بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
কানযুল ঈমান
০. আল্লাহ্র নামে আরম্ভ, যিনি পরম দয়ালু, করুণাময় (১)
ইরফানুল কুরআন
০. আল্লাহর নামে শুরু, যিনি পরম করুণাময়, সতত অসীম দয়ালু।
طٰسٓمّٓ ﴿۱﴾
কানযুল ঈমান
১. ত্বোয়া-সী----ম্ মী----ম।
ইরফানুল কুরআন
১. ত্বোয়া-সীন-মীম। (প্রকৃত অর্থ আল্লাহ্ এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামই অধিক অবগত।)
تِلۡکَ اٰیٰتُ الۡکِتٰبِ الۡمُبِیۡنِ ﴿۲﴾
কানযুল ঈমান
২. এ আয়তগুলো সুস্পষ্ট কিতাবের।
ইরফানুল কুরআন
২. এগুলো আলোকোজ্জ্বল কিতাবের আয়াতসমূহ।
نَتۡلُوۡا عَلَیۡکَ مِنۡ نَّبَاِ مُوۡسٰی وَ فِرۡعَوۡنَ بِالۡحَقِّ لِقَوۡمٍ یُّؤۡمِنُوۡنَ ﴿۳﴾
কানযুল ঈমান
৩. আমি আপনার উপর পাঠ করি মূসা ও ফির’আউনের সত্য সংবাদ ওই সমস্ত লোকের জন্য, যারা ঈমান রাখে।
ইরফানুল কুরআন
৩. (হে সম্মানিত হাবীব!) আমরা আপনার নিকট মূসা (আলাইহিস সালাম) এবং ফেরাউনের প্রকৃত অবস্থা ঐসব লোকদের জন্যে কিছু পাঠ করে শুনাচ্ছি যারা ঈমান এনেছে।
اِنَّ فِرۡعَوۡنَ عَلَا فِی الۡاَرۡضِ وَ جَعَلَ اَہۡلَہَا شِیَعًا یَّسۡتَضۡعِفُ طَآئِفَۃً مِّنۡہُمۡ یُذَبِّحُ اَبۡنَآءَہُمۡ وَ یَسۡتَحۡیٖ نِسَآءَہُمۡ ؕ اِنَّہٗ کَانَ مِنَ الۡمُفۡسِدِیۡنَ ﴿۴﴾
কানযুল ঈমান
৪. নিশ্চয় ফির’আউন পৃথিবীতে কর্তৃত্ব লাভ করেছিলো এবং তার লোকজনকে তার অনুসারী করেছে ; তাদের মধ্যে একটা দলকে দুর্বল দেখতো, তাদের পুত্র-সন্তানদেরকে হত্যা করতো এবং তাদের নারীদের জীবিত রাখতো। নিশ্চয় সে বিপর্যয় সৃষ্টিকারী ছিলো।
ইরফানুল কুরআন
৪. নিশ্চিত ফেরাউন পৃথিবীতে অবাধ্য ও অহঙ্কারী (নিষ্ঠুর স্বৈরশাসক) হয়ে গিয়েছিল। আর সে নিজ (রাজত্বের) বাসিন্দাদের (বিভিন্ন) দলে (ও উপদলে) বিভক্ত করে রেখেছিল। এদের মধ্যে এক দলকে (অর্থাৎ বনী ইসরাঈলকে) সে দুর্বল করে দিয়েছিল; সে তাদের পুত্রদেরকে (অনাগত শক্তিকে বিনাশের লক্ষ্যে) হত্যা করতো এবং তাদের নারীদেরকে জীবিত ছেড়ে দিতো (যাতে পুরুষ ব্যতীত নারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং তাদের মাঝে ব্যভিচার ও অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে)। নিশ্চয়ই সে ছিল বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের অন্যতম।
وَ نُرِیۡدُ اَنۡ نَّمُنَّ عَلَی الَّذِیۡنَ اسۡتُضۡعِفُوۡا فِی الۡاَرۡضِ وَ نَجۡعَلَہُمۡ اَئِمَّۃً وَّ نَجۡعَلَہُمُ الۡوٰرِثِیۡنَ ۙ﴿۵﴾
কানযুল ঈমান
৫. আর আমি চাচ্ছিলাম ওই দুর্বলদের প্রতি অনুগ্রহ করতে এবং তাদেরকে নেতৃত্ব দান করতে আর তাদেরকে তাদের দেশ ও ধন সম্পদের অধিকারী করতে;
ইরফানুল কুরআন
৫. আর আমরা আনুকূল্য করতে চেয়েছিলাম তাদের প্রতি যাদেরকে পৃথিবীতে (অধিকার ও স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করে নির্যাতন ও শোষণের মাধ্যমে) দুর্বল করা হয়েছিল এবং তাদেরকে (নির্যাতিত সম্প্রদায়ের) পথপ্রদর্শক ও নেতা নির্ধারণ করি এবং তাদেরকে (রাজকীয় সিংহাসনের) উত্তরাধিকারী বানাই।
وَ نُمَکِّنَ لَہُمۡ فِی الۡاَرۡضِ وَ نُرِیَ فِرۡعَوۡنَ وَ ہَامٰنَ وَ جُنُوۡدَہُمَا مِنۡہُمۡ مَّا کَانُوۡا یَحۡذَرُوۡنَ ﴿۶﴾
কানযুল ঈমান
৬. আর তাদেরকে ভূ-পৃষ্ঠে ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত করতে এবং ফির’আউন, হামান ও তাদের সৈন্যবাহিনীকে তাই দেখিয়ে দিতে, যার আশঙ্কা তাদের মধ্যে এদের দিক থেকে রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৬. আর আমরা তাদেরকে রাজ্যে রাজ-ক্ষমতা প্রদান করি এবং ফেরাউন, হামান এবং উভয়ের বাহিনীকে এরূপ (বিপ্লব) প্রদর্শন করি যার কারণে তারা ভীত হয়ে পড়ে।
وَ اَوۡحَیۡنَاۤ اِلٰۤی اُمِّ مُوۡسٰۤی اَنۡ اَرۡضِعِیۡہِ ۚ فَاِذَا خِفۡتِ عَلَیۡہِ فَاَلۡقِیۡہِ فِی الۡیَمِّ وَ لَا تَخَافِیۡ وَ لَا تَحۡزَنِیۡ ۚ اِنَّا رَآدُّوۡہُ اِلَیۡکِ وَ جَاعِلُوۡہُ مِنَ الۡمُرۡسَلِیۡنَ ﴿۷﴾
কানযুল ঈমান
৭. এবং আমি মূসার মাকে গোপন প্রেরণা দিয়েছি যে, ‘তাকে দুধ পান করাও। অতঃপর যখন তার সম্পর্কে তোমার আশঙ্কা হয়, তবে তাকে দরিয়ায় নিক্ষেপ করো আর না ভয় করো এবং না দুঃখ। নিশ্চয় আমি তাকে তোমার নিকট ফিরিয়ে আনবো এবং তাকে রসূল করবো’।
ইরফানুল কুরআন
৭. আর আমরা মূসা (আলাইহিস সালাম)-এঁর জননীর অন্তরে ইংগিত নির্দেশ করেছিলাম, ‘তাঁকে দুধ পান করাতে থাকো। অতঃপর যখন তুমি তাঁর (জীবনের) আশঙ্কা করবে তখন তাঁকে নদীতে ভাসিয়ে দিও। আর (এ অবস্থায়) ভীতসন্ত্রস্ত হবে না, ব্যথিতও হবে না। অবশ্যই আমরা তাঁকে তোমার নিকট ফিরিয়ে দেবো এবং তাঁকে করবো রাসূলগণের একজন।’
فَالۡتَقَطَہٗۤ اٰلُ فِرۡعَوۡنَ لِیَکُوۡنَ لَہُمۡ عَدُوًّا وَّ حَزَنًا ؕ اِنَّ فِرۡعَوۡنَ وَ ہَامٰنَ وَ جُنُوۡدَہُمَا کَانُوۡا خٰطِئِیۡنَ ﴿۸﴾
কানযুল ঈমান
৮. অতঃপর তাকে উঠিয়ে নিলো ফির’আউনের পরিবারের লোকজন, যেন সে তাদের শত্রু ও তাদের দুঃখের কারণ হয়। নিশ্চয় ফির’আউন ও হামান এবং তাদের সৈন্যদল অপরাধী ছিলো।
ইরফানুল কুরআন
৮. অতঃপর ফেরাউন-পরিবার তাঁকে (নদ থেকে) উঠিয়ে নিল যাতে তিনি (আল্লাহ্র ইচ্ছায়) তাদের শত্রু এবং দুশ্চিন্তা (উদ্রেককারী) হন। নিঃসন্দেহে ফেরাউন, হামান এবং তাদের পুরো বাহিনী দুষ্কৃতি সম্পাদনকারী।
وَ قَالَتِ امۡرَاَتُ فِرۡعَوۡنَ قُرَّتُ عَیۡنٍ لِّیۡ وَ لَکَ ؕ لَا تَقۡتُلُوۡہُ ٭ۖ عَسٰۤی اَنۡ یَّنۡفَعَنَاۤ اَوۡ نَتَّخِذَہٗ وَلَدًا وَّ ہُمۡ لَا یَشۡعُرُوۡنَ ﴿۹﴾
কানযুল ঈমান
৯. এবং ফির’আউনের স্ত্রী বললো, ‘এ শিশু আমার ও তোমার নয়নের শান্তি, তাকে হত্যা করো না; হয় তো এটা আমাদের উপকারে আসবে, অথবা আমরা তাকে পুত্র হিসেবে গ্রহণ করে নেবো। এবং তারা বুঝতে পারে নি।
ইরফানুল কুরআন
৯. আর ফেরাউনের স্ত্রী (মূসা আলাইহিস সালামকে দেখে) বললেন, ‘(এ শিশু) আমার এবং তোমার চোখের শীতলতা। তাঁকে হত্যা করো না, সম্ভবত সে আমাদের উপকার করতে পারে অথবা আমরা তাকে সন্তান হিসেবেও গ্রহণ করতে পারি।’ প্রকৃতপক্ষে এরা (এ পরিকল্পনার পরিণতি সম্পর্কে) ছিল অনবগত।
وَ اَصۡبَحَ فُؤَادُ اُمِّ مُوۡسٰی فٰرِغًا ؕ اِنۡ کَادَتۡ لَتُبۡدِیۡ بِہٖ لَوۡ لَاۤ اَنۡ رَّبَطۡنَا عَلٰی قَلۡبِہَا لِتَکُوۡنَ مِنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۰﴾
কানযুল ঈমান
১০. এবং সকালে মূসার মায়ের হৃদয় ধৈর্যহীন হয়ে পড়লো। অবশ্য সে তার অবস্থা প্রকাশ করে দেওয়া উপক্রম হয়েছিলো যদি আমি তার হৃদয়কে দৃঢ় করে না দিতাম, যাতে সে আমার প্রতিশ্রুতির প্রতি আস্থাশীল থাকে।
ইরফানুল কুরআন
১০. আর মূসা (আলাইহিস সালাম)-এঁর মায়ের অন্তর (ধৈর্য) শূন্য হয়ে গেল। তিনি (নিজের অধৈর্য এর কারণে) এ গোপন বিষয় প্রায় প্রকাশ করেই দিতেন যদি না আমরা তার অন্তরে ধৈর্য এবং প্রশান্তি সুদৃঢ় করতাম; যাতে তিনি (আল্লাহ্র অঙ্গীকারের প্রতি) বিশ্বাস স্থাপনকারীদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হন।
وَ قَالَتۡ لِاُخۡتِہٖ قُصِّیۡہِ ۫ فَبَصُرَتۡ بِہٖ عَنۡ جُنُبٍ وَّ ہُمۡ لَا یَشۡعُرُوۡنَ ﴿ۙ۱۱﴾
কানযুল ঈমান
১১. বং তার মা তার বোনকে বললো, ‘তার পেছনে পেছনে চলে যা!’ অতঃপর সে তাকে দূর থেকে দেখছিলো এবং ওদের জানা ছিলো না।
ইরফানুল কুরআন
১১. আর (মূসা আলাইহিস সালামের মাতা) তাঁর বোনকে বললেন, ‘(তাঁর অবস্থা অবগত হওয়ার জন্যে) তাঁর পশ্চাতে গমন করো’; সুতরাং সে তাঁকে দূর থেকে দেখতে লাগলো, কিন্তু তারা ছিল (সম্পূর্ণরূপে) অনবগত।
وَ حَرَّمۡنَا عَلَیۡہِ الۡمَرَاضِعَ مِنۡ قَبۡلُ فَقَالَتۡ ہَلۡ اَدُلُّکُمۡ عَلٰۤی اَہۡلِ بَیۡتٍ یَّکۡفُلُوۡنَہٗ لَکُمۡ وَ ہُمۡ لَہٗ نٰصِحُوۡنَ ﴿۱۲﴾
কানযুল ঈমান
১২. এবং আমি পূর্ব থেকেই সমস্ত ধাত্রীকে তার জন্য হারাম করে দিয়েছিলাম। সুতরাং সে বললো, ‘আমি তোমাদেরকে কি এমন পরিবারের সন্ধান দেবো, যারা তোমাদের এ শিশুকে লালন-পালন করবে এবং তারা তার মঙ্গলকামী?’
ইরফানুল কুরআন
১২. আর আমরা পূর্ব হতেই মূসা (আলাইহিস সালাম)-কে ধাত্রীস্তন্য পানে বিরত রেখেছিলাম; সুতরাং (মূসা আলাইহিস সালামের বোন) বললো, ‘আমি কি তোমাদের এমন গৃহের অধিবাসীর সন্ধান দেবো যারা তোমাদের জন্যে এঁকে (এ বাচ্চাকে) লালন-পালন করবে এবং তারা তাঁর কল্যাণকামী(ও) হবে?’
فَرَدَدۡنٰہُ اِلٰۤی اُمِّہٖ کَیۡ تَقَرَّ عَیۡنُہَا وَ لَا تَحۡزَنَ وَ لِتَعۡلَمَ اَنَّ وَعۡدَ اللّٰہِ حَقٌّ وَّ لٰکِنَّ اَکۡثَرَہُمۡ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۳﴾
কানযুল ঈমান
১৩. অতঃপর আমি তাকে তার মায়ের নিকট দিলাম, যাতে মায়ের চোখ জুড়ায় এবং দুঃখ না করে আর জেনে নেয় যে, আল্লাহ্র প্রতিশ্রুতি সত্য; কিন্তু অধিকাংশ লোক জানে না।
ইরফানুল কুরআন
১৩. অতঃপর আমরা মূসা (আলাইহিস সালাম)-কে (এভাবে) তাঁর মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিলাম যাতে তার চক্ষু শীতল হয় এবং যাতে তিনি ব্যাথিত না হন। আর যাতে তিনি (নিশ্চিতভাবে) জানতে পারেন যে, আল্লাহ্র ওয়াদা সত্য; কিন্তু অধিকাংশ লোকই তা জানে না।
وَ لَمَّا بَلَغَ اَشُدَّہٗ وَ اسۡتَوٰۤی اٰتَیۡنٰہُ حُکۡمًا وَّ عِلۡمًا ؕ وَ کَذٰلِکَ نَجۡزِی الۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿۱۴﴾
কানযুল ঈমান
১৪. আর সে যখন আপন যৌবনে উপনীত হলো এবং পূর্ণ শক্তিপ্রাপ্ত হলো তখন আমি তাকে হুকুম ও জ্ঞান দান করলাম আর আমি অনুরূপ পুরস্কার প্রদান করি সৎকর্মপরায়ণদেরকে।
ইরফানুল কুরআন
১৪. আর যখন মূসা (আলাইহিস সালাম) যৌবনে পদার্পণ করলেন এবং পূর্ণ (বয়সে) পৌঁছলেন তখন আমরা তাঁকে (নবুয়্যতের) নির্দেশ, জ্ঞান এবং প্রজ্ঞা দান করলাম। আর আমরা নেক্কারদেরকে এভাবে পুরস্কৃত করে থাকি।
وَ دَخَلَ الۡمَدِیۡنَۃَ عَلٰی حِیۡنِ غَفۡلَۃٍ مِّنۡ اَہۡلِہَا فَوَجَدَ فِیۡہَا رَجُلَیۡنِ یَقۡتَتِلٰنِ ٭۫ ہٰذَا مِنۡ شِیۡعَتِہٖ وَ ہٰذَا مِنۡ عَدُوِّہٖ ۚ فَاسۡتَغَاثَہُ الَّذِیۡ مِنۡ شِیۡعَتِہٖ عَلَی الَّذِیۡ مِنۡ عَدُوِّہٖ ۙ فَوَکَزَہٗ مُوۡسٰی فَقَضٰی عَلَیۡہِ ٭۫ قَالَ ہٰذَا مِنۡ عَمَلِ الشَّیۡطٰنِ ؕ اِنَّہٗ عَدُوٌّ مُّضِلٌّ مُّبِیۡنٌ ﴿۱۵﴾
কানযুল ঈমান
১৫. এবং সেই শহরে প্রবেশ করলো। যখন শহরবাসীগণ দ্বি-প্রহরের নিদ্রার মধ্যে অসতর্ক ছিলো। তখন সেখানে দু’টি লোককে সংঘর্ষে লিপ্ত দেখতে পেলো- একজন মূসার সম্প্রদায়ের ছিলো আর অপরজন তার শত্রুদলের। তখন ওই লোক যে তার দলের ছিলো সে মূসার নিকট সাহায্য চাইলো তারই বিরুদ্ধে, যে তার শত্রুদের অন্তর্ভুক্ত ছিলো; অতঃপর মূসা তাকে ঘুষি মারলো সুতরাং সে তাকে মেরে ফেললো; বললো, ‘এ কাজ শয়তানের নিকট থেকে হয়েছে, নিশ্চয় সে শত্রু, প্রকাশ্য পথভ্রষ্টকারী’।
ইরফানুল কুরআন
১৫. আর মূসা (আলাইহিস সালাম মিশরে) নগরীতে প্রবেশ করলেন যখন এর অধিবাসীরা ছিল (ঘুমে) বিভোর। তথায় তিনি দু’জন লোককে পরস্পরে বিবাদমান দেখতে পেলেন। একজন তাঁর (বনী ইসরাঈল) গোত্রীয় এবং অন্যজন তাঁর শত্রু পক্ষীয় (ফেরাউনের সম্প্রদায়ভুক্ত)। তাঁর নিজ গোত্রীয় ব্যক্তি শত্রু-পক্ষীয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে তাঁর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করলো। সুতরাং মূসা (আলাইহিস সালাম) তাকে ঘুষি মারলেন, অতঃপর তিনি তাকে নিঃশেষ করে দিলেন। (তখন) তিনি বলতে লাগলেন, ‘এটা শয়তানের কাজ (যা আমার দ্বারা ঘটেছে)। সে তো প্রকাশ্য বিভ্রান্তকারী দুশমন।’
قَالَ رَبِّ اِنِّیۡ ظَلَمۡتُ نَفۡسِیۡ فَاغۡفِرۡ لِیۡ فَغَفَرَ لَہٗ ؕ اِنَّہٗ ہُوَ الۡغَفُوۡرُ الرَّحِیۡمُ ﴿۱۶﴾
কানযুল ঈমান
১৬. আরয করলো, ‘হে আমার রব! আমি আপন প্রাণের উপর সীমাতিক্রম করেছি। তুমি আমাকে ক্ষমা করো। সুতরাং রব তাকে ক্ষমা দিলেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, দয়ালু।
ইরফানুল কুরআন
১৬. (মূসা আলাইহিস সালাম) আরয করলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমি তো আমার নিজের প্রতি অবিচার করেছি, সুতরাং আমাকে ক্ষমা করো।’ অতঃপর তিনি তাঁকে ক্ষমা করে দিলেন। তিনি তো মহাক্ষমাশীল, সতত অনুগ্রহশীল।
قَالَ رَبِّ بِمَاۤ اَنۡعَمۡتَ عَلَیَّ فَلَنۡ اَکُوۡنَ ظَہِیۡرًا لِّلۡمُجۡرِمِیۡنَ ﴿۱۷﴾
কানযুল ঈমান
১৭. আরয করলো, ‘হে আমার রব! তুমি যেহেতু আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছো, সেহেতু এখন আমি অবশ্যই অপরাধীদের সাহায্যকারী হবো না’।
ইরফানুল কুরআন
১৭. তিনি (আরও) বললেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমার প্রতি (তোমার ক্ষমার মাধ্যমে) অনুগ্রহ করেছো, এ কারণে আমি আর কখনোই অপরাধীদের সাহায্যকারী হবো না।’
فَاَصۡبَحَ فِی الۡمَدِیۡنَۃِ خَآئِفًا یَّتَرَقَّبُ فَاِذَا الَّذِی اسۡتَنۡصَرَہٗ بِالۡاَمۡسِ یَسۡتَصۡرِخُہٗ ؕ قَالَ لَہٗ مُوۡسٰۤی اِنَّکَ لَغَوِیٌّ مُّبِیۡنٌ ﴿۱۸﴾
কানযুল ঈমান
১৮. অতঃপর তার ভোর হলো ওই শহরে ভীত অবস্থায় এ অপেক্ষায় যে, কি ঘটছে! যখনই দেখলো যে, ওই ব্যক্তি যে গতকাল তার নিকট সাহায্য চেয়েছিলো সে সাহায্যের জন্য ফরিয়াদ করছে। মূসা তাকে বললো, ‘নিশ্চয় তুমি প্রকাশ্য পথভ্রষ্ট!’
ইরফানুল কুরআন
১৮. অতঃপর মূসা (আলাইহিস সালাম ‘এখন কী হবে?’ এ অপেক্ষায়) ভীত-শংকিত অবস্থায় সে শহরে প্রভাতে উপনীত হলেন। ঠিক তখনই সেই ব্যক্তি (দ্বিতীয়বার) সাহায্যের জন্যে তাঁকে চিৎকার করে ডাকলো, যে পূর্বের দিন তাঁর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করেছিল। তখন মূসা (আলাইহিস সালাম) তাকে বললেন, ‘তুমি তো স্পষ্টতই একজন বিভ্রান্ত ব্যক্তি’।
فَلَمَّاۤ اَنۡ اَرَادَ اَنۡ یَّبۡطِشَ بِالَّذِیۡ ہُوَ عَدُوٌّ لَّہُمَا ۙ قَالَ یٰمُوۡسٰۤی اَتُرِیۡدُ اَنۡ تَقۡتُلَنِیۡ کَمَا قَتَلۡتَ نَفۡسًۢا بِالۡاَمۡسِ ٭ۖ اِنۡ تُرِیۡدُ اِلَّاۤ اَنۡ تَکُوۡنَ جَبَّارًا فِی الۡاَرۡضِ وَ مَا تُرِیۡدُ اَنۡ تَکُوۡنَ مِنَ الۡمُصۡلِحِیۡنَ ﴿۱۹﴾
কানযুল ঈমান
১৯. অতঃপর যখন মূসা তাকে পাকড়াও করার ইচ্ছা করলো, যে উভয়েরই শত্রু, তখন সে (ইস্রাঈলী) বললো, ‘হে মূসা! তুমি কি আমাকে তেমনি হত্যা করতে চাও যেমন তুমি গতকাল এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলে? তুমি তো এটাই চাও যে, পৃথিবীতে স্বেচ্ছাচারী হবে এবং শান্তি স্থাপন করতে চাচ্ছো না!’
ইরফানুল কুরআন
১৯. অতঃপর যখন তিনি ঐ ব্যক্তিকে ধরতে উদ্যত হলেন যে ছিল উভয়ের দুশমন, তখন সে ব্যক্তি বলে উঠলো, ‘হে মূসা! তুমি কি আমাকে(ও) হত্যা করতে চাও যেভাবে তুমি কাল এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলে? তুমি তো রাজ্যে কেবল স্বেচ্ছচারী হতে চাইছো এবং তুমি শান্তি স্থাপনকারী হতে চাও না।’
وَ جَآءَ رَجُلٌ مِّنۡ اَقۡصَا الۡمَدِیۡنَۃِ یَسۡعٰی ۫ قَالَ یٰمُوۡسٰۤی اِنَّ الۡمَلَاَ یَاۡتَمِرُوۡنَ بِکَ لِیَقۡتُلُوۡکَ فَاخۡرُجۡ اِنِّیۡ لَکَ مِنَ النّٰصِحِیۡنَ ﴿۲۰﴾
কানযুল ঈমান
২০. এবং শহরের দূর প্রান্ত থেকে এক ব্যক্তি ছুটে এলো; বললো, ‘হে মূসা! নিশ্চয় রাজন্যবর্গ আপনাকে হত্যা করার পরামর্শ করেছে। সুতরাং আপনি বাইরে চলে যান! আমি আপনার মঙ্গলকামী’।
ইরফানুল কুরআন
২০. আর শহরের শেষ প্রান্ত হতে এক ব্যক্তি দৌঁড়ে এসে বললো, ‘হে মূসা! (ফেরাউনের) পরিষদবর্গ আপনার ব্যাপারে আলোচনা করছে, তারা আপনাকে হত্যা করবে। সুতরাং আপনি (এখান থেকে) চলে যান। আমি তো আপনার কল্যাণকামীদের অন্তর্ভুক্ত।’
فَخَرَجَ مِنۡہَا خَآئِفًا یَّتَرَقَّبُ ۫ قَالَ رَبِّ نَجِّنِیۡ مِنَ الۡقَوۡمِ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۲۱﴾
কানযুল ঈমান
২১. সুতরাং ওই শহর থেকে বের হয়ে পড়লো ভীত অবস্থায় এ অপেক্ষায় যে, এখন কি ঘটছে! আরয করলো, ‘হে আমার রব! আমাকে অত্যাচারীদের থেকে রক্ষা করে নাও!’
ইরফানুল কুরআন
২১. সুতরাং মূসা (আলাইহিস সালাম) সেখান থেকে ভীত অবস্থায় (আল্লাহ্র সাহায্যের প্রত্যাশায়) বের হয়ে গেলেন। তিনি আরয করলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে অত্যাচারী সম্প্রদায় থেকে রক্ষা করো।’
وَ لَمَّا تَوَجَّہَ تِلۡقَآءَ مَدۡیَنَ قَالَ عَسٰی رَبِّیۡۤ اَنۡ یَّہۡدِیَنِیۡ سَوَآءَ السَّبِیۡلِ ﴿۲۲﴾
কানযুল ঈমান
২২. এবং যখন মাদ্য়ান-অভিমুখে রওনা হলো, তখন বললো, ‘আশা করি, আমার রব আমাকে সরল পথ বাতলিয়ে দেবেন!’
ইরফানুল কুরআন
২২. আর যখন তিনি মাদইয়ান অভিমুখে চললেন, (তখন) বলতে লাগলেন, ‘আশা করা যায় আমার প্রতিপালক আমাকে (কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে) সরল পথ দেখাবেন’।
وَ لَمَّا وَرَدَ مَآءَ مَدۡیَنَ وَجَدَ عَلَیۡہِ اُمَّۃً مِّنَ النَّاسِ یَسۡقُوۡنَ ۬۫ وَ وَجَدَ مِنۡ دُوۡنِہِمُ امۡرَاَتَیۡنِ تَذُوۡدٰنِ ۚ قَالَ مَا خَطۡبُکُمَا ؕ قَالَتَا لَا نَسۡقِیۡ حَتّٰی یُصۡدِرَ الرِّعَآءُ ٜ وَ اَبُوۡنَا شَیۡخٌ کَبِیۡرٌ ﴿۲۳﴾
কানযুল ঈমান
২৩. এবং যখন মাদ্য়ানের পানির নিকট এলো, সেখানে লোকদের একদলকে দেখলো যে, তারা নিজেদের জানোয়ার গুলোকে পানি পান করাচ্ছে; এবং তাদের থেকে আলাদা ওপাশে দু’জন নারীকে দেখলো যে, তারা আপন পশুগুলোকে রুখে রাখছে; মূসা বললেন, ‘তোমরা দু’জনের কি অবস্থা?’ তারা বললো, ‘আমরা পানি পান করাতে পারি না যতক্ষণ পর্যন্ত সমস্ত রাখাল পানি পান করিয়ে ফিরে না নিয়ে যায় এবং আমাদের পিতা অতিশয় বৃদ্ধা!’
ইরফানুল কুরআন
২৩. আর যখন তিনি মাদইয়ানের পানির (কূপের) নিকট পৌঁছলেন, সেখানে তিনি দেখতে পেলেন একদল লোক (তাদের পশুগুলোকে) পানি পান করাচ্ছে। আর তাদের অদূরে একপাশে দেখতে পেলেন দুই নারী (তাদের বকরীগুলো) আগলে রাখছে। (মূসা আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘তোমরা এ অবস্থায় কেন (দাঁড়িয়ে আছো)?’ তারা উভয়ে বললো, ‘রাখালেরা (তাদের গবাদিপশুগুলোকে) সরিয়ে না নেয়া পর্যন্ত আমরা (আমাদের বকরীগুলোকে) পানি পান করাই না। আর আমাদের পিতা অতিশয় বৃদ্ধ।’
فَسَقٰی لَہُمَا ثُمَّ تَوَلّٰۤی اِلَی الظِّلِّ فَقَالَ رَبِّ اِنِّیۡ لِمَاۤ اَنۡزَلۡتَ اِلَیَّ مِنۡ خَیۡرٍ فَقِیۡرٌ ﴿۲۴﴾
কানযুল ঈমান
২৪. সুতরাং মূসা ওই দু’জনের পশুগুলকে পানি পান করিয়ে দিলো, অতঃপর ছায়ার প্রতি ফিরলো আরয করলো, ‘হে আমার রব! আমি ওই খাদ্যের মুখাপেক্ষী, যা তুমি আমার জন্য অবতীর্ণ করেছো’।
ইরফানুল কুরআন
২৪. সুতরাং তিনি তাদের (পশুপালকে) পানি পান করালেন; অতঃপর ছায়ায় ফিরে গেলেন এবং আরয করলেন, ‘হে প্রতিপালক! আমি সেসব কল্যাণের মুখাপেক্ষী যেগুলো তুমি আমার প্রতি অবতীর্ণ করবে।’
فَجَآءَتۡہُ اِحۡدٰىہُمَا تَمۡشِیۡ عَلَی اسۡتِحۡیَآءٍ ۫ قَالَتۡ اِنَّ اَبِیۡ یَدۡعُوۡکَ لِیَجۡزِیَکَ اَجۡرَ مَا سَقَیۡتَ لَنَا ؕ فَلَمَّا جَآءَہٗ وَ قَصَّ عَلَیۡہِ الۡقَصَصَ ۙ قَالَ لَا تَخَفۡ ٝ۟ نَجَوۡتَ مِنَ الۡقَوۡمِ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۲۵﴾
কানযুল ঈমান
২৫. অতঃপর ওই দু’জনের একজন তার নিকট এলো শরম জড়িত চরণে চলতে চলতে; বললো, ‘আমার পিতা তোমাকে ডাকছে তোমার পারিশ্রমিক দেওয়ার জন্য এরই যে, তুই আমাদের পশুগুলোকে পানি পান করিয়েছো’। যখন মূসা তার নিকট এলো এবং তাকে সমস্ত বৃত্তান্ত বর্ণনা করে শুনালো, সে বললো, ‘আপনি ভয় করবেন না, আপনি বেচে গেছেন যালিমদের কবল থেকে’।
ইরফানুল কুরআন
২৫. তখন (কিছুক্ষণ পর) তাদের দু’জনের একজন (মেয়ে) লজ্জাবনত (ভঙ্গিতে) হেঁটে তাঁর নিকট আগমন করলো। সে বললো, ‘আমার পিতা আপনাকে আমন্ত্রণ করছেন, যাতে তিনি আপনাকে এর (এ পরিশ্রমের) প্রতিদান দিতে পারেন, যা আপনি আমাদের জন্যে (বকরীগুলোকে) পান করিয়েছেন।’ সুতরাং যখন মূসা (আলাইহিস সালাম) তাঁর (অর্থাৎ মেয়েদের পিতা শুয়াইব আলাইহিস সালামের) নিকট আসলেন এবং তাঁর কাছে (অতীতের) ঘটনাবলী বর্ণনা করলেন তখন তিনি বললেন, ‘ভয় করবেন না, আপনি অত্যাচারী সম্প্রদায়ের কবল থেকে বেঁচে গেছেন’।
قَالَتۡ اِحۡدٰىہُمَا یٰۤاَبَتِ اسۡتَاۡجِرۡہُ ۫ اِنَّ خَیۡرَ مَنِ اسۡتَاۡجَرۡتَ الۡقَوِیُّ الۡاَمِیۡنُ ﴿۲۶﴾
কানযুল ঈমান
২৬. তাদের মধ্যে একজন বললো, ‘হে আমার পিতা! তাকে মজুর নিযুক্ত করে নিন, নিশ্চয় উত্তম মজুর সে-ই যে শক্তিশালী, বিশ্বস্ত।
ইরফানুল কুরআন
২৬. তাদের একজন (মেয়ে) বললো, ‘হে (আমার) সম্মানিত পিতা! তাকে (আপনার নিকট মজুরীর ভিত্তিতে) রেখে দিন। নিশ্চয়ই আপনি যাদেরকে মজুরীর ভিত্তিতে নিয়োগ করবেন তাদের মধ্যে উত্তম হবেন সেই ব্যক্তি যে শক্তিশালী, আমানতদার। (আর এ ব্যক্তি এ দায়িত্বের জন্যে সুযোগ্য।)’
قَالَ اِنِّیۡۤ اُرِیۡدُ اَنۡ اُنۡکِحَکَ اِحۡدَی ابۡنَتَیَّ ہٰتَیۡنِ عَلٰۤی اَنۡ تَاۡجُرَنِیۡ ثَمٰنِیَ حِجَجٍ ۚ فَاِنۡ اَتۡمَمۡتَ عَشۡرًا فَمِنۡ عِنۡدِکَ ۚ وَ مَاۤ اُرِیۡدُ اَنۡ اَشُقَّ عَلَیۡکَ ؕ سَتَجِدُنِیۡۤ اِنۡ شَآءَ اللّٰہُ مِنَ الصّٰلِحِیۡنَ ﴿۲۷﴾
কানযুল ঈমান
২৭. বললো, ‘আমি চাচ্ছি আমার দু’কন্যার একজনকে তোমার সাথে বিয়ে দিতে- এ মহরের উপর যে, তুমি আট বছর যাবৎ আমার নিকট চাকুরী করবে; অতঃপর যদি পূর্ণ দশ বছর পূরণ করে নাও তবে তা হবে তোমার নিকট থেকেই। এবং আমি তোমাকে কষ্টে ফেলতে চাই না। অবিলম্বে আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে, তুমি আমাকে সদাচারীদের মধ্যে পাবে’।
ইরফানুল কুরআন
২৭. তিনি (মূসা আলাইহিস সালামকে) বললেন, ‘আমি আমার এ কন্যাদ্বয়ের একজনকে আপনার নিকট বিবাহ দিতে চাই, এ (দেনমোহরের) শর্তে যে, আপনি মজুরির ভিত্তিতে আট বছর পর্যন্ত আমার কাজ করবেন। আর যদি আপনি দশ (বছর) পূর্ণ করেন তবে তা হবে আপনার পক্ষ থেকে (ইহসান)। আর আমি আপনার জন্যে এটা কঠিন করতে চাই না। যদি আল্লাহ্ চান তবে আপনি আমাকে সদাচারীদের অন্তর্ভুক্ত পাবেন।’
قَالَ ذٰلِکَ بَیۡنِیۡ وَ بَیۡنَکَ ؕ اَیَّمَا الۡاَجَلَیۡنِ قَضَیۡتُ فَلَا عُدۡوَانَ عَلَیَّ ؕ وَ اللّٰہُ عَلٰی مَا نَقُوۡلُ وَکِیۡلٌ ﴿۲۸﴾
কানযুল ঈমান
২৮. মূসা বললো, ‘এটা আমার ও আপনার মধ্যে চুক্তি সম্পন্ন হলো। এ দু’টি মেয়েদের মধ্যে কোন একটা পূরণ করলে আমার উপর দাবী থাকবে না এবং আমাদের এ কথার উপর আল্লাহ্র যিম্মা রইলো’।
ইরফানুল কুরআন
২৮. মূসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘এ (চুক্তি) আমার এবং আপনার মাঝে (নির্ধারিত) হয়ে গেল। দুই মেয়াদের যেটি(ই) আমি পূর্ণ করি, আমার উপর কোনো জবরদস্তি হবে না। আর আল্লাহ্ হলেন আমরা যা বলি এর (এ কথার) অভিভাবক।’
فَلَمَّا قَضٰی مُوۡسَی الۡاَجَلَ وَ سَارَ بِاَہۡلِہٖۤ اٰنَسَ مِنۡ جَانِبِ الطُّوۡرِ نَارًا ۚ قَالَ لِاَہۡلِہِ امۡکُثُوۡۤا اِنِّیۡۤ اٰنَسۡتُ نَارًا لَّعَلِّیۡۤ اٰتِیۡکُمۡ مِّنۡہَا بِخَبَرٍ اَوۡ جَذۡوَۃٍ مِّنَ النَّارِ لَعَلَّکُمۡ تَصۡطَلُوۡنَ ﴿۲۹﴾
কানযুল ঈমান
২৯. অতঃপর যখন মূসা আপন মেয়াদ পূরণ করে দিলো এবং আপন বিবিকে নিয়ে যাত্রা করলো, তখ্ন ‘তূর’ পর্বতের দিক থেকে এক আগুন দেখতে পেলো। আপন পরিবারকে বললো, ‘তোমরা এখানে অপেক্ষা করো, তূর পর্বতের দিক থেকে এক আগুন আমার নজরে পড়েছে। সম্ভবতঃ আমি সেখান থেকে কিছু খবর নিয়ে আসতে পারি, অথবা তোমাদের জন্য কোন অঙ্গার নিয়ে আসবো যাতে তোমরা আগুন পোহাতে পারো’।
ইরফানুল কুরআন
২৯. অতঃপর যখন মূসা (আলাইহিস সালাম) নির্ধারিত মেয়াদ পূর্ণ করলেন এবং সপরিবারে যাত্রা করলেন, (তখন) তিনি তূর পর্বতের দিকে আগুন দেখতে পেলেন। (আগুনের এ শিখা ছিল পরম সৌন্দর্য্যমন্ডিত যার সাথে তিনি অন্তরঙ্গ হয়ে গিয়েছিলেন এবং তাঁকে তা মুগ্ধ করেছিল।) তিনি তাঁর পরিবারকে বললেন, ‘(এখানে) অপেক্ষা করো, আমি আগুন দেখেছি, সম্ভবত আমি তোমাদের জন্যে এ (আগুন) থেকে কোনো সংবাদ আনতে পারবো (যার সন্ধানে আমি দীর্ঘসময় বিচরণ করছিলাম)। অথবা (জ্বলন্ত) আগুনের কোনো অঙ্গার (নিয়ে আসবো) যাতে তোমরা(ও) তাপ অনুভব করতে পারো।’
فَلَمَّاۤ اَتٰىہَا نُوۡدِیَ مِنۡ شَاطِیَٴ الۡوَادِ الۡاَیۡمَنِ فِی الۡبُقۡعَۃِ الۡمُبٰرَکَۃِ مِنَ الشَّجَرَۃِ اَنۡ یّٰمُوۡسٰۤی اِنِّیۡۤ اَنَا اللّٰہُ رَبُّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿ۙ۳۰﴾
কানযুল ঈমান
৩০. অতঃপর যখন আগুনের নিকট হাযির হলো, তখন বরকতময় স্থানে ময়দানের ডান পাশ থেকে, বৃক্ষ থেকে আহ্বান করা হল, ‘হে মূসা! নিশ্চয় আমিই আল্লাহ্, রব সমগ্র জাহানের;
ইরফানুল কুরআন
৩০. যখন মূসা (আলাইহিস সালাম) সেখানে পৌঁছলেন, (বরকতময় তূর) উপত্যকার দক্ষিণ পাশের বরকতময় স্থানে (অবস্থিত) এক বৃক্ষ থেকে আহ্বান করা হলো, ‘হে মূসা! নিশ্চয়ই আমিই আল্লাহ্, (যিনি) বিশ্বজগতের প্রতিপালক।
وَ اَنۡ اَلۡقِ عَصَاکَ ؕ فَلَمَّا رَاٰہَا تَہۡتَزُّ کَاَنَّہَا جَآنٌّ وَّلّٰی مُدۡبِرًا وَّ لَمۡ یُعَقِّبۡ ؕ یٰمُوۡسٰۤی اَقۡبِلۡ وَ لَا تَخَفۡ ۟ اِنَّکَ مِنَ الۡاٰمِنِیۡنَ ﴿۳۱﴾
কানযুল ঈমান
৩১. এবং এ যে, ‘নিক্ষেপ করো আপন লাঠি!’ অতঃপর যখন মূসা সেটা দেখলো যে, তা ছুটাছুটি করছে যেনো সাপ, তখন পৃষ্ঠ ফিরিয়ে চলতে লাগলো এবং ফিরে তাকালো না। হে মূসা! সামনে এসো এবং ভয় করো না! নিশ্চয় তোমার জন্য নিরাপত্তা রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৩১. আর তোমার লাঠি (ভুমিতে) নিক্ষেপ করো।’ অতঃপর যখন মূসা (আলাইহিস সালাম) একে সর্পের ন্যায় দ্রুত ছুটাছুটি করতে দেখলেন, তখন তিনি ফিরে না তাকিয়ে পশ্চাতে ছুটে চললেন। (আহ্বান করা হলো:) ‘হে মূসা! সামনে অগ্রসর হও এবং ভয় করো না, নিশ্চয়ই তুমি নিরাপদ।
اُسۡلُکۡ یَدَکَ فِیۡ جَیۡبِکَ تَخۡرُجۡ بَیۡضَآءَ مِنۡ غَیۡرِ سُوۡٓءٍ ۫ وَّ اضۡمُمۡ اِلَیۡکَ جَنَاحَکَ مِنَ الرَّہۡبِ فَذٰنِکَ بُرۡہَانٰنِ مِنۡ رَّبِّکَ اِلٰی فِرۡعَوۡنَ وَ مَلَا۠ئِہٖ ؕ اِنَّہُمۡ کَانُوۡا قَوۡمًا فٰسِقِیۡنَ ﴿۳۲﴾
কানযুল ঈমান
৩২. আপন হাত জামার বুকের পাশে ভিতরে রাখো, তা বের হয়ে আসবে শুভ্র-উজ্জ্বল নির্দোষভাবে; এবং আপন হাত আপন বুকের উপর রাখো ভয় দূর করার জন্য। সুতরাং এ দু’টিই প্রমাণ তোমার রবের-ফির’আউন ও তার সভাসদবর্গের প্রতি। নিশ্চয় তারা হচ্ছে অমান্যকারী লোক’।
ইরফানুল কুরআন
৩২. তোমার হাত তোমার জামার কলারের উন্মুক্ত অংশে ঢোকাও। এটি কোনো ত্রুটি ছাড়াই শুভ্র দীপ্তিময় হয়ে বেরিয়ে আসবে। আর ভয়কে (দূর করতে) নিজের বাহুকে নিজের (বক্ষের) উপর চেপে ধরো। অতঃপর এ দুটো তোমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে ফেরাউন এবং তার পরিষদবর্গের (প্রত্যক্ষ করার) জন্যে প্রমাণ। তারা তো নাফরমান সম্প্রদায়।’
قَالَ رَبِّ اِنِّیۡ قَتَلۡتُ مِنۡہُمۡ نَفۡسًا فَاَخَافُ اَنۡ یَّقۡتُلُوۡنِ ﴿۳۳﴾
কানযুল ঈমান
৩৩. আরয করলো, ‘হে আমার রব! আমি তাদের মধ্যে একজনকে হত্যা করেছি; সুতরাং আশঙ্কা করছি যে, তারা আমাকে হত্যা করে ফেলবে।
ইরফানুল কুরআন
৩৩. (মূসা আলাইহিস সালাম) আরয করলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমি তাদের এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলাম, সুতরাং আমি ভয় করছি তারা আমাকে হত্যা করবে।
وَ اَخِیۡ ہٰرُوۡنُ ہُوَ اَفۡصَحُ مِنِّیۡ لِسَانًا فَاَرۡسِلۡہُ مَعِیَ رِدۡاً یُّصَدِّقُنِیۡۤ ۫ اِنِّیۡۤ اَخَافُ اَنۡ یُّکَذِّبُوۡنِ ﴿۳۴﴾
কানযুল ঈমান
৩৪. এবং আমার ভাই হারূন, তার ভাষা আমার চেয়ে অধিক পরিষ্কার। সুতরাং তাকে আমার সাহায্যের জন্য রসূল করে নাও, যাতে আমার সত্যায়ন করে। আমি আশঙ্কা করছি যে, তারা আমাকে অস্বীকার করবে’।
ইরফানুল কুরআন
৩৪. আর আমার ভাই হারুন (আলাইহিস সালাম), সে কথোপকথনে আমার চেয়েও পারঙ্গম ও স্পষ্টভাষী, সুতরাং তাঁকে আমার সাথে সাহায্যকারীরূপে প্রেরণ করো, যাতে সে আমাকে সত্যায়ণ করে। আমি (এও) আশংকা করি যে, তারা আমাকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করবে।’
قَالَ سَنَشُدُّ عَضُدَکَ بِاَخِیۡکَ وَ نَجۡعَلُ لَکُمَا سُلۡطٰنًا فَلَا یَصِلُوۡنَ اِلَیۡکُمَا ۚۛ بِاٰیٰتِنَاۤ ۚۛ اَنۡتُمَا وَ مَنِ اتَّبَعَکُمَا الۡغٰلِبُوۡنَ ﴿۳۵﴾
কানযুল ঈমান
৩৫. এরশাদ করলেন, ‘ অবিলম্বে আমি তোমার বাহুকে তোমার ভাই দ্বারা শক্তিশালী করবো এবং তোমাদের উভয়কে বিজয়ে দান করবো; সুতরাং তারা, তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আমার নিদর্শনগুলোর কারণে, তোমরা দু’জন এবং যারা তোমাদের অনুসরণ করবে, জয়যুক্ত হবে’।
ইরফানুল কুরআন
৩৫. (আল্লাহ্) এরশাদ ফরমান, ‘আমরা তোমার ভ্রাতার দ্বারা তোমার বাহু শক্তিশালী করবো এবং তোমাদের উভয়ের জন্যে (মানুষের অন্তরে এবং তোমাদের প্রচেষ্টায়) ভীতি এবং আধিপত্য সৃষ্টি করে দেবো। সুতরাং তারা আমাদের নিদর্শনাবলীর কারণে (ক্ষতির উদ্দেশ্যে) তোমাদের নিকটবর্তী হতে পারবে না। তোমরা এবং যারা তোমাদের আনুগত্য করবে তারা বিজয়ী হবে।’
فَلَمَّا جَآءَہُمۡ مُّوۡسٰی بِاٰیٰتِنَا بَیِّنٰتٍ قَالُوۡا مَا ہٰذَاۤ اِلَّا سِحۡرٌ مُّفۡتَرًی وَّ مَا سَمِعۡنَا بِہٰذَا فِیۡۤ اٰبَآئِنَا الۡاَوَّلِیۡنَ ﴿۳۶﴾
কানযুল ঈমান
৩৬. অতঃপর যখন মূসা তাদের নিকট আমার সুস্পষ্ট নিদর্শনসমূহ নিয়ে এলো, তখন তারা বললো, ‘এ তো নয়, কিন্তু অলীক যাদু মাত্র! এবং আমরা আমাদের পূর্ব-পুরুষদের মধ্যে এমন শুনি নি’।
ইরফানুল কুরআন
৩৬. অতঃপর যখন মূসা (আলাইহিস সালাম) আমাদের প্রকাশ্য ও সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী নিয়ে তাদের নিকট আগমন করলেন তখন তারা বলতে লাগলো, ‘এ মনগড়া যাদু ব্যতীত আর কিছুই নয়। আমরা এসব আমাদের পূর্ব পুরুষগণের কাছে (কখনো) শুনিনি।’
وَ قَالَ مُوۡسٰی رَبِّیۡۤ اَعۡلَمُ بِمَنۡ جَآءَ بِالۡہُدٰی مِنۡ عِنۡدِہٖ وَ مَنۡ تَکُوۡنُ لَہٗ عَاقِبَۃُ الدَّارِ ؕ اِنَّہٗ لَا یُفۡلِحُ الظّٰلِمُوۡنَ ﴿۳۷﴾
কানযুল ঈমান
৩৭. এবং মূসা বললেন, ‘আমার রব খুব ভালো জানেন কে তার নিকট থেকে হিদায়ত নিয়ে এসেছেন এবং কার জন্য পরকালের ঘর থাকবে। নিশ্চয় যালিম লক্ষ্য অর্জনে সফলকাম হয় না’।
ইরফানুল কুরআন
৩৭. আর মূসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘আমার প্রতিপালক খুব ভালোভাবে জানেন কে তাঁর নিকট থেকে হেদায়াত নিয়ে এসেছেন আর কার জন্যে থাকবে পরকালের গৃহের (উত্তম) পরিণাম। নিশ্চয়ই জালিমেরা সফলকাম হবে না।’
وَ قَالَ فِرۡعَوۡنُ یٰۤاَیُّہَا الۡمَلَاُ مَا عَلِمۡتُ لَکُمۡ مِّنۡ اِلٰہٍ غَیۡرِیۡ ۚ فَاَوۡقِدۡ لِیۡ یٰہَامٰنُ عَلَی الطِّیۡنِ فَاجۡعَلۡ لِّیۡ صَرۡحًا لَّعَلِّیۡۤ اَطَّلِعُ اِلٰۤی اِلٰہِ مُوۡسٰی ۙ وَ اِنِّیۡ لَاَظُنُّہٗ مِنَ الۡکٰذِبِیۡنَ ﴿۳۸﴾
কানযুল ঈমান
৩৮. এবং ফির’আউন বললো, ‘হে সভাসদবর্গ! আমি তোমাদের জন্য আমি ব্যতীত অন্য কোন খোদা আছে বলে জানি না! সুতরাং হে হামান! আমার জন্য কাদা পোড়ায়ে একটা প্রাসাদ তৈরী করো; হয় তো আমি মূসার খোদাকে উকি মেরে দেখে আসব; এবং নিশ্চয় আমার ধারণায় তো সে মিথ্যাবাদী’।
ইরফানুল কুরআন
৩৮. আর ফেরাউন বললো, ‘হে পরিষদবর্গ! আমি ব্যতীত তোমাদের দ্বিতীয় কোনো উপাস্য আছে বলে জানি না। হে হামান! আমার জন্যে কাঁদা পুড়িয়ে (কিছু ইট তৈরি করে) দাও। অতঃপর (এর দ্বারা) আমার জন্যে উঁচু প্রাসাদ বানাও। সম্ভবত (এ প্রাসাদে আরোহণ করে) আমি মূসার প্রতিপালক পর্যন্ত পৌঁছুতে পারবো। আর আমি তো তাকে মিথ্যাবাদীই গণ্য করি।’
وَ اسۡتَکۡبَرَ ہُوَ وَ جُنُوۡدُہٗ فِی الۡاَرۡضِ بِغَیۡرِ الۡحَقِّ وَ ظَنُّوۡۤا اَنَّہُمۡ اِلَیۡنَا لَا یُرۡجَعُوۡنَ ﴿۳۹﴾
কানযুল ঈমান
৩৯. এবং সে ও তার সৈন্য-বাহিনী ভূ-পৃষ্ঠে অন্যায়ভাবে অহঙ্কার করেছে আর মনে করেছে যে, তাদেরকে আমার প্রতি প্রত্যাবর্তন করতে হবে না।
ইরফানুল কুরআন
৩৯. আর সে (ফেরাউন) নিজে এবং তার সৈন্যবাহিনী রাজ্যে অন্যায় অহংকার করেছিল ও অবাধ্য হয়েছিল। আর তারা মনে করেছিল যে, তারা আমার নিকট প্রত্যাবর্তন করবে না।
فَاَخَذۡنٰہُ وَ جُنُوۡدَہٗ فَنَبَذۡنٰہُمۡ فِی الۡیَمِّ ۚ فَانۡظُرۡ کَیۡفَ کَانَ عَاقِبَۃُ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۴۰﴾
কানযুল ঈমান
৪০. অতএব, আমি তাকে ও তার বাহিনীকে ধরে সমুদ্রে নিক্ষেপ করেছি। সুতরাং দেখো, কেমন পরিণাম হয়েছে যালিমদের!
ইরফানুল কুরআন
৪০. সুতরাং আমরা তাকে এবং তার বাহিনীকে (শাস্তির মাধ্যমে) গ্রাস করলাম এবং তাদেরকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করলাম। অতঃপর আপনি দেখুন, অত্যাচারীদের পরিণাম কেমন (ভয়াবহ) হয়েছিল।
وَ جَعَلۡنٰہُمۡ اَئِمَّۃً یَّدۡعُوۡنَ اِلَی النَّارِ ۚ وَ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ لَا یُنۡصَرُوۡنَ ﴿۴۱﴾
কানযুল ঈমান
৪১. এবং তাদেরকে আমি দোযখবাসীদের নেতা করেছি; তারা আগুনের দিকে আহ্বান করছে, আর ক্বিয়ামত দিবসে তাদের সাহায্য করা হবে না।
ইরফানুল কুরআন
৪১. আর আমরা তাদেরকে (জাহান্নামীদের) নেতা বানিয়েছি, তারা (লোকদেরকে) জাহান্নামের দিকে আহ্বান করতো। আর কিয়ামতের দিন তাদেরকে কোনো সাহায্য করা হবে না।
وَ اَتۡبَعۡنٰہُمۡ فِیۡ ہٰذِہِ الدُّنۡیَا لَعۡنَۃً ۚ وَ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ہُمۡ مِّنَ الۡمَقۡبُوۡحِیۡنَ ﴿۴۲﴾
কানযুল ঈমান
৪২. এবং এ পৃথিবীতে আমি তাদের পশ্চাতে অভিসম্পাত লাগিয়ে দিয়েছি আর ক্বিয়ামতের দিন তাদের মন্দই রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৪২. আর আমরা তাদেরকে এ পৃথিবীতে অভিশপ্ত করেছিলাম এবং কিয়ামতের দিনও তারা হবে দুর্দশাগ্রস্ত লোকদের অন্তর্ভুক্ত।
وَ لَقَدۡ اٰتَیۡنَا مُوۡسَی الۡکِتٰبَ مِنۡۢ بَعۡدِ مَاۤ اَہۡلَکۡنَا الۡقُرُوۡنَ الۡاُوۡلٰی بَصَآئِرَ لِلنَّاسِ وَ ہُدًی وَّ رَحۡمَۃً لَّعَلَّہُمۡ یَتَذَکَّرُوۡنَ ﴿۴۳﴾
কানযুল ঈমান
৪৩. এবং নিশ্চয় আমি মূসাকে কিতাব দান করেছি এর পর যে, পূর্ববর্তী বহু মানব গোষ্ঠীকে ধ্বংস করে দিয়েছি, যেটার মধ্যে মানব-জাতির অন্তরের চোখগুলো খুলে দেয় এমন বাণীসমূহ, হিদায়ত এবং দয়া (রয়েছে), যেন তারা উপদেশ মান্য করে।
ইরফানুল কুরআন
৪৩. আর আমরা তো পূর্ববর্তী (নাফরমান) সম্প্রদায়কে ধ্বংস করার (দৃশ্যপটের) পর মূসা (আলাইহিস সালাম)-কে প্রদান করেছিলাম কিতাব যা ছিল মানুষের জন্যে অন্তর্দৃষ্টির (আধার), হেদায়াত ও রহমত। যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।
وَ مَا کُنۡتَ بِجَانِبِ الۡغَرۡبِیِّ اِذۡ قَضَیۡنَاۤ اِلٰی مُوۡسَی الۡاَمۡرَ وَ مَا کُنۡتَ مِنَ الشّٰہِدِیۡنَ ﴿ۙ۴۴﴾
কানযুল ঈমান
৪৪. এবং আপনি তূরের পশ্চিম প্রান্তে ছিলেন না যখন আমি মূ্সাকে রিসালাতের হুকুম প্রেরণ করেছি এবং তখন আপনি উপস্থিত ছিলেন না।
ইরফানুল কুরআন
৪৪. আর আপনি তো (তখন তূরের) পশ্চিম প্রান্তে (উপস্থিত) ছিলেন না যখন আমরা মূসা (আলাইহিস সালাম)-এঁর নিকট (রিসালাতের) নির্দেশ প্রেরণ করেছিলাম। আর না আপনি (সে সত্তর জনের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন যারা মূসা আলাইহিস সালামের ওহীর) প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন। (সুতরাং এ সকল বর্ণনা গায়েবের সংবাদ নয় তো আর কী?)
وَ لٰکِنَّاۤ اَنۡشَاۡنَا قُرُوۡنًا فَتَطَاوَلَ عَلَیۡہِمُ الۡعُمُرُ ۚ وَ مَا کُنۡتَ ثَاوِیًا فِیۡۤ اَہۡلِ مَدۡیَنَ تَتۡلُوۡا عَلَیۡہِمۡ اٰیٰتِنَا ۙ وَ لٰکِنَّا کُنَّا مُرۡسِلِیۡنَ ﴿۴۵﴾
কানযুল ঈমান
৪৫. কিন্তু হয়েছে এটাই যে, আমি মানবগোষ্ঠীসমূহ সৃষ্টি করেছি, তারপর তাদের উপর দীর্ঘকাল অতিবাহিত হয়ে গেছে; এবং না আপনি মাদ্য়ানবাসীদের মধ্যে বসবাসরত ছিলেন তাদের নিকট আমার আয়াতসমূহ আবৃত্তিকারী অবস্থায়; হাঁ, আমিই রসূল প্রেরণকারী ছিলাম।
ইরফানুল কুরআন
৪৫. বস্তুতঃ আমরা (মূসা আলাইহিস সালামের পর পর্যায়ক্রমে) অনেক সম্প্রদায়ের আবির্ভাব ঘটিয়েছিলাম। অতঃপর তাদের মাঝে বহু যুগ অতিবাহিত হয়ে গেছে। আর আপনি তো (মূসা ও শুয়াইব আলাইহিমাস সালামের ন্যায়) মাদইয়ানের অধিবাসীদের মাঝে ছিলেন না, তাদের নিকট আমাদের আয়াতসমূহ আবৃত্তি করার জন্যে। বরং আমরাই তো (আপনাকে অদৃশ্যের জ্ঞানে মহিমান্বিতরূপে) প্রেরণকারী।
وَ مَا کُنۡتَ بِجَانِبِ الطُّوۡرِ اِذۡ نَادَیۡنَا وَ لٰکِنۡ رَّحۡمَۃً مِّنۡ رَّبِّکَ لِتُنۡذِرَ قَوۡمًا مَّاۤ اَتٰىہُمۡ مِّنۡ نَّذِیۡرٍ مِّنۡ قَبۡلِکَ لَعَلَّہُمۡ یَتَذَکَّرُوۡنَ ﴿۴۶﴾
কানযুল ঈমান
৪৬. এবং না আপনি তূর পর্বতের পার্শ্বে ছিলেন, যখন আমি আহ্বান করেছি; হাঁ, আপনার রবের দয়া রয়েছে (যে, আপনাকে অদৃশ্যের জ্ঞান প্রদান করেছেন), যাতে আপনি এমন সম্প্রদায়কে সতর্ক করেন যার নিকট আপনার পূর্বে কোন সতর্ককারী আসেনি, এ আশা করে যে, তাদের উপদেশ হবে।
ইরফানুল কুরআন
৪৬. আর আপনি তখন তূর-প্রান্তে (বিদ্যমান) ছিলেন না যখন আমরা (মূসা আলাইহিস সালামকে) আহ্বান করেছিলাম। কিন্তু (আপনাকে এসব অদৃশ্যের বিষয় অবগত করানো) আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে (বিশেষ) অনুগ্রহ, যাতে আপনি (এসব ঘটনাসমূহ অবগত হয়ে) সেসব সম্প্রদায়কে (আল্লাহ্র শাস্তির) ভয় দেখাতে পারেন যাদের নিকট আপনার পূর্বে কোনো সতর্ককারী আগমন করেনি, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।
وَ لَوۡ لَاۤ اَنۡ تُصِیۡبَہُمۡ مُّصِیۡبَۃٌۢ بِمَا قَدَّمَتۡ اَیۡدِیۡہِمۡ فَیَقُوۡلُوۡا رَبَّنَا لَوۡ لَاۤ اَرۡسَلۡتَ اِلَیۡنَا رَسُوۡلًا فَنَتَّبِعَ اٰیٰتِکَ وَ نَکُوۡنَ مِنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۴۷﴾
কানযুল ঈমান
৪৭. এবং যদি তাদের ওই কর্মের জন্য তাদেরকে (কখনো) কোন বিপদ স্পর্শ না করতো, যা তাদের হাতগুলো অগ্রে প্রেরণ করেছে, (তবে আমি তাদের প্রতি রসূল প্রেরণ করতাম না।) তখন তারা বলতো, ‘হে আমাদের রব! তুমি আমাদের প্রতি কোন রসূল কেন প্রেরণ করো নি, যাতে আমরা তোমার নিদর্শনসমূহের অনুসরণ করতাম এবং ঈমান আনতাম?’
ইরফানুল কুরআন
৪৭. আর (আমরা কোনো রাসূল প্রেরণ করতাম না) যদি না এমন হতো যে, যখন তাদের মন্দ কৃতকর্মের কারণে তাদের উপর কোনো বিপদ নেমে আসে, তবে তারা যাতে বলতে না পারে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি আমাদের নিকট কেন কোনো রাসূল প্রেরণ করলে না, তাহলে আমরা তোমার আয়াতসমূহের অনুসরণ করতাম এবং ঈমানদারগণের মধ্যে গণ্য হতাম?’
فَلَمَّا جَآءَہُمُ الۡحَقُّ مِنۡ عِنۡدِنَا قَالُوۡا لَوۡ لَاۤ اُوۡتِیَ مِثۡلَ مَاۤ اُوۡتِیَ مُوۡسٰی ؕ اَوَ لَمۡ یَکۡفُرُوۡا بِمَاۤ اُوۡتِیَ مُوۡسٰی مِنۡ قَبۡلُ ۚ قَالُوۡا سِحۡرٰنِ تَظٰہَرَا ۟ٝ وَ قَالُوۡۤا اِنَّا بِکُلٍّ کٰفِرُوۡنَ ﴿۴۸﴾
কানযুল ঈমান
৪৮. অতঃপর যখন তাদের নিকট সত্য এলো আমার নিকট থেকে, তখন বললো, ‘তাকে কেন প্রদান করা হয়নি যা মূসাকে প্রদান করা হয়েছে?’ তারা কি অস্বীকার করতো না যা পূর্বে মূসাকে প্রদান করা হয়েছে? তারা বললো, উভয়ই যাদুকর, একে অপরকে সমর্থন করে;’ এবং তারা বললো, ‘আমরা এ উভয়কে অস্বীকার করি’।
ইরফানুল কুরআন
৪৮. অতঃপর যখন তাদের কাছে আমাদের পক্ষ থেকে সত্য এসে পৌঁছলো, (তখন) তারা বলতে লাগলো, ‘তাঁকে (এ রাসূলকে) সেরূপ (নিদর্শনাবলী) কেন দেয়া হলো না যেরূপ মূসা (আলাইহিস সালাম)-কে দেয়া হয়েছিল?’ তারা কি সেসব (নিদর্শনাবলী) অস্বীকার করেনি যা এর পূর্বে মূসা (আলাইহিস সালাম)-কে দেয়া হয়েছিল? তারা বলেছিল, ‘(তাওরাত এবং কুরআন) উভয়ই যাদু, যা একে অপরকে সত্যায়ন করে এবং একাত্মতা প্রকাশ করে’। আর তারা বলেছিল, ‘আমরা (এ) সবগুলোকে প্রত্যাখ্যান করি’।
قُلۡ فَاۡتُوۡا بِکِتٰبٍ مِّنۡ عِنۡدِ اللّٰہِ ہُوَ اَہۡدٰی مِنۡہُمَاۤ اَتَّبِعۡہُ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ ﴿۴۹﴾
কানযুল ঈমান
৪৯. আপনি বলুন, ‘সুতরাং আল্লাহ্র নিকট থেকে এমন কোন কিতাব নিয়ে এসো, যা ওই দু’টি কিতাব অপেক্ষা অধিক হিদায়তের হয়, আমি সেটার অনুসরণ করবো, যদি তোমরা সত্যবাদী হও’।
ইরফানুল কুরআন
৪৯. আপনি বলে দিন, ‘আল্লাহ্র নিকট থেকে (অন্য) কোনো কিতাব নিয়ে আসো যা পথ-নির্দেশে এ দু’য়ের চেয়ে অধিক উৎকৃষ্ট, (তখন) আমি এর অনুসরণ করবো; যদি তোমরা (তোমাদের অপবাদে) সত্যবাদী হও।’
فَاِنۡ لَّمۡ یَسۡتَجِیۡبُوۡا لَکَ فَاعۡلَمۡ اَنَّمَا یَتَّبِعُوۡنَ اَہۡوَآءَہُمۡ ؕ وَ مَنۡ اَضَلُّ مِمَّنِ اتَّبَعَ ہَوٰىہُ بِغَیۡرِ ہُدًی مِّنَ اللّٰہِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَا یَہۡدِی الۡقَوۡمَ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۵۰﴾
কানযুল ঈমান
৫০. অতঃপর যদি তারা আপনার এ বাণী গ্রহণ না করে, তবে জেনে নিন যে, ব্যাস! তারা নিজেদের খেয়াল-খুশীরই অনুসরণ করছে। এবং তার চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে, যে আপন খেয়াল-খুশীরই অনুসরণ করে, আল্লাহ্র হিদায়ত থেকে পৃথক হয়ে? নিশ্চয় আল্লাহ্ হিদায়ত করেন না যালিম লোকদেরকে।
ইরফানুল কুরআন
৫০. অতঃপর যদি তারা আপনার বাণী গ্রহণ না করে, তবে জেনে রাখুন (তাদের জন্যে কোনো প্রমাণ বাকী থাকলো না) তারা কেবল নিজের কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করে। আর তার চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে হতে পারে যে আল্লাহ্র পক্ষ থেকে হেদায়াত ছেড়ে দিয়ে নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ করে? নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পথভ্রষ্ট সম্প্রদায়কে হেদায়াত দান করেন না।
وَ لَقَدۡ وَصَّلۡنَا لَہُمُ الۡقَوۡلَ لَعَلَّہُمۡ یَتَذَکَّرُوۡنَ ﴿ؕ۵۱﴾
কানযুল ঈমান
৫১. এবং নিশ্চয় আমি তাদের জন্য বাণী পরপর অবতারণ করেছি যেন তারা মনোযোগ দেয়।
ইরফানুল কুরআন
৫১. আর প্রকৃতপক্ষে আমরা তাদের জন্যে একের পর এক (কুরআনের) নির্দেশ প্রেরণ করছিলাম, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।
اَلَّذِیۡنَ اٰتَیۡنٰہُمُ الۡکِتٰبَ مِنۡ قَبۡلِہٖ ہُمۡ بِہٖ یُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۵۲﴾
কানযুল ঈমান
৫২. যাদেরকে আমি এর পূর্বে কিতাব দিয়েছি তারা সেটার উপর ঈমান আনে।
ইরফানুল কুরআন
৫২. এর পূর্বে যাদেরকে আমরা কিতাব প্রদান করেছিলাম তারা (হেদায়াতের ধারাবাহিকতায় এ কুরআন)-এর উপর(ও) ঈমান আনয়ন করেছে।
وَ اِذَا یُتۡلٰی عَلَیۡہِمۡ قَالُوۡۤا اٰمَنَّا بِہٖۤ اِنَّہُ الۡحَقُّ مِنۡ رَّبِّنَاۤ اِنَّا کُنَّا مِنۡ قَبۡلِہٖ مُسۡلِمِیۡنَ ﴿۵۳﴾
কানযুল ঈমান
৫৩. এবং যখন তাদের উপর এসব আয়াত পাঠ করা হয় তখন তারা বলে, ‘আমরা এর উপর ঈমান এনেছি। নিশ্চয় এটাই সত্য আমাদের রবের নিকট থেকে; আমরা এর পূর্বেই আত্নসমর্পণ করেছিলাম’।
ইরফানুল কুরআন
৫৩. আর যখন তাদের নিকট (কুরআন) পাঠ করা হয় তখন তারা বলে, ‘আমরা এর উপর ঈমান এনেছি, নিশ্চয়ই এটি আমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আগত সত্য। প্রকৃতপক্ষে আমরা এর পূর্বেই মুসলমান (অর্থাৎ আত্মসমর্পনকারী) ছিলাম।’
اُولٰٓئِکَ یُؤۡتَوۡنَ اَجۡرَہُمۡ مَّرَّتَیۡنِ بِمَا صَبَرُوۡا وَ یَدۡرَءُوۡنَ بِالۡحَسَنَۃِ السَّیِّئَۃَ وَ مِمَّا رَزَقۡنٰہُمۡ یُنۡفِقُوۡنَ ﴿۵۴﴾
কানযুল ঈমান
৫৪. তাদেরকে তাদের প্রতিদান দু’বার দেওয়া হবে বিনিময়ে তাদের ধৈর্যের। এবং তারা ভালো দ্বারা মন্দকে দূরীভূত করে এবং আমার প্রদত্ত (সম্পদ) থেকে কিছু আমার পথে ব্যয় করে।
ইরফানুল কুরআন
৫৪. তারা ঐসব লোক যাদেরকে দু’বার প্রতিদান দেয়া হবে, কারণ তারা ধৈর্য ধারণ করেছে, আর মন্দকে উত্তম দ্বারা প্রতিহত করে এবং আমরা তাদেরকে যা কিছু দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে।
وَ اِذَا سَمِعُوا اللَّغۡوَ اَعۡرَضُوۡا عَنۡہُ وَ قَالُوۡا لَنَاۤ اَعۡمَالُنَا وَ لَکُمۡ اَعۡمَالُکُمۡ ۫ سَلٰمٌ عَلَیۡکُمۡ ۫ لَا نَبۡتَغِی الۡجٰہِلِیۡنَ ﴿۵۵﴾
কানযুল ঈমান
৫৫. এবং যখন অযথা কথাবার্তা শুনে তখন তা থেকে তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়। আর বলে, ‘আমাদের জন্য আমাদের কর্ম, তোমাদের জন্য তোমাদের কর্ম। ব্যাস! তোমাদের প্রতি সালাম! আমরা অজ্ঞলোকদের চাই না’।
ইরফানুল কুরআন
৫৫. আর যখন তারা কোনো অনর্থক কথা শুনে তখন তারা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং বলে, ‘আমাদের জন্যে আমাদের কর্ম আর তোমাদের জন্যে তোমাদের কর্ম। তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক! আমরা মূর্খদের (চিন্তা ও কাজ নিজেদের জন্যে) গ্রহণ করতে চাই না। (আমরা তাদের অকল্যাণের বিনিময়ে আমাদের কল্যাণকে কেন পরিহার করবো?)’
اِنَّکَ لَا تَہۡدِیۡ مَنۡ اَحۡبَبۡتَ وَ لٰکِنَّ اللّٰہَ یَہۡدِیۡ مَنۡ یَّشَآءُ ۚ وَ ہُوَ اَعۡلَمُ بِالۡمُہۡتَدِیۡنَ ﴿۵۶﴾
কানযুল ঈমান
৫৬. নিশ্চয় এটা নয় যে, আপনি যাকেই চান হিদায়ত করবেন, হাঁ, আল্লাহ্ই হিদায়ত করেন যাকে চান; এবং তিনি ভালো জানেন সৎপথের অনুসারীদেরকে।
ইরফানুল কুরআন
৫৬. প্রকৃত বিষয় এই যে, যাকে আপনি (সৎপথে আনয়ন করতে) পছন্দ করেন তাকে আপনি নিজে সৎপথে আনবেন না বরং আল্লাহ্ যাকে চান (আপনার মাধ্যমে) সৎপথে পরিচালিত করেন। আর তিনি হেদায়াত প্রাপ্তদের ব্যাপারে ভালোভাবেই জানেন।
وَ قَالُوۡۤا اِنۡ نَّتَّبِعِ الۡہُدٰی مَعَکَ نُتَخَطَّفۡ مِنۡ اَرۡضِنَا ؕ اَوَ لَمۡ نُمَکِّنۡ لَّہُمۡ حَرَمًا اٰمِنًا یُّجۡبٰۤی اِلَیۡہِ ثَمَرٰتُ کُلِّ شَیۡءٍ رِّزۡقًا مِّنۡ لَّدُنَّا وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَہُمۡ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۵۷﴾
কানযুল ঈমান
৫৭. এবং তারা বলে, ‘যদি আমরা আপনার সাথে হিদায়তের অনুসরণ করি তবে লোকেরা আমাদের দেশ থেকে আমাদেরকে উৎখাত করবে’। আমি কি তাদেরকে নিরাপদ হেরমে স্থান দিই নি, যেটার প্রতি সব বস্তুর ফলমূল আমদানী করা হয়, আমার নিকট থেকে জীবিকাস্বরূপ? কিন্তু তাদের মধ্যে অধিকাংশের জ্ঞান নেই।
ইরফানুল কুরআন
৫৭. আর (যারা মর্যাদা বুঝতে অক্ষম) তারা বলে, ‘যদি আমরা আপনার সাথে সৎপথ অনুসরণ করি তবে আমাদেরকে নিজ ভুমি থেকে উৎখাত করা হবে’। আমরা কি তাদেরকে (আপনারই ভুমি এ) নিরাপদ সম্মানিত স্থানে (অর্থাৎ মক্কা শহরে) প্রতিষ্ঠিত করিনি, যেখানে আমাদের পক্ষ থেকে জীবনোপকরণ হিসেবে (সমগ্র বিশ্ব থেকে) সকল প্রকার ফলমূল সরবরাহ করা হয়? কিন্তু এদের অধিকাংশই জানে না (যে, এসব কিছু কার বদৌলতে হচ্ছে)।
وَ کَمۡ اَہۡلَکۡنَا مِنۡ قَرۡیَۃٍۭ بَطِرَتۡ مَعِیۡشَتَہَا ۚ فَتِلۡکَ مَسٰکِنُہُمۡ لَمۡ تُسۡکَنۡ مِّنۡۢ بَعۡدِہِمۡ اِلَّا قَلِیۡلًا ؕ وَ کُنَّا نَحۡنُ الۡوٰرِثِیۡنَ ﴿۵۸﴾
কানযুল ঈমান
৫৮. এবং কত শহরকে আমি ধ্বংস করে দিয়েছি যারা নিজেদের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের উপর অহঙ্কারী হয়েছে। সুতরাং এ-ই হচ্ছে তাদের ঘরবাড়ী যে, তাদের পর সেগুলোতে বসবাস হয় নি, কিন্তু সামান্য এবং আমিই (চূড়ান্ত) মালিকানার অধিকারী।
ইরফানুল কুরআন
৫৮. আর আমরা (এমন) কতোইনা জনপদ ধ্বংস করেছি যার অধিবাসীরা নিজেদের অগ্রগামী অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে অহঙ্কার করেছিল ও অকৃতজ্ঞ হয়ে গিয়েছিল। সুতরাং তাদের এ (ধ্বংসপ্রাপ্ত) জনপদসমূহ পরবর্তীতে খুব সামান্যই আবাদ হয়েছিল। আর (পরিশেষে) আমরাই উত্তরাধিকারী ও মালিক।
وَ مَا کَانَ رَبُّکَ مُہۡلِکَ الۡقُرٰی حَتّٰی یَبۡعَثَ فِیۡۤ اُمِّہَا رَسُوۡلًا یَّتۡلُوۡا عَلَیۡہِمۡ اٰیٰتِنَا ۚ وَ مَا کُنَّا مُہۡلِکِی الۡقُرٰۤی اِلَّا وَ اَہۡلُہَا ظٰلِمُوۡنَ ﴿۵۹﴾
কানযুল ঈমান
৫৯. এবং আপনার রব শহরগুলোকে ধ্বংস করেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত না সেগুলোর মূল কেন্দ্রস্থলে রসূল প্রেরণ করেন যিনি তাদের নিকট আমার আয়াতসমূহ পাঠ করেন এবং আমি শহরগুলোকে ধ্বংস করি না, কিন্তু তখনই, যখন সেগুলোর বাসিন্দারা যালিম হয়।
ইরফানুল কুরআন
৫৯. আর আপনার প্রতিপালক জনপদসমূহকে ধ্বংস করেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তিনি তাদের কেন্দ্রীয় শহরে রাসূল প্রেরণ করেন যিনি তাদের নিকট আমাদের আয়াতসমূহ পাঠ করেন। আর আমরা জনপদসমূহকে ধ্বংস করি না যদি না এর অধিবাসীরা অত্যাচারী হয়।
وَ مَاۤ اُوۡتِیۡتُمۡ مِّنۡ شَیۡءٍ فَمَتَاعُ الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا وَ زِیۡنَتُہَا ۚ وَ مَا عِنۡدَ اللّٰہِ خَیۡرٌ وَّ اَبۡقٰی ؕ اَفَلَا تَعۡقِلُوۡنَ ﴿۶۰﴾
কানযুল ঈমান
৬০. এবং যে কোন বস্তুই তোমাদেরকে প্রদান করা হয়েছে তা হচ্ছে পার্থিব জীবনের ভোগ সামগ্রী ও সেটার সাজসজ্জ্বা মাত্র। এবং যা আল্লাহ্র নিকট রয়েছে তা উত্তম ও অধিক স্থায়ী। তবে কি তোমাদের বিবেক নেই?
ইরফানুল কুরআন
৬০. আর তোমাদেরকে যা কিছুই দেয়া হয়েছে তা (এ) পার্থিব জীবনের সামগ্রী এবং এর চাকচিক্য ও সৌন্দর্য্য। আর যা কিছু(ই) আল্লাহ্ তা’আলার নিকট রয়েছে তা (এর চেয়ে) অধিক উত্তম ও স্থায়ী। তোমরা কি (এ প্রকৃত সত্য) বুঝতে পারো না?
اَفَمَنۡ وَّعَدۡنٰہُ وَعۡدًا حَسَنًا فَہُوَ لَاقِیۡہِ کَمَنۡ مَّتَّعۡنٰہُ مَتَاعَ الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا ثُمَّ ہُوَ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ مِنَ الۡمُحۡضَرِیۡنَ ﴿۶۱﴾
কানযুল ঈমান
৬১. তবে কি ওই ব্যক্তি, যাকে আমি উত্তম প্রতিশ্রুতি দিয়েছি অতঃপর সে সেটার সাক্ষাৎ পাবে, (সে) ওই ব্যক্তির ন্যায়, যাকে আমি পার্থিব জীবনের ভোগ-সামগ্রী ভোগ করতে দিয়েছি, অতঃপর তাকে ক্বিয়ামতের দিনে গ্রেফতার করে হাযির করা হবে?
ইরফানুল কুরআন
৬১. যাকে আমরা (পরকালের) কোনো কল্যাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছি এবং যা সে লাভ করবে, সে কি ঐ (দুর্ভাগা) ব্যক্তির ন্যায় যাকে আমরা পার্থিব জীবনের সামগ্রী প্রদান করেছি, অতঃপর (এ নিয়ামত অস্বীকারের কারণে) কিয়ামতের দিন (শাস্তির জন্যে) সে উপস্থিতদের মধ্যে গণ্য হবে?
وَ یَوۡمَ یُنَادِیۡہِمۡ فَیَقُوۡلُ اَیۡنَ شُرَکَآءِیَ الَّذِیۡنَ کُنۡتُمۡ تَزۡعُمُوۡنَ ﴿۶۲﴾
কানযুল ঈমান
৬২. এবং তিনি যেদিন তাদেরকে আহ্বান করবেন অতঃপর বলবেন, ‘কোথায় আমার ওই সব শরীক, যে গুলোকে তোমরা ধারণা করতে?’
ইরফানুল কুরআন
৬২. আর যেদিন (আল্লাহ্) তাদেরকে ডাকবেন, অতঃপর জিজ্ঞেস করবেন, ‘কোথায় ঐ সকল অংশীদারেরা যাদেরকে তোমরা (উপাস্য) গণ্য করতে?’
قَالَ الَّذِیۡنَ حَقَّ عَلَیۡہِمُ الۡقَوۡلُ رَبَّنَا ہٰۤؤُلَآءِ الَّذِیۡنَ اَغۡوَیۡنَا ۚ اَغۡوَیۡنٰہُمۡ کَمَا غَوَیۡنَا ۚ تَبَرَّاۡنَاۤ اِلَیۡکَ ۫ مَا کَانُوۡۤا اِیَّانَا یَعۡبُدُوۡنَ ﴿۶۳﴾
কানযুল ঈমান
৬৩. বলবে ওই সব লোক, যাদের উপর (শাস্তির) বাণী অবধারিত হয়েছে, ‘হে আমাদের রব! এরাই হচ্ছে তারা, যাদেরকে আমরা পথভ্রষ্ট করেছি। আমরা তাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছি যেমনিভাবে আমরা নিজেরাই পথভ্রষ্ট হয়েছিলাম। আমরা তাদের থেকে পৃথক হয়ে তোমারই প্রতি প্রত্যাবর্তন করছি। তারা আমাদের পূজা করতোই না’।
ইরফানুল কুরআন
৬৩. যাদের বিরুদ্ধে (শাস্তির) নির্দেশ অবধারিত হয়েছে তারা বলবে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! এরাই সেসব লোক যাদেরকে আমরা বিভ্রান্ত করেছিলাম, আমরা তাদেরকে (সেভাবে) বিভ্রান্ত করেছিলাম যেভাবে আমরা (নিজেরা) বিভ্রান্ত হয়েছিলাম। আমরা তাদের প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে আপনার দিকে ফিরছি। আর তারা (প্রকৃতপক্ষে) আমাদের উপাসনা করতো না (বরং নিজেদের কুপ্রবৃত্তির পূজা করতো)।’
وَ قِیۡلَ ادۡعُوۡا شُرَکَآءَکُمۡ فَدَعَوۡہُمۡ فَلَمۡ یَسۡتَجِیۡبُوۡا لَہُمۡ وَ رَاَوُا الۡعَذَابَ ۚ لَوۡ اَنَّہُمۡ کَانُوۡا یَہۡتَدُوۡنَ ﴿۶۴﴾
কানযুল ঈমান
৬৪. এবং তাদেরকে বলা হবে, ‘নিজেদের শরীকগুলোকে ডাকো!’ অতঃপর তারা ডাকবে। তখন তারা তাদের কথা শুনবে না এবং দেখবে শাস্তি। কতোই ভালো হতো যদি তারা সৎপথ পেতো!
ইরফানুল কুরআন
৬৪. আর (তাদেরকে) বলা হবে, ‘তোমাদের (মনগড়া) অংশীদারদেরকে আহ্বান করো’; অতঃপর তারা তাদেরকে আহ্বান করবে, কিন্তু এরা তাদের আহ্বানে সাড়া দেবে না। তারা শাস্তি অবলোকন করবে। হায়! যদি তারা (পৃথিবীতে) হেদায়াতের পথ লাভ করতো!
وَ یَوۡمَ یُنَادِیۡہِمۡ فَیَقُوۡلُ مَاذَاۤ اَجَبۡتُمُ الۡمُرۡسَلِیۡنَ ﴿۶۵﴾
কানযুল ঈমান
৬৫. এবং যেদিন তাদেরকে আহ্বান করবেন, তখন (আল্লাহ্) বলবেন, ‘তোমরা রসূলগণকে কি জবাব দিয়েছো?’
ইরফানুল কুরআন
৬৫. আর যেদিন (আল্লাহ্) তাদেরকে ডাকবেন, অতঃপর জিজ্ঞেস করবেন, ‘তোমরা রাসূলগণকে কী জবাব দিয়েছিলে?’
فَعَمِیَتۡ عَلَیۡہِمُ الۡاَنۡۢبَآءُ یَوۡمَئِذٍ فَہُمۡ لَا یَتَسَآءَلُوۡنَ ﴿۶۶﴾
কানযুল ঈমান
৬৬. অতঃপর সেদিন তাদের উপর খবরসমূহ অন্ধ হয়ে যাবে, তখন তারা কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করবে না।
ইরফানুল কুরআন
৬৬. অতঃপর সেদিন তাদের জন্যে সমস্ত তথ্য অজ্ঞাত হয়ে যাবে, আর তারা একে অপরকে জিজ্ঞাসা(ও) করতে পারবে না।
فَاَمَّا مَنۡ تَابَ وَ اٰمَنَ وَ عَمِلَ صَالِحًا فَعَسٰۤی اَنۡ یَّکُوۡنَ مِنَ الۡمُفۡلِحِیۡنَ ﴿۶۷﴾
কানযুল ঈমান
৬৭. তবে ওই ব্যক্তি যে তাওবা করেছে এবং ঈমান এনেছে, আর সৎকর্ম করেছে, এ কথা নিকটে যে, সে সফলকাম হবে।
ইরফানুল কুরআন
৬৭. তবে যে ব্যক্তি তওবা করে, বিশ্বাস করে এবং নেক কাজ করে সে অবশ্যই সফলদের মধ্যে গণ্য হবে।
وَ رَبُّکَ یَخۡلُقُ مَا یَشَآءُ وَ یَخۡتَارُ ؕ مَا کَانَ لَہُمُ الۡخِیَرَۃُ ؕ سُبۡحٰنَ اللّٰہِ وَ تَعٰلٰی عَمَّا یُشۡرِکُوۡنَ ﴿۶۸﴾
কানযুল ঈমান
৬৮. এবং আপনার রব সৃষ্টি করেন যা চান এবং পছন্দ করেন। তাদের কোন ক্ষমতা নেই। পবিত্রতা আল্লাহ্রই এবং তিনি তাদের শির্ক থেকে বহু ঊর্ধ্বে!
ইরফানুল কুরআন
৬৮. আর আপনার প্রতিপালক যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন এবং (যাকে চান নবুয়্যত এবং শাফায়াতের অধিকারের জন্যে) মনোনীত করেন; এতে সেসব (কাফের ও মুশরিক) লোকদের কোনো কর্তৃত্ব বা অভিমত নেই। আল্লাহ্ পবিত্র ও সমুন্নত সেসব (বাতিল উপাস্য) থেকে যাদেরকে তারা (আল্লাহ্র) অংশীদার সাব্যস্ত করে।
وَ رَبُّکَ یَعۡلَمُ مَا تُکِنُّ صُدُوۡرُہُمۡ وَ مَا یُعۡلِنُوۡنَ ﴿۶۹﴾
কানযুল ঈমান
৬৯. এবং আপনার রব জানেন, যা তাদের বক্ষসমূহে গোপন রয়েছে এবং যা তারা প্রকাশ করে।
ইরফানুল কুরআন
৬৯. আর আপনার প্রতিপালক (সবকিছু) জানেন যা তাদের অন্তর (অভ্যন্তর)-এ গোপন রাখে এবং যা কিছু তারা প্রকাশ করে।
وَ ہُوَ اللّٰہُ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا ہُوَ ؕ لَہُ الۡحَمۡدُ فِی الۡاُوۡلٰی وَ الۡاٰخِرَۃِ ۫ وَ لَہُ الۡحُکۡمُ وَ اِلَیۡہِ تُرۡجَعُوۡنَ ﴿۷۰﴾
কানযুল ঈমান
৭০. এবং তিনিই হন আল্লাহ্, যিনি ব্যতীত অন্য কোন খোদা নেই। তারই প্রশংসা বিদ্যমান দুনিয়ায় ও আখিরাতে এবং নির্দেশ তারই আর তারই দিকে ফিরে যাবে।
ইরফানুল কুরআন
৭০. আর তিনিই আল্লাহ্, তিনি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই। ইহকাল এবং পরকালে সকল প্রশংসা তাঁরই জন্যে। আর (প্রকৃত) আধিপত্য এবং শাসনক্ষমতা(ও) তাঁরই। আর তোমরা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে।
قُلۡ اَرَءَیۡتُمۡ اِنۡ جَعَلَ اللّٰہُ عَلَیۡکُمُ الَّیۡلَ سَرۡمَدًا اِلٰی یَوۡمِ الۡقِیٰمَۃِ مَنۡ اِلٰہٌ غَیۡرُ اللّٰہِ یَاۡتِیۡکُمۡ بِضِیَآءٍ ؕ اَفَلَا تَسۡمَعُوۡنَ ﴿۷۱﴾
কানযুল ঈমান
৭১. আপনি বলূন, ‘ভালো দেখো তো! যদি আল্লাহ্ সর্বদা তোমাদের উপর ক্বিয়ামত পর্যন্ত রাতকে স্থায়ী করেন, তবে আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোন খোদা আছে যে তোমাদেরকে আলো এনে দেবে? তবে কি তোমরা শুনতে পাচ্ছো না?’
ইরফানুল কুরআন
৭১. বলে দিন, ‘অন্তত এটুকু বলো তো, যদি আল্লাহ্ তোমাদের উপর কিয়ামত পর্যন্ত সর্বদা রাতকে স্থায়ী করেন, (তবে) আল্লাহ্ ব্যতীত কোন্ উপাস্য আছে যে তোমাদের জন্যে আলো এনে দেবে? তোমরা কি (এসব) শুনতে পাচ্ছো না?’
قُلۡ اَرَءَیۡتُمۡ اِنۡ جَعَلَ اللّٰہُ عَلَیۡکُمُ النَّہَارَ سَرۡمَدًا اِلٰی یَوۡمِ الۡقِیٰمَۃِ مَنۡ اِلٰہٌ غَیۡرُ اللّٰہِ یَاۡتِیۡکُمۡ بِلَیۡلٍ تَسۡکُنُوۡنَ فِیۡہِ ؕ اَفَلَا تُبۡصِرُوۡنَ ﴿۷۲﴾
কানযুল ঈমান
৭২. আপনি বলুন, ‘ভালো দেখো তো! যদি আল্লাহ্ ক্বিয়ামত পর্যন্ত সর্বদা দিন রেখে দেন, তবে আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোন খোদা রয়েছে, যে তোমাদের নিকট রাত এনে দেবে, যার মধ্যে তোমরা আরাম করবে? তবে কি তোমরা ভেবে দেখো না?’
ইরফানুল কুরআন
৭২. বলে দিন, ‘অন্তত এটুকু(ও) বলো যে, যদি আল্লাহ্ তোমাদের জন্যে কিয়ামত পর্যন্ত সর্বদা দিনকে স্থায়ী করেন, (তবে) আল্লাহ্ ব্যতীত কোন্ উপাস্য আছে, যে তোমাদের জন্যে রাত নিয়ে আসবে, তোমরা কি দেখছো না?’
وَ مِنۡ رَّحۡمَتِہٖ جَعَلَ لَکُمُ الَّیۡلَ وَ النَّہَارَ لِتَسۡکُنُوۡا فِیۡہِ وَ لِتَبۡتَغُوۡا مِنۡ فَضۡلِہٖ وَ لَعَلَّکُمۡ تَشۡکُرُوۡنَ ﴿۷۳﴾
কানযুল ঈমান
৭৩. এবং তিনি নিজ করুণায় তোমাদের জন্য রাত ও দিন সৃষ্টি করেছেন যেন রাতে আরাম করো এবং দিনে তার অনুগ্রহ তালাশ করো, আর এ জন্য যে, তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে।
ইরফানুল কুরআন
৭৩. আর তিনি স্বীয় অনুগ্রহে তোমাদের জন্যে করেছেন রজনী এবং দিবস যাতে তোমরা রজনীতে বিশ্রাম করতে পারো এবং (দিবসে) তাঁর অনুগ্রহ (জীবিকা) অন্বেষণ করতে পারো এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো।
وَ یَوۡمَ یُنَادِیۡہِمۡ فَیَقُوۡلُ اَیۡنَ شُرَکَآءِیَ الَّذِیۡنَ کُنۡتُمۡ تَزۡعُمُوۡنَ ﴿۷۴﴾
কানযুল ঈমান
৭৪. এবং যেদিন তিনি তাদেরকে ডাকবেন, অতঃপর বলবেন, ‘কোথায় আমার ওই সব অংশীদার, যা তোমরা বকছিলে?
ইরফানুল কুরআন
৭৪. আর যেদিন (আল্লাহ্) তাদেরকে ডেকে বলবেন, ‘কোথায় আমার অংশীদারেরা যাদেরকে তোমরা (উপাস্য) গণ্য করতে?’
وَ نَزَعۡنَا مِنۡ کُلِّ اُمَّۃٍ شَہِیۡدًا فَقُلۡنَا ہَاتُوۡا بُرۡہَانَکُمۡ فَعَلِمُوۡۤا اَنَّ الۡحَقَّ لِلّٰہِ وَ ضَلَّ عَنۡہُمۡ مَّا کَانُوۡا یَفۡتَرُوۡنَ ﴿۷۵﴾
কানযুল ঈমান
৭৫. এবং প্রত্যেক সম্প্রদায় থেকে আমি একজন সাক্ষী বের করে বলবো, ‘তোমাদের প্রমাণ হাযির করো’। তখন তারা জানতে পারবে যে, হক্ব আল্লাহ্রই এবং তাদের নিকট থেকে হারিয়ে যাবে যেসব বানোয়াট তারা করতো’।
ইরফানুল কুরআন
৭৫. আর আমরা প্রত্যেক উম্মত থেকে একজন সাক্ষী দাঁড় করাবো, অতঃপর (কাফেরদেরকে) বলবো, ‘তোমাদের প্রমাণ উপস্থিত করো’; তখন তারা জানতে পারবে যে, সত্য আল্লাহ্রই। আর তাদের থেকে সেসব (মিথ্যা) দূরীভুত হয়ে যাবে যা তারা উদ্ভাবন করতো।
اِنَّ قَارُوۡنَ کَانَ مِنۡ قَوۡمِ مُوۡسٰی فَبَغٰی عَلَیۡہِمۡ ۪ وَ اٰتَیۡنٰہُ مِنَ الۡکُنُوۡزِ مَاۤ اِنَّ مَفَاتِحَہٗ لَتَنُوۡٓاُ بِالۡعُصۡبَۃِ اُولِی الۡقُوَّۃِ ٭ اِذۡ قَالَ لَہٗ قَوۡمُہٗ لَا تَفۡرَحۡ اِنَّ اللّٰہَ لَا یُحِبُّ الۡفَرِحِیۡنَ ﴿۷۶﴾
কানযুল ঈমান
৭৬. নিশ্চয় কারূন মূসার সম্প্রদায়ভুক্ত ছিলো, অতঃপর সে তাদের উপর অত্যাচার করেছে; এবং আমি তাকে এত ধন-ভাণ্ডার দান করেছি, যেগুলোর চাবি একটা বলবান দলের উপরও ভারী ছিলো; যখন তাকে তার সম্প্রদায় বললো, ‘দম্ভ করো না। নিশ্চয় আল্লাহ্ দাম্ভিকদের পছন্দ করেন না।
ইরফানুল কুরআন
৭৬. নিশ্চিত কারূন ছিল মূসা (আলাইহিস সালাম)-এঁর সম্প্রদায়ভুক্ত, কিন্তু সে তাদেরকে নিপীড়ন করতো। আর আমরা তাকে এতো পরিমাণ ধনভান্ডার দান করেছিলাম যে, এর চাবিগুলো (বহন করা) এক দল শক্তিশালী লোকের জন্যে কষ্টসাধ্য ছিল। যখন তার সম্প্রদায় তাকে বললো, ‘তুমি (আনন্দে) উদ্ধত হয়ো না, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ উল্লসিতদের পছন্দ করেন না।
وَ ابۡتَغِ فِیۡمَاۤ اٰتٰىکَ اللّٰہُ الدَّارَ الۡاٰخِرَۃَ وَ لَا تَنۡسَ نَصِیۡبَکَ مِنَ الدُّنۡیَا وَ اَحۡسِنۡ کَمَاۤ اَحۡسَنَ اللّٰہُ اِلَیۡکَ وَ لَا تَبۡغِ الۡفَسَادَ فِی الۡاَرۡضِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَا یُحِبُّ الۡمُفۡسِدِیۡنَ ﴿۷۷﴾
কানযুল ঈমান
৭৭. এবং আল্লাহ্ যে সম্পদ তোমাকে প্রদান করেছেন তা দ্বারা আখিরাতের আবাস অনুসন্ধান করো এবং দুনিয়ার মধ্যে নিজ অংশ ভুলো না আর পরোপকার করো যেমন আল্লাহ্ তোমার উপর অনুগ্রহ করেছেন এবং পৃথিবীতে অশান্তি চেওয়া না। নিশ্চয় আল্লাহ্ অশান্তি সৃষ্টিকারীদের ভালোবাসেন না’।
ইরফানুল কুরআন
৭৭. আর আল্লাহ্ তোমাকে যা (সম্পদ) দিয়েছেন তা দ্বারা পরকালের গৃহ অন্বেষণ করো এবং ইহলোকে তোমার নিজের বৈধ সম্ভোগকে উপেক্ষা করো না। আর (মানুষের প্রতি তেমন) সদাশয় হও যেমন আল্লাহ্ তোমার প্রতি সদাশয় এবং পৃথিবীতে (অত্যাচার, কুক্ষিগতকরণ এবং শোষণের আকারে) বিপর্যয় (-এর পথ) অন্বেষণ করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ শান্তি ভঙ্গকারীদের পছন্দ করেন না।’
قَالَ اِنَّمَاۤ اُوۡتِیۡتُہٗ عَلٰی عِلۡمٍ عِنۡدِیۡ ؕ اَوَ لَمۡ یَعۡلَمۡ اَنَّ اللّٰہَ قَدۡ اَہۡلَکَ مِنۡ قَبۡلِہٖ مِنَ الۡقُرُوۡنِ مَنۡ ہُوَ اَشَدُّ مِنۡہُ قُوَّۃً وَّ اَکۡثَرُ جَمۡعًا ؕ وَ لَا یُسۡـَٔلُ عَنۡ ذُنُوۡبِہِمُ الۡمُجۡرِمُوۡنَ ﴿۷۸﴾
কানযুল ঈমান
৭৮. সে বললো, ‘এ তো আমি এক জ্ঞান থেকে লাভ করেছি যা আমার নিকট রয়েছে’। এবং তার কি এ কথা জানা নেই যে, আল্লাহ্ তার পূর্বে ওই সব মানবগোষ্ঠীকে ধ্বংস করেছেন যাদের ক্ষমতা তার চেয়ে প্রবল ছিলো এবং সম্পদ তার চেয়ে অধিক? এবং অপরাধীদেরকে তাদের পাপগুলো সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে না।
ইরফানুল কুরআন
৭৮. সে বললো, ‘(আমি এ সম্পদ সমাজ এবং জনসাধারণের কল্যাণে কেন ব্যয় করবো?) আমি তো আমার (পেশাগত) অভিজ্ঞতা ও দক্ষতায় এ সম্পদ প্রাপ্ত হয়েছি।’ সে কি জানতো না যে, আল্লাহ্ বাস্তবেই এর পূর্বে অনেক জাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছেন যারা শক্তিতে ছিল তার চেয়েও প্রবল এবং (ধন-সম্পদ ও জনশক্তি) সংগ্রহে ছিল আরো অধিক প্রাচুর্যশালী? আর (ধ্বংসের মুহূর্তে) অপরাধীদেরকে তাদের অপরাধ সম্পর্কে (অধিক যাচাই-বাচাই বা কোনো অযুহাত এবং কারণ) জিজ্ঞাসা করা হয় না।
فَخَرَجَ عَلٰی قَوۡمِہٖ فِیۡ زِیۡنَتِہٖ ؕ قَالَ الَّذِیۡنَ یُرِیۡدُوۡنَ الۡحَیٰوۃَ الدُّنۡیَا یٰلَیۡتَ لَنَا مِثۡلَ مَاۤ اُوۡتِیَ قَارُوۡنُ ۙ اِنَّہٗ لَذُوۡ حَظٍّ عَظِیۡمٍ ﴿۷۹﴾
কানযুল ঈমান
৭৯. অতঃপর আপন সম্প্রদায়ের সম্মুখে উপস্থিত হলো নিজ জাকজমকের মধ্যে, বললো ওই সব লোক, যারা পার্থিব জীবন চায়, ‘হায়, কোন মতে আমরাও যদি তেমনি পেতাম যেমন পেয়েছে কারূন! নিশ্চয় তার বড় সৌভাগ্য!’
ইরফানুল কুরআন
৭৯. অতঃপর সে তার সম্প্রদায়ের সম্মুখে (পূর্ণরূপে) সুসজ্জিত ও অলঙ্কৃত হয়ে উপস্থিত হলো। (তার বাহ্যিক শান-শওকত দেখে) যারা পার্থিব জীবনের আকাঙ্ক্ষী তারা বলতে লাগলো, ‘হায়! কারূনকে যা দেয়া হয়েছে আমাদেরও যদি এমন (সম্পদ ও ভোগ্যসামগ্রী) থাকতো! প্রকৃতই সে বড় সৌভাগ্যের অধিকারী।’
وَ قَالَ الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡعِلۡمَ وَیۡلَکُمۡ ثَوَابُ اللّٰہِ خَیۡرٌ لِّمَنۡ اٰمَنَ وَ عَمِلَ صَالِحًا ۚ وَ لَا یُلَقّٰہَاۤ اِلَّا الصّٰبِرُوۡنَ ﴿۸۰﴾
কানযুল ঈমান
৮০. এবং বললো ওই সব লোক যাদেরকে জ্ঞান প্রদান করা হয়েছে, ‘তোমাদের ধ্বংস হোক! আল্লাহ্র পুরস্কার উত্তম ওই ব্যক্তির জন্য, যে ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করে; আর এটা তারাই পায়, যারা ধৈর্যশীল’।
ইরফানুল কুরআন
৮০. আর (অপরদিকে) যাদেরকে (সত্য) জ্ঞান দেয়া হয়েছিল তারা বলে উঠলো, ‘তোমাদের জন্যে আফসোস! আল্লাহ্র পুরস্কার সে ব্যক্তির জন্যে (এ সম্পদ ও সৌন্দর্য্য থেকে অধিক) উত্তম যে ঈমান এনেছে এবং নেক কাজ করেছে। কিন্তু এ (প্রতিদান ও সাওয়াব) ধৈর্যধারণকারী ব্যতীত অন্যকে দেয়া হবে না।’
فَخَسَفۡنَا بِہٖ وَ بِدَارِہِ الۡاَرۡضَ ۟ فَمَا کَانَ لَہٗ مِنۡ فِئَۃٍ یَّنۡصُرُوۡنَہٗ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ ٭ وَ مَا کَانَ مِنَ الۡمُنۡتَصِرِیۡنَ ﴿۸۱﴾
কানযুল ঈমান
৮১. অতঃপর আমি তাকে এবং তার প্রাসাদকে ভূ-গর্ভে ধ্বসিয়ে দিলাম, অতঃপর তার নিকট কোন মানব গোষ্ঠী ছিলো না, যে আল্লাহ্ থেকে বাচানোর জন্য তার সাহায্য করতো; এবং না সে তার বদলা নিতে পারতো।
ইরফানুল কুরআন
৮১. অতঃপর আমরা একে (কারূনকে) এবং তার প্রাসাদকে ভূগর্ভস্থ করলাম, সুতরাং আল্লাহ্ ব্যতীত তার সপক্ষে (এমন) কোনো দল ছিল না যে তাকে (শাস্তি থেকে বাঁচানোর ক্ষেত্রে) সাহায্য করতে পারতো। আর সে নিজেও আত্মরক্ষায় সক্ষম ছিল না।
وَ اَصۡبَحَ الَّذِیۡنَ تَمَنَّوۡا مَکَانَہٗ بِالۡاَمۡسِ یَقُوۡلُوۡنَ وَیۡکَاَنَّ اللّٰہَ یَبۡسُطُ الرِّزۡقَ لِمَنۡ یَّشَآءُ مِنۡ عِبَادِہٖ وَ یَقۡدِرُ ۚ لَوۡ لَاۤ اَنۡ مَّنَّ اللّٰہُ عَلَیۡنَا لَخَسَفَ بِنَا ؕ وَیۡکَاَنَّہٗ لَا یُفۡلِحُ الۡکٰفِرُوۡنَ ﴿۸۲﴾
কানযুল ঈমান
৮২. এবং গতকাল যারা তার মতো মর্যাদা কামনা করেছিলো সকালে তারা বলতে লাগলো, ‘আশ্চর্যজনক কথা! আল্লাহ্ রিয্ক প্রশস্ত করেন আপন বান্দাদের মধ্যে যার জন্য চান এবং সংকুচিত করেন। যদি আল্লাহ্ আমাদের উপর অনুগ্রহ না করতেন, তবে আমাদেরকেও ধ্বসিয়ে ফেলতেন। হে আশ্চর্য! কাফিরদের জন্য সাফল্য নেই’।
ইরফানুল কুরআন
৮২. আর যারা কাল তার অবস্থান ও মর্যাদা কামনা করছিল আজ তারা (অনুতপ্ত হয়ে) বলতে লাগলো, ‘কতো আশ্চর্য! আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্যে ইচ্ছা তার রিযিক বর্ধিত করেন এবং (যার জন্যে ইচ্ছা) সংকুচিত করেন। যদি আল্লাহ্ আমাদের উপর অনুগ্রহ না করতেন তবে আমাদেরকে(ও) ধ্বসিয়ে দিতেন। হায় আশ্চর্য! (এখন বুঝা গেল) কাফেরেরা নিষ্কৃতি পায় না।’
تِلۡکَ الدَّارُ الۡاٰخِرَۃُ نَجۡعَلُہَا لِلَّذِیۡنَ لَا یُرِیۡدُوۡنَ عُلُوًّا فِی الۡاَرۡضِ وَ لَا فَسَادًا ؕ وَ الۡعَاقِبَۃُ لِلۡمُتَّقِیۡنَ ﴿۸۳﴾
কানযুল ঈমান
৮৩. এটা আখিরাতের আবাস, আমি তাদেরই জন্য নির্ধারিত করি যারা ভূ-পৃষ্ঠে অহঙ্কার চায় না এবং না অশান্তি; আর পরকালের শুভ পরিণাম খোদাভীরুদেরই।
ইরফানুল কুরআন
৮৩. (এটি) সে পরকালের গৃহ যা আমরা সেসব লোকদের জন্যে নির্ধারণ করেছি যারা না পৃথিবীতে সীমালঙ্ঘন ও অহঙ্কার করতে চায় আর না বিপর্যয় সৃষ্টি করতে চায়। আর শুভ পরিণাম নেক্কারদের জন্যে।
مَنۡ جَآءَ بِالۡحَسَنَۃِ فَلَہٗ خَیۡرٌ مِّنۡہَا ۚ وَ مَنۡ جَآءَ بِالسَّیِّئَۃِ فَلَا یُجۡزَی الَّذِیۡنَ عَمِلُوا السَّیِّاٰتِ اِلَّا مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۸۴﴾
কানযুল ঈমান
৮৪. যে সৎকর্ম করেছে তার জন্য তা অপেক্ষা উত্তম রয়েছে; এবং যে মন্দকর্ম করেছে, যারা মন্দ কাজ করে তারা তার বদলা পাবে না, কিন্তু যতটুকু করেছিলো।
ইরফানুল কুরআন
৮৪. যে ব্যক্তি সৎকর্ম নিয়ে আগমন করবে তার জন্যে তার চেয়েও উত্তম (প্রতিদান) রয়েছে। আর যে ব্যক্তি মন্দকর্ম নিয়ে আগমন করবে, তবে মন্দকর্ম সম্পাদনকারীকে কোনো প্রতিদান দেয়া হবে না; কেবল সে যতটুকু করতো ততটুকু ব্যতীত।
اِنَّ الَّذِیۡ فَرَضَ عَلَیۡکَ الۡقُرۡاٰنَ لَرَآدُّکَ اِلٰی مَعَادٍ ؕ قُلۡ رَّبِّیۡۤ اَعۡلَمُ مَنۡ جَآءَ بِالۡہُدٰی وَ مَنۡ ہُوَ فِیۡ ضَلٰلٍ مُّبِیۡنٍ ﴿۸۵﴾
কানযুল ঈমান
৮৫. নিশ্চয় যিনি আপনার উপর ক্বোরআনকে ফরয (অপরিহার্য) করেছেন তিনি আপনাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন যেখানে আপনি ফিরে যেতে চান! আপনি বলুন, ‘আমার রব ভালো জানেন তাকে, যিনি হিদায়ত এনেছে এবং (তাকেও) যে স্পষ্ট ভ্রান্তিতে রয়েছে’।
ইরফানুল কুরআন
৮৫. অবশ্যই যে সত্তা (প্রতিপালক) আপনার জন্যে কুরআন (শিক্ষা দেয়া, প্রচার ও প্রতিষ্ঠা করা) আবশ্যক করেছেন, নি:সন্দেহে তিনি আপনাকে (আপনার বাসনা অনুযায়ী) প্রত্যাবর্তন স্থলে (অর্থাৎ মক্কা অথবা পরকালে বিজয় ও সফলতার মাধ্যমে) ফিরিয়ে আনবেন। বলে দিন, ‘আমার প্রতিপালক খুব ভালোভাবে জানেন কে হেদায়াত নিয়ে এসেছে এবং কে প্রকাশ্য গোমরাহীতে নিমজ্জিত।’** এ আয়াত মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত করে যাওয়ার পথে জুহফাহ নামক স্থানে অবতীর্ণ হয়। আর এ অঙ্গীকার মক্কা বিজয়ের দিন পূর্ণ হয়।
وَ مَا کُنۡتَ تَرۡجُوۡۤا اَنۡ یُّلۡقٰۤی اِلَیۡکَ الۡکِتٰبُ اِلَّا رَحۡمَۃً مِّنۡ رَّبِّکَ فَلَا تَکُوۡنَنَّ ظَہِیۡرًا لِّلۡکٰفِرِیۡنَ ﴿۫۸۶﴾
কানযুল ঈমান
৮৬. এবং আপনি আশা করতেন না যে, কিতাব আপনার প্রতি প্রেরণ করা হবে। হাঁ, আপনার রব অনুগ্রহ করেছেন; সুতরাং কখনো কাফিরদের সহায়তা করবেন না।
ইরফানুল কুরআন
৮৬. (হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের মাধ্যমে উম্মতে মুহাম্মদীকে সম্বোধন,) আর আপনি আশা করেন নি যে, আপনার প্রতি (এ) কিতাব অবতীর্ণ হবে। এ কেবল আপনার প্রতিপালকের অনুগ্রহ। কাজেই আপনি কাফেরদের সাহায্যকারী হবেন না।
وَ لَا یَصُدُّنَّکَ عَنۡ اٰیٰتِ اللّٰہِ بَعۡدَ اِذۡ اُنۡزِلَتۡ اِلَیۡکَ وَ ادۡعُ اِلٰی رَبِّکَ وَ لَا تَکُوۡنَنَّ مِنَ الۡمُشۡرِکِیۡنَ ﴿ۚ۸۷﴾
কানযুল ঈমান
৮৭. এবং কখনো তারা যেন আপনাকে আল্লাহ্র আয়াতসমূহ থেকে বিমুখ না রাখে এরপর যে, সেগুলো আপনার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে; এবং আপনার রবের প্রতি আহ্বান করুন, আর কিছুতেই যেন অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্ত না হোন।
ইরফানুল কুরআন
৮৭. আর এরা (এ কাফেরেরা) যেন কখনোই আপনাকে আল্লাহ্র আয়াতসমূহ (প্রচার ও আমল করা) থেকে বিমুখ না করে, আপনার প্রতি তা অবতীর্ণ হবার পর। আর আপনি (লোকদেরকে) আপনার প্রতিপালকের দিকে আহ্বান করতে থাকুন। আর কিছুতেই মুশরিকদের মধ্যে গণ্য হবেন না।
وَ لَا تَدۡعُ مَعَ اللّٰہِ اِلٰـہًا اٰخَرَ ۘ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا ہُوَ ۟ کُلُّ شَیۡءٍ ہَالِکٌ اِلَّا وَجۡہَہٗ ؕ لَہُ الۡحُکۡمُ وَ اِلَیۡہِ تُرۡجَعُوۡنَ ﴿۸۸﴾
কানযুল ঈমান
৮৮. এবং আল্লাহ্র সাথে অন্য উপাস্যের পূজা করো না’ তিনি ব্যতীত অন্য কোন খোদা নেই; প্রত্যেক কিছু ধ্বংসশীল তারই সত্তা ব্যতীত। নির্দেশ তারই এবং তারই প্রতি ফিরে যাবে।
ইরফানুল কুরআন
৮৮. আর তোমরা আল্লাহ্র সাথে অন্যান্য (মনগড়া) উপাস্যকে ডেকো না। তিনি ব্যতীত অন্য কেউ ইবাদতের যোগ্য নেই। তাঁর সত্তা ব্যতীত সবকিছুই ধ্বংসশীল। হুকুম বা বিধান তাঁরই এবং তোমরা (সবাই) তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে।