بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
কানযুল ঈমান
০. আল্লাহ্র নামে আরম্ভ, যিনি পরম দয়ালু, করুণাময় (১)
ইরফানুল কুরআন
০. আল্লাহর নামে শুরু, যিনি পরম করুণাময়, সতত অসীম দয়ালু।
طٰسٓ ۟ تِلۡکَ اٰیٰتُ الۡقُرۡاٰنِ وَ کِتَابٍ مُّبِیۡنٍ ۙ﴿۱﴾
কানযুল ঈমান
১. ত্বোয়া-সী----ন। এ গুলো আয়াত ক্বোরআন ও উজ্জ্বল কিতাবের;
ইরফানুল কুরআন
১. ত্বোয়া, সীন (প্রকৃত অর্থ আল্লাহ্ এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লামই অধিক অবগত)। এগুলো কুরআন এবং আলোকোজ্জ্বল এক কিতাবের আয়াতসমূহ-
ہُدًی وَّ بُشۡرٰی لِلۡمُؤۡمِنِیۡنَ ۙ﴿۲﴾
কানযুল ঈমান
২. হিদায়ত ও সুসংবাদ ঈমানদারদের জন্য।
ইরফানুল কুরআন
২. (যা) হেদায়াত এবং (সেসব) ঈমানদারদের জন্যে সুসংবাদ;
الَّذِیۡنَ یُقِیۡمُوۡنَ الصَّلٰوۃَ وَ یُؤۡتُوۡنَ الزَّکٰوۃَ وَ ہُمۡ بِالۡاٰخِرَۃِ ہُمۡ یُوۡقِنُوۡنَ ﴿۳﴾
কানযুল ঈমান
৩. ওই সব লোক, যারা নামায ক্বায়েম রাখে ও যাকাত প্রদান করে এবং যারা আখিরাতের উপর দৃঢ় বিশ্বাস রাখে।
ইরফানুল কুরআন
৩. যারা নামায কায়েম করে, যাকাত প্রদান করে এবং তারাই ঐসব লোক যারা পরকালে(ও) বিশ্বাস রাখে।
اِنَّ الَّذِیۡنَ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ بِالۡاٰخِرَۃِ زَیَّنَّا لَہُمۡ اَعۡمَالَہُمۡ فَہُمۡ یَعۡمَہُوۡنَ ؕ﴿۴﴾
কানযুল ঈমান
৪. ওই সব লোক, যারা পরকালের উপর ঈমান আনে না, আমি তাদের কৃতকর্মকে তাদের দৃষ্টিতে সুশোভিত করে দেখিয়েছি, ফলে তারা বিভ্রান্তিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
ইরফানুল কুরআন
৪. নিশ্চয়ই যারা পরকালে বিশ্বাস স্থাপন করে না আমরা তাদের (মন্দ) কাজগুলোকে (তাদের চোখে) সুশোভিত করে দিয়েছি। সুতরাং তারা (গোমরাহীতে) উদভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়ায়।
اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ لَہُمۡ سُوۡٓءُ الۡعَذَابِ وَ ہُمۡ فِی الۡاٰخِرَۃِ ہُمُ الۡاَخۡسَرُوۡنَ ﴿۵﴾
কানযুল ঈমান
৫. এরা তারাই, যাদের জন্য মন্দ শাস্তি রয়েছে এবং এরাই আখিরাতে সর্বাপেক্ষা অধিক ক্ষতিগ্রস্ত।
ইরফানুল কুরআন
৫. তারাই ঐসব লোক যাদের জন্যে রয়েছে নিকৃষ্ট শাস্তি এবং তারাই পরকালে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত।
وَ اِنَّکَ لَتُلَقَّی الۡقُرۡاٰنَ مِنۡ لَّدُنۡ حَکِیۡمٍ عَلِیۡمٍ ﴿۶﴾
কানযুল ঈমান
৬. এবং নিশ্চয় আপনাকে ক্বোরআন শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে প্রজ্ঞাময়, জ্ঞানীর নিকট থেকে।
ইরফানুল কুরআন
৬. আর অবশ্যই আপনাকে (এ) কুরআন শিখিয়ে দেয়া হচ্ছে প্রজ্ঞাময়, মহাজ্ঞানী (প্রতিপালক)-এঁর নিকট থেকে।
اِذۡ قَالَ مُوۡسٰی لِاَہۡلِہٖۤ اِنِّیۡۤ اٰنَسۡتُ نَارًا ؕ سَاٰتِیۡکُمۡ مِّنۡہَا بِخَبَرٍ اَوۡ اٰتِیۡکُمۡ بِشِہَابٍ قَبَسٍ لَّعَلَّکُمۡ تَصۡطَلُوۡنَ ﴿۷﴾
কানযুল ঈমান
৭. যখন মূসা তার পরিবারকে বললো, ‘এক আগুন আমার নজরে পড়েছে, অনতিবিলম্বে আমি তোমাদের নিকট সেটার কোন খবর নিয়ে আসছি, অথবা তা থেকে কোন জ্বলন্ত অঙ্গার নিয়ে আসবো, যাতে তোমরা আগুন পোহাতে পারো’।
ইরফানুল কুরআন
৭. (স্মরণ করুন সে ঘটনা) যখন মূসা (আলাইহিস সালাম) নিজের স্ত্রীকে বললেন, আমি এক আগুন দেখতে পেয়েছি (অথবা আমি আগুনে এক ঝলক ভালোবাসা ও ভালোলাগা অনূভব করেছি)। এ থেকে আমি তাড়াতাড়িই সুসংবাদ নিয়ে আসবো (যার জন্যে আমরা বহুদিন ধরে মরুভুমি ও জঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছি)। অথবা আমি (তোমার জন্যে ওখান থেকেও) কিছু জ্বলন্ত আগুন নিয়ে আসবো যাতে করে তুমিও (এর তাপ থেকে) উষ্ণতা অনুভব করতে পারো।
فَلَمَّا جَآءَہَا نُوۡدِیَ اَنۡۢ بُوۡرِکَ مَنۡ فِی النَّارِ وَ مَنۡ حَوۡلَہَا ؕ وَ سُبۡحٰنَ اللّٰہِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۸﴾
কানযুল ঈমান
৮. অতঃপর যখন আগুনের নিকট এলো তখন ঘোষণা করা হলো যে, ‘কল্যাণ দেওয়া হয়েছে তাকে, যে এ আগুনের আলোময় ভূমিতে রয়েছে, অর্থাৎ মূসা এবং (তাদেরকে) যারা সেটার আশেপাশে রয়েছে অর্থাৎ ফিরিশ্তাগণ এবং পবিত্রতা আল্লাহ্র, যিনি রব সমগ্র জাহানের।
ইরফানুল কুরআন
৮. সুতরাং যখন তিনি এর নিকটবর্তী হলেন, তখন ঘোষণা করা হলো, ’ধন্য তিনি যিনি আগুনে (দ্যুতিময়তায় তাঁর নূরের পর্দা উন্মোচন করলেন) এবং (আরও) যারা এর চারপাশে (আল্লাহ্র নূরের তাজাল্লীর বহিঃপ্রকাশের মাঝে বিদ্যমান)। এবং আল্লাহ্ পবিত্র (আর সাদৃশ্যতা ও শারীরিক প্রকাশের উর্ধ্বে মহিমান্বিত), তিনি সমস্ত জগতের পালনকর্তা।
یٰمُوۡسٰۤی اِنَّہٗۤ اَنَا اللّٰہُ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ ۙ﴿۹﴾
কানযুল ঈমান
৯. হে মূসা! কথা হচ্ছে এ যে, ‘আমিই আল্লাহ্- পরম সম্মানিত, প্রজ্ঞাময়।
ইরফানুল কুরআন
৯. হে মূসা! নিশ্চয়ই এ (জ্যোতি বিচ্ছুরণকারী) সত্তাই আমি আল্লাহ্; যিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
وَ اَلۡقِ عَصَاکَ ؕ فَلَمَّا رَاٰہَا تَہۡتَزُّ کَاَنَّہَا جَآنٌّ وَّلّٰی مُدۡبِرًا وَّ لَمۡ یُعَقِّبۡ ؕ یٰمُوۡسٰی لَا تَخَفۡ ۟ اِنِّیۡ لَا یَخَافُ لَدَیَّ الۡمُرۡسَلُوۡنَ ﴿٭ۖ۱۰﴾
কানযুল ঈমান
১০. এবং আপন লাঠি নিক্ষেপ করো’। অতঃপর যখন মূসা দেখলো সেটা কুটিল গতিতে ছুটাছুটি করছে সাপের ন্যায় তখন সে পেছনের দিকে ফিরে চলে গেলো এবং ফিরেও দেখলো না। আমি বললাম, ‘হে মূসা! ভয় করো না, নিশ্চয় আমার সান্নিধ্যে রসূলগণের ভয় থাকে না।
ইরফানুল কুরআন
১০. আর (হে মূসা!) তোমার লাঠি (ভুমিতে) নিক্ষেপ করো।’ অতঃপর (মূসা আলাইহিস সালাম ভুমিতে লাঠি নিক্ষেপের পর) যখন একে সাপের ন্যায় ছুটাছুটি করতে দেখলেন তখন তিনি (স্বভাবজাত প্রতিক্রিয়ায়) পশ্চাৎ ফিরে পলায়ন করতে লাগলেন এবং পিছনে ঘুরে(ও) তাকালেন না। (আল্লাহ্ বললেন), ‘হে মূসা! ভীত হয়ো না, আমার সান্নিধ্যে তো রাসূলগণ ভয় পায় না;
اِلَّا مَنۡ ظَلَمَ ثُمَّ بَدَّلَ حُسۡنًۢا بَعۡدَ سُوۡٓءٍ فَاِنِّیۡ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۱۱﴾
কানযুল ঈমান
১১. হাঁ, যে কেউ সীমাতিক্রম করে, অতঃপর মন্দ কর্মের পর সৎ কর্ম দ্বারা পরিবর্তন করে, তবে নিশ্চয় আমি ক্ষমাশীল, দয়ালু।
ইরফানুল কুরআন
১১. তবে তারা ব্যতীত যারা অন্যায় করে, অতঃপর মন্দ কাজ করার পর ভালো কাজ দিয়ে (তা) প্রতিস্থাপন করে। প্রকৃতপক্ষে আমি সর্বাধিক ক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু।
وَ اَدۡخِلۡ یَدَکَ فِیۡ جَیۡبِکَ تَخۡرُجۡ بَیۡضَآءَ مِنۡ غَیۡرِ سُوۡٓءٍ ۟ فِیۡ تِسۡعِ اٰیٰتٍ اِلٰی فِرۡعَوۡنَ وَ قَوۡمِہٖ ؕ اِنَّہُمۡ کَانُوۡا قَوۡمًا فٰسِقِیۡنَ ﴿۱۲﴾
কানযুল ঈমান
১২. এবং আপন হাত নিজ বক্ষ পার্শ্বের বস্ত্রের মধ্যে প্রবেশ করাও। তা বের হয়ে আসবে শুভ্র-আলোকিত নির্দোষ হয়ে; নয়টা নিদর্শনের অন্তর্ভুক্ত ফির’আউন ও তার সম্প্রদায়ের প্রতি। নিশ্চয় তারা নির্দেশ অমান্যকারী লোক’।
ইরফানুল কুরআন
১২. এবং তোমার হাত তোমার জামার কলারের উন্মুক্ত অংশে ঢোকাও। এটি কোনো ত্রুটি ছাড়া শুভ্র দীপ্তিময় হয়ে বেরিয়ে আসবে। (এ দু’টি আল্লাহ্র) নয়টি নিদর্শনের অন্তর্ভুক্ত। (এ গুলো নিয়ে) ফেরাউন ও তার লোকদের নিকট যাও। নিশ্চয় তারা অবাধ্য সম্প্রদায়।
فَلَمَّا جَآءَتۡہُمۡ اٰیٰتُنَا مُبۡصِرَۃً قَالُوۡا ہٰذَا سِحۡرٌ مُّبِیۡنٌ ﴿ۚ۱۳﴾
কানযুল ঈমান
১৩. অতঃপর যখন আমার নিদর্শনসমূহ চোখ খোলার মতো হয়ে তাদের নিকট এলো তখন তাঁরা বললো, ‘এটা তো সুস্পষ্ট যাদু’।
ইরফানুল কুরআন
১৩. অতঃপর যখন তাদের নিকট আমাদের সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী উদ্ভাসিত হলো তখন তারা বলতে লাগলো, ‘এ তো স্পষ্ট যাদু’।
وَ جَحَدُوۡا بِہَا وَ اسۡتَیۡقَنَتۡہَاۤ اَنۡفُسُہُمۡ ظُلۡمًا وَّ عُلُوًّا ؕ فَانۡظُرۡ کَیۡفَ کَانَ عَاقِبَۃُ الۡمُفۡسِدِیۡنَ ﴿۱۴﴾
কানযুল ঈমান
১৪. এবং সেগুলোকে অস্বীকার করলো, অথচ তাদের অন্তরগুলোতে সেগুলোর (সত্যতার) নিশ্চিত বিশ্বাস ছিলো, যুল্ম ও অহঙ্কারবশতঃ; সুতরাং দেখো, কেমন পরিণতি হয়েছে অশান্তি- সৃষ্টিকারীদের।
ইরফানুল কুরআন
১৪. আর তারা যুলুম, অহঙ্কার এবং পাপাচারবশত একে সরাসরি অস্বীকার করে বসলো যদিও তাদের অন্তর এগুলোকে (এ নিদর্শনাবলীকে সত্য বলে) বিশ্বাস করেছিল। কাজেই আপনি দেখুন, বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের পরিণতি কেমন (অশুভ) হয়েছিল!
وَ لَقَدۡ اٰتَیۡنَا دَاوٗدَ وَ سُلَیۡمٰنَ عِلۡمًا ۚ وَ قَالَا الۡحَمۡدُ لِلّٰہِ الَّذِیۡ فَضَّلَنَا عَلٰی کَثِیۡرٍ مِّنۡ عِبَادِہِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۵﴾
কানযুল ঈমান
১৫. এবং নিশ্চয় আমি দাঊদ ও সুলায়মানকে জ্ঞান দান করেছি আর তারা উভয়ে বলেছে, ‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্র জন্য, যিনি আমাদেরকে তার বহু ঈমানদার বান্দার উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন।
ইরফানুল কুরআন
১৫. আর আমরা অবশ্যই দাউদ ও সুলাইমান (আলাইহিমাস সালাম)-কে (বিস্ময়কর) জ্ঞান দান করেছিলাম। আর তাঁরা উভয়ে বললেন, ‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্ তা’আলারই যিনি আমাদেরকে তাঁর অনেক মু’মিন বান্দার উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন।’
وَ وَرِثَ سُلَیۡمٰنُ دَاوٗدَ وَ قَالَ یٰۤاَیُّہَا النَّاسُ عُلِّمۡنَا مَنۡطِقَ الطَّیۡرِ وَ اُوۡتِیۡنَا مِنۡ کُلِّ شَیۡءٍ ؕ اِنَّ ہٰذَا لَہُوَ الۡفَضۡلُ الۡمُبِیۡنُ ﴿۱۶﴾
কানযুল ঈমান
১৬. এবং সুলায়মান দাঊদের স্থলাভিষিক্ত হলো আর বললো, ‘হে লোকেরা! আমাকে পক্ষীকুলের ভাষা শিক্ষা দেওয়া হয়েছে এবং প্রত্যেক কিছু থেকে আমাকে দেওয়া হয়েছে। নিশ্চয় এটা সুস্পষ্ট অনুগ্রহ’।
ইরফানুল কুরআন
১৬. আর সুলাইমান (আলাইহিস সালাম) দাউদ (আলাইহিস সালাম)-এঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন এবং তিনি বললেন, ‘হে লোকসকল! আমাকে পাখির ভাষা বোঝার ক্ষমতাও দেয়া হয়েছে এবং আমাকে সকল কিছু প্রদান করা হয়েছে; সন্দেহ নেই যে, এটি (আল্লাহ্ তা’আলার) সুস্পষ্ট অনুগ্রহ।’
وَ حُشِرَ لِسُلَیۡمٰنَ جُنُوۡدُہٗ مِنَ الۡجِنِّ وَ الۡاِنۡسِ وَ الطَّیۡرِ فَہُمۡ یُوۡزَعُوۡنَ ﴿۱۷﴾
কানযুল ঈমান
১৭. এবং সমবেত করা হয়েছে সুলায়মানের জন্য তার সৈন্য-বাহিনীকে-জিন, মানুষ ও পক্ষীকুল থেকে। সুতরাং তাদেরকে বাধা দেওয়া হতো।।
ইরফানুল কুরআন
১৭. আর সুলাইমান (আলাইহিস সালাম)-এঁর জন্যে তাঁর বাহিনী সংগ্রহ করা হয়েছিল জ্বিন, মানব এবং (সকল প্রজাতির) বিহঙ্গকুল থেকে। অতঃপর শৃঙ্খলা ও প্রশিক্ষণের জন্যে (তাঁর সেবায়) এদেরকে নিয়োজিত করা হলো।
حَتّٰۤی اِذَاۤ اَتَوۡا عَلٰی وَادِ النَّمۡلِ ۙ قَالَتۡ نَمۡلَۃٌ یّٰۤاَیُّہَا النَّمۡلُ ادۡخُلُوۡا مَسٰکِنَکُمۡ ۚ لَا یَحۡطِمَنَّکُمۡ سُلَیۡمٰنُ وَ جُنُوۡدُہٗ ۙ وَ ہُمۡ لَا یَشۡعُرُوۡنَ ﴿۱۸﴾
কানযুল ঈমান
১৮. এমন কি যখন তারা পিপীলিকাগুলোর উপত্যকায় এসে পৌছলো, তখন একটা পিপীলিকা বললো, হে পিপীলিকাকূল! আপন আপন গৃহে চলে যাও, যাতে তোমাদেরকে পদদলিত না করে সুলায়মান ও তার সৈন্যবাহিনী, অজ্ঞাতসারে।
ইরফানুল কুরআন
১৮. যেই না তারা (এ বাহিনী) পিপীলিকা অধ্যুষিত উপত্যকায় পৌঁছল তখনই এক পিপীলিকা বলতে লাগলো, ‘ওহে পিঁপড়ার দল! তোমরা নিজেদের আবাসস্থলে প্রবেশ করো, যাতে সুলাইমান (আলাইহিস সালাম) এবং তার বাহিনী তাদের অজ্ঞাতসারে তোমাদেরকে পদতলে পিষে না ফেলে।’
فَتَبَسَّمَ ضَاحِکًا مِّنۡ قَوۡلِہَا وَ قَالَ رَبِّ اَوۡزِعۡنِیۡۤ اَنۡ اَشۡکُرَ نِعۡمَتَکَ الَّتِیۡۤ اَنۡعَمۡتَ عَلَیَّ وَ عَلٰی وَالِدَیَّ وَ اَنۡ اَعۡمَلَ صَالِحًا تَرۡضٰىہُ وَ اَدۡخِلۡنِیۡ بِرَحۡمَتِکَ فِیۡ عِبَادِکَ الصّٰلِحِیۡنَ ﴿۱۹﴾
কানযুল ঈমান
১৯. অতঃপর (সুলায়মান) তার উক্তিতে মৃদু হাসলো এবং আরয করলো, ‘হে আমার রব! আমাকে শক্তি দাও যাতে আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি তোমার ওই অনুগ্রহের, যা তুমি আমার উপর এবং আমার মাতা পিতার উপর করেছো; আর যাতে আমি ওই সৎ কাজ করতে পারি, যা তোমার পছন্দ হয় এবং আমাকে আপন করুণাময় ওই বান্দাদের শ্রেণীভুক্ত করো যারা তোমার বিশেষ নৈকট্যের উপযোগী’।
ইরফানুল কুরআন
১৯. অতঃপর তিনি (সুলাইমান আলাইহিস সালাম পিপীলিকা)-এর কথায় আনন্দ অনুভব করে মুচকি হাসলেন এবং বললেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমাকে এর উপর অটল থাকার তাওফীক দাও যাতে আমি তোমার নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতে পারি যা তুমি আমাকে এবং আমার পিতামাতাকে দান করেছো; এবং যাতে আমি সৎকর্ম করতে পারি যা তোমাকে সন্তুষ্ট করে; আর তুমি তোমার অনুগ্রহ দ্বারা আমাকে তোমার বিশেষ নৈকট্যপ্রাপ্ত বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করো।’
وَ تَفَقَّدَ الطَّیۡرَ فَقَالَ مَا لِیَ لَاۤ اَرَی الۡہُدۡہُدَ ۫ۖ اَمۡ کَانَ مِنَ الۡغَآئِبِیۡنَ ﴿۲۰﴾
কানযুল ঈমান
২০. আর পাখীগুলোর সন্ধান নিলো, অতঃপর বললো, ‘আমার কী হলো যে, আমি হুদহুদকে দেখতে পাচ্ছি না, না সে বাস্তবিকই পক্ষেই অনুপস্থিত?
ইরফানুল কুরআন
২০. আর সুলাইমান (আলাইহিস সালাম) বিহঙ্গদলকে পর্যবেক্ষণ করলেন এবং বললেন, ‘কী হলো, হুদহুদকে দেখতে পাচ্ছি না কেন? নাকি সে (সত্যিই) উধাও হয়ে গিয়েছে?
لَاُعَذِّبَنَّہٗ عَذَابًا شَدِیۡدًا اَوۡ لَاَاذۡبَحَنَّہٗۤ اَوۡ لَیَاۡتِیَنِّیۡ بِسُلۡطٰنٍ مُّبِیۡنٍ ﴿۲۱﴾
কানযুল ঈমান
২১. অবশ্যই আমি তাকে কঠিন শাস্তি দেবো অথবা যবেহ করবো, অথবা সে কোন সুস্পষ্ট প্রমাণ আমার নিকট নিয়ে আসবে।
ইরফানুল কুরআন
২১. (অনুমতি ছাড়া উধাও হয়ে যাওয়ায়) আমি তাকে অবশ্যই কঠিন শাস্তি দেবো অথবা তাকে জবাই করবো অথবা সে (নিজে নির্দোষ হওয়ার) সুস্পষ্ট প্রমাণ আমার নিকট উপস্থিত করবে।
فَمَکَثَ غَیۡرَ بَعِیۡدٍ فَقَالَ اَحَطۡتُّ بِمَا لَمۡ تُحِطۡ بِہٖ وَ جِئۡتُکَ مِنۡ سَبَاٍۭ بِنَبَاٍ یَّقِیۡنٍ ﴿۲۲﴾
কানযুল ঈমান
২২. অতঃপর হুদহুদ দীর্ঘক্ষণ অবস্থান করে নি এবং এসে আরয করলো, ‘আমি ওই বিষয়ে দেখে এসেছি, যা হুজুর, (আপনি) দেখেন নি এবং আমি সাবা শহর থেকে হুযূরের নিকট একটা নিশ্চিত সংবাদ নিয়ে এসেছি।
ইরফানুল কুরআন
২২. সে সামান্য সময় (বাইরে) অবস্থান করেছিল; অতঃপর (উপস্থিত হয়ে) সে বললো, ‘আমি এমন বিষয় অবগত হয়েছি (সম্ভবত) যা আপনি অবগত ছিলেন না। আর আমি আপনার নিকট সাবা (নগরী) থেকে এক বিশ্বাসযোগ্য সংবাদ নিয়ে এসেছি।
اِنِّیۡ وَجَدۡتُّ امۡرَاَۃً تَمۡلِکُہُمۡ وَ اُوۡتِیَتۡ مِنۡ کُلِّ شَیۡءٍ وَّ لَہَا عَرۡشٌ عَظِیۡمٌ ﴿۲۳﴾
কানযুল ঈমান
২৩. আমি এক নারীকে দেখেছি, যে তাদের উপর বাদশাহী করছে আর তাকে সবকিছু থেকে দেওয়া হয়েছে এবং তার এক বিরাট সিংহাসন রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
২৩. আমি (সেখানে) এক নারীকে পেয়েছি যে তাদের (অর্থাৎ সাবা নগরীর বাসিন্দাদের) উপর রাজত্ব করছে। আর তাকে (রাজত্ব এবং ক্ষমতার) সব কিছুই দেয়া হয়েছে এবং তার আছে এক বিরাট সিংহাসন।
وَجَدۡتُّہَا وَ قَوۡمَہَا یَسۡجُدُوۡنَ لِلشَّمۡسِ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ وَ زَیَّنَ لَہُمُ الشَّیۡطٰنُ اَعۡمَالَہُمۡ فَصَدَّہُمۡ عَنِ السَّبِیۡلِ فَہُمۡ لَا یَہۡتَدُوۡنَ ﴿ۙ۲۴﴾
কানযুল ঈমান
২৪. আমি তাকে ও তার সম্প্রদায়কে দেখতে পেলাম যে, তারা আল্লাহ্কে ছেড়ে সূর্যকে সাজদা করছে এবং শয়তান তাদের কার্যাবলীকে তাদের দৃষ্টিতে সুশোভিত করে তাদেরকে সরল পথ থেকে নিবৃত্ত করেছে; সুতরাং তারা সৎপথ পাচ্ছে না’।
ইরফানুল কুরআন
২৪. আমি তাকে এবং তার সম্প্রদায়কে দেখলাম আল্লাহ্র পরিবর্তে সূর্যকে সেজদা করছে। আর শয়তান তাদের (অসৎ) কর্মকে তাদের জন্যে অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক করে দিয়েছে এবং তাদেরকে (আল্লাহ্র একত্ববাদের) পথ থেকে রুখে দিয়েছে। কাজেই তারা সৎপথ পায় না।
اَلَّا یَسۡجُدُوۡا لِلّٰہِ الَّذِیۡ یُخۡرِجُ الۡخَبۡءَ فِی السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ وَ یَعۡلَمُ مَا تُخۡفُوۡنَ وَ مَا تُعۡلِنُوۡنَ ﴿۲۵﴾
কানযুল ঈমান
২৫. তারা কেন সাজদা করছে না আল্লাহ্কে, যিনি প্রকাশ করেন আসমানসমূহ ও যমীনের লুক্কায়িত বস্তুসমূহকে এবং জানেন যা কিছু তোমরা গোপন করো এবং যা কিছু প্রকাশ করো!
ইরফানুল কুরআন
২৫. এ জন্যে (রুখে দেওয়া হয়েছে) যে, তারা যেন সেজদায় লুটিয়ে না পড়ে আল্লাহ তা’আলার সমীপে যিনি আকাশমন্ডলীতে এবং পৃথিবীতে লুকায়িত (বাস্তব ও অস্তিত্বশীল) বস্তু প্রকাশ করেন। আর তিনি অবগত আছেন সে (সব বস্তু) সম্পর্কে যা তোমরা গোপন করো এবং যা তোমরা প্রকাশ করো।
اَللّٰہُ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا ہُوَ رَبُّ الۡعَرۡشِ الۡعَظِیۡمِ ﴿ٛ۲۶﴾
কানযুল ঈমান
২৬. আল্লাহ্, তিনি ব্যতীত কোন সত্য মা’বূদ নেই, তিনি মহান আরশের অধিপতি।
ইরফানুল কুরআন
২৬. আল্লাহ্ ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই, তিনিই একমাত্র কর্তৃত্বের সর্বোচ্চ সিংহাসনের মালিক।’
قَالَ سَنَنۡظُرُ اَصَدَقۡتَ اَمۡ کُنۡتَ مِنَ الۡکٰذِبِیۡنَ ﴿۲۷﴾
কানযুল ঈমান
২৭. সুলায়মান বললেন, ‘এখন আমরা দেখবো, তুমি কি সত্য বলেছো, না তুমি মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত।
ইরফানুল কুরআন
২৭. সুলাইমান (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘আমি এখনই দেখছি, তুমি সত্য বলছো নাকি তুমি মিথ্যাবাদী।
اِذۡہَبۡ بِّکِتٰبِیۡ ہٰذَا فَاَلۡقِہۡ اِلَیۡہِمۡ ثُمَّ تَوَلَّ عَنۡہُمۡ فَانۡظُرۡ مَا ذَا یَرۡجِعُوۡنَ ﴿۲۸﴾
কানযুল ঈমান
২৮. আমার এ নির্দেশ নিয়ে গিয়ে তাদের উপর নিক্ষেপ করো, অতঃপর তাদের নিকট থেকে সরে পৃথক হয়ে দেখো, তারা কি জবাব দেয়’।
ইরফানুল কুরআন
২৮. আমার এই চিঠি নিয়ে যাও এবং তা তাদের নিকট অর্পণ করো। অতঃপর তাদের নিকট থেকে সরে পড়ো এবং দেখো তারা কী জবাব দেয়।’
قَالَتۡ یٰۤاَیُّہَا الۡمَلَؤُا اِنِّیۡۤ اُلۡقِیَ اِلَیَّ کِتٰبٌ کَرِیۡمٌ ﴿۲۹﴾
কানযুল ঈমান
২৯. ওই নারী বললো, ‘হে নেতৃবর্গ! নিশ্চয় আমার প্রতি এক সম্মানিত পত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে;
ইরফানুল কুরআন
২৯. (রানী) বললেন, ‘হে সভাসদগণ! আমার নিকট এক সম্মানিত পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।
اِنَّہٗ مِنۡ سُلَیۡمٰنَ وَ اِنَّہٗ بِسۡمِ اللّٰہِ الرَّحۡمٰنِ الرَّحِیۡمِ ﴿ۙ۳۰﴾
কানযুল ঈমান
৩০. নিশ্চয় তা সুলায়মান এর নিকট হেকে এবং নিশ্চয় তা আল্লাহ্র নাম সহকারে, যিনি পরম দয়ালু, করুণাময়;
ইরফানুল কুরআন
৩০. অবশ্যই এ (পত্র) সুলাইমান (আলাইহিস সালাম)-এঁর পক্ষ থেকে (এসেছে) এবং যা শুরু (করা হয়েছে) আল্লাহ্র নামে যিনি পরম করুণাময়, সতত অসীম দয়ালু।
اَلَّا تَعۡلُوۡا عَلَیَّ وَ اۡتُوۡنِیۡ مُسۡلِمِیۡنَ ﴿۳۱﴾
কানযুল ঈমান
৩১. এ যে, আমার উপর শ্রেষ্ঠত্ব চেয়ো না এবং আত্নসমর্পণ করে আমার নিকট হাযির হও।
ইরফানুল কুরআন
৩১. (এর বিষয়বস্তু এই যে,) আমার উপরে মাথা উত্তোলন (করার চেষ্টা) করো না, এবং আনুগত্য স্বীকার করে আমার নিকট উপস্থিত হও।’
قَالَتۡ یٰۤاَیُّہَا الۡمَلَؤُا اَفۡتُوۡنِیۡ فِیۡۤ اَمۡرِیۡ ۚ مَا کُنۡتُ قَاطِعَۃً اَمۡرًا حَتّٰی تَشۡہَدُوۡنِ ﴿۳۲﴾
কানযুল ঈমান
৩২. (ওই নারী) বললো, ‘হে নেতৃবর্গ! আমার এ ব্যাপারে আমাকে (তোমাদের) অভিমত দাও; আমি কোন ব্যাপারে কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত করি না যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা আমার নিকট উপস্থিত না হও’।
ইরফানুল কুরআন
৩২. (রানী) বললেন, ‘হে সভাসদগণ! আমাকে এ বিষয়ে পরামর্শ দাও। আমি কোনো বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি না যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা আমার নিকট উপস্থিত হয়ে (এ বিষয়ের পক্ষে বা বিপক্ষে) মতামত প্রদান করো।’
قَالُوۡا نَحۡنُ اُولُوۡا قُوَّۃٍ وَّ اُولُوۡا بَاۡسٍ شَدِیۡدٍ ۬ۙ وَّ الۡاَمۡرُ اِلَیۡکِ فَانۡظُرِیۡ مَاذَا تَاۡمُرِیۡنَ ﴿۳۳﴾
কানযুল ঈমান
৩৩. তারা বললো, ‘আমরা শক্তিশালী, অতি কঠোর যোদ্ধা; এবং ক্ষমতা তোমারই। তুমি ভেবে দেখো কী নির্দেশ দিচ্ছো’।
ইরফানুল কুরআন
৩৩. তারা বললো, ‘আমরা শক্তিশালী এবং দুর্দান্ত যোদ্ধা কিন্তু সিদ্ধান্ত আপনারই। সুতরাং আপনি (নিজেই) চিন্তা করুন, আপনি কী নির্দেশ দিবেন।’
قَالَتۡ اِنَّ الۡمُلُوۡکَ اِذَا دَخَلُوۡا قَرۡیَۃً اَفۡسَدُوۡہَا وَ جَعَلُوۡۤا اَعِزَّۃَ اَہۡلِہَاۤ اَذِلَّۃً ۚ وَ کَذٰلِکَ یَفۡعَلُوۡنَ ﴿۳۴﴾
কানযুল ঈমান
৩৪. সে বললো, ‘নিশ্চয় যখন বাদশাহ কোন বস্তিতে প্রবেশ করে তখন সেটাকে বিধ্বস্ত করে দেয় এবং সেটার মর্যাদাবান ব্যক্তিদেরকে করে অপদস্থ এবং তারা এরূপই করে থাকে’।
ইরফানুল কুরআন
৩৪. (রানী) বললেন, ‘সন্দেহ নেই, যখন রাজা-বাদশাহর কোনো জনপদে প্রবেশ করে তখন তা ধ্বংস ও বরবাদ করে দেয় এবং এর সম্মানিত লোকজনকে অপমানিত ও লাঞ্ছিত করে। আর এরাও তাই করবে।
وَ اِنِّیۡ مُرۡسِلَۃٌ اِلَیۡہِمۡ بِہَدِیَّۃٍ فَنٰظِرَۃٌۢ بِمَ یَرۡجِعُ الۡمُرۡسَلُوۡنَ ﴿۳۵﴾
কানযুল ঈমান
৩৫. এবং আমি তাদের প্রতি একটা উপহার প্রেরণকারিণী। অতঃপর দেখবো, দূত কী উত্তর নিয়ে ফিরে আসে’।
ইরফানুল কুরআন
৩৫. আর আমি তাদের নিকট কিছু উপঢৌকন প্রেরণ করছি। অতঃপর দেখি সংবাদবাহকেরা কী জবাব নিয়ে ফিরে আসে।’
فَلَمَّا جَآءَ سُلَیۡمٰنَ قَالَ اَتُمِدُّوۡنَنِ بِمَالٍ ۫ فَمَاۤ اٰتٰىنِۦَ اللّٰہُ خَیۡرٌ مِّمَّاۤ اٰتٰىکُمۡ ۚ بَلۡ اَنۡتُمۡ بِہَدِیَّتِکُمۡ تَفۡرَحُوۡنَ ﴿۳۶﴾
কানযুল ঈমান
৩৬. অতঃপর যখন সে সুলায়মানের নিকট এলো, তখন তিনি বললেন, ‘তোমরা কি আমাকে ধন-সম্পদ দিয়ে সাহায্য করছো? সুতরাং আমাকে আল্লাহ্ যা দিয়েছেন তা উৎকৃষ্টতর সেটা থেকে, যা তোমাদেরকে দিয়েছেন; বরং তোমরা তোমাদের উপহার নিয়ে খুশী হয়ে থাকো’।
ইরফানুল কুরআন
৩৬. অতঃপর যখন তারা (রাণীর সংবাদবাহকেরা) সুলাইমান (আলাইহিস সালাম)-এঁর নিকট আসলো, তিনি (সুলাইমান আলাইহিস সালাম তাদেরকে) বললেন, ‘তোমরা কি আমাকে ধন-সম্পদ দিয়ে সাহায্য করতে চাও? পক্ষান্তরে আল্লাহ্ তা’আলা যা কিছু আমাকে দিয়েছেন তা এ (সম্পদ) থেকে উত্তম যা তিনি তোমাদেরকে দিয়েছেন। বরং তোমরাই নিজেদের উপঢৌকন নিয়ে উৎফুল্ল (এবং) গর্ব বোধ করো।
اِرۡجِعۡ اِلَیۡہِمۡ فَلَنَاۡتِیَنَّہُمۡ بِجُنُوۡدٍ لَّا قِبَلَ لَہُمۡ بِہَا وَ لَنُخۡرِجَنَّہُمۡ مِّنۡہَاۤ اَذِلَّۃً وَّ ہُمۡ صٰغِرُوۡنَ ﴿۳۷﴾
কানযুল ঈমান
৩৭. তুমি তাদের প্রতি ফিরে যাও, অবশ্যই আমরা তাদের বিরুদ্ধে ওই সৈন্যদল নিয়ে আসবো যাদের মোকাবেলা করার ক্ষমতা তাদের থাকবে না এবং অবশ্যই আমরা তাদেরকে ওই শহর থেকে অপদস্থ করে বের করে দেবো। এভাবে যে, তারা অবনমিত হবে।
ইরফানুল কুরআন
৩৭. সুতরাং (উপঢৌকন সহ) তাদের নিকট ফিরে যাও। আমরা তাদের বিরুদ্ধে এক সৈন্যবাহিনী নিয়ে (আক্রমণ করতে) আসবো যার মুকাবিলার ক্ষমতা তাদের নেই। আর আমরা তাদেরকে সেখান থেকে অপদস্থ করে বের করে দেব, তারা হবে (বন্দী) অবনমিত।’
قَالَ یٰۤاَیُّہَا الۡمَلَؤُا اَیُّکُمۡ یَاۡتِیۡنِیۡ بِعَرۡشِہَا قَبۡلَ اَنۡ یَّاۡتُوۡنِیۡ مُسۡلِمِیۡنَ ﴿۳۸﴾
কানযুল ঈমান
৩৮. সুলায়মান বললেন, ‘হে সভাসদবর্গ! তোমাদের মধ্যে কে আছো, যে তার সিংহাসন আমার নিকট নিয়ে আসতে পারো এরই পূর্বে যে, সে আমার নিকট অনুগত হয়ে উপস্থিত হবে?’
ইরফানুল কুরআন
৩৮. (সুলাইমান আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘হে সভাসদগণ! তোমাদের মধ্যে কে (রাণীর) এ সিংহাসন আমার নিকট এনে দিতে পারো তারা আনুগত্য স্বীকার করে আমার নিকট আগমনের পূর্বেই?’
قَالَ عِفۡرِیۡتٌ مِّنَ الۡجِنِّ اَنَا اٰتِیۡکَ بِہٖ قَبۡلَ اَنۡ تَقُوۡمَ مِنۡ مَّقَامِکَ ۚ وَ اِنِّیۡ عَلَیۡہِ لَقَوِیٌّ اَمِیۡنٌ ﴿۳۹﴾
কানযুল ঈমান
৩৯. এক বড় দুষ্ট জিন, বললো, ‘আমি উক্ত সিংহাসন আপনার সম্মুখে উপস্থিত করে দেবো এরই পূর্বে যে, হুযূর সভার সমাপ্তি ঘোষণা করবেন এবং নিঃসন্দেহে আমি হলাম সেটা করার ক্ষমতাসম্পন্ন, বিশ্বস্ত’।
ইরফানুল কুরআন
৩৯. এক শক্তিশালী জ্বিন বললো, ‘আপনি আপনার আসন হতে ওঠার পূর্বেই আমি এটি আপনার নিকট এনে দিতে পারি। আর আমি এ (নিয়ে আসার) ব্যাপারে অবশ্যই সামর্থ্যবান (এবং) বিশ্বস্ত।’
قَالَ الَّذِیۡ عِنۡدَہٗ عِلۡمٌ مِّنَ الۡکِتٰبِ اَنَا اٰتِیۡکَ بِہٖ قَبۡلَ اَنۡ یَّرۡتَدَّ اِلَیۡکَ طَرۡفُکَ ؕ فَلَمَّا رَاٰہُ مُسۡتَقِرًّا عِنۡدَہٗ قَالَ ہٰذَا مِنۡ فَضۡلِ رَبِّیۡ ۟ۖ لِیَبۡلُوَنِیۡۤ ءَاَشۡکُرُ اَمۡ اَکۡفُرُ ؕ وَ مَنۡ شَکَرَ فَاِنَّمَا یَشۡکُرُ لِنَفۡسِہٖ ۚ وَ مَنۡ کَفَرَ فَاِنَّ رَبِّیۡ غَنِیٌّ کَرِیۡمٌ ﴿۴۰﴾
কানযুল ঈমান
৪০. ওই ব্যক্তি আরয করলো, যার নিকট কিতাবের জ্ঞান ছিলো, ‘আমি সেটা হুযূরের সম্মুখে হাযির করবো চোখের একটা পলক মারার পূর্বেই’। অতঃপর যখন সুলায়মান সিংহাসনটা তার নিকট রক্ষিত অবস্থায় দেখতে পেলো, তখন বললো, ‘এটা আমার রবের অনুগ্রহ থেকে; যাতে আমাকে পরীক্ষা করেন যেন আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, না অকৃতজ্ঞ হই! বস্তুতঃ যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সে স্বীয় কল্যাণের জন্যই (কৃতজ্ঞতা প্রকাশ) করে, আর যে অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, তবে আমার রব বে-পরোয়া, সমস্ত প্রশংসার অধিকারী’।
ইরফানুল কুরআন
৪০. (অতঃপর ঐশী) কিতাবের কিছু জ্ঞান ছিল এমন এক ব্যক্তি বললো, ‘আমি একে আপনার দৃষ্টি ফেরার পূর্বেই (এমনকি আপনার চোখের পলক পড়ারও পূর্বেই) আপনার নিকট এনে দিতে পারি’। সুতরাং যখন তিনি (সুলাইমান আলাইহিস সালাম) এটি (এ সিংহাসন) নিজের সম্মুখে রক্ষিত দেখলেন, (তখন) তিনি বললেন, ‘এ আমার প্রতিপালকের অনুগ্রহ, যাতে তিনি আমাকে পরীক্ষা করতে পারেন, আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি নাকি আমি অকৃতজ্ঞ। আর যে (আল্লাহ্র) কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, সে কেবল নিজের সত্তার উপকারের জন্যেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, আর যে ব্যক্তি অকৃতজ্ঞ, তবে আমার প্রতিপালক অমুখাপেক্ষী, মহানুভব।’
قَالَ نَکِّرُوۡا لَہَا عَرۡشَہَا نَنۡظُرۡ اَتَہۡتَدِیۡۤ اَمۡ تَکُوۡنُ مِنَ الَّذِیۡنَ لَا یَہۡتَدُوۡنَ ﴿۴۱﴾
কানযুল ঈমান
৪১. সুলায়মান নির্দেশ দিলো, ‘নারীর সিংহাসনটা তার সামনে আকৃতি বদলিয়ে অপরিচিত করে রেখে দাও, যাতে আমরা দেখি সে সঠিক দিশা পাচ্ছে, না তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে, যারা অনবগত’।
ইরফানুল কুরআন
৪১. (সুলাইমান আলাইহিস সালাম রাণীকে পরীক্ষার উদ্দেশ্যে) বললেন, ‘তার সিংহাসনের আকার ও আকৃতি পরিবর্তন করে দাও; আমরা দেখবো, সে (এটি চেনার) সূত্র খুঁজে পায় নাকি সে তাদের অন্তর্ভুক্ত যারা দিশাহীন।’
فَلَمَّا جَآءَتۡ قِیۡلَ اَہٰکَذَا عَرۡشُکِ ؕ قَالَتۡ کَاَنَّہٗ ہُوَ ۚ وَ اُوۡتِیۡنَا الۡعِلۡمَ مِنۡ قَبۡلِہَا وَ کُنَّا مُسۡلِمِیۡنَ ﴿۴۲﴾
কানযুল ঈমান
৪২. অতঃপর যখন সে এলো, তখন তাকে বলা হলো, ‘তোমার সিংহাসন কি এরূপই?’ সে বললো, ‘মনে হচ্ছে এটা সেটাই। এবং আমরা এ ঘটনার পূর্বেই খবর পেয়েছি এবং আমরা অনুগত হয়েছি;
ইরফানুল কুরআন
৪২. অতঃপর যখন সে (রাণী) আসলো, তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘তোমার সিংহাসন কি এরূপই?’ সে বললো, ‘এটি তো এরূপই। আর আমাদেরকে ইতোপূর্বেই (সুলাইমান আলাইহিস সালামের নবুয়্যত সত্য হওয়ার ব্যাপারে) জ্ঞাত করা হয়েছে এবং আমরা আত্মসমর্পণ করেছি।’
وَ صَدَّہَا مَا کَانَتۡ تَّعۡبُدُ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ ؕ اِنَّہَا کَانَتۡ مِنۡ قَوۡمٍ کٰفِرِیۡنَ ﴿۴۳﴾
কানযুল ঈমান
৪৩. এবং তাকে নিবৃত্ত রেখেছে ওই বস্তু, যা সে আল্লাহ্কে ব্যতীত পূজা করতো; নিশ্চয় সে কাফির লোকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলো।
ইরফানুল কুরআন
৪৩. আর তাকে (এ রানীকে এরপূর্বেই সত্য গ্রহণ করা থেকে) নিবৃত্ত রেখেছিল সে (বাতিল উপাস্য), আল্লাহ্র পরিবর্তে যার উপাসনা সে করতো। নিশ্চয়ই সে ছিল কাফের সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত।
قِیۡلَ لَہَا ادۡخُلِی الصَّرۡحَ ۚ فَلَمَّا رَاَتۡہُ حَسِبَتۡہُ لُجَّۃً وَّ کَشَفَتۡ عَنۡ سَاقَیۡہَا ؕ قَالَ اِنَّہٗ صَرۡحٌ مُّمَرَّدٌ مِّنۡ قَوَارِیۡرَ ۬ؕ قَالَتۡ رَبِّ اِنِّیۡ ظَلَمۡتُ نَفۡسِیۡ وَ اَسۡلَمۡتُ مَعَ سُلَیۡمٰنَ لِلّٰہِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۴۴﴾
কানযুল ঈমান
৪৪. তাকে বলা হলো, ‘আঙ্গিনায় প্রবেশ করো’। অতঃপর যখন সে সেটা দেখলো, তখন সে ওটাকে গভীর জলাশয় মনে করলো এবং আপন সাক্বদ্বয় খুললো। সুলায়মান বললেন, ‘এ তো এক মসৃণ আঙ্গিনা, আয়নামণ্ডিত’। নারীটি আরয করলো, ‘হে আমার রব! আমি আমার সত্তার উপর অত্যাচার করেছি এবং এখন সুলায়মানের সাথে আল্লাহ্র নিকট আত্নসমর্পণ করেছি, যিনি সমগ্র জগতের রব।
ইরফানুল কুরআন
৪৪. তাকে (এ রানীকে) বলা হলো, ‘এই প্রাসাদের আঙিনায় প্রবেশ করো’ (যার নিচ দিয়ে নীলাভ জলের তরঙ্গ বহমান)। অতঃপর যখন রানী (সুসজ্জিত স্ফটিকের মেঝে)-এর দিকে দৃষ্টিপাত করলো তখন তার মনে হলো এ এক স্বচ্ছ গভীর জলাশয় এবং সে (তার ঘাঘরা টেনে ধরে) নিজের দু’ পায়ের নিম্নাংশ উন্মোচন করলো। সুলাইমান (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘এ তো স্বচ্ছ স্ফটিক নির্মিত প্রাসাদের আঙিনা’। সে (রানী) বললো, ‘হে আমার প্রতিপালক! (আমি এমনতর প্রতারণার দৃশ্যে নিমজ্জিত ছিলাম) নিশ্চয়ই আমি আমার নিজের প্রতি অত্যাচার করেছি, আর আমি এখন সুলাইমান (আলাইহিস সালাম)-এঁর সাথে বিশ্ব জগতের প্রতিপালক আল্লাহ্র নিকট আত্মসমর্পণ করলাম।’
وَ لَقَدۡ اَرۡسَلۡنَاۤ اِلٰی ثَمُوۡدَ اَخَاہُمۡ صٰلِحًا اَنِ اعۡبُدُوا اللّٰہَ فَاِذَا ہُمۡ فَرِیۡقٰنِ یَخۡتَصِمُوۡنَ ﴿۴۵﴾
কানযুল ঈমান
৪৫. নিশ্চয় আমি সামূদ সম্প্রদায়ের প্রতি তাদেরই স্বগোত্রীয় লোক সালিহ্ক প্রেরণ করেছি (এ আদেশসহ); ‘তোমরা আল্লাহ্রই ইবাদত করো’। অতঃপর তখন তারা বিতর্কে লিপ্ত হয়ে দু’দলে বিভক্ত হয়ে গেলো।
ইরফানুল কুরআন
৪৫. আর অবশ্যই আমরা সামূদ সম্প্রদায়ের নিকট তাদের (জ্ঞাতি) ভাই সালেহ (আলাইহিস সালাম)-কে (নবী হিসেবে) প্রেরণ করেছিলাম যে, ‘তোমরা আল্লাহ্র ইবাদত করো’; তখন তারা দু’দলে বিভক্ত হয়ে পরস্পরে বিতর্কে লিপ্ত হলো।
قَالَ یٰقَوۡمِ لِمَ تَسۡتَعۡجِلُوۡنَ بِالسَّیِّئَۃِ قَبۡلَ الۡحَسَنَۃِ ۚ لَوۡ لَا تَسۡتَغۡفِرُوۡنَ اللّٰہَ لَعَلَّکُمۡ تُرۡحَمُوۡنَ ﴿۴۶﴾
কানযুল ঈমান
৪৬. সালিহ্ বললেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! কেন অকল্যাণকে ত্বরান্বিত করছো মঙ্গলের পূর্বে? আল্লাহ্র নিকট কেন ক্ষমা প্রার্থনা করছো না? হয় তো তোমাদের উপর অনুগ্রহ করা হবে’।
ইরফানুল কুরআন
৪৬. (সালেহ আলাইহি সালাম) বললেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা কেন কল্যাণের (অর্থাৎ রহমতের) পূর্বে অকল্যাণ (অর্থাৎ শাস্তি) দ্রুত কামনা করছো? কেন তোমরা আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছো না যাতে তোমাদের উপর অনুগ্রহ করা হয়?’
قَالُوا اطَّیَّرۡنَا بِکَ وَ بِمَنۡ مَّعَکَ ؕ قَالَ طٰٓئِرُکُمۡ عِنۡدَ اللّٰہِ بَلۡ اَنۡتُمۡ قَوۡمٌ تُفۡتَنُوۡنَ ﴿۴۷﴾
কানযুল ঈমান
৪৭. তারা বললো, ‘আমরা অমঙ্গলের কারণ মনে করি তোমাকে ও তোমার সঙ্গীদেরকে’। তিনি বললেন, ‘তোমাদের অমঙ্গলের পূর্বলক্ষণ আল্লাহ্রই ইখ্তিয়ারে; বরং তোমরা ফিতনায় আপতিত হয়ে আছো’।
ইরফানুল কুরআন
৪৭. তারা বললো, ‘আমরা তোমাকে এবং তোমার সাথে যারা রয়েছে তাদেরকে অকল্যাণের কারণ মনে করি’। (সালেহ আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘তোমাদের অকল্যাণ (-এর কারণ) আল্লাহ্র নিকট (লিপিবদ্ধ) রয়েছে। বরং তোমরা এমন এক সম্প্রদায় যাদেরকে পরীক্ষায় ফেলা হয়েছে।’
وَ کَانَ فِی الۡمَدِیۡنَۃِ تِسۡعَۃُ رَہۡطٍ یُّفۡسِدُوۡنَ فِی الۡاَرۡضِ وَ لَا یُصۡلِحُوۡنَ ﴿۴۸﴾
কানযুল ঈমান
৪৮. আর শহরের মধ্যে নয়জন লোক ছিলো যারা ভূ-পৃষ্ঠে অশান্তি সৃষ্টি করতো এবং সংশোধন চাইতো না।
ইরফানুল কুরআন
৪৮. আর (সামূদ সম্প্রদায়ের) শহরে নয়জন বিশিষ্ট নেতা ছিল (যারা ছিল নিজ নিজ দলের প্রধান); তারা রাজ্যে বিপর্যয় সৃষ্টি করতো এবং গঠনমূলক কিছু করতো না।
قَالُوۡا تَقَاسَمُوۡا بِاللّٰہِ لَنُبَیِّتَنَّہٗ وَ اَہۡلَہٗ ثُمَّ لَنَقُوۡلَنَّ لِوَلِیِّہٖ مَا شَہِدۡنَا مَہۡلِکَ اَہۡلِہٖ وَ اِنَّا لَصٰدِقُوۡنَ ﴿۴۹﴾
কানযুল ঈমান
৪৯. পরস্পরের মধ্যে আল্লাহ্র নামে শপথ করে বললো, ‘আমরা অবশ্যই অতর্কিতে আক্রমণ করবো রাত্রি বেলায় সালিহ্ ও তার পরিবার পরিজনের উপর। অতঃপর তার উত্তরাধিকারীদেরকে বলবো, ‘এ পরিবার পরিজনকে হত্যা করার সময় আমরা উপস্থিত ছিলাম না এবং আমরা নিশ্চয় সত্যবাদী’।
ইরফানুল কুরআন
৪৯. তারা বললো, ‘পরস্পরে আল্লাহ্র শপথ করে বলো যে, আমরা রাতে তাঁকে (অর্থাৎ সালেহ আলাইহিস সালামকে) এবং তাঁর পরিবারকে অবশ্যই মরণঘাতি আক্রমণ করবো। অতঃপর তাঁর উত্তরাধিকারীদের বলবো যে, আমরা তাঁদের হত্যার ঘটনায় উপস্থিতই ছিলাম না; আর আমরা অবশ্যই সত্যবাদী।’
وَ مَکَرُوۡا مَکۡرًا وَّ مَکَرۡنَا مَکۡرًا وَّ ہُمۡ لَا یَشۡعُرُوۡنَ ﴿۵۰﴾
কানযুল ঈমান
৫০. আর তারা নিজেদের মতোই চক্রান্ত করলো এবং আমি আপন গোপন ব্যবস্থাপনা করলাম, আর তারা অনবহিতই রয়ে গেলো।
ইরফানুল কুরআন
৫০. তারা গোপনে ষড়যন্ত্র করলো আর আমরাও (একে প্রতিহত করতে) গোপন পরিকল্পনা করলাম, কিন্তু তারা তা বুঝতেও পারলো না।
فَانۡظُرۡ کَیۡفَ کَانَ عَاقِبَۃُ مَکۡرِہِمۡ ۙ اَنَّا دَمَّرۡنٰہُمۡ وَ قَوۡمَہُمۡ اَجۡمَعِیۡنَ ﴿۵۱﴾
কানযুল ঈমান
৫১. অতএব দেখো, কেমন পরিণতি হয়েছে তাদের চক্রান্তের। আমি ধ্বংস করে দিয়েছি তাদেরকে এবং তাদের সমগ্র সম্প্রদায়কে’।
ইরফানুল কুরআন
৫১. অতএব লক্ষ্য করুন, তাদের (প্রতারণাপূর্ণ) ষড়যন্ত্রের পরিণতি কেমন হয়েছিল, আমরা অবশ্যই তাদেরকে এবং তাদের (নেতাদেরসহ) সম্পূর্ণ সম্প্রদায়কে একত্রে ধ্বংস করে দিলাম।
فَتِلۡکَ بُیُوۡتُہُمۡ خَاوِیَۃًۢ بِمَا ظَلَمُوۡا ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیَۃً لِّقَوۡمٍ یَّعۡلَمُوۡنَ ﴿۵۲﴾
কানযুল ঈমান
৫২. সুতরাং এই হচ্ছে তাদের ঘরবাড়ী- জলশূন্য অবস্থায় পড়ে আছে, বদলা তাদের অত্যাচারের। নিশ্চয় তাতে নিদর্শন রয়েছে জ্ঞানীদের জন্য।
ইরফানুল কুরআন
৫২. সুতরাং তাদের গৃহগুলো উজাড় পড়ে রইলো, কারণ, তারা নিপীড়ন ও অবিচার করেছিল। নিশ্চয়ই এতে (সতর্কতামূলক) নিদর্শন রয়েছে জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্যে।
وَ اَنۡجَیۡنَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ کَانُوۡا یَتَّقُوۡنَ ﴿۵۳﴾
কানযুল ঈমান
৫৩. এবং আমি তাদেরকে উদ্ধার করে নিয়েছি যারা ঈমান এনেছে এবং ভয় করতো।
ইরফানুল কুরআন
৫৩. আর আমরা তাদের উদ্ধার করলাম যারা ঈমান এনেছিল এবং তাক্বওয়া অবলম্বন করেছিল।
وَ لُوۡطًا اِذۡ قَالَ لِقَوۡمِہٖۤ اَتَاۡتُوۡنَ الۡفَاحِشَۃَ وَ اَنۡتُمۡ تُبۡصِرُوۡنَ ﴿۵۴﴾
কানযুল ঈমান
৫৪. এবং লূতকে; যখন সে আপন সম্প্রদায়কে বললো, ‘তোমরা কী অশ্লীল কাজ করছো এবং তোমরা অনুধাবন করছো?
ইরফানুল কুরআন
৫৪. আর (স্মরণ করুন) লূত (আলাইহিস সালাম)-কে, যখন তিনি তার সম্প্রদায়কে বললেন, ‘তোমরা কি অশ্লীল কর্ম সম্পাদন করছো, অথচ তোমরা তা দেখতে(ও) পাচ্ছো?
اَئِنَّکُمۡ لَتَاۡتُوۡنَ الرِّجَالَ شَہۡوَۃً مِّنۡ دُوۡنِ النِّسَآءِ ؕ بَلۡ اَنۡتُمۡ قَوۡمٌ تَجۡہَلُوۡنَ ﴿۵۵﴾
কানযুল ঈমান
৫৫. তোমরা কি পুরুষদের নিকট যৌন প্রবৃত্তি সহকারে যাচ্ছো নারীদেরকে ছেড়ে? বরং তোমরা হলে অজ্ঞ লোক’।
ইরফানুল কুরআন
৫৫. তোমরা কি নিজেদের জৈবিক কামনা চরিতার্থ করতে নারীদের ছেড়ে পুরুষদের নিকট গমন করছো? বরং তোমরা তো মূর্খ সম্প্রদায়।’
فَمَا کَانَ جَوَابَ قَوۡمِہٖۤ اِلَّاۤ اَنۡ قَالُوۡۤا اَخۡرِجُوۡۤا اٰلَ لُوۡطٍ مِّنۡ قَرۡیَتِکُمۡ ۚ اِنَّہُمۡ اُنَاسٌ یَّتَطَہَّرُوۡنَ ﴿۵۶﴾
কানযুল ঈমান
৫৬. সুতরাং তার সম্প্রদায়ের কোন উত্তর ছিল না, কিন্তু এ যে, তারা বললো, ‘লূতের পরিবার পরিজনকে আপন বস্তি থেকে বের করে দাও! এসব লোক তো পবিত্রতা চাচ্ছে!’
ইরফানুল কুরআন
৫৬. অতঃপর তাঁর সম্প্রদায়ের উত্তর কেবল এ ছিল যে, তারা বলতে লাগলো, ‘লূতের পরিবারকে তোমাদের জনপদ থেকে বের করে দাও; তারা বড় পাক-পবিত্র সাজতে চায়।’
فَاَنۡجَیۡنٰہُ وَ اَہۡلَہٗۤ اِلَّا امۡرَاَتَہٗ ۫ قَدَّرۡنٰہَا مِنَ الۡغٰبِرِیۡنَ ﴿۵۷﴾
কানযুল ঈমান
৫৭. অতঃপর আমি তাকে ও আর পরিবার পরিজনকে উদ্ধার করেছি; কিন্তু তার স্ত্রীকে আমি রুখে দিয়েছি কারণ, সে যারা রয়ে গিয়েছিলো তাদেরই অন্তর্ভুক্ত।
ইরফানুল কুরআন
৫৭. অতঃপর আমরা লূত (আলাইহি সালাম) এবং তাঁর পরিবারকে রক্ষা করলাম, তাঁর স্ত্রীকে ব্যতীত; আমরা তাকে পশ্চাতে থেকে যাওয়া (শাস্তিপ্রাপ্ত) লোকদের মধ্যে গণ্য করলাম।
وَ اَمۡطَرۡنَا عَلَیۡہِمۡ مَّطَرًا ۚ فَسَآءَ مَطَرُ الۡمُنۡذَرِیۡنَ ﴿۵۸﴾
কানযুল ঈমান
৫৮. এবং আমি তাদের উপর এক বৃষ্টি বর্ষণ করেছি; সুতরাং তা কত মন্দ বর্ষণ ছিলো ভয় প্রদর্শিতদের জন্য !
ইরফানুল কুরআন
৫৮. আর আমরা তাদের উপর (পাথরের) ভারী বৃষ্টি বর্ষণ করলাম, সুতরাং (এসব) ভীতসন্ত্রস্ত লোকদের উপর (পাথরের) বর্ষণ ছিল খুবই ভয়াবহ।
قُلِ الۡحَمۡدُ لِلّٰہِ وَ سَلٰمٌ عَلٰی عِبَادِہِ الَّذِیۡنَ اصۡطَفٰی ؕ آٰللّٰہُ خَیۡرٌ اَمَّا یُشۡرِکُوۡنَ ﴿ؕ۵۹﴾
কানযুল ঈমান
৫৯. আপনি বলুন, ‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্রই এবং শান্তি তার মনোনীত বান্দাদের উপর’। শ্রেষ্ঠ কি আল্লাহ্ না তাদের গড়া শরীক?
ইরফানুল কুরআন
৫৯. বলে দিন, ‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্ তা’আলারই এবং শান্তি বর্ষিত হোক তাঁর মনোনীত (মর্যাদাবান) বান্দাদের প্রতি। আল্লাহ্ উত্তম নাকি ঐ সব (ভ্রান্ত উপাস্যরা) যাদেরকে এরা (তাঁর) অংশীদার সাব্যস্ত করে?’
اَمَّنۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ وَ اَنۡزَلَ لَکُمۡ مِّنَ السَّمَآءِ مَآءً ۚ فَاَنۡۢبَتۡنَا بِہٖ حَدَآئِقَ ذَاتَ بَہۡجَۃٍ ۚ مَا کَانَ لَکُمۡ اَنۡ تُنۡۢبِتُوۡا شَجَرَہَا ؕ ءَ اِلٰہٌ مَّعَ اللّٰہِ ؕ بَلۡ ہُمۡ قَوۡمٌ یَّعۡدِلُوۡنَ ﴿ؕ۶۰﴾
কানযুল ঈমান
৬০. না তিনি, যিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের জন্য আসমান থেকে বারি বর্ষণ করেন? অতঃপর আমি তা থেকে সৌন্দর্যমণ্ডিত বাগানসমূহ উদগত করেছি; তোমাদের ক্ষমতা ছিলো না সেগুলোর বৃক্ষাদি উদগত করার। আল্লাহ্র সাথে কি অন্য খোদাও আছে? বরং ওই সব লোক সৎপথ থেকে সরে পড়ছে।
ইরফানুল কুরআন
৬০. তবে তিনি কে যিনি আকাশমন্ডলী এবং পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের জন্যে আকাশ থেকে বারি বর্ষণ করেন? অতঃপর আমরা এ (পানি) থেকে সতেজ ও মনোরম উদ্যান সৃষ্টি করেছি, তোমাদের পক্ষে এতে (এ বাগানে) বৃক্ষ উদ্গত করা সম্ভব ছিল না। আল্লাহ্র সাথে কি (অন্য) কোনো উপাস্য আছে? বরং এরা সে সম্প্রদায় যারা (সত্যপথ থেকে) বিচ্যুত।
اَمَّنۡ جَعَلَ الۡاَرۡضَ قَرَارًا وَّ جَعَلَ خِلٰلَہَاۤ اَنۡہٰرًا وَّ جَعَلَ لَہَا رَوَاسِیَ وَ جَعَلَ بَیۡنَ الۡبَحۡرَیۡنِ حَاجِزًا ؕ ءَ اِلٰہٌ مَّعَ اللّٰہِ ؕ بَلۡ اَکۡثَرُہُمۡ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿ؕ۶۱﴾
কানযুল ঈমান
৬১. না তিনি, যিনি পৃথিবীকে বসবাস করার জন্য তৈরী করেছেন, সেটার মাঝে নদী-নালা প্রবাহিত করেছেন, সেটার জন্য নোঙ্গর সৃষ্টি করেছেন এবং উভয় সমুদ্রের মধ্যে অন্তরাল রেখেছেন? আল্লাহ্র সাথে কি অন্য খোদাও আছে? বরং তাদের মধ্যে অধিকাংশই অজ্ঞ।
ইরফানুল কুরআন
৬১. অথবা, তিনি কে যিনি পৃথিবীকে করেছেন বসবাসের উপযোগী এবং এর মাঝে প্রবাহিত করেছেন নদ-নদী এবং এর জন্যে স্থাপন করেছেন বিশাল পর্বতমালা; আর দুই (লবণাক্ত ও মিঠা পানির) সাগরের মাঝে সৃষ্টি করেছেন আড়াল? আল্লাহ্র সাথে কি (অন্য) কোনো উপাস্য রয়েছে? বরং এদের (এ কাফেরদের) অধিকাংশই জ্ঞান রাখে না।
اَمَّنۡ یُّجِیۡبُ الۡمُضۡطَرَّ اِذَا دَعَاہُ وَ یَکۡشِفُ السُّوۡٓءَ وَ یَجۡعَلُکُمۡ خُلَفَآءَ الۡاَرۡضِ ؕ ءَ اِلٰہٌ مَّعَ اللّٰہِ ؕ قَلِیۡلًا مَّا تَذَکَّرُوۡنَ ﴿ؕ۶۲﴾
কানযুল ঈমান
৬২. না তিনি, যিনি আর্তের আহ্বানে সাড়া দেন যখন তাকে আহ্বান করে এবং দূরীভূত করে দেন বিপদাপদ এবং তোমাদেরকে ভূ-খণ্ডের মালিক করেন? আল্লাহ্র সাথে কি অন্য খোদাও আছে? তোমরা খুব কম মনোযোগই দিচ্ছো।
ইরফানুল কুরআন
৬২. অথবা, তিনি কে যিনি দুশ্চিন্তাগ্রস্তের আহ্বানে সাড়া দেন যখন সে তাঁকে ডাকে, বিপদাপদ দূরীভুত করেন এবং তোমাদেরকে পৃথিবীতে (পূর্ববর্তীদের) উত্তরাধিকারী ও স্থলাভিষিক্ত করেন? আল্লাহ্র সাথে কি (অন্য) কোনো উপাস্য রয়েছে? তোমরা অতি সামান্যই উপদেশ গ্রহণ করে থাকো।
اَمَّنۡ یَّہۡدِیۡکُمۡ فِیۡ ظُلُمٰتِ الۡبَرِّ وَ الۡبَحۡرِ وَ مَنۡ یُّرۡسِلُ الرِّیٰحَ بُشۡرًۢا بَیۡنَ یَدَیۡ رَحۡمَتِہٖ ؕ ءَ اِلٰہٌ مَّعَ اللّٰہِ ؕ تَعٰلَی اللّٰہُ عَمَّا یُشۡرِکُوۡنَ ﴿ؕ۶۳﴾
কানযুল ঈমান
৬৩. না তিনি, যিনি তোমাদেরকে স্থল ও জলের পুঞ্জিভূত অন্ধকারে সৎপথ দেখান এবন যিনি বায়ুসমূহ প্রেরণ করেন আপন রহমতের পূর্বে সুসংবাদবাহী রূপে? আল্লাহ্র সাথে কি অন্য খোদাও আছে। আল্লাহ্ বহু ঊর্ধ্বে তাদের শির্ক থেকে।
ইরফানুল কুরআন
৬৩. অথবা, তিনি কে যিনি তোমাদেরকে জলে ও স্থলে অন্ধকারে পথ প্রদর্শন করেন এবং তিনি কে যিনি তাঁর রহমতের (বৃষ্টির) প্রাক্কালে সুসংবাদবাহী বায়ু প্রেরণ করেন? আল্লাহ্র সাথে কি (অন্য) কোনো উপাস্য রয়েছে? মহিমান্বিত আল্লাহ্ এ (ভ্রান্ত উপাস্যদের) থেকে অনেক উর্ধ্বে, যাদেরকে তারা অংশীদার সাব্যস্ত করে।
اَمَّنۡ یَّبۡدَؤُا الۡخَلۡقَ ثُمَّ یُعِیۡدُہٗ وَ مَنۡ یَّرۡزُقُکُمۡ مِّنَ السَّمَآءِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ ءَ اِلٰہٌ مَّعَ اللّٰہِ ؕ قُلۡ ہَاتُوۡا بُرۡہَانَکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ ﴿۶۴﴾
কানযুল ঈমান
৬৪. না তিনি, যিনি সৃষ্টির আরম্ভ করেন, অতঃপর সেটাকে পুনর্বার সৃষ্টি করেবেন? এবং যিনি তোমাদেরকে আসমানসমূহ ও যমীন থেকে জীবিকা প্রদান করেন? আল্লাহ্র সাথে কি অন্য খোদাও আছে? আপনি বলুন, ‘নিজেদের প্রমাণ হাযির করো যদি তোমরা সত্যবাদী হও!’
ইরফানুল কুরআন
৬৪. তবে তিনি কে যিনি সৃষ্টিজগতের সৃষ্টির সূচনা করেন, অতঃপর এতে (এ সৃষ্টির প্রক্রিয়ায়) পুনরাবৃত্তি ঘটাবেন, আর তিনি কে যিনি তোমাদেরকে আকাশ ও পৃথিবী থেকে জীবনোপকরণ দান করেন? আল্লাহ্র সাথে কি (অন্য) কোনো উপাস্য আছে? বলে দিন, ‘(হে মুশরিকেরা!) নিজেদের প্রমাণ উপস্থাপন করো যদি তোমরা সত্যবাদী হও।’
قُلۡ لَّا یَعۡلَمُ مَنۡ فِی السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ الۡغَیۡبَ اِلَّا اللّٰہُ ؕ وَ مَا یَشۡعُرُوۡنَ اَیَّانَ یُبۡعَثُوۡنَ ﴿۶۵﴾
কানযুল ঈমান
৬৫. আপনি বলুন, নিজ থেকে ‘অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান রাখে না যারা আসমানসমূহ ও যমীনে রয়েছে, আল্লাহ্ ব্যতীত। এবং তাদের খবর নেই তারা কবে পুনরুত্থিত হবে।
ইরফানুল কুরআন
৬৫. বলে দিন, ‘আকাশমন্ডলী এবং পৃথিবীতে যারা রয়েছে তারা (নিজ থেকে) অদৃশ্যের জ্ঞান রাখে না, আল্লাহ্ (যিনি সত্তাগতভাবে জ্ঞানী তিনি) ব্যতীত। আর তারা এও জানে না যে, কখন তাদেরকে (আবার জীবিত) পুনরুত্থিত করা হবে।’
بَلِ ادّٰرَکَ عِلۡمُہُمۡ فِی الۡاٰخِرَۃِ ۟ بَلۡ ہُمۡ فِیۡ شَکٍّ مِّنۡہَا ۫۟ بَلۡ ہُمۡ مِّنۡہَا عَمُوۡنَ ﴿۶۶﴾
কানযুল ঈমান
৬৬. তাদের জ্ঞান পরম্পরা কি আখিরাত সম্পর্কে জানা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে? কেউ নেই; বরং তারা সেটার দিক থেকে সন্দেহের মধ্যে রয়েছে; বরং তারা সে বিষয়ে অন্ধ।
ইরফানুল কুরআন
৬৬. বরং পরকাল সম্পর্কে তাদের জ্ঞান (নিজ) সীমায় পৌঁছে নিঃশেষ হয়ে গিয়েছে, তবে তারা এ বিষয়ে কেবল সন্দেহে (নিমজ্জিত) রয়েছে; বস্তুত তারা এতে (সঠিক জ্ঞানের বিষয়ে) অন্ধ।
وَ قَالَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡۤا ءَ اِذَا کُنَّا تُرٰبًا وَّ اٰبَآؤُنَاۤ اَئِنَّا لَمُخۡرَجُوۡنَ ﴿۶۷﴾
কানযুল ঈমান
৬৭. এবং কাফিরগণ বললো, ‘যখন আমরা ও আমাদের পিতৃপুরুষগণ মাটি হয়ে যাবো তখনও কি আমাদেরকে পুনরায় বের করা হবে?
ইরফানুল কুরআন
৬৭. আর কাফেরেরা বলে, ‘যখন আমরা এবং আমাদের পিতৃপুরুষেরা (মৃত্যুর পর) মৃত্তিকায় পর্যবসিত হাবো তখনো কি আমাদেরকে (কবর থেকে) পুনরুত্থিত করা হবে?
لَقَدۡ وُعِدۡنَا ہٰذَا نَحۡنُ وَ اٰبَآؤُنَا مِنۡ قَبۡلُ ۙ اِنۡ ہٰذَاۤ اِلَّاۤ اَسَاطِیۡرُ الۡاَوَّلِیۡنَ ﴿۶۸﴾
কানযুল ঈমান
৬৮. নিশ্চয় এ কথার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে আমাদেরকে ও আমাদের পিতৃপুরুষদের আমাদের পূর্বে। এ’তো কেবল পূর্ববর্তীদের কিচ্ছা-কাহিনীই’।
ইরফানুল কুরআন
৬৮.প্রকৃতপক্ষে এ অঙ্গীকার আমাদেরকে এবং এর পূর্বে আমাদের পিতৃপুরুষদেরকেও করা হয়েছিল। এসব পূর্ববতী লোকদের মনগড়া উপকথা ব্যতীত আর কিছু নয়।’
قُلۡ سِیۡرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ فَانۡظُرُوۡا کَیۡفَ کَانَ عَاقِبَۃُ الۡمُجۡرِمِیۡنَ ﴿۶۹﴾
কানযুল ঈমান
৬৯. আপনি বলুন, ‘পৃথিবী পৃষ্ঠে ভ্রমণ করে দেখো অপরাধীদের কেমন পরিণতি হয়েছে’।
ইরফানুল কুরআন
৬৯. বলে দিন, ‘পৃথিবীতে ভ্রমণ করো এবং দেখো অপরাধীদের পরিণাম কেমন হয়েছে’।
وَ لَا تَحۡزَنۡ عَلَیۡہِمۡ وَ لَا تَکُنۡ فِیۡ ضَیۡقٍ مِّمَّا یَمۡکُرُوۡنَ ﴿۷۰﴾
কানযুল ঈমান
৭০. আর আপনি তাদের সম্পর্কে দুঃখ করবেন না এবং তাদের ষড়যন্ত্রে মনঃক্ষুণ্ণ হবেন না’।
ইরফানুল কুরআন
৭০. আর (হে মহাসম্মানিত হাবীব!) আপনি তাদের (কথার) কারণে দুঃখ পাবেন না, তাদের ধোঁকাবাজি ও প্রতারণায় (নিমজ্জিত ও) মনঃক্ষুণ্ণও হবেন না।
وَ یَقُوۡلُوۡنَ مَتٰی ہٰذَا الۡوَعۡدُ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ ﴿۷۱﴾
কানযুল ঈমান
৭১. এবং বলে, ‘কবে আসবে এ প্রতিশ্রুতি যদি তোমরা সত্যবাদী হও!’
ইরফানুল কুরআন
৭১. আর তারা বলে, ‘যদি তোমরা সত্যবাদী হও তবে (বলো পরকালের শাস্তির) এ অঙ্গীকার কখন পূর্ণ হবে’।
قُلۡ عَسٰۤی اَنۡ یَّکُوۡنَ رَدِفَ لَکُمۡ بَعۡضُ الَّذِیۡ تَسۡتَعۡجِلُوۡنَ ﴿۷۲﴾
কানযুল ঈমান
৭২. আপনি বলুন, ‘এ কথা নিকটবর্তী যে, তোমাদের পেছনে এসে পড়েছে সে সব বস্তুর কিছুটা যে বিষয়ে তোমরা ত্বরান্বিত করছো’।
ইরফানুল কুরআন
৭২. বলে দিন, ‘খুব দূরে নয়, (এ শাস্তি)-এর কিছু অংশ তোমাদের নিকটে এসে পৌঁছুবে যা তোমরা দ্রুত কামনা করছো’।
وَ اِنَّ رَبَّکَ لَذُوۡ فَضۡلٍ عَلَی النَّاسِ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَہُمۡ لَا یَشۡکُرُوۡنَ ﴿۷۳﴾
কানযুল ঈমান
৭৩. এবং নিশ্চয় তোমার রব মানুষের প্রতি অনুগ্রহশীল, কিন্তু অধিকাংশ লোক সত্যকে স্বীকার করে না।
ইরফানুল কুরআন
৭৩. আর নিশ্চয়ই আপনার প্রতিপালক মানুষের প্রতি অনুগ্রহশীল, কিন্তু তাদের অধিকাংশই অকৃতজ্ঞ।
وَ اِنَّ رَبَّکَ لَیَعۡلَمُ مَا تُکِنُّ صُدُوۡرُہُمۡ وَ مَا یُعۡلِنُوۡنَ ﴿۷۴﴾
কানযুল ঈমান
৭৪. এবং নিশ্চয় আপনার রব জানেন যা তাদের বক্ষগুলোতে গোপন রয়েছে এবং যা তারা প্রকাশ করে।
ইরফানুল কুরআন
৭৪. আর অবশ্যই আপনার প্রতিপালক (সে কথা) জানেন যা এরা এদের অন্তরে লুকিয়ে রাখে এবং (এ কথাও) যা এরা প্রকাশ করে।
وَ مَا مِنۡ غَآئِبَۃٍ فِی السَّمَآءِ وَ الۡاَرۡضِ اِلَّا فِیۡ کِتٰبٍ مُّبِیۡنٍ ﴿۷۵﴾
কানযুল ঈমান
৭৫. এবং আসমানসমূহ ও যমীনের যত অদৃশ্য বিষয় রয়েছে সবই এক বর্ণনাকারী কিতাবের মধ্যে রয়েছে’।
ইরফানুল কুরআন
৭৫. আর আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে এমন কিছুই গোপন নেই যা (লাওহে মাহফুযে সংরক্ষিত) সুস্পষ্ট কিতাবে (লিপিবদ্ধ) নেই।
اِنَّ ہٰذَا الۡقُرۡاٰنَ یَقُصُّ عَلٰی بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ اَکۡثَرَ الَّذِیۡ ہُمۡ فِیۡہِ یَخۡتَلِفُوۡنَ ﴿۷۶﴾
কানযুল ঈমান
৭৬. নিশ্চয় এ ক্বোরআন বনী-ইস্রাঈলের নিকট ওই সব কথার অধিকাংশই উল্লেখ করছে যেগুলো সম্বন্ধে তারা মতভেদ করে।
ইরফানুল কুরআন
৭৬. নিশ্চয়ই এ কুরআন বনী ইসরাঈলের নিকট অধিকাংশ বিষয় বর্ণনা করে যে ব্যাপারে তারা মতবিরোধ করে।
وَ اِنَّہٗ لَہُدًی وَّ رَحۡمَۃٌ لِّلۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۷۷﴾
কানযুল ঈমান
৭৭. এবং নিশ্চয় সেটা হিদায়ত ও রহমত মুসলমানদের জন্য।
ইরফানুল কুরআন
৭৭. আর নিশ্চয়ই এটি হেদায়াত এবং মু’মিনদের জন্যে রহমত।
اِنَّ رَبَّکَ یَقۡضِیۡ بَیۡنَہُمۡ بِحُکۡمِہٖ ۚ وَ ہُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡعَلِیۡمُ ﴿ۙۚ۷۸﴾
কানযুল ঈমান
৭৮. নিশ্চয় আপনার রব তাদের পরস্পরের মধ্যে মীমাংসা করে দেন স্বীয় নির্দেশ দ্বারা এবং তিনিই হন সম্মানের অধিকারী, জ্ঞানী।
ইরফানুল কুরআন
৭৮. আর অবশ্যই আপনার প্রতিপালক তাদের (অর্থাৎ কাফের ও মু’মিনগণের) মাঝে তাঁর (ন্যায়সঙ্গত) বিধানের মাধ্যমে ফায়সালা করবেন। আর তিনি মহাপরাক্রমশালী, মহাজ্ঞানী।
فَتَوَکَّلۡ عَلَی اللّٰہِ ؕ اِنَّکَ عَلَی الۡحَقِّ الۡمُبِیۡنِ ﴿۷۹﴾
কানযুল ঈমান
৭৯. সুতরাং আপনি আল্লাহ্র উপর নির্ভর করুন। নিশ্চয় আপনি সুস্পষ্ট সত্যের উপর রয়েছেন।
ইরফানুল কুরআন
৭৯. অতঃপর আপনি আল্লাহ্র উপর ভরসা করুন, নিশ্চয়ই আপনি স্পষ্ট সত্যের উপর (দৃঢ় এবং অবিচল) রয়েছেন।
اِنَّکَ لَا تُسۡمِعُ الۡمَوۡتٰی وَ لَا تُسۡمِعُ الصُّمَّ الدُّعَآءَ اِذَا وَلَّوۡا مُدۡبِرِیۡنَ ﴿۸۰﴾
কানযুল ঈমান
৮০. নিশ্চয় আপনার শুনানো (কথা) শুনতে পায় না মৃতরা এবং না আপনার শুনানো (আহ্বান) বধির শুনতে পায় যখন ফিরে যায় পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে।
ইরফানুল কুরআন
৮০. (হে হাবীব!) নিশ্চয় আপনি না এ মৃতদেরকে (অর্থাৎ ঈমানের সঞ্জীবনী থেকে বঞ্চিত কাফেরদেরকে) আপনার আহ্বান শোনাতে পারবেন, আর না (সত্যের আহ্বান শ্রবণ থেকে বঞ্চিত) বধিরদেরকে; যখন তারা (আপনার থেকেই) মুখ ফিরিয়ে নেয়।** এখানে ‘আল-মাওতা’ (মৃত) এবং ‘আস-সুম্মা’ (বধির) দ্বারা কাফেরদেকে উদ্দেশ্য করা হয়েছে। সাহাবা ও তাবেয়ীন থেকেও অনুরূপ অর্থ বর্ণিত হয়েছে। বিভিন্ন তাফসীরের উদ্ধৃতি লক্ষণীয়; তাফসীরুল লুবাব লি ইবনে আদিল দামেশকী, তাফসীরুল তাবারী, তাফসীরুল কুরতুবী, তাফসীরুল বাগভী, যাদুল মুয়াস্সার লি ইবনিল জাওযী, তাফসীর ইবনে কাসীর, আদ দুররুল মানছুর লিস সূয়ূতী এবং ফাতহুল ক্বাদীর লিশ শাওকানী।
وَ مَاۤ اَنۡتَ بِہٰدِی الۡعُمۡیِ عَنۡ ضَلٰلَتِہِمۡ ؕ اِنۡ تُسۡمِعُ اِلَّا مَنۡ یُّؤۡمِنُ بِاٰیٰتِنَا فَہُمۡ مُّسۡلِمُوۡنَ ﴿۸۱﴾
কানযুল ঈমান
৮১. এবং অন্ধ লোকদেরক ভ্রান্ত থেকে আপনি হিদায়তকারী নন। আপনার শুনানো কথা তো তারাই শোনে, যারা আমার নিদর্শনাবলীর উপর ঈমান আনে; আর তারা হচ্ছে মুসলমান।
ইরফানুল কুরআন
৮১. আর আপনি (মনের) দৃষ্টিহীনকে পথভ্রষ্টতা থেকে (বাঁচাতে) সৎপথ দেখাতে পারবেন না। আপনি তো (প্রকৃতপক্ষে) তাদেরকে শোনান যারা (আপনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে) আমাদের নির্দেশনাবলীর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে। সুতরাং তারাই আত্মসমর্পণকারী (মুসলমান। আর জীবিত শব্দটি তাদের ব্যাপারেই প্রাযোজ্য।)
وَ اِذَا وَقَعَ الۡقَوۡلُ عَلَیۡہِمۡ اَخۡرَجۡنَا لَہُمۡ دَآبَّۃً مِّنَ الۡاَرۡضِ تُکَلِّمُہُمۡ ۙ اَنَّ النَّاسَ کَانُوۡا بِاٰیٰتِنَا لَا یُوۡقِنُوۡنَ ﴿۸۲﴾
কানযুল ঈমান
৮২. এবং যখন বাণী তাদের উপর এসে পড়বে, তখন আমি মাটির গর্ভ থেকে তাদের জন্য এক জীব বের করবো, যা মানুষের সাথে কথা বলবে; এ জন্য যে, লোকেরা আমার নিদর্শনসমূহের উপর ঈমান আনতো না।
ইরফানুল কুরআন
৮২. আর যখন তাদের বিরুদ্ধে (শাস্তির) নির্দেশ বাস্তবায়নের সময় আসবে তখন আমরা তাদের জন্যে ভুগর্ভ থেকে এমন এক প্রাণী বের করবো যা তাদের সাথে কথোপকথন করবে; বস্তুতঃ মানুষ আমাদের নিদর্শনাবলী বিশ্বাস করে না।
وَ یَوۡمَ نَحۡشُرُ مِنۡ کُلِّ اُمَّۃٍ فَوۡجًا مِّمَّنۡ یُّکَذِّبُ بِاٰیٰتِنَا فَہُمۡ یُوۡزَعُوۡنَ ﴿۸۳﴾
কানযুল ঈমান
৮৩. এবং যে দিন আমি একত্রিত করবো প্রত্যেক সম্প্রদায় থেকে একটা দলকে, যারা আমার নিদর্শনসমূহকে অস্বীকার করে; অতঃপর তাদের অগ্রগামীদেরকে বাধা দেওয়া হবে, যাতে পেছনের লোকেরা তাদের সাথে এসে মিলিত হয়;
ইরফানুল কুরআন
৮৩. আর যে দিন আমরা প্রতিটি দলকে (এক এক করে) একত্রিত করবো যারা আমার নিদর্শনাবলীকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করতো, তখন তাদেরকে (একত্রে গমনের জন্যে সামনের দিক থেকে) রুখে দেয়া হবে।
حَتّٰۤی اِذَا جَآءُوۡ قَالَ اَکَذَّبۡتُمۡ بِاٰیٰتِیۡ وَ لَمۡ تُحِیۡطُوۡا بِہَا عِلۡمًا اَمَّا ذَا کُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۸۴﴾
কানযুল ঈমান
৮৪. শেষ পর্যন্ত যখন সবাই সমবেত হয়ে যাবে তখন বলবেন, ‘তোমরা কি আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছো, অথচ তোমাদের জ্ঞান সেগুলো পর্যন্ত পৌঁছে নি, অথবা তোমরা কি কাজ করতে?’
ইরফানুল কুরআন
৮৪. অবশেষে তারা সকলে (হিসাব-নিকাশের স্থলে) এসে পৌঁছুবে, তখন বলা হবে, ‘তোমরা কি (চিন্তা-ভাবনা ছাড়াই) আমার নিদর্শনাবলীকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করতে? অথচ তোমরা (নিজেদের অপরিপক্ক) জ্ঞানে এগুলো পরিপূর্ণরূপে জানতেও না। অথবা (তোমরাই বলো) এ ছাড়া আর কী (কারণ) ছিল যাতে তোমরা (সত্যকে অস্বীকার) করতে।’
وَ وَقَعَ الۡقَوۡلُ عَلَیۡہِمۡ بِمَا ظَلَمُوۡا فَہُمۡ لَا یَنۡطِقُوۡنَ ﴿۸۵﴾
কানযুল ঈমান
৮৫. এবং (শাস্তির) বাণী এসে পড়েছে তাদের উপর তাদের যুল্মের কারণে। সুতরাং এখন তারা আর কিছুই বলে না।
ইরফানুল কুরআন
৮৫. আর তাদের বিরুদ্ধে (আমাদের) অঙ্গীকার বাস্তবায়ন হয়ে যাবে, কারণ, তারা অন্যায় অব্যাহত রেখেছিল। ফলে তারা (উত্তরে) কিছুই বলতে পারবে না।
اَلَمۡ یَرَوۡا اَنَّا جَعَلۡنَا الَّیۡلَ لِیَسۡکُنُوۡا فِیۡہِ وَ النَّہَارَ مُبۡصِرًا ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیٰتٍ لِّقَوۡمٍ یُّؤۡمِنُوۡنَ ﴿۸۶﴾
কানযুল ঈমান
৮৬. তারা কি দেখে নি যে, আমি রাত সৃষ্টি করেছি যেন তারা বিশ্রাম নিতে পারে এবং দিন সৃষ্টি করেছি প্রদর্শনকারীরূপে; নিশ্চয় তাতে অবশ্যই নিদর্শনাদি রয়েছে ওই সব লোকের জন্য যারা ঈমান রাখে।
ইরফানুল কুরআন
৮৬. তারা কি দেখে না যে, আমরা রাত্রি সৃষ্টি করেছি যাতে তারা এতে বিশ্রাম নিতে পারে এবং দিবসকে করেছি আলোকোজ্জ্বল (যাতে তারা জীবনের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় বিষয়াদি সারতে পারে)? নিশ্চয়ই এতে ঐসব লোকের জন্যে রয়েছে নিদর্শন যারা বিশ্বাস রাখে।
وَ یَوۡمَ یُنۡفَخُ فِی الصُّوۡرِ فَفَزِعَ مَنۡ فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَنۡ فِی الۡاَرۡضِ اِلَّا مَنۡ شَآءَ اللّٰہُ ؕ وَ کُلٌّ اَتَوۡہُ دٰخِرِیۡنَ ﴿۸۷﴾
কানযুল ঈমান
৮৭. এবং যে দিন ফুঁৎকার করা হবে শিঙ্গায়, তখন ভীত-বিহ্বল হয়ে পড়বে যতকিছু আসমানসমূহে রয়েছে এবং যতকিছু যমীনের মধ্যে রয়েছে, কিন্তু যাকে আল্লাহ্ ইচ্ছা করেন; আর সবাই তার সম্মুখে হাযির হবে বিনীত অবস্থায়।
ইরফানুল কুরআন
৮৭. আর যে দিন শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে সে দিন আকাশমন্ডলী এবং পৃথিবীতে যারা রয়েছে তারা (সকলেই) ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়বে, যাদেরকে আল্লাহ্ চান তারা ব্যতীত। আর সকলেই তাঁর সমীপে উপস্থিত হবে অবনমিত হয়ে।
وَ تَرَی الۡجِبَالَ تَحۡسَبُہَا جَامِدَۃً وَّ ہِیَ تَمُرُّ مَرَّ السَّحَابِ ؕ صُنۡعَ اللّٰہِ الَّذِیۡۤ اَتۡقَنَ کُلَّ شَیۡءٍ ؕ اِنَّہٗ خَبِیۡرٌۢ بِمَا تَفۡعَلُوۡنَ ﴿۸۸﴾
কানযুল ঈমান
৮৮. এবং তুমি দেখবে পর্বতমালাকে মনে করবে যে, সেগুলো অটল হয়ে আছে এবং সেগুলো চলতে থাকবে মেঘের চলার ন্যায়। এটা আল্লাহ্র কাজ, যিনি প্রত্যেক বস্তুকে নৈপুণ্য সহকারে সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় তিনি খবর রাখেন তোমাদের কর্মসমূহের।
ইরফানুল কুরআন
৮৮. আর (হে মানুষ!) তুমি পর্বতমালাকে দেখে মনে করবে তা স্থির রয়েছে অথচ সেগুলো হবে মেঘপুঞ্জের উড়ে চলার ন্যায় সঞ্চরণশীল। (এটি) আল্লাহ্ তা’আলার সৃষ্টিনৈপূণ্য যিনি সকল কিছুকে (প্রজ্ঞা ও কৌশলের দ্বারা) মজবুত ও সুদৃঢ় করে রেখেছেন। অবশ্যই তিনি সকল (কর্মকান্ডের) বিষয়ে খবর রাখেন যা তোমরা সম্পাদন করো।
مَنۡ جَآءَ بِالۡحَسَنَۃِ فَلَہٗ خَیۡرٌ مِّنۡہَا ۚ وَ ہُمۡ مِّنۡ فَزَعٍ یَّوۡمَئِذٍ اٰمِنُوۡنَ ﴿۸۹﴾
কানযুল ঈমান
৮৯. যে ব্যক্তি সৎকর্ম নিয়ে আসবে তার জন্য তদপেক্ষা উত্তম প্রতিদান রয়েছে; এবং তাদের জন্য ওই দিনের ভয় থেকে নিরাপত্তা রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৮৯. যে ব্যক্তি (সে দিন) নেকী নিয়ে আগমন করবে তার জন্যে থাকবে এর চেয়েও উত্তম (প্রতিদান)। আর তারা সে দিন ভীতসন্ত্রস্ত হওয়া থেকে নিরাপদ ও প্রশান্তিতে থাকবে।
وَ مَنۡ جَآءَ بِالسَّیِّئَۃِ فَکُبَّتۡ وُجُوۡہُہُمۡ فِی النَّارِ ؕ ہَلۡ تُجۡزَوۡنَ اِلَّا مَا کُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۹۰﴾
কানযুল ঈমান
৯০. এবং যারা অসৎকর্ম নিয়ে আসবে, তবে তাদেরকে অধোমুখ করে আগুনে নিক্ষেপ করা হবে। ‘তোমরা কী প্রতিফল পাবে? কিন্তু ওই কাজের জন্য যা তোমরা করছিলে’।
ইরফানুল কুরআন
৯০. আর যে ব্যক্তি মন্দ নিয়ে আগমন করবে তাদেরকে অধোমুখে (জাহান্নামের) অগ্নিতে নিক্ষেপ করা হবে। সুতরাং তোমাদেরকে তার প্রতিদানই দেয়া হবে যা তোমরা করতে।
اِنَّمَاۤ اُمِرۡتُ اَنۡ اَعۡبُدَ رَبَّ ہٰذِہِ الۡبَلۡدَۃِ الَّذِیۡ حَرَّمَہَا وَ لَہٗ کُلُّ شَیۡءٍ ۫ وَّ اُمِرۡتُ اَنۡ اَکُوۡنَ مِنَ الۡمُسۡلِمِیۡنَ ﴿ۙ۹۱﴾
কানযুল ঈমান
৯১. আমাকে তো এ-ই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন আমি ইবাদত করি এ শহরের রবের, যিনি সেটাকে সম্মানিত করেছেনে সব সবকিছু তারই। আর আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন আমি অনুগতদের অন্তর্ভুক্ত হই।
ইরফানুল কুরআন
৯১. (আপনি তাদেরকে বলে দিন:) ‘আমাকে তো নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে এ (মক্কা) শহরের প্রতিপালকের ইবাদত করতে যিনি একে সম্মানিত ও মর্যাদাবান করেছেন। আর সকল কিছু তাঁরই (অধিকারে)। আর আমাকে (এ) নির্দেশ(ও) দেয়া হয়েছে যে, আমি (আল্লাহ্র) অনুগতদের মধ্যে থাকবো,
وَ اَنۡ اَتۡلُوَا الۡقُرۡاٰنَ ۚ فَمَنِ اہۡتَدٰی فَاِنَّمَا یَہۡتَدِیۡ لِنَفۡسِہٖ ۚ وَ مَنۡ ضَلَّ فَقُلۡ اِنَّمَاۤ اَنَا مِنَ الۡمُنۡذِرِیۡنَ ﴿۹۲﴾
কানযুল ঈমান
৯২. এবং এরও যেন ক্বোরআন পাঠ করি। সুতরাং যে সঠিক পথ পেয়েছে সে নিজের মঙ্গলের জন্য সৎপথ পেয়েছে। আর যে পথভ্রষ্ট হয়েছে, তবে আপনি বলে দিন, ‘আমি তো এ-ই সতর্ককারী হই’।
ইরফানুল কুরআন
৯২. এও যে, আমি কুরআন পাঠ করে শোনাতে থাকবো। সুতরাং যে ব্যক্তি হেদায়াত গ্রহণ করেছে সে ব্যক্তি নিজের উপকারের জন্যেই হেদায়াত গ্রহণ করেছে। আর যে ব্যক্তি ভ্রান্ত পথে রয়েছে তবে আপনি বলে দিন, ‘আমি তো কেবল সতর্ককারী’।
وَ قُلِ الۡحَمۡدُ لِلّٰہِ سَیُرِیۡکُمۡ اٰیٰتِہٖ فَتَعۡرِفُوۡنَہَا ؕ وَ مَا رَبُّکَ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۹۳﴾
কানযুল ঈমান
৯৩. এবং বলুন, ‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্র জন্য; অবিলম্বে তিনি আপনাকে আপন নিদর্শনসমূহ দেখাবেন, তখন তোমরা সেগুলোকে চিনতে পারবে। এবং হে মাহবূব, আপনার রব অনবহিত নন, হে লোকেরা! তোমাদের কার্যাদি সম্পর্কে।
ইরফানুল কুরআন
৯৩. আর আপনি বলে দিন, ‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্ তা’আলারই, অচিরেই তিনি তোমাদেরকে তাঁর নিদর্শনাবলী দেখাবেন; সুতরাং তোমরা তা চিনতে পারবে।’ আর আপনার প্রতিপালক সেসব কর্মকান্ড সম্পর্কে অনবহিত নন যা তোমরা করছো।