بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
কানযুল ঈমান
০. আল্লাহ্র নামে আরম্ভ, যিনি পরম দয়ালু, করুণাময় (১)
ইরফানুল কুরআন
০. আল্লাহর নামে শুরু, যিনি পরম করুণাময়, সতত অসীম দয়ালু।
یٰۤاَیُّہَا النَّاسُ اتَّقُوۡا رَبَّکُمۡ ۚ اِنَّ زَلۡزَلَۃَ السَّاعَۃِ شَیۡءٌ عَظِیۡمٌ ﴿۱﴾
কানযুল ঈমান
১. হে মানবজাতি! আপন রবকে ভয় করো; নিশ্চয় ক্বিয়ামতের প্রকম্পন অতি ভয়ঙ্কর বস্তু।
ইরফানুল কুরআন
১. হে মানবজাতি! তোমাদের প্রতিপালককে ভয় করতে থাকো। নিশ্চয়ই কিয়ামতের প্রকম্পন খুবই ভয়ানক ব্যাপার।
یَوۡمَ تَرَوۡنَہَا تَذۡہَلُ کُلُّ مُرۡضِعَۃٍ عَمَّاۤ اَرۡضَعَتۡ وَ تَضَعُ کُلُّ ذَاتِ حَمۡلٍ حَمۡلَہَا وَ تَرَی النَّاسَ سُکٰرٰی وَ مَا ہُمۡ بِسُکٰرٰی وَ لٰکِنَّ عَذَابَ اللّٰہِ شَدِیۡدٌ ﴿۲﴾
কানযুল ঈমান
২. যে দিন তোমরা তা প্রত্যক্ষ করবে, প্রত্যেক স্তন্যদাত্রী আপন দুগ্ধপায়ী শিশুকে ভুলে যাবে এবং প্রত্যেক গর্ভবতী তার গর্ভপাত করে ফেলবে আর তুমি মানুষকে দেখবে যেন নেশাগ্রস্ত; অথচ তারা নেশাগ্রস্ত থাকবে না কিন্তু ঘটনা এই যে, আল্লাহ্র মার কঠিন।
ইরফানুল কুরআন
২. যেদিন তোমরা তা প্রত্যক্ষ করবে, সেদিন সকল স্তন্যদাত্রী (মা) ভুলে যাবে তার দুগ্ধপোষ্য (শিশুকে) এবং গর্ভপাত করবে প্রত্যেক গর্ভধারিণী নারী। আর (হে দর্শক!) তুমি মানুষকে দেখবে নেশাগ্রস্ত (অবস্থায়); অথচ তারা (প্রকৃতপক্ষে) নেশাগ্রস্ত হবে না। বস্তুতঃ আল্লাহ্র শাস্তি হবে (এমনই) কঠিন (যে, প্রত্যেক মানুষ জ্ঞান হারাবে)।
وَ مِنَ النَّاسِ مَنۡ یُّجَادِلُ فِی اللّٰہِ بِغَیۡرِ عِلۡمٍ وَّ یَتَّبِعُ کُلَّ شَیۡطٰنٍ مَّرِیۡدٍ ۙ﴿۳﴾
কানযুল ঈমান
৩. এবং কিছু লোক এমন রয়েছে যে, তারা আল্লাহ্র ব্যাপারে বিতণ্ডা করে জ্ঞান-বুঝ ব্যতীতই এবং প্রত্যেক অবাধ্য শয়তানের অনুসরণ করে বসে;
ইরফানুল কুরআন
৩. আর কিছু লোক (এমন) রয়েছে, যারা আল্লাহ্র ব্যাপারে অজ্ঞানতাবশতঃ ঝগড়া করে এবং প্রত্যেক অবাধ্য শয়তানের অনুসরণ করে,
کُتِبَ عَلَیۡہِ اَنَّہٗ مَنۡ تَوَلَّاہُ فَاَنَّہٗ یُضِلُّہٗ وَ یَہۡدِیۡہِ اِلٰی عَذَابِ السَّعِیۡرِ ﴿۴﴾
কানযুল ঈমান
৪. যার সম্বন্ধে (এ নিয়ম) লিপিবদ্ধ করা হয়েছে যে কেউ তার সাথে বন্ধুত্ব করবে, তবে সে অবশ্যই তাকে পথভ্রষ্ট করে দেবে এবং তাকে দোযখের শাস্তির পথপ্রদর্শন করবে।
ইরফানুল কুরআন
৪. যার (অর্থাৎ শয়তান) সম্পর্কে লিখে দেয়া হয়েছে যে, যে ব্যক্তি তাকে বন্ধু বানাবে তাকে সে গোমরাহ্ করবে এবং তাকে পরিচালিত করবে জাহান্নামের শাস্তির দিকে।
یٰۤاَیُّہَا النَّاسُ اِنۡ کُنۡتُمۡ فِیۡ رَیۡبٍ مِّنَ الۡبَعۡثِ فَاِنَّا خَلَقۡنٰکُمۡ مِّنۡ تُرَابٍ ثُمَّ مِنۡ نُّطۡفَۃٍ ثُمَّ مِنۡ عَلَقَۃٍ ثُمَّ مِنۡ مُّضۡغَۃٍ مُّخَلَّقَۃٍ وَّ غَیۡرِ مُخَلَّقَۃٍ لِّنُبَیِّنَ لَکُمۡ ؕ وَ نُقِرُّ فِی الۡاَرۡحَامِ مَا نَشَآءُ اِلٰۤی اَجَلٍ مُّسَمًّی ثُمَّ نُخۡرِجُکُمۡ طِفۡلًا ثُمَّ لِتَبۡلُغُوۡۤا اَشُدَّکُمۡ ۚ وَ مِنۡکُمۡ مَّنۡ یُّتَوَفّٰی وَ مِنۡکُمۡ مَّنۡ یُّرَدُّ اِلٰۤی اَرۡذَلِ الۡعُمُرِ لِکَیۡلَا یَعۡلَمَ مِنۡۢ بَعۡدِ عِلۡمٍ شَیۡئًا ؕ وَ تَرَی الۡاَرۡضَ ہَامِدَۃً فَاِذَاۤ اَنۡزَلۡنَا عَلَیۡہَا الۡمَآءَ اہۡتَزَّتۡ وَ رَبَتۡ وَ اَنۡۢبَتَتۡ مِنۡ کُلِّ زَوۡجٍۭ بَہِیۡجٍ ﴿۵﴾
কানযুল ঈমান
৫. হে মানবকূল! যদি ক্বিয়ামত দিবসে জীবিত হওয়া সম্বন্ধে তোমাদের কোন সংশয় থাকে, তবে এ কথা গভীরভাবে চিন্তা করো যে, আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি মাটি থেকে, অতঃপর জলবিন্দু থেকে, এরপর রক্তের জমাট থেকে; অতঃপর মাংসপিণ্ড থেকে, গঠিত ও অগঠিত আকৃতি, যাতে আমি তোমাদের জন্য আমার নিদর্শনসমূহ প্রকাশ করে দিই এবং আমি স্থির রাখি মাতৃগর্ভে যাকে ইচ্ছা, একটি নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত, অতঃপর তোমাদেরকে বের করি শিশুরূপে; অতঃপর এ জন্য যে, তোমরা আপনযৌবনে উপনীত হবে এবং তোমাদের মধ্যে কেউ পূর্বেই মরে যায়, আর কাউকে সর্বাপেক্ষা হীনতম বয়সে নিয়ে যাওয়া হয়, যাতে জানার পর কিছুই না জানে। এবং তুমি যমীনকে দেখছো বিশুষ্ক, অতঃপর যখন আমি সেটার উপর বারি বর্ষণ করেছি তখন তা তরুতাজা হয়ে গেলো ও স্ফীত হয়ে এলো এবং প্রত্যেক প্রকার শোভাময় জোড়া উদগত করে আনলো।
ইরফানুল কুরআন
৫. হে লোকেরা! যদি (মৃত্যুর পর) পুনরুত্থানের ব্যাপারে তোমাদের সন্দেহ হয়, তবে (তোমাদের সৃষ্টি ও ক্রমবিকাশের উপর চিন্তা-ভাবনা করো যে,) আমরা তোমাদের (রাসায়নিক) সৃষ্টি মাটি থেকে (সূচনা) করেছি, অতঃপর (জীবতাত্ত্বিক সূচনা) জন্মদায়ক এক বিন্দু থেকে, অতঃপর (মায়ের জরায়ুতে জোঁকের ন্যায়) ঝুলন্ত বস্তু (ভ্রুণ) থেকে, অতঃপর (এমন) এক পিন্ড থেকে যা দেখতে চিবানো, যাতে কিছু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সৃষ্টির সূচনা পরিলক্ষিত হয় এবং কিছুর সৃষ্টি এখনো শুরু হয়নি, যাতে আমরা তোমাদের জন্যে (আমাদের ক্ষমতা এবং আমাদের বাণীর সত্যতা) প্রকাশ করি। আর আমরা যাকে চাই, নির্ধারিত সময় পর্যন্ত জরায়ুতে রেখে দেই, অতঃপর আমরা তোমাদেরকে শিশুরূপে বের করি। পরে (তোমাদের লালন-পালন করি) যাতে তোমরা পূর্ণ যৌবনে উপনীত হও। আর তোমাদের মধ্যে এমনও রয়েছে যারা (অপ্রাপ্ত বয়সে) মৃত্যুবরণ করে, আর কিছু এমন রয়েছে যাদেরকে একেবারে জরাগ্রস্ত বয়স পর্যন্ত নেয়া হয় যাতে তারা (অবলোকন করে যে,) অনেককিছু জানার পর (এখন আবার) কিছু(ই) জানে না। আর তুমি ভুমিকে দেখো সম্পূর্ণ শুষ্ক (মৃত), অতঃপর যখন আমরা এর উপর বারি বর্ষণ করি তখন তাতে সবুজ-শ্যামলতার চমক আগমন করে, এটি উর্বর হতে শুরু করে এবং উদ্গত করে নয়নাভিরাম উদ্ভিদের সর্বপ্রকার জোড়া।
ذٰلِکَ بِاَنَّ اللّٰہَ ہُوَ الۡحَقُّ وَ اَنَّہٗ یُحۡیِ الۡمَوۡتٰی وَ اَنَّہٗ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ ۙ﴿۶﴾
কানযুল ঈমান
৬. এটা এজন্য যে, আল্লাহ্ই সত্য এবং এ যে, তিনি মৃতকে জীবিত করবেন এবং এ যে, তিনি সব কিছু করতে পারেন।
ইরফানুল কুরআন
৬. এ (সবকিছু) এ জন্যে (হয়ে থাকে) যে, আল্লাহ্ই সত্য (যিনি সৃষ্টিকর্তা এবং প্রতিপালক), আর নিশ্চয়ই তিনিই (প্রাণহীন) মৃতকে জীবিত (প্রাণবিশিষ্ট) করেন। আর অবশ্যই তিনিই সকল কিছুর উপর সর্বময় ক্ষমতাবান।
وَّ اَنَّ السَّاعَۃَ اٰتِیَۃٌ لَّا رَیۡبَ فِیۡہَا ۙ وَ اَنَّ اللّٰہَ یَبۡعَثُ مَنۡ فِی الۡقُبُوۡرِ ﴿۷﴾
কানযুল ঈমান
৭. এবং এ জন্য যে, ক্বিয়ামত আগমনকারী, এতে কোন সন্দেহ নেই; এবং এ যে, আল্লাহ্ উঠাবেন তাদেরকে, যারা কবরে রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৭. আর নিশ্চয়ই কিয়ামত অবশ্যম্ভাবী, এতে কোনো সন্দেহ নেই এবং অবশ্যই আল্লাহ্ তাদেরকে পুনরুত্থিত করবেন যারা কবরে আছে।
وَ مِنَ النَّاسِ مَنۡ یُّجَادِلُ فِی اللّٰہِ بِغَیۡرِ عِلۡمٍ وَّ لَا ہُدًی وَّ لَا کِتٰبٍ مُّنِیۡرٍ ۙ﴿۸﴾
কানযুল ঈমান
৮. এবং কিছ লোক এমন আছে যে, আল্লাহ্ সম্বন্ধে এমনিই তর্ক করে; তাদের না আছে জ্ঞান, না কোন প্রমাণ এবং না আছে কোন দীপ্তিমান লিপি।
ইরফানুল কুরআন
৮. আর মানুষের মাঝে কেউ কেউ এমনও রয়েছে, যারা আল্লাহ্র (সত্তা, গুণাবলী এবং ক্ষমতার) ব্যাপারে ঝগড়া করে অজ্ঞতাবশতঃ এবং বিবেচনা ছাড়াই, কোনো ধরণের হেদায়াত ও প্রমাণ ছাড়া এবং কোনো সুস্পষ্ট কিতাব ব্যতীত (যা আসমান থেকে অবতীর্ণ),
ثَانِیَ عِطۡفِہٖ لِیُضِلَّ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ ؕ لَہٗ فِی الدُّنۡیَا خِزۡیٌ وَّ نُذِیۡقُہٗ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ عَذَابَ الۡحَرِیۡقِ ﴿۹﴾
কানযুল ঈমান
৯. সত্য থেকে আপন ঘাড় বাঁকা করে, যাতে আল্লাহ্রপথ থেকে ভ্রষ্ট করে দেয়। তার জন্য পৃথিবীতে লাঞ্ছনা রয়েছে এবং ক্বিয়ামত দিবসে আমি তাকে আগুনের শাস্তি আস্বাদ করাবো।
ইরফানুল কুরআন
৯. (দম্ভভরে) স্বীয় ঘাড় ফিরিয়ে নেয় যাতে (অন্যদেরকেও) আল্লাহ্র পথ থেকে বিচ্যুত করতে পারে। ইহকালে তার জন্যে রয়েছে লাঞ্ছনা এবং কিয়ামতের দিন আমরা তাকে আস্বাদন করাবো দহন যন্ত্রণা।
ذٰلِکَ بِمَا قَدَّمَتۡ یَدٰکَ وَ اَنَّ اللّٰہَ لَیۡسَ بِظَلَّامٍ لِّلۡعَبِیۡدِ ﴿۱۰﴾
কানযুল ঈমান
১০. এটা সেটারই পরিণাম যা তোমার হস্তদ্বয় আগে প্রেরণ করেছেন। এবং আল্লাহ্ বান্দাদের প্রতি যুল্ম করেন না।
ইরফানুল কুরআন
১০.তা তোমার কৃতকর্মের কারণে যা তোমার হস্ত অগ্রে প্রেরণ করেছিল, আর নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের প্রতি মোটেই যুলুমকারী নন।
وَ مِنَ النَّاسِ مَنۡ یَّعۡبُدُ اللّٰہَ عَلٰی حَرۡفٍ ۚ فَاِنۡ اَصَابَہٗ خَیۡرُۨ اطۡمَاَنَّ بِہٖ ۚ وَ اِنۡ اَصَابَتۡہُ فِتۡنَۃُۨ انۡقَلَبَ عَلٰی وَجۡہِہٖ ۟ۚ خَسِرَ الدُّنۡیَا وَ الۡاٰخِرَۃَ ؕ ذٰلِکَ ہُوَ الۡخُسۡرَانُ الۡمُبِیۡنُ ﴿۱۱﴾
কানযুল ঈমান
১১. এবং কিছু লোক আল্লাহ্র ইবাদত এক দিক (দ্বিধা-দ্বন্দ্ব)-এর উপর করে; অতঃপর যদি কোন কল্যাণ হয়ে যায়, তবে সে শান্তি লাভ করে এবং যদি কোন পরীক্ষা এসে পড়ে, তবে আপন মুখমণ্ডলের উপর ভয় করে ফিরে যায়। দুনিয়া ও আখিরাতে উভয়েরই ক্ষতি; এটাই হচ্ছে সুস্পষ্ট ক্ষতি।
ইরফানুল কুরআন
১১. আর মানুষের মাঝে কতিপয় এমনও রয়েছে যারা (দ্বীন-ধর্ম নিয়ে) দ্বিধাায় (থেকে) আল্লাহ্র ইবাদত করে। অতঃপর যদি তাঁর কাছে (পার্থিব) কোনো কল্যাণ পৌঁছে তবে এ (দ্বীনের) বিষয়ে পরিতৃপ্ত হয়, আর যদি তার নিকট কোনো পরীক্ষা আসে তবে (দ্বীন থেকে) মুখ ফিরিয়ে নেয়। সে দুনিয়াতে(ও) ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং পরকালে(ও)। এটিই তো সুস্পষ্ট (ভাবে) বড় ধরণের ক্ষতি।
یَدۡعُوۡا مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ مَا لَا یَضُرُّہٗ وَ مَا لَا یَنۡفَعُہٗ ؕ ذٰلِکَ ہُوَ الضَّلٰلُ الۡبَعِیۡدُ ﴿ۚ۱۲﴾
কানযুল ঈমান
১২. আল্লাহ্ ব্যতীত এমন কিছুর পূজা করে, যা তাদের ভাল মন্দ কিছুই করে না। এটাই হচ্ছে দূরের ভ্রান্তি।
ইরফানুল কুরআন
১২. সেসব (ব্যক্তি) আল্লাহ্কে ছেড়ে (মূর্তির) উপাসনা করে যা না তার কোনো ক্ষতি করতে পারে, আর না কোনো উপকার করতে পারে। এটিই তো (অনেক) দূরের পথভ্রষ্টতা।
یَدۡعُوۡا لَمَنۡ ضَرُّہٗۤ اَقۡرَبُ مِنۡ نَّفۡعِہٖ ؕ لَبِئۡسَ الۡمَوۡلٰی وَ لَبِئۡسَ الۡعَشِیۡرُ ﴿۱۳﴾
কানযুল ঈমান
১৩. তারা এমন কিছুরই পূজা করে যার উপকার থেকে ক্ষতির আশঙ্কা বেশি; নিশ্চয় কতই মন্দ অভিভাবক এবং নিশ্চয় কত মন্দ সহচর।
ইরফানুল কুরআন
১৩. তারা এমন কিছুর উপাসনা করে যার ক্ষতি এর উপকার অপেক্ষা নিকটতর। কতোই না নিকৃষ্ট সাহায্যকারী এবং কতোই না মন্দ সঙ্গী!
اِنَّ اللّٰہَ یُدۡخِلُ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ جَنّٰتٍ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہَا الۡاَنۡہٰرُ ؕ اِنَّ اللّٰہَ یَفۡعَلُ مَا یُرِیۡدُ ﴿۱۴﴾
কানযুল ঈমান
১৪. নিশ্চয় আল্লাহ্ দাখিল করবেন তাদেরকে যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে বাগানসমূহে, যেগুলোর পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত। নিশ্চয় আল্লাহ্ করেন যা তিনি চান।
ইরফানুল কুরআন
১৪. অবশ্যই আল্লাহ্ তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করছে, যার তলদেশে স্রোতধারা প্রবাহিত। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ যা ইচ্ছা করেন তা সম্পাদন করেন।
مَنۡ کَانَ یَظُنُّ اَنۡ لَّنۡ یَّنۡصُرَہُ اللّٰہُ فِی الدُّنۡیَا وَ الۡاٰخِرَۃِ فَلۡیَمۡدُدۡ بِسَبَبٍ اِلَی السَّمَآءِ ثُمَّ لۡیَقۡطَعۡ فَلۡیَنۡظُرۡ ہَلۡ یُذۡہِبَنَّ کَیۡدُہٗ مَا یَغِیۡظُ ﴿۱۵﴾
কানযুল ঈমান
১৫. যে এ কথা মনে করে যে, আল্লাহ্ আপন নবীর সাহায্য করবেন না-দুনিয়ায় ও আখিরাতে; তার উচিত যেন উপরের দিকে একটা রজ্জু টানে, অতঃপর সে নিজেকে ফাসি দিয়ে দেয়, এরপর দেখে নেয় যে, তার এ চক্রান্ত কিছুমাত্র দূর করেছে কিনা ওই কথাকে যার প্রদাহ তার মধ্যে রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
১৫. যে ব্যক্তি এ ধারণা করে যে, আল্লাহ্ তাঁর (প্রিয়তম ও মনোনীত) রাসূলকে দুনিয়া ও আখেরাতে কখনো সাহায্য করবেন না, সে যেন (ঘরের) ছাদ থেকে এক রশি বেঁধে ঝুলে যায়, তারপর (নিজেকে) ফাঁসি দেয়। অতঃপর দেখুক তার এ কৌশল একে (অর্থাৎ আল্লাহ্র সাহায্যকে) দূর করে দেয় কি না, যার প্রতি সে রাগান্বিত হয়।
وَ کَذٰلِکَ اَنۡزَلۡنٰہُ اٰیٰتٍۭ بَیِّنٰتٍ ۙ وَّ اَنَّ اللّٰہَ یَہۡدِیۡ مَنۡ یُّرِیۡدُ ﴿۱۶﴾
কানযুল ঈমান
১৬. এবং কথা হচ্ছে এ যে, আমি এ ক্বোরআন অবতীর্ণ করেছি সুস্পষ্ট নিদর্শনরূপে এবং এ যে, আল্লাহ্ পথ প্রদান করেন যাকে চান।
ইরফানুল কুরআন
১৬. আর এভাবে আমরা একে (এ সম্পূর্ণ কুরআনকে) সুস্পষ্ট প্রমাণের আকারে অবতীর্ণ করেছি। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা হেদায়াত দ্বারা অনুগ্রহ করেন।
اِنَّ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ الَّذِیۡنَ ہَادُوۡا وَ الصّٰبِئِیۡنَ وَ النَّصٰرٰی وَ الۡمَجُوۡسَ وَ الَّذِیۡنَ اَشۡرَکُوۡۤا ٭ۖ اِنَّ اللّٰہَ یَفۡصِلُ بَیۡنَہُمۡ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ شَہِیۡدٌ ﴿۱۷﴾
কানযুল ঈমান
১৭. নিশ্চয় মুসলমান, ইহুদী, নক্ষত্রপূজারী, খৃষ্টান, অগ্নিপূজারী এবং মুশরিক; নিশ্চয় আল্লাহ্ তাদের সবার মধ্যে ক্বিয়ামতের দিন ফয়সালা করে দেবেন। নিশ্চয় প্রত্যেক কিছু আল্লাহ্র সম্মুখে রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
১৭. নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে, যারা ইহুদী, তারকাপূজারী, (খ্রিস্টান) নাসারা, অগ্নি-উপাসক এবং যারা মুশরিক; নিশ্চিত আল্লাহ্ কিয়ামতের দিন এদের (সকলের) মাঝে ফায়সালা করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সকল কিছুই প্রত্যক্ষ করেন।
اَلَمۡ تَرَ اَنَّ اللّٰہَ یَسۡجُدُ لَہٗ مَنۡ فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَنۡ فِی الۡاَرۡضِ وَ الشَّمۡسُ وَ الۡقَمَرُ وَ النُّجُوۡمُ وَ الۡجِبَالُ وَ الشَّجَرُ وَ الدَّوَآبُّ وَ کَثِیۡرٌ مِّنَ النَّاسِ ؕ وَ کَثِیۡرٌ حَقَّ عَلَیۡہِ الۡعَذَابُ ؕ وَ مَنۡ یُّہِنِ اللّٰہُ فَمَا لَہٗ مِنۡ مُّکۡرِمٍ ؕ اِنَّ اللّٰہَ یَفۡعَلُ مَا یَشَآءُ ﴿ؕٛ۱۸﴾
কানযুল ঈমান
১৮. আপনি কী দেখেন নি যে, আল্লাহ্র জন্য সাজদা করে যা কিছু আসমানসমূহে ও যমীনে রয়েছে এবং সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্ররাজি, পর্বতমালা, গাছপালা, চতুষ্পদ জন্তু এবং অনেক মানুষ। আর অনেকে এমন রয়েছে, যাদের উপর শাস্তি অবধারিত হয়েছে; আর যাকে আল্লাহ্ হেয় করেন তাকে কেউ সম্মানদাতা নেই; নিশ্চয় আল্লাহ্ যা চান তাই করেন।
ইরফানুল কুরআন
১৮. তুমি কি দেখোনি যে, আল্লাহ্রই জন্যে (সে সমস্ত সৃষ্টিজগত) সেজদাবনত যা আকাশমন্ডলীতে এবং পৃথিবীতে রয়েছে; সূর্য, চন্দ্র, তারকা, পাহাড়, বৃক্ষ, প্রাণী এবং অনেক মানুষ(ও)! আর অনেক (মানুষ) এমনও রয়েছে যাদের উপর (স্বীয় কুফরি ও শিরকের কারণে) শাস্তি অবধারিত হয়ে গিয়েছে। আর আল্লাহ্ যাকে অপমানিত করেন তাকে কেউ সম্মানিত করতে পারে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ যা চান তা করেন।
ہٰذٰنِ خَصۡمٰنِ اخۡتَصَمُوۡا فِیۡ رَبِّہِمۡ ۫ فَالَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا قُطِّعَتۡ لَہُمۡ ثِیَابٌ مِّنۡ نَّارٍ ؕ یُصَبُّ مِنۡ فَوۡقِ رُءُوۡسِہِمُ الۡحَمِیۡمُ ﴿ۚ۱۹﴾
কানযুল ঈমান
১৯. এরা দু’টি দল, যারা তাদের রব সম্বন্ধে বিতর্ক করেছে; সুতরাং যারা কাফির হয়েছে তাদের জন্য আগুনের কাপড় কর্তন (প্রস্তুত) করা হয়েছে এবং তাদের মাথার উপর ফুটন্ত পানি ঢেলে দেয়া হবে।
ইরফানুল কুরআন
১৯. এরা দু’দল যারা তাদের প্রতিপালকের ব্যাপারে ঝগড়া করে। অতঃপর যারা কাফের হয়ে গেছে তাদের জন্যে জাহান্নামের আগুনের কাপড় কেটে (সেলাই করে) দেয়া হয়েছে; তাদের মস্তকের উপর ঢেলে দেয়া হবে ফুটন্ত পানি।
یُصۡہَرُ بِہٖ مَا فِیۡ بُطُوۡنِہِمۡ وَ الۡجُلُوۡدُ ﴿ؕ۲۰﴾
কানযুল ঈমান
২০. যা দ্বারা বিগলিত হবে যা কিছু তাদের উদারে থাকে এবং তাদের চর্মসমূহ।
ইরফানুল কুরআন
২০. যার মাধ্যমে তার পেটে যা কিছু রয়েছে তা গলে যাবে। আর (তার) চামড়াও।
وَ لَہُمۡ مَّقَامِعُ مِنۡ حَدِیۡدٍ ﴿۲۱﴾
কানযুল ঈমান
২১. এবং তাদের জন্য লোহার গদা রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
২১. আর তাদের জন্যে থাকবে লোহার হাতুড়ি (তাদের মস্তকে আঘাত করার জন্যে)।
کُلَّمَاۤ اَرَادُوۡۤا اَنۡ یَّخۡرُجُوۡا مِنۡہَا مِنۡ غَمٍّ اُعِیۡدُوۡا فِیۡہَا ٭ وَ ذُوۡقُوۡا عَذَابَ الۡحَرِیۡقِ ﴿۲۲﴾
কানযুল ঈমান
২২. যখন যন্ত্রণার কারণে তা থেকে বের হতে চাইবে তখন তাতে আবার ফিরিয়ে দেওয়া হবে এবং নির্দেশ হবে-‘আস্বাদ করো আগুনের শাস্তি!’
ইরফানুল কুরআন
২২. যখনই তারা প্রচন্ড কষ্টের কারণে সেখান থেকে বের হওয়ার ইচ্ছা করবে, (তখনই) তাদেরকে তাতে ফিরিয়ে দেয়া হবে। আর (তাদেরকে বলা হবে) ‘লেলিহান আগুনের শাস্তির স্বাদ আস্বাদন করো’।
اِنَّ اللّٰہَ یُدۡخِلُ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ جَنّٰتٍ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہَا الۡاَنۡہٰرُ یُحَلَّوۡنَ فِیۡہَا مِنۡ اَسَاوِرَ مِنۡ ذَہَبٍ وَّ لُؤۡلُؤًا ؕ وَ لِبَاسُہُمۡ فِیۡہَا حَرِیۡرٌ ﴿۲۳﴾
কানযুল ঈমান
২৩. নিশ্চয় আল্লাহ্ দাখিল করবেন তাদেরকে, যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে, বেহেশতসমূহে যেগুলোর পাদদেশে নহরসমূহ প্রবহমান; তাতে পরানোহবে স্বর্ণের কঙ্কণ ও মুক্তা; এবং সেখানে তাদের পোশাক হবে রেশমের।
ইরফানুল কুরআন
২৩. নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করে, যার তলদেশে স্রোতধারা প্রবাহিত; সেখানে তাদেরকে অলংকৃত করা হবে সোনার কাঁকন এবং মুক্তা দ্বারা এবং সেখানে তাদের পোশাক হবে রেশমের।
وَ ہُدُوۡۤا اِلٰی الطَّیِّبِ مِنَ الۡقَوۡلِ ۚۖ وَ ہُدُوۡۤا اِلَی صِرَاطِ الۡحَمِیۡدِ ﴿۲۴﴾
কানযুল ঈমান
২৪. আর তাদেরকে পবিত্র বাক্যের প্রতি পথপ্রদর্শন করা হয়েছে; এবং তাদেরকে সমস্ত প্রশংসায় প্রশংসিত আল্লাহ্র পথ প্রদর্শন করা হয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
২৪. আর তাদেরকে (দুনিয়াতে) সৎবাক্যের অনুগামী করা হয়েছিল এবং তাদেরকে (ইসলামের) প্রশংসিত পথের দিকে পরিচালিত করা হয়েছিল।
اِنَّ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا وَ یَصُدُّوۡنَ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ وَ الۡمَسۡجِدِ الۡحَرَامِ الَّذِیۡ جَعَلۡنٰہُ لِلنَّاسِ سَوَآءَۨ الۡعَاکِفُ فِیۡہِ وَ الۡبَادِ ؕ وَ مَنۡ یُّرِدۡ فِیۡہِ بِاِلۡحَادٍۭ بِظُلۡمٍ نُّذِقۡہُ مِنۡ عَذَابٍ اَلِیۡمٍ ﴿۲۵﴾
কানযুল ঈমান
২৫. নিশ্চয় ওই সব লোক যারা কুফর করেছে এবং নিবৃত্ত রাখে আল্লাহ্র পথ ও ওই সম্মানিত মসজিদ থেকে, যাকে আমি সমস্ত কাজের জন্য স্থির করেছি যে, তাতে সমান অধিকার রয়েছে সেখানকার অধিবাসী ও বহিরাগতদের জন্য। আর যে কেউ তাতে যে কোন সীমালঙ্ঘনের অসৎ ইচ্ছা করে, আমি তাকে মর্মন্তুদ শাস্তি আস্বাদন করাবো।
ইরফানুল কুরআন
২৫. নিশ্চয়ই যারা কুফরী করে এবং (অন্যদেরকে) আল্লাহ্র পথে বাধা দেয় এবং যে মসজিদে হারাম (কা’বা)-কে আমরা স্থানীয় এবং বহিরাগত সকল মানুষের জন্যে (বিনা ব্যবধানে) সমান করেছি তা হতে প্রতিহত করে; এবং যে ব্যক্তি এতে অন্যায়ভাবে বিপথে চলার (অর্থাৎ সীমালঙ্ঘন এবং অধিকার হরণের) ইচ্ছা করে, আমরা তাকে আস্বাদন করাবো যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
وَ اِذۡ بَوَّاۡنَا لِاِبۡرٰہِیۡمَ مَکَانَ الۡبَیۡتِ اَنۡ لَّا تُشۡرِکۡ بِیۡ شَیۡئًا وَّ طَہِّرۡ بَیۡتِیَ لِلطَّآئِفِیۡنَ وَ الۡقَآئِمِیۡنَ وَ الرُّکَّعِ السُّجُوۡدِ ﴿۲۶﴾
কানযুল ঈমান
২৬. এবং যখন আমি ইব্রাহীমকে ওই ঘরের ঠিকানা সঠিকভাবে বলে দিয়েছি এবং নির্দেশ দিয়েছি আমার কোন শরীক স্থির করো না আর আমার ঘরকে পবিত্র রাখো তাওয়াফকারী, ই’তিকাফকারী ও রুকূ-সাজদাকারীদের জন্য।
ইরফানুল কুরআন
২৬. আর (স্মরণ করুন সে সময়ের কথা) যখন আমরা ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)-এঁর জন্যে বাইতুল্লাহর (অর্থাৎ কাবাগৃহ নির্মাণের) স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম (এবং তাঁকে নির্দেশ দিয়েছিলাম), ‘আমার সাথে কোনো কিছুর অংশীদার সাব্যস্ত করো না এবং (নির্মাণের পর) আমার গৃহকে তাওয়াফকারী, কিয়ামকারী এবং সেজদাকারীদের জন্যে পাক ও পরিচ্ছন্ন রাখো।’
وَ اَذِّنۡ فِی النَّاسِ بِالۡحَجِّ یَاۡتُوۡکَ رِجَالًا وَّ عَلٰی کُلِّ ضَامِرٍ یَّاۡتِیۡنَ مِنۡ کُلِّ فَجٍّ عَمِیۡقٍ ﴿ۙ۲۷﴾
কানযুল ঈমান
২৭. এবং মানুষের মধ্যে হজ্জের সাধারণ ঘোষণা করে দাও; তারা তোমার নিকট উপস্থিত হবে পদব্রজে ও প্রত্যেক ক্ষীণকায় উট্নীর পিঠে করে, যা দূর-দূরান্তরের পথ থেকে আসে,
ইরফানুল কুরআন
২৭. আর তুমি মানুষের মাঝে হজের কথা ঘোষণা করে দাও, তারা তোমার নিকট হাযির হবে পদব্রজে এবং শীর্ণ উটে (আরোহণ করে), দূর-দূরান্তের পথ অতিক্রম করে -
لِّیَشۡہَدُوۡا مَنَافِعَ لَہُمۡ وَ یَذۡکُرُوا اسۡمَ اللّٰہِ فِیۡۤ اَیَّامٍ مَّعۡلُوۡمٰتٍ عَلٰی مَا رَزَقَہُمۡ مِّنۡۢ بَہِیۡمَۃِ الۡاَنۡعَامِ ۚ فَکُلُوۡا مِنۡہَا وَ اَطۡعِمُوا الۡبَآئِسَ الۡفَقِیۡرَ ﴿۫۲۸﴾
কানযুল ঈমান
২৮. যাতে তারা আপন আপন উপকার পায় এবং আল্লাহ্র নাম নেয় জ্ঞাত দিনগুলোতে এর উপর যে, তাদেরকে জীবনোপকরণরূপে প্রদান করেছেন বাকশক্তিহীন চতুষ্পদ জন্তু। অতঃপর তা থেকে তোমরা আহার করো এবং বিপদ্গ্রস্ত দরিদ্রকে আহার করাও।
ইরফানুল কুরআন
২৮. যাতে তারা নিজেদের কল্যাণ লাভ করে এবং (কুরবানীর) নির্ধারিত দিনে আল্লাহ্ যে চতুষ্পদ পশু তাদের দান করেছেন (যবেহকালে) সেগুলোর উপর আল্লাহ্র নাম উচ্চারণ করে। অতঃপর তোমরা তা থেকে নিজে(ও) খাও, আর দুঃস্থ অভাবগ্রস্তকে(ও) খাওয়াও।
ثُمَّ لۡیَقۡضُوۡا تَفَثَہُمۡ وَ لۡیُوۡفُوۡا نُذُوۡرَہُمۡ وَ لۡیَطَّوَّفُوۡا بِالۡبَیۡتِ الۡعَتِیۡقِ ﴿۲۹﴾
কানযুল ঈমান
২৯. অতঃপর যেন তারা নিজেদের ময়লা-আবর্জনা দূর করে এবং নিজেদের মান্নতসমূহ পূর্ণ করে আর এই আযাদ ঘরের তাওয়াফ করে।
ইরফানুল কুরআন
২৯. অতঃপর তারা যেন (ইহরাম পরিত্যাগের পর চুল এবং নখ কেটে) নিজেদের অপরিচ্ছন্নতা দূর করে, আর স্বীয় মান্নত (অথবা হজ্জের অবশিষ্ট বিধানাবলী) পূর্ণ করে এবং (আল্লাহ্র) প্রাচীন গৃহ (কা’বা) তাওয়াফ করে।
ذٰلِکَ ٭ وَ مَنۡ یُّعَظِّمۡ حُرُمٰتِ اللّٰہِ فَہُوَ خَیۡرٌ لَّہٗ عِنۡدَ رَبِّہٖ ؕ وَ اُحِلَّتۡ لَکُمُ الۡاَنۡعَامُ اِلَّا مَا یُتۡلٰی عَلَیۡکُمۡ فَاجۡتَنِبُوا الرِّجۡسَ مِنَ الۡاَوۡثَانِ وَ اجۡتَنِبُوۡا قَوۡلَ الزُّوۡرِ ﴿ۙ۳۰﴾
কানযুল ঈমান
৩০. কথা হচ্ছে এই এবং যে কেউ আল্লাহ্র সম্মানিত বস্তুগুলোর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে, তবে তা তার জন্য তার রবের নিকট উত্তম; এবং তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে বাকশক্তিহীন চতুষ্পদ জন্তুগুলো, ওইগুলো ব্যতীত যেগুলোর নিষেধ তোমাদেরকে পাঠ করে শুনানো হয়; সুতরাং দূরে থাকো মূর্তিগুলোর অপবিত্রতা থেকে এবং বেচে থাকো মিথ্যা কথা থেকে,
ইরফানুল কুরআন
৩০. এটিই (নির্দেশ), আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্র (নিকট) সম্মানিত বিষয়াদির সম্মান করে, তা তার জন্যে তার প্রতিপালকের নিকট উত্তম। আর তোমাদের জন্যে (সকল চতুষ্পদ) গবাদিপশু হালাল করা হয়েছে, সেগুলো ব্যতীত যেগুলোর নিষেধাজ্ঞা তোমাদেরকে পাঠ করে শুনানো হয়েছে। সুতরাং তোমরা মূর্তির অপবিত্রতা থেকে বেঁচে থাকো এবং মিথ্যা বলা থেকে বিরত থাকো।
حُنَفَآءَ لِلّٰہِ غَیۡرَ مُشۡرِکِیۡنَ بِہٖ ؕ وَ مَنۡ یُّشۡرِکۡ بِاللّٰہِ فَکَاَنَّمَا خَرَّ مِنَ السَّمَآءِ فَتَخۡطَفُہُ الطَّیۡرُ اَوۡ تَہۡوِیۡ بِہِ الرِّیۡحُ فِیۡ مَکَانٍ سَحِیۡقٍ ﴿۳۱﴾
কানযুল ঈমান
৩১. এক আল্লাহ্র হয়ে; তার সাথে অন্য কাউকেও স্থির করো না; এবং যে কেউ আল্লাহ্র শরীক করে সে যেন পতিত হলো আসমান থেকে, অতঃপর পাখী তাকে ছোঁ মেরে নিয়ে যায় অথবা বায়ু তাকে অন্যত্র নিক্ষেপ করে।
ইরফানুল কুরআন
৩১. কেবল মাত্র আল্লাহ্র একনিষ্ঠ হয়েই থাকো, তাঁর সাথে (কাউকে) অংশীদার সাব্যস্ত না করে। আর যে কেউ আল্লাহ্র সাথে অংশীদার সাব্যস্ত করে তো সে যেন আসমান থেকে পতিত হয়, অতঃপর তাকে পাখিরা ছু মেরে নিয়ে যায় অথবা বাতাস তাকে কোনো দূরে নিচে নিক্ষেপ করে।
ذٰلِکَ ٭ وَ مَنۡ یُّعَظِّمۡ شَعَآئِرَ اللّٰہِ فَاِنَّہَا مِنۡ تَقۡوَی الۡقُلُوۡبِ ﴿۳۲﴾
কানযুল ঈমান
৩২. কথা হচ্ছে এই যে, যে কেউ আল্লাহ্র নিদর্শনাবলীকে সম্মান করে, তবে এটা হচ্ছে অন্তরগুলোর পরহেয্গারীর লক্ষণ।
ইরফানুল কুরআন
৩২. এটিই (নির্দেশ), আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্র নিদর্শনাবলীকে সম্মান করে (অর্থাৎ সে সকল প্রাণীকূল, স্মারকচিহ্নসমূহ, স্থানাদি, হুকুম-আহকাম, বিধি-বিধান ও অন্যান্য কিছুর সম্মান, যা আল্লাহ্ এবং আল্লাহ্র ওলীদের সাথে কোনোভাবে সম্পর্কিত); তবে এ (সম্মান) অন্তরের তাক্বওয়ার মধ্যে গণ্য। (এ সম্মান সে লোকেরাই প্রদর্শন করে, যাদের অন্তরে তাক্বওয়া বিদ্যমান।)
لَکُمۡ فِیۡہَا مَنَافِعُ اِلٰۤی اَجَلٍ مُّسَمًّی ثُمَّ مَحِلُّہَاۤ اِلَی الۡبَیۡتِ الۡعَتِیۡقِ ﴿۳۳﴾
কানযুল ঈমান
৩৩. তোমাদের জন্য চতুষ্পদ জন্তুগুলোর মধ্যে অনেক উপকার রয়েছে একটা নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত; অতঃপর সেগুলো পৌঁছে এ আযাদ্গৃহ পর্যন্ত।
ইরফানুল কুরআন
৩৩. তোমাদের জন্যে এদের (এ কোরবানির প্রাণীর) মাঝে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত উপকারিতা রয়েছে। অতঃপর এগুলোকে প্রাচীন (কাবা) গৃহের দিকে (যবাইয়ের উদ্দেশ্যে) পৌঁছাতে হবে।
وَ لِکُلِّ اُمَّۃٍ جَعَلۡنَا مَنۡسَکًا لِّیَذۡکُرُوا اسۡمَ اللّٰہِ عَلٰی مَا رَزَقَہُمۡ مِّنۡۢ بَہِیۡمَۃِ الۡاَنۡعَامِ ؕ فَاِلٰـہُکُمۡ اِلٰہٌ وَّاحِدٌ فَلَہٗۤ اَسۡلِمُوۡا ؕ وَ بَشِّرِ الۡمُخۡبِتِیۡنَ ﴿ۙ۳۴﴾
কানযুল ঈমান
৩৪. এবং প্রত্যেক উম্মতের জন্য আমি একটা ক্বোরবানী নির্ধারিত করেছি যেন তারা আল্লাহ্র নামে নেয় তার প্রদত্ত বাকশক্তিহীন চতুষ্পদ পশুগুলোর উপর; অতএব, তোমাদের উপাস্য একমাত্র উপাস্যই; সুতরাং তারই সম্মুখে আত্নসমর্পণ করো; এবং হে মাহবূব! সুসংবাদ শুনিয়ে দিন সেই বিনীত লোকদেরকে-
ইরফানুল কুরআন
৩৪. আর আমরা প্রত্যেক জাতির জন্যে একটি কুরবানী নির্ধারণ করেছি, যাতে এসব চতুষ্পদ পশুর উপর, যা আল্লাহ্ তাদেরকে প্রদান করেছেন, (যবেহকালে) আল্লাহ্র নাম নেয়। সুতরাং তোমাদের ইলাহ এক(ই) ইলাহ। অতঃপর তোমরা তাঁরই অনুগত হও। আর (হে হাবীব!) বিনয় অবলম্বনকারীদেরকে সুসংবাদ দিন।
الَّذِیۡنَ اِذَا ذُکِرَ اللّٰہُ وَجِلَتۡ قُلُوۡبُہُمۡ وَ الصّٰبِرِیۡنَ عَلٰی مَاۤ اَصَابَہُمۡ وَ الۡمُقِیۡمِی الصَّلٰوۃِ ۙ وَ مِمَّا رَزَقۡنٰہُمۡ یُنۡفِقُوۡنَ ﴿۳۵﴾
কানযুল ঈমান
৩৫. (যারা এমন সব লোক) যে, যখন আল্লাহ্র নাম স্মরণ করা হয় তখন তাদের হৃদয় ভয়কম্পিত হতে থাকে এবং কোন বিপদাপদ এসে পড়ে তা সহ্যকারী ও নামায প্রতিষ্ঠাকারী; এবং আমার প্রদত্ত সম্পদ থেকে ব্যয় করে।
ইরফানুল কুরআন
৩৫. (এরা) সেসব লোক, যখন আল্লাহ্র যিকির করা হয় তখন তাদের অন্তর ভীত-কম্পিত হতে থাকে; আর যেসব বিপদাপদ তাদেরকে স্পর্শ করে তারা এর উপর ধৈর্য ধারণ করে; আর তারা নামায কায়েম রাখে এবং আমরা তাদেরকে যা কিছু দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে।
وَ الۡبُدۡنَ جَعَلۡنٰہَا لَکُمۡ مِّنۡ شَعَآئِرِ اللّٰہِ لَکُمۡ فِیۡہَا خَیۡرٌ ٭ۖ فَاذۡکُرُوا اسۡمَ اللّٰہِ عَلَیۡہَا صَوَآفَّ ۚ فَاِذَا وَجَبَتۡ جُنُوۡبُہَا فَکُلُوۡا مِنۡہَا وَ اَطۡعِمُوا الۡقَانِعَ وَ الۡمُعۡتَرَّ ؕ کَذٰلِکَ سَخَّرۡنٰہَا لَکُمۡ لَعَلَّکُمۡ تَشۡکُرُوۡنَ ﴿۳۶﴾
কানযুল ঈমান
৩৬. এবং ক্বোরবানীর মোটাতাজা পশু উট ও গাভীকে আমি তোমাদের জন্য আল্লাহ্র নিদর্শনসমূহের অন্যতম করেছি। তোমাদের জন্য সেগুলোর মধ্যে কল্যাণ রয়েছে; সুতরাং সেগুলোর উপর আল্লাহ্র নাম উচ্চারণ করো এক পা বাধা, তিন পায়ে দণ্ডায়মান (অবস্থায়); অতঃপর যখন সেগুলোর পার্শদেশ পড়ে যায় তখন সেগুলো থেকে নিজেরা আহার করো এবং ধৈর্য সহকারে উপবিষ্ট ও ভিক্ষুকদের আহার করাও। এভাবেই আমি সেগুলোকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছি, যাতে তোমরা অনুগ্রহ স্বীকার করো।
ইরফানুল কুরআন
৩৬. আর আমরা কুরবানীর (উট ও গরু এসব) বৃহৎ প্রাণীকে তোমাদের জন্যে করেছি আল্লাহ্র নিদর্শনাবলীর অন্যতম। এগুলোতে তোমাদের জন্যে রয়েছে কল্যাণ। অতঃপর (এগুলোকে) সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে (যবেহকালে) এগুলোর উপর আল্লাহ্র নাম উচ্চারণ করো। অতঃপর যখন এগুলো কাত হয়ে পড়ে যায়, তখন তোমরা নিজেরা এ থেকে খাও এবং তাদেরকেও খাওয়াও যারা সংযমী এবং যাঞ্চাকারী (অভাবগ্রস্ত)। এভাবে আমরা এগুলোকে তোমাদের অনুগত করে দিয়েছি যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে পারো।
لَنۡ یَّنَالَ اللّٰہَ لُحُوۡمُہَا وَ لَا دِمَآؤُہَا وَ لٰکِنۡ یَّنَالُہُ التَّقۡوٰی مِنۡکُمۡ ؕ کَذٰلِکَ سَخَّرَہَا لَکُمۡ لِتُکَبِّرُوا اللّٰہَ عَلٰی مَا ہَدٰىکُمۡ ؕ وَ بَشِّرِ الۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿۳۷﴾
কানযুল ঈমান
৩৭. আল্লাহ্র নিকট কখনো না সেগুলোর মাংস পৌছে, না সেগুলোর রক্ত; হাঁ, তোমাদের খোদাভীরুতা তার নিকট পর্যন্ত পৌছে থাকে; এভাবেই আমি সেগুলোকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছি, যাতে তোমরা আল্লাহ্র মহত্ব ঘোষণা করো এর উপর যে, তিনি তোমাদেরকে সৎপথ প্রদর্শন করেছেন; এবং হে মাহবূব! সুসংবাদ শুনান সৎকর্মপরায়ণদেরকে।
ইরফানুল কুরআন
৩৭. না এ (কুরবানীর) মাংস কখনো আল্লাহ্র নিকট পৌঁছে, আর না এর রক্ত; বরং তাঁর নিকট পৌঁছে তোমাদের তাক্বওয়া। এভাবে (আল্লাহ্) এগুলোকে তোমাদের অধীনস্থ করে দিয়েছেন, যাতে (যবেহকালে) তোমরা আল্লাহ্র শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করো, যেভাবে তিনি তোমাদেরকে হেদায়াত দান করেছেন। সুতরাং আপনি পূণ্যবানদের সুসংবাদ দিন।
اِنَّ اللّٰہَ یُدٰفِعُ عَنِ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَا یُحِبُّ کُلَّ خَوَّانٍ کَفُوۡرٍ ﴿۳۸﴾
কানযুল ঈমান
৩৮. নিশ্চয় আল্লাহ্ মুসলমানদের বালা-মুসীবতগুলো দূরীভূত করেন। নিশ্চয় আল্লাহ্ ভালবাসেন না প্রত্যেক বড় ধোঁকাবাজ, অকৃতজ্ঞকে।
ইরফানুল কুরআন
৩৮. নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ঈমানদারদের থেকে (দুশমনদের ফিতনা ও অনিষ্ট) দূর করতে থাকেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ কোনো খিয়ানতকারী (এবং) অকৃতজ্ঞকে পছন্দ করেন না।
اُذِنَ لِلَّذِیۡنَ یُقٰتَلُوۡنَ بِاَنَّہُمۡ ظُلِمُوۡا ؕ وَ اِنَّ اللّٰہَ عَلٰی نَصۡرِہِمۡ لَقَدِیۡرُۨ ﴿ۙ۳۹﴾
কানযুল ঈমান
৩৯. অনুমতি দেওয়া হয়েছে তাদেরকে, যাদের বিরুদ্ধে কাফিরগণ যুদ্ধ করে এতদ্ভিত্তিক যে, তাদের উপর অত্যাচার করা হয়েছে এবং নিশ্চয় আল্লাহ্ তাদের সাহায্য করার উপর অবশ্যই শক্তিমান।
ইরফানুল কুরআন
৩৯. (অপকর্ম, ধ্বংস ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে জিহাদের) অনুমতি দেয়া হয়েছে সে সকল লোককে যাদের সাথে (অন্যায়ভাবে) যুদ্ধ করা হয়েছে, কারণ, তাদের উপর যুলুম করা হয়েছে। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ্ এদেরকে (অত্যাচারিতদেরকে) সাহায্যের ক্ষেত্রে সম্যক সক্ষম।
الَّذِیۡنَ اُخۡرِجُوۡا مِنۡ دِیَارِہِمۡ بِغَیۡرِ حَقٍّ اِلَّاۤ اَنۡ یَّقُوۡلُوۡا رَبُّنَا اللّٰہُ ؕ وَ لَوۡ لَا دَفۡعُ اللّٰہِ النَّاسَ بَعۡضَہُمۡ بِبَعۡضٍ لَّہُدِّمَتۡ صَوَامِعُ وَ بِیَعٌ وَّ صَلَوٰتٌ وَّ مَسٰجِدُ یُذۡکَرُ فِیۡہَا اسۡمُ اللّٰہِ کَثِیۡرًا ؕ وَ لَیَنۡصُرَنَّ اللّٰہُ مَنۡ یَّنۡصُرُہٗ ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَقَوِیٌّ عَزِیۡزٌ ﴿۴۰﴾
কানযুল ঈমান
৪০. ওই সব লোক, যাদেরকে আপন ঘর বাড়ী থেকে অন্যায়ভাবে বের করে দেওয়া হয়েছে শুধু এতটুকু কথার উপর যে, তারা বলেছে, ‘আমাদের রব আল্লাহ্! এবং আল্লাহ্ যদি মানুষের মধ্যে এককে অপর দ্বারা প্রতিহত না করতেন, তবে অবশ্যই ভূমিস্যাৎ করে দেওয়া হতো খানকাসমূহ, গীর্জা, উপাসনালয় এবং মসজিদসমূহকে, যেগুলোতে আল্লাহ্র নাম ব্যাপকভাবে নেওয়া হয় এবং নিশ্চয় নিশ্চয় আল্লাহ্ সাহায্য করবেন তারই, যে তার দ্বীনের সাহায্য করবে, নিশ্চয় নিশ্চয় আল্লাহ্ শক্তিমান, পরাক্রমশালী।
ইরফানুল কুরআন
৪০. (এরা) সেসব লোক যাদেরকে তাদের গৃহ থেকে অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করা হয়েছিল, কেবল এ কারণে যে, তারা বলতো, ‘আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্’ (অর্থাৎ তারা বাতিলের আনুগত্য মেনে নিতে অস্বীকার করেছিল)। আর যদি আল্লাহ্ মানব জাতির এক দলকে অন্য দলের মাধ্যমে (জিহাদ ও বৈপ্লবিক চেষ্টা-প্রচেষ্টার মাধ্যমে) না হঠাতেন তাহলে খানকাহ্, গির্জা, ইহুদিদের উপাসনালয় এবং মসজিদসমূহ (অর্থাৎ সকল ধর্মের ধর্মীয় কেন্দ্রস্থল ও ইবাদতস্থল), যেগুলোতে অধিক পরিমাণে আল্লাহ্র নাম স্মরণ করা হয় তা ধ্বংস ও বিরান করে দেয়া হতো। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্ (তা’আলার দ্বীন)-কে সাহায্য করে নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তাকে সাহায্য করেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সর্বশক্তিমান, (সকলের উপর) আধিপত্যশীল। (যেন সত্য ও মিথ্যার দ্বন্দ্ব ও সংঘাতের বৈপ্লবিক প্রক্রিয়াতেই সত্যের বহাল থাকা সম্ভব।)
اَلَّذِیۡنَ اِنۡ مَّکَّنّٰہُمۡ فِی الۡاَرۡضِ اَقَامُوا الصَّلٰوۃَ وَ اٰتَوُا الزَّکٰوۃَ وَ اَمَرُوۡا بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَ نَہَوۡا عَنِ الۡمُنۡکَرِ ؕ وَ لِلّٰہِ عَاقِبَۃُ الۡاُمُوۡرِ ﴿۴۱﴾
কানযুল ঈমান
৪১. ওই সব লোক যে, যদি আমি তাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা করি, তবে তারা নামায ক্বায়েম রাখবে, যাকাত দেবে, সৎকর্মের নির্দেশ দেবে এবং অসৎকর্ম থেকে বিরত রাখবে; এবং আল্লাহ্রই জন্য সমস্ত কর্মের পরিণাম।
ইরফানুল কুরআন
৪১. (এরা সত্যানুসন্ধানী) সেসব লোক, যদি আমরা তাদেরকে পৃথিবীতে ক্ষমতা প্রদান করি (তবে) তারা নামায (আদায়ের পদ্ধতি) প্রতিষ্ঠা করবে, যাকাত আদায় (করার ব্যবস্থা) করবে এবং (পুরো সমাজে সৎকর্ম এবং) কল্যাণের নির্দেশ দেবে এবং (মানুষকে) অপছন্দনীয় বিষয় থেকে প্রতিহত করবে। আর সকল কাজের পরিণাম আল্লাহ্রই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
وَ اِنۡ یُّکَذِّبُوۡکَ فَقَدۡ کَذَّبَتۡ قَبۡلَہُمۡ قَوۡمُ نُوۡحٍ وَّ عَادٌ وَّ ثَمُوۡدُ ﴿ۙ۴۲﴾
কানযুল ঈমান
৪২. এবং যদি এরা আপনাকে অস্বীকার করে, তবে নিঃসন্দেহে তাদের পূর্বে অস্বীকার করেছিলো নূহের সম্প্রদায় এবং ‘আদ্ ও সামূদ,
ইরফানুল কুরআন
৪২. আর যদি এ সকল (কাফের) আপনাকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করে, তবে তাদের পূর্বে নূহ (আলাইহিস সালাম), ’আদ এবং সামূদের সম্প্রদায়ও (তাদের রাসূলগণকে) মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছিল।
وَ قَوۡمُ اِبۡرٰہِیۡمَ وَ قَوۡمُ لُوۡطٍ ﴿ۙ۴۳﴾
কানযুল ঈমান
৪৩. এবং ইব্রাহীমের সম্প্রদায় ও লূতের সম্প্রদায়।
ইরফানুল কুরআন
৪৩. আর ইরবাহীম (আলাইহিস সালাম)-এঁর সম্প্রদায় এবং লূত (আলাইহিস সালাম)-এঁর সম্প্রদায়(ও)।
وَّ اَصۡحٰبُ مَدۡیَنَ ۚ وَ کُذِّبَ مُوۡسٰی فَاَمۡلَیۡتُ لِلۡکٰفِرِیۡنَ ثُمَّ اَخَذۡتُہُمۡ ۚ فَکَیۡفَ کَانَ نَکِیۡرِ ﴿۴۴﴾
কানযুল ঈমান
৪৪. আর মাদ্য়ানবাসীরা; এবং মূসাকে অস্বীকার করা হয়েছে; অতঃপর আমি কাফিরদেরকে অবকাশ দিয়েছি; অতঃপর তাদেরকে পাকড়াও করেছি। অতএব, কেমন হয়েছে আমার শাস্তি!
ইরফানুল কুরআন
৪৪. আর মাদইয়ানের বাসিন্দারাও (মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছিল) এবং মূসা (আলাইহিস সালাম)-কেও মিথ্যাবাদী বলা হয়েছিল। সুতরাং আমি (সে) কাফেরদেরকে অবকাশ দিয়েছিলাম, অতঃপর তাদেরকে পাকড়াও করেছিলাম। (বলুন) আমার শাস্তি কেমন ছিল!
فَکَاَیِّنۡ مِّنۡ قَرۡیَۃٍ اَہۡلَکۡنٰہَا وَ ہِیَ ظَالِمَۃٌ فَہِیَ خَاوِیَۃٌ عَلٰی عُرُوۡشِہَا وَ بِئۡرٍ مُّعَطَّلَۃٍ وَّ قَصۡرٍ مَّشِیۡدٍ ﴿۴۵﴾
কানযুল ঈমান
৪৫. এবং কতো বস্তিই আমি ধ্বংস করে দিয়েছি যেহেতু তারা যালিম ছিলো। সুতরাং এখন সেগুলো আপন ছাদগুলোর উপর ধ্বসে পড়েছে এবং কতো কূপ ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে আর কত পলস্তরাকৃত প্রাসাদও।
ইরফানুল কুরআন
৪৫. অতঃপর (এমন) কতোই না জনপদ ছিল যেগুলোকে আমরা ধ্বংস করে দিয়েছি, কারণ তারা ছিল যালিম; সুতরাং তারা ছাদের উপর পড়ে রইলো, আর (তাদের ধ্বংসের কারণে) কতোই না কূপ পরিত্যাক্ত (হয়ে গিয়েছিল) এবং কতো সুদৃঢ় দূর্গ ধ্বংস্তুপে পরিণত হলো!
اَفَلَمۡ یَسِیۡرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ فَتَکُوۡنَ لَہُمۡ قُلُوۡبٌ یَّعۡقِلُوۡنَ بِہَاۤ اَوۡ اٰذَانٌ یَّسۡمَعُوۡنَ بِہَا ۚ فَاِنَّہَا لَا تَعۡمَی الۡاَبۡصَارُ وَ لٰکِنۡ تَعۡمَی الۡقُلُوۡبُ الَّتِیۡ فِی الصُّدُوۡرِ ﴿۴۶﴾
কানযুল ঈমান
৪৬. তবে কি তারা ভূ-পৃষ্ঠে ভ্রমণ করে নি? তাহলে তাদের থাকতো অন্তর, যেগুলো দ্বারা তারা বুঝতো, অথবা থাকতো কান, যেগুলো দ্বারা শুনতো। তবে (ব্যাপার) এ যে, চোখগুলো অন্ধ হয় না, বরং ওই সমস্ত অন্তর অন্ধ হয়, যেগুলো বক্ষসমূহে রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৪৬. তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করে না যে, (হয়তো সে সব ধ্বংসাবশেষ দেখে) তাদের অন্তর (এমন) হয় যা দ্বারা তারা অনুধাবন করতে পারে অথবা কর্ণসমূহ (এরূপ) হয় যা দ্বারা তারা (সত্যের কথা) শুনতে পারে? সুতরাং প্রকৃত বিষয় হলো যে, (এসব লোকদের) চক্ষু অন্ধ নয় বরং বক্ষস্থিত অন্তর অন্ধ।
وَ یَسۡتَعۡجِلُوۡنَکَ بِالۡعَذَابِ وَ لَنۡ یُّخۡلِفَ اللّٰہُ وَعۡدَہٗ ؕ وَ اِنَّ یَوۡمًا عِنۡدَ رَبِّکَ کَاَلۡفِ سَنَۃٍ مِّمَّا تَعُدُّوۡنَ ﴿۴۷﴾
কানযুল ঈমান
৪৭. এবং এরা আপনার নিকট শাস্তি চাওয়ার ব্যাপারে ত্বরা করছে আর আল্লাহ্ কখনো আপন প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করবেন না; এবং নিশ্চয় আপনার রবের নিকট একটি দিন এমন রয়েছে, যেমন তোমাদের গণনার মধ্যে হাজার বছর।
ইরফানুল কুরআন
৪৭. আর তারা আপনার নিকট দ্রুত শাস্তি কামনা করে অথচ আল্লাহ্ কখনো তার অঙ্গীকারের বিপরীত করেন না। আর (যখন শাস্তির মূহুর্ত আসবে) তখন আপনার প্রতিপালকের (শাস্তির) একদিন হবে তোমাদের (হিসাবের) গণনায় এক হাজার বছরের সমান।
وَ کَاَیِّنۡ مِّنۡ قَرۡیَۃٍ اَمۡلَیۡتُ لَہَا وَ ہِیَ ظَالِمَۃٌ ثُمَّ اَخَذۡتُہَا ۚ وَ اِلَیَّ الۡمَصِیۡرُ ﴿۴۸﴾
কানযুল ঈমান
৪৮. এবং কতো বস্তি, যেগুলোকে আমি অবকাশ দিয়েছি এমতাবস্থায় যে, তারা যালিম ছিলো। অতঃপর আমি তাদেরকে পাকড়াও করেছি; এবং আমারই প্রতি প্রত্যাবর্তন করতে হবে;
ইরফানুল কুরআন
৪৮. আর কতোই না জনপদ (এমন) রয়েছে যাদেরকে আমি অবকাশ দিয়েছিলাম, অথচ তারা ছিল যালিম; অতঃপর আমি তাদেরকে (শাস্তির মাধ্যমে) পাকড়াও করেছিলাম। আর আমারই দিকে (সকলের) প্রত্যাবর্তন।
قُلۡ یٰۤاَیُّہَا النَّاسُ اِنَّمَاۤ اَنَا لَکُمۡ نَذِیۡرٌ مُّبِیۡنٌ ﴿ۚ۴۹﴾
কানযুল ঈমান
৪৯. আপনি বলে দিন, ‘হে লোকেরা! এ-ই তো আমি তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট সতর্ককারী’।
ইরফানুল কুরআন
৪৯. বলে দিন, ‘হে লোকেরা! আমি তো তোমাদের জন্যে কেবল (আল্লাহ্র শাস্তির) সুস্পষ্ট সতর্ককারী’।
فَالَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ لَہُمۡ مَّغۡفِرَۃٌ وَّ رِزۡقٌ کَرِیۡمٌ ﴿۵۰﴾
কানযুল ঈমান
৫০. সুতরাং যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা এবং সম্মানজনক জীবিকা।
ইরফানুল কুরআন
৫০. সুতরাং যারা ঈমান আনয়ন করে এবং নেক আমল করে, তাদের জন্যে রয়েছে ক্ষমা এবং (অধিক) সম্মানজনক জীবিকা।
وَ الَّذِیۡنَ سَعَوۡا فِیۡۤ اٰیٰتِنَا مُعٰجِزِیۡنَ اُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ الۡجَحِیۡمِ ﴿۵۱﴾
কানযুল ঈমান
৫১. এবং ওই সব লোক, যারা প্রচেষ্টা চালায় আমার আয়াতসমূহের মধ্যে হার জিতের উদ্দেশ্যে; তারা জাহান্নামী।
ইরফানুল কুরআন
৫১. আর যারা আমাদের আয়াতসমূহের (প্রত্যাখানের) ব্যাপারে সচেষ্ট হয়, (আমাদেরকে) অক্ষম করে দিতে; তারাই জাহান্নামের অধিবাসী।
وَ مَاۤ اَرۡسَلۡنَا مِنۡ قَبۡلِکَ مِنۡ رَّسُوۡلٍ وَّ لَا نَبِیٍّ اِلَّاۤ اِذَا تَمَنّٰۤی اَلۡقَی الشَّیۡطٰنُ فِیۡۤ اُمۡنِیَّتِہٖ ۚ فَیَنۡسَخُ اللّٰہُ مَا یُلۡقِی الشَّیۡطٰنُ ثُمَّ یُحۡکِمُ اللّٰہُ اٰیٰتِہٖ ؕ وَ اللّٰہُ عَلِیۡمٌ حَکِیۡمٌ ﴿ۙ۵۲﴾
কানযুল ঈমান
৫২. এবং আমি আপনার পূর্বে যতো রসুল কিংবা নবী প্রেরণ করেছি সবার উপরও এ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে যে, যখনই তারা পাঠ করেছে, তখন শয়তান তাদের পড়ার মধ্যে মানুষের উপর কিছু নিজ থেকে সংযোজন করে দিয়েছে; অতঃপর মুছে দেন আল্লাহ্ ওই শয়তানের সংযোজিত অংশটুকু অতঃপর আল্লাহ্ আপন আয়াতসমূহ মজবুত করে দেন; এবং আল্লাহ্ জ্ঞানবান, প্রজ্ঞাময়।
ইরফানুল কুরআন
৫২. আর আমরা আপনার পূর্বে যতো রাসূল ও নবীই পাঠিয়েছি, (সকলের সাথে এমন ঘটেছে যে,) যখন তিনি (রাসূল বা নবী মানুষের কাছে আল্লাহ্র কালাম) পাঠ করতেন, (তখন) শয়তান (মানুষের স্মৃতিতে নবীর) এ তেলাওয়াতকৃত কালামে (নিজের পক্ষ থেকে মিথ্যা সন্দেহ ও ভ্রান্ত ধারণা) মিশিয়ে দিতো। অতঃপর শয়তান যা (শ্রবণকারীর স্মৃতিতে) সঞ্চার করে, আল্লাহ্ তা দূরীভুত করে দেন। অতঃপর আল্লাহ্ তাঁর আয়াতসমূহকে (ঈমানদারদের অন্তরে) সুদৃঢ় করে দেন। আর আল্লাহ্ সম্যক অবগত, বড়ই প্রজ্ঞাবান।
لِّیَجۡعَلَ مَا یُلۡقِی الشَّیۡطٰنُ فِتۡنَۃً لِّلَّذِیۡنَ فِیۡ قُلُوۡبِہِمۡ مَّرَضٌ وَّ الۡقَاسِیَۃِ قُلُوۡبُہُمۡ ؕ وَ اِنَّ الظّٰلِمِیۡنَ لَفِیۡ شِقَاقٍۭ بَعِیۡدٍ ﴿ۙ۵۳﴾
কানযুল ঈমান
৫৩. যাতে শয়তানের সংযোজিত বিষয়কে ‘ফিতনা’ করে দেন তাদের জন্য, যাদের অন্তরসমূহে ব্যাধি রয়েছে এবং যাদের হৃদয় পাষাণ; আর নিশ্চয় যালিমরা দুস্তর মতভেদে রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৫৩. (তা এ জন্যে হয়) যাতে আল্লাহ্ এসব (মিথ্যা ধারণা ও ভ্রান্ত সন্দেহ), যা শয়তান (মানুষের স্মৃতিতে) সঞ্চার করে, তাদের জন্যে পরীক্ষাস্বরূপ করে দেন যাদের অন্তরে (কপটতার) ব্যাধি রয়েছে এবং যাদের অন্তর (কুফরী ও বৈরিতার কারণে) কঠিন। আর নিশ্চয় যালিমেরা প্রচন্ড বিরোধিতায় লিপ্ত রয়েছে।
وَّ لِیَعۡلَمَ الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡعِلۡمَ اَنَّہُ الۡحَقُّ مِنۡ رَّبِّکَ فَیُؤۡمِنُوۡا بِہٖ فَتُخۡبِتَ لَہٗ قُلُوۡبُہُمۡ ؕ وَ اِنَّ اللّٰہَ لَہَادِ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِلٰی صِرَاطٍ مُّسۡتَقِیۡمٍ ﴿۵۴﴾
কানযুল ঈমান
৫৪. এবং এ জন্য যে, জানতে পারে ওই সব লোকও, যারা জ্ঞান লাভ করেছে যে, তা আপনার রবের নিকট থেকে সত্য; অতঃপর তারা যেন সেটার উপর ঈমান আনে, অতঃপর সেটার জন্য ঝুকে যায় তাদের অন্তরসমূহ; এবং নিশ্চয় আল্লাহ্ ঈমানদারদেরকে সরল পথে পরিচালনাকারী।
ইরফানুল কুরআন
৫৪. এবং এজন্যেও যে, যাদেরকে (বিশুদ্ধ) জ্ঞান দেয়া হয়েছে তারা যেন জানতে পারে যে, এটিই (প্রত্যাদেশ, যা পয়গম্বর তিলাওয়াত করেছেন) আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে সত্যের উপর (ভিত্তিশীল)। সুতরাং তারা এর উপর ঈমান আনয়ন করে (শয়তানের কুমন্ত্রণাকে প্রত্যাখান করে) এবং তাদের অন্তর তাঁর (অর্থাৎ তাদের প্রতিপালকের) প্রতি বিনয়ী হয়। আর আল্লাহ্ মুমিনগণকে অবশ্যই সরল পথের দিকে হেদায়াতদানকারী।
وَ لَا یَزَالُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا فِیۡ مِرۡیَۃٍ مِّنۡہُ حَتّٰی تَاۡتِیَہُمُ السَّاعَۃُ بَغۡتَۃً اَوۡ یَاۡتِیَہُمۡ عَذَابُ یَوۡمٍ عَقِیۡمٍ ﴿۵۵﴾
কানযুল ঈমান
৫৫. এবং কাফিরগণ তাতে সর্বদা সন্দেহের মধ্যে থাকবে, যতক্ষণ না তাদের উপর ক্বিয়ামত এসে পড়বে আকস্মিকভাবে, অথবা তাদের উপর এমন দিনের শাস্তি এসে পড়বে, যার ফল তাদের জন্য মোটেই ভালো হবে না।
ইরফানুল কুরআন
৫৫. আর কাফেরেরা সর্বদা এ (কুরআনের) বিষয়ে শেষ মুহুর্ত অবধি সন্দেহে পতিত থাকবে, যতদিন না অকস্মাৎ তাদের উপর কিয়ামত এসে পড়ে অথবা সেদিনের শাস্তি এসে পড়ে যা থেকে মুক্তির কোনো সম্ভাবনা নেই।
اَلۡمُلۡکُ یَوۡمَئِذٍ لِّلّٰہِ ؕ یَحۡکُمُ بَیۡنَہُمۡ ؕ فَالَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ فِیۡ جَنّٰتِ النَّعِیۡمِ ﴿۵۶﴾
কানযুল ঈমান
৫৬. বাদশাহী ওই দিনে একমাত্র আল্লাহ্রই; তিনি তাদের মধ্যে ফয়সালা করে দেবেন; সুতরাং যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তারা শান্তির কাননসমূহে থাকবে।
ইরফানুল কুরআন
৫৬. সে দিনের রাজত্ব কেবল আল্লাহ্রই হবে। তিনিই তাদের মাঝে ফায়সালা করবেন। অতঃপর যারা ঈমান আনে এবং নেক আমল করে তারা (বসবাস করতে) থাকবে নিয়ামতের বাগানে।
وَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا وَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا فَاُولٰٓئِکَ لَہُمۡ عَذَابٌ مُّہِیۡنٌ ﴿۵۷﴾
কানযুল ঈমান
৫৭. আর যারা কুফর করেছে এবং আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি।
ইরফানুল কুরআন
৫৭. আর যারা সত্য প্রত্যাখ্যান করে এবং আমাদের আয়াতসমূহকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করে তাদের জন্যে থাকবে লাঞ্ছনাকর শাস্তি।
وَ الَّذِیۡنَ ہَاجَرُوۡا فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ ثُمَّ قُتِلُوۡۤا اَوۡ مَاتُوۡا لَیَرۡزُقَنَّہُمُ اللّٰہُ رِزۡقًا حَسَنًا ؕ وَ اِنَّ اللّٰہَ لَہُوَ خَیۡرُ الرّٰزِقِیۡنَ ﴿۵۸﴾
কানযুল ঈমান
৫৮. এবং ওই সব লোক যারা আল্লাহ্র পথে আপন ঘরবাড়ী ছেড়েছে অতঃপর নিহত হয়েছে অথবা মারা গেছে, তবে আল্লাহ্ অবশ্যই তাদেরকে উৎকৃষ্ট জীবিকা দান করবেন এবং নিশ্চয় আল্লাহ্র (প্রদত্ত) জীবিকা সর্বাপেক্ষা উৎকৃষ্ট।
ইরফানুল কুরআন
৫৮. আর যারা আল্লাহ্র পথে (স্বদেশ ছেড়ে) হিজরত করেছে, অতঃপর তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে অথবা (সত্য পথের বিপদ-আপাদ সহ্য করে) মৃত্যুবরণ করেছে, তাদেরকে আল্লাহ্ অবশ্যই উৎকৃষ্ট জীবিকা (অর্থাৎ পরকালীন অনুগ্রহ) দান করবেন। আর আল্লাহ্ সবচেয়ে উত্তম রিযিকদাতা।
لَیُدۡخِلَنَّہُمۡ مُّدۡخَلًا یَّرۡضَوۡنَہٗ ؕ وَ اِنَّ اللّٰہَ لَعَلِیۡمٌ حَلِیۡمٌ ﴿۵۹﴾
কানযুল ঈমান
৫৯. অবশ্যই তাদেরকে এমন স্থানে নিয়ে যাবেন যাকে তারা পছন্দ করবে; এবং নিশ্চয় আল্লাহ্ জ্ঞানবান, সহনশীল।
ইরফানুল কুরআন
৫৯. তিনি নিশ্চয়ই তাদেরকে এমন স্থানে (অর্থাৎ মাকামে রিদ্বওয়ান বা সন্তুষ্টির স্থানে) প্রবেশ করাবেন যাতে তারা সন্তুষ্ট হবে। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সম্যক অবগত, ধৈর্যশীল।
ذٰلِکَ ۚ وَ مَنۡ عَاقَبَ بِمِثۡلِ مَا عُوۡقِبَ بِہٖ ثُمَّ بُغِیَ عَلَیۡہِ لَیَنۡصُرَنَّہُ اللّٰہُ ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَعَفُوٌّ غَفُوۡرٌ ﴿۶۰﴾
কানযুল ঈমান
৬০. কথা হচ্ছে এই যে প্রতিশোধ গ্রহণ করে যেমনি কষ্ট দেওয়া হয়েছিলো, অতঃপর তার প্রতি অত্যাচার করা হয়, তবে নিশ্চয় আল্লাহ্ তাকে সাহায্য করবেন; নিশ্চয় আল্লাহ্ পাপ মোচনকারী; ক্ষমাশীল।
ইরফানুল কুরআন
৬০. (নির্দেশ) এটিই, আর যে ব্যক্তি এতটুকুই প্রতিশোধ নিয়েছে, যতটুকু তাকে কষ্ট দেয়া হয়েছিল; অতঃপর সে পুনরায় অত্যাচারিত হলে আল্লাহ্ অবশ্যই তাকে সাহায্য করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ মার্জনাকারী, মহাক্ষমাশীল।
ذٰلِکَ بِاَنَّ اللّٰہَ یُوۡلِجُ الَّیۡلَ فِی النَّہَارِ وَ یُوۡلِجُ النَّہَارَ فِی الَّیۡلِ وَ اَنَّ اللّٰہَ سَمِیۡعٌۢ بَصِیۡرٌ ﴿۶۱﴾
কানযুল ঈমান
৬১. এটা এ জন্য যে, আল্লাহ্ তা’আলা রাতকে প্রবেশ করান দিনের অংশে আর দিনকে প্রবেশ করান রাতের অংশে; এবং এ জন্য যে, আল্লাহ্ শুনেন, দেখেন।
ইরফানুল কুরআন
৬১. তা এ কারণে যে, আল্লাহ্ রাতকে দিনে প্রবেশ করান, আর দিনকে রাতে প্রবেশ করান। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।
ذٰلِکَ بِاَنَّ اللّٰہَ ہُوَ الۡحَقُّ وَ اَنَّ مَا یَدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِہٖ ہُوَ الۡبَاطِلُ وَ اَنَّ اللّٰہَ ہُوَ الۡعَلِیُّ الۡکَبِیۡرُ ﴿۶۲﴾
কানযুল ঈমান
৬২. এটা এ জন্য যে, আল্লাহ্ই সত্য এবং তিনি ব্যতীত তারা যার পূজা করছে তাই অসত্য। এবং এজন্য যে, আল্লাহ্ই সমুচ্চ, মহান।
ইরফানুল কুরআন
৬২. তা এ কারণে যে, আল্লাহ্ই সত্য, আর নিশ্চয়ই তারা (কাফেরেরা) তাঁকে ব্যতীত যা কিছুর(ই) পূজা করে তা মিথ্যা। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ্ খুবই সমুন্নত, সুমহান।
اَلَمۡ تَرَ اَنَّ اللّٰہَ اَنۡزَلَ مِنَ السَّمَآءِ مَآءً ۫ فَتُصۡبِحُ الۡاَرۡضُ مُخۡضَرَّۃً ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَطِیۡفٌ خَبِیۡرٌ ﴿ۚ۶۳﴾
কানযুল ঈমান
৬৩. তুমি কি দেখো নি আল্লাহ্ আসমান থেকে বারি বর্ষণ করেছেন, আর সকালে যমীন সবুজ-শ্যামল হয়ে গেছে নিশ্চয় আল্লাহ্ পবিত্র, পরিজ্ঞাত।
ইরফানুল কুরআন
৬৩. আপনি কি দেখেন নি যে, আল্লাহ্ আসমান থেকে বারি বর্ষণ করেন, অতঃপর পৃথিবী সবুজ-শ্যামল হয়ে উঠে। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ অসীম দয়ালু (এবং) অত্যন্ত পরিজ্ঞাত।
لَہٗ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الۡاَرۡضِ ؕ وَ اِنَّ اللّٰہَ لَہُوَ الۡغَنِیُّ الۡحَمِیۡدُ ﴿۶۴﴾
কানযুল ঈমান
৬৪. তারই সম্পদ যা কিছু আসমানসমূহে রয়েছে এবং যা কিছু ভূ-পৃষ্ঠে রয়েছে এবং আল্লাহ্ই অভাবমুক্ত, সমস্ত প্রশংসায় প্রশংসিত।
ইরফানুল কুরআন
৬৪. যা কিছু রয়েছে আকাশমন্ডলীতে এবং যা কিছু রয়েছে পৃথিবীতে তা তাঁরই। আর আল্লাহ্ই অমুখাপেক্ষী, সকল প্রশংসার অধিকারী।
اَلَمۡ تَرَ اَنَّ اللّٰہَ سَخَّرَ لَکُمۡ مَّا فِی الۡاَرۡضِ وَ الۡفُلۡکَ تَجۡرِیۡ فِی الۡبَحۡرِ بِاَمۡرِہٖ ؕ وَ یُمۡسِکُ السَّمَآءَ اَنۡ تَقَعَ عَلَی الۡاَرۡضِ اِلَّا بِاِذۡنِہٖ ؕ اِنَّ اللّٰہَ بِالنَّاسِ لَرَءُوۡفٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۶۵﴾
কানযুল ঈমান
৬৫. তুমি কি লক্ষ্য করো নি যে, আল্লাহ্ তোমাদের বশীভূত করে দিয়েছেন যা কিছু পৃথিবীতে রয়েছে এবং নৌযানসমূহ, সেগুলো সমুদ্রে তার নির্দেশে বিচরণ করে এবং তিনি স্থির রেখেছেন আসমানকে, যাতে পৃথিবীর উপর আপতিত না হয়, তার নির্দেশ ব্যতীত। নিশ্চয় আল্লাহ্ মানুষের প্রতি বড় দয়ার্দ্র, দয়ালু।
ইরফানুল কুরআন
৬৫. তুমি কি দেখোনি, আল্লাহ্ তোমাদের অধীনস্থ করে দিয়েছেন যা কিছু পৃথিবীতে আছে এবং তাঁর নিদের্শে সমুদ্রে বিচরণশীল নৌযানকেও? আর আকাশকে (অর্থাৎ শূণ্যমন্ডল ও বায়ূমন্ডলকে এক মহাজাগতিক পদ্ধতির মাধ্যমে) স্থির রেখেছেন পৃথিবীর উপর পতিত হওয়া থেকে, কেবল তাঁরই অনুমতিতে; (যখন তিনি চাইবেন তখন পরস্পরের মধ্যে সংঘর্ষ সৃষ্টি হবে)। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সমস্ত মানুষের প্রতি অনুগ্রহশীল, অসীম দয়ালু।
وَ ہُوَ الَّذِیۡۤ اَحۡیَاکُمۡ ۫ ثُمَّ یُمِیۡتُکُمۡ ثُمَّ یُحۡیِیۡکُمۡ ؕ اِنَّ الۡاِنۡسَانَ لَکَفُوۡرٌ ﴿۶۶﴾
কানযুল ঈমান
৬৬. এবং তিনিই হন, যিনি তোমাদেরকে জীবিত করেছেন; অতঃপর তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন; অতঃপর তোমাদেরকে পুনর্জীবিত করবেন। নিশ্চয় মানুষ বড় অকৃতজ্ঞ।
ইরফানুল কুরআন
৬৬. আর তিনিই তোমাদেরকে জীবন দিয়েছেন, অতঃপর তোমাদের মৃত্যু ঘটান, অতঃপর তোমাদেরকে (দ্বিতীয়বার) জীবন দিবেন। নিশ্চয়ই মানুষ বড়ই অকৃতজ্ঞ।
لِکُلِّ اُمَّۃٍ جَعَلۡنَا مَنۡسَکًا ہُمۡ نَاسِکُوۡہُ فَلَا یُنَازِعُنَّکَ فِی الۡاَمۡرِ وَ ادۡعُ اِلٰی رَبِّکَ ؕ اِنَّکَ لَعَلٰی ہُدًی مُّسۡتَقِیۡمٍ ﴿۶۷﴾
কানযুল ঈমান
৬৭. প্রত্যেক উম্মতের জন্য আমি ইবাদত পদ্ধতি তৈরী করে দিয়েছি; যাতে তারা সেটার অনুসরণ করে; অতঃপর তারা কখনো যেন আপনার সাথে এ ব্যাপারে বিতর্ক না করে আর আপন রবের দিকে আহ্বান করো নিশ্চয় আপনি সরল পথে প্রতিষ্ঠিত।
ইরফানুল কুরআন
৬৭. আমরা প্রত্যেক উম্মতের জন্যে (শরীয়তের বিধান অথবা ইবাদত ও কুরবানীর) এক পথ নির্ধারণ করে দিয়েছি। তাদের এ পথেই চলা উচিত। সুতরাং তারা আপনার সাথে কখনো (আল্লাহ্র) বিধানের ব্যাপারে যেন ঝগড়া না করে। আর আপনি আপনার প্রতিপালকের দিকে আহ্বান করতে থাকুন। নিশ্চয়ই আপনি তো সরল হেদায়াতের (পথের) উপর রয়েছেন।
وَ اِنۡ جٰدَلُوۡکَ فَقُلِ اللّٰہُ اَعۡلَمُ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۶۸﴾
কানযুল ঈমান
৬৮. এবং যদি তারা আপনার সাথে বিতর্ক করে, তবে আপনি বলে দিন, ‘আল্লাহ্ তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে সম্যক অবহিত।
ইরফানুল কুরআন
৬৮. যদি তারা আপনার সাথে ঝগড়া করে, তবে বলে দিন, ‘আল্লাহ্ অধিকতর অবগত, যা কিছু তোমরা করছো’।
اَللّٰہُ یَحۡکُمُ بَیۡنَکُمۡ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ فِیۡمَا کُنۡتُمۡ فِیۡہِ تَخۡتَلِفُوۡنَ ﴿۶۹﴾
কানযুল ঈমান
৬৯. আল্লাহ্ তোমাদের মধ্যে ফয়সালা করে দেবেন ক্বিয়ামতের দিন যে বিষয়ে তোমরা মতভেদ করছো;
ইরফানুল কুরআন
৬৯. আল্লাহ্ তোমাদের মাঝে কিয়ামতের দিন সেসব বিষয়ের ফায়সালা করবেন, যাতে তোমরা মতবিরোধ করতে।’
اَلَمۡ تَعۡلَمۡ اَنَّ اللّٰہَ یَعۡلَمُ مَا فِی السَّمَآءِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ اِنَّ ذٰلِکَ فِیۡ کِتٰبٍ ؕ اِنَّ ذٰلِکَ عَلَی اللّٰہِ یَسِیۡرٌ ﴿۷۰﴾
কানযুল ঈমান
৭০. তুমি কি জানো নি যে, আল্লাহ্ জানেন যা কিছু আসমানসমূহ ও যমীনে রয়েছে? নিশ্চয় এসব কিছু একটি কিতাবে রয়েছে। নিশ্চয় এটা আল্লাহ্র নিকট সহজ।
ইরফানুল কুরআন
৭০. তুমি কি জানো না যে, আল্লাহ্ সে সকল কিছুই জানেন, যা আসমান এবং জমিনে রয়েছে। নিশ্চয়ই এ সকলই (লিখিত) রয়েছে (লাওহে মাহফুয) কিতাবে। অবশ্যই এসব কিছু আল্লাহ্র জন্যে (খুবই) সহজ।
وَ یَعۡبُدُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ مَا لَمۡ یُنَزِّلۡ بِہٖ سُلۡطٰنًا وَّ مَا لَیۡسَ لَہُمۡ بِہٖ عِلۡمٌ ؕ وَ مَا لِلظّٰلِمِیۡنَ مِنۡ نَّصِیۡرٍ ﴿۷۱﴾
কানযুল ঈমান
৭১. এবং তারা আল্লাহ্ ব্যতীত এমন কিছুর পূজা করে, যার কোন দলীল তিনি অবতীর্ণ করেন নি, এবং এমন কিছুকেও, যেগুলো সম্বন্ধে নিজেদেরও কোন জ্ঞান নেই; আর যালিমদের কোন সাহায্যকারী নেই।
ইরফানুল কুরআন
৭১. আর তারা আল্লাহ্ ব্যতীত যেসব (মূর্তি)-এর উপাসনা করে সেসবের কোনো দলিল তিনি অবতীর্ণ করেননি এবং তাদের এ (মূর্তিপূজার পরিণতি) সম্পর্কে কোনো জ্ঞানও নেই। আর (কিয়ামতের দিন) যালিমদের কোনো সাহায্যকারী থাকবে না।
وَ اِذَا تُتۡلٰی عَلَیۡہِمۡ اٰیٰتُنَا بَیِّنٰتٍ تَعۡرِفُ فِیۡ وُجُوۡہِ الَّذِیۡنَ کَفَرُوا الۡمُنۡکَرَ ؕ یَکَادُوۡنَ یَسۡطُوۡنَ بِالَّذِیۡنَ یَتۡلُوۡنَ عَلَیۡہِمۡ اٰیٰتِنَا ؕ قُلۡ اَفَاُنَبِّئُکُمۡ بِشَرٍّ مِّنۡ ذٰلِکُمۡ ؕ اَلنَّارُ ؕ وَعَدَہَا اللّٰہُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا ؕ وَ بِئۡسَ الۡمَصِیۡرُ ﴿۷۲﴾
কানযুল ঈমান
৭২. এবং যখন তাদের সম্মুখে আমার সমুজ্জ্বল আয়াতসমূহ পাঠ করা হয়, তখন আপনি তাদের চেহারায় অসন্তোষের লক্ষণ দেখতে পাবেন, যারা কুফর করেছে। এ কথা সন্নিকটে যে, তারা আক্রমণ করবে ওই সব লোককে, যারা আমার আয়াতসমূহ তাদের সম্মুখে পাঠ করে। আপনি বলে দিন, ‘তবে কি আমি বলে দেবো যা তোমাদের এ অবস্থা থেকেও মন্দতর? তা হচ্ছে আগুন! আল্লাহ্ সেটার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কাফিরদেরকে এবং প্রত্যাবর্তনের কেমনই মন্দ জায়গা!
ইরফানুল কুরআন
৭২. আর যখন এদের (এ কাফেরদের) নিকট আমাদের সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হয়, (তখন) আপনি এ কাফেরদের চেহারায় অসন্তোষ (ও বিরক্তির চিহ্ন) দেখতে পাবেন। মনে হয় এরা অচিরেই তাদের উপর আক্রমণ করে বসবে যারা তাদেরকে আমার আয়াতসমূহ পাঠ করে শুনাচ্ছে। আপনি বলে দিন, ‘(হে অস্থিরচিত্ত কাফেরেরা) আমি কি তোমাদেরকে এর চেয়েও কষ্টদায়ক কিছু অবগত করবো?’ (তা হলো দোযখের) আগুন, আল্লাহ্ কাফেরদেরকে যার অঙ্গীকার করে রেখেছেন। আর তা খুবই নিকৃষ্ট ঠিকানা।
یٰۤاَیُّہَا النَّاسُ ضُرِبَ مَثَلٌ فَاسۡتَمِعُوۡا لَہٗ ؕ اِنَّ الَّذِیۡنَ تَدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ لَنۡ یَّخۡلُقُوۡا ذُبَابًا وَّ لَوِ اجۡتَمَعُوۡا لَہٗ ؕ وَ اِنۡ یَّسۡلُبۡہُمُ الذُّبَابُ شَیۡئًا لَّا یَسۡتَنۡقِذُوۡہُ مِنۡہُ ؕ ضَعُفَ الطَّالِبُ وَ الۡمَطۡلُوۡبُ ﴿۷۳﴾
কানযুল ঈমান
৭৩. হে মানবকূল! একটা উপমা দেওয়া হচ্ছে, সেটা কান লাগিয়ে শুনো ওইগুলোর, যেগুলোর তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত পূজা করছো, একটা মাছিও সৃষ্টি করতে পারবে না যদিও তারা সবাই এ উদ্দেশ্যে একত্রিত হয়ে যায়; এবং যদি মাছি তাদের নিকট থেকে কিছু ছিনিয়ে নিয়ে যায় তবে তাও সেটার নিকট থেকে উদ্ধার করতে পারবে না। কতই দুর্বল প্রার্থনাকারী এবং সেও, যার নিকট প্রার্থনা করেছে!
ইরফানুল কুরআন
৭৩. হে মানবজাতি! এক দৃষ্টান্ত বর্ণনা করা হচ্ছে, সুতরাং তা মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করো, নিশ্চয় আল্লাহ্ ব্যতীত যেগুলোর পূজা তোমরা করছো, সেসব (মুর্তি) কখনো একটি মাছিও সৃষ্টি করতে পারে না, যদিও তারা সকলে এ (কাজের) জন্যে একত্রিত হয়। আর যদি তাদের নিকট থেকে মাছি কোনো কিছু ছিনিয়ে নিয়ে যায় (তবে) তারা তা থেকে ছাড়িয়ে(ও) আনতে পারে না। কতোই না অক্ষম যাঞ্চাকারী (পূজারী) এবং (সে উপাস্য) যার নিকট যাঞ্চা করা হয়।
مَا قَدَرُوا اللّٰہَ حَقَّ قَدۡرِہٖ ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَقَوِیٌّ عَزِیۡزٌ ﴿۷۴﴾
কানযুল ঈমান
৭৪. তারা আল্লাহ্র মর্যাদা উপলব্ধি করে নি যেমন করা উচিত ছিলো। নিশ্চয় আল্লাহ্ ক্ষমতাবান, পরাক্রমশালী।
ইরফানুল কুরআন
৭৪. এ সকল (কাফের) আল্লাহ্কে মর্যাদা প্রদান করেনি, যেরূপ মর্যাদা তাঁর প্রাপ্য। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বড়ই ক্ষমতাবান, (সকল কিছুর উপর) মহাপরাক্রমশালী।
اَللّٰہُ یَصۡطَفِیۡ مِنَ الۡمَلٰٓئِکَۃِ رُسُلًا وَّ مِنَ النَّاسِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ سَمِیۡعٌۢ بَصِیۡرٌ ﴿ۚ۷۵﴾
কানযুল ঈমান
৭৫. আল্লাহ্ মনোনীত করে নেন ফিরিশ্তাদের মধ্য থেকে রসূল এবং মানুষের মধ্য থেকেও। নিশ্চয় আল্লাহ্ শুনেন, দেখেন।
ইরফানুল কুরআন
৭৫. আল্লাহ্ ফেরেশতাদের মধ্য থেকে এবং মানুষের মধ্য থেকে (নিজের) বার্তাবাহক মনোনীত করেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।
یَعۡلَمُ مَا بَیۡنَ اَیۡدِیۡہِمۡ وَ مَا خَلۡفَہُمۡ ؕ وَ اِلَی اللّٰہِ تُرۡجَعُ الۡاُمُوۡرُ ﴿۷۶﴾
কানযুল ঈমান
৭৬. তিনি জানেন যা তাদের সম্মুখে রয়েছে এবং যা কিছু তাদের পেছনে রয়েছে; আর সমস্ত কাজের প্রত্যাবর্তন আল্লাহ্র দিকে।
ইরফানুল কুরআন
৭৬. তিনি সেসব (কিছু সম্যক) অবগত, যা তাদের সম্মুখে এবং যা তাদের পশ্চাতে রয়েছে। আর সকল কর্ম তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তিত হয়।
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا ارۡکَعُوۡا وَ اسۡجُدُوۡا وَ اعۡبُدُوۡا رَبَّکُمۡ وَ افۡعَلُوا الۡخَیۡرَ لَعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ ﴿ۚٛ۷۷﴾
কানযুল ঈমান
৭৭. হে ঈমানদারগণ! রুকূ ও সাজদা করো এবং আপন রবের বন্দেগী করো আর সৎকর্ম করো এ আশায় যে, তোমরা সাফল্য লাভ করবে।
ইরফানুল কুরআন
৭৭. হে ঈমানদারগণ! তোমরা রুকু করতে থাকো, সেজদা করতে থাকো এবং তোমাদের প্রতিপালকের ইবাদত করতে থাকো ও (অন্যান্য) নেক কাজ করতে থাকো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।
وَ جَاہِدُوۡا فِی اللّٰہِ حَقَّ جِہَادِہٖ ؕ ہُوَ اجۡتَبٰىکُمۡ وَ مَا جَعَلَ عَلَیۡکُمۡ فِی الدِّیۡنِ مِنۡ حَرَجٍ ؕ مِلَّۃَ اَبِیۡکُمۡ اِبۡرٰہِیۡمَ ؕ ہُوَ سَمّٰىکُمُ الۡمُسۡلِمِیۡنَ ۬ۙ مِنۡ قَبۡلُ وَ فِیۡ ہٰذَا لِیَکُوۡنَ الرَّسُوۡلُ شَہِیۡدًا عَلَیۡکُمۡ وَ تَکُوۡنُوۡا شُہَدَآءَ عَلَی النَّاسِ ۚۖ فَاَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ وَ اٰتُوا الزَّکٰوۃَ وَ اعۡتَصِمُوۡا بِاللّٰہِ ؕ ہُوَ مَوۡلٰىکُمۡ ۚ فَنِعۡمَ الۡمَوۡلٰی وَ نِعۡمَ النَّصِیۡرُ ﴿۷۸﴾
কানযুল ঈমান
৭৮. এবং আল্লাহ্র পথে জিহাদ করো যেভাবে জিহাদ করা উচিত। তিনি তোমাদেরকে মনোনীত করেছেন এবং তোমাদের উপর দ্বীনের ব্যাপারে কোন সংকীর্ণতা রাখেন নি; তোমাদের পিতা ইব্রাহীম এর দ্বীন; আল্লাহ্ তোমাদের নাম ‘মুসলমান’ রেখেছেন পূর্ববর্তী কিতাবসমূহে এবং এ ক্বোরআনে, যাতে রসূল তোমাদের রক্ষক ও সাক্ষী হন এবং তোমরা অন্যান্য লোকদের উপর সাক্ষ্য দাও। সুতরাং নামায ক্বায়েম রাখো, যাকাত প্রদান করো এবং আল্লাহ্র রজ্জুকে শক্তভাবে আকড়ে ধরো। তিনি তোমাদের অভিভাবক এবং কতই উত্তম সাহায্যকারী!
ইরফানুল কুরআন
৭৮. আর (পূর্ণ ভালোবাসা ও আনুগত্যের সাথে তাঁর দ্বীনের প্রসার ও প্রতিষ্ঠায়) আল্লাহ্র পথে সংগ্রাম করো, যেভাবে সংগ্রাম করা সমীচীন। তিনি তোমাদেরকে মনোনীত করেছেন আর তিনি ধর্মের বিষয়ে তোমাদের উপর কোনো কষ্ট বা সংকট রাখেননি। (এটিই) তোমাদের পিতা ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)-এঁর দ্বীন। তিনি (আল্লাহ্) তোমাদের নামকরণ করেছেন মুসলমান, এর পূর্বে (কিতাবে)ও আর এতেও (অর্থাৎ কুরআনেও), যাতে এ (শেষ যামানার) রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম) তোমাদের জন্যে সাক্ষী হন এবং তোমরা সাক্ষী হও মানব জাতির জন্যে। অতঃপর (এ মর্যাদায় সফলভাবে অধিষ্টিত থাকার জন্যে) তোমরা নামায প্রতিষ্ঠা করো, যাকাত দাও এবং আল্লাহ্ (তা’আলার আলিঙ্গন)-কে মজবুতভাবে ধরে রাখো। তিনিই তোমাদের সাহায্যকারী (ও কার্যসম্পাদনকারী)। অতঃপর তিনি কতোই না উত্তম কার্যসম্পাদনকারী এবং কতোই না উত্তম সাহায্যকারী!