بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
কানযুল ঈমান
০. আল্লাহ্র নামে আরম্ভ, যিনি পরম দয়ালু, করুণাময় (১)
ইরফানুল কুরআন
০. আল্লাহর নামে শুরু, যিনি পরম করুণাময়, সতত অসীম দয়ালু।
وَالذّٰرِیٰتِ ذَرۡوًا ۙ﴿۱﴾
কানযুল ঈমান
১. শপথ সেগুলোরই, যেগুলো বিক্ষিপ্ত করে উড়িয়ে থাকে;
ইরফানুল কুরআন
১. শপথ ঝঞ্ঝাবায়ুর,
فَالۡحٰمِلٰتِ وِقۡرًا ۙ﴿۲﴾
কানযুল ঈমান
২. অতঃপর যেগুলো বোঝা বহন করে;
ইরফানুল কুরআন
২. অতঃপর শপথ ভারী (বর্ষণ) বোঝাবহনকারী মেঘপুঞ্জের,
فَالۡجٰرِیٰتِ یُسۡرًا ۙ﴿۳﴾
কানযুল ঈমান
৩. অতঃপর যেগুলো নম্রভাবে চলাচল করে;
ইরফানুল কুরআন
৩. অতঃপর শপথ মৃদু চলমান নৌযানের,
فَالۡمُقَسِّمٰتِ اَمۡرًا ۙ﴿۴﴾
কানযুল ঈমান
৪. অতঃপর যেগুলো নির্দেশক্রমে বন্টন করে;
ইরফানুল কুরআন
৪. অতঃপর শপথ কর্ম বন্টনকারী ফেরেশতাগণের,
اِنَّمَا تُوۡعَدُوۡنَ لَصَادِقٌ ۙ﴿۵﴾
কানযুল ঈমান
৫. নিশ্চয় যে কথার তোমাদেরকে ওয়াদা দেওয়া হচ্ছে তা অবশ্য সত্য।
ইরফানুল কুরআন
৫. নিশ্চয়ই তোমাদেরকে দেয়া (পরকালের) অঙ্গীকার সম্পূর্ণ সত্য।
وَّ اِنَّ الدِّیۡنَ لَوَاقِعٌ ؕ﴿۶﴾
কানযুল ঈমান
৬. এবং নিশ্চয় নিশ্চয় ন্যায় বিচার হবে।
ইরফানুল কুরআন
৬. আর নিশ্চয়ই (কর্মের) প্রতিদান ও শাস্তি সংঘটিত হবেই।
وَ السَّمَآءِ ذَاتِ الۡحُبُکِ ۙ﴿۷﴾
কানযুল ঈমান
৭. সাজসজ্জাময় আস্মানের শপথ!
ইরফানুল কুরআন
৭. আর শপথ (গ্রহ-নক্ষত্র সমূহের) ছায়াপথ এবং কক্ষপথ বিশিষ্ট আকাশের,
اِنَّکُمۡ لَفِیۡ قَوۡلٍ مُّخۡتَلِفٍ ۙ﴿۸﴾
কানযুল ঈমান
৮. তোমরা পরস্পর বিরোধী কথার মধ্যে লিপ্ত রয়েছো;
ইরফানুল কুরআন
৮. নিশ্চয়ই তোমরা পরস্পরবিরোধী অসংলগ্ন কথায় মগ্ন।
یُّؤۡفَکُ عَنۡہُ مَنۡ اُفِکَ ﴿ؕ۹﴾
কানযুল ঈমান
৯. এ ক্বোরআন থেকে তাকেই উল্টো দিকে চালিত করা হয়, যার ভাগ্যে উল্টোদিকে চালিত হওয়া অবধারিত রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৯. সেই এ (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম এবং কুরআন থেকে) মুখ ফিরিয়ে নেয় যে (চিরন্তন জ্ঞান থেকে) বিমুখ।
قُتِلَ الۡخَرّٰصُوۡنَ ﴿ۙ۱۰﴾
কানযুল ঈমান
১০. নিহত হোক মনগড়া কথা রচনাকারী!
ইরফানুল কুরআন
১০. ধ্বংস তাদের যারা ধারণা ও অনুমানে মিথ্যাচার করে,
الَّذِیۡنَ ہُمۡ فِیۡ غَمۡرَۃٍ سَاہُوۡنَ ﴿ۙ۱۱﴾
কানযুল ঈমান
১১. যারা নেশার মধ্যে ভুলে বসে আছে;
ইরফানুল কুরআন
১১. যারা অজ্ঞতা ও উদাসীনতায় (পরকাল) বিস্মৃত।
یَسۡـَٔلُوۡنَ اَیَّانَ یَوۡمُ الدِّیۡنِ ﴿ؕ۱۲﴾
কানযুল ঈমান
১২. জিজ্ঞাসা করছে বিচারের দিন কবে হবে?
ইরফানুল কুরআন
১২. তারা জিজ্ঞেস করে, ‘প্রতিদান দিবস কখন হবে?’
یَوۡمَ ہُمۡ عَلَی النَّارِ یُفۡتَنُوۡنَ ﴿۱۳﴾
কানযুল ঈমান
১৩. ওই দিন হবে, যেদিন তাদেরকে আগুনের উপর উত্তপ্ত করা হবে।
ইরফানুল কুরআন
১৩. (বলে দিন,) ‘সে দিন (হবে যখন) তাদেরকে জাহান্নামের আগুনে দগ্ধ করা হবে’।
ذُوۡقُوۡا فِتۡنَتَکُمۡ ؕ ہٰذَا الَّذِیۡ کُنۡتُمۡ بِہٖ تَسۡتَعۡجِلُوۡنَ ﴿۱۴﴾
কানযুল ঈমান
১৪. এবং বলা হবে, ‘স্বাদ গ্রহণ করো নিজেদের উত্তপ্ত হওয়ার। এটা হচ্ছে তাই, যার জন্য তোমাদের ত্বরা ছিলো’।
ইরফানুল কুরআন
১৪. (তাদেরকে বলা হবে,) ‘তোমরা তোমাদের শাস্তি আস্বাদন করো, এটি সেই শাস্তি যা তোমরা দ্রুত কামনা করতে’।
اِنَّ الۡمُتَّقِیۡنَ فِیۡ جَنّٰتٍ وَّ عُیُوۡنٍ ﴿ۙ۱۵﴾
কানযুল ঈমান
১৫. নিশ্চয় খোদাভীরু লোকেরা বাগানসমূহ ও ঝর্ণাসমূহে রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
১৫. নিশ্চয়ই পরহেযগারগণ উদ্যানরাজি ও ঝরনাসমূহে (উপভোগ করতে) থাকবে,
اٰخِذِیۡنَ مَاۤ اٰتٰہُمۡ رَبُّہُمۡ ؕ اِنَّہُمۡ کَانُوۡا قَبۡلَ ذٰلِکَ مُحۡسِنِیۡنَ ﴿ؕ۱۶﴾
কানযুল ঈমান
১৬. আপন রবের দানসমূহ নিতে নিতে, নিশ্চয় তারা এর পূর্বে সৎকর্মপরায়ণ ছিলো,
ইরফানুল কুরআন
১৬. তারা এসব নিয়ামতরাজি (আনন্দে উল্লসিত হয়ে) উপভোগ করতে থাকবে, যা তাদের প্রতিপালক (অনুগ্রহ ও বদান্যতায়) তাদেরকে দান করবেন। নিশ্চয় তারাই এরপূর্বে (পার্থিব জীবনে) ছিল সৎকর্মপরায়ণ।
کَانُوۡا قَلِیۡلًا مِّنَ الَّیۡلِ مَا یَہۡجَعُوۡنَ ﴿۱۷﴾
কানযুল ঈমান
১৭. তারা রাতে কম ঘুমাতো।
ইরফানুল কুরআন
১৭. তারা রাত্রির সামান্য অংশই ঘুমে অতিবাহিত করতো।
وَ بِالۡاَسۡحَارِ ہُمۡ یَسۡتَغۡفِرُوۡنَ ﴿۱۸﴾
কানযুল ঈমান
১৮. এবং রাতের শেষ প্রহরে ক্ষমা প্রার্থনা করতো।
ইরফানুল কুরআন
১৮. আর রাত্রির শেষ প্রহরে (জেগে) মাগফিরাত প্রার্থনা করতো।
وَ فِیۡۤ اَمۡوَالِہِمۡ حَقٌّ لِّلسَّآئِلِ وَ الۡمَحۡرُوۡمِ ﴿۱۹﴾
কানযুল ঈমান
১৯. এবং তাদের সম্পদে প্রাপ্য ছিলো ভিক্ষুক ও বঞ্চিতের।
ইরফানুল কুরআন
১৯. আর তাদের সম্পদে অভাবগ্রস্ত, ভিক্ষুক ও বঞ্চিতদের অধিকার নির্ধারিত ছিল।
وَ فِی الۡاَرۡضِ اٰیٰتٌ لِّلۡمُوۡقِنِیۡنَ ﴿ۙ۲۰﴾
কানযুল ঈমান
২০. এবং ভূ-পৃষ্ঠে নিদর্শনাদি রয়েছে দৃঢ় বিশ্বাসীদের জন্য;
ইরফানুল কুরআন
২০. আর বিশ্বাসীদের (অর্থাৎ পরিপূর্ণ বিশ্বাসস্থাপনকারীদের) জন্যে পৃথিবীতে রয়েছে অনেক নিদর্শনাবলী,
وَ فِیۡۤ اَنۡفُسِکُمۡ ؕ اَفَلَا تُبۡصِرُوۡنَ ﴿۲۱﴾
কানযুল ঈমান
২১. এবং তোমাদের নিজেদের মধ্যে; তবে কি তোমরা নিজেদের মধ্যে চিন্তা-ভাবনা করছো না?
ইরফানুল কুরআন
২১. এবং তোমাদের নিজেদের মধ্যে(ও), সুতরাং তোমরা কি দেখো না?
وَ فِی السَّمَآءِ رِزۡقُکُمۡ وَ مَا تُوۡعَدُوۡنَ ﴿۲۲﴾
কানযুল ঈমান
২২. এবং আস্মানের মধ্যে তোমাদের জীবিকা রয়েছে এবং (তা-ও) যার তোমাদেরকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে।
ইরফানুল কুরআন
২২. আর আকাশে রয়েছে তোমাদের রিযিক এবং তোমাদেরকে প্রতিশ্রুত (সকল কিছুই)।
فَوَ رَبِّ السَّمَآءِ وَ الۡاَرۡضِ اِنَّہٗ لَحَقٌّ مِّثۡلَ مَاۤ اَنَّکُمۡ تَنۡطِقُوۡنَ ﴿۲۳﴾
কানযুল ঈমান
২৩. সুতরাং আস্মান ও যমীনের রবের শপথ! নিশ্চয়, এ ক্বোরআন সত্য, যেমনিভাবে জিহ্বা দ্বারা তোমরা কথা বলছো।
ইরফানুল কুরআন
২৩. অতঃপর শপথ আকাশমন্ডলী এবং পৃথিবীর অধিপতির! এ (অঙ্গীকার) সত্য, তোমাদের নিজেদের কথাবার্তার মতোই (তোমরা নিজেরা যা কিছু বলো তাতেই তোমাদের পরিপূর্ণ বিশ্বাস হয়)।
ہَلۡ اَتٰىکَ حَدِیۡثُ ضَیۡفِ اِبۡرٰہِیۡمَ الۡمُکۡرَمِیۡنَ ﴿ۘ۲۴﴾
কানযুল ঈমান
২৪. হে মাহবূব! আপনার নিকট কি ইব্রাহীমের সম্মানিত অতিথিদের সংবাস এসেছে?
ইরফানুল কুরআন
২৪. তোমাদের নিকট কি ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)-এঁর সম্মানিত মেহমানদের সংবাদ পৌঁছেছে?
اِذۡ دَخَلُوۡا عَلَیۡہِ فَقَالُوۡا سَلٰمًا ؕ قَالَ سَلٰمٌ ۚ قَوۡمٌ مُّنۡکَرُوۡنَ ﴿ۚ۲۵﴾
কানযুল ঈমান
২৫. যখন তারা তার নিকট এসে বললো, ‘সালাম’! সেও বললো, ‘সালাম’। অপরিচিতের মতো লোকগুলো।
ইরফানুল কুরআন
২৫. যখন তারা (ফেরেশতারা) তাঁর নিকট আগমন করে বললো, ‘সালাম’। ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) ও (উত্তরে) ‘সালাম’ বললেন। (সাথে সাথে ভাবলেন) এরা তো অপরিচিত লোক।
فَرَاغَ اِلٰۤی اَہۡلِہٖ فَجَآءَ بِعِجۡلٍ سَمِیۡنٍ ﴿ۙ۲۶﴾
কানযুল ঈমান
২৬. অতঃপর আপন ঘরে গেলো, তারপর এক মোটাতাজা গো-বৎস নিয়ে এলো;
ইরফানুল কুরআন
২৬. অতঃপর দ্রুত নিজের গৃহে গেলেন এবং আগুনে ঝলসিয়ে ভাজা মাংসল এক গো-বৎস (অর্থাৎ সাজ্জী*) নিয়ে আসলেন। * শিকে গেঁথে আগুনে ঝলসানো মাংশকে সাজ্জী বলা হয়। এ ক্ষেত্রে আগুনে ঝলসানো আস্ত বাছুর গরু পরিবেশন করা হয়েছিল।
فَقَرَّبَہٗۤ اِلَیۡہِمۡ قَالَ اَلَا تَاۡکُلُوۡنَ ﴿۫۲۷﴾
কানযুল ঈমান
২৭. অতঃপর সেটা তাদের নিকট রাখলো। বললো, ‘তোমরা কি খাচ্ছো না?’
ইরফানুল কুরআন
২৭. অতঃপর তা তাদের সামনে উপস্থাপন করলেন এবং বললেন, ‘তোমরা কি খাবে না?’
فَاَوۡجَسَ مِنۡہُمۡ خِیۡفَۃً ؕ قَالُوۡا لَا تَخَفۡ ؕ وَ بَشَّرُوۡہُ بِغُلٰمٍ عَلِیۡمٍ ﴿۲۸﴾
কানযুল ঈমান
২৮. অতঃপর আপন অন্তরে তাদের ব্যাপারে ভয় অনুভব করতে লাগলো। তারা বললো, ‘আপনি ভয় করবেন না’। এবং তাকে এক জ্ঞানী পুত্র সন্তানের সুসংবাদ দিলো।
ইরফানুল কুরআন
২৮. অতঃপর তাদের (না খাওয়ার) কারণে তাঁর অন্তরে ভীতির সঞ্চার হলো। তারা বললেন, ‘আপনি ঘাবড়াবেন না’, এবং তাঁকে এক জ্ঞানী ও ধীশক্তি সম্পন্ন পুত্রসন্তান (ইসহাক আলাইহিস সালাম)-এঁর সুসংবাদ দিলেন।
فَاَقۡبَلَتِ امۡرَاَتُہٗ فِیۡ صَرَّۃٍ فَصَکَّتۡ وَجۡہَہَا وَ قَالَتۡ عَجُوۡزٌ عَقِیۡمٌ ﴿۲۹﴾
কানযুল ঈমান
২৯. অতঃপর তার স্ত্রী চিৎকার করতে করতে আসলো, তারপর আপন মাথা ঠুকলো আর বললো, ‘বৃদ্ধা বন্ধ্যারও কি?’
ইরফানুল কুরআন
২৯. অতঃপর তাঁর স্ত্রী (সারাহ) বিস্ময়ে হতবাক হয়ে সামনে এলেন এবং আশ্চার্যান্বিত হয়ে নিজের মুখে হাত চাপড়িয়ে বলতে লাগলেন, ‘(কি) বৃদ্ধা বন্ধা নারী (বাচ্চা জন্ম দেবে)?’
قَالُوۡا کَذٰلِکِ ۙ قَالَ رَبُّکِ ؕ اِنَّہٗ ہُوَ الۡحَکِیۡمُ الۡعَلِیۡمُ ﴿۳۰﴾
কানযুল ঈমান
৩০. তারা বললো, ‘তোমার রব এমনই বলে দিয়েছে; এবং তিনিই প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ’।
ইরফানুল কুরআন
৩০. (ফেরেশতারা) বললো, ‘তোমাদের প্রতিপালক এরূপই বলেছেন। নিশ্চয়ই তিনি প্রজ্ঞাবান, সর্বজ্ঞ।’
قَالَ فَمَا خَطۡبُکُمۡ اَیُّہَا الۡمُرۡسَلُوۡنَ ﴿۳۱﴾
কানযুল ঈমান
৩১. ইব্রাহীম বললেন, ‘সুতরাং হে ফিরিশতারা! তোমরা কি কাজে এসেছো?’
ইরফানুল কুরআন
৩১. (ইবরাহীম আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘হে প্রেরিত ফেরেশতাগণ! (এ সুসংবাদ ছাড়া) তোমাদের (আগমনের) আসল উদ্দেশ্য কী?’
قَالُوۡۤا اِنَّاۤ اُرۡسِلۡنَاۤ اِلٰی قَوۡمٍ مُّجۡرِمِیۡنَ ﴿ۙ۳۲﴾
কানযুল ঈমান
৩২. তারা বললো, ‘আমাদেরকে এক অপরাধী সম্প্রদায়ের প্রতি পাঠানো হয়েছে;
ইরফানুল কুরআন
৩২. তারা বললেন, ‘আমরা অপরাধী সম্প্রদায়ের প্রতি (অর্থাৎ লূত আলাইহিস সালামের সম্প্রদায়ের প্রতি) প্রেরিত হয়েছি,
لِنُرۡسِلَ عَلَیۡہِمۡ حِجَارَۃً مِّنۡ طِیۡنٍ ﴿ۙ۳۳﴾
কানযুল ঈমান
৩৩. যাতে আমরা তাদের উপর কাদা মাটির তৈরি পাথর নিক্ষেপ করি;
ইরফানুল কুরআন
৩৩. যেন আমরা তাদের উপর মাটির প্রস্তরময় কংকর বর্ষণ করি,
مُّسَوَّمَۃً عِنۡدَ رَبِّکَ لِلۡمُسۡرِفِیۡنَ ﴿۳۴﴾
কানযুল ঈমান
৩৪. যা আপনার রবের নিকট সীমালঙ্ঘনকারীদের জন্য চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে’।
ইরফানুল কুরআন
৩৪. (যে প্রস্তর) আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে সীমালঙ্ঘনকারীদের জন্যে চিহ্নিত।’
فَاَخۡرَجۡنَا مَنۡ کَانَ فِیۡہَا مِنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿ۚ۳۵﴾
কানযুল ঈমান
৩৫. সুতরাং আমি এ নগরীতে যারা ঈমানদার ছিলো তাদেরকে বের করে নিয়েছি।
ইরফানুল কুরআন
৩৫. অতঃপর আমরা উদ্ধার করেছিলাম তাদেরকে, যারা ঈমানদার ছিল (লূত আলাইহিস সালামের সম্প্রদায়)-এঁর মধ্যে।
فَمَا وَجَدۡنَا فِیۡہَا غَیۡرَ بَیۡتٍ مِّنَ الۡمُسۡلِمِیۡنَ ﴿ۚ۳۶﴾
কানযুল ঈমান
৩৬. অতঃপর আমি সেখানে একটি মাত্র ঘর (পরিবার) মুসলমান পেয়েছি।
ইরফানুল কুরআন
৩৬. অতএব আমরা এ বসতিতে এক পরিবার (যাতে হযরত লূত আলাইহি সালাম এবং তাঁর দুই কন্যা ছিলেন; তা) ব্যতীত মুসলমানদের (আর কোনো পরিবার) পাইনি।
وَ تَرَکۡنَا فِیۡہَاۤ اٰیَۃً لِّلَّذِیۡنَ یَخَافُوۡنَ الۡعَذَابَ الۡاَلِیۡمَ ﴿ؕ۳۷﴾
কানযুল ঈমান
৩৭. এবং তাতে আমি নিদর্শন অবশিষ্ট রেখেছি তাদের জন্য, যারা বেদনাদায়ক শাস্তিকে ভয় করে;
ইরফানুল কুরআন
৩৭. আর আমরা এতে (এ বসতিতে) এক নিদর্শন অবশিষ্ট রেখেছি তাদের (উপদেশের) জন্যে যারা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির ভয় করে।
وَ فِیۡ مُوۡسٰۤی اِذۡ اَرۡسَلۡنٰہُ اِلٰی فِرۡعَوۡنَ بِسُلۡطٰنٍ مُّبِیۡنٍ ﴿۳۸﴾
কানযুল ঈমান
৩৮. এবং মূসার মধ্যে, যখন আমি তাকে সুস্পষ্ট সনদ সহকারে ফির’আউনের নিকট প্রেরণ করেছি।
ইরফানুল কুরআন
৩৮. আর (নিদর্শনাবলী রয়েছে) মূসা (আলাইহিস সালাম)-এঁর ঘটনার মাঝেও, যখন আমরা তাঁকে ফেরাউনের নিকট প্রেরণ করেছিলাম সুস্পষ্ট দলিল সহকারে।
فَتَوَلّٰی بِرُکۡنِہٖ وَ قَالَ سٰحِرٌ اَوۡ مَجۡنُوۡنٌ ﴿۳۹﴾
কানযুল ঈমান
৩৯. অতঃপর সে তার দলসহ ফিরে গেলো আর বললো, ‘যাদুকর অথবা উন্মাদ’।
ইরফানুল কুরআন
৩৯. অতঃপর সে ক্ষমতার দম্ভে তার মন্ত্রীসভার সদস্যদের নিয়ে মুখ ফিরিয়ে নিলো এবং বললো, ‘(এ) যাদুকর, না হয় উন্মাদ’।
فَاَخَذۡنٰہُ وَ جُنُوۡدَہٗ فَنَبَذۡنٰہُمۡ فِی الۡیَمِّ وَ ہُوَ مُلِیۡمٌ ﴿ؕ۴۰﴾
কানযুল ঈমান
৪০. অতঃপর আমি তাকে ও তার বাহিনীকে পাকড়াও করে সমুদ্রে নিক্ষেপ করেছি এমতাবস্থায় যে, সে নিজের প্রতি নিজেই দোষারোপ করছিলো।
ইরফানুল কুরআন
৪০. অতঃপর আমরা তাকে এবং তার বাহিনীকে (শাস্তিতে) পাকড়াও করেছিলাম এবং এদেরকে সাগরে ডুবিয়ে দিয়েছিলাম। আর সে ছিল তিরস্কারের উপযুক্ত কর্ম সম্পাদনকারী।
وَ فِیۡ عَادٍ اِذۡ اَرۡسَلۡنَا عَلَیۡہِمُ الرِّیۡحَ الۡعَقِیۡمَ ﴿ۚ۴۱﴾
কানযুল ঈমান
৪১. এবং ‘আদ সম্প্রদায়ের মধ্যে, যখন আমি তাদের উপর শুষ্ক ঝঞ্ঝাবায়ু প্রেরণ করেছি;
ইরফানুল কুরআন
৪১. আর (নিদর্শন) রয়েছে ’আদ (সম্প্রদায়ের ধ্বংস)-এর মাঝেও, যখন আমরা তাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেছিলাম অকল্যাণকর ও বরকতহীন বায়ু।
مَا تَذَرُ مِنۡ شَیۡءٍ اَتَتۡ عَلَیۡہِ اِلَّا جَعَلَتۡہُ کَالرَّمِیۡمِ ﴿ؕ۴۲﴾
কানযুল ঈমান
৪২. তা যেই বস্তুর উপর দিয়েই প্রবাহিত হতো সেটাকে গলিত বস্তুর মতো করেই ছাড়তো।
ইরফানুল কুরআন
৪২. যা কিছুর উপর দিয়েই তা বয়ে গিয়েছিল তা-ই চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিয়েছিল।
وَ فِیۡ ثَمُوۡدَ اِذۡ قِیۡلَ لَہُمۡ تَمَتَّعُوۡا حَتّٰی حِیۡنٍ ﴿۴۳﴾
কানযুল ঈমান
৪৩. এবং সামূদ সম্প্রদায়ের মধ্যে, যখন তাদেরকে বলা হয়েছে, ‘একটা সময় পর্যন্ত ভোগ করে নাও’।
ইরফানুল কুরআন
৪৩. আর (উপদেশের নিদর্শন রয়েছে) সামূদ (সম্প্রদায়ের ধ্বংস)-এর মাঝেও, যখন তাদেরকে বলা হলো, ‘এক নির্ধারিত সময় পর্যন্ত ভোগ করে নাও’।
فَعَتَوۡا عَنۡ اَمۡرِ رَبِّہِمۡ فَاَخَذَتۡہُمُ الصّٰعِقَۃُ وَ ہُمۡ یَنۡظُرُوۡنَ ﴿۴۴﴾
কানযুল ঈমান
৪৪. সুতরাং তারা তাদের রবের নির্দেশের প্রতি অবাধ্যতা প্রদর্শন করলো। অতঃপর তাদের চোখের সামনে তাদেরকে বজ্রপাত পেয়ে বসলো।
ইরফানুল কুরআন
৪৪. অতঃপর তারা তাদের প্রতিপালকের নির্দেশের ব্যাপারে সীমালঙ্ঘন করলো; ফলে তাদেরকে এসে গ্রাস করলো ভয়ানক এক বজ্রধ্বনি, আর তারা স্তম্ভিত হয়ে তা দেখছিল।
فَمَا اسۡتَطَاعُوۡا مِنۡ قِیَامٍ وَّ مَا کَانُوۡا مُنۡتَصِرِیۡنَ ﴿ۙ۴۵﴾
কানযুল ঈমান
৪৫. সুতরাং তারা না উঠে দাড়াতে পারলো এবং না তারা প্রতিশোধ নিতে পারছিলো;
ইরফানুল কুরআন
৪৫. অতঃপর তারা না উঠে দাঁড়াতে পারলো, আর না (আমাদের উপর) প্রতিশোধ নিতে পারলো।
وَ قَوۡمَ نُوۡحٍ مِّنۡ قَبۡلُ ؕ اِنَّہُمۡ کَانُوۡا قَوۡمًا فٰسِقِیۡنَ ﴿۴۶﴾
কানযুল ঈমান
৪৬. এবং তাদের পূর্বে নূহের সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছি। নিশ্চয় তারা ফাসিক্ব লোক ছিলো।
ইরফানুল কুরআন
৪৬. আর এরপূর্বে নূহ (আলাইহিস সালাম)-এঁর সম্প্রদায়কেও (ধ্বংস করেছিলাম)। নিশ্চয়ই তারা ছিল চরম নাফরমান সম্প্রদায়।
وَ السَّمَآءَ بَنَیۡنٰہَا بِاَیۡىدٍ وَّ اِنَّا لَمُوۡسِعُوۡنَ ﴿۴۷﴾
কানযুল ঈমান
৪৭. এবং আস্মানকে আমি নিজ (ক্বুদ্রতের) হাতে তৈরী করেছি, এবং নিশ্চয় আমি মহা সম্প্রসারণকারী।
ইরফানুল কুরআন
৪৭. আর আমরা ঊর্ধ্বস্থ বিশ্ব জগত নির্মাণ করেছি মহাক্ষমতাবলে এবং অবশ্যই (এ বিশ্ব জগতকে) আমরা উত্তরোত্তর সম্প্রসারণ করছি।
وَ الۡاَرۡضَ فَرَشۡنٰہَا فَنِعۡمَ الۡمٰہِدُوۡنَ ﴿۴۸﴾
কানযুল ঈমান
৪৮. এবং যমীনকে আমি বিছানা করেছি। সুতরাং আমি কতই উত্তমরূপে বিছানা বিস্তারকারী!
ইরফানুল কুরআন
৪৮. আর ভূ-পৃষ্ঠকে আমরাই করেছি (বসবাসের উপযোগী) বিছানা স্বরূপ। সুতরাং আমরা কতোই না সুন্দরভাবে প্রসারণকারী!
وَ مِنۡ کُلِّ شَیۡءٍ خَلَقۡنَا زَوۡجَیۡنِ لَعَلَّکُمۡ تَذَکَّرُوۡنَ ﴿۴۹﴾
কানযুল ঈমান
৪৯. এবং আমি প্রত্যেক কিছুর দু’জোড়া সৃষ্টি করেছি, যাতে তোমরা মনোযোগ দাও।
ইরফানুল কুরআন
৪৯. আর আমরা সবকিছু সৃষ্টি করেছি জোড়ায় জোড়ায় যাতে তোমরা একাগ্রচিত্তে অনুধাবন করো।
فَفِرُّوۡۤا اِلَی اللّٰہِ ؕ اِنِّیۡ لَکُمۡ مِّنۡہُ نَذِیۡرٌ مُّبِیۡنٌ ﴿ۚ۵۰﴾
কানযুল ঈমান
৫০. সুতরাং আল্লাহ্র প্রতি ছুটে যাও। নিশ্চয় আমি তার তরফ থেকে তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট সতর্ককারী।
ইরফানুল কুরআন
৫০. অতঃপর তোমরা আল্লাহ্র দিকে ধাবিত হও। নিশ্চয়ই আমি তাঁর পক্ষ থেকে তোমাদের জন্যে সুস্পষ্ট সতর্ককারী।
وَ لَا تَجۡعَلُوۡا مَعَ اللّٰہِ اِلٰـہًا اٰخَرَ ؕ اِنِّیۡ لَکُمۡ مِّنۡہُ نَذِیۡرٌ مُّبِیۡنٌ ﴿ۚ۵۱﴾
কানযুল ঈমান
৫১. এবং আল্লাহ্র সাথে অন্য কোন উপাস্য স্থির করো না। নিশ্চয় আমি তার পক্ষ থেকে তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট সতর্ককারী।
ইরফানুল কুরআন
৫১. আর আল্লাহ্র সাথে দ্বিতীয় কোনো উপাস্য সাব্যস্ত করো না। নিশ্চয়ই আমি তাঁর পক্ষ থেকে তোমাদের জন্যে সুস্পষ্ট সতর্ককারী।
کَذٰلِکَ مَاۤ اَتَی الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِہِمۡ مِّنۡ رَّسُوۡلٍ اِلَّا قَالُوۡا سَاحِرٌ اَوۡ مَجۡنُوۡنٌ ﴿ۚ۵۲﴾
কানযুল ঈমান
৫২. এমনিভাবেই, যখন তাদের পূর্ববর্তীদের নিকট কোন রসূল তাশরীফ এনেছেন, তখন তারা এটাই বলেছে, ‘যাদুকর অথবা উন্মাদ’।
ইরফানুল কুরআন
৫২. এভাবে তাদের পূর্ববর্তীদের নিকট যখনই কোনো রাসূল আগমন করেছেন, তারা বলেছে, ‘(এ তো) যাদুকর, না হয় উন্মাদ’।
اَتَوَاصَوۡا بِہٖ ۚ بَلۡ ہُمۡ قَوۡمٌ طَاغُوۡنَ ﴿ۚ۵۳﴾
কানযুল ঈমান
৫৩. তারা কি পরস্পর একে অপরকে এ কথা বলেই মরেছে? বরং তারা অবাধ্য লোক।
ইরফানুল কুরআন
৫৩. তারা কি একে অপরকে এ মন্ত্রণাই দিয়ে আসছে? বস্তুত তারা (সকলে) ছিল অবাধ্য ও বিদ্রোহী সম্প্রদায়।
فَتَوَلَّ عَنۡہُمۡ فَمَاۤ اَنۡتَ بِمَلُوۡمٍ ﴿٭۫۵۴﴾
কানযুল ঈমান
৫৪. সুতরাং হে মাহবূব! আপনি তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিন। তাহলে, আপনার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই।
ইরফানুল কুরআন
৫৪. সুতরাং আপনি তাদের থেকে সদয় দৃষ্টি ফিরিয়ে নিন। অতঃপর আপনার উপর (তাদের ঈমান আনয়ন না করায়) কোনো তিরস্কার নেই।
وَّ ذَکِّرۡ فَاِنَّ الذِّکۡرٰی تَنۡفَعُ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۵۵﴾
কানযুল ঈমান
৫৫. এবং বুঝান! যেহেতু বুঝানো মুসলমানদেরকে উপকার দেয়।
ইরফানুল কুরআন
৫৫. আর আপনি উপদেশ দিতে থাকুন, কেননা উপদেশ মুমিনদের নিশ্চিত উপকারে আসবে।
وَ مَا خَلَقۡتُ الۡجِنَّ وَ الۡاِنۡسَ اِلَّا لِیَعۡبُدُوۡنِ ﴿۵۶﴾
কানযুল ঈমান
৫৬. এবং আমি জিন্ ও মানব এ জন্যই সৃষ্টিই করেছি যে, আমার ইবাদত করবে।
ইরফানুল কুরআন
৫৬. আর আমি জ্বিন এবং মানুষকে এজন্যেই সৃষ্টি করেছি যে, তারা কেবল আমারই ইবাদত করবে।
مَاۤ اُرِیۡدُ مِنۡہُمۡ مِّنۡ رِّزۡقٍ وَّ مَاۤ اُرِیۡدُ اَنۡ یُّطۡعِمُوۡنِ ﴿۵۷﴾
কানযুল ঈমান
৫৭. আমি তাদের নিকট থেকে কোন রিযক্ব চাই না এবং এটাও চাই না যে, তারা আমাকে আহার্য দেবে!
ইরফানুল কুরআন
৫৭. আমি তাদের কাছে না রিযিক (অর্থাৎ উপার্জন) অন্বেষণ করি, আর না আমি চাই যে, তারা আমাকে খাওয়াবে।
اِنَّ اللّٰہَ ہُوَ الرَّزَّاقُ ذُو الۡقُوَّۃِ الۡمَتِیۡنُ ﴿۵۸﴾
কানযুল ঈমান
৫৮. নিশ্চয় আল্লাহ্ই মহান রিয্কদ্বাতা, শক্তিশালী, ক্ষমতাবান।
ইরফানুল কুরআন
৫৮. নিশ্চয় আল্লাহ্ই সকলের রিযিকদাতা, মহাশক্তিশালী, পরাক্রান্ত। (তাঁর কারও সাহায্য ও সহযোগিতার প্রয়োজন নেই।)
فَاِنَّ لِلَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡا ذَنُوۡبًا مِّثۡلَ ذَنُوۡبِ اَصۡحٰبِہِمۡ فَلَا یَسۡتَعۡجِلُوۡنِ ﴿۵۹﴾
কানযুল ঈমান
৫৯. সুতরাং নিশ্চয় ওই সব যালিমের জন্য শাস্তির একটা পালা আছে, যেমন তাদের সাথীদের জন্য একটা পালা ছিলো। সুতরাং তারা যেন আমার নিকট ত্বরা না করে।
ইরফানুল কুরআন
৫৯. অতঃপর অত্যাচারীদের জন্যে(ও) রয়েছে শাস্তির নির্ধারিত অংশ, তাদের (পূর্বে অতিক্রান্ত) সঙ্গীদের শাস্তির অংশের ন্যায়। সুতরাং তারা যেন আমার কাছে (তা) তাড়াতাড়ি কামনা না করে।
فَوَیۡلٌ لِّلَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا مِنۡ یَّوۡمِہِمُ الَّذِیۡ یُوۡعَدُوۡنَ ﴿۶۰﴾
কানযুল ঈমান
৬০. অতএব, কাফিরদের জন্য রয়েছে ধ্বংস তাদের ওই দিন থেকেই, যার প্রতিশ্রুতি তাদেরকে দেওয়া হচ্ছে।
ইরফানুল কুরআন
৬০. সুতরাং দুর্ভোগ কাফেরদের জন্যে তাদের সেই দিনের, যার প্রতিশ্রুতি তাদেরকে দেয়া হচ্ছে।