بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
কানযুল ঈমান
০. আল্লাহ্র নামে আরম্ভ, যিনি পরম দয়ালু, করুণাময় (১)
ইরফানুল কুরআন
০. আল্লাহর নামে শুরু, যিনি পরম করুণাময়, সতত অসীম দয়ালু।
سَبَّحَ لِلّٰہِ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ۚ وَ ہُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ ﴿۱﴾
কানযুল ঈমান
১. আল্লাহ্র পবিত্রতা ঘোষণা করে যা কিছু আস্মানগুলো ও যমীনে রয়েছে এবং তিনিই সম্মান ও প্রজ্ঞাময়।
ইরফানুল কুরআন
১. আল্লাহ্রই পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে যা কিছুই আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে রয়েছে। আর তিনি মহাসম্মানিত, প্রজ্ঞাবান।
لَہٗ مُلۡکُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ۚ یُحۡیٖ وَ یُمِیۡتُ ۚ وَ ہُوَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ ﴿۲﴾
কানযুল ঈমান
২. তাঁরই জন্য আস্মানসমূহ ও যমীনের বাদশাহী; জীবন দান করেন আর মৃত্যু ঘটান। এবং তিনি সবকিছু করতে পারেন।
ইরফানুল কুরআন
২. আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর রাজত্ব তাঁরই, তিনিই জীবন দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান। আর তিনি সর্ববিষয়ে ক্ষমতাবান।
ہُوَ الۡاَوَّلُ وَ الۡاٰخِرُ وَ الظَّاہِرُ وَ الۡبَاطِنُ ۚ وَ ہُوَ بِکُلِّ شَیۡءٍ عَلِیۡمٌ ﴿۳﴾
কানযুল ঈমান
৩. তিনিই প্রথম, তিনিই শেষ, তিনিই প্রকাশ্য, তিনিই গোপন এবং তিনিই সবকিছু জানেন।
ইরফানুল কুরআন
৩. তিনিই (সবকিছুর) প্রথম ও (সবকিছুর) শেষ এবং (নিজের শক্তিতে) প্রকাশমান এবং (নিজ সত্তার বিবেচনায়) অপ্রকাশমান। আর তিনি সর্ববিষয়ে সম্যক অবগত।
ہُوَ الَّذِیۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ فِیۡ سِتَّۃِ اَیَّامٍ ثُمَّ اسۡتَوٰی عَلَی الۡعَرۡشِ ؕ یَعۡلَمُ مَا یَلِجُ فِی الۡاَرۡضِ وَ مَا یَخۡرُجُ مِنۡہَا وَ مَا یَنۡزِلُ مِنَ السَّمَآءِ وَ مَا یَعۡرُجُ فِیۡہَا ؕ وَ ہُوَ مَعَکُمۡ اَیۡنَ مَا کُنۡتُمۡ ؕ وَ اللّٰہُ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ بَصِیۡرٌ ﴿۴﴾
কানযুল ঈমান
৪. তিনিই, যিনি আস্মানগুলো ও যমীনকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর আরশের উপর ‘ইস্তিওয়া’ ( ) ফরমায়েছেন (সমাসীন হয়েছেন) যেমনই তাঁর জন্য শোভা পায়। তিনি জানেন যা যমীনের ভিতরে প্রবেশ করে এবং যা তা থেকে বহির্গত হয়; আর যা আস্মান থেকে অবতীর্ণ হয় এবং যা তাতে আরোহণ করে। আর তিনি তোমাদের সাথে আছেন তোমরা যেখানেই থাকো না কেন। এবং আল্লাহ্ তোমাদের কর্ম দেখছেন।
ইরফানুল কুরআন
৪. তিনিই আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন ছয়টি আবর্তনে, অতঃপর সৃষ্টিজগতের ক্ষমতার মসনদে প্রকাশিত হয়েছেন (অর্থাৎ সমগ্র মহাবিশ্বকে তাঁর নির্দেশের মাধ্যমে শৃঙ্খলাবদ্ধ করেছেন)। তিনি জানেন যা কিছু ভূমিতে প্রবেশ করে ও যা কিছু তা থেকে বের হয় এবং যা কিছু আকাশ থেকে নেমে (বা বের হয়ে) আসে ও যা কিছু তাতে আরোহণ (বা প্রবেশ) করে। তোমরা যেখানেই থাকো না কেন, তিনি তোমাদের সাথেই আছেন। আর তোমরা যা কিছু করো আল্লাহ্ তা ভালোভাবেই দেখেন।
لَہٗ مُلۡکُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ وَ اِلَی اللّٰہِ تُرۡجَعُ الۡاُمُوۡرُ ﴿۵﴾
কানযুল ঈমান
৫. তাঁরই- আস্মানসমূহ ও যমীনের বাদশাহী এবং আল্লাহ্রই প্রতি সমস্ত কর্মের প্রত্যাবর্তন।
ইরফানুল কুরআন
৫. আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সকল রাজত্ব তাঁরই, আর তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে সকল কিছু।
یُوۡلِجُ الَّیۡلَ فِی النَّہَارِ وَ یُوۡلِجُ النَّہَارَ فِی الَّیۡلِ ؕ وَ ہُوَ عَلِیۡمٌۢ بِذَاتِ الصُّدُوۡرِ ﴿۶﴾
কানযুল ঈমান
৬. রাতকে দিনের অংশে নিয়ে আসেন এবং দিনকে রাতের অংশে আনেন এবং তিনি অন্তরগুলোর কথা জানেন।
ইরফানুল কুরআন
৬. তিনিই রাত্রিকে প্রবিষ্ট করান দিবসে এবং দিবসকে প্রবিষ্ট করান রাত্রিতে, আর তিনিই অন্তরের (লুকায়িত) বিষয়াদি সম্পর্কেও সম্যক অবগত।
اٰمِنُوۡا بِاللّٰہِ وَ رَسُوۡلِہٖ وَ اَنۡفِقُوۡا مِمَّا جَعَلَکُمۡ مُّسۡتَخۡلَفِیۡنَ فِیۡہِ ؕ فَالَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مِنۡکُمۡ وَ اَنۡفَقُوۡا لَہُمۡ اَجۡرٌ کَبِیۡرٌ ﴿۷﴾
কানযুল ঈমান
৭. আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের উপর ঈমান আনো এবং তাঁর পথে তারই কিছু ব্যয় করো, যার মধ্যে তোমাদেরকে অন্যান্যদের স্থলাভিষিক্ত করেছেন। সুতরাং যেসব লোক তোমাদের মধ্য থেকে ঈমান এনেছে এবং তাঁর পথে ব্যয় করেছে, তাদের জন্য মহা প্রতিদান রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৭. আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-এঁর প্রতি ঈমান আনয়ন করো এবং (সে সম্পদ) থেকে ব্যয় করো, তিনি তোমাদেরকে যার প্রতিনিধি (ও তত্ত্বাবধায়ক) করেছেন। অতঃপর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি ঈমান আনে এবং (তাঁর পথে) ব্যয় করে, তাদের জন্যে রয়েছে মহাপ্রতিদান।
وَ مَا لَکُمۡ لَا تُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰہِ ۚ وَ الرَّسُوۡلُ یَدۡعُوۡکُمۡ لِتُؤۡمِنُوۡا بِرَبِّکُمۡ وَ قَدۡ اَخَذَ مِیۡثَاقَکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ مُّؤۡمِنِیۡنَ ﴿۸﴾
কানযুল ঈমান
৮. এবং তোমাদের কি হয়েছে যে, আল্লাহ্র উপর ঈমান আনছো না? অথচ এ রসূল তোমাদেরকে আহ্বান করছেন যে, ‘আপন রবের উপর ঈমান আনো! এবং নিশ্চয় তিনি তোমাদের নিকট থেকে পূর্বেই অঙ্গীকার নিয়েছেন। যদি তোমাদের নিশ্চিত বিশ্বাস থাকে।
ইরফানুল কুরআন
৮. আর তোমাদের কী হলো যে, তোমরা আল্লাহ্র প্রতি ঈমান আনয়ন করো না? অথচ রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম) তোমাদেরকে আহ্বান করছেন যে, তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের প্রতি ঈমান আনয়ন করো এবং আল্লাহ্ তো তোমাদের থেকে সুদৃঢ় অঙ্গীকার গ্রহণ করেছেন; যদি তোমরা সত্যবাদী হও।
ہُوَ الَّذِیۡ یُنَزِّلُ عَلٰی عَبۡدِہٖۤ اٰیٰتٍۭ بَیِّنٰتٍ لِّیُخۡرِجَکُمۡ مِّنَ الظُّلُمٰتِ اِلَی النُّوۡرِ ؕ وَ اِنَّ اللّٰہَ بِکُمۡ لَرَءُوۡفٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۹﴾
কানযুল ঈমান
৯. তিনিই, যিনি আপন বান্দার উপর সুস্পষ্ট নিদর্শনাদি অবতীর্ণ করেন, যাতে তোমাদেরকে অন্ধকাররাশি থেকে আলোর দিকে নিয়ে যান। এবং নিশ্চয় নিশ্চয় আল্লাহ্ তোমাদের উপর দয়ার্দ্র, দয়ালু।
ইরফানুল কুরআন
৯. তিনিই তাঁর (সম্মানিত) বান্দার প্রতি সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী অবতীর্ণ করেন, যেন তিনি তোমাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করে আনতে পারেন। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তোমাদের প্রতি করুণাময়, অসীম দয়ালু।
وَ مَا لَکُمۡ اَلَّا تُنۡفِقُوۡا فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ وَ لِلّٰہِ مِیۡرَاثُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ لَا یَسۡتَوِیۡ مِنۡکُمۡ مَّنۡ اَنۡفَقَ مِنۡ قَبۡلِ الۡفَتۡحِ وَ قٰتَلَ ؕ اُولٰٓئِکَ اَعۡظَمُ دَرَجَۃً مِّنَ الَّذِیۡنَ اَنۡفَقُوۡا مِنۡۢ بَعۡدُ وَ قٰتَلُوۡا ؕ وَ کُلًّا وَّعَدَ اللّٰہُ الۡحُسۡنٰی ؕ وَ اللّٰہُ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ خَبِیۡرٌ ﴿۱۰﴾
কানযুল ঈমান
১০. এবং তোমাদের কি হলো যে, আল্লাহ্র পথে ব্যয় করছো না? অথচ আস্মানগুলো ও যমীনের মধ্যে সবকিছুর ‘ওয়ারিস’ (মালিক) আল্লাহ্ই। তোমাদের মধ্যে সমান নয় ওই সব লোক, যারা মক্কা বিজয়ের পূর্বে ব্যয় ও জিহাদ করেছে; তারা মর্যাদায় ওই সব লোক অপেক্ষা বড়, যারা বিজয়ের পর ব্যয় ও জিহাদ করেছে এবং তাদের সবার সাথে আল্লাহ্ জান্নাতের ওয়াদা করেছেন এবং আল্লাহ্ তোমাদের কৃত কর্মগুলো সম্পর্কে অবহিত আছেন।
ইরফানুল কুরআন
১০. আর তোমাদের কী হলো যে, তোমরা আল্লাহ্র পথে ব্যয় করো না, অথচ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সমস্ত রাজত্ব আল্লাহ্রই (তোমরা তো কেবল সেই মালিকের প্রতিনিধি।) তোমাদের মধ্যে যারা (মক্কা) বিজয়ের পূর্বে (নিজের সম্পদ আল্লাহ্র পথে) ব্যয় করেছে এবং যুদ্ধ করেছে, তাঁরা (এবং তোমরা) সমান হতে পারো না। তাঁরা মর্যাদায় অনেক উচ্চ স্তরে তাদের চেয়ে যারা পরবর্তীকালে সম্পদ ব্যয় করেছে ও যুদ্ধ করেছে। তবে আল্লাহ্ সবাইকে পরকালের কল্যাণের (অর্থাৎ জান্নাতের) অঙ্গীকার করেছেন। আর তোমরা যা কিছু করছো আল্লাহ্ তা সম্পর্কে সম্যক অবগত।
مَنۡ ذَا الَّذِیۡ یُقۡرِضُ اللّٰہَ قَرۡضًا حَسَنًا فَیُضٰعِفَہٗ لَہٗ وَ لَہٗۤ اَجۡرٌ کَرِیۡمٌ ﴿ۚ۱۱﴾
কানযুল ঈমান
১১. কে আছে, যে আল্লাহ্কে কর্জ দেবে উত্তম কর্জ? তাহলে, তিনি তার জন্য দ্বিগুণ করবেন এবং তার জন্য সম্মানজনক প্রতিদান রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
১১. কে আছে যে উত্তম ঋণের আকারে আল্লাহ্কে ঋণ প্রদান করবে? তবে তিনি তার জন্যে এটি বহুগুণে বৃদ্ধি করে দেবেন এবং তার জন্যে রয়েছে মর্যাদাবান মহাপুরস্কার।
یَوۡمَ تَرَی الۡمُؤۡمِنِیۡنَ وَ الۡمُؤۡمِنٰتِ یَسۡعٰی نُوۡرُہُمۡ بَیۡنَ اَیۡدِیۡہِمۡ وَ بِاَیۡمَانِہِمۡ بُشۡرٰىکُمُ الۡیَوۡمَ جَنّٰتٌ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہَا الۡاَنۡہٰرُ خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَا ؕ ذٰلِکَ ہُوَ الۡفَوۡزُ الۡعَظِیۡمُ ﴿ۚ۱۲﴾
কানযুল ঈমান
১২. যে দিন আপনি ঈমানদার পুরুষগণ ও ঈমানদার নারীদেরকে দেখবেন যে, তাদের আলো রয়েছে তাদের সম্মুখে ও তাদের ডানে, ছুটাছুটি করছে। তাদের উদ্দেশ্যে বলা হচ্ছে, ‘আজ তোমাদের সর্বাপেক্ষা খুশির বার্তা হচ্ছে ওই সব জান্নাত, যেগুলোর পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহমান। তোমরা সেখানে স্থায়ীভাবে থাকো। এটাই হচ্ছে মহা সাফল্য।
ইরফানুল কুরআন
১২. (হে হাবীব!) যে দিন আপনি দেখবেন (আপনার উম্মতের) মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে, তাদের সম্মুখভাগে এবং ডানপাশে তাদের জ্যোতি ছুটোছুটি করছে (তখন তাদেরকে বলা হবে), ‘সুসংবাদ তোমাদের জন্যে, আজ (তোমাদের জন্যে) রয়েছে জান্নাত যার তলদেশ দিয়ে স্রোতধারা প্রবাহিত, (তোমরা) এতে চিরকাল অবস্থান করবে। এটিই মহাসাফল্য।’
یَوۡمَ یَقُوۡلُ الۡمُنٰفِقُوۡنَ وَ الۡمُنٰفِقٰتُ لِلَّذِیۡنَ اٰمَنُوا انۡظُرُوۡنَا نَقۡتَبِسۡ مِنۡ نُّوۡرِکُمۡ ۚ قِیۡلَ ارۡجِعُوۡا وَرَآءَکُمۡ فَالۡتَمِسُوۡا نُوۡرًا ؕ فَضُرِبَ بَیۡنَہُمۡ بِسُوۡرٍ لَّہٗ بَابٌ ؕ بَاطِنُہٗ فِیۡہِ الرَّحۡمَۃُ وَ ظَاہِرُہٗ مِنۡ قِبَلِہِ الۡعَذَابُ ﴿ؕ۱۳﴾
কানযুল ঈমান
১৩. যেদিন মুনাফিক্ব পুরুষ ও মুনাফিক্ব নারীরা মুসলমানদেরকে বলবে, ‘আমাদের দিকে একবার তাকাও! যাতে আমরা তোমাদের নূর থেকে কিছু অংশ নিই’। তাদেরকে বলা হবে, ‘তোমাদের পেছনের দিকে ফিরে যাও, সেখানে আলো অন্বেষণ করো’। তারা ফিরে যাবে। তখনই তাদের মধ্যখানে একটা প্রাচীর খাড়া করে দেওয়া হবে, যাতে একটি দরজা থাকবে এবং সেটা ভিতরের দিকে রহমত এবং সেটার বাইরের দিকে শাস্তি।
ইরফানুল কুরআন
১৩. যে দিন মুনাফিক পুরুষ ও মুনাফিক নারী ঈমানদারগণকে বলবে, ‘আমাদের দিকে একটু (বিবেচনার) দৃষ্টি দাও, আমরা তোমাদের জ্যোতি থেকে কিছু জ্যোতি নেই’। তাদেরকে বলা হবে, ‘তোমরা পশ্চাতে ফিরে যাও এবং (সেখানে গিয়ে) জ্যোতি অন্বেষণ করো (যেখানে তোমরা জ্যোতি অস্বীকার করতে)। অতঃপর তাদের মাঝে দাঁড় করানো হবে এক প্রাচীর, যাতে থাকবে একটি দরোজা। এর অভ্যন্তরে থাকবে রহমত এবং এর বহির্ভাগে থাকবে শাস্তি।
یُنَادُوۡنَہُمۡ اَلَمۡ نَکُنۡ مَّعَکُمۡ ؕ قَالُوۡا بَلٰی وَ لٰکِنَّکُمۡ فَتَنۡتُمۡ اَنۡفُسَکُمۡ وَ تَرَبَّصۡتُمۡ وَ ارۡتَبۡتُمۡ وَ غَرَّتۡکُمُ الۡاَمَانِیُّ حَتّٰی جَآءَ اَمۡرُ اللّٰہِ وَ غَرَّکُمۡ بِاللّٰہِ الۡغَرُوۡرُ ﴿۱۴﴾
কানযুল ঈমান
১৪. মুনাফিক্বগণ মুসলমানদেরকে ডেকে বলবে, ‘আমরা কি তোমাদের সাথে ছিলাম না?’ তারা বলবে, ‘কেন নয়! (হাঁ,) কিন্তু তোমরা তো নিজেদের আত্নাগুলোকে ফিতনার মধ্যে নিক্ষেপ করেছো এবং মুসলমানদের অনিষ্টের দিকে তাকিয়ে থাকতে এবং সন্দেহ করতে; আর মিথ্যা লিপ্সা তোমাদেরকে ধোকা দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ্র আদেশ এসে পড়েছে। এবং তোমাদেরকে আল্লাহ্র নির্দেশ সম্বন্ধে ওই বড় প্রতাঁরক প্রতারিত করে রেখেছে’।
ইরফানুল কুরআন
১৪. এরা (মুনাফিকেরা) ওইসব মুমিনকে ডেকে জিজ্ঞেস করবে, ‘আমরা কি (পৃথিবীতে) তোমাদের সাথে ছিলাম না?’ তারা বলবে, ‘হাঁ! কিন্তু তোমরা নিজেরাই নিজেদেরকে (কপটতায়) বিপদগ্রস্ত করেছো; আর তোমরা (আমাদের দুর্দশা ও ধ্বংসের জন্যে) প্রতীক্ষা করতে এবং সন্দেহ পোষণ করতে (মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের নবুওয়াত ও ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে)। তোমাদের অলিক আকাঙ্ক্ষা তোমাদেরকে মোহাচ্ছন্ন করে রেখেছিল যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহ্র নির্দেশ (মৃত্যু) এসে পৌঁছলো। আর তোমাদেরকে আল্লাহ্ সম্পর্কে প্রতারক (শয়তান) ধোঁকা দিতো।
فَالۡیَوۡمَ لَا یُؤۡخَذُ مِنۡکُمۡ فِدۡیَۃٌ وَّ لَا مِنَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا ؕ مَاۡوٰىکُمُ النَّارُ ؕ ہِیَ مَوۡلٰىکُمۡ ؕ وَ بِئۡسَ الۡمَصِیۡرُ ﴿۱۵﴾
কানযুল ঈমান
১৫. ‘সুতরাং আজ না তোমাদের নিকট থেকে মুক্তিপণ গ্রহণ করা হবে এবং না প্রকাশ্য কাফিরদের নিকট থেকে। তোমাদের ঠিকানা হচ্ছে আগুন। তা তোমাদের সাথী এবং কতই মন্দ পরিণতি!
ইরফানুল কুরআন
১৫. অতঃপর আজকের দিনে (হে মুনাফিকেরা!), তোমাদের নিকট থেকে কোনো মুক্তিপণ গ্রহণ করা হবে না এবং যারা কুফরী করেছিল তাদের থেকেও নয়। জাহান্নামই তোমাদের (সকলের) ঠিকানা, আর এ (ঠিকানা) তোমাদের মাওলা (অর্থাৎ সঙ্গী)। আর কতোই না নিকৃষ্ট এ স্থান। (কেননা তোমরা তাদেরকে মাওলা মানতে অস্বীকার করেছিলে যাদের থেকে তোমাদের ঈমানের জ্যোতি এবং ক্ষমা লাভ হওয়ার কথা ছিলো।)
اَلَمۡ یَاۡنِ لِلَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَنۡ تَخۡشَعَ قُلُوۡبُہُمۡ لِذِکۡرِ اللّٰہِ وَ مَا نَزَلَ مِنَ الۡحَقِّ ۙ وَ لَا یَکُوۡنُوۡا کَالَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡکِتٰبَ مِنۡ قَبۡلُ فَطَالَ عَلَیۡہِمُ الۡاَمَدُ فَقَسَتۡ قُلُوۡبُہُمۡ ؕ وَ کَثِیۡرٌ مِّنۡہُمۡ فٰسِقُوۡنَ ﴿۱۶﴾
কানযুল ঈমান
১৬. ঈমানদারদের জন্য কি এখনো ওই সময় আসেনি যে, তাদের অন্তর ঝুকে পড়বে আল্লাহ্র স্মরণ ও ওই সত্যের জন্য, যা অবতীর্ণ হয়েছে? এবং তাদের মতো হয়ো না, যাদেরকে পূর্বে কিতাব দেওয়া হয়েছে, অতঃপর তাদের সময়সীমা দীর্ঘায়িত হয়েছে। সুতরাং তাদের অন্তর কঠিন হয়ে গেছে এবং তাদের মধ্যে অনেকে ফাসিক্ব।
ইরফানুল কুরআন
১৬. ঈমানদারদের জন্যে কি (এখনো) সে সময় আসেনি যে, তাদের অন্তর বিগলিত হবে আল্লাহ্র স্মরণে এবং যে সত্য অবতীর্ণ হয়েছে তার কারণে? আর তাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছিল তাদের মতো যেন না হয়, সুদীর্ঘ সময় অতিবাহিত হবার পর তাদের অন্তর কঠিন হয়ে গিয়েছিল। আর তাদের অধিকাংশই ছিল নাফরমান।
اِعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰہَ یُحۡیِ الۡاَرۡضَ بَعۡدَ مَوۡتِہَا ؕ قَدۡ بَیَّنَّا لَکُمُ الۡاٰیٰتِ لَعَلَّکُمۡ تَعۡقِلُوۡنَ ﴿۱۷﴾
কানযুল ঈমান
১৭. জেনে রেখো, আল্লাহ্ যমীনকে জীবিত করেন সেটার মৃত্যুর পর। নিশ্চয় আমি তোমাদের জন্য নিদর্শনগুলো বিবৃত করেছি যেন তোমাদের বুঝ হয়।
ইরফানুল কুরআন
১৭. জেনে রাখো, আল্লাহ্ই পৃথিবীকে তার মৃত অবস্থার পর পুনর্জীবিত করেন। আর নিশ্চয়ই আমরা তোমাদের জন্যে নিদর্শনগুলো সুস্পষ্টরূপে ব্যক্ত করেছি যাতে তোমরা বুদ্ধি-বিবেচনার মাধ্যমে কাজ করো।
اِنَّ الۡمُصَّدِّقِیۡنَ وَ الۡمُصَّدِّقٰتِ وَ اَقۡرَضُوا اللّٰہَ قَرۡضًا حَسَنًا یُّضٰعَفُ لَہُمۡ وَ لَہُمۡ اَجۡرٌ کَرِیۡمٌ ﴿۱۸﴾
কানযুল ঈমান
১৮. নিশ্চয় সাদক্বাহদাতা পুরুষ ও সাদকাহদাত্রী নারীগণ এবং তারাই, যারা আল্লাহ্কে উত্তম কর্জ দিয়েছে, তাদের জন্য দ্বিগুণ রয়েছে এবং তাদের জন্য সম্মানজনক প্রতিদান রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
১৮. নিশ্চয়ই দানশীল পুরুষ এবং দানশীল নারী এবং যারা আল্লাহ্কে উত্তমরূপে ধার দেয়, তাদের (সাদকাহ ও কর্যের প্রতিদান) বহুগুণ বৃদ্ধি করা হবে। আর তাদের জন্যে থাকবে মহাসম্মানজনক পুরস্কার।
وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا بِاللّٰہِ وَ رُسُلِہٖۤ اُولٰٓئِکَ ہُمُ الصِّدِّیۡقُوۡنَ ٭ۖ وَ الشُّہَدَآءُ عِنۡدَ رَبِّہِمۡ ؕ لَہُمۡ اَجۡرُہُمۡ وَ نُوۡرُہُمۡ ؕ وَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا وَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَاۤ اُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ الۡجَحِیۡمِ ﴿۱۹﴾
কানযুল ঈমান
১৯. এবং তারাই, যারা আল্লাহ্ ও তাঁর সমস্ত রসূলের উপর ঈমান এনেছে তারাই হচ্ছে পূর্ণ সত্যবাদী এবং অন্যান্যদের উপর সাক্ষী আপন রবের নিকট। তাদের জন্য তাদের পুরস্কার এবং তাদের আলো রয়েছে। আর যারা কুফর করেছে এবং আমার আয়াতগুলোকে অস্বীকার করেছে তারা দোযখবাসী।
ইরফানুল কুরআন
১৯. আর যারা আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান আনে, তারাই তাদের প্রতিপালকের নিকট সিদ্দীক (সেরা সত্যবাদী) এবং শহীদ (বিশ্বস্ত সাক্ষী)। তাদের জন্যে রয়েছে প্রতিদান ও জ্যোতি। আরা যারা কুফরী করেছে এবং আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছে, তারাই জাহান্নামের অধিবাসী।
اِعۡلَمُوۡۤا اَنَّمَا الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَا لَعِبٌ وَّ لَہۡوٌ وَّ زِیۡنَۃٌ وَّ تَفَاخُرٌۢ بَیۡنَکُمۡ وَ تَکَاثُرٌ فِی الۡاَمۡوَالِ وَ الۡاَوۡلَادِ ؕ کَمَثَلِ غَیۡثٍ اَعۡجَبَ الۡکُفَّارَ نَبَاتُہٗ ثُمَّ یَہِیۡجُ فَتَرٰىہُ مُصۡفَرًّا ثُمَّ یَکُوۡنُ حُطَامًا ؕ وَ فِی الۡاٰخِرَۃِ عَذَابٌ شَدِیۡدٌ ۙ وَّ مَغۡفِرَۃٌ مِّنَ اللّٰہِ وَ رِضۡوَانٌ ؕ وَ مَا الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَاۤ اِلَّا مَتَاعُ الۡغُرُوۡرِ ﴿۲۰﴾
কানযুল ঈমান
২০. জেনে রাখো, দুনিয়ার যিন্দেগী তো নয়, কিন্তু খেলাধুলা, সাজসজ্জা, তোমাদের পরস্পরের মধ্যে গর্ব প্রদর্শন করা এবং সম্পদ ও সন্তান সন্ততিতে একে অপরের চেয়ে অধিক চাওয়া মাত্র; তা ওই বৃষ্টির ন্যায় যার উৎপন্ন শস্য কৃষকদেরকে চমৎকৃত করেছে, অতঃপর শুষ্ক হয়ে গেছে, ফলে তুমি সেটাকে হলদে বর্ণের দেখতে পেয়েছো, অতঃপর তা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গেছে। আর আখিরাতে কঠিন শাস্তি রয়েছে এবং আল্লাহ্র নিকট ক্ষমা ও তাঁর সন্তুষ্টি। এবং পার্থিব জীবন তো নয়, কিন্তু ধোকার সামগ্রী।
ইরফানুল কুরআন
২০. জেনে রাখো, পার্থিব জীবন কেবল ক্রীড়া-কৌতুক, বাহ্যিক সাজ-সজ্জা, পারস্পরিক অহমিকা ও আত্ম-প্রশংসা এবং একে অপরের উপর ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে প্রাচুর্য লাভের অন্বেষণ ব্যতীত কিছুই নয়। এর দৃষ্টান্ত বৃষ্টির ন্যায় যা দ্বারা উৎপন্ন শস্য-সম্ভার কৃষককে চমৎকৃত করে। অতঃপর তা শুকিয়ে যায়, ফলে তুমি তা পীতবর্ণ দেখতে পাও, অবশেষে তা খড়-কুটায় পরিণত হয়। আর পরকালে (নাফরমানদের জন্যে) রয়েছে কঠিন শাস্তি এবং (অনুগতদের জন্যে) রয়েছে আল্লাহ্র পক্ষ থেকে ক্ষমা ও মহা-সন্তুষ্টি। আর পার্থিব জীবন প্রতারণার সামগ্রী ছাড়া কিছুই নয়।
سَابِقُوۡۤا اِلٰی مَغۡفِرَۃٍ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ وَ جَنَّۃٍ عَرۡضُہَا کَعَرۡضِ السَّمَآءِ وَ الۡاَرۡضِ ۙ اُعِدَّتۡ لِلَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا بِاللّٰہِ وَ رُسُلِہٖ ؕ ذٰلِکَ فَضۡلُ اللّٰہِ یُؤۡتِیۡہِ مَنۡ یَّشَآءُ ؕ وَ اللّٰہُ ذُو الۡفَضۡلِ الۡعَظِیۡمِ ﴿۲۱﴾
কানযুল ঈমান
২১. অগ্রবর্তী হয়ে চলো আপন রবের ক্ষমা এবং ওই জান্নাতের দিকে, যার প্রশস্ততা হচ্ছে যেমন আস্মান ও যমীনের (সম্মিলিত) বিস্তৃতি; প্রস্তুত রাখা হয়েছে তাদের জন্য, যারা আল্লাহ্ ও তাঁর সমস্ত রসূলের উপর ঈমান এনেছে। এটা আল্লাহ্র অনুগ্রহ যাকে চান দান করেন। এবং আল্লাহ্ মহা অনুগ্রহশীল।
ইরফানুল কুরআন
২১. (হে বান্দাগণ!) তোমরা অগ্রে ধাবিত হও তোমাদের প্রতিপালকের ক্ষমা এবং জান্নাতের দিকে, যার প্রশস্ততা আসমান ও জমিনের মতো প্রশস্ত, যা প্রস্তুত করা হয়েছে তাদের জন্যে যারা আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে। এটি আল্লাহ্র অনুগ্রহ, তিনি যাকে ইচ্ছা তা দান করেন। আর আল্লাহ্ মহাঅনুগ্রহশীল।
مَاۤ اَصَابَ مِنۡ مُّصِیۡبَۃٍ فِی الۡاَرۡضِ وَ لَا فِیۡۤ اَنۡفُسِکُمۡ اِلَّا فِیۡ کِتٰبٍ مِّنۡ قَبۡلِ اَنۡ نَّبۡرَاَہَا ؕ اِنَّ ذٰلِکَ عَلَی اللّٰہِ یَسِیۡرٌ ﴿ۚۖ۲۲﴾
কানযুল ঈমান
২২. পৌঁছে না কোন মুসীবত পৃথিবীতে এবং না তোমাদের নিজেদের প্রাণগুলোতে, কিন্তু তা একটা কিতাবের মধ্যে রয়েছে, এরই পূর্বে যে, সেটাকে আমি সৃষ্টি করি। নিশ্চয় এটা আল্লাহ্র জন্য সহজ;
ইরফানুল কুরআন
২২. পৃথিবীতে এবং তোমাদের ব্যক্তিগত জীবনে যে কোনো বিপদই আসে, আমরা সংঘটিত করার পূর্বেই তা লিপিবদ্ধ থাকে এক কিতাবে (অর্থাৎ লাওহে মাহফুজে, যা আল্লাহ্র চিরন্তন জ্ঞানের স্তর)। নিশ্চয়ই এ (সব কিছু পরিবেষ্টন ও পরিপূর্ণ জ্ঞান) আল্লাহ্র পক্ষে খুবই সহজ,
لِّکَیۡلَا تَاۡسَوۡا عَلٰی مَا فَاتَکُمۡ وَ لَا تَفۡرَحُوۡا بِمَاۤ اٰتٰىکُمۡ ؕ وَ اللّٰہُ لَا یُحِبُّ کُلَّ مُخۡتَالٍ فَخُوۡرِۣ ﴿ۙ۲۳﴾
কানযুল ঈমান
২৩. এ জন্য যে, দুঃখ না করো সেটার উপর, যা হাতছাড়া হয় এবং খুশী না হও সেটার উপর, যা তোমাদেরকে প্রদান করেছেন। এবং আল্লাহ্ পছন্দ করেন না কোন দাম্ভিক, অহঙ্কারীকে;
ইরফানুল কুরআন
২৩. যাতে তোমরা সেসব বিষয়ে বিমর্ষ না হও যা তোমাদের হাতছাড়া হয়ে যায় এবং তাতে গর্বে উল্লসিত না হও যা তিনি তোমাদেরকে দিয়েছেন। আর আল্লাহ্ কোনো উদ্ধত, অহঙ্কারীকে পছন্দ করেন না-
الَّذِیۡنَ یَبۡخَلُوۡنَ وَ یَاۡمُرُوۡنَ النَّاسَ بِالۡبُخۡلِ ؕ وَ مَنۡ یَّتَوَلَّ فَاِنَّ اللّٰہَ ہُوَ الۡغَنِیُّ الۡحَمِیۡدُ ﴿۲۴﴾
কানযুল ঈমান
২৪. ওই সমস্ত লোক, যারা নিজেরাই কার্পণ্য করে এবং অন্যান্যদেরকেও কার্পণ্য করতে বলে আর যারা মুখ ফিরিয়ে নেয়; তবে নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ই অভাবমুক্ত, সমস্ত প্রশংসায় প্রশংসিত।
ইরফানুল কুরআন
২৪. যারা (নিজেরা) কার্পণ্য করে ও (অপরাপর) মানুষকেও কার্পণ্যের নির্দেশ দেয় এবং যে (আল্লাহ্র নির্দেশ থেকে) মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ্(ই) স্বয়ংসম্পূর্ণ, স্তুতির অধিকারী।
لَقَدۡ اَرۡسَلۡنَا رُسُلَنَا بِالۡبَیِّنٰتِ وَ اَنۡزَلۡنَا مَعَہُمُ الۡکِتٰبَ وَ الۡمِیۡزَانَ لِیَقُوۡمَ النَّاسُ بِالۡقِسۡطِ ۚ وَ اَنۡزَلۡنَا الۡحَدِیۡدَ فِیۡہِ بَاۡسٌ شَدِیۡدٌ وَّ مَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَ لِیَعۡلَمَ اللّٰہُ مَنۡ یَّنۡصُرُہٗ وَ رُسُلَہٗ بِالۡغَیۡبِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ قَوِیٌّ عَزِیۡزٌ ﴿۲۵﴾
কানযুল ঈমান
২৫. নিশ্চয় আমি আপন রসূলগণকে প্রমাণাদি সহকারে প্রেরণ করেছি এবং তাদের সাথে কিতাব ও ন্যায় বিচারের পরিমাপযন্ত্র অবতীর্ণ করেছি, যাতে লোকেরা ন্যায় বিচারের উপর প্রতিষ্ঠিত হয় এবং আমি লোহা অবতীর্ণ করেছি, যাতে ভীষণ শক্তি ও মানবকুলের উপকারসমূহ রয়েছে। এবং এ জন্য যে, আল্লাহ্ দেখবেন তাকেই, যে না দেখে তাঁকে ও তাঁর রসূলগণকে সাহায্য করে। নিশ্চয় আল্লাহ্ ক্ষমতাবান, পরাক্রমশালী।
ইরফানুল কুরআন
২৫.নিশ্চয়ই আমরা আমাদের রাসূলগণকে সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী সহ প্রেরণ করেছি এবং তাদের সাথে অবতীর্ণ করেছি কিতাব ও ন্যায়নীতি, যাতে মানুষ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করে। আর আমরা (খনিজ সম্পদ থেকে) লৌহও সরবরাহ করেছি; এতে রয়েছে (যুদ্ধাস্ত্র ও প্রতিরক্ষার জন্যে) প্রচন্ড শক্তি এবং মানুষের জন্যে (শিল্পোন্নয়নে অপরাপর কতিপয়) উপকারিতা। আর (তা এ জন্যে যে,) যাতে আল্লাহ্ প্রকাশ করে দেন কে তাঁকে এবং তাঁর রাসূলগণকে (ইসলাম ধর্ম) প্রত্যক্ষ না করেই সাহায্য করে। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ (স্বয়ং) শক্তিধর, আধিপত্যশীল।
وَ لَقَدۡ اَرۡسَلۡنَا نُوۡحًا وَّ اِبۡرٰہِیۡمَ وَ جَعَلۡنَا فِیۡ ذُرِّیَّتِہِمَا النُّبُوَّۃَ وَ الۡکِتٰبَ فَمِنۡہُمۡ مُّہۡتَدٍ ۚ وَ کَثِیۡرٌ مِّنۡہُمۡ فٰسِقُوۡنَ ﴿۲۶﴾
কানযুল ঈমান
২৬. এবং নিশ্চয় আমি নূহ ও ইব্রাহীমকে প্রেরণ করেছি এবং তাদের সন্তানদের মধ্যে নুবূয়ত ও কিতাব রেখেছি। সুতরাং তাদের মধ্যে কেউ সঠিক পথের উপর এসেছে এবং তাদের মধ্যে অনেকে ফাসিক্ব।
ইরফানুল কুরআন
২৬. আর নিশ্চয়ই আমরা নূহ এবং ইবরাহীম (আলাইহিমাস সালাম)-কে প্রেরণ করেছিলাম এবং উভয়ের বংশধরদের মাঝে রিসালাত এবং কিতাব স্থির করেছিলাম। অতঃপর তাদের মধ্যে (অল্পসংখ্যক) হেদায়াতপ্রাপ্ত হয়েছে এবং তাদের অধিকাংশই হয়েছে নাফরমান।
ثُمَّ قَفَّیۡنَا عَلٰۤی اٰثَارِہِمۡ بِرُسُلِنَا وَ قَفَّیۡنَا بِعِیۡسَی ابۡنِ مَرۡیَمَ وَ اٰتَیۡنٰہُ الۡاِنۡجِیۡلَ ۬ۙ وَ جَعَلۡنَا فِیۡ قُلُوۡبِ الَّذِیۡنَ اتَّبَعُوۡہُ رَاۡفَۃً وَّ رَحۡمَۃً ؕ وَ رَہۡبَانِیَّۃَۨ ابۡتَدَعُوۡہَا مَا کَتَبۡنٰہَا عَلَیۡہِمۡ اِلَّا ابۡتِغَآءَ رِضۡوَانِ اللّٰہِ فَمَا رَعَوۡہَا حَقَّ رِعَایَتِہَا ۚ فَاٰتَیۡنَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مِنۡہُمۡ اَجۡرَہُمۡ ۚ وَ کَثِیۡرٌ مِّنۡہُمۡ فٰسِقُوۡنَ ﴿۲۷﴾
কানযুল ঈমান
২৭. অতপর আমি তাদের পেছনে ও পথের উপর স্বীয় অন্যান্য রসূলকে প্রেরণ করেছি এবং তাদের পেছনে মরিয়ম-তনয় ঈসাকে প্রেরণ করেছি এবং তাকে ইন্জীল দান করেছি; আর তাঁর অনুসারীদের অন্তরে নম্রতা ও দয়া রেখেছি। এবং বৈরাগী হওয়া- এ বিষয়টা তো তারা ধর্মের মধ্যে নিজেদের নিকট থেকে আবিষ্কার করেছে, আমি তাদের উপর বিধিবদ্ধ করি না; হাঁ এ ‘নব আবিষ্কার’ ( ) তারা আল্লাহ্র সন্তুষ্টি চাওয়ার জন্য করেছিলো, অতঃপর সেটাও পালন করা কর্তব্য ছিলো। সুতরাং তাদের মধ্যেকার ঈমানদারদেকে আমি তাদের পুরস্কার দান করেছি। এবং তাদের মধ্যে অনেকেই ফাসিক্ব।
ইরফানুল কুরআন
২৭. অতঃপর আমরা এ রাসূলগণের পদচিহ্ন অনুসরণে প্রেরণ করেছি (অন্যান্য) রাসূলগণকে, তাঁদের অনুগামী করেছি মারইয়াম তনয় ঈসা (আলাইহিমাস সালাম)-কে, এবং তাঁকে প্রদান করেছি ইঞ্জিল। আর আমরা তাঁর (সত্যিকারের) অনুসারীদের অন্তরে স্থাপন করেছি মমতা ও অনুগ্রহ। আর ‘রাহবানিয়্যাত’ (বৈরাগ্য অর্থাৎ আল্লাহ্র ইবাদতের জন্যে দুনিয়াদারী পরিহার করা এবং ভোগ-বিলাস থেকে দূরে থাকার) এ বিদআত তো তারা নিজেরা উদ্ভাবন করেছে, এটি আমরা তাদের উপর আবশ্যক করিনি। কিন্তু (তারা ‘(বৈরাগ্যবাদ’-এর এ বিদআত) কেবল আল্লাহ্র সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যে (শুরু করেছিল)। অতঃপর কার্যত এর রক্ষণাবেক্ষণের যেটুকু প্রয়োজন ছিল, তারা এর সেটুকুও সংরক্ষণ করেনি। (অর্থাৎ একে তার চেতনা ও নিয়মানুবর্তিতার সাথে বহাল রাখেনি।) সুতরাং আমরা তাদেরকে তাদের প্রতিদান ও পুরস্কার প্রদান করেছি, তাদের মধ্যে যারা ঈমানদার (এবং ‘রাহবানিয়্যাত’-এর বিদআতকে আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্যে চালু রেখে ছিল)। তাদের অধিকাংশই (যারা তা পরিহার করেছে এবং বদলে গিয়েছে তারা) নাফরমান।
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللّٰہَ وَ اٰمِنُوۡا بِرَسُوۡلِہٖ یُؤۡتِکُمۡ کِفۡلَیۡنِ مِنۡ رَّحۡمَتِہٖ وَ یَجۡعَلۡ لَّکُمۡ نُوۡرًا تَمۡشُوۡنَ بِہٖ وَ یَغۡفِرۡ لَکُمۡ ؕ وَ اللّٰہُ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿ۚۙ۲۸﴾
কানযুল ঈমান
২৮. হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ্কে ভয় করো এবং তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান আনো। তিনি আপন করুণায় দু’টি অংশ তোমাদেরকে দান করবেন। এবং তোমাদের জন্য জ্যোতি সৃষ্টি করবেন যার মধ্যে তোমরা চলবে এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করে দেবন। আর আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, দয়ালু;
ইরফানুল কুরআন
২৮. হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় করো এবং বিশ্বাস স্থাপন করো তাঁর (সম্মানিত) রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-এঁর প্রতি। তিনি তোমাদেরকে নিজ রহমতের দুই অংশ প্রদান করবেন, তোমাদেরকে দেবেন জ্যোতি যার দ্বারা তোমরা (দুনিয়া ও আখেরাতে) চলতে পারবে এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন। আর আল্লাহ্ মহাক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
لِّئَلَّا یَعۡلَمَ اَہۡلُ الۡکِتٰبِ اَلَّا یَقۡدِرُوۡنَ عَلٰی شَیۡءٍ مِّنۡ فَضۡلِ اللّٰہِ وَ اَنَّ الۡفَضۡلَ بِیَدِ اللّٰہِ یُؤۡتِیۡہِ مَنۡ یَّشَآءُ ؕ وَ اللّٰہُ ذُو الۡفَضۡلِ الۡعَظِیۡمِ ﴿۲۹﴾
কানযুল ঈমান
২৯. এটা এ জন্য যে, কিতাবধারী কাফিরগণ জেনে নেবে যে, আল্লাহ্র অনুগ্রহের উপর তাদের কোন ক্ষমতা নেই এবং এও যে, অনুগ্রহ আল্লাহ্রই হাতে, দান করেন যাকে চান! এবং আল্লাহ্ বড় অনুগ্রহশীল।
ইরফানুল কুরআন
২৯. (এ বর্ণনা এজন্যে যে,) আহলে কিতাবগণ যেন জানতে পারে যে, তারা আল্লাহ্র অনুগ্রহের উপর কোনো ক্ষমতা রাখে না এবং (এ) যে, আল্লাহ্র কুদরতী হাতেই সকল অনুগ্রহ, তিনি যাকে ইচ্ছা তা দান করেন। আর আল্লাহ্ অনুগ্রহশীল, মহান।