রদান করবেন, আর অত্যাচারীদেরকে আল্লাহ্ পছন্দ করেন না।
ইরফানুল কুরআন
৫৭. আর যারা ঈমান আনয়ন করেছে এবং সৎকর্ম করেছে, (আল্লাহ্) তাদেরকে তাদের পরিপূর্ণ প্রতিদান দেবেন। আর আল্লাহ্ যালিমদেরকে পছন্দ করেন না।
ذٰلِکَ نَتۡلُوۡہُ عَلَیۡکَ مِنَ الۡاٰیٰتِ وَ الذِّکۡرِ الۡحَکِیۡمِ ﴿۵۸﴾
কানযুল ঈমান
৫৮. এটা আমি তোমাদের উপর পাঠ করছি-কিছু সংখ্যক আয়াত এবং প্রজ্ঞাময় উপদেশ।
ইরফানুল কুরআন
৫৮. এগুলো, যা আমরা আপনাকে পাঠ করে শুনাচ্ছি, (তা) নিদর্শন এবং প্রজ্ঞাপূর্ণ উপদেশ।
اِنَّ مَثَلَ عِیۡسٰی عِنۡدَ اللّٰہِ کَمَثَلِ اٰدَمَ ؕ خَلَقَہٗ مِنۡ تُرَابٍ ثُمَّ قَالَ لَہٗ کُنۡ فَیَکُوۡنُ ﴿۵۹﴾
কানযুল ঈমান
৫৯. ঈসার দৃষ্টান্ত আল্লাহ্র নিকট আদমের ন্যায়। তাকে মাটি হতে তৈরী করেছেন। অতঃপর বললেন, ‘হয়ে যাও!’ তৎক্ষণাৎ সে হয়ে যায়।
ইরফানুল কুরআন
৫৯. নিশ্চয়ই আল্লাহ্র নিকট ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এঁর দৃষ্টান্ত আদম (আলাইহিস সালাম)-এঁর ন্যায়, যাঁকে তিনি মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর (তাকে) বলেছিলেন, ‘হও’, ফলে তিনি হয়ে গেলেন।
اَلۡحَقُّ مِنۡ رَّبِّکَ فَلَا تَکُنۡ مِّنَ الۡمُمۡتَرِیۡنَ ﴿۶۰﴾
কানযুল ঈমান
৬০. হে শ্রোতা! এটা তোমার রবের পক্ষ থেকে সত্য। কাজেই, তুমি সংশয়কারীদের অন্তর্ভূক্ত হয়ো না।
ইরফানুল কুরআন
৬০. (উম্মতের সতর্কতার জন্যে বললেন,) ‘এটি তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে সত্য, সুতরাং সন্দেহ পোষণকারীগণের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।’
فَمَنۡ حَآجَّکَ فِیۡہِ مِنۡۢ بَعۡدِ مَا جَآءَکَ مِنَ الۡعِلۡمِ فَقُلۡ تَعَالَوۡا نَدۡعُ اَبۡنَآءَنَا وَ اَبۡنَآءَکُمۡ وَ نِسَآءَنَا وَ نِسَآءَکُمۡ وَ اَنۡفُسَنَا وَ اَنۡفُسَکُمۡ ۟ ثُمَّ نَبۡتَہِلۡ فَنَجۡعَلۡ لَّعۡنَتَ اللّٰہِ عَلَی الۡکٰذِبِیۡنَ ﴿۶۱﴾
কানযুল ঈমান
৬১. অতঃপর, হে মাহবুব! যে ব্যক্তি আপনার সাথে ঈসা সম্পর্কে বিতর্ক করে এর পরে যে, আপনার নিকট জ্ঞান (ওহী) এসেছে, তবে তাদেরকে বলে দিন, ‘এসো, আমরা ডেকে নিই আমাদের পুত্রদেরকে ও তোমাদের পুত্রদেরকে এবং আমাদের নারীদেরকে ও তোমাদের নারীদেরকে এবং আমাদের নিজেদেরকে ও তোমাদের নিজেদেরকে! অতঃপর ‘মুবাহালাহ্’ করি। তারপর মিথ্যাবাদীদের উপর আল্লাহ্র লা’নত দিই।’
ইরফানুল কুরআন
৬১. অতঃপর আপনার নিকট জ্ঞান আসার পর যে কেউ ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এঁর ব্যাপারে আপনার সাথে তর্ক করে, আপনি বলে দিন, ‘আসো, আমরা (সমবেতভাবে) আহ্বান করি আমাদের পুত্রগণকে এবং তোমাদের পুত্রগণকে, আমাদের নারীগণকে এবং তোমাদের নারীগণকে, আমাদের নিজেদেরকে এবং তোমাদের নিজেদেরকে; অতঃপর আমরা ‘মুবাহালা’ (অর্থাৎ বিনীতভাবে দোয়া) করি এবং মিথ্যাবাদীদের উপর আল্লাহ্র অভিসম্পাত কামনা করি।’
اِنَّ ہٰذَا لَہُوَ الۡقَصَصُ الۡحَقُّ ۚ وَ مَا مِنۡ اِلٰہٍ اِلَّا اللّٰہُ ؕ وَ اِنَّ اللّٰہَ لَہُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ ﴿۶۲﴾
কানযুল ঈমান
৬২. নিঃসন্দেহে এটাই সত্য বর্ণনা এবং আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই। আর নিশ্চয় আল্লাহ্ই পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
ইরফানুল কুরআন
৬২. নিশ্চয়ই এটিই সত্য বর্ণনা, আর আল্লাহ্ ব্যতীত ইবাদতের যোগ্য কেউই নেই। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ই মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাবান।
فَاِنۡ تَوَلَّوۡا فَاِنَّ اللّٰہَ عَلِیۡمٌۢ بِالۡمُفۡسِدِیۡنَ ﴿۶۳﴾
কানযুল ঈমান
৬৩. অতঃপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে আল্লাহ্ ফ্যাসাদকারীদের সম্পর্কে জানেন।
ইরফানুল কুরআন
৬৩. এরপরেও যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে অবশ্যই আল্লাহ্ বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত।
قُلۡ یٰۤاَہۡلَ الۡکِتٰبِ تَعَالَوۡا اِلٰی کَلِمَۃٍ سَوَآءٍۢ بَیۡنَنَا وَ بَیۡنَکُمۡ اَلَّا نَعۡبُدَ اِلَّا اللّٰہَ وَ لَا نُشۡرِکَ بِہٖ شَیۡئًا وَّ لَا یَتَّخِذَ بَعۡضُنَا بَعۡضًا اَرۡبَابًا مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ ؕ فَاِنۡ تَوَلَّوۡا فَقُوۡلُوا اشۡہَدُوۡا بِاَنَّا مُسۡلِمُوۡنَ ﴿۶۴﴾
কানযুল ঈমান
৬৪. (হে হাবীব!) আপনি বলুন! ‘হে কিতাবীরা! এমন কলেমার প্রতি এসো, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে এক সমান। (তা) এই যে, আমরা যেন ইবাদত না করি কিন্তু আল্লাহ্রই এবং কাউকেও তাঁর শরীক না করি আর আমাদের মধ্যে কেউ অপরকে রবও না বানিয়ে নিই, আল্লাহ্ ব্যতীত।’ অতঃপর যদি তারা না মানে, তবে বলে দাও, ‘তোমরা সাক্ষী থাকো যে, আমরা মুসলমান।’
ইরফানুল কুরআন
৬৪. আপনি বলুন, ‘হে আহলে কিতাব! তোমরা সে কথায় আসো যা আমাদের এবং তোমাদের মাঝে অভিন্ন (তা এই) যে, আমরা আল্লাহ্ ব্যতীত কারো ইবাদত করবো না, তাঁর সাথে কোনো কিছুকেই শরীক করবো না এবং আমাদের কেউ আল্লাহ্ ব্যতীত একে অপরকে প্রতিপালকরূপে গ্রহণ করবো না।’ অতঃপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে বলে দিন, ‘সাক্ষী থাকো, আমরা তো আল্লাহ্র নির্দেশের অনুগামী (মুসলমান)।’
یٰۤاَہۡلَ الۡکِتٰبِ لِمَ تُحَآجُّوۡنَ فِیۡۤ اِبۡرٰہِیۡمَ وَ مَاۤ اُنۡزِلَتِ التَّوۡرٰىۃُ وَ الۡاِنۡجِیۡلُ اِلَّا مِنۡۢ بَعۡدِہٖ ؕ اَفَلَا تَعۡقِلُوۡنَ ﴿۶۵﴾
কানযুল ঈমান
৬৫. হে কিতাবীরা! ইব্রাহীম সম্পর্কে কেন ঝগড়া করছো? তাওরীত ও ইন্জীলতো অবতীর্ণ হয়নি, কিন্তু তাঁর পরে। সুতরাং তোমাদের কি বিবেক নেই?
ইরফানুল কুরআন
৬৫. হে আহলে কিতাব! তোমরা ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)-এঁর ব্যাপারে কেন তর্ক করছো (অর্থাৎ তাঁকে কেন ইহুদী কিংবা খ্রিস্টান ধরে নিচ্ছ) অথচ তাওরাত ও ইঞ্জিল (যেগুলোর উপর তোমাদের উভয়ের ধর্মের ভিত্তি সেগুলো) তো তাঁর পরেই অবতীর্ণ হয়েছিল। তোমরা কি (এটুকু) জ্ঞানও রাখো না?
ہٰۤاَنۡتُمۡ ہٰۤؤُلَآءِ حَاجَجۡتُمۡ فِیۡمَا لَکُمۡ بِہٖ عِلۡمٌ فَلِمَ تُحَآجُّوۡنَ فِیۡمَا لَیۡسَ لَکُمۡ بِہٖ عِلۡمٌ ؕ وَ اللّٰہُ یَعۡلَمُ وَ اَنۡتُمۡ لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۶۶﴾
কানযুল ঈমান
৬৬. শুনছো, এ যে তোমরা! সেই বিষয়ে ঝগড়া করেছো, যার সম্পর্কে তোমাদের জ্ঞান ছিলো। সুতরাং সে বিষয়ে কেন ঝগড়া করছো, যে বিষয়ে তোমাদের জ্ঞান নেই? এবং আল্লাহ্ জানেন আর তোমরা জানো না।
ইরফানুল কুরআন
৬৬. শুনে রাখো! তোমরাই সেসব বিষয়ে বাদানুবাদ করছো যে বিষয়ে তোমাদের জ্ঞান (যতসামান্য); কিন্তু এসব বিষয়ে তোমরা কেন বাদানুবাদ করছো যে বিষয়ে তোমাদের (আদৌ) কোনো জ্ঞানই নেই? আর আল্লাহ্ জ্ঞাত আছেন এবং তোমরা জ্ঞাত নও।
مَا کَانَ اِبۡرٰہِیۡمُ یَہُوۡدِیًّا وَّ لَا نَصۡرَانِیًّا وَّ لٰکِنۡ کَانَ حَنِیۡفًا مُّسۡلِمًا ؕ وَ مَا کَانَ مِنَ الۡمُشۡرِکِیۡنَ ﴿۶۷﴾
কানযুল ঈমান
৬৭. ইব্রাহীম না ইহুদি ছিলেন, এবং না খৃষ্টান; বরং প্রত্যেক বাতিল থেকে আলাদা, মুসলমান ছিলেন এবং অংশীবাদীদের অর্ন্তভূক্ত ছিলেন না।
ইরফানুল কুরআন
৬৭. ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) ইহুদীও ছিলেন না এবং খ্রিস্টানও ছিলেন না, তিনি ছিলেন সকল মিথ্যা থেকে পৃথক (একনিষ্ঠ) আত্মসমর্পণকারী। আর তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না।
اِنَّ اَوۡلَی النَّاسِ بِاِبۡرٰہِیۡمَ لَلَّذِیۡنَ اتَّبَعُوۡہُ وَ ہٰذَا النَّبِیُّ وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا ؕ وَ اللّٰہُ وَلِیُّ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۶۸﴾
কানযুল ঈমান
৬৮. নিশ্চয় সমস্ত লোকের মধ্যে ইব্রাহীমের অধিকতর হকদার তারাই ছিলো, যারা তাঁর অনুসারী হয়েছিলো এবং এ নবী ও ঈমানদারগণ। আর ঈমানদারদের অভিভাবক হচ্ছেন আল্লাহ্।
ইরফানুল কুরআন
৬৮. নিশ্চয়ই মানুষের মাঝে তো তারাই ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)-এঁর নিকটতর (এবং ঘনিষ্ঠতর) যারা তাঁর দ্বীনের অনুসারী, আর (তারা) এ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) এবং (তাঁর প্রতি) ঈমান আনয়নকারীগণ। আর আল্লাহ্ ঈমানদারগণের সাহায্যকারী।
وَدَّتۡ طَّآئِفَۃٌ مِّنۡ اَہۡلِ الۡکِتٰبِ لَوۡ یُضِلُّوۡنَکُمۡ ؕ وَ مَا یُضِلُّوۡنَ اِلَّاۤ اَنۡفُسَہُمۡ وَ مَا یَشۡعُرُوۡنَ ﴿۶۹﴾
কানযুল ঈমান
৬৯. কিতাবীদের একটা দল আন্তরিকভাবে এ কামনা করে যে, যে কোন প্রকারে তোমাদেরকে পথভ্রষ্ট করে ছাড়বে। আর তারা নিজেরাই নিজেদেরকে পথভ্রষ্ট করে এবং তাদের অনুভূতি নেই।
ইরফানুল কুরআন
৬৯. (হে মুসলমানগণ!) আহলে কিতাবের একটি দল তোমাদেরকে বিপথগামী করার (তীব্র) বাসনা পোষণ করে; অথচ তারা কেবল তাদের নিজেদেরকেই বিপথগামী করে। কিন্তু তারা তা উপলব্ধি করে না।
یٰۤاَہۡلَ الۡکِتٰبِ لِمَ تَکۡفُرُوۡنَ بِاٰیٰتِ اللّٰہِ وَ اَنۡتُمۡ تَشۡہَدُوۡنَ ﴿۷۰﴾
কানযুল ঈমান
৭০. হে কিতাবীরা! আল্লাহ্র আয়াতসমূহের সাথে কেন কুফর করছো; অথচ তোমরা নিজেরাই হলে সাক্ষী?
ইরফানুল কুরআন
৭০. হে আহলে কিতাব! তোমরা কেন আল্লাহ্র আয়াতসমূহকে অস্বীকার করছো, যখন তোমরা নিজেরাই সাক্ষ্য বহন করো (অর্থাৎ তোমরা নিজেদের কিতাবসমূহে সবকিছু পাঠ করেছো)?
یٰۤاَہۡلَ الۡکِتٰبِ لِمَ تَلۡبِسُوۡنَ الۡحَقَّ بِالۡبَاطِلِ وَ تَکۡتُمُوۡنَ الۡحَقَّ وَ اَنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۷۱﴾
কানযুল ঈমান
৭১. হে কিতাবীরা! সত্যের সাথে বাতিলকে কেন মিশ্রিত করছো এবং সত্যকে কেন গোপন করছো; অথচ তোমাদের জানা আছে?
ইরফানুল কুরআন
৭১. হে আহলে কিতাব! তোমরা কেন সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করছো এবং সত্য গোপন করছো, যখন তোমরা জানো?
وَ قَالَتۡ طَّآئِفَۃٌ مِّنۡ اَہۡلِ الۡکِتٰبِ اٰمِنُوۡا بِالَّذِیۡۤ اُنۡزِلَ عَلَی الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَجۡہَ النَّہَارِ وَ اکۡفُرُوۡۤا اٰخِرَہٗ لَعَلَّہُمۡ یَرۡجِعُوۡنَ ﴿ۚۖ۷۲﴾
কানযুল ঈমান
৭২. এবং কিতাবীদের একটা দল বললো, ‘যা ঈমানদারের উপর অবতীর্ণ হয়েছে, সকালে সেটার উপর ঈমান আনো এবং সন্ধ্যার অস্বীকারকারী হয়ে যাও; হয়ত তারা ফিরে যাবে।
ইরফানুল কুরআন
৭২. আর আহলে কিতাবের একদল (লোকজনকে) বলে, ‘মুসলমানদের প্রতি যে কিতাব (কুরআন) অবতীর্ণ হয়েছে তোমরা তাতে দিনের প্রতূষ্যে ঈমান আনয়ন করো এবং সন্ধায় তা প্রত্যাখ্যান করো, যাতে (তোমাদের দেখাদেখি) তারাও ফিরে যায়।
وَ لَا تُؤۡمِنُوۡۤا اِلَّا لِمَنۡ تَبِعَ دِیۡنَکُمۡ ؕ قُلۡ اِنَّ الۡہُدٰی ہُدَی اللّٰہِ ۙ اَنۡ یُّؤۡتٰۤی اَحَدٌ مِّثۡلَ مَاۤ اُوۡتِیۡتُمۡ اَوۡ یُحَآجُّوۡکُمۡ عِنۡدَ رَبِّکُمۡ ؕ قُلۡ اِنَّ الۡفَضۡلَ بِیَدِ اللّٰہِ ۚ یُؤۡتِیۡہِ مَنۡ یَّشَآءُ ؕ وَ اللّٰہُ وَاسِعٌ عَلِیۡمٌ ﴿ۚۙ۷۳﴾
কানযুল ঈমান
৭৩. এবং বিশ্বাস করো না, কিন্তু তাকে, যে তোমাদের ধর্মের অনুসারী হবে।’ (হে হাবীব!) আপনি বলুন, ‘আল্লাহ্র হিদায়তই হিদায়ত।’ (বিশ্বাস কিছুতেই করো না) এতে যে, কাউকে প্রদান করা হবে যেমন তোমাদেরকে প্রদান করা হয়েছে কিংবা কেউ তোমাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ দাঁড় করাতে পারবে তোমাদের রবের নিকট।’ আপনি বলে দিন, ‘অনুগ্রহ তো আল্লাহ্রই হাতে; যাকে চান প্রদান করেন। আর প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।
ইরফানুল কুরআন
৭৩. আর যারা তোমাদের দ্বীনের অনুসরণ করে তাদের ব্যতীত আর কাউকে বিশ্বাস করো না।’ বলে দিন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্র হেদায়াতই তো (কেবল) হেদায়াত’। (তারা নিজেদের লোকদেরকে আরও বলে, ‘তাও কখনো বিশ্বাস করো না যে,) যেভাবে তোমাদেরকে কিতাব (অথবা দ্বীন) প্রদান করা হয়েছে অনুরূপ অন্য কাউকেও দেয়া হবে অথবা কেউ তোমাদের প্রতিপালকের নিকট তোমাদের বিপক্ষে প্রমাণ উত্থাপন করবে।’ বলে দিন, ‘নিশ্চয়ই অনুগ্রহ তো আল্লাহ্র হাতে, তিনি যাকে ইচ্ছা তা দান করেন। আর আল্লাহ্ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।
یَّخۡتَصُّ بِرَحۡمَتِہٖ مَنۡ یَّشَآءُ ؕ وَ اللّٰہُ ذُو الۡفَضۡلِ الۡعَظِیۡمِ ﴿۷۴﴾
কানযুল ঈমান
৭৪. স্বীয় অনুগ্রহ দ্বারা খাস করে নেন যাকে ইচ্ছা করেন এবং আল্লাহ্ মহা অনুগ্রহশীল।
ইরফানুল কুরআন
৭৪. তিনি যাকে ইচ্ছা স্বীয় অনুগ্রহে বিশেষ করে নেন। আর আল্লাহ্ মহাঅনুগ্রহশীল।’
وَ مِنۡ اَہۡلِ الۡکِتٰبِ مَنۡ اِنۡ تَاۡمَنۡہُ بِقِنۡطَارٍ یُّؤَدِّہٖۤ اِلَیۡکَ ۚ وَ مِنۡہُمۡ مَّنۡ اِنۡ تَاۡمَنۡہُ بِدِیۡنَارٍ لَّا یُؤَدِّہٖۤ اِلَیۡکَ اِلَّا مَادُمۡتَ عَلَیۡہِ قَآئِمًا ؕ ذٰلِکَ بِاَنَّہُمۡ قَالُوۡا لَیۡسَ عَلَیۡنَا فِی الۡاُمِّیّٖنَ سَبِیۡلٌ ۚ وَ یَقُوۡلُوۡنَ عَلَی اللّٰہِ الۡکَذِبَ وَ ہُمۡ یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۷۵﴾
কানযুল ঈমান
৭৫. এবং কিতাবীদের মধ্যে কিছু এমন লোক রয়েছে যে, যদি তুমি তার নিকট বিপুল সম্পদ আমানত রাখো, তবে সে তা তোমাকে ফিরিয়ে দেবে। আর তাদের মধ্যে কিছু এমন লোকও রয়েছে যে, যদি একটা স্বর্ণমুদ্রা তার নিকট আমানত রাখো, তবে সে তাও তোমাকে ফেরৎ দেবেনা কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি তার মাথার উপর দন্ডায়মান থাকো (তার পেছনে লেগে থাকো)। এটা এজন্য যে, তারা বলে, ‘নিরক্ষর লোকদের মামলায় আমাদের উপর কোন জবাবদিহিতা নেই।’ আর তারা আল্লাহ্ সম্পর্কে জেনে বুঝে মিথ্যা রচনা করে।
ইরফানুল কুরআন
৭৫. আহলে কিতাবের মাঝে এমন লোকও রয়েছে, আপনি যদি তার নিকট বিপুল সম্পদও আমানত রাখেন, তবুও সে তা আপনাকে ফিরিয়ে দেবে; আবার তাদের মধ্যে এমন লোকও রয়েছে, যদি তার নিকট একটি দিনারও আমানত রাখেন, তবে আপনি তার পেছনে না লাগা পর্যন্ত আপনাকে সে তাও ফিরিয়ে দেবে না। তা এ জন্যে যে, তারা বলে, ‘নিরক্ষরদের ব্যাপারে আমাদের উপর কোনো দোষারোপ নেই’। আর তারা আল্লাহ্র প্রতি মিথ্যারোপ করে এবং তারা নিজেরা(ও) তা জানে।
بَلٰی مَنۡ اَوۡفٰی بِعَہۡدِہٖ وَ اتَّقٰی فَاِنَّ اللّٰہَ یُحِبُّ الۡمُتَّقِیۡنَ ﴿۷۶﴾
কানযুল ঈমান
৭৬. হাঁ, কেন নয়- যে ব্যক্তি স্বীয় অঙ্গীকার পূর্ণ করেছে ও খোদাভীরুতা অবলম্বন করেছে এবং নিশ্চয় খোদাভীরুরা আল্লাহ্র পছন্দনীয়।
ইরফানুল কুরআন
৭৬. হ্যাঁ, যে নিজের অঙ্গীকার পূর্ণ করেছে এবং পরহেযগারিতা অবলম্বন করেছে (তার উপর বাস্তবিকই কোনো দোষারোপ নেই); সুতরাং নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পরহেযগারদেরকে ভালোবাসেন।
اِنَّ الَّذِیۡنَ یَشۡتَرُوۡنَ بِعَہۡدِ اللّٰہِ وَ اَیۡمَانِہِمۡ ثَمَنًا قَلِیۡلًا اُولٰٓئِکَ لَا خَلَاقَ لَہُمۡ فِی الۡاٰخِرَۃِ وَ لَا یُکَلِّمُہُمُ اللّٰہُ وَ لَا یَنۡظُرُ اِلَیۡہِمۡ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ وَ لَا یُزَکِّیۡہِمۡ ۪ وَ لَہُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ﴿۷۷﴾
কানযুল ঈমান
৭৭. ঐসব লোক, যারা আল্লাহ্র অঙ্গীকার এবং নিজেদের শপথের পরিবর্তে হীন মূল্য গ্রহন করে, পরকালে তাদের কোন অংশ নেই এবং আল্লাহ্ না তাদের সাথে কথা বলবেন, না তাদের প্রতি দৃষ্টিপাত করবেন ক্বিয়ামতের দিন এবং না তাদেরকে পবিত্র করবেন। আর তাদের জন্য যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৭৭. নিশ্চয়ই যারা আল্লাহ্র অঙ্গীকার ও নিজেদের শপথকে স্বল্প মূল্যে বিক্রয় করে, তারাই সেসব লোক যাদের পরকালে কোনো অংশ নেই; কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তাদের সাথে না কথা বলবেন, আর না তাদের দিকে দৃষ্টি দিবেন এবং না তাদেরকে পরিশুদ্ধ করবেন; আর তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
وَ اِنَّ مِنۡہُمۡ لَفَرِیۡقًا یَّلۡوٗنَ اَلۡسِنَتَہُمۡ بِالۡکِتٰبِ لِتَحۡسَبُوۡہُ مِنَ الۡکِتٰبِ وَ مَا ہُوَ مِنَ الۡکِتٰبِ ۚ وَ یَقُوۡلُوۡنَ ہُوَ مِنۡ عِنۡدِ اللّٰہِ وَ مَا ہُوَ مِنۡ عِنۡدِ اللّٰہِ ۚ وَ یَقُوۡلُوۡنَ عَلَی اللّٰہِ الۡکَذِبَ وَ ہُمۡ یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۷۸﴾
কানযুল ঈমান
৭৮. এবং তাদের মধ্যে কিছু লোক এমন রয়েছে, যারা জিহ্বা ঘুরিয়ে কিতাবের সাথে মিল করে দেয়, যাতে তোমরা বুঝো যে, সেটাও কিতাবের মধ্যে আছে, অথচ সেটা কিতাবের মধ্যে নেই। এবং তারা বলে, ‘এটা আল্লাহ্র নিকট থেকে’; ‘অথচ সেটা আল্লাহ্র নিকট থেকে নয়। আর আল্লাহ্ সম্পর্কে জেনেশুনে (তারা) মিথ্যা রচনা করে।
ইরফানুল কুরআন
৭৮. নিশ্চয়ই তাদের মাঝে একদল এমনও রয়েছে, যারা কিতাব পাঠের সময় বিকৃতভাবে নিজেদের জিহ্বা বাঁকায়, যাতে তোমরা তাদের বিকৃত প্রকাশকেও কিতাব (-এর অংশ) মনে করো, অথচ তা কিতাবের অন্তর্ভুক্ত নয়; আর তারা বলে, ‘এ (সবকিছু) আল্লাহ্র নিকট থেকে’, যদিও তা (মোটেই) আল্লাহ্র পক্ষ থেকে নয়। আর তারা আল্লাহ্র উপর মিথ্যা রচনা করে এবং (তা) তারা নিজেরাও জানে।
مَا کَانَ لِبَشَرٍ اَنۡ یُّؤۡتِیَہُ اللّٰہُ الۡکِتٰبَ وَ الۡحُکۡمَ وَ النُّبُوَّۃَ ثُمَّ یَقُوۡلَ لِلنَّاسِ کُوۡنُوۡا عِبَادًا لِّیۡ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ وَ لٰکِنۡ کُوۡنُوۡا رَبّٰنِیّٖنَ بِمَا کُنۡتُمۡ تُعَلِّمُوۡنَ الۡکِتٰبَ وَ بِمَا کُنۡتُمۡ تَدۡرُسُوۡنَ ﴿ۙ۷۹﴾
কানযুল ঈমান
৭৯. কোন মানুষের এ অধিকার নেই যে, আল্লাহ্ তাকে কিতাব, হুকুম এবং পয়গাম্বরী প্রদান করবেন; অতঃপর সে মানুষকে বলবে, ‘আল্লাহ্কে ছেড়ে আমার বান্দা হয়ে যাও।’ হাঁ এটা বলবে, ‘আল্লাহ্ওয়ালা হয়ে যাও!’ এ কারণে যে, তোমরা কিতাব শিক্ষাদান করো এবং এ কারণে যে, তোমরা অধ্যায়ন করে থাকো।
ইরফানুল কুরআন
৭৯. কোনো মানুষের এ অধিকার নেই যে, আল্লাহ্ তাকে কিতাব, প্রজ্ঞা ও নবুয়্যত দান করবেন, অতঃপর সে মানুষকে বলতে শুরু করবে, ‘তোমরা আল্লাহ্কে ছেড়ে আমার বান্দা হয়ে যাও’। বরং (তারা তো এ কথা বলবে,) ‘তোমরা আল্লাহ্র অনুরক্ত হয়ে যাও’, যেহেতু তোমরা কিতাব শিক্ষাদান করো এবং যেহেতু তোমরা নিজেরা তা পাঠও করো।
وَ لَا یَاۡمُرَکُمۡ اَنۡ تَتَّخِذُوا الۡمَلٰٓئِکَۃَ وَ النَّبِیّٖنَ اَرۡبَابًا ؕ اَیَاۡمُرُکُمۡ بِالۡکُفۡرِ بَعۡدَ اِذۡ اَنۡتُمۡ مُّسۡلِمُوۡنَ ﴿۸۰﴾
কানযুল ঈমান
৮০. এবং না তোমদেরকে এ হুকুম দেবে যে, ফিরিশ্তাগণ এবং পয়গাম্বরগণকে খোদা সাব্যস্ত করে নাও। তোমাদেরকে কি কুফরের নির্দেশ দেবে এরপর যে, তোমরা মুসলমান হয়ে গেছো?
ইরফানুল কুরআন
৮০. আর সে নবী ফেরেশতাদেরকে এবং নবীদেরকে প্রতিপালক রূপে গ্রহণ করতে তোমাদেরকে কখনো নির্দেশ দেবেন না। তোমাদের মুসলমান হবার পর তিনি কি (এখন) তোমাদেরকে কুফরীর নির্দেশ দেবেন?
وَ اِذۡ اَخَذَ اللّٰہُ مِیۡثَاقَ النَّبِیّٖنَ لَمَاۤ اٰتَیۡتُکُمۡ مِّنۡ کِتٰبٍ وَّ حِکۡمَۃٍ ثُمَّ جَآءَکُمۡ رَسُوۡلٌ مُّصَدِّقٌ لِّمَا مَعَکُمۡ لَتُؤۡمِنُنَّ بِہٖ وَ لَتَنۡصُرُنَّہٗ ؕ قَالَ ءَاَقۡرَرۡتُمۡ وَ اَخَذۡتُمۡ عَلٰی ذٰلِکُمۡ اِصۡرِیۡ ؕ قَالُوۡۤا اَقۡرَرۡنَا ؕ قَالَ فَاشۡہَدُوۡا وَ اَنَا مَعَکُمۡ مِّنَ الشّٰہِدِیۡنَ ﴿۸۱﴾
কানযুল ঈমান
৮১. এবং স্মরণ করুন! যখন আল্লাহ্ নবীগণের নিকট থেকে তাদের অঙ্গীকার নিয়েছিলেন, ‘আমি তোমাদেরকে যে কিতাব ও হিকমত প্রদান করবো, অতঃপর তাশরীফ আনবেন তোমাদের নিকট রসূল, যিনি তোমাদের কিতাবগুলোর সত্যায়ন করবেন, তখন তোমরা নিশ্চয় নিশ্চয় তাঁর উপর ঈমান আনবে এবং নিশ্চয় নিশ্চয় তাঁকে সাহায্য করবে। এরশাদ করলেন, ‘তোমরা কি স্বীকার করলে এবং এ সম্পর্কে আমার গুরুদায়িত্ব গ্রহণ করলে? সবাই আরয করলো, ‘আমরা স্বীকার করলাম।’ এরশাদ করলেন, ‘তবে (তোমরা) একে অপরের উপর সাক্ষী হয়ে যাও এবং আমি নিজেই তোমাদের সাথে সাক্ষীদের মধ্যে রইলাম।’
ইরফানুল কুরআন
৮১. আর (হে প্রিয়তম! স্মরণ করুন সে সময়ের কথা) যখন আল্লাহ্ নবীগণের কাছ থেকে দৃঢ় অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলেন, ‘যখন আমি তোমাদেরকে কিতাব ও প্রজ্ঞা দান করবো, অতঃপর তোমাদের নিকট আগমন করবেন (সর্বোপরি মহত্তের অধিকারী) রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম) যিনি সত্যায়ন করবেন সেসব কিতাব যা তোমাদের কাছে থাকবে; তখন তোমরা অবশ্যই তাঁর উপর ঈমান আনয়ন করবে এবং অবশ্যই তাঁকে সাহায্য করবে।’ তিনি বললেন, ‘তোমরা কি স্বীকার করে নিলে এবং (এ শর্তে) আমার অঙ্গীকার দৃঢ়ভাবে গ্রহণ করলে’? সবাই বললেন, ‘আমরা স্বীকার করে নিলাম’। তিনি বললেন, ‘তোমরা সাক্ষী থাকো আর আমিও তোমাদের সাথে সাক্ষী থাকলাম’।
فَمَنۡ تَوَلّٰی بَعۡدَ ذٰلِکَ فَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡفٰسِقُوۡنَ ﴿۸۲﴾
কানযুল ঈমান
৮২. সুতরাং যে কেউ এর পর ফিরে যাবে তবে ওই সব লোক ফাসিক্ব।
ইরফানুল কুরআন
৮২. (তখন সমগ্র মানবজাতির জন্যে সতর্কবাণী হিসেবে বললেন,) ‘সুতরাং যারা এরপর (এ স্বীকারোক্তির পর) মুখ ফিরিয়ে নেবে, তারাই হবে নাফরমান’।
اَفَغَیۡرَ دِیۡنِ اللّٰہِ یَبۡغُوۡنَ وَ لَہٗۤ اَسۡلَمَ مَنۡ فِی السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ طَوۡعًا وَّ کَرۡہًا وَّ اِلَیۡہِ یُرۡجَعُوۡنَ ﴿۸۳﴾
কানযুল ঈমান
৮৩. তবে কি (তারা) আল্লাহ্র দ্বীন ব্যতীত অন্য দ্বীন চায়? এবং তাঁরই সম্মুখে গর্দান অবনত করেছে যে কেউ আসমানসমূহ ও যমীনে রয়েছে স্বেচ্ছায় ও বাধ্য হয়ে এবং তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন করবে।
ইরফানুল কুরআন
৮৩. তারা কি আল্লাহ্র দ্বীনের পরিবর্তে অন্য কোনো দ্বীন অন্বেষণ করে, যখন আকাশমন্ডলীতে ও পৃথিবীতে যা কিছু রয়েছে সমস্তই (হোক) ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় (সর্বাবস্থায়) তাঁরই আনুগ্রত্য গ্রহণ করেছে? আর তাঁরই দিকে তারা সবাই প্রত্যাবর্তিত হবে।
قُلۡ اٰمَنَّا بِاللّٰہِ وَ مَاۤ اُنۡزِلَ عَلَیۡنَا وَ مَاۤ اُنۡزِلَ عَلٰۤی اِبۡرٰہِیۡمَ وَ اِسۡمٰعِیۡلَ وَ اِسۡحٰقَ وَ یَعۡقُوۡبَ وَ الۡاَسۡبَاطِ وَ مَاۤ اُوۡتِیَ مُوۡسٰی وَ عِیۡسٰی وَ النَّبِیُّوۡنَ مِنۡ رَّبِّہِمۡ ۪ لَا نُفَرِّقُ بَیۡنَ اَحَدٍ مِّنۡہُمۡ ۫ وَ نَحۡنُ لَہٗ مُسۡلِمُوۡنَ ﴿۸۴﴾
কানযুল ঈমান
৮৪. এমনই বলো, ‘আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহ্র উপর এবং সেটার উপর, যা আমাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে ইব্রাহীম, ইসমাইল, ইসহাক্ব, ইয়া’কূব এবং তাঁদের পুত্রগণের উপর; আর যা কিছু অর্জিত হয়েছে মুসা, ঈসা এবং নবীগণের, তাঁদের রবের নিকট থেকে। আমরা তাঁদের মধ্যে কারো উপর ঈমানের ক্ষেত্রে তারতম্য করিনা; এবং আমরা তাঁরই সম্মুখে গর্দান অবনত করেছি।’
ইরফানুল কুরআন
৮৪. বলুন, ‘আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি আল্লাহ্তে এবং যা কিছু আমাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং যা কিছু অবতীর্ণ হয়েছে ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব (আলাইহিমুস সালাম) ও তাদের বংশধরগণের প্রতি এবং যা কিছু মূসা, ঈসা এবং সমস্ত নবীগণ (আলাইহিমুস সালাম)-কে তাঁদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে প্রদান করা হয়েছে তাতে। (ঈমান আনয়নের ক্ষেত্রে) আমরা তাঁদের মধ্যে কোনো পার্থক্য করি না এবং আমরা তাঁরই নিকট অত্মসমর্পণকারী।’
وَ مَنۡ یَّبۡتَغِ غَیۡرَ الۡاِسۡلَامِ دِیۡنًا فَلَنۡ یُّقۡبَلَ مِنۡہُ ۚ وَ ہُوَ فِی الۡاٰخِرَۃِ مِنَ الۡخٰسِرِیۡنَ ﴿۸۵﴾
কানযুল ঈমান
৮৫. আর যে ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্ম চাইবে তা তার পক্ষ থেকে কখনো গ্রহণ করা হইবে না এবং সে পরকালে ক্ষতিগ্রহস্থদের অন্তর্ভূক্ত।
ইরফানুল কুরআন
৮৫. আর কেউ ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনো ধর্ম অন্বেষণ করলে তার থেকে তা কখনো গ্রহণ করা হবে না এবং সে হবে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত।
کَیۡفَ یَہۡدِی اللّٰہُ قَوۡمًا کَفَرُوۡا بَعۡدَ اِیۡمَانِہِمۡ وَ شَہِدُوۡۤا اَنَّ الرَّسُوۡلَ حَقٌّ وَّ جَآءَہُمُ الۡبَیِّنٰتُ ؕ وَ اللّٰہُ لَا یَہۡدِی الۡقَوۡمَ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۸۶﴾
কানযুল ঈমান
৮৬. কিরূপে আল্লাহ্ এমন সম্প্রদায়ের হিদায়ত চাইবেন, যারা ঈমান এনে কাফির হয়ে গেছে এবং সাক্ষ্য দিয়েছিলো যে, রসূল সত্য; আর তাদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শনাদি এসেছিলো? এবং আল্লাহ্ অত্যাচারী-দেরকে হিদায়ত করেন না।
ইরফানুল কুরআন
৮৬. আল্লাহ্ কিভাবে তাদেরকে হেদায়াত দান করবেন, যারা ঈমান আনয়নের পর কাফের হয়ে গিয়েছে, অথচ তারা সাক্ষ্য দিয়েছিল যে, এ রাসূল সত্য এবং তাদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলীও এসেছিল? আর আল্লাহ্ যালিম সম্প্রদায়কে হেদায়াত দান করেন না।
اُولٰٓئِکَ جَزَآؤُہُمۡ اَنَّ عَلَیۡہِمۡ لَعۡنَۃَ اللّٰہِ وَ الۡمَلٰٓئِکَۃِ وَ النَّاسِ اَجۡمَعِیۡنَ ﴿ۙ۸۷﴾
কানযুল ঈমান
৮৭. তাদের কর্মফল হচ্ছে তাদের উপর লা’নত অবধারিত- আল্লাহ্, ফিরিশ্তা এবং মানবজাতি- সকলের।
ইরফানুল কুরআন
৮৭. এসব লোকদের শাস্তি এ যে, তাদের উপর আল্লাহ্র, ফেরেশতাগণের এবং সমস্ত মানুষের অভিসম্পাত!
خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَا ۚ لَا یُخَفَّفُ عَنۡہُمُ الۡعَذَابُ وَ لَا ہُمۡ یُنۡظَرُوۡنَ ﴿ۙ۸۸﴾
কানযুল ঈমান
৮৮. সর্বদা তাতে থাকবে; না তাদের উপর থেকে শাস্তি লঘু করা হবে এবং না তাদেরকে বিরাম দেয়া হবে।
ইরফানুল কুরআন
৮৮. তারা এ অভিসম্পাতে চিরকাল (আবদ্ধ) থাকবে এবং তাদের শাস্তি না লঘু করা হবে, আর না তাদেরকে অবকাশ দেয়া হবে।
اِلَّا الَّذِیۡنَ تَابُوۡا مِنۡۢ بَعۡدِ ذٰلِکَ وَ اَصۡلَحُوۡا ۟ فَاِنَّ اللّٰہَ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۸۹﴾
কানযুল ঈমান
৮৯. কিন্তু যারা এর পর তাওবা করেছে এবং নিজেদের সংশোধন করেছে, তবে অবশ্যই আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, দয়ালু।
ইরফানুল কুরআন
৮৯. তবে সেসব লোক ব্যতীত, যারা এরপর তওবা করে এবং (নিজেদেরকে) সংশোধন করে। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ মহাক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু।
اِنَّ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا بَعۡدَ اِیۡمَانِہِمۡ ثُمَّ ازۡدَادُوۡا کُفۡرًا لَّنۡ تُقۡبَلَ تَوۡبَتُہُمۡ ۚ وَ اُولٰٓئِکَ ہُمُ الضَّآلُّوۡنَ ﴿۹۰﴾
কানযুল ঈমান
৯০. নিশ্চয় ঐসব লোক, যারা ঈমান এনে কাফির হয়েছে অতঃপর কুফর আরো বৃদ্ধি করেছে তাদের তাওবা কখনো কবূল হবে না এবং তারাই হচ্ছে পথভ্রষ্ট।
ইরফানুল কুরআন
৯০. নিশ্চয়ই যারা ঈমান আনয়নের পর কুফরী করে, অতঃপর তারা কুফরীতে আরো নিমজ্জিত হয়, তাদের তওবা কখনো কবুল করা হবে না। আর তারাই পথভ্রষ্ট।
اِنَّ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا وَ مَاتُوۡا وَ ہُمۡ کُفَّارٌ فَلَنۡ یُّقۡبَلَ مِنۡ اَحَدِہِمۡ مِّلۡءُ الۡاَرۡضِ ذَہَبًا وَّلَوِ افۡتَدٰی بِہٖ ؕ اُولٰٓئِکَ لَہُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ وَّ مَا لَہُمۡ مِّنۡ نّٰصِرِیۡنَ ﴿۹۱﴾
কানযুল ঈমান
৯১. ঐসব লোক, যারা কাফির হয়েছে এবং কাফির হয়েই মৃত্যুবরণ করেছে, তাদের মধ্যে কারো পক্ষ থেকে পৃথিবী ভর্তি স্বর্ণও কখনো কবূল করা হবে না যদিও তারা নিজেদের মুক্তির জন্য প্রদান করে। তাদের জন্য বেদনাদায়ক শাস্তি রয়েছে এবং তাদের কোন সাহায্যকারী নেই।
ইরফানুল কুরআন
৯১. নিশ্চয়ই যারা কুফরী করেছে এবং কাফের অবস্থায়ই মৃত্যুবরণ করেছে; অতঃপর তাদের কেউ (নিজের মুক্তির বিনিময়ে) পৃথিবীপূর্ণ স্বর্ণ প্রদান করতে চাইলেও তার থেকে তা কখনো গ্রহণ করা হবে না। তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি এবং তাদের কোনো সাহায্যকারীও থাকবে না।
لَنۡ تَنَالُوا الۡبِرَّ حَتّٰی تُنۡفِقُوۡا مِمَّا تُحِبُّوۡنَ ۬ؕ وَ مَا تُنۡفِقُوۡا مِنۡ شَیۡءٍ فَاِنَّ اللّٰہَ بِہٖ عَلِیۡمٌ ﴿۹۲﴾
কানযুল ঈমান
৯২. তোমরা কখনো পূণ্য পর্যন্ত পৌছবেনা যতক্ষণ আল্লাহ্র পথে আপন প্রিয়বস্তু ব্যয় করবে না এবং তোমরা যা কিছু ব্যয় করো তা আল্লাহ্র জানা আছে।
ইরফানুল কুরআন
৯২. তোমরা কখনো পূণ্য অর্জন করতে পারবে না, যতক্ষণ না তোমরা তোমাদের প্রিয় বস্তুসমূহ থেকে (আল্লাহ্র পথে) ব্যয় করবে। আর তোমরা যা কিছুই ব্যয় করো নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা সবিশেষ অবগত।
کُلُّ الطَّعَامِ کَانَ حِلًّا لِّبَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ اِلَّا مَا حَرَّمَ اِسۡرَآءِیۡلُ عَلٰی نَفۡسِہٖ مِنۡ قَبۡلِ اَنۡ تُنَزَّلَ التَّوۡرٰىۃُ ؕ قُلۡ فَاۡتُوۡا بِالتَّوۡرٰىۃِ فَاتۡلُوۡہَاۤ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ ﴿۹۳﴾
কানযুল ঈমান
৯৩. যাবতীয় খাদ্য বনী ইস্রাইলের জন্য হালাল ছিলো কিন্তু ঐ খাদ্য যা ইয়া’কূব নিজের উপর হারাম করে নিয়েছিলো তাওরীত অবতীর্ণ হবার পূর্বে। আপনি বলুন, ‘তাওরীত এনে পাঠ করো যদি সত্যবাদী হও।’
ইরফানুল কুরআন
৯৩. তাওরাত অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বে বনী ইসরাঈলের জন্যে সমস্ত খাদ্যদ্রব্যই হালাল ছিল, সেসব (বস্তু) ছাড়া যা ইয়াকুব (আলাইহিস সালাম) নিজের জন্যে হারাম করে নিয়েছিলেন। বলে দিন, ‘তাওরাত নিয়ে আসো এবং তা পাঠ করো, যদি তোমরা সত্যবাদী হও’।
فَمَنِ افۡتَرٰی عَلَی اللّٰہِ الۡکَذِبَ مِنۡۢ بَعۡدِ ذٰلِکَ فَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الظّٰلِمُوۡنَ ﴿۹۴﴾
কানযুল ঈমান
৯৪. সুতরাং এরপর যারা আল্লাহ্র উপর মিথ্যা রটনা করে, তবে তারাই যালিম।
ইরফানুল কুরআন
৯৪. অতএব এরপরও যেসব ব্যক্তি আল্লাহ্ সম্পর্কে মিথ্যারোপ করে তারাই যালিম।
قُلۡ صَدَقَ اللّٰہُ ۟ فَاتَّبِعُوۡا مِلَّۃَ اِبۡرٰہِیۡمَ حَنِیۡفًا ؕ وَ مَا کَانَ مِنَ الۡمُشۡرِکِیۡنَ ﴿۹۵﴾
কানযুল ঈমান
৯৫. আপনি বলুন, ‘আল্লাহ্ সত্যবাদী। কাজেই, ইব্রাহিমের দ্বীনের উপর চলো; যিনি প্রত্যেক বাতিল থেকে আলাদা ছিলেন এবং অংশীবাদীদের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন না।’
ইরফানুল কুরআন
৯৫. বলে দিন, ‘আল্লাহ্ সত্য বলেছেন, সুতরাং তোমরা ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)-এঁর দ্বীনের অনুসরণ করো, যিনি ছিলেন সকল ভ্রান্তি থেকে বিমুখ, একনিষ্ঠভাবে আল্লাহ্র। আর তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না।’
اِنَّ اَوَّلَ بَیۡتٍ وُّضِعَ لِلنَّاسِ لَلَّذِیۡ بِبَکَّۃَ مُبٰرَکًا وَّ ہُدًی لِّلۡعٰلَمِیۡنَ ﴿ۚ۹۶﴾
কানযুল ঈমান
৯৬. নিশ্চয় সর্বপ্রথম ঘর, যা মানবজাতি ইবাদতের জন্য নির্দ্ধারিত হয়েছে, সেটাই যা মক্কায় অবস্থিত, বরকতময় এবং সমগ্র জাহানের পথ প্রদর্শক।
ইরফানুল কুরআন
৯৬: নিশ্চয়ই সর্বপ্রথম গৃহ যা মানুষের (ইবাদতের) জন্যে তৈরি করা হয়েছিল, সেটিই মক্কায় অবস্থিত, কল্যাণময় এবং সমস্ত জগতবাসীর জন্যে হেদায়াত (-এর কেন্দ্র)।
فِیۡہِ اٰیٰتٌۢ بَیِّنٰتٌ مَّقَامُ اِبۡرٰہِیۡمَ ۬ۚ وَ مَنۡ دَخَلَہٗ کَانَ اٰمِنًا ؕ وَ لِلّٰہِ عَلَی النَّاسِ حِجُّ الۡبَیۡتِ مَنِ اسۡتَطَاعَ اِلَیۡہِ سَبِیۡلًا ؕ وَ مَنۡ کَفَرَ فَاِنَّ اللّٰہَ غَنِیٌّ عَنِ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۹۷﴾
কানযুল ঈমান
৯৭. সেটার মধ্যে সুস্পষ্ট নিদর্শনাদি রয়েছে- ইব্রাহিমের দাঁড়াবার স্থান এবং যে ব্যক্তি সেটার অভ্যন্তরে প্রবেশ করে সে নিরাপত্তার মধ্যে থাকে; এবং আল্লাহ্রই জন্য মানবকুলের উপর সেই ঘরের হজ্জ্ করা (ফরয) যে সেটা পর্যন্ত যেতে পারে। আর যে অস্বীকারকারী হয়, তবে আল্লাহ্ সমগ্র জাহান থেকে বে-পরোয়া।
ইরফানুল কুরআন
৯৭. এতে রয়েছে সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী, (এর একটি হলো) ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)-এঁর দাঁড়াবার স্থান*; এবং যে তাতে প্রবেশ করে সে নিরাপদ। আর মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাবার সামর্থ্য রয়েছে তার জন্যে আল্লাহ্র উদ্দেশ্যে এ গৃহের হজ্জ করা আবশ্যক। আর যে (এর) অস্বীকারকারী, তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সমগ্র বিশ্ব জগতেরই অমুখাপেক্ষী।
قُلۡ یٰۤاَہۡلَ الۡکِتٰبِ لِمَ تَکۡفُرُوۡنَ بِاٰیٰتِ اللّٰہِ ٭ۖ وَ اللّٰہُ شَہِیۡدٌ عَلٰی مَا تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۹۸﴾
কানযুল ঈমান
৯৮. আপনি বলুন, ‘হে কিতাবীরা! আল্লাহ্র আয়াতসমূহ কেন অমান্য করছো? এবং তোমাদের কাজ আল্লাহ্র সামনেই রয়েছে।’
ইরফানুল কুরআন
৯৮. বলে দিন, ‘হে আহলে কিতাব! তোমরা কেন আল্লাহ্র আয়াতসমূহকে অস্বীকার করছো? অথচ আল্লাহ্ তোমাদের কর্মকান্ড প্রত্যক্ষ করছেন।’
قُلۡ یٰۤاَہۡلَ الۡکِتٰبِ لِمَ تَصُدُّوۡنَ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ مَنۡ اٰمَنَ تَبۡغُوۡنَہَا عِوَجًا وَّ اَنۡتُمۡ شُہَدَآءُ ؕ وَ مَا اللّٰہُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۹۹﴾
কানযুল ঈমান
৯৯. আপনি বলুন, ‘হে কিতাবীরা! কেন আল্লাহ্র পথে বাধা দিচ্ছো তাকে, যে ঈমান এনেছে? সেটাকে বক্র করতে চাচ্ছো, অথচ তোমরা নিজেরাই এর উপর সাক্ষী রয়েছো? এবং আল্লাহ্ তোমাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে গাফিল নন।’
ইরফানুল কুরআন
৯৯. বলে দিন, ‘হে আহলে কিতাব! যে ব্যক্তি ঈমান আনয়ন করেছে তাকে কেন তোমরা আল্লাহ্র পথে বাধা দিচ্ছো? তোমরা তাঁর পথেও বক্রতা অন্বেষণ করছো, অথচ তোমরা (এটি সত্য হওয়ার ব্যাপারে) নিজেরাই সাক্ষী। আর আল্লাহ্ তোমাদের কর্মকান্ড সম্পর্কে অনবহিত নন।’
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنۡ تُطِیۡعُوۡا فَرِیۡقًا مِّنَ الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡکِتٰبَ یَرُدُّوۡکُمۡ بَعۡدَ اِیۡمَانِکُمۡ کٰفِرِیۡنَ ﴿۱۰۰﴾
কানযুল ঈমান
১০০. হে ঈমানদাররা! যদি তোমরা কিছু সংখ্যক কিতাবীর কথা মতো চলো, তবে তারা তোমাদের ঈমানের পর তোমাদেরকে কাফির করে ছাড়বে।
ইরফানুল কুরআন
১০০. হে ঈমানদারগণ! যদি তোমরা আহলে কিতাবের কোনো একটি দলেরও আনুগত্য করো, তবে ঈমান গ্রহণের পর তারা তোমাদেরকে পুনরায় কুফরীর দিকে ফিরিয়ে নেবে।
وَ کَیۡفَ تَکۡفُرُوۡنَ وَ اَنۡتُمۡ تُتۡلٰی عَلَیۡکُمۡ اٰیٰتُ اللّٰہِ وَ فِیۡکُمۡ رَسُوۡلُہٗ ؕ وَ مَنۡ یَّعۡتَصِمۡ بِاللّٰہِ فَقَدۡ ہُدِیَ اِلٰی صِرَاطٍ مُّسۡتَقِیۡمٍ ﴿۱۰۱﴾
কানযুল ঈমান
১০১. এবং তোমরা কিভাবে কুফর করবে? অথচ তোমাদের উপর আল্লাহ্র আয়াতসমূহ পাঠ করা হচ্ছে এবং তোমাদের মধ্যে তাঁর রসূল তাশরীফ এনেছেন। আর যে আল্লাহ্র আশ্রয় নিয়েছে, তবে নিশ্চয় তাকে সোজা রাস্তা দেখানো হয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
১০১. আর তোমরা (এখন) কিভাবে সত্য প্রত্যাখ্যান করবে, যখন তোমরা এরূপ (সৌভাগ্যবান) যে তোমাদের নিকট আল্লাহ্র আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করা হয় এবং তোমাদের মাঝে রয়েছেন (স্বয়ং) আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম)? আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্কে (অর্থাৎ আল্লাহ্র রজ্জু) দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে, তাকে অবশ্যই সরল পথের দিকে হেদায়াত দান করা হয়।
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللّٰہَ حَقَّ تُقٰتِہٖ وَ لَا تَمُوۡتُنَّ اِلَّا وَ اَنۡتُمۡ مُّسۡلِمُوۡنَ ﴿۱۰۲﴾
কানযুল ঈমান
১০২. হে ঈমানদাররা! আল্লাহ্কে ভয় করো যেমনিভাবে তাঁকে ভয় করা অপরিহার্য এবং কখনো মৃত্যুবরণ করো না, কিন্তু মুসলমান (হয়ে)।
ইরফানুল কুরআন
১০২. হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ্কে ভয় করো যেভাবে তাঁকে ভয় করা উচিত, আর তোমাদের মৃত্যু যেন মুসলমান অবস্থায়ই হয়।
وَ اعۡتَصِمُوۡا بِحَبۡلِ اللّٰہِ جَمِیۡعًا وَّ لَا تَفَرَّقُوۡا ۪ وَ اذۡکُرُوۡا نِعۡمَتَ اللّٰہِ عَلَیۡکُمۡ اِذۡ کُنۡتُمۡ اَعۡدَآءً فَاَلَّفَ بَیۡنَ قُلُوۡبِکُمۡ فَاَصۡبَحۡتُمۡ بِنِعۡمَتِہٖۤ اِخۡوَانًا ۚ وَ کُنۡتُمۡ عَلٰی شَفَا حُفۡرَۃٍ مِّنَ النَّارِ فَاَنۡقَذَکُمۡ مِّنۡہَا ؕ کَذٰلِکَ یُبَیِّنُ اللّٰہُ لَکُمۡ اٰیٰتِہٖ لَعَلَّکُمۡ تَہۡتَدُوۡنَ ﴿۱۰۳﴾
কানযুল ঈমান
১০৩. এবং আল্লাহ্র রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরো সবাই মিলে। আর পরষ্পর বিছিন্ন হয়ো না এবং নিজেদের উপর আল্লাহ্র অনুগ্রহকে স্মরণ করো যখন তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ছিলো, তিনি তোমাদের অন্তরগুলোতে সম্প্রীতি সৃষ্টি করে দিয়েছেন। সুতরাং তাঁর অনুগ্রহক্রমে, তোমরা পরষ্পর ভ্রাতৃত্ব-বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে গেছো এবং তোমরা দোযখের একটা গর্তের প্রান্তে ছিলে। তখন তিনি তোমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করেছেন। আল্লাহ্ তোমাদের নিকট এভাবেই স্বীয় নিদর্শনাদি বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা হিদায়ত পাও।
ইরফানুল কুরআন
১০৩. আর তোমরা সমবেতভাবে আল্লাহ্র রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরো এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। আর তোমাদের প্রতি আল্লাহ্র অনুগ্রহের কথা স্মরণ করো, যখন তোমরা (পরস্পরে) ছিলে শত্রু তখন তিনি তোমাদের অন্তরে ভালোবাসার বন্ধন সৃষ্টি করে দিলেন। আর তোমরা সে অনুগ্রহের কারণে পরস্পরে ভাই হলে। আর তোমরা (জাহান্নামের) অগ্নিকুন্ডের প্রান্তে (পৌঁছে গিয়ে) ছিলে। অতঃপর তিনি তোমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করলেন। এভাবে আল্লাহ্ তোমাদের জন্যে তাঁর নিদর্শনাবলী সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা হেদায়াত পেতে পারো।
وَلۡتَکُنۡ مِّنۡکُمۡ اُمَّۃٌ یَّدۡعُوۡنَ اِلَی الۡخَیۡرِ وَ یَاۡمُرُوۡنَ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَ یَنۡہَوۡنَ عَنِ الۡمُنۡکَرِ ؕ وَ اُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡمُفۡلِحُوۡنَ ﴿۱۰۴﴾
কানযুল ঈমান
১০৪. এবং তোমাদের মধ্যে একটা দল এমন হওয়া উচিত যারা কল্যাণের প্রতি আহ্বান জানাবে, ভাল কাজের নির্দেশ দেবে এবং মন্দ থেকে নিষেধ করবে। আর এসব লোকই লক্ষ্যস্থলে পৌঁছাবে।
ইরফানুল কুরআন
১০৪. আর তোমাদের মধ্যে যেন এমন একটি দল অবশ্যই বের হয়, যারা মানুষকে পূণ্যের দিকে আহ্বান করবে, সৎকাজের নির্দেশ দেবে এবং মন্দ কাজে নিষেধ করবে। আর তারাই সফলকাম।
وَ لَا تَکُوۡنُوۡا کَالَّذِیۡنَ تَفَرَّقُوۡا وَ اخۡتَلَفُوۡا مِنۡۢ بَعۡدِ مَا جَآءَہُمُ الۡبَیِّنٰتُ ؕ وَ اُولٰٓئِکَ لَہُمۡ عَذَابٌ عَظِیۡمٌ ﴿۱۰۵﴾ۙ
কানযুল ঈমান
১০৫. এবং তাদের মতো হয়ো না, যারা পরষ্পর বিছিন্ন হয়ে পড়েছে আর তাদের মধ্যে মতবিরোধ হয়ে গেছে, এরপর যে, সুস্পষ্ট নিদর্শনাদি তাদের নিকট এসে গেছে। আর তাদের জন্য কঠিন শাস্তি অবধারিত।
ইরফানুল কুরআন
১০৫. আর তাদের ন্যায় হয়ো না যারা দলে দলে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল এবং তাদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী আসার পরও মতবিরোধ করছিল। আর তাদের জন্যে রয়েছে ভয়ংকর শাস্তি।
یَّوۡمَ تَبۡیَضُّ وُجُوۡہٌ وَّ تَسۡوَدُّ وُجُوۡہٌ ۚ فَاَمَّا الَّذِیۡنَ اسۡوَدَّتۡ وُجُوۡہُہُمۡ ۟ اَکَفَرۡتُمۡ بَعۡدَ اِیۡمَانِکُمۡ فَذُوۡقُوا الۡعَذَابَ بِمَا کُنۡتُمۡ تَکۡفُرُوۡنَ ﴿۱۰۶﴾
কানযুল ঈমান
১০৬. যেদিন কিছু চেহারা উজ্জ্বল হবে এবং কিছু মুখ কালো হবে। কাজেই, যাদের মুখ কালো হয়েছে, ‘তোমরা কি ঈমান এনে কাফির হয়েছো?’ সুতরাং এখন আযাবের স্বাদ গ্রহন করো স্বীয় কুফরের বিনিময় স্বরূপ।
ইরফানুল কুরআন
১০৬. যে দিন কতক মুখমন্ডল হবে উজ্জল এবং কতক মুখমন্ডল হবে মলিন; তখন যাদের চেহারা কালো হবে (তাদেরকে বলা হবে), ‘ঈমান আনয়নের পর তোমরা কি কুফরী করেছিলে? সুতরাং যে কুফরী তোমরা করতে এর শাস্তি আস্বাদন করো।’
وَ اَمَّا الَّذِیۡنَ ابۡیَضَّتۡ وُجُوۡہُہُمۡ فَفِیۡ رَحۡمَۃِ اللّٰہِ ؕ ہُمۡ فِیۡہَا خٰلِدُوۡنَ ﴿۱۰۷﴾
কানযুল ঈমান
১০৭. আর যাদের চেহারা উজ্জ্বল হয়েছে, তারা আল্লাহ্র অনুগ্রহের মধ্যে রয়েছে। তারা তাতে স্থায়ীভাবে থাকবে।
ইরফানুল কুরআন
১০৭. অপরদিকে যাদের চেহারা উজ্জ্বল (আলোকিত) হবে, তারা আল্লাহ্র অনুগ্রহের অন্তর্ভুক্ত হবে এবং তারা তাতে চিরকাল থাকবে।
تِلۡکَ اٰیٰتُ اللّٰہِ نَتۡلُوۡہَا عَلَیۡکَ بِالۡحَقِّ ؕ وَ مَا اللّٰہُ یُرِیۡدُ ظُلۡمًا لِّلۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۱۰۸﴾
কানযুল ঈমান
১০৮. এগুলো হচ্ছে আল্লাহ্র নিদর্শন, যেগুলো আমি (আল্লাহ্) সঠিকভাবে তোমাদের নিকট পাঠ করছি এবং আল্লাহ্ বিশ্ববাসীর উপর যুলুম চান না।
ইরফানুল কুরআন
১০৮. এগুলো আল্লাহ্র নিদর্শন, যা আমরা আপনার প্রতি সত্য সহকারে পাঠ করি। আর আল্লাহ্ জগতবাসীর প্রতি যুলুম করতে চান না।
وَ لِلّٰہِ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الۡاَرۡضِ ؕ وَ اِلَی اللّٰہِ تُرۡجَعُ الۡاُمُوۡرُ ﴿۱۰۹﴾
কানযুল ঈমান
১০৯. এবং আল্লাহ্রই, যা কিছু আসমানসমূহে রয়েছে এবং যা কিছু যমীনে। আর আল্লাহ্রই প্রতি সব কাজের প্রর্ত্যাবর্তন (অনিবার্য)।
ইরফানুল কুরআন
১০৯. আর সব আল্লাহ্রই জন্যে, যা কিছু আকাশমন্ডলীতে এবং পৃথিবীতে রয়েছে। আর আল্লাহ্রই নিকট সকল কর্মকান্ড প্রত্যাবর্তিত হবে।
کُنۡتُمۡ خَیۡرَ اُمَّۃٍ اُخۡرِجَتۡ لِلنَّاسِ تَاۡمُرُوۡنَ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَ تَنۡہَوۡنَ عَنِ الۡمُنۡکَرِ وَ تُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰہِ ؕ وَ لَوۡ اٰمَنَ اَہۡلُ الۡکِتٰبِ لَکَانَ خَیۡرًا لَّہُمۡ ؕ مِنۡہُمُ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ وَ اَکۡثَرُہُمُ الۡفٰسِقُوۡنَ ﴿۱۱۰﴾
কানযুল ঈমান
১১০. তোমরা হলে শ্রেষ্ঠতম ঐসব উম্মতের মধ্যে, যাদের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে মানব জাতির মধ্যে; সৎকাজের নির্দেশ দিচ্ছো এবং মন্দ কাজ থেকে বারণ করছো, আর আল্লাহ্র উপর ঈমান রাখছো। এবং যদি কিতাবী (সম্প্রদায়) ঈমান আনতো তবে এটা তাদের জন্য কল্যাণকর ছিলো। তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক মুসলমান রয়েছে এবং অধিকাংশ কাফির।
ইরফানুল কুরআন
১১০. তোমরাই উৎকৃষ্ট জাতি, মানবজাতির (পথ প্রদর্শনের) জন্যে যাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে, তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দিচ্ছো, আর মন্দ কাজে নিষেধ করছো এবং আল্লাহ্তে ঈমান রাখছো। আর যদি আহলে কিতাবও ঈমান আনয়ন করতো, তবে তা অবশ্যই তাদের জন্যে কল্যাণকর হতো। তাদের মাঝে কিছু ঈমানদারও রয়েছে, তবে তাদের অধিকাংশই নাফরমান।
لَنۡ یَّضُرُّوۡکُمۡ اِلَّاۤ اَذًی ؕ وَ اِنۡ یُّقَاتِلُوۡکُمۡ یُوَلُّوۡکُمُ الۡاَدۡبَارَ ۟ ثُمَّ لَا یُنۡصَرُوۡنَ ﴿۱۱۱﴾
কানযুল ঈমান
১১১. রা তোমাদের কোন ক্ষতি সাধন করবে না, কিন্তু এ কষ্ট দেয়া; আর যদি (তারা) তোমাদের সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়, তবে তোমাদের সম্মুখ থেকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে, অতঃপর তাদেরকে কোন সাহায্য করা যাবে না।
ইরফানুল কুরআন
১১১. সামান্য কষ্ট দেয়া ছাড়া এসব লোকেরা তোমাদের কোনো ক্ষতিই করতে পারবে না। আর যদি এরা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে তবে তারা তোমাদের থেকে পশ্চাদপসরণ করবে, তারপর তারা সাহায্যপ্রাপ্তও হবে না।
ضُرِبَتۡ عَلَیۡہِمُ الذِّلَّۃُ اَیۡنَ مَا ثُقِفُوۡۤا اِلَّا بِحَبۡلٍ مِّنَ اللّٰہِ وَ حَبۡلٍ مِّنَ النَّاسِ وَ بَآءُوۡ بِغَضَبٍ مِّنَ اللّٰہِ وَ ضُرِبَتۡ عَلَیۡہِمُ الۡمَسۡکَنَۃُ ؕ ذٰلِکَ بِاَنَّہُمۡ کَانُوۡا یَکۡفُرُوۡنَ بِاٰیٰتِ اللّٰہِ وَ یَقۡتُلُوۡنَ الۡاَنۡۢبِیَآءَ بِغَیۡرِ حَقٍّ ؕ ذٰلِکَ بِمَا عَصَوۡا وَّ کَانُوۡا یَعۡتَدُوۡنَ ﴿۱۱۲﴾٭
কানযুল ঈমান
১১২. দের জন্য অবধারিত হয়েছে লাঞ্ছনা; (তারা) যেখানেই থাকুক না কেন নিরাপত্তা পাবে না কিন্তু আল্লাহ্র রজ্জু ও মানুষের রজ্জু দ্বারা এবং (তারা) আল্লাহ্র ক্রোধের পাত্র হয়েছে। আর তাদের উপর অবধারিত হয়েছে পরমুখাপেক্ষিতা, এটা এ জন্য যে, তারা আল্লাহ্র আয়াতগুলোর প্রতি কুফর করতো এবং পয়গাম্বগণকে অন্যায়ভাবে শহীদ করে। এটা এ জন্যই যে, (তারা) নির্দেশ অমান্যকারী এবং অবাধ্য ছিলো।
ইরফানুল কুরআন
১১২. আল্লাহ্র প্রতিশ্রুতি কিংবা মানুষের প্রতিশ্রুতির (মাধ্যমে আশ্রয়ের) বাইরে তাদেরকে যেখানেই পাওয়া গিয়েছে সেখানেই তাদের উপর লাঞ্ছনা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। আর তারা আল্লাহ্র ক্রোধের পাত্র হয়েছে এবং তাদের উপর দারিদ্রতা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। তা এ কারণে যে, তারা আল্লাহ্র আয়াতসমূহকে অস্বীকার করতো এবং অন্যায়ভাবে নবীগণকে হত্যা করতো; তা এ কারণে যে, তারা অবাধ্য হয়েছিল এবং (তাতে) সীমালঙ্ঘন করেছিল।
لَیۡسُوۡا سَوَآءً ؕ مِنۡ اَہۡلِ الۡکِتٰبِ اُمَّۃٌ قَآئِمَۃٌ یَّتۡلُوۡنَ اٰیٰتِ اللّٰہِ اٰنَآءَ الَّیۡلِ وَ ہُمۡ یَسۡجُدُوۡنَ ﴿۱۱۳﴾
কানযুল ঈমান
১১৩. সবাই এক ধরনের নয়। কিতাবীদের মধ্যে কিছু লোক এমনও আছে যে, তারা সত্যের উপর অবিচলিত; (তারা) আল্লাহ্র আয়াতসমূহ পাঠ করে রাতের মুহুর্তগুলোতে এবং তারা সাজদারত হয়।
ইরফানুল কুরআন
১১৩. তারা সবাই একরকম নয়। আহলে কিতাবের মধ্যে সত্যের উপর অবিচল কিছু লোকও রয়েছে, তারা রাতের প্রহরে আল্লাহ্র আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করে এবং সেজদারত থাকে।
یُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰہِ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ وَ یَاۡمُرُوۡنَ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَ یَنۡہَوۡنَ عَنِ الۡمُنۡکَرِ وَ یُسَارِعُوۡنَ فِی الۡخَیۡرٰتِ ؕ وَ اُولٰٓئِکَ مِنَ الصّٰلِحِیۡنَ ﴿۱۱۴﴾
কানযুল ঈমান
১১৪. আল্লাহ্ ও শেষ দিনের উপর ঈমান আনে, সৎ কাজের নির্দেশ দেয় এবং মন্দ থেকে বারণ করে আর সৎ কাজের প্রতি দ্রুত অগ্রসর হয় এবং এ সব ব্যক্তি যোগ্যতাসম্পন্ন।
ইরফানুল কুরআন
১১৪. তারা বিশ্বাস করে আল্লাহ্তে ও শেষদিবসে, সৎকাজের নির্দেশ দেয়, অসৎকাজে নিষেধ করে এবং সৎকর্মে দ্রুত অগ্রসর হয়। আর এরাই সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত।
وَ مَا یَفۡعَلُوۡا مِنۡ خَیۡرٍ فَلَنۡ یُّکۡفَرُوۡہُ ؕ وَ اللّٰہُ عَلِیۡمٌۢ بِالۡمُتَّقِیۡنَ ﴿۱۱۵﴾
কানযুল ঈমান
১১৫. এবং যেই সৎ কাজই তারা করুক তাদের প্রাপ্য বিনষ্ট করা হবে না এবং আল্লাহ্র জানা আছে কারা খোদাভীরু।
ইরফানুল কুরআন
১১৫. আর তারা যে সৎকর্মই করবে, তার অবমূল্যায়ন করা হবে না। আর আল্লাহ্ পরহেযগারদের ব্যাপারে সম্যক অবগত।
اِنَّ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا لَنۡ تُغۡنِیَ عَنۡہُمۡ اَمۡوَالُہُمۡ وَ لَاۤ اَوۡلَادُہُمۡ مِّنَ اللّٰہِ شَیۡـًٔا ؕ وَ اُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ النَّارِ ۚ ہُمۡ فِیۡہَا خٰلِدُوۡنَ ﴿۱۱۶﴾
কানযুল ঈমান
১১৬. সব লোক, যারা কাফির হয়েছে, তাদের সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তাদেরকে আল্লাহ্র (শাস্তি থেকে) সামান্যটুকুও রক্ষা করবে না এবং তারা জাহান্নামী। তাদেরকে সেটার মধ্যে সর্বদা থাকতে হবে।
ইরফানুল কুরআন
১১৬. নিশ্চয়ই যারা কুফরী করেছে, না তাদের সম্পদ তাদেরকে আল্লাহ্র (শাস্তির) প্রতিকূলে কোনোভাবে রক্ষা করতে পারবে, আর না তাদের সন্তান-সন্ততি। আর এরাই জাহান্নামের অধিবাসী, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে।
مَثَلُ مَا یُنۡفِقُوۡنَ فِیۡ ہٰذِہِ الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا کَمَثَلِ رِیۡحٍ فِیۡہَا صِرٌّ اَصَابَتۡ حَرۡثَ قَوۡمٍ ظَلَمُوۡۤا اَنۡفُسَہُمۡ فَاَہۡلَکَتۡہُ ؕ وَ مَا ظَلَمَہُمُ اللّٰہُ وَ لٰکِنۡ اَنۡفُسَہُمۡ یَظۡلِمُوۡنَ ﴿۱۱۷﴾
কানযুল ঈমান
১১৭. তারা এ পার্থিব জীবনের ব্যয় করে, তার দৃষ্টান্ত ঐ বায়ুর ন্যায়, যার মধ্যে তুষার থাকে; তা এমন এক গোত্রের ক্ষেতের উপর বর্ধিত হয়েছে, যারা নিজেদেরই ক্ষতি সাধন করতো। তখন তা (ওই বায়ু) সেটাকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়ে গেছে এবং আল্লাহ্ তাদের উপর যুলুম করেন নি; হাঁ তারাই নিজেদের আত্মার উপর যুলুম করে থাকে।
ইরফানুল কুরআন
১১৭. পার্থিব জীবনে তারা যে সম্পদ ব্যয় করে তার দৃষ্টান্ত কঠিন হিমশীতল বায়ুর ন্যায়, যা নিজেদের জানের উপর যুলুমকারী সেসব লোকদের শস্যক্ষেতে গিয়ে আঘাত করে ও তা বিনষ্ট করে। আর আল্লাহ্ তাদের প্রতি কোনো যুলুম করেননি, বরং তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি যুলুম করছে।
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَتَّخِذُوۡا بِطَانَۃً مِّنۡ دُوۡنِکُمۡ لَا یَاۡلُوۡنَکُمۡ خَبَالًا ؕ وَدُّوۡا مَا عَنِتُّمۡ ۚ قَدۡ بَدَتِ الۡبَغۡضَآءُ مِنۡ اَفۡوَاہِہِمۡ ۚۖ وَ مَا تُخۡفِیۡ صُدُوۡرُہُمۡ اَکۡبَرُ ؕ قَدۡ بَیَّنَّا لَکُمُ الۡاٰیٰتِ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡقِلُوۡنَ ﴿۱۱۸﴾
কানযুল ঈমান
১১৮. হে ঈমানদারগণ! তোমাদের আপন ব্যতীত অপর কাউকেও নিজেদের অন্তরঙ্গ বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করো না। তারা তোমাদের ক্ষতি সাধনে কোনরুপ ত্রুটি করে না। তাদের কামনা হচ্ছে-যত কষ্টই আছে তোমাদের নিকট পৌঁছুক! শত্রুতা তাদের কথাবার্তা থেকে স্পষ্টরুপে প্রকাশ পেয়েছে এবং তারা যা অন্তরে গোপন রেখেছে তা আরো জঘন্য। আমি (আল্লাহ্) তোমাদেরকে নিদর্শনসমূহ বিস্তারিতভাবে শুনিয়ে দিয়েছি যদি তোমাদের বিবেক-বুদ্ধি থাকে।
ইরফানুল কুরআন
১১৮. হে ঈমানদারগণ! তোমাদের আপনজন ব্যতীত অন্য কাউকে ঘনিষ্ঠরূপে গ্রহণ করো না; তারা তোমাদের অনিষ্ট সাধনে (কখনো) কোনো ধরণের সুযোগ হাতছাড়া করবে না। তোমরা তীব্র কষ্টে থাকো সেটাই তারা কামনা করে, তাদের মুখেই বিদ্বেষ প্রকাশ পায় এবং তারা তাদের অন্তরে যা (অর্থাৎবিদ্বেষ) লুকিয়ে রাখে তা আরো গুরুতর। আমরা তোমাদের জন্যে নিদর্শনাবলী সুস্পষ্ট করে দিয়েছি, যদি তোমরা অনুধাবন করো।
ہٰۤاَنۡتُمۡ اُولَآءِ تُحِبُّوۡنَہُمۡ وَ لَا یُحِبُّوۡنَکُمۡ وَ تُؤۡمِنُوۡنَ بِالۡکِتٰبِ کُلِّہٖ ۚ وَ اِذَا لَقُوۡکُمۡ قَالُوۡۤا اٰمَنَّا ۚ٭ۖ وَ اِذَا خَلَوۡا عَضُّوۡا عَلَیۡکُمُ الۡاَنَامِلَ مِنَ الۡغَیۡظِ ؕ قُلۡ مُوۡتُوۡا بِغَیۡظِکُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ عَلِیۡمٌۢ بِذَاتِ الصُّدُوۡرِ ﴿۱۱۹﴾
কানযুল ঈমান
১১৯. হে, তোমরা শুনছো! তোমরা তো তাদেরকে চাও, অথচ তারা তোমাদেরকে চায় না এবং অবস্থা এ যে, তোমরা সব কিতাবের উপর ঈমান এনে থাকো। আর তারা যখন তোমাদের সাথে সাক্ষাৎ করে তখন বলে, ‘আমরা ঈমান এনেছি।’ আর যখন পৃথক হয় তখন তোমাদের উপর আক্রোশে আঙ্গুল চিবায়। আপনি বলে দিন, ‘মরে যাও নিজেদের আক্রোশে!’ আল্লাহ্ ভালোই জানেন অন্তরগুলোর কথা।
ইরফানুল কুরআন
১১৯. সতর্ক থাকো! তোমরাই তাদেরকে ভালবাসো; কিন্তু তারা তোমাদেরকে পছন্দ (পর্যন্ত) করে না। অথচ তোমরা সমস্ত কিতাবেই বিশ্বাস রাখো। আর তারা যখন তোমাদের সংশ্রবে আসে (তখন) তারা বলে, ‘আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি’, কিন্তু যখন একা হয় তখন তোমাদের উপর ক্রোধে নিজেদের আঙ্গুল কামড়ায়। বলে দিন, ‘তোমরা তোমাদের ক্রোধেই মরো’। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ অন্তরের (লুকায়িত) বিষয় সম্পর্কে সবিশেষ অবগত।
اِنۡ تَمۡسَسۡکُمۡ حَسَنَۃٌ تَسُؤۡہُمۡ ۫ وَ اِنۡ تُصِبۡکُمۡ سَیِّئَۃٌ یَّفۡرَحُوۡا بِہَا ؕ وَ اِنۡ تَصۡبِرُوۡا وَ تَتَّقُوۡا لَا یَضُرُّکُمۡ کَیۡدُہُمۡ شَیۡـًٔا ؕ اِنَّ اللّٰہَ بِمَا یَعۡمَلُوۡنَ مُحِیۡطٌ ﴿۱۲۰﴾
কানযুল ঈমান
১২০. যদি তোমাদের কোন কল্যাণ সাধিত হয় তবে তাদের খারাপ লাগে, আর তোমাদের ক্ষতি সাধিত হলে তারা তাতে খুশী হয় এবং যদি তোমরা ধৈর্য ও পরহেয্গারী অবলম্বন করে থাকো, তবে তাদের ষড়যন্ত্র তোমাদের কোন ক্ষতি করবে না। নিশ্চয় তাদের সমস্ত কাজ আল্লাহ্র আয়ত্বে রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
১২০. যদি তোমাদের কোনো কল্যাণ সাধিত হয় তবে তাদের খারাপ লাগে, আর তোমাদের কোনো অকল্যাণ সাধিত হলে তারা এতে আনন্দিত হয়। আর যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ করতে থাকো এবং পরহেযগারিতা অবলম্বন করো, তবে তাদের ষড়যন্ত্র তোমাদের কোনো ক্ষতিই করতে পারবে না। তারা যা কিছু করছে নিশ্চয়ই তা আল্লাহ্র আয়ত্বেই রয়েছে।
وَ اِذۡ غَدَوۡتَ مِنۡ اَہۡلِکَ تُبَوِّیٴُ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ مَقَاعِدَ لِلۡقِتَالِ ؕ وَ اللّٰہُ سَمِیۡعٌ عَلِیۡمٌ ﴿۱۲۱﴾ۙ
কানযুল ঈমান
১২১. বং স্মরণ করুন হে মাহবুব! যখন আপনি প্রত্যুষে আপনার বাসস্থান থেকে বের হয়েছিলেন মুসলমানদেরকে যুদ্ধের মোর্চাসমূহে সজ্জিত করার নিমিত্ত এবং আল্লাহ্ শুনেন, জানেন।
ইরফানুল কুরআন
১২১. আর (স্মরণ করুন সে সময়ের কথা) যখন আপনি অতি প্রত্যুষে আপনার বরকতময় বাসস্থান ছেড়ে বের হয়ে (যুদ্ধ-প্রাক্কালে উহুদের ময়দানে) যুদ্ধের জন্যে মুসলমানদেরকে ঘাঁটিতে মোতায়েন করছিলেন, আর আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সম্যক অবগত।
اِذۡ ہَمَّتۡ طَّآئِفَتٰنِ مِنۡکُمۡ اَنۡ تَفۡشَلَا ۙ وَ اللّٰہُ وَلِیُّہُمَا ؕ وَ عَلَی اللّٰہِ فَلۡیَتَوَکَّلِ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۱۲۲﴾
কানযুল ঈমান
১২২. যখন তোমাদের মধ্যে দু’দলের ইচ্ছা হলো যে, তারা ভীরুতা প্রদর্শন করে বসবে, এবং আল্লাহ্ উভয়ের সামালদাতা। আল্লাহ্র উপরই মুসলমানদের ভরসা থাকা চাই।
ইরফানুল কুরআন
১২২. যখন তোমাদের মধ্যে (বনু সালমা খাযরাজ এবং বনু হারিসা আউস) গোত্রদুটোর ভীরুতা প্রদর্শনের ইচ্ছা হলো, অথচ আল্লাহ্ এদের উভয়ের সহায়ক ছিলেন। আর ঈমানদারগণের উচিত আল্লাহ্র প্রতিই ভরসা করা।
وَ لَقَدۡ نَصَرَکُمُ اللّٰہُ بِبَدۡرٍ وَّ اَنۡتُمۡ اَذِلَّۃٌ ۚ فَاتَّقُوا اللّٰہَ لَعَلَّکُمۡ تَشۡکُرُوۡنَ ﴿۱۲۳﴾
কানযুল ঈমান
১২৩. এবং নিশ্চয় আল্লাহ্ বদরের যুদ্ধে তোমাদেরকে সাহায্য করেছেন যখন তোমরা সম্পূর্ণ নিরস্ত্র ছিলে। সুতরাং তোমরা আল্লাহ্কেই ভয় করো, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞ হও।
ইরফানুল কুরআন
১২৩. আর আল্লাহ্ তোমাদেরকে বদরে সাহায্য করেছিলেন, অথচ (সে সময়) তোমরা ছিলে প্রায় সরঞ্জামহীন; সুতরাং আল্লাহ্কে ভয় করতে থাকো যাতে তোমরা কৃতজ্ঞ হতে পারো।
اِذۡ تَقُوۡلُ لِلۡمُؤۡمِنِیۡنَ اَلَنۡ یَّکۡفِیَکُمۡ اَنۡ یُّمِدَّکُمۡ رَبُّکُمۡ بِثَلٰثَۃِ اٰلٰفٍ مِّنَ الۡمَلٰٓئِکَۃِ مُنۡزَلِیۡنَ ﴿۱۲۴﴾ؕ
কানযুল ঈমান
১২৪. যখন, হে মাহবুব! আপনি মুসলমানদেরকে বলেছিলেন, ‘তোমাদের জন্য কি একথা যথেষ্ট নয় যে, তোমাদের রব তোমাদেরকে সাহায্য করবেন তিন হাজার ফিরিশ্তা অবতীর্ণ করে?’
ইরফানুল কুরআন
১২৪. যখন আপনি মুসলমানদেরকে বলছিলেন, ‘তোমাদের জন্যে কি যথেষ্ট নয় যে, তোমাদের প্রতিপালক তোমাদেরকে তিন হাজার প্রেরিত ফেরেশতা দ্বারা সাহায্য করবেন?’
بَلٰۤی ۙ اِنۡ تَصۡبِرُوۡا وَ تَتَّقُوۡا وَ یَاۡتُوۡکُمۡ مِّنۡ فَوۡرِہِمۡ ہٰذَا یُمۡدِدۡکُمۡ رَبُّکُمۡ بِخَمۡسَۃِ اٰلٰفٍ مِّنَ الۡمَلٰٓئِکَۃِ مُسَوِّمِیۡنَ ﴿۱۲۵﴾
কানযুল ঈমান
১২৫. হাঁ। কেন হবে না! যদি তোমরা ধৈর্য ও পরহেয্গারী অবলম্বন করো এবং কাফির ঐ মুহুর্তেই তোমাদের উপর হামলা করে বসে তখন তোমাদের রব তোমাদের সাহায্যার্থে পাঁচ হাজার চিহ্নধারী ফিরিশ্তা প্রেরণ করবেন।
ইরফানুল কুরআন
১২৫. হ্যাঁ, যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ করো এবং পরহেযগারীতে অবিচল থাকো তবে তারা (কাফেরেরা) এ সময়ে (পূর্ণ) উদ্দীপনায় তোমাদের উপর আক্রমণ করলে তোমাদের প্রতিপালক পাঁচ হাজার বৈশিষ্ট্যমন্ডিত ফেরেশতার মাধ্যমে তোমাদেরকে সাহায্য করবেন।
وَ مَا جَعَلَہُ اللّٰہُ اِلَّا بُشۡرٰی لَکُمۡ وَ لِتَطۡمَئِنَّ قُلُوۡبُکُمۡ بِہٖ ؕ وَ مَا النَّصۡرُ اِلَّا مِنۡ عِنۡدِ اللّٰہِ الۡعَزِیۡزِ الۡحَکِیۡمِ ﴿۱۲۶﴾ۙ
কানযুল ঈমান
১২৬. এবং এ বিজয় আল্লাহ্ দান করেন নি, কিন্তু তোমাদের খুশীর জন্যই এবং এজন্যই যে, তা দ্বারা তোমাদের অন্তর শান্তনা পাবে; এবং সাহায্য নেই, কিন্তু (আছে) মহা পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় আল্লাহ্র নিকটই;
ইরফানুল কুরআন
১২৬. আর আল্লাহ্ এ (সাহায্য) করেছেন কেবল তোমাদের জন্যে সুসংবাদ এবং এর মাধ্যমে তোমাদের চিত্ত-প্রশান্তির জন্যে। আর সাহায্য তো কেবল আল্লাহ্র নিকট থেকেই হয়ে থাকে; যিনি মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাবান;
لِیَقۡطَعَ طَرَفًا مِّنَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡۤا اَوۡ یَکۡبِتَہُمۡ فَیَنۡقَلِبُوۡا خَآئِبِیۡنَ ﴿۱۲۷﴾
কানযুল ঈমান
১২৭. এ জন্য যে, কাফিরদের একটা অংশকে বিচ্ছিন্ন করবেন অথবা তাদেরকে লাঞ্ছিত করবেন, যাতে (তারা) নিরাশ হয়ে ফিরে যায়।
ইরফানুল কুরআন
১২৭. (উপরন্তু আল্লাহ্) কাফেরদের একটি দলকে ধ্বংস করেন অথবা তাদেরকে লাঞ্ছিত করেন যাতে তারা ব্যর্থ হয়ে ফিরে যায়।
لَیۡسَ لَکَ مِنَ الۡاَمۡرِ شَیۡءٌ اَوۡ یَتُوۡبَ عَلَیۡہِمۡ اَوۡ یُعَذِّبَہُمۡ فَاِنَّہُمۡ ظٰلِمُوۡنَ ﴿۱۲۸﴾
কানযুল ঈমান
১২৮. এ বিষয় আপনার হাতে নয়- হয়ত তিনি তাদেরকে তাওবার শক্তি দেবেন অথবা তাদেরকে শাস্তি দেবেন। কারণ, তারা অত্যাচারী।
ইরফানুল কুরআন
১২৮. (হে হাবীব! এখন) এ ব্যাপারে আপনার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই, হয় আল্লাহ্ তাদেরকে তওবার সক্ষমতা দেবেন অথবা তাদেরকে শাস্তি দেবেন, কেননা তারা যালিম।
وَ لِلّٰہِ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الۡاَرۡضِ ؕ یَغۡفِرُ لِمَنۡ یَّشَآءُ وَ یُعَذِّبُ مَنۡ یَّشَآءُ ؕ وَ اللّٰہُ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۱۲۹﴾
কানযুল ঈমান
১২৯. আর আল্লাহ্রই জন্য যা কিছু আসমানসমূহে রয়েছে এবং যা কিছু যমীনে; যাকে চান ক্ষমা করেন এবং যাকে চান শাস্তি দেন। আর আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, দয়াময়।
ইরফানুল কুরআন
১২৯. আর যা কিছু আকাশমন্ডলীতে রয়েছে এবং যা কিছু পৃথিবীতে, সমস্তই আল্লাহ্র। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন এবং যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন। আর আল্লাহ্ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু।
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَاۡکُلُوا الرِّبٰۤوا اَضۡعَافًا مُّضٰعَفَۃً ۪ وَ اتَّقُوا اللّٰہَ لَعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ ﴿۱۳۰﴾ۚ
কানযুল ঈমান
১৩০. হে ঈমানদারগণ! তোমরা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ খেয়ো না এবং আল্লাহ্কে ভয় করো এ আশায় যে, তোমাদের সাফল্য অর্জিত হবে।
ইরফানুল কুরআন
১৩০. হে ঈমানদারগণ! তোমরা চক্রবৃদ্ধি হারে সূদ খেও না এবং আল্লাহ্কে ভয় করো যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।
وَ اتَّقُوا النَّارَ الَّتِیۡۤ اُعِدَّتۡ لِلۡکٰفِرِیۡنَ ﴿۱۳۱﴾ۚ
কানযুল ঈমান
১৩১. এবং ঐ আগুন থেকে বাঁচো, যা কাফিরদের জন্যই তৈরী রাখা হয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
১৩১. আর সেই অগ্নিকে ভয় করো যা কাফেরদের জন্যে প্রস্তুত করা হয়েছে।
وَ اَطِیۡعُوا اللّٰہَ وَ الرَّسُوۡلَ لَعَلَّکُمۡ تُرۡحَمُوۡنَ ﴿۱۳۲﴾ۚ
কানযুল ঈমান
১৩২. এবং আল্লাহ্ ও রসূলের অনুগত থাকো এ আশায় যে, তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করা হবে।
ইরফানুল কুরআন
১৩২. আর আনুগত্য করো আল্লাহ্ এবং রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-এঁর যাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হতে পারো।
وَ سَارِعُوۡۤا اِلٰی مَغۡفِرَۃٍ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ وَ جَنَّۃٍ عَرۡضُہَا السَّمٰوٰتُ وَ الۡاَرۡضُ ۙ اُعِدَّتۡ لِلۡمُتَّقِیۡنَ ﴿۱۳۳﴾ۙ
কানযুল ঈমান
১৩৩. এবং (তোমরা) দ্রুত অগ্রসর হও নিজ রবের ক্ষমা এবং এমন বেহেশ্তের প্রতি যার প্রশস্ততায় সমস্ত আসমান ও যমীন এসে যায়, যা পরহেয্গারদের জন্য তৈরী রাখা হয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
১৩৩. আর ধাবিত হও তোমাদের প্রতিপালকের ক্ষমা এবং তাঁর জান্নাতের দিকে, যার বিস্তৃতি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী ব্যাপী, যা প্রস্তুত করা হয়েছে পরহেযগারদের জন্যে;
الَّذِیۡنَ یُنۡفِقُوۡنَ فِی السَّرَّآءِ وَ الضَّرَّآءِ وَ الۡکٰظِمِیۡنَ الۡغَیۡظَ وَ الۡعَافِیۡنَ عَنِ النَّاسِ ؕ وَ اللّٰہُ یُحِبُّ الۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿۱۳۴﴾ۚ
কানযুল ঈমান
১৩৪. ঐসব লোক, যারা আল্লাহ্র পথে ব্যয় করে সুখে ও দুঃখে, ক্রোধ-সংবরণকারীরা, মানুষের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শনকারীরাগণ। আর সৎব্যক্তিবর্ণ আল্লাহ্র প্রিয়।
ইরফানুল কুরআন
১৩৪. তারা সেসব লোক যারা স্বচ্ছল ও অস্বচ্ছল (উভয়) অবস্থাতে ব্যয় করে, ক্রোধ সংবরণ করে এবং মানুষের (ত্রুটির জন্যে তাদের) প্রতি ক্ষমাশীল। আর আল্লাহ্ পরোপকারীদেরকে ভালোবাসেন;
وَ الَّذِیۡنَ اِذَا فَعَلُوۡا فَاحِشَۃً اَوۡ ظَلَمُوۡۤا اَنۡفُسَہُمۡ ذَکَرُوا اللّٰہَ فَاسۡتَغۡفَرُوۡا لِذُنُوۡبِہِمۡ ۪ وَ مَنۡ یَّغۡفِرُ الذُّنُوۡبَ اِلَّا اللّٰہُ ۪۟ وَ لَمۡ یُصِرُّوۡا عَلٰی مَا فَعَلُوۡا وَ ہُمۡ یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۳۵﴾
কানযুল ঈমান
১৩৫. এবং ঐসব লোক, যখন তারা কোন অশ্লীলতা কিংবা স্বীয় আত্মার প্রতি যুলুম করে তখন তারা আল্লাহ্কে স্মরণ করে স্বীয় গুনাহ্র ক্ষমা প্রার্থনা করে; এবং আল্লাহ্ ব্যতীত গুনাহ কে ক্ষমা করবে? আর তারা জেনেশুনে নিজেদের কৃত অপরাধের প্রতি পুনঃপুনঃ অগ্রসর হয় না।
ইরফানুল কুরআন
১৩৫. আর (তারা) সেসব লোক যারা কোনো অশ্লীল কর্ম করে ফেললে অথবা নিজেদের প্রতি যুলুম করে ফেললে আল্লাহ্কে স্মরণ করে, অতঃপর স্বীয় পাপের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ্ ব্যতীত কে পাপ ক্ষমা করবেন? আর যে পাপ তারা করে ফেলে, জেনেশুনে তাই করতে থাকে না।
اُولٰٓئِکَ جَزَآؤُہُمۡ مَّغۡفِرَۃٌ مِّنۡ رَّبِّہِمۡ وَ جَنّٰتٌ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہَا الۡاَنۡہٰرُ خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَا ؕ وَ نِعۡمَ اَجۡرُ الۡعٰمِلِیۡنَ ﴿۱۳۶﴾ؕ
কানযুল ঈমান
১৩৬. এমন ব্যক্তিবর্গের প্রতিদান হচ্ছে তাদের রবের ক্ষমা এবং (এমন) জান্নাতসমূহ যেগুলোর পাদদেশে নহরসমূহ প্রবহমান। (তারা) এগুলোর মধ্যে সর্বদা থাকবে এবং সৎকর্মকারীদের জন্য কতোই উত্তম পুরষ্কার রয়েছে!
ইরফানুল কুরআন
১৩৬. তারাই সেসব লোক যাদের প্রতিদান তাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে ক্ষমা এবং জান্নাত, যার তলদেশে স্রোতধারা প্রবাহিত, তারা তাতে চিরকাল থাকবে। আর (সৎ) আমলকারীর জন্যে কতোই না চমৎকার প্রতিদান!
قَدۡ خَلَتۡ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ سُنَنٌ ۙ فَسِیۡرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ فَانۡظُرُوۡا کَیۡفَ کَانَ عَاقِبَۃُ الۡمُکَذِّبِیۡنَ ﴿۱۳۷﴾
কানযুল ঈমান
১৩৭. তোমাদের পূর্বে কিছু রীতি ব্যবহারের মধ্যে এসেছে। সুতরাং পৃথিবীর মধ্যে ভ্রমণ করে দেখো-কি পরিণাম হয়েছে অস্বীকারকারীদের।
ইরফানুল কুরআন
১৩৭. অতীতে তোমাদের পূর্বে (পূর্ববর্তী উম্মতদের জন্যে ঐশ্বী বিধানের) অনেক বিধান গত হয়েছে, সুতরাং তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ করো এবং দেখো মিথ্যাবাদীদের পরিণতি কী হয়েছিল!
ہٰذَا بَیَانٌ لِّلنَّاسِ وَ ہُدًی وَّ مَوۡعِظَۃٌ لِّلۡمُتَّقِیۡنَ ﴿۱۳۸﴾
কানযুল ঈমান
১৩৮. এটা মানবজাতির জন্য স্পষ্ট বর্ণনা ও পথ-প্রদর্শন এবং পরহেয্গারদের জন্য উপদেশ।
ইরফানুল কুরআন
১৩৮. এ কুরআন মানবজাতির জন্যে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা, হেদায়াত এবং পরহেযগারদের জন্যে উপদেশ।
وَ لَا تَہِنُوۡا وَ لَا تَحۡزَنُوۡا وَ اَنۡتُمُ الۡاَعۡلَوۡنَ اِنۡ کُنۡتُمۡ مُّؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۳۹﴾
কানযুল ঈমান
১৩৯. এবং না দূর্বল হও আর না দুঃখিত হও; তোমরাই বিজয়ী হবে যদি ঈমান রাখো।
ইরফানুল কুরআন
১৩৯. আর তোমরা নিরাশ হয়ো না এবং দুঃখিতও হয়ো না; বিজয়ী তোমরাই হবে যদি তোমরা (পূর্ণ) ঈমানদার হও।
اِنۡ یَّمۡسَسۡکُمۡ قَرۡحٌ فَقَدۡ مَسَّ الۡقَوۡمَ قَرۡحٌ مِّثۡلُہٗ ؕ وَ تِلۡکَ الۡاَیَّامُ نُدَاوِلُہَا بَیۡنَ النَّاسِ ۚ وَ لِیَعۡلَمَ اللّٰہُ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ یَتَّخِذَ مِنۡکُمۡ شُہَدَآءَ ؕ وَ اللّٰہُ لَا یُحِبُّ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۱۴۰﴾ۙ
কানযুল ঈমান
১৪০. যদি তোমাদের নিকট কোন কষ্ট পৌঁছে, তবে তারাও তো অনুরূপ কষ্ট পেয়েছিলো এবং এ দিনগুলো হলো এমনই যে, সেগুলোতে আমি মানুষের জন্য পর্যায়ক্রমিক আবর্তন রেখেছি এবং এ জন্য যে, আল্লাহ্ পরিচয় করিয়ে দেবেন ঈমানদারদের। আর তোমাদের মধ্য থেকে কিছু লোককে শাহাদাতের মর্যাদা দান করবেন; এবং আল্লাহ্ ভালবাসেন না অত্যাচারীদেরকে।
ইরফানুল কুরআন
১৪০. যদি তোমাদের (এখন) কোনো আঘাত লেগে থাকে তবে (মনে রেখো) তাদেরও অনুরূপ আঘাত লেগেছিল; আর এ দিনগুলোকে আমরা মানুষের মাঝে আবর্তিত করে থাকি। এ (আবর্তন) এজন্যে যে, যাতে আল্লাহ্ ঈমানদারগণের পরিচয় নির্ণয় করে দেন এবং তোমাদের মধ্য থেকে কতককে শাহাদাতের মর্যাদা দান করে দেন। আর আল্লাহ্ যালিমদেরকে পছন্দ করেন না।
وَ لِیُمَحِّصَ اللّٰہُ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ یَمۡحَقَ الۡکٰفِرِیۡنَ ﴿۱۴۱﴾
কানযুল ঈমান
১৪১. এবং এ জন্য যে, আল্লাহ্ মুসলমানদেরকে পরিচ্ছন্ন করবেন আর কাফিরদেরকে নিশ্চিহ্ন করবেন।
ইরফানুল কুরআন
১৪১. আর তা এ জন্যে(ও) যাতে আল্লাহ্ ঈমানদারগণকে (আরো পবিত্র ও) পরিশোধন করে দেন এবং কাফেরদেরকে নির্মূল করে দেন।
اَمۡ حَسِبۡتُمۡ اَنۡ تَدۡخُلُوا الۡجَنَّۃَ وَ لَمَّا یَعۡلَمِ اللّٰہُ الَّذِیۡنَ جٰہَدُوۡا مِنۡکُمۡ وَ یَعۡلَمَ الصّٰبِرِیۡنَ ﴿۱۴۲﴾
কানযুল ঈমান
১৪২. (তোমরা) কি এ ধারণায় রয়েছো যে, জান্নাতে চলে যাবে আর এখনো আল্লাহ্ তোমাদের গাযীদের পরীক্ষা করেন নি এবং না ধৈর্যশীলদেরকেও পরীক্ষা করেছেন?
ইরফানুল কুরআন
১৪২. তোমরা কি মনে করো যে, (কোন পূণ্য ছাড়াই) তোমরা জান্নাতে চলে যাবে? অথচ আল্লাহ্ এখনো পরীক্ষাও করেননি তোমাদের মধ্যে কে জিহাদ করেছে এবং যাচাই করেননি কে ধৈর্যধারণ করেছে।
وَ لَقَدۡ کُنۡتُمۡ تَمَنَّوۡنَ الۡمَوۡتَ مِنۡ قَبۡلِ اَنۡ تَلۡقَوۡہُ ۪ فَقَدۡ رَاَیۡتُمُوۡہُ وَ اَنۡتُمۡ تَنۡظُرُوۡنَ ﴿۱۴۳﴾
কানযুল ঈমান
১৪৩. এবং তোমরা তো মৃত্যু কামনা করতে সেটার সাথে সাক্ষাতের পূর্বে। সুতরাং এখন তা তোমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে তোমাদের সম্মুখে।
ইরফানুল কুরআন
১৪৩. আর তোমরা তো তাঁর সম্মুখীন হওয়ার পূর্বে (শাহাদাতের) মৃত্যু কামনা করতে, সুতরাং এখন তোমরা তা নিজের চোখের সামনে দেখলে।
وَ مَا مُحَمَّدٌ اِلَّا رَسُوۡلٌ ۚ قَدۡ خَلَتۡ مِنۡ قَبۡلِہِ الرُّسُلُ ؕ اَفَا۠ئِنۡ مَّاتَ اَوۡ قُتِلَ انۡقَلَبۡتُمۡ عَلٰۤی اَعۡقَابِکُمۡ ؕ وَ مَنۡ یَّنۡقَلِبۡ عَلٰی عَقِبَیۡہِ فَلَنۡ یَّضُرَّ اللّٰہَ شَیۡئًا ؕ وَ سَیَجۡزِی اللّٰہُ الشّٰکِرِیۡنَ ﴿۱۴۴﴾
কানযুল ঈমান
১৪৪. এবং মুহাম্মদ তো একজন রসূল। তাঁর পূর্বে আরো রসূল গত হয়েছেন। সুতরাং যদি তিনি ইন্তিকাল করেন কিংবা শহীদ হন, তবে কি তোমরা উল্টো পায়ে ফিরে যাবে? আর যে উল্টো পায়ে ফিরে যাবে সে আল্লাহ্র কোন ক্ষতি করবে না এবং অনতিবিলম্বে আল্লাহ্ কৃতজ্ঞদেরকে পুরষ্কার দেবেন।
ইরফানুল কুরআন
১৪৪. আর মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামও তো) রাসূলই (তিনি আল্লাহ্ নন)। তাঁর পূর্বেও বহু রাসূল (বিপদ ও কষ্ট সহ্য করে এ পৃথিবী থেকে) গত হয়েছেন। সুতরাং যদি তাঁর যাহিরী জীবনের অবসান ঘটে অথবা তাঁকে শহীদ করা হয়, তখন কি তোমরা তোমাদের (পূর্বের ধর্মে) উল্টো পায়ে ফিরে যাবে? (অর্থাৎ তাঁর বাহ্যিক প্রস্থান কিংবা শাহাদাতকে কি আল্লাহ্র আশ্রয় প্রার্থনা করছি] ইসলাম ধর্ম সত্য হওয়া না হওয়ার ব্যাপারে অথবা তাঁর সত্যনবী হওয়া না হওয়ার ব্যাপারে প্রয়োগ করবে?) আর যে পশ্চাদ্ধাবন করবে সে কখনো আল্লাহ্র কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। আর আল্লাহ্ অচিরেই (বিপদে ধৈর্য ধারণ করা) কৃতজ্ঞদেরকে পুরস্কৃত করবেন।
وَ مَا کَانَ لِنَفۡسٍ اَنۡ تَمُوۡتَ اِلَّا بِاِذۡنِ اللّٰہِ کِتٰبًا مُّؤَجَّلًا ؕ وَ مَنۡ یُّرِدۡ ثَوَابَ الدُّنۡیَا نُؤۡتِہٖ مِنۡہَا ۚ وَ مَنۡ یُّرِدۡ ثَوَابَ الۡاٰخِرَۃِ نُؤۡتِہٖ مِنۡہَا ؕ وَ سَنَجۡزِی الشّٰکِرِیۡنَ ﴿۱۴۵﴾
কানযুল ঈমান
১৪৫. এবং কেউ আল্লাহ্র হুকুম ব্যতীত মৃত্যুবরণ করতে পারে না, সবার সময় লিপিবদ্ধ রয়েছে। এবং যে ব্যক্তি দুনিয়ার পুরষ্কার চায়, আমি তা থেকে তাকে প্রদান করি এবং যে পরকালের পুরষ্কার চায়, আমি তা থেকে তাকে প্রদান করি আর অবিলম্বে আমি কৃতজ্ঞদেরকে পুরষ্কার দান করবো।
ইরফানুল কুরআন
১৪৫. আর আল্লাহ্র নির্দেশ ব্যতীত কেউ মৃত্যুবরণ করতে পারে না; (তার) মেয়াদ অবধারিত। বস্তুত যে পার্থিব পুরস্কার চায়, আমরা তাকে তা থেকেই কিছু প্রদান করি। পক্ষান্তরে যে পরকালের পুরস্কার চায়, আমরা তাকে তা থেকেই দেবো এবং শীগ্রই কৃতজ্ঞদেরকে (উত্তমরূপে) পুরস্কৃত করবো।
وَ کَاَیِّنۡ مِّنۡ نَّبِیٍّ قٰتَلَ ۙ مَعَہٗ رِبِّیُّوۡنَ کَثِیۡرٌ ۚ فَمَا وَہَنُوۡا لِمَاۤ اَصَابَہُمۡ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ وَ مَا ضَعُفُوۡا وَ مَا اسۡتَکَانُوۡا ؕ وَ اللّٰہُ یُحِبُّ الصّٰبِرِیۡنَ ﴿۱۴۶﴾
কানযুল ঈমান
১৪৬. এবং কতো নবীই জিহাদ করেছেন, তাদের সাথে অনেক আল্লাহ্ওয়ালা ছিলো। তারা এতে হীনবল হয়ে পড়ে নি ঐসব মুসীবতের দরুন, যেগুলো আল্লাহ্র পথে তাদের নিকট পৌঁছেছিলো; এবং না দুর্বল হয়েছে আর না দমিত হয়েছে। এবং ধৈর্যশীলগণ আল্লাহ্র নিকট প্রিয়ভাজন।
ইরফানুল কুরআন
১৪৬. আর বহু নবী ছিলেন যাঁরা সংগ্রাম করেছেন, তাঁদের সাথে আল্লাহ্র অনেক অনুরক্ত (আউলিয়াও) অংশগ্রহণ করেছিলেন; সুতরাং আল্লাহ্র পথে তাঁদের উপর আপতিত মুসিবতের কারণে তাঁরা সাহস হারাননি, ক্লান্ত হননি এবং দমেও যাননি। আর আল্লাহ্ ধৈর্যশীলদেরকে ভালোবাসেন।
وَ مَا کَانَ قَوۡلَہُمۡ اِلَّاۤ اَنۡ قَالُوۡا رَبَّنَا اغۡفِرۡ لَنَا ذُنُوۡبَنَا وَ اِسۡرَافَنَا فِیۡۤ اَمۡرِنَا وَ ثَبِّتۡ اَقۡدَامَنَا وَ انۡصُرۡنَا عَلَی الۡقَوۡمِ الۡکٰفِرِیۡنَ ﴿۱۴۷﴾
কানযুল ঈমান
১৪৭. এবং তারা কিছুই বলতো না এ প্রার্থনা ব্যতীত, ‘হে আমাদের রব! ক্ষমা করো আমাদের গুনাহ্ এবং যেসব সীমালংঘন আমরা আমাদের কাজের মধ্যে করেছি আর আমাদের পথ অবিচল করো এবং আমাদেরকে এ কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সাহায্য করো।’
ইরফানুল কুরআন
১৪৭. আর তাঁরা কেবল এ প্রার্থনাই করতেন, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! ক্ষমা করে দাও আমাদের পাপসমূহ এবং আমাদের কর্মে যা বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে তা। আর আমাদেরকে (তোমার পথে) দৃঢ়পদ রাখো এবং আমাদেরকে কাফেরদের বিরুদ্ধে বিজয়ী করো।’
فَاٰتٰىہُمُ اللّٰہُ ثَوَابَ الدُّنۡیَا وَ حُسۡنَ ثَوَابِ الۡاٰخِرَۃِ ؕ وَ اللّٰہُ یُحِبُّ الۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿۱۴۸﴾
কানযুল ঈমান
১৪৮. অতঃপর আল্লাহ্ তাদেরকে দুনিয়ার পুরষ্কার দিয়েছেন এবং পরকালের সাওয়াবের সৌন্দর্যও; আর পূণ্যবান লোকেরা আল্লাহ্র নিকট প্রিয়।
ইরফানুল কুরআন
১৪৮. অতঃপর আল্লাহ্ তাঁদেরকে দুনিয়াতেও পুরস্কার দিলেন এবং পরকালেও উত্তম প্রতিদানের মাধ্যমে অনুগ্রহ্ করবেন। আর আল্লাহ্ (সেসব) সৎকর্মপরায়ণদের ভালোবাসেন (যারা কেবল তাঁকেই কামনা করে)।
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنۡ تُطِیۡعُوا الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا یَرُدُّوۡکُمۡ عَلٰۤی اَعۡقَابِکُمۡ فَتَنۡقَلِبُوۡا خٰسِرِیۡنَ ﴿۱۴۹﴾
কানযুল ঈমান
১৪৯. হে ঈমানদারগণ! যদি তোমরা কাফিরদের কথামতো চলো; তবে তারা তোমাদের উল্টো পায়ে ফিরিয়ে দেবে অতঃপর (তোমরা) ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে ফিরবে।
ইরফানুল কুরআন
১৪৯. হে ঈমানদারগণ! যদি তোমরা কাফেরদের আনুগত্য করো তবে তারা তোমাদেরকে পেছনে (কুফরীর দিকে) ফিরিয়ে দেবে, তখন তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে।
بَلِ اللّٰہُ مَوۡلٰىکُمۡ ۚ وَ ہُوَ خَیۡرُ النّٰصِرِیۡنَ ﴿۱۵۰﴾
কানযুল ঈমান
১৫০. বরং আল্লাহ্ তোমাদের অভিভাবক এবং তিনি সর্বোকৃষ্ট সাহায্যকারী।
ইরফানুল কুরআন
১৫০. বরং আল্লাহ্ তোমাদের মাওলা (সহায়তাকারী ও অভিভাবক) এবং তিনি সবচেয়ে উত্তম সাহায্যকারী।
سَنُلۡقِیۡ فِیۡ قُلُوۡبِ الَّذِیۡنَ کَفَرُوا الرُّعۡبَ بِمَاۤ اَشۡرَکُوۡا بِاللّٰہِ مَا لَمۡ یُنَزِّلۡ بِہٖ سُلۡطٰنًا ۚ وَ مَاۡوٰىہُمُ النَّارُ ؕ وَ بِئۡسَ مَثۡوَی الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۱۵۱﴾
কানযুল ঈমান
১৫১. অনতিবিলম্বে আমি কাফিরদের অন্তরে আতঙ্কের সঞ্চার করবো; কারণ, তারা আল্লাহ্র (এমন) অংশীদার দাঁড় করিয়েছে যার উপর তিনি কোন বুঝ-শক্তি অবতীর্ণ করেন নি এবং তাদের ঠিকানা দোযখ এবং কতোই নিকৃষ্ট ঠিকানা অন্যায়কারীদের!
ইরফানুল কুরআন
১৫১. আমরা অচিরেই কাফেরদের অন্তরে (তোমাদের প্রতি) ভীতির সঞ্চার করবো, কারণ তারা সেসব বস্তুকে আল্লাহ্র অংশীদার সাব্যস্ত করে, যার সপক্ষে আল্লাহ্ কোনো দলিল অবতীর্ণ করেননি। আর তাদের ঠিকানা জাহান্নাম এবং খুবই নিকৃষ্ট যালিমদের (এ) ঠিকানা।
وَ لَقَدۡ صَدَقَکُمُ اللّٰہُ وَعۡدَہٗۤ اِذۡ تَحُسُّوۡنَہُمۡ بِاِذۡنِہٖ ۚ حَتّٰۤی اِذَا فَشِلۡتُمۡ وَ تَنَازَعۡتُمۡ فِی الۡاَمۡرِ وَ عَصَیۡتُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ مَاۤ اَرٰىکُمۡ مَّا تُحِبُّوۡنَ ؕ مِنۡکُمۡ مَّنۡ یُّرِیۡدُ الدُّنۡیَا وَ مِنۡکُمۡ مَّنۡ یُّرِیۡدُ الۡاٰخِرَۃَ ۚ ثُمَّ صَرَفَکُمۡ عَنۡہُمۡ لِیَبۡتَلِیَکُمۡ ۚ وَ لَقَدۡ عَفَا عَنۡکُمۡ ؕ وَ اللّٰہُ ذُوۡ فَضۡلٍ عَلَی الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۵۲﴾
কানযুল ঈমান
১৫২. এবং নিশ্চয় আল্লাহ্ তোমাদেরকে তাঁর প্রতিশ্রুতি সত্য করেই দেখিয়েছেন যখন তোমরা তাঁরই নির্দেশক্রমে কাফিরদেরকে হত্যা করেছিলে, এমনকি যখন তোমরা ভীরুতা প্রকাশ করেছো এবং হুকুমের মধ্যে মতভেদ সৃষ্টি করেছো আর আদেশ অমান্য করেছো এরপর যে, আল্লাহ্ তোমাদেরকে দেখিয়েছেন তোমাদের আনন্দের বস্তু। তোমাদের মধ্যে কেউ দুনিয়া চাইতো এবং তোমাদের মধ্যে কেউ আখিরাত কামনা করতো; অতঃপর তোমাদের মুখ তাদের দিক থেকে ফিরিয়ে দিয়েছেন তোমাদের পরীক্ষা করার জন্য; এবং নিশ্চয় তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন; আর আল্লাহ্ মুসলমানদের প্রতি অনুগ্রহশীল।
ইরফানুল কুরআন
১৫২. আর নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তোমাদের প্রতি স্বীয় অঙ্গীকার সত্যে পরিণত করেছেন যখন তোমরা তাঁর নির্দেশে তাদেরকে হত্যা করছিলে, যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা সাহস হারিয়ে ফেললে এবং (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের) নির্দেশের ব্যাপারে বাদানুবাদ শুরু করলে এবং তোমরা এরপর (তাঁর) অবাধ্য হলে যখন আল্লাহ্ তোমাদেরকে (বিজয়) দেখিয়েছিলেন যা তোমরা চেয়েছিলে। তোমাদের কেউ ছিলে ইহকালের প্রত্যাশী এবং তোমাদের কেউ ছিলে পরকালের অন্বেষণকারী। অতঃপর তিনি তোমাদেরকে (বশীভুত করে) তাদের থেকে ফিরিয়ে দিলেন, যাতে তিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন। (বস্তুতঃ) তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করলেন। আর আল্লাহ্ ঈমানদারগণের প্রতি অত্যন্ত অনুগ্রহশীল।
اِذۡ تُصۡعِدُوۡنَ وَ لَا تَلۡوٗنَ عَلٰۤی اَحَدٍ وَّ الرَّسُوۡلُ یَدۡعُوۡکُمۡ فِیۡۤ اُخۡرٰىکُمۡ فَاَثَابَکُمۡ غَمًّۢا بِغَمٍّ لِّکَیۡلَا تَحۡزَنُوۡا عَلٰی مَا فَاتَکُمۡ وَ لَا مَاۤ اَصَابَکُمۡ ؕ وَ اللّٰہُ خَبِیۡرٌۢ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۵۳﴾
কানযুল ঈমান
১৫৩. যখন তোমরা মুখ তুলে চলে যাচ্ছিলে এবং পেছনে ফিরে কারো দিকে তাকাচ্ছিলে না আর অপর দলের মধ্য থেকে আমার রসূল তোমাদেরকে আহ্বান করছিলেন; অতঃপর তোমাদেরকে দুঃখের পরিবর্তে দুঃখ দিয়েছেন; আর ক্ষমার বার্তা এ জন্যই শুনিয়েছেন যেন যা হাতছাড়া হয়েছে ও যে বিপদ এসে পড়েছে তজ্জন্য (তোমরা) দুঃখ বোধ না করো এবং তোমাদের কার্যাদি সম্পর্কে আল্লাহ্ অবহিত।
ইরফানুল কুরআন
১৫৩. যখন তোমরা (আতঙ্কিত অবস্থায়) পলায়ন করছিলে এবং পেছনে ফিরে কারো দিকে তাকাচ্ছিলে না, যদিও রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম) তোমাদেরকে পেছন দিক থেকে (দাঁড়িয়ে) ডাকছিলেন; তখন তিনি তোমাদেরকে ক্লেশের পর ক্লেশ দিলেন। (এগুলো উপদেশ ও প্রশিক্ষণ) যাতে তোমরা যা হারিয়েছো এবং যে বিপদ তোমাদের উপর এসে পড়েছে তার জন্যে বেদনার্ত না হও। আর আল্লাহ্ তোমাদের কর্মকান্ড সম্পর্কে অবগত।
ثُمَّ اَنۡزَلَ عَلَیۡکُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ الۡغَمِّ اَمَنَۃً نُّعَاسًا یَّغۡشٰی طَآئِفَۃً مِّنۡکُمۡ ۙ وَ طَآئِفَۃٌ قَدۡ اَہَمَّتۡہُمۡ اَنۡفُسُہُمۡ یَظُنُّوۡنَ بِاللّٰہِ غَیۡرَ الۡحَقِّ ظَنَّ الۡجَاہِلِیَّۃِ ؕ یَقُوۡلُوۡنَ ہَلۡ لَّنَا مِنَ الۡاَمۡرِ مِنۡ شَیۡءٍ ؕ قُلۡ اِنَّ الۡاَمۡرَ کُلَّہٗ لِلّٰہِ ؕ یُخۡفُوۡنَ فِیۡۤ اَنۡفُسِہِمۡ مَّا لَا یُبۡدُوۡنَ لَکَ ؕ یَقُوۡلُوۡنَ لَوۡ کَانَ لَنَا مِنَ الۡاَمۡرِ شَیۡءٌ مَّا قُتِلۡنَا ہٰہُنَا ؕ قُلۡ لَّوۡ کُنۡتُمۡ فِیۡ بُیُوۡتِکُمۡ لَبَرَزَ الَّذِیۡنَ کُتِبَ عَلَیۡہِمُ الۡقَتۡلُ اِلٰی مَضَاجِعِہِمۡ ۚ وَ لِیَبۡتَلِیَ اللّٰہُ مَا فِیۡ صُدُوۡرِکُمۡ وَ لِیُمَحِّصَ مَا فِیۡ قُلُوۡبِکُمۡ ؕ وَ اللّٰہُ عَلِیۡمٌۢ بِذَاتِ الصُّدُوۡرِ ﴿۱۵۴﴾
কানযুল ঈমান
১৫৪. অতঃপর তোমাদের প্রতি দুঃখের পর শান্তির তন্দ্রা অবতারণ করেছেন, যা তোমাদের একদলকে আচ্ছন্ন করেছিলো এবং অন্য দল স্বীয় প্রাণ রক্ষার চিন্তায় পড়েছিলো, আল্লাহ্ সম্পর্কে অমূলক ধারণা করতো জাহেলিয়াতের ধারণার মতো। তারা বলতো, ‘আমাদেরও কি এ কাজে কোনরূপ ইখতিয়ার আছে?’ আপনি বলে দিন, ‘ইখতিয়ার তো সবই আল্লাহ্র।’ (তারা) নিজেদের অন্তরে গোপন রাখে যা তোমাদের নিকট প্রকাশ করে না। (তারা) বলে, ‘যদি আমাদের কোন ইখতিয়ার থাকতো তবে আমরা এখানে নিহত হতাম না।’ আপনি বলে দিন, ‘যদি তোমরা নিজেদের ঘরে অবস্থান করতে, তবুও যাদের নিহত হওয়া লিপিবদ্ধ হয়ে গেছে তারা স্বীয় নিহত হওয়ার স্থান পর্যন্ত বের হয়ে আসতো।’ এবং এ জন্য যে, আল্লাহ্ তোমাদের অন্তরের কথা পরীক্ষা করবেন এবং যা কিছু তোমাদের অন্তরসমূহে রয়েছে তা প্রকাশ করে দেবেন আর আল্লাহ্ অন্তরগুলোর কথা জানেন।
ইরফানুল কুরআন
১৫৪. অতঃপর তিনি ক্লেশের পরে তোমাদের (প্রশান্তির) জন্যে তন্দ্রার আকারে প্রেরণ করলেন নিরাপত্তা, যা তোমাদের এক দলকে আচ্ছাদিত করেছিল; অন্যদলটি (যা ছিল মুনাফিকদের, তারা) কেবল নিজেদেরকে উদ্বিগ্ন করছিল জাহেলী যুগের ধারণার মতো আল্লাহ্ সম্পর্কে অসত্য-অবাস্তব ধারণা করে; তারা বলতে লাগলো, ‘এ ব্যাপারে আমাদেরও কি কিছু করণীয় (ক্ষমতা) রয়েছে?’ বলে দিন, ‘সমস্ত কিছু আল্লাহ্রই হাতে’। তারা তাদের অন্তরে সেসব বিষয় লুকিয়ে রেখেছে যা আপনার নিকট প্রকাশ হতে দেয় না। তারা বলে, ‘যদি এ ব্যাপারে আমাদের কোনো ক্ষমতা থাকতো তবে আমরা এ স্থানে নিহত হতাম না’। বলে দিন, ‘যদি তোমরা নিজেদের গৃহে অবস্থান করতে তবুও যাদের মৃত্যু অবধারিত ছিল তারা অবশ্যই নিজেদের নিহত হওয়ার স্থানে বের হতো’। আর তা এ জন্যে (করা হয়েছে) যে, যা তোমাদের অন্তরে রয়েছে আল্লাহ্ তা পরীক্ষা করেন এবং (কুমন্ত্রণা হিসেবে) যা তোমাদের হৃদয়ে রয়েছে তা পরিশোধন করেন। আর আল্লাহ্ অন্তরের লুকায়িত বিষয় সম্পর্কে সম্যক অবগত।
اِنَّ الَّذِیۡنَ تَوَلَّوۡا مِنۡکُمۡ یَوۡمَ الۡتَقَی الۡجَمۡعٰنِ ۙ اِنَّمَا اسۡتَزَلَّہُمُ الشَّیۡطٰنُ بِبَعۡضِ مَا کَسَبُوۡا ۚ وَ لَقَدۡ عَفَا اللّٰہُ عَنۡہُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ غَفُوۡرٌ حَلِیۡمٌ ﴿۱۵۵﴾
কানযুল ঈমান
১৫৫. নিশ্চয় তোমাদের মধ্য থেকে যারা ফিরে গেছে, যেদিন উভয় পক্ষের সৈন্যরা মুখোমুখি হয়েছিলো, শয়তানই তাদের পদঙ্খলন ঘটিয়েছে তাদের কোন কৃতকর্মের কারণে; এবং নিশ্চয় আল্লাহ্ তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। নিশ্চয় আল্লাহ্ ক্ষমাপরায়ণ, সহনশীল।
ইরফানুল কুরআন
১৫৫. নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে যারা সেদিন পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেছিলে যেদিন উভয় সৈন্যবাহিনী পরস্পরে প্রচন্ড যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিল, তাদের কৃতকর্মের কারণে শয়তানই তাদের পদস্খলন ঘটিয়েছিল। অবশ্য আল্লাহ্ তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ অত্যন্ত ক্ষমাপরায়ণ, পরম ধৈর্যশীল।
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَکُوۡنُوۡا کَالَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا وَ قَالُوۡا لِاِخۡوَانِہِمۡ اِذَا ضَرَبُوۡا فِی الۡاَرۡضِ اَوۡ کَانُوۡا غُزًّی لَّوۡ کَانُوۡا عِنۡدَنَا مَا مَاتُوۡا وَ مَا قُتِلُوۡا ۚ لِیَجۡعَلَ اللّٰہُ ذٰلِکَ حَسۡرَۃً فِیۡ قُلُوۡبِہِمۡ ؕ وَ اللّٰہُ یُحۡیٖ وَ یُمِیۡتُ ؕ وَ اللّٰہُ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ بَصِیۡرٌ ﴿۱۵۶﴾
কানযুল ঈমান
১৫৬. হে ঈমানদারগণ! ঐ কাফিরদের মতো হয়ো না, যারা তাদের ভাইদের সম্পর্কে বলেছে, যখন তারা সফর কিংবা জিহাদে গেছে, ‘(তারা) যদি আমাদের নিকট থাকতো তবে না মারা যেতো, এবং না নিহত হতো।’ এ জন্য যে, আল্লাহ্ তাদের অন্তরে এর আফসোস (বদ্ধমূল করে) রাখবেন। আর আল্লাহ্ জীবন দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান; এবং আল্লাহ্ তোমাদের কর্ম দেখছেন।
ইরফানুল কুরআন
১৫৬. হে ঈমানদারগণ! তোমরা ঐসব কাফেরদের মতো হয়ো না যারা যখন তাদের ভ্রাতৃগণ (কোথাও) সফরে গমন করে অথবা জিহাদ করে (এবং সেখানে মৃত্যুবরণ করে), তখন তাদের সম্পর্কে বলে, ‘যদি তারা আমাদের নিকট থাকতো তবে তারা মারাও যেতো না আর নিহতও হতো না’। বস্তুতঃ আল্লাহ্ এ (ধারণা) দ্বারা তাদের মনে অনুতাপ সৃষ্ঠি করেন। অথচ আল্লাহ্ই জীবিত রাখেন এবং মৃত্যু ঘটান। আর আল্লাহ্ তোমাদের কর্মকান্ড খুব ভালোভাবে দেখছেন।
وَ لَئِنۡ قُتِلۡتُمۡ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ اَوۡ مُتُّمۡ لَمَغۡفِرَۃٌ مِّنَ اللّٰہِ وَ رَحۡمَۃٌ خَیۡرٌ مِّمَّا یَجۡمَعُوۡنَ ﴿۱۵۷﴾
কানযুল ঈমান
১৫৭. আর নিশ্চয় যদি তোমরা আল্লাহ্র পথে নিহত হও অথবা মৃত্যুবরণ করো তবে আল্লাহ্র ক্ষমা ও অনুগ্রহ তাদের সমস্ত ধন-দৌলত অপেক্ষা শ্রেয়।
ইরফানুল কুরআন
১৫৭. আর যদি তোমরা আল্লাহ্র পথে নিহত হও অথবা মৃত্যুবরণ করো, তবে আল্লাহ্র ক্ষমা ও অনুগ্রহ সেসব (সম্পদ ও উপভোগ সামগ্রী) থেকে উত্তম যা তোমরা জমা করো।
وَ لَئِنۡ مُّتُّمۡ اَوۡ قُتِلۡتُمۡ لَاِالَی اللّٰہِ تُحۡشَرُوۡنَ ﴿۱۵۸﴾
কানযুল ঈমান
১৫৮. এবং যদি তোমরা মৃত্যুবরণ করো কিংবা নিহত হও, তবে আল্লাহ্রই দিকে তোমরা উত্থিত হবে।
ইরফানুল কুরআন
১৫৮. আর তোমরা মৃত্যুবরণই করো অথবা নিহত হও, তোমরা (সবাই) আল্লাহ্রই নিকট সমবেত হবে।
فَبِمَا رَحۡمَۃٍ مِّنَ اللّٰہِ لِنۡتَ لَہُمۡ ۚ وَ لَوۡ کُنۡتَ فَظًّا غَلِیۡظَ الۡقَلۡبِ لَانۡفَضُّوۡا مِنۡ حَوۡلِکَ ۪ فَاعۡفُ عَنۡہُمۡ وَ اسۡتَغۡفِرۡ لَہُمۡ وَ شَاوِرۡہُمۡ فِی الۡاَمۡرِ ۚ فَاِذَا عَزَمۡتَ فَتَوَکَّلۡ عَلَی اللّٰہِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ یُحِبُّ الۡمُتَوَکِّلِیۡنَ ﴿۱۵۹﴾
কানযুল ঈমান
১৫৯. অতঃপর কেমনই আল্লাহ্র কিছু দয়া হয়েছে যে, হে মাহবুব! আপনি তাদের জন্য কোমল-হৃদয় হয়েছেন। আর যদি আপনি রূঢ় ও কঠোরচিত হতেন তবে তারা নিশ্চয় আপনার আশপাশ থেকে পেরেশান হয়ে যেত। সুতরাং আপনি তাদেরকে ক্ষমা করে দিন এবং তাদের জন্য সুপারিশ করুন আর কার্যাদিতে তাদের সাথে পরামর্শ করুন! এবং যখন কোন কাজের ইচ্ছা পাকাপোক্ত করবেন তখন আল্লাহ্র উপর নির্ভর করুন। নিঃসন্দেহে, নির্ভরকারীরা আল্লাহ্র প্রিয়ভাজন।
ইরফানুল কুরআন
১৫৯. (হে আমার আরাধ্য প্রিয় হাবীব!) অতএব আল্লাহ্র কতো অনুগ্রহ যে, আপনি তাদের জন্যে কোমল প্রকৃতির হয়েছেন। পক্ষান্তরে আপনি যদি রুক্ষ (ও) কঠোর হৃদয় হতেন তবে লোকেরা আপনার নিকট থেকে ছুটে পালাতো। সুতরাং আপনি তাদেরকে ক্ষমা করুন, তাদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করুন এবং (গুরুত্বপূর্ণ) কর্মকান্ডে তাদের সাথে পরামর্শ করুন। অতঃপর যখন আপনি দৃঢ় সংকল্প করবেন, তখন আল্লাহ্র প্রতি ভরসা করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ভরসাকারীদেরকে ভালোবাসেন।
اِنۡ یَّنۡصُرۡکُمُ اللّٰہُ فَلَا غَالِبَ لَکُمۡ ۚ وَ اِنۡ یَّخۡذُلۡکُمۡ فَمَنۡ ذَا الَّذِیۡ یَنۡصُرُکُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِہٖ ؕ وَ عَلَی اللّٰہِ فَلۡیَتَوَکَّلِ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۱۶۰﴾
কানযুল ঈমান
১৬০. যদি আল্লাহ্ তোমাদের সাহায্য করেন, তবে কেউ তোমাদের উপর জয়ী হতে পারবেনা আর যদি তিনি তোমাদের পরিত্যাগ করেন, তবে এমন কে আছে, যে এরপর তোমাদের সাহায্য করবে? এবং মুসলমানদের আল্লাহ্রই উপর ভরসা থাকা চাই।
ইরফানুল কুরআন
১৬০. যদি আল্লাহ্ তোমাদেরকে সাহায্য করেন, তবে তোমাদের উপর কেউই বিজয়ী হতে পারবে না। আর যদি তিনি তোমাদেরকে অসহায় অবস্থায় ছেড়ে দেন, তবে এমন কে আছে যে তাঁর পর তোমাদেরকে সাহায্য করতে পারে? আর মুমিনদের আল্লাহ্রই উপর ভরসা করা উচিত।
وَ مَا کَانَ لِنَبِیٍّ اَنۡ یَّغُلَّ ؕ وَ مَنۡ یَّغۡلُلۡ یَاۡتِ بِمَا غَلَّ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ۚ ثُمَّ تُوَفّٰی کُلُّ نَفۡسٍ مَّا کَسَبَتۡ وَ ہُمۡ لَا یُظۡلَمُوۡنَ ﴿۱۶۱﴾
কানযুল ঈমান
১৬১. এবং কোন নবীর প্রতি এ ধারণা হতে পারেনা যে, তিনি কিছু গোপন রাখবেন। এবং যে ব্যক্তি কিছু গোপন রাখবে, সে ক্বিয়ামতের দিন স্বীয় গোপন করা বস্তু নিয়ে আসবে। তারপর প্রত্যেককে তার উপার্জন পূর্ণমাত্রায় দেয়া হবে এবং তাদের উপর যুলুম হবে না।
ইরফানুল কুরআন
১৬১. আর কোনো নবীর ব্যাপারেই অনুমেয় নয় যে, তিনি কিছু গোপন করবেন। আর যে কেউ (কারো অধিকার) গোপন করে কিয়ামতের দিন তাকে তা নিয়ে আসতে হবে যা সে গোপন করেছিল। অতঃপর প্রত্যেককে তার আমলের পূর্ণ প্রতিদান দেয়া হবে এবং তাদের প্রতি কোনো যুলুম করা হবে না।
اَفَمَنِ اتَّبَعَ رِضۡوَانَ اللّٰہِ کَمَنۡۢ بَآءَ بِسَخَطٍ مِّنَ اللّٰہِ وَ مَاۡوٰىہُ جَہَنَّمُ ؕ وَ بِئۡسَ الۡمَصِیۡرُ ﴿۱۶۲﴾
কানযুল ঈমান
১৬২. তবে কি যে ব্যক্তি আল্লাহ্র সন্তুষ্টি অনুযায়ী চলেছে, সে তারই মতো হবে, যে আল্লাহ্র ক্রোধের পাত্র হয়েছে এবং তার ঠিকানা জাহান্নাম? এবং তা কতোই নিকৃষ্ট জায়গা প্রর্ত্যাবর্তনের!
ইরফানুল কুরআন
১৬২. আশ্চর্য! যে ব্যক্তি আল্লাহ্র সন্তুষ্টির অনুগত হয়ে গিয়েছে, সে কিভাবে ঐ ব্যক্তির ন্যায় হতে পারে যে আল্লাহ্র ক্রোধের পাত্র হয়েছে? আর জাহান্নামই তার ঠিকানা এবং তা খুবই মন্দ স্থান।
ہُمۡ دَرَجٰتٌ عِنۡدَ اللّٰہِ ؕ وَ اللّٰہُ بَصِیۡرٌۢ بِمَا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۶۳﴾
কানযুল ঈমান
১৬৩. তাঁরা আল্লাহ্র নিকট বিভিন্ন স্তরের; এবং আল্লাহ্ তাদের কাজ প্রত্যক্ষ করছেন।
ইরফানুল কুরআন
১৬৩. আল্লাহ্র সমীপে তাদের জন্যে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন স্তর। আর আল্লাহ্ তাদের কর্মকান্ড ভালোভাবে প্রত্যক্ষ করেন।
لَقَدۡ مَنَّ اللّٰہُ عَلَی الۡمُؤۡمِنِیۡنَ اِذۡ بَعَثَ فِیۡہِمۡ رَسُوۡلًا مِّنۡ اَنۡفُسِہِمۡ یَتۡلُوۡا عَلَیۡہِمۡ اٰیٰتِہٖ وَ یُزَکِّیۡہِمۡ وَ یُعَلِّمُہُمُ الۡکِتٰبَ وَ الۡحِکۡمَۃَ ۚ وَ اِنۡ کَانُوۡا مِنۡ قَبۡلُ لَفِیۡ ضَلٰلٍ مُّبِیۡنٍ ﴿۱۶۴﴾
কানযুল ঈমান
১৬৪. নিশ্চয় আল্লাহ্র মহান অনুগ্রহ হয়েছে মুসলমানদের উপর যে, তাদের মধ্যে তাদেরই মধ্য থেকে একজন রসূল প্রেরণ করেছেন, যিনি তাদের উপর তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করেন এবং তাদেরকে পবিত্র করেন আর তাদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দান করেন এবং তারা নিশ্চয় এর পূর্বে স্পষ্ট গোমরাহীতে ছিলো।
ইরফানুল কুরআন
১৬৪. নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ মুসলমানদের প্রতি বড় অনুগ্রহ করেছেন যে, তিনি তাদের মধ্য থেকে (মহিমার অধিকারী) রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামকে) প্রেরণ করেছেন; যিনি তাদের নিকট তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করেন, তাদেরকে পরিশোধন করেন এবং তাদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেন। যদিও ইতিপূর্বে তারা ছিল সুস্পষ্ট গোমরাহীতে নিমজ্জিত।
اَوَ لَمَّاۤ اَصَابَتۡکُمۡ مُّصِیۡبَۃٌ قَدۡ اَصَبۡتُمۡ مِّثۡلَیۡہَا ۙ قُلۡتُمۡ اَنّٰی ہٰذَا ؕ قُلۡ ہُوَ مِنۡ عِنۡدِ اَنۡفُسِکُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ ﴿۱۶۵﴾
কানযুল ঈমান
১৬৫. যখন তোমাদের নিকট কোন মুসীবত পৌঁছে; অথচ তোমরা এর দ্বিগুণ পৌঁছিয়েছো, তখন কি তোমরা এ কথা বলতে থাকবে যে, ‘এটা কোত্থেকে এসেছে?’ (হে হাবীব!) আপনি বলে দিন, ‘সেটা তোমাদেরই তরফ থেকে এসেছে।’ নিশ্চয় আল্লাহ্ সব কিছু করতে পারেন।
ইরফানুল কুরআন
১৬৫. যখন তোমাদের উপর এক মুসিবত উপস্থিত হলো, যার দ্বিগুণ তোমরা (শত্রুদের প্রতি) ঘটিয়েছিলে, তখন কি তোমরা বলতে শুরু করে দিলে, ‘এটি কোথা থেকে আসলো?’ বলে দিন, ‘এটি তোমাদের নিজেদেরই পক্ষ থেকে’। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সকল কিছুর উপর সর্বময় ক্ষমতাবান।
وَ مَاۤ اَصَابَکُمۡ یَوۡمَ الۡتَقَی الۡجَمۡعٰنِ فَبِاِذۡنِ اللّٰہِ وَ لِیَعۡلَمَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۶۶﴾ۙ
কানযুল ঈমান
১৬৬. এবং ঐ মুসীবত, যা তোমাদের উপর এসেছে যেদিন উভয় সৈন্যদল পরষ্পর সম্মুখীন হয়েছিলো, তা আল্লাহ্র নির্দেশে ছিলো। আর এ জন্য যে, পরিচয় করিয়ে দেবেন ঈমানদারদের;
ইরফানুল কুরআন
১৬৬. আর সেদিন যখন উভয় বাহিনী পরস্পরে মুখোমুখি হয়েছিল তখন তোমাদের উপর যে বিপর্যয় নেমে এসেছিল, তা তো আল্লাহ্র অনুমতিক্রমেই ঘটেছিল। আর তা এ জন্যে যে, আল্লাহ্ ঈমানদারদের পরিচয় প্রকাশ করেন,
وَ لِیَعۡلَمَ الَّذِیۡنَ نَافَقُوۡا ۚۖ وَ قِیۡلَ لَہُمۡ تَعَالَوۡا قَاتِلُوۡا فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ اَوِ ادۡفَعُوۡا ؕ قَالُوۡا لَوۡ نَعۡلَمُ قِتَالًا لَّا تَّبَعۡنٰکُمۡ ؕ ہُمۡ لِلۡکُفۡرِ یَوۡمَئِذٍ اَقۡرَبُ مِنۡہُمۡ لِلۡاِیۡمَانِ ۚ یَقُوۡلُوۡنَ بِاَفۡوَاہِہِمۡ مَّا لَیۡسَ فِیۡ قُلُوۡبِہِمۡ ؕ وَ اللّٰہُ اَعۡلَمُ بِمَا یَکۡتُمُوۡنَ ﴿۱۶۷﴾ۚ
কানযুল ঈমান
১৬৭. এবং এ জন্য যে, পরিচয় করিয়ে দেবেন তাদের, যারা মুনাফিক হয়েছে আর তাদেরকে বলা হয়েছে, ‘এসো! আল্লাহ্র পথে যুদ্ধ করো কিংবা শত্রুদেরকে হটিয়ে দাও।’ (তারা) বললো, ‘যদি আমরা লড়াই হবে জানতাম, তবে অবশ্যই তোমাদের সাথে থাকতাম।’ আর সেদিন তারা বাহ্যিক ঈমানের চেয়ে প্রকাশ্য কুফরের অধিকতর নিকটে ছিলো। (তারা) নিজ মুখে তাই বলে, যা অন্তরে নেই এবং আল্লাহ্র জানা আছে যা তারা গোপন করছে।
ইরফানুল কুরআন
১৬৭. আর তিনি সেসব লোকদেরও পরিচয় প্রকাশ করেন, যারা মুনাফিক। আর যখন তাদেরকে বলা হলো, ‘আসো, আল্লাহ্র পথে যুদ্ধ করো অথবা (শত্রুর আক্রমণ) প্রতিহত করো’, তখন তারা বলতে শুরু করলো, ‘যদি আমরা জানতাম যে, (বাস্তবে কোনো) যুদ্ধ হবে (অথবা আমরা একে আল্লাহ্র পথে যুদ্ধ মনে করতাম) তবে অবশ্যই তোমাদের অনুসরণ করতাম’। সেদিন তারা (প্রকাশ্য) ঈমান থেকে প্রকাশ্য কুফরীর নিকটতর ছিল। তারা তাদের মুখে যা বলে তা তাদের অন্তরে নেই। আর আল্লাহ্ (সেসব বিষয়) খুব ভালোভাবেই অবগত যা তারা গোপন রাখে।
اَلَّذِیۡنَ قَالُوۡا لِاِخۡوَانِہِمۡ وَ قَعَدُوۡا لَوۡ اَطَاعُوۡنَا مَا قُتِلُوۡا ؕ قُلۡ فَادۡرَءُوۡا عَنۡ اَنۡفُسِکُمُ الۡمَوۡتَ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ ﴿۱۶۸﴾
কানযুল ঈমান
১৬৮. ওই সব লোক, যারা আপন ভাইদের সম্পর্কে বলেছে অথচ নিজেরা যুদ্ধ থেকে বিরত ছিলো, ‘তারা যদি আমাদের কথা মানতো, তবে নিহত হতো না।’ আপনি বলে দিন, ‘তবে তোমরা তোমাদের মৃত্যুকে ঠেকাও যদি তোমরা সত্যবাদী হও।’
ইরফানুল কুরআন
১৬৮. (তারা) সেসব লোক যারা নিজেরা (গৃহে) বসে থেকে নিজেদের ভাইদের ব্যাপারে বলতো, ‘যদি তারা আমাদের কথা মেনে চলতো তবে নিহত হতো না’। বলুন, ‘তোমরা নিজেদেরকে মৃত্যু থেকে রক্ষা করো, যদি তোমরা সত্যবাদী হও’।
وَ لَا تَحۡسَبَنَّ الَّذِیۡنَ قُتِلُوۡا فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ اَمۡوَاتًا ؕ بَلۡ اَحۡیَآءٌ عِنۡدَ رَبِّہِمۡ یُرۡزَقُوۡنَ ﴿۱۶۹﴾ۙ
কানযুল ঈমান
১৬৯. এবং যারা আল্লাহ্র পথে নিহত হয়েছে, কখনো তাদেরকে মৃত বলে ধারণা করো না, বরং তারা নিজ রবের নিকট জীবিত রয়েছে, জীবিকা পায়;
ইরফানুল কুরআন
১৬৯. আর যারা আল্লাহ্র পথে নিহত হয় তাদেরকে কখনো মৃত বলে ধারণা(ও) করো না। বরং তারা নিজেদের প্রতিপালকের নিকট জীবিত, তাদেরকে (জান্নাতের নিয়ামতরাজির) রিযিক দেয়া হয়।
فَرِحِیۡنَ بِمَاۤ اٰتٰہُمُ اللّٰہُ مِنۡ فَضۡلِہٖ ۙ وَ یَسۡتَبۡشِرُوۡنَ بِالَّذِیۡنَ لَمۡ یَلۡحَقُوۡا بِہِمۡ مِّنۡ خَلۡفِہِمۡ ۙ اَلَّا خَوۡفٌ عَلَیۡہِمۡ وَ لَا ہُمۡ یَحۡزَنُوۡنَ ﴿۱۷۰﴾ۘ
কানযুল ঈমান
১৭০. তারা উৎফুল্ল এরই উপর, যা আল্লাহ্ তাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহক্রমে দান করেছেন এবং আনন্দ উদযাপন করছে তাদের পরবর্তীদের জন্য, যারা এখনো তাদের সাথে মিলিত হয় নি, এজন্য যে, তাদের না কোন আশংকা আছে এবং না কোন দুঃখ।
ইরফানুল কুরআন
১৭০. তারা সেসবের উপর তুষ্ট ও আনন্দিত, আল্লাহ্ স্বীয় অনুগ্রহ থেকে (অনন্ত জীবনের) যা কিছু তাদেরকে দান করেছেন; আর তাদের পরবর্তীদের জন্যেও, যারা (এখনো) তাদের সাথে মিলিত হয়নি, (তাদেরকে ঈমান ও আনুগত্যের পথে দেখে) আনন্দ প্রকাশ করে যে, তাদের জন্যেও কোনো ভয় থাকবে না আর তারা চিন্তিতও হবে না।
یَسۡتَبۡشِرُوۡنَ بِنِعۡمَۃٍ مِّنَ اللّٰہِ وَ فَضۡلٍ ۙ وَّ اَنَّ اللّٰہَ لَا یُضِیۡعُ اَجۡرَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۷۱﴾ۚۛ
কানযুল ঈমান
১৭১. তারা আনন্দ উদযাপন করে আল্লাহ্র নি’মাত ও অনুগ্রহের উপর এবং এ জন্য যে, আল্লাহ্ মুসলমানদের প্রতিদান বিনষ্ট করেন না।
ইরফানুল কুরআন
১৭১. তারা আল্লাহ্র (নৈকট্যে উন্মোচনের) নিয়ামত এবং (মিলনানন্দের) অনুগ্রহে আনন্দিত, আর এ কারণে(ও) যে, আল্লাহ্ ঈমানদারদের প্রতিদান বিনষ্ট করেন না।
اَلَّذِیۡنَ اسۡتَجَابُوۡا لِلّٰہِ وَ الرَّسُوۡلِ مِنۡۢ بَعۡدِ مَاۤ اَصَابَہُمُ الۡقَرۡحُ ؕۛ لِلَّذِیۡنَ اَحۡسَنُوۡا مِنۡہُمۡ وَ اتَّقَوۡا اَجۡرٌ عَظِیۡمٌ ﴿۱۷۲﴾ۚ
কানযুল ঈমান
১৭২. ঐসব লোক, যারা আল্লাহ্ ও রসূলের আহ্বানে সাড়া দিয়ে হাযির হয়েছে এরপর যে, তারা যখমপ্রাপ্ত হয়েছিলো; তাদের মধ্যেকার নেক্কার ও পরহেয্গারদের জন্য মহা সাওয়াব রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
১৭২. আঘাতপ্রাপ্ত হবার পরও যারা আল্লাহ্ ও রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-এঁর নির্দেশে সাড়া দিয়েছে, তাদের মধ্যে যারা অনুগ্রহশীল এবং পরহেযগার তাদের জন্যে রয়েছে মহা প্রতিদান।
اَلَّذِیۡنَ قَالَ لَہُمُ النَّاسُ اِنَّ النَّاسَ قَدۡ جَمَعُوۡا لَکُمۡ فَاخۡشَوۡہُمۡ فَزَادَہُمۡ اِیۡمَانًا ٭ۖ وَّ قَالُوۡا حَسۡبُنَا اللّٰہُ وَ نِعۡمَ الۡوَکِیۡلُ ﴿۱۷۳﴾
কানযুল ঈমান
১৭৩. ঐসব লোক, যাদেরকে লোকেরা বলেছে, ‘লোকেরা তোমাদের বিরুদ্ধে দলবদ্ধ হয়েছে; সুতরাং তাদেরকে ভয় করো।’ অতঃপর তাদের ঈমান আরো বৃদ্ধি পেয়েছে আর (তারা) বললো, ‘আল্লাহ্ই আমাদের জন্য যথেষ্ট।’ এবং (তিনি) কতোই উত্তম কর্মব্যবস্থাপক!
ইরফানুল কুরআন
১৭৩. (তারা হলো) সেসব লোক যাদেরকে লোকেরা বলেছিল, ‘তোমাদেরকে মুকাবেলার জন্যে বিপক্ষ দলের (বিশাল সংখ্যক) লোক সমবেত হয়েছে, কাজেই তাদেরকে ভয় করো’। কিন্তু এ (তথ্য) তাদের ঈমান আরো দৃঢ়তর করেছিল এবং তারা বলেছিল, ‘আল্লাহ্ই আমাদের জন্যে যথেষ্ট, আর তিনি কতো উত্তম অভিভাবক’।
فَانۡقَلَبُوۡا بِنِعۡمَۃٍ مِّنَ اللّٰہِ وَ فَضۡلٍ لَّمۡ یَمۡسَسۡہُمۡ سُوۡٓءٌ ۙ وَّ اتَّبَعُوۡا رِضۡوَانَ اللّٰہِ ؕ وَ اللّٰہُ ذُوۡ فَضۡلٍ عَظِیۡمٍ ﴿۱۷۴﴾
কানযুল ঈমান
১৭৪. অতঃপর তারা ফিরে গেলো আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও করুণা সহকারে যে, তাদেরকে কোন অনিষ্ট স্পর্শ করেনি; এবং (তারা) আল্লাহ্র সন্তুষ্টির উপর চলেছে। আর আল্লাহ্ মহা অনুগ্রহশীল।
ইরফানুল কুরআন
১৭৪. অতঃপর তারা (মুসলমানেরা) আল্লাহ্র অবদান ও অনুগ্রহ নিয়ে ফিরে এসেছিল, তাদেরকে কোনো অনিষ্ট স্পর্শ করেনি, আর তারা আনুগত্য করেছিল আল্লাহ্র সন্তুষ্টির। বস্তুতঃ আল্লাহ্ মহা অনুগ্রহশীল।
اِنَّمَا ذٰلِکُمُ الشَّیۡطٰنُ یُخَوِّفُ اَوۡلِیَآءَہٗ ۪ فَلَا تَخَافُوۡہُمۡ وَ خَافُوۡنِ اِنۡ کُنۡتُمۡ مُّؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۷۵﴾
কানযুল ঈমান
১৭৫. তারাতো শয়তানই যে, আপন বন্ধুরদেরকে ভীতি প্রদর্শন করে। সুতরাং তাদেরকে ভয় করো না এবং আমাকে ভয় করো যদি ঈমান রাখো।
ইরফানুল কুরআন
১৭৫. নিশ্চয় এ (চর) শয়তানই, যে (তোমাদেরকে) তার বন্ধুদের ভয় দেখায়, সুতরাং তাদেরকে ভয় করো না এবং ভয় করো আমাকেই, যদি তোমরা মুমিন হও।
وَ لَا یَحۡزُنۡکَ الَّذِیۡنَ یُسَارِعُوۡنَ فِی الۡکُفۡرِ ۚ اِنَّہُمۡ لَنۡ یَّضُرُّوا اللّٰہَ شَیۡئًا ؕ یُرِیۡدُ اللّٰہُ اَلَّا یَجۡعَلَ لَہُمۡ حَظًّا فِی الۡاٰخِرَۃِ ۚ وَ لَہُمۡ عَذَابٌ عَظِیۡمٌ ﴿۱۷۶﴾
কানযুল ঈমান
১৭৬. হে মাহবুব! আপনি তাদের জন্য কোন দুঃখ করবেন না যারা কুফরের উপর দৌঁড়াচ্ছে। তারা আল্লাহ্র কোন ক্ষতি করতে পারবে না এবং আল্লাহ্ চান যে, পরকালে তাদের জন্য কোন অংশ রাখবেন না আর তাদের জন্য মহা শাস্তি রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
১৭৬. (হে সমগ্র মানবজাতির সমব্যথী!) যারা কুফরীর (সহায়তার) ক্ষেত্রে অতি দ্রুত অগ্রসর হয়, তারা যেন আপনাকে চিন্তিত না করে। তারা আল্লাহ্র (দ্বীনের) কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। আর আল্লাহ্ পরকালে তাদের জন্যে কোনো অংশ না রাখার ইচ্ছা করেন, এবং তাদের জন্যে রয়েছে কঠিন শাস্তি।
اِنَّ الَّذِیۡنَ اشۡتَرَوُا الۡکُفۡرَ بِالۡاِیۡمَانِ لَنۡ یَّضُرُّوا اللّٰہَ شَیۡئًا ۚ وَ لَہُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ﴿۱۷۷﴾
কানযুল ঈমান
১৭৭. (নিশ্চয়) যারা ঈমানের বিনিময়ে কুফর ক্রয় করেছে, (তারা) আল্লাহ্র কোন ক্ষতি করতে পারবে না এবং তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি।
ইরফানুল কুরআন
১৭৭. নিশ্চয়ই যারা ঈমানের পরিবর্তে কুফরী ক্রয় করেছে, তারা আল্লাহ্র কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। আর তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
وَ لَا یَحۡسَبَنَّ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡۤا اَنَّمَا نُمۡلِیۡ لَہُمۡ خَیۡرٌ لِّاَنۡفُسِہِمۡ ؕ اِنَّمَا نُمۡلِیۡ لَہُمۡ لِیَزۡدَادُوۡۤا اِثۡمًا ۚ وَ لَہُمۡ عَذَابٌ مُّہِیۡنٌ ﴿۱۷۸﴾
কানযুল ঈমান
১৭৮. এবং কখনো কাফিরদের এ ধারণায় থাকা উচিৎ নয় যে, আমি তাদেরকে যেই অবকাশ দিই তা তাদের জন্য কিছু মঙ্গল। আমিতো এ জন্যই তাদেরকে অবকাশ দিই, যাতে গুনাহ্ আরো বৃদ্ধি এবং তাদের জন্য লাঞ্চনার শাস্তি রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
১৭৮. আর কাফেরেরা যেন কখনো এ ধারণা না করে যে, আমরা তাদেরকে তাদের মঙ্গলের জন্যে এ অবকাশ দিচ্ছি। আমরা তো কেবল (এ) অবকাশ দিচ্ছি যাতে তাদের অপরাধ আরো বৃদ্ধি পায়। আর (পরিশেষে) তাদের জন্যে রয়েছে লাঞ্ছনাকর শাস্তি।
مَا کَانَ اللّٰہُ لِیَذَرَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ عَلٰی مَاۤ اَنۡتُمۡ عَلَیۡہِ حَتّٰی یَمِیۡزَ الۡخَبِیۡثَ مِنَ الطَّیِّبِ ؕ وَ مَا کَانَ اللّٰہُ لِیُطۡلِعَکُمۡ عَلَی الۡغَیۡبِ وَ لٰکِنَّ اللّٰہَ یَجۡتَبِیۡ مِنۡ رُّسُلِہٖ مَنۡ یَّشَآءُ ۪ فَاٰمِنُوۡا بِاللّٰہِ وَ رُسُلِہٖ ۚ وَ اِنۡ تُؤۡمِنُوۡا وَ تَتَّقُوۡا فَلَکُمۡ اَجۡرٌ عَظِیۡمٌ ﴿۱۷۹﴾
কানযুল ঈমান
১৭৯. আল্লাহ্ মুসলমানদেরকে এ অবস্থায় ছাড়বার নন, যে অবস্থায় তোমরা রয়েছো যে পর্যন্ত না পৃথক করবেন অপবিত্রকে পবিত্র থেকে এবং আল্লাহ্র শান এ নয় যে, হে সর্বসাধারণ! তোমাদেরকে অদৃশ্যের জ্ঞান দিয়ে দেবেন। হাঁ, আল্লাহ্ নির্বাচিত করে নেন তার রসূলগণের মধ্য থেকে যাঁকে চান। সুতরাং ঈমান আনো আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলগণের উপর; এবং যদি তোমরা ঈমান আনো আর পরহেয্গারী অবলম্বন করো, তবে তোমাদের জন্য মহা প্রতিদান রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
১৭৯. আর আল্লাহ্ কখনো মুসলমানদেরকে এ অবস্থায় ছেড়ে দেবেন না যে অবস্থায় তোমরা (এখন) আছো, যতক্ষণ পর্যন্ত না তিনি অপবিত্রতাকে পবিত্রতা থেকে পৃথক করেন। (হে জনসাধারণ!) আর আল্লাহ্র শান এ নয় যে, তিনি তোমাদেরকে অদৃশ্যের বিষয় অবগত করবেন, তবে আল্লাহ্ স্বীয় রাসূলগণের মধ্যে যাঁকে ইচ্ছা (অদৃশ্যের জ্ঞানের জন্যে) মনোনীত করেন। অতএব তোমরা আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূলগণে বিশ্বাস স্থাপন করো। বস্তুতঃ যদি তোমরা বিশ্বাস স্থাপন করো এবং পরহেযগারিতা অবলম্বন করো, তবে তোমাদের জন্যে রয়েছে মহা পুরস্কার।
وَ لَا یَحۡسَبَنَّ الَّذِیۡنَ یَبۡخَلُوۡنَ بِمَاۤ اٰتٰہُمُ اللّٰہُ مِنۡ فَضۡلِہٖ ہُوَ خَیۡرًا لَّہُمۡ ؕ بَلۡ ہُوَ شَرٌّ لَّہُمۡ ؕ سَیُطَوَّقُوۡنَ مَا بَخِلُوۡا بِہٖ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ؕ وَ لِلّٰہِ مِیۡرَاثُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ وَ اللّٰہُ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ خَبِیۡرٌ ﴿۱۸۰﴾
কানযুল ঈমান
১৮০. এবং যারা কার্পণ্য করে ঐ জিনিষের মধ্যে, যা আল্লাহ্ তাদেরকে আপন করুণায় দান করেছেন, তারা কখনো যেন সেটাকে নিজের জন্য মঙ্গলজনক মনে না করে; বরং সেটা তাদের জন্য অকল্যাণকর। তারা যেসব সম্পদের মধ্যে কার্পণ্য করেছিলো অদূর ভবিষ্যতে, ক্বিয়ামতের দিন সেগুলো তাদের গলার শৃংখল হবে এবং আল্লাহ্ই স্বত্বাধিকারী আসমানসমূহ ও যমীনের আর আল্লাহ্ তোমাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে অবগত।
ইরফানুল কুরআন
১৮০. আর আল্লাহ্ তাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহ থেকে যা কিছু (ধন-সম্পদ) দান করেছেন যারা তা থেকে দান করার ক্ষেত্রে কৃপণতা করে তারা যেন কখনো এ কৃপণতাকে নিজেদের জন্যে মঙ্গলজনক মনে না করে, বরং তাদের জন্যে তা ক্ষতিকর। যাতে তারা কৃপণতা করতো অচিরেই কিয়ামতের দিন তাদের (গলায়) সেসব সম্পদের বেড়ী পরানো হবে। আর আল্লাহ্ই আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর উত্তরাধিকারী।(অর্থাৎ যেভাবে তিনি এখন সবকিছুর মালিক, ঠিক একইভাবে তোমাদের সবার মৃত্যুর পরও তিনিই সমগ্র বিশ্বভ্রম্মান্ডের মালিক থাকবেন।) আর আল্লাহ্ তোমাদের সমস্ত কর্মকান্ড সম্পর্কে সম্যক অবগত।
لَقَدۡ سَمِعَ اللّٰہُ قَوۡلَ الَّذِیۡنَ قَالُوۡۤا اِنَّ اللّٰہَ فَقِیۡرٌ وَّ نَحۡنُ اَغۡنِیَآءُ ۘ سَنَکۡتُبُ مَا قَالُوۡا وَ قَتۡلَہُمُ الۡاَنۡۢبِیَآءَ بِغَیۡرِ حَقٍّ ۙ وَّ نَقُوۡلُ ذُوۡقُوۡا عَذَابَ الۡحَرِیۡقِ ﴿۱۸۱﴾
কানযুল ঈমান
১৮১. নিশ্চয় আল্লাহ্ শুনেছেন (তাদের উক্তি), যারা বলেছে, ‘আল্লাহ্ অভাবগ্রস্থ এবং আমরা অভাবমুক্ত।’ এখন আমি লিখে রাখবো তাদের উক্তি এবং নবীগণকে তাদের অন্যায়ভাবে শহীদ করার কথাও, আর বলবো, ‘ভোগ করো আগুনের শাস্তি।’
ইরফানুল কুরআন
১৮১. নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তাদের কথা শুনেছেন যারা বলে, ‘আল্লাহ্ অভাবগ্রস্ত আর আমরা ধনবান’। তারা যা বলে তা এবং তাদের নবীগণকে অন্যায়ভাবে হত্যা আমরা এখন লিপিবদ্ধ করে রাখবো এবং (কিয়ামতের দিন) বলবো, ‘(এখন তোমরা) দহন যন্ত্রণা আস্বাদন করো’।
ذٰلِکَ بِمَا قَدَّمَتۡ اَیۡدِیۡکُمۡ وَ اَنَّ اللّٰہَ لَیۡسَ بِظَلَّامٍ لِّلۡعَبِیۡدِ ﴿۱۸۲﴾ۚ
কানযুল ঈমান
১৮২. এটা হচ্ছে বদলা সেটারই, যা তোমাদের হাতগুলো আগে প্রেরণ করেছে এবং আল্লাহ্ বান্দাদের উপর অত্যাচার করেন না।
ইরফানুল কুরআন
১৮২. তা তোমাদের কর্মের প্রতিদান যা তোমাদের হস্তসমূহ অগ্রে প্রেরণ করেছিল। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বান্দাদের উপর যুলুমকারী নন।
اَلَّذِیۡنَ قَالُوۡۤا اِنَّ اللّٰہَ عَہِدَ اِلَیۡنَاۤ اَلَّا نُؤۡمِنَ لِرَسُوۡلٍ حَتّٰی یَاۡتِیَنَا بِقُرۡبَانٍ تَاۡکُلُہُ النَّارُ ؕ قُلۡ قَدۡ جَآءَکُمۡ رُسُلٌ مِّنۡ قَبۡلِیۡ بِالۡبَیِّنٰتِ وَ بِالَّذِیۡ قُلۡتُمۡ فَلِمَ قَتَلۡتُمُوۡہُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ ﴿۱۸۳﴾
কানযুল ঈমান
১৮৩. ঐসব লোক, যারা বলে, ‘আল্লাহ্ আমাদের নিকট থেকে অঙ্গীকার নিয়েছেন যেন আমরা কোন রসূলের উপর ঈমান না আনি যতক্ষণ না তিনি এমন ক্বোরবানীর হুকুম নিয়ে আসেন, যাকে আগুন গ্রাস করে;’ আপনি বলুন, ‘আমার পূর্বে অনেক রসূল তোমাদের নিকট স্পষ্ট নিদর্শনাদি এবং ঐ হুকুম নিয়ে এসেছেন, যা তোমরা বলছো। অতঃপর তোমরা কেন তাঁদেরকে শহীদ করেছো, যদি তোমরা সত্যবাদী হও?’
ইরফানুল কুরআন
১৮৩. যারা (অর্থাৎ ইহুদীরা বিকল্প বাহানায়) বলে, ‘আল্লাহ্ আমাদেরকে এ নির্দেশ দিয়েছেন যে, আমরা কোনো রাসূলের উপর বিশ্বাস স্থাপন করবো না যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা (নিজেদের রিসালাতের প্রমাণে) এমন কুরবানী করেন যা অগ্নি (এসে) গ্রাস করবে’। (তাদেরকে) বলে দিন, ‘নিশ্চয়ই আমার পূর্বে অসংখ্য রাসূল সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী নিয়ে এসেছিলেন এবং এমন নিদর্শনাবলী নিয়েও (এসেছিলেন) যা তোমরা বলছো। তবে (এতদসত্বেও) তোমরা কেন তাদেরকে শহীদ করেছিলে, যদি তোমরা (এতোই) সত্যবাদী হও?’
فَاِنۡ کَذَّبُوۡکَ فَقَدۡ کُذِّبَ رُسُلٌ مِّنۡ قَبۡلِکَ جَآءُوۡ بِالۡبَیِّنٰتِ وَ الزُّبُرِ وَ الۡکِتٰبِ الۡمُنِیۡرِ ﴿۱۸۴﴾
কানযুল ঈমান
১৮৪. অতঃপর হে মাহবুব! যদি তারা আপনাকে অস্বীকার করে, তবে আপনার পূর্ববর্তী রসূলগণকেও অস্বীকার করা হয়েছে, যারা স্পষ্ট নিদর্শনাদি, সহীফাসমূহ এবং দীপ্তিমান কিতাব নিয়ে এসেছিলো।
ইরফানুল কুরআন
১৮৪. এরপরও যদি আপনাকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করে, তবে (হে মাহবুব, আপনি ব্যথিত হবেন না,) আপনার পূর্বেও বহু রাসূলকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করা হয়েছিলো, যারা সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী (অর্থাৎ অলৌকিক ঘটনাবলী), পুস্তিকা এবং আলোকোজ্জ্বল কিতাব নিয়ে আগমন করেছিলেন।
کُلُّ نَفۡسٍ ذَآئِقَۃُ الۡمَوۡتِ ؕ وَ اِنَّمَا تُوَفَّوۡنَ اُجُوۡرَکُمۡ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ؕ فَمَنۡ زُحۡزِحَ عَنِ النَّارِ وَ اُدۡخِلَ الۡجَنَّۃَ فَقَدۡ فَازَ ؕ وَ مَا الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَاۤ اِلَّا مَتَاعُ الۡغُرُوۡرِ ﴿۱۸۵﴾
কানযুল ঈমান
১৮৫. প্রত্যেককে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে এবং তোমাদের কর্মফল তো ক্বিয়ামতের দিনই পূর্ণ মাত্রায় মিলবে। সুতরাং যাকে আগুন থেকে রক্ষা করে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে, সে উদ্দেশ্যস্থলে পৌঁছেছে এবং পার্থিব জীবনতো এ ধোকারই সম্পদ।
ইরফানুল কুরআন
১৮৫. প্রত্যেক প্রাণই মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করবে; আর তোমাদের প্রতিদান তো কিয়ামতের দিনেই পূর্ণ করে দেয়া হবে। অতঃপর যাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করা হয়েছে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে, সে বাস্তবিকই সফলকাম হয়েছে। আর পার্থিব জীবন প্রতারণার সামগ্রী ব্যতীত আর কিছুই নয়।
لَتُبۡلَوُنَّ فِیۡۤ اَمۡوَالِکُمۡ وَ اَنۡفُسِکُمۡ ۟ وَ لَتَسۡمَعُنَّ مِنَ الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡکِتٰبَ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ وَ مِنَ الَّذِیۡنَ اَشۡرَکُوۡۤا اَذًی کَثِیۡرًا ؕ وَ اِنۡ تَصۡبِرُوۡا وَ تَتَّقُوۡا فَاِنَّ ذٰلِکَ مِنۡ عَزۡمِ الۡاُمُوۡرِ ﴿۱۸۶﴾
কানযুল ঈমান
১৮৬. নিশ্চয় নিশ্চয় তোমাদের পরীক্ষা হবে তোমাদের ধনৈঃশ্বর্য এবং তোমাদের প্রাণসমূহের ক্ষেত্রে। আর নিশ্চয় নিশ্চয় তোমরা পূর্ববর্তী কিতাবীগণ ও মুশরিকদের থেকে বহু কিছু মন্দ শুনবে আর তোমরা যদি ধৈর্যধারণ করো এবং বাঁচতে থাকো, তবে এটা হচ্ছে বড়ই সাহসের কাজ।
ইরফানুল কুরআন
১৮৬. (হে মুসলমানগণ!) তোমাদেরকে অবশ্য অবশ্যই তোমাদের সম্পদ এবং তোমাদের জীবন সম্পর্কে পরীক্ষা করা হবে। আর তোমরা সর্বাবস্থায় তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছিলো এবং যারা মুশরিক তাদের নিকট থেকে অনেক (তিরস্কারসূচক) কষ্টদায়ক কথা শুনবে। আর যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ করতে থাকো এবং পরহেযগারিতা অবলম্বন করো তবে তা হবে খুবই দৃঢ়সংকল্প কর্মকান্ডের অন্তর্ভুক্ত।
وَ اِذۡ اَخَذَ اللّٰہُ مِیۡثَاقَ الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡکِتٰبَ لَتُبَیِّنُنَّہٗ لِلنَّاسِ وَ لَا تَکۡتُمُوۡنَہٗ ۫ فَنَبَذُوۡہُ وَرَآءَ ظُہُوۡرِہِمۡ وَ اشۡتَرَوۡا بِہٖ ثَمَنًا قَلِیۡلًا ؕ فَبِئۡسَ مَا یَشۡتَرُوۡنَ ﴿۱۸۷﴾
কানযুল ঈমান
১৮৭. এবং স্মরণ করুন, যখন আল্লাহ্ অঙ্গীকার গ্রহণ করেছেন তাদের নিকট থেকে, যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে (এ মর্মে) যে, ‘তোমরা নিশ্চয় সেটা মানুষের নিকট স্পষ্টভাবে বর্ণনা করবে এবং গোপন করবে না।’ অতঃপর তারা সেটাকে আপন পৃষ্ঠপেছনে নিক্ষেপ করেছে এবং সেটার পরিবর্তে হীন মূল্য গ্রহণ করেছে। সুতরাং কতোই মন্দ খরিদ্দারী!
ইরফানুল কুরআন
১৮৭. আর আল্লাহ্ যখন দৃঢ় অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলেন তাদের থেকে যাদেরকে কিতাব প্রদান করা হয়েছিলো, ‘তোমরা মানুষের কাছে তা স্পষ্টভাবে বর্ণনা করবে এবং (যা কিছু এতে বর্ণিত আছে) তা গোপন করবে না’, তখন তারা সে অঙ্গীকারকে পশ্চাতে নিক্ষেপ করেছিলো এবং এর পরিবর্তে সামান্য মূল্য গ্রহণ করেছিলো। কাজেই তাদের এ লেনদেন খুবই নিকৃষ্ট।
لَا تَحۡسَبَنَّ الَّذِیۡنَ یَفۡرَحُوۡنَ بِمَاۤ اَتَوۡا وَّ یُحِبُّوۡنَ اَنۡ یُّحۡمَدُوۡا بِمَا لَمۡ یَفۡعَلُوۡا فَلَا تَحۡسَبَنَّہُمۡ بِمَفَازَۃٍ مِّنَ الۡعَذَابِ ۚ وَ لَہُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ﴿۱۸۸﴾
কানযুল ঈমান
১৮৮. কখনো ধারণা করবেন না তাদেরকে, যারা সন্তুষ্ট হয় আপন কৃতকর্মের উপর এবং চায় যে, কাজ করা ছাড়াই তাদের প্রশংসা কারা হোক; এমন লোকদেরকে শাস্তি থেকে কখনো দূরে মনে করবেন না এবং তাদের জন্য বেদনাদায়ক শাস্তি রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
১৮৮. আপনি কখনো তাদেরকে (মুক্তিপ্রাপ্ত) মনে করবেন না, যারা নিজেদের বক্র কর্মকান্ডে আনন্দিত হয় এবং যা করেনি এমন কর্মের জন্যে প্রশংসা কামনা করে। (পুনরায় জোর প্রদানের জন্যে:) আর আপনি কখনোই ধারণা করবেন না যে, তারা শাস্তি থেকে মুক্তি পাবে। আর তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
وَ لِلّٰہِ مُلۡکُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ وَ اللّٰہُ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ ﴿۱۸۹﴾
কানযুল ঈমান
১৮৯. এবং আল্লাহ্রই জন্য আসমানসমূহ এবং যমীনের বাদশাহী আর আল্লাহ্ প্রত্যেক বস্তুর উপর শক্তিমান।
ইরফানুল কুরআন
১৮৯. আর আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌম ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহ্রই। আর আল্লাহ্ সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান (সুতরাং তোমাদের নিজেদের গভীর মনোনিবেশ ও ভরসা তাঁরই উপর রাখো)।
اِنَّ فِیۡ خَلۡقِ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ وَ اخۡتِلَافِ الَّیۡلِ وَ النَّہَارِ لَاٰیٰتٍ لِّاُولِی الۡاَلۡبَابِ ﴿۱۹۰﴾ۚۙ
কানযুল ঈমান
১৯০. নিশ্চয় আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টি এবং রাত ও দিনের পরষ্পর পরিবর্তনাদির মধ্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে বিবেকবানদের জন্য;
ইরফানুল কুরআন
১৯০. নিশ্চয়ই আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টিতে এবং দিন ও রাতের আবর্তনে (আল্লাহ্র কুদরতের) নিদর্শনাবলী রয়েছে সুস্থ বিবেকবানদের জন্যে;
الَّذِیۡنَ یَذۡکُرُوۡنَ اللّٰہَ قِیٰمًا وَّ قُعُوۡدًا وَّ عَلٰی جُنُوۡبِہِمۡ وَ یَتَفَکَّرُوۡنَ فِیۡ خَلۡقِ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ۚ رَبَّنَا مَا خَلَقۡتَ ہٰذَا بَاطِلًا ۚ سُبۡحٰنَکَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿۱۹۱﴾
কানযুল ঈমান
১৯১. যারা আল্লাহ্র স্মরণ করে দাঁড়িয়ে, বসে এবং করটের উপর শুয়ে আর আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টির মধ্যে গভীর চিন্তা-ভাবনা করে; হে আমাদের রব! তুমি এটা নিরর্থক সৃষ্টি করোনি; পবিত্রতা তোমারই, সুতরাং আমাদেরকে দোযখের শাস্তি থেকে রক্ষা করো।
ইরফানুল কুরআন
১৯১. তারা সেসব লোক যারা আল্লাহ্কে স্মরণ করে (আপাদমস্তক আত্মসমর্পণকারীরূপে) দাঁড়িয়ে, (পরিপূর্ণ আদব রক্ষা করে) উপবিষ্ট হয়ে, (ভালোবাসায় ব্যাকুল হয়ে) নিজেদের পার্শ্ব পরিবর্তনে এবং গভীর চিন্তা করে (কার্যসম্পাদনকারীর মহত্ব ও সৌন্দর্য প্রভায়) আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টিতে। (অতঃপর মারিফাতের আনন্দে পরিচিত হয়ে, স্বতঃস্ফূর্তভাবে ডেকে উঠে) ‘হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি এ (সবকিছু) প্রজ্ঞা ও কৌশলবিহীন সৃষ্টি করোনি। তুমি (সকল অক্ষমতা ও বাধ্যবাধকতা থেকে) পূতঃপবিত্র। সুতরাং আমাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা করো।
رَبَّنَاۤ اِنَّکَ مَنۡ تُدۡخِلِ النَّارَ فَقَدۡ اَخۡزَیۡتَہٗ ؕ وَ مَا لِلظّٰلِمِیۡنَ مِنۡ اَنۡصَارٍ ﴿۱۹۲﴾
কানযুল ঈমান
১৯২. হে আমাদের রব! নিশ্চয় তুমি যাকে দোযখে নিয়ে যাবে, অবশ্যই তাকে তুমি লাঞ্ছনা দিয়েছো এবং অত্যাচারীদের কোন সাহায্যকারী নেই।
ইরফানুল কুরআন
১৯২. হে আমাদের প্রতিপালক! নিশ্চয়ই তুমি কাউকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করলে, তবে তাকে তুমি অবশ্যই অপমানিত করলে এবং যালিমদের কোনো সাহায্যকারী নেই।
رَبَّنَاۤ اِنَّنَا سَمِعۡنَا مُنَادِیًا یُّنَادِیۡ لِلۡاِیۡمَانِ اَنۡ اٰمِنُوۡا بِرَبِّکُمۡ فَاٰمَنَّا ٭ۖ رَبَّنَا فَاغۡفِرۡ لَنَا ذُنُوۡبَنَا وَ کَفِّرۡ عَنَّا سَیِّاٰتِنَا وَ تَوَفَّنَا مَعَ الۡاَبۡرَارِ ﴿۱۹۳﴾ۚ
কানযুল ঈমান
১৯৩. হে আমাদের রব! আমরা এক আহ্বানকারীকে (এরূপ আহ্বান করতে) শুনেছি, যিনি ঈমান আনার জন্য আহ্বান করেন, ‘আপন রবের উপর ঈমান আনো।’ সুতরাং আমরা ঈমান এনেছি। হে আমাদের রব! সুতরাং আমাদের গুনাহ্ ক্ষমা করে দাও এবং আমাদের মন্দ কাজগুলো নিশ্চিহু করে দাও! আর আমাদের মৃত্যু নেক্কারদের সাথে করো।
ইরফানুল কুরআন
১৯৩. হে আমাদের প্রতিপালক! (আমরা তোমার ব্যাপারে বিস্মৃত ছিলাম) কাজেই আমরা এক আহ্বানকারীকে ঈমানের দিকে আহ্বান করতে শুনেছি, ‘(হে লোকেরা!) তোমাদের প্রতিপালকের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করো’, তখন আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। হে আমাদের প্রতিপালক! এখন আমাদের গোনাহ্ ক্ষমা করে দাও, আমাদের (আমলনামা) থেকে আমাদের ত্রুটিসমূহ মুছে দাও এবং আমাদেরকে সৎকর্মশীল লোকদের সাহচর্যে মৃত্যু দান করো।
رَبَّنَا وَ اٰتِنَا مَا وَعَدۡتَّنَا عَلٰی رُسُلِکَ وَ لَا تُخۡزِنَا یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ؕ اِنَّکَ لَا تُخۡلِفُ الۡمِیۡعَادَ ﴿۱۹۴﴾
কানযুল ঈমান
১৯৪. হে রব আমাদের! এবং আমাদেরকে সেটা প্রদান করো, যার ওয়াদা তুমি আমাদের সাথে আপন রসূলগণের মাধ্যমে করেছো; এবং আমাদেরকে ক্বিয়ামতের দিন অপমানিত করো না। নিঃসন্দেহে, তুমি ওয়াদা ভঙ্গ করো না।
ইরফানুল কুরআন
১৯৪. হে আমাদের প্রতিপালক! আর আমাদেরকে সেসব কিছু দান করো, যার ব্যাপারে তুমি আমাদেরকে তোমার রাসূলের মাধ্যমে প্রতিশ্রুতি দিয়েছো এবং আমাদেরকে কিয়ামতের দিন অপমানিত করো না। নিশ্চয়ই তুমি অঙ্গীকারের ব্যতিক্রম করো না।’
فَاسۡتَجَابَ لَہُمۡ رَبُّہُمۡ اَنِّیۡ لَاۤ اُضِیۡعُ عَمَلَ عَامِلٍ مِّنۡکُمۡ مِّنۡ ذَکَرٍ اَوۡ اُنۡثٰی ۚ بَعۡضُکُمۡ مِّنۡۢ بَعۡضٍ ۚ فَالَّذِیۡنَ ہَاجَرُوۡا وَ اُخۡرِجُوۡا مِنۡ دِیَارِہِمۡ وَ اُوۡذُوۡا فِیۡ سَبِیۡلِیۡ وَ قٰتَلُوۡا وَ قُتِلُوۡا لَاُکَفِّرَنَّ عَنۡہُمۡ سَیِّاٰتِہِمۡ وَ لَاُدۡخِلَنَّہُمۡ جَنّٰتٍ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہَا الۡاَنۡہٰرُ ۚ ثَوَابًا مِّنۡ عِنۡدِ اللّٰہِ ؕ وَ اللّٰہُ عِنۡدَہٗ حُسۡنُ الثَّوَابِ ﴿۱۹۵﴾
কানযুল ঈমান
১৯৫. অতঃপর তাদের প্রার্থনা কবূল করেছেন তাদের রব (আর বললেন,) ‘আমি তোমাদের মধ্যেকার কর্মনিষ্ঠ ব্যক্তিদের পরিশ্রম নিষ্ফল করি না সে পুরুষ হোক, কিংবা নারী। তোমরা পরষ্পর এক। সুতারাং ঐসব লোক, যারা হিজরত করেছে, নিজেদের ঘর থেকে বহিষ্কৃত হয়েছে, আমার রাস্তায় নির্যাতিত হয়েছে এবং যুদ্ধ করেছে ও নিহত হয়েছে, আমি নিশ্চয় তাদের সমস্ত পাপ মোচন করবো এবং নিশ্চয় তাদেরকে এমন বাগানসমূহে নিয়ে যাবো, যেগুলোর পাদদেশে নহরসমূহ প্রবহমান; আল্লাহ্র নিকটকার পুরষ্কার স্বরুপ এবং আল্লাহ্রই নিকট উত্তম পুরষ্কার রয়েছে।’
ইরফানুল কুরআন
১৯৫. অতঃপর তাদের প্রতিপালক তাদের দু’য়া কবুল করলেন (এবং বললেন,) ‘নিশ্চয়ই আমি তোমাদের মধ্যে শ্রমে নিয়োজিত কোনো ব্যক্তির পারিশ্রমিক নষ্ট করি না, হোক সে পুরুষ কিংবা নারী। তোমরা সকলে একে অপরের অন্তর্ভুক্ত। অতঃপর যেসব লোক (আল্লাহ্র জন্যে) স্বদেশ ছেড়েছে, (তাঁরই কারণে) নিজ গৃহ থেকে উৎখাত হয়েছে, আমার পথে নির্যাতিত হয়েছে, (আমারই নিমিত্তে) যুদ্ধ করেছে এবং নিহত হয়েছে, তবে আমি অবশ্যই তাদের (আমলনামা) থেকে তাদের গোনাহ্ মুছে দেবো। আর তাদেরকে অবশ্যই প্রবেশ করাবো জান্নাতে, যার তলদেশে স্রোতধারা প্রবাহিত। এ হলো আল্লাহ্র নিকট থেকে পুরস্কার। আল্লাহ্রই নিকট রয়েছে (এর চেয়েও) উত্তম প্রতিদান।
لَا یَغُرَّنَّکَ تَقَلُّبُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا فِی الۡبِلَادِ ﴿۱۹۶﴾ؕ
কানযুল ঈমান
১৯৬. হে শ্রোতা! শহরগুলোতে কাফিরদের হেলেদুলে বিচরণ করা কখনো যেন তোমাকে ধোকা না দেয়।
ইরফানুল কুরআন
১৯৬. (হে আল্লাহ্র বান্দা!) নগরীতে কাফেরদের (আরাম আয়েশের সাথে) বিচরণ যেন তোমাকে বিভ্রান্ত না করে।
مَتَاعٌ قَلِیۡلٌ ۟ ثُمَّ مَاۡوٰىہُمۡ جَہَنَّمُ ؕ وَ بِئۡسَ الۡمِہَادُ ﴿۱۹۷﴾
কানযুল ঈমান
১৯৭. সামান্য উপভোগ (মাত্র)। অতঃপর তাদের ঠিকানা হচ্ছে দোযখ এবং কতোই নিকৃষ্ট বিছানা!
ইরফানুল কুরআন
১৯৭. এ তো (কিছু দিনের) সামান্য ভোগ মাত্র, এরপর তাদের ঠিকানা হবে জাহান্নাম। আর তা খুবই নিকৃষ্ট ঠিকানা।
لٰکِنِ الَّذِیۡنَ اتَّقَوۡا رَبَّہُمۡ لَہُمۡ جَنّٰتٌ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہَا الۡاَنۡہٰرُ خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَا نُزُلًا مِّنۡ عِنۡدِ اللّٰہِ ؕ وَ مَا عِنۡدَ اللّٰہِ خَیۡرٌ لِّلۡاَبۡرَارِ ﴿۱۹۸﴾
কানযুল ঈমান
১৯৮. কিন্তু ঐসব লোক, যারা স্বীয় রবকে ভয় করে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতসমূহ, যেগুলোর নিম্মদেশে নহরসমূহ প্রবহমান, (তারা) সর্বদা সেগুলোর মধ্যে থাকবে আল্লাহ্র পক্ষ থেকে আতিথ্যস্বরুপ এবং যা আল্লাহ্র নিকট রয়েছে তা সৎকর্মপরায়ণদের জন্য সর্বাপেক্ষা শ্রেয়।
ইরফানুল কুরআন
১৯৮. কিন্তু যারা তাদের প্রতিপালককে ভয় করে তাদের জন্যে রয়েছে উদ্যান, যার তলদেশে স্রোতধারা প্রবাহিত, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। আল্লাহ্র পক্ষ থেকে (তাদের জন্যে) রয়েছে আপ্যায়ন; আর (অধিকন্তু তাঁর নৈকট্যের মহল, সৌন্দর্য প্রভা, সাক্ষাতের অনুগ্রহ, মোটকথা) যা কিছুই আল্লাহ্র নিকট রয়েছে, তা পূণ্যবান লোকদের জন্যে খুবই উত্তম।
وَ اِنَّ مِنۡ اَہۡلِ الۡکِتٰبِ لَمَنۡ یُّؤۡمِنُ بِاللّٰہِ وَ مَاۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡکُمۡ وَ مَاۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡہِمۡ خٰشِعِیۡنَ لِلّٰہِ ۙ لَا یَشۡتَرُوۡنَ بِاٰیٰتِ اللّٰہِ ثَمَنًا قَلِیۡلًا ؕ اُولٰٓئِکَ لَہُمۡ اَجۡرُہُمۡ عِنۡدَ رَبِّہِمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ سَرِیۡعُ الۡحِسَابِ ﴿۱۹۹﴾
কানযুল ঈমান
১৯৯. এবং নিশ্চয় কিছু সংখ্যক কিতাবী এমন রয়েছে, যারা আল্লাহ্র উপর ঈমান আনে আর সেটার উপরও, যা তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং যা তাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে, তাদের অন্তর আল্লাহ্র সম্মুখে বিনয়াবনত, আল্লাহ্র আয়াতসমূহের পরিবর্তে হীন মূল্য গ্রহণ করে না। এরা ঐসব লোক, যাদের সাওয়াব তাদের রবের নিকট রয়েছে; এবং আল্লাহ্ সহসা হিসাব গ্রহণকারী।
ইরফানুল কুরআন
১৯৯. আর নিশ্চয়ই আহলে কিতাবের কিছু এমনও রয়েছে যারা বিশ্বাস করে আল্লাহ্তে, তোমাদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে এবং তাদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছিলো তাতে; আর তাদের অন্তর আল্লাহ্র সমীপে বিনয়াবনত থাকে এবং তারা আল্লাহ্র আয়াতসমূহ স্বল্পমূল্যে বিক্রয় করে না। এরাই তারা, যাদের প্রতিদান তাদের প্রতিপালকের নিকট রয়েছে। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ দ্রুত হিসাবগ্রহণকারী।
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اصۡبِرُوۡا وَ صَابِرُوۡا وَ رَابِطُوۡا ۟ وَ اتَّقُوا اللّٰہَ لَعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ ﴿۲۰۰﴾
কানযুল ঈমান
২০০. হে ঈমানদারগণ! ধৈর্যধারণ করো এবং ধৈর্যে শত্রুদের চেয়ে এগিয়ে থাকো আর সীমান্তে ইসলামী রাষ্টের রক্ষণাবেক্ষন করো এবং আল্লাহ্কে ভয় করতে থাকো এ আশায় যে, কৃতকার্য হবে।
ইরফানুল কুরআন
২০০. হে ঈমানদারগণ! ধৈর্য ধারণ করো, দৃঢ়পদ হওয়ার ক্ষেত্রে (শত্রুদের চেয়েও) অধিক পরিশ্রম করো, (শান্তি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সংগ্রামের জন্যে) ভালোভাবে প্রস্তুত থাকো এবং (সর্বদা) আল্লাহ্কে ভয় করতে থাকো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।