بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
কানযুল ঈমান
০. আল্লাহ্র নামে আরম্ভ, যিনি পরম দয়ালু, করুণাময় (১)
ইরফানুল কুরআন
০. আল্লাহর নামে শুরু, যিনি পরম করুণাময়, সতত অসীম দয়ালু।
حٰمٓ ۚ﴿۱﴾
কানযুল ঈমান
১. হা-মী---ম।
ইরফানুল কুরআন
১. হা-মীম। (প্রকৃত অর্থ আল্লাহ্ এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামই সম্যক অবগত।)
تَنۡزِیۡلٌ مِّنَ الرَّحۡمٰنِ الرَّحِیۡمِ ۚ﴿۲﴾
কানযুল ঈমান
২. এটা অবতীর্ণ পরম দয়ালু, করুণাময়ের।
ইরফানুল কুরআন
২. অসীম দয়ালু, পরম করুণাময় (প্রতিপালক)-এঁর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ,
کِتٰبٌ فُصِّلَتۡ اٰیٰتُہٗ قُرۡاٰنًا عَرَبِیًّا لِّقَوۡمٍ یَّعۡلَمُوۡنَ ۙ﴿۳﴾
কানযুল ঈমান
৩. এক কিতাব, যার আয়াতসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, আরবী ক্বোরআন বোধশক্তি সম্পন্নদের জন্য;
ইরফানুল কুরআন
৩. (এ) কিতাব, যার আয়াতসমূহ সুস্পষ্টরূপে বর্ণিত হয়েছে, জ্ঞানী ও প্রজ্ঞাবান সম্প্রদায়ের জন্যে আরবী (ভাষায়) কুরআন,
بَشِیۡرًا وَّ نَذِیۡرًا ۚ فَاَعۡرَضَ اَکۡثَرُہُمۡ فَہُمۡ لَا یَسۡمَعُوۡنَ ﴿۴﴾
কানযুল ঈমান
৪. সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী। অতঃপর তাদের মধ্যে অধিকাংশ লোক মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। সুতরাং তারা শুনেই না।
ইরফানুল কুরআন
৪. সুসংবাদদাতা এবং সতর্ককারী। কিন্তু তাদের অধিকাংশ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, সুতরাং তারা (তা) শুনেই না।
وَ قَالُوۡا قُلُوۡبُنَا فِیۡۤ اَکِنَّۃٍ مِّمَّا تَدۡعُوۡنَاۤ اِلَیۡہِ وَ فِیۡۤ اٰذَانِنَا وَقۡرٌ وَّ مِنۡۢ بَیۡنِنَا وَ بَیۡنِکَ حِجَابٌ فَاعۡمَلۡ اِنَّنَا عٰمِلُوۡنَ ؓ﴿۵﴾
কানযুল ঈমান
৫. এবং বললো- ‘আমাদের হৃদয় আবরণের মধ্যে- ওই বাণী থেকে, যার প্রতি আপনি আমাদেরকে আহ্বান করেছেন; এবং আমাদের কানের মধ্যে বধিরতা রয়েছে আর আমাদের ও আপনার মধ্যে অন্তরায় রয়েছে। সুতরাং আপনি আপনার কাজ করুন, আমরা আমাদের কাজ করছি।
ইরফানুল কুরআন
৫. আর তারা বলে, ‘আমাদের অন্তর সে বিষয়ে আচ্ছাদিত যার প্রতি আপনি আমাদেরকে আহ্বান করছেন, আমাদের কর্ণে আছে (বধিরতার) বোঝা এবং আমাদের এবং আপনার মাঝে রয়েছে অন্তরাল । সুতরাং আপনি (আপনার) কাজ করতে থাকুন, আমরা আমাদের কাজ করতে থাকি।’
قُلۡ اِنَّمَاۤ اَنَا بَشَرٌ مِّثۡلُکُمۡ یُوۡحٰۤی اِلَیَّ اَنَّمَاۤ اِلٰـہُکُمۡ اِلٰہٌ وَّاحِدٌ فَاسۡتَقِیۡمُوۡۤا اِلَیۡہِ وَ اسۡتَغۡفِرُوۡہُ ؕ وَ وَیۡلٌ لِّلۡمُشۡرِکِیۡنَ ۙ﴿۶﴾
কানযুল ঈমান
৬. আপনি বলুন, ‘মানুষ হওয়ার ক্ষেত্রে তো আমি তোমাদের মতো। আমার প্রতি ওহী আসে যে, তোমাদের উপাস্য একমাত্র উপাস্যই। সুতরাং তার সম্মুখে সোজা থাকো! এবং তাঁরই নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করো। আর দুর্ভোগ রয়েছে শির্ককারীদের জন্য;
ইরফানুল কুরআন
৬. (তাদের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে এবং তাদেরকে শুনতে আগ্রহী করতে) বলে দিন, ‘(হে কাফেরেরা!) বেশ, আমি তো (বাহ্যিকভাবে) মানুষ হিসেবে তোমাদেরই মতো। (তাহলে আমার থেকে এবং আমার দাওয়াত থেকে তোমরা কেনো এমন পলায়নপর হও?) আমার প্রতি এ ওহী প্রেরণ করা হয়েছে যে, তোমাদের উপাস্য একমাত্র উপাস্য! অতএব তোমরা সরাসরি শুধু তাঁরই অভিমুখী হও এবং তাঁরই নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করো। আর মুশরিকদের জন্যে ধ্বংস অপেক্ষমান,
الَّذِیۡنَ لَا یُؤۡتُوۡنَ الزَّکٰوۃَ وَ ہُمۡ بِالۡاٰخِرَۃِ ہُمۡ کٰفِرُوۡنَ ﴿۷﴾
কানযুল ঈমান
৭. ওই সব লোক, যারা যাকাত প্রদান করে না এবং তারা আখিরাতকে অস্বীকারকারী।
ইরফানুল কুরআন
৭. যারা যাকাত প্রদান করে না এবং তারা পরকালেরও অস্বীকারকারী।
اِنَّ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ لَہُمۡ اَجۡرٌ غَیۡرُ مَمۡنُوۡنٍ ﴿۸﴾
কানযুল ঈমান
৮. নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্য অশেষ সাওয়াব রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৮. নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে এবং অবিরত নেক আমল করছে তাদের জন্যে রয়েছে প্রতিদান যা কখনো নিঃশেষ হবে না।
قُلۡ اَئِنَّکُمۡ لَتَکۡفُرُوۡنَ بِالَّذِیۡ خَلَقَ الۡاَرۡضَ فِیۡ یَوۡمَیۡنِ وَ تَجۡعَلُوۡنَ لَہٗۤ اَنۡدَادًا ؕ ذٰلِکَ رَبُّ الۡعٰلَمِیۡنَ ۚ﴿۹﴾
কানযুল ঈমান
৯. আপনি বলুন, ‘তোমরা কি তাকেই অস্বীকার করছো, যিনি দু’দিনে পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং তার সমকক্ষ স্থির করছো? তিনিই হন সমগ্র জাহানের রব’।
ইরফানুল কুরআন
৯. বলে দিন, ‘তোমরা কি অস্বীকার করছো তাঁকে (আল্লাহ্কে) যিনি পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন দু’দিনে (অর্থাৎ দুই সময়কালে) এবং সাব্যস্ত করছো তাঁর সমকক্ষ? তিনিই তো বিশ্ব জাহানের প্রতিপালক।’
وَ جَعَلَ فِیۡہَا رَوَاسِیَ مِنۡ فَوۡقِہَا وَ بٰرَکَ فِیۡہَا وَ قَدَّرَ فِیۡہَاۤ اَقۡوَاتَہَا فِیۡۤ اَرۡبَعَۃِ اَیَّامٍ ؕ سَوَآءً لِّلسَّآئِلِیۡنَ ﴿۱۰﴾
কানযুল ঈমান
১০. এবং তাতে সেটার উপর থেকে নোঙ্গর স্থাপন করেছেন এবং তাতে বরকত রেখেছেন। আর তাতে সেটার বসবাসকারীদের জীবিকাসমূহ নির্ধারণ করেছেন, এ সব মিলিয়ে চারদিনের মধ্যে সঠিক জবাব জিজ্ঞাসাকারীদের জন্য।
ইরফানুল কুরআন
১০. আর তিনি এর মধ্য থেকে (নির্গত করে) এর উপর স্থাপন করেছেন ভারী পর্বতমালা এবং এর অভ্যন্তরে রেখেছেন (খনিজ সম্পদ, জলাধার, প্রাকৃতিক সম্পদ এবং অন্যান্য পদার্থ এবং শক্তিসমূহের অফুরন্ত) বরকত। আর এতে নির্ধারণ করেছেন (সমস্ত সৃষ্টিজগতের জন্যে) খাদ্যভান্ডার (এবং জীবিকার উপকরণ), (এসব কিছু তিনি) চার দিনে (অর্থাৎ চারটি ক্রমবিকাশমান সময়কালে) পূর্ণ করেছেন; (এসব রিযিক প্রকৃতপক্ষে) সকল যাচ্ঞাকারীর (এবং অভাগ্রস্তের) জন্যে সমান।
ثُمَّ اسۡتَوٰۤی اِلَی السَّمَآءِ وَ ہِیَ دُخَانٌ فَقَالَ لَہَا وَ لِلۡاَرۡضِ ائۡتِیَا طَوۡعًا اَوۡ کَرۡہًا ؕ قَالَتَاۤ اَتَیۡنَا طَآئِعِیۡنَ ﴿۱۱﴾
কানযুল ঈমান
১১. অতঃপর আসমানের দিকে মনোনিবেশ করলেন এবং তা ধোয়া ছিলো। অতঃপর তাকে ও পৃথিবীকে বললেন, ‘উভয়ে হাযির হও স্বেচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায়। উভয়ে ‘আরয করলো, আমরা সাগ্রহে হাযির হলাম’।
ইরফানুল কুরআন
১১. এরপর তিনি ঊর্ধ্ব জগতের অভিমুখী হলেন, তখন এ (সবকিছু) ছিল ধুম্রপুঞ্জবিশেষ। অতঃপর তিনি একে (অর্থাৎ আকাশমন্ডলীকে) এবং পৃথিবীকে বললেন, ‘চাই পরস্পরের আকর্ষণ ও সমন্বয়ের প্রভাবে অথবা অনিচ্ছায় বাধ্য হয়ে (আমার নিয়মের অনুগত হয়ে) আগমন করো’। উভয়ে বললো, ‘আমরা স্বপ্রণোদিত হয়ে উপস্থিত হলাম’।
فَقَضٰہُنَّ سَبۡعَ سَمٰوَاتٍ فِیۡ یَوۡمَیۡنِ وَ اَوۡحٰی فِیۡ کُلِّ سَمَآءٍ اَمۡرَہَا ؕ وَ زَیَّنَّا السَّمَآءَ الدُّنۡیَا بِمَصَابِیۡحَ ٭ۖ وَ حِفۡظًا ؕ ذٰلِکَ تَقۡدِیۡرُ الۡعَزِیۡزِ الۡعَلِیۡمِ ﴿۱۲﴾
কানযুল ঈমান
১২. অতঃপর সেগুলোকে পূর্ণ সপ্ত আসমান করে দিলেন দু’দিনের মধ্যে এবং প্রত্যেক আসমানের মধ্যে তাঁরই কর্তব্য কর্মের বিধানাবলী প্রেরণ করলেন এবং আমি নিম্নতম আসমানকে প্রদীপসমূহ দ্বারা সুসজ্জিত করেছি এবং সংরক্ষণের নিমিত্ত। এটা হচ্ছে ওই সম্মানিত, সর্বজ্ঞাতারই স্থিরীকৃত।
ইরফানুল কুরআন
১২. অতঃপর তিনি সপ্তাকাশ গড়লেন দু’দিনে (অর্থাৎ দু’টি ধাপে) এবং সকল ঊর্ধ্বজগতে এদের বিধান ব্যক্ত করলেন। আর নিম্নাকাশকে আমরা সুসজ্জিত করলাম (গ্রহ-নক্ষত্রের) প্রদীপমালা দ্বারা এবং সুরক্ষিতও করলাম (যাতে একটির পদ্ধতি অন্যটিতে ব্যত্যয় না ঘটায়)। এটি মহাপরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞ (প্রতিপালক)-এঁর নির্ধারিত ব্যবস্থাপনা।
فَاِنۡ اَعۡرَضُوۡا فَقُلۡ اَنۡذَرۡتُکُمۡ صٰعِقَۃً مِّثۡلَ صٰعِقَۃِ عَادٍ وَّ ثَمُوۡدَ ﴿ؕ۱۳﴾
কানযুল ঈমান
১৩. অতঃপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে আপনিই বলুন, ‘আমি তোমাদেরকে সতর্ক করছি এক বজ্রপাত সম্পর্কে যেমন বজ্রপাত ‘আদ ও সামূদের উপর এসেছিলো।
ইরফানুল কুরআন
১৩. তবুও যদি এরা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে বলে দিন, ‘আমি তো তোমাদেরকে সতর্ক করছি এক ভয়ানক শাস্তি সম্পর্কে, ’আদ ও সামূদের ধ্বংসের শাস্তির অনুরূপ’।
اِذۡ جَآءَتۡہُمُ الرُّسُلُ مِنۡۢ بَیۡنِ اَیۡدِیۡہِمۡ وَ مِنۡ خَلۡفِہِمۡ اَلَّا تَعۡبُدُوۡۤا اِلَّا اللّٰہَ ؕ قَالُوۡا لَوۡ شَآءَ رَبُّنَا لَاَنۡزَلَ مَلٰٓئِکَۃً فَاِنَّا بِمَاۤ اُرۡسِلۡتُمۡ بِہٖ کٰفِرُوۡنَ ﴿۱۴﴾
কানযুল ঈমান
১৪. যখন অনুসরণ তাদের সামনে এবং পেছনে বিচরণ করছিলেন, ও বলছিলেন, ‘আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত করো না। তখন তারা বললো, ‘আমাদের রব ইচ্ছা করলে ফিরিশ্তাদেরকে অবতীর্ণ করতেন। সুতরাং যা কিছু নিয়ে তোমরা প্রেরিত হয়েছো তা আমরা মানি না।
ইরফানুল কুরআন
১৪. যখন তাদের নিকট রাসূলগণ এসেছিলেন তাদের সম্মুখ ও তাদের পশ্চাত হতে (অথবা তাদের পূর্বে এবং তাদের পরে এবং বলেছিলেন) যে, ‘আল্লাহ ব্যতীত কারো ইবাদত করো না’। তখন তারা বলেছিল, ‘যদি আমাদের প্রতিপালক চাইতেন তবে ফেরেশতা প্রেরণ করতেন। সুতরাং তোমাদেরকে যা কিছুসহ প্রেরণ করা হয়েছে আমরা তা প্রত্যাখ্যান করি।’
فَاَمَّا عَادٌ فَاسۡتَکۡبَرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ بِغَیۡرِ الۡحَقِّ وَ قَالُوۡا مَنۡ اَشَدُّ مِنَّا قُوَّۃً ؕ اَوَ لَمۡ یَرَوۡا اَنَّ اللّٰہَ الَّذِیۡ خَلَقَہُمۡ ہُوَ اَشَدُّ مِنۡہُمۡ قُوَّۃً ؕ وَ کَانُوۡا بِاٰیٰتِنَا یَجۡحَدُوۡنَ ﴿۱۵﴾
কানযুল ঈমান
১৫. অতঃপর ওই সব লোক যারা ‘আদ সম্প্রদায়ের ছিলো, তারা ভূ-পৃষ্ঠে অন্যায়ভাবে অহঙ্কার করলো এবং বললো, ‘আমাদের চেয়ে কার শক্তি বেশি?’ এবং তারা কি জানতে পারে নি যে, আল্লাহ্, যিনি তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তিনি তাদের চেয়ে অধিক শক্তিশালী? আর আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করতো।
ইরফানুল কুরআন
১৫. সুতরাং ’আদ সম্প্রদায়ের ব্যাপার ছিল এরকম, তারা পৃথিবীতে অন্যায় অহঙ্কার করতো ও (অবাধ্য হয়ে) বলতো, ‘আমাদের অপেক্ষা শক্তিশালী কে আছে?’ তবে কি তারা লক্ষ্য করেনি যে, আল্লাহ্, যিনি তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, তিনি তাদের অপেক্ষা শক্তিশালী? অথচ তারা আমাদের আয়াতসমূহকে অস্বীকার করতো।
فَاَرۡسَلۡنَا عَلَیۡہِمۡ رِیۡحًا صَرۡصَرًا فِیۡۤ اَیَّامٍ نَّحِسَاتٍ لِّنُذِیۡقَہُمۡ عَذَابَ الۡخِزۡیِ فِی الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا ؕ وَ لَعَذَابُ الۡاٰخِرَۃِ اَخۡزٰی وَ ہُمۡ لَا یُنۡصَرُوۡنَ ﴿۱۶﴾
কানযুল ঈমান
১৬. অতঃপর আমি তাদের উপর এক প্রচণ্ড শীতল বায়ু প্রেরণ করেছি কঠোর গর্জনের তাদের অশুভ দিনগুলোর মধ্যে, যেন আমি তাদেরকে লাঞ্ছনার শাস্তি আস্বাদন করাই পার্থিব জীবনে। আর নিশ্চয় আখিরাতের শাস্তিতে রয়েছে সর্বাপেক্ষা বড় লাঞ্ছনা; এবং তাদেরকে সাহায্য করা হবে না।
ইরফানুল কুরআন
১৬. সুতরাং আমরা তাদের বিরুদ্ধে অশুভ দিনে প্রেরণ করলাম ভয়ানক তীব্র গতিসম্পন্ন ঝঞ্ঝাবায়ু, যাতে আমরা তাদেরকে পার্থিব জীবনে লাঞ্ছনাকর শাস্তি আস্বাদন করাতে পারি। আর পরকালের শাস্তি তো হবে অধিকতর লাঞ্ছনাকর এবং তাদেরকে কোনো সাহায্য করা হবে না।
وَ اَمَّا ثَمُوۡدُ فَہَدَیۡنٰہُمۡ فَاسۡتَحَبُّوا الۡعَمٰی عَلَی الۡہُدٰی فَاَخَذَتۡہُمۡ صٰعِقَۃُ الۡعَذَابِ الۡہُوۡنِ بِمَا کَانُوۡا یَکۡسِبُوۡنَ ﴿ۚ۱۷﴾
কানযুল ঈমান
১৭. এবং বাকী রইলো সামূদ। তাদেরকে আমি পথ প্রদর্শন করেছি; সুতরাং তারা আলো দেখার পরিবর্তে অন্ধত্বকেই গ্রহণ করেছেন। অতঃপর তাদেরকে লাঞ্ছনার শাস্তির বজ্রনাদ পেয়ে বসেছে; তাদের কৃতকর্মের শাস্তি।
ইরফানুল কুরআন
১৭. আর সামূদ জাতির ব্যাপার ছিল এরকম, আমরা তাদেরকে হেদায়াতের পথ প্রদর্শন করেছিলাম, কিন্তু তারা হেদায়াতের বিপরীতে অন্ধ থাকাকেই পছন্দ করেছিল। সুতরাং তাদেরকে আঘাত হানলো লাঞ্ছনাকর শাস্তির বজ্রাঘাত, তাদের অর্জিত কৃতকর্মের পরিণামস্বরূপ।
وَ نَجَّیۡنَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ کَانُوۡا یَتَّقُوۡنَ ﴿۱۸﴾
কানযুল ঈমান
১৮. এবং আমি তাদেরকেই উদ্ধার করেছি, যারা ঈমান এনেছে এবং ভয় করতো।
ইরফানুল কুরআন
১৮. আর আমরা রক্ষা করলাম তাদেরকে যারা ঈমান এনেছিল এবং যারা পরহেযগারিতা অবলম্বন করতো।
وَ یَوۡمَ یُحۡشَرُ اَعۡدَآءُ اللّٰہِ اِلَی النَّارِ فَہُمۡ یُوۡزَعُوۡنَ ﴿۱۹﴾
কানযুল ঈমান
১৯. এবং যেদিন আল্লাহ্র শত্রুদেরকে আগুনের দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে; তখন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে রুখে দেওয়া হবে, শেষ পর্যন্ত পরবর্তীগণ এসে মিলিত হবে;
ইরফানুল কুরআন
১৯. আর যেদিন আল্লাহ্র শত্রুদেরকে জাহান্নামের দিকে সমবেত করে নেয়া হবে, সেদিন তাদেরকে বিন্যস্ত করে (তাড়িয়ে) নিয়ে যাওয়া হবে।
حَتّٰۤی اِذَا مَا جَآءُوۡہَا شَہِدَ عَلَیۡہِمۡ سَمۡعُہُمۡ وَ اَبۡصَارُہُمۡ وَ جُلُوۡدُہُمۡ بِمَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۲۰﴾
কানযুল ঈমান
২০. পরিশেষে, যখন সেখানে পৌঁছবে তখন তাদের কান, তাদের চোখ এবং তাদের চামড়াগুলো সবই তাদের বিরুদ্ধে তাদের কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে।
ইরফানুল কুরআন
২০. অবশেষে যখন তারা জাহান্নামের সন্নিকটে পৌঁছুবে তখন তাদের কর্ণ, তাদের চক্ষু এবং তাদের ত্বক তাদের বিপক্ষে সাক্ষ্য দেবে সে সম্পর্কে যা তারা করতো।
وَ قَالُوۡا لِجُلُوۡدِہِمۡ لِمَ شَہِدۡتُّمۡ عَلَیۡنَا ؕ قَالُوۡۤا اَنۡطَقَنَا اللّٰہُ الَّذِیۡۤ اَنۡطَقَ کُلَّ شَیۡءٍ وَّ ہُوَ خَلَقَکُمۡ اَوَّلَ مَرَّۃٍ وَّ اِلَیۡہِ تُرۡجَعُوۡنَ ﴿۲۱﴾
কানযুল ঈমান
২১. এবং তারা তাদের চামড়া গুলোকে বলবে, ‘তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে কেন সাক্ষ্য দিয়েছ?’ সেগুলো বলবে, ‘আমাদেরকে আল্লাহ্ বাক-শক্তি দিয়েছেন, যিনি প্রত্যেক বস্তকে বাকশক্তি দান করেছেন। আর তিনি তোমাদেরকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁরই দিকে তোমাদেরকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে।
ইরফানুল কুরআন
২১. অতঃপর এরা নিজেদের ত্বককে জিজ্ঞেস করবে, ‘তোমরা আমাদের বিপক্ষে কেন সাক্ষ্য দিচ্ছো?’ তারা উত্তরে বলবে, ‘আমাদেরকে বাকশক্তি দিয়েছেন আল্লাহ্, যিনি সকল কিছুকে বাকশক্তি প্রদান করেন। আর তিনিই তোমাদেরকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন এবং তোমরা তাঁরই নিকটে প্রত্যাবর্তিত হবে।’
وَ مَا کُنۡتُمۡ تَسۡتَتِرُوۡنَ اَنۡ یَّشۡہَدَ عَلَیۡکُمۡ سَمۡعُکُمۡ وَ لَاۤ اَبۡصَارُکُمۡ وَ لَا جُلُوۡدُکُمۡ وَ لٰکِنۡ ظَنَنۡتُمۡ اَنَّ اللّٰہَ لَا یَعۡلَمُ کَثِیۡرًا مِّمَّا تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۲۲﴾
কানযুল ঈমান
২২. এবং তোমরা এর থেকে কোথায় আত্নগোপন করে যাচ্ছিলে যে, তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে তোমাদের কান, তোমাদের চোখ এবং তোমাদের চামড়াগুলো? কিন্তু তোমরা তো এ ধারণা করে বসেছিলে যে, আল্লাহ্ তোমাদের কর্ম সম্পর্কে জানেন না!
ইরফানুল কুরআন
২২. আর তোমরা (পাপ করার সময় এ ভয়েও) গোপনীয়তা রক্ষা করতে না যে, তোমাদের কর্ণ তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে, আর না (এ ভয় করতে যে,) তোমাদের চক্ষু, আর না তোমাদের ত্বকও (সাক্ষ্য দেবে)। উপরন্তু তোমরা মনে করতে যে, আল্লাহ্ সেসবের অনেক কিছুই জানেন না যা তোমরা সম্পাদন করো।
وَ ذٰلِکُمۡ ظَنُّکُمُ الَّذِیۡ ظَنَنۡتُمۡ بِرَبِّکُمۡ اَرۡدٰىکُمۡ فَاَصۡبَحۡتُمۡ مِّنَ الۡخٰسِرِیۡنَ ﴿۲۳﴾
কানযুল ঈমান
২৩. ‘এবং এটা হচ্ছে তোমাদের ওই ধারণা যা তোমরা আপন রব সম্বন্ধে করেছো এবং সেটাই তোমাদেরকে ধ্বংস করে ফেলেছে। সুতরাং এখন রয়ে গেছো ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে’।
ইরফানুল কুরআন
২৩. আর তোমাদের এ ধারণাই তোমাদেরকে ধ্বংস করেছে যা তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের ব্যাপারে পোষণ করেছো। সুতরাং তোমরা ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে গণ্য হয়েছো।
فَاِنۡ یَّصۡبِرُوۡا فَالنَّارُ مَثۡوًی لَّہُمۡ ۚ وَ اِنۡ یَّسۡتَعۡتِبُوۡا فَمَا ہُمۡ مِّنَ الۡمُعۡتَبِیۡنَ ﴿۲۴﴾
কানযুল ঈমান
২৪. অতঃপর যদি তারা ধৈর্যধারণ করে তবুও আগুনই তাদের ঠিকানা। আর যদি তারা মানাতেও চায়, তবুও কেউ তাদের মানানো মানবে না।
ইরফানুল কুরআন
২৪. এখন তারা ধৈর্য ধারণ করলেও জাহান্নামই হবে তাদের আবাস। আর তারা (তওবার মাধ্যমে আল্লাহ্র) সন্তুষ্টি অর্জন করতে চাইলেও তারা সন্তুষ্টি অর্জনকারীদের মধ্যে গণ্য হবে না।
وَ قَیَّضۡنَا لَہُمۡ قُرَنَآءَ فَزَیَّنُوۡا لَہُمۡ مَّا بَیۡنَ اَیۡدِیۡہِمۡ وَ مَا خَلۡفَہُمۡ وَ حَقَّ عَلَیۡہِمُ الۡقَوۡلُ فِیۡۤ اُمَمٍ قَدۡ خَلَتۡ مِنۡ قَبۡلِہِمۡ مِّنَ الۡجِنِّ وَ الۡاِنۡسِ ۚ اِنَّہُمۡ کَانُوۡا خٰسِرِیۡنَ ﴿۲۵﴾
কানযুল ঈমান
২৫. এবং আমি তাদের জন্য কিছু সহচর নিয়োজিত করেছি। তারা তাদের জন্য সুশোভিত করে দেখিয়েছে যা তাদের সামনে আছে ও যা তাদের পেছনে। এবং তাদের উপর বাণী পূর্ণ হয়েছে ওই সব দলের সাথে, যারা তাদের পূর্বে গত হয়েছে- জিন্ ও মানুষের। নিশ্চয় তারা ক্ষতিগ্রস্ত ছিলো।
ইরফানুল কুরআন
২৫. আর আমরা তাদের জন্যে সহচর নিয়োজিত করেছিলাম (শয়তানদেরকে)। সুতরাং তারা তাদের দৃষ্টিতে (সমস্ত মন্দকর্মকে) সুশোভিত করে দেখিয়েছিল, যেসব তাদের সম্মুখে ও পশ্চাতে ছিল। তাদের পূর্বে অতিবাহিত জ্বিন ও মানব সম্প্রদায়ের ন্যায় তাদের উপরও (সেই) শাস্তির নির্দেশ প্রমাণিত হয়েছে। নিশ্চয়ই তারা ছিল ক্ষতিগ্রস্ত।
وَ قَالَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا لَا تَسۡمَعُوۡا لِہٰذَا الۡقُرۡاٰنِ وَ الۡغَوۡا فِیۡہِ لَعَلَّکُمۡ تَغۡلِبُوۡنَ ﴿۲۶﴾
কানযুল ঈমান
২৬. এবং কাফিরগণ বললো, ‘এ ক্বোরআন শ্রবণ করো না! আর তাতে অনর্থক শোরগোল করো, হয় তো এভাবেই তোমরা জয়ী হতে পারো’।
ইরফানুল কুরআন
২৬. আর কাফেরেরা বলে, ‘তোমরা এ কুরআন শ্রবণ করো না এবং (পাঠের সময়) এতে গোলযোগ সৃষ্টি করো, যাতে তোমরা (তাদের কুরআন পাঠের উপর) জয়ী হতে পারো’।
فَلَنُذِیۡقَنَّ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا عَذَابًا شَدِیۡدًا ۙ وَّ لَنَجۡزِیَنَّہُمۡ اَسۡوَاَ الَّذِیۡ کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۲۷﴾
কানযুল ঈমান
২৭. সুতরাং নিশ্চয় নিশ্চয় আমি কাফিরদের কঠিন শাস্তির স্বাদ গ্রহণ করাবো এবং নিশ্চয় আমি তাদের মন্দ থেকে মন্দতর কাজের প্রতিফল তাদেরকে দেবো।
ইরফানুল কুরআন
২৭. অতঃপর অবশ্যই আমরা কাফেরদেরকে কঠিন শাস্তি আস্বাদন করাবো এবং অবশ্যই তাদেরকে নিকৃষ্ট কর্মকান্ডের প্রতিদান দেবো যা তারা করতো।
ذٰلِکَ جَزَآءُ اَعۡدَآءِ اللّٰہِ النَّارُ ۚ لَہُمۡ فِیۡہَا دَارُ الۡخُلۡدِ ؕ جَزَآءًۢ بِمَا کَانُوۡا بِاٰیٰتِنَا یَجۡحَدُوۡنَ ﴿۲۸﴾
কানযুল ঈমান
২৮. এই হচ্ছে আল্লাহ্র শত্রুদের প্রতিফল, আগুন। তাতে তাদেরকে স্থায়ীভাবে থাকতে হবে- শাস্তিস্বরূপ এরই যে, তারা আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করতো।
ইরফানুল কুরআন
২৮. এ জাহান্নামই আল্লাহ্র দুশমনদের প্রতিদান। এতে তাদের জন্যে রয়েছে চিরস্থায়ী আবাস; এ হলো আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকারের প্রতিফল।
وَ قَالَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا رَبَّنَاۤ اَرِنَا الَّذَیۡنِ اَضَلّٰنَا مِنَ الۡجِنِّ وَ الۡاِنۡسِ نَجۡعَلۡہُمَا تَحۡتَ اَقۡدَامِنَا لِیَکُوۡنَا مِنَ الۡاَسۡفَلِیۡنَ ﴿۲۹﴾
কানযুল ঈমান
২৯. এবং কাফিরগণ বললো, ‘হে আমাদের রব! আমাদেরকে দেখাও ওই দু’টিকে- জিন ও মানব, যারা আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছে, যাতে আমরা তাদেরকে আমাদের পদতলে নিক্ষেপ করি, যেন তারা প্রত্যেক নিম্নবর্তীরও নিচে থাকে।
ইরফানুল কুরআন
২৯. আর যারা কুফরী করেছে তারা বলবে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! জ্বিন এবং মানুষদের মধ্যে যারা আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল তাদেরকে দেখিয়ে দাও,; আমরা তাদের উভয়কে আমাদের পদতলে (পিষে) দলিত করবো, যাতে তারা সবচেয়ে বেশি লাঞ্ছিত হয়।’
اِنَّ الَّذِیۡنَ قَالُوۡا رَبُّنَا اللّٰہُ ثُمَّ اسۡتَقَامُوۡا تَتَنَزَّلُ عَلَیۡہِمُ الۡمَلٰٓئِکَۃُ اَلَّا تَخَافُوۡا وَ لَا تَحۡزَنُوۡا وَ اَبۡشِرُوۡا بِالۡجَنَّۃِ الَّتِیۡ کُنۡتُمۡ تُوۡعَدُوۡنَ ﴿۳۰﴾
কানযুল ঈমান
৩০. নিশ্চয় ওই সব লোক যারা বলেছে, ‘আমাদের রব আল্লাহ্’ অতঃপর সেটার উপর স্থির রয়েছে, তাদের উপর ফিরিশ্তা অবতীর্ণ হয়! (আর বলে) ‘না ভীত হও এবং না দুঃখ করো এবং আনন্দিত হও এ জান্নাতের উপর যার সম্পর্কে তোমাদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো।
ইরফানুল কুরআন
৩০. নিশ্চয়ই যেসব লোক বলে, ‘আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্’, অতঃপর তারা (এতে সুদৃঢ়ভাবে) অবিচল থাকে, তাদের নিকট ফেরেশতা অবতীর্ণ হয় (এবং বলে), ‘তোমরা ভীত হয়ো না, চিন্তিতও হয়ো না এবং জান্নাতে উল্লসিত হও, যার ব্যাপারে তোমাদেরকে অঙ্গীকার করা হয়েছিল।
نَحۡنُ اَوۡلِیٰٓؤُکُمۡ فِی الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا وَ فِی الۡاٰخِرَۃِ ۚ وَ لَکُمۡ فِیۡہَا مَا تَشۡتَہِیۡۤ اَنۡفُسُکُمۡ وَ لَکُمۡ فِیۡہَا مَا تَدَّعُوۡنَ ﴿ؕ۳۱﴾
কানযুল ঈমান
৩১. আমরা তোমাদের বন্ধু পার্থিব জীবনে ও আখিরাতে এবং তোমাদের জন্য রয়েছে তাতে যা তোমাদের মন চায়। আর তোমাদের জন্য তাতে রয়েছে যা তোমরা চাও।
ইরফানুল কুরআন
৩১. আমরা পার্থিব জীবনে এবং পরকালে তোমাদের বন্ধু ও সাহায্যকারী। আর সেখানে তোমাদের জন্যে রয়েছে নিয়ামত যা কিছু তোমাদের মন চায় এবং সেখানে তোমাদের জন্যে রয়েছে এমন সব বস্তু যা তোমরা প্রার্থনা করো।
نُزُلًا مِّنۡ غَفُوۡرٍ رَّحِیۡمٍ ﴿۳۲﴾
কানযুল ঈমান
৩২. আপ্যায়ণ-ক্ষমাশীল, পরম দয়ালুর পক্ষ থেকে।
ইরফানুল কুরআন
৩২. (এসব) মহাক্ষমাশীল, পরম দয়ালু (প্রতিপালক) -এঁর পক্ষ থেকে আতিথেয়তা।’
وَ مَنۡ اَحۡسَنُ قَوۡلًا مِّمَّنۡ دَعَاۤ اِلَی اللّٰہِ وَ عَمِلَ صَالِحًا وَّ قَالَ اِنَّنِیۡ مِنَ الۡمُسۡلِمِیۡنَ ﴿۳۳﴾
কানযুল ঈমান
৩৩. এবং তার চেয়ে কার কথা অধিক উত্তম, যে আল্লাহ্র প্রতি আহ্বান করে এবং সৎকর্ম করে; আর বলে, ‘আমি মুসলমান’।
ইরফানুল কুরআন
৩৩. আর তার চেয়ে উত্তম সুবক্তা কে, যে আল্লাহ্র প্রতি আহ্বান করে, সৎকর্ম করে এবং বলে, ‘নিশ্চয়ই আমি (আল্লাহ আয্যা ওয়া জাল্লা এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের) অনুগতদের মধ্যে গণ্য?’
وَ لَا تَسۡتَوِی الۡحَسَنَۃُ وَ لَا السَّیِّئَۃُ ؕ اِدۡفَعۡ بِالَّتِیۡ ہِیَ اَحۡسَنُ فَاِذَا الَّذِیۡ بَیۡنَکَ وَ بَیۡنَہٗ عَدَاوَۃٌ کَاَنَّہٗ وَلِیٌّ حَمِیۡمٌ ﴿۳۴﴾
কানযুল ঈমান
৩৪. এবং ভালো ও মন্দ সমান হয়ে যাবে না। হে শ্রোতা! মন্দকে ভালো দ্বারা প্রতিহত করো! তখনই ওই ব্যক্তি, যে তোমার মধ্যে ও তার মধ্যে শত্রুতা ছিলো, এমন হয়ে যাবে যেমন অন্তরঙ্গ বন্ধু।
ইরফানুল কুরআন
৩৪. আর ভালো ও মন্দ সমান হতে পারে না এবং মন্দকে দূরীভূত করো উৎকৃষ্ট (পন্থা) দ্বারা; ফলে সে ব্যক্তি তোমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে যাবে যার এবং তোমার মাঝে শত্রুতা ছিল।
وَ مَا یُلَقّٰہَاۤ اِلَّا الَّذِیۡنَ صَبَرُوۡا ۚ وَ مَا یُلَقّٰہَاۤ اِلَّا ذُوۡحَظٍّ عَظِیۡمٍ ﴿۳۵﴾
কানযুল ঈমান
৩৫. এবং এ সম্পদ পায় না, কিন্তু ধৈর্যশীলগণ এবং তা পায় না, কিন্তু মহা সৌভাগ্যবান ব্যক্তি।
ইরফানুল কুরআন
৩৫. আর এ (উৎকৃষ্ট গুণ) কেবল তাদেরকেই প্রদান করা হয় যারা ধৈর্য ধারণ করে এবং এ (সক্ষমতা) কেবল তাদেরকেই দেয়া হয় যারা মহাভাগ্যবান।
وَ اِمَّا یَنۡزَغَنَّکَ مِنَ الشَّیۡطٰنِ نَزۡغٌ فَاسۡتَعِذۡ بِاللّٰہِ ؕ اِنَّہٗ ہُوَ السَّمِیۡعُ الۡعَلِیۡمُ ﴿۳۶﴾
কানযুল ঈমান
৩৬. এবং যদি তোমাকে শয়তানের কোন কুমন্ত্রনা স্পর্শ করে তখন আল্লাহ্র আশ্রয় প্রার্থনা করো! নিশ্চয় তিনিই শুনেন, জানেন।
ইরফানুল কুরআন
৩৬. আর (হে মুমিন বান্দা!) যদি শয়তানের কুমন্ত্রণা তোমাকে প্ররোচিত করে তবে আল্লাহ্র আশ্রয় প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
وَ مِنۡ اٰیٰتِہِ الَّیۡلُ وَ النَّہَارُ وَ الشَّمۡسُ وَ الۡقَمَرُ ؕ لَا تَسۡجُدُوۡا لِلشَّمۡسِ وَ لَا لِلۡقَمَرِ وَ اسۡجُدُوۡا لِلّٰہِ الَّذِیۡ خَلَقَہُنَّ اِنۡ کُنۡتُمۡ اِیَّاہُ تَعۡبُدُوۡنَ ﴿۳۷﴾
কানযুল ঈমান
৩৭. এবং তাঁরই নিদর্শনসমূহের মধ্য থেকে রাত ও দিন, সূর্য ও চাঁদ। সাজদা করো না সূর্যকে এবং না চাদকে। এবং আল্লাহ্কে সাজদা করো, যিনি সেগুলো সৃষ্টি করেছেন; যদি তোমরা তার বান্দা হও।
ইরফানুল কুরআন
৩৭. আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে গণ্য রজনী ও দিবস এবং সূর্য ও চন্দ্র । তোমরা সূর্যকেও সেজদা করো না, আর চন্দ্রকেও না; বরং সেজদাবনত হও কেবল আল্লাহ্র সমীপে, যিনি এসব (কিছু) সৃষ্টি করেছেন, যদি তোমরা তাঁরই ইবাদত করো।
فَاِنِ اسۡتَکۡبَرُوۡا فَالَّذِیۡنَ عِنۡدَ رَبِّکَ یُسَبِّحُوۡنَ لَہٗ بِالَّیۡلِ وَ النَّہَارِ وَ ہُمۡ لَا یَسۡـَٔمُوۡنَ ﴿ٛ۳۸﴾
কানযুল ঈমান
৩৮. সুতরাং যদি এরা অহঙ্কার করে তবে তারা, যারা আপনার রবের নিকট রয়েছে, রাতদিন তাঁরই পবিত্রতা ঘোষণা করছে এবং তারা ক্লান্তি বোধ করে না।
ইরফানুল কুরআন
৩৮. অতঃপর যদি তারা অহঙ্কার করে (তবে আপনি তাদেরকে গ্রাহ্য করবেন না)। তবে যে ফেরেশতারা আপনার প্রতিপালকের সান্নিধ্যে রয়েছে তারা রাত দিন তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করতে থাকে এবং তারা কখনো ক্লান্ত (এবং অসন্তুষ্ট) হয় না।
وَ مِنۡ اٰیٰتِہٖۤ اَنَّکَ تَرَی الۡاَرۡضَ خَاشِعَۃً فَاِذَاۤ اَنۡزَلۡنَا عَلَیۡہَا الۡمَآءَ اہۡتَزَّتۡ وَ رَبَتۡ ؕ اِنَّ الَّذِیۡۤ اَحۡیَاہَا لَمُحۡیِ الۡمَوۡتٰی ؕ اِنَّہٗ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ ﴿۳۹﴾
কানযুল ঈমান
৩৯. এবং তার নিদর্শনসমূহের অন্যতম এ যে, তুমি ভূমিকে দেখতে পাও মূল্যহীনভাবে পড়ে আছে। অতঃপর যখন আমি সেটার উপর বারি বর্ষণ করলাম তখন তা তরুতাজা হয়ে গেলো এবং বাড়তে লাগলো। নিশ্চয় যিনি সেটা জীবিত করেন, তিনিই নিশ্চয় মৃতকে জীবিত করবেন। নিশ্চয় তিনি সব কিছু করতে পারেন।
ইরফানুল কুরআন
৩৯. আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে এও রয়েছে যে, আপনি (প্রথমে) ভূমিকে শুষ্ক (ও অনুর্বর) দেখতে পান; অতঃপর যখন আমরা এতে পানি বর্ষণ করি তখন তা সবুজ ও সতেজ হয় এবং বেড়ে উঠতে থাকে। নিশ্চয়ই সেই সত্তা, যিনি একে (এই মৃত ভূমিকে) জীবিত করেন, তিনিই তো (কিয়ামতের দিন) মৃতকে জীবনদানকারী। নিশ্চয়ই তিনি সকল কিছুর উপর নিরঙ্কুশ ক্ষমতাবান।
اِنَّ الَّذِیۡنَ یُلۡحِدُوۡنَ فِیۡۤ اٰیٰتِنَا لَا یَخۡفَوۡنَ عَلَیۡنَا ؕ اَفَمَنۡ یُّلۡقٰی فِی النَّارِ خَیۡرٌ اَمۡ مَّنۡ یَّاۡتِیۡۤ اٰمِنًا یَّوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ؕ اِعۡمَلُوۡا مَا شِئۡتُمۡ ۙ اِنَّہٗ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ بَصِیۡرٌ ﴿۴۰﴾
কানযুল ঈমান
৪০. নিশ্চয় ওই সব লোক, যারা আমার নিদর্শনসমূহের মধ্যে বাকা চলে তারা আমার নিকট গোপন নয়। তবে কি যাকে আগুনে নিক্ষেপ করা হবে সে উৎকৃষ্ট, না যে ক্বিয়ামতে নিরাপদে আসবে সে? যা মনে আসে করো। নিশ্চয় তিনি তোমাদের কর্ম দেখছেন।
ইরফানুল কুরআন
৪০. নিশ্চয়ই যারা আমার আয়াতসমূহকে (অর্থে) বিকৃত করে, তারা আমার অগোচর নয়। অতঃপর যাকে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করা হবে সে উত্তম, নাকি যে কিয়ামতের দিন (শাস্তি থেকে) নিরাপদ ও সুরক্ষিত অবস্থায় আগমন করবে সে? তোমাদের যা ইচ্ছা করো, নিশ্চয়ই তোমরা যা কিছু করো, তিনি তার সম্যক দ্রষ্টা।
اِنَّ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا بِالذِّکۡرِ لَمَّا جَآءَہُمۡ ۚ وَ اِنَّہٗ لَکِتٰبٌ عَزِیۡزٌ ﴿ۙ۴۱﴾
কানযুল ঈমান
৪১. নিশ্চয় যেসব লোক যিকরের অস্বীকারকারী হয়েছে, যখন তা তাদের নিকট আসলো, তাদের দুর্ভোগের কথা জিজ্ঞাসা করো না। আর নিশ্চয় তা সম্মানিত গ্রন্থ।
ইরফানুল কুরআন
৪১. নিশ্চয়ই যারা কুুরআন অস্বীকার করেছে, তা তাদের কাছে আসার পর, (এটা তাদের দুর্ভাগ্য)। আর নিশ্চয়ই এ (কুরআন) মর্যাদাবান গ্রন্থ।
لَّا یَاۡتِیۡہِ الۡبَاطِلُ مِنۡۢ بَیۡنِ یَدَیۡہِ وَ لَا مِنۡ خَلۡفِہٖ ؕ تَنۡزِیۡلٌ مِّنۡ حَکِیۡمٍ حَمِیۡدٍ ﴿۴۲﴾
কানযুল ঈমান
৪২. সেটার প্রতি মিথ্যার রাহা নেই, না সেটার অগ্র থেকে, না পশ্চাত থেকে; নাযিলকৃত প্রজ্ঞাময়, সমস্ত প্রংশার প্রশংসিতের।
ইরফানুল কুরআন
৪২. কোনো মিথ্যা এতে (এ কুরআনে) অনুপ্রবেশ করতে পারে না, না এর অগ্র হতে, আর না এর পশ্চাত হতে। (এটি) অবতীর্ণ প্রজ্ঞাবান, প্রশংসার্হ (প্রতিপালক)-এঁর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ।
مَا یُقَالُ لَکَ اِلَّا مَا قَدۡ قِیۡلَ لِلرُّسُلِ مِنۡ قَبۡلِکَ ؕ اِنَّ رَبَّکَ لَذُوۡ مَغۡفِرَۃٍ وَّ ذُوۡ عِقَابٍ اَلِیۡمٍ ﴿۴۳﴾
কানযুল ঈমান
৪৩. আপনাকে বলা হবে না, কিন্তু তাই যা আপনার পূর্ববর্তী রসূলগণকে বলা হয়েছে ‘নিশ্চয় আপনার প্রতিপালক ক্ষমাশীল ও বেদনাদায়ক শাস্তিদাতা।
ইরফানুল কুরআন
৪৩. (হে হাবীব!) আপনাকে যা বলা হয়, সে (একই) কথা আপনার পূর্ববর্তী রাসূলগণকেও বলা হতো। নিশ্চয়ই আপনার প্রতিপালক সর্বাধিক ক্ষমাশীল এবং যন্ত্রণাদায়ক শাস্তিদাতা(ও)।
وَ لَوۡ جَعَلۡنٰہُ قُرۡاٰنًا اَعۡجَمِیًّا لَّقَالُوۡا لَوۡ لَا فُصِّلَتۡ اٰیٰتُہٗ ؕ ءَؔاَعۡجَمِیٌّ وَّ عَرَبِیٌّ ؕ قُلۡ ہُوَ لِلَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا ہُدًی وَّ شِفَآءٌ ؕ وَ الَّذِیۡنَ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ فِیۡۤ اٰذَانِہِمۡ وَقۡرٌ وَّ ہُوَ عَلَیۡہِمۡ عَمًی ؕ اُولٰٓئِکَ یُنَادَوۡنَ مِنۡ مَّکَانٍۭ بَعِیۡدٍ ﴿۴۴﴾
কানযুল ঈমান
৪৪. এবং যদি আমি সেটাকে অনারবীয় ভাষার ক্বোরআন করতাম তবে তারা অবশ্যই বলতো, ‘সেটার আয়াতসমূহ কেন বিশদভাবে বর্ণনা করা হয় নি? কিতাব কি অনারবীয় আর নবী আরবী? আপনি বলুন, ‘ঈমানদারদের জন্য তা হিদায়ত ও রোগ-ব্যাধির আরোগ্য। এবং ওই সব লোক, যারা ঈমান আনে না, তাদের কানগুলোতে বধিরতা রয়েছে এবং তা তাদের উপর অন্ধত্বই। তারা যেন দূরবর্তী স্থান থেকে আহূত হয়।
ইরফানুল কুরআন
৪৪. আর যদি আমরা অনারবী ভাষায় এ কুরআন অবতীর্ণ করতাম তবে অবশ্যই তারা বলতো, ‘এর আয়াতগুলো কেন সুস্পষ্টভাবে বিবৃত হয়নি? কিতাব অনারবী অথচ রাসূল আরবী?’ (এ কারণে হে সম্মানিত মাহবুব! আমরা আপনার ভাষাতেই কুরআন অবতীর্ণ করেছি।) বলে দিন, ‘এ (কুরআন) ঈমানদারদের জন্যে হেদায়াত এবং ব্যাধির প্রতিকারও।’ আর যারা ঈমান আনয়ন করে না তাদের কর্ণে রয়েছে বধিরতার বোঝা; এটি তাদের জন্যে অন্ধত্ব(ও)। যেন এদেরকে দূরবর্তী স্থান থেকে আহ্বান করা হচ্ছে।
وَ لَقَدۡ اٰتَیۡنَا مُوۡسَی الۡکِتٰبَ فَاخۡتُلِفَ فِیۡہِ ؕ وَ لَوۡ لَا کَلِمَۃٌ سَبَقَتۡ مِنۡ رَّبِّکَ لَقُضِیَ بَیۡنَہُمۡ ؕ وَ اِنَّہُمۡ لَفِیۡ شَکٍّ مِّنۡہُ مُرِیۡبٍ ﴿۴۵﴾
কানযুল ঈমান
৪৫. এবং নিশ্চয় আমি মূসাকে কিতাব প্রদান করেছি অতঃপর তাতে মতভেদ ঘটেছে। এবং যদি একটা বাণী আপনার রবের পক্ষ থেকে গত না হতো, তবে তখনই তাদের মীমাংসা হয়ে যেতো। এবং নিশ্চয় তারা অবশ্য তার দিক থেকে এক প্রতারণাময় সন্দেহের মধ্যে রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৪৫. আর আমরা তো মূসা (আলাইহিস সালাম)-কে প্রদান করেছিলাম কিতাব, অতঃপর এতে(ও) মতভেদ সৃষ্টি করা হয়েছিল। আর আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে যদি পূর্বেই নির্দেশ দেয়া না হতো তবে তাদের মাঝে ফায়সালা হয়ে যেতো। আর নিশ্চয়ই তারা এর (এ কুরআনের) ব্যাপারেও বিভ্রান্তিকর সন্দেহে (নিমজ্জিত) রয়েছে।
مَنۡ عَمِلَ صَالِحًا فَلِنَفۡسِہٖ وَ مَنۡ اَسَآءَ فَعَلَیۡہَا ؕ وَ مَا رَبُّکَ بِظَلَّامٍ لِّلۡعَبِیۡدِ ﴿۴۶﴾
কানযুল ঈমান
৪৬. যে ব্যক্তি সৎকর্ম করে সে তার নিজের মঙ্গলের জন্য করে আর যে মন্দ কাজ করে, তবে তা তার নিজেরই ক্ষতির জন্য করে এবং আপনার রব বান্দাদের প্রতি যুল্ম করেন না।
ইরফানুল কুরআন
৪৬. যে সৎকর্ম করে সে তা নিজের সত্তার (উপকারের) জন্যেই (করে) এবং যে পাপ কাজ করে (তার মন্দ ফলও) তার নিজের উপরই। আর আপনার প্রতিপালক বান্দাদের প্রতি অন্যায় করেন না।
اِلَیۡہِ یُرَدُّ عِلۡمُ السَّاعَۃِ ؕ وَ مَا تَخۡرُجُ مِنۡ ثَمَرٰتٍ مِّنۡ اَکۡمَامِہَا وَ مَا تَحۡمِلُ مِنۡ اُنۡثٰی وَ لَا تَضَعُ اِلَّا بِعِلۡمِہٖ ؕ وَ یَوۡمَ یُنَادِیۡہِمۡ اَیۡنَ شُرَکَآءِیۡ ۙ قَالُوۡۤا اٰذَنّٰکَ ۙ مَا مِنَّا مِنۡ شَہِیۡدٍ ﴿ۚ۴۷﴾
কানযুল ঈমান
৪৭. ক্বিয়ামতের জ্ঞানের বরাত শুধু তাঁরই উপর দেওয়া যায়। আর কোন ফল সেটার আচ্ছাদানী থেকে বের হয় না এবং না কোন মাদী গর্ভধারণ করে আর না প্রস্রব করে, কিন্তু তাঁরই জ্ঞাতসারে এবং যে দিন তাদেরকে ডেকে বলবেন, ‘কোথায় আমার শরীক?’ বলবে, ‘আমরা তোমাকে বলেছি যে, আমাদের মধ্যে কোন সাক্ষী নেই’।
ইরফানুল কুরআন
৪৭. কিয়ামতের মুহূর্তের জ্ঞান কেবল তাঁরই (অর্থাৎ আল্লাহ্রই) দিকে আরোপিত। আর তাঁর অজ্ঞাতসারে কোনো ফল নিজ আবরণ থেকে বের হয় না, আর কোনো নারী গর্ভধারণ করে না এবং বাচ্চাও প্রসব করে না। আর যেদিন তিনি তাদেরকে ডাকবেন, ‘আমার অংশীদারেরা কোথায়?’ (তখন) সেসব (মুশরিকেরা) বলবে, ‘আমরা আপনার কাছে আরয করছি যে, আমাদের কেউই (আপনার সাথে শরীক হবার ব্যাপারে) প্রত্যক্ষদর্শী নই’।
وَ ضَلَّ عَنۡہُمۡ مَّا کَانُوۡا یَدۡعُوۡنَ مِنۡ قَبۡلُ وَ ظَنُّوۡا مَا لَہُمۡ مِّنۡ مَّحِیۡصٍ ﴿۴۸﴾
কানযুল ঈমান
৪৮. এবং তাদের নিকট থেকে তা হারিয়ে গেছে, পূর্বে তারা যার পূজা করতো। এবং বুঝতে পেরেছে যে, তাদের কোথাও পলায়ন করার স্থান নেই।
ইরফানুল কুরআন
৪৮. পূর্বে তারা যাদেরকে আহ্বান করতো সেসব (মূর্তি) তাদের থেকে উধাও হয়ে যাবে এবং তারা অনুধাবন করবে যে, তাদের পলায়নের কোনো পথ নেই।
لَا یَسۡـَٔمُ الۡاِنۡسَانُ مِنۡ دُعَآءِ الۡخَیۡرِ ۫ وَ اِنۡ مَّسَّہُ الشَّرُّ فَیَـُٔوۡسٌ قَنُوۡطٌ ﴿۴۹﴾
কানযুল ঈমান
৪৯. মানুষ কল্যাণ কামনায় ক্লান্তি বোধ করে না এবং কোন অনিষ্ট স্পর্শ করলে নিরাশ হতাশ হয়ে পড়ে।
ইরফানুল কুরআন
৪৯. মানুষ কল্যাণ প্রার্থনায় ক্লান্ত হয় না, কিন্তু যদি তাকে দুঃখ-দুর্দশা স্পর্শ করে তখন সে সমস্ত আশা হারিয়ে হতাশাপীড়িত হয়ে পড়ে।
وَ لَئِنۡ اَذَقۡنٰہُ رَحۡمَۃً مِّنَّا مِنۡۢ بَعۡدِ ضَرَّآءَ مَسَّتۡہُ لَیَقُوۡلَنَّ ہٰذَا لِیۡ ۙ وَ مَاۤ اَظُنُّ السَّاعَۃَ قَآئِمَۃً ۙ وَّ لَئِنۡ رُّجِعۡتُ اِلٰی رَبِّیۡۤ اِنَّ لِیۡ عِنۡدَہٗ لَلۡحُسۡنٰی ۚ فَلَنُنَبِّئَنَّ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا بِمَا عَمِلُوۡا ۫ وَ لَنُذِیۡقَنَّہُمۡ مِّنۡ عَذَابٍ غَلِیۡظٍ ﴿۵۰﴾
কানযুল ঈমান
৫০. এবং যদি তাকে আপন অনুগ্রহের স্বাদ আস্বাদন করাই ওই দুঃখ কষ্টের পর, যা তাকে স্পর্শ করেছিলো, তবে বলবে, ‘এ তো আমার এবং আমার ধারণায় ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে না আর যদি আমি রবের প্রতি প্রত্যাবর্তিতও হই, তবে অবশ্যই আমার জন্য তার নিকটও কল্যাণ রয়েছে। অতঃপর অবশ্যই আমি বলে দেবো কাফিরদেরকে যা তারা করেছে। এবং অবশ্যই তাদেরকে কঠোর শাস্তি ভোগ করাবো।
ইরফানুল কুরআন
৫০. আর যদি আমরা তাকে আমাদের পক্ষ থেকে অনুগ্রহ (-এর স্বাদ) আস্বাদন করাই তাকে দুঃখ-দুর্দশা স্পর্শ করার পর, তখন সে অবশ্যই বলতে শুরু করে, ‘এ তো আমার অধিকার, আর আমি মনে করি না যে, কিয়ামত সংগঠিত হবে। আর যদি আমি আমার প্রতিপালকের নিকট ফিরেও যাই, তবুও তাঁর কাছে আমার জন্যে অবশ্য কল্যাণই থাকবে।’ অতঃপর আমরা অবশ্যই অস্বীকারকারীদেরকে সেসব কর্মকান্ড সম্পর্কে অবগত করবো যা তারা করতো। আর আমরা অবশ্যই তাদেরকে আস্বাদন করাবো কঠোর শাস্তি।
وَ اِذَاۤ اَنۡعَمۡنَا عَلَی الۡاِنۡسَانِ اَعۡرَضَ وَ نَاٰ بِجَانِبِہٖ ۚ وَ اِذَا مَسَّہُ الشَّرُّ فَذُوۡ دُعَآءٍ عَرِیۡضٍ ﴿۵۱﴾
কানযুল ঈমান
৫১. এবং যখন আমি মানুষের উপর অনুগ্রহ করি তখন সে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং নিজের দিকে দূরে সরে পড়ে; আর যখন তাকে দুঃখ কষ্ট স্পর্শ করে, তখন সুপ্রশস্ত প্রার্থনাকারী হয়।
ইরফানুল কুরআন
৫১. আর যখন আমরা মানুষের প্রতি অনুগ্রহ করি তখন সে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং নিজেকে গুটিয়ে আমাদের থেকে দূরে সরে যায়। আর যখন তাকে দুঃখ-দুর্দশা স্পর্শ করে তখন সে দীর্ঘ প্রার্থনায় মগ্ন হয়।
قُلۡ اَرَءَیۡتُمۡ اِنۡ کَانَ مِنۡ عِنۡدِ اللّٰہِ ثُمَّ کَفَرۡتُمۡ بِہٖ مَنۡ اَضَلُّ مِمَّنۡ ہُوَ فِیۡ شِقَاقٍۭ بَعِیۡدٍ ﴿۵۲﴾
কানযুল ঈমান
৫২. আপনি বলুন, ‘ভালো বলো তো, যদি এ ক্বোরআন আল্লাহ্র নিকট থেকে হয়, অতঃপর তোমরা সেটার অস্বীকারকারী হও, তবে তার চেয়ে অধিকতর পথভ্রষ্ট আর কে, যে দূরের বিরোধিতায় রয়েছে?’
ইরফানুল কুরআন
৫২. বলে দিন, ‘বেশ, তোমরা বলো, যদি এ (কুরআন) আল্লাহ্র পক্ষ থেকেই (অবতীর্ণ) হয়, অতঃপর তোমরা একে প্রত্যাখ্যান করতে থাকো, তবে তার চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট কে, যে ঘোর বিরুদ্ধাচারণে লিপ্ত রয়েছে?’
سَنُرِیۡہِمۡ اٰیٰتِنَا فِی الۡاٰفَاقِ وَ فِیۡۤ اَنۡفُسِہِمۡ حَتّٰی یَتَبَیَّنَ لَہُمۡ اَنَّہُ الۡحَقُّ ؕ اَوَ لَمۡ یَکۡفِ بِرَبِّکَ اَنَّہٗ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ شَہِیۡدٌ ﴿۵۳﴾
কানযুল ঈমান
৫৩. এখন আমি তাদেরকে দেখাবো আমার নিদর্শনসমূহ সারা বিশ্বজগতে এবং খোদ তাদের মধ্যেও, শেষ পর্যন্ত তাদের নিকট সুস্পষ্ট হয়ে যাবে যে, নিশ্চয় তা সত্য। তোমাদের রবের সবকিছুর উপর সাক্ষী হওয়া কি যথেষ্ট নয়?
ইরফানুল কুরআন
৫৩. আমরা অচিরেই তাদেরকে আমাদের নিদর্শনাবলী দেখিয়ে দেবো বিশ্বজগতের প্রান্তে এবং তাদের নিজেদের মধ্যে। অবশেষে তাদের নিকট সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে যে, তিনিই সত্য। আপনার প্রতিপালক কি (আপনার সত্যতার নিশ্চিত করণে) যথেষ্ট নন যে, তিনি সকল কিছুর উপর সাক্ষী(ও)।
اَلَاۤ اِنَّہُمۡ فِیۡ مِرۡیَۃٍ مِّنۡ لِّقَآءِ رَبِّہِمۡ ؕ اَلَاۤ اِنَّہٗ بِکُلِّ شَیۡءٍ مُّحِیۡطٌ ﴿۵۴﴾
কানযুল ঈমান
৫৪. শোন! অবশ্যই তাদের মধ্যে আপন রবের সাথে সাক্ষাতের ব্যাপারে সন্দেহ রয়েছে। শোন! তিনি প্রত্যেক বস্তুকে পরিবেষ্টন করে আছেন।
ইরফানুল কুরআন
৫৪. জেনে রাখো, তারা তাদের প্রতিপালকের সাক্ষাতের ব্যাপারে সন্দিহান। সাবধান! তিনিই (নিজ জ্ঞান ও ক্ষমতায়) সকল কিছুকে পরিবেষ্টনকারী।