بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
কানযুল ঈমান
০. আল্লাহ্র নামে আরম্ভ, যিনি পরম দয়ালু, করুণাময় (১)
ইরফানুল কুরআন
০. আল্লাহর নামে শুরু, যিনি পরম করুণাময়, সতত অসীম দয়ালু।
یُسَبِّحُ لِلّٰہِ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الۡاَرۡضِ الۡمَلِکِ الۡقُدُّوۡسِ الۡعَزِیۡزِ الۡحَکِیۡمِ ﴿۱﴾
কানযুল ঈমান
১. আল্লাহ্র পবিত্রতা ঘোষণা করছে যা কিছু আস্মানসমূহে রয়েছে এবং যা কিছু যমীনে রয়েছে, যিনি বাদশাহ, পূর্ণ পবিত্রতাময়, মহা সম্মানিত, প্রজ্ঞাময়।
ইরফানুল কুরআন
১. যা কিছু আকাশমন্ডলীতে এবং যা কিছু পৃথিবীতে রয়েছে (সবই) পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে আল্লাহ্র, (যিনি প্রকৃত) বাদশাহ, (সকল অসম্পূর্ণতা ও ত্রুটি থেকে) পবিত্র, সম্মানিত ও আধিপত্যশীল, প্রজ্ঞাবান।
ہُوَ الَّذِیۡ بَعَثَ فِی الۡاُمِّیّٖنَ رَسُوۡلًا مِّنۡہُمۡ یَتۡلُوۡا عَلَیۡہِمۡ اٰیٰتِہٖ وَ یُزَکِّیۡہِمۡ وَ یُعَلِّمُہُمُ الۡکِتٰبَ وَ الۡحِکۡمَۃَ ٭ وَ اِنۡ کَانُوۡا مِنۡ قَبۡلُ لَفِیۡ ضَلٰلٍ مُّبِیۡنٍ ۙ﴿۲﴾
কানযুল ঈমান
২. তিনিই, যিনি উম্মী লোকদের মধ্যে তাদেরই মধ্য থেকে একজন রসূল প্রেরণ করেন যেন তাদের নিকট তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করেন, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং তাদেরকে কিতাব ও হিকমতের জ্ঞান দান করেন আর নিশ্চয় নিশ্চয় তারা ইতোপূর্বে সুস্পষ্ট পথভ্রষ্টতার মধ্যে ছিলো;
ইরফানুল কুরআন
২. তিনিই সেই সত্তা, যিনি উম্মীদের মাঝে তাদের মধ্য থেকে একজন (সম্মানিত) রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামকে) প্রেরণ করেছেন। তিনি তাদের নিকট আবৃত্তি করেন তাঁর আয়াতসমূহ এবং তাদেরকে (বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণভাবে) পরিশুদ্ধ করেন, আর তাদেরকে শিক্ষা দেন কিতাব ও হিকমত। বস্তুত তারা তাঁর (সাদর আগমনের) পূর্বে ছিল ঘোর পথভ্রষ্টতায় নিমজ্জিত।
وَّ اٰخَرِیۡنَ مِنۡہُمۡ لَمَّا یَلۡحَقُوۡا بِہِمۡ ؕ وَ ہُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ ﴿۳﴾
কানযুল ঈমান
৩. এবং তাদের মধ্য থেকে অন্যান্যদেরকে পবিত্র করেন এবং জ্ঞান দান করেন তাদেরকে, যারা ওই পূর্ববর্তীদের সাথে মিলিত হয় নি; এবং তিনিই সম্মান ও প্রজ্ঞাময়।
ইরফানুল কুরআন
৩. আর তাদের মধ্যে অন্যান্যদের জন্যেও (পরিশুদ্ধি ও শিক্ষার জন্যে প্রেরণ করেছেন এ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামকে), যারা এখনো এদের সাথে মিলিত হয়নি (অর্থাৎ তাদের পরে আগমন করে বর্তমান সময়ে যারা বিদ্যমান)। আর তিনি মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাবান।
ذٰلِکَ فَضۡلُ اللّٰہِ یُؤۡتِیۡہِ مَنۡ یَّشَآءُ ؕ وَ اللّٰہُ ذُو الۡفَضۡلِ الۡعَظِیۡمِ ﴿۴﴾
কানযুল ঈমান
৪. এটা আল্লাহ্র অনুগ্রহ; যাকে চান দান করেন, এবং আল্লাহ্ বড় অনুগ্রহশীল।
ইরফানুল কুরআন
৪. তা আল্লাহ্রই অনুগ্রহ (অর্থাৎ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়ালিহী ওয়াসাল্লামের আগমন এবং তাঁর অনুগ্রহ ও হেদায়াত), যাকে ইচ্ছা তিনি তা দান করেন। আর আল্লাহ্ মহাঅনুগ্রহশীল।
مَثَلُ الَّذِیۡنَ حُمِّلُوا التَّوۡرٰىۃَ ثُمَّ لَمۡ یَحۡمِلُوۡہَا کَمَثَلِ الۡحِمَارِ یَحۡمِلُ اَسۡفَارًا ؕ بِئۡسَ مَثَلُ الۡقَوۡمِ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِ اللّٰہِ ؕ وَ اللّٰہُ لَا یَہۡدِی الۡقَوۡمَ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۵﴾
কানযুল ঈমান
৫. তাদের দৃষ্টান্ত, যাদের উপর তাওরীত অর্পণ করা হয়েছিলো, অতঃপর তারা সেটার নির্দেশ পালন করে নি, গর্দভের ন্যায়, যা পিঠের উপর কিতাবের বোঝা বহন করে, কতই মন্দ দৃষ্টান্ত ওই সমস্ত লোকের, যারা আল্লাহ্র আয়াতগুলোকে অস্বীকার করেছে এবং আল্লাহ্ যালিমদেরকে সৎপথ প্রদান করেন না।
ইরফানুল কুরআন
৫. যাদেরকে তাওরাতের (বিধান ও শিক্ষার) দায়িত্বভার অর্পণ করা হয়েছিল, অতঃপর তারা এর অনুসরণ করেনি (অর্থাৎ এতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের আলোচনা বিদ্যমান ছিল, কিন্তু তারা তাতে বিশ্বাস স্থাপন করেনি), এদের দৃষ্টান্ত পুস্তক বহনকারী গাধা। যারা আল্লাহ্র আয়াতসমূহকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছে তাদের দৃষ্টান্ত কতোই না নিকৃষ্ট। আর আল্লাহ্ যালিম সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেন না।
قُلۡ یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ ہَادُوۡۤا اِنۡ زَعَمۡتُمۡ اَنَّکُمۡ اَوۡلِیَآءُ لِلّٰہِ مِنۡ دُوۡنِ النَّاسِ فَتَمَنَّوُا الۡمَوۡتَ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ ﴿۶﴾
কানযুল ঈমান
৬. আপনি বলুন, ‘হে ইহুদীগণ! যদি তোমাদের এ ধারণা হয় যে, তোমরাই বন্ধু, অন্যান্য লোকেরা নয়, তাহলে মৃত্যু কামনা করো! যদি তোমরা সত্যবাদী হও।
ইরফানুল কুরআন
৬. বলে দিন, ‘হে ইহুদীরা! যদি তোমরা মনে করো যে, সমস্ত মানবগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে তোমরাই আল্লাহ্র বন্ধু (অর্থাৎ আউলিয়া), তবে মৃত্যু কামনা করো, যদি তোমরা (নিজেদের ধারণা অনুযায়ী) সত্যবাদী হও।’ (কেননা তাঁর বন্ধুদের তো কবরে ও হাশরে কোনো দুঃখ ও দুশ্চিন্তা স্পর্শ করবে না।)
وَ لَا یَتَمَنَّوۡنَہٗۤ اَبَدًۢا بِمَا قَدَّمَتۡ اَیۡدِیۡہِمۡ ؕ وَ اللّٰہُ عَلِیۡمٌۢ بِالظّٰلِمِیۡنَ ﴿۷﴾
কানযুল ঈমান
৭. এবং তারা কখনো সেটার কামনা করবে না ওই সমস্ত কৃতকর্মের কারণে, যেগুলো তাদের হস্ত অগ্রে প্রেরণ করেছে। এবং আল্লাহ্ যালিমদের সম্বন্ধে জানেন।
ইরফানুল কুরআন
৭. আর এরা তা কখনোই কামনা করবে না, তারা যা অগ্রে প্রেরণ করেছিল তার কারণে (অর্থাৎ রাসূলকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করা এবং অস্বীকারের কারণে)। আল্লাহ্ যালিমদেরকে ভালোভাবেই জানেন।
قُلۡ اِنَّ الۡمَوۡتَ الَّذِیۡ تَفِرُّوۡنَ مِنۡہُ فَاِنَّہٗ مُلٰقِیۡکُمۡ ثُمَّ تُرَدُّوۡنَ اِلٰی عٰلِمِ الۡغَیۡبِ وَ الشَّہَادَۃِ فَیُنَبِّئُکُمۡ بِمَا کُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۸﴾
কানযুল ঈমান
৮. আপনি বলুন, ‘ওই মৃত্যু, যা থেকে তোমরা পলায়ন করো, তা তো নিশ্চয় তোমাদের সাথে সাক্ষাৎ করবে। অতঃপর তাঁর দিকে তোমাদেরকে ফেরানো হবে, যিনি অপ্রকাশ্য ও প্রকাশ্য সবকিছু জানেন, অতঃপর তিনি তোমাদেরকে বলে দেবেন যা তোমরা করেছিলে।
ইরফানুল কুরআন
৮. বলে দিন, ‘তোমরা যে মৃত্যু থেকে পলায়ন করো তা অবশ্যই তোমাদের সাথে সাক্ষাৎ করবে। অতঃপর তোমাদেরকে উপস্থিত করা হবে অদৃশ্য ও দৃশ্যের পরিজ্ঞাতা (প্রতিপালক)-এঁর নিকট। সুতরাং তিনি তোমাদেরকে অবগত করবেন যা কিছু তোমরা করতে।’
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا نُوۡدِیَ لِلصَّلٰوۃِ مِنۡ یَّوۡمِ الۡجُمُعَۃِ فَاسۡعَوۡا اِلٰی ذِکۡرِ اللّٰہِ وَ ذَرُوا الۡبَیۡعَ ؕ ذٰلِکُمۡ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۹﴾
কানযুল ঈমান
৯. হে ঈমানদারগণ, যখন নামাযের আযান হয় জুমু’আহ দিবসে, তখন আল্লাহ্র যিক্রের দিকে দৌড়াও এবং বেচা-কেনা পরিত্যাগ করো, এটা তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা জানো।
ইরফানুল কুরআন
৯. হে ঈমানদারগণ! জুম’আর দিন যখন (জুম’আর) নামাযের জন্যে আহ্বান করা হয়, তখন তৎক্ষণাৎ তোমরা আল্লাহ্র স্মরণে (অর্থাৎ খুতবাহ্ ও নামাযের পানে) দ্রুত ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় (অর্থাৎ ব্যবসা-বাণিজ্য) ত্যাগ করো। এটি তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা উপলব্ধি করো।
فَاِذَا قُضِیَتِ الصَّلٰوۃُ فَانۡتَشِرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ وَ ابۡتَغُوۡا مِنۡ فَضۡلِ اللّٰہِ وَ اذۡکُرُوا اللّٰہَ کَثِیۡرًا لَّعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ ﴿۱۰﴾
কানযুল ঈমান
১০. অতঃপর যখন নামায শেষ হলো, তখন ভূ-পৃষ্ঠে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহ্র অনুগ্রহ তালাশ করো আর আল্লাহ্কে খুব স্মরণ করো! এ আশায় যে, সাফল্য লাভ করবে।
ইরফানুল কুরআন
১০. অতঃপর নামায সম্পন্ন হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো এবং (পুনরায়) আল্লাহ্র অনুগ্রহ (অর্থাৎ রিযিক) অন্বেষণ করতে থাকো। আর আল্লাহ্কে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো, যাতে তোমরা সফলকাম হও।
وَ اِذَا رَاَوۡا تِجَارَۃً اَوۡ لَہۡوَۨا انۡفَضُّوۡۤا اِلَیۡہَا وَ تَرَکُوۡکَ قَآئِمًا ؕ قُلۡ مَا عِنۡدَ اللّٰہِ خَیۡرٌ مِّنَ اللَّہۡوِ وَ مِنَ التِّجَارَۃِ ؕ وَ اللّٰہُ خَیۡرُ الرّٰزِقِیۡنَ ﴿۱۱﴾
কানযুল ঈমান
১১. এবং যখন তারা কোন ব্যবসা অথবা খেলাধুলা দেখতে পেলো, তখন সেটার দিকে ছুটে গেলো আর আপনাকে (খোৎবার মধ্যে) দণ্ডায়মান রেখে গেলো। আপনি বলুন! ‘তা-ই, যা আল্লাহ্র নিকট রয়েছে, খেলাধুলা ও ব্যবসা অপেক্ষা উৎকৃষ্ট; এবং আল্লাহ্র রিয্ক্ব সর্বাপেক্ষা উত্তম।
ইরফানুল কুরআন
১১. আর যখন তারা কোনো ব্যবসা অথবা বিনোদন সামগ্রী দেখতে পেলো, তখন (নিজেদের চাহিদা এবং আর্থিক সংকটের কারণে) তারা আপনাকে (খুতবায়) দন্ডায়মান রেখে এর দিকে ছুটে গেল। বলে দিন, ‘যা কিছু আল্লাহ্র নিকট রয়েছে, তা ক্রীড়া-কৌতুক ও ব্যবসা অপেক্ষা উৎকৃষ্ট। আর আল্লাহ্ সর্বোত্তম রিযিক দাতা।’