بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
কানযুল ঈমান
০. আল্লাহ্র নামে আরম্ভ, যিনি পরম দয়ালু, করুণাময় (১)
ইরফানুল কুরআন
০. আল্লাহর নামে শুরু, যিনি পরম করুণাময়, সতত অসীম দয়ালু।
حٰمٓ ۚ﴿۱﴾
কানযুল ঈমান
১. হা-মী----ম।
ইরফানুল কুরআন
১. হা-মীম। (প্রকৃত অর্থ আল্লাহ এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামই সম্যক অবগত।)
تَنۡزِیۡلُ الۡکِتٰبِ مِنَ اللّٰہِ الۡعَزِیۡزِ الۡحَکِیۡمِ ﴿۲﴾
কানযুল ঈমান
২. এ কিতাব অবতীর্ণ সম্মান ও প্রজ্ঞাময় আল্লাহ্র নিকট থেকে।
ইরফানুল কুরআন
২. এ কিতাব অবতীর্ণ আল্লাহ্র নিকট থেকে, যিনি মহাআধিপত্যশীল, প্রজ্ঞাবান।
مَا خَلَقۡنَا السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ وَ مَا بَیۡنَہُمَاۤ اِلَّا بِالۡحَقِّ وَ اَجَلٍ مُّسَمًّی ؕ وَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا عَمَّاۤ اُنۡذِرُوۡا مُعۡرِضُوۡنَ ﴿۳﴾
কানযুল ঈমান
৩. আমি আস্মানসমূহ ও যমীন এবং যা কিছু এ দু’টির মধ্যস্থিত রয়েছে, সত্য সহকারে এবং একটা নির্ধারিত মেয়াদকালের জন্যই সৃষ্টি করেছি। এবং কাফিরগণ ওই বিষয় থেকে, যে বিষয়ে সাবধান করা হয়েছে, মুখ ফিরিয়ে আছে।
ইরফানুল কুরআন
৩. আমরা আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং এ উভয়ের মাঝে (সৃষ্টিজগতে) যা কিছু রয়েছে তা প্রজ্ঞা এবং নির্দিষ্ট কালের জন্যেই সৃষ্টি করেছি। কিন্তু কাফেরদেরকে যে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিল তা থেকে তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়।
قُلۡ اَرَءَیۡتُمۡ مَّا تَدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ اَرُوۡنِیۡ مَاذَا خَلَقُوۡا مِنَ الۡاَرۡضِ اَمۡ لَہُمۡ شِرۡکٌ فِی السَّمٰوٰتِ ؕ اِیۡتُوۡنِیۡ بِکِتٰبٍ مِّنۡ قَبۡلِ ہٰذَاۤ اَوۡ اَثٰرَۃٍ مِّنۡ عِلۡمٍ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ ﴿۴﴾
কানযুল ঈমান
৪. আপনি বলুন, ‘ভালো, বলোতো! যেগুলোর তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত পূজা করছো, আমাকে দেখাও সেগুলো যমীনের কোন্ পরমাণুটা সৃষ্টি করেছে? কিংবা আসমানে সেগুলোর কোন অংশ আছে কিনা? এর পুর্বের কোন কিতাব অথবা অবশিষ্ট কোন জ্ঞান থাকলে আমার নিকট হাযির করো; যদি তোমরা সত্যবাদী হও।
ইরফানুল কুরআন
৪. বলে দিন, ‘আমাকে বলো তো আল্লাহ্র পরিবর্তে যেসব (মূর্তির)-এর উপাসনা তোমরা করো, তারা পৃথিবীতে কী সৃষ্টি করেছে আমাকে দেখাও অথবা (সৃষ্টির ক্ষেত্রে) আকাশমন্ডলীতে তাদের কি কোনো অংশীদারিত্ব রয়েছে? তোমরা আমার নিকট (এ কুরআন)-এর পূর্বের কোনো কিতাব অথবা (পূর্ববর্তীদের) জ্ঞানের কোনো অবশিষ্টাংশ (যা বিবৃত হয়ে এসেছে তা প্রমাণ হিসেবে) উপস্থাপন করো; যদি তোমরা সত্যবাদী হও।’
وَ مَنۡ اَضَلُّ مِمَّنۡ یَّدۡعُوۡا مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ مَنۡ لَّا یَسۡتَجِیۡبُ لَہٗۤ اِلٰی یَوۡمِ الۡقِیٰمَۃِ وَ ہُمۡ عَنۡ دُعَآئِہِمۡ غٰفِلُوۡنَ ﴿۵﴾
কানযুল ঈমান
৫. এবং তার চাইতে বড় পথভ্রষ্ট আর কে, যে আল্লাহ্ ব্যতীত এমন সবের পূজা করে, যেগুলো ক্বিয়ামত পর্যন্ত তাদের প্রার্থনা শুনবে না এবং সেগুলোর নিকট এদের পূজার খবরও নেই?
ইরফানুল কুরআন
৫. আর সে ব্যক্তির চেয়ে অধিক গোমরাহ্ কে হতে পারে, যে আল্লাহ্র পরিবর্তে এমন কিছুর (অর্থাৎ মূর্তির) উপাসনা করে যারা কিয়ামতের দিন পর্যন্ত তাকে জিজ্ঞাসিত (প্রশ্নের) উত্তর প্রদান করতে পারবে না? আর এসব (মূর্তি) তাদের দোয়া এবং ইবাদত সম্পর্কে অবগতও নয়।
وَ اِذَا حُشِرَ النَّاسُ کَانُوۡا لَہُمۡ اَعۡدَآءً وَّ کَانُوۡا بِعِبَادَتِہِمۡ کٰفِرِیۡنَ ﴿۶﴾
কানযুল ঈমান
৬. এবং যখন মানুষকে একত্রিত করা হবে তখন সেগুলো তাদের শত্রু হবে এবং তাদের অস্বীকারকারী হয়ে যাবে।
ইরফানুল কুরআন
৬. আর যখন (কিয়ামতের দিন) মানুষকে একত্রিত করা হবে তখন এসব (বাতিল উপাস্য) তাদের শত্রুতে পরিণত হবে এবং (নিজের পরিত্রাণের জন্যে) তাদের উপাসনা অস্বীকার করবে।
وَ اِذَا تُتۡلٰی عَلَیۡہِمۡ اٰیٰتُنَا بَیِّنٰتٍ قَالَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا لِلۡحَقِّ لَمَّا جَآءَہُمۡ ۙ ہٰذَا سِحۡرٌ مُّبِیۡنٌ ؕ﴿۷﴾
কানযুল ঈমান
৭. এবং যখন তাদের নিকট পাঠ করা হয় আমার সুস্পষ্ট আয়াতগুলো তখন কাফিরগণ তাদের নিকট আগত সত্যকে বলে, ‘এটা স্পষ্ট যাদু’।
ইরফানুল কুরআন
৭. আর যখন তাদের নিকট পাঠ করা হয় আমাদের সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ যখন তা তাদের কাছে এসেছে, (তখন) কাফেরেরা সত্য (কুরআন)-এর ব্যাপারে বলে, ‘এ তো সুস্পষ্ট যাদু’।
اَمۡ یَقُوۡلُوۡنَ افۡتَرٰىہُ ؕ قُلۡ اِنِ افۡتَرَیۡتُہٗ فَلَا تَمۡلِکُوۡنَ لِیۡ مِنَ اللّٰہِ شَیۡئًا ؕ ہُوَ اَعۡلَمُ بِمَا تُفِیۡضُوۡنَ فِیۡہِ ؕ کَفٰی بِہٖ شَہِیۡدًۢا بَیۡنِیۡ وَ بَیۡنَکُمۡ ؕ وَ ہُوَ الۡغَفُوۡرُ الرَّحِیۡمُ ﴿۸﴾
কানযুল ঈমান
৮. তারা কি বলে যে, ‘তিনি সেটাকে নিজ থেকে রচনা করেছেন?’ আপনি বলুন, ‘যদি আমি সেটা নিজ থেকে রচনা করে নিয়ে থাকি, তবে তোমরা আল্লাহ্র সামনে আমাকে রক্ষা করার কোন ক্ষমতা রাখো না’। তিনি ভালোভাবে জানেন যেসব কথায় তোমরা রত আছো; এবং তিনি আমাদের ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষীরূপে যথেষ্ট। আর তিনিই ক্ষমাশীল, দয়ালু।
ইরফানুল কুরআন
৮. তবে কি তারা বলে যে, তিনি (নবী কুরআন) উদ্ভাবন করেছেন? বলে দিন, ‘যদি আমি এটি উদ্ভাবন করে থাকি, তবে তোমরা আমাকে আল্লাহ্(-এঁর শাস্তি) থেকে কিছুতেই রক্ষা করতে পারবে না। আর তিনি এসব (বিষয়াবলী) সবিশেষ অবগত, যা তোমরা এ (কুরআনের) বিষয়ে ঠাট্টাচ্ছলে বলছো। আমার এবং তোমাদের মাঝে সাক্ষী হিসেবে তিনি (আল্লাহ্) যথেষ্ট এবং তিনি মহাক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’
قُلۡ مَا کُنۡتُ بِدۡعًا مِّنَ الرُّسُلِ وَ مَاۤ اَدۡرِیۡ مَا یُفۡعَلُ بِیۡ وَ لَا بِکُمۡ ؕ اِنۡ اَتَّبِعُ اِلَّا مَا یُوۡحٰۤی اِلَیَّ وَ مَاۤ اَنَا اِلَّا نَذِیۡرٌ مُّبِیۡنٌ ﴿۹﴾
কানযুল ঈমান
৯. আপনি বলুন, ‘আমি কোন নতুন রসূল নই। এবং আমি জানিনা আমার সাথে এবং তোমাদের কি ব্যবহার করা হবে! আমি তো সেটারই অনুসরণ করি, যা আমার প্রতি ওহী করা হয় এবং আমি তো সুস্পষ্ট সতর্ককারীই’।
ইরফানুল কুরআন
৯. আপনি বলে দিন, ‘(মানুষের প্রতি) আমিই প্রথম কোনো রাসূল নই (যে, আমার পূর্বে রেসালতের কোনো দৃষ্টান্তই নেই)। আমি নিজ থেকে (কেবল আমার জ্ঞান ও উপলিব্ধর মাধ্যমে) জানি না যে, আমার সাথে কেমন আচরণ করা হবে, আর না এ বিষয় যা তোমাদের সাথে করা হবে। (আমার জ্ঞান তো এ যে,) আমি কেবল আমার প্রতি প্রেরিত প্রত্যাদেশই অনুসরণ করি। (এটিই আমাকে সবকিছুর জ্ঞান দান করে।) আর আমি তো কেবল (এ ওহীর জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে) সুস্পষ্ট সতর্ককারী।’
قُلۡ اَرَءَیۡتُمۡ اِنۡ کَانَ مِنۡ عِنۡدِ اللّٰہِ وَ کَفَرۡتُمۡ بِہٖ وَ شَہِدَ شَاہِدٌ مِّنۡۢ بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ عَلٰی مِثۡلِہٖ فَاٰمَنَ وَ اسۡتَکۡبَرۡتُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَا یَہۡدِی الۡقَوۡمَ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۱۰﴾
কানযুল ঈমান
১০. আপনি বলুন, ‘ভালো দেখোতো! যদি ওই ক্বোরআন আল্লাহ্র নিকট থেকে হয়, আর তোমরা তা অস্বীকার করো, আর বনী ইস্রাঈলের একজন সাক্ষী সেটার উপর সাক্ষ্য দিলো, অতঃপর সে ঈমান আনলো আর তোমরা করলে অহঙ্কার! নিশ্চয় আল্লাহ্ যালিমদেরকে পথ প্রদান করেন না’।
ইরফানুল কুরআন
১০. বলে দিন, ‘আমাকে বলো তো, যদি এ (কুরআন) আল্লাহ্র নিকট থেকে হয়ে থাকে আর তোমরা একে অস্বীকার করো, অথচ বনী ইসরাঈলের মধ্য থেকে একজন সাক্ষীও (পূর্ববতী আসমানী কিতাবসমূহে) এরূপ কিতাবের (অবতীর্ণ হওয়ার) ব্যাপারে সাক্ষ্য দেয়; অতঃপর সে (এর উপর) ঈমানও আনয়ন করে, আর তোমরা (তা সত্তেও) ঔদ্ধত্য প্রকাশ করো। (তবে তোমাদের পরিণতি কীরূপ হবে?) নিশ্চয়ই আল্লাহ্ যালিমদেরকে হেদায়াত দান করেন না।’
وَ قَالَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا لِلَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَوۡ کَانَ خَیۡرًا مَّا سَبَقُوۡنَاۤ اِلَیۡہِ ؕ وَ اِذۡ لَمۡ یَہۡتَدُوۡا بِہٖ فَسَیَقُوۡلُوۡنَ ہٰذَاۤ اِفۡکٌ قَدِیۡمٌ ﴿۱۱﴾
কানযুল ঈমান
১১. এবং কাফিরগণ মুসলমানদেরকে বললো, ‘যদি তাতে কিছু মঙ্গল থাকতো, তবে এরা আমাদের পূর্বে এ পর্যন্ত পৌঁছে যেতো না’। এবং যখন তারা সৎপথ প্রাপ্ত হলো না, তখন অবিলম্বে বলবে, ‘এটা পুরানো অপবাদ’।
ইরফানুল কুরআন
১১. আর কাফেরেরা মুমিনগণকে বললো, ‘যদি তা (মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়ালিহী ওয়াসাল্লামের এ দ্বীন) উত্তম হতো তবে এ লোকেরা এর দিকে আমাদেরকে অতিক্রম করে যেতে পারতো না (আমরা নিজেরাই সবার আগে একে গ্রহণ করতাম)।’ আর যখন এরা (এ কাফেরেরা নিজেরা) এর দ্বারা হেদায়াত প্রাপ্ত হয়নি তখন তারা অবশ্যই বলবে, ‘এ তো পুরাতন মিথ্যা (এবং অপবাদ)’।
وَ مِنۡ قَبۡلِہٖ کِتٰبُ مُوۡسٰۤی اِمَامًا وَّ رَحۡمَۃً ؕ وَ ہٰذَا کِتٰبٌ مُّصَدِّقٌ لِّسَانًا عَرَبِیًّا لِّیُنۡذِرَ الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡا ٭ۖ وَ بُشۡرٰی لِلۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿ۚ۱۲﴾
কানযুল ঈমান
১২. এবং এর পূর্বে রয়েছে মূসার কিতাব পেশোয়া ও অনুগ্রহ স্বরূপ এবং এ কিতাব সত্যায়নকারী, আরবী ভাষায়, যাতে যালিমদেরকে সতর্ক করে; এবং সৎকর্মপরায়ণদের জন্য সুসংবাদ।
ইরফানুল কুরআন
১২. আর এর পূর্বে মূসা (আলাইহিস সালাম)-এঁর কিতাব (তাওরাত) ছিল পথপ্রদর্শক ও রহমতস্বরূপ। আর এ কিতাব (তার) সত্যায়নকারী, আরবি ভাষায়, যাতে যালিমদেরকে সতর্ক করা হয় এবং সুসংবাদ দেয়া হয় নেক্কারগণকে।
اِنَّ الَّذِیۡنَ قَالُوۡا رَبُّنَا اللّٰہُ ثُمَّ اسۡتَقَامُوۡا فَلَا خَوۡفٌ عَلَیۡہِمۡ وَ لَا ہُمۡ یَحۡزَنُوۡنَ ﴿ۚ۱۳﴾
কানযুল ঈমান
১৩. নিশ্চয় ওই সব লোক, যারা বলেছে, ‘আমাদের রব আল্লাহ্;’ অতঃপর অটল থাকে, না তাদের কোন ভয় আছে, না তাদের দুঃখ।
ইরফানুল কুরআন
১৩. নিশ্চয়ই যারা বলে, ‘আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্’, অতঃপর তারা (তাতে) অবিচল থাকে, তবে তাদের না আছে কোনো ভয়, আর তারা না হবে চিন্তান্বিত।
اُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ الۡجَنَّۃِ خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَا ۚ جَزَآءًۢ بِمَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۴﴾
কানযুল ঈমান
১৪. তারা জান্নাতবাসী, সর্বদা তাতে থাকবে, তাদের কৃতকর্মের পুরস্কার স্বরূপ।
ইরফানুল কুরআন
১৪. তারাই জান্নাতের অধিবাসী, সেথায় তারা চিরকাল অবস্থান করবে। এটি সেসব আমলের প্রতিফল যা তারা করতো।
وَ وَصَّیۡنَا الۡاِنۡسَانَ بِوَالِدَیۡہِ اِحۡسٰنًا ؕ حَمَلَتۡہُ اُمُّہٗ کُرۡہًا وَّ وَضَعَتۡہُ کُرۡہًا ؕ وَ حَمۡلُہٗ وَ فِصٰلُہٗ ثَلٰثُوۡنَ شَہۡرًا ؕ حَتّٰۤی اِذَا بَلَغَ اَشُدَّہٗ وَ بَلَغَ اَرۡبَعِیۡنَ سَنَۃً ۙ قَالَ رَبِّ اَوۡزِعۡنِیۡۤ اَنۡ اَشۡکُرَ نِعۡمَتَکَ الَّتِیۡۤ اَنۡعَمۡتَ عَلَیَّ وَ عَلٰی وَالِدَیَّ وَ اَنۡ اَعۡمَلَ صَالِحًا تَرۡضٰہُ وَ اَصۡلِحۡ لِیۡ فِیۡ ذُرِّیَّتِیۡ ۚؕ اِنِّیۡ تُبۡتُ اِلَیۡکَ وَ اِنِّیۡ مِنَ الۡمُسۡلِمِیۡنَ ﴿۱۵﴾
কানযুল ঈমান
১৫. এবং আমি মানুষকে নির্দেশ দিয়েছি যেন আপন মাতা পিতার প্রতি সদ্ব্যবহার করে। তার মা তাকে গর্ভে রেখেছে কষ্ট সহ্য করে এবং তাকে প্রসব করেছে কষ্ট সহ্য করে। আর তাকে (গর্ভে) বহন করে চলাফেরা করা ও তার দুধ ছাড়ানো ত্রিশ মাসের মধ্যে; এ পর্যন্ত যে, যখন সে আপন শক্তি পর্যন্ত পৌঁছলো এবং চল্লিশ বছর বয়সে উপনীত হলো, তখন আরয করলো, ‘হে আমার রব! আমার অন্তরে নিক্ষেপ করো যেন আমি তোমার ওই অনুগ্রহের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি, যা তুমি আমার উপর ও আমার মাতা পিতার উপর করেছো এবং আমি যেন ওই কাজ করি, যা তোমার নিকট পছন্দীয় আর আমার জন্য আমার সন্তানদের সৎকর্মপরায়ণ করো। আমি তোমার প্রতি প্রত্যাবর্তন করেছি এবং আমি হলাম মুসলমান।
ইরফানুল কুরআন
১৫. আর আমরা মানুষকে তার পিতামাতার প্রতি সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি। তার জননী কষ্ট করে তাকে (গর্ভে) ধারণ করেছেন এবং কষ্ট করে তাকে জন্ম দিয়েছেন। তাকে গর্ভে ধারণ এবং দুগ্ধ ছাড়ানো (অর্থাৎ গর্ভধারণের সময় ও দুগ্ধপান) ত্রিশ মাস (ব্যাপী)। অবশেষে যখন সে যৌবনে পদার্পণ করে এবং চল্লিশ বছরে (পরিপক্ক বয়সে) উপনীত হয়, তখন বলে, ‘হে আমার প্রতিপালক, আমাকে সামর্থ্য দাও যাতে আমি তোমার অনুগ্রহের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি যা তুমি আমার প্রতি এবং আমার পিতামাতার প্রতি করেছো। আর যাতে আমি সৎকর্ম সম্পাদন করতে পারি যা তুমি পছন্দ করো এবং আমার ও আমার সন্তানদেরকে পুণ্য ও কল্যাণ দান করো। নিশ্চয়ই আমি তোমারই দিকে প্রত্যাবর্তন করি এবং আমি অবশ্যই আত্মসমর্পণকারীদের অন্তর্ভুক্ত।’
اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ نَتَقَبَّلُ عَنۡہُمۡ اَحۡسَنَ مَا عَمِلُوۡا وَ نَتَجَاوَزُ عَنۡ سَیِّاٰتِہِمۡ فِیۡۤ اَصۡحٰبِ الۡجَنَّۃِ ؕ وَعۡدَ الصِّدۡقِ الَّذِیۡ کَانُوۡا یُوۡعَدُوۡنَ ﴿۱۶﴾
কানযুল ঈমান
১৬. এরা হচ্ছে, তারাই, যাদের সৎকর্মসমূহ আমি ক্ববূল করবো এবং তাদের ত্রুটি বিচ্যুতিগুলো ক্ষমা করবো তারা জান্নাতবাসীদের অন্তর্ভুক্ত। সত্য প্রতিশ্রুতি, যা তাদেরকে দেওয়া হতো।
ইরফানুল কুরআন
১৬. এরাই সেসব লোক যাদের উত্তম কর্মসমূহ আমরা গ্রহণ করি এবং তাদের অপারগতা উপেক্ষা করি। (এরাই) জান্নাতের অধিবাসী। এ অঙ্গীকার সত্য যা তাদেরকে দেয়া হচ্ছে।
وَ الَّذِیۡ قَالَ لِوَالِدَیۡہِ اُفٍّ لَّکُمَاۤ اَتَعِدٰنِنِیۡۤ اَنۡ اُخۡرَجَ وَ قَدۡ خَلَتِ الۡقُرُوۡنُ مِنۡ قَبۡلِیۡ ۚ وَ ہُمَا یَسۡتَغِیۡثٰنِ اللّٰہَ وَیۡلَکَ اٰمِنۡ ٭ۖ اِنَّ وَعۡدَ اللّٰہِ حَقٌّ ۚۖ فَیَقُوۡلُ مَا ہٰذَاۤ اِلَّاۤ اَسَاطِیۡرُ الۡاَوَّلِیۡنَ ﴿۱۷﴾
কানযুল ঈমান
১৭. এবং ওই ব্যক্তি যে আপন মাতা পিতাকে বলেছে, ‘উহ! তোমাদের দিক থেকে অন্তর বিরক্ত হয়ে গেছে। তোমরা কি আমাকে এ প্রতিশ্রুতি দিচ্ছো যে, আমি পুনরায় জীবিত হবো; অথচ আমার পূর্বে বহু সম্প্রদায় গত হয়েছে?’ আর তাদের উভয়ে আল্লাহ্র দরবারে ফরিয়াদ করে-‘তোমার অনিষ্ট হোক! ঈমান আনো। নিশ্চয় আল্লাহ্র প্রতিশ্রুতি সত্য’। অতঃপর সে বলে, ‘এ’তো নয়, কিন্তু পূর্ববর্তীদের গল্প কাহিনী।
ইরফানুল কুরআন
১৭. আর যে ব্যক্তি তার পিতামাতাকে বলে, ‘ধিক্কার তোমাদের জন্যে! তোমরা কি আমাকে (এ) প্রতিশ্রুতি দিচ্ছো যে, আমাকে (কবর থেকে পুনর্জীবিত করে) উত্থিত করা হবে, অথচ আমার পূর্বে অনেক প্রজন্ম অতিবাহিত হয়েছে?’ তখন (পিতা-মাতা) উভয়ে আল্লাহ্র নিকট সাহায্য প্রার্থনা করে (এবং সন্তানকে বলে) ‘তোমার ধ্বংস হোক! (হে সন্তান!) বিশ্বাস স্থাপন করো, নিশ্চয়ই আল্লাহ্র অঙ্গীকার সত্য।’ তখন সে (উত্তরে) বলে, ‘এসব (বিষয়) পূর্ববর্তী লোকদের মিথ্যা রূপকথা ব্যতীত (কিছুই) নয়’।
اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ حَقَّ عَلَیۡہِمُ الۡقَوۡلُ فِیۡۤ اُمَمٍ قَدۡ خَلَتۡ مِنۡ قَبۡلِہِمۡ مِّنَ الۡجِنِّ وَ الۡاِنۡسِ ؕ اِنَّہُمۡ کَانُوۡا خٰسِرِیۡنَ ﴿۱۸﴾
কানযুল ঈমান
১৮. এরা ওই সব লোক, যাদের উপর বাণী অবধারিত হয়েছে- ওই সব দলের মধ্যে, যারা তাদের পূর্বে গত হয়েছে- জিন্ ও মানব। নিশ্চয় তারা ক্ষতিগ্রস্ত ছিলো।
ইরফানুল কুরআন
১৮. এরাই সেসব লোক যাদের ব্যাপারে (শাস্তির) নির্দেশ সত্যে পরিণত হয়েছে, তাদের পূর্বে জ্বিন এবং মানুষের মধ্য থেকে এমন অনেক সম্প্রদায় অতিবাহিত হয়েছে। নিশ্চয়ই তারা (সবাই) ছিল ক্ষতিগ্রস্ত।
وَ لِکُلٍّ دَرَجٰتٌ مِّمَّا عَمِلُوۡا ۚ وَ لِیُوَفِّیَہُمۡ اَعۡمَالَہُمۡ وَ ہُمۡ لَا یُظۡلَمُوۡنَ ﴿۱۹﴾
কানযুল ঈমান
১৯. এবং প্রত্যেকের জন্য আপন আপন কর্মের স্তর রয়েছে এবং যাতে আল্লাহ্ তাদের কর্মগুলো তাদেরকে পরিপূর্ণভাবে দেন; এবং তাদের প্রতি যুল্ম হবে না।
ইরফানুল কুরআন
১৯. আর প্রত্যেকের জন্যে (জান্নাতে ও জাহান্নামে পৃথক পৃথক) স্তরসমূহ নির্ধারিত রয়েছে, সেসব (ভালো ও মন্দ) কর্মের কারণে যা তারা করে; যাতে (আল্লাহ্) তাদেরকে তাদের কৃতকর্মের পুরোপুরি প্রতিদান দেন এবং তাদের প্রতি অবিচার করা হবে না।
وَ یَوۡمَ یُعۡرَضُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا عَلَی النَّارِ ؕ اَذۡہَبۡتُمۡ طَیِّبٰتِکُمۡ فِیۡ حَیَاتِکُمُ الدُّنۡیَا وَ اسۡتَمۡتَعۡتُمۡ بِہَا ۚ فَالۡیَوۡمَ تُجۡزَوۡنَ عَذَابَ الۡہُوۡنِ بِمَا کُنۡتُمۡ تَسۡتَکۡبِرُوۡنَ فِی الۡاَرۡضِ بِغَیۡرِ الۡحَقِّ وَ بِمَا کُنۡتُمۡ تَفۡسُقُوۡنَ ﴿۲۰﴾
কানযুল ঈমান
২০. এবং যে দিন কাফিরদেরকে আগুনের উপর পেশ করা হবে, (সেদিন তাদেরকে বলা হবে) ‘তোমরা আপন অংশের পবিত্র বস্তুগুলো আপন পার্থিব জীবনেই নিশ্চিহ্ন করে বসেছো এবং সেগুলো ভোগ করেছো সুতরাং আজ তোমাদেরকে বিনিময়ে লাঞ্ছনার শাস্তি দেওয়া হবে, শাস্তি তারই, যা তোমরা পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে অহঙ্কার করতে এবং শাস্তি এরই যে, তোমরা নির্দেশে অমান্য করতে।
ইরফানুল কুরআন
২০. আর যে দিন কাফেরদেরকে জাহান্নামের আগুনের সামনে উপস্থিত করা হবে (তখন তাদেরকে বলা হবে), ‘তোমরা তোমাদের পার্থিব জীবনেই ভোগ্য-সামগ্রী ও সুখ-সম্ভার লাভ করেছো এবং সেগুলো (ভালোভাবেই) উপভোগও করেছো। সুতরাং আজ তোমাদেরকে প্রতিফল স্বরূপ দেয়া হবে অপমানকর শাস্তি; এ কারণে যে, তোমরা পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করতে; আর এ কারণেও যে, তোমরা নাফরমানী করতে।’
وَ اذۡکُرۡ اَخَا عَادٍ ؕ اِذۡ اَنۡذَرَ قَوۡمَہٗ بِالۡاَحۡقَافِ وَ قَدۡ خَلَتِ النُّذُرُ مِنۡۢ بَیۡنِ یَدَیۡہِ وَ مِنۡ خَلۡفِہٖۤ اَلَّا تَعۡبُدُوۡۤا اِلَّا اللّٰہَ ؕ اِنِّیۡۤ اَخَافُ عَلَیۡکُمۡ عَذَابَ یَوۡمٍ عَظِیۡمٍ ﴿۲۱﴾
কানযুল ঈমান
২১. এবং স্মরণ করুন, ‘আদের সমগোত্রীয় লোককে, যখন সে তাদেরকে আহক্বাফ ভূমিতে সতর্ক করেছে এবং নিশ্চয় তার পূর্বেও সতর্ককারীগণ গত হয়েছে এবং তার পরেও এসেছে (এ বলে) যে, ‘আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত করো না। নিশ্চয় আমি তোমাদের উপর এক মহা দিবসের শাস্তির আশঙ্কা করছি।
ইরফানুল কুরআন
২১. আর (হে হাবীব!) স্মরণ করুন ’আদ সম্প্রদায়ের ভ্রাতা (হুদ আলাইহিস সালাম)-এঁর কথা, যদিও তাঁর পূর্বে এবং তাঁর পরে (কতিপয়) সতর্ককারী (নবী) অতিবাহিত হয়েছিলেন, যখন তিনি (ওমান এবং মাহরার মধ্যবর্তী ইয়েমেনের এক উপত্যকা) আহকাফে তাঁর সম্প্রদায়কে (মন্দকর্মের পরিণতির ব্যাপারে) সতর্ক করছিলেন এই বলে, ‘তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারো উপাসনা করো না। আমি তোমাদের জন্যে আশংকা করছি (ভয়ানক) মহাদিবসের শাস্তি।’
قَالُوۡۤا اَجِئۡتَنَا لِتَاۡفِکَنَا عَنۡ اٰلِہَتِنَا ۚ فَاۡتِنَا بِمَا تَعِدُنَاۤ اِنۡ کُنۡتَ مِنَ الصّٰدِقِیۡنَ ﴿۲۲﴾
কানযুল ঈমান
২২. তারা বললো, ‘তুমি কি এজন্য এসেছো যে, আমাদেরকে আমাদের উপাস্যগুলো থেকে নিবৃত্ত করবে? সুতরাং আমাদের উপর তা আনো যেটার প্রতিশ্রুতি আমাদেরকে দিচ্ছো, যদি তুমি সত্যবাদী হও’।
ইরফানুল কুরআন
২২. তারা বললো, ‘আপনি কি আমাদেরকে আমাদের উপাস্যদের থেকে নিবৃত্ত করতে আমাদের নিকট এসেছেন? সুতরাং (সে শাস্তি) আনয়ন করুন আমাদেরকে যার ভয় দেখাচ্ছেন, যদি আপনি সত্যবাদী হন।’
قَالَ اِنَّمَا الۡعِلۡمُ عِنۡدَ اللّٰہِ ۫ۖ وَ اُبَلِّغُکُمۡ مَّاۤ اُرۡسِلۡتُ بِہٖ وَ لٰکِنِّیۡۤ اَرٰىکُمۡ قَوۡمًا تَجۡہَلُوۡنَ ﴿۲۳﴾
কানযুল ঈমান
২৩. সে বললো, ‘সেটার খবর তো আল্লাহ্রই নিকট রয়েছে। আমি তো তোমাদেরকে আপন রবের পয়গাম পৌঁছাচ্ছি। হাঁ, আমার জানা মতে, তোমরা নিরেট অজ্ঞ লোক।
ইরফানুল কুরআন
২৩. তিনি বললেন, ‘(এ শাস্তির মুহূর্তের) জ্ঞান তো কেবল আল্লাহ্রই নিকট রয়েছে। আমি তো তোমাদের নিকট সে বিধানই পৌঁছে দেই যা দিয়ে আমাকে প্রেরণ করা হয়েছে। কিন্তু আমি দেখছি যে, তোমরা এক অজ্ঞ সম্প্রদায়।’
فَلَمَّا رَاَوۡہُ عَارِضًا مُّسۡتَقۡبِلَ اَوۡدِیَتِہِمۡ ۙ قَالُوۡا ہٰذَا عَارِضٌ مُّمۡطِرُنَا ؕ بَلۡ ہُوَ مَا اسۡتَعۡجَلۡتُمۡ بِہٖ ؕ رِیۡحٌ فِیۡہَا عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ﴿ۙ۲۴﴾
কানযুল ঈমান
২৪. অতঃপর যখন তারা শাস্তি দেখতে পেলো- মেঘের মতো আসমানের পার্শ্বদেশের ঘনীভূত হয়ে আছে, তাদের উপত্যকার দিকে আসছে, তখন তারা বললো, ‘এটা মেঘ, যা আমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ করবে’। বরং এতো তা-ই যার জন্য তোমরা ত্বরা করছিলে- এক ঝড়, যার মধ্যে রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি;
ইরফানুল কুরআন
২৪. অতঃপর যখন তারা তাদের উপত্যকার সামনে মেঘের আকারে অগ্রসরমান (শাস্তি) দেখতে পেলো তখন তারা বলতে শুরু করলো, ‘এ (তো) মেঘ যা আমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ করবে’। (না, তা নয়,) এ তো (মেঘের আকারে সে শাস্তি) যা তোমরা দ্রুত কামনা করছিলে। (এটি) ঝঞ্ঝাবায়ূ যাতে রয়েছে (অগ্রসরমান) যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
تُدَمِّرُ کُلَّ شَیۡءٍۭ بِاَمۡرِ رَبِّہَا فَاَصۡبَحُوۡا لَا یُرٰۤی اِلَّا مَسٰکِنُہُمۡ ؕ کَذٰلِکَ نَجۡزِی الۡقَوۡمَ الۡمُجۡرِمِیۡنَ ﴿۲۵﴾
কানযুল ঈমান
২৫. যা প্রত্যেক বস্তুকে ধ্বংস করে ফেলে রবের নির্দেশে। অতঃপর তারা সকালে এমতাবস্থায় রয়ে গেলো যে, তাদের (ধ্বংসপ্রাপ্ত) বাসস্থানগুলো ছাড়া আর কিছুই দৃষ্টিগোচর হচ্ছিলো না। আমি এভাবেই শাস্তি দিই অপরাধীদেরকে।
ইরফানুল কুরআন
২৫. স্বীয় প্রতিপালকের নির্দেশে তা সমস্ত কিছু ধ্বংস ও বরবাদ করে দেবে। অতঃপর সেসব এমন (তছনছ) হয়ে গেল যে, তাদের (ধ্বংসপ্রাপ্ত) গৃহগুলো ছাড়া আর কিছুই দৃশ্যমান রইলো না। এভাবেই আমরা অপরাধীদেরকে শাস্তি প্রদান করে থাকি।
وَ لَقَدۡ مَکَّنّٰہُمۡ فِیۡمَاۤ اِنۡ مَّکَّنّٰکُمۡ فِیۡہِ وَ جَعَلۡنَا لَہُمۡ سَمۡعًا وَّ اَبۡصَارًا وَّ اَفۡـِٕدَۃً ۫ۖ فَمَاۤ اَغۡنٰی عَنۡہُمۡ سَمۡعُہُمۡ وَ لَاۤ اَبۡصَارُہُمۡ وَ لَاۤ اَفۡـِٕدَتُہُمۡ مِّنۡ شَیۡءٍ اِذۡ کَانُوۡا یَجۡحَدُوۡنَ ۙ بِاٰیٰتِ اللّٰہِ وَ حَاقَ بِہِمۡ مَّا کَانُوۡا بِہٖ یَسۡتَہۡزِءُوۡنَ ﴿۲۶﴾
কানযুল ঈমান
২৬. এবং নিশ্চয় আমি তাদেরকে ওই শক্তি সামর্থ্য দিয়েছিলাম, যা তোমাদেরকে দিই নি; আর তাদের জন্য কান, চোখ ও হৃদয় সৃষ্টি করেছি; সুতরাং তাদের কান, চোখ ও হৃদয়গুলো তাদের কোন কাজে আসে নি যখন তারা আল্লাহ্র আয়াতগুলোকে অস্বীকার করতো; এবং তাদেরকে পরিবেষ্টন করে নিলো ওই শাস্তি, যা নিয়ে তারা বিদ্রূপ করতো।
ইরফানুল কুরআন
২৬. (হে মক্কার অধিবাসীরা!) প্রকৃতপক্ষে আমরা তাদেরকে যেসব বিষয়ে শক্তি ও ক্ষমতা দিয়েছিলাম তোমাদেরকে সে ক্ষমতা দেইনি। আর আমরা তাদেরকে দিয়েছিলাম শ্রবণ, দৃষ্টি এবং হৃদয় ও মস্তিস্ক (-এর অমূল্য গুণাগুণ); কিন্তু তাদের কর্ণ না কোনো কাজে এসেছে, আর না তাদের চক্ষু, আর না তাদের হৃদয় ও মস্তিস্ক, কেননা তারা আল্লাহ্র নিদর্শনাবলীকে অস্বীকার রত ছিল; আর (পরিশেষে সে শাস্তি) তাদেরকে এসে পরিবেষ্টন করলো যা নিয়ে তারা উপহাস করতো।
وَ لَقَدۡ اَہۡلَکۡنَا مَا حَوۡلَکُمۡ مِّنَ الۡقُرٰی وَ صَرَّفۡنَا الۡاٰیٰتِ لَعَلَّہُمۡ یَرۡجِعُوۡنَ ﴿۲۷﴾
কানযুল ঈমান
২৭. এবং নিশ্চয় আমি ধ্বংস করে দিয়েছি তোমাদের আশ-পাশের জনপদগুলোকে এবং বিভিন্ন ধরনের নিদর্শন এনেছি যাতে ফিরে আসে।
ইরফানুল কুরআন
২৭. আর (হে মক্কাবাসীরা!) আমরা ধ্বংস করেছিলাম তোমাদের চতুর্পার্শ্বের জনপদসমূহ এবং বার বার আমাদের নিদর্শনাবলী প্রকাশ করেছিলাম, যাতে তারা (কুফরী থেকে) ফিরে আসে।
فَلَوۡ لَا نَصَرَہُمُ الَّذِیۡنَ اتَّخَذُوۡا مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ قُرۡبَانًا اٰلِـہَۃً ؕ بَلۡ ضَلُّوۡا عَنۡہُمۡ ۚ وَ ذٰلِکَ اِفۡکُہُمۡ وَ مَا کَانُوۡا یَفۡتَرُوۡنَ ﴿۲۸﴾
কানযুল ঈমান
২৮. অতঃপর তাদেরকে কেন সাহায্য করে নি ওইগুলো, যেগুলোকে তারা আল্লাহ্ ব্যতীত নৈকট্য লাভের নিমিত্ত খোদা স্থির করে রেখেছিলো? বরং তারা তাদের থেকে হারিয়ে গেছে। এবং এটা তাদের অপবাদ ও মনগড়া কথা মাত্র।
ইরফানুল কুরআন
২৮. অতঃপর সেসব (মূর্তি) কেন তাদেরকে সাহায্য করলো না যাদেরকে তারা (আল্লাহ্র) নৈকট্যের আশায় আল্লাহ্র পরিবর্তে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছিল? বরং এসব (ভ্রান্ত উপাস্য) তাদের থেকে অন্তর্হিত হয়ে পড়লো। আর এ (মূর্তিগুলোকে উপাস্যরূপে নির্ধারণ করা) তাদের মিথ্যাচার এবং তাদের উদ্ভাবিত মিথ্যা অপবাদ এরূপই।
وَ اِذۡ صَرَفۡنَاۤ اِلَیۡکَ نَفَرًا مِّنَ الۡجِنِّ یَسۡتَمِعُوۡنَ الۡقُرۡاٰنَ ۚ فَلَمَّا حَضَرُوۡہُ قَالُوۡۤا اَنۡصِتُوۡا ۚ فَلَمَّا قُضِیَ وَلَّوۡا اِلٰی قَوۡمِہِمۡ مُّنۡذِرِیۡنَ ﴿۲۹﴾
কানযুল ঈমান
২৯. এবং যখন আমি আপনার প্রতি কতগুলো জিনকে ফেরালাম যারা কান লাগিয়ে ক্বোরআন শুনছিলো; অতঃপর যখন সেখানে হাযির হলো তখন পরস্পরের মধ্যে বললো, ‘চুপ থাকো!’ অতঃপর যখন পাঠ করা সমাপ্ত হলো, তখন আপন সম্প্রদায়ের দিকে সতর্ককারী হয়ে ফিরে গেলো।
ইরফানুল কুরআন
২৯. আর (হে হাবীব!) যখন আমরা আপনার প্রতি আকৃষ্ট করেছিলাম জ্বিনদের একটি দলকে যারা মনোযোগ সহকারে কুরআন শ্রবণ করছিল, অতঃপর যখন তারা সেখানে (অর্থাৎ নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের নিকট) উপস্থিত হলো, তারা (পরস্পরে) বলতে লাগলো, ‘চুপ থাকো’। যখন (তিলাওয়াত) সম্পন্ন হলো, তারা নিজ সম্প্রদায়ের নিকট ফিরে গেল (সত্যের দিকে আহ্বানকারী) সতর্ককারীরূপে।
قَالُوۡا یٰقَوۡمَنَاۤ اِنَّا سَمِعۡنَا کِتٰبًا اُنۡزِلَ مِنۡۢ بَعۡدِ مُوۡسٰی مُصَدِّقًا لِّمَا بَیۡنَ یَدَیۡہِ یَہۡدِیۡۤ اِلَی الۡحَقِّ وَ اِلٰی طَرِیۡقٍ مُّسۡتَقِیۡمٍ ﴿۳۰﴾
কানযুল ঈমান
৩০. তারা বললো, ‘হে আমাদের সম্প্রদায়! আমরা একটা কিতাব শুনেছি যা মূসার পরে অবতীর্ণ হয়েছে, পূর্ববর্তী কিতাবগুলোর সমর্থকরূপে, সত্য ও সরল পথ প্রদর্শকরূপে।
ইরফানুল কুরআন
৩০. তারা বললো, ‘হে আমাদের (জ্বিন) সম্প্রদায়! নিশ্চয়ই আমরা (এমন) এক কিতাবের পাঠ শুনে এসেছি যা অবতীর্ণ হয়েছে মূসা (আলাইহিস সালামের তাওরাত)-এঁর পর, (যা) সত্যায়ন করে এর পূর্ববর্তীতে আগত (কিতাবসমূহকে), পরিচালিত করে সত্য (ধর্ম) এবং সরল পথের দিকে।
یٰقَوۡمَنَاۤ اَجِیۡبُوۡا دَاعِیَ اللّٰہِ وَ اٰمِنُوۡا بِہٖ یَغۡفِرۡ لَکُمۡ مِّنۡ ذُنُوۡبِکُمۡ وَ یُجِرۡکُمۡ مِّنۡ عَذَابٍ اَلِیۡمٍ ﴿۳۱﴾
কানযুল ঈমান
৩১. হে আমাদের সম্প্রদায়! আল্লাহ্র আহ্বানকারীর কথা মেনে নাও এবং তার প্রতি ঈমান আনো, তিনি (আল্লাহ্) তোমাদের কিছু পাপ ক্ষমা করবেন এবং তোমাদেরকে বেদনাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবেন।
ইরফানুল কুরআন
৩১. হে আমাদের সম্প্রদায়! আল্লাহ্র দিকে আহ্বানকারীর (অর্থাৎ মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের) আহ্বানে সাড়া দাও এবং তাঁর উপর ঈমান আনয়ন করো, (তবেই) আল্লাহ্ তোমাদের গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দেবেন এবং তোমাদেরকে রক্ষা করবেন যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে।
وَ مَنۡ لَّا یُجِبۡ دَاعِیَ اللّٰہِ فَلَیۡسَ بِمُعۡجِزٍ فِی الۡاَرۡضِ وَ لَیۡسَ لَہٗ مِنۡ دُوۡنِہٖۤ اَوۡلِیَآءُ ؕ اُولٰٓئِکَ فِیۡ ضَلٰلٍ مُّبِیۡنٍ ﴿۳۲﴾
কানযুল ঈমান
৩২. এবং যে আল্লাহ্র আহ্বানকারীর কথা অমান্য করে সে পৃথিবীতে আয়ত্ত্ব থেকে বের হয়ে যেতে পারে না এবং আল্লাহ্র সম্মুখে তার কোন সাহায্যকারী নেই, তারা সুস্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৩২. আর যে আল্লাহ্র দিকে আহ্বানকারী (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-এঁর প্রতি সাড়া না দেয়, সে পৃথিবীতে (পলায়নপর হয়েও আল্লাহ্র অভিপ্রায়) ব্যর্থ করতে পারবে না এবং তার জন্যে আল্লাহ্ ব্যতীত কোনো সাহায্যকারী থাকবে না। এরাই সুস্পষ্ট গোমরাহীতে নিমজ্জিত।
اَوَ لَمۡ یَرَوۡا اَنَّ اللّٰہَ الَّذِیۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ وَ لَمۡ یَعۡیَ بِخَلۡقِہِنَّ بِقٰدِرٍ عَلٰۤی اَنۡ یُّحۡیِۦَ الۡمَوۡتٰی ؕ بَلٰۤی اِنَّہٗ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ ﴿۳۳﴾
কানযুল ঈমান
৩৩. তারা কি জানে নি যে, ওই আল্লাহ্, যিনি আস্মান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন এবং সেগুলো সৃষ্টি করতে ক্লান্ত হন নি, মৃতকে জীবিত করতে সক্ষম। কেন নন? নিশ্চয় তিনি সবকিছু করতে পারেন।
ইরফানুল কুরআন
৩৩. তারা কি জানে না যে, আল্লাহ্, যিনি আকাশমন্ডলী এবং পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং এসব সৃষ্টি করায় তিনি ক্লান্ত নন; তিনি মৃতকে (দ্বিতীয়বার) পুনর্জীবিত করতেও সক্ষম? কেন নয়! নিশ্চয়ই তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান।
وَ یَوۡمَ یُعۡرَضُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا عَلَی النَّارِ ؕ اَلَیۡسَ ہٰذَا بِالۡحَقِّ ؕ قَالُوۡا بَلٰی وَ رَبِّنَا ؕ قَالَ فَذُوۡقُوا الۡعَذَابَ بِمَا کُنۡتُمۡ تَکۡفُرُوۡنَ ﴿۳۴﴾
কানযুল ঈমান
৩৪. এবং যে দিন কাফিরদেরকে আগুনের উপর পেশ করা হবে, তখন তাদেরকে বলা হবে, ‘এটা কি সত্য নয়?’ তারা বলবে, ‘কেন নয়? আমাদের রবের শপথ!’ বলা হবে, ‘সুতরাং শাস্তি আস্বাদন করো-আপন কুফরের প্রতিফল স্বরূপ’।
ইরফানুল কুরআন
৩৪. আর যেদিন কাফেরদেরকে জাহান্নামের অগ্নির সম্মুখে উপস্থিত করা হবে (সেদিন তাদেরকে বলা হবে), ‘এ (শাস্তি) কি সত্য নয়?’ তারা বলবে, ‘কেন নয়! আমাদের প্রতিপালকের শপথ (এটি সত্য)’। এরশাদ হবে, ‘তাহলে শাস্তি আস্বাদ করো, যা তোমরা অস্বীকার করতে’।
فَاصۡبِرۡ کَمَا صَبَرَ اُولُوا الۡعَزۡمِ مِنَ الرُّسُلِ وَ لَا تَسۡتَعۡجِلۡ لَّہُمۡ ؕ کَاَنَّہُمۡ یَوۡمَ یَرَوۡنَ مَا یُوۡعَدُوۡنَ ۙ لَمۡ یَلۡبَثُوۡۤا اِلَّا سَاعَۃً مِّنۡ نَّہَارٍ ؕ بَلٰغٌ ۚ فَہَلۡ یُہۡلَکُ اِلَّا الۡقَوۡمُ الۡفٰسِقُوۡنَ ﴿۳۵﴾
কানযুল ঈমান
৩৫. সুতরাং আপনি ধৈর্যধারণ করুন যেমনিভাবে সাহসী রসূলগণ ধৈর্যধারণ করেছেন এবং তাদের জন্য ত্বরা করবেন না; যেদিন তারা তা দেখতে পাবে, যার প্রতিশ্রুতি তাদেরকে দেওয়া হচ্ছে, সেদিন (তাদের মনে হবে) তারা যেন দিনের এক ঘন্টার বেশী দুনিয়ায় অবস্থান করে নি। এটা একটা প্রচার। সুতরাং কে ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে? কিন্তু নির্দেশ অমান্যকারী লোকেরাই।
ইরফানুল কুরআন
৩৫. (হে হাবীব!) অতএব ধৈর্য ধারণ করুন, যেভাবে (অপরাপর) সমুন্নত দৃঢ়সংকল্পের অধিকারী রাসূলগণ ধৈর্য ধারণ করেছিলেন এবং আপনি এদের জন্যে (অর্থাৎ অস্বীকারকারীদের জন্যে শাস্তি কামনায়) ত্বরা করবেন না। যেদিন তারা (পরকালীন এ শাস্তি) প্রত্যক্ষ করবে যার প্রতিশ্রুতি তাদেরকে দেওয়া হচ্ছে, সেদিন (তাদের মনে হবে) যেন তারা (পৃথিবীতে) দিবসের এক মুহূর্তের বেশি অবস্থানই করেনি। (আল্লাহ্র নিকট থেকে) এ এক ঘোষণা, পাপাচারী সম্প্রদায়কেই ধ্বংস করা হবে।