بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
কানযুল ঈমান
০. আল্লাহ্র নামে আরম্ভ, যিনি পরম দয়ালু, করুণাময় (১)
ইরফানুল কুরআন
০. আল্লাহর নামে শুরু, যিনি পরম করুণাময়, সতত অসীম দয়ালু।
اَلَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا وَ صَدُّوۡا عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ اَضَلَّ اَعۡمَالَہُمۡ ﴿۱﴾
কানযুল ঈমান
১. যে সব লোক কুফর করেছে এবং আল্লাহ্র পথে বাধা দিয়েছে, আল্লাহ্ তাদের কর্ম বিনষ্ট করেছেন।
ইরফানুল কুরআন
১. যারা কুফরী করে এবং (অপরকে) আল্লাহ্র পথ থেকে নিবৃত্ত রাখে, (পরকালীন প্রতিফল হিসেবে) আল্লাহ্ তাদের আমলসমূহ বরবাদ করে দেন।
وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَ اٰمَنُوۡا بِمَا نُزِّلَ عَلٰی مُحَمَّدٍ وَّ ہُوَ الۡحَقُّ مِنۡ رَّبِّہِمۡ ۙ کَفَّرَ عَنۡہُمۡ سَیِّاٰتِہِمۡ وَ اَصۡلَحَ بَالَہُمۡ ﴿۲﴾
কানযুল ঈমান
২. এবং যেসব লোক ঈমান এনেছে, সৎকর্ম করেছে এবং সেটার প্রতি ঈমান এনেছে যা মুহাম্মদের উপর অবতীর্ণ হয়েছে আর সেটাই তাদের রবের নিকট থেকে সত্য; আল্লাহ্ তাদের মন্দ কর্মগুলো মোচন করে দিয়েছেন এবং তাদের অবস্থাদি সুন্দর করে দিয়েছেন।
ইরফানুল কুরআন
২. আর যারা ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করছে এবং (এ কিতাবের প্রতি) বিশ্বাস স্থাপন করে যা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-এঁর প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে; আর এটিই তাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে সত্য, আল্লাহ্ তাদের গোনাহ্সমূহ তাদের (আমলনামা) থেকে মুছে দেবেন এবং তাদের অবস্থা পরিশোধন করে দেবেন।
ذٰلِکَ بِاَنَّ الَّذِیۡنَ کَفَرُوا اتَّبَعُوا الۡبَاطِلَ وَ اَنَّ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اتَّبَعُوا الۡحَقَّ مِنۡ رَّبِّہِمۡ ؕ کَذٰلِکَ یَضۡرِبُ اللّٰہُ لِلنَّاسِ اَمۡثَالَہُمۡ ﴿۳﴾
কানযুল ঈমান
৩. এটা এ জন্য যে, কাফিরগণ বাতিলের অনুসারী হয়েছে এবং ঈমানদারগণ সত্যের অনুসরণ করেছে, যা তাদের রবের পক্ষ থেকে। আল্লাহ্ মানুষের নিকট তাদের অবস্থাদি এভাবেই বর্ণনা করেন।
ইরফানুল কুরআন
৩. তা এ জন্যে যে, যারা কুফরী করে তারা মিথ্যার অনুসরণ করে; আর যারা ঈমান আনে তারা তাদের স্বীয় প্রতিপালকের পক্ষ থেকে (প্রেরিত) সত্যকে অনুসরণ করে। এভাবে আল্লাহ্ মানুষের জন্যে তাদের অবস্থাদি বিবৃত করেন।
فَاِذَا لَقِیۡتُمُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا فَضَرۡبَ الرِّقَابِ ؕ حَتّٰۤی اِذَاۤ اَثۡخَنۡتُمُوۡہُمۡ فَشُدُّوا الۡوَثَاقَ ٭ۙ فَاِمَّا مَنًّۢا بَعۡدُ وَ اِمَّا فِدَآءً حَتّٰی تَضَعَ الۡحَرۡبُ اَوۡزَارَہَا ۬ۚ۟ۛ ذٰؔلِکَ ؕۛ وَ لَوۡ یَشَآءُ اللّٰہُ لَانۡتَصَرَ مِنۡہُمۡ وَ لٰکِنۡ لِّیَبۡلُوَا۠ بَعۡضَکُمۡ بِبَعۡضٍ ؕ وَ الَّذِیۡنَ قُتِلُوۡا فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ فَلَنۡ یُّضِلَّ اَعۡمَالَہُمۡ ﴿۴﴾
কানযুল ঈমান
৪. সুতরাং যখন কাফিরদের সাথে তোমাদের মোকাবেলা হয়, তখন গর্দানগুলোতে আঘাত করো, শেষ পর্যন্ত যখন তাদেরকে ব্যাপকভাবে হত্যা করবে, তখন শক্তভাবে বেধে নাও; অতঃপর এরপরে ইচ্ছা করলে অনুগ্রহ পরবশ হয়ে ছেড়ে দাও, ইচ্ছা করলে মুক্তিপণ নিয়ে নাও; যে পর্যন্ত না যুদ্ধ আপন বোঝা রেখে দেয়। কথা (বিধান) হচ্ছে এটাই। আর আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে নিজেই তাদের থেকে বদলা নিতেন, কিন্তু এজন্য যে, তোমাদের মধ্যে একজনকে অন্যজন দ্বারা পরীক্ষা করবেন। আর যারা আল্লাহ্র পথে নিহত হয়েছে আল্লাহ্ কখনো তাদের কৃতকর্ম বিনষ্ট করবেন না।
ইরফানুল কুরআন
৪. অতঃপর (সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে) যখন তোমরা (যুদ্ধরত) কাফেরদের মুখোমুখি হও, তখন (যুদ্ধকালীন সময়ে) তাদের গর্দানে আঘাত করো। (কেননা তারা অন্যায়ভাবে নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে এবং বিপর্যয় সৃষ্টির মাধ্যমে নিরাপত্তা বিনষ্ট করেছে।) অবশেষে (যুদ্ধের ময়দানে) যখন তোমরা তাদের অনেককে হত্যা করবে, তখন (অবশিষ্ট বন্দীদেরকে) কষে বেঁধে ফেলবে। অতঃপর হয় (তাদেরকে বিনিময় ছাড়াই) অনুকম্পা (করে ছেড়ে দাও) অথবা ফিদইয়া (অর্থাৎ মুক্তিপণ নিয়ে মুক্ত করে দাও); যতক্ষণ পর্যন্ত না যুদ্ধ (পরিচালনাকারী শত্রুবাহিনী) স্বীয় অস্ত্র নামিয়ে ফেলে (অর্থাৎ সন্ধি ও নিরাপত্তার ঘোষণা দেয়)। এটিই (নির্দেশ)। আর যদি আল্লাহ্ চাইতেন তবে (যুদ্ধ ছাড়াই) তাদের থেকে প্রতিশোধ নিতেন; কিন্তু (তিনি এমনটি করেননি) যাতে তিনি তোমাদের একজনকে অপরের মাধ্যমে পরীক্ষা করেন। আর যারা আল্লাহ্র পথে নিহত হয় তিনি কখনো তাদের আমলসমূহ বিনষ্ট হতে দেবেন না।
سَیَہۡدِیۡہِمۡ وَ یُصۡلِحُ بَالَہُمۡ ۚ﴿۵﴾
কানযুল ঈমান
৫. শীঘ্রই তাদেরকে সঠিক পথ প্রদান করবেন এবং তাদের কাজ পরিশুদ্ধ করে দেবেন।
ইরফানুল কুরআন
৫. তিনি অচিরেই তাদেরকে (জান্নাতের) সরল পথে পরিচালিত করবেন এবং তাদের (পরকালীন) অবস্থাদি খুবই উৎকৃষ্ট করে দেবেন।
وَ یُدۡخِلُہُمُ الۡجَنَّۃَ عَرَّفَہَا لَہُمۡ ﴿۶﴾
কানযুল ঈমান
৬. এবং তাদেরকে জান্নাতে নিয়ে যাবেন, তাদেরকে সেটার পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন।
ইরফানুল কুরআন
৬. আর (পরিশেষে) তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যা তিনি (পূর্বেই) তাদেরকে খুব ভালোভাবে অবগত করেছেন।
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنۡ تَنۡصُرُوا اللّٰہَ یَنۡصُرۡکُمۡ وَ یُثَبِّتۡ اَقۡدَامَکُمۡ ﴿۷﴾
কানযুল ঈমান
৭. হে ঈমানদারগণ! যদি তোমরা আল্লাহ্র দ্বীনের সাহায্য করো, তবে আল্লাহ্ তোমাদের সাহায্য করবেন এবং তোমাদের পদগুলো সুদৃঢ় করে দেবেন।
ইরফানুল কুরআন
৭. হে ঈমানদারগণ! যদি তোমরা আল্লাহ্কে (তাঁর দ্বীনে) সাহায্য করো, তবে তিনি তোমাদেরকে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের অবস্থান সুদৃঢ় রাখবেন।
وَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا فَتَعۡسًا لَّہُمۡ وَ اَضَلَّ اَعۡمَالَہُمۡ ﴿۸﴾
কানযুল ঈমান
৮. এবং যারা কুফর করেছে, তবে তাদের উপর ধ্বংস অপতিত হোক এবং আল্লাহ্ তাদের কর্মসমূহ বিনষ্ট করে দিন!
ইরফানুল কুরআন
৮. আর যারা কুফরী করেছে তাদের জন্যে রয়েছে ধ্বংস এবং (আল্লাহ্) তাদের আমলসমূহ বরবাদ করে দিয়েছেন।
ذٰلِکَ بِاَنَّہُمۡ کَرِہُوۡا مَاۤ اَنۡزَلَ اللّٰہُ فَاَحۡبَطَ اَعۡمَالَہُمۡ ﴿۹﴾
কানযুল ঈমান
৯. এটা এ জন্য যে, তাদের নিকট অপছন্দ হয়েছে যা আল্লাহ্ অবতীর্ণ করেছেন; সুতরাং আল্লাহ্ তাদের কৃতকর্মসমূহ বিনষ্ট করে দিয়েছেন।
ইরফানুল কুরআন
৯. তা এ কারণে যে, তারা (এ কিতাব) অপছন্দ করে যা আল্লাহ্ অবতীর্ণ করেছেন। সুতরাং তিনি তাদের কর্ম নিষ্ফল করে দিয়েছেন।
اَفَلَمۡ یَسِیۡرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ فَیَنۡظُرُوۡا کَیۡفَ کَانَ عَاقِبَۃُ الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِہِمۡ ؕ دَمَّرَ اللّٰہُ عَلَیۡہِمۡ ۫ وَ لِلۡکٰفِرِیۡنَ اَمۡثَالُہَا ﴿۱۰﴾
কানযুল ঈমান
১০. তবে কি তারা ভূ-পৃষ্ঠে ভ্রমণ করে নি? তাহলে দেখতো তাদের পূর্ববর্তীদের কেমন পরিণতি হয়েছে। আল্লাহ্ তাদের উপর ধ্বংস আপতিত করেছেন এবং ওই সব কাফিরের জন্যও এমন অনেক কিছুই রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
১০. তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করেনি ও ঘুরে বেড়ায়নি, তাহলে তারা দেখতে পেতো সেসব লোকদের পরিণতি কেমন হয়েছিল যারা তাদের পূর্বে ছিল? আল্লাহ্ তাদের উপর ধ্বংস ও বিনাশ আপতিত করেছেন এবং কাফেরদের জন্যে এমন অনেক ধ্বংসই রয়েছে।
ذٰلِکَ بِاَنَّ اللّٰہَ مَوۡلَی الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ اَنَّ الۡکٰفِرِیۡنَ لَا مَوۡلٰی لَہُمۡ ﴿۱۱﴾
কানযুল ঈমান
১১. এটা এ জন্য যে, মুসলমানদের অভিভাবক আল্লাহ্ এবং কাফিরদের কোন অভিভাবক নেই।
ইরফানুল কুরআন
১১. তা এ কারণে যে, আল্লাহ্ সেসব লোকদের অভিভাবক ও সাহায্যকারী যারা ঈমান আনয়ন করে, আর অবশ্যই কাফেরদের কোনো অভিভাবক ও সাহায্যকারীই নেই।
اِنَّ اللّٰہَ یُدۡخِلُ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ جَنّٰتٍ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہَا الۡاَنۡہٰرُ ؕ وَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا یَتَمَتَّعُوۡنَ وَ یَاۡکُلُوۡنَ کَمَا تَاۡکُلُ الۡاَنۡعَامُ وَ النَّارُ مَثۡوًی لَّہُمۡ ﴿۱۲﴾
কানযুল ঈমান
১২. নিশ্চয়, আল্লাহ্ প্রবেশ করাবেন তাদেরকেই, যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে বাগানসমূহে, যেগুলোর নিম্নদেশে প্রবাহিত, আর কাফিরগণ ভোগ করছে ও আহার করছে যেমন চতুষ্পদ জন্তু আহার করে এবং আগুনই ঠিকানা।
ইরফানুল কুরআন
১২. নিশ্চয়ই যারা ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ্ তাদেরকে প্রবেশ করাবেন বেহেশতে যার তলদেশ দিয়ে স্রোতধারা প্রবাহিত। আর যারা কুফরী করে, (পার্থিব) ভোগ-বিলাসে মত্ত এবং চতুষ্পদ প্রাণীর মতো উদর পূর্তি করে, তবে জাহান্নামই তাদের ঠিকানা।
وَ کَاَیِّنۡ مِّنۡ قَرۡیَۃٍ ہِیَ اَشَدُّ قُوَّۃً مِّنۡ قَرۡیَتِکَ الَّتِیۡۤ اَخۡرَجَتۡکَ ۚ اَہۡلَکۡنٰہُمۡ فَلَا نَاصِرَ لَہُمۡ ﴿۱۳﴾
কানযুল ঈমান
১৩. এবং কত শহরই, যেগুলো ওই শহর থেকে শক্তিতে অধিক ছিলো, যা আপনাকে আপনার শহর থেকে বের করেছে, আমি তাদেরকে ধ্বংস করেছি। সুতরাং তাদের কোন সাহায্যকারী নেই।
ইরফানুল কুরআন
১৩. আর (হে হাবীব!) কতোই না জনপদ ছিল যার অধিবাসীরা (প্রাচুর্যে ও ক্ষমতায়) আপনার শহর (মক্কার অধিবাসীদের) অপেক্ষা ছিল অধিকতর ক্ষমতাশালী; যারা (অর্থাৎ মক্কার ক্ষমতাধর নেতারা) আপনাকে (হিজরতের মাধ্যমে) সরিয়ে দিয়েছিল, আমরা এদেরকে(ও) ধ্বংস করে দিয়েছি। অতঃপর তাদের কোনো সাহায্যকারী রইলো না (যারা তাদেরকে রক্ষা করবে)।
اَفَمَنۡ کَانَ عَلٰی بَیِّنَۃٍ مِّنۡ رَّبِّہٖ کَمَنۡ زُیِّنَ لَہٗ سُوۡٓءُ عَمَلِہٖ وَ اتَّبَعُوۡۤا اَہۡوَآءَہُمۡ ﴿۱۴﴾
কানযুল ঈমান
১৪. তবে কি যে আপন রবের নিকট থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত হয় সে তাঁরই মতো হবে, যার মন্দ কাজকে তার জন্য সুশোভিত করে দেখানো হয়েছে এবং যারা আপন খেয়াল খুশীর অনুসরণ করেছে?
ইরফানুল কুরআন
১৪. সুতরাং যে ব্যক্তি স্বীয় প্রতিপালকের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণের উপর (অটল) রয়েছে, সে কি ওই ব্যক্তির ন্যায় যাকে তার মন্দকর্মসমূহ সুশোভিত করে দেখানো হয় এবং যে স্বীয় কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করে?
مَثَلُ الۡجَنَّۃِ الَّتِیۡ وُعِدَ الۡمُتَّقُوۡنَ ؕ فِیۡہَاۤ اَنۡہٰرٌ مِّنۡ مَّآءٍ غَیۡرِ اٰسِنٍ ۚ وَ اَنۡہٰرٌ مِّنۡ لَّبَنٍ لَّمۡ یَتَغَیَّرۡ طَعۡمُہٗ ۚ وَ اَنۡہٰرٌ مِّنۡ خَمۡرٍ لَّذَّۃٍ لِّلشّٰرِبِیۡنَ ۬ۚ وَ اَنۡہٰرٌ مِّنۡ عَسَلٍ مُّصَفًّی ؕ وَ لَہُمۡ فِیۡہَا مِنۡ کُلِّ الثَّمَرٰتِ وَ مَغۡفِرَۃٌ مِّنۡ رَّبِّہِمۡ ؕ کَمَنۡ ہُوَ خَالِدٌ فِی النَّارِ وَ سُقُوۡا مَآءً حَمِیۡمًا فَقَطَّعَ اَمۡعَآءَہُمۡ ﴿۱۵﴾
কানযুল ঈমান
১৫. ওই জান্নাতের অবস্থাদির দৃষ্টান্ত, যার প্রতিশ্রুতি খোদাভীরুদের সাথে রয়েছে; তাতে এমন পানির নহরসমূহ রয়েছে যা কখনো বিকৃত হবে না এবং এমন দুধের নহরসমূহ রয়েছে, যার স্বাদ পরিবর্তিত হবে না আর এমন শরাবের নহরসমূহ রয়েছে, যা পানে আনন্দ আছে এবং এমন মধুর নহরসমূহ রয়েছে, যাকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে আর তাদের জন্য তাতে প্রত্যেক প্রকারের ফলমূল রয়েছে এবং আপন রবের ক্ষমা; এমন শান্তির উপযোগীরাও কি তাদেরই সমান হয়ে যাবে, যাদেরকে সর্বদা আগুনে থাকতে হবে এবং তাদেরকে ফুটন্ত পানি পান করানো হবে, যা তাদের নাড়ি ভুড়িকে টুকরো টুকরো করে ফেলবে?
ইরফানুল কুরআন
১৫. পরহেযগারদের জন্যে যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তার বৈশিষ্ট্য এরকমঃ এতে নির্মল পানির স্রোতধারা থাকবে যাতে কখনো (রঙ ও গন্ধের) পরিবর্তন ঘটবে না এবং (এতে) দুধের প্রবাহ থাকবে যার স্বাদ ও গন্ধ অপরিবর্তনীয়, আর থাকবে (পবিত্র) শরাবের নহর যা পানকারীদের জন্যে হবে আনন্দদায়ক, আরো থাকবে নির্মল পরিশোধিত মধুর নদী। আর তাদের জন্যে এতে থাকবে সকল প্রকারের ফলমূল এবং তাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে থাকবে (সকল ধরণের) ক্ষমা। (এ পরহেযগার ব্যক্তি কি) সেসব লোকের ন্যায় হবে যারা চিরদিন জাহান্নামে অবস্থানকারী, আর যাদেরকে পান করানো হবে ফুটন্ত পানি যা তাদের নাড়িভূড়ি ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দেবে?
وَ مِنۡہُمۡ مَّنۡ یَّسۡتَمِعُ اِلَیۡکَ ۚ حَتّٰۤی اِذَا خَرَجُوۡا مِنۡ عِنۡدِکَ قَالُوۡا لِلَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡعِلۡمَ مَاذَا قَالَ اٰنِفًا ۟ اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ طَبَعَ اللّٰہُ عَلٰی قُلُوۡبِہِمۡ وَ اتَّبَعُوۡۤا اَہۡوَآءَہُمۡ ﴿۱۶﴾
কানযুল ঈমান
১৬. এবং তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক লোক আপনার বাণী শ্রবণ করে, শেষ পর্যন্ত যখন আপনার নিকট থেকে বের হয়ে যায়, তখন জ্ঞানসম্পন্নদেরকে বলে, ‘এখন তিনি কী বললেন?’ এরা হচ্ছে তারাই, যাদের অন্তরগুলোর উপর আল্লাহ্ মোহর করে দিয়েছেন এবং আপন খেয়াল খুশীর অনুসারী হয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
১৬. আর তাদের মাঝে এমন কিছু লোকও রয়েছে যারা (অন্তর্দৃষ্টি ও মনোযোগ ব্যতিরেকেই) আপনার কথা শ্রবণ করে। অবশেষে যখন তারা আপনার নিকট থেকে বের হয়ে যায়, তখন যারা (উপকারী) জ্ঞানপ্রাপ্ত তাদেরকে জিজ্ঞেস করে, ‘এখন তিনি (অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম) কী বললেন?’ এরাই সেসব লোক যাদের অন্তর আল্লাহ্ মোহরাঙ্কিত করে দিয়েছেন এবং তারা নিজেদের কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করছে।
وَ الَّذِیۡنَ اہۡتَدَوۡا زَادَہُمۡ ہُدًی وَّ اٰتٰہُمۡ تَقۡوٰىہُمۡ ﴿۱۷﴾
কানযুল ঈমান
১৭. এবং যেসব লোক সৎপথ পেয়েছে আল্লাহ্ তাদের হিদায়ত আরো অধিকভাবে করেছেন এবং তাদের পরহেয্গারী তাদেরকে দান করেছেন।
ইরফানুল কুরআন
১৭. আর যেসব লোক হেদায়াতপ্রাপ্ত হয়েছে আল্লাহ্ তাদের হেদায়াত আরো বৃদ্ধি করে দেন এবং তাদেরকে ‘পরহেযগারিতার স্তর’ প্রদান করে সম্মানিত করেন।
فَہَلۡ یَنۡظُرُوۡنَ اِلَّا السَّاعَۃَ اَنۡ تَاۡتِیَہُمۡ بَغۡتَۃً ۚ فَقَدۡ جَآءَ اَشۡرَاطُہَا ۚ فَاَنّٰی لَہُمۡ اِذَا جَآءَتۡہُمۡ ذِکۡرٰىہُمۡ ﴿۱۸﴾
কানযুল ঈমান
১৮. সুতরাং তারা কিসের অপেক্ষায় রয়েছে? কিন্তু ক্বিয়ামতের-তা তাদের উপর হঠাৎ এসে পড়বে। সেটার নিদর্শনসমূহ তো এসেই গেছে; অতঃপর যখন তা এসে পড়বে, তখন কোথায় হবে তারা, আর কোথায় তাদের বুঝ!
ইরফানুল কুরআন
১৮. সুতরাং এখন কি এই (অস্বীকারকারী) ব্যক্তি কেবল কিয়ামতেরই অপেক্ষা করছে যে তা তাদের নিকট আকস্মিতভাবে এসে পৌঁছুবে? বাস্তবিকই এর নিদর্শনাবলী তো (নিকটে) এসেই পড়েছে। সুতরাং কিয়ামত এসে পড়লে তাদের উপদেশে কী (উপকার) হবে?
فَاعۡلَمۡ اَنَّہٗ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا اللّٰہُ وَ اسۡتَغۡفِرۡ لِذَنۡۢبِکَ وَ لِلۡمُؤۡمِنِیۡنَ وَ الۡمُؤۡمِنٰتِ ؕ وَ اللّٰہُ یَعۡلَمُ مُتَقَلَّبَکُمۡ وَ مَثۡوٰىکُمۡ ﴿۱۹﴾
কানযুল ঈমান
১৯. সুতরাং জেনে রাখো যে, আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোন ইবাদত নেই এবং হে মাহবূব! আপন খাস লোকদের এবং সাধারণ মুসলমান পুরুষ ও নারীদের পাপরাশির ক্ষমা-প্রার্থনা করুন! এবং আল্লাহ্ জানেন তোমাদের দিনের বেলায় চলাফেরা করা ও রাত্রির বেলায় তোমাদের বিশ্রাম গ্রহণ করা।
ইরফানুল কুরআন
১৯. অতঃপর জেনে রাখো, আল্লাহ্ ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই। আর আপনি (ইবাদতের উদ্দেশ্যে ও উম্মতকে শিক্ষা দিতে আল্লাহ্র নিকট) ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকুন, যেন আপনার পক্ষ থেকে উত্তম কিছুর পরিপন্থী (অর্থাৎ আপনার সমুন্নত স্তর থেকে নিম্নস্তরের) কাজ সংঘটিত না হয়*এবং বিশ্বাসী পুরুষ ও বিশ্বাসী নারীর জন্যেও ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকুন (অর্থাৎ তাদের জন্যে সুপারিশ করতে থাকুন, এটিই তাদের ক্ষমার উপকরণ)। আর (হে মানুষ!) আল্লাহ্ (পৃথিবীতে) তোমাদের গতিবিধি এবং (পরকালে) তোমাদের অবস্থান সম্পর্কে (সবকিছু) সম্যক অবগত।
* (অথচ এ কাজ স্বীয় স্থানে শরয়ীভাবে সম্পূর্ণরূপে জায়েয, বরং পছন্দনীয়ই হবে। কিন্তু হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের অবস্থান ও স্তর, মহত্ব ও সমুন্নত মর্যাদা কেবল জায়েয এবং পছন্দনীয় স্তরসমূহ থেকেও অনেক সমুন্নত, সুউচ্চ ও সুউর্ধ্ব।)
وَ یَقُوۡلُ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَوۡ لَا نُزِّلَتۡ سُوۡرَۃٌ ۚ فَاِذَاۤ اُنۡزِلَتۡ سُوۡرَۃٌ مُّحۡکَمَۃٌ وَّ ذُکِرَ فِیۡہَا الۡقِتَالُ ۙ رَاَیۡتَ الَّذِیۡنَ فِیۡ قُلُوۡبِہِمۡ مَّرَضٌ یَّنۡظُرُوۡنَ اِلَیۡکَ نَظَرَ الۡمَغۡشِیِّ عَلَیۡہِ مِنَ الۡمَوۡتِ ؕ فَاَوۡلٰی لَہُمۡ ﴿ۚ۲۰﴾
কানযুল ঈমান
২০. এবং মুলসমানগণ বলে, ‘কোন সূরা অবতীর্ণ হয় নি?’ অতঃপর যখন পাকাপোক্ত সূরা অবতীর্ণ হলো এবং তাতে জিহাদের নির্দেশ দেওয়া হলো, তখন আপনি দেখবেন তাদেরকে, যাদের অন্তগুলোতে ব্যাধি রয়েছে যে, আপনার প্রতি তাঁরই মতো তাকায়, যার উপর মৃত্যুর ছায়া ছাইয়ে গেছে। সুতরাং তাদের জন্য উত্তম ছিলো-
ইরফানুল কুরআন
২০. আর ঈমানদারগণ বলে, ‘(আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধ-সংশ্লিষ্ট) কোনো সূরা কেন অবতীর্ণ হয় না?’ অতঃপর কোনো সুস্পষ্ট সূরা যখন অবতীর্ণ হয় এবং এতে (আত্মরক্ষামূলক সুস্পষ্ট) যুদ্ধের উল্লেখ থাকে, তখন আপনি দেখবেন যাদের অন্তরে (কপটতার) ব্যাধি রয়েছে (এবং যারা আপনার এবং মুসলমানদের নিরাপত্তা চায় না) তারা আপনার দিকে মৃত্যুভয়ে আচ্ছন্ন ব্যক্তির মতো তাকাচ্ছে। সুতরাং তাদের জন্যে রয়েছে দুর্ভোগ।
طَاعَۃٌ وَّ قَوۡلٌ مَّعۡرُوۡفٌ ۟ فَاِذَا عَزَمَ الۡاَمۡرُ ۟ فَلَوۡ صَدَقُوا اللّٰہَ لَکَانَ خَیۡرًا لَّہُمۡ ﴿ۚ۲۱﴾
কানযুল ঈমান
২১. আনুগত্য করা এবং উত্তম কথা বলা। অতঃপর যখন আদেশ ঘোষিত হলো, তখন যদি তারা আল্লাহ্র সাথে সত্যবাদী থাকতো, তবে তাদের জন্য মঙ্গল ছিলো।
ইরফানুল কুরআন
২১. আনুগত্য এবং সুবচন (তাদের জন্যে উত্তম)। অতঃপর যখন (আত্মরক্ষামূলক) জিহাদের নির্দেশ চূড়ান্ত (এবং সুদৃঢ়) হলো, তখন তারা যদি আল্লাহ্র সমীপে (নিজেদের আনুগত্য ও অঙ্গীকার পূর্ণ করতে) সত্যাশ্রয়ী থাকতো তবে তা হতো তাদের জন্যে উত্তম।
فَہَلۡ عَسَیۡتُمۡ اِنۡ تَوَلَّیۡتُمۡ اَنۡ تُفۡسِدُوۡا فِی الۡاَرۡضِ وَ تُقَطِّعُوۡۤا اَرۡحَامَکُمۡ ﴿۲۲﴾
কানযুল ঈমান
২২. তবে কি তোমাদের এ লক্ষণ দৃষ্টিগোচর হচ্ছে যে, যদি তোমরা শাসন-ক্ষমতা লাভ করো তবে পৃথিবীতে বিপর্যয় ছড়াবে এবং আপন আত্নীয়তার বন্ধন ছিন্ন করবে?
ইরফানুল কুরআন
২২. অতঃপর (হে মুনাফেকেরা!) তোমাদের এ লক্ষণ দৃষ্টিগোচর হচ্ছে যে, যদি তোমরা (যুদ্ধ থেকে পলায়ন করে) শাসন-ক্ষমতা লাভ করো তবে পৃথিবীতে বিপর্যয়ই সৃষ্টি করবে এবং নিজেদের আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করবে (যা আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম অটুট রাখা এবং সম্প্রীতির নির্দেশ দিয়েছেন।)।
اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ لَعَنَہُمُ اللّٰہُ فَاَصَمَّہُمۡ وَ اَعۡمٰۤی اَبۡصَارَہُمۡ ﴿۲۳﴾
কানযুল ঈমান
২৩. এরা হচ্ছে ওই সব লোক, যাদের উপর আল্লাহ্ তা’আলা অভিসম্পাত করেছেন এবং তাদেরকে সত্য থেকে বধির করে দিয়েছেন, আর তাদের চক্ষুগুলোকে দৃষ্টিশক্তিহীন করে দিয়েছেন।
ইরফানুল কুরআন
২৩. তাদেরকেই আল্লাহ্ অভিসম্পাৎত করেছেন আর করেছেন বধির এবং তাদের চক্ষুকে করেছেন দৃষ্টিহীন।
اَفَلَا یَتَدَبَّرُوۡنَ الۡقُرۡاٰنَ اَمۡ عَلٰی قُلُوۡبٍ اَقۡفَالُہَا ﴿۲۴﴾
কানযুল ঈমান
২৪. তবে কি তারা ক্বোরআন সম্বন্ধে চিন্তা ভাবনা করে না? না কোন কোন অন্তরের উপর সেগুলোর তালা লেগেছে।
ইরফানুল কুরআন
২৪. তবে কি এরা কুরআন নিয়ে মনোনিবেশ সহকারে চিন্তা করে না? না কি তাদের অন্তর তালাবদ্ধ রয়েছে?
اِنَّ الَّذِیۡنَ ارۡتَدُّوۡا عَلٰۤی اَدۡبَارِہِمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ مَا تَبَیَّنَ لَہُمُ الۡہُدَی ۙ الشَّیۡطٰنُ سَوَّلَ لَہُمۡ ؕ وَ اَمۡلٰی لَہُمۡ ﴿۲۵﴾
কানযুল ঈমান
২৫. নিশ্চয় ওই সব লোক, যারা নিজেদের পেছনের দিকে ফিরে গেছে এরপর যে, হিদায়ত তাদের নিকট সুস্পষ্ট হয়েছিলো, শয়তান তাদেরকে ধোকা দিয়েছে এবং তাদেরকে দুনিয়ায় দীর্ঘকাল অবস্থান করার আশা দিয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
২৫. নিশ্চয়ই যারা পশ্চাতে (কুফরীতে) ফিরে গিয়েছে তাদের নিকট হেদায়াত সুস্পষ্ট হবার পর; শয়তান তাদেরকে (কুফরীতে ফিরে যাবার ধোঁকার মাধ্যমে) সুশোভিত করে দেখিয়েছে এবং তাদেরকে (পৃথিবীতে) দীর্ঘ জীবনের আশ্বাস দিয়েছে।
ذٰلِکَ بِاَنَّہُمۡ قَالُوۡا لِلَّذِیۡنَ کَرِہُوۡا مَا نَزَّلَ اللّٰہُ سَنُطِیۡعُکُمۡ فِیۡ بَعۡضِ الۡاَمۡرِ ۚۖ وَ اللّٰہُ یَعۡلَمُ اِسۡرَارَہُمۡ ﴿۲۶﴾
কানযুল ঈমান
২৬. এটা এ জন্য যে, তারা বলেছে ওই সমস্ত লোককে, যাদের নিকট আল্লাহ্র অবতীর্ণ অপছন্দীয়, ‘এক কাজে আমরা তোমাদের কথা মানবো’। এবং আল্লাহ্ তাদের গোপন বিষয় জানেন।
ইরফানুল কুরআন
২৬. তা এ জন্যে যে, তারা সেসব লোককে বলে, যারা আল্লাহ্র অবতীর্ণ কিতাব অপছন্দ করে; ‘আমরা কিছু বিষয়ে তোমাদের আনুগত্য করবো’। আর আল্লাহ্ তাদের গোপন পরামর্শ সম্পর্কে সম্যক অবগত।
فَکَیۡفَ اِذَا تَوَفَّتۡہُمُ الۡمَلٰٓئِکَۃُ یَضۡرِبُوۡنَ وُجُوۡہَہُمۡ وَ اَدۡبَارَہُمۡ ﴿۲۷﴾
কানযুল ঈমান
২৭. কেমন হবে যখন ফিরিশ্তাগণ তাদের প্রাণ হনন করবে তাদের মুখমণ্ডল ও পিঠে মারতে মারতে।
ইরফানুল কুরআন
২৭. অতঃপর (সে সময় তাদের দুর্দশা) কেমন হবে যখন ফেরেশতারা তাদের মুখমন্ডলে ও পৃষ্ঠদেশে আঘাত করতে করতে তাদের প্রাণ হরণ করবে?
ذٰلِکَ بِاَنَّہُمُ اتَّبَعُوۡا مَاۤ اَسۡخَطَ اللّٰہَ وَ کَرِہُوۡا رِضۡوَانَہٗ فَاَحۡبَطَ اَعۡمَالَہُمۡ ﴿۲۸﴾
কানযুল ঈমান
২৮. এটা এ জন্য যে, তারা এমন সব কথার অনুসারী হয়েছে, যা’তে আল্লাহ্র অসন্তুষ্টি রয়েছে। এবং তার সন্তুষ্টি তাদের নিকট পছন্দ হয় নি; সুতরাং তিনি তাদের কর্মসমূহ নিষ্ফল করে দিয়েছেন।
ইরফানুল কুরআন
২৮. তা এজন্যে যে, তারা তার অনুসরণ করে যা আল্লাহ্কে অসন্তুষ্ট করে এবং তারা তাঁর সন্তুষ্টিকে অপ্রিয় গণ্য করে। সুতরাং তিনি তাদের (সমস্ত) কর্ম নিস্ফল করে দেন।
اَمۡ حَسِبَ الَّذِیۡنَ فِیۡ قُلُوۡبِہِمۡ مَّرَضٌ اَنۡ لَّنۡ یُّخۡرِجَ اللّٰہُ اَضۡغَانَہُمۡ ﴿۲۹﴾
কানযুল ঈমান
২৯. যাদের অন্তরসমূহে ব্যাধি রয়েছে তারা কি এ ধারণায় রয়েছে যে, আল্লাহ্ তাদের গোপন বিদ্বেষভাব প্রকাশ করে দেবেন না?
ইরফানুল কুরআন
২৯. যাদের অন্তরে (কপটতার) ব্যাধি রয়েছে তারা কি মনে করে যে আল্লাহ্ তাদের বিদ্বেষ ও শত্রুতাকে কখনোই প্রকাশ করবেন না?
وَ لَوۡ نَشَآءُ لَاَرَیۡنٰکَہُمۡ فَلَعَرَفۡتَہُمۡ بِسِیۡمٰہُمۡ ؕ وَ لَتَعۡرِفَنَّہُمۡ فِیۡ لَحۡنِ الۡقَوۡلِ ؕ وَ اللّٰہُ یَعۡلَمُ اَعۡمَالَکُمۡ ﴿۳۰﴾
কানযুল ঈমান
৩০. এবং আমি ইচ্ছা করলে আপনাকে তাদেরকে দেখাতাম যাতে আপনি তাদের আকৃতি দ্বারা চিনে নিতেন। এবং নিশ্চয় আপনি তাদেরকে কথাবার্তার ভঙ্গিতে চিনে নেবেন। আর আল্লাহ্ তোমাদের কর্ম সম্পর্কে জানেন।
ইরফানুল কুরআন
৩০. আর আমরা ইচ্ছে করলে আপনাকে নিশ্চিতভাবে সেসব (এ মুনাফিকদেরকে) দেখাতাম যাতে আপনি তাদের আকৃতি দেখে চিনে নিতেন এবং (একইভাবে) অবশ্যই তাদের কথাবার্তার ভঙ্গিতেও তাদেরকে চিনে নিতেন। আর আল্লাহ্ তোমাদের সমস্ত কর্ম সম্পর্কে সম্যক অবগত।
وَ لَنَبۡلُوَنَّکُمۡ حَتّٰی نَعۡلَمَ الۡمُجٰہِدِیۡنَ مِنۡکُمۡ وَ الصّٰبِرِیۡنَ ۙ وَ نَبۡلُوَا۠ اَخۡبَارَکُمۡ ﴿۳۱﴾
কানযুল ঈমান
৩১. এবং অবশ্য আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করবো যতক্ষণ না দেখে নেবো তোমাদের জিহাদকারী ও ধৈর্যশীলদেরকে এবং তোমাদের সংবাদগুলোরও পরীক্ষা করে নেবো।
ইরফানুল কুরআন
৩১. আর আমরা অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করবো, যতক্ষণ না তোমাদের মধ্যে (দৃঢ়পদে) জিহাদকারী এবং ধৈর্যশীলদেরকে উদ্ঘাটন করি এবং তোমাদের (মুনাফিকসুলভ ভীরুতার গোপন) সংবাদও প্রকাশ করি।
اِنَّ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا وَ صَدُّوۡا عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ وَ شَآقُّوا الرَّسُوۡلَ مِنۡۢ بَعۡدِ مَا تَبَیَّنَ لَہُمُ الۡہُدٰی ۙ لَنۡ یَّضُرُّوا اللّٰہَ شَیۡئًا ؕ وَ سَیُحۡبِطُ اَعۡمَالَہُمۡ ﴿۳۲﴾
কানযুল ঈমান
৩২. নিশ্চয় ওই সব লোক, যারা কুফর করেছে, আল্লাহ্র পথে বাধা সৃষ্টি করেছে এবং রসূলের বিরোধিতা করেছে এরপর যে, হিদায়ত তাদের উপর প্রকাশ পেয়েছিলো, তারা কখনো আল্লাহ্র কোন ক্ষতি করতে পারবে না এবং খুব শিগ্গিরই আল্লাহ্ তাদের কর্মসমূহ নিষ্ফল করে দেবেন।
ইরফানুল কুরআন
৩২. নিশ্চয়ই যারা কুফরী করেছে, (মানুষকে) আল্লাহ্র পথ থেকে নিবৃত্ত করেছে এবং রাসূল (আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-এঁর বিরোধীতা করেছে (এবং তাঁর থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পথ বেছে নিয়েছে), তাদের নিকট হেদায়াত (অর্থাৎ রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের মহান শানের পরিচয়) সুস্পষ্ট হবার পর; তারা কোনভাবেই আল্লাহ্র কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। (অর্থাৎ তারা রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের মর্যাদা ও অবস্থানকে কমাতে পারবে না।*) আর আল্লাহ্ তাদের (সমস্ত) কর্ম নিষ্ফল করে দেবেন (রাসূল আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের বিরোধিতার কারণে)।
* তাফসীর শাস্ত্রের ইমামগণ লিখেন যে, ‘লাঁই ইয়াদ্বুর রুল্লাহা শাইয়া, অর্থাৎ রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামকে কষ্ট দেয়ার মাধ্যমে কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। এখানে মুযাফকে তাঁর মর্যাদা বৃদ্ধির নিমিত্তে উহ্য রাখা হয়েছে।’ দেখুন, বাইযাবী, তাবারী, রূহুল মা’আনী, রূহুল বায়ান, জুমাল, বাহরুল মাদীদ ও অন্যান্য তাফসীর। এ ধরণের বাক্যরীতি পবিত্র কুরআনুল কারীমে অনেক রয়েছে, যার মধ্যে সূরা- বাক্বারার ৯ নং আয়াত ‘ইউখাদিউনাল্লাহা ওয়া রাসূলুহু, এখানে ইউখাদিউনাল্লাহ বলে (তারা আল্লাহকে ধোঁকা দিতে চায় বলে) ‘ইউখাদিউনা রাসূলাল্লাহু’ (তারা রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়ালিহী ওয়াসাল্লামকে ধোঁকা দিতে চায়) বুঝিয়েছেন।
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَطِیۡعُوا اللّٰہَ وَ اَطِیۡعُوا الرَّسُوۡلَ وَ لَا تُبۡطِلُوۡۤا اَعۡمَالَکُمۡ ﴿۳۳﴾
কানযুল ঈমান
৩৩. হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ্র নির্দেশ মেনে চলো এবং রসূলের নির্দেশ মেনে চলো আর আপন কৃতকর্ম বাতিল করো না।
ইরফানুল কুরআন
৩৩. হে ঈমানদারগণ! তোমরা আনুগত্য করো আল্লাহ্র এবং আনুগত্য করো রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম)-এঁর, আর নিজেদের কর্ম বিনষ্ট করো না।
اِنَّ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا وَ صَدُّوۡا عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ ثُمَّ مَاتُوۡا وَ ہُمۡ کُفَّارٌ فَلَنۡ یَّغۡفِرَ اللّٰہُ لَہُمۡ ﴿۳۴﴾
কানযুল ঈমান
৩৪. নিশ্চয় যারা কুফর করেছে এবং আল্লাহ্র পথে বাধা দিয়েছে অতঃপর কাফির অবস্থায়ই মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছে, তবে আল্লাহ্ কখনো তাদেরকে ক্ষমা করবেন না।
ইরফানুল কুরআন
৩৪. নিশ্চয়ই যারা কুফরী করেছে এবং (মানুষকে) আল্লাহ্র পথ থেকে নিবৃত্ত করেছে, অতঃপর কাফের অবস্থায়ই মৃত্যুবরণ করেছে, তবে আল্লাহ্ তাদেরকে কখনোই ক্ষমা করবেন না।
فَلَا تَہِنُوۡا وَ تَدۡعُوۡۤا اِلَی السَّلۡمِ ٭ۖ وَ اَنۡتُمُ الۡاَعۡلَوۡنَ ٭ۖ وَ اللّٰہُ مَعَکُمۡ وَ لَنۡ یَّتِرَکُمۡ اَعۡمَالَکُمۡ ﴿۳۵﴾
কানযুল ঈমান
৩৫. সুতরাং তোমরা আলস্য করো না; এবং আপনি সন্ধির দিকে আহ্বান করবেন না! আর তোমরাই বিজয়ী হবে এবং আল্লাহ্ তোমাদের সাথে আছেন; আর তিনি কখনো তোমাদের কর্মফল ক্ষুণ্ণ করবেন না।
ইরফানুল কুরআন
৩৫. সুতরাং (হে ঈমানদারগণ!) তোমরা হীনবল হয়ো না এবং (কাফের যোদ্ধাদের নিকট) সন্ধির প্রস্তাবও করো না (যাতে তোমাদের দুর্বলতা প্রকাশ পায়)। আর তোমরাই হবে বিজয়ী এবং আল্লাহ্ তোমাদের সাথে আছেন। আর তিনি কখনোই তোমাদের কর্মফল (এবং এর সাওয়াব) ক্ষুন্ন করবেন না।
اِنَّمَا الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَا لَعِبٌ وَّ لَہۡوٌ ؕ وَ اِنۡ تُؤۡمِنُوۡا وَ تَتَّقُوۡا یُؤۡتِکُمۡ اُجُوۡرَکُمۡ وَ لَا یَسۡـَٔلۡکُمۡ اَمۡوَالَکُمۡ ﴿۳۶﴾
কানযুল ঈমান
৩৬. দুনিয়ার জীবন তো খেলাধূলা মাত্র। আর যদি তোমরা ঈমান আনো এবং পরহেয্গারী অবলম্বন করো, তবে তিনি তোমাদেরকে তোমাদের সাওয়াব দান করবেন এবং তোমাদের নিকট থেকে তোমাদের সম্পদের কিছুই চাইবেন না।
ইরফানুল কুরআন
৩৬. নিঃসন্দেহে দুনিয়ার জীবন তো কেবল খেল-তামাশা। আর যদি তোমরা ঈমান আনয়ন করো এবং পরহেযগারিতা অবলম্বন করো, তবে তিনি তোমাদেরকে (কৃতকর্মের পূর্ণ) সওয়াব দান করবেন এবং তোমাদের থেকে তোমাদের ধন-সম্পদ চাইবেন না।
اِنۡ یَّسۡـَٔلۡکُمُوۡہَا فَیُحۡفِکُمۡ تَبۡخَلُوۡا وَ یُخۡرِجۡ اَضۡغَانَکُمۡ ﴿۳۷﴾
কানযুল ঈমান
৩৭. যদি তিনি সেগুলো তোমাদের নিকট তলব করেন এবং বেশি তলব করেন, তবে তোমরা কার্পণ্য করবে এবং ওই কার্পণ্য তোমাদের অন্তরগুলোর আবর্জ্জনাকে প্রকাশ করে দেবে।
ইরফানুল কুরআন
৩৭. যদি তিনি তোমাদের থেকে ধন-সম্পদ চেয়ে বসেন, অতঃপর তোমাদেরকে চাপ প্রয়োগ করেন তবে তোমাদের (অন্তরে) তা অনুভূত হবে, (আর) তোমরা কৃপণতা করবে। (এভাবে) তিনি (পার্থিব কারণে) তোমাদের (অন্তর্নিহীত) মরিচা বের করে দেবেন।
ہٰۤاَنۡتُمۡ ہٰۤؤُلَآءِ تُدۡعَوۡنَ لِتُنۡفِقُوۡا فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ ۚ فَمِنۡکُمۡ مَّنۡ یَّبۡخَلُ ۚ وَ مَنۡ یَّبۡخَلۡ فَاِنَّمَا یَبۡخَلُ عَنۡ نَّفۡسِہٖ ؕ وَ اللّٰہُ الۡغَنِیُّ وَ اَنۡتُمُ الۡفُقَرَآءُ ۚ وَ اِنۡ تَتَوَلَّوۡا یَسۡتَبۡدِلۡ قَوۡمًا غَیۡرَکُمۡ ۙ ثُمَّ لَا یَکُوۡنُوۡۤا اَمۡثَالَکُمۡ ﴿۳۸﴾
কানযুল ঈমান
৩৮. হাঁ, হাঁ, এই যে তোমরা! তোমাদেরকে আহ্বান করা হচ্ছে এ’জন্য যে, তোমরা আল্লাহ্র পথে ব্যয় করবে। তখন তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ কার্পণ্য করে এবং যে কেউ কার্পণ্য করে, তবে সে স্বীয় আত্নার উপরই কার্পণ্য করে এবং আল্লাহ্ অভাবমুক্ত আর তোমরা সবাই মুখাপেক্ষী। আর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে তিনি তোমাদের ব্যতীত অন্য লোকদেরকে তোমাদের স্থলবর্তী করবেন। অতঃপর তারা তোমাদের মতো হবে না।
ইরফানুল কুরআন
৩৮. মনে রেখো! তোমরাই সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ্র পথে ব্যয় করার জন্যে আহ্বান করা হয়; অথচ তোমাদের মধ্যে কতিপয় এমনও রয়েছে যারা কার্পণ্য করে। আর যারাই কার্পণ্য করে তারা কেবল নিজের প্রতিই কার্পণ্য করে। আল্লাহ্ অভাবমুক্ত এবং তোমরা (সকলেই) অভাবগ্রস্ত। যদি তোমরা (আল্লাহ্র নির্দেশের) বিমুখ হও, তবে তিনি অন্য সম্প্রদায়কে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করবেন, অতঃপর তারা তোমাদের মতো হবে না।