بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
কানযুল ঈমান
০. আল্লাহ্র নামে আরম্ভ, যিনি পরম দয়ালু, করুণাময় (১)
ইরফানুল কুরআন
০. আল্লাহর নামে শুরু, যিনি পরম করুণাময়, সতত অসীম দয়ালু।
وَ النَّجۡمِ اِذَا ہَوٰی ۙ﴿۱﴾
কানযুল ঈমান
১. ওই প্রিয় উজ্জ্বল নক্ষত্র মুহাম্মদের শপথ, যখন তিনি মি’রাজ থেকে অবতরণ করেন;
ইরফানুল কুরআন
১. শপথ উজ্জ্বল তারকা (মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-এঁর যখন তিনি (মিরাজ রজনীতে এক মুহূর্তে ঊর্ধ্বগমনের পর) নিম্নে অবতরণ করেন।
مَا ضَلَّ صَاحِبُکُمۡ وَ مَا غَوٰی ۚ﴿۲﴾
কানযুল ঈমান
২. তোমাদের ‘সাহিব’ না পথভ্রষ্ট হয়েছেন, না বিপথে চলেছেন।
ইরফানুল কুরআন
২. তোমাদেরকে (স্বীয়) সাহচর্য্য প্রদানকারী (অর্থাৎ তোমাদেরকে স্বীয় সাহচর্য্যের অনুগ্রহ দ্বারা সাহাবীর মর্যাদা প্রদানকারী রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম কখনো) পথ ভুলেননি এবং তিনি (কখনো) সৎপথ থেকে বিচ্যুতও হননি।
وَ مَا یَنۡطِقُ عَنِ الۡہَوٰی ؕ﴿۳﴾
কানযুল ঈমান
৩. এবং তিনি কোন কথা নিজ প্রবৃত্তি থেকে বলেন না।
ইরফানুল কুরআন
৩. আর তিনি (নিজ) প্রবৃত্তির তাড়নায়ও কথা বলেন না।
اِنۡ ہُوَ اِلَّا وَحۡیٌ یُّوۡحٰی ۙ﴿۴﴾
কানযুল ঈমান
৪. তা তো ওহীই, যার তার প্রতি (নাযিল) করা হয়।
ইরফানুল কুরআন
৪. তাঁর কথাই ওহী, যা তাঁর উপর প্রত্যাদেশ করা হয়।
عَلَّمَہٗ شَدِیۡدُ الۡقُوٰی ۙ﴿۵﴾
কানযুল ঈমান
৫. তাকে শিক্ষা দিয়েছেন প্রবল শক্তিসমূহের অধিকারী,
ইরফানুল কুরআন
৫. তাঁকে প্রবল শক্তিশালী (প্রতিপালক প্রত্যক্ষভাবে পূর্ণাঙ্গ) জ্ঞান দান করে ধন্য করেছেন,
ذُوۡ مِرَّۃٍ ؕ فَاسۡتَوٰی ۙ﴿۶﴾
কানযুল ঈমান
৬. শক্তিমান। অতঃপর ওই জ্যোতি ইচ্ছা করলেন;
ইরফানুল কুরআন
৬. যিনি পরম সৌন্দর্যময়, অতঃপর (সৌন্দর্য্যের প্রবাহে নিজেকে) প্রকাশ করার ইচ্ছা পোষণ করলেন।
وَ ہُوَ بِالۡاُفُقِ الۡاَعۡلٰی ؕ﴿۷﴾
কানযুল ঈমান
৭. আর ইনি উচ্চাকাশের সর্বোচ্চ দিগন্তে ছিলেন।
ইরফানুল কুরআন
৭. আর তিনি (মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম মিরাজ রজনীতে বস্তুজগতের) সর্বোচ্চ দিগন্তে ছিলেন (অর্থাৎ সৃষ্টিজগতের চূড়ান্ত সীমানায়)।
ثُمَّ دَنَا فَتَدَلّٰی ۙ﴿۸﴾
কানযুল ঈমান
৮. অতঃপর ওই জ্যোতি নিকটবর্তী হলো। অতঃপর খুব নেমে আসলো।
ইরফানুল কুরআন
৮. অতঃপর তিনি (অর্থাৎ মহিমান্বিত প্রতিপালক স্বীয় হাবীব মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের) নিকটবর্তী হলেন, আরো অধিক নিকটবর্তী।*
* এই অর্থ ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি ‘আল-জামিউস সহীহ’ গ্রন্থে হযরত আনাছ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন। এছাড়াও হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস, ইমাম হাসান বসরী, ইমাম জাফর সাদিক, মুহাম্মদ বিন কাব আল-কুরাযী আত তাবিয়ী, দ্বাহ্হাক্ব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম এবং অন্যান্য আরো কতিপয় তাফসীরের ইমামের বক্তব্যও এরূপ।
فَکَانَ قَابَ قَوۡسَیۡنِ اَوۡ اَدۡنٰی ۚ﴿۹﴾
কানযুল ঈমান
৯. অতঃপর ওই জ্যোতি ও এ মাহবূবের মধ্যে দু’হাতের ব্যবধান রইলো, বরং তদপেক্ষাও কম।
ইরফানুল কুরআন
৯. ফলে (উন্মোচিত পর্দায় আল্লাহ তা’আলা এবং সম্মানিত হাবীরের মাঝে) দুই ধনুকের ব্যবধান রইলো কিংবা (চূড়ান্ত নৈকট্য) তার চেয়েও কম।
فَاَوۡحٰۤی اِلٰی عَبۡدِہٖ مَاۤ اَوۡحٰی ﴿ؕ۱۰﴾
কানযুল ঈমান
১০. তখন ওহী করলেন আপন বান্দার প্রতি যা ওহী করার ছিলো।
ইরফানুল কুরআন
১০. অতঃপর (এ বিশেষ নৈকট্যের মাকাম এবং মিলিত হওয়ার মাঝে) তিনি (অর্থাৎ আল্লাহ তা’আলা) স্বীয় (প্রিয়) বান্দার প্রতি ওহী প্রেরণ করলেন, যা(ই) ওহী করার।
مَا کَذَبَ الۡفُؤَادُ مَا رَاٰی ﴿۱۱﴾
কানযুল ঈমান
১১. অন্তর মিথ্যা বলে নি যা দেখেছে।
ইরফানুল কুরআন
১১. (তাঁর) অন্তর এর অন্যথা জানেনি, যা (তাঁর) চক্ষু দেখেছে।
اَفَتُمٰرُوۡنَہٗ عَلٰی مَا یَرٰی ﴿۱۲﴾
কানযুল ঈমান
১২. তবে কি তোমরা তার সাথে তিনি যা দেখেছেন তাতে বিতর্ক করছো?
ইরফানুল কুরআন
১২. তোমরা কি এ ব্যাপারে তাঁর সাথে বিবাদে লিপ্ত হবে যা তিনি দেখেছেন?
وَ لَقَدۡ رَاٰہُ نَزۡلَۃً اُخۡرٰی ﴿ۙ۱۳﴾
কানযুল ঈমান
১৩. এবং তিনি তো ওই জ্যোতি দু’বার দেখেছেন;
ইরফানুল কুরআন
১৩. আর অবশ্যই তিনি তো তাঁকে (পর্দা উন্মোচিত আল্লাহ্ তা’আলাকে) আরেকবার দেখেছিলেন। (আর তোমরা তার একবার দেখা নিয়েই বিবাদ করছো!)
عِنۡدَ سِدۡرَۃِ الۡمُنۡتَہٰی ﴿۱۴﴾
কানযুল ঈমান
১৪. সিদরাতুল মুন্তাহার নিকটে।
ইরফানুল কুরআন
১৪. প্রান্তবর্তী বৃক্ষ সিদরাতুল মুনতাহার নিকটে,
عِنۡدَہَا جَنَّۃُ الۡمَاۡوٰی ﴿ؕ۱۵﴾
কানযুল ঈমান
১৫. সেটার নিকট রয়েছে ‘জান্নাতুল মা’ওয়া।
ইরফানুল কুরআন
১৫. এর নিকট রয়েছে জান্নাতুল মাওয়া।
اِذۡ یَغۡشَی السِّدۡرَۃَ مَا یَغۡشٰی ﴿ۙ۱۶﴾
কানযুল ঈমান
১৬. যখন সিদরার উপর আচ্ছন্ন করছিলো যা আচ্ছন্ন করছিলো;
ইরফানুল কুরআন
১৬. যখন নূরে হক্ব বা আল্লাহ তা’আলার নূরের বিচ্ছুরণ সিদরাহ (মুন্তাহাকে)ও ঢেকে ফেলেছিল, যা ছিল এর দ্বারা আচ্ছাদিত।*
* এ অর্থটিও ইমাম হাসান বসরী ও অন্যান্য ইমামগণের বক্তব্যের উপর ভিত্তি করে।
مَا زَاغَ الۡبَصَرُ وَ مَا طَغٰی ﴿۱۷﴾
কানযুল ঈমান
১৭. চক্ষু না কোন দিকে ফিরেছে, না সীমাতিক্রম করেছে।
ইরফানুল কুরআন
১৭. তাঁর দৃষ্টিভ্রম হয়নি, আর সীমালঙ্ঘনও করেননি। (যাঁর দিকে তাকানোর তিনি তাঁর দিকেই তাকিয়ে ছিলেন।)
لَقَدۡ رَاٰی مِنۡ اٰیٰتِ رَبِّہِ الۡکُبۡرٰی ﴿۱۸﴾
কানযুল ঈমান
১৮. নিশ্চয় আপন রবের বহু বড় নিদর্শনাদি দেখেছেন।
ইরফানুল কুরআন
১৮. অবশ্যই তিনি (মিরাজ রজনীতে) স্বীয় প্রতিপালকের মহান নিদর্শনাবলী দেখেছেন।
اَفَرَءَیۡتُمُ اللّٰتَ وَ الۡعُزّٰی ﴿ۙ۱۹﴾
কানযুল ঈমান
১৯. তবে কি তোমরা দেখেছো লা-ত ও ওয্যা
ইরফানুল কুরআন
১৯. তোমরা কি ভেবে দেখেছো (মিথ্যা দেবতা) লাত ও উয্যার ব্যাপারে?
وَ مَنٰوۃَ الثَّالِثَۃَ الۡاُخۡرٰی ﴿۲۰﴾
কানযুল ঈমান
২০. এবং ওই তৃতীয় মানাতকে?
ইরফানুল কুরআন
২০. আর তৃতীয় আরেক (দেবী) মানাত সম্পর্কেও (ভেবে দেখেছো? তোমরা কি এদেরকে আল্লাহ্র কন্যা সাব্যস্ত করেছো?)
اَلَکُمُ الذَّکَرُ وَ لَہُ الۡاُنۡثٰی ﴿۲۱﴾
কানযুল ঈমান
২১. তোমাদের জন্য কি পুত্র, আর তার জন্য কি কন্যা?
ইরফানুল কুরআন
২১. (হে মুশরিকেরা!) তোমাদের জন্যে কি পুত্রসন্তান, আর তাঁর (আল্লাহ্র) জন্যে কন্যাসন্তান?
تِلۡکَ اِذًا قِسۡمَۃٌ ضِیۡزٰی ﴿۲۲﴾
কানযুল ঈমান
২২. তখন তো এটা জঘন্য অসঙ্গত বন্টন!
ইরফানুল কুরআন
২২. (যদি তোমাদের ধারণা সঠিক হয়) তবে তো এ বড়ই অন্যায় বণ্টন।
اِنۡ ہِیَ اِلَّاۤ اَسۡمَآءٌ سَمَّیۡتُمُوۡہَاۤ اَنۡتُمۡ وَ اٰبَآؤُکُمۡ مَّاۤ اَنۡزَلَ اللّٰہُ بِہَا مِنۡ سُلۡطٰنٍ ؕ اِنۡ یَّتَّبِعُوۡنَ اِلَّا الظَّنَّ وَ مَا تَہۡوَی الۡاَنۡفُسُ ۚ وَ لَقَدۡ جَآءَہُمۡ مِّنۡ رَّبِّہِمُ الۡہُدٰی ﴿ؕ۲۳﴾
কানযুল ঈমান
২৩. সেগুলো তো নয়, কিন্তু কিছু নাম, যেগুলো তোমরা ও তোমাদের পিতৃপুরুষগণ রেখে ফেলেছো। আল্লাহ্ সেগুলোর পক্ষে কোন সনদ অবতীর্ণ করেন নি। তারা তো নিছক কল্পনা ও প্রবৃত্তিরই অনুসরণ করছে। অথচ নিশ্চয় তাদের নিকট তাদের রবের নিকট থেকে হিদায়ত এসেছে।
ইরফানুল কুরআন
২৩. কিন্তু (প্রকৃত ব্যাপার এই যে, এসব মূর্তি) এগুলো কতক নাম মাত্র যা রেখেছো তোমরা এবং তোমাদের পিতৃপুরুষগণ। আল্লাহ্ এর সমর্থনে কোনো দলিল প্রেরণ করেননি। এরা কেবল অনুমান এবং নিজেদের কুপ্রবৃত্তিরই অনুসরণ করে, অথচ তাদের নিকট তাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে হেদায়াত এসেছে।
اَمۡ لِلۡاِنۡسَانِ مَا تَمَنّٰی ﴿۫ۖ۲۴﴾
কানযুল ঈমান
২৪. মানুষ কি পেয়ে যাবে যা কিছুর সে কামনা করবে?
ইরফানুল কুরআন
২৪. মানুষের কি (সব কিছু) রয়েছে যা তারা আকাঙ্ক্ষা করে?
فَلِلّٰہِ الۡاٰخِرَۃُ وَ الۡاُوۡلٰی ﴿۲۵﴾
কানযুল ঈমান
২৫. সুতরাং আখিরাত ও দুনিয়া সবকিছুর মালিক একমাত্র আল্লাহ্।
ইরফানুল কুরআন
২৫. সুতরাং পরকাল এবং ইহকালের মালিক তো আল্লাহ্ই।
وَ کَمۡ مِّنۡ مَّلَکٍ فِی السَّمٰوٰتِ لَا تُغۡنِیۡ شَفَاعَتُہُمۡ شَیۡئًا اِلَّا مِنۡۢ بَعۡدِ اَنۡ یَّاۡذَنَ اللّٰہُ لِمَنۡ یَّشَآءُ وَ یَرۡضٰی ﴿۲۶﴾
কানযুল ঈমান
২৬. এবং কত ফিরিশ্তাই রয়েছে আস্মানসমূহে যে, তাদের সুপারিশ কোন কাজে আসে না, কিন্তু যখন আল্লাহ্ অনুমতি দিয়ে দেবেন, যার পক্ষে চান ও পছন্দ করেন।
ইরফানুল কুরআন
২৬. আর আকাশে কতো ফেরেশতা রয়েছে (কাফের এবং মুশরিকরা তাদের ইবাদত করে এবং তাদের শাফায়াতের কামনা করে, অথচ) যাদের শাফায়াত কোনো কাজে আসবে না। তবে এরপরও, আল্লাহ্ যার জন্যে চান এবং পছন্দ করেন, তার জন্যে অনুমতি দেন।
اِنَّ الَّذِیۡنَ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ بِالۡاٰخِرَۃِ لَیُسَمُّوۡنَ الۡمَلٰٓئِکَۃَ تَسۡمِیَۃَ الۡاُنۡثٰی ﴿۲۷﴾
কানযুল ঈমান
২৭. নিশ্চয় ওই সব লোক, যারা পরকালের উপর ঈমান রাখে না, তারা ফিরিশ্তাদের নাম নারীদের মতোই রাখে।
ইরফানুল কুরআন
২৭. নিশ্চয়ই যারা পরকালে বিশ্বাস রাখে না তারাই ফেরেশতাদেরকে নারীবাচক নাম দিয়ে থাকে।
وَ مَا لَہُمۡ بِہٖ مِنۡ عِلۡمٍ ؕ اِنۡ یَّتَّبِعُوۡنَ اِلَّا الظَّنَّ ۚ وَ اِنَّ الظَّنَّ لَا یُغۡنِیۡ مِنَ الۡحَقِّ شَیۡئًا ﴿ۚ۲۸﴾
কানযুল ঈমান
২৮. এবং তাদের সে সম্পর্কে কোন খবর নেই। তারা তো নিছক অনুমানের পেছনে পড়েছে এবং নিশ্চয় অনুমান নিশ্চিত বিশ্বাসের স্থলে কোন কাজে আসে না।
ইরফানুল কুরআন
২৮. অথচ তাদের এ বিষয়ে কোনো জ্ঞান নেই, তারা কেবল অনুমানেরই অনুসরণ করে। আর নিশ্চয়ই প্রত্যয়ের বিপরীতে অনুমান কোনো কাজে আসে না।
فَاَعۡرِضۡ عَنۡ مَّنۡ تَوَلّٰی ۬ۙ عَنۡ ذِکۡرِنَا وَ لَمۡ یُرِدۡ اِلَّا الۡحَیٰوۃَ الدُّنۡیَا ﴿ؕ۲۹﴾
কানযুল ঈমান
২৯. সুতরাং আপনি তারই দিকে থেকে মুখ ফিরিয়ে নিন, যে আমার স্মরণ থেকে ফিরে গেছে। এবং সে তো কেবল পার্থিব জীবনই চায়।
ইরফানুল কুরআন
২৯. সুতরাং তার থেকে আপনার মনোযোগ ফিরিয়ে নিন, যে আমাদের স্মরণে বিমুখ এবং কেবল পার্থিব জীবনই কামনা করে।
ذٰلِکَ مَبۡلَغُہُمۡ مِّنَ الۡعِلۡمِ ؕ اِنَّ رَبَّکَ ہُوَ اَعۡلَمُ بِمَنۡ ضَلَّ عَنۡ سَبِیۡلِہٖ ۙ وَ ہُوَ اَعۡلَمُ بِمَنِ اہۡتَدٰی ﴿۳۰﴾
কানযুল ঈমান
৩০. এখান পর্যন্তই তাদের জ্ঞানের দৌড়। নিশ্চয় আপনার রব খুব জানেন তারই সম্পর্কে, যে তার পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে এবং তিনি ভালভাবে জানেন তাকে, যে সঠিক পথ পেয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৩০. এদের জ্ঞানের পরিধি এ পর্যন্তই। নিশ্চয়ই আপনার প্রতিপালক তাকে ভালোভাবেই জানেন যে তার পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে, এবং তাকেও ভালোভাবেই জানেন যে সুপথপ্রাপ্ত হয়েছে।
وَ لِلّٰہِ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الۡاَرۡضِ ۙ لِیَجۡزِیَ الَّذِیۡنَ اَسَآءُوۡا بِمَا عَمِلُوۡا وَ یَجۡزِیَ الَّذِیۡنَ اَحۡسَنُوۡا بِالۡحُسۡنٰی ﴿ۚ۳۱﴾
কানযুল ঈমান
৩১. এবং আল্লাহ্রই যা কিছু আস্মানসমূহে রয়েছে এবং যা কিছু যমীনে রয়েছে; যাতে দুষ্কৃতকারীদেরকে তাদের কৃতকর্মের বদলা দেন এবং সৎকর্মপরায়ণদেরকে অত্যন্ত উত্তম প্রতিদান প্রদান করেন।
ইরফানুল কুরআন
৩১. আর সব আল্লাহ্রই যা কিছু আকাশমন্ডলীতে রয়েছে এবং যা কিছু পৃথিবীতে রয়েছে, যাতে যারা মন্দ করে তাদেরকে তিনি দেন তাদের কর্মের প্রতিফল এবং যারা সৎকর্ম করে তাদেরকে তিনি দেন উত্তম প্রতিদান।
اَلَّذِیۡنَ یَجۡتَنِبُوۡنَ کَبٰٓئِرَ الۡاِثۡمِ وَ الۡفَوَاحِشَ اِلَّا اللَّمَمَ ؕ اِنَّ رَبَّکَ وَاسِعُ الۡمَغۡفِرَۃِ ؕ ہُوَ اَعۡلَمُ بِکُمۡ اِذۡ اَنۡشَاَکُمۡ مِّنَ الۡاَرۡضِ وَ اِذۡ اَنۡتُمۡ اَجِنَّۃٌ فِیۡ بُطُوۡنِ اُمَّہٰتِکُمۡ ۚ فَلَا تُزَکُّوۡۤا اَنۡفُسَکُمۡ ؕ ہُوَ اَعۡلَمُ بِمَنِ اتَّقٰی ﴿۳۲﴾
কানযুল ঈমান
৩২. ওই সব লোক, যারা মহাপাপগুলো ও অশ্লীল কার্যকলাপ থেকে বেচে থাকে, কিন্তু এতটুকুই যে, পাপের নিকটে গিয়েছে ও বিরত হয়েছে, নিশ্চয় আপনার রবের ক্ষমা প্রশস্ত। তিনি তোমাদেরকে খুব ভালভাবে জানেন। তোমাদেরকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেনে এবং যখন তোমরা তোমাদের মায়ের গর্ভের মধ্যে ভ্রূণরূপে ছিলে। সুতরাং নিজেরা নিজেদেরকে পবিত্র পরিচ্ছন্ন বলো না; তিনি ভালভাবে জানেন যারা খোদাভীরু।
ইরফানুল কুরআন
৩২. ছোটোখাটো গোনাহ্ (এবং ত্রুটি) করলেও যারা বড় গোনাহ্ এবং অশ্লীল কার্য থেকে বেঁচে থাকে, নিশ্চয়ই আপনার প্রতিপালক (তাদের জন্যে) ক্ষমায় সুদূর বিস্তৃত। তিনি তোমাদের সম্পর্কে ভালোভাবেই জানেন, যখন তিনি তোমাদের জীবনের সূচনা এবং ক্রমবিকাশ করেছিলেন মৃত্তিকা থেকে এবং যখন তোমরা তোমাদের মায়ের গর্ভে ছিলে ভ্রূণরূপে। অতএব তোমরা নিজেদেরকে অতি পরিচ্ছন্ন ও পবিত্র দাবী করো না। তিনিই ভালো জানেন কে (প্রকৃত) পরহেযগার।
اَفَرَءَیۡتَ الَّذِیۡ تَوَلّٰی ﴿ۙ۳۳﴾
কানযুল ঈমান
৩৩. তবে কি আপনি দেখেছেন তাকে, যে বিমুখ হয়েছে?
ইরফানুল কুরআন
৩৩. আপনি কি তাকে দেখেছেন যে (সত্য থেকে) মুখ ফিরিয়ে নেয়?
وَ اَعۡطٰی قَلِیۡلًا وَّ اَکۡدٰی ﴿۳۴﴾
কানযুল ঈমান
৩৪. এবং সামান্য কিছু দিয়েছে এবং রুখে রেখেছে?
ইরফানুল কুরআন
৩৪. আর সে (সত্যের পথে ধন-সম্পদের) সামান্যই দান করে এবং (পরে হাত) গুটিয়ে রাখে?
اَعِنۡدَہٗ عِلۡمُ الۡغَیۡبِ فَہُوَ یَرٰی ﴿۳۵﴾
কানযুল ঈমান
৩৫. তার নিকট কি অদৃশ্যের জ্ঞান আছে, সুতরাং সে দেখছে?
ইরফানুল কুরআন
৩৫. তার নিকট কি অদৃশ্যের জ্ঞান আছে যে সে দেখছে?
اَمۡ لَمۡ یُنَبَّاۡ بِمَا فِیۡ صُحُفِ مُوۡسٰی ﴿ۙ۳۶﴾
কানযুল ঈমান
৩৬. তার নিকট কি খবর আসে নি সে সম্পর্কে, যা সহীফাগুলোতে (কিতাবে) আছে-মূসার,
ইরফানুল কুরআন
৩৬. তাকে কি অবগত করা হয়নি, যা (উল্লেখ) রয়েছে মুসা (আলাইহিস সালাম)-এঁর সহীফায়?
وَ اِبۡرٰہِیۡمَ الَّذِیۡ وَفّٰۤی ﴿ۙ۳۷﴾
কানযুল ঈমান
৩৭. এবং ইব্রাহীমের, যে বিধানাবলী যথাযথভাবে পালন করেছে?
ইরফানুল কুরআন
৩৭. আর ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)-এঁর (সহীফাতেও) যিনি (আল্লাহ্র সমস্ত বিষয়ের) যথাযথ ও পরিপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছিলেন?
اَلَّا تَزِرُ وَازِرَۃٌ وِّزۡرَ اُخۡرٰی ﴿ۙ۳۸﴾
কানযুল ঈমান
৩৮. যে, কোন বোঝা বহনকারী আত্না অন্য কোন আত্নার বোঝা বহন করে না;
ইরফানুল কুরআন
৩৮. তা এই যে, কোনো বোঝা বহনকারী অপরের (গোনাহের) বোঝা বহন করবে না;
وَ اَنۡ لَّیۡسَ لِلۡاِنۡسَانِ اِلَّا مَا سَعٰی ﴿ۙ۳۹﴾
কানযুল ঈমান
৩৯. এবং এ যে, মানুষ পাবে না, কিন্তু আপন প্রচেষ্টা।
ইরফানুল কুরআন
৩৯. আর এই যে, মানুষের (ন্যায়সংগত) তা-ই মিলবে যার চেষ্টা সে করবে। (দানের ব্যাপারে কারো অধিকার নেই, তা কেবল আল্লাহ্র দয়া ও সন্তুষ্টি, যাকে যে পরিমাণ চান তিনি দান করেন।)
وَ اَنَّ سَعۡیَہٗ سَوۡفَ یُرٰی ﴿۪۴۰﴾
কানযুল ঈমান
৪০. এবং এ যে, তার প্রচেষ্টা শীঘ্রই প্রতিদান দেখা যাবে।
ইরফানুল কুরআন
৪০. আর এরূপ যে, তার সকল প্রচেষ্টা অচিরেই দেখানো হবে (অর্থাৎ প্রকাশ করা হবে)।
ثُمَّ یُجۡزٰىہُ الۡجَزَآءَ الۡاَوۡفٰی ﴿ۙ۴۱﴾
কানযুল ঈমান
৪১. অতঃপর তাকে পূর্ণমাত্রায় প্রতিদান দেওয়া হবে;
ইরফানুল কুরআন
৪১. অতঃপর তাকে (তার সকল প্রচেষ্টার) পূর্ণ প্রতিদান দেয়া হবে;
وَ اَنَّ اِلٰی رَبِّکَ الۡمُنۡتَہٰی ﴿ۙ۴۲﴾
কানযুল ঈমান
৪২. এবং এ যে, নিশ্চয় আপনারই রবের দিকে সমাপ্তি।
ইরফানুল কুরআন
৪২. আর এরূপ যে, (পরিশেষে সবাইকে) আপনার প্রতিপালকেরই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে;
وَ اَنَّہٗ ہُوَ اَضۡحَکَ وَ اَبۡکٰی ﴿ۙ۴۳﴾
কানযুল ঈমান
৪৩. এবং এ যে, তিনিই, যিনি হাসিয়েছেন এবং কাঁদিয়েছেন;
ইরফানুল কুরআন
৪৩. আর এরূপ যে, তিনিই (আনন্দে) হাসান এবং (বিষাদে) কাঁদান;
وَ اَنَّہٗ ہُوَ اَمَاتَ وَ اَحۡیَا ﴿ۙ۴۴﴾
কানযুল ঈমান
৪৪. এবং এ যে, তিনিই, যিনি মৃত্যু ঘটান ও জীবিত করেন;
ইরফানুল কুরআন
৪৪. আর এরূপ যে, তিনিই মৃত্যু ঘটান এবং জীবন দান করেন।
وَ اَنَّہٗ خَلَقَ الزَّوۡجَیۡنِ الذَّکَرَ وَ الۡاُنۡثٰی ﴿ۙ۴۵﴾
কানযুল ঈমান
৪৫. এবং এ যে, তিনিই দু’জোড়া তৈরী করেন- নর ও নারী;
ইরফানুল কুরআন
৪৫. আর এ যে, তিনিই দু’প্রকার সৃষ্টি করেছেন, পুরুষ ও নারী,
مِنۡ نُّطۡفَۃٍ اِذَا تُمۡنٰی ﴿۪۴۶﴾
কানযুল ঈমান
৪৬. বীর্য থেকে, যখন স্থূলিত হয়।
ইরফানুল কুরআন
৪৬. (এক ফোটা জন্মদায়ক) শুক্রবিন্দু থেকে, যখন তা (মায়ের জরায়ুতে) স্খলিত হয়;
وَ اَنَّ عَلَیۡہِ النَّشۡاَۃَ الۡاُخۡرٰی ﴿ۙ۴۷﴾
কানযুল ঈমান
৪৭. এবং এ যে, তাঁরই দায়িত্বে শেষ উত্থান।
ইরফানুল কুরআন
৪৭. আর এরূপ যে, (মৃত্যুর পর) পুনরুত্থান করাও তাঁরই উপর;
وَ اَنَّہٗ ہُوَ اَغۡنٰی وَ اَقۡنٰی ﴿ۙ۴۸﴾
কানযুল ঈমান
৪৮. এবং এ যে, তিনিই অভাবমুক্তি দান করেছেন এবং স্বল্পে তুষ্টি দিয়েছেন,
ইরফানুল কুরআন
৪৮. আর এরূপ যে, তিনিই (প্রয়োজনানুসারে) স্বচ্ছলতা দেন এবং তিনিই (প্রয়োজনের অতিরিক্ত দিয়ে) ভান্ডার ভরে দেন।
وَ اَنَّہٗ ہُوَ رَبُّ الشِّعۡرٰی ﴿ۙ۴۹﴾
কানযুল ঈমান
৪৯. এবং এ যে, তিনিই ‘শি ‘রা’ নক্ষত্রের রব্।
ইরফানুল কুরআন
৪৯. আর এরূপ যে, তিনিই শি’রা নক্ষত্রের প্রতিপালক (জাহেলী যুগে যার পূজা করা হতো) ;
وَ اَنَّہٗۤ اَہۡلَکَ عَادَۨ ا الۡاُوۡلٰی ﴿ۙ۵۰﴾
কানযুল ঈমান
৫০. এবং এ যে, তিনিই প্রথম ‘আদকে ধ্বংস করেছেন,
ইরফানুল কুরআন
৫০. আর এ যে, তিনিই প্রাচীন (সম্প্রদায়) ’আদকে ধ্বংস করেছিলেন,
وَ ثَمُوۡدَا۠ فَمَاۤ اَبۡقٰی ﴿ۙ۵۱﴾
কানযুল ঈমান
৫১. এবং সামূদকে; সুতরাং কাউকেও অবশিষ্ট রাখেন নি;
ইরফানুল কুরআন
৫১. আর সামূদ সম্প্রদায়কেও, অতঃপর (তাদের কাউকেই) বাকি রাখেন নি।
وَ قَوۡمَ نُوۡحٍ مِّنۡ قَبۡلُ ؕ اِنَّہُمۡ کَانُوۡا ہُمۡ اَظۡلَمَ وَ اَطۡغٰی ﴿ؕ۵۲﴾
কানযুল ঈমান
৫২. এবং তাদের পূর্বে নূহের সম্প্রদায়কে। নিশ্চয় তারা তাদের চেয়েও অধিক যালিম ও অবাধ্য ছিলো।
ইরফানুল কুরআন
৫২. আর এর পূর্বে নূহ (আলাইহিস সালাম)-এঁর সম্প্রদায়কেও (ধ্বংস করেছিলেন), নিশ্চয়ই তারা ছিল বড়ই অত্যাচারী ও মাত্রাধিক অবাধ্য।
وَ الۡمُؤۡتَفِکَۃَ اَہۡوٰی ﴿ۙ۵۳﴾
কানযুল ঈমান
৫৩. এবং তিনি পাল্টে যাবার বস্তিকে নিচে পতিত করেছেন;
ইরফানুল কুরআন
৫৩. আর (লূত আলাইহিস সালামের) উল্টানো আবাসভূমিকেও (ঊর্ধ্বে তুলে) তিনিই নিচে নিক্ষেপ করেছিলেন।
فَغَشّٰہَا مَا غَشّٰی ﴿ۚ۵۴﴾
কানযুল ঈমান
৫৪. অতঃপর সেটার উপর আচ্ছন্ন করেছে যা কিছু আচ্ছন্ন করার ছিলো।
ইরফানুল কুরআন
৫৪. অতঃপর তাদেরকে আচ্ছন্ন করেছিল যা আচ্ছন্ন করার (অর্থাৎ তাদের উপর পাথর-বৃষ্টি বর্ষণ করা হয়েছিল)।
فَبِاَیِّ اٰلَآءِ رَبِّکَ تَتَمَارٰی ﴿۵۵﴾
কানযুল ঈমান
৫৫. সুতরাং হে শ্রোতা! আপন রবের কোন অনুগ্রহের মধ্যে সন্দেহ করবে?
ইরফানুল কুরআন
৫৫. সুতরাং (হে মানুষ!) তুমি তোমার প্রতিপালকের কোন্ কোন্ অনুগ্রহ সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করবে?
ہٰذَا نَذِیۡرٌ مِّنَ النُّذُرِ الۡاُوۡلٰی ﴿۵۶﴾
কানযুল ঈমান
৫৬. ইনি একজন সতর্ককারী পূর্ববর্তী সতর্ককারীদের ন্যায়।
ইরফানুল কুরআন
৫৬. এ (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামও) পূর্ববর্তী সতর্ককারীদের মধ্য থেকে একজন সতর্ককারী।
اَزِفَتِ الۡاٰزِفَۃُ ﴿ۚ۵۷﴾
কানযুল ঈমান
৫৭. নিকটে এসেছে নিকটে আগমনকারী।
ইরফানুল কুরআন
৫৭. আগমনকারী (কিয়ামতের মুহূর্ত) অত্যাসন্ন।
لَیۡسَ لَہَا مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ کَاشِفَۃٌ ﴿ؕ۵۸﴾
কানযুল ঈমান
৫৮. আল্লাহ্ ব্যতীত কেউ সেটার প্রকাশকারী নেই।
ইরফানুল কুরআন
৫৮. আল্লাহ্ ব্যতীত কেউ এটি ব্যক্ত (এবং প্রতিষ্ঠিত) করার ক্ষমতা রাখে না।
اَفَمِنۡ ہٰذَا الۡحَدِیۡثِ تَعۡجَبُوۡنَ ﴿ۙ۵۹﴾
কানযুল ঈমান
৫৯. তোমরা কি এ বাণীতে বিস্মিত হও?
ইরফানুল কুরআন
৫৯. অতঃপর তোমরা কি এ কথায় বিস্ময় বোধ করছো?
وَ تَضۡحَکُوۡنَ وَ لَا تَبۡکُوۡنَ ﴿ۙ۶۰﴾
কানযুল ঈমান
৬০. হাসছো এবং কাদছো না?
ইরফানুল কুরআন
৬০. আর তোমরা হাসছো! ক্রন্দন করছো না?
وَ اَنۡتُمۡ سٰمِدُوۡنَ ﴿۶۱﴾
কানযুল ঈমান
৬১. এবং তোমরা খেলাধূলায় মগ্ন আছো!
ইরফানুল কুরআন
৬১. আর তোমরা (অবহেলায়) উদাসীন,
فَاسۡجُدُوۡا لِلّٰہِ وَ اعۡبُدُوۡا ﴿ٛ۶۲﴾
কানযুল ঈমান
৬২. সুতরাং আল্লাহ্র জন্য সাজদা এবং তার বন্দেগী করো।
ইরফানুল কুরআন
৬২. অতএব আল্লাহ্কে সেজদা করো এবং (তাঁর) ইবাদত করো।