بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
কানযুল ঈমান
০. আল্লাহ্র নামে আরম্ভ, যিনি পরম দয়ালু, করুণাময় (১)
ইরফানুল কুরআন
০. আল্লাহর নামে শুরু, যিনি পরম করুণাময়, সতত অসীম দয়ালু।
یٰۤاَیُّہَا النَّبِیُّ اتَّقِ اللّٰہَ وَ لَا تُطِعِ الۡکٰفِرِیۡنَ وَ الۡمُنٰفِقِیۡنَ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ عَلِیۡمًا حَکِیۡمًا ۙ﴿۱﴾
কানযুল ঈমান
১. হে অদৃশ্যের সংবাদ বর্ণনাকারী (নবী)! আল্লাহ্র এভাবেই ভয় রাখুন! এবং কাফির ও মুনাফিকদের কথা শুনবেন না; নিশ্চয় আল্লাহ্ জ্ঞানময়, প্রজ্ঞাময়;
ইরফানুল কুরআন
১. হে নবী! আপনি আল্লাহ্-ভীতির উপর (পূর্ববতী দৃঢ়তা অনুসারে) অবিচল থাকুন। আর কাফের ও মুনাফিকদের (এ) কথা (কখনো) মেনে নেবেন না (যে, আমাদের সাথে ধর্মীয় সমঝোতা করে নাও)। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাবান।
وَّ اتَّبِعۡ مَا یُوۡحٰۤی اِلَیۡکَ مِنۡ رَّبِّکَ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ خَبِیۡرًا ۙ﴿۲﴾
কানযুল ঈমান
২. এবং সেটারই অনুসরণ করুন, যা আপনার রবের নিকট থেকে আপনার প্রতি ওহী করা হয়। হে লোকেরা! আল্লাহ্ তোমাদের কাজ দেখছেন।
ইরফানুল কুরআন
২. আর আপনি এর অনুসরণ বহাল রাখুন যা আপনার প্রতি আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে প্রত্যাদেশ করা হয়। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা সকল কর্মকান্ড সম্পর্কে অবগত যা তোমরা সম্পদান করো।
وَّ تَوَکَّلۡ عَلَی اللّٰہِ ؕ وَ کَفٰی بِاللّٰہِ وَکِیۡلًا ﴿۳﴾
কানযুল ঈমান
৩. আর হে মাহবূব! আপনি আল্লাহ্র উপর ভরসা রাখুন! এবং আল্লাহ্ই যথেষ্ট কর্ম- ব্যবস্থাপক হিসেবে।
ইরফানুল কুরআন
৩. আর আল্লাহ্র উপর ভরসা (বহাল) রাখুন। অভিভাবক হিসাবে আল্লাহ্ই যথেষ্ট।
مَا جَعَلَ اللّٰہُ لِرَجُلٍ مِّنۡ قَلۡبَیۡنِ فِیۡ جَوۡفِہٖ ۚ وَ مَا جَعَلَ اَزۡوَاجَکُمُ الّٰٓیِٴۡ تُظٰہِرُوۡنَ مِنۡہُنَّ اُمَّہٰتِکُمۡ ۚ وَ مَا جَعَلَ اَدۡعِیَآءَکُمۡ اَبۡنَآءَکُمۡ ؕ ذٰلِکُمۡ قَوۡلُکُمۡ بِاَفۡوَاہِکُمۡ ؕ وَ اللّٰہُ یَقُوۡلُ الۡحَقَّ وَ ہُوَ یَہۡدِی السَّبِیۡلَ ﴿۴﴾
কানযুল ঈমান
৪. আল্লাহ্ কোন মানুষের অভ্যন্তরে দু’টি হৃদয় সৃষ্টি করেন নি এবং তোমাদের ওই সব স্ত্রীকে, যাদেরকে তোমরা মায়ের সমান বলে দাও; তোমাদের জননী করেন নি; আর তোমাদের পোষ্যপুত্রদেরকেও তোমাদের পুত্র করেন নি। এ’তোতোমাদের মুখের কথা। আর আল্লাহ্ সত্য বলেন এবং তিনিই সঠিক পথ দেখান।
ইরফানুল কুরআন
৪. আল্লাহ্ কোনো মানুষের অভ্যন্তরে দু’টি হৃদয় সৃষ্টি করেন নি, আর তিনি তোমাদের স্ত্রীদেরকে তোমাদের জননীও করেননি, যাদেরকে তোমরা যিহার করার মাধ্যমে (অর্থাৎ বিচ্ছেদের এক রূপে) মা বলে দাও। আর তিনি তোমাদের পালকপুত্রদেরকেও তোমাদের (প্রকৃত) পুত্র করেননি। এসব তো কেবল তোমাদের মুখের কথা। আর আল্লাহ্ সত্য কথাই বলেন এবং তিনিই (সরল) পথ দেখান।
اُدۡعُوۡہُمۡ لِاٰبَآئِہِمۡ ہُوَ اَقۡسَطُ عِنۡدَ اللّٰہِ ۚ فَاِنۡ لَّمۡ تَعۡلَمُوۡۤا اٰبَآءَہُمۡ فَاِخۡوَانُکُمۡ فِی الدِّیۡنِ وَ مَوَالِیۡکُمۡ ؕ وَ لَیۡسَ عَلَیۡکُمۡ جُنَاحٌ فِیۡمَاۤ اَخۡطَاۡتُمۡ بِہٖ ۙ وَ لٰکِنۡ مَّا تَعَمَّدَتۡ قُلُوۡبُکُمۡ ؕ وَ کَانَ اللّٰہُ غَفُوۡرًا رَّحِیۡمًا ﴿۵﴾
কানযুল ঈমান
৫. তাদেরকে তাদের পিতৃ পরিচয়েই ডাকো; এটা আল্লাহ্র অধিক ন্যায়সঙ্গত। অতঃপর যদি তোমরা তাদের পিতা সম্বন্ধে না জানো, তবে তারা ধর্মে তোমাদের ভাই এবং মানব হিসেবে তোমাদের চাচাত ভাই অর্থাৎ তোমাদের বন্ধু এবং তোমাদের উপর এর মধ্যে কোন গুনাহ নেই, যা অজানাবশতঃ তোমাদের দ্বারা সম্পাদিত হয়েছে; তবে হা, তাই পাপ, যা অন্তরের ইচ্ছা দ্বারা সম্পন্ন করো। এবং আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, দয়ালু।
ইরফানুল কুরআন
৫. তোমরা তাদেরকে (অর্থাৎ পালকপুত্রদেরকে) তাদের পিতৃপরিচয়েই আহ্বান করো। এটিই আল্লাহ্র নিকট অধিকতর ন্যায়সঙ্গত। আর যদি তোমরা তাদের পিতাদের না জানো, তবে (তারা) তোমাদের দ্বীনি ভাই এবং তোমাদের বন্ধু। আর এতে তোমাদের কোনো গোনাহ নেই, যা তোমরা ভুলক্রমে বলে ফেলেছো; তবে (তা অবশ্যই গুনাহ হবে) যার সংকল্প তোমাদের অন্তর করেছে। আর আল্লাহ্ মহাক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু।
اَلنَّبِیُّ اَوۡلٰی بِالۡمُؤۡمِنِیۡنَ مِنۡ اَنۡفُسِہِمۡ وَ اَزۡوَاجُہٗۤ اُمَّہٰتُہُمۡ ؕ وَ اُولُوا الۡاَرۡحَامِ بَعۡضُہُمۡ اَوۡلٰی بِبَعۡضٍ فِیۡ کِتٰبِ اللّٰہِ مِنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ وَ الۡمُہٰجِرِیۡنَ اِلَّاۤ اَنۡ تَفۡعَلُوۡۤا اِلٰۤی اَوۡلِیٰٓئِکُمۡ مَّعۡرُوۡفًا ؕ کَانَ ذٰلِکَ فِی الۡکِتٰبِ مَسۡطُوۡرًا ﴿۶﴾
কানযুল ঈমান
৬. এ নবী, মুসলমানদের, তাদের প্রাণ অপেক্ষাও বেশি মালিক, এবং তার স্ত্রীগণ তাদের মাতা। আর নিকটাত্নীয়গণ আল্লাহ্র কিতাবের (বিধানের) মধ্যে একে অপরের চেয়েও নিকটতর অন্যান্য মুসলমান ও মুহাজিরদের তুলনায়, তবে তোমরা যদি তোমাদের বন্ধু- বান্ধবের প্রতি অনুগ্রহ প্রদর্শন করতে চাও (তবে করতে পার)। এটা কিতাবে লিপিবদ্ধ রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৬. এ (সম্মানিত) নবী মুমিনদের কাছে তাদের প্রাণের চেয়েও ঘনিষ্ঠতর এবং স্বত্বাধিকারী এবং তাঁর (পবিত্র) স্ত্রীগণ তাদের মাতা। আর রক্তসম্পর্কীয় আত্মীয়গণ আল্লাহ্র বিধান অনুসারে (অপরাপর) মুমিনগণ এবং মুহাজিরগণের চেয়ে (উত্তরাধিকার বন্টনের ক্ষেত্রে) একে অপরের নিকটতর, তবে তোমাদের বন্ধুদের ব্যতীত যাদেরকে তোমরা অনুগ্রহ করতে চাও। এ নির্দেশ (আল্লাহ্র) কিতাবে লিপিবদ্ধ।
وَ اِذۡ اَخَذۡنَا مِنَ النَّبِیّٖنَ مِیۡثَاقَہُمۡ وَ مِنۡکَ وَ مِنۡ نُّوۡحٍ وَّ اِبۡرٰہِیۡمَ وَ مُوۡسٰی وَ عِیۡسَی ابۡنِ مَرۡیَمَ ۪ وَ اَخَذۡنَا مِنۡہُمۡ مِّیۡثَاقًا غَلِیۡظًا ۙ﴿۷﴾
কানযুল ঈমান
৭. এবং হে মাহবূব! স্মরণ করুন, যখন আমি নবীগণের নিকট থেকে অঙ্গীকার গ্রহণ করেছি এবং আপনার নিকট থেকে আর নূহ, ইব্রাহীম, মূসা ও মরিয়ম- তনয় ঈসার নিকট থেকে; এবং আমি তাদের নিকট থেকে দৃঢ় অঙ্গীকার গ্রহণ করেছি,
ইরফানুল কুরআন
৭. আর (হে হাবীব! স্মরণ করুন,) যখন আমরা নবীগণের নিকট থেকে তাদের (নবুয়ত প্রচারের) অঙ্গীকার নিয়েছিলাম, (বিশেষ করে) আপনার নিকট থেকে, নূহ থেকে, ইবরাহীম থেকে, এবং মারইয়াম-তনয় ঈসা (আলাইহিমুস সালাম) থেকে। আর আমরা তাদের নিকট থেকে দৃঢ় অঙ্গীকার নিয়েছিলাম,
لِّیَسۡـَٔلَ الصّٰدِقِیۡنَ عَنۡ صِدۡقِہِمۡ ۚ وَ اَعَدَّ لِلۡکٰفِرِیۡنَ عَذَابًا اَلِیۡمًا ﴿۸﴾
কানযুল ঈমান
৮. যাতে সত্যবাদীদেরকে তাদের সত্যবাদিতা সম্বন্ধে প্রশ্ন করেন; এবং তিনি কাফিরদের জন্য বেদনাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন।
ইরফানুল কুরআন
৮. যাতে (আল্লাহ্) সত্যবাদীদেরকে তাদের সত্যবাদিতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। আর তিনি কাফেরদের জন্যে প্রস্তুত রেখেছেন যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اذۡکُرُوۡا نِعۡمَۃَ اللّٰہِ عَلَیۡکُمۡ اِذۡ جَآءَتۡکُمۡ جُنُوۡدٌ فَاَرۡسَلۡنَا عَلَیۡہِمۡ رِیۡحًا وَّ جُنُوۡدًا لَّمۡ تَرَوۡہَا ؕ وَ کَانَ اللّٰہُ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ بَصِیۡرًا ۚ﴿۹﴾
কানযুল ঈমান
৯. হে ঈমানদারগণ! তোমাদের প্রতি আল্লাহ্র অনুগ্রহ স্মরণ করো, যখন তোমাদের বিরুদ্ধে কিছু সৈন্য এসেছে, তখন আমি তাদের বিরুদ্ধে ঝঞ্ঝাবায়ু ও এমন বাহিনী প্রেরণ করেছি, যা তোমরা দেখো নি এবং আল্লাহ্ তোমাদের কর্ম দেখছেন।
ইরফানুল কুরআন
৯. হে ঈমানদারগণ! তোমাদের প্রতি আল্লাহ্র অনুগ্রহের কথা স্মরণ করো, যখন (কাফেরদের) এক বাহিনী তোমাদের বিরুদ্ধে উপনীত হয়েছিল তখন আমি তাদের উপর ঝঞ্ঝাবায়ু এবং (ফেরেশতাদের) এক বাহিনী প্রেরণ করেছিলাম যাদেরকে তোমরা দেখোনি। আর যা কিছু তোমরা করো আল্লাহ্ তা খুব ভালোভাবেই দেখেন।
اِذۡ جَآءُوۡکُمۡ مِّنۡ فَوۡقِکُمۡ وَ مِنۡ اَسۡفَلَ مِنۡکُمۡ وَ اِذۡ زَاغَتِ الۡاَبۡصَارُ وَ بَلَغَتِ الۡقُلُوۡبُ الۡحَنَاجِرَ وَ تَظُنُّوۡنَ بِاللّٰہِ الظُّنُوۡنَا ﴿۱۰﴾
কানযুল ঈমান
১০. যখন কাফির তোমাদের বিরুদ্ধে সমাগত হয়েছে- তোমাদের উপর থেকে ও তোমাদের নিচে থেকে এবং যখন বিস্ফরিত হয়ে রয়ে গেলো দৃষ্টিসমূহ, হৃদয় কণ্ঠগুলোর নিকটে এসে পড়লো এবং তোমরা আল্লাহ্ সম্বন্ধে নানাবিধ ধারণা পোষণ করছিলে (আশা ও হতাশার)।
ইরফানুল কুরআন
১০. যখন এরা (কাফেরেরা) তোমাদেরকে আক্রমণ করেছিল (পূর্বস্থ উপত্যকার) উপরের দিক থেকে এবং তোমাদের (পশ্চিমস্থ উপত্যকার) নিচের দিক থেকে এবং যখন (আতঙ্কে তোমাদের) চক্ষু বিস্ফারিত হয়েছিল, (বিভীষিকায় তোমাদের) প্রাণ হয়ে পড়েছিল কণ্ঠাগত এবং তোমরা (আশা-নিরাশায়) আল্লাহ্ সম্পর্কে নানাবিধ ধারণা পোষণ করছিলে,
ہُنَالِکَ ابۡتُلِیَ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ وَ زُلۡزِلُوۡا زِلۡزَالًا شَدِیۡدًا ﴿۱۱﴾
কানযুল ঈমান
১১. সেটা এমন স্থান ছিলো, যেখানে মুসলমানদের পরীক্ষা হয়েছে এবং ভীষণভাবে নাড়া দেয়া হয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
১১. সে অবস্থায় মুমিনদের পরীক্ষা করা হয়েছিল এবং তাদেরকে প্রচন্ডভাবে প্রকম্পিত করা হয়েছিল।
وَ اِذۡ یَقُوۡلُ الۡمُنٰفِقُوۡنَ وَ الَّذِیۡنَ فِیۡ قُلُوۡبِہِمۡ مَّرَضٌ مَّا وَعَدَنَا اللّٰہُ وَ رَسُوۡلُہٗۤ اِلَّا غُرُوۡرًا ﴿۱۲﴾
কানযুল ঈমান
১২. এবং যখন বলতে লাগলো মুনাফিক্ব এবং যাদের অন্তরে রোগ ছিলো, ‘আমাদেরকে আল্লাহ্ ও রসূল প্রতিশ্রুতি দেন নি, কিন্তু প্রতারণারই’।
ইরফানুল কুরআন
১২. আর যখন মুনাফেকেরা এবং অন্তরে (দুর্বল আকীদা ও সন্দেহের) ব্যাধিতে আক্রান্ত লোকেরা বললো, ‘আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম) কেবল ধোঁকা ও প্রতারণার জন্যে আমাদেরকে (বিজয়ের) অঙ্গীকার করেছিলেন’।
وَ اِذۡ قَالَتۡ طَّآئِفَۃٌ مِّنۡہُمۡ یٰۤاَہۡلَ یَثۡرِبَ لَا مُقَامَ لَکُمۡ فَارۡجِعُوۡا ۚ وَ یَسۡتَاۡذِنُ فَرِیۡقٌ مِّنۡہُمُ النَّبِیَّ یَقُوۡلُوۡنَ اِنَّ بُیُوۡتَنَا عَوۡرَۃٌ ؕۛ وَ مَا ہِیَ بِعَوۡرَۃٍ ۚۛ اِنۡ یُّرِیۡدُوۡنَ اِلَّا فِرَارًا ﴿۱۳﴾
কানযুল ঈমান
১৩. এবং তাদের মধ্যে একদল লোক বললো, ‘হে মদীনাবাসীগণ! এখানে তোমাদের অবস্থানের স্থান নেই, তোমরা ঘরে ফিরে যাও; এবং তাদের মধ্যে একদল লোক নবীর নিকট অনুমতি প্রার্থণা করছিলো এ বলে যে, ‘আমাদের ঘর অরক্ষিত;’ অথচ সেগুলো অরক্ষিত ছিলো না। প্রকৃতপক্ষে পলায়ন করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য।
ইরফানুল কুরআন
১৩. আর যখন তাদের একদল বললো, ‘হে ইয়াসরীববাসী! তোমাদের (নিরাপদে) অবস্থানের জন্যে কোনো স্থান রইলো না; তোমরা (গৃহে) ফিরে যাও’, এবং তাদের মধ্যে একদল নবী (আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-এঁর নিকট (ফিরে যাবার) অনুুমতি চেয়ে বললো, ‘আমাদের বাড়িঘর অরক্ষিত’; অথচ সেগুলো অরক্ষিত ছিল না। তারা (এ বাহানায়) কেবল পলায়ন করতে চেয়েছিল।
وَ لَوۡ دُخِلَتۡ عَلَیۡہِمۡ مِّنۡ اَقۡطَارِہَا ثُمَّ سُئِلُوا الۡفِتۡنَۃَ لَاٰتَوۡہَا وَ مَا تَلَبَّثُوۡا بِہَاۤ اِلَّا یَسِیۡرًا ﴿۱۴﴾
কানযুল ঈমান
১৪. এবং যদি তাদের বিরুদ্ধে শত্রু সৈন্যরা মদীনার বিভিন্ন দিক থেকে প্রবেশ করতো, অতঃপর তাদের নিকট থেকে কুফর চাইতো, তবে অবশ্যই তাদের দাবী পূরণ করে বসতো। এবং তাতে বিলম্ব করতো না, কিন্তু অল্পক্ষণ মাত্র।
ইরফানুল কুরআন
১৪. আর যদি তাদের বিরুদ্ধে মদীনার সকল দিক থেকে সৈন্যবাহিনী প্রবেশ করতো, অতঃপর এদেরকে (এ মুনাফেকদেরকে কুফর ও শিরকের) ফিতনা তৈরির আহ্বান করা হতো, তবে তারা এ (আহ্বান) গ্রহণ করতো এবং এতে কালবিলম্ব করতো না।
وَ لَقَدۡ کَانُوۡا عَاہَدُوا اللّٰہَ مِنۡ قَبۡلُ لَا یُوَلُّوۡنَ الۡاَدۡبَارَ ؕ وَ کَانَ عَہۡدُ اللّٰہِ مَسۡـُٔوۡلًا ﴿۱۵﴾
কানযুল ঈমান
১৫. এবং নিশ্চয় ইতোপূর্বে তারা আল্লাহ্র সাথে অঙ্গীকার করেছিলো যে, তারা পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে না এবং আল্লাহ্র (সাথে কৃত) অঙ্গীকার সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করা হবে।
ইরফানুল কুরআন
১৫. আর তারা তো পূর্বেই আল্লাহ্র সাথে অঙ্গীকার করে রেখেছিল যে, তারা পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে পলায়ন করবে না। আর আল্লাহ্র সাথে করা অঙ্গীকার সম্পর্কে (অবশ্যই) জিজ্ঞেস করা হবে।
قُلۡ لَّنۡ یَّنۡفَعَکُمُ الۡفِرَارُ اِنۡ فَرَرۡتُمۡ مِّنَ الۡمَوۡتِ اَوِ الۡقَتۡلِ وَ اِذًا لَّا تُمَتَّعُوۡنَ اِلَّا قَلِیۡلًا ﴿۱۶﴾
কানযুল ঈমান
১৬. আপনি বলুন! ‘কখনো তোমাদের পলায়ন করা উপকারে আসবে না যদি মৃত্যু অথবা হত্যার ভয়ে পলায়ন করো। এবং তখন তোমাদেরকে দুনিয়া ভোগ করতে দেওয়া হবে অতি সামান্যই’।
ইরফানুল কুরআন
১৬. বলে দিন, ‘পলায়ন তোমাদের কোনো উপকার বয়ে আনবে না যদি তোমরা মৃত্যু অথবা হত্যার (ভয়ে) পলায়ন করো, তবে তোমরা (জীবনে) সামান্যই লাভবান হবে।’
قُلۡ مَنۡ ذَا الَّذِیۡ یَعۡصِمُکُمۡ مِّنَ اللّٰہِ اِنۡ اَرَادَ بِکُمۡ سُوۡٓءًا اَوۡ اَرَادَ بِکُمۡ رَحۡمَۃً ؕ وَ لَا یَجِدُوۡنَ لَہُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ وَلِیًّا وَّ لَا نَصِیۡرًا ﴿۱۷﴾
কানযুল ঈমান
১৭. আপনি বলুন, ‘সে কে আছে, যে আল্লাহ্র নির্দেশ তোমাদের উপর থেকে সরাতে পারে- যদি তিনি তোমাদের অমঙ্গল চান অথবা তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করতে ইচ্ছে করেন?’ এবং তারা আল্লাহ্কে ব্যতীত অন্য কোন অভিভাবক পাবে না, না কোন সাহায্যকারী।
ইরফানুল কুরআন
১৭. বলে দিন, ‘এমন কেউ কি আছে যে তোমাদেরকে আল্লাহ্ হতে রক্ষা করবে, যদি তিনি তোমাদেরকে কষ্ট দিতে চান কিংবা তোমাদেরকে অনুগ্রহ করতে ইচ্ছা করেন?’ আর এরা আল্লাহ্ ব্যতীত নিজেদের জন্যে না কোনো রক্ষাকারী পাবে, আর না কোনো সাহায্যকারী।
قَدۡ یَعۡلَمُ اللّٰہُ الۡمُعَوِّقِیۡنَ مِنۡکُمۡ وَ الۡقَآئِلِیۡنَ لِاِخۡوَانِہِمۡ ہَلُمَّ اِلَیۡنَا ۚ وَ لَا یَاۡتُوۡنَ الۡبَاۡسَ اِلَّا قَلِیۡلًا ﴿ۙ۱۸﴾
কানযুল ঈমান
১৮. নিশ্চয় আল্লাহ্ জানেন তোমাদের মধ্যে তাদেরকে, যারা অন্য লোকদেরকে জিহাদে (অংশ গ্রহণে) বাধা দেয় এবং আপন ভাইদেরকে বলে, ‘আমাদের দিকে চলে এসো!’ এবং অল্প সংখ্যকই যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে।
ইরফানুল কুরআন
১৮. আল্লাহ্ অবশ্যই জানেন তোমাদের মধ্যে কারা (রাসূলকে এবং তাঁর সাহাবীগণকে জিহাদে) বাধা প্রদান করে এবং কারা তাদের ভাইদেরকে বলে, ‘আমাদের সাথে আসো’। আর এরা অল্পই যুদ্ধে অংশ নেয়।
اَشِحَّۃً عَلَیۡکُمۡ ۚۖ فَاِذَا جَآءَ الۡخَوۡفُ رَاَیۡتَہُمۡ یَنۡظُرُوۡنَ اِلَیۡکَ تَدُوۡرُ اَعۡیُنُہُمۡ کَالَّذِیۡ یُغۡشٰی عَلَیۡہِ مِنَ الۡمَوۡتِ ۚ فَاِذَا ذَہَبَ الۡخَوۡفُ سَلَقُوۡکُمۡ بِاَلۡسِنَۃٍ حِدَادٍ اَشِحَّۃً عَلَی الۡخَیۡرِ ؕ اُولٰٓئِکَ لَمۡ یُؤۡمِنُوۡا فَاَحۡبَطَ اللّٰہُ اَعۡمَالَہُمۡ ؕ وَ کَانَ ذٰلِکَ عَلَی اللّٰہِ یَسِیۡرًا ﴿۱۹﴾
কানযুল ঈমান
১৯. তোমাদের সাহায্যের ব্যাপারে কৃপণতা করে; অতঃপর যখন ভয় ভীতির সময় আসে, তখন আপনি তাদেরকে দেখবেন আপনার প্রতি এমনভাবে তাকিয়ে আছে যেন তাদের চোখগুলো ঘুরপাক খাচ্ছে ওই ব্যক্তির মতো, যাকে মৃত্যু ছাইয়ে ফেলেছে। অতঃপর যখন ভয়- ভীতির সময় অতিবাহিত হয়ে যায়, তখন তারা তোমাদের সমালোচনা করতে থাকে তীক্ষ্ম ভাষায়, গনীমতের মালের লোভে। এসব লোক ঈমানই আনেনি, তখন আল্লাহ্ তাদের কার্যাদি নিষ্ফল করেছেন এবং এটা আল্লাহ্র জন্য সহজ।
ইরফানুল কুরআন
১৯. তোমাদের ব্যাপারে কৃপণতাবশত (তারা এমন করে)। অতঃপর যখন ভীতির (অবস্থা) উপস্থিত হয় তখন আপনি দেখবেন, তারা আপনার দিকে তাকায়, (এবং) মৃত্যুভয়ে মূর্চ্ছাতুর ব্যক্তির ন্যায় তাদের চক্ষু ঘুরতে থাকে। আর যখন ভীতি চলে যায় তখন তারা তীক্ষ্ণ ভাষায় তোমাদেরকে বিদ্ধ করে, (বিরক্ত করে, তাদের অবস্থা এমন যে,) তারা গনিমতের সম্পদের লোভী। (প্রকৃতপক্ষে) এরা ঈমানই আনেনি, সুতরাং আল্লাহ্ তাদের আমলসমূহ বরবাদ করে দিয়েছেন এবং তা আল্লাহ্র জন্যে সহজ।
یَحۡسَبُوۡنَ الۡاَحۡزَابَ لَمۡ یَذۡہَبُوۡا ۚ وَ اِنۡ یَّاۡتِ الۡاَحۡزَابُ یَوَدُّوۡا لَوۡ اَنَّہُمۡ بَادُوۡنَ فِی الۡاَعۡرَابِ یَسۡاَلُوۡنَ عَنۡ اَنۡۢبَآئِکُمۡ ؕ وَ لَوۡ کَانُوۡا فِیۡکُمۡ مَّا قٰتَلُوۡۤا اِلَّا قَلِیۡلًا ﴿۲۰﴾
কানযুল ঈমান
২০. তারা মনে করছে যে, কাফিরদের সৈন্য বাহিনী এখনো চলে যায় নি; এবং যদি বাহিনী দ্বিতীয় বার আসে, তবে তাদের কামনা হবে যে, কোন মতে গ্রামগুলোর দিকে বের হয়ে তোমাদের খবরাদি জিজ্ঞাসা করবে! এবং যদি তারা তোমাদের মধ্যে থাকতো তবুও স্বল্প সংখ্যক লোকই যুদ্ধ করতো।
ইরফানুল কুরআন
২০. এরা (এখনো) ধারণা করছে যে, কাফেরদের বাহিনী এখনও (ফিরে) যায়নি। আর যদি এ বাহিনী (আবার ফিরে) আসে, তবে তারা আকাঙ্ক্ষা করবে যে, হায়! যদি তারা যাযাবর মরুবাসীদের সাথে যুক্ত হয়ে (নজরদারির উদ্দেশ্যে) তোমাদের সংবাদ নিতো। আর যদি তারা তোমাদের সাথে অবস্থানও করতো তবুও অল্পই যুদ্ধ করতো।
لَقَدۡ کَانَ لَکُمۡ فِیۡ رَسُوۡلِ اللّٰہِ اُسۡوَۃٌ حَسَنَۃٌ لِّمَنۡ کَانَ یَرۡجُوا اللّٰہَ وَ الۡیَوۡمَ الۡاٰخِرَ وَ ذَکَرَ اللّٰہَ کَثِیۡرًا ﴿ؕ۲۱﴾
কানযুল ঈমান
২১. নিশ্চয় তোমাদের জন্য রসূলুল্লহার অনুসরণ উত্তম, তাঁরই জন্য, যে আল্লাহ্ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহ্কে খুব স্মরণ করে।
ইরফানুল কুরআন
২১. প্রকৃতপক্ষে তোমাদের জন্যে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-এঁর সত্তায় রয়েছে অতি উত্তম (জীবন) আদর্শ, যারা আল্লাহ্র (সাথে মিলিত হওয়া) এবং পরকালের প্রত্যাশা করে এবং আল্লাহ্কে অধিক পরিমাণে স্মরণ করে।
وَ لَمَّا رَاَ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ الۡاَحۡزَابَ ۙ قَالُوۡا ہٰذَا مَا وَعَدَنَا اللّٰہُ وَ رَسُوۡلُہٗ وَ صَدَقَ اللّٰہُ وَ رَسُوۡلُہٗ ۫ وَ مَا زَادَہُمۡ اِلَّاۤ اِیۡمَانًا وَّ تَسۡلِیۡمًا ﴿ؕ۲۲﴾
কানযুল ঈমান
২২. এবং যখন মুসলমাগণ কাফিরদের বাহিনীকে দেখলো তখন বললো, ‘এটাতো তাই, যা আমাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আল্লাহ্ ও তার রসূল এবং সত্য বলেছেন আল্লাহ্ ও তার রসূল। আর এটা দ্বারা কেবল তাদের ঈমান ও আল্লাহ্র সন্তুষ্টির উপর সন্তুষ্টি থাকাই বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
২২. আর যখন ঈমানদারগণ (কাফেরদের) বাহিনীকে দেখলো, তারা বলে উঠলো, ‘এ তো তাই যার ব্যাপারে আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম) আমাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম) সত্য বলেছিলেন।’ সুতরাং এ (দৃশ্য) থেকে তাদের ঈমান ও আনুগত্য বৃদ্ধিই পেলো।
مِنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ رِجَالٌ صَدَقُوۡا مَا عَاہَدُوا اللّٰہَ عَلَیۡہِ ۚ فَمِنۡہُمۡ مَّنۡ قَضٰی نَحۡبَہٗ وَ مِنۡہُمۡ مَّنۡ یَّنۡتَظِرُ ۫ۖ وَ مَا بَدَّلُوۡا تَبۡدِیۡلًا ﴿ۙ۲۳﴾
কানযুল ঈমান
২৩. মুসলমানদের মধ্যে কিছু এমন প্রমাণিত করেছে যে- ই অঙ্গীকার তারা আল্লাহ্র সাথে করেছিলো; সুতরাং তাদের মধ্যে কেউ কেউ আপন মান্নত পূর্ণ করেছে, এবং কেউ কেউ অপেক্ষা করছে। আর তারা সামান্যটুকুও পরিবর্তিত হয় নি;
ইরফানুল কুরআন
২৩. মুমিনদের মধ্যে (বেশ) অনেকে তা সত্যায়ন করে দেখিয়েছে, আল্লাহ্র সাথে তারা যা অঙ্গীকার করেছিল। অতঃপর তাদের মধ্যে কতিপয় (শাহাদাত লাভ করে) তাদের প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করেছে এবং কতিপয় (নিজেদের পালার জন্যে) প্রতীক্ষা করছে। কিন্তু তারা (নিজেদের অঙ্গীকারে) সামান্যতমও পরিবর্তন করেনি,
لِّیَجۡزِیَ اللّٰہُ الصّٰدِقِیۡنَ بِصِدۡقِہِمۡ وَ یُعَذِّبَ الۡمُنٰفِقِیۡنَ اِنۡ شَآءَ اَوۡ یَتُوۡبَ عَلَیۡہِمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ غَفُوۡرًا رَّحِیۡمًا ﴿ۚ۲۴﴾
কানযুল ঈমান
২৪. যাতে আল্লাহ্ সত্যবাদীদেরকে তাদের সত্যের পুরস্কার দেন এবং মুনাফিকদের শাস্তি দেন যদি চান অথবা তাদেরকে তওবার তৌফিক দান করেন। নিশ্চয় আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, দয়ালু।
ইরফানুল কুরআন
২৪. তা এ জন্যে যে, আল্লাহ্ সত্যবাদীদেরকে তাদের সত্যবাদিতার পুরস্কার দেন এবং ইচ্ছা হলে মুনাফেকদেরকে শাস্তি দেন অথবা তাদের তওবা কবুল করেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ মহাক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু।
وَ رَدَّ اللّٰہُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا بِغَیۡظِہِمۡ لَمۡ یَنَالُوۡا خَیۡرًا ؕ وَ کَفَی اللّٰہُ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ الۡقِتَالَ ؕ وَ کَانَ اللّٰہُ قَوِیًّا عَزِیۡزًا ﴿ۚ۲۵﴾
কানযুল ঈমান
২৫. এবং আল্লাহ্ কাফিরদেরকে তাদের অন্তরের জ্বালা সহকারে ফিরে যেতে বাধ্য করলেন, এমতাবস্থায় যে, কোন মঙ্গলই তারা পায় নি, এবং আল্লাহ্ মুসলমানেদের যুদ্ধের জন্য যথেষ্ট ছিলেন; এবং আল্লাহ্ শক্তিমান, সম্মানের অধিকারী।
ইরফানুল কুরআন
২৫. আর আল্লাহ্ কাফেরদেরকে তাদের ক্রোধ-যন্ত্রণাসহ (মদীনা থেকে ব্যর্থ) ফিরিয়ে দিলেন, তারা কোনো সাফল্য লাভ করেনি। আর ঈমানদারদের জন্যে (আহযাবের) যুদ্ধে আল্লাহ্ই ছিলেন যথেষ্ট, আর আল্লাহ্ সর্বশক্তিমান, পরাক্রমশালী।
وَ اَنۡزَلَ الَّذِیۡنَ ظَاہَرُوۡہُمۡ مِّنۡ اَہۡلِ الۡکِتٰبِ مِنۡ صَیَاصِیۡہِمۡ وَ قَذَفَ فِیۡ قُلُوۡبِہِمُ الرُّعۡبَ فَرِیۡقًا تَقۡتُلُوۡنَ وَ تَاۡسِرُوۡنَ فَرِیۡقًا ﴿ۚ۲۶﴾
কানযুল ঈমান
২৬. এবং যে সব কিতাবী তাদেরকে সাহায্য করেছিলো তাদেরকে তাদের দূর্গগুলো থেকে অবতরণে বাধ্য করেছিলেন এবং তাদের অন্তরে আতঙ্কের সঞ্চার করলেন; তাদের মধ্য থেকে একদলকে তোমরা হত্যা করছো এবং একদলকে বন্দী (করছো)।
ইরফানুল কুরআন
২৬. আর (বনু কুরাইযা গোত্রের) যেসব আহলে কিতাব তাদেরকে (কাফেরদেরকে) সাহায্য করেছিল, আল্লাহ্ তাদেরকে(ও) তাদের দুর্গ থেকে নামিয়ে দিলেন এবং তাদের অন্তরে (ইসলামের) ভীতি সঞ্চার করলেন। তোমরা (তাদের) একদলকে (যুদ্ধাপরাধের কারণে) হত্যা করছো এবং একদলকে যুদ্ধবন্দী করছো।
وَ اَوۡرَثَکُمۡ اَرۡضَہُمۡ وَ دِیَارَہُمۡ وَ اَمۡوَالَہُمۡ وَ اَرۡضًا لَّمۡ تَطَـُٔوۡہَا ؕ وَ کَانَ اللّٰہُ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرًا ﴿۲۷﴾
কানযুল ঈমান
২৭. এবং আমি তোমাদেরকে অধিকারী করেছি তাদের ভূমির, তাদের ঘর- বাড়ির ও তাদের সম্পদের এবং ওই ভূমির, যা তোমরা এখনো পদানত করো নি। এবং আল্লাহ্ প্রত্যেক বস্তুর উপর শক্তিমান।
ইরফানুল কুরআন
২৭. আর তিনি তোমাদেরকে অধিকারী করলেন এদের (এ যুদ্ধ-শত্রুদের) ভূখন্ডের, তাদের ঘরবাড়ির, তাদের সম্পদ এবং তাদের সেসব ভূখন্ডের যেখানে তোমরা (ইতিপূর্বে) পদার্পণ করোনি। আর আল্লাহ্ সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান।
یٰۤاَیُّہَا النَّبِیُّ قُلۡ لِّاَزۡوَاجِکَ اِنۡ کُنۡـتُنَّ تُرِدۡنَ الۡحَیٰوۃَ الدُّنۡیَا وَ زِیۡنَتَہَا فَتَعَالَیۡنَ اُمَتِّعۡکُنَّ وَ اُسَرِّحۡکُنَّ سَرَاحًا جَمِیۡلًا ﴿۲۸﴾
কানযুল ঈমান
২৮. হে অদৃশ্যের সংবাদদাতা (নবী)! আপনার স্ত্রীগণকে বলে দিন, ‘যদি তোমরা পার্থিব জীবন ও সেটার ভূষণ কামনা করো, তবে এসো, আমি তোমাদেরকে সম্পদ দিই এবং সৌজন্যের সাথে ছেড়ে দিই।
ইরফানুল কুরআন
২৮. হে (সম্মানিত) নবী! আপনার স্ত্রীদেরকে বলুন, ‘যদি তোমরা পার্থিব জীবন এবং এর সৌন্দর্য কামনা করো তবে আসো আমি তোমাদেরকে সম্পদ ও সংস্থান করে দেই এবং তোমাদেরকে উত্তম পন্থায় মুক্ত করে দেই।
وَ اِنۡ کُنۡـتُنَّ تُرِدۡنَ اللّٰہَ وَ رَسُوۡلَہٗ وَ الدَّارَ الۡاٰخِرَۃَ فَاِنَّ اللّٰہَ اَعَدَّ لِلۡمُحۡسِنٰتِ مِنۡکُنَّ اَجۡرًا عَظِیۡمًا ﴿۲۹﴾
কানযুল ঈমান
২৯. আর যদি তোমরা আল্লাহ্ ও তার রসূল এবং পরকালের ঘর চাও, তবে নিশ্চয় আল্লাহ্ তোমাদের মধ্যেকার সৎকর্মপরায়ণ নারীদের জন্য মহা প্রতিদান প্রস্তুত করে রেখেছেন’।
ইরফানুল কুরআন
২৯. আর যদি তোমরা আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূলের সন্তুষ্টি এবং পরকালের আবাস কামনা করো তবে অবশ্যই আল্লাহ্ তোমাদের মধ্যে যারা সৎকর্মশীলা তাদের জন্যে প্রস্তুত রেখেছেন মহাপ্রতিদান।’
یٰنِسَآءَ النَّبِیِّ مَنۡ یَّاۡتِ مِنۡکُنَّ بِفَاحِشَۃٍ مُّبَیِّنَۃٍ یُّضٰعَفۡ لَہَا الۡعَذَابُ ضِعۡفَیۡنِ ؕ وَ کَانَ ذٰلِکَ عَلَی اللّٰہِ یَسِیۡرًا ﴿۳۰﴾
কানযুল ঈমান
৩০. হে নবীর স্ত্রীগণ! যে তোমাদের মধ্যে সুস্পষ্ট লজ্জার পরিপন্থী কোন দুঃসাহস দেখায়, তাকে অন্যদের চেয়ে দ্বিগুণ শাস্তি প্রদান করা হবে এবং এটা আল্লাহ্র জন্য সহজ।
ইরফানুল কুরআন
৩০. হে (সম্মানিত) নবী-পত্নীগণ! তোমাদের মধ্যে যে কেউ সুস্পষ্ট অশ্লীল কাজ করলে তাকে দ্বিগুণ শাস্তি দেয়া হবে। আর তা আল্লাহ্র জন্যে অনেক সহজ।
وَ مَنۡ یَّقۡنُتۡ مِنۡکُنَّ لِلّٰہِ وَ رَسُوۡلِہٖ وَ تَعۡمَلۡ صَالِحًا نُّؤۡتِہَاۤ اَجۡرَہَا مَرَّتَیۡنِ ۙ وَ اَعۡتَدۡنَا لَہَا رِزۡقًا کَرِیۡمًا ﴿۳۱﴾
কানযুল ঈমান
৩১. আর যে কেউ তোমাদের মধ্যে অনুগত থাকে আল্লাহ্ ও রসূলের প্রতি এবং সৎকাজ করে, আমি তাকে অন্যান্যের চেয়ে দ্বিগুণ সাওয়াব দেবো; আর আমি তার জন্য সম্মানজনক জীবিকা প্রস্তুত করে রেখেছি।
ইরফানুল কুরআন
৩১. আর তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-এঁর অনুগত থাকে এবং সৎকর্ম করতে থাকে আমরা তাদের সাওয়াব(ও) দ্বিগুণ প্রদান করবো এবং আমরা তাদের জন্যে (জান্নাতে) প্রস্তুত রেখেছি সম্মানজনক রিযিক।
یٰنِسَآءَ النَّبِیِّ لَسۡتُنَّ کَاَحَدٍ مِّنَ النِّسَآءِ اِنِ اتَّقَیۡتُنَّ فَلَا تَخۡضَعۡنَ بِالۡقَوۡلِ فَیَطۡمَعَ الَّذِیۡ فِیۡ قَلۡبِہٖ مَرَضٌ وَّ قُلۡنَ قَوۡلًا مَّعۡرُوۡفًا ﴿ۚ۳۲﴾
কানযুল ঈমান
৩২. হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্যান্য নারীর মতো নও, যদি আল্লাহ্কে ভয় করো তা’হলে কথায় এমন কোমলতা অবলম্বন করো না যেন অন্তরের রোগী কিছু লোভ করে; হা, ভালো কথা বলো।
ইরফানুল কুরআন
৩২. হে নবী পত্নীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মতো নও। যদি তোমরা পরহেযগার থাকতে চাও তবে (পর-পুরুষদের সাথে প্রয়োজন অনুসারে) কথা বলার ক্ষেত্রে কোমল কণ্ঠে কথা বলো না, নচেৎ যার অন্তরে (নিফাক বা কপটতার) ব্যাধি রয়েছে (কখনো কখনো) সে প্রলুব্ধ হবে। আর (সর্বদা) সন্দেহ ও নমনীয়তা হতে মুক্ত থেকে কথা বলো।
وَ قَرۡنَ فِیۡ بُیُوۡتِکُنَّ وَ لَا تَبَرَّجۡنَ تَبَرُّجَ الۡجَاہِلِیَّۃِ الۡاُوۡلٰی وَ اَقِمۡنَ الصَّلٰوۃَ وَ اٰتِیۡنَ الزَّکٰوۃَ وَ اَطِعۡنَ اللّٰہَ وَ رَسُوۡلَہٗ ؕ اِنَّمَا یُرِیۡدُ اللّٰہُ لِیُذۡہِبَ عَنۡکُمُ الرِّجۡسَ اَہۡلَ الۡبَیۡتِ وَ یُطَہِّرَکُمۡ تَطۡہِیۡرًا ﴿ۚ۳۳﴾
কানযুল ঈমান
৩৩. আর নিজেদের গৃহসমূহে অবস্থান করো এবং বে- পর্দা থেকো না যেমন পূর্ববর্তী জাহেলী যুগের পরদাহীনতা; আর নামায ক্বায়েম রাখো, যাকাত দাও এবং আল্লাহ্ ও তার রসূলের নির্দেশ মান্য করো। হে নবীর পরিবারবর্গ- আল্লাহ্ তো এটাই চান যে, তোমাদের থেকে প্রত্যেক অপবিত্রতা দূরীভূত করে দেবেন এবং তোমাদেরকে পবিত্র করে অতীব পরিচ্ছন্ন করে দেবেন।
ইরফানুল কুরআন
৩৩. আর স্বগৃহে প্রশান্তির সাথে অবস্থান করো এবং প্রাচীন জাহেলী যুগের ন্যায় সৌন্দর্য প্রকাশ করো না। নামায কায়েম করো, যাকাত প্রদান করতে থাকো এবং আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-এঁর আনুগত্যে নিয়োজিত থাকো। হে (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের) আহলে বাইত! আল্লাহ্ তো কেবল চান তোমাদের থেকে সব ধরণের গোনাহের অপবিত্রতা (এবং সন্দেহ ও ত্রুটিচিহ্ন পর্যন্ত) দূরে রাখতে এবং তোমাদেরকে (পরিপূর্ণ) পবিত্রতা দান করে সম্পূর্ণরূপে পাক-পবিত্র রাখতে।
وَ اذۡکُرۡنَ مَا یُتۡلٰی فِیۡ بُیُوۡتِکُنَّ مِنۡ اٰیٰتِ اللّٰہِ وَ الۡحِکۡمَۃِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ لَطِیۡفًا خَبِیۡرًا ﴿۳۴﴾
কানযুল ঈমান
৩৪. আর স্মরণ করো, যা তোমাদের ঘরে পাঠ করা হয়- আল্লাহ্র আয়াতসমূহ ও হিকমত। নিশ্চয় আল্লাহ্ প্রত্যেক সূক্ষ্ম বিষয় জানেন, সর্ব বিষয়ে অবহিত।
ইরফানুল কুরআন
৩৪. আর তোমরা স্মরণ করো আল্লাহ্র আয়াতসমূহ যা তোমাদের গৃহে তেলাওয়াত করা হয় এবং (রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের) সুন্নত ও প্রজ্ঞা। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ (তাঁর অলিদের জন্যে) অতি সূক্ষ্মদর্শী (এবং সমস্ত সৃষ্টিজগত সম্পর্কে) সম্যক অবগত।
اِنَّ الۡمُسۡلِمِیۡنَ وَ الۡمُسۡلِمٰتِ وَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ وَ الۡمُؤۡمِنٰتِ وَ الۡقٰنِتِیۡنَ وَ الۡقٰنِتٰتِ وَ الصّٰدِقِیۡنَ وَ الصّٰدِقٰتِ وَ الصّٰبِرِیۡنَ وَ الصّٰبِرٰتِ وَ الۡخٰشِعِیۡنَ وَ الۡخٰشِعٰتِ وَ الۡمُتَصَدِّقِیۡنَ وَ الۡمُتَصَدِّقٰتِ وَ الصَّآئِمِیۡنَ وَ الصّٰٓئِمٰتِ وَ الۡحٰفِظِیۡنَ فُرُوۡجَہُمۡ وَ الۡحٰفِظٰتِ وَ الذّٰکِرِیۡنَ اللّٰہَ کَثِیۡرًا وَّ الذّٰکِرٰتِ ۙ اَعَدَّ اللّٰہُ لَہُمۡ مَّغۡفِرَۃً وَّ اَجۡرًا عَظِیۡمًا ﴿۳۵﴾
কানযুল ঈমান
৩৫. নিশ্চয় মুসলমান পুরুষ ও মুসলমান নারীগণ, ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীগণ, অনুগত পুরুষ ও অনুগত নারীগণ, সত্যবাদী পুরুষ ও সত্যবাদী নারীগণ, ধৈর্যশীল পুরুষ ও ধৈর্যশীল নারীগণ, বিনীত পুরুষ ও বিনীত নারীগণ, দানশীল পুরুষ ও দানশীল নারীগণ, রোযা পালনকারী পুরুষ ও রোযা পালনকারী নারীগণ, স্বীয় লজ্জাস্থানের হিফাযতকারী পুরুষ ও হিফাযতকারী নারীগণ এবং আল্লাহ্কে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও স্মরণকারী নারীগণ- এ সবার জন্য আল্লাহ্ ক্ষমা ও মহা প্রতিদান তৈরী করে রেখেছেন।
ইরফানুল কুরআন
৩৫. নিশ্চয়ই মুসলমান পুরুষ ও মুসলমান নারী, মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী, অনুগত পুরুষ ও অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও সত্যবাদী নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ও ধৈর্যশীল নারী, বিনয়াবনত পুরুষ ও বিনয়াবনত নারী, দানশীল পুরুষ ও দানশীল নারী, রোযাদার পুরুষ ও রোযাদার নারী, স্বীয় লজ্জাস্থান সংরক্ষণকারী পুরুষ ও সংরক্ষণকারী নারী, আল্লাহ্কে অধিক পরিমাণে স্মরণকারী পুরুষ ও স্মরণকারী নারী - আল্লাহ তা’আলা তাদের সবার জন্যে প্রস্তুত রেখেছেন ক্ষমা ও মহাপ্রতিদান।
وَ مَا کَانَ لِمُؤۡمِنٍ وَّ لَا مُؤۡمِنَۃٍ اِذَا قَضَی اللّٰہُ وَ رَسُوۡلُہٗۤ اَمۡرًا اَنۡ یَّکُوۡنَ لَہُمُ الۡخِیَرَۃُ مِنۡ اَمۡرِہِمۡ ؕ وَ مَنۡ یَّعۡصِ اللّٰہَ وَ رَسُوۡلَہٗ فَقَدۡ ضَلَّ ضَلٰلًا مُّبِیۡنًا ﴿ؕ۳۶﴾
কানযুল ঈমান
৩৬. এবং না কোন মুসলমান পুরুষ, না কোন মুসলমান নারীর জন্য শোভা পায় যে, যখন আল্লাহ্ ও রসূল কোন নির্দেশ দেন তখন তাদের স্বীয় ব্যাপারে কোন ইখতিয়ার থাকবে। এবং যে কেউ নির্দেশ অমান্য করে- আল্লাহ্ ও তার রসূলের, সে নিশ্চয় সুস্পষ্ট বিভ্রান্তিতে পথভ্রষ্ট হয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৩৬. আর কোনো মুমিন পুরুষ কিংবা কোনো মুমিন নারীর (এ) অধিকার নেই যে, যখন আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম) কোনো বিষয়ে ফায়সালা (বা নির্দেশ) প্রদান করেন, তখন (তা করা বা না করার ব্যাপারে) স্বীয় পছন্দের চর্চা করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-এঁর অবাধ্য হয়, তবে সে অবশ্যই সুস্পষ্ট বিভ্রান্তিতে পথভ্রষ্ট হয়েছে।
وَ اِذۡ تَقُوۡلُ لِلَّذِیۡۤ اَنۡعَمَ اللّٰہُ عَلَیۡہِ وَ اَنۡعَمۡتَ عَلَیۡہِ اَمۡسِکۡ عَلَیۡکَ زَوۡجَکَ وَ اتَّقِ اللّٰہَ وَ تُخۡفِیۡ فِیۡ نَفۡسِکَ مَا اللّٰہُ مُبۡدِیۡہِ وَ تَخۡشَی النَّاسَ ۚ وَ اللّٰہُ اَحَقُّ اَنۡ تَخۡشٰہُ ؕ فَلَمَّا قَضٰی زَیۡدٌ مِّنۡہَا وَطَرًا زَوَّجۡنٰکَہَا لِکَیۡ لَا یَکُوۡنَ عَلَی الۡمُؤۡمِنِیۡنَ حَرَجٌ فِیۡۤ اَزۡوَاجِ اَدۡعِیَآئِہِمۡ اِذَا قَضَوۡا مِنۡہُنَّ وَطَرًا ؕ وَ کَانَ اَمۡرُ اللّٰہِ مَفۡعُوۡلًا ﴿۳۷﴾
কানযুল ঈমান
৩৭. এবং হে মাহবূব! স্মরণ করুন, যখন আপনি বলতেন তাকে, যাকে আল্লাহ্ অনুগ্রহ প্রদান করেছেন, এবং আপনিও তাকে অনুগ্রহ প্রদান করেছেন, ‘নিজ স্ত্রীকে নিজের কাছেই থাকতে দাও এবং আল্লাহ্কে ভয় করো’। আর আপনি স্বীয় অন্তরের মধ্যে ওই কথা (গোপন) রাখতেন, যেটাকে প্রকাশ করা আল্লাহ্র ইচ্ছা ছিলো এবং আপনি লোকদের সমালোচনার আশঙ্কা করতেন। আর আল্লাহ্ই অধিক উপযোগী এ কথার যে, আপনি তাঁরই ভয় রাখবেন, অতঃপর যখন ‘যায়দ’-এর উদ্দেশ্য তার (যয়নব) থেকে পূর্ণ হয়ে গেলো, তারপর আমি তাকে আপনার বিবাহে দিয়ে দিলাম যাতে মুসলমানদের জন্য কোন বাধা না তাদের পোষ্যপুত্রদের স্ত্রীগণের (বিবাহের) ব্যাপারে, যখন তাদের দিক থেকে তাদের প্রয়োজন মিটে যায়। আর আল্লাহ্র নির্দেশ কার্যকর হয়ে থাকে।
ইরফানুল কুরআন
৩৭. আর (হে হাবীব!) স্মরণ করুন, যখন আপনি সে ব্যক্তিকে বলেছিলেন যাকে আল্লাহ্ অনুগ্রহ করেছিলেন এবং আপনিও যাকে অনুগ্রহ করেছিলেন, ‘তোমার স্ত্রী (যয়নব)-কে স্বীয় স্ত্রী হিসেবেই ধরে রাখো এবং আল্লাহ্কে ভয় করো’। আর আপনি স্বীয় অন্তরে যে কথা* লুকিয়ে রেখেছিলেন আল্লাহ্ তা প্রকাশ করে দিচ্ছেন। আপনি (অন্তরে লজ্জাবশত) মানুষের (ঠাট্টা-বিদ্রুপের) ভয় করছিলেন। (হে হাবীব! মানুষকে ভ্রুক্ষেপ করার কোনো প্রয়োজন ছিল না) আর কেবল আল্লাহ্রই অধিকার রয়েছে যে, আপনি তাঁকে ভয় করুন। (আপনার চেয়ে অধিকতর আর কার মধ্যে তা আছে?) অতঃপর যখন (আপনার পোষ্যপুত্র) যায়েদ তাঁকে তালাকের আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ করলো, তখন আমরা তাঁকে আপনার সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ করলাম, যাতে মুমিনদের উপর তাদের পোষ্যপুত্রদের স্ত্রীদের (সাথে বিবাহের) ব্যাপারে কোনো অপবাদ না আসে, যখন (তালাকের পর) তাদের প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়। আর আল্লাহ্র নির্দেশ তো কার্যকর হয়েই থাকে।* (যে, যয়নবের সাথে তোমার মীমাংসা হবে না, আল্লাহ তা’আলার ইচ্ছায় সে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-এঁর পবিত্র স্ত্রীগণের মাঝে গণ্য হবেন।)
مَا کَانَ عَلَی النَّبِیِّ مِنۡ حَرَجٍ فِیۡمَا فَرَضَ اللّٰہُ لَہٗ ؕ سُنَّۃَ اللّٰہِ فِی الَّذِیۡنَ خَلَوۡا مِنۡ قَبۡلُ ؕ وَ کَانَ اَمۡرُ اللّٰہِ قَدَرًا مَّقۡدُوۡرَۨا ﴿۫ۙ۳۸﴾
কানযুল ঈমান
৩৮. নবীর জন্য কোন বাধা নেই এ কথায় যা আল্লাহ্ তার জন্য নির্ধারিত করেছেন। আল্লাহ্র বিধান চলে আসছে তাদের মধ্যে, যারা পূর্বে অতীত হয়েছে এবং আল্লাহ্র কাজ সুনির্ধারিত।
ইরফানুল কুরআন
৩৮. আর নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-এঁর উপর সে কাজ (সম্পাদন) করায় কোনো দোষ নেই যা আল্লাহ্ তাঁর জন্যে বিধিসম্মত করেছেন। আল্লাহ্র এ রীতি তাদের মাঝেও (ছিল) যারা পূর্বে অতিবাহিত হয়ে গেছে। আর আল্লাহ্র বিধান অবধারিত, যা পূর্ণ হয়ে গিয়েছে।
الَّذِیۡنَ یُبَلِّغُوۡنَ رِسٰلٰتِ اللّٰہِ وَ یَخۡشَوۡنَہٗ وَ لَا یَخۡشَوۡنَ اَحَدًا اِلَّا اللّٰہَ ؕ وَ کَفٰی بِاللّٰہِ حَسِیۡبًا ﴿۳۹﴾
কানযুল ঈমান
৩৯. তারাই, যারা আল্লাহ্র বাণী প্রচার করে এবং তাকে ভয় করে, আর আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কাউকে ভয় করে না; এবং আল্লাহ্ যথেষ্ট হিসাব গ্রহণকারী।
ইরফানুল কুরআন
৩৯. তারা (পূর্ববর্তী লোকেরা) আল্লাহ্ তা’আলার বাণী পৌঁছাতো, তাঁকে ভয় করতো, আর আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কাউকেও ভয় করতো না। আর হিসাব গ্রহণকারী হিসেবে আল্লাহ্ই যথেষ্ট।
مَا کَانَ مُحَمَّدٌ اَبَاۤ اَحَدٍ مِّنۡ رِّجَالِکُمۡ وَ لٰکِنۡ رَّسُوۡلَ اللّٰہِ وَ خَاتَمَ النَّبِیّٖنَ ؕ وَ کَانَ اللّٰہُ بِکُلِّ شَیۡءٍ عَلِیۡمًا ﴿۴۰﴾
কানযুল ঈমান
৪০. মুহাম্মদ তোমাদের পুরুষদের মধ্যে কারো পিতা নন; হাঁ, আল্লাহ্র রসূল, এবং সমস্ত নবীর মধ্যে সর্বশেষ। আর আল্লাহ্ সবকিছু জানেন।
ইরফানুল কুরআন
৪০. মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম) তোমাদের পুরুষদের মধ্যে কারো পিতা নন; বরং তিনি আল্লাহ্র রাসূল এবং (নবুয়্যতের ধারাবাহিকতা সমাপ্তকারী) সর্বশেষ নবী। আর আল্লাহ্ সর্ব বিষয়ে সম্যক অবগত।
یٰۤاَیُّہَاالَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اذۡکُرُوا اللّٰہَ ذِکۡرًا کَثِیۡرًا﴿ۙ۴۱﴾
কানযুল ঈমান
৪১. হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ্কে অধিক স্মরণ করো।
ইরফানুল কুরআন
৪১. হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ্কে স্মরণ করো অধিক পরিমাণে,
وَّ سَبِّحُوۡہُ بُکۡرَۃً وَّ اَصِیۡلًا ﴿۴۲﴾
কানযুল ঈমান
৪২. এবং সকাল সন্ধ্যায় তার পবিত্রতা ঘোষণা করো।
ইরফানুল কুরআন
৪২. আর সকাল-সন্ধা তাঁর মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণা করো।
ہُوَ الَّذِیۡ یُصَلِّیۡ عَلَیۡکُمۡ وَ مَلٰٓئِکَتُہٗ لِیُخۡرِجَکُمۡ مِّنَ الظُّلُمٰتِ اِلَی النُّوۡرِ ؕ وَ کَانَ بِالۡمُؤۡمِنِیۡنَ رَحِیۡمًا ﴿۴۳﴾
কানযুল ঈমান
৪৩. তিনিই হন, যিনি দরূদ প্রেরণ করেন তোমাদের উপর এবং তার ফিরিশ্তাগণ, যেন তিনি তোমাদেরকে অন্ধকাররাশি থেকে আলোর দিকে বের করে আনেন; এবং তিনি মুসলমানদের উপর দয়ালু।
ইরফানুল কুরআন
৪৩. তিনিই তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেন এবং তাঁর ফেরেশতাগণও (রহমতের দোয়া করেন), যেন তিনি তোমাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করে আনেন। আর তিনি মুমিনদের প্রতি পরম দয়ালু।
تَحِیَّتُہُمۡ یَوۡمَ یَلۡقَوۡنَہٗ سَلٰمٌ ۖۚ وَ اَعَدَّ لَہُمۡ اَجۡرًا کَرِیۡمًا ﴿۴۴﴾
কানযুল ঈমান
৪৪. তাদের জন্য সাক্ষাতের সময়ের অভিবাদন হবে ‘সালাম’ এবং তিনি তাদের জন্য সম্মানজনক পুরুস্কার প্রস্তুত করে রেখেছেন।
ইরফানুল কুরআন
৪৪. যে দিন তারা (মুমিনগণ) তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করবে সেদিন তাদের (সাক্ষাতের) উপহার হবে ‘সালাম’। আর তিনি তাদের জন্যে প্রস্তুত রেখেছেন সম্মানজনক প্রতিদান।
یٰۤاَیُّہَا النَّبِیُّ اِنَّاۤ اَرۡسَلۡنٰکَ شَاہِدًا وَّ مُبَشِّرًا وَّ نَذِیۡرًا ﴿ۙ۴۵﴾
কানযুল ঈমান
৪৫. হে অদৃশ্যের সংবাদদাতা (নবী) নিশ্চয় আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি হাযির-নাযির করে, সুসংবাদদাতা এবং সতর্ককারীরূপে;
ইরফানুল কুরআন
৪৫. হে (সম্মানিত) নবী! আমরা অবশ্যই আপনাকে প্রেরণ করেছি (সত্য এবং সৃষ্টির) সাক্ষীরূপে ও (আখেরাতের সৌন্দর্যের) সুসংবাদদাতা এবং (পরকালের শাস্তির) সতর্ককারীরূপে,
وَّ دَاعِیًا اِلَی اللّٰہِ بِاِذۡنِہٖ وَ سِرَاجًا مُّنِیۡرًا ﴿۴۶﴾
কানযুল ঈমান
৪৬. এবং আল্লাহ্র প্রতি তার নির্দেশে আহ্বানকারী আর আলোকোজ্জ্বলকারী সূর্যরূপে।
ইরফানুল কুরআন
৪৬. আর আল্লাহ্র অনুমতিক্রমে তাঁর দিকে আহ্বানকারীরূপে এবং আলো বিচ্ছুরণকারী সূর্যরূপে (প্রেরণ করেছি)।
وَ بَشِّرِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ بِاَنَّ لَہُمۡ مِّنَ اللّٰہِ فَضۡلًا کَبِیۡرًا ﴿۴۷﴾
কানযুল ঈমান
৪৭. এবং ঈমানদারদেরকে সুসংবাদ দিন যে, তাদের জন্য আল্লাহ্র মহা অনুগ্রহ রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৪৭. আর ঈমানদারদেরকে সুসংবাদ দিন যে, তাদের জন্যে রয়েছে আল্লাহ্র মহাঅনুগ্রহ (যে, তারা তাদের এ সর্বশেষ নবীর সাথে গোলামীর সম্পর্কে নিয়োজিত রয়েছে)।
وَ لَا تُطِعِ الۡکٰفِرِیۡنَ وَ الۡمُنٰفِقِیۡنَ وَ دَعۡ اَذٰىہُمۡ وَ تَوَکَّلۡ عَلَی اللّٰہِ ؕ وَ کَفٰی بِاللّٰہِ وَکِیۡلًا ﴿۴۸﴾
কানযুল ঈমান
৪৮. এবং কাফিরদের ও মুনাফিক্বদের খুশী করবেন না, তাদের নির্যাতনকে উপেক্ষা করুন এবং আল্লাহ্র উপর ভরসা রাখুন। আর আল্লাহ্ যথেষ্ট কর্মবিধায়ক।
ইরফানুল কুরআন
৪৮. আর আপনি (কখনো) কাফের ও মুনাফেকদের (এ) কথায় সম্মত হবেন না (যে, আমাদের সাথে ধর্মীয় সমঝোতা করে নিন)। আর তাদের নির্যাতন উপেক্ষা করুন এবং আল্লাহ্র উপর ভরসা (অব্যাহত) রাখুন। আর (সত্য-মিথ্যার দ্বন্ধে) অভিভাবক হিসেবে আল্লাহ্ই যথেষ্ট।
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا نَکَحۡتُمُ الۡمُؤۡمِنٰتِ ثُمَّ طَلَّقۡتُمُوۡہُنَّ مِنۡ قَبۡلِ اَنۡ تَمَسُّوۡہُنَّ فَمَا لَکُمۡ عَلَیۡہِنَّ مِنۡ عِدَّۃٍ تَعۡتَدُّوۡنَہَا ۚ فَمَتِّعُوۡہُنَّ وَ سَرِّحُوۡہُنَّ سَرَاحًا جَمِیۡلًا ﴿۴۹﴾
কানযুল ঈমান
৪৯. হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা মুসলমান নারীদেরকে বিবাহ করো, অতঃপর তাদের গায়ে হাত লাগানো ব্যতিরেকেই ছেড়ে দাও, তখন তোমাদের জন্য তাদের উপর এমন কোন ‘ইদ্দত’ নেই, যা তোমরা গণনা করবে। সুতরাং তাদেরকে কিছু উপকারজনক সামগ্রী দাও এবং উত্তমরূপে ছেড়ে দাও।
ইরফানুল কুরআন
৪৯. হে ঈমানদারগণ! তোমরা মুমিন নারীদের বিবাহের পর তাদেরকে স্পর্শ করার (অর্থাৎ শরীয়ত সম্মত নির্জনবাসের) পূর্বেই তালাক দিলে তোমাদের জন্যে তাদের পালনীয় কোনো ইদ্দত (বা নির্দিষ্ট সময় অপেক্ষা করার বাধ্য-বাধকতা) নেই যা তোমরা গণনা করবে। তাদেরকে কিছু উপহার-সামগ্রী দাও এবং উত্তমরূপে সুন্দর আচরণের সাথে তাদেরকে বিদায় করো।
یٰۤاَیُّہَا النَّبِیُّ اِنَّاۤ اَحۡلَلۡنَا لَکَ اَزۡوَاجَکَ الّٰتِیۡۤ اٰتَیۡتَ اُجُوۡرَہُنَّ وَ مَا مَلَکَتۡ یَمِیۡنُکَ مِمَّاۤ اَفَآءَ اللّٰہُ عَلَیۡکَ وَ بَنٰتِ عَمِّکَ وَ بَنٰتِ عَمّٰتِکَ وَ بَنٰتِ خَالِکَ وَ بَنٰتِ خٰلٰتِکَ الّٰتِیۡ ہَاجَرۡنَ مَعَکَ ۫ وَ امۡرَاَۃً مُّؤۡمِنَۃً اِنۡ وَّہَبَتۡ نَفۡسَہَا لِلنَّبِیِّ اِنۡ اَرَادَ النَّبِیُّ اَنۡ یَّسۡتَنۡکِحَہَا ٭ خَالِصَۃً لَّکَ مِنۡ دُوۡنِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ؕ قَدۡ عَلِمۡنَا مَا فَرَضۡنَا عَلَیۡہِمۡ فِیۡۤ اَزۡوَاجِہِمۡ وَ مَا مَلَکَتۡ اَیۡمَانُہُمۡ لِکَیۡلَا یَکُوۡنَ عَلَیۡکَ حَرَجٌ ؕ وَ کَانَ اللّٰہُ غَفُوۡرًا رَّحِیۡمًا ﴿۵۰﴾
কানযুল ঈমান
৫০. হে অদৃশ্যের সংবাদদাতা (নবী) আমি আপনার জন্য হালাল করেছি ওই বিবিগণকে, যাদেরকে আপনি মহর প্রদান করেছেন এবং আপনার হাতের মালিকানাধীন দাসীগণকে, যা আল্লাহ্ আপনাকে গনীমতের মধ্যে প্রদান করেছেনে এবং (বিবাহের জন্য হালাল করেছি) আপনার চাচার কন্যাগণ, আপনার ফুফীর কন্যাগণ, মামার কন্যাগণ এবং খালার কন্যাগণ, যারা আপনার সাথে হিজরত করেছে এবং ঈমানদার নারী, যদি সে স্বীয় প্রাণ (সত্তা) নবীর জন্য সমর্পণ করে, আর যদি নবীও তাকে বিবাহাধীনে আনতে চান। এটা বিশেষ করে আপনারই জন্য, উম্মতের জন্য নয়। আমি জানি যা আমি মুসলমানদের উপর নির্ধারণ করেছি তাদের বিবিগণ ও তাদের হাতের মালিকানাধীন দাসীদের মধ্যে। এ বিশেষত্ব আপনারই এ জন্য যেন আপনার কোন অসুবিধা না হয়; এবং আল্লাহ্ ক্ষমাশিল, দয়ালু।
ইরফানুল কুরআন
৫০. হে নবী! আমরা অবশ্যই আপনার জন্যে বৈধ করেছি সেসব স্ত্রীগণকে যাদের দেন-মোহর আপনি প্রদান করেছেন এবং গনিমত হিসেবে আল্লাহ্ আপনাকে যা প্রদান করেছেন তন্মধ্যে (আল্লাহ্র বিধানানুসারে) যারা আপনার অধীকারভুক্ত হয়েছে তাদেরকে, আর আপনার চাচাতো বোন, ফুফাতো বোন, মামাতো বোন এবং খালাতো বোন যারা আপনার সাথে হিজরত করেছে, আর যে কোনো মুমিন নারী যে নিজেকে নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামর)-এঁর নিকট নিবেদন করেছে এবং নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামও) তাকে বিবাহ বন্ধনে নেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছেন- (এ নির্দেশ) বিশেষ করে আপনারই জন্যে, (উম্মতের) অন্যান্য মুমিনদের জন্যে নয়। অবশ্যই আমরা জানি যা কিছু আমরা তাদের (অর্থাৎ মুসলমানদের) জন্যে তাদের স্ত্রী ও তাদের মালিকানাধীন দাসীগণের ব্যাপারে নির্ধারণ করেছি। (তবে আপনার জন্যে বহুসংখ্যক স্ত্রী হালাল হওয়ার বিশেষ বিধান এজন্যে যে,) যাতে আপনার (উম্মতের মাঝে নারীদের শিক্ষা ও লালন পালনের ব্যবস্থাপনায়) কোনো অসুবিধা না হয়। আল্লাহ্ মহাক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু।
تُرۡجِیۡ مَنۡ تَشَآءُ مِنۡہُنَّ وَ تُــٔۡوِیۡۤ اِلَیۡکَ مَنۡ تَشَآءُ ؕ وَ مَنِ ابۡتَغَیۡتَ مِمَّنۡ عَزَلۡتَ فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡکَ ؕ ذٰلِکَ اَدۡنٰۤی اَنۡ تَقَرَّ اَعۡیُنُہُنَّ وَ لَا یَحۡزَنَّ وَ یَرۡضَیۡنَ بِمَاۤ اٰتَیۡتَہُنَّ کُلُّہُنَّ ؕ وَ اللّٰہُ یَعۡلَمُ مَا فِیۡ قُلُوۡبِکُمۡ ؕ وَ کَانَ اللّٰہُ عَلِیۡمًا حَلِیۡمًا ﴿۵۱﴾
কানযুল ঈমান
৫১. পেছনে সরিয়ে দিন তাদের মধ্যে যাকে চান এবং নিজের নিকট স্থান দিন যাকে চান এবং যাকে আপনি দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন তাকে আপনি কামনা করলে তাতেও আপনার কোন গুনাহ নেই। এ বিষয় এরই নিকটতর যে, তাদের নয়নগুলো জুড়াবে এবং দুঃখ পাবে না আর আপনি তাদেরকে যা কিছু দান করবেন তার উপর তারা সবাই সন্তুষ্ট থাকবে। এবং আল্লাহ্ জানেন যা তোমাদের সবার অন্তরে আছে আর আল্লাহ্ জ্ঞাতা, সহনশীল।
ইরফানুল কুরআন
৫১. (হে হাবীব!) তাদের মধ্যে যাকে (যে স্ত্রীকে) ইচ্ছা দূরে রাখতে পারেন অথবা যাকে ইচ্ছা (অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে) আপনার নিকটে স্থান দিতে পারেন। আর এতে আপনার কোনো অপরাধ নেই যদি তাকে (আপনার নৈকট্যের জন্যে) কামনা করেন যাকে আপনি (সাময়িকভাবে) দূরে রাখতে চেয়েছিলেন। (আপনার সান্নিধ্য পেয়ে) তাদের চক্ষু শীতল করতে এটি অধিকতর উপযোগী এবং তারা দুঃখ পাবে না আর আপনি তাদেরকে যা কিছু প্রদান করেছেন তাতে তারা সবাই সন্তুষ্ট থাকবে। আল্লাহ্ জানেন যা কিছু তোমাদের অন্তরে রয়েছে। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, বড়ই ধৈর্যশীল।
لَا یَحِلُّ لَکَ النِّسَآءُ مِنۡۢ بَعۡدُ وَ لَاۤ اَنۡ تَبَدَّلَ بِہِنَّ مِنۡ اَزۡوَاجٍ وَّ لَوۡ اَعۡجَبَکَ حُسۡنُہُنَّ اِلَّا مَا مَلَکَتۡ یَمِیۡنُکَ ؕ وَ کَانَ اللّٰہُ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ رَّقِیۡبًا ﴿۵۲﴾
কানযুল ঈমান
৫২. তাদের পর অন্য কোন নারী আপনার জন্য বৈধ্য নয় এবং এও নয় যে, তাদের পরিবর্তে অন্য বিবি গ্রহণ করবেন, যদিও আপনাকে তাদের সৌন্দর্য বিস্মিত করে; কিন্তু দাসী আপনার হাতের মালিকানাধীন। এবং আল্লাহ্ প্রত্যেক কিছুর উপর তীক্ষ্ম দৃষ্টি রাখেন।
ইরফানুল কুরআন
৫২. (তারা পার্থিব ভোগকে আপনার সন্তুষ্টির উপর প্রাধান্য দিয়েছে) এরপর আপনার জন্যে অন্য নারী (বিবাহ বন্ধনে নেয়া) বৈধ নয় (যাতে স্ত্রীগণ স্বীয় মর্যাদায় বৈশিষ্ট্যমন্ডিত থাকে)। আর এও বৈধ নয় যে, (কাউকে তালাকের মাধ্যমে আমার নির্দেশিত সংখ্যা বহাল রাখার নিমিত্তে) আপনি তাদের পরিবর্তে অন্য স্ত্রী (বিবাহ বন্ধনে) গ্রহণ করেন, যদিও তাদের (আচরণ, চারিত্রিক বৈশিষ্ট ও দ্বীন প্রচারের পদ্ধতির) সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করে; তবে আপনার অধিকারভুক্ত দাসীগণ ব্যতীত। আল্লাহ্ সবকিছুর উপর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখেন।
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَدۡخُلُوۡا بُیُوۡتَ النَّبِیِّ اِلَّاۤ اَنۡ یُّؤۡذَنَ لَکُمۡ اِلٰی طَعَامٍ غَیۡرَ نٰظِرِیۡنَ اِنٰىہُ ۙ وَ لٰکِنۡ اِذَا دُعِیۡتُمۡ فَادۡخُلُوۡا فَاِذَا طَعِمۡتُمۡ فَانۡتَشِرُوۡا وَ لَا مُسۡتَاۡنِسِیۡنَ لِحَدِیۡثٍ ؕ اِنَّ ذٰلِکُمۡ کَانَ یُؤۡذِی النَّبِیَّ فَیَسۡتَحۡیٖ مِنۡکُمۡ ۫ وَ اللّٰہُ لَا یَسۡتَحۡیٖ مِنَ الۡحَقِّ ؕ وَ اِذَا سَاَلۡتُمُوۡہُنَّ مَتَاعًا فَسۡـَٔلُوۡہُنَّ مِنۡ وَّرَآءِ حِجَابٍ ؕ ذٰلِکُمۡ اَطۡہَرُ لِقُلُوۡبِکُمۡ وَ قُلُوۡبِہِنَّ ؕ وَ مَا کَانَ لَکُمۡ اَنۡ تُؤۡذُوۡا رَسُوۡلَ اللّٰہِ وَ لَاۤ اَنۡ تَنۡکِحُوۡۤا اَزۡوَاجَہٗ مِنۡۢ بَعۡدِہٖۤ اَبَدًا ؕ اِنَّ ذٰلِکُمۡ کَانَ عِنۡدَ اللّٰہِ عَظِیۡمًا ﴿۵۳﴾
কানযুল ঈমান
৫৩. হে ঈমানদারগণ! নবীর গৃহসমূহে হাযির হয়ো না যতক্ষণ না অনুমতি পাও, যেমন- খানার জন্য আমন্ত্রিত হও, না এভাবে যে, তোমরা নিজেরা তা রান্না হবার জন্য (দীর্ঘক্ষণ) অপেক্ষায় থাকবে; হাঁ, যখন আহুত হও তখন হাযির হও। আর যখন আহার করে নাও, তখন ছড়িয়ে পড়ো। এমন নয় যে, বসে কথাবার্তার মধ্যে মশগুল হয়ে থাকবে। নিশ্চয় তাতে নবীর কষ্ট হতো। অতঃপর তিনি তোমাদেরকে উঠিয়ে দিতে সংকোচবোধ করতেন। আল্লাহ্ সত্য বলতে সংকোচবোধ করেন না। এবং যখন তোমরা তাদের নিকট থেকে কিছু ভোগ্য সামগ্রী চাও, তখন পর্দার বাইরে থেকে চাও। এর মধ্যে অধিকতর পবিত্রতা রয়েছে তোমাদের হৃদয়গুলো ও তাদের অন্তরগুলোর। এবং তোমাদের জন্য শোভা পায় না যে, আল্লাহ্র রসূলকে কষ্ট দেবে আর না এও যে, তার পরে কখনো তার বিবিগণকে বিবাহ করবে; নিশ্চয় এটা আল্লাহ্র নিকট বড় জঘন্য কথা।
ইরফানুল কুরআন
৫৩. হে ঈমানদারগণ! খাবারের অনুমতি দেয়া না হলে তোমরা (সম্মানিত) নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-এঁর গৃহে প্রবেশ করো না, (সময়ের পূর্বে পৌঁছে) খাবার রান্না হওয়ার অপেক্ষাও করো না। হ্যাঁ, তোমাদেরকে আহ্বান করলে তখন তোমরা প্রবেশ করো, অতঃপর ভোজনশেষে (সেখান থেকে উঠে) ততক্ষণাৎ চলে যেও এবং তথায় কথাবার্তায় মগ্ন হয়ে থেকো না। নিশ্চয়ই তোমাদের এরকম (দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত বসে) থাকা (সম্মানিত) নবীকে কষ্ট দেয় এবং তিনি তোমাদেরকে (উঠিয়ে দিতে) সংকোচ বোধ করেন। আল্লাহ্ সত্য (কথা) বলতে সংকোচ বোধ করেন না। আর যখন তোমরা তাঁদের (পবিত্র স্ত্রীগণের) নিকট কিছু চাও তখন পর্দার অন্তরাল হতে চাও। এ (শিষ্টাচার) তোমাদের হৃদয়ের জন্যে এবং তাঁদের হৃদয়ের জন্যে অধিকতর পবিত্রতার কারণ। আর তোমাদের জন্যে (কখনোই) সংগত নয় যে, তোমরা আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-কে কষ্ট দাও এবং তাঁর পর কখনো তোমরা তাঁর (পবিত্র) স্ত্রীগণকে বিবাহ করো। নিশ্চয় তা আল্লাহ্র নিকট অনেক বড় (গোনাহ)।
اِنۡ تُبۡدُوۡا شَیۡئًا اَوۡ تُخۡفُوۡہُ فَاِنَّ اللّٰہَ کَانَ بِکُلِّ شَیۡءٍ عَلِیۡمًا ﴿۵۴﴾
কানযুল ঈমান
৫৪. যদি তোমরা কোন কথা প্রকাশ করো, অথবা গোপন করো, তবে নিশ্চয় আল্লাহ্ সবকিছু জানেন।
ইরফানুল কুরআন
৫৪. তোমরা কোনো বিষয় প্রকাশ করো অথবা তা গোপন করো, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সর্ব বিষয়ে সম্যক অবগত।
لَا جُنَاحَ عَلَیۡہِنَّ فِیۡۤ اٰبَآئِہِنَّ وَ لَاۤ اَبۡنَآئِہِنَّ وَ لَاۤ اِخۡوَانِہِنَّ وَ لَاۤ اَبۡنَآءِ اِخۡوَانِہِنَّ وَ لَاۤ اَبۡنَآءِ اَخَوٰتِہِنَّ وَ لَا نِسَآئِہِنَّ وَ لَا مَا مَلَکَتۡ اَیۡمَانُہُنَّ ۚ وَ اتَّقِیۡنَ اللّٰہَ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ شَہِیۡدًا ﴿۵۵﴾
কানযুল ঈমান
৫৫. তাদের জন্য অপরাধ নেই তাদের পিতা, পুত্রগণ, ভ্রাতৃগণ, ভ্রাতৃষ্পুত্রগণ, ভাগ্নেগণ, তাদের ধর্মের নারীগণ এবং আপন দাসীগনের ব্যাপারে। এবং আল্লাহ্কে ভয় করতে থাকো। নিশ্চয় প্রত্যেক বস্তু আল্লাহ্র সম্মুখে রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৫৫. তাদের জন্যে (পর্দা না করায়) কোনো অপরাধ নেই তাদের (প্রকৃত) পিতৃগণ, তাদের পুত্রগণ, তাদের ভ্রাতৃগণ, তাদের ভ্রাতুষ্পুত্রগণ, তাদের ভগ্নীপুত্রগণ, তাদের নিজস্ব (মুসলিম) রমনীগণ এবং তাদের মালিকানাধীন দাসীগণের ব্যাপারে। তোমরা আল্লাহ্কে ভয় করতে থাকো। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সকল কিছুর উপর সাক্ষী ও সর্বদ্রষ্টা।
اِنَّ اللّٰہَ وَ مَلٰٓئِکَتَہٗ یُصَلُّوۡنَ عَلَی النَّبِیِّ ؕ یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا صَلُّوۡا عَلَیۡہِ وَ سَلِّمُوۡا تَسۡلِیۡمًا ﴿۵۶﴾
কানযুল ঈমান
৫৬. নিশ্চয় আল্লাহ্ ও তার ফিরিশ্তাগণ দরূদ প্রেরণ করেন ওই অদৃশ্যবক্তা (নবীর) প্রতি, হে ঈমানদারগণ! তোমরাও তার প্রতি দরূদ ও খুব সালাম প্রেরণ করো।
ইরফানুল কুরআন
৫৬. নিশ্চয়ই আল্লাহ্ এবং তাঁর (সমস্ত) ফেরেশতাগণ (সম্মানিত) নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-এঁর প্রতি দরূদ প্রেরণ করছেন। হে ঈমানদারগণ! তোমরাও তাঁর প্রতি দরূদ প্রেরণ করো এবং (সর্বান্তকরণে) পরিপূর্ণ আদবের সাথে অধিক পরিমাণে সালাম পেশ করো।
اِنَّ الَّذِیۡنَ یُؤۡذُوۡنَ اللّٰہَ وَ رَسُوۡلَہٗ لَعَنَہُمُ اللّٰہُ فِی الدُّنۡیَا وَ الۡاٰخِرَۃِ وَ اَعَدَّ لَہُمۡ عَذَابًا مُّہِیۡنًا ﴿۵۷﴾
কানযুল ঈমান
৫৭. নিশ্চয় যারা কষ্ট দেয় আল্লাহ্ ও রসূলকে, তাদের উপর আল্লাহ্র অভিসম্পাত দুনিয়া ও আখিরাতে এবং আল্লাহ্ তাদের জন্য লাঞ্ছনার শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন।
ইরফানুল কুরআন
৫৭. নিশ্চয়ই যারা আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-কে পীড়া দেয় আল্লাহ্ তাদেরকে দুনিয়া ও আখেরাতে অভিশপ্ত করেন এবং তিনি তাদের জন্যে প্রস্তুত রেখেছেন অপমানজনক শাস্তি।
وَ الَّذِیۡنَ یُؤۡذُوۡنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ وَ الۡمُؤۡمِنٰتِ بِغَیۡرِ مَا اکۡتَسَبُوۡا فَقَدِ احۡتَمَلُوۡا بُہۡتَانًا وَّ اِثۡمًا مُّبِیۡنًا ﴿۵۸﴾
কানযুল ঈমান
৫৮. এবং যারা ঈমানদার পুরুষ ও নারীদেরকে অপরাধমূলক কোন কাজ না করলেও কষ্ট দেয়, তারা অপবাদ ও সুস্পষ্ট পাপ নিজেদের মাথায় নিলো।
ইরফানুল কুরআন
৫৮. আর যারা মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে পীড়া দেয় তাদের কোনো ত্রুটি ব্যতীত, তবে নিশ্চয়ই তারা যেন অপবাদ ও প্রকাশ্য গোনাহের বোঝা (নিজের মাথায়) বহন করলো।
یٰۤاَیُّہَا النَّبِیُّ قُلۡ لِّاَزۡوَاجِکَ وَ بَنٰتِکَ وَ نِسَآءِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ یُدۡنِیۡنَ عَلَیۡہِنَّ مِنۡ جَلَابِیۡبِہِنَّ ؕ ذٰلِکَ اَدۡنٰۤی اَنۡ یُّعۡرَفۡنَ فَلَا یُؤۡذَیۡنَ ؕ وَ کَانَ اللّٰہُ غَفُوۡرًا رَّحِیۡمًا ﴿۵۹﴾
কানযুল ঈমান
৫৯. হে নবী! আপন বিবিগণ, সাহেবযাদীগণ ও মুসলমানদের নারীগণকে বলে দিন যেন তারা নিজেদের চাদরের একাংশ স্বীয় মুখের উপর ঝুলিয়ে রাখে, এটা এ কথার অধিকতর নিকটবর্তী যে, তাদের পরিচয় পাওয়া যাবে; ফলে তাদেরকে উত্ত্যক্ত করা হবে না। আর আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, দয়াবান।
ইরফানুল কুরআন
৫৯. হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীগণকে, আপনার কন্যাগণকে এবং মুসলমান নারীগণকে বলে দিন, তারা যেন (বাইরে বের হওয়ার সময়) স্বীয় চাদর নিজেদের উপর টেনে দেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজতর হবে (যে, তাঁরা পূতঃপবিত্র স্বাধীন নারী), ফলে তাদেরকে (ভবঘুরে দাসী মনে করে ভুলক্রমে) উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ্ মহাক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু।
لَئِنۡ لَّمۡ یَنۡتَہِ الۡمُنٰفِقُوۡنَ وَ الَّذِیۡنَ فِیۡ قُلُوۡبِہِمۡ مَّرَضٌ وَّ الۡمُرۡجِفُوۡنَ فِی الۡمَدِیۡنَۃِ لَنُغۡرِیَنَّکَ بِہِمۡ ثُمَّ لَا یُجَاوِرُوۡنَکَ فِیۡہَاۤ اِلَّا قَلِیۡلًا ﴿ۖۛۚ۶۰﴾
কানযুল ঈমান
৬০. যদি মুনাফিক্ব, যাদের অন্তরসমূহে ব্যাধী আছে এবং মদীনায় মিথ্যা রটনাকারীগণ বিরত না হয়, তবে অবশ্য আমি আপনাকে তাদের উপর আধিপত্য দান করবো, অতঃপর তারা মদীনায় আপনার নিকটে অতি স্বল্প দিনই থাকবে,
ইরফানুল কুরআন
৬০. আর যদি মুনাফেকেরা এবং অন্তরে (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের প্রতি ক্রোধ এবং বেয়াদবীর) ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা এবং (এভাবে) মদীনায় মিথ্যা গুজব রটনাকারীরা (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামকে কষ্ট দেয়া থেকে) বিরত না হয়, তবে আমরা আপনাকে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে প্রবল করে দেবো। অতঃপর তারা অল্প সময়ই (মাত্র কয়েকদিন) মদীনায় আপনার প্রতিবেশীরূপে থাকবে।
مَّلۡعُوۡنِیۡنَ ۚۛ اَیۡنَمَا ثُقِفُوۡۤا اُخِذُوۡا وَ قُتِّلُوۡا تَقۡتِیۡلًا ﴿۶۱﴾
কানযুল ঈমান
৬১. অভিশপ্ত হয়ে; যেখানে পাওয়া যাবে সেখানে তাদেরকে ধরা হবে এবং গুনে গুনে হত্যা করা হবে।
ইরফানুল কুরআন
৬১. (এসব) অভিশপ্ত লোক (যারা মিথ্যা গুজব, ঘৃণা, শত্রুতা ও সন্ত্রাসবাদ ছড়াচ্ছে এবং সম্মানিত নবী ও তাঁর পরিবারকে হেয় করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে) তাদেরকে যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানেই ধরা হবে এবং নির্দয়ভাবে হত্যা করা হবে।
سُنَّۃَ اللّٰہِ فِی الَّذِیۡنَ خَلَوۡا مِنۡ قَبۡلُ ۚ وَ لَنۡ تَجِدَ لِسُنَّۃِ اللّٰہِ تَبۡدِیۡلًا ﴿۶۲﴾
কানযুল ঈমান
৬২. আল্লাহ্র বিধান চলে আসছে ওই সব লোকের মধ্যে, যারা পূর্বে গত হয়েছে এবং আপনি আল্লাহ্র বিধান কখনো পরিবর্তিত হতে দেখতে পাবেন না।
ইরফানুল কুরআন
৬২. আল্লাহ্র (এই) রীতি পূর্বে যারা অতিবাহিত হয়ে গিয়েছে তাদের মধ্যেও (বিদ্যমান) ছিল। আর আপনি আল্লাহ্র রীতিতে কখনো কোনো পরিবর্তন পাবেন না।
یَسۡـَٔلُکَ النَّاسُ عَنِ السَّاعَۃِ ؕ قُلۡ اِنَّمَا عِلۡمُہَا عِنۡدَ اللّٰہِ ؕ وَ مَا یُدۡرِیۡکَ لَعَلَّ السَّاعَۃَ تَکُوۡنُ قَرِیۡبًا ﴿۶۳﴾
কানযুল ঈমান
৬৩. লোকেরা আপনাকে ক্বিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করছে। আপনি বলুন, ‘এর জ্ঞান তো আল্লাহ্রই নিকট রয়েছে’; এবং আপনি কি জানেন? সম্ভবতঃ ক্বিয়ামত নিকটেই।
ইরফানুল কুরআন
৬৩. লোকেরা আপনাকে কিয়ামত (মুহূর্ত) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দিন, ‘এর জ্ঞান কেবল আল্লাহ্রই নিকট’। আর আপনাকে কে অবগত করেছেন? সম্ভবত কিয়ামত শীঘ্রই হয়ে যেতে পারে?
اِنَّ اللّٰہَ لَعَنَ الۡکٰفِرِیۡنَ وَ اَعَدَّ لَہُمۡ سَعِیۡرًا ﴿ۙ۶۴﴾
কানযুল ঈমান
৬৪. নিশ্চয় আল্লাহ্ কাফিরদের উপর অভিসম্পাত করেন এবং তাদের জন্য জ্বলন্ত আগুন প্রস্তুত করে রেখেছেন;
ইরফানুল কুরআন
৬৪. নিশ্চয়ই আল্লাহ্ কাফেরদেরকে অভিশপ্ত করেছেন এবং তাদের জন্যে প্রস্তুত রেখেছেন (জাহান্নামের) জ্বলন্ত অগ্নি,
خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَاۤ اَبَدًا ۚ لَا یَجِدُوۡنَ وَلِیًّا وَّ لَا نَصِیۡرًا ﴿ۚ۶۵﴾
কানযুল ঈমান
৬৫. তাতে সর্বদা থাকবে; তাতে না কোন অভিভাবক পাবে, না সাহায্যকারী।
ইরফানুল কুরআন
৬৫. এতে তারা চিরদিন অবস্থান করবে। তারা না পাবে কোনো অভিভাবক আর না পাবে কোনো সাহায্যকারী।
یَوۡمَ تُقَلَّبُ وُجُوۡہُہُمۡ فِی النَّارِ یَقُوۡلُوۡنَ یٰلَیۡتَنَاۤ اَطَعۡنَا اللّٰہَ وَ اَطَعۡنَا الرَّسُوۡلَا ﴿۶۶﴾
কানযুল ঈমান
৬৬. যে দিন তাদের মুখমণ্ডল উলট পালট করে আগুনের মধ্যে জ্বালানো হবে, এ কথা বলতে থাকবে- ‘হায়, কোনমতে যদি আমরা আল্লাহ্র নির্দেশ মান্য করতাম! এবং রসূলের নির্দেশ মান্য করতাম!’
ইরফানুল কুরআন
৬৬. যেদিন তাদের মুখমন্ডল জাহান্নামের অগ্নিতে (বারবার) উল্টে দেয়া হবে সেদিন তারা বলবে, ‘হায়! যদি আমরা আল্লাহ্র আনুগত্য করতাম এবং আমরা রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-এঁর আনুগত্য করতাম!’
وَ قَالُوۡا رَبَّنَاۤ اِنَّاۤ اَطَعۡنَا سَادَتَنَا وَ کُبَرَآءَنَا فَاَضَلُّوۡنَا السَّبِیۡلَا ﴿۶۷﴾
কানযুল ঈমান
৬৭. এবং বলবে, ‘হে আমাদের রব! আমরা আমাদের নেতৃবৃন্দ ও আমাদের বড় লোকদের কথামত চলেছি। অতঃপর তারা আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করে দিয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৬৭. আর তারা বলবে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! নিশ্চয়ই আমরা আমাদের সরদার এবং জ্যেষ্ঠদের আনুগত্য করেছিলাম, আর তারা আমাদেরকে (সরল) পথ থেকে বিচ্যুত করেছে।
رَبَّنَاۤ اٰتِہِمۡ ضِعۡفَیۡنِ مِنَ الۡعَذَابِ وَ الۡعَنۡہُمۡ لَعۡنًا کَبِیۡرًا ﴿۶۸﴾
কানযুল ঈমান
৬৮. হে আমাদের রব! তাদেরকে আগুনের দ্বিগুন শাস্তি দাও এবং তাদের উপর বড় অভিসম্পাত করো’।
ইরফানুল কুরআন
৬৮. হে আমাদের প্রতিপালক! তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দাও এবং তাদেরকে দাও মহাঅভিসম্পাত।’
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَکُوۡنُوۡا کَالَّذِیۡنَ اٰذَوۡا مُوۡسٰی فَبَرَّاَہُ اللّٰہُ مِمَّا قَالُوۡا ؕ وَ کَانَ عِنۡدَ اللّٰہِ وَجِیۡہًا ﴿ؕ۶۹﴾
কানযুল ঈমান
৬৯. হে ঈমানদারগন! তাদের মতো হয়ো না, যারা মূসাকে কষ্ট দিয়েছে। অতঃপর আল্লাহ্ তাকে নির্দোষ প্রমাণিত করেছেন ওই কথা থেকে যা তারা রটনা করেছে। এবং মূসা আল্লাহ্র নিকট মর্যাদাবান।
ইরফানুল কুরআন
৬৯. হে ঈমানদারগণ! তোমরা তাদের মতো হয়ো না যারা মূসা (আলাইহিস সালাম)-কে (বেয়াদবিমূলক কথা দ্বারা) কষ্ট দিয়েছিল। অতঃপর আল্লাহ্ তাঁকে সেসব কিছু থেকে নির্দোষ প্রমাণ করে দিয়েছেন যা তারা বলতো। আর তিনি আল্লাহ্র নিকট অনেক সম্মানীয় ও মর্যাদাবান।
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللّٰہَ وَ قُوۡلُوۡا قَوۡلًا سَدِیۡدًا ﴿ۙ۷۰﴾
কানযুল ঈমান
৭০. হে ঈমানদারগণ! আল্লহকে ভয় করো এব সরল কথা বলো।
ইরফানুল কুরআন
৭০. হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ্কে ভয় করো এবং সঠিক ও সরল কথা বলো।
یُّصۡلِحۡ لَکُمۡ اَعۡمَالَکُمۡ وَ یَغۡفِرۡ لَکُمۡ ذُنُوۡبَکُمۡ ؕ وَ مَنۡ یُّطِعِ اللّٰہَ وَ رَسُوۡلَہٗ فَقَدۡ فَازَ فَوۡزًا عَظِیۡمًا ﴿۷۱﴾
কানযুল ঈমান
৭১. তোমাদের কর্ম তোমাদের জন্য সংশোধন করে দেবেন এবং তোমাদের গুনাহ মাফ করে দেবেন। আর যে কেউ আল্লাহ্ ও তার রসূলের আনুগত্য করে সে মহা সাফল্য লাভ করেছে।
ইরফানুল কুরআন
৭১. তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের (সকল) কর্ম ত্রুটিমুক্ত করবেন এবং তোমাদের গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আর যে আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে, সে অবশ্যই অর্জন করবে মহাসাফল্য।
اِنَّا عَرَضۡنَا الۡاَمَانَۃَ عَلَی السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ وَ الۡجِبَالِ فَاَبَیۡنَ اَنۡ یَّحۡمِلۡنَہَا وَ اَشۡفَقۡنَ مِنۡہَا وَ حَمَلَہَا الۡاِنۡسَانُ ؕ اِنَّہٗ کَانَ ظَلُوۡمًا جَہُوۡلًا ﴿ۙ۷۲﴾
কানযুল ঈমান
৭২. নিশ্চয় আমি আমানত অর্পণ করেছি আসমানসমূহ, যমীন এবং পর্বতমালার প্রতি। অতঃপর সেগুলো তা বহন করতে অস্বীকার করলো এবং তাতে শঙ্কিত হলো, আর মানুষ তা বহন করলো। নিশ্চয় সে স্বীয় আত্নাকে কষ্টের মধ্যে নিক্ষেপকারী, বড় মূর্খ;
ইরফানুল কুরআন
৭২. আমি তো (আনুগত্যের) আমানত পেশ করেছিলাম আসমান, জমিন এবং পর্বতমালার নিকট, কিন্তু তারা তা (এ বোঝা) বহন করতে অস্বীকার করলো এবং এতে শংকিত হলো। কিন্তু মানুষ এ বোঝা বহন করলো। বাস্তবিকই সে (নিজের জীবনের প্রতি) অন্যায়কারী, (আস্থার মূল্য ফিরিয়ে দেয়ায়) বড়ই অজ্ঞ ও মুর্খ।
لِّیُعَذِّبَ اللّٰہُ الۡمُنٰفِقِیۡنَ وَ الۡمُنٰفِقٰتِ وَ الۡمُشۡرِکِیۡنَ وَ الۡمُشۡرِکٰتِ وَ یَتُوۡبَ اللّٰہُ عَلَی الۡمُؤۡمِنِیۡنَ وَ الۡمُؤۡمِنٰتِ ؕ وَ کَانَ اللّٰہُ غَفُوۡرًا رَّحِیۡمًا ﴿۷۳﴾
কানযুল ঈমান
৭৩. ৭৩. যাতে আল্লাহ্ শাস্তি দেন মুনাফিক্ব পুরুষদের ও মুনাফিক্ব নারীদেরকে এবং মুশরিক পুরুষদের ও মুশরিক নারীদেরকে এবং আল্লাহ্ তাওবা কবূল করেন মুসলমান পুরুষদের ও মুসলমান নারীদের। এবং আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, দয়ালু।
ইরফানুল কুরআন
৭৩. (তা) এ জন্যে যে, আল্লাহ্ মুনাফেক পুরুষ ও মুনাফেক নারী এবং মুশরিক পুরুষ ও মুশরিক নারীকে শাস্তি দেবেন, আর আল্লাহ্ মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীর তওবা কবুল করবেন। আল্লাহ্ মহাক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু।