بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
কানযুল ঈমান
০. আল্লাহ্র নামে আরম্ভ, যিনি পরম দয়ালু, করুণাময় (১)
ইরফানুল কুরআন
০. আল্লাহর নামে শুরু, যিনি পরম করুণাময়, সতত অসীম দয়ালু।
الٓـمّٓ ۚ﴿۱﴾
কানযুল ঈমান
১. আলিফ লা----ম্ মী—ম।
ইরফানুল কুরআন
১. আলিফ-লাম-মীম। (প্রকৃত অর্থ আল্লাহ্ এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামই অধিক অবগত।)
اَحَسِبَ النَّاسُ اَنۡ یُّتۡرَکُوۡۤا اَنۡ یَّقُوۡلُوۡۤا اٰمَنَّا وَ ہُمۡ لَا یُفۡتَنُوۡنَ ﴿۲﴾
কানযুল ঈমান
২. লোকেরা কি এ অহঙ্কারের মধ্যে রয়েছে যে, এতটুকু কথার উপর তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হবে যে, তারা বলবে, ‘আমরা ঈমান এনেছি’। তাদেরকে পরীক্ষা করা হবে না?
ইরফানুল কুরআন
২. মানুষ কি মনে করে যে, ‘আমরা ঈমান আনয়ন করেছি’, (কেবল এটুকু) বলার কারণে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হবে এবং তাদেরকে পরীক্ষা করা হবেনা?
وَ لَقَدۡ فَتَنَّا الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِہِمۡ فَلَیَعۡلَمَنَّ اللّٰہُ الَّذِیۡنَ صَدَقُوۡا وَ لَیَعۡلَمَنَّ الۡکٰذِبِیۡنَ ﴿۳﴾
কানযুল ঈমান
৩. এবং নিশ্চয় আমি তাদের পূর্ববর্তীদের পরীক্ষা করেছি; সুতরাং অবশ্য আল্লাহ্ সতবাদীদেরকে দেখবেন এবং অবশ্য মিথ্যাবাদীদেরকেও দেখবেন।
ইরফানুল কুরআন
৩. আমরা তো ঐসব লোককে(ও) পরীক্ষা করেছিলাম যারা তাদের পূর্বে ছিল, সুতরাং আল্লাহ্ অবশ্যই তাদেরকে (পরীক্ষার মাধ্যমে) অনন্য হিসেবে প্রকাশ করবেন যারা (ঈমানের দাবীতে) সত্যবাদী; আর মিথ্যাবাদীদেরকেও অবশ্যই প্রকাশ করবেন।
اَمۡ حَسِبَ الَّذِیۡنَ یَعۡمَلُوۡنَ السَّیِّاٰتِ اَنۡ یَّسۡبِقُوۡنَا ؕ سَآءَ مَا یَحۡکُمُوۡنَ ﴿۴﴾
কানযুল ঈমান
৪. অথবা একথা মনে করে আছে ওই সব লোক, যারা মন্দকর্ম করে যে, তারা কোন মতে আমার আয়ত্ব থেক বের হয়ে যাবে? কতোই মন্দ সিদ্ধান্ত করে!
ইরফানুল কুরআন
৪. যারা মন্দকর্ম করে তারা কি মনে করে যে, তারা আমাদের (নিয়ন্ত্রণের) বাইরে চলে যাবে? কতোই না নিকৃষ্ট (তা) যা তারা (নিজেদের ভাবনায়) সিদ্ধান্ত নেয়।
مَنۡ کَانَ یَرۡجُوۡا لِقَآءَ اللّٰہِ فَاِنَّ اَجَلَ اللّٰہِ لَاٰتٍ ؕ وَ ہُوَ السَّمِیۡعُ الۡعَلِیۡمُ ﴿۵﴾
কানযুল ঈমান
৫. যে আল্লাহ্র সাথে সাক্ষাতের আশার রাখে, সুতরাং নিশ্চয় আল্লাহ্র নির্ধারিত সময় অবশ্য আগমনকারী। এবং তিনিই শুনেন, জানেন।
ইরফানুল কুরআন
৫. যে ব্যক্তি আল্লাহ্র সাথে সাক্ষাতের আশা রাখে, তবে অবশ্যই আল্লাহ্র নির্ধারিত সময় সমাগত। আর তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী।
وَ مَنۡ جَاہَدَ فَاِنَّمَا یُجَاہِدُ لِنَفۡسِہٖ ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَغَنِیٌّ عَنِ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۶﴾
কানযুল ঈমান
৬. এবং যে আল্লাহ্র পথে প্রচেষ্টা চালায়, সে নিজের মঙ্গলের জন্যই প্রেচেষ্টা চালায়; নিশ্চয় আল্লাহ্ বে-পরোয়া সমগ্র জাহান থেকে।
ইরফানুল কুরআন
৬. যে ব্যক্তি (সত্যের পথে) প্রাণপণ চেষ্টা করে, সে নিজেরই (উপকারের) জন্যে চেষ্টা করে। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সমগ্র জাহানের (আনুগত্য, নতি, প্রচেষ্টা এবং সংগ্রামের) অমুখাপেক্ষী।
وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ لَنُکَفِّرَنَّ عَنۡہُمۡ سَیِّاٰتِہِمۡ وَ لَنَجۡزِیَنَّہُمۡ اَحۡسَنَ الَّذِیۡ کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۷﴾
কানযুল ঈমান
৭. এবং যারা ঈমান এনেছে ও সৎ কাজ করেছে আমি অবশ্যই তাদের মন্দকর্মগুলো মিটিয়ে দেবো এবং অবশ্যই তাদেরকে ওই কর্মের উপর পুরস্কার দেবো, যা তাদের সমস্ত কর্মের মধ্যে উত্তম ছিলো।
ইরফানুল কুরআন
৭. আর যারা ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে আমরা তাদের সমস্ত ত্রুটি-বিচ্যুতি তাদের (আমলনামা) থেকে মুছে দেবো। আর আমরা অবশ্যই তাদেরকে এর চেয়েও উত্তম প্রতিদান দেবো যা তারা (প্রকৃতপক্ষে) সম্পন্ন করে।
وَ وَصَّیۡنَا الۡاِنۡسَانَ بِوَالِدَیۡہِ حُسۡنًا ؕ وَ اِنۡ جَاہَدٰکَ لِتُشۡرِکَ بِیۡ مَا لَیۡسَ لَکَ بِہٖ عِلۡمٌ فَلَا تُطِعۡہُمَا ؕ اِلَیَّ مَرۡجِعُکُمۡ فَاُنَبِّئُکُمۡ بِمَا کُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۸﴾
কানযুল ঈমান
৮. এবং আমি মানুষকে তাকীদ দিয়েছি আপন পিতা মাতার প্রতি সদাচরণ করতে; এবং যদি তারা তোমার উপর (শক্তি প্রয়োগের) চেষ্টা করে যেন তুমি তাকে আমার শরীক স্থির করো, যার সম্বন্ধে তোমার জ্ঞান নেই, তবে তাদের কথা অমান্য করো। আমারই প্রতি তোমাদের প্রত্যাবর্তন করতে হবে, অতঃপর আমি তোমাদেরকে বলে দেবো যা তোমরা করছিলে।
ইরফানুল কুরআন
৮. আর আমরা মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদাচরণের নির্দেশ দিয়েছি; আর যদি তারা তোমাকে বাধ্য করে যে, তুমি আমার সাথে এমন কিছুর অংশীদার সাব্যস্ত করো যার ব্যাপারে তোমার কোনো জ্ঞান নেই, তবে তুমি তাদের মান্য করো না। আমার দিকেই তোমাদের (সকলের) প্রত্যাবর্তন। সুতরাং আমি তোমাদেরকে এ (কর্মকান্ড) সম্পর্কে অবগত করবো যা তোমরা (পৃথিবীতে) সম্পাদন করতে।
وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ لَنُدۡخِلَنَّہُمۡ فِی الصّٰلِحِیۡنَ ﴿۹﴾
কানযুল ঈমান
৯. এবং যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে অবশ্যই আমি তাদেরকে সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত করবো।
ইরফানুল কুরআন
৯. আর যারা ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে আমি তাদেরকে অবশ্যই সৎকর্মপরায়ণদের (দলে) অন্তর্ভুক্ত করবো।
وَ مِنَ النَّاسِ مَنۡ یَّقُوۡلُ اٰمَنَّا بِاللّٰہِ فَاِذَاۤ اُوۡذِیَ فِی اللّٰہِ جَعَلَ فِتۡنَۃَ النَّاسِ کَعَذَابِ اللّٰہِ ؕ وَ لَئِنۡ جَآءَ نَصۡرٌ مِّنۡ رَّبِّکَ لَیَقُوۡلُنَّ اِنَّا کُنَّا مَعَکُمۡ ؕ اَوَ لَیۡسَ اللّٰہُ بِاَعۡلَمَ بِمَا فِیۡ صُدُوۡرِ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۱۰﴾
কানযুল ঈমান
১০. এবং কিছু লোক বলে, ‘আমরা আল্লাহ্র উপর ঈমান এনেছি’, অতঃপর যখন আল্লাহ্র পথে তাদেরকে কোন কষ্ট দেওয়া হয়, তখন লোকদের উৎপীড়নকে আল্লাহ্র শাস্তিরই সমতুল্য মনে করে। আর যদি আপনার রবের নিকট থেকে সাহায্য আসে, তবে অবশ্যই বলবে, ‘আমরা তো তোমাদেরই সাথে ছিলাম। আল্লাহ্ কি সম্যক অবহিত নন সে সম্পর্কে, যা কিছু সমস্ত বিশ্ববাসীর অন্তঃকরণে রয়েছে?’
ইরফানুল কুরআন
১০. আর মানুষের মাঝে এমন লোক(ও) রয়েছে যারা (মুখে) বলে, ‘আমরা আল্লাহ্র প্রতি ঈমান এনেছি’। অতঃপর যখন তাদেরকে আল্লাহ্র পথে (কোনো) কষ্টে ফেলা হয় তখন তারা মানুষের পীড়নকে আল্লাহ্র শাস্তি হিসেবে গণ্য করে। আর যদি আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে কোনো সাহায্য আসে তখন তারা নিশ্চিত বলতে শুরু করে, ‘আমরা তো তোমাদের সাথেই ছিলাম’। আল্লাহ্ কি তাদের (বিষয়) অবগত নন যা জগদ্বাসীর অন্তঃকরণে (লুকায়িত) রয়েছে?
وَ لَیَعۡلَمَنَّ اللّٰہُ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ لَیَعۡلَمَنَّ الۡمُنٰفِقِیۡنَ ﴿۱۱﴾
কানযুল ঈমান
১১. এবং অবশ্যই আল্লাহ্ প্রকাশ করে দেবেন ঈমানদারগণকে এবং অবশ্যই প্রকাশ করে দেবেন মুনাফিক্বদেরকে।
ইরফানুল কুরআন
১১. আর আল্লাহ্ অবশ্যই তাদেরকে বৈশিষ্ট্যমন্ডিত করবেন যারা (সত্যিকারভাবে অন্তর দিয়ে) ঈমান এনেছে। আর তিনি মুনাফিকদেরকে(ও) উন্মোচন করবেন।
وَ قَالَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا لِلَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اتَّبِعُوۡا سَبِیۡلَنَا وَ لۡنَحۡمِلۡ خَطٰیٰکُمۡ ؕ وَ مَا ہُمۡ بِحٰمِلِیۡنَ مِنۡ خَطٰیٰہُمۡ مِّنۡ شَیۡءٍ ؕ اِنَّہُمۡ لَکٰذِبُوۡنَ ﴿۱۲﴾
কানযুল ঈমান
১২. এবং কাফিরগণ মুসলমানদেরকে বললো, ‘আমাদের পথে চলো! এবং আমরা তোমাদের পাপভার ভন করবো’। অথচ তারা তাদের পাপভারের কিছুই বহন করবে না। নিশ্চয় তারা মিথ্যাবাদী।
ইরফানুল কুরআন
১২. আর কাফেরেরা ঈমানদারদেরকে বলে, ‘তোমরা আমাদের পথ অনুসরণ করো এবং আমরা তোমাদের পাপের ভার বহন করবো’; অথচ তারা তাদের পাপের (বোঝা) কিছুই বহন করবে না। তারা অবশ্যই মিথ্যাবাদী।
وَ لَیَحۡمِلُنَّ اَثۡقَالَہُمۡ وَ اَثۡقَالًا مَّعَ اَثۡقَالِہِمۡ ۫ وَ لَیُسۡـَٔلُنَّ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ عَمَّا کَانُوۡا یَفۡتَرُوۡنَ ﴿۱۳﴾
কানযুল ঈমান
১৩. এবং নিশ্চয় নিশ্চয় তারা নিজেদের বোঝা বহন করবে এবং নিজেদের বোঝাসমূহের সাথে আরো বোঝা। এবং নিশ্চয় ক্বিয়ামত দিবসে জিজ্ঞাসা করা হবে সেই অপবাদ সম্পর্কে যা তারা রটনা করে আসছিলো।
ইরফানুল কুরআন
১৩. তারা অবশ্যই নিজেদের (পাপের) বোঝা বহন করবে এবং নিজেদের বোঝার সাথে (অন্যান্য) আরো অনেক বোঝাও (নিজেদের কাঁধে বহন করবে।) আর তাদেরকে কিয়ামতের দিন সেসব (অপবাদ) সম্পর্কে অবশ্যই জিজ্ঞেস করা হবে যা তারা উদ্ভাবন করতো।
وَ لَقَدۡ اَرۡسَلۡنَا نُوۡحًا اِلٰی قَوۡمِہٖ فَلَبِثَ فِیۡہِمۡ اَلۡفَ سَنَۃٍ اِلَّا خَمۡسِیۡنَ عَامًا ؕ فَاَخَذَہُمُ الطُّوۡفَانُ وَ ہُمۡ ظٰلِمُوۡنَ ﴿۱۴﴾
কানযুল ঈমান
১৪. এবং নিশ্চয় আমি নূহকে তার সম্প্রদায়ের প্রতি প্রেরণ করেছি। সুতরাং সে তাদের মধ্যে হাজার বছর থেকে পঞ্চাশ বছর কম অবস্থান করেছে। অতঃপর তাদেরকে প্লাবন গ্রাস করলো এবং তারা অত্যাচারী ছিলো।
ইরফানুল কুরআন
১৪. আর আমি নূহ (আলাইহিস সালাম)-কে তো তাঁর সম্প্রদায়ের নিকট প্রেরণ করেছিলাম, তিনি তাদের মাঝে পঞ্চাশ কম এক সহস্র বছর অবস্থান করেছিলেন। অতঃপর তুফান এসে তাদেরকে গ্রাস করলো যখন তারা ছিল অত্যাচারী।
فَاَنۡجَیۡنٰہُ وَ اَصۡحٰبَ السَّفِیۡنَۃِ وَ جَعَلۡنٰہَاۤ اٰیَۃً لِّلۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۱۵﴾
কানযুল ঈমান
১৫. অতঃপর আমি তাকে ও কিশতীতে আরোহণকারীদেরকে উদ্ধার করে নিয়েছি এবং ওই কিশ্তীকে সমগ্র বিশ্বের জন্য নিদর্শন করেছি।
ইরফানুল কুরআন
১৫. অতঃপর আমরা নূহ (আলাইহিস সালাম) এবং তার (সাথী) নৌকার আরোহীদেরকে উদ্ধার করলাম এবং একে (এ নৌকা এবং ঘটনাকে) সমগ্র জগতের অধিবাসীদের জন্যে করলাম একটি নিদর্শন।
وَ اِبۡرٰہِیۡمَ اِذۡ قَالَ لِقَوۡمِہِ اعۡبُدُوا اللّٰہَ وَ اتَّقُوۡہُ ؕ ذٰلِکُمۡ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۶﴾
কানযুল ঈমান
১৬. এবং ইব্রাহীমকে, যখন সে আপন সম্প্রদায়কে বললেন, ‘আল্লার ইবাদত করো এবং তাকে ভয় করো। তাতে তোমাদের মঙ্গল রয়েছে যদি তোমরা জানতে।
ইরফানুল কুরআন
১৬. আর (স্মরণ করুন) ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)-এঁর কথা যখন তিনি তাঁর সম্প্রদায়কে বললেন, ‘তোমরা আল্লাহ্র ইবাদত করো এবং তাঁকে ভয় করো। এটিই তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা (বাস্তবতা) জানতে।
اِنَّمَا تَعۡبُدُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ اَوۡثَانًا وَّ تَخۡلُقُوۡنَ اِفۡکًا ؕ اِنَّ الَّذِیۡنَ تَعۡبُدُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ لَا یَمۡلِکُوۡنَ لَکُمۡ رِزۡقًا فَابۡتَغُوۡا عِنۡدَ اللّٰہِ الرِّزۡقَ وَ اعۡبُدُوۡہُ وَ اشۡکُرُوۡا لَہٗ ؕ اِلَیۡہِ تُرۡجَعُوۡنَ ﴿۱۷﴾
কানযুল ঈমান
১৭. তোমরা তো আল্লাহ্ ব্যতীত প্রতিমার পূজা করছো এবং নিছক মিথ্যা রচনা করছো। নিশ্চয় তারা, যাদের তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত পূজা করছো, তোমাদের জীবিকার কিছুরই মালিক নয়। সুতরাং তোমরা আল্লাহ্র নিকট জীবিকা তালাশ করো এবং তারই ইবাদত করো ও তার অনুগ্রহ স্বীকার করো। তোমাদেরকে তার দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে।
ইরফানুল কুরআন
১৭. তোমরা তো আল্লাহ্ ছাড়া মূর্তির উপাসনা করছো আর কেবল মিথ্যা উদ্ভাবন করছো। নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ ব্যতীত যাদের উপাসনা তোমরা করছো তারা তোমাদের জীবনোপকরণের অধিকার রাখে না। সুতরাং তোমরা জীবনোপকরণ অন্বেষণ করো আল্লাহ্র নিকট। আর তাঁরই ইবাদত করো এবং তাঁরই প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো। তোমরা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন করবে।
وَ اِنۡ تُکَذِّبُوۡا فَقَدۡ کَذَّبَ اُمَمٌ مِّنۡ قَبۡلِکُمۡ ؕ وَ مَا عَلَی الرَّسُوۡلِ اِلَّا الۡبَلٰغُ الۡمُبِیۡنُ ﴿۱۸﴾
কানযুল ঈমান
১৮. এবং যদি তোমরা অস্বীকার করো, তবে তোমাদের পূর্ববর্তী কতো সম্প্রদায়ই অস্বীকার করেছিলো! এবং রসূলের দায়িত্ব কেবল সুস্পষ্টভাবে পৌছিয়ে দেয়াই’।
ইরফানুল কুরআন
১৮. আর যদি তোমরা (আমার কথা) মিথ্যাপ্রতিপন্ন করো তবে নিঃসন্দেহে তোমাদের পূর্বেও অনেক জাতি (সত্যকে) মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছিল। আর রাসূলের জন্যে তো (আবশ্যক) কেবল সুস্পষ্টভাবে (বিধিবিধান) পৌঁছে দেয়া।’
اَوَ لَمۡ یَرَوۡا کَیۡفَ یُبۡدِئُ اللّٰہُ الۡخَلۡقَ ثُمَّ یُعِیۡدُہٗ ؕ اِنَّ ذٰلِکَ عَلَی اللّٰہِ یَسِیۡرٌ ﴿۱۹﴾
কানযুল ঈমান
১৯. এবং তারা কি দেখে নি, কীভাবে আল্লাহ্ সৃষ্টির সূচনা করেন? অতঃপর সেটা পুনরায় সৃষ্টি করবেন। নিশ্চয় তা আল্লাহ্র জন্য সহজ।
ইরফানুল কুরআন
১৯. তারা কি (ভেবে) দেখেনি, আল্লাহ্ কিভাবে সৃষ্টির সূচনা করেছেন; অতঃপর (এভাবে) এর পূনরাবৃত্তি করেন? নিশ্চয়ই আল্লাহ্র জন্যে এ (কাজ) সহজ।
قُلۡ سِیۡرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ فَانۡظُرُوۡا کَیۡفَ بَدَاَ الۡخَلۡقَ ثُمَّ اللّٰہُ یُنۡشِیٴُ النَّشۡاَۃَ الۡاٰخِرَۃَ ؕ اِنَّ اللّٰہَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ ﴿ۚ۲۰﴾
কানযুল ঈমান
২০. আপনি বলুন! ভূ-পৃষ্ঠে পরিভ্রমণ করে দেখো, আল্লাহ্ কিভাবে প্রথমে সৃষ্টি করেন অতঃপর আল্লাহ্ দ্বিতীয় উত্থান ঘটান। নিশ্চয় আল্লাহ্ সবকিছু করতে পারেন।
ইরফানুল কুরআন
২০. বলুন, ‘(জাগতিক জীবন সম্পর্কে অধ্যয়নের জন্যে) পৃথিবীতে ভ্রমণ করো। অতঃপর দেখো (অর্থাৎ চিন্তা ও গবেষণা করো), তিনি কিভাবে (জীবন) সৃষ্টির সূচনা করেছেন, এরপর তিনি কিভাবে দ্বিতীয়বার জীবনকে (বিবর্তনের স্তরগুলো অতিক্রম করে) বিকশিত করেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সবকিছু সম্পর্কে খুবই ক্ষমতাবান।
یُعَذِّبُ مَنۡ یَّشَآءُ وَ یَرۡحَمُ مَنۡ یَّشَآءُ ۚ وَ اِلَیۡہِ تُقۡلَبُوۡنَ ﴿۲۱﴾
কানযুল ঈমান
২১. শাস্তি দেন যাকে চান এবং দয়া করেন যার প্রতি ইচ্ছা করেন; আর তোমাদেরকে তারই প্রতি ফিরে যেতে হবে।
ইরফানুল কুরআন
২১. তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে শাস্তি দেন এবং যার প্রতি ইচ্ছা অনুগ্রহ করেন। আর তাঁরই নিকট তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।
وَ مَاۤ اَنۡتُمۡ بِمُعۡجِزِیۡنَ فِی الۡاَرۡضِ وَ لَا فِی السَّمَآءِ ۫ وَ مَا لَکُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ مِنۡ وَّلِیٍّ وَّ لَا نَصِیۡرٍ ﴿۲۲﴾
কানযুল ঈমান
২২. এবং না তোমরা যমীনে আয়ত্ব থেকে বের হতে পারো এবং না আসমানে আর তোমাদের জন্য আল্লাহ্ ব্যতীত না আছে কোন কর্মব্যবস্থাপক, না আছে সাহায্যকারী।
ইরফানুল কুরআন
২২. আর তোমরা (আল্লাহ্ থেকে) না পৃথিবীতে নিষ্কৃতি পাবে আর না আকাশে। আর আল্লাহ্ ব্যতীত তোমাদের না কোনো বন্ধু আছে আর না সাহায্যকারী।
وَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا بِاٰیٰتِ اللّٰہِ وَ لِقَآئِہٖۤ اُولٰٓئِکَ یَئِسُوۡا مِنۡ رَّحۡمَتِیۡ وَ اُولٰٓئِکَ لَہُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ﴿۲۳﴾
কানযুল ঈমান
২৩. এবং যারা আমার নিদর্শনসমূহ ও আমার সাক্ষাতকে অস্বীকার করেছে তারাই হচ্ছে ওই সব লোক, যাদের আমার অনুগ্রহ লাভের আশা নেই এবং তাদের জন্য বেদনাদায়ক শাস্তি রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
২৩. আর যারা আল্লাহ্র আয়াতসমূহ এবং তাঁর সাক্ষাত অস্বীকার করেছে তারা আমার রহমত থেকে নিরাশ হয়েছে। আর সেসব লোকদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
فَمَا کَانَ جَوَابَ قَوۡمِہٖۤ اِلَّاۤ اَنۡ قَالُوا اقۡتُلُوۡہُ اَوۡ حَرِّقُوۡہُ فَاَنۡجٰىہُ اللّٰہُ مِنَ النَّارِ ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیٰتٍ لِّقَوۡمٍ یُّؤۡمِنُوۡنَ ﴿۲۴﴾
কানযুল ঈমান
২৪. সুতরাং তার সম্প্রদায়ের পক্ষে কোন উত্তর দেওয়া সম্ভব হয় নি, কিন্তু এতটুকু বললো, তাকে হত্যা করে ফেলো অথবা জ্বালিয়ে দাও’। অতঃপর আল্লাহ্ তাকে আগুন থেকে রক্ষা করেছেন। নিশ্চয় তাতে অবশ্য নিদর্শনসমূহ রয়েছে ঈমানদারদের জন্য।
ইরফানুল কুরআন
২৪. সুতরাং ইবরাহীমের সম্প্রদায় জবাবে কেবল এ কথাই বললো, ‘হয় তাঁকে হত্যা করো নতুবা তাঁকে পুড়িয়ে ফেলো’। অতঃপর আল্লাহ্ তাঁকে (নমরূদের) আগুন থেকে রক্ষা করলেন। অবশ্যই এতে (এ ঘটনায়) তাদের জন্যে নিদর্শনাদি রয়েছে যারা ঈমান আনয়ন করেছে।
وَ قَالَ اِنَّمَا اتَّخَذۡتُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ اَوۡثَانًا ۙ مَّوَدَّۃَ بَیۡنِکُمۡ فِی الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا ۚ ثُمَّ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ یَکۡفُرُ بَعۡضُکُمۡ بِبَعۡضٍ وَّ یَلۡعَنُ بَعۡضُکُمۡ بَعۡضًا ۫ وَّ مَاۡوٰىکُمُ النَّارُ وَ مَا لَکُمۡ مِّنۡ نّٰصِرِیۡنَ ﴿٭ۙ۲۵﴾
কানযুল ঈমান
২৫. এবং ইব্রাহীম বললেন, ‘তোমরা তো আল্লাহ্ ব্যতীত এ মূর্তিগুলো তৈরী করে নিয়েছো, যেগুলোর সাথে তোমাদের ভালোবাসা এ দুনিয়ার জীবন পর্যন্ত। অতঃপর ক্বিয়ামত দিবসে তোমাদের মধ্যে একে অপরের সাথে কুফর করবে এবং একে অপরের প্রতি অভিসম্পাত করবে আর তোমাদের সবার ঠিকানা হচ্ছে জাহান্নাম এবং তোমাদের সাহায্যকারী নেই’।
ইরফানুল কুরআন
২৫. আর ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘তোমরা তো আল্লাহ্র পরিবর্তে মূর্তিগুলোকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছো, কেবল পার্থিব জীবনে পরস্পরের বন্ধুত্ব রক্ষার্থে। অতঃপর কিয়ামতের দিন তোমরা (সবাই) একে অপরকে (বন্ধুরূপে) অস্বীকার করবে এবং তোমরা (সবাই) একে অপরকে অভিসম্পাত করবে। কাজেই তোমাদের ঠিকানা হবে জাহান্নাম আর তোমাদের জন্যে কোনো সাহায্যকারী থাকবে না।’
فَاٰمَنَ لَہٗ لُوۡطٌ ۘ وَ قَالَ اِنِّیۡ مُہَاجِرٌ اِلٰی رَبِّیۡ ؕ اِنَّہٗ ہُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ ﴿۲۶﴾
কানযুল ঈমান
২৬. অতঃপর লূত তার উপর ঈমান এনেছে এবং ইব্রাহীম বললো, ‘আমি আপন রবের প্রতি হিজরত করছি। নিশ্চয় তিনিই সম্মান ও বাস্তব জ্ঞানের অধিকারী’।
ইরফানুল কুরআন
২৬. অতঃপর লূত (আলাইহিস সালাম) তাঁর প্রতি (অর্থাৎ হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের প্রতি) বিশ্বাস স্থাপন করলেন এবং বললেন, ‘আমি আপনার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে দেশত্যাগ করছি। অবশ্যই তিনি পরাক্রমশালী এবং প্রজ্ঞাবান।’
وَ وَہَبۡنَا لَہٗۤ اِسۡحٰقَ وَ یَعۡقُوۡبَ وَ جَعَلۡنَا فِیۡ ذُرِّیَّتِہِ النُّبُوَّۃَ وَ الۡکِتٰبَ وَ اٰتَیۡنٰہُ اَجۡرَہٗ فِی الدُّنۡیَا ۚ وَ اِنَّہٗ فِی الۡاٰخِرَۃِ لَمِنَ الصّٰلِحِیۡنَ ﴿۲۷﴾
কানযুল ঈমান
২৭. এবং আমি তাকে ইসহাক্ব ও ইয়া’ক্বূবকে দান করেছি এবং আমি তার বংশধরদের মধ্যে নুবূয়ত ও কিতাব রেখেছি; আর আমি দুনিয়ার মধ্যে এর প্রতিদান তাকে দান করেছি এবং নিশ্চয় সে আখিরাতে আমার একান্ত নৈকট্যের উপযোগী বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত।
ইরফানুল কুরআন
২৭. আর আমরা তাঁকে (ছেলে এবং পৌত্র) ইসহাক ও ইয়াকুব দিয়ে ধন্য করলাম এবং আমরা ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)-এঁর বংশধরদের জন্যে নির্ধারণ করলাম নবুয়্যত ও কিতাব। আর আমি তাঁকে দুনিয়াতে(ই) পুরুস্কৃত করেছিলাম। আর নিশ্চিত তিনি আখিরাতে(ও) নেক্কারদের মাঝে গণ্য হবেন।
وَ لُوۡطًا اِذۡ قَالَ لِقَوۡمِہٖۤ اِنَّکُمۡ لَتَاۡتُوۡنَ الۡفَاحِشَۃَ ۫ مَا سَبَقَکُمۡ بِہَا مِنۡ اَحَدٍ مِّنَ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۲۸﴾
কানযুল ঈমান
২৮. এবং লূতকে উদ্ধার করেছি যখন সে আপন সম্প্রদায়কে বললো, ‘তোমরা নিশ্চয় এমন অশ্লীল কর্ম করছো, যা তোমাদের পূর্বে সারা দুনিয়ায় কেউ করে নি।
ইরফানুল কুরআন
২৮. আর (স্মরণ করুন) লূত (আলাইহিস সালাম)-এঁর কথা যখন তিনি তাঁর সম্প্রদায়কে বললেন, ‘তোমরা তো নিশ্চিত জঘন্য অশ্লীলতায় নিমজ্জিত, তোমাদের পূর্বে বিশ্ব জগতের কোনো জাতি এরূপ (অশ্লীল) কর্মে লিপ্ত হয়নি।
اَئِنَّکُمۡ لَتَاۡتُوۡنَ الرِّجَالَ وَ تَقۡطَعُوۡنَ السَّبِیۡلَ ۬ۙ وَ تَاۡتُوۡنَ فِیۡ نَادِیۡکُمُ الۡمُنۡکَرَ ؕ فَمَا کَانَ جَوَابَ قَوۡمِہٖۤ اِلَّاۤ اَنۡ قَالُوا ائۡتِنَا بِعَذَابِ اللّٰہِ اِنۡ کُنۡتَ مِنَ الصّٰدِقِیۡنَ ﴿۲۹﴾
কানযুল ঈমান
২৯. তোমরা কি পুরুষের সাথে বলাৎকার করছো এবং ডাকাতি করছো ও নিজেদের মজলিসে ঘৃণ্য কাজ করছো? সুতরাং তার সম্প্রদায়ের কোন জবাব ছিলো না, কিন্তু এ যে, তারা বললো, ‘আমাদের উপর আল্লাহ্র শাস্তি আনয়ন করো যদি তুমি সত্যবাদী হও!’
ইরফানুল কুরআন
২৯. তোমরা কি (কামপ্রবৃত্তি চরিতার্থে) পূরুষদের নিকট গমন করো আর রাহাজানি করো এবং নিজেদের (ভরা) মজলিসে প্রকাশ্যে ঘৃণ্য কর্ম করে বেড়াও?’ অতঃপর তাঁর সম্প্রদায় জবাবে কেবল এ কথাই বললো, ‘আমাদের উপর আল্লাহ্র শাস্তি নিয়ে এসো যদি তুমি সত্যবাদী হও’।
قَالَ رَبِّ انۡصُرۡنِیۡ عَلَی الۡقَوۡمِ الۡمُفۡسِدِیۡنَ ﴿۳۰﴾
কানযুল ঈমান
৩০. আরয করলো, ‘হে আমার রব! আমাকে সাহায্য করো এসব অশান্তি সৃষ্টিকারী লোকের বিরুদ্ধে।
ইরফানুল কুরআন
৩০. লূত (আলাইহিস সালাম) আরয করলেন, ‘হে প্রতিপালক! বিপর্যয় সৃষ্টিকারী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য করো।’
وَ لَمَّا جَآءَتۡ رُسُلُنَاۤ اِبۡرٰہِیۡمَ بِالۡبُشۡرٰی ۙ قَالُوۡۤا اِنَّا مُہۡلِکُوۡۤا اَہۡلِ ہٰذِہِ الۡقَرۡیَۃِ ۚ اِنَّ اَہۡلَہَا کَانُوۡا ظٰلِمِیۡنَ ﴿ۚۖ۳۱﴾
কানযুল ঈমান
৩১. এবং যখন আমার ফিরিশ্তাগণ ইব্রাহীমের নিকট সুসংবাদ নিয়ে এলো, তখন তারা বললো, ‘আমরা অবশ্য এ শহরবাসীদেরকে ধ্বংস করবো। নিশ্চয় সেটার অধিবাসীরা অত্যাচারী’।
ইরফানুল কুরআন
৩১. আর যখন আমার প্রেরিত (ফেরেশতা) বার্তাবাহকেরা ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)-এঁর নিকট সুসংবাদ নিয়ে আগমন করলো, তারা (তখন আরও) বললো, ‘আমরা এ জনপদবাসীকে ধ্বংস করতে যাচ্ছি, কেননা এর অধিবাসীরা অত্যাচারী’।
قَالَ اِنَّ فِیۡہَا لُوۡطًا ؕ قَالُوۡا نَحۡنُ اَعۡلَمُ بِمَنۡ فِیۡہَا ٝ۫ لَنُنَجِّیَنَّہٗ وَ اَہۡلَہٗۤ اِلَّا امۡرَاَتَہٗ ٭۫ کَانَتۡ مِنَ الۡغٰبِرِیۡنَ ﴿۳۲﴾
কানযুল ঈমান
৩২. বললো, ‘তাতে তো লূত রয়েছে’। ফিরিশ্তাগণ বললো, ‘আমরা ভালোভাবে জানি তাতে কে রয়েছে। অবশ্যই আমরা তাকে এবং তার পরিবার-পরিজনকে রক্ষা করবো, কিন্তু তার স্ত্রীকে; সে পশ্চাতে অবস্থানকারী লোকদের অন্তর্ভুক্ত থাকবে'।
ইরফানুল কুরআন
৩২. ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘এতে (এ জনপদে) তো লূত (আলাইহিস সালামও) রয়েছেন’। তারা বললো, ‘আমরা তাদেরকে খুব ভালোভাবেই জানি যারা এতে (বসবাসরত) রয়েছে। আমরা লূত (আলাইহিস সালাম) এবং তাঁর পরিবারকে অবশ্যই রক্ষা করবো, তবে তাঁর স্ত্রী ব্যতীত; সে তো পশ্চাতে থেকে যাওয়া লোকদের মধ্যে গণ্য।’
وَ لَمَّاۤ اَنۡ جَآءَتۡ رُسُلُنَا لُوۡطًا سِیۡٓءَ بِہِمۡ وَ ضَاقَ بِہِمۡ ذَرۡعًا وَّ قَالُوۡا لَا تَخَفۡ وَ لَا تَحۡزَنۡ ۟ اِنَّا مُنَجُّوۡکَ وَ اَہۡلَکَ اِلَّا امۡرَاَتَکَ کَانَتۡ مِنَ الۡغٰبِرِیۡنَ ﴿۳۳﴾
কানযুল ঈমান
৩৩. আর যখন আমার ফিরিশ্তাগণ লূতের নিকট এলো, তখন তাদের আগমন তার নিকট বিস্বাদ অনুভূত হলো এবং তাদের কারণে তার অন্তর সঙ্কুচিত হলো আর তারা বললো, ‘ভয় করবেন না এবং দুঃখও করবেন না! নিশ্চয় আমরা আপনাকে ও আপনার পরিবার-পরিজনকে রক্ষা করবো, আপনার স্ত্রী ব্যতীত। সে পশ্চাতে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত।
ইরফানুল কুরআন
৩৩. আর যখন আমাদের প্রেরিত (ফেরেশতা) বার্তাবাহকেরা লূত (আলাইহিস সালাম)-এঁর নিকট আগমন করলো, তিনি তখন তাদের (আগমনের) কারণে চিন্তিত হয়ে পড়লেন এবং তাদের (শাস্তির ইচ্ছার) কারণে হতোদ্যম হয়ে গেলেন। তখন তারা (ফেরেশতাগণ) বললো, ‘আপনি ভীত হবেন না এবং চিন্তিতও হবেন না। নিশ্চয়ই আমরা আপনাকে এবং আপনার পরিবারকে রক্ষা করবো, তবে আপনার স্ত্রীকে নয়। সে তো (শাস্তির জন্যে) পশ্চাতে থেকে যাওয়া লোকদের মধ্যে গণ্য।
اِنَّا مُنۡزِلُوۡنَ عَلٰۤی اَہۡلِ ہٰذِہِ الۡقَرۡیَۃِ رِجۡزًا مِّنَ السَّمَآءِ بِمَا کَانُوۡا یَفۡسُقُوۡنَ ﴿۳۴﴾
কানযুল ঈমান
৩৪. নিশ্চয় আমরা এ শহরবাসীদের উপর আসমান থেকে শাস্তি অবতারণকারী তাদের অবাধ্যতার বদলাস্বরূপ’।
ইরফানুল কুরআন
৩৪. ‘আমরা নিশ্চিত এ জনপদবাসীর উপর আকাশ থেকে শাস্তি অবতীর্ণ করবো, কারণ এরা নাফরমানী করছিল।’
وَ لَقَدۡ تَّرَکۡنَا مِنۡہَاۤ اٰیَۃًۢ بَیِّنَۃً لِّقَوۡمٍ یَّعۡقِلُوۡنَ ﴿۳۵﴾
কানযুল ঈমান
৩৫. এবং নিশ্চয় আমি তা থেকে সুস্পষ্ট নিদর্শন অবশিষ্ট রেখেছি বোধশক্তিসম্পন্নদের জন্য।
ইরফানুল কুরআন
৩৫. আর আমরা তো এ জনপদকে (এর ধ্বংসপ্রাপ্ত স্থানসমূহকে) বোধশক্তিসম্পন্ন লোকদের জন্যে এক সুস্পষ্ট নিদর্শন হিসেবে বহাল রেখেছি।
وَ اِلٰی مَدۡیَنَ اَخَاہُمۡ شُعَیۡبًا ۙ فَقَالَ یٰقَوۡمِ اعۡبُدُوا اللّٰہَ وَ ارۡجُوا الۡیَوۡمَ الۡاٰخِرَ وَ لَا تَعۡثَوۡا فِی الۡاَرۡضِ مُفۡسِدِیۡنَ ﴿۳۶﴾
কানযুল ঈমান
৩৬. মাদ্য়ানের প্রতি তাদের সম্প্রদায়ের শু’আয়বকে প্রেরণ করেছি। সুতরাং সে বললো, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আল্লাহ্র ইবাদত করো এবং শেষ দিবসের আশা রাখো! আর পৃথিবীতে অশান্তি বিস্তার করে বেড়িয়ো না!’
ইরফানুল কুরআন
৩৬. আর মাদইয়ানে তাদের (জ্ঞাতি) ভাই শুয়াইব (আলাইহিস সালাম)-কে (প্রেরণ করেছিলাম)। অতঃপর তিনি বললেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আল্লাহ্র ইবাদত করো, শেষ দিবসের প্রতীক্ষা করো এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করো না।’
فَکَذَّبُوۡہُ فَاَخَذَتۡہُمُ الرَّجۡفَۃُ فَاَصۡبَحُوۡا فِیۡ دَارِہِمۡ جٰثِمِیۡنَ ﴿۫۳۷﴾
কানযুল ঈমান
৩৭. অতঃপর তারা তাকে অস্বীকার করলো। তারপর তাদেরকে ভূমিকম্প পেয়ে বসলো। ফলে তারা ভোরে নিজেদের ঘরগুলোর মধ্যে হাটুর উপর ভর করে পড়ে রইলো।
ইরফানুল কুরআন
৩৭. তখন তারা শুয়াইব (আলাইহিস সালাম)-কে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করলো, সুতরাং তাদেরকে (আমার শাস্তি) ভুমিকম্প গ্রাস করলো। ফলে তারা প্রভাতে নিজ গৃহে উপুড় (হয়ে মৃত) অবস্থায় পড়ে রইলো।
وَ عَادًا وَّ ثَمُوۡدَا۠ وَ قَدۡ تَّبَیَّنَ لَکُمۡ مِّنۡ مَّسٰکِنِہِمۡ ۟ وَ زَیَّنَ لَہُمُ الشَّیۡطٰنُ اَعۡمَالَہُمۡ فَصَدَّہُمۡ عَنِ السَّبِیۡلِ وَ کَانُوۡا مُسۡتَبۡصِرِیۡنَ ﴿ۙ۳۸﴾
কানযুল ঈমান
৩৮. আর ‘আদ ও সামূদকে ধ্বংস করেছি এবং তোমাদের নিকট তাদের বস্তিসমূহ সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। এবং শয়তান তাদের কৃতকর্ম তাদের দৃষ্টিতে সুশোভিত করে দেখিয়েছে আর তাদেরকে সৎপথ থেকে নিবৃত্ত রেখেছে এবং তাদের মধ্যে বোধশক্তি ছিলো।
ইরফানুল কুরআন
৩৮. আর ‘আদ এবং সামূদকেও (আমি ধ্বংস করেছিলাম)। এদের (ধ্বংসপ্রাপ্ত) কিছু ঘরবাড়িই তোমাদের জন্যে (উপদেশ হিসেবে) সুস্পষ্ট। আর শয়তান তাদের মন্দ কর্মকে তাদের দৃষ্টিতে সুশোভিত করেছিল এবং তাদেরকে (সত্যের) পথ থেকে ফিরিয়ে রেখেছিল। অথচ তারা ছিল সজাগ এবং বিচক্ষণ।
وَ قَارُوۡنَ وَ فِرۡعَوۡنَ وَ ہَامٰنَ ۟ وَ لَقَدۡ جَآءَہُمۡ مُّوۡسٰی بِالۡبَیِّنٰتِ فَاسۡتَکۡبَرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ وَ مَا کَانُوۡا سٰبِقِیۡنَ ﴿ۚۖ۳۹﴾
কানযুল ঈমান
৩৯. আর ক্বারূন, ফির’আউন ও হামানকে; এবং নিশ্চয় মূসা তাদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শনাদি নিয়ে এসেছে। অতঃপর তারা ভূ-পৃষ্ঠে অহঙ্কার করেছে এবং তারা আমার আয়ত্ত থেকে বের হয়ে যাবার মতো ছিলো না।
ইরফানুল কুরআন
৩৯. আর কারূন, ফেরাউন এবং হামানকেও (আমরা ধ্বংস করেছিলাম)। আর মূসা (আলাইহি সালাম) তো তাদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী নিয়ে আগমন করেছিলেন। তখন তারা পৃথিবীতে অহঙ্কার ও দম্ভ করছিল। কিন্তু তারা (আমার গ্রাস থেকে) রক্ষা পায়নি।
فَکُلًّا اَخَذۡنَا بِذَنۡۢبِہٖ ۚ فَمِنۡہُمۡ مَّنۡ اَرۡسَلۡنَا عَلَیۡہِ حَاصِبًا ۚ وَ مِنۡہُمۡ مَّنۡ اَخَذَتۡہُ الصَّیۡحَۃُ ۚ وَ مِنۡہُمۡ مَّنۡ خَسَفۡنَا بِہِ الۡاَرۡضَ ۚ وَ مِنۡہُمۡ مَّنۡ اَغۡرَقۡنَا ۚ وَ مَا کَانَ اللّٰہُ لِیَظۡلِمَہُمۡ وَ لٰکِنۡ کَانُوۡۤا اَنۡفُسَہُمۡ یَظۡلِمُوۡنَ ﴿۴۰﴾
কানযুল ঈমান
৪০. অতঃপর তাদের প্রত্যেককে আমি তাদের পাপের জন্য পাকড়াও করেছি; সুতরাং তাদের মধ্যে কারো উপর আমি পাথর বর্ষণ করেছি; এবং তাদের কাউকে ভয়ানক ধ্বনি পেয়ে বসেছে, আর তাদের মধ্যে কাউকে ভূ-গর্ভে ধ্বসিয়ে ফেলেছি, এবং তাদের মধ্যে কাউকে ডুবিয়ে মেরেছি। এবং আল্লাহ্র জন্য শোভা পেতো না যে, তিনি তাদের প্রতি যুল্ম করতেন; হাঁ, তারা নিজেরাই নিজেদের আত্নার প্রতি যুল্ম করছিলো।
ইরফানুল কুরআন
৪০. অতঃপর আমরা (তাদের) প্রত্যেককে নিজ পাপের কারণে পাকড়াও করেছিলাম; সুতরাং তাদের মধ্যে এমনও (কেউ) ছিল যার উপর আমরা পাথর বর্ষণকারী প্রবল ঝটিকা প্রেরণ করেছিলাম; আর তাদের মধ্যে (কেউ) এমনও ছিল যাদেরকে ভয়ানক আওয়াজ এসে গ্রাস করেছিল; আর তাদের মধ্যে এমনও (কেউ) ছিল যাদেরকে আমরা ভু-গর্ভে ধ্বসিয়ে দিয়েছিলাম; এবং তাদের মধ্যে এমনও (কেউ) ছিল যাদেরকে আমি ডুবিয়ে দিয়েছিলাম। আর আল্লাহ্ তাদের প্রতি কখনই জুুলুম করেন নি, বরং তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি জুলুম করেছিল।
مَثَلُ الَّذِیۡنَ اتَّخَذُوۡا مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ اَوۡلِیَآءَ کَمَثَلِ الۡعَنۡکَبُوۡتِ ۖۚ اِتَّخَذَتۡ بَیۡتًا ؕ وَ اِنَّ اَوۡہَنَ الۡبُیُوۡتِ لَبَیۡتُ الۡعَنۡکَبُوۡتِ ۘ لَوۡ کَانُوۡا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۴۱﴾
কানযুল ঈমান
৪১. তাদের উপমা, যারা আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য মালিক স্থির করেছে, মাকড়সার ন্যায়; সে জালের ঘর তৈরী করেছে; এবং নিশ্চয় সমস্ত ঘরের মধ্যে দুর্বলতম ঘর হচ্ছে মাকড়সার ঘর; কতোই উত্তম হতো যদি তারা জানতো!
ইরফানুল কুরআন
৪১. যারা আল্লাহ্র পরিবর্তে অপরকে (অর্থাৎ মূর্তিকে) অভিভাবকরূপে গ্রহণ করেছে সেসব (অবিশ্বাসী) লোকদের দৃষ্টান্ত তো মাকড়সার কাহিনীর ন্যায়, যে (নিজের জন্যে জালের) ঘর তৈরি করে। আর সমস্ত ঘরের মধ্যে দূর্বলতম ঘর হল মাকড়সার। হায়! তারা যদি (এ কথা) জানতো।
اِنَّ اللّٰہَ یَعۡلَمُ مَا یَدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِہٖ مِنۡ شَیۡءٍ ؕ وَ ہُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ ﴿۴۲﴾
কানযুল ঈমান
৪২. আল্লাহ্ জানেন যে বস্তুর তারা তাঁকে ব্যতীত পূজা করছে; এবং তিনিই সম্মান ও বাস্তব জ্ঞানের অধিকারী।
ইরফানুল কুরআন
৪২. নিশ্চয়ই আল্লাহ্ এ (মূর্তিগুলোর প্রকৃত অবস্থা) সম্পর্কে অবগত যাদেরকে তারা তাঁকে ব্যতীত উপাসনা করে। আর তিনিই পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাবান।
وَ تِلۡکَ الۡاَمۡثَالُ نَضۡرِبُہَا لِلنَّاسِ ۚ وَ مَا یَعۡقِلُہَاۤ اِلَّا الۡعٰلِمُوۡنَ ﴿۴۳﴾
কানযুল ঈমান
৪৩. এবং এ দৃষ্টান্তসমূহ আমি মানুষের জন্য বর্ণনা করছি; আর সেগুলো কেবল জ্ঞানী ব্যক্তিরাই বুঝে।
ইরফানুল কুরআন
৪৩. আর এসব উপমা আমরা মানুষের (বোঝার) জন্যে বর্ণনা করি। কিন্তু জ্ঞানবান ছাড়া এগুলো কেউ বুঝে না।
خَلَقَ اللّٰہُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ بِالۡحَقِّ ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیَۃً لِّلۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۴۴﴾
কানযুল ঈমান
৪৪. আল্লাহ্ আসমান ও যমীন সত্য তৈরী করেছেন। নিশ্চয় তাতে অবশ্য নিদর্শন রয়েছে মুসলমানদের জন্য।
ইরফানুল কুরআন
৪৪. আল্লাহ্ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন নিখুঁতভাবে। নিশ্চয়ই এতে (এ সৃষ্টিতে) ঈমানদারদের জন্যে রয়েছে (তাঁর একত্ববাদ ও কুদরতের) নিদর্শন।
اُتۡلُ مَاۤ اُوۡحِیَ اِلَیۡکَ مِنَ الۡکِتٰبِ وَ اَقِمِ الصَّلٰوۃَ ؕ اِنَّ الصَّلٰوۃَ تَنۡہٰی عَنِ الۡفَحۡشَآءِ وَ الۡمُنۡکَرِ ؕ وَ لَذِکۡرُ اللّٰہِ اَکۡبَرُ ؕ وَ اللّٰہُ یَعۡلَمُ مَا تَصۡنَعُوۡنَ ﴿۴۵﴾
কানযুল ঈমান
৪৫. হে মাহবূব! পাঠ করুন যে কিতাব আপনার প্রতি ওহী করা হয়েছে এবং নামায ক্বায়েম করুন! নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে এবং নিশ্চয় আল্লাহ্র স্মরণ সর্বাপেক্ষা বড় এবং আল্লাহ্ জানেন যা তোমরা করো।
ইরফানুল কুরআন
৪৫. (হে সম্মানিত হাবীব!) আপনি এ কিতাব পাঠ করে শুনান যা আপনার প্রতি (ওহী হিসেবে) প্রত্যাদেশ করা হয়েছে এবং নামায কায়েম করুন। নিশ্চয়ই নামায অশ্লীল ও মন্দকর্ম থেকে বিরত রাখে। আর আল্লাহ্র স্মরণই শ্রেষ্ঠতম। আর আল্লাহ্ সেসব (কর্মকান্ড) সম্পর্কে অবগত যা তোমরা সম্পাদন করো।
وَ لَا تُجَادِلُوۡۤا اَہۡلَ الۡکِتٰبِ اِلَّا بِالَّتِیۡ ہِیَ اَحۡسَنُ ٭ۖ اِلَّا الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡا مِنۡہُمۡ وَ قُوۡلُوۡۤا اٰمَنَّا بِالَّذِیۡۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡنَا وَ اُنۡزِلَ اِلَیۡکُمۡ وَ اِلٰـہُنَا وَ اِلٰـہُکُمۡ وَاحِدٌ وَّ نَحۡنُ لَہٗ مُسۡلِمُوۡنَ ﴿۴۶﴾
কানযুল ঈমান
৪৬. এবং হে মুসলমানগণ তোমরা উত্তম পন্থা ব্যতীত কিতাবীদের সাথে বিতর্ক করো না, তবে তাদের সাথে করতে পার যারা তাদের মধ্যে যুল্ম করেছে। আর বলো, ‘আমরা ঈমান এনেছি সেটারই উপর, যা আমাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং যা তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে আর আমাদের তোমাদের একই উপাস্য এবং আমরা তার সামনে আত্নসমর্পণকারী’।
ইরফানুল কুরআন
৪৬. আর (হে মুমিনগণ!) আহলে কিতাবের সাথে তর্কবিতর্ক করো না, করলে এমন পন্থায় (করো) যা উৎকৃষ্ট; তবে তাদের মধ্যে যারা অন্যায় করেছে তারা ব্যতীত। আর (তাদেরকে) বলো, ‘আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি তার উপর (অর্থাৎ কিতাবে) যা আমাদের প্রতি অবতীর্ণ করা হয়েছে এবং যা তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ করা হয়েছিল। আর আমাদের ইলাহ্ ও তোমাদের ইলাহ্ একই এবং আমরা তাঁরই অনুগত।’
وَ کَذٰلِکَ اَنۡزَلۡنَاۤ اِلَیۡکَ الۡکِتٰبَ ؕ فَالَّذِیۡنَ اٰتَیۡنٰہُمُ الۡکِتٰبَ یُؤۡمِنُوۡنَ بِہٖ ۚ وَ مِنۡ ہٰۤؤُلَآءِ مَنۡ یُّؤۡمِنُ بِہٖ ؕ وَ مَا یَجۡحَدُ بِاٰیٰتِنَاۤ اِلَّا الۡکٰفِرُوۡنَ ﴿۴۷﴾
কানযুল ঈমান
৪৭. এবং হে মাহবূব! অনুরূপভাবে আপনার প্রতি কিতাব অবতীর্ণ করেছি, সুতরাং ওই সব লোক, যাদেরকে আমি কিতাব প্রদান করেছি, সেটার প্রতি ঈমান আনে। আর এদের থেকেও কিছুলোক এমন রয়েছে, যারা সেটার উপর ঈমান আনে; এবং আমার নিদর্শনসমূহকে কেউ অস্বীকার করে না, কিন্তু কাফিরগণ।
ইরফানুল কুরআন
৪৭. আর এভাবে আমরা আপনার প্রতি কিতাব অবতীর্ণ করেছি। কাজেই যে সকল (সত্যপন্থী) লোকদেরকে আমরা (পূর্ব থেকেই) কিতাব দিয়েছিলাম তারা এতে (এ কিতাবে) বিশ্বাস স্থাপান করে এবং এদের মধ্যে (মক্কার) সেসব লোকও রয়েছে যারা এর উপর ঈমান আনে। আর কাফের ব্যতীত অন্য কেউ আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে না।
وَ مَا کُنۡتَ تَتۡلُوۡا مِنۡ قَبۡلِہٖ مِنۡ کِتٰبٍ وَّ لَا تَخُطُّہٗ بِیَمِیۡنِکَ اِذًا لَّارۡتَابَ الۡمُبۡطِلُوۡنَ ﴿۴۸﴾
কানযুল ঈমান
৪৮. এবং এর পূর্বে আপনি কোন কিতাব পাঠ করতেন না এবং না আপন হাতে কিছু লিখতেন। যদি এমন হতো তাহলে বাতিল সম্প্রদায় অবশ্য সন্দেহ করতো।
ইরফানুল কুরআন
৪৮. আর (হে হাবীব!) আপনি তো এর পূর্বে অন্য কোনো কিতাব পাঠ করেননি, আর আপনি স্বহস্তে কোনো কিতাব লিপিবদ্ধও করেননি যাতে ভ্রান্তরা সন্দেহ পোষণ করবে।
بَلۡ ہُوَ اٰیٰتٌۢ بَیِّنٰتٌ فِیۡ صُدُوۡرِ الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡعِلۡمَ ؕ وَ مَا یَجۡحَدُ بِاٰیٰتِنَاۤ اِلَّا الظّٰلِمُوۡنَ ﴿۴۹﴾
কানযুল ঈমান
৪৯. বরং ওটা সুস্পষ্ট নিদর্শন তাদের অন্তরের মধ্যে, যাদেরকে জ্ঞান দেওয়া হয়েছে; এবং আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে না, কিন্তু অত্যাচারীগণ।
ইরফানুল কুরআন
৪৯. বরং এ (কুরআনেরই) সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ সেসব লোকের অন্তরে (সংরক্ষিত) রয়েছে যাদেরকে (বিশুদ্ধ) জ্ঞান দেয়া হয়েছে। আর সীমালঙ্ঘনকারী ব্যতীত কেউ আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে না।
وَ قَالُوۡا لَوۡ لَاۤ اُنۡزِلَ عَلَیۡہِ اٰیٰتٌ مِّنۡ رَّبِّہٖ ؕ قُلۡ اِنَّمَا الۡاٰیٰتُ عِنۡدَ اللّٰہِ ؕ وَ اِنَّمَاۤ اَنَا نَذِیۡرٌ مُّبِیۡنٌ ﴿۵۰﴾
কানযুল ঈমান
৫০. এবং বললো, ‘তার উপর তার রবের নিকট থেকে কেন কিছু নিদর্শন অবতীর্ণ হয় না?’ আপনি বলুন, ‘নিদর্শনগুলো তো আল্লাহ্রই নিকট রয়েছে। আর আমি তো এই স্পষ্ট সতর্ককারী’।
ইরফানুল কুরআন
৫০. আর কাফেরেরা বলে, ‘তাঁর উপর (অর্থাৎ নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের উপর) তাঁর প্রতিপালকের পক্ষ থেকে কেন অলৌকিক নিদর্শনাবলী প্রেরিত হয়নি?’ বলে দিন, ‘নিদর্শনাবলী তো আল্লাহ্রই নিকট। আর আমি তো কেবল সুস্পষ্ট সতর্ককারী।’
اَوَ لَمۡ یَکۡفِہِمۡ اَنَّاۤ اَنۡزَلۡنَا عَلَیۡکَ الۡکِتٰبَ یُتۡلٰی عَلَیۡہِمۡ ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَرَحۡمَۃً وَّ ذِکۡرٰی لِقَوۡمٍ یُّؤۡمِنُوۡنَ ﴿۵۱﴾
কানযুল ঈমান
৫১. এবং তাদের জন্য এটাই কি যথেষ্ট নয় যে, আমি আপনার উপর কিতাব অবতীর্ণ করেছি, যা তাদের উপর পাঠ করা হচ্ছে? নিশ্চয় তাতে দয়া ও উপদেশ রয়েছে ঈমানদারদের জন্য।
ইরফানুল কুরআন
৫১. তাদের জন্যে কি এ (নিদর্শনাবলী) যথেষ্ট নয় যে, আমরা আপনার প্রতি (এ) কিতাব অবতীর্ণ করেছি যা তাদের নিকট পাঠ করা হয় (অথবা সর্বদা পঠিত হতে থাকবে)? নিশ্চয়ই এতে (এ কিতাবে) রয়েছে রহমত এবং উপদেশ সেসব ব্যক্তির জন্যে যারা ঈমান আনয়ন করে।
قُلۡ کَفٰی بِاللّٰہِ بَیۡنِیۡ وَ بَیۡنَکُمۡ شَہِیۡدًا ۚ یَعۡلَمُ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا بِالۡبَاطِلِ وَ کَفَرُوۡا بِاللّٰہِ ۙ اُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡخٰسِرُوۡنَ ﴿۵۲﴾
কানযুল ঈমান
৫২. আপনি বলুন, ‘আল্লাহ্ যথেষ্ট আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী হিসেবে, তিনি জানেন যা কিছু আসমানসমূহ ও যমীনের মধ্যে রয়েছে এবং ওই সব লোক, যারা অসত্যের উপর দৃঢ় বিশ্বাস রেখেছে এবং আল্লাহ্কে অস্বীকার করেছে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত’।
ইরফানুল কুরআন
৫২. বলে দিন, তোমাদের এবং আমার মাঝে ‘সাক্ষী হিসেবে আল্লাহ্ই যথেষ্ট। তিনি (সবকিছুর অবস্থা সম্পর্কে) অবগত যা কিছু আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে রয়েছে। আর যারা অসত্যে বিশ্বাস করে এবং আল্লাহ্কে অস্বীকার করে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।’
وَ یَسۡتَعۡجِلُوۡنَکَ بِالۡعَذَابِ ؕ وَ لَوۡ لَاۤ اَجَلٌ مُّسَمًّی لَّجَآءَہُمُ الۡعَذَابُ ؕ وَ لَیَاۡتِیَنَّہُمۡ بَغۡتَۃً وَّ ہُمۡ لَا یَشۡعُرُوۡنَ ﴿۵۳﴾
কানযুল ঈমান
৫৩. এবং তারা আপনার নিকট শাস্তি তাড়াতাড়ি চাচ্ছে; আর যদি একটা নির্ধারিত সময়সীমা না থাকতো, তবে অবশ্যই তাদের উপর শাস্তি এসে যেতো এবং নিশ্চয় তাদের উপর হঠাৎ করে এসে যাবে যখন তারা অনবহিত থাকবে।
ইরফানুল কুরআন
৫৩. আর তারা আপনাকে শাস্তি ত্বরান্বিত করতে বলে। যদি (শাস্তির) কাল নির্ধারিত না থাকতো তবে তাদের উপর শাস্তি নেমে আসতো। আর নিশ্চয়ই তা হঠাৎ এসে পৌঁছুবে, তারা টেরও পাবে না।
یَسۡتَعۡجِلُوۡنَکَ بِالۡعَذَابِ ؕ وَ اِنَّ جَہَنَّمَ لَمُحِیۡطَۃٌۢ بِالۡکٰفِرِیۡنَ ﴿ۙ۵۴﴾
কানযুল ঈমান
৫৪. আপনার নিকট শাস্তি তাড়াতাড়ি চাচ্ছে এবং নিশ্চয় জাহান্নাম পরিবেষ্টন করে আছে কাফিরদেরকে;
ইরফানুল কুরআন
৫৪. এরা আপনাকে শাস্তি ত্বরান্বিত করতে বলে, জাহান্নাম তো কাফেরদের পরিবেষ্টন করবেই।
یَوۡمَ یَغۡشٰہُمُ الۡعَذَابُ مِنۡ فَوۡقِہِمۡ وَ مِنۡ تَحۡتِ اَرۡجُلِہِمۡ وَ یَقُوۡلُ ذُوۡقُوۡا مَا کُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۵۵﴾
কানযুল ঈমান
৫৫. যেদিন তাদেরকে ঢেকে নেবে শাস্তি- তাদের উপর ও তাদের পায়ের নিচ থেকে এবং তিনি বলবেন, ‘গ্রহণ করো আপন কর্মের স্বাদ!’
ইরফানুল কুরআন
৫৫. যেদিন শাস্তি তাদেরকে গ্রাস করবে তাদের উপর থেকে এবং তাদের পদতল থেকে, এরশাদ হবে, ‘তার স্বাদ আস্বাদন করো যা তোমরা সম্পাদন করতে’।
یٰعِبَادِیَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنَّ اَرۡضِیۡ وَاسِعَۃٌ فَاِیَّایَ فَاعۡبُدُوۡنِ ﴿۵۶﴾
কানযুল ঈমান
৫৬. হে আমার বান্দারা, যারা ঈমান এনেছো! নিশ্চয় আমার পৃথিবী প্রশস্ত, সুতরাং আমারই ইবাদত করো।
ইরফানুল কুরআন
৫৬. হে আমার বিশ্বাসী বান্দাগণ! নিশ্চয়ই আমার পৃথিবী প্রশস্ত, সুতরাং তোমরা আমারই ইবাদত করো।
کُلُّ نَفۡسٍ ذَآئِقَۃُ الۡمَوۡتِ ۟ ثُمَّ اِلَیۡنَا تُرۡجَعُوۡنَ ﴿۵۷﴾
কানযুল ঈমান
৫৭. প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে; অতঃপর আমারই দিকে প্রত্যাবর্তন করবে।
ইরফানুল কুরআন
৫৭. প্রত্যেক প্রাণকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। অতঃপর তোমরা আমারই নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে।
وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ لَنُبَوِّئَنَّہُمۡ مِّنَ الۡجَنَّۃِ غُرَفًا تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہَا الۡاَنۡہٰرُ خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَا ؕ نِعۡمَ اَجۡرُ الۡعٰمِلِیۡنَ ﴿٭ۖ۵۸﴾
কানযুল ঈমান
৫৮. এবং নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে, অবশ্যই আমি তাদেরকে জান্নাতের সুউচ্চ প্রাসাদসমূহে স্থান দেবো, যেগুলোর পাদদেশে নহরসমূহ প্রবহমান থাকবে, তারা তাতে স্থায়ীভাবে থাকবে। কতোই উত্তম পুরস্কার সৎকর্মশীলদের!
ইরফানুল কুরআন
৫৮. যারা ঈমান আনয়ন করে এবং নেক কাজ করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে জান্নাতে উঁচু প্রাসাদসমূহে স্থান দেবো যার তলদেশ দিয়ে নহরসমূহ প্রবাহিত হবে; তারা সেখানে চিরদিন থাকবে। সেসব (সৎকর্ম) সম্পাদনকারীদের জন্যে কতোই না উত্তম প্রতিদান!
الَّذِیۡنَ صَبَرُوۡا وَ عَلٰی رَبِّہِمۡ یَتَوَکَّلُوۡنَ ﴿۵۹﴾
কানযুল ঈমান
৫৯. ওই সব লোক, যারা ধৈর্যধারণ করেছে এবং আপন রবের উপরই নির্ভর করে।
ইরফানুল কুরআন
৫৯. (তারা সেসব লোক) যারা ধৈর্য ধারণ করে এবং তাদের প্রতিপালকের উপরেই ভরসা করে।
وَ کَاَیِّنۡ مِّنۡ دَآبَّۃٍ لَّا تَحۡمِلُ رِزۡقَہَا ٭ۖ اَللّٰہُ یَرۡزُقُہَا وَ اِیَّاکُمۡ ۫ۖ وَ ہُوَ السَّمِیۡعُ الۡعَلِیۡمُ ﴿۶۰﴾
কানযুল ঈমান
৬০. এবং যমীনের উপর কতোই বিচরণকারী রয়েছে, যেগুলো আপন জীবিকা সাথে রাখে না; আল্লাহ্ রিয্ক্ব দান করেন তাদেরকে ও তোমাদেরকে এবং তিনিই শুনেন, জানেন।
ইরফানুল কুরআন
৬০. আর এমন অনেক জীবজন্তু রয়েছে যারা নিজেদের জীবিকা (সাথে) বহন করে না, আল্লাহ্ তাদেরকেও রিযিক প্রদান করেন এবং তোমাদেরকেও। আর তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী।
وَ لَئِنۡ سَاَلۡتَہُمۡ مَّنۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ وَ سَخَّرَ الشَّمۡسَ وَ الۡقَمَرَ لَیَقُوۡلُنَّ اللّٰہُ ۚ فَاَنّٰی یُؤۡفَکُوۡنَ ﴿۶۱﴾
কানযুল ঈমান
৬১. এবং যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘কে সৃষ্টি করেছেন আসমান ও যমীন এবং কাজে লাগিয়েছেন সূর্য ও চন্দ্রকে?’ তবে তারা অবশ্যই বলবে, ‘আল্লাহ্’। তাহলে, তারা কোথায় যাচ্ছে মুখ নিচু করে?
ইরফানুল কুরআন
৬১. আর যদি আপনি এদেরকে (এ কাফেরদেরকে) জিজ্ঞেস করেন, ‘আকাশমন্ডলী এবং পৃথিবী কে সৃষ্টি করেছেন এবং সূর্য ও চন্দ্রকে কে অনুগত করে দিয়েছেন?’ তারা অবশ্যই বলবে, ‘আল্লাহ্’। অতঃপর তারা কোথায় ফিরে যাচ্ছে?
اَللّٰہُ یَبۡسُطُ الرِّزۡقَ لِمَنۡ یَّشَآءُ مِنۡ عِبَادِہٖ وَ یَقۡدِرُ لَہٗ ؕ اِنَّ اللّٰہَ بِکُلِّ شَیۡءٍ عَلِیۡمٌ ﴿۶۲﴾
কানযুল ঈমান
৬২. আল্লাহ্ প্রশস্ত করেন রিয্ক্ব আপন বান্দাদের মধ্য থেকে যার জন্য চান এবং সংকুচিত করেন যার জন্য চান। নিশ্চয় আল্লাহ্ সব কিছু জানেন।
ইরফানুল কুরআন
৬২. আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্যে চান জীবনোপকরণ বর্ধিত করেন এবং যার জন্যে (চান) সংকুচিত করে দেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক অবগত।
وَ لَئِنۡ سَاَلۡتَہُمۡ مَّنۡ نَّزَّلَ مِنَ السَّمَآءِ مَآءً فَاَحۡیَا بِہِ الۡاَرۡضَ مِنۡۢ بَعۡدِ مَوۡتِہَا لَیَقُوۡلُنَّ اللّٰہُ ؕ قُلِ الۡحَمۡدُ لِلّٰہِ ؕ بَلۡ اَکۡثَرُہُمۡ لَا یَعۡقِلُوۡنَ ﴿۶۳﴾
কানযুল ঈমান
৬৩. এবং যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘কে অবতীর্ণ করেছেন আসমান থেকে পানি; অতঃপর তা দ্বারা যমীনকে জীবিত করেন সেটার মৃত্যুর পর?’ তবে অবশ্যই বলেব, ‘আল্লাহ্’। আপনি বলুন, ‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্র জন্য; ‘বরং তাদের মধ্যে অধিকাংশ বিবেকহীন।
ইরফানুল কুরআন
৬৩. আর যদি আপনি এদেরকে জিজ্ঞেস করেন, ‘আকাশ থেকে কে পানি বর্ষণ করেন, অতঃপর তা দ্বারা মৃত অবস্থার পর এ পৃথিবীকে জীবন (এবং সতেজতা) দান করেন?’ তারা অবশ্যই বলবে, ‘আল্লাহ্’। আপনি বলে দিন, ‘সকল প্রশংসা আল্লাহ্রই জন্যে’, বরং তাদের অধিকাংশই অনুধাবন করে না।
وَ مَا ہٰذِہِ الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَاۤ اِلَّا لَہۡوٌ وَّ لَعِبٌ ؕ وَ اِنَّ الدَّارَ الۡاٰخِرَۃَ لَہِیَ الۡحَیَوَانُ ۘ لَوۡ کَانُوۡا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۶۴﴾
কানযুল ঈমান
৬৪. এবং এ পার্থিব জীবন তো কিছুই নয়, কিন্তু খেলাধুলা মাত্র। এবং নিশ্চয় আখিরাতের ঘর, অবশ্য সেটাই সত্য জীবন। কতো উত্তম ছিলো যদি তারা জানতো!
ইরফানুল কুরআন
৬৪. আর (হে মানুষ!) এ পার্থিব জীবন তো ক্রীড়াকৌতুক ব্যতীত আর কিছুই নয়। আর বস্তুতঃ পারলৌকিক গৃহই (প্রকৃত) জীবন। হায়! এরা যদি (এ গোপন রহস্য) জানতো!
فَاِذَا رَکِبُوۡا فِی الۡفُلۡکِ دَعَوُا اللّٰہَ مُخۡلِصِیۡنَ لَہُ الدِّیۡنَ ۬ۚ فَلَمَّا نَجّٰہُمۡ اِلَی الۡبَرِّ اِذَا ہُمۡ یُشۡرِکُوۡنَ ﴿ۙ۶۵﴾
কানযুল ঈমান
৬৫. অতঃপর যখন নৌযানে আরোহন করে, তখন আল্লাহ্কে আহ্বান করে একমাত্র তারই প্রতি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস রেখে; অতঃপর যখন তিনি তাদেরকে স্থলের দিকে উদ্ধার করে আনেন তখনই শির্ক করতে আরম্ভ করে;
ইরফানুল কুরআন
৬৫. অতঃপর যখন তারা নৌকায় আরোহণ করে তখন (বিপদে মূর্তিদের ছেড়ে নিজের বিশ্বাস ও ঐকান্তিক নিবেদনে) দ্বীনকে একনিষ্ঠ করে কেবল আল্লাহ্কে ডাকে করে। অতঃপর যখন আল্লাহ্ তাদেরকে উদ্ধার করে তীরে পৌঁছে দেন তখন তারা (আবার) অংশীদারিত্ব সাব্যস্ত করতে শুরু করে,
لِیَکۡفُرُوۡا بِمَاۤ اٰتَیۡنٰہُمۡ ۚۙ وَ لِیَتَمَتَّعُوۡا ٝ فَسَوۡفَ یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۶۶﴾
কানযুল ঈমান
৬৬. ফলে, অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আমার প্রদত্ত নি’মাতের প্রতি এবং ভোগ করে; সুতরাং তারা অবিলম্বে জানতে পারবে।
ইরফানুল কুরআন
৬৬. যাতে (এ মুক্তির মাধ্যমে অনুগ্রহ)-এর উপর অকৃতজ্ঞ হয় যা আমি তাদেরকে দান করলাম এবং (কুফরী জীবনের অবৈধ) উপকার গ্রহণ করতে থাকে। অতঃপর নিশ্চয়ই তারা অচিরেই (নিজেদের পরিণতি) জানতে পারবে।
اَوَ لَمۡ یَرَوۡا اَنَّا جَعَلۡنَا حَرَمًا اٰمِنًا وَّ یُتَخَطَّفُ النَّاسُ مِنۡ حَوۡلِہِمۡ ؕ اَفَبِالۡبَاطِلِ یُؤۡمِنُوۡنَ وَ بِنِعۡمَۃِ اللّٰہِ یَکۡفُرُوۡنَ ﴿۶۷﴾
কানযুল ঈমান
৬৭. এবং তারা কি এটা দেখে নি যে, আমি সম্মানিত ও ভূ-খণ্ডকে নিরাপদ আশ্রয়স্থল করেছি এবং তাদের চতুর্পাশ্বে অবস্থানকারী লোকদেরকে অপহরণ করে নেওয়া হয়? তবে কি তারা অসত্যে বিশ্বাস করছে এবং আল্লাহ্ প্রদত্ত নি’মাতের প্রতি অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে?
ইরফানুল কুরআন
৬৭. আর তারা কি দেখে না আমি (কা’বার) হারামকে নিরাপদ স্থান বানিয়েছি অথচ এর চারপাশ থেকে মানুষকে অপহরণ করা হচ্ছে। (তারপরও) কি এরা মিথ্যার উপর বিশ্বাস রাখে এবং আল্লাহ্র অনুগ্রহের অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে থাকবে?
وَ مَنۡ اَظۡلَمُ مِمَّنِ افۡتَرٰی عَلَی اللّٰہِ کَذِبًا اَوۡ کَذَّبَ بِالۡحَقِّ لَمَّا جَآءَہٗ ؕ اَلَیۡسَ فِیۡ جَہَنَّمَ مَثۡوًی لِّلۡکٰفِرِیۡنَ ﴿۶۸﴾
কানযুল ঈমান
৬৮. ওই ব্যক্তির চেয়ে অধিক যালিম কে, যে আল্লাহ্ সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা করে, অথবা সত্যকে অস্বীকার করে যখন তা তার নিকট আসে? কাফিরদের ঠিকানা কি জাহান্নামে নয়?
ইরফানুল কুরআন
৬৮. আর তার চেয়ে বড় যালিম আর কে, যে আল্লাহ্র প্রতি মিথ্যা অপবাদ আরোপ করে অথবা তার কাছে আগত সত্যকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করে? জাহান্নাম কি কাফেরদের (নির্ধারিত) ঠিকানা নয়?
وَ الَّذِیۡنَ جَاہَدُوۡا فِیۡنَا لَنَہۡدِیَنَّہُمۡ سُبُلَنَا ؕ وَ اِنَّ اللّٰہَ لَمَعَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿۶۹﴾
কানযুল ঈমান
৬৯. এবং যারা আমার পথে প্রচেষ্টা চালায় অবশ্য আমি তাদেরকে আপন রাস্তা দেখাবো; এবং নিশ্চয় আল্লাহ্ সৎকর্মপরায়ণদের সাথে আছেন।
ইরফানুল কুরআন
৬৯. আর যারা আমাদের জন্যে কঠোর সাধনায় (ও নাফসের সাথে তীব্র সংগ্রামে) আত্মনিয়োগ করে, তবে আমরা অবশ্যই তাদেরকে আমাদের (দিকে চলার এবং পৌঁছার) পথ দেখিয়ে দেই। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ আধ্যাত্নিক উৎকর্ষতাপ্রাপ্ত লোকদেরকে আপন সাহচর্য প্রদান করে ধন্য করেন।