بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
কানযুল ঈমান
০. আল্লাহ্র নামে আরম্ভ, যিনি পরম দয়ালু, করুণাময় (১)
ইরফানুল কুরআন
০. আল্লাহর নামে শুরু, যিনি পরম করুণাময়, সতত অসীম দয়ালু।
حٰمٓ ۚ﴿۱﴾
কানযুল ঈমান
১. হা-মী---ম।
ইরফানুল কুরআন
১. হা-মীম। (প্রকৃত অর্থ আল্লাহ্ এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামই সম্যক অবগত।)
عٓسٓقٓ ﴿۲﴾
কানযুল ঈমান
২. ‘আঈ----ন সী-----ন ক্বা----ফ।
ইরফানুল কুরআন
২. আইন-সীন-ক্বাফ। (প্রকৃত অর্থ আল্লাহ্ এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামই অধিক অবগত।)
کَذٰلِکَ یُوۡحِیۡۤ اِلَیۡکَ وَ اِلَی الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِکَ ۙ اللّٰہُ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ ﴿۳﴾
কানযুল ঈমান
৩. এভাবেই তিনি ওহী করেন আপনার প্রতি এবং আপনার পূর্ববর্তীদের প্রতি। আল্লাহ্ সম্মান ও প্রজ্ঞাময়।
ইরফানুল কুরআন
৩. এভাবেই আপনার প্রতি এবং আপনার পূর্ববর্তীদের (অর্থাৎ পূর্ববর্তী রাসূলগণের) প্রতি প্রত্যাদেশ করেন আল্লাহ্ যিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাবান।
لَہٗ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الۡاَرۡضِ ؕ وَ ہُوَ الۡعَلِیُّ الۡعَظِیۡمُ ﴿۴﴾
কানযুল ঈমান
৪. তাঁরই, যা কিছু আস্মানসমূহে রয়েছে এবং যা কিছু যমীনে। এবং তিনিই সর্বোচ্চ, সুমহান।
ইরফানুল কুরআন
৪. যা কিছু আকাশমন্ডলীতে এবং যা কিছু পৃথিবীতে রয়েছে তা তাঁরই। আর তিনি সমুচ্চ মর্যাদার অধিকারী, সুমহান।
تَکَادُ السَّمٰوٰتُ یَتَفَطَّرۡنَ مِنۡ فَوۡقِہِنَّ وَ الۡمَلٰٓئِکَۃُ یُسَبِّحُوۡنَ بِحَمۡدِ رَبِّہِمۡ وَ یَسۡتَغۡفِرُوۡنَ لِمَنۡ فِی الۡاَرۡضِ ؕ اَلَاۤ اِنَّ اللّٰہَ ہُوَ الۡغَفُوۡرُ الرَّحِیۡمُ ﴿۵﴾
কানযুল ঈমান
৫. আস্মান তার উপরিভাগ থেকে বিদীর্ণ হয়ে যাবার উপক্রম হয় এবং ফিরিশ্তাগণ আপন রবের প্রশংসা সহকারে তার পবিত্রতা ঘোষণা করে এবং পৃথিবীবাসীদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। শুনে নাও! নিশ্চয় আল্লাহ্ই ক্ষমাশীল, দয়ালু।
ইরফানুল কুরআন
৫. আকাশমন্ডলী তাদের উর্ধ্বদেশ থেকে ফেটে পড়ার উপক্রম হয় এবং ফেরেশতারা তাদের প্রতিপালকের সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করতে থাকে, আর যারা পৃথিবীতে রয়েছে তাদের জন্যে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে থাকে। মনে রেখো! আল্লাহ্ই মহাক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু।
وَ الَّذِیۡنَ اتَّخَذُوۡا مِنۡ دُوۡنِہٖۤ اَوۡلِیَآءَ اللّٰہُ حَفِیۡظٌ عَلَیۡہِمۡ ۫ۖ وَ مَاۤ اَنۡتَ عَلَیۡہِمۡ بِوَکِیۡلٍ ﴿۶﴾
কানযুল ঈমান
৬. এবং যে সব লোক আল্লাহ্কে ব্যতীত অন্যান্য অভিভাবক গ্রহণ করে বসেছে তারা আল্লাহ্র দৃষ্টির মধ্যে রয়েছে; এবং আপনি তাদের যিম্মাদার নন।
ইরফানুল কুরআন
৬. আর যারা আল্লাহ্র পরিবর্তে মূর্তিগুলোকে বন্ধু ও অভিভাবকরূপে গ্রহণ করেছে, আল্লাহ্ তাদের বিষয়ে সদা সচেতন। আর আপনি এদের (এসব কাফেরদের) জন্যে দায়বদ্ধ নন।
وَ کَذٰلِکَ اَوۡحَیۡنَاۤ اِلَیۡکَ قُرۡاٰنًا عَرَبِیًّا لِّتُنۡذِرَ اُمَّ الۡقُرٰی وَ مَنۡ حَوۡلَہَا وَ تُنۡذِرَ یَوۡمَ الۡجَمۡعِ لَا رَیۡبَ فِیۡہِ ؕ فَرِیۡقٌ فِی الۡجَنَّۃِ وَ فَرِیۡقٌ فِی السَّعِیۡرِ ﴿۷﴾
কানযুল ঈমান
৭. এবং এভাবেই আমি আপনার প্রতি আরবী ক্বোরআন ওহীর মাধ্যমে প্রেরণ করেছি যেন আপনি সতর্ক করেন সমস্ত শহরের মূল- মক্কার অধিবাসীদেরকে এবং যতলোক এর চতুর্পাশে রয়েছে, এবং আপনি সতর্ক করবেন একত্রিত হবার দিন সম্পর্কে, যাতে কোন সন্দেহ নেই। এক দল জান্নাতে যাবে এবং একদল দোযখে।
ইরফানুল কুরআন
৭. আর এভাবেই আমরা আপনার প্রতি কুরআন অবতীর্ণ করেছি আরবী ভাষায়, যাতে আপনি সতর্ক করতে পারেন তাদেরকে, যারা মক্কায় এবং এর আশেপাশে রয়েছে। আর আপনি সতর্ক করুন সমবেত হবার দিনের ব্যাপারে, যাতে কোনো সন্দেহ নেই। (সেদিন) একদল থাকবে জান্নাতে এবং আরেকদল থাকবে জাহান্নামে।
وَ لَوۡ شَآءَ اللّٰہُ لَجَعَلَہُمۡ اُمَّۃً وَّاحِدَۃً وَّ لٰکِنۡ یُّدۡخِلُ مَنۡ یَّشَآءُ فِیۡ رَحۡمَتِہٖ ؕ وَ الظّٰلِمُوۡنَ مَا لَہُمۡ مِّنۡ وَّلِیٍّ وَّ لَا نَصِیۡرٍ ﴿۸﴾
কানযুল ঈমান
৮. এবং আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে তাদের সবাইকে একই দ্বীনের অনুসারী করে দিতেন; কিন্তু আল্লাহ্ আপন অনুগ্রহের মধ্যে প্রবিষ্ট করেন যাকে চান এবং যালিমদের না আছে কোন বন্ধু, না কোন সাহায্যকারী।
ইরফানুল কুরআন
৮. আর আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে তাদের সবাইকে একই উম্মত করতে পারতেন। বস্তুত তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে স্বীয় রহমতে অন্তর্ভুক্ত করেন। আর অত্যাচারীদের, তাদের না আছে কোনো অভিভাবক, আর না আছে কোনো সাহায্যকারী।
اَمِ اتَّخَذُوۡا مِنۡ دُوۡنِہٖۤ اَوۡلِیَآءَ ۚ فَاللّٰہُ ہُوَ الۡوَلِیُّ وَ ہُوَ یُحۡیِ الۡمَوۡتٰی ۫ وَ ہُوَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ ﴿۹﴾
কানযুল ঈমান
৯. তারা কি আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য অভিভাবক স্থির করে নিয়েছে? সুতরাং আল্লাহ্ই অভিভাবক এবং তিনি মৃতকে জীবিত করবেন এবং তিনি সব কিছু করতে পারেন।
ইরফানুল কুরআন
৯. তারা কি আল্লাহ্র পরিবর্তে মূর্তিগুলোকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করেছে? সুতরাং আল্লাহ্ই অভিভাবক (আর কেবল তাঁর বন্ধুরাই ‘আউলিয়া’)। আর তিনিই মৃতদেরকে জীবিত করেন এবং তিনিই সকল কিছুর উপর সর্বশক্তিমান।
وَ مَا اخۡتَلَفۡتُمۡ فِیۡہِ مِنۡ شَیۡءٍ فَحُکۡمُہٗۤ اِلَی اللّٰہِ ؕ ذٰلِکُمُ اللّٰہُ رَبِّیۡ عَلَیۡہِ تَوَکَّلۡتُ ٭ۖ وَ اِلَیۡہِ اُنِیۡبُ ﴿۱۰﴾
কানযুল ঈমান
১০. তোমরা যে বিষয়ে মতভেদ করো, তবে সেটার ফয়সালা আল্লাহ্রই নিকট অর্পিত। তিনিই হন আল্লাহ্, আমার প্রতিপালক, আমি তার উপর নির্ভর করেছি এবং আমি তার প্রতি প্রত্যাবর্তন করছি।
ইরফানুল কুরআন
১০. ‘আর তোমরা যে বিষয়ে মতবিরোধ করো, এর মীমাংসা তো আল্লাহ্রই নিকট। তিনিই আল্লাহ্, আমার প্রতিপালক, তাঁরই প্রতি আমি ভরসা করি এবং আমি তাঁরই অভিমুখী।’
فَاطِرُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ جَعَلَ لَکُمۡ مِّنۡ اَنۡفُسِکُمۡ اَزۡوَاجًا وَّ مِنَ الۡاَنۡعَامِ اَزۡوَاجًا ۚ یَذۡرَؤُکُمۡ فِیۡہِ ؕ لَیۡسَ کَمِثۡلِہٖ شَیۡءٌ ۚ وَ ہُوَ السَّمِیۡعُ الۡبَصِیۡرُ ﴿۱۱﴾
কানযুল ঈমান
১১. আস্মানসমূহ ও যমীনের স্রষ্টা; তোমাদের জন্য তোমাদেরই থেকে জোড়া সৃষ্টি করেছেন এবং চতুষ্পদ প্রাণীসমূহ থেকে নর ও মাদী। তা থেকে তোমাদের বংশ বিস্তার করেন। তার মতো কিছুই নেই; এবং তিনিই শুনেন, দেখেন।
ইরফানুল কুরআন
১১. তিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীকে অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বে আনয়নকারী। তিনিই তোমাদের জন্যে তোমাদের মধ্য থেকে জোড়া সৃষ্টি করেছেন এবং চতুষ্পদ প্রাণীদেরও জোড়া সৃষ্টি করেছেন। আর তোমাদেরকে এর (এ জোড়ার কৌশলের) মাধ্যমে বিস্তার করেন। তাঁর সদৃশ কোনো কিছুই নেই। আর তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।
لَہٗ مَقَالِیۡدُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ۚ یَبۡسُطُ الرِّزۡقَ لِمَنۡ یَّشَآءُ وَ یَقۡدِرُ ؕ اِنَّہٗ بِکُلِّ شَیۡءٍ عَلِیۡمٌ ﴿۱۲﴾
কানযুল ঈমান
১২. তাঁরই নিকট আস্মানসমূহ ও যমীনের চাবিগুলো। তিনি জীবিকা প্রশস্ত করেন যার জন্য ইচ্ছা করেন এবং সংকুচিত করেন। নিশ্চয় তিনি সবকিছু জানেন।
ইরফানুল কুরআন
১২. তিনিই আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর চাবিকাঠির অধিকারী (অর্থাৎ তিনি যার জন্যে ইচ্ছা ধন-ভান্ডার উন্মুক্ত করেন)। তিনি যার জন্যে ইচ্ছা রিযিক বর্ধিত করেন এবং (যার জন্যে ইচ্ছা) সঙ্কুচিত করেন। নিশ্চয়ই তিনি সকল কিছু সম্পর্কে সম্যক অবগত।
شَرَعَ لَکُمۡ مِّنَ الدِّیۡنِ مَا وَصّٰی بِہٖ نُوۡحًا وَّ الَّذِیۡۤ اَوۡحَیۡنَاۤ اِلَیۡکَ وَ مَا وَصَّیۡنَا بِہٖۤ اِبۡرٰہِیۡمَ وَ مُوۡسٰی وَ عِیۡسٰۤی اَنۡ اَقِیۡمُوا الدِّیۡنَ وَ لَا تَتَفَرَّقُوۡا فِیۡہِ ؕ کَبُرَ عَلَی الۡمُشۡرِکِیۡنَ مَا تَدۡعُوۡہُمۡ اِلَیۡہِ ؕ اَللّٰہُ یَجۡتَبِیۡۤ اِلَیۡہِ مَنۡ یَّشَآءُ وَ یَہۡدِیۡۤ اِلَیۡہِ مَنۡ یُّنِیۡبُ ﴿۱۳﴾
কানযুল ঈমান
১৩. তিনি তোমাদের জন্য ধর্মের ওইপথ নির্ধারণ করেছেন, যার নির্দেশ তিনি নূহকে দিয়েছেন এবং যা আমি আপনার প্রতি ওহী করেছি এবং যার আদেশ আমি ইব্রাহীম, মূসা এবং ঈসাকে দিয়েছি যে, দ্বীনকে স্থির রাখো এবং তাতে মতভেদ সৃষ্টি করো না। মুশরিকদের জন্য খুবই ভারী হচ্ছে তা-ই, যার প্রতি আপনি তাদেরকে আহ্বান করছেন এবং আল্লাহ্ আপন নৈকট্যের জন্য মনোনীত করে নেন যাকে চান এবং নিজের দিকে পথ প্রদান করেন তাকে, যে প্রত্যাবর্তন করে।
ইরফানুল কুরআন
১৩. তিনি তোমাদের জন্যে দ্বীনের সে পথই নির্ধারণ করেছেন, যার নির্দেশ তিনি দিয়েছিলেন নূহ (আলাইহিস সালাম)-কে। আর আমরা আপনার প্রতি যে ওহী প্রত্যাদেশ করেছি তার নির্দেশ আমরা প্রদান করেছিলাম ইবরাহীম, মূসা এবং ঈসা (আলাইহিমুস সালাম)-কে। (তা এই যে,) ‘তোমরা (এই) দ্বীনের উপর অটল থাকো এবং এতে পার্থক্য সৃষ্টি করো না’। মুশরিকদের জন্যে তা খুবই দুর্বহ, যে (আল্লাহ্র একত্ববাদের) দিকে আপনি তাদেরকে আহ্বান করছেন। আল্লাহ (স্বয়ং) যাদেরকে ইচ্ছা করেন নিজের প্রতি (বিশেষ নৈকট্য প্রদানের জন্যে) নির্বাচিত করেন এবং তাঁর অভিমুখে (আগমনের জন্যে) পথপ্রদর্শন করেন প্রত্যেক ব্যক্তিকে যারা (আল্লাহ্র দিকে) আন্তরিকভাবে অভিমুখী হয়।
وَ مَا تَفَرَّقُوۡۤا اِلَّا مِنۡۢ بَعۡدِ مَا جَآءَہُمُ الۡعِلۡمُ بَغۡیًۢا بَیۡنَہُمۡ ؕ وَ لَوۡ لَا کَلِمَۃٌ سَبَقَتۡ مِنۡ رَّبِّکَ اِلٰۤی اَجَلٍ مُّسَمًّی لَّقُضِیَ بَیۡنَہُمۡ ؕ وَ اِنَّ الَّذِیۡنَ اُوۡرِثُوا الۡکِتٰبَ مِنۡۢ بَعۡدِہِمۡ لَفِیۡ شَکٍّ مِّنۡہُ مُرِیۡبٍ ﴿۱۴﴾
কানযুল ঈমান
১৪. এবং তারা মতভেদ করে নি, কিন্তু (করেছে) এর পর যে, তাদের নিকট জ্ঞান এসেছিলো, পারস্পরিক বিদ্বেষবশতঃ এবং যদি আপনার রবের একটি বাণী গত না হয়ে থাকতো একটি নির্ধারিত সময় সীমা পর্যন্ত, তবে তাদের মধ্যে কবেই ফয়সালা করে দেওয়া হতো। এবং নিশ্চয় ওই সব লোক, যারা তাদের পর কিতাবের উত্তরাধিকারী হয়েছে তারা তা থেকে এক প্রতারণাদাতা সন্দেহের মধ্যে রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
১৪. আর তাদের নিকট জ্ঞান আসার পর তারা বিভক্তি ঘটায়, কেবলমাত্র নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক একগুঁয়েমির (এবং হঠকারিতার) কারণে। আর যদি আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে পূর্বনির্ধারিত সময়ের (অবকাশের) নির্দেশ না থাকতো তবে তাদের মাঝে ফায়সালা হয়ে যেতো। আর তাদের পর প্রকৃতই যাদেরকে কিতাবের উত্তরাধিকারী করা হয়েছে, তারা নিজেরাই এ বিষয়ে বিভ্রান্তিকর সন্দেহে (নিমজ্জিত) রয়েছে।
فَلِذٰلِکَ فَادۡعُ ۚ وَ اسۡتَقِمۡ کَمَاۤ اُمِرۡتَ ۚ وَ لَا تَتَّبِعۡ اَہۡوَآءَہُمۡ ۚ وَ قُلۡ اٰمَنۡتُ بِمَاۤ اَنۡزَلَ اللّٰہُ مِنۡ کِتٰبٍ ۚ وَ اُمِرۡتُ لِاَعۡدِلَ بَیۡنَکُمۡ ؕ اَللّٰہُ رَبُّنَا وَ رَبُّکُمۡ ؕ لَنَاۤ اَعۡمَالُنَا وَ لَکُمۡ اَعۡمَالُکُمۡ ؕ لَا حُجَّۃَ بَیۡنَنَا وَ بَیۡنَکُمۡ ؕ اَللّٰہُ یَجۡمَعُ بَیۡنَنَا ۚ وَ اِلَیۡہِ الۡمَصِیۡرُ ﴿ؕ۱۵﴾
কানযুল ঈমান
১৫. সুতরাং এ কারণেই আহ্বান করুন! এবং দৃঢ় থাকুন যেমন আপনার প্রতি নির্দেশ হয়েছে এবং তাদের খেয়াল খুশীর অনুসরণ করবেন; আর বলুন, আমি ঈমান এনেছি সেটার উপর, যে কিতাবই আল্লাহ্ অবতীর্ণ করেছেন, এবং আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন আমি তোমাদের মধ্যে ন্যায় বিচার করি। আল্লাহ্ আমাদের ও তোমাদের সবারই রব। আমাদের জন্য আমাদের কৃতকর্ম এবং তোমাদের জন্য তোমাদের কৃতকর্ম। কোন বিতর্ক নেই আমাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে। আল্লাহ্ আমাদের সবাইকে একত্রিত করবেন এবং তাঁরই দিকে (আমাদের) প্রত্যাবর্তন।
ইরফানুল কুরআন
১৫. সুতরাং আপনি (এ দ্বীন)-এর প্রতি আহ্বান করতে থাকুন এবং (এরই উপর) অবিচল থাকুন যেভাবে আপনাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, আর তাদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ করবেন না। আর বলে দিন, ‘আমি বিশ্বাস করি তাতে যে কিতাবই আল্লাহ্ অবতীর্ণ করেছেন এবং আমাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে তোমাদের মাঝে ন্যায়বিচার করতে। আল্লাহ্ আমাদের প্রতিপালক এবং তোমাদেরও প্রতিপালক। আমাদের জন্যে আমাদের আমল এবং তোমাদের জন্যে তোমাদের আমল। আমাদের এবং তোমাদের মাঝে কোনো বিবাদ-বিসম্বাদ নেই। আল্লাহ্ আমাদের সবাইকে একত্রিত করবেন এবং তাঁরই নিকট (সবার) প্রত্যাবর্তন।’
وَ الَّذِیۡنَ یُحَآجُّوۡنَ فِی اللّٰہِ مِنۡۢ بَعۡدِ مَا اسۡتُجِیۡبَ لَہٗ حُجَّتُہُمۡ دَاحِضَۃٌ عِنۡدَ رَبِّہِمۡ وَ عَلَیۡہِمۡ غَضَبٌ وَّ لَہُمۡ عَذَابٌ شَدِیۡدٌ ﴿۱۶﴾
কানযুল ঈমান
১৬. এবং যারা আল্লাহ্ সম্পর্কে বাকবিতণ্ডা করে এরপর যে, মুসলমান তার আহ্বানে সাড়া দিয়েছে তাদের দলীল নিছক অসার তাদের রবের নিকট আর তাদের উপর ক্রোধ অবধারিত এবং তাদের জন্য কঠিন শাস্তি রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
১৬. আর মেনে নেয়ার পর যারা আল্লাহ্ (-এঁর দ্বীনের বিষয়) সম্পর্কে ঝগড়া করে, তাদের আলোচনা ও বাদানুবাদ তাদের প্রতিপালকের দৃষ্টিতে অসার। আর তাদের উপর (আল্লাহ্র) ক্রোধ এবং তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি।
اَللّٰہُ الَّذِیۡۤ اَنۡزَلَ الۡکِتٰبَ بِالۡحَقِّ وَ الۡمِیۡزَانَ ؕ وَ مَا یُدۡرِیۡکَ لَعَلَّ السَّاعَۃَ قَرِیۡبٌ ﴿۱۷﴾
কানযুল ঈমান
১৭. আল্লাহ্, যিনি সত্য সহকারে কিতাব অবতীর্ণ করেছেন এবং ন্যায় বিচারের নিক্তি আর আপনি কি জানেন এটা সম্ভব যে, ক্বিয়ামত নিকটবর্তীই?
ইরফানুল কুরআন
১৭. আল্লাহ্ তিনিই যিনি সত্য সহকারে অবতীর্ণ করেছেন কিতাব এবং (সমতা ও ন্যায়বিচারের) মানদন্ড। আর আপনাকে কে সতর্ক করেছে, সম্ভবত কিয়ামত নিকটেই?
یَسۡتَعۡجِلُ بِہَا الَّذِیۡنَ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ بِہَا ۚ وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مُشۡفِقُوۡنَ مِنۡہَا ۙ وَ یَعۡلَمُوۡنَ اَنَّہَا الۡحَقُّ ؕ اَلَاۤ اِنَّ الَّذِیۡنَ یُمَارُوۡنَ فِی السَّاعَۃِ لَفِیۡ ضَلٰلٍۭ بَعِیۡدٍ ﴿۱۸﴾
কানযুল ঈমান
১৮. তা অতিসত্বর কামনা করছে তারাই, যারা সেটার উপর ঈমান রাখে না; এবং সেটার উপর যাদের ঈমান আছে তারা সেটাকে ভয় করে এবং জানে যে, তা নিশ্চয় সত্য। শুনছো, নিশ্চয় যারা ক্বিয়ামত সম্বন্ধে সন্দেহ করে, তারা অবশ্য দূরের পথভ্রষ্টতার মধ্যে রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
১৮. তারাই একে (এ কিয়ামত) দ্রুত কামনা করে যারা এতে বিশ্বাসই রাখে না। আর যারা বিশ্বাস রাখে তারা একে ভয় করে এবং জানে যে, এর আগমন সত্য। জেনে রাখো! যারা কিয়ামত সম্পর্কে বিতর্ক করে তারা ঘোর বিভ্রান্তিতে রয়েছে।
اَللّٰہُ لَطِیۡفٌۢ بِعِبَادِہٖ یَرۡزُقُ مَنۡ یَّشَآءُ ۚ وَ ہُوَ الۡقَوِیُّ الۡعَزِیۡزُ ﴿۱۹﴾
কানযুল ঈমান
১৯. আল্লাহ্ আপন বান্দাদের প্রতি অনুগ্রহ করেন, যাকে চান জীবিকা দান করেন, এবং তিনিই শক্তি ও সম্মানের অধিকারী।
ইরফানুল কুরআন
১৯. আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের প্রতি অনুগ্রহশীল ও দাতা; তিনি যাকে ইচ্ছা রিযিক ও অনুগ্রহ দান করেন। আর তিনি প্রবল, পরাক্রমশালী।
مَنۡ کَانَ یُرِیۡدُ حَرۡثَ الۡاٰخِرَۃِ نَزِدۡ لَہٗ فِیۡ حَرۡثِہٖ ۚ وَ مَنۡ کَانَ یُرِیۡدُ حَرۡثَ الدُّنۡیَا نُؤۡتِہٖ مِنۡہَا وَ مَا لَہٗ فِی الۡاٰخِرَۃِ مِنۡ نَّصِیۡبٍ ﴿۲۰﴾
কানযুল ঈমান
২০. যে আখিরাতের ফসল চায়, আমি তার জন্য তার ফসল বৃদ্ধি করে দিই, আর যে দুনিয়ার ফসল কামনা করে আমি তাকে তা থেকে কিছু প্রদান করবো এবং আখিরাতে তার কোন অংশ নেই।
ইরফানুল কুরআন
২০. যে ব্যক্তি পরকালের ফসল কামনা করে তার জন্যে আমরা তার ফসল আরো বৃদ্ধি করে দেই; আর যে ব্যক্তি ইহকালের ফসল কামনা করে, আমরা তাকে এ থেকেই কিছু প্রদান করি। তবে তার জন্যে পরকালে কিছুই থাকবে না।
اَمۡ لَہُمۡ شُرَکٰٓؤُا شَرَعُوۡا لَہُمۡ مِّنَ الدِّیۡنِ مَا لَمۡ یَاۡذَنۡۢ بِہِ اللّٰہُ ؕ وَ لَوۡ لَا کَلِمَۃُ الۡفَصۡلِ لَقُضِیَ بَیۡنَہُمۡ ؕ وَ اِنَّ الظّٰلِمِیۡنَ لَہُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ﴿۲۱﴾
কানযুল ঈমান
২১. অথবা তাদের জন্য কি কিছু এমন শরীক রয়েছে, যারা তাদের জন্য ওই ধর্ম বের করে দিয়েছে, যার অনুমতি আল্লাহ্ দেন নি? এবং যদি এক মীমাংসার প্রতিশ্রুতি না হতো, তবে এখানেই তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেওয়া হতো। এবং নিশ্চয় যালিমদের জন্য বেদনাদায়ক শাস্তি রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
২১. তাদের কি (এমন) কোনো অংশীদার রয়েছে যারা তাদের জন্যে দ্বীনের এমন পথ নির্ধারণ করেছে যার নির্দেশ আল্লাহ্ প্রদান করেননি? আর যদি বিচারের নির্দেশ (বিদ্যমান) না থাকতো তবে তাদের মাঝে ফায়সালা হয়ে যেতো। নিশ্চয় অত্যাচারীদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
تَرَی الظّٰلِمِیۡنَ مُشۡفِقِیۡنَ مِمَّا کَسَبُوۡا وَ ہُوَ وَاقِعٌۢ بِہِمۡ ؕ وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ فِیۡ رَوۡضٰتِ الۡجَنّٰتِ ۚ لَہُمۡ مَّا یَشَآءُوۡنَ عِنۡدَ رَبِّہِمۡ ؕ ذٰلِکَ ہُوَ الۡفَضۡلُ الۡکَبِیۡرُ ﴿۲۲﴾
কানযুল ঈমান
২২. আপনি যালিমদেরকে দেখবেন যে, তারা নিজেদের উপার্জনের কারণে দারুন ভীত থাকবে এবং তা তাদের উপর আপতিত হবে এবং যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে তারা জান্নাতের উদ্যানসমূহের মধ্যে থাকবে। তাদের জন্য তাদের রবের নিকট থাকবে যা তারা চায়। এটাই মহা অনুগ্রহ।
ইরফানুল কুরআন
২২. আপনি অত্যাচারীদেরকে তাদের অর্জিত কৃতকর্মে ভীত দেখবেন; আর এ (শাস্তি) তাদের উপর আপতিত হবেই। আর যারা ঈমান আনে এবং সৎকর্মে নিয়োজিত থাকে তারা অবস্থান করবে বেহেশতের উদ্যানসমূহে; তাদের জন্যে তাদের প্রতিপালকের নিকট থাকবে (সেসব নিয়ামতরাজি) যা তারা কামনা করবে। এটাই তো মহাঅনুগ্রহ।
ذٰلِکَ الَّذِیۡ یُبَشِّرُ اللّٰہُ عِبَادَہُ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ ؕ قُلۡ لَّاۤ اَسۡـَٔلُکُمۡ عَلَیۡہِ اَجۡرًا اِلَّا الۡمَوَدَّۃَ فِی الۡقُرۡبٰی ؕ وَ مَنۡ یَّقۡتَرِفۡ حَسَنَۃً نَّزِدۡ لَہٗ فِیۡہَا حُسۡنًا ؕ اِنَّ اللّٰہَ غَفُوۡرٌ شَکُوۡرٌ ﴿۲۳﴾
কানযুল ঈমান
২৩. এটা হচ্ছে তাই, যার সুসংবাদ দিচ্ছেন আল্লাহ্ আপন বান্দাদেরকে, যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে। আপনি বলুন, ‘আমি সেটার জন্য তোমাদের নিকট থেকে কোন পারিশ্রমিক চাই না, কিন্তু চাই নিকটাত্নীয়তার ভালোবাসা।। এবং যে সৎকাজ করে আমি তার জন্য তাতে আরো শ্রীবৃদ্ধি করি। নিশ্চয় আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, মূল্যায়নকারী।
ইরফানুল কুরআন
২৩. এটিই (সে পুরস্কার) যার সুসংবাদ আল্লাহ্ সেসব বান্দাদেরকে প্রদান করেন যারা ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে। বলে দিন, ‘আমি এর (এ রিসালাতের প্রচারের) বিনিময়ে তোমাদের কাছ থেকে কোনো প্রতিদান চাই না, (আমার) নিকটাত্মীয়ের (এবং আল্লাহ্র নৈকট্যের) প্রতি ভালোবাসা ব্যতীত।’ আর যে উত্তম কিছু উপার্জন করবে তার জন্যে আমরা পরকালীন পুরস্কার আরো বৃদ্ধি করে দেবো। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাক্ষমাশীল, মূল্যায়নকারী।
اَمۡ یَقُوۡلُوۡنَ افۡتَرٰی عَلَی اللّٰہِ کَذِبًا ۚ فَاِنۡ یَّشَاِ اللّٰہُ یَخۡتِمۡ عَلٰی قَلۡبِکَ ؕ وَ یَمۡحُ اللّٰہُ الۡبَاطِلَ وَ یُحِقُّ الۡحَقَّ بِکَلِمٰتِہٖ ؕ اِنَّہٗ عَلِیۡمٌۢ بِذَاتِ الصُّدُوۡرِ ﴿۲۴﴾
কানযুল ঈমান
২৪. অথবা এ কথা বলে যে, তিনি আল্লাহ্ সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা করে নিয়েছেন। আর আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে আপনার হৃদয়ের উপর আপন রহমত ও হিফাযতের মোহরাঙ্কন করে দিতেন এবং তিনি বাতিলকে ধ্বংস করেন আপন বাণীসমূহ দ্বারা। নিশ্চয় তিনি অন্তরগুলোর কথা জানেন।
ইরফানুল কুরআন
২৪. তারা কি বলে যে, এ (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম) আল্লাহ্ সম্পর্কে মিথ্যা উদ্ভাবন করেছেন? যদি তাই হতো তবে আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে আপনার পবিত্রতম অন্তরে (ধৈর্য ও দৃঢ়তার) মোহর লাগিয়ে দিতে পারেন (যাতে আপনাকে তাদের অনর্থক কথাবার্তা কষ্ট না দেয়)। আর আল্লাহ্ মিথ্যাকে ধূলিস্যাৎ করেন এবং তাঁর বাণী দ্বারা সত্যকে অবিচল রাখেন। নিশ্চয়ই তিনি অন্তরের বিষয়ে সবিশেষ অবগত।
وَ ہُوَ الَّذِیۡ یَقۡبَلُ التَّوۡبَۃَ عَنۡ عِبَادِہٖ وَ یَعۡفُوۡا عَنِ السَّیِّاٰتِ وَ یَعۡلَمُ مَا تَفۡعَلُوۡنَ ﴿ۙ۲۵﴾
কানযুল ঈমান
২৫. এবং তিনিই, যিনি আপন বান্দাদের তাওবা ক্ববূল করেন ও পাপসমূহ মার্জনা করেন এবং জানেন যা কিছু তোমরা করো;
ইরফানুল কুরআন
২৫. আর তিনিই তাঁর বান্দাদের তওবা কবুল করেন ও অপরাধসমূহ ক্ষমা করে দেন এবং তিনি জানেন যা কিছু তোমরা করো।
وَ یَسۡتَجِیۡبُ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَ یَزِیۡدُہُمۡ مِّنۡ فَضۡلِہٖ ؕ وَ الۡکٰفِرُوۡنَ لَہُمۡ عَذَابٌ شَدِیۡدٌ ﴿۲۶﴾
কানযুল ঈমান
২৬. এবং তিনি প্রার্থনা গ্রহণ করেন তাদেরই, যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে এবং তাদেরকে আপন অনুগ্রহ থেকে আরো অধিক পুরস্কৃত করেন আর কাফিরদের জন্য কঠোর শাস্তি রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
২৬. আর তিনি সেসব লোকদের আহ্বানে সাড়া দেন যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করছে; আর তিনি নিজ অনুগ্রহে (তাদের চাওয়ার চেয়েও) তাদেরকে অধিক প্রদান করেন; কাফেরদের জন্যে রয়েছে কঠিন শাস্তি।
وَ لَوۡ بَسَطَ اللّٰہُ الرِّزۡقَ لِعِبَادِہٖ لَبَغَوۡا فِی الۡاَرۡضِ وَ لٰکِنۡ یُّنَزِّلُ بِقَدَرٍ مَّا یَشَآءُ ؕ اِنَّہٗ بِعِبَادِہٖ خَبِیۡرٌۢ بَصِیۡرٌ ﴿۲۷﴾
কানযুল ঈমান
২৭. এবং যদি আল্লাহ্ আপন সমস্ত বান্দার রিয্ক্ব প্রশস্ত করে দিতেন, তবে অবশ্যই তারা যমীণের মধ্যে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করতো; কিন্তু তিনি পরিমিত পরিমাণে অবতীর্ণ করেন যতটুকু চান। নিশ্চয় তিনি আপন বান্দাদের সম্পর্কে অবহিত রয়েছেন, তাদেরকে দেখছেন।
ইরফানুল কুরআন
২৭. আর যদি আল্লাহ্ তাঁর সকল বান্দাকে জীবনোপকরণে প্রাচুর্য দিতেন তবে তারা পৃথিবীতে অবশ্যই সীমালঙ্ঘন করতো। তবে তিনি (প্রয়োজনানুসারে) যেমন ইচ্ছা পরিমাণমত প্রেরণ করেন। তিনি তাঁর বান্দাদের (প্রয়োজন) সম্পর্কে সম্যক অবগত, সর্বদ্রষ্টা।
وَ ہُوَ الَّذِیۡ یُنَزِّلُ الۡغَیۡثَ مِنۡۢ بَعۡدِ مَا قَنَطُوۡا وَ یَنۡشُرُ رَحۡمَتَہٗ ؕ وَ ہُوَ الۡوَلِیُّ الۡحَمِیۡدُ ﴿۲۸﴾
কানযুল ঈমান
২৮. এবং তিনিই, যিনি বারি বর্ষণ করেন তারা নিরাশ হওয়ার পর এবং স্বীয় অনুগ্রহ প্রসারিত করেন। আর তিনিই কর্ম ব্যবস্থাপক, সমস্ত প্রশংশায় প্রশংসিত।
ইরফানুল কুরআন
২৮. আর তারা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়লে তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং তাঁর অনুগ্রহ বিস্তার করেন। আর তিনি তো অভিভাবক, প্রশংসার্হ।
وَ مِنۡ اٰیٰتِہٖ خَلۡقُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ وَ مَا بَثَّ فِیۡہِمَا مِنۡ دَآبَّۃٍ ؕ وَ ہُوَ عَلٰی جَمۡعِہِمۡ اِذَا یَشَآءُ قَدِیۡرٌ ﴿۲۹﴾
কানযুল ঈমান
২৯. এবং তার নিদর্শনগুলোর মধ্যে রয়েছে আস্মানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টি এবং যেসব বিচরণকারীকে তিনি এ দু’বার মধ্যবাগে ছড়িয়ে দিয়েছেন (সেগুলোও)। আর তিনি যখন ইচ্ছা করেন তখনই তাদেরকে একত্রিত করতে সক্ষম।
ইরফানুল কুরআন
২৯. আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং এ দু’য়ের মাঝে বিচরণশীল (প্রাণীকুলের সৃষ্টি) যেগুলো তিনি ছড়িয়ে দিয়েছেন। আর তিনি যখনই চান তখনোই এদেরকে একত্রিত করতে সক্ষম।
وَ مَاۤ اَصَابَکُمۡ مِّنۡ مُّصِیۡبَۃٍ فَبِمَا کَسَبَتۡ اَیۡدِیۡکُمۡ وَ یَعۡفُوۡا عَنۡ کَثِیۡرٍ ﴿ؕ۳۰﴾
কানযুল ঈমান
৩০. এবং তোমাদেরকে যে মুসীবত স্পর্শ করেছে তা তাঁরই কারণে, যা তোমাদের হাতগুলো উপার্জন করেছে এবং বহু কিছুতো তিনি ক্ষমা করে দেন।
ইরফানুল কুরআন
৩০. আর তোমাদের যে বিপদই ঘটে তা তোমাদের (মন্দকর্মের) কারণেই যা তোমাদের হস্তসমূহ অর্জন করেছে, এমতাবস্থায় (অপরাধের) অনেক কিছু তিনি ক্ষমাও করে দেন।
وَ مَاۤ اَنۡتُمۡ بِمُعۡجِزِیۡنَ فِی الۡاَرۡضِ ۚۖ وَ مَا لَکُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ مِنۡ وَّلِیٍّ وَّ لَا نَصِیۡرٍ ﴿۳۱﴾
কানযুল ঈমান
৩১. এবং তোমরা পৃথিবীতে (তার) আয়ত্ত্ব থেকে বের হতে পারো না। এবং আল্লাহ্র মোকাবেলায় তোমাদের না আছে কোন বন্ধু, না কোন সাহায্যকারী।
ইরফানুল কুরআন
৩১. আর তোমরা (তোমাদের পরিকল্পনার মাধ্যমে) আল্লাহ্কে পৃথিবীতে (কোথাও) অক্ষম করতে পারবে না এবং আল্লাহ্ ব্যতীত (মূর্তিগুলোর মধ্যে) না তোমাদের কোনো অভিভাবক থাকবে আর না কোনো সাহায্যকারী।
وَ مِنۡ اٰیٰتِہِ الۡجَوَارِ فِی الۡبَحۡرِ کَالۡاَعۡلَامِ ﴿ؕ۳۲﴾
কানযুল ঈমান
৩২. এবং তার নিদর্শনগুলোর মধ্যে রয়েছে সমুদ্রে চলমান পর্বত সদৃশ (নৌযান) গুলো।
ইরফানুল কুরআন
৩২. আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে পবর্তমালার ন্যায় উচুঁ সামুদ্রিক জাহাজও।
اِنۡ یَّشَاۡ یُسۡکِنِ الرِّیۡحَ فَیَظۡلَلۡنَ رَوَاکِدَ عَلٰی ظَہۡرِہٖ ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیٰتٍ لِّکُلِّ صَبَّارٍ شَکُوۡرٍ ﴿ۙ۳۳﴾
কানযুল ঈমান
৩৩. তিনি ইচ্ছা করলে বায়ুকে থামিয়ে দিতে পারেন, ফলে সেটার পিঠের উপর সেগুলো অচল হয়ে থেকে যাবে। নিশ্চয় নিশ্চয় তাতে নিদর্শনাদি রয়েছে প্রত্যেক মহা ধৈর্যশীল, কৃতজ্ঞদের জন্য।।
ইরফানুল কুরআন
৩৩. আর তিনি ইচ্ছা করলে সম্পূর্ণরূপে স্থির করে দেন বায়ু, ফলে নিশ্চল হয়ে যায় সমুদ্রপৃষ্ঠের জাহাজসমূহ। নিশ্চয়ই এতে নিদর্শন রয়েছে প্রত্যেক ধৈর্যশীল এবং কৃতজ্ঞ ব্যক্তির জন্যে।
اَوۡ یُوۡبِقۡہُنَّ بِمَا کَسَبُوۡا وَ یَعۡفُ عَنۡ کَثِیۡرٍ ﴿۫۳۴﴾
কানযুল ঈমান
৩৪. অথবা সেগুলোকে ধ্বংস করতে পারেন, মানুষের পাপরাশির কারণে এবং তিনি বহু কিছু ক্ষমা করে দেন;
ইরফানুল কুরআন
৩৪. অথবা সেগুলোকে (জাহাজ বা নৌযানসমূহকে) তিনি তাদের অর্জিত (মন্দ) কৃতকর্মের কারণে ডুবিয়ে দিতে পারেন। তবে তিনি অনেককে (তাদের অপরাধ) ক্ষমাও করে দেন।
وَّ یَعۡلَمَ الَّذِیۡنَ یُجَادِلُوۡنَ فِیۡۤ اٰیٰتِنَا ؕ مَا لَہُمۡ مِّنۡ مَّحِیۡصٍ ﴿۳۵﴾
কানযুল ঈমান
৩৫. এবং যারা আমার আয়াতগুলো সম্পর্কে ঝগড়া করে তারা জানতে পারবে যে, তাদের জন্য কোথাও পলায়ন করার স্থান নেই।
ইরফানুল কুরআন
৩৫. আর আমাদের আয়াত নিয়ে যারা বিতর্ক করে তারা জানবে যে, তাদের পলায়নের কোনো পথ নেই।
فَمَاۤ اُوۡتِیۡتُمۡ مِّنۡ شَیۡءٍ فَمَتَاعُ الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا ۚ وَ مَا عِنۡدَ اللّٰہِ خَیۡرٌ وَّ اَبۡقٰی لِلَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَلٰی رَبِّہِمۡ یَتَوَکَّلُوۡنَ ﴿ۚ۳۶﴾
কানযুল ঈমান
৩৬. তোমরা যা কিছু লাভ করেছো তা পার্থিব জীবনে ভোগ করারই, এবং যা আল্লাহ্র নিকট রয়েছে তা উত্তম এবং অধিকতর স্থায়ী তাদের জন্য, যারা ঈমান এনেছে এবং আপন রবের উপর নির্ভর করে।
ইরফানুল কুরআন
৩৬. সুতরাং তোমাদেরকে (প্রাচুর্য ও উপভোগ সামগ্রী) যা কিছুই দেয়া হয়েছে তা পার্থিব জীবনের (স্বল্প দিনের) উপভোগের জন্যে। অপরদিকে যা কিছুই আল্লাহ্র নিকট রয়েছে তা উৎকৃষ্ট ও চিরস্থায়ী; (সেসব) তাদের জন্যে যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের প্রতিপালকের উপর নির্ভর করে,
وَ الَّذِیۡنَ یَجۡتَنِبُوۡنَ کَبٰٓئِرَ الۡاِثۡمِ وَ الۡفَوَاحِشَ وَ اِذَا مَا غَضِبُوۡا ہُمۡ یَغۡفِرُوۡنَ ﴿ۚ۳۷﴾
কানযুল ঈমান
৩৭. এবং ওই সব লোক, যারা বড় বড় গুনাহ ও অশ্লীলতা থেকে বেচে থাকে এবং যখন ক্রুদ্ধ হয় তখন ক্ষমা করে দেয়।
ইরফানুল কুরআন
৩৭. আর যারা গুরুতর পাপ ও অশ্লীল কর্মকান্ড থেকে বেঁচে থাকে এবং ক্রোধান্বিত হলে ক্ষমা করে দেয়;
وَ الَّذِیۡنَ اسۡتَجَابُوۡا لِرَبِّہِمۡ وَ اَقَامُوا الصَّلٰوۃَ ۪ وَ اَمۡرُہُمۡ شُوۡرٰی بَیۡنَہُمۡ ۪ وَ مِمَّا رَزَقۡنٰہُمۡ یُنۡفِقُوۡنَ ﴿ۚ۳۸﴾
কানযুল ঈমান
৩৮. এবং ওই সব লোক যারা আপন রবের নির্দেশ মেনে নিয়েছে, নামায ক্বায়েম রেখেছে এবং তাদের কাজ তাদের পরস্পরের পরামর্শের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় এবং আমার প্রদত্ত সম্পদ থেকে কিছু আমার পথে ব্যয় করে;
ইরফানুল কুরআন
৩৮. আর যারা তাদের প্রতিপালকের নির্দেশ গ্রহণ করে, নামায প্রতিষ্ঠা করে এবং পারস্পরিক পরামর্শের মাধ্যমে নিজেদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে;
وَ الَّذِیۡنَ اِذَاۤ اَصَابَہُمُ الۡبَغۡیُ ہُمۡ یَنۡتَصِرُوۡنَ ﴿۳۹﴾
কানযুল ঈমান
৩৯. এবং ওই সব লোক যে, যখন তাদেরকে বিদ্রোহ স্পর্শ করে তখন তারা বদলা নেয়।
ইরফানুল কুরআন
৩৯. এবং (কোনো অত্যাচারী ও নিপীড়ক কর্তৃক) নির্যাতিত হলে (তাদের উপর) যারা প্রতিশোধ গ্রহণ করে।
وَ جَزٰٓؤُا سَیِّئَۃٍ سَیِّئَۃٌ مِّثۡلُہَا ۚ فَمَنۡ عَفَا وَ اَصۡلَحَ فَاَجۡرُہٗ عَلَی اللّٰہِ ؕ اِنَّہٗ لَا یُحِبُّ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۴۰﴾
কানযুল ঈমান
৪০. এবং মন্দের বদলা হচ্ছে সেটারই সমান মন্দ। অতঃপর যে ক্ষমা করেছে এবং কাজ সংশোধন করেছে, তবে তার প্রতিদান আল্লাহ্র উপর রয়েছে। নিশ্চয় তিনি পছন্দ করেন না যালিমদেরকে’।
ইরফানুল কুরআন
৪০. আর মন্দের প্রতিদান অনুরূপ মন্দই; অতঃপর যে ক্ষমা করে দেয় এবং (ক্ষমার মাধ্যমে) আপোষ-নিষ্পত্তি করে তার পুরস্কার আল্লাহ্র নিকট রয়েছে। নিশ্চয়ই তিনি অত্যাচারীদের সাথে বন্ধুত্ব রাখেন না।
وَ لَمَنِ انۡتَصَرَ بَعۡدَ ظُلۡمِہٖ فَاُولٰٓئِکَ مَا عَلَیۡہِمۡ مِّنۡ سَبِیۡلٍ ﴿ؕ۴۱﴾
কানযুল ঈমান
৪১. এবং নিশ্চয় যে নিজে অত্যাচারিত হওয়ার পর প্রতিশোধ গ্রহণ করেছে, তাদেরকে পাকড়াও করার কোন পথ নেই।
ইরফানুল কুরআন
৪১. আর বস্তুত নির্যাতিত হবার পর যারা প্রতিশোধ নেয়, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ভাবেই (দোষারোপ ও গ্রফতারের) ব্যবস্থা নেয়া হবে না।
اِنَّمَا السَّبِیۡلُ عَلَی الَّذِیۡنَ یَظۡلِمُوۡنَ النَّاسَ وَ یَبۡغُوۡنَ فِی الۡاَرۡضِ بِغَیۡرِ الۡحَقِّ ؕ اُولٰٓئِکَ لَہُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ﴿۴۲﴾
কানযুল ঈমান
৪২. পাকড়াও তো তাদেরকেই করা হয় যারা মানুষের উপর যুল্ম করে এবং পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে অবাধ্যতা ছড়ায় তাদের জন্য বেদনাদায়ক শাস্তি রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৪২. তবে তাদের বিরুদ্ধে কেবল (তিরস্কার ও গ্রেফতারের) ব্যবস্থা নেয়া হবে যারা মানুষের উপর নির্যাতন করে এবং পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে সীমালঙ্ঘন ও বিপর্যয় সৃষ্টি করে; এদের জন্যেই রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
وَ لَمَنۡ صَبَرَ وَ غَفَرَ اِنَّ ذٰلِکَ لَمِنۡ عَزۡمِ الۡاُمُوۡرِ ﴿۴۳﴾
কানযুল ঈমান
৪৩. এবং নিশ্চয় যে ধৈর্যধারণ করেছে এবং ক্ষমা করেছে, তবে এটা অবশ্য সৎ সাহসের কাজ।
ইরফানুল কুরআন
৪৩. আর অবশ্য যে ধৈর্যধারণ করে এবং ক্ষমা করে দেয়, তা হবে সাহসিকতা ও দৃঢ় সংকল্পেরই কাজ।
وَ مَنۡ یُّضۡلِلِ اللّٰہُ فَمَا لَہٗ مِنۡ وَّلِیٍّ مِّنۡۢ بَعۡدِہٖ ؕ وَ تَرَی الظّٰلِمِیۡنَ لَمَّا رَاَوُا الۡعَذَابَ یَقُوۡلُوۡنَ ہَلۡ اِلٰی مَرَدٍّ مِّنۡ سَبِیۡلٍ ﴿ۚ۴۴﴾
কানযুল ঈমান
৪৪. এবং যাকে আল্লাহ্ পথভ্রষ্ট করেন আল্লাহ্র মোকাবেলায় তার কোন বন্ধু নেই। এবং আপনি যালিমদেরকে দেখবেন যে, তখন তারা শাস্তি দেখবে তখন বলবে, ‘ফিরে যাবার কোন পথ আছে কি?
ইরফানুল কুরআন
৪৪. আর আল্লাহ্ যাকে পথভ্রষ্ট করেন এরপর তার জন্যে কোনো অভিভাবক নেই; আর আপনি অত্যাচারীদেরকে দেখবেন যে, যখন তারা (পরকালের) শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে, (তখন) বলবে, ‘(পৃথিবীতে) ফিরে যাবার কি কোনো উপায় আছে?’
وَ تَرٰىہُمۡ یُعۡرَضُوۡنَ عَلَیۡہَا خٰشِعِیۡنَ مِنَ الذُّلِّ یَنۡظُرُوۡنَ مِنۡ طَرۡفٍ خَفِیٍّ ؕ وَ قَالَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنَّ الۡخٰسِرِیۡنَ الَّذِیۡنَ خَسِرُوۡۤا اَنۡفُسَہُمۡ وَ اَہۡلِیۡہِمۡ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ؕ اَلَاۤ اِنَّ الظّٰلِمِیۡنَ فِیۡ عَذَابٍ مُّقِیۡمٍ ﴿۴۵﴾
কানযুল ঈমান
৪৫. এবং আপনি তাদেরকে দেখবেন যে, তাদেরকে আগুনের উপর পেশ করা হচ্ছে, অপমানে তারা দমিত অর্ধমুদিত গোপন দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে; এবং ঈমানদারগণ বলবে, ‘নিশ্চয় ক্ষতির মধ্যে রয়েছে তারাই, যারা নিজেদের আত্নাগুলো ও নিজেদের পরিবারবর্গকে হারিয়ে বসেছে ক্বিয়ামতের দিন। শুনছো! নিশ্চয় যালিমগণ স্থায়ী শাস্তির মধ্যে থাকবে।
ইরফানুল কুরআন
৪৫. আর আপনি তাদেরকে দেখতে পাবেন যে, তাদেরকে জাহান্নামের সম্মুখে আনা হচ্ছে, তারা অপমানে ভীত অবস্থায় অবনত মস্তকে (চুপিসারে) অর্ধনিমীলিত নয়নে তাকাচ্ছে। আর ঈমানদারগণ বলবে, ‘নিশ্চয়ই ক্ষতিগ্রস্ত তারাই যারা কিয়ামতের দিন নিজেদের এবং নিজের পরিবার-পরিজনের ক্ষতিসাধন করেছে’। মনে রেখো! নিশ্চয়ই অত্যাচারীরা স্থায়ী শাস্তিতে (নিমজ্জিত) থাকবে।
وَ مَا کَانَ لَہُمۡ مِّنۡ اَوۡلِیَآءَ یَنۡصُرُوۡنَہُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ ؕ وَ مَنۡ یُّضۡلِلِ اللّٰہُ فَمَا لَہٗ مِنۡ سَبِیۡلٍ ﴿ؕ۴۶﴾
কানযুল ঈমান
৪৬. এবং তাদের কেউ এমন বন্ধু হয় নি যে, আল্লাহ্র বিরুদ্ধে তাদেরকে সাহায্য করতো। এবং যাকে আল্লাহ্ পথভ্রষ্ট করেন তার জন্য কোথাও রাস্তা নেই।
ইরফানুল কুরআন
৪৬. আর এদের (এ কাফেরদের) জন্যে কোনো সমর্থক থাকবে না যারা আল্লাহ্র বিপক্ষে তাদেরকে সাহায্য করবে এবং আল্লাহ্ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তার জন্যে (হেদায়াতের) কোনো পথ নেই।
اِسۡتَجِیۡبُوۡا لِرَبِّکُمۡ مِّنۡ قَبۡلِ اَنۡ یَّاۡتِیَ یَوۡمٌ لَّا مَرَدَّ لَہٗ مِنَ اللّٰہِ ؕ مَا لَکُمۡ مِّنۡ مَّلۡجَاٍ یَّوۡمَئِذٍ وَّ مَا لَکُمۡ مِّنۡ نَّکِیۡرٍ ﴿۴۷﴾
কানযুল ঈমান
৪৭. আপন রবের নির্দেশ মেনে চলো ওই দিন আসার পূর্বে যা আল্লাহ্র দিক থেকে টলবে না। ওই দিন তোমাদের কোন আশ্রয় থাকবে না, না তোমাদের ব্যাপারে অস্বীকার করার কেউ থাকবে।
ইরফানুল কুরআন
৪৭. তোমাদের প্রতিপালকের নির্দেশ গ্রহণ করো সেদিনটি আগত হবার পূর্বেই যা আল্লাহ্র তরফ থেকে অব্যাহতি পাবে না; সেদিন তোমাদের জন্যে কোনো আশ্রয়স্থলও থাকবে না এবং তোমাদের জন্যে অস্বীকার করার কোনো সুযোগও থাকবে না।
فَاِنۡ اَعۡرَضُوۡا فَمَاۤ اَرۡسَلۡنٰکَ عَلَیۡہِمۡ حَفِیۡظًا ؕ اِنۡ عَلَیۡکَ اِلَّا الۡبَلٰغُ ؕ وَ اِنَّاۤ اِذَاۤ اَذَقۡنَا الۡاِنۡسَانَ مِنَّا رَحۡمَۃً فَرِحَ بِہَا ۚ وَ اِنۡ تُصِبۡہُمۡ سَیِّئَۃٌۢ بِمَا قَدَّمَتۡ اَیۡدِیۡہِمۡ فَاِنَّ الۡاِنۡسَانَ کَفُوۡرٌ ﴿۴۸﴾
কানযুল ঈমান
৪৮. অতঃপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে আমি আপনাকে তাদের রক্ষক হিসেবে প্রেরণ করিনি। আপনার উপর তো (জরুরী) নয়, কিন্তু পৌছিয়ে দেওয়া। এবং আমি যখন মানুষকে আমার নিকট থেকে কোন অনুগ্রহের স্বাদ আস্বাদন করাই তখন সেটার উপর খুশী হয়ে যায় এবং যদি তাদেরকে কোন অনিষ্ট স্পর্শ করে ওই কাজের বদলা হিসেবে, যা তাদের হাতগুলো আগে প্রেরণ করেছে, তবে মানুষ বড়ই অকৃতজ্ঞ।
ইরফানুল কুরআন
৪৮. এরপর(ও) যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে আপনাকে আমরা তাদের (রক্ষার) জন্যে রক্ষকরূপে প্রেরণ করিনি। আপনার দায়িত্ব তো কেবল (সত্যের বার্তা) পৌঁছে দেয়া। আর অবশ্য যখন আমরা মানুষকে আমাদের পক্ষ থেকে অনুগ্রহ আস্বাদন করাই, তখন সে আনন্দিত হয় এবং যদি তাদের কোনো বিপদাপদ ঘটে, যা তাদের হস্ত পূর্ব থেকেই প্রেরণ করে রেখেছে তার কারণে, তবে বাস্তবিকই (প্রমাণিত যে) মানুষ অত্যন্ত অকৃতজ্ঞ।
لِلّٰہِ مُلۡکُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ یَخۡلُقُ مَا یَشَآءُ ؕیَہَبُ لِمَنۡ یَّشَآءُ اِنَاثًا وَّ یَہَبُ لِمَنۡ یَّشَآءُ الذُّکُوۡرَ ﴿ۙ۴۹﴾
কানযুল ঈমান
৪৯. আল্লাহ্রই জন্য আস্মানসমূহ ও যমীনের রাজত্ব। তিনি সৃষ্টি করেন যা ইচ্ছা করেন। যাকে চান কন্যাসন্তান দান করেন এবং যাকে চান পুত্রসন্তান দান করেন।
ইরফানুল কুরআন
৪৯. আকাশমন্ডলী এবং পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব আল্লাহ্রই; তিনি যা ইচ্ছা তাই সৃষ্টি করেন। তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন।
اَوۡ یُزَوِّجُہُمۡ ذُکۡرَانًا وَّ اِنَاثًا ۚ وَ یَجۡعَلُ مَنۡ یَّشَآءُ عَقِیۡمًا ؕ اِنَّہٗ عَلِیۡمٌ قَدِیۡرٌ ﴿۵۰﴾
কানযুল ঈমান
৫০. অথবা পুত্র ও কন্যা সন্তান উভয়ই দান করেন। আর যাকে চান তাকে বন্ধ্যা করে দেন। নিশ্চয় তিনি জ্ঞানময়, শক্তিমান।
ইরফানুল কুরআন
৫০. অথবা পুত্র ও কন্যা উভয়ই দেন। আর যাকে ইচ্ছা বন্ধা করে দেন। নিশ্চয়ই তিনি সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান।
وَ مَا کَانَ لِبَشَرٍ اَنۡ یُّکَلِّمَہُ اللّٰہُ اِلَّا وَحۡیًا اَوۡ مِنۡ وَّرَآیِٔ حِجَابٍ اَوۡ یُرۡسِلَ رَسُوۡلًا فَیُوۡحِیَ بِاِذۡنِہٖ مَا یَشَآءُ ؕ اِنَّہٗ عَلِیٌّ حَکِیۡمٌ ﴿۵۱﴾
কানযুল ঈমান
৫১. কোন মানুষের পক্ষে শোভা পায় না যে, আল্লাহ্ তার সাথে কথা বলবেন, কিন্তু ওহী রূপে, অথবা এভাবে যে, ওই মানুষ মহত্বের পর্দার অন্তরালে থাকবে অথবা কোন ফিরিশ্তা প্রেরণ করবেন, সে তার নির্দেশে ওহী করবে যা তিনি চান; নিশ্চয় তিনি উচ্চ মর্যাদাশীল, প্রজ্ঞাময়।
ইরফানুল কুরআন
৫১. আর কোনো মানুষের (এ) অবকাশ নেই যে, আল্লাহ্ তার সাথে (সরাসরি) কথা বলবেন, ওহীর মাধ্যমে (কাউকে নবুয়্যতের মর্যাদা প্রদান করা) ব্যতীরেকে অথবা পর্দার অন্তরাল ব্যতীরেকে (যেমন মূসা আলাইহিস সালামের সাথে সিনাই পর্বতে বলেছেন।) অথবা তাঁর অনুমতিক্রমে কোনো ফেরেশতাকে দূত হিসেবে প্রেরণ ব্যতীরেকে; আল্লাহ্ যা চান তা প্রত্যাদেশ করেন। (মোটকথা মানবজাতির জন্যে আল্লাহ্র সাথে যোগাযোগের মাধ্যম এবং উপলক্ষ কেবল নবী-রাসূলগণই হবেন।) নিশ্চয়ই তিনি উচ্চ মর্যাদার অধিকারী, প্রজ্ঞাবান।
وَ کَذٰلِکَ اَوۡحَیۡنَاۤ اِلَیۡکَ رُوۡحًا مِّنۡ اَمۡرِنَا ؕ مَا کُنۡتَ تَدۡرِیۡ مَا الۡکِتٰبُ وَ لَا الۡاِیۡمَانُ وَ لٰکِنۡ جَعَلۡنٰہُ نُوۡرًا نَّہۡدِیۡ بِہٖ مَنۡ نَّشَآءُ مِنۡ عِبَادِنَا ؕ وَ اِنَّکَ لَتَہۡدِیۡۤ اِلٰی صِرَاطٍ مُّسۡتَقِیۡمٍ ﴿ۙ۵۲﴾
কানযুল ঈমান
৫২. এবং এভাবে আমি আপনার প্রতি ওহী করেছি, এক প্রাণ সঞ্চারক বস্তু আপন নির্দেশে; এর পূর্বে না আপনি কিতাব জানতেন, না শরীয়তের বিবরণ। হাঁ, আমি সেটাকে আলো করেছি, যা দ্বারা আমি পথ দেখাই আপন বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা করি। এবং নিশ্চয় নিশ্চয় আপনি সোজা পথ বাতলিয়ে দেন।
ইরফানুল কুরআন
৫২. সুতরাং এভাবেই আমরা আপনার প্রতি নিজ নির্দেশে (অন্তর ও আত্মার) প্রত্যাদেশ করেছি (আর তা হলো কুরআন)। আর (ওহীর পূর্বে নিজ সত্তাগত প্রচেষ্টা ও ধ্যানের মাধ্যমে) না আপনি জানতেন কিতাব কী আর না ঈমান (-এর শরয়ী বিধিবিধানের বিস্তারিত বিষয়াদিও জানতেন, যা পরবর্তীতে অবতীর্ণ ও নির্ধারিত করা হয়েছিল)।* পক্ষান্তরে আমরা একে আলোকবর্তিকা বানিয়েছি যা দ্বারা আমাদের বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা পথনির্দেশ করি। আর নিশ্চয় আপনি তো সরল পথের দিকে হেদায়াত দান করেন।**
* এতে হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের শানে উম্মিয়্যাত বা প্রচলিত জ্ঞান লাভ না করার দিকে ইঙ্গিত রয়েছে; যাতে কাফেরেরা তাঁর মুখে কুরআনের আয়াত বা ঈমানের বিস্তারিত বিষয়াদি শ্রবণ করে এ খারাপ ধারণা না ছড়ায় যে, এসব কিছু হযরত মুহাম্মদ মুস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম নিজের সত্তাগত জ্ঞান ও ধ্যান-ধারণার মাধ্যমে তৈরি করেছেন, কিছুই অবতীর্ণ হয়নি। সুতরাং নিজ থেকে না জানাকে হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয় আলিহী ওয়াসাল্লামের মহান অলৌকিকত্যের প্রকাশ হিসেবে দেখানো হয়েছে।
صِرَاطِ اللّٰہِ الَّذِیۡ لَہٗ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الۡاَرۡضِ ؕ اَلَاۤ اِلَی اللّٰہِ تَصِیۡرُ الۡاُمُوۡرُ ﴿۵۳﴾
কানযুল ঈমান
৫৩. ৫৩. ওই আল্লাহ্র পথ, যারই মালিকানাধীন যা কিছু আস্মানসমূহে রয়েছে এবং যা কিছু যমীনে। শুনছো! সমস্ত কর্ম আল্লাহ্র দিকে প্রত্যাবর্তন করে।
ইরফানুল কুরআন
৫৩. (এ সরল পথ) ওই আল্লাহ্রই পথ যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সকল কিছুর মালিক। জেনে রাখো! সমস্ত কর্মকান্ড আল্লাহ্র দিকেই প্রত্যাবর্তন করে।