بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
কানযুল ঈমান
০. আল্লাহ্র নামে আরম্ভ, যিনি পরম দয়ালু, করুণাময় (১)
ইরফানুল কুরআন
০. আল্লাহর নামে শুরু, যিনি পরম করুণাময়, সতত অসীম দয়ালু।
اَلۡحَمۡدُ لِلّٰہِ الَّذِیۡۤ اَنۡزَلَ عَلٰی عَبۡدِہِ الۡکِتٰبَ وَ لَمۡ یَجۡعَلۡ لَّہٗ عِوَجًا ؕ﴿ٜ۱﴾
কানযুল ঈমান
১. সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই, যিনি আপন বান্দার প্রতি কিতাব অবতীর্ণ করেছেন এবং সেটার মধ্যে আদৌ কোন বক্রতা রাখেন নি।
ইরফানুল কুরআন
১. সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্রই জন্যে, যিনি তাঁর (সর্বাধিক প্রিয় ও নৈকট্যবান) বান্দার প্রতি (মহান) কিতাব অবতীর্ণ করেছেন। আর এতে কোনো বক্রতা রাখেননি।
قَیِّمًا لِّیُنۡذِرَ بَاۡسًا شَدِیۡدًا مِّنۡ لَّدُنۡہُ وَ یُبَشِّرَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ الَّذِیۡنَ یَعۡمَلُوۡنَ الصّٰلِحٰتِ اَنَّ لَہُمۡ اَجۡرًا حَسَنًا ۙ﴿۲﴾
কানযুল ঈমান
২. ন্যায় বিচার সম্বলিত কিতাব; যাতে আল্লাহ্র কঠিন শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করেন এবং ঈমানদারদেরকে, যারা সৎকর্ম করে, সুসংবাদ দেন যে, তাদের উত্তম পুরস্কার রয়েছে;
ইরফানুল কুরআন
২. (একে) সরল এবং ভারসাম্যপূর্ণ (করেছেন), যাতে তিনি (অস্বীকারকারীদেরকে) আল্লাহ্র পক্ষ থেকে (আসন্ন) কঠিন শাস্তির ভীতি প্রদর্শন করেন এবং সুসংবাদ দান করেন মুমিনগণকে। যারা নেক কাজ করে তাদের জন্যে রয়েছে উৎকৃষ্ট প্রতিদান (জান্নাত);
مَّاکِثِیۡنَ فِیۡہِ اَبَدًا ۙ﴿۳﴾
কানযুল ঈমান
৩. যা’তে তারা স্থায়ীভাবে থাকবে;
ইরফানুল কুরআন
৩. যাতে তারা চিরকাল থাকবে।
وَّ یُنۡذِرَ الَّذِیۡنَ قَالُوا اتَّخَذَ اللّٰہُ وَلَدًا ٭﴿۴﴾
কানযুল ঈমান
৪. এবং ওই সব লোককে সতর্ক করবেন, যারা এ কথা বলে, ‘আল্লাহ্ আপন কোন সন্তান গ্রহণ করেছেন।
ইরফানুল কুরআন
৪. আর (এছাড়াও) সেসব লোকদেরকে সতর্ক করেন, যারা বলে যে, আল্লাহ্ (নিজের জন্যে) পুত্র গ্রহণ করেছেন।
مَا لَہُمۡ بِہٖ مِنۡ عِلۡمٍ وَّ لَا لِاٰبَآئِہِمۡ ؕ کَبُرَتۡ کَلِمَۃً تَخۡرُجُ مِنۡ اَفۡوَاہِہِمۡ ؕ اِنۡ یَّقُوۡلُوۡنَ اِلَّا کَذِبًا ﴿۵﴾
কানযুল ঈমান
৫. এ সম্পর্কে না তারা কোন জ্ঞান রাখে, না তাদের পিতৃপুরুষরা, কী সাংঘাতিক কথা, যা তাদের মুখ থেকে বের হচ্ছে। নিছক মিথ্যা কথা বলছে।
ইরফানুল কুরআন
৫. তাদের এ বিষয়ে কোনো জ্ঞান নেই, আর তাদের পিতৃপুরুষদেরও ছিল না। (এটি) কতোই না ভয়ঙ্কর কথা যা তাদের মুখ থেকে বের হচ্ছে। তারা (সরাসরি) মিথ্যা ব্যতীত কিছু বলেই না।
فَلَعَلَّکَ بَاخِعٌ نَّفۡسَکَ عَلٰۤی اٰثَارِہِمۡ اِنۡ لَّمۡ یُؤۡمِنُوۡا بِہٰذَا الۡحَدِیۡثِ اَسَفًا ﴿۶﴾
কানযুল ঈমান
৬. তবে এমন যেনো না হয় যে, আপনি আক্ষেপে তাদের পেছনে আত্নবিনাশি হয়ে পড়বেন যদি তারা এ বাণীর উপর ঈমান না আনে।
ইরফানুল কুরআন
৬. (হে সম্মানিত হাবীব!) আপনি কি তাদের জন্যে বেদনাময় দুশ্চিন্তায় নিজের (প্রিয়তম) জীবন(ও) বিপন্ন করে দেবেন যদি তারা (আল্লাহ্র) এ বাণীর প্রতি ঈমান আনয়ন না করে?
اِنَّا جَعَلۡنَا مَا عَلَی الۡاَرۡضِ زِیۡنَۃً لَّہَا لِنَبۡلُوَہُمۡ اَیُّہُمۡ اَحۡسَنُ عَمَلًا ﴿۷﴾
কানযুল ঈমান
৭. নিশ্চয় আমি (তাকেই), পৃথিবীর শোভা করেছি যা কিছু সেটার উপর রয়েছে, যাতে তাদেরকে এ পরীক্ষা করি যে, তাদের মধ্যে কার কর্ম উত্তম।
ইরফানুল কুরআন
৭. আর নিশ্চয়ই আমরা ভু-পৃষ্ঠের উপরে সকল কিছুকে এর সৌন্দর্যের কারণ (এবং অলঙ্কার) বানিয়েছি, যাতে এ লোকদেরকে (অর্থাৎ জগতবাসীকে) পরীক্ষা করতে পারি যে, আমলের দিক থেকে তাদের মধ্যে কে উত্তম।
وَ اِنَّا لَجٰعِلُوۡنَ مَا عَلَیۡہَا صَعِیۡدًا جُرُزًا ؕ﴿۸﴾
কানযুল ঈমান
৮. এবং নিশ্চয় যা কিছু সেটার উপর রয়েছে একদিন আমি তা উদ্ভিদশূন্য ময়দানে পরিণত করে ছাড়বো।
ইরফানুল কুরআন
৮. আর নিশ্চয়ই আমরা এর (এ পৃথিবীর) উপর বিদ্যমান (সকল) কিছুকে (ধ্বংস করে) বিরানভুমি বানিয়ে দেবো।
اَمۡ حَسِبۡتَ اَنَّ اَصۡحٰبَ الۡکَہۡفِ وَ الرَّقِیۡمِ ۙ کَانُوۡا مِنۡ اٰیٰتِنَا عَجَبًا ﴿۹﴾
কানযুল ঈমান
৯. আপনি কি অবগত হয়েছেন যে, পাহাড়ের গুহা এবং অরণ্যের পাশে অবস্থানকারীরা আমার এক বিস্ময়কর নিদর্শন ছিলো?
ইরফানুল কুরআন
৯. আপনি কি লক্ষ্য করেছেন, কাহ্ফ এবং রক্বীমবাসী (অর্থাৎ গুহা এবং গুহার ফলক অথবা রক্বীম উপত্যকাবাসী) আমাদের (কুদরতের) নিদর্শনাবলীর মধ্যে (কতোই না) বিস্ময়কর নিদর্শন ছিল?
اِذۡ اَوَی الۡفِتۡیَۃُ اِلَی الۡکَہۡفِ فَقَالُوۡا رَبَّنَاۤ اٰتِنَا مِنۡ لَّدُنۡکَ رَحۡمَۃً وَّ ہَیِّیٴۡ لَنَا مِنۡ اَمۡرِنَا رَشَدًا ﴿۱۰﴾
কানযুল ঈমান
১০. যখন ওই যুবকরা গুহায় আশ্রয় নিলো, অতঃপর বললো, ‘হে আমাদের রব! আমাদেরকে তোমার নিকট থেকে অনুগ্রহ দান করো এবং আমাদের কাজকর্মে আমাদের জন্য সঠিক পথ প্রাপ্তির ব্যবস্থা করো।
ইরফানুল কুরআন
১০. (স্মরণ করুন সে সময়ের কথা) যখন কতিপয় যুবক গুহায় আশ্রয় নিয়েছিল; তারা বললো, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে তোমার পক্ষ থেকে অনুগ্রহ দান করো এবং আমাদের কাজে পথনির্দেশনা (প্রদানের উপকরণ) সরবরাহ করো।’
فَضَرَبۡنَا عَلٰۤی اٰذَانِہِمۡ فِی الۡکَہۡفِ سِنِیۡنَ عَدَدًا ﴿ۙ۱۱﴾
কানযুল ঈমান
১১. অতঃপর আমি ওই গুহায় তাদের কানের উপর হাতে গোনা কয়েকটা বছর অতিবাহিত করালাম।
ইরফানুল কুরআন
১১. সুতরাং আমরা ওই গুহায় তাদের কানে গণনাযোগ্য কয়েক বছর (নিদ্রার পর্দা) ফেলে দিলাম।
ثُمَّ بَعَثۡنٰہُمۡ لِنَعۡلَمَ اَیُّ الۡحِزۡبَیۡنِ اَحۡصٰی لِمَا لَبِثُوۡۤا اَمَدًا ﴿۱۲﴾
কানযুল ঈমান
১২. অতঃপর আমি তাদেরকে জাগ্রত করলাম যাতে দেখি দু’দলের মধ্যে কোনটা তাদের অবস্থিতিকাল অধিক সঠিকভাবে বর্ণনা করে।
ইরফানুল কুরআন
১২. অতঃপর দেখে নেবার জন্যে আমরা তাদেরকে জাগ্রত করলাম যে, দুই দলের মধ্যে কোন দল এ (গুহায়) অবস্থান (সময়সীমা) সঠিকভাবে নির্ণয় করতে পারে।
نَحۡنُ نَقُصُّ عَلَیۡکَ نَبَاَہُمۡ بِالۡحَقِّ ؕ اِنَّہُمۡ فِتۡیَۃٌ اٰمَنُوۡا بِرَبِّہِمۡ وَ زِدۡنٰہُمۡ ہُدًی ﴿٭ۖ۱۳﴾
কানযুল ঈমান
১৩. আমি তাদের ঠিক ঠিক অবস্থা আপনাকে শুনাচ্ছি-তারা কয়েকজন যুবক ছিলো, যারা আপন রবের উপর ঈমান এনেছে এবং আমি তাদের মধ্যে হিদায়াত বৃদ্ধি করেছি।
ইরফানুল কুরআন
১৩. (এখন) আমরা আপনাকে তাদের প্রকৃত অবস্থা বর্ণনা করছি। নিশ্চয়ই তারা ছিল (কতিপয়) যুবক, যারা তাদের প্রতিপালকে বিশ্বাস স্থাপন করেছিল এবং আমরা তাদের জন্যে হেদায়াত (-এর আলো) বৃদ্ধি করে দিয়েছিলাম।
وَّ رَبَطۡنَا عَلٰی قُلُوۡبِہِمۡ اِذۡ قَامُوۡا فَقَالُوۡا رَبُّنَا رَبُّ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ لَنۡ نَّدۡعُوَا۠ مِنۡ دُوۡنِہٖۤ اِلٰـہًا لَّقَدۡ قُلۡنَاۤ اِذًا شَطَطًا ﴿۱۴﴾
কানযুল ঈমান
১৪. এবং আমি তাদের চিত্তের দৃঢ়তাকে মজবুত করে দিয়েছি যখন তারা দণ্ডায়মান হয়ে বললো, ‘আমাদের রব হন তিনিই, যিনি আসমান ও যমীনের রব, আমরা তিনি ব্যতীত অন্য কোন মা’বূদের ইবাদত করবো না। এমন হলে আমরা অবশ্যই সীমালঙ্ঘনের কথা বলেছি।
ইরফানুল কুরআন
১৪. আর আমরা তাদের অন্তরকে (আমাদের বন্ধন ও সম্পর্কের দ্বারা) মজবুত ও সুদৃঢ় করে দিয়েছিলাম। যখন তারা (তাদের বাদশাহর সামনে) দাঁড়ালো তখন তারা বলতে লাগলো, ‘আমাদের প্রতিপালক তো আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর প্রতিপালক, আমরা তাঁকে ছাড়া কখনো অন্য কোনো (মিথ্যা) উপাস্যের উপাসনা করবো না। (যদি এমনটি করি তবে) সে সময় আমরা অবশ্যই সত্যচ্যুত কথা বলবো।
ہٰۤؤُلَآءِ قَوۡمُنَا اتَّخَذُوۡا مِنۡ دُوۡنِہٖۤ اٰلِہَۃً ؕ لَوۡ لَا یَاۡتُوۡنَ عَلَیۡہِمۡ بِسُلۡطٰنٍۭ بَیِّنٍ ؕ فَمَنۡ اَظۡلَمُ مِمَّنِ افۡتَرٰی عَلَی اللّٰہِ کَذِبًا ﴿ؕ۱۵﴾
কানযুল ঈমান
১৫. এ যে আমাদের সম্প্রদায়, তারা আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য খোদা স্থির করে রেখেছে; তারা কেন তাদের সম্মুখে কোন স্পষ্ট প্রমাণ উপস্থিত করছেনা? অতঃপর তার চেয়ে অধিক যালিম কে, যে আল্লাহ্ সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা করে?’
ইরফানুল কুরআন
১৫. এরা আমাদের সম্প্রদায়ের লোক, যারা তাঁকে ব্যতীত অনেক উপাস্য বানিয়ে নিয়েছে। তখন কেন তারা এসবের (উপাস্য হওয়ার) উপর সুস্পষ্ট কোনো প্রমাণ আনয়ন করে না? সুতরাং এরচেয়ে বড় অত্যাচারী কে, যে আল্লাহ্র প্রতি মিথ্যা অপবাদ রচনা করে?’
وَ اِذِ اعۡتَزَلۡتُمُوۡہُمۡ وَمَا یَعۡبُدُوۡنَ اِلَّا اللّٰہَ فَاۡ وٗۤا اِلَی الۡکَہۡفِ یَنۡشُرۡ لَکُمۡ رَبُّکُمۡ مِّنۡ رَّحۡمَتِہٖ وَیُہَیِّیٴۡ لَکُمۡ مِّنۡ اَمۡرِکُمۡ مِّرۡفَقًا ﴿۱۶﴾
কানযুল ঈমান
১৬. এবং যখন তোমরা তাদের নিকট থেকে ও যা কিছু তারা আল্লাহ্ ব্যতীত পূজা করছে সেসব থেকে পৃথক হয়ে যাও, তখন গুহায় আশ্রয় গ্রহণ করো। তোমাদের রব তোমাদের জন্য আপন দয়া বিস্তার করবেন এবং তোমাদের কাজের সহজতার উপায়-উপকরণ তৈরী করে দেবেন।
ইরফানুল কুরআন
১৬. আর (এ যুবকেরা পরস্পরে বলতে লাগল:) ‘যখন তোমরা তাদের থেকে এবং যাদেরকে তারা আল্লাহ্ ব্যতীত উপাসনা করে সেসব (মিথ্যা উপাস্য) থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছো, তখন তোমরা (এ) গুহায় আশ্রয় গ্রহণ করো। তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের জন্যে তাঁর অনুগ্রহ বিস্তৃত করবেন এবং তোমাদের জন্যে তোমাদের কাজ সহজতর করে দেবেন।’
وَ تَرَی الشَّمۡسَ اِذَا طَلَعَتۡ تَّزٰوَرُ عَنۡ کَہۡفِہِمۡ ذَاتَ الۡیَمِیۡنِ وَ اِذَا غَرَبَتۡ تَّقۡرِضُہُمۡ ذَاتَ الشِّمَالِ وَ ہُمۡ فِیۡ فَجۡوَۃٍ مِّنۡہُ ؕ ذٰلِکَ مِنۡ اٰیٰتِ اللّٰہِ ؕ مَنۡ یَّہۡدِ اللّٰہُ فَہُوَ الۡمُہۡتَدِ ۚ وَ مَنۡ یُّضۡلِلۡ فَلَنۡ تَجِدَ لَہٗ وَلِیًّا مُّرۡشِدًا ﴿۱۷﴾
কানযুল ঈমান
১৭. এবং হে মাহবূব! আপনি সূর্যকে দেখবেন যে, যখন তা উদিত হয় তখন তাদের গুহা থেকে ডান দিকে হেলে যায় এবং যখন অস্ত যায় তখন তাদের বাম পার্শ্ব দিয়ে হেলে অতিক্রম করে যায়; অথচ তারা ওই গুহার উন্মুক্ত চত্বরে রয়েছে। এটা আল্লাহ্র নিদর্শনগুলোর অন্যতম। যাকে আল্লাহ্ সৎপথ দেখান, তবে সেই সঠিক পথে আছে এবং যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তবে কখনো তার কোন অভিভাবক, পথ প্রদর্শনকারী পাবেন না।
ইরফানুল কুরআন
১৭. আর আপনি দেখবেন যে, সূর্য উদয়কালে তাদের গুহা থেকে ডান পার্শ্বে সরে যায় এবং অস্তকালে তাদের থেকে বাম দিক ঝুঁকে পড়ে আর তারা এ গুহার প্রশস্ত চত্বরে (শুয়ে) রয়েছে। এ (সূর্যের নিজের পথ পরিবর্তন করা) আল্লাহ্র (কুদরতের বড়) নিদর্শনসমূহের মধ্যে গণ্য। যাকে আল্লাহ্ হেদায়াত দান করেন সেই হেদায়াত পায়; আর যাকে তিনি গোমরাহ্ করেন, তো আপনি তার জন্যে কোনো ওলী (সাহায্যকারী বন্ধু) ও মুরশিদ (অর্থাৎ পথপ্রদর্শনকারী) পাবেন না।
وَ تَحۡسَبُہُمۡ اَیۡقَاظًا وَّ ہُمۡ رُقُوۡدٌ ٭ۖ وَّ نُقَلِّبُہُمۡ ذَاتَ الۡیَمِیۡنِ وَ ذَاتَ الشِّمَالِ ٭ۖ وَ کَلۡبُہُمۡ بَاسِطٌ ذِرَاعَیۡہِ بِالۡوَصِیۡدِ ؕ لَوِ اطَّلَعۡتَ عَلَیۡہِمۡ لَوَلَّیۡتَ مِنۡہُمۡ فِرَارًا وَّ لَمُلِئۡتَ مِنۡہُمۡ رُعۡبًا ﴿۱۸﴾
কানযুল ঈমান
১৮. এবং আপনি তাদেরকে জাগ্রত মনে করবেন অথচ তারা নিদ্রিত; আর আমি তাদেরকে ডান-বাম পার্শ্বদ্বয় পরিবর্তন করাই এবং তাদের কুকুর আপন সম্মুখের পা দু’টি প্রসারিত করে আছে গুহাদ্বারে চৌকাঠের উপর। হে শ্রোতা! যদি তুমি তাদেরকে উকি দিয়েও দেখো তাহলে তাদেরকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে পলায়ন করবে এবং তাদের ভয়ে পূর্ণ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়বে।
ইরফানুল কুরআন
১৮. আর (হে শ্রবণকারী! যদি) তুমি তাদেরকে (দেখো তবে) জাগ্রত মনে করবে, অথচ তারা নিদ্রিত। আর আমরা (নিয়মিত বিরতিতে) তাদেরকে ডানে এবং বামে পার্শ্ব পরিবর্তন করতাম। আর তাদের কুকুর (তাদের) গুহাদ্বারে তার উভয় পা ছড়িয়ে (বসে) আছে। যদি তুমি তাদেরকে ঝুঁকে দেখতে, তবে তাদের থেকে পেছন ফিরে পলায়ন করতে এবং তোমার অন্তর তাদের ভয়ে পূর্ণ হয়ে যেতো।
وَ کَذٰلِکَ بَعَثۡنٰہُمۡ لِیَتَسَآءَلُوۡا بَیۡنَہُمۡ ؕ قَالَ قَآئِلٌ مِّنۡہُمۡ کَمۡ لَبِثۡتُمۡ ؕ قَالُوۡا لَبِثۡنَا یَوۡمًا اَوۡ بَعۡضَ یَوۡمٍ ؕ قَالُوۡا رَبُّکُمۡ اَعۡلَمُ بِمَا لَبِثۡتُمۡ ؕ فَابۡعَثُوۡۤا اَحَدَکُمۡ بِوَرِقِکُمۡ ہٰذِہٖۤ اِلَی الۡمَدِیۡنَۃِ فَلۡیَنۡظُرۡ اَیُّہَاۤ اَزۡکٰی طَعَامًا فَلۡیَاۡتِکُمۡ بِرِزۡقٍ مِّنۡہُ وَ لۡـیَؔتَلَطَّفۡ وَ لَا یُشۡعِرَنَّ بِکُمۡ اَحَدًا ﴿۱۹﴾
কানযুল ঈমান
১৯. এবং এভাবেই আমি তাদেরকে জাগরিত করলাম যে, তারা একে অপরের অবস্থাদি সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তাদের মধ্যে একজন জিজ্ঞাসাকারী বললো, ‘তোমরা এখানে কতকাল অবস্থান করেছো? কেউ কেউ বললো, ‘একদিন অবস্থান করেছি অথবা একদিনের কিছু কম’। অন্যান্যরা বললো, ‘তোমাদের রবই ভাল জানেন কতকাল তোমরা অবস্থান করেছো। সুতরাং তোমাদের মধ্যে একজনকে এ রৌপ্যমুদ্রা নিয়ে নগরে প্রেরণ করো! অতঃপর সে গভীরভাবে লক্ষ্য করবে যে, সেখানে কোন খাদ্য অধিক পবিত্র যেন তোমাদের জন্য তা থেকে কিছু খাদ্য নিয়ে আসে এবং সে যেন নম্রতা অবলম্বন করে এবং কোনভাবেই যেন কাউকেও তোমাদের সম্বন্ধে কিছু জানতে না দেয়।
ইরফানুল কুরআন
১৯. আর এভাবেই আমরা তাদেরকে জাগ্রত করলাম যাতে তারা পরস্পরে জিজ্ঞেস করে। (সুতরাং) তাদের মধ্য থেকে একজন কথক বললো, ‘তোমরা (এখানে) কতো সময় অবস্থান করেছো?’ তারা বললো, ‘আমরা (এখানে) একদিন বা এর(ও) কিছু অংশ অবস্থান করেছি।’ (পরিশেষে) বলতে লাগলো, ‘তোমাদের প্রতিপালকই ভালো জানেন, তোমরা (এখানে) কতো সময় অবস্থান করেছো। সুতরাং তোমরা তোমাদের কাউকে তোমাদের এ মুদ্রা দিয়ে শহরে প্রেরণ করো। অতঃপর সে যেন দেখে কোন খাবার অধিক হালাল ও পবিত্রতর এবং তা থেকে কিছু খাবার তোমাদের জন্যে নিয়ে আসে। আর তার উচিত হবে, (আসা-যাওয়া ও ক্রয়ের সময়) ধীরস্থির ও নম্রভাবে কার্যসাধন করা এবং কাউকে(ই) তোমাদের সংবাদ না দেয়া।
اِنَّہُمۡ اِنۡ یَّظۡہَرُوۡا عَلَیۡکُمۡ یَرۡجُمُوۡکُمۡ اَوۡ یُعِیۡدُوۡکُمۡ فِیۡ مِلَّتِہِمۡ وَ لَنۡ تُفۡلِحُوۡۤا اِذًا اَبَدًا ﴿۲۰﴾
কানযুল ঈমান
২০. নিশ্চয়, তারা যদি তোমাদের বিষয়ে জেনে যায়, তবে তোমাদেরকে পাথর বর্ষণ করে হত্যা করবে অথবা তাদের ধর্মে ফিরিয়ে নেবে এবং এমন হলে তোমাদের কখনো মঙ্গল হবে না’।
ইরফানুল কুরআন
২০. নিশ্চয়ই যদি তারা তোমাদের (ব্যাপারে অবগত হয়ে তোমাদের) উপর ক্ষমতাবান হয়, তবে তোমাদেরকে প্রস্তরাঘাতে হত্যা করবে অথবা তোমাদেরকে (জোর-জবরদস্তি করে) তাদের ধর্মবিশ্বাসে ফিরিয়ে নেবে। (আর এরকম হলে) তোমরা কখনোই সফলকাম হবে না।’
وَ کَذٰلِکَ اَعۡثَرۡنَا عَلَیۡہِمۡ لِیَعۡلَمُوۡۤا اَنَّ وَعۡدَ اللّٰہِ حَقٌّ وَّ اَنَّ السَّاعَۃَ لَا رَیۡبَ فِیۡہَا ۚ٭ اِذۡ یَتَنَازَعُوۡنَ بَیۡنَہُمۡ اَمۡرَہُمۡ فَقَالُوا ابۡنُوۡا عَلَیۡہِمۡ بُنۡیَانًا ؕ رَبُّہُمۡ اَعۡلَمُ بِہِمۡ ؕ قَالَ الَّذِیۡنَ غَلَبُوۡا عَلٰۤی اَمۡرِہِمۡ لَنَتَّخِذَنَّ عَلَیۡہِمۡ مَّسۡجِدًا ﴿۲۱﴾
কানযুল ঈমান
২১. এবং এ ভাবে আমি তাদের বিষয় জানিয়ে দিলাম, যাতে লোকেরা জ্ঞাত হয় যে, আল্লাহ্র প্রতিশ্রুতি সত্য এবং ক্বিয়ামতে কোন সন্দেহ নেই; যখন ওই সব লোক তাদের বিষয়ে নিজেদের মধ্যে বিতর্ক করতে লাগলো; অতঃপর (তারা) বললো, ‘তাদের গুহার উপর কোন ইমারত নির্মাণ করো!’ তাদের রব তাদের বিষয়ে ভাল জানেন। তারা বললো, যারা এ বিষয়ে প্রবল ছিলো। ‘শপথ রইলো যে, আমরা তাদের উপর মসজিদ নির্মাণ করবো’।
ইরফানুল কুরআন
২১. আর এভাবে আমরা তাদের (অবস্থার) ব্যাপারে (কয়েকশ বছর পরে আগত) লোকদেরকে অবগত করলাম, যাতে তারা জ্ঞাত হয় যে, আল্লাহ্র অঙ্গীকার সত্য এবং কিয়ামত আগমনে কোনো সন্দেহ নেই। যখন (গুহাবাসীরা মৃত্যুবরণ করলো এবং) এ জনপদের অধিবাসীরা পরস্পরে তাদের কর্তব্য বিষয়ে বিতর্ক করছিল তখন তারা বললো, ‘তাদের (গুহার) উপর একটি ইমারত (স্মৃতিচিহ্ন) নির্মাণ করো। তাদের প্রতিপালক তাদের (অবস্থা) সম্পর্কে খুবই অবগত।’ যেসব (ঈমানদার) লোক তাদের ব্যাপারে প্রাধান্য লাভ করেছিল তারা বললো, ‘আমরা তাদের (ফটকের) উপর অবশ্যই একটি মসজিদ নির্মাণ করবো। (যাতে মুসলমানেরা এতে নামায আদায় করতে পারে এবং তাদের নিকটবর্তী হয়ে বিশেষ বরকত লাভ করতে পারে।)’
سَیَقُوۡلُوۡنَ ثَلٰثَۃٌ رَّابِعُہُمۡ کَلۡبُہُمۡ ۚ وَ یَقُوۡلُوۡنَ خَمۡسَۃٌ سَادِسُہُمۡ کَلۡبُہُمۡ رَجۡمًۢا بِالۡغَیۡبِ ۚ وَ یَقُوۡلُوۡنَ سَبۡعَۃٌ وَّ ثَامِنُہُمۡ کَلۡبُہُمۡ ؕ قُلۡ رَّبِّیۡۤ اَعۡلَمُ بِعِدَّتِہِمۡ مَّا یَعۡلَمُہُمۡ اِلَّا قَلِیۡلٌ ۬۟ فَلَا تُمَارِ فِیۡہِمۡ اِلَّا مِرَآءً ظَاہِرًا ۪ وَّ لَا تَسۡتَفۡتِ فِیۡہِمۡ مِّنۡہُمۡ اَحَدًا ﴿۲۲﴾
কানযুল ঈমান
২২. এখন বলবে, ‘তারা তিনজন, চতুর্থটি তাদের কুকুর; এবং কিছুলোক বলবে, ‘তারা পাচজন, ষষ্ঠটি তাদের কুকুর’-না দেখে অনুমাণের উপর ভিত্তি করে; এবং কিছুলোক বলবে, ‘তারা সাতজন আর অষ্টমটি তাদের কুকুর’। আপনি বলুন, ‘আমার রব তাদের সংখ্যা ভাল জানেন’। তাদের সংখ্যা জানে না, কিন্তু অল্প কয়েকজনই। সুতরাং তাদের সম্পর্কে বিতর্ক করো না, কিন্তু এতটুকু আলোচনা, যা প্রকাশ পেয়েছে; এবং তাদের সম্পর্কে কোন কিতাবীকে কিছু জিজ্ঞাসা করো না।
ইরফানুল কুরআন
২২. (এখন) কেউ কেউ বলবে, ‘(গুহাবাসীরা) ছিল তিনজন, তাদের মধ্যে চতুর্থতম ছিল তাদের কুকুর’। আর কেউ কেউ বলবে, ‘(তারা) ছিল পাঁচজন, তাদের মধ্যে ষষ্ঠ হলো তাদের কুকুর’। এ হলো না দেখে অনুমান নির্ভর কথা। আর কেউ কেউ বলবে, ‘(তারা) সাতজন এবং তাদের অষ্টমটি ছিল তাদের কুকুর’। বলে দিন, ‘আমার প্রতিপালকই তাদের সংখ্যা খুব ভালো জানেন আর অল্প কিছু লোক ছাড়া তাদের (সঠিক সংখ্যা) কেউ জানে না’। সুতরাং আপনি কারো সাথে তাদের ব্যাপারে বিতর্ক করবেন না, কেবল যেটুকু স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে তা ব্যতীত। আর না তাদের কারো কাছে এদের (এ গুহাবাসীদের) ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞেস করবেন।
وَ لَا تَقُوۡلَنَّ لِشَایۡءٍ اِنِّیۡ فَاعِلٌ ذٰلِکَ غَدًا ﴿ۙ۲۳﴾
কানযুল ঈমান
২৩. এবং কখনো আপনি কোন বিষয়ে বলবেন না, ‘আমি এটা আগামীকাল করবো’;
ইরফানুল কুরআন
২৩. আর কোনো বিষয়ে কখনো বলবেন না, ‘আমি এ কাজ আগামীকাল সম্পাদন করবো’;
اِلَّاۤ اَنۡ یَّشَآءَ اللّٰہُ ۫ وَ اذۡکُرۡ رَّبَّکَ اِذَا نَسِیۡتَ وَ قُلۡ عَسٰۤی اَنۡ یَّہۡدِیَنِ رَبِّیۡ لِاَقۡرَبَ مِنۡ ہٰذَا رَشَدًا ﴿۲۴﴾
কানযুল ঈমান
২৪. ‘আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে এ কথা না বলে’। এবং আপন রবকে স্মরণ করো যখন তুমি ভুলে যাও- এবং এভাবে বলো, ‘সম্ভবতঃ আমার রব আমাকে এটা অপেক্ষা সত্যের নিকটতর পথ দেখাবেন।
ইরফানুল কুরআন
২৪. তবে এরকম বলবেন, ‘যদি আল্লাহ্ চান’ (অর্থাৎ ইন্শাআল্লাহ্ )। আর আপনার প্রতিপালককে স্মরণ করুন, যখন আপনি ভুলে যাবেন এবং বলবেন, ‘আশা করি যে আমার প্রতিপালক আমাকে এরচেয়ে(ও) উৎকৃষ্টতর হেদায়াতের পথ দেখাবেন’।
وَ لَبِثُوۡا فِیۡ کَہۡفِہِمۡ ثَلٰثَ مِائَۃٍ سِنِیۡنَ وَ ازۡدَادُوۡا تِسۡعًا ﴿۲۵﴾
কানযুল ঈমান
২৫. এবং তারা নিজেদের গুহায় তিনশ’ বছর অবস্থান করেছে, আরো নয় বছর বেশি।
ইরফানুল কুরআন
২৫. আর (এ গুহাবাসী) তাদের গুহায় তিনশ বছর অবস্থান করেছিল এবং তারা (তাতে) আরো নয় (বছর) বৃদ্ধি করেছিল।
قُلِ اللّٰہُ اَعۡلَمُ بِمَا لَبِثُوۡا ۚ لَہٗ غَیۡبُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ اَبۡصِرۡ بِہٖ وَ اَسۡمِعۡ ؕ مَا لَہُمۡ مِّنۡ دُوۡنِہٖ مِنۡ وَّلِیٍّ ۫ وَّ لَا یُشۡرِکُ فِیۡ حُکۡمِہٖۤ اَحَدًا ﴿۲۶﴾
কানযুল ঈমান
২৬. আপনি বলুন, ‘আল্লাহ্ ভাল জানেন তারা কতকাল অবস্থান করেছে; তারই জন্যই আসমানসমূহ ও যমীনের সমস্ত অদৃশ্য বিষয়; তিনি কতই উত্তম দেখেন এবং কতই উত্তম শুনেন! তিনি ব্যতীত তাদের কোন অভিভাবক নেই এবং তিনি আপন হুকুমদানের মধ্যে কাউকেও শরীক করেন না।
ইরফানুল কুরআন
২৬. বলে দিন, ‘আল্লাহ্ই ভালো জানেন তারা কতো সময় (সেখানে) অবস্থান করেছিল। আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর (সকল) গোপনীয় বিষয়ের জ্ঞান তাঁরই। তিনি কতো উত্তম দ্রষ্টা, কতো উত্তম শ্রবণকারী! তিনি ব্যতীত তাদের না আছে কোনো কার্যসম্পাদনকারী আর না তিনি স্বীয় কর্তৃত্বে কাউকে অংশীদার সাব্যস্ত করেন।’
وَ اتۡلُ مَاۤ اُوۡحِیَ اِلَیۡکَ مِنۡ کِتَابِ رَبِّکَ ۚؕ لَا مُبَدِّلَ لِکَلِمٰتِہٖ ۚ۟ وَ لَنۡ تَجِدَ مِنۡ دُوۡنِہٖ مُلۡتَحَدًا ﴿۲۷﴾
কানযুল ঈমান
২৭. এবং পাঠ করুন যা আপনার রবের কিতাব আপনার প্রতি ওহী করা হয়েছে। তার বাণীসমূহ পরিবর্তন করার কেউ নেই আর কখনোই আপনি তাকে ব্যতীত অন্য কোন আশ্রয়স্থল পাবেন না।
ইরফানুল কুরআন
২৭. আর আপনি এ (বাণী) পাঠ করে শুনিয়ে দিন, যা আপনার প্রতিপালকের কিতাব থেকে আপনার প্রতি প্রত্যাদেশ করা হয়েছে। না কেউ তাঁর বাণী পরিবর্তন করতে পারে, আর না তাঁকে ব্যতীত আপনি কখনো কোনো আশ্রয়স্থল পাবেন।
وَ اصۡبِرۡ نَفۡسَکَ مَعَ الَّذِیۡنَ یَدۡعُوۡنَ رَبَّہُمۡ بِالۡغَدٰوۃِ وَ الۡعَشِیِّ یُرِیۡدُوۡنَ وَجۡہَہٗ وَ لَا تَعۡدُ عَیۡنٰکَ عَنۡہُمۡ ۚ تُرِیۡدُ زِیۡنَۃَ الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا ۚ وَ لَا تُطِعۡ مَنۡ اَغۡفَلۡنَا قَلۡبَہٗ عَنۡ ذِکۡرِنَا وَ اتَّبَعَ ہَوٰىہُ وَ کَانَ اَمۡرُہٗ فُرُطًا ﴿۲۸﴾
কানযুল ঈমান
২৮. এবং আপন আত্নাকে, তাদেরই সাথে সম্বন্ধযুক্ত রাখুন, যারা সকাল-সন্ধ্যায় আপন রবকে আহ্বান করে, তার সন্তুষ্টি চায় এবং আপনার চক্ষুদ্বয় যেন তাদেরকে ছেড়ে অন্য কারো দিকে না ফিরে; আপনি কি পার্থিব জীবনের শোভা সৌন্দর্য কামনা করবেন? এবং তার কথা মানবেন না, যার অন্তরকে আমি আমার স্মরণে অমনোযোগী করে দিয়েছি এবং সে আপন খেয়াল খুশীর অনুসরণ করেছে আর তারা কার্যকলাপ সীমাতিক্রম করে গেছে।
ইরফানুল কুরআন
২৮. (হে আমার বান্দা!) তুমি তোমার নিজেকে সেসব লোকদের সাহচর্যে নিয়োজিত করো যারা সকাল-সন্ধায় তাদের প্রতিপালককে স্মরণ করে তাঁর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে (তাঁর দর্শনের আকাঙ্ক্ষী এবং তাঁর মুখশ্রী অবলোকনের বাসনাকারী হয়)। তোমার (ভালোবাসা ও মনযোগের) দৃষ্টি তাদের থেকে ফেরাবে না। তুমি কি (এ সকল ফকিরদের থেকে ধ্যান সরিয়ে) দুনিয়াবী জীবনের সাজ-সজ্জা কামনা করো? আর তুমি সেসব লোকের আনুগত্য(ও) করো না, যার অন্তর আমরা আমাদের স্মরণে অমনোযোগী করে দিয়েছি; আর সে নিজের কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করে এবং তার অবস্থা সকল সীমা ছাড়িয়ে গেছে।
وَ قُلِ الۡحَقُّ مِنۡ رَّبِّکُمۡ ۟ فَمَنۡ شَآءَ فَلۡیُؤۡمِنۡ وَّ مَنۡ شَآءَ فَلۡیَکۡفُرۡ ۙ اِنَّاۤ اَعۡتَدۡنَا لِلظّٰلِمِیۡنَ نَارًا ۙ اَحَاطَ بِہِمۡ سُرَادِقُہَا ؕ وَ اِنۡ یَّسۡتَغِیۡثُوۡا یُغَاثُوۡا بِمَآءٍ کَالۡمُہۡلِ یَشۡوِی الۡوُجُوۡہَ ؕ بِئۡسَ الشَّرَابُ ؕ وَ سَآءَتۡ مُرۡتَفَقًا ﴿۲۹﴾
কানযুল ঈমান
২৯. এবং বলে দিন, ‘সত্য তোমাদের রবের নিকট থেকেই; সুতরাং যার ইচ্ছা ঈমান আনুক এবং যার ইচ্ছা কুফর করুক। নিশ্চয় আমি যালিমদের জন্য ওই আগুন প্রস্তুত করে রেখেছি, যার দেয়ালগুলো তাদেরকে পরিবেষ্টন করে নেবে এবং যদি পানির জন্য ফরিয়াদ পূর্ণ করা হবে ওই পানি দ্বারা, যা গলিত ধাতুর ন্যায়। যে, তার মুখমণ্ডল ভুনে ফেলবে। কতই নিকৃষ্ট পানীয় এবং দোযখ কতই নিকৃষ্ট অবস্থানের জায়গা!
ইরফানুল কুরআন
২৯. আর বলে দিন, ‘(এ) সত্য তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে; অতঃপর যে চায় ঈমান আনয়ন করুক এবং যে চায় অস্বীকার করুক। নিশ্চয়ই আমরা যালিমদের জন্যে (দোযখের) আগুন প্রস্তুত করে রেখেছি, যার দেয়ালসমূহ তাদের বেষ্টন করে থাকবে। আর যদি তারা (পিপাসা এবং কষ্টের কারণে) প্রার্থনা করে, তবে তাদের প্রার্থনা এমন পানি দ্বারা পূর্ণ করা হবে যা গলিত তামার ন্যায়, যা তাদের মুখমন্ডল বিদগ্ধ করে দেবে। এ কতোই না মন্দ পানীয়, আর কতোই না নিকৃষ্ট বিশ্রামস্থল!
اِنَّ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ اِنَّا لَا نُضِیۡعُ اَجۡرَ مَنۡ اَحۡسَنَ عَمَلًا ﴿ۚ۳۰﴾
কানযুল ঈমান
৩০. নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে আমি তাদের শ্রমফল বিনষ্ট করি না, যাদের কর্ম ভাল হয়।
ইরফানুল কুরআন
৩০. নিশ্চয়ই যারা ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে, আমরা অবশ্যই তার আমল বিনষ্ট করি না যে সৎকর্ম সে করে।
اُولٰٓئِکَ لَہُمۡ جَنّٰتُ عَدۡنٍ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہِمُ الۡاَنۡہٰرُ یُحَلَّوۡنَ فِیۡہَا مِنۡ اَسَاوِرَ مِنۡ ذَہَبٍ وَّ یَلۡبَسُوۡنَ ثِیَابًا خُضۡرًا مِّنۡ سُنۡدُسٍ وَّ اِسۡتَبۡرَقٍ مُّتَّکِئِیۡنَ فِیۡہَا عَلَی الۡاَرَآئِکِ ؕ نِعۡمَ الثَّوَابُ ؕ وَ حَسُنَتۡ مُرۡتَفَقًا ﴿۳۱﴾
কানযুল ঈমান
৩১. তাদের জন্য রয়েছে বসবাসের বাগান। সেগুলোর নিম্নদেশ দিয়ে নহরসমূহ প্রবহমান এবং সেখানে তাদেরকে স্বর্ণের কনকন পরানো হবে আর তারা সূক্ষ্ম ও পরু রেশমের সবুজ বস্ত্রপরিধান করবে, সেখানে সুসজ্জিত আসনের উপর সমাসীন হবে; কতই উত্তম পুরস্কার এবং জান্নাত কতই উত্তম আরামদায়ক স্থান!
ইরফানুল কুরআন
৩১. সে সব লোকদের জন্যে রয়েছে (স্থায়ীভাবে থাকার) উদ্যানসমূহ, যার (প্রাসাদসমূহের) তলদেশে স্রোতধারা প্রবাহিত। তাদেরকে এ সকল জান্নাতে স্বর্ণের কাঁকন পরিধান করানো হবে। আর তারা সূক্ষ্ম রেশমী ও পুরু জরির সবুজ বস্ত্র পরিধান করবে এবং স্থাপিত ও জমকালো সুশোভিত সিংহাসনে হেলান দিয়ে বসবে। কতোই না উত্তম পুরস্কার, আর কতোই না সুন্দর বিশ্রামস্থল!
وَ اضۡرِبۡ لَہُمۡ مَّثَلًا رَّجُلَیۡنِ جَعَلۡنَا لِاَحَدِہِمَا جَنَّتَیۡنِ مِنۡ اَعۡنَابٍ وَّ حَفَفۡنٰہُمَا بِنَخۡلٍ وَّ جَعَلۡنَا بَیۡنَہُمَا زَرۡعًا ﴿ؕ۳۲﴾
কানযুল ঈমান
৩২. এবং তাদের সম্মুখে দু’জন পুরুষের অবস্থা বর্ণনা করুন- তাদের মধ্যে একজনকে আমি আঙ্গুরের দু’টি বাগান দিয়েছি এবং ওই দু’টিকেই খেজুর বৃক্ষসমূহ দ্বারা ঢেকে নিয়েছি আর ওই দু’টির মাঝে মাঝে শস্যক্ষেত্র রেখেছি।
ইরফানুল কুরআন
৩২. আর আপনি তাদের নিকট ওই দু’ব্যক্তির দৃষ্টান্ত বর্ণনা করুন, যাদের একজনের জন্যে আমরা আঙ্গুরের দু’টো বাগান সরবরাহ করেছিলাম এবং এ দু’টোকে সকল দিক থেকে খেুজর বৃক্ষ দ্বারা পরিবেষ্টন করেছিলাম এবং আমরা এর মধ্যবর্তী স্থানকে (সবুজ-শ্যামল) শস্যক্ষেত্র বানিয়েছিলাম।
کِلۡتَا الۡجَنَّتَیۡنِ اٰتَتۡ اُکُلَہَا وَ لَمۡ تَظۡلِمۡ مِّنۡہُ شَیۡئًا ۙ وَّ فَجَّرۡنَا خِلٰلَہُمَا نَہَرًا ﴿ۙ۳۳﴾
কানযুল ঈমান
৩৩. উভয় বাগান নিজ নিজ ফল দান করলো এবং তাতে কোন কিছু কম দেয় নি আর উভয়ের মধ্যখানে আমি নহর প্রবাহিত করেছি।
ইরফানুল কুরআন
৩৩. এ দু’টো বাগানই (অধিক পরিমাণে) ফল দিতো এবং এদের (উৎপাদনে) কোনো কমতি হতো না। আর আমরা এ দু’টোর (প্রত্যেকটির) মাঝে একটি স্রোতধারা(ও) প্রবাহিত করেছিলাম।
وَّ کَانَ لَہٗ ثَمَرٌ ۚ فَقَالَ لِصَاحِبِہٖ وَ ہُوَ یُحَاوِرُہٗۤ اَنَا اَکۡثَرُ مِنۡکَ مَالًا وَّ اَعَزُّ نَفَرًا ﴿۳۴﴾
কানযুল ঈমান
৩৪. এবং সে ফলমূলের মালিক ছিলো। অতঃপর সে আপন সাথীকে কথা প্রসঙ্গে (অহঙ্কার করে) বলছিলো, ‘আমি তোমার চেয়ে ধন সম্পদে অধিক এবং জনবল বেশি রাখি’।
ইরফানুল কুরআন
৩৪. আর এ লোকটির নিকট (এ ছাড়াও) প্রচুর ফল-ফলাদি (অর্থাৎ সম্পদ) ছিল। সে তার সঙ্গীর সাথে মতবিনিময়ের সময় তাকে বললো, ‘আমি তোমার চেয়ে অধিক ধন-সম্পদের অধিকারী এবং গোত্র ও বংশমর্যাদার দিক থেকে(ও) অধিক মর্যাদাবান’।
وَ دَخَلَ جَنَّتَہٗ وَ ہُوَ ظَالِمٌ لِّنَفۡسِہٖ ۚ قَالَ مَاۤ اَظُنُّ اَنۡ تَبِیۡدَ ہٰذِہٖۤ اَبَدًا ﴿ۙ۳۵﴾
কানযুল ঈমান
৩৫. এবং সে আপন বাগানে প্রবেশ করলো এবং আপন আত্নার উপর অত্যাচারী অবস্থায় বললো, ‘আমি মনে করি না যে, এটা কখনো নিশ্চিহ্ন হবে;
ইরফানুল কুরআন
৩৫. আর সে (তাকে নিয়ে) তার বাগানে প্রবেশ করলো আর (অহঙ্কারবশত) নিজেরই প্রতি যুলুম করে বলতে লাগলো, ‘আমি মনে(ই) করিনা যে, এ বাগান কখনো ধ্বংস হবে।
وَّ مَاۤ اَظُنُّ السَّاعَۃَ قَآئِمَۃً ۙ وَّ لَئِنۡ رُّدِدۡتُّ اِلٰی رَبِّیۡ لَاَجِدَنَّ خَیۡرًا مِّنۡہَا مُنۡقَلَبًا ﴿۳۶﴾
কানযুল ঈমান
৩৬. এবং আমি মনে করি না যে, ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে এবং যদি আমি আমার রবের প্রতি ফিরেও যাই, তবে অবশ্যই এ বাগান অপেক্ষা অধিক উত্তম প্রত্যাবর্তনস্থল পাবো’।
ইরফানুল কুরআন
৩৬. আর এও মনে করি না যে, কিয়ামত সংঘটিত হবে। আর যদি (ধরেও নেয়া হয় যে,) আমাকে আমার প্রতিপালকের নিকট ফিরিয়েও নেয়া হবে, তবুও নিশ্চিত আমি এ বাগানগুলো থেকে উত্তম কোনো প্রত্যাবর্তনের স্থান লাভ করবো।’
قَالَ لَہٗ صَاحِبُہٗ وَ ہُوَ یُحَاوِرُہٗۤ اَکَفَرۡتَ بِالَّذِیۡ خَلَقَکَ مِنۡ تُرَابٍ ثُمَّ مِنۡ نُّطۡفَۃٍ ثُمَّ سَوّٰىکَ رَجُلًا ﴿ؕ۳۷﴾
কানযুল ঈমান
৩৭. তার সাথী তার প্রত্যুত্তরে বললো, ‘তুমি কি তারই সাথে কুফর করছো, যিনি তোমাকে মাটি থেকে তৈরী করেছেন, অতঃপর পরিশোধিত পানির ফোটা থেকে; তারপর তোমাকে পূর্ণাঙ্গ পুরুষ করেছেন?
ইরফানুল কুরআন
৩৭. তার সঙ্গী তদুত্তরে তাকে বললো, ‘তুমি কি সে (প্রতিপালক) সত্তাকে অস্বীকার করছো, যিনি তোমাকে (প্রথমে) সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে, পরে জন্মদায়ক এক বিন্দু থেকে, অতঃপর তোমাকে করেছেন (শারীরিকভাবে) পরিপূর্ণ মানুষ?
لٰکِنَّا۠ ہُوَ اللّٰہُ رَبِّیۡ وَ لَاۤ اُشۡرِکُ بِرَبِّیۡۤ اَحَدًا ﴿۳۸﴾
কানযুল ঈমান
৩৮. কিন্তু আমি তো এ কথাই বলি, ‘আল্লাহই আমার রব এবং আমি কাউকেও আমার রবের শরীক করি না।
ইরফানুল কুরআন
৩৮. কিন্তু আমি (তো বলি:) এ আল্লাহ্ই আমার প্রতিপালক। আর আমি আমার প্রতিপালকের সাথে কাউকে অংশীদার সাব্যস্ত করি না।
وَ لَوۡ لَاۤ اِذۡ دَخَلۡتَ جَنَّتَکَ قُلۡتَ مَا شَآءَ اللّٰہُ ۙ لَا قُوَّۃَ اِلَّا بِاللّٰہِ ۚ اِنۡ تَرَنِ اَنَا اَقَلَّ مِنۡکَ مَالًا وَّ وَلَدًا ﴿ۚ۳۹﴾
কানযুল ঈমান
৩৯. এবং কেন এমন হলো না যে, যখন তুমি আপন বাগানে প্রবেশ করেছো তখন বলতে- আল্লাহ্ যা চান (তাই হয়); আল্লাহ্র সাহায্য ব্যতীত আমাদের কোন শক্তি নেই। যদি তুমি আমাকে তোমার চেয়ে ধনে ও সন্তান সন্ততিতে নিকৃষ্টতর হিসেবে দেখতে-
ইরফানুল কুরআন
৩৯. আর যখন তুমি তোমার বাগানে প্রবেশ করো, তখন তুমি কেন বলো না যে, “মা-শা-আল্লাহ্, লা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ্” (তাই হবে যা আল্লাহ চান, আল্লাহ্র সাহায্য ছাড়া কারো কোনো শক্তি নেই)। যদিও তুমি (আজ) আমাকে সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে তোমার চেয়ে হীনতর দেখছো (তবে তাতে কী?)
فَعَسٰی رَبِّیۡۤ اَنۡ یُّؤۡتِیَنِ خَیۡرًا مِّنۡ جَنَّتِکَ وَ یُرۡسِلَ عَلَیۡہَا حُسۡبَانًا مِّنَ السَّمَآءِ فَتُصۡبِحَ صَعِیۡدًا زَلَقًا ﴿ۙ۴۰﴾
কানযুল ঈমান
৪০. তবে এটা সন্নিকটে যে, আমার রব আমাকে তোমার বাগান অপেক্ষা উৎকৃষ্টতর কিছু দেবেন এবং তোমার বাগানের উপর আসমান থেকে বিজলীসমূহ অবতারণ করবেন; তখন তা উদ্ভিদশূন্য ময়দানে পরিণত হয়ে থেকে যাবে;
ইরফানুল কুরআন
৪০. সম্ভবতঃ দূরে নয় যে, আমার প্রতিপালক আমাকে তোমার বাগানের চেয়ে উত্তম কিছু দান করবেন, আর এর উপর (অর্থাৎ এ বাগানের উপর) আসমান থেকে কোনো আযাব প্রেরণ করবেন, অতঃপর এটি বিরান পিচ্ছিল ভুমিতে পরিণত হবে।
اَوۡ یُصۡبِحَ مَآؤُہَا غَوۡرًا فَلَنۡ تَسۡتَطِیۡعَ لَہٗ طَلَبًا ﴿۴۱﴾
কানযুল ঈমান
৪১. অথবা সেটার পানি ভূ-গর্ভে ধ্বসে যাবে, তারপর তুমি কখনো সেটার সন্ধান করতে পারবে না।
ইরফানুল কুরআন
৪১. অথবা এর পানি ভুগর্ভে অন্তর্হিত হবে, অতঃপর তুমি তা ফিরে পেতে সক্ষম হবে না।’
وَ اُحِیۡطَ بِثَمَرِہٖ فَاَصۡبَحَ یُقَلِّبُ کَفَّیۡہِ عَلٰی مَاۤ اَنۡفَقَ فِیۡہَا وَ ہِیَ خَاوِیَۃٌ عَلٰی عُرُوۡشِہَا وَ یَقُوۡلُ یٰلَیۡتَنِیۡ لَمۡ اُشۡرِکۡ بِرَبِّیۡۤ اَحَدًا ﴿۴۲﴾
কানযুল ঈমান
৪২. এবং সেটার ফল (বিপর্যয়ে) পরিবেষ্টিত হলো তখন আপন হাত মোচড়াতে মোচড়াতে রয়ে গেলো ওই মূলধনের উপর যা এ বাগানে ব্যয় করেছিলো এবং তা আপন মাচানগুলোর উপর পতিত হলো এবং বলতে লাগলো, ‘হায়, আমি যদি কাউকেও আপন রবের সাথে শরীক না করতাম’।
ইরফানুল কুরআন
৪২. আর (এ অহঙ্কারের কারণে) তার (সমস্ত) ফল-ফলাদি (ধ্বংসে) পরিবেষ্টিত হলো। অতঃপর সকালে সে এ পুঁজির উপর আক্ষেপে হাত নিংড়াতে লাগলো, যা সে এতে (বাগান সাজাতে) খরচ করেছিল, এবং এ বাগান এর মাচার উপর পড়ে রইলো। আর সে (আপাদমস্তক হতাশ এবং নিরাশ হয়ে) বলতে লাগলো, ‘হায় আফসোস! যদি আমি আমার প্রতিপালকের সাথে কাউকে অংশীদার সাব্যস্ত না করতাম! (আর যদি আমার নিজের উপর অহঙ্কার না করতাম!)’
وَ لَمۡ تَکُنۡ لَّہٗ فِئَۃٌ یَّنۡصُرُوۡنَہٗ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ وَ مَا کَانَ مُنۡتَصِرًا ﴿ؕ۴۳﴾
কানযুল ঈমান
৪৩. এবং তার নিকট এমন কোন দল ছিলো না, যে আল্লাহ্র সম্মুখে তার সাহায্য করতো, না সে প্রতিশোধ নেওয়ার উপযোগী ছিলো।
ইরফানুল কুরআন
৪৩. আর তার জন্যে আল্লাহ্র বিপরীতে তাকে সাহায্য করার না কোনো গোষ্ঠী ছিল আর না সে নিজে(ই এ ধ্বংসের) প্রতিকারে সমর্থ ছিল।
ہُنَالِکَ الۡوَلَایَۃُ لِلّٰہِ الۡحَقِّ ؕ ہُوَ خَیۡرٌ ثَوَابًا وَّ خَیۡرٌ عُقۡبًا ﴿۴۴﴾
কানযুল ঈমান
৪৪. এখানে সুস্পষ্ট হয় যে, ইখতিয়ার সত্যই আল্লাহ্র। তার পুরস্কার সর্বাধিক উত্তম এবং তাকে মান্য করার পরিণাম সবচেয়ে ভালো।
ইরফানুল কুরআন
৪৪. এখানে (এটি স্পষ্ট যে,) সকল কর্তৃত্ব আল্লাহ্রই, যিনি সত্য। তিনিই পুরস্কার দেয়ার ক্ষেত্রে উত্তম, আর তিনিই পরিণাম নির্ধারণে শ্রেষ্ঠ।
وَ اضۡرِبۡ لَہُمۡ مَّثَلَ الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا کَمَآءٍ اَنۡزَلۡنٰہُ مِنَ السَّمَآءِ فَاخۡتَلَطَ بِہٖ نَبَاتُ الۡاَرۡضِ فَاَصۡبَحَ ہَشِیۡمًا تَذۡرُوۡہُ الرِّیٰحُ ؕ وَ کَانَ اللّٰہُ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ مُّقۡتَدِرًا ﴿۴۵﴾
কানযুল ঈমান
৪৫. এবং তাদের নিকট পার্থিব জীবনের উপমা বর্ণনা করুনঃ যেমন- এক পানি আমি আসমান থেকে অবতীর্ণ করেছি, অতঃপর সেটার মাধ্যমে ভূমির উদ্ভিদ ঘন সন্নিবিষ্ট হয়ে উদগত হলো, যা শুষ্ক ঘাস হয়ে গেলো, যাকে বাতাস উড়িয়ে নিয়ে যায় এবং আল্লাহ্ প্রত্যেক বস্তুর উপর ক্ষমতাবান’।
ইরফানুল কুরআন
৪৫. আর আপনি তাদেরকে পার্থিব জীবনের দৃষ্টান্ত(ও) বর্ণনা করুন, (তা) এ পানির ন্যায়, যা আমরা আসমান থেকে অবতীর্ণ করি, যা দিয়ে ভু-পৃষ্ঠে ঘন সন্নিবিষ্ট হয়ে উদ্ভিদ উদ্গত হয়; অতঃপর এটি শুকনো খড়ে পরিণত হয়, যাকে বাতাস উড়িয়ে নিয়ে যায়। আর আল্লাহ্ সকল কিছুর উপর পূর্ণ ক্ষমতাবান।
اَلۡمَالُ وَ الۡبَنُوۡنَ زِیۡنَۃُ الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا ۚ وَ الۡبٰقِیٰتُ الصّٰلِحٰتُ خَیۡرٌ عِنۡدَ رَبِّکَ ثَوَابًا وَّ خَیۡرٌ اَمَلًا ﴿۴۶﴾
কানযুল ঈমান
৪৬. ধনৈশ্বর্য ও পুত্রগণ-এটা পার্থিব জীবনের শোভা; আর স্থায়ী উত্তম কথাবার্তা, সেগুলোর পুরষ্কার আপনার রবের নিকট উত্তম এবং তা আশার মধ্যে সর্বোকৃষ্ট।
ইরফানুল কুরআন
৪৬. ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি (তো কেবল) পার্থিব জীবনের সাজ-সজ্জা। আর (প্রকৃতপক্ষে) স্থায়ী (তো) নেক কাজসমূহ, (যা) আপনার প্রতিপালকের নিকট সাওয়াবের দিক থেকে(ও) উত্তম। আর আশার দিক থেকে(ও) উৎকৃষ্টতর।
وَ یَوۡمَ نُسَیِّرُ الۡجِبَالَ وَ تَرَی الۡاَرۡضَ بَارِزَۃً ۙ وَّ حَشَرۡنٰہُمۡ فَلَمۡ نُغَادِرۡ مِنۡہُمۡ اَحَدًا ﴿ۚ۴۷﴾
কানযুল ঈমান
৪৭. এবং যে দিন আমি পর্বতসমূহকে সঞ্চালিত করবো আর আপনি পৃথিবীকে উন্মুক্ত দেখবেন এবং আমি তাদেরকে উঠাবো, তখন তাদের মধ্যে কাউকেও ছাড়বো না।
ইরফানুল কুরআন
৪৭. (কিয়ামতের) সেদিন, যখন আমরা পর্বতমালাকে (চূর্ণ-বিচূর্ণ করে শূণ্যে) ধাবমান করবো এবং আপনি পৃথিবীকে একটি উন্মুক্ত প্রান্তর দেখতে পাবেন; (এর উপর গাছ, পাথর এবং প্রাণীকূল ও তৃণলতার কিছুই থাকবে না।) তখন আমরা সকল মানুষকে একত্রিত করবো এবং তাদের কাউকে(ই) ছাড়বো না।
وَ عُرِضُوۡا عَلٰی رَبِّکَ صَفًّا ؕ لَقَدۡ جِئۡتُمُوۡنَا کَمَا خَلَقۡنٰکُمۡ اَوَّلَ مَرَّۃٍۭ ۫ بَلۡ زَعَمۡتُمۡ اَلَّنۡ نَّجۡعَلَ لَکُمۡ مَّوۡعِدًا ﴿۴۸﴾
কানযুল ঈমান
৪৮. এবং সবাইকে আপনার রবের সম্মুখে সারিবদ্ধভাবে উপস্থিত করা হবে। নিঃসন্দেহে, তোমরা আমার নিকট তেমনিভাবে এসেছো যেমন আমি তোমাদেরকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলাম; বরং তোমাদের ধারণা ছিলো যে, আমি কখনো তোমাদের জন্য কোন প্রতিশ্রুতির সময় রাখবো না।
ইরফানুল কুরআন
৪৮. আর (সকল মানুষকে) আপনার প্রতিপালকের সমীপে সারিবদ্ধভাবে পেশ করা হবে। (তাদেরকে বলা হবে,) ‘নিশ্চয়ই তোমরা (আজ এমনভাবে) আমাদের নিকট এসেছো, যেভাবে তোমাদেরকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলাম; বরং তোমরা এ ধারণা করতে যে, আমরা কখনো তোমাদের জন্যে প্রতিশ্রুত ক্ষণ উপস্থিত করবো না।’
وَ وُضِعَ الۡکِتٰبُ فَتَرَی الۡمُجۡرِمِیۡنَ مُشۡفِقِیۡنَ مِمَّا فِیۡہِ وَ یَقُوۡلُوۡنَ یٰوَیۡلَتَنَا مَالِ ہٰذَا الۡکِتٰبِ لَا یُغَادِرُ صَغِیۡرَۃً وَّ لَا کَبِیۡرَۃً اِلَّاۤ اَحۡصٰہَا ۚ وَ وَجَدُوۡا مَا عَمِلُوۡا حَاضِرًا ؕ وَ لَا یَظۡلِمُ رَبُّکَ اَحَدًا ﴿۴۹﴾
কানযুল ঈমান
৪৯. এবং আমলনামা রাখা হবে, অতঃপর আপনি অপরাধীদেরকে দেখবেন যে, তারা তার লিখন থেকে ভীত থাকবে এবং বলবে, ‘হায়, দুর্ভাগ্য আমাদের! এ লিপিটার কি হলো! সেটা তো না এমন কোন ছোট গুনাহকে বাদ দিয়েছে, না বড়কে, যা তাকে পরিবেষ্টন করে নেয় নি’। আর তারা নিজেদের সব কৃতকর্ম সামনে পাবে; এবং আপনার রব কারো উপর যুল্ম করেন না।
ইরফানুল কুরআন
৪৯. আর (প্রত্যেকের সম্মুখে) আমলনামা উপস্থিত করা হবে, সুতরাং আপনি অপরাধীদের দেখবেন, (তারা) এতে (গোনাহ এবং অপরাধ দেখে) ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে যাবে, যা এতে (এ আমলনামায়) লিপিবদ্ধ থাকবে; আর বলবে, ‘হায় দুর্ভোগ আমাদের! এ কেমন আমলনামা, এটি না কোনো ছোট (বিষয়) ছেড়েছে আর না কোনো বড় (বিষয়); বরং এটি (সকল বিষয়) হিসেব করে রেখেছে।’ আর তারা যা কিছু করতো তা (তাদের সম্মুখে) উপস্থিত পাবে। আর আপনার প্রতিপালক কারো প্রতি যুলুম করবেন না।
وَ اِذۡ قُلۡنَا لِلۡمَلٰٓئِکَۃِ اسۡجُدُوۡا لِاٰدَمَ فَسَجَدُوۡۤا اِلَّاۤ اِبۡلِیۡسَ ؕ کَانَ مِنَ الۡجِنِّ فَفَسَقَ عَنۡ اَمۡرِ رَبِّہٖ ؕ اَفَتَتَّخِذُوۡنَہٗ وَ ذُرِّیَّتَہٗۤ اَوۡلِیَآءَ مِنۡ دُوۡنِیۡ وَ ہُمۡ لَکُمۡ عَدُوٌّ ؕ بِئۡسَ لِلظّٰلِمِیۡنَ بَدَلًا ﴿۵۰﴾
কানযুল ঈমান
৫০. এবং স্মরণ করুন, যখন আমি ফিরিশতাদেরকে বলেছি, ‘আদমকে সাজদা করো!’ তখন সবাই সাজদা করলো ইবলীস ব্যতীত; সে জিন সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত ছিলো। অতঃপর সে আপন রবের নির্দেশ থেকে বের হয়ে গেলো। তবে কি তোমরা তাকে ও তার বংশধরকে আমার পরিবর্তে বন্ধুরূপে গ্রহণ করছো? এবং তারা তোমাদের শত্রু। যালিমগণ কতই নিকৃষ্ট বিনিময় পেলো!
ইরফানুল কুরআন
৫০. আর (স্মরণ করুন সে সময়ের কথা) যখন আমরা ফেরেশতাদেরকে বলেছিলাম, ‘তোমরা আদম (আলাইহিস সালাম)-কে (সম্মানসূচক) সেজদা করো’, তখন তারা (সকলে) সেজদা করলো, ইবলিস ব্যতীত। সে (ইবলীস) ছিল জ্বিনদের একজন, তখন সে তার প্রতিপালকের আনুগত্য ছিন্ন করলো। তোমরা কি আমাকে ছেড়ে তাকে এবং তার সন্তান-সন্ততিকে বন্ধু বানাচ্ছো? অথচ সে তোমাদের দুশমন। এটি যালিমদের জন্যে কতোই না নিকৃষ্ট বিকল্প। (যা তারা আমার স্থলে বাছাই করে নিয়েছে।)
مَاۤ اَشۡہَدۡتُّہُمۡ خَلۡقَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ وَ لَا خَلۡقَ اَنۡفُسِہِمۡ ۪ وَ مَا کُنۡتُ مُتَّخِذَ الۡمُضِلِّیۡنَ عَضُدًا ﴿۵۱﴾
কানযুল ঈমান
৫১. না আমি আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি কালে তাদেরকে সামনে বসিয়ে নিয়েছিলাম, না খোদ তাদেরকে সৃষ্টি কালে এবং না এ কথা আমার জন্য শোভা পায় যে, পথভ্রষ্টকারীদেরকে বাহু বানিয়ে নেবো।
ইরফানুল কুরআন
৫১. আমি না তাদেরকে আকাশমন্ডলী এবং পৃথিবী সৃষ্টিতে (সাহায্য অথবা সাক্ষ্যের জন্যে) আহ্বান করেছিলাম, আর না স্বয়ং তাদের সৃষ্টির (সময়ে)। আর না আমি এমন ছিলাম যে, পথভ্রষ্টকারীদেরকে (আমার) সাহায্যকারীরূপে গ্রহণ করি।
وَ یَوۡمَ یَقُوۡلُ نَادُوۡا شُرَکَآءِیَ الَّذِیۡنَ زَعَمۡتُمۡ فَدَعَوۡہُمۡ فَلَمۡ یَسۡتَجِیۡبُوۡا لَہُمۡ وَ جَعَلۡنَا بَیۡنَہُمۡ مَّوۡبِقًا ﴿۵۲﴾
কানযুল ঈমান
৫২. এবং যেদিন বলবেন, ‘আহ্বান করো আমার শরীকদেরকে, যা তোমরা ধারণা করতে!’ তখন তারা তাদেরকে আহ্বান করবে। তারা তাদেরকে জবাব দেবে না এবং আমি তাদের মধ্যস্থলে এক ধ্বংসের ময়দান করে দেবো।
ইরফানুল কুরআন
৫২. আর (স্মরণ করুন) সেদিন, (যখন) আল্লাহ্ বলবেন, ‘তাদেরকে আহ্বান করো, যাদেরকে তোমরা আমার অংশীদার মনে করতে’। অতঃপর তারা তাদেরকে আহ্বান করবে, কিন্তু তারা তাদের কোনো প্রতিউত্তর করবে না। আর আমরা তাদের মাঝে (জাহান্নামের এক উপত্যকাকে) ধ্বংস-গহ্বর বানিয়ে দেবো।
وَ رَاَ الۡمُجۡرِمُوۡنَ النَّارَ فَظَنُّوۡۤا اَنَّہُمۡ مُّوَاقِعُوۡہَا وَ لَمۡ یَجِدُوۡا عَنۡہَا مَصۡرِفًا ﴿۵۳﴾
কানযুল ঈমান
৫৩. এবং অপরাধীরা দোযখ দেখবে, অতঃপর বিশ্বাস করবে যে, তাদেরকে তাতেই পতিত হতে হবে এবং তা থেকে ফেরার কোন স্থান পাবে না।
ইরফানুল কুরআন
৫৩. আর অপরাধীরা জাহান্নামের আগুন দেখতে পেয়ে বুঝে যাবে যে, তারা অবশ্যই এতে নিক্ষিপ্ত হবে। আর তারা এ থেকে পরিত্রাণের কোনো সুযোগই পাবে না।
وَ لَقَدۡ صَرَّفۡنَا فِیۡ ہٰذَا الۡقُرۡاٰنِ لِلنَّاسِ مِنۡ کُلِّ مَثَلٍ ؕ وَ کَانَ الۡاِنۡسَانُ اَکۡثَرَ شَیۡءٍ جَدَلًا ﴿۵۴﴾
কানযুল ঈমান
৫৪. এবং নিশ্চয় আমি মানুষের জন্য এ ক্বোরআনের মধ্যে প্রত্যেক প্রকারের উপমা বিভিন্নভাবে বর্ণনা করেছি এবং মানুষ প্রত্যেক কিছু অপেক্ষা অধিক বিতর্ককারী।
ইরফানুল কুরআন
৫৪. আর আমরা অবশ্যই এ কুরআনে মানুষের জন্যে (ধরণ পরিবর্তন করে করে) সকল প্রকারের দৃষ্টান্ত বারবার বর্ণনা করেছি; আর মানুষ ঝগড়ার ক্ষেত্রে সকল কিছুর চেয়ে অগ্রসর।
وَ مَا مَنَعَ النَّاسَ اَنۡ یُّؤۡمِنُوۡۤا اِذۡ جَآءَہُمُ الۡہُدٰی وَ یَسۡتَغۡفِرُوۡا رَبَّہُمۡ اِلَّاۤ اَنۡ تَاۡتِیَہُمۡ سُنَّۃُ الۡاَوَّلِیۡنَ اَوۡ یَاۡتِیَہُمُ الۡعَذَابُ قُبُلًا ﴿۵۵﴾
কানযুল ঈমান
৫৫. এবং মানুষকে কোন বস্তু এতে বাধা প্রদান করেছে যে, তারা ঈমান আনতো যখন হিদায়ত তাদের নিকট এসেছে এবং আপন রবের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করতো? কিন্তু এটাই যে, তাদের উপর পূর্ববর্তীদের ক্ষেত্রে গৃহীত রীতি আসবে, কিংবা তাদের উপর বিভিন্ন ধরনের শাস্তি আসবে।
ইরফানুল কুরআন
৫৫. আর মানুষকে, যখন তাদের নিকট হেদায়াত এসে পৌঁছলো, তখন শুধু এ প্রতীক্ষাই ঈমান আনয়নে এবং তাদের প্রতিপালকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করতে বিরত রাখে যে, তাদের কাছে পূর্ব-পুরুষদের অনুরূপ (ধ্বংস) কখন আগমন করবে অথবা কখনোই বা তাদের সামনে শাস্তি আসবে।
وَ مَا نُرۡسِلُ الۡمُرۡسَلِیۡنَ اِلَّا مُبَشِّرِیۡنَ وَ مُنۡذِرِیۡنَ ۚ وَ یُجَادِلُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا بِالۡبَاطِلِ لِیُدۡحِضُوۡا بِہِ الۡحَقَّ وَ اتَّخَذُوۡۤا اٰیٰتِیۡ وَ مَاۤ اُنۡذِرُوۡا ہُزُوًا ﴿۵۶﴾
কানযুল ঈমান
৫৬. এবং আমি রসূলগণকে প্রেরণ করি না, কিন্তু সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী রূপেই এবং যারা কাফির তারা বাতিলের আশ্রয় নিয়ে বিতণ্ডা করে যাতে তা দ্বারা সত্যকে অপসারণ করে দেয় এবং তারা আমার আয়াতসমূহকে এবং যেই ভয়ের বাণী তাদেরকে শুনানো হয়েছিলো ওইগুলোকে বিদ্রূপের বিষয়রূপে গ্রহণ করে নিয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৫৬. আর আমরা কেবল রাসূলগণকে (মানুষের জন্যে) সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী রূপেই পাঠিয়ে থাকি; আর কাফেরেরা (এ রাসূলগণের সাথে) অনর্থক বিষয়ে ঝগড়া করে যাতে এ (মিথ্যা) বিষয় দিয়ে সত্যকে দূরীভুত করা যায়। আর আমার আয়াতসমূহকে এবং যার (অর্থাৎ শাস্তির) মাধ্যমে তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে, সে সবকে তারা বিদ্রূপের বিষয়রূপে গ্রহণ করে থাকে।
وَ مَنۡ اَظۡلَمُ مِمَّنۡ ذُکِّرَ بِاٰیٰتِ رَبِّہٖ فَاَعۡرَضَ عَنۡہَا وَ نَسِیَ مَا قَدَّمَتۡ یَدٰہُ ؕ اِنَّا جَعَلۡنَا عَلٰی قُلُوۡبِہِمۡ اَکِنَّۃً اَنۡ یَّفۡقَہُوۡہُ وَ فِیۡۤ اٰذَانِہِمۡ وَقۡرًا ؕ وَ اِنۡ تَدۡعُہُمۡ اِلَی الۡہُدٰی فَلَنۡ یَّہۡتَدُوۡۤا اِذًا اَبَدًا ﴿۵۷﴾
কানযুল ঈমান
৫৭. এবং তার চেয়ে অধিক যালিম কে, যাকে তার রবের আয়াতসমূহ স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়, অতঃপর সে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং তার হস্তদ্বয় যা অগ্রে প্রেরণ করেছে তা ভুলে যায়? আমি তাদের অন্তরগুলোর উপর আবরণ করে দিয়েছি যাতে ক্বোরআন না বুঝে এবং তাদের কানগুলোতে বধিরতা। আর যদি আপনি তাদেরকে হিদায়াতের প্রতি আহ্বান করেন তবুও তারা কখনো সৎপথ পাবে না।
ইরফানুল কুরআন
৫৭. আর এর চেয়ে বড় যালিম কে হবে, যাকে তার প্রতিপালকের নিদর্শনাবলী স্মরণ করিয়ে দেয়া হলো, অথচ সে মুখ ফিরিয়ে নিলো এবং (মন্দ কৃতকর্মগুলো) ভুলে গেলো যা তার হস্ত অগ্রে প্রেরণ করেছিল? বাস্তবিকই আমরা তাদের অন্তরে পর্দা ফেলে দিয়েছি, যাতে তারা সত্য অনুধাবন করতে (না) পারে এবং তাদের কানে বধিরতা চাপিয়ে দিয়েছি (যাতে তারা সত্য শ্রবণ করতে না পারে)। আর যদি আপনি তাদেরকে হেদায়াতের দিকে আহ্বান করেন, তবে তারা কখনোই হেদায়াত গ্রহণ করবে না।
وَ رَبُّکَ الۡغَفُوۡرُ ذُو الرَّحۡمَۃِ ؕ لَوۡ یُؤَاخِذُہُمۡ بِمَا کَسَبُوۡا لَعَجَّلَ لَہُمُ الۡعَذَابَ ؕ بَلۡ لَّہُمۡ مَّوۡعِدٌ لَّنۡ یَّجِدُوۡا مِنۡ دُوۡنِہٖ مَوۡئِلًا ﴿۵۸﴾
কানযুল ঈমান
৫৮. এবং আপনার রব ক্ষমাশীল, দয়ালু। যদি তিনি তাদেরকে তাদের কৃতকর্মের উপর পাকড়াও করতেন, তাহলে শিগ্গিরই তাদের উপর শাস্তি প্রেরণ করতেন; বরং তাদের জন্য একটা প্রতিশ্রুতির সময় রয়েছে, যার সামনে তারা কোন আশ্রয়স্থল পাবে না।
ইরফানুল কুরআন
৫৮. আর আপনার প্রতিপালক মহাক্ষমাশীল, পরম করুণাময়। যদি তিনি তাদের কর্মকান্ডের জন্যে তাদেরকে পাকড়াও করতেন, তবে তাদের উপর অবশ্যই শাস্তি ত্বরান্বিত করতেন। বরং তাদের জন্যে (তো) প্রতিশ্রুত মুহুর্ত (নির্ধারিত) রয়েছে। (যখন সে সময় আসবে, তখন) তারা তাঁকে ব্যতীত কোনো আশ্রয়স্থল পাবে না।
وَ تِلۡکَ الۡقُرٰۤی اَہۡلَکۡنٰہُمۡ لَمَّا ظَلَمُوۡا وَ جَعَلۡنَا لِمَہۡلِکِہِمۡ مَّوۡعِدًا ﴿۵۹﴾
কানযুল ঈমান
৫৯. এবং এসব জনপদকে আমি ধ্বংস করে দিয়েছি যখন তারা যুল্ম করেছে এবং আমি তাদের ধ্বংসের একটা প্রতিশ্রুতি রেখেছি।
ইরফানুল কুরআন
৫৯. আর এসব জনপদ, যার অধিবাসীদেরকে আমরা ধ্বংস করেছিলাম যখন তারা নিপীড়ন ও অবিচার করেছিল এবং আমরা তাদের ধ্বংসের জন্যে এক নির্দিষ্ট ক্ষণ স্থির করেছিলাম।
وَ اِذۡ قَالَ مُوۡسٰی لِفَتٰىہُ لَاۤ اَبۡرَحُ حَتّٰۤی اَبۡلُغَ مَجۡمَعَ الۡبَحۡرَیۡنِ اَوۡ اَمۡضِیَ حُقُبًا ﴿۶۰﴾
কানযুল ঈমান
৬০. এবং স্মরণ করুন! যখন মূসা আপন খাদেমকে বললো, ‘আমি ক্ষান্ত হবো না যতক্ষণ পর্যন্ত সেখানে পৌছবো না যেখানে দু’টি সমুদ্র মিলিত হয়েছে অথবা যুগ যুগ ধরে চলতে থাকবো।
ইরফানুল কুরআন
৬০. আর (সে সময়ের কথাও স্মরণ করুন) যখন মূসা (আলাইহিস সালাম) তাঁর (যুবক সঙ্গী এবং) সেবক (ইউশা বিন নূন আলাইহিস সালাম)-কে বললেন, ‘আমি (পশ্চাতে) সরে আসবো না যতক্ষণ পর্যন্ত না দু’ সমুদ্রের মিলনস্থল পর্যন্ত পৌঁছি অথবা যুগ যুগ ধরে চলতে থাকবো’।
فَلَمَّا بَلَغَا مَجۡمَعَ بَیۡنِہِمَا نَسِیَا حُوۡتَہُمَا فَاتَّخَذَ سَبِیۡلَہٗ فِی الۡبَحۡرِ سَرَبًا ﴿۶۱﴾
কানযুল ঈমান
৬১. অতঃপর যখন তারা উভয়ে এই সমুদ্রে দু’টির সঙ্গমস্থলে পৌছলে তখন তারা নিজেদের মাছের কথা ভুলে গেলো এবং সেটা সমুদ্রের মধ্যে সুড়ঙ্গ করে আপন পথ করে নিলো।
ইরফানুল কুরআন
৬১. সুতরাং যখন তাঁরা উভয়ে দুই সমুদ্রের মধ্যবর্তী মিলনস্থলে পৌঁছলেন, তখন তাঁরা (সেখানে) তাদের মাছের কথা ভুলে গেলেন। অতঃপর সে (ভাজা মাছ জীবিত হয়ে) সুরঙ্গের ন্যায় সমুদ্রে তার পথ করে নিলো (এবং চলে গেল)।
فَلَمَّا جَاوَزَا قَالَ لِفَتٰىہُ اٰتِنَا غَدَآءَنَا ۫ لَقَدۡ لَقِیۡنَا مِنۡ سَفَرِنَا ہٰذَا نَصَبًا ﴿۶۲﴾
কানযুল ঈমান
৬২. অতপর যখন সেখান থেকে অতিক্রম করে গেলো, তখন মূসা খাদেমকে বললো, ‘আমাদের প্রাতঃরাশ আনো, নিশ্চয় আমরা আমাদের এ সফরে বড় কষ্টের সম্মুখীন হলাম’।
ইরফানুল কুরআন
৬২. অতঃপর যখন তাঁরা দু’জন সামনে অগ্রসর হলেন, (তখন) মূসা (আলাইহিস সালাম) তাঁর সেবককে বললেন, ‘আমাদের প্রাতঃরাশ নিয়ে এসো; আমরা তো আমাদের এ সফরে বড়ই কষ্টের সম্মুখীন হয়েছি।’
قَالَ اَرَءَیۡتَ اِذۡ اَوَیۡنَاۤ اِلَی الصَّخۡرَۃِ فَاِنِّیۡ نَسِیۡتُ الۡحُوۡتَ ۫ وَ مَاۤ اَنۡسٰنِیۡہُ اِلَّا الشَّیۡطٰنُ اَنۡ اَذۡکُرَہٗ ۚ وَ اتَّخَذَ سَبِیۡلَہٗ فِی الۡبَحۡرِ ٭ۖ عَجَبًا ﴿۶۳﴾
কানযুল ঈমান
৬৩. বললো, ‘ভালো দেখুন তো! যখন আমরা ওই শিলাখণ্ডের নিকট আশ্রয় নিয়েছিলাম, তখন নিশ্চয় আমি মাছের কথা ভুলে গেছি এবং আমাকে শয়তানই ভুলিয়ে দিয়েছিলো সেটার কথা উল্লেখ করতে এবং সেটা তো সমুদ্রের মধ্যে আপন পথ করে নিয়েছে, আশ্চর্যজনকভাবে’।
ইরফানুল কুরআন
৬৩. (সেবক) বললেন, ‘আপনি কি লক্ষ্য করেছেন, আমরা যখন শিলাখন্ডে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম আমি (সেখানে) মাছের কথা ভুলে গিয়েছিলাম এবং আপনাকে এর কথা স্মরণ করিয়ে দিতে শয়তানই আমাকে ভুলিয়ে দিয়েছিল। আর এ (মাছ) তো (জীবিত হয়ে) আশ্চর্যজনকভাবে সমুদ্রে নিজের পথ করে নিলো (এবং অদৃশ্য হয়ে গেলো)।’
قَالَ ذٰلِکَ مَا کُنَّا نَبۡغِ ٭ۖ فَارۡتَدَّا عَلٰۤی اٰثَارِہِمَا قَصَصًا ﴿ۙ۶۴﴾
কানযুল ঈমান
৬৪. মূসা বললো, ‘এটারই তো আমরা অনুসন্ধান করছিলাম’। অতঃপর তারা নিজেদের পদচিহ্ন ধরে ফিরে চলে গেলো।
ইরফানুল কুরআন
৬৪. মূসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘এই সে (স্থান), যার অন্বেষণ আমরা করছিলাম’। অতঃপর উভয়ে নিজেদের পদচিহ্ন ধরে (সেই রাস্তা) খুঁজতে খুঁজতে (একই স্থানে) ফিরে গেলেন।
فَوَجَدَا عَبۡدًا مِّنۡ عِبَادِنَاۤ اٰتَیۡنٰہُ رَحۡمَۃً مِّنۡ عِنۡدِنَا وَ عَلَّمۡنٰہُ مِنۡ لَّدُنَّا عِلۡمًا ﴿۶۵﴾
কানযুল ঈমান
৬৫. অতঃপর তারা আমার বান্দাদের থেকে একজন বান্দাকে পেলো, যাকে আমি আমার নিকট থেকে অনুগ্রহ দান করেছি এবং তাকে আপন ‘ইলমে লাদুন্নী’ দান করেছি।
ইরফানুল কুরআন
৬৫. অতঃপর তারা দু’জন (সেখানে) আমার বান্দাদের মধ্য থেকে এক (খাস) বান্দা (খিযির আলাইহিস সালাম)-কে পেলেন, যাঁকে আমরা আমাদের পক্ষ থেকে (বিশেষ) অনুগ্রহ দান করেছিলাম এবং আমরা তাঁকে আমাদের ইলমে লাদুন্নী (অর্থাৎ গোপন রহস্য ও মারেফাতের ইলহামী জ্ঞান) শিখিয়েছিলাম।
قَالَ لَہٗ مُوۡسٰی ہَلۡ اَتَّبِعُکَ عَلٰۤی اَنۡ تُعَلِّمَنِ مِمَّا عُلِّمۡتَ رُشۡدًا ﴿۶۶﴾
কানযুল ঈমান
৬৬. তাকে মূসা বললো, ‘আমি কি তোমার সাথে থাকবো এ শর্তে যে, তুমি আমাকে শিক্ষা দেবে ভাল কথা, যা তোমাকে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে?’
ইরফানুল কুরআন
৬৬. মূসা (আলাইহিস সালাম) তাঁকে বললেন, ‘আমি কি আপনার সাথে এ শর্তে অবস্থান করতে পারি যে, আপনি আমাকে(ও) সে জ্ঞান থেকে কিছু শেখাবেন, যা আপনাকে পথপ্রদর্শনের নিমিত্তে শেখানো হয়েছে?’
قَالَ اِنَّکَ لَنۡ تَسۡتَطِیۡعَ مَعِیَ صَبۡرًا ﴿۶۷﴾
কানযুল ঈমান
৬৭. বললো, ‘আপনি আমার সাথে কিছুতেই ধৈর্য ধরে রাখতে পারবেন না।
ইরফানুল কুরআন
৬৭. (খিযির আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘আপনি কিছুতেই আমার সাথে থেকে ধৈর্য ধারণ করতে পারবেন না।
وَ کَیۡفَ تَصۡبِرُ عَلٰی مَا لَمۡ تُحِطۡ بِہٖ خُبۡرًا ﴿۶۸﴾
কানযুল ঈমান
৬৮. এবং ওই কথার উপর কিভাবে ধৈর্য ধারণ করবেন যাকে আপনার জ্ঞান পরিবেষ্টন করে নি?’
ইরফানুল কুরআন
৬৮. আর আপনি এর (এ বিষয়ের) উপর কিভাবে ধৈর্য ধারণ করতে পারবেন, যে বিষয় আপনার (পুরোপুরি) জ্ঞানায়ত্ব নয়?’
قَالَ سَتَجِدُنِیۡۤ اِنۡ شَآءَ اللّٰہُ صَابِرًا وَّ لَاۤ اَعۡصِیۡ لَکَ اَمۡرًا ﴿۶۹﴾
কানযুল ঈমান
৬৯. বললো, ‘অদূর ভবিষ্যতে আল্লাহ্ চাইলে তুমি আমাকে ধৈর্যশীল পাবে এবং আমি তোমার কোন নির্দেশের বিরোধিতা করবো না’।
ইরফানুল কুরআন
৬৯. মূসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘আপনি “ইন-শা-আল্লাহ্” আমাকে অবশ্যই ধৈর্যশীল পাবেন, আর আমি আপনার কোনো নির্দেশাবলী অমান্য করবো না’।
قَالَ فَاِنِ اتَّبَعۡتَنِیۡ فَلَا تَسۡـَٔلۡنِیۡ عَنۡ شَیۡءٍ حَتّٰۤی اُحۡدِثَ لَکَ مِنۡہُ ذِکۡرًا ﴿۷۰﴾
কানযুল ঈমান
৭০. বললো, ‘তাহলে যদি আপনি আমার সাথে থাকেন, তবে আমাকে কোন কথা জিজ্ঞাসা করবেন না যতক্ষণ পর্যন্ত আমি নিজে সেটা উল্লেখ করবো না।
ইরফানুল কুরআন
৭০. (খিযির আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘অতঃপর আপনি যদি আমার সাথে থাকেনই, তবে আমাকে কোনো বিষয়ে প্রশ্ন করবেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত না আমি নিজে আপনাকে তা উল্লেখ করি’।
فَانۡطَلَقَا ٝ حَتّٰۤی اِذَا رَکِبَا فِی السَّفِیۡنَۃِ خَرَقَہَا ؕ قَالَ اَخَرَقۡتَہَا لِتُغۡرِقَ اَہۡلَہَا ۚ لَقَدۡ جِئۡتَ شَیۡئًا اِمۡرًا ﴿۷۱﴾
কানযুল ঈমান
৭১. অতঃপর উভয়ে চলতে লাগলো। শেষ পর্যন্ত যখন তারা নৌকায় আরোহণ করলো, তখন ওই বান্দা সেটাকে ছেদ করে দিলো। মূসা বললো, ‘তুমি কি এটা এ জন্য ছেদ করেছো যে, এর আরোহণকারীদের নিমজ্জিত করে দেবে? নিঃসন্দেহে, তুমি এটা মন্দ কাজই করেছো’।
ইরফানুল কুরআন
৭১. অতঃপর উভয়ে চলতে লাগলেন, অবশেষে যখন উভয়ে নৌকায় আরোহণ করলেন, তখন তিনি (খিযির আলাইহিস সালাম) এতে (এ নৌকায়) ছিদ্র করে দিলেন। মুসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘আপনি কি একে এ জন্যে ছিদ্র করে দিয়েছেন যে, আপনি নৌকার আরোহীদের ডুবিয়ে দে বেন? নিশ্চয়ই আপনি বড়ই অদ্ভুত কাজ করলেন’।
قَالَ اَلَمۡ اَقُلۡ اِنَّکَ لَنۡ تَسۡتَطِیۡعَ مَعِیَ صَبۡرًا ﴿۷۲﴾
কানযুল ঈমান
৭২. বললো, ‘আমি কি বলছিলাম না যে, আপনি আমার সাথে কিছুতেই ধৈর্যধরে থাকতে পারবে না?;
ইরফানুল কুরআন
৭২. (খিযির আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘আমি কি বলিনি যে, আপনি আমার সাথে থেকে কিছুতেই ধৈর্য ধারণ করতে পারবেন না?’
قَالَ لَا تُؤَاخِذۡنِیۡ بِمَا نَسِیۡتُ وَ لَا تُرۡہِقۡنِیۡ مِنۡ اَمۡرِیۡ عُسۡرًا ﴿۷۳﴾
কানযুল ঈমান
৭৩. বললো ‘আমাকে আমার ভুলে যাবার জন্য পাকড়াও করো না এবং আমার উপর আমার কাজের মধ্যে সমস্যা সৃষ্টি করো না’।
ইরফানুল কুরআন
৭৩. মূসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘আপনি আমার ভুলের জন্যে আমাকে পাকড়াও করবেন না এবং (এ) বিষয়ে আমাকে কঠিন সমস্যায় ফেলবেন না’।
فَانۡطَلَقَا ٝ حَتّٰۤی اِذَا لَقِیَا غُلٰمًا فَقَتَلَہٗ ۙ قَالَ اَقَتَلۡتَ نَفۡسًا زَکِیَّۃًۢ بِغَیۡرِ نَفۡسٍ ؕ لَقَدۡ جِئۡتَ شَیۡئًا نُّکۡرًا ﴿۷۴﴾
কানযুল ঈমান
৭৪. অতঃপর উভয়ে চলতে লাগলো। শেষ পর্যন্ত যখন একটা বালকের সাথে সাক্ষাৎ হলো তখন ওই বান্দা তাকে হত্যা করে ফেললো। মূসা বললো, ‘তুমি কি একটা নির্দোষ প্রাণ অন্য কোন প্রাণের বদলে ব্যতীতই হত্যা করে ফেললে? নিশ্চয় তুমি গুরুতর অন্যায় কাজ করেছো’।
ইরফানুল কুরআন
৭৪. অতঃপর তারা দু’জন চলতে লাগলেন, অবশেষে এক বালকের সাক্ষাত পেলেন, তখন (খিযির আলাইহিস সালাম) তাকে হত্যা করে ফেললেন। মূসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘আপনি নিরপরাধ এক প্রাণ কোনো প্রাণের (প্রতিশোধের) বিনিময় ছাড়াই হত্যা করে ফেললেন? আপনি তো খুবই ভয়ানক কাজ করলেন!’
قَالَ اَلَمۡ اَقُلۡ لَّکَ اِنَّکَ لَنۡ تَسۡتَطِیۡعَ مَعِیَ صَبۡرًا ﴿۷۵﴾
কানযুল ঈমান
৭৫. বললো, আমি কি আপনাকে বলিনি যে, আপনি কখনো আমার সাথে ধৈর্য ধারণ করে থাকতে পারবেন না’?
ইরফানুল কুরআন
৭৫. (খিযির আলাইহিস সালাম) বললেন, আমি কি আপনাকে বলিনি যে, ‘আপনি আমার সাথে থেকে কিছুতেই ধৈর্য ধারণ করতে পারবেন না?’
قَالَ اِنۡ سَاَلۡتُکَ عَنۡ شَیۡءٍۭ بَعۡدَہَا فَلَا تُصٰحِبۡنِیۡ ۚ قَدۡ بَلَغۡتَ مِنۡ لَّدُنِّیۡ عُذۡرًا ﴿۷۶﴾
কানযুল ঈমান
৭৬. বললো, ‘এর পর যদি আমি তোমাকে কিছু জিজ্ঞাসা করি তবে তুমি আমার সাথে আর থেকো না; নিঃসন্দেহে আমার দিক থেকে তোমার ওযর আপত্তি পরিপূর্ণ হয়েগেছে’।
ইরফানুল কুরআন
৭৬. মূসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘এরপর যদি আমি আপনাকে কোনো বিষয়ে প্রশ্ন করি তবে আপনি আমাকে সাথে রাখবেন না। নিশ্চয়ই আমার দিক থেকে আপনি অযুহাতের সীমানায় পৌঁছে গেছেন।’
فَانۡطَلَقَا ٝ حَتّٰۤی اِذَاۤ اَتَیَاۤ اَہۡلَ قَرۡیَۃِۣ اسۡتَطۡعَمَاۤ اَہۡلَہَا فَاَبَوۡا اَنۡ یُّضَیِّفُوۡہُمَا فَوَجَدَا فِیۡہَا جِدَارًا یُّرِیۡدُ اَنۡ یَّنۡقَضَّ فَاَقَامَہٗ ؕ قَالَ لَوۡ شِئۡتَ لَتَّخَذۡتَ عَلَیۡہِ اَجۡرًا ﴿۷۷﴾
কানযুল ঈমান
৭৭. অতঃপর উভয়ে চললো; শেষ পর্যন্ত যখন একটা গ্রামের অধিবাসীদের নিকট এলো, তখন গ্রামবাসীদের নিকট খাদ্য চাইলো। তাদের আতিথেয়তা করতে তারা অস্বীকার করলো। অতঃপর উভয়ে ওই গ্রামে এমন একটা প্রাচীর পেলো, যা পতিত হবার উপক্রম হয়েছিলো। ওই বান্দা সেটাকে সোজা করে দিলো। মূসা বললো, ‘তুমি ইচ্ছা করলে সেটার জন্য কিছু পারিশ্রমিক নিতে পারতে’।
ইরফানুল কুরআন
৭৭. অতঃপর উভয়ে চলতে লাগলেন যতক্ষণ না তাঁরা এক জনপদের অধিবাসীদের নিকট পৌঁছলেন। তাঁরা সেখানকার বাসিন্দাদের নিকট খাবার চাইলেন, কিন্তু তাঁরা তাদের আতিথেয়তা করতে অস্বীকার করলো। অতঃপর উভয়ে সেখানে পতনোন্মুখ এক দেয়াল পেলেন, তখন (খিযির আলাইহিস সালাম) এটি সোজা করে দিলেন। (মূসা আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘আপনি চাইলে এ (নির্মাণ) কাজের পারিশ্রমিক নিতে পারতেন’।
قَالَ ہٰذَا فِرَاقُ بَیۡنِیۡ وَ بَیۡنِکَ ۚ سَاُنَبِّئُکَ بِتَاۡوِیۡلِ مَا لَمۡ تَسۡتَطِعۡ عَّلَیۡہِ صَبۡرًا ﴿۷۸﴾
কানযুল ঈমান
৭৮. বললো, ‘এটাই আমার ও আপনার মধ্যে বিদায়; এখন আমি আপনাকে ওই সব বিষয়ের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করবো, যেগুলোর উপর আপনি ধৈর্যধারণ করতে পারেন নি;
ইরফানুল কুরআন
৭৮. (খিযির আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘এ হলো আমার এবং আপনার মাঝে সম্পর্কচ্ছেদ (-এর সময়)। এখন আমি আপনাকে সেসব বিষয়াদির প্রকৃত তাৎপর্য অবগত করবো, যার উপর আপনি ধৈর্য ধারণ করতে পারেননি।
اَمَّا السَّفِیۡنَۃُ فَکَانَتۡ لِمَسٰکِیۡنَ یَعۡمَلُوۡنَ فِی الۡبَحۡرِ فَاَرَدۡتُّ اَنۡ اَعِیۡبَہَا وَ کَانَ وَرَآءَہُمۡ مَّلِکٌ یَّاۡخُذُ کُلَّ سَفِیۡنَۃٍ غَصۡبًا ﴿۷۹﴾
কানযুল ঈমান
৭৯. ওই যে নৌকা ছিলো, সেটা এমন কিছু অভাবগ্রস্ত লোকেরই ছিলো; যারা সমুদ্রে কাজ করতো; অতঃপর আমি ইচ্ছা করলাম যে, সেটাকে ত্রুটিযুক্ত করে দেবো। এবং তাদের পেছনে একজন বাদশাহ ছিলো যে প্রত্যেক ত্রুটিমুক্ত নৌকা বল প্রয়োগ করে ছিনিয়ে নিতো।
ইরফানুল কুরআন
৭৯. ঐ যে নৌকাটি ছিল, সেটি ছিল কতিপয় গরীব লোকের, তারা সমুদ্রে মেহনত-মজুরী করতো। অতঃপর আমি এটি ত্রুটিপূর্ণ করে দিতে ইচ্ছে করলাম এবং (এর কারণ,) তাদের সামনে এক (নিষ্ঠুর) বাদশাহ (দন্ডায়মান) ছিল, যে সকল (ত্রুটিমুক্ত) নৌকা জোরপূর্বক (মালিকদের নিকট থেকে বিনিময় ছাড়াই) ছিনিয়ে নিত।
وَ اَمَّا الۡغُلٰمُ فَکَانَ اَبَوٰہُ مُؤۡمِنَیۡنِ فَخَشِیۡنَاۤ اَنۡ یُّرۡہِقَہُمَا طُغۡیَانًا وَّ کُفۡرًا ﴿ۚ۸۰﴾
কানযুল ঈমান
৮০. এবং ওই যে বালক ছিলো, তার মাতা পিতা মুসলমান ছিলো। তখন আমাদের আশঙ্কা ছিলো যে, সে তাদেরকে বিদ্রোহাচরণ ও কুফরের উপর বাধ্য করবে।
ইরফানুল কুরআন
৮০. আর যে বালকটি ছিল, তার পিতা-মাতা ছিল ঈমানদার, অতঃপর আমার আশঙ্কা হলো যে, সে (যদি জীবিত থাকে তবে কাফের হবে এবং বড় হয়ে) তাদের উভয়কে সীমালঙ্ঘন ও কুফরীতে পর্যুদস্ত করবে।
فَاَرَدۡنَاۤ اَنۡ یُّبۡدِلَہُمَا رَبُّہُمَا خَیۡرًا مِّنۡہُ زَکٰوۃً وَّ اَقۡرَبَ رُحۡمًا ﴿۸۱﴾
কানযুল ঈমান
৮১. অতঃপর আমরা চাইলাম যে, তাদের উভয়ের রব তার চেয়ে উত্তম পবিত্র এবং তার চেয়ে দয়ার মধ্যে অধিক নিকটতর (সন্তান) দান করবেন।
ইরফানুল কুরআন
৮১. অতঃপর আমরা ইচ্ছা করলাম যে, তাদের প্রতিপালক তাদেরকে (এমন) বিনিময় দেবেন, যা পবিত্রতায়ও তার চেয়ে উত্তম এবং অনুগ্রহ ও মমত্বেও (পিতা-মাতার) ঘনিষ্ঠতর হবে।
وَ اَمَّا الۡجِدَارُ فَکَانَ لِغُلٰمَیۡنِ یَتِیۡمَیۡنِ فِی الۡمَدِیۡنَۃِ وَ کَانَ تَحۡتَہٗ کَنۡزٌ لَّہُمَا وَ کَانَ اَبُوۡہُمَا صَالِحًا ۚ فَاَرَادَ رَبُّکَ اَنۡ یَّبۡلُغَاۤ اَشُدَّہُمَا وَ یَسۡتَخۡرِجَا کَنۡزَہُمَا ٭ۖ رَحۡمَۃً مِّنۡ رَّبِّکَ ۚ وَ مَا فَعَلۡتُہٗ عَنۡ اَمۡرِیۡ ؕ ذٰلِکَ تَاۡوِیۡلُ مَا لَمۡ تَسۡطِعۡ عَّلَیۡہِ صَبۡرًا ﴿ؕ۸۲﴾
কানযুল ঈমান
৮২. বাকী রইলো ওই প্রাচীর। তা ছিলো নগরের দু’জন এতিম বালকের এবং সেটার নীচে তাদের গুপ্ত ধন-ভাণ্ডার ছিলো এবং তাদের পিতা সৎলোক ছিলো। সুতরাং আপনার রব ইচ্ছা করলেন যে, তারা উভয়ে তাদের যৌবনে পদার্পণ করুক এবং তারা আপন ধন-ভাণ্ডার উদ্ধার করুক; আপনার রবের অনুগ্রহ থেকে। আর এসব কিছু আমি নিজ ইচ্ছায় করি নি। এটা হচ্ছে ব্যাখ্যা ওই সব বিষয়ের যেগুলোর উপর আপনার পক্ষে ধৈর্যধারণ করা সম্ভবপর হয় নি’।
ইরফানুল কুরআন
৮২. আর যে দেয়ালটি ছিল, তা ছিল শহরে (অবস্থিত) দুই এতিম বালকের এবং এর নিচে উভয়ের জন্যে (প্রোথিত) ছিল এক গুপ্তভান্ডার। আর তাদের পিতা ছিল সৎকর্মশীল (ব্যক্তি)। সুতরাং আপনার প্রতিপালক ইচ্ছা করলেন যে, উভয়ে যৌবনে পদার্পন করবে এবং আপনার প্রতিপালকের অনুগ্রহে তারা (নিজেরাই) নিজেদের গুপ্তভান্ডার বের করবে। আর আমি (যা কিছুই করেছি) এসব কিছু নিজ থেকে করিনি। এটাই (সেসব ঘটনার) প্রকৃত রহস্য, যার উপর আপনি ধৈর্য ধারণ করতে পারেননি।’
وَ یَسۡـَٔلُوۡنَکَ عَنۡ ذِی الۡقَرۡنَیۡنِ ؕ قُلۡ سَاَتۡلُوۡا عَلَیۡکُمۡ مِّنۡہُ ذِکۡرًا ﴿ؕ۸۳﴾
কানযুল ঈমান
৮৩. এবং আপনাকে ‘যুল ক্বারনাঈন’ সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করছে। আপনি বলুন, ‘আমি তোমাদের নিকট তার বর্ণনা পড়ে শুনাচ্ছি’।
ইরফানুল কুরআন
৮৩. আর (হে সম্মানিত হাবীব!) তারা আপনাকে যুল-কারনাইন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে, বলে দিন, ‘আমি এখনই তোমাদেরকে তার অবস্থার আলোচনা পাঠ করে শুনাচ্ছি’।
اِنَّا مَکَّنَّا لَہٗ فِی الۡاَرۡضِ وَ اٰتَیۡنٰہُ مِنۡ کُلِّ شَیۡءٍ سَبَبًا ﴿ۙ۸۴﴾
কানযুল ঈমান
৮৪. নিশ্চয় আমি তাকে পৃথিবীতে কর্তৃত্ব দিয়েছি এবং প্রত্যেক বস্তুর একটা উপায় উপকরণ দান করেছি;
ইরফানুল কুরআন
৮৪. আমরা তাকে (প্রাচীনকালে) পৃথিবীতে শাসন ক্ষমতা দান করেছিলাম এবং আমরা একে (অর্থাৎ তার রাজত্বকে) সকল উপায় ও সামর্থ দ্বারা অনুগ্রহ করেছিলাম।
فَاَتۡبَعَ سَبَبًا ﴿۸۵﴾
কানযুল ঈমান
৮৫. অতঃপর সে একটা পথের অনুসরণ করলো’।
ইরফানুল কুরআন
৮৫. অতঃপর তিনি (আরো) উপকরণের পশ্চাতে চললেন;
حَتّٰۤی اِذَا بَلَغَ مَغۡرِبَ الشَّمۡسِ وَجَدَہَا تَغۡرُبُ فِیۡ عَیۡنٍ حَمِئَۃٍ وَّ وَجَدَ عِنۡدَہَا قَوۡمًا ۬ؕ قُلۡنَا یٰذَا الۡقَرۡنَیۡنِ اِمَّاۤ اَنۡ تُعَذِّبَ وَ اِمَّاۤ اَنۡ تَتَّخِذَ فِیۡہِمۡ حُسۡنًا ﴿۸۶﴾
কানযুল ঈমান
৮৬. শেষ পর্যন্ত যখন সূর্য অস্ত যাওয়ার স্থানে পৌছালো, তখন সে সেটাকে একটা কালো কাদাময় জলাশয়ে অস্ত যেতে দেখতে পেলো এবং সেখানে একটা সম্প্রদায়কে দেখতে পেলো। আমি বললাম, ‘হে যুল ক্বারনাঈন! হয়তো তুমি তাদেরকে শাস্তি দেবে অথবা তাদের প্রতি উত্তম পন্থা অবলম্বন করতে পারো’।
ইরফানুল কুরআন
৮৬. যতক্ষণ না তিনি সূর্যাস্তগমনের শেষ প্রান্তে (লোকালয়ে) পৌঁছলেন। সেখানে তিনি সূর্যাস্তের এমন দৃশ্য অবলোকন করলেন যেন এটি (কালো কর্দমাক্ত) উত্তপ্ত জলাশয়ে ডুবে যাচ্ছিল। আর তিনি সেখানে এক সম্প্রদায়কে (বসবাসরত) পেলেন। আমরা বললাম, ‘হে যুল-কারনাইন! (এটি তোমার মর্জি) চাই তুমি এদেরকে শাস্তি দাও অথবা তাদের সাথে সদাচরণ করো ।’
قَالَ اَمَّا مَنۡ ظَلَمَ فَسَوۡفَ نُعَذِّبُہٗ ثُمَّ یُرَدُّ اِلٰی رَبِّہٖ فَیُعَذِّبُہٗ عَذَابًا نُّکۡرًا ﴿۸۷﴾
কানযুল ঈমান
৮৭. আরয করলো, ‘যে কেউ যুল্ম করবে, তাকে তো আমরা শিগ্গিরই শাস্তি দেবো; অতঃপর আপন রবের প্রতি প্রত্যাবর্তিত হবে। তিনি তাকে মন্দ শাস্তি দেবেন।
ইরফানুল কুরআন
৮৭. যুল-কারনাইন বললেন, ‘যে ব্যক্তি (কুফর ও পাপাচারে) যুলুম করবে, আমরা তাকে অবশ্যই শাস্তি দেবো; অতঃপর তাকে তার প্রতিপালকের দিকে ফিরিয়ে নেয়া হবে, আর তিনি তাকে খুবই কঠিন শাস্তি দেবেন।
وَ اَمَّا مَنۡ اٰمَنَ وَ عَمِلَ صَالِحًا فَلَہٗ جَزَآءَۨ الۡحُسۡنٰی ۚ وَ سَنَقُوۡلُ لَہٗ مِنۡ اَمۡرِنَا یُسۡرًا ﴿ؕ۸۸﴾
কানযুল ঈমান
৮৮. এবং যে ঈমান এনেছে ও সৎ কাজ করেছে, তবে তার প্রতিদান কল্যাণই রয়েছে এবং অবিলম্বে আমি তাকে সহজ কাজ বাতলিয়ে দেবো।
ইরফানুল কুরআন
৮৮. আর যে ব্যক্তি ঈমান আনবে এবং নেক আমল করবে, তার জন্যে রয়েছে উত্তম প্রতিদান। আর আমরা(ও) তার সাথে আমাদের বিধানের ব্যাপারে নম্র কথা বলবো।’
ثُمَّ اَتۡبَعَ سَبَبًا ﴿۸۹﴾
কানযুল ঈমান
৮৯. অতঃপর সে একটা উপায় উপকরণের অনুসরণ করলো।
ইরফানুল কুরআন
৮৯. (পশ্চিমে বিজয় পূর্ণ করার পর) আবার তিনি (দ্বিতীয়) পথে চললেন;
حَتّٰۤی اِذَا بَلَغَ مَطۡلِعَ الشَّمۡسِ وَجَدَہَا تَطۡلُعُ عَلٰی قَوۡمٍ لَّمۡ نَجۡعَلۡ لَّہُمۡ مِّنۡ دُوۡنِہَا سِتۡرًا ﴿ۙ۹۰﴾
কানযুল ঈমান
৯০. শেষ পর্যন্ত যখন সূর্যোদয়ের স্থলে পৌছলো তখন সেটাকে এমন এক সম্প্রদায়ের উপর উদয় হতে দেখতে পেলো, যাদের জন্য আমি সূর্য থেকে কোন অন্তরাল সৃষ্টি করি নি;
ইরফানুল কুরআন
৯০. যতক্ষণ না তিনি সূর্যোদয়ের শেষ প্রান্তে (লোকালয়ে) গিয়ে পৌঁছলেন। সেখানে তিনি এমন (উদীয়মান) সূর্য অবলোকন করলেন, তা যেন (সে ভু-খন্ডে বসতিস্থাপনকারী) এক সম্প্রদায়ের উপর উদিত হচ্ছিল, যাদের জন্যে আমরা সূর্য থেকে (রক্ষার) কোনো অন্তরাল সৃষ্টি করিনি। (অর্থাৎ তারা পোশাক ও ঘরবিহীন অবস্থায় গুহায় বসবাস করতো।)
کَذٰلِکَ ؕ وَ قَدۡ اَحَطۡنَا بِمَا لَدَیۡہِ خُبۡرًا ﴿۹۱﴾
কানযুল ঈমান
৯১. প্রকৃত ঘটনা এই এবং যা কিছু তার নিকট ছিলো সবকিছুকেই আমার জ্ঞান পরিবেষ্টন কারী।
ইরফানুল কুরআন
৯১. ঘটনা এমনই, আর তাঁর নিকট যা কিছু ছিল, আমরা তা সম্যক অবগত আছি।
ثُمَّ اَتۡبَعَ سَبَبًا ﴿۹۲﴾
কানযুল ঈমান
৯২. অতঃপর (অন্য) একটা উপকরণের অনুসরণ করলো।
ইরফানুল কুরআন
৯২. (পূর্বে বিজয় পূর্ণ করার পর) আবার তিনি (অপর এক) পথে চললেন;
حَتّٰۤی اِذَا بَلَغَ بَیۡنَ السَّدَّیۡنِ وَجَدَ مِنۡ دُوۡنِہِمَا قَوۡمًا ۙ لَّا یَکَادُوۡنَ یَفۡقَہُوۡنَ قَوۡلًا ﴿۹۳﴾
কানযুল ঈমান
৯৩. শেষ পর্যন্ত যখন দু’টি পর্বতের মধ্যবর্তী স্থলে পৌঁছলো, তখন সে দু’টোর ওপাশে এমন কিছুলোক পেলো, যারা কোন কথা বুঝতে পারছে বলে মনে হচ্ছিলো না।
ইরফানুল কুরআন
৯৩. যতক্ষণ না তিনি দুই পাহাড়ের মধ্যবর্তী (এক) স্থানে গিয়ে পৌঁছলেন। পাহাড়ের পেছনে তিনি এমন এক সম্প্রদায়কে বসবাসরত পেলেন, যারা (কারো) কথা বুঝতে পারছিল না।
قَالُوۡا یٰذَاالۡقَرۡنَیۡنِ اِنَّ یَاۡجُوۡجَ وَ مَاۡجُوۡجَ مُفۡسِدُوۡنَ فِی الۡاَرۡضِ فَہَلۡ نَجۡعَلُ لَکَ خَرۡجًا عَلٰۤی اَنۡ تَجۡعَلَ بَیۡنَنَا وَ بَیۡنَہُمۡ سَدًّا ﴿۹۴﴾
কানযুল ঈমান
৯৪. তারা বললো, ‘হে যুলক্বারনাঈন! নিশ্চয় ইয়া’জূজ ও মা’জূজ ভূ-পৃষ্ঠে অশান্তি সৃষ্টি করছে; সুতরাং আমরা কি আপনার জন্য কিছু অর্থ যোগান দেবো এ শর্তে যে, আপনি আমাদের ও তাদের মধ্যে একটা প্রাচীর গড়ে দেবেন?’
ইরফানুল কুরআন
৯৪. তারা বললো, ‘হে যুল-কারনাইন! ই’য়াজুজ ও মা’জুজ জমিনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। সুতরাং আমরা কি আপনার জন্যে এ শর্তে কিছু (রাজস্বের) অর্থ নির্ধারণ করবো যে, আপনি আমাদের এবং তাদের মাঝে এক উঁচু দেয়াল নির্মাণ করে দেবেন?’
قَالَ مَا مَکَّنِّیۡ فِیۡہِ رَبِّیۡ خَیۡرٌ فَاَعِیۡنُوۡنِیۡ بِقُوَّۃٍ اَجۡعَلۡ بَیۡنَکُمۡ وَ بَیۡنَہُمۡ رَدۡمًا ﴿ۙ۹۵﴾
কানযুল ঈমান
৯৫. বললো, ‘যার উপর আমার রব আমাকে ক্ষমতা দিয়েছেন তাই উৎকৃষ্ট; সুতরাং আমাকে সাহায্য শক্তি দ্বারা করো। আমি তোমাদের ও তাদের মধ্যখানে একটা মজবুত প্রাচীর গড়ে দেবো;
ইরফানুল কুরআন
৯৫. (যুল-কারনাইন) বললেন, ‘আমাকে আমার প্রতিপালক এ বিষয়ে যে ক্ষমতা দিয়েছেন, (তা) উত্তম। তোমরা তোমাদের বাহুবল (অর্থাৎ মেহনত ও পরিশ্রম) দিয়ে আমাকে সাহায্য করো। আমি তোমাদের এবং তাদের মাঝে এক মজবুত প্রাচীর গড়ে দেবো।
اٰتُوۡنِیۡ زُبَرَ الۡحَدِیۡدِ ؕ حَتّٰۤی اِذَا سَاوٰی بَیۡنَ الصَّدَفَیۡنِ قَالَ انۡفُخُوۡا ؕ حَتّٰۤی اِذَا جَعَلَہٗ نَارًا ۙ قَالَ اٰتُوۡنِیۡۤ اُفۡرِغۡ عَلَیۡہِ قِطۡرًا ﴿ؕ۹۶﴾
কানযুল ঈমান
৯৬. আমার নিকট লোহার পাতসমূহ নিয়ে এসো’। শেষ পর্যন্ত তারা যখন প্রাচীরের দু’পর্বতের পার্শ্বগুলোর সমান করে দিলো, তখন বললো ‘তোমরা ফুকতে থাকো’। শেষ পর্যন্ত যখন সেটাকে আগুন করে দিলো তখন বললো, ‘নিয়ে এসো, আমি এর উপর গলিত তামা ঢেলে দিই’।
ইরফানুল কুরআন
৯৬. তোমরা আমার নিকট বড় বড় লৌহখন্ড নিয়ে এসো’; সুতরাং যখন তিনি (সে লৌহ-প্রাচীর) উভয় চূড়ার মধ্যবর্তী স্থানে সমান করে দিলেন, তখন বলতে লাগলেন, ‘(এখন আগুন জ্বালিয়ে) হাপর দিয়ে ফুঁক দাও’। যখন তিনি একে (অর্থাৎ এ লোহাকে হাপর দিয়ে ফুঁকে ফুঁকে) অগ্নিবৎ উত্তপ্ত করলেন, তখন বললেন, ’আমার নিকট নিয়ে এসো (এখন) আমি এর উপর গলিত তামা ঢেলে দেই’।
فَمَا اسۡطَاعُوۡۤا اَنۡ یَّظۡہَرُوۡہُ وَ مَا اسۡتَطَاعُوۡا لَہٗ نَقۡبًا ﴿۹۷﴾
কানযুল ঈমান
৯৭. অতঃপর ইয়া’জূজ ও মা’জূজ সেটার উপর না আরোহণ করতে পারলো এবং না তাতে ছিদ্র করতে পারলো।
ইরফানুল কুরআন
৯৭. এরপর এদের (অর্থাৎ ইয়’জুজ-মা’জুজদের) না এমন শক্তি ছিল যে, তারা এর উপর আরোহণ করতে পারে, আর না তারা এমন সক্ষমতা পেয়েছে যে, এতে ছিদ্র করে।
قَالَ ہٰذَا رَحۡمَۃٌ مِّنۡ رَّبِّیۡ ۚ فَاِذَا جَآءَ وَعۡدُ رَبِّیۡ جَعَلَہٗ دَکَّآءَ ۚ وَ کَانَ وَعۡدُ رَبِّیۡ حَقًّا ﴿ؕ۹۸﴾
কানযুল ঈমান
৯৮. বললো, ‘এটা আমার রবের অনুগ্রহ। অতঃপর যখন আমার রবের প্রতিশ্রুত সময় আসবে তখন সেটাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেবেন এবং আমার রবের প্রতিশ্রুতি সত্য’।
ইরফানুল কুরআন
৯৮. (যুল-কারনাইন) বললেন, ‘এটি আমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে রহমত; অতঃপর যখন আমার প্রতিপালকের অঙ্গীকার (কিয়ামত নিকটে) আসবে, তখন তারা এ দেয়াল (ভেঙে) সমান করে দেবে (অর্থাৎ এটি চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে)। আর আমার প্রতিপালকের অঙ্গীকার সত্য।’
وَ تَرَکۡنَا بَعۡضَہُمۡ یَوۡمَئِذٍ یَّمُوۡجُ فِیۡ بَعۡضٍ وَّ نُفِخَ فِی الصُّوۡرِ فَجَمَعۡنٰہُمۡ جَمۡعًا ﴿ۙ۹۹﴾
কানযুল ঈমান
৯৯. এবং সেদিন আমি তাদেরকে এ অবস্থায় ছেড়ে দেবো যে, তাদের একদল অপর দলের উপর সমুদ্র তরঙ্গের ন্যায় পতিত হবে এবং শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেয়া হবে। অতঃপর আমি সবাইকে একত্রিত করে আনবো।
ইরফানুল কুরআন
৯৯. আর আমরা সে সময় (সমস্ত সৃষ্টিজগত অথবা ইয়াজুজ-মা’জুজকে) স্বাধীন করে দেবো, তারা (প্রবল ও উত্তাল ঢেউয়ের ন্যায়) একে অপরের উপর আছড়ে পড়বে। আর সিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে, তখন আমরা এদের সবাইকে (হাশরের ময়দানে) একত্রিত করবো।
وَّ عَرَضۡنَا جَہَنَّمَ یَوۡمَئِذٍ لِّلۡکٰفِرِیۡنَ عَرۡضَۨا ﴿۱۰۰﴾ۙ
কানযুল ঈমান
১০০. এবং সেদিন আমি জাহান্নামকে কাফিরদের সম্মুখে উপস্থিত করবো;
ইরফানুল কুরআন
১০০. আর আমরা সেদিন জাহান্নামকে কাফেরদের সামনে প্রত্যক্ষভাবে উপস্থিত করবো;
الَّذِیۡنَ کَانَتۡ اَعۡیُنُہُمۡ فِیۡ غِطَـآءٍ عَنۡ ذِکۡرِیۡ وَ کَانُوۡا لَا یَسۡتَطِیۡعُوۡنَ سَمۡعًا ﴿۱۰۱﴾
কানযুল ঈমান
১০১. তারা ওই সব লোক, যাদের চোখগুলোর উপর আমার স্মরণ থেকে পর্দা পড়েছিলো এবং সত্য কথা শুনতে পারতো না।
ইরফানুল কুরআন
১০১. সেসব লোকদের, যাদের চক্ষু আমার স্মরণ থেকে (গাফলতির) পর্দায় ঢাকা ছিল আর তারা (আমার যিকির) শুনতেও পারতো না।
اَفَحَسِبَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡۤا اَنۡ یَّتَّخِذُوۡا عِبَادِیۡ مِنۡ دُوۡنِیۡۤ اَوۡلِیَآءَ ؕ اِنَّـاۤ اَعۡتَدۡنَا جَہَنَّمَ لِلۡکٰفِرِیۡنَ نُزُلًا ﴿۱۰۲﴾
কানযুল ঈমান
১০২. তবে কি কাফিরগণ একথা মনে করে যে, আমার বান্দাদেরকে আমার পরিবর্তে অভিভাবক করে নেবে? নিশ্চয় আমি কাফিরদের আতিথেয়তার জন্য জাহান্নাম তৈরি করে রেখেছি।
ইরফানুল কুরআন
১০২. সত্য প্রত্যাখ্যানকারীরা কি এ মনে করে যে, তারা আমাকে ছেড়ে আমার বান্দাদেরকে কার্যসম্পাদনকারী বানাবে? নিশ্চয়ই আমরা কাফেরদের জন্যে জাহান্নামের অভ্যর্থনা প্রস্তুত করে রেখেছি।
قُلۡ ہَلۡ نُنَبِّئُکُمۡ بِالۡاَخۡسَرِیۡنَ اَعۡمَالًا ﴿۱۰۳﴾ؕ
কানযুল ঈমান
১০৩. আপনি বলুন, ‘আমি কি তোমাদেরকে বলে দেবো সর্বাপেক্ষা অধিক মূল্যহীন কর্ম কাদের?’
ইরফানুল কুরআন
১০৩. বলে দিন, ‘আমরা কি তোমাদেরকে সেসব লোকদের ব্যাপারে সতর্ক করবো যারা আমলের দিক থেকে খুবই ক্ষতিগ্রস্ত?
اَلَّذِیۡنَ ضَلَّ سَعۡیُہُمۡ فِی الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا وَ ہُمۡ یَحۡسَبُوۡنَ اَنَّہُمۡ یُحۡسِنُوۡنَ صُنۡعًا ﴿۱۰۴﴾
কানযুল ঈমান
১০৪. তাদেরই, যাদের সমস্ত প্রচেষ্টা পার্থিব জীবনেই হারিয়ে গেছে এবং তারা এ ধারণায় রয়েছে যে, ‘তারা সৎকর্ম করছে;
ইরফানুল কুরআন
১০৪. এরা সেসব লোক যাদের সকল চেষ্টা-প্রচেষ্টা দুনিয়ার জীবনেই বরবাদ হয়ে গিয়েছে এবং তারা এ ধারণা করে যে, তারা অনেক বড় কার্য সম্পাদন করছে।’
اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا بِاٰیٰتِ رَبِّہِمۡ وَ لِقَآئِہٖ فَحَبِطَتۡ اَعۡمَالُہُمۡ فَلَا نُقِیۡمُ لَہُمۡ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ وَزۡنًا ﴿۱۰۵﴾
কানযুল ঈমান
১০৫. এ সব লোক তারাই, যারা আপন রবের আয়াতসমূহ এবং তার সাথে সাক্ষাতের বিষয়কে অস্বীকার করেছে। অতঃপর তাদের কী রইলো। সবই নিষ্ফল হয়েছে। সুতরাং আমি তাদের জন্য ক্বিয়ামত দিবসে কোন ওজন স্থির করবো না।
ইরফানুল কুরআন
১০৫. এরাই সেসব লোক, যারা তাদের প্রতিপালকের নিদর্শনাবলীকে এবং (মৃত্যুর পর) তাঁর সাক্ষাতকে অস্বীকার করেছে, সুতরাং তাদের সকল আমল নিষ্ফল হয়ে গিয়েছে। অত:পর আমরা তাদেরকে কিয়ামতের দিন কোনো গুরুত্ব এবং (এমনকি) কোনো মূল্যও দেবো না।
ذٰلِکَ جَزَآؤُہُمۡ جَہَنَّمُ بِمَا کَفَرُوۡا وَ اتَّخَذُوۡۤا اٰیٰتِیۡ وَ رُسُلِیۡ ہُزُوًا ﴿۱۰۶﴾
কানযুল ঈমান
১০৬. জাহান্নাম- এটাই তাদের প্রতিফল, এ কারণে যে, তারা কুফর করেছে এবং আমার নিদর্শনসমূহ ও আমার রসূলগণকে বিদ্রূপের বিষয়রূপে গ্রহণ করেছে।
ইরফানুল কুরআন
১০৬. এ দোযখই তাদের প্রতিদান, যেহেতু তারা সত্য প্রত্যাখ্যান করতো এবং আমার নিদর্শনাবলী ও আমার রাসূলগণকে উপহাস করতো।
اِنَّ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ کَانَتۡ لَہُمۡ جَنّٰتُ الۡفِرۡدَوۡسِ نُزُلًا ﴿۱۰۷﴾ۙ
কানযুল ঈমান
১০৭. নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করছে, ফিরদাউসের বাগানই তাদের আতিথেয়তা।
ইরফানুল কুরআন
১০৭. নিশ্চয়ই যারা ঈমান আনয়ন করে এবং সৎকর্ম করে, তাদের জন্যে রয়েছে ফেরদাউসের উদ্যানসমূহের আতিথেয়তা।
خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَا لَا یَبۡغُوۡنَ عَنۡہَا حِوَلًا ﴿۱۰۸﴾
কানযুল ঈমান
১০৮. তারা সর্বদা তাতে থাকবে, তা থেকে স্থানান্তর কামনা করবে না।
ইরফানুল কুরআন
১০৮. সেখানে তারা চিরদিন অবস্থান করবে, সেখান থেকে তারা কখনো (নিজের ঠিকানা) বদলাতে চাইবে না।
قُلۡ لَّوۡ کَانَ الۡبَحۡرُ مِدَادًا لِّکَلِمٰتِ رَبِّیۡ لَنَفِدَ الۡبَحۡرُ قَبۡلَ اَنۡ تَنۡفَدَ کَلِمٰتُ رَبِّیۡ وَ لَوۡ جِئۡنَا بِمِثۡلِہٖ مَدَدًا ﴿۱۰۹﴾
কানযুল ঈমান
১০৯. আপনি বলে দিন, ‘যদি সমুদ্র আমার রবের বাণীসমূহ লেখার জন্য কালি হয়, তবে অবশ্যই সমুদ্র নিঃশেষ হয়ে যাবে আর আমার রবের বাণীসমূহ শেষ হবে না, যদিও আমি অনুরূপ আরো (সমুদ্র) এর সাহায্যার্থে নিয়ে আসি।
ইরফানুল কুরআন
১০৯. বলে দিন, ‘আমার প্রতিপালকের বাণীমূহ লিপিবদ্ধ করার জন্যে সমুদ্র যদি কালি হয়, তবে আমার প্রতিপালকের বাণীসমূহ শেষ হওয়ার পূর্বেই এ সমুদ্র নিঃশেষ হয়ে যাবে, সাহায্যার্থে যদিও আমরা এর অনুরূপ (আরো সমুদ্র অথবা কালি) নিয়ে আসি’।
قُلۡ اِنَّمَاۤ اَنَا بَشَرٌ مِّثۡلُکُمۡ یُوۡحٰۤی اِلَیَّ اَنَّمَاۤ اِلٰـہُکُمۡ اِلٰہٌ وَّاحِدٌ ۚ فَمَنۡ کَانَ یَرۡجُوۡا لِقَآءَ رَبِّہٖ فَلۡیَعۡمَلۡ عَمَلًا صَالِحًا وَّ لَا یُشۡرِکۡ بِعِبَادَۃِ رَبِّہٖۤ اَحَدًا ﴿۱۱۰﴾
কানযুল ঈমান
১১০. আপনি বলুন, ‘প্রকাশ্য মানবীয় আকৃতিতে আমি তোমাদের মতো, আমার নিকট ওহী আসে যে, তোমাদের মাবুদ একমাত্র মা’বূদই। সুতরাং যার আপন রবের সাথে সাক্ষাৎ করার আশা আছে তার উচিত যেন সে সৎকর্ম করে এবং সে যেন আপন রবের ইবাদতে অন্য কাউকেও শরীক না করে।
ইরফানুল কুরআন
১১০. বলে দিন, ‘আমি তো কেবল (বাহ্যিক সৃষ্টির) মানবীয় আকৃতিতে তোমাদের মতো। (এ ছাড়া তোমাদের সাথে আমার অন্য কি সামঞ্জস্য রয়েছে! একটু ভাবো তো!) আমার প্রতি প্রত্যাদেশ করা হয় যে, তোমাদের ইলাহ্ই একমাত্র ইলাহ্ (আর তোমাদের মধ্যে এ নূরী সক্ষমতা কোথায় যে, তোমাদের নিকট আল্লাহ্র বাণী অবতীর্ণ হতে পারে?); অতঃপর যে তার প্রতিপালকের সাক্ষাতের আশা রাখে, সে যেন সৎকর্ম করে এবং তার প্রতিপালকের ইবাদতে কাউকে শরীক না করে।’