بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
কানযুল ঈমান
০. আল্লাহ্র নামে আরম্ভ, যিনি পরম দয়ালু, করুণাময় (১)
ইরফানুল কুরআন
০. আল্লাহর নামে শুরু, যিনি পরম করুণাময়, সতত অসীম দয়ালু।
اَلۡحَمۡدُ لِلّٰہِ الَّذِیۡ لَہٗ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الۡاَرۡضِ وَ لَہُ الۡحَمۡدُ فِی الۡاٰخِرَۃِ ؕ وَ ہُوَ الۡحَکِیۡمُ الۡخَبِیۡرُ ﴿۱﴾
কানযুল ঈমান
১. সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্র জন্য, যাঁরই সম্পদ যা কিছু আসমানসমূহে রয়েছে এবং যা কিছু যমীনে এবং আখিরাতে তাঁরই প্রশংসা। আর তিনিই প্রজ্ঞাময়, অবহিত।
ইরফানুল কুরআন
১. সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্রই, যা কিছু আকাশমন্ডলীতে রয়েছে এবং যা কিছু পৃথিবীতে রয়েছে (সব) তাঁরই এবং পরকালেও প্রশংসা তাঁরই। আর তিনি বড়ই প্রজ্ঞাবান, সর্ববিষয়ে অবগত।
یَعۡلَمُ مَا یَلِجُ فِی الۡاَرۡضِ وَ مَا یَخۡرُجُ مِنۡہَا وَ مَا یَنۡزِلُ مِنَ السَّمَآءِ وَ مَا یَعۡرُجُ فِیۡہَا ؕ وَ ہُوَ الرَّحِیۡمُ الۡغَفُوۡرُ ﴿۲﴾
কানযুল ঈমান
২. জানেন যা কিছু যমীনের মধ্যে প্রবেশ করে, যা যমীন থেকে নির্গত হয়, যা আসমান থেকে অবতরণ করে এবং যা তাতে আরোহণ করে। আর তিনিই দয়ালু, ক্ষমাশীল।
ইরফানুল কুরআন
২. তিনি (সব) জানেন যা কিছু পৃথিবীতে প্রবিষ্ট হয়, যা কিছু তা থেকে নির্গত হয়, যা কিছু আসমান থেকে অবতীর্ণ হয় এবং যা কিছু এতে আরোহণ করে। আর তিনি পরম দয়ালু, মহাক্ষমাশীল।
وَ قَالَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا لَا تَاۡتِیۡنَا السَّاعَۃُ ؕ قُلۡ بَلٰی وَ رَبِّیۡ لَتَاۡتِیَنَّکُمۡ ۙ عٰلِمِ الۡغَیۡبِ ۚ لَا یَعۡزُبُ عَنۡہُ مِثۡقَالُ ذَرَّۃٍ فِی السَّمٰوٰتِ وَ لَا فِی الۡاَرۡضِ وَ لَاۤ اَصۡغَرُ مِنۡ ذٰلِکَ وَ لَاۤ اَکۡبَرُ اِلَّا فِیۡ کِتٰبٍ مُّبِیۡنٍ ٭ۙ﴿۳﴾
কানযুল ঈমান
৩. এবং কাফিরগণ বললো, ‘আমাদের উপর ক্বিয়ামত আসবে না। আপনি বলুন, ‘কেন নয়? আমার রবের শপথ! নিশ্চয়, অবশ্য তোমাদের উপর আসবে; (তিনি) অদৃশ্যের সম্বন্ধে জ্ঞাত। তার নিকট গোপন নয় অণু পরিমাণ কোন বস্তু আসমানসমূহে এবং না যমীনের আর না তদপেক্ষ ক্ষুদ্র এবং না বৃহৎ; কিন্তু একটা সুস্পষ্ট বর্ণনাকারী কিতাবের মধ্যে রয়েছে;
ইরফানুল কুরআন
৩. আর কাফেরেরা বলে, ‘আমাদের উপর কিয়ামত আসবে না’। বলে দিন, ‘কেন নয়? আমার ‘‘অদৃশ্যে জ্ঞাত’’ প্রতিপালকের কসম! তা অবশ্যই আসবে।’ তাঁর কাছে না আকাশমন্ডলীতে অনু পরিমাণ কোনো কিছু গোপন আছে, আর না পৃথিবীতে। আর না তদপেক্ষা ক্ষুদ্র (কিছু), আর না বৃহৎ কিছু। তবে (লওহে মাহফুযে রক্ষিত) সমুজ্জ্বল কিতাবেই লিপিবদ্ধ রয়েছে,
لِّیَجۡزِیَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ ؕ اُولٰٓئِکَ لَہُمۡ مَّغۡفِرَۃٌ وَّ رِزۡقٌ کَرِیۡمٌ ﴿۴﴾
কানযুল ঈমান
৪. যাতে পুরস্কৃত করেন তাদেরকে, যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে। এরা হচ্ছে- যাদের জন্য ক্ষমা রয়েছে এবং সম্মানজনক জীবিকা।
ইরফানুল কুরআন
৪. যাতে আল্লাহ্ তাদেরকে পূর্ণ প্রতিদান প্রদান করতে পারেন যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করছে। তাদের জন্যেই ক্ষমা এবং মর্যাদাসম্পন্ন (পরকালীন) রিযিক রয়েছে।
وَ الَّذِیۡنَ سَعَوۡ فِیۡۤ اٰیٰتِنَا مُعٰجِزِیۡنَ اُولٰٓئِکَ لَہُمۡ عَذَابٌ مِّنۡ رِّجۡزٍ اَلِیۡمٌ ﴿۵﴾
কানযুল ঈমান
৫. এবং যেসব লোক আমার আয়াতসমূহের মধ্যে পরাজিত করার চেষ্টা করেছে তাদের জন্য বেদনাদায়ক শাস্তি থেকে কঠোর শাস্তি রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৫. আর যারা আমাদের আয়াতসমূহের (বিরোধিতার) চেষ্টা করে (আমাদেরকে) ব্যর্থ করে দেয়ার ধারণায়, তাদের জন্যে রয়েছে কঠিন যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
وَ یَرَی الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡعِلۡمَ الَّذِیۡۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡکَ مِنۡ رَّبِّکَ ہُوَ الۡحَقَّ ۙ وَ یَہۡدِیۡۤ اِلٰی صِرَاطِ الۡعَزِیۡزِ الۡحَمِیۡدِ ﴿۶﴾
কানযুল ঈমান
৬. এবং যারা জ্ঞান লাভ করেছে তারা জানে যে, যা কিছু আপনার প্রতি আপনার রবের নিকট থেকে অবতীর্ণ হয়েছে, তাই সত্য এবং সম্মানের অধিকারী, সমস্ত প্রশংসায় প্রশংসিতের পথনির্দেশ করে।
ইরফানুল কুরআন
৬. আর যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে তারা জানে যে, (কিতাব হিসেবে) আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তাই সত্য। আর এটি (এ কিতাব) পথ-নির্দেশ করে পরাক্রমশালী উৎকৃষ্টতার অধিকারী (প্রতিপালক)-এঁর দিকে।
وَ قَالَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا ہَلۡ نَدُلُّکُمۡ عَلٰی رَجُلٍ یُّنَبِّئُکُمۡ اِذَا مُزِّقۡتُمۡ کُلَّ مُمَزَّقٍ ۙ اِنَّکُمۡ لَفِیۡ خَلۡقٍ جَدِیۡدٍ ۚ﴿۷﴾
কানযুল ঈমান
৭. এবং কাফিরগণ বললো, ‘আমরা তোমাদেরকে কি এমন পুরুষের সন্ধান দেবো যিনি তোমাদেরকে এ খবর দেন যে, যখন তোমরা ছিন্নভিন্ন হয়ে সম্পূর্ণ চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে, তবুও তোমাদেরকে নতুন সৃষ্টিতে পরিণত হতে হবে?’
ইরফানুল কুরআন
৭. আর কাফেরেরা (অবাক হওয়া ও ঠাট্টা-মশকরার ছলে) বলে, ‘আমরা কি তোমাদেরকে এমন ব্যক্তির সন্ধান দেবো যে তোমাদেরকে সংবাদ দেয় যে, (মৃত্যুর পর) তোমরা যখন সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে যাবে, তখন অবশ্যই তোমরা নতুন (এক) সৃষ্টিরুপে উত্থিত হবে?
اَفۡتَرٰی عَلَی اللّٰہِ کَذِبًا اَمۡ بِہٖ جِنَّۃٌ ؕ بَلِ الَّذِیۡنَ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ بِالۡاٰخِرَۃِ فِی الۡعَذَابِ وَ الضَّلٰلِ الۡبَعِیۡدِ ﴿۸﴾
কানযুল ঈমান
৮. তিনি কি আল্লাহ্ সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা করেছেন? কিংবা তার সাথে উন্মাদনা আছে? বরং ওই সব লোক, যারা আখিরাতের উপর ঈমান আনে না, তারা শাস্তি ও বহু দূরের ভ্রান্তির মধ্যে রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৮. (নাকি) সে আল্লাহ্র প্রতি মিথ্যা অপবাদ আরোপ করেছে, অথবা তার মধ্যে উন্মাদনা রয়েছে?’ (এমন কিছুই নেই) বরং যারা পরকালে বিশ্বাস রাখে না তারা শাস্তি এবং চূড়ান্ত গোমরাহীতে (নিমজ্জিত) রয়েছে।
اَفَلَمۡ یَرَوۡا اِلٰی مَا بَیۡنَ اَیۡدِیۡہِمۡ وَ مَا خَلۡفَہُمۡ مِّنَ السَّمَآءِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ اِنۡ نَّشَاۡ نَخۡسِفۡ بِہِمُ الۡاَرۡضَ اَوۡ نُسۡقِطۡ عَلَیۡہِمۡ کِسَفًا مِّنَ السَّمَآءِ ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیَۃً لِّکُلِّ عَبۡدٍ مُّنِیۡبٍ ﴿۹﴾
কানযুল ঈমান
৯. তবে কি তারা দেখে নি, যা তাদের সামনে ও পেছনে রয়েছে- আসমান ও যমীন। আমি ইচ্ছা করলে তাদেরকে ভূমিতে ধ্বসিয়ে দেবো। অথবা তাদের উপর আসমানের টুকরা পতিত করবো। নিশ্চয় সেটার মধ্যে নিদর্শন রয়েছে (আল্লাহ্র দিকে) প্রত্যেক প্রত্যাবর্তনকারী বান্দার জন্য।
ইরফানুল কুরআন
৯. সুতরাং তারা কি ওইসব (নিদর্শন) দেখে না যা আকাশমন্ডলীতে ও পৃথিবীতে, তাদের সম্মুখে ও তাদের পশ্চাতে (তাদেরকে ঘিরে) রয়েছে? আমরা চাইলে তাদেরকে পৃথিবীতে ধ্বসিয়ে দেবো অথবা তাদের উপর আকাশখন্ডের পতন ঘটাবো। নিশ্চয়ই এতে নিদর্শন রয়েছে প্রতিটি বান্দার জন্যে যারা আল্লাহ্র অভিমুখে প্রত্যাবর্তনকারী।
وَ لَقَدۡ اٰتَیۡنَا دَاوٗدَ مِنَّا فَضۡلًا ؕ یٰجِبَالُ اَوِّبِیۡ مَعَہٗ وَ الطَّیۡرَ ۚ وَ اَلَنَّا لَہُ الۡحَدِیۡدَ ﴿ۙ۱۰﴾
কানযুল ঈমান
১০. এবং নিশ্চয় আমি দাঊদকে স্বীয় মহা অনুগ্রহ প্রদান করেছি, ‘হে পর্বতমালা! তার সাথে আল্লাহ্র প্রতি প্রত্যাবর্তন করো এবং হে পক্ষীকূল!’ এবং আমি তার জন্য লোহাকে নরম করেছি;
ইরফানুল কুরআন
১০. আর আমরা তো দাঊদ (আলাইহিস সালাম)-কে আমাদের পক্ষ থেকে বড় মর্যাদা প্রদান করেছিলাম। (আর নির্দেশ দিয়েছিলাম,) ‘হে পর্বতমালা! তোমরা তাঁর সাথে মিলিত হয়ে সুললিত ধ্বণিতে (তাসবীহ) পাঠ করো।’ আর বিহঙ্গকূলকেও (অধীনস্ত করে এই নির্দেশই প্রদান করেছিলাম)। আর আমরা তাঁর জন্যে লৌহকে নমনীয় করে দিয়েছিলাম।
اَنِ اعۡمَلۡ سٰبِغٰتٍ وَّ قَدِّرۡ فِی السَّرۡدِ وَ اعۡمَلُوۡا صَالِحًا ؕ اِنِّیۡ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ بَصِیۡرٌ ﴿۱۱﴾
কানযুল ঈমান
১১. যাতে প্রশস্ত বর্ম তৈরী করো এবং তৈরী করার মধ্যে পরিমাপ রক্ষা করো। আর তোমরা সবাই সৎকর্ম করো। নিশ্চয় আমি তোমাদের কর্ম দেখছি।
ইরফানুল কুরআন
১১. (আর ইরশাদ করেছিলাম,) ‘প্রশস্ত বর্ম তৈরি করো এবং (এর) বলয়গুলো জোড়া দেয়ার ক্ষেত্রে পরিমাণের দিকে লক্ষ্য রাখো এবং (হে দাউদের বংশধর) তোমরা সৎকর্ম করতে থাকো। আমি সেসব (কর্মকান্ড) পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে দেখি যা কিছু তোমরা করো।’
وَ لِسُلَیۡمٰنَ الرِّیۡحَ غُدُوُّہَا شَہۡرٌ وَّ رَوَاحُہَا شَہۡرٌ ۚ وَ اَسَلۡنَا لَہٗ عَیۡنَ الۡقِطۡرِ ؕ وَ مِنَ الۡجِنِّ مَنۡ یَّعۡمَلُ بَیۡنَ یَدَیۡہِ بِاِذۡنِ رَبِّہٖ ؕ وَ مَنۡ یَّزِغۡ مِنۡہُمۡ عَنۡ اَمۡرِنَا نُذِقۡہُ مِنۡ عَذَابِ السَّعِیۡرِ ﴿۱۲﴾
কানযুল ঈমান
১২. আর বায়ুকে সুলায়মানের অধীন করেছি, যার প্রভাতের গম্যস্থান এক মাসের পথ এবং সন্ধ্যার গম্যস্থান এক মাসের পথ আর আমি তাঁর জন্য গলিত তামার একটা প্রস্রবণ প্রবাহিত করেছি এবং জিন্দের থেকে (কতেক এমন ছিলো) যারা তার সম্মুখে কাজ করতো তার রবের নির্দেশে এবং তাদের মধ্যে যে কেউ আমার নির্দেশ থেকে ফিরে যায় তাকে আমি জ্বলন্ত আগুনের শাস্তি আস্বাদন করাবো।
ইরফানুল কুরআন
১২. আর সুলাইমান (আলাইহিস সালাম)-এঁর জন্যে (অধীনস্ত করেছিলাম) বায়ুকে যার সকালের দূরত্ব ছিল এক মাসের পথ এবং বিকেলের দূরত্ব(ও) এক মাসের পথ। আর আমি তাঁর জন্যে গলিত তাম্রের এক প্রস্রবণ প্রবাহিত করেছিলাম এবং (তাঁর অধীনস্ত) ছিল কিছু জ্বিন যারা তার প্রতিপালকের নির্দেশে তাঁর সম্মুখে কাজ করতো। আর (আমরা ঘোষণা করে দিয়েছিলাম যে,) তাদের মধ্যে যে কেউ আমাদের নির্দেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে তাকে আমরা দোযখের প্রজ্বলিত আগুনের শাস্তির স্বাদ আস্বাদন করাবো।
یَعۡمَلُوۡنَ لَہٗ مَا یَشَآءُ مِنۡ مَّحَارِیۡبَ وَ تَمَاثِیۡلَ وَ جِفَانٍ کَالۡجَوَابِ وَ قُدُوۡرٍ رّٰسِیٰتٍ ؕ اِعۡمَلُوۡۤا اٰلَ دَاوٗدَ شُکۡرًا ؕ وَ قَلِیۡلٌ مِّنۡ عِبَادِیَ الشَّکُوۡرُ ﴿۱۳﴾
কানযুল ঈমান
১৩. তার জন্য নির্মাণ করতো যা সে চাইতো- উচু উচু প্রাসাদ ও প্রতিমূর্তিসমূহ এবং বড় বড় চৌবাচ্চার সমতুল্য বৃহদাকার পাত্র আর নোঙ্গরসম্পন্ন ডেগসমূহ নির্মান করতো। হে দাঊদ-সম্প্রদায়ের লোকেরা! কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো এবং আমার বান্দাদের মধ্যে কমসংখ্যক লোক আছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশকারী।
ইরফানুল কুরআন
১৩. এরা (জ্বিনেরা) তাঁর জন্যে তাঁর ইচ্ছানুযায়ী উঁচু প্রাসাদ, ভাস্কর্য, পুকুরসম ও স্থির হাড়ির ন্যায় বিশাল গামলা নির্মাণ করতো। হে দাউদের বংশধর! (আল্লাহ্র) কৃতজ্ঞতা আদায় করতে থাকো। আর আমার বান্দাদের মধ্যে অল্পই কৃতজ্ঞ রয়েছে।
فَلَمَّا قَضَیۡنَا عَلَیۡہِ الۡمَوۡتَ مَا دَلَّہُمۡ عَلٰی مَوۡتِہٖۤ اِلَّا دَآبَّۃُ الۡاَرۡضِ تَاۡکُلُ مِنۡسَاَتَہٗ ۚ فَلَمَّا خَرَّ تَبَیَّنَتِ الۡجِنُّ اَنۡ لَّوۡ کَانُوۡا یَعۡلَمُوۡنَ الۡغَیۡبَ مَا لَبِثُوۡا فِی الۡعَذَابِ الۡمُہِیۡنِ ﴿ؕ۱۴﴾
কানযুল ঈমান
১৪. অতঃপর যখন আমি তার উপর মৃত্যুর নির্দেশ প্রেরণ করেছি, তখন জিনদেরকে তার মৃত্যুর বিষয় জানিয়েছে কেবল যমীনের উই-পোকা, যা তার লাঠি খাচ্ছিলো। অতঃপর যখন সুলায়মান মাটির উপর এলো, তখন জিনদের বাস্তব অবস্থা প্রকাশ পেয়ে গেলো- যদি তারা অদৃশ্য বিষয়ে অবগত হতো, তা’হলে এ লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তিতে আবদ্ধ থাকতো না।
ইরফানুল কুরআন
১৪. অতঃপর যখন আমরা সুলাইমান (আলাইহিস সালাম)-এঁর মৃত্যু নির্ধারণ করলাম, তখন এদেরকে (এ জ্বিনদেরকে) তাঁর মৃত্যু সম্পর্কে অবগত করলো কেবল ভূমিস্থ উইপোকা যা তাঁর লাঠি খেয়ে ফেলছিল। অতঃপর যখন তাঁর শরীর ভূমিতে পড়ে গেল তখন জ্বিনদের কাছে বোধগম্য হয়ে গেলো যে, যদি তারা অদৃশ্য বিষয় জানতো তবে এমন লাঞ্ছনাকর শাস্তিতে আবদ্ধ থাকতো না।
لَقَدۡ کَانَ لِسَبَاٍ فِیۡ مَسۡکَنِہِمۡ اٰیَۃٌ ۚ جَنَّتٰنِ عَنۡ یَّمِیۡنٍ وَّ شِمَالٍ ۬ؕ کُلُوۡا مِنۡ رِّزۡقِ رَبِّکُمۡ وَ اشۡکُرُوۡا لَہٗ ؕ بَلۡدَۃٌ طَیِّبَۃٌ وَّ رَبٌّ غَفُوۡرٌ ﴿۱۵﴾
কানযুল ঈমান
১৫. নিশ্চয় ‘সাবা’ এর জন্য তাদের বাসভূমিতে নিদর্শন ছিলো; দু’টি বাগান- ডানে ও বামে। ‘আপন রবের রিযক্ব আহার করো এবং তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো। পবিত্র শহর এবং ক্ষমাশীল রব’।
ইরফানুল কুরআন
১৫. প্রকৃতপক্ষে সাবা (সম্প্রদায়)-এর জন্যে তাদের বাসভূমিতেই নিদর্শন বিদ্যমান ছিল। (তা হলো) দু’টি বাগান, একটি ডান দিকে এবং অপরটি বাম দিকে। (তাদেরকে বলা হয়েছিল) ‘তোমরা তোমাদের প্রতিপালক প্রদত্ত রিযিক ভোগ করো এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো। (তোমাদের) শহর (কতোই) পবিত্র এবং প্রতিপালক মহাক্ষমাশীল।
فَاَعۡرَضُوۡا فَاَرۡسَلۡنَا عَلَیۡہِمۡ سَیۡلَ الۡعَرِمِ وَ بَدَّلۡنٰہُمۡ بِجَنَّتَیۡہِمۡ جَنَّتَیۡنِ ذَوَاتَیۡ اُکُلٍ خَمۡطٍ وَّ اَثۡلٍ وَّ شَیۡءٍ مِّنۡ سِدۡرٍ قَلِیۡلٍ ﴿۱۶﴾
কানযুল ঈমান
১৬. অতঃপর তারা মুখ ফিরিয়ে নিলো। সুতরাং আমি তাদের উপর প্রবল বন্যা প্রেরণ করলাম এবং তাদের বাগানসমূহের পরিবর্তে দু’টি বাগান তাদেরকে প্রদান করেছি, যেগুলোর মধ্যে উৎপন্ন হয় বিস্বাদ ফলমূল এবং ঝাউ গাছ আর অল্প কিছু কুলগাছ।
ইরফানুল কুরআন
১৬. অতঃপর তারা (আনুগত্য থেকে) মুখ ফিরিয়ে নিল। ফলে আমরা তাদের উপর প্রবাহিত করলাম বাঁধভাঙা বন্যা এবং আমরা তাদের উদ্যান দু’টিকে (এমন) দু’টি উদ্যানে পরিবর্তন করে দিলাম যাতে রয়ে গেল বিস্বাদ ফল, কিছু ঝাউ গাছ এবং যৎসামান্য কুল বৃক্ষ।
ذٰلِکَ جَزَیۡنٰہُمۡ بِمَا کَفَرُوۡا ؕ وَ ہَلۡ نُجٰزِیۡۤ اِلَّا الۡکَفُوۡرَ ﴿۱۷﴾
কানযুল ঈমান
১৭. আমি তাদেরকে এ বদলা দিলাম – তাদের অকৃতজ্ঞতার শাস্তি। এবং আমি কাকে শাস্তি দিই? তাকেই, যে অকৃতজ্ঞ।
ইরফানুল কুরআন
১৭. আমরা তাদের কুফরী ও অকৃতজ্ঞতার বিনিময় প্রদান করলাম। আর বড় অকৃতজ্ঞ ছাড়া আমি (কাউকে এমন) শাস্তি দেই না।
وَ جَعَلۡنَا بَیۡنَہُمۡ وَ بَیۡنَ الۡقُرَی الَّتِیۡ بٰرَکۡنَا فِیۡہَا قُرًی ظَاہِرَۃً وَّ قَدَّرۡنَا فِیۡہَا السَّیۡرَ ؕ سِیۡرُوۡا فِیۡہَا لَیَالِیَ وَ اَیَّامًا اٰمِنِیۡنَ ﴿۱۸﴾
কানযুল ঈমান
১৮. এবং আমি স্থাপন করেছিলাম তাদের মধ্যে এবং ওই শহরগুলোর মধ্যে, যেগুলোতে আমি কল্যাণ রেখেছি রাস্তার মাথায় মাথায় কতো শহর আর সে গুলোর মাঝখানে ভ্রমণ বিরতির পরিমাণ দূরত্ব রেখেছি। ‘সেগুলোতে ভ্রমণ করো রাত ও দিনসমূহে নিরাপদে’।
ইরফানুল কুরআন
১৮. আর আমরা এ অধিবাসীদের এবং এ জনপদের মধ্যবর্তী স্থানে বরকত দিয়ে রেখেছিলাম যাতে (ইয়ামান থেকে শাম পর্যন্ত) দৃশ্যমান বহু জনপদ স্থাপন করেছিলাম। আর আমরা এসবের মাঝে ভ্রমণের যথাযথ ব্যবস্থা (বিশ্রামস্থল স্থাপন) করেছিলাম, যাতে তোমরা রজনীতে এবং দিবসে নির্ভয়ে চলাফেরা করতে পারো।
فَقَالُوۡا رَبَّنَا بٰعِدۡ بَیۡنَ اَسۡفَارِنَا وَ ظَلَمُوۡۤا اَنۡفُسَہُمۡ فَجَعَلۡنٰہُمۡ اَحَادِیۡثَ وَ مَزَّقۡنٰہُمۡ کُلَّ مُمَزَّقٍ ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیٰتٍ لِّکُلِّ صَبَّارٍ شَکُوۡرٍ ﴿۱۹﴾
কানযুল ঈমান
১৯. সুতরাং তারা বললো, ‘হে আমাদের রব! আমাদের সফরের মধ্যে দূরত্ব স্থাপন করো!’ এবং তারা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি করেছে। ফলে, আমি তাদেরকে কাহিনীতে পরিণত করে দিয়েছি এবং তাদেরকে পূর্ণ মানসিক দুঃখ দ্বারা বিক্ষিপ্ত করে দিয়েছি। নিশ্চয় তাতে অবশ্য নিদর্শনাদি রয়েছে প্রত্যেক বড় ধৈর্যশীল ও প্রত্যেক বড় কৃতজ্ঞের জন্য।
ইরফানুল কুরআন
১৯. তখন তারা বলতে লাগলো, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের সফরের মনযিলগুলোর মাঝে ব্যবধান বর্ধিত করো’; আর তারা নিজেদের প্রতি অন্যায় করেছিল, ফলে আমরা (সতর্কতার শিক্ষা হিসেবে) তাদেরকে উপাখ্যানের বিষয়বস্তুতে পরিণত করলাম এবং আমরা তাদেরকে ছিন্ন-ভিন্ন করে ছড়িয়ে দিলাম। নিশ্চয়ই এতে নিদর্শনাবলী রয়েছে প্রত্যেক কঠোর ধৈর্যশীল ও অত্যন্ত কৃতজ্ঞ ব্যক্তির জন্যে।
وَ لَقَدۡ صَدَّقَ عَلَیۡہِمۡ اِبۡلِیۡسُ ظَنَّہٗ فَاتَّبَعُوۡہُ اِلَّا فَرِیۡقًا مِّنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۲۰﴾
কানযুল ঈমান
২০. এবং নিশ্চয় ইবলীস তাদেরকে স্বীয় ধারণা সত্য করে দেখিয়েছে। সুতরাং তারা তার অনুসরণ করেছে; কিন্তু (করেনি) একটা দল, যারা মুসলমান ছিলো।
ইরফানুল কুরআন
২০. নিশ্চয়ই ইবলীস তাদেরকে স্বীয় ধারণা সত্য করে দেখিয়েছিল। সুতরাং এরা তার আনুগত্য করলো, তবে একটি দল ব্যতীত, যারা ছিল (যথাযথ) মুমিন।
وَ مَا کَانَ لَہٗ عَلَیۡہِمۡ مِّنۡ سُلۡطٰنٍ اِلَّا لِنَعۡلَمَ مَنۡ یُّؤۡمِنُ بِالۡاٰخِرَۃِ مِمَّنۡ ہُوَ مِنۡہَا فِیۡ شَکٍّ ؕ وَ رَبُّکَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ حَفِیۡظٌ ﴿۲۱﴾
কানযুল ঈমান
২১. এবং তাদের উপর শয়তানের কোন আধিপত্য ছিলো না; কিন্তু এ জন্য যে, আমি দেখাবো কে আখিরাতের উপর ঈমান আনে এবং কে তাতে সন্দিহান রয়েছে, আর আপনার রব প্রত্যেক কিছুর তত্বাবধায়ক।
ইরফানুল কুরআন
২১. আর তাদের উপর শয়তানের কোনো ক্ষমতা ছিল না, কারণ যারা পরকালে বিশ্বাস রাখে আমি তাদেরকে বৈশিষ্ট্যমন্ডিত করি সেসব লোকের চেয়ে যারা এ ব্যাপারে সন্দেহে নিমজ্জিত রয়েছে। আর আপনার প্রতিপালক সকল কিছুর তত্ত্বাবধায়ক।
قُلِ ادۡعُوا الَّذِیۡنَ زَعَمۡتُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ ۚ لَا یَمۡلِکُوۡنَ مِثۡقَالَ ذَرَّۃٍ فِی السَّمٰوٰتِ وَ لَا فِی الۡاَرۡضِ وَ مَا لَہُمۡ فِیۡہِمَا مِنۡ شِرۡکٍ وَّ مَا لَہٗ مِنۡہُمۡ مِّنۡ ظَہِیۡرٍ ﴿۲۲﴾
কানযুল ঈমান
২২. আপনি বলুন, ‘আহ্বান করো তাদেরকে, যাদেরকে আল্লাহ্ ব্যতীত মনে করে বসেছো। তারা অণু পরিমাণেরও মালিক নয় আসমানসমূহে এবং না যমীনে; আর না তাদের ওই দু’টির মধ্যে কোন অংশ আছে এবং না তাদের মধ্যে কেউ আল্লাহ্র সাহায্যকারী’।
ইরফানুল কুরআন
২২. বলে দিন, ‘আহ্বান করো তাদেরকে যাদেরকে তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত (উপাস্য) গণ্য করতে। তারা আকাশমন্ডলীতে অণু পরিমাণেরও অধিকারী নয়, পৃথিবীতেও নয়; আর এ দু’য়ে (আকাশমন্ডলীতে ও পৃথিবীতে) তাদের কোনো অংশগ্রহণও নেই এবং এদের মধ্যে আল্লাহ্র কোনো সাহায্যকারীও নেই।
وَ لَا تَنۡفَعُ الشَّفَاعَۃُ عِنۡدَہٗۤ اِلَّا لِمَنۡ اَذِنَ لَہٗ ؕ حَتّٰۤی اِذَا فُزِّعَ عَنۡ قُلُوۡبِہِمۡ قَالُوۡا مَاذَا ۙ قَالَ رَبُّکُمۡ ؕ قَالُوا الۡحَقَّ ۚ وَ ہُوَ الۡعَلِیُّ الۡکَبِیۡرُ ﴿۲۳﴾
কানযুল ঈমান
২৩. এবং তার নিকট সুপারিশ কাজে আসে না, কিন্তু যাকে তিনি অনুমতি দেন। শেষ পর্যন্ত যখন অনুমতি দিয়ে তাদের অন্তরসমূহের ভীতি দূরীভূত করে দেয়া হয়, তখন একে অপরকে বলে, ‘তোমাদের রব কী বললেন?’ তারা বলে, ‘যা বলেছেন সত্য বলেছেন’। এবং তিনিই সমুচ্চ, মহান।
ইরফানুল কুরআন
২৩. আর তাঁর সমীপে কোনো সুপারিশ কাজে আসবে না, তবে তারা ব্যতীত যাদেরকে তিনি অনুমতি দিয়েছেন; ততক্ষণ পর্যন্ত যখন তাদের মন থেকে ভীতি দূর করা হবে, তখন তারা (প্রশ্নাকারে) বলবে, ‘তোমাদের প্রতিপালক কী বললেন?’ তারা (উত্তরে) বলবে, ‘তিনি সত্য বলেছেন (অর্থাৎ অনুমতি দিয়েছেন)’। তিনিই সমুচ্চ, খুবই মহান।
قُلۡ مَنۡ یَّرۡزُقُکُمۡ مِّنَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ قُلِ اللّٰہُ ۙ وَ اِنَّاۤ اَوۡ اِیَّاکُمۡ لَعَلٰی ہُدًی اَوۡ فِیۡ ضَلٰلٍ مُّبِیۡنٍ ﴿۲۴﴾
কানযুল ঈমান
২৪. আপনি বলুন, ‘কে তিনি, যিনি তোমাদেরকে রিয্ক্ব প্রদান করেন আসমানসমূহ ও যমীন থেকে?’ আপনি নিজেই বলুন, ‘আল্লাহ্। আর নিশ্চয় আমরা অথবা তোমরা হয় তো হিদায়তের উপর স্থিত অথবা প্রকাশ্য ভ্রান্তিতে পতিত’।
ইরফানুল কুরআন
২৪. আপনি বলুন, ‘তোমাদেরকে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী থেকে কে রিযিক প্রদান করেন?’ আপনি (নিজেই) বলে দিন, ‘আল্লাহ্ (প্রদান করেন)। আর নিশ্চিত, হয় আমরা নতুবা তোমরা হেদায়াতের উপর স্থিত অথবা সুস্পষ্ট গোমরাহীতে নিমজ্জিত’।
قُلۡ لَّا تُسۡـَٔلُوۡنَ عَمَّاۤ اَجۡرَمۡنَا وَ لَا نُسۡـَٔلُ عَمَّا تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۲۵﴾
কানযুল ঈমান
২৫. আপনি বলুন, ‘আমরা তোমাদের ধারণায় যদি কোন অপরাধ করি তবে সেটার জন্য তোমাদেরকে জবাবদিহি করতে হবে না, না তোমাদের কৃতকর্মের জন্য আমাদেরকে প্রশ্ন করা হবে’।
ইরফানুল কুরআন
২৫. বলে দিন, ‘তোমাদেরকে (তোমাদের ধারণা অনুযায়ী) আমাদের থেকে সংঘটিত অপরাধের বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হবে না এবং আমাদেরকেও তোমরা যা করছো সেসব বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হবে না।’
قُلۡ یَجۡمَعُ بَیۡنَنَا رَبُّنَا ثُمَّ یَفۡتَحُ بَیۡنَنَا بِالۡحَقِّ ؕ وَ ہُوَ الۡفَتَّاحُ الۡعَلِیۡمُ ﴿۲۶﴾
কানযুল ঈমান
২৬. আপনি বলুন, ‘আমাদের রব আমাদের সবাইকে একত্রিত করবেন, অতঃপর আমাদের মধ্যে সঠিক ফয়সালা করে দেবেন এবং তিনিই শ্রেষ্ঠ ফয়সালাকারী, সর্বজ্ঞ’।
ইরফানুল কুরআন
২৬. বলে দিন, ‘আমাদের প্রতিপালক আমাদের সবাইকে (কিয়ামতের দিন) সমবেত করবেন, অতঃপর আমাদের মাঝে সঠিকভাবে ফায়সালা করবেন। আর তিনি উত্তম ফায়সালাকারী, সর্বজ্ঞাত।’
قُلۡ اَرُوۡنِیَ الَّذِیۡنَ اَلۡحَقۡتُمۡ بِہٖ شُرَکَآءَ کَلَّا ؕ بَلۡ ہُوَ اللّٰہُ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ ﴿۲۷﴾
কানযুল ঈমান
২৭. আপনি বলুন, ‘আমাকে দেখাও তো ওই শরীককে, যাকে তোমরা তার সাথে জুড়িয়ে নিয়েছো; না, কখনো না; বরং তিনিই হন আল্লাহ্, সম্মানের মালিক, প্রজ্ঞাময়’।
ইরফানুল কুরআন
২৭. বলে দিন, ‘আমাকে সেসব অংশীদারদের দেখাও যাদেরকে তোমরা আল্লাহ্র সাথে যুক্ত করেছো। কখনো (কোনো শরীক) নেই! বরং তিনিই আল্লাহ্, পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাবান।’
وَ مَاۤ اَرۡسَلۡنٰکَ اِلَّا کَآفَّۃً لِّلنَّاسِ بَشِیۡرًا وَّ نَذِیۡرًا وَّ لٰکِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۲۸﴾
কানযুল ঈমান
২৮. এবং হে মাহবূব! আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি, এমন রিসালাত সহকারেই, যা সমগ্র মানব জাতিকে পরিব্যপ্ত করে নেয়, সুসংবাদদাতা এবং সতর্ককারীরূপে; কিন্তু অনেক লোক জানে না।
ইরফানুল কুরআন
২৮. আর (হে সম্মানিত হাবীব!) আমি আপনাকে সমগ্র মানবজাতির জন্যে সুসংবাদদাতা এবং সতর্ককারী রূপেই প্রেরণ করেছি। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না।
وَ یَقُوۡلُوۡنَ مَتٰی ہٰذَا الۡوَعۡدُ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ ﴿۲۹﴾
কানযুল ঈমান
২৯. এবং বলে, ‘এ প্রতিশ্রতি কবে আসবে? যদি তোমরা সত্যবাদী হও?’
ইরফানুল কুরআন
২৯. আর তারা বলে, ‘(পরকালের) এ অঙ্গীকার কখন পূর্ণ হবে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও?’
قُلۡ لَّکُمۡ مِّیۡعَادُ یَوۡمٍ لَّا تَسۡتَاۡخِرُوۡنَ عَنۡہُ سَاعَۃً وَّ لَا تَسۡتَقۡدِمُوۡنَ ﴿۳۰﴾
কানযুল ঈমান
৩০. আপনি বলুন, ‘তোমাদের জন্য এমন এক দিনের প্রতিশ্রুতি রয়েছে, যেদিন থেকে তোমরা না এক মুহূর্তকাল পেছনে হটতে পারো, না আগে বাড়তে পারো।
ইরফানুল কুরআন
৩০. বলে দিন, ‘তোমাদের জন্যে অঙ্গীকার দিবস নির্ধারিত। তোমরা তা এক মুহূর্ত বিলম্বও করতে পারবে না এবং ত্বরান্বিতও করতে পারবে না।’
وَ قَالَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا لَنۡ نُّؤۡمِنَ بِہٰذَا الۡقُرۡاٰنِ وَ لَا بِالَّذِیۡ بَیۡنَ یَدَیۡہِ ؕ وَ لَوۡ تَرٰۤی اِذِ الظّٰلِمُوۡنَ مَوۡقُوۡفُوۡنَ عِنۡدَ رَبِّہِمۡ ۚۖ یَرۡجِعُ بَعۡضُہُمۡ اِلٰی بَعۡضِۣ الۡقَوۡلَ ۚ یَقُوۡلُ الَّذِیۡنَ اسۡتُضۡعِفُوۡا لِلَّذِیۡنَ اسۡتَکۡبَرُوۡا لَوۡ لَاۤ اَنۡتُمۡ لَکُنَّا مُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۳۱﴾
কানযুল ঈমান
৩১. এবং কাফিরগণ বললো, ‘আমরা কখনো ঈমান আনবো না এ ক্বোরআনের উপর এবং না ওইসব কিতাবের উপর যেগুলো এর পূর্বে ছিলো’। এবং কোন রকমে তুমি দেখতে! যখন যালিমদেরকে আপন রবের নিকট দণ্ডায়মান করা হবে, তখন তাদের মধ্যে একে অপরের সাথে বাদ প্রতিবাদ করতে থাকবে; ওই সব লোক, যারা চাপের শিকার হয়েছিলো তারা ওই সব লোকদেরকে বলবে, যারা ক্ষমতাদর্পী ছিলো, ‘যদি তোমরা না হতে তবে আমরা অবশ্যই ঈমান নিয়ে আসতাম।
ইরফানুল কুরআন
৩১. আর কাফেরেরা বলে, ‘আমরা এ কুরআনের প্রতি কখনোই বিশ্বাস স্থাপন করবো না এবং এর পূর্বে যা (ওহী) অবতীর্ণ হয়েছে তার প্রতিও নয়’। আর যদি আপনি দেখতেন, যখন জালিমদেরকে তাদের প্রতিপালকের সম্মুখে দন্ডায়মান করা হবে (তখন কেমন দৃশ্য হবে)! তাদের প্রত্যেকেই (নিজের অপরাধের জন্যে) একে অপরকে দোষারোপ করতে থাকবে; দুর্বলরা অহঙ্কারীদের বলবে, ‘তোমরা না থাকলে আমরা অবশ্যই ঈমান আনতাম’।
قَالَ الَّذِیۡنَ اسۡتَکۡبَرُوۡا لِلَّذِیۡنَ اسۡتُضۡعِفُوۡۤا اَنَحۡنُ صَدَدۡنٰکُمۡ عَنِ الۡہُدٰی بَعۡدَ اِذۡ جَآءَکُمۡ بَلۡ کُنۡتُمۡ مُّجۡرِمِیۡنَ ﴿۳۲﴾
কানযুল ঈমান
৩২. ওই সমস্ত লোক, যারা ক্ষমাদর্পী ছিলো তারা ওই সব লোককে বলবে, যারা চাপের শিকার হয়েছিলো, ‘আমরা কি তোমাদেরকে বাধা দিয়েছি সৎপথ থেকে এর পরও যে, তোমাদের (তা) এসেছে? বরং তোমরা নিজেরাই অপরাধী ছিলে!’
ইরফানুল কুরআন
৩২. অহঙ্কারীরা দুর্বলদেরকে বলবে, ‘আমরা কি তোমাদেরকে সৎপথ থেকে বিরত রেখেছি, তোমাদের কাছে তা আসার পর? বরং তোমরা নিজেরাই অপরাধী ছিলে।’
وَ قَالَ الَّذِیۡنَ اسۡتُضۡعِفُوۡا لِلَّذِیۡنَ اسۡتَکۡبَرُوۡا بَلۡ مَکۡرُ الَّیۡلِ وَ النَّہَارِ اِذۡ تَاۡمُرُوۡنَنَاۤ اَنۡ نَّکۡفُرَ بِاللّٰہِ وَ نَجۡعَلَ لَہٗۤ اَنۡدَادًا ؕ وَ اَسَرُّوا النَّدَامَۃَ لَمَّا رَاَوُا الۡعَذَابَ ؕ وَ جَعَلۡنَا الۡاَغۡلٰلَ فِیۡۤ اَعۡنَاقِ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا ؕ ہَلۡ یُجۡزَوۡنَ اِلَّا مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۳۳﴾
কানযুল ঈমান
৩৩. এবং ওই সব লোক, যারা চাপের মুখে ছিল, তারা ওই সব লোকদের বলবে যারা ক্ষমতাদর্পী ছিলো, ‘বরং রাত দিনের চক্রান্ত ছিলো, যখন তোমরা আমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছিলে যেন আল্লাহ্কে অস্বীকার করি এবং তার সমকক্ষ স্থির করি’। আর মনে মনে অনুশোচনা করতে লাগলো যখন শাস্তি দেখতে পেলো। এবং আমি শৃঙ্খল পরিয়েছি তাদের ঘাড়সমূহে, যারা অস্বীকারকারী ছিলো। তারা কী প্রতিফল পাবে। কিন্তু তাই পাবে, যা কিছু তারা করতো।
ইরফানুল কুরআন
৩৩. অতঃপর দুর্বলেরা অহঙ্কারীদেরকে বলবে, ‘বরং (তোমাদের) রাত-দিনের চক্রান্তই (আমাদেরকে বিরত রেখেছে), যখন তোমরা আমাদেরকে নির্দেশ দিতে যেন আমরা আল্লাহ্কে অস্বীকার করি এবং আমরা তাঁর সাথে অংশীদার সাব্যস্ত করি।’ আর তারা (একে অপরের) লজ্জা লুকিয়ে রাখবে, যখন তারা শাস্তি দেখবে। বস্তুতঃ আমি কাফেরদের গলায় বেড়ী পরাবো এবং তাদেরকে কেবল স্বীয় কর্মেরই প্রতিদান দেয়া হবে।
وَ مَاۤ اَرۡسَلۡنَا فِیۡ قَرۡیَۃٍ مِّنۡ نَّذِیۡرٍ اِلَّا قَالَ مُتۡرَفُوۡہَاۤ ۙ اِنَّا بِمَاۤ اُرۡسِلۡتُمۡ بِہٖ کٰفِرُوۡنَ ﴿۳۴﴾
কানযুল ঈমান
৩৪. এবং আমি যখনই কোন শহরে কোন সতর্ককারী প্রেরণ করেছি তখন সেখানকার স্বচ্ছল লোকেরা একথাই বলেছে, ‘তোমরা যা কিছু সহকারে প্রেরিত হয়েছো আমরা তা অস্বীকার করি’।
ইরফানুল কুরআন
৩৪. আর আমরা কোনো জনপদে কোনো সতর্ককারী প্রেরণ করলেই সেখানকার বিত্তশালী লোকেরা (সর্বদা) বলতো, ‘তোমাদেরকে যা (হেদায়াতরূপে) দিয়ে প্রেরণ করা হয়েছে আমরা তা অস্বীকার করি’।
وَ قَالُوۡا نَحۡنُ اَکۡثَرُ اَمۡوَالًا وَّ اَوۡلَادًا ۙ وَّ مَا نَحۡنُ بِمُعَذَّبِیۡنَ ﴿۳۵﴾
কানযুল ঈমান
৩৫. আর তারা বললো, ‘আমরা সম্পদ-সন্ততির মধ্যে অধিক সমৃদ্ধশালী এবং আমাদের উপর শাস্তি হবার নয়’।
ইরফানুল কুরআন
৩৫. আর তারা বললো, ‘আমরা অধিক সম্পদ ও সন্তানের অধিকারী, সুতরাং আমরা শাস্তিপ্রাপ্ত হবো না’।
قُلۡ اِنَّ رَبِّیۡ یَبۡسُطُ الرِّزۡقَ لِمَنۡ یَّشَآءُ وَ یَقۡدِرُ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۳۶﴾
কানযুল ঈমান
৩৬. আপনি বলুন, ‘নিশ্চয় আমার রব রিয্ক্বকে প্রশস্ত করেন যার জন ইচ্ছা করেন এবং সংকীর্ণ করেন; কিন্তু বহু লোক জানেন না।
ইরফানুল কুরআন
৩৬. বলে দিন, ‘আমার প্রতিপালক যাকে ইচ্ছা রিযিক বাড়িয়ে দেন এবং (যার জন্যে ইচ্ছা) সংকুচিত করে দেন। কিন্তু অধিকাংশ লোক জানে না।’
وَ مَاۤ اَمۡوَالُکُمۡ وَ لَاۤ اَوۡلَادُکُمۡ بِالَّتِیۡ تُقَرِّبُکُمۡ عِنۡدَنَا زُلۡفٰۤی اِلَّا مَنۡ اٰمَنَ وَ عَمِلَ صَالِحًا ۫ فَاُولٰٓئِکَ لَہُمۡ جَزَآءُ الضِّعۡفِ بِمَا عَمِلُوۡا وَ ہُمۡ فِی الۡغُرُفٰتِ اٰمِنُوۡنَ ﴿۳۷﴾
কানযুল ঈমান
৩৭. এবং তোমাদের সম্পদ ও তোমাদের সন্তান-সন্ততি এরই উপযোগী নয় যে, তোমাদেরকে আমার নিকট পৌঁছাবে, কিন্তু তারাই যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্য রয়েছে বহুগুণ পুরস্কার তাদের কর্মের প্রতিদান; এবং তারা প্রাসাদসমূহে নিরাপদে রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৩৭. আর তোমাদের ধন-সম্পদ কিংবা তোমাদের সন্তান-সন্ততি তোমাদেরকে আমাদের নৈকট্যে আনয়ন ও ঘনিষ্ট করবে না; তবে যারা ঈমান আনয়ন করেছে এবং সৎকর্ম করেছে তারাই তাদের কর্মের দ্বিগুণ প্রতিদান পাবে এবং তারা (জান্নাতের) সুউচ্চ প্রাসাদে নিরাপদে থাকবে।
وَ الَّذِیۡنَ یَسۡعَوۡنَ فِیۡۤ اٰیٰتِنَا مُعٰجِزِیۡنَ اُولٰٓئِکَ فِی الۡعَذَابِ مُحۡضَرُوۡنَ ﴿۳۸﴾
কানযুল ঈমান
৩৮. এবং ওই সব লোক, যারা আমার নিদর্শনসমূহে পরাজিত করার চেষ্টা করে তাদেরকে ধরে এনে শাস্তির মধ্যে হাযির করা হবে।
ইরফানুল কুরআন
৩৮.আর যারা আমাদের আয়াতসমূহে (বিরোধিতার) চেষ্টা করে (আমাদেরকে) ব্যর্থ করে দেয়ার ধারণায়, তাদেরকেই শাস্তিতে উপস্থিত করা হবে।
قُلۡ اِنَّ رَبِّیۡ یَبۡسُطُ الرِّزۡقَ لِمَنۡ یَّشَآءُ مِنۡ عِبَادِہٖ وَ یَقۡدِرُ لَہٗ ؕ وَ مَاۤ اَنۡفَقۡتُمۡ مِّنۡ شَیۡءٍ فَہُوَ یُخۡلِفُہٗ ۚ وَ ہُوَ خَیۡرُ الرّٰزِقِیۡنَ ﴿۳۹﴾
কানযুল ঈমান
৩৯. আপনি বলুন, ‘নিশ্চয় আমার রব জীবিকা প্রসস্থ করেন আপন বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা করেন এবং সংকুচিত করেন যার জন্য ইচ্ছা করেন। আর যেই বস্তু তোমরা আল্লাহ্র পথে ব্যয় করো, তিনি তার পরিবর্তে আরো অধিক দেবেন। এবং তিনি সর্বাপেক্ষা অধিক রিয্ক্বদাতা।
ইরফানুল কুরআন
৩৯. বলুন, ‘নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্যে ইচ্ছা রিযিক বাড়িয়ে দেন এবং যার জন্যে (ইচ্ছা) সংকুচিত করেন। আর তোমরা (আল্লাহ্র রাস্তায়) যা কিছুই ব্যয় করো তিনি এর বিনিময়ে আরো দেবেন। আর তিনি সবচেয়ে উত্তম রিযিকদাতা।’
وَ یَوۡمَ یَحۡشُرُہُمۡ جَمِیۡعًا ثُمَّ یَقُوۡلُ لِلۡمَلٰٓئِکَۃِ اَہٰۤؤُلَآءِ اِیَّاکُمۡ کَانُوۡا یَعۡبُدُوۡنَ ﴿۴۰﴾
কানযুল ঈমান
৪০. এবং যেদিন ওই সব লোককে উঠাবেন; অতঃপর ফিরিশ্তাদেরকে বলবেন, ‘এরা কি তোমাদের উপাসনা করতো?’
ইরফানুল কুরআন
৪০. আর যে দিন তিনি তাদের সবাইকে একত্রিত করবেন, তখন ফেরেশতাদেরকে বলবেন, ‘এরাই কি তারা যারা তোমাদের ইবাদত করতো?’
قَالُوۡا سُبۡحٰنَکَ اَنۡتَ وَلِیُّنَا مِنۡ دُوۡنِہِمۡ ۚ بَلۡ کَانُوۡا یَعۡبُدُوۡنَ الۡجِنَّ ۚ اَکۡثَرُہُمۡ بِہِمۡ مُّؤۡمِنُوۡنَ ﴿۴۱﴾
কানযুল ঈমান
৪১. তারা আরয করবে, ‘পবিত্রতা তোমারই, তুমি আমাদের বন্ধু তার নয়; বরং তারা জিনদের উপাসনা করতো তাদের মধ্যে অধিকাংশ তাদেরই প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করেছিলো’।
ইরফানুল কুরআন
৪১. তারা নিবেদন করবে, ‘আপনার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছি, আপনিই আমাদের বন্ধু, এরা নয়। বরং এরা জ্বিনের পূজা করতো। এদের অধিকাংশই তাদের প্রতি বিশ্বাস রাখতো।’
فَالۡیَوۡمَ لَا یَمۡلِکُ بَعۡضُکُمۡ لِبَعۡضٍ نَّفۡعًا وَّ لَا ضَرًّا ؕ وَ نَقُوۡلُ لِلَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡا ذُوۡقُوۡا عَذَابَ النَّارِ الَّتِیۡ کُنۡتُمۡ بِہَا تُکَذِّبُوۡنَ ﴿۴۲﴾
কানযুল ঈমান
৪২. সুতরাং আজ তোমাদের মধ্যে একে অপরের উপকার অপকারের কোন ক্ষমতা রাখবে না। এবং আমি যালিমদেরকে বলবো, ‘এ আগুনের শাস্তি আস্বাদন করো, যাকে তোমরা মিথ্যা প্রতিপন্ন করতে’।
ইরফানুল কুরআন
৪২. অতএব আজকের দিনে তোমরা একে অপরের উপকার কিংবা ক্ষতির অধিকারী হবে না। আর আমরা যালিমদেরকে বলবো, ‘দোযখের শাস্তি আস্বাদন করো যা তোমরা মিথ্যাপ্রতিপন্ন করতে’।
وَ اِذَا تُتۡلٰی عَلَیۡہِمۡ اٰیٰتُنَا بَیِّنٰتٍ قَالُوۡا مَا ہٰذَاۤ اِلَّا رَجُلٌ یُّرِیۡدُ اَنۡ یَّصُدَّکُمۡ عَمَّا کَانَ یَعۡبُدُ اٰبَآؤُکُمۡ ۚ وَ قَالُوۡا مَا ہٰذَاۤ اِلَّاۤ اِفۡکٌ مُّفۡتَرًی ؕ وَ قَالَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا لِلۡحَقِّ لَمَّا جَآءَہُمۡ ۙ اِنۡ ہٰذَاۤ اِلَّا سِحۡرٌ مُّبِیۡنٌ ﴿۴۳﴾
কানযুল ঈমান
৪৩. এবং যখন তাদের নিকট আমার সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ পাঠ করা হয়, তখন বলে, ‘এ তো নয়, কিন্তু একজন পুরুষ, যে তোমাদেরকে বাধা দিতে চায় তোমাদের পিতৃপুরুষের উপাস্যগুলো থেকে’। আর বলে, ‘এতো নয়, কিন্তু মনগড়া অপবাদ মাত্র’। এবং কাফিরগণ সত্যকে বললো যখন তাদের নিকট এলো, ‘এতো নয় কিন্তু এক সুস্পষ্ট যাদু’।
ইরফানুল কুরআন
৪৩. আর যখন তাদের কাছে আমাদের সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় তখন তারা বলে, ‘এ (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম) তো এমন এক ব্যক্তি যিনি তোমাদেরকে কেবল এ (মূর্তিগুলো) থেকে প্রতিহত করতে চান, তোমাদের পূর্বপুরুষেরা যাদের উপাসনা করতো।’ আর তারা এ(ও) বলে, ‘এ (কুরআন) নিছক মনগড়া কাহিনী’। আর যখন তা (এ কুরআন) তাদের কাছে এসেছে, তখন কাফেরেরা এ সত্য সম্পর্কে এও বলে, ‘এ তো কেবল সুস্পষ্ট যাদু’।
وَ مَاۤ اٰتَیۡنٰہُمۡ مِّنۡ کُتُبٍ یَّدۡرُسُوۡنَہَا وَ مَاۤ اَرۡسَلۡنَاۤ اِلَیۡہِمۡ قَبۡلَکَ مِنۡ نَّذِیۡرٍ ﴿ؕ۴۴﴾
কানযুল ঈমান
৪৪. এবং আমি তাদেরকে কোন কিতাব দিই নি, যেগুলো তারা পাঠ করে, আর না আপনার পুর্বে তাদের নিকট কোন সতর্ককারী এসেছে।
ইরফানুল কুরআন
৪৪. আর আমরা এদেরকে (এ মক্কাবাসীকে) কোনো আসমানী কিতাব দেইনি যা তারা পাঠ করতো; আর আপনার পূর্বে তাদের নিকট কোনো সতর্ককারীও প্রেরণ করিনি।
وَ کَذَّبَ الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِہِمۡ ۙ وَ مَا بَلَغُوۡا مِعۡشَارَ مَاۤ اٰتَیۡنٰہُمۡ فَکَذَّبُوۡا رُسُلِیۡ ۟ فَکَیۡفَ کَانَ نَکِیۡرِ ﴿۴۵﴾
কানযুল ঈমান
৪৫. এবং তাদের পূর্ববর্তী লোকেরা অস্বীকার করেছে এবং এটা সেটার এক দশমাংশ পর্যন্তও পৌঁছে নি, যা আমি তাদেরকে প্রদান করেছিলাম। অতঃপর তারা আমার রসূলগণকে অস্বীকার করেছে। সুতরাং কেমন হল আমাকে অস্বীকার করা!
ইরফানুল কুরআন
৪৫. আর তাদের পূর্ববর্তীরাও (সত্যকে) মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছিল। তাদেরকে আমরা যা কিছু দিয়েছিলাম তারা এর এক দশমাংশেও উপনীত হতে পারেনি, এরপরেও তারা আমার রাসূলগণকে মিথ্যাপ্রতিপ্রতিপন্ন করেছিল। সুতরাং কেমন (ভয়াবহ প্রমাণিত) হলো আমাকে অস্বীকার করা!
قُلۡ اِنَّمَاۤ اَعِظُکُمۡ بِوَاحِدَۃٍ ۚ اَنۡ تَقُوۡمُوۡا لِلّٰہِ مَثۡنٰی وَ فُرَادٰی ثُمَّ تَتَفَکَّرُوۡا ۟ مَا بِصَاحِبِکُمۡ مِّنۡ جِنَّۃٍ ؕ اِنۡ ہُوَ اِلَّا نَذِیۡرٌ لَّکُمۡ بَیۡنَ یَدَیۡ عَذَابٍ شَدِیۡدٍ ﴿۴۶﴾
কানযুল ঈমান
৪৬. আপনি বলুন, ‘আমি তোমাদেরকে একটা উপদেশ দিচ্ছি যে, আল্লাহ্র জন্য দণ্ডায়মান থাকো দু’দু’জন এবং একা একা। অতঃপর চিন্তা করো যে, তোমাদের এ ‘সাহিব’ এর মধ্যে উন্মাদনার বিষয় নেই। তিনি তো নন, কিন্তু তোমাদেরকে এক কঠিন শাস্তির পূর্বে সতর্ককারী’।
ইরফানুল কুরআন
৪৬. বলুন, ‘আমি তোমাদেরকে কেবল একটি (বিষয়ের) উপদেশ দিচ্ছি, তোমরা আল্লাহ্র উদ্দেশ্যে (রূহানী জাগরণ ও সতর্কাবস্থায়) দন্ডায়মান হও, দু’জন দু’জন করে অথবা একজন একজন করে। অতঃপর চিন্তা করো (অর্থাৎ বাস্তবতাকে অনুধাবন করো, তবেই তোমরা প্রত্যক্ষ করবে) যে, তোমাদেরকে সাহচর্যের মাধ্যমে মর্যাদাদানকারী (সম্মানিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লাম) উন্মাদ নন। তিনি তো তোমাদেরকে কঠোর শাস্তির (আগমনের) পূর্বে (সময়মত) সতর্ক করেন মাত্র (যাতে তোমরা আলস্য থেকে জেগে ওঠো)।’
قُلۡ مَا سَاَلۡتُکُمۡ مِّنۡ اَجۡرٍ فَہُوَ لَکُمۡ ؕ اِنۡ اَجۡرِیَ اِلَّا عَلَی اللّٰہِ ۚ وَ ہُوَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ شَہِیۡدٌ ﴿۴۷﴾
কানযুল ঈমান
৪৭. আপনি বলুন, ‘আমি তোমাদের নিকট এ জন্য পারিশ্রমিক চেয়ে থাকলে তা তোমাদেরই; আমার পারিশ্রমিক তো আল্লাহ্রই নিকট। এবং তিনি সবকিছুর উপর সাক্ষী’।
ইরফানুল কুরআন
৪৭. বলুন, ‘আমি (এ অনুগ্রহের) যে প্রতিদান তোমাদের কাছে চেয়েছি তাও তোমাদেরকেই ফিরিয়ে দিয়েছি। আমার প্রতিদান তো কেবল আল্লাহ্রই নিকট। আর তিনি সকল কিছুর প্রত্যক্ষকারী।’
قُلۡ اِنَّ رَبِّیۡ یَقۡذِفُ بِالۡحَقِّ ۚ عَلَّامُ الۡغُیُوۡبِ ﴿۴۸﴾
কানযুল ঈমান
৪৮. আপনি বলুন, ‘নিশ্চয় আমার রব সত্য নিক্ষেপ করেন, খুব পরিজ্ঞাতা সমস্ত অদৃশ্যের’।
ইরফানুল কুরআন
৪৮. বলুন, ‘আমার প্রতিপালক (নবীগণের নিকট) সত্য প্রকাশ করেন, (তিনি) সকল অদৃশ্য সম্পর্কে সম্যক অবগত’।
قُلۡ جَآءَ الۡحَقُّ وَ مَا یُبۡدِئُ الۡبَاطِلُ وَ مَا یُعِیۡدُ ﴿۴۹﴾
কানযুল ঈমান
৪৯. আপনি বলুন, ‘সত্য এসেছে এবং মিথ্যা না সূচনা করবে এবং না ফিরে আসবে’।
ইরফানুল কুরআন
৪৯. বলুন, ‘সত্য সমাগত এবং অসত্য না পারে প্রথমবার (কিছু) সৃষ্টি করতে, আর না পারে তা পুনরাবৃত্তি করতে’।
قُلۡ اِنۡ ضَلَلۡتُ فَاِنَّمَاۤ اَضِلُّ عَلٰی نَفۡسِیۡ ۚ وَ اِنِ اہۡتَدَیۡتُ فَبِمَا یُوۡحِیۡۤ اِلَیَّ رَبِّیۡ ؕ اِنَّہٗ سَمِیۡعٌ قَرِیۡبٌ ﴿۵۰﴾
কানযুল ঈমান
৫০. আপনি বলুন, ‘যদি আমি বিপথগামী হই, তবে আমি নিজেরই মন্দের জন্য বিপথগামী হয়েছি। আর যদি আমি সৎপথ পেয়ে থাকি তবে তা এ কারণে যে, আমার রব আমার প্রতি ওহী করেন। নিশ্চয় তিনি শ্রোতা, সন্নিকটে।
ইরফানুল কুরআন
৫০. বলে দিন, ‘যদি আমি পথভ্রষ্ট হতাম তবে আমার পথভ্রষ্টতার পাপ (অথবা ক্ষতি) আমার নিজের সত্তারই। আর যদি আমি হেদায়েতপ্রাপ্ত হই তবে এর কারণ আমার প্রতিপালক আমার প্রতি ওহী প্রত্যাদেশ করেন। অবশ্যই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বত নিকটবর্তী।’
وَ لَوۡ تَرٰۤی اِذۡ فَزِعُوۡا فَلَا فَوۡتَ وَ اُخِذُوۡا مِنۡ مَّکَانٍ قَرِیۡبٍ ﴿ۙ۵۱﴾
কানযুল ঈমান
৫১. এবং কোন রকমে তুমি দেখবে যখন তারা ভয়-ভীতির মধ্যে নিক্ষিপ্ত হবে। অতঃপর রক্ষা পেয়ে বের হতে পারবে না এবং এক নিকটবর্তী স্থান থেকে ধৃত হবে।
ইরফানুল কুরআন
৫১. আর যদি আপনি (তাদের অবস্থা) দেখেন যখন এরা খুবই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়বে, তখন তারা আর পালিয়েও বাঁচতে পারবে না এবং নিকটবর্তী স্থান থেকেই ধরা পড়বে।
وَّ قَالُوۡۤا اٰمَنَّا بِہٖ ۚ وَ اَنّٰی لَہُمُ التَّنَاوُشُ مِنۡ مَّکَانٍۭ بَعِیۡدٍ ﴿ۚۖ۵۲﴾
কানযুল ঈমান
৫২. এবং বলবে, ‘আমরা তার উপর ঈমান এনেছি; এবং এখন তারা তাকে কীভাবে পাবে এতো দূরবর্তী স্থান থেকে?
ইরফানুল কুরআন
৫২. আর বলবে, ‘আমরা এতে ঈমান আনয়ন করেছি’, কিন্তু এখন তারা (এতো) দূরবর্তী স্থান থেকে কিভাবে (ঈমানের) নাগাল পাবে?
وَّ قَدۡ کَفَرُوۡا بِہٖ مِنۡ قَبۡلُ ۚ وَ یَقۡذِفُوۡنَ بِالۡغَیۡبِ مِنۡ مَّکَانٍۭ بَعِیۡدٍ ﴿۵۳﴾
কানযুল ঈমান
৫৩. অথচ পূর্বে তার সাথে কুফর করেছিলো এবং না দেখে ছুড়ে মারে দূরবর্তী স্থান থেকে।
ইরফানুল কুরআন
৫৩. প্রকৃতপক্ষে তারা এর পূর্বে এটি অস্বীকার করেছিল এবং না দেখেই দূরবর্তী স্থান থেকে ভ্রান্ত ধারণার তীর নিক্ষেপ করছিল।
وَ حِیۡلَ بَیۡنَہُمۡ وَ بَیۡنَ مَا یَشۡتَہُوۡنَ کَمَا فُعِلَ بِاَشۡیَاعِہِمۡ مِّنۡ قَبۡلُ ؕ اِنَّہُمۡ کَانُوۡا فِیۡ شَکٍّ مُّرِیۡبٍ ﴿۵۴﴾
কানযুল ঈমান
৫৪. এবং রুখে দেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে ও সেটার মধ্যে যা তারা কামনা করে, যেমনিভাবে তাদের পূর্ববর্তী সম্প্রদায়গুলোর সাথে করা হয়েছিলো। নিশ্চয় তারা প্রতারণাকারী সন্দেহের মধ্যে ছিলো।
ইরফানুল কুরআন
৫৪. আর তাদের এবং তাদের কুপ্রবৃত্তির মাঝে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে, যেমন পূর্বে করা হয়েছিল তাদের সমগোত্রীয়দের সাথেও। নিশ্চয়ই তারা বিভ্রান্তিকর সন্দেহে নিমজ্জিত।