بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
কানযুল ঈমান
০. আল্লাহ্র নামে আরম্ভ, যিনি পরম দয়ালু, করুণাময় (১)
ইরফানুল কুরআন
০. আল্লাহর নামে শুরু, যিনি পরম করুণাময়, সতত অসীম দয়ালু।
سَبَّحَ لِلّٰہِ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الۡاَرۡضِ ۚ وَ ہُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ ﴿۱﴾
কানযুল ঈমান
১. আল্লাহ্র পবিত্রতা ঘোষণা করে যা কিছু আস্মানসমূহে রয়েছে ও যা কিছু যমীনে রয়েছে; এবং তিনি সম্মান ও প্রজ্ঞাময়।
ইরফানুল কুরআন
১. যা কিছু আকাশমন্ডলীতে ও যা কিছু পৃথিবীতে রয়েছে (সবই) আল্লাহ্র পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। আর তিনি মহিমান্বিত ও মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাবান।
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لِمَ تَقُوۡلُوۡنَ مَا لَا تَفۡعَلُوۡنَ ﴿۲﴾
কানযুল ঈমান
২. হে ঈমানদারগণ! তা কেন বলো, যা করো না?
ইরফানুল কুরআন
২. হে ঈমানদারগণ! তোমরা কেন তা বলো যা তোমরা করো না?
کَبُرَ مَقۡتًا عِنۡدَ اللّٰہِ اَنۡ تَقُوۡلُوۡا مَا لَا تَفۡعَلُوۡنَ ﴿۳﴾
কানযুল ঈমান
৩. আল্লাহ্র নিকট কেমন জঘন্য অপছন্দীয় ওই কথা যে, তাই বলবে যা করবে না।
ইরফানুল কুরআন
৩. আল্লাহ্ তা'আলার কাছে সবচেয়ে অপছন্দনীয় যে, তোমরা সে কথা বলো যা তোমরা নিজেরা করো না।
اِنَّ اللّٰہَ یُحِبُّ الَّذِیۡنَ یُقَاتِلُوۡنَ فِیۡ سَبِیۡلِہٖ صَفًّا کَاَنَّہُمۡ بُنۡیَانٌ مَّرۡصُوۡصٌ ﴿۴﴾
কানযুল ঈমান
৪. নিশ্চয় আল্লাহ্ ভালোবাসেন তাদেরকে, যারা তাঁর পথে জিহাদ করে এমনই সারিবদ্ধ হয়ে যেন তারা সীসা ঢালাইকৃত ইমারত।
ইরফানুল কুরআন
৪. নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তাদেরকে ভালোবাসেন যারা তাঁর পথে (এমন) সারিবদ্ধ হয়ে লড়াই করে যেন তারা (অন্যায়, অত্যাচার ও সন্ত্রাসবাদ দূরীকরণ এবং শান্তি ও মানবিক মর্যাদা ফিরিয়ে আনতে) শীশা নির্মিত প্রাচীর।
وَ اِذۡ قَالَ مُوۡسٰی لِقَوۡمِہٖ یٰقَوۡمِ لِمَ تُؤۡذُوۡنَنِیۡ وَ قَدۡ تَّعۡلَمُوۡنَ اَنِّیۡ رَسُوۡلُ اللّٰہِ اِلَیۡکُمۡ ؕ فَلَمَّا زَاغُوۡۤا اَزَاغَ اللّٰہُ قُلُوۡبَہُمۡ ؕ وَ اللّٰہُ لَا یَہۡدِی الۡقَوۡمَ الۡفٰسِقِیۡنَ ﴿۵﴾
কানযুল ঈমান
৫. এবং স্মরণ করুন! যখন মূসা আপন সম্প্রদায়কে বললো, ‘হে আমার সম্প্রদায়, আমাকে কেন কষ্ট দিচ্ছো? অথচ তোমরা জানো যে, আমি তোমাদের প্রতি আল্লাহ্র রসূল। অতঃপর যখন তারা বক্র হলো। আল্লাহ্ তাদের অন্তরকে বক্র করে দিলেন এবং আল্লাহ্ ফাসিক্ব লোকদেরকে সঠিক পথ প্রদান করেন না।
ইরফানুল কুরআন
৫. আর (হে হাবীব! স্মরণ করুন সে সময়ের কথা) যখন মুসা (আলাইহিস সালাম) তাঁর সম্প্রদায়কে বললেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আমাকে কেন কষ্ট দিচ্ছো যখন তোমরা জানো যে আমি তোমাদের প্রতি আল্লাহ্র (প্রেরিত) রাসূল?’ অতঃপর যখন তারা বক্রতা অবলম্বন করলো তখন আল্লাহ্ তাদের অন্তর বক্র করে দিলেন। কারণ আল্লাহ্ পাপাচারী সম্প্রদায়কে পথপ্রদর্শন করেন না।
وَ اِذۡ قَالَ عِیۡسَی ابۡنُ مَرۡیَمَ یٰبَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ اِنِّیۡ رَسُوۡلُ اللّٰہِ اِلَیۡکُمۡ مُّصَدِّقًا لِّمَا بَیۡنَ یَدَیَّ مِنَ التَّوۡرٰىۃِ وَ مُبَشِّرًۢا بِرَسُوۡلٍ یَّاۡتِیۡ مِنۡۢ بَعۡدِی اسۡمُہٗۤ اَحۡمَدُ ؕ فَلَمَّا جَآءَہُمۡ بِالۡبَیِّنٰتِ قَالُوۡا ہٰذَا سِحۡرٌ مُّبِیۡنٌ ﴿۶﴾
কানযুল ঈমান
৬. এবং স্মরণ করুন! যখন মরিয়ময় তনয় ঈসা বললো, ‘হে বনী ইস্রাঈল! আমি তোমাদের প্রতি আল্লাহ্র রসূল; আমার পূর্বেকার কিতাব তাওরীতের সত্যায়নকারী এবং ওই (সম্মানিত) রসূলের সুসংবাদদাতা হয়ে, যিনি আমার পরে তাশরীফ আনবেন, তাঁর নাম ‘আহমদ’। অতঃপর যখন (আহমদ) তাদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শনাদি নিয়ে তাশরীফ আনলেন, তখন তারা বললো, ‘এতো সুস্পষ্ট যাদু’।
ইরফানুল কুরআন
৬. আর (স্মরণ করুন সে সময়ের কথাও) যখন মারইয়াম তনয় ঈসা (আলাইহিমাস সালাম) বললেন, ‘হে বনী ইসরাঈল! নিশ্চয়ই আমি তোমাদের নিকট আল্লাহ্র (প্রেরিত) রাসূল, আমার পূর্ববর্তী কিতাব তাওরাতের সত্যায়নকারী এবং সে (সম্মানিত) রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের আগমন)-এঁর সুসংবাদদাতা, যিনি আমার পরে আগমন করবেন, (আকাশে এখন) যার নাম আহমদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)। অতঃপর যখন সে (সর্বশেষ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম) সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী নিয়ে আগমন করলেন তখন তারা বলতে লাগলো, ‘এ তো সুস্পষ্ট যাদু’।
وَ مَنۡ اَظۡلَمُ مِمَّنِ افۡتَرٰی عَلَی اللّٰہِ الۡکَذِبَ وَ ہُوَ یُدۡعٰۤی اِلَی الۡاِسۡلَامِ ؕ وَ اللّٰہُ لَا یَہۡدِی الۡقَوۡمَ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۷﴾
কানযুল ঈমান
৭. এবং তাঁর চেয়ে বড় যালিম কে যে আল্লাহ্ সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা করে, অথচ তাকে ইসলামের প্রতি আহ্বান করা হয়? এবং যালিম লোকদেরকে আল্লাহ্ সৎপথ প্রদান করেন না।
ইরফানুল কুরআন
৭. আর তার চেয়ে বড় যালিম কে, যে আল্লাহ্র উপর মিথ্যা অপবাদ দেয়, অথচ তাকে ইসলামের দিকে আহ্বান করা হচ্ছে। আর আল্লাহ্ অত্যাচারী সম্প্রদায়কে পথপ্রদর্শন করেন না।
یُرِیۡدُوۡنَ لِیُطۡفِـُٔوۡا نُوۡرَ اللّٰہِ بِاَفۡوَاہِہِمۡ وَ اللّٰہُ مُتِمُّ نُوۡرِہٖ وَ لَوۡ کَرِہَ الۡکٰفِرُوۡنَ ﴿۸﴾
কানযুল ঈমান
৮. তারা চায়, আল্লাহ্র নূরকে তাদের মুখের ফুঁৎকার দিয়ে নিভিয়ে দিতে আর আল্লাহ্ তাঁর নূরকে পরিপূর্ণ করবেন, যদিও অপছন্দ করে কাফিরগণ।
ইরফানুল কুরআন
৮. এরা (এ সত্য অস্বীকারকারীরা) তাদের মুখের ফুৎকারে আল্লাহ্র নূরকে নিভিয়ে দিতে চায়, পক্ষান্তরে আল্লাহ্ তাঁর নূরকে পূর্ণরূপে বিকশিত করবেন যদিও কাফেরেরা তা অপছন্দ করে।
ہُوَ الَّذِیۡۤ اَرۡسَلَ رَسُوۡلَہٗ بِالۡہُدٰی وَ دِیۡنِ الۡحَقِّ لِیُظۡہِرَہٗ عَلَی الدِّیۡنِ کُلِّہٖ وَ لَوۡ کَرِہَ الۡمُشۡرِکُوۡنَ ﴿۹﴾
কানযুল ঈমান
৯. তিনিই, যিনি আপন রসূলকে হিদায়ত ও সত্য দ্বীন সহকারে প্রেরণ করে, যেন সেটাকে সমস্ত ধর্মের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেন যদিও অপছন্দ করে মুশরিকগণ।
ইরফানুল কুরআন
৯. তিনিই তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-কে প্রেরণ করেছেন হেদায়াত ও সত্য দ্বীনসহ, সকল দ্বীনের উপর একে বিজয়ী ও সমুন্নত করার জন্যে যদিও মুশরিকেরা তা অপছন্দ করে।
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا ہَلۡ اَدُلُّکُمۡ عَلٰی تِجَارَۃٍ تُنۡجِیۡکُمۡ مِّنۡ عَذَابٍ اَلِیۡمٍ ﴿۱۰﴾
কানযুল ঈমান
১০. হে ঈমানদারগণ! আমি কি সন্ধান দেবো এমন ব্যবসার, যা তোমাদেরকে বেদনাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?
ইরফানুল কুরআন
১০. হে ঈমানদারগণ! আমি কি তোমাদেরকে এমন বাণিজ্যের সন্ধান দেবো যা তোমাদেরকে রক্ষা করবে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে?
تُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰہِ وَ رَسُوۡلِہٖ وَ تُجَاہِدُوۡنَ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ بِاَمۡوَالِکُمۡ وَ اَنۡفُسِکُمۡ ؕ ذٰلِکُمۡ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ ﴿ۙ۱۱﴾
কানযুল ঈমান
১১. ঈমান রাখো আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের উপর এবং আল্লাহ্র পথে আপন সম্পদ ও প্রাণ দিয়ে জিহাদ করো। এটা তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা জানো;
ইরফানুল কুরআন
১১. (তা এই যে,) তোমরা (পরিপূর্ণ) বিশ্বাস স্থাপন করো আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-এঁর প্রতি এবং আল্লাহ্র পথে জিহাদ করো তোমাদের সম্পদ ও জীবন দ্বারা। এটিই তোমাদের জন্যে কল্যাণকর, যদি তোমরা জানো।
یَغۡفِرۡ لَکُمۡ ذُنُوۡبَکُمۡ وَ یُدۡخِلۡکُمۡ جَنّٰتٍ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہَا الۡاَنۡہٰرُ وَ مَسٰکِنَ طَیِّبَۃً فِیۡ جَنّٰتِ عَدۡنٍ ؕ ذٰلِکَ الۡفَوۡزُ الۡعَظِیۡمُ ﴿ۙ۱۲﴾
কানযুল ঈমান
১২. তিনি তোমাদের পাপ ক্ষমা করে দেবেন এবং তোমাদেরকে বাগানসমূহে প্রবেস করাবেন, যেগুলোর পাদদেশে নহরসমূহ প্রবহমান এবং পবিত্র মহলসমূহে, যেগুলো বসবাস করার বাগানসমূহে অবস্থিত। এটাই মহা সাফল্য;
ইরফানুল কুরআন
১২. তিনি তোমাদের পাপ ক্ষমা করে দেবেন এবং তোমাদেরকে প্রবিষ্ট করাবেন জান্নাতে যার তলদেশ দিয়ে স্রোতধারা প্রবাহিত এবং (বসবাস করাবেন) আদন জান্নাতের (অর্থাৎ স্থায়ী উদ্যানের) অতি উত্তম আবাসস্থলে। এটিই মহাসাফল্য।
وَ اُخۡرٰی تُحِبُّوۡنَہَا ؕ نَصۡرٌ مِّنَ اللّٰہِ وَ فَتۡحٌ قَرِیۡبٌ ؕ وَ بَشِّرِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۳﴾
কানযুল ঈমান
১৩. এবং আরো একটা নি’মাত তোমাদেরকে দেবেন, যা তোমাদের নিকট প্রিয়- আল্লাহ্র সাহায্য এবং শিগ্গিরই আগমনকারী বিজয়। এবং হে মাহবূব! মসুলমানদেরকে সুসংবাদ শুনিয়ে দিন।
ইরফানুল কুরআন
১৩. আর (পরকালীন এ নিয়ামত ছাড়াও) তিনি প্রদান করবেন (পার্থিব) আরো এক অনুগ্রহ যা তোমরা ঐকান্তিকভাবেই কামনা করো। (তা হলো) আল্লাহ্র পক্ষ থেকে সাহায্য এবং আসন্ন বিজয়। আর (হে সম্মানিত নবী!) আপনি মুমিনগণকে সুসংবাদ দিন। (এ অনুগ্রহ মক্কা বিজয় এবং পারস্য-রোম বিজয়াকারে উদ্ভাসিত হবে।)
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا کُوۡنُوۡۤا اَنۡصَارَ اللّٰہِ کَمَا قَالَ عِیۡسَی ابۡنُ مَرۡیَمَ لِلۡحَوَارِیّٖنَ مَنۡ اَنۡصَارِیۡۤ اِلَی اللّٰہِ ؕ قَالَ الۡحَوَارِیُّوۡنَ نَحۡنُ اَنۡصَارُ اللّٰہِ فَاٰمَنَتۡ طَّآئِفَۃٌ مِّنۡۢ بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ وَ کَفَرَتۡ طَّآئِفَۃٌ ۚ فَاَیَّدۡنَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا عَلٰی عَدُوِّہِمۡ فَاَصۡبَحُوۡا ظٰہِرِیۡنَ ﴿۱۴﴾
কানযুল ঈমান
১৪. হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ্র দ্বীনের সাহায্যকারী হও, যেমন মরিয়ম-তনয় ঈসা হাওয়ারীদেরকে বলেছিলেন, ‘কারা আছে, যারা আল্লাহ্র পক্ষ হয়ে আমার সাহায্য করবে?’ হাওয়ারীগণ বললো, ‘আমরা হলাম আল্লাহ্র দ্বীনের সাহায্যকারী’। অতঃপর বনী ইস্রাঈলের একদল ঈমান এনেছে। এবং এক দল কুফর করেছে। সুতরাং আমি ঈমানদারদেরকে তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে সাহায্য করেছি। ফলে তারা বিজয়ী হয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
১৪. হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ্র সাহায্যকারী হও, যেমন মারইয়াম তনয় ঈসা (আলাইহিমাস সালাম তাঁর) অনুসারীদেরকে বলেছিলেন, ‘আল্লাহ্র পথে কারা আমার সাহায্যকারী?’ অনুসারীরা বলেছিল, ‘আমরা আল্লাহ্র পথে সাহায্যকারী’। অতঃপর বনী ইসরাঈলের একদল ঈমান আনয়ন করলো এবং অপরদল কুফরী করলো। সুতরাং আমরা ঈমানদারগণকে তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে সাহায্য করলাম এবং তাঁরা বিজয় অর্জন করলো।