بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
কানযুল ঈমান
০. আল্লাহ্র নামে আরম্ভ, যিনি পরম দয়ালু, করুণাময় (১)
ইরফানুল কুরআন
০. আল্লাহর নামে শুরু, যিনি পরম করুণাময়, সতত অসীম দয়ালু।
صٓ وَ الۡقُرۡاٰنِ ذِی الذِّکۡرِ ؕ﴿۱﴾
কানযুল ঈমান
১. সোয়া----দ। এ নামকরা ক্বোরআনের শপথ!
ইরফানুল কুরআন
১. ছোয়াদ (প্রকৃত অর্থ আল্লাহ্ এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামই অধিক অবগত)। শপথ উপদেশপূর্ণ কুরআনের!
بَلِ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا فِیۡ عِزَّۃٍ وَّ شِقَاقٍ ﴿۲﴾
কানযুল ঈমান
২. বরং কাফির অহঙ্কার ও বিরোধিতার মধ্যে রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
২. বরং কাফেরগণ (অসত্য) আত্মম্ভরিতা ও অহঙ্কারে এবং (আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের) বিরোধীতা ও শত্রুতায় (নিমজ্জিত) রয়েছে।
کَمۡ اَہۡلَکۡنَا مِنۡ قَبۡلِہِمۡ مِّنۡ قَرۡنٍ فَنَادَوۡا وَّ لَاتَ حِیۡنَ مَنَاصٍ ﴿۳﴾
কানযুল ঈমান
৩. আমি তাদের পূর্বে কতো জনগোষ্ঠীকে ধ্বংস করেছি; অতঃপর তারা ফরিয়াদ করেছে এবং তখন পরিত্রাণের সময় ছিলো না।
ইরফানুল কুরআন
৩. আমরা তাদের পূর্বে কতোই না জনগোষ্ঠীকে ধ্বংস করেছি! অতঃপর তারা (শাস্তি অবলোকন করে) ফরিয়াদ করেছিল, অথচ তখন নিষ্কৃতির (ও পরিত্রাণের) সময় অবশিষ্ট ছিল না।
وَ عَجِبُوۡۤا اَنۡ جَآءَہُمۡ مُّنۡذِرٌ مِّنۡہُمۡ ۫ وَ قَالَ الۡکٰفِرُوۡنَ ہٰذَا سٰحِرٌ کَذَّابٌ ۖ﴿ۚ۴﴾
কানযুল ঈমান
৪. এবং তারা এ কথায় বিস্ময়বোধ করেছে যে, তাদের নিকট তাদেরই মধ্য থেকে এক সতর্ককারী তাশরীফ এনেছেন এবং কাফিরগণ বললো, ‘এ’তো যাদুকর, বড় মিথ্যাবাদী।
ইরফানুল কুরআন
৪. আর তারা বিস্ময় বোধ করেছে যে, তাদের নিকট তাদেরই মধ্য থেকে একজন সতর্ককারী আগমন করেছেন এবং কাফেরেরা বললো, ‘এ তো এক যাদুকর, বড় মিথ্যাবাদী।
اَجَعَلَ الۡاٰلِہَۃَ اِلٰـہًا وَّاحِدًا ۚۖ اِنَّ ہٰذَا لَشَیۡءٌ عُجَابٌ ﴿۵﴾
কানযুল ঈমান
৫. সে কি বহু খোদাকে একটি খোদা করে দিলো? নিশ্চয় এটা এক আশ্চর্যজনক ব্যাপার’।
ইরফানুল কুরআন
৫. তিনি কি সমস্ত উপাস্যকে একই উপাস্য বানিয়ে দিয়েছেন? নিশ্চয়ই এটা এক বড়ই আশ্চর্যজনক বিষয়!’
وَ انۡطَلَقَ الۡمَلَاُ مِنۡہُمۡ اَنِ امۡشُوۡا وَ اصۡبِرُوۡا عَلٰۤی اٰلِہَتِکُمۡ ۚۖ اِنَّ ہٰذَا لَشَیۡءٌ یُّرَادُ ۖ﴿ۚ۶﴾
কানযুল ঈমান
৬. এবং তাদের মধ্য থেকে সরদারগণ চলে গেলো, ‘তার নিকট থেকে চলে যাও! এবং তোমাদের উপাস্যগুলোর (বিশ্বাসের) উপর অটল থাকো! নিশ্চয় তাতে তার কোন উদ্দেশ্য আছে’।
ইরফানুল কুরআন
৬. আর তাদের সরদারগণ (খাজা আবু ত্বালিব রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুর গৃহে নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের মজলিস থেকে) উঠে চলে গেল; (বাকী লোকদেরকে) এ কথা বলতে বলতে যে, ‘তোমরাও চলো। আর তোমাদের উপাস্যদের (বিশ্বাসের) উপর অটল থাকো। নিশ্চয়ই এর পেছনে কোনো অভিপ্রায় (ও উদ্দেশ্য) রয়েছে।
مَا سَمِعۡنَا بِہٰذَا فِی الۡمِلَّۃِ الۡاٰخِرَۃِ ۚۖ اِنۡ ہٰذَاۤ اِلَّا اخۡتِلَاقٌ ۖ﴿ۚ۷﴾
কানযুল ঈমান
৭. এ কথা তো আমরা সর্বাপেক্ষা পরবর্তী দ্বীন খ্রীষ্টান ধর্মেও শুনি নি। এ ‘তো নিরেট নতুন মনগড়া উক্তি।
ইরফানুল কুরআন
৭. আমরা একথা (এ একত্ববাদের আকীদা) সর্বশেষ (খ্রিস্টান) ধর্মেও (অথবা কুরাইশদের মতাদর্শেও) শুনিনি। এ তো কেবল মনগড়া মিথ্যা।
ءَ اُنۡزِلَ عَلَیۡہِ الذِّکۡرُ مِنۡۢ بَیۡنِنَا ؕ بَلۡ ہُمۡ فِیۡ شَکٍّ مِّنۡ ذِکۡرِیۡ ۚ بَلۡ لَّمَّا یَذُوۡقُوۡا عَذَابِ ؕ﴿۸﴾
কানযুল ঈমান
৮. আমাদের সবার মধ্যে থেকে কি শুধু তার উপর ক্বোরআন অবতীর্ণ হলো? বরং তারা সন্দিহান আমার কিতাব সম্পর্কে, বরং এখনো আমার শাস্তির স্বাদ গ্রহণ করে নি।
ইরফানুল কুরআন
৮. আমাদের সবার মধ্য থেকে কি শুধু তাঁর উপর এ উপদেশ (কুরআন) অবতীর্ণ হলো?’ বরং তারা আমার উপদেশের ব্যাপারে সন্দিহান। তারা এখনো আমার শাস্তি আস্বাদন করেনি।
اَمۡ عِنۡدَہُمۡ خَزَآئِنُ رَحۡمَۃِ رَبِّکَ الۡعَزِیۡزِ الۡوَہَّابِ ۚ﴿۹﴾
কানযুল ঈমান
৯. তারা কি আপনার রবের অনুগ্রহের খাজাঞ্চী? তিনি সম্মানের মালিক, মহান দাতা।
ইরফানুল কুরআন
৯. তাদের নিকট কি আপনার প্রতিপালকের রহমতের ভান্ডার রয়েছে; যিনি পরাক্রমশালী, মহান দাতা?
اَمۡ لَہُمۡ مُّلۡکُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ وَ مَا بَیۡنَہُمَا ۟ فَلۡیَرۡتَقُوۡا فِی الۡاَسۡبَابِ ﴿۱۰﴾
কানযুল ঈমান
১০. তাদের জন্য কি আসমানসমূহ ও যমীনের রাজত্ব রয়েছে এবং যা কিছু দু’টির মধ্যখানে রয়েছে (তারও) থাকলে, রজ্জুসমূহ লটকিয়ে আরোহণ করুক!
ইরফানুল কুরআন
১০. অথবা তাদের কি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং এ দু’য়ের মাঝে যা কিছু রয়েছে তার রাজত্ব রয়েছে? (যদি থাকে) তাহলে তারা যেন রশি বেঁধে (আকাশে) আরোহণ করে।
جُنۡدٌ مَّا ہُنَالِکَ مَہۡزُوۡمٌ مِّنَ الۡاَحۡزَابِ ﴿۱۱﴾
কানযুল ঈমান
১১. এ তো এক লাঞ্ছিত বাহিনী ওই সব বাহিনীর মধ্য থেকে, যাকে সেখানেই তাড়িয়ে দেওয়া হবে।
ইরফানুল কুরআন
১১. (কাফেরদের) বাহিনীর মধ্যে এ এক তুচ্ছ বাহিনী যারা এখানেই পরাজিত।
کَذَّبَتۡ قَبۡلَہُمۡ قَوۡمُ نُوۡحٍ وَّ عَادٌ وَّ فِرۡعَوۡنُ ذُو الۡاَوۡتَادِ ﴿ۙ۱۲﴾
কানযুল ঈমান
১২. তাদের পূর্বে অস্বীকার করেছে নূহের সম্প্রদায়, আদ সম্প্রদায় এবং চৌ-পেরেক বিদ্ধকারী ফির’আউন;
ইরফানুল কুরআন
১২. তাদের পূর্বেও নূহ (আলাইহিস সালাম)-এঁর সম্প্রদায়, ’আদ এবং অপ্রতিরোধ্য ক্ষমতাধর (অথবা পেরেক দ্বারা নির্যাতনকারী) ফেরাউন মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছিল;
وَ ثَمُوۡدُ وَ قَوۡمُ لُوۡطٍ وَّ اَصۡحٰبُ لۡـَٔیۡکَۃِ ؕ اُولٰٓئِکَ الۡاَحۡزَابُ ﴿۱۳﴾
কানযুল ঈমান
১৩. এবং সামূদ ও লূতের সম্প্রদায় আর বনবাসীগণ। এরা হচ্ছে ওই দল।
ইরফানুল কুরআন
১৩. আর সামূদ, লূত (আলাইহিস সালাম)-এঁর সম্প্রদায় এবং আইকার অধিবাসীরাও (অর্থাৎ শুয়াইব আলাইহিস সালামের বনবাসী সম্প্রদায়ও মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছিল)। এরা ছিল বিশাল বাহিনী।
اِنۡ کُلٌّ اِلَّا کَذَّبَ الرُّسُلَ فَحَقَّ عِقَابِ ﴿۱۴﴾
কানযুল ঈমান
১৪. তাদের মধ্যে কেউ এমন নেই, যে রসূলগণকে অস্বীকার করে নি, অতঃপর আমার শাস্তি অবধারিত হয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
১৪. (তাদের) প্রতিটি দলই রাসূলগণকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছিল, অতঃপর (তাদের উপর) আমার শাস্তি অবধারিত হয়ে গিয়েছিল।
وَ مَا یَنۡظُرُ ہٰۤؤُلَآءِ اِلَّا صَیۡحَۃً وَّاحِدَۃً مَّا لَہَا مِنۡ فَوَاقٍ ﴿۱۵﴾
কানযুল ঈমান
১৫. এবং এরা অপেক্ষা করছে না, কিন্তু একটা বিকট শব্দের, যাকে কেউ প্রতিহত করতে পারে না।
ইরফানুল কুরআন
১৫. আর এরা সবাই এক বিকট (চিৎকার) ধ্বনির অপেক্ষা করছিল, যাতে কোনোই বিরতি থাকবে না।
وَ قَالُوۡا رَبَّنَا عَجِّلۡ لَّنَا قِطَّنَا قَبۡلَ یَوۡمِ الۡحِسَابِ ﴿۱۶﴾
কানযুল ঈমান
১৬. এবং তারা বললো, ‘হে আমাদের রব! আমাদের প্রাপ্যাংশ আমাদেরকে শীঘ্র দিয়ে দাও হিসাব দিবসের পূর্বে।
ইরফানুল কুরআন
১৬. আর তারা বলে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! হিসাব দিবসের পূর্বেই আমাদের প্রাপ্যাংশ আমাদেরকে শীঘ্র দিয়ে দাও’।
اِصۡبِرۡ عَلٰی مَا یَقُوۡلُوۡنَ وَ اذۡکُرۡ عَبۡدَنَا دَاوٗدَ ذَا الۡاَیۡدِ ۚ اِنَّہٗۤ اَوَّابٌ ﴿۱۷﴾
কানযুল ঈমান
১৭. আপনি তাদের কথাগুলোর উপর ধৈর্যধারণ করুন! এবং নি’মাতসমূহের অধিকারী আমার বান্দা দাঊদকে স্মরণ করুন। নিশ্চয় সে বড় প্রত্যাবর্তনকারী।
ইরফানুল কুরআন
১৭. (হে সম্মানিত হাবীব!) তারা যা কিছু বলে আপনি এর উপর ধৈর্য ধারণ করুন এবং স্মরণ করুন আমার বান্দা দাউদ (আলাইহিস সালাম)-কে যিনি ছিলেন খুবই শক্তিশালী। নিশ্চয়ই তিনি (আমার প্রতি) অধিক প্রত্যাবর্তনকারী।
اِنَّا سَخَّرۡنَا الۡجِبَالَ مَعَہٗ یُسَبِّحۡنَ بِالۡعَشِیِّ وَ الۡاِشۡرَاقِ ﴿ۙ۱۸﴾
কানযুল ঈমান
১৮. নিশ্চয় আমি তার সাথে পর্বতকে অনুগত করে দিয়েছি যেন (সেগুলো) পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে সন্ধ্যায় ও সূর্য চমকিত হবার সময়;
ইরফানুল কুরআন
১৮. নিশ্চয়ই আমরা তাঁর অধীনস্ত করে দিয়েছিলাম পর্বতমালাকে যেগুলো তাঁর সাথে (মিলে) সকাল-সন্ধায় পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করতো,
وَ الطَّیۡرَ مَحۡشُوۡرَۃً ؕ کُلٌّ لَّہٗۤ اَوَّابٌ ﴿۱۹﴾
কানযুল ঈমান
১৯. এবং পক্ষীগুলোকে সমবেত করে; সবাই তার অনুগত ছিলো।
ইরফানুল কুরআন
১৯. আর বিহঙ্গকুলকেও, যেগুলো (তাঁর নিকটে) সমবেত হতো; প্রত্যেকেই (তাঁর নির্দেশের আনুগত্যে) তাঁর অভিমুখী থাকতো।
وَ شَدَدۡنَا مُلۡکَہٗ وَ اٰتَیۡنٰہُ الۡحِکۡمَۃَ وَ فَصۡلَ الۡخِطَابِ ﴿۲۰﴾
কানযুল ঈমান
২০. এবং আমি তার রাজ্যকে সুদৃঢ় করেছি আর তাকে প্রজ্ঞা ও মীমাংসাকারী বাগ্মিতা দিয়েছি।
ইরফানুল কুরআন
২০. আর আমরা তাঁর রাজ্য ও শাসন ক্ষমতাকে সুদৃঢ় করেছিলাম এবং তাঁকে দিয়েছিলাম প্রজ্ঞা, সূক্ষ্মদৃষ্টি ও বিচারক্ষমতাসম্পন্ন (স্বতন্ত্র) বাগ্মিতা।
وَ ہَلۡ اَتٰىکَ نَبَؤُا الۡخَصۡمِ ۘ اِذۡ تَسَوَّرُوا الۡمِحۡرَابَ ﴿ۙ۲۱﴾
কানযুল ঈমান
২১. এবং আপনার নিকট কি ওই অভিযোগকারীদের খবরও পৌঁছেছে যখন তারা দেয়াল ডিঙ্গিয়ে দাঊদের মসজিদে এসেছিলো?
ইরফানুল কুরআন
২১. আর আপনার নিকট কি বিবাদকারীদের সংবাদ পৌঁছেছে, যখন তারা প্রাচীর ডিঙিয়ে (দাউদ আলাহিস সালামের) ইবাদতখানায় প্রবেশ করেছিল?
اِذۡ دَخَلُوۡا عَلٰی دَاوٗدَ فَفَزِعَ مِنۡہُمۡ قَالُوۡا لَا تَخَفۡ ۚ خَصۡمٰنِ بَغٰی بَعۡضُنَا عَلٰی بَعۡضٍ فَاحۡکُمۡ بَیۡنَنَا بِالۡحَقِّ وَ لَا تُشۡطِطۡ وَ اہۡدِنَاۤ اِلٰی سَوَآءِ الصِّرَاطِ ﴿۲۲﴾
কানযুল ঈমান
২২. যখন তারা দাঊদের নিকট প্রবেশ করলো, তখন সে তাদের কারণে ভীত হয়ে পড়লো। তারা আরয করলো, ‘ভয় করবেন না, আমরা দু’টি দল, আমাদের একে অপরের প্রতি যুলম করেছে। সুতরাং আমাদের মধ্যে সত্য ফয়সালা করে দিন এবং ন্যায়ের পরিপন্থি করবেন না আর আমাদেরকে সোজা পথ বাতলিয়ে দিন’।
ইরফানুল কুরআন
২২. যখন তারা দাউদ (আলাইহিস সালাম)-এঁর নিকট প্রবেশ করলো, তখন তিনি ভীত হয়ে পড়লেন। তারা বললো, ‘ঘাবড়াবেন না, আমরা (এক) মামলার দুই প্রতিপক্ষ, আমাদের একে অপরের প্রতি বাড়াবাড়ি করেছে। সুতরাং আপনি আমাদের মাঝে ন্যায় সংগত ফায়সালা করে দিন, তবে অবিচার করবেন না। আর আমাদেরকে সঠিক পথ-নির্দেশ করুন।
اِنَّ ہٰذَاۤ اَخِیۡ ۟ لَہٗ تِسۡعٌ وَّ تِسۡعُوۡنَ نَعۡجَۃً وَّ لِیَ نَعۡجَۃٌ وَّاحِدَۃٌ ۟ فَقَالَ اَکۡفِلۡنِیۡہَا وَ عَزَّنِیۡ فِی الۡخِطَابِ ﴿۲۳﴾
কানযুল ঈমান
২৩. নিশ্চয় এ আমার ভাই। তার নিকট নিরানব্বইটা মাদী দুম্বা আছে, আর আমার নিকট মাত্র একটা মাদী দুম্বা আছে। এখন সে বলছে, ‘তাও আমাকে হস্তান্তর করে দাও এবং কথায় আমার উপর প্রভাব বিস্তার করছে’।
ইরফানুল কুরআন
২৩. এ আমার ভাই, তার আছে নিরানব্বইটি দুম্বা, আর আমার আছে মাত্র একটিই দুম্বা; এরপরও সে বলে, ‘এটি(ও) আমাকে দিয়ে দাও’, আর কথায়(ও) সে আমার উপর প্রভাব বিস্তার করে।’
قَالَ لَقَدۡ ظَلَمَکَ بِسُؤَالِ نَعۡجَتِکَ اِلٰی نِعَاجِہٖ ؕ وَ اِنَّ کَثِیۡرًا مِّنَ الۡخُلَطَآءِ لَیَبۡغِیۡ بَعۡضُہُمۡ عَلٰی بَعۡضٍ اِلَّا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَ قَلِیۡلٌ مَّا ہُمۡ ؕ وَ ظَنَّ دَاوٗدُ اَنَّمَا فَتَنّٰہُ فَاسۡتَغۡفَرَ رَبَّہٗ وَ خَرَّ رَاکِعًا وَّ اَنَابَ ﴿ٛ۲۴﴾
কানযুল ঈমান
২৪. দাঊদ বললেন, ‘নিশ্চয় সে তোমার প্রতি অন্যায় করছে যে, তোমার মাদী দুম্বাটা ও তার মাদী দুম্বাগুলোর সাথে যুক্ত করতে চাচ্ছে। এবং নিশ্চয় অধিকাংশ শরীক একে অপরের প্রতি যুল্ম করে, কিন্তু করে না যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে; আর তারা খুবই স্বল্প সংখ্যক লোক’। যখন দাঊদ বুঝতে পেরেছে যে, আমি এটা তাকে পরীক্ষা করেছি; তখন আপন রবের নিকট ক্ষমা চেয়েছে এবং সাজদায় লুটিয়ে পড়েছে ও ফিরে এসেছে।
ইরফানুল কুরআন
২৪. দাউদ (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘তোমার দুম্বাটি তার দুম্বার সাথে যুক্ত করার দাবী করে সে তোমার প্রতি অন্যায় করেছে। আর অধিকাংশ অংশীদারই একে অপরের প্রতি বাড়াবাড়ি করে থাকে; তবে তারা ব্যতীত যারা ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে এবং এরকম লোক খুবই কম। আর দাউদ (আলাইহিস সালাম) বুঝতে পারলেন যে, আমরা (এ মামলার মাধ্যমে) তাকে পরীক্ষায় ফেলেছি। সুতরাং তিনি তাঁর প্রতিপালকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করলেন, সেজদায় লুটিয়ে পড়লেন এবং তওবা করলেন।
فَغَفَرۡنَا لَہٗ ذٰلِکَ ؕ وَ اِنَّ لَہٗ عِنۡدَنَا لَزُلۡفٰی وَ حُسۡنَ مَاٰبٍ ﴿۲۵﴾
কানযুল ঈমান
২৫. অতঃপর আমি তাকে তা ক্ষমা করেছি। এবং নিশ্চয় নিশ্চয় তার জন্য আমার দরবারে নৈকট্য ও ভালো ঠিকানা রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
২৫. সুতরাং আমরা তাঁকে ক্ষমা করে দিলাম। আর অবশ্যই তাঁর জন্যে আমার নিকট রয়েছে বিশেষ নৈকট্য এবং (পরকালে) রয়েছে সুউচ্চ অবস্থান।
یٰدَاوٗدُ اِنَّا جَعَلۡنٰکَ خَلِیۡفَۃً فِی الۡاَرۡضِ فَاحۡکُمۡ بَیۡنَ النَّاسِ بِالۡحَقِّ وَ لَا تَتَّبِعِ الۡہَوٰی فَیُضِلَّکَ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ ؕ اِنَّ الَّذِیۡنَ یَضِلُّوۡنَ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ لَہُمۡ عَذَابٌ شَدِیۡدٌۢ بِمَا نَسُوۡا یَوۡمَ الۡحِسَابِ ﴿۲۶﴾
কানযুল ঈমান
২৬. হে দাঊদ! নিশ্চয় আমি তোমাকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছি। সুতরাং তুমি লোকদের মধ্যে সঠিক ফয়সালা করো এবং খেয়াল খুশীর অনুসরণ করো না। যা তোমাকে আল্লাহ্র পথ থেকে বিচ্যুত করে দেবে। নিশ্চয় ওই সব লোক, যারা আল্লাহ্র পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যায়, তাদের জন্য কঠিন শাস্তি রয়েছে এ জন্য যে, তারা হিসাব নিকাশের দিনকে ভুলে বসেছে।
ইরফানুল কুরআন
২৬. হে দাউদ! নিশ্চয়ই আমরা তোমাকে পৃথিবীতে (আমাদের) প্রতিনিধি করেছি, সুতরাং তুমি মানুষের মাঝে সত্য ও ন্যায়সংগত বিচারকার্য (অথবা শাসন) পরিচালনা করো এবং প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না। নতুবা (প্রবৃত্তির এ অনুসরণ) তোমাকে আল্লাহ্র পথ থেকে বিচ্যুত করে দেবে। অবশ্যই যারা আল্লাহ্র পথ থেকে বিচ্যুত হয়, তাদের জন্যে রয়েছে কঠিন শাস্তি, কারণ, তারা হিসাব-নিকাশের দিনকে ভুলে গিয়েছে।
وَ مَا خَلَقۡنَا السَّمَآءَ وَ الۡاَرۡضَ وَ مَا بَیۡنَہُمَا بَاطِلًا ؕ ذٰلِکَ ظَنُّ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا ۚ فَوَیۡلٌ لِّلَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا مِنَ النَّارِ ﴿ؕ۲۷﴾
কানযুল ঈমান
২৭. এবং আমি আসমান, যমীন এবং যা কিছু সেগুলোর মধ্যখানে রয়েছে, অনর্থক সৃষ্টি করিনি। এটা কাফিরদের ধারণা। সুতরাং কাফিরদের দুর্ভোগ আগুন থেকে।
ইরফানুল কুরআন
২৭. আর আমরা আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং এ দু’য়ের মাঝে যা কিছু রয়েছে সেগুলোকে অনর্থক ও বিনা কারণে সৃষ্টি করিনি। (অনর্থক অর্থাৎ ঘটনাক্রমে সৃষ্টি করার) এ ধারণা ও দৃষ্টিভঙ্গি কাফেরদের। সুতরাং কাফেরদের জন্যে রয়েছে জাহান্নামের আগুনের দুর্ভোগ।
اَمۡ نَجۡعَلُ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ کَالۡمُفۡسِدِیۡنَ فِی الۡاَرۡضِ ۫ اَمۡ نَجۡعَلُ الۡمُتَّقِیۡنَ کَالۡفُجَّارِ ﴿۲۸﴾
কানযুল ঈমান
২৮. আমি কি ওই সব লোককে, যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, তাদেরই মতো করে দেবো, যারা যমীনের মধ্যে সন্ত্রাস বিস্তার করছে? অথবা আমি খোদাভীরুদেরকে অসৎপাপীদের সমান স্থির করবো?
ইরফানুল কুরআন
২৮. আমরা কি ঈমানদার এবং সৎকর্মশীলদেরকে সেসব লোকদের মতো করে দেবো যারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়ায় অথবা আমরা কি পরহেযগারদেরকে পাপাচারীদের মতো করে দেবো?
کِتٰبٌ اَنۡزَلۡنٰہُ اِلَیۡکَ مُبٰرَکٌ لِّیَدَّبَّرُوۡۤا اٰیٰتِہٖ وَ لِیَتَذَکَّرَ اُولُوا الۡاَلۡبَابِ ﴿۲۹﴾
কানযুল ঈমান
২৯. এটা এক কিতাব, যা আমি আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি, বরকতময়; যাতে তারা সেটার আয়াতগুলোর মধ্যে চিন্তা ভাবনা করে এবং বিবেকবান লোকেরা উপদেশ মান্য করে।
ইরফানুল কুরআন
২৯. এ এক কল্যাণময় কিতাব, যা আমরা আপনার নিকট প্রেরণ করেছি; যাতে জ্ঞানবান ব্যক্তিরা এর আয়াতসমূহ অনুধাবন করে এবং উপদেশ ও হেদায়াত গ্রহণ করে।
وَ وَہَبۡنَا لِدَاوٗدَ سُلَیۡمٰنَ ؕ نِعۡمَ الۡعَبۡدُ ؕ اِنَّہٗۤ اَوَّابٌ ﴿ؕ۳۰﴾
কানযুল ঈমান
৩০. আর আমি দাঊদকে দান করেছি সুলায়মান। কতোই উত্তম বান্দা! নিশ্চয় সে অতিশয় প্রত্যাবর্তনকারী।
ইরফানুল কুরআন
৩০. আর আমরা দাউদ (আলাইহিস সালাম)-কে দান করলাম (পুত্র) সুলাইমান (আলাইহিস সালাম)। তিনি কতোই না উত্তম বান্দা ছিলেন! তিনি ছিলেন অধিক পরিমাণে তওবাকারী।
اِذۡ عُرِضَ عَلَیۡہِ بِالۡعَشِیِّ الصّٰفِنٰتُ الۡجِیَادُ ﴿ۙ۳۱﴾
কানযুল ঈমান
৩১. যখন তার সামনে পেশ করা হলো ত্রিপ্রহরে (ওই অশ্বরাজিকে) যে গুলোকে থামালে তিন পায়ের উপর দণ্ডায়মান হয় চতুর্থ ক্ষুরের প্রান্ত মাটিতে লাগানো অবস্থায়। আর ধাবিত করলে বাতাস হয়ে যায়।
ইরফানুল কুরআন
৩১. যখন অপরাহ্নে তাঁর নিকট ধাবমান উৎকৃষ্ট অশ্বরাজিকে উপস্থিত করা হলো,
فَقَالَ اِنِّیۡۤ اَحۡبَبۡتُ حُبَّ الۡخَیۡرِ عَنۡ ذِکۡرِ رَبِّیۡ ۚ حَتّٰی تَوَارَتۡ بِالۡحِجَابِ ﴿ٝ۳۲﴾
কানযুল ঈমান
৩২. অতঃপর সুলায়মান বললো, ‘আমার নিকট ওই ঘোড়াগুলোর ভালোবাসা পছন্দ হলো আপন রবের স্মরণের জন্য। অতঃপর সেগুলোকে ধাবিত করার নির্দেশ দিলেন। শেষ পর্যন্ত সেগুলো দৃষ্টির অন্তরালে অদৃশ্য হয়ে গেলো।
ইরফানুল কুরআন
৩২. তখন তিনি (অনুতপ্ত হয়ে) বললেন, ‘আামি তো আমার প্রতিপালকের স্মরণের চেয়ে ঐশ্বর্য (অর্থাৎ অশ্বরাজির) প্রীতিতে (বেশী) মগ্ন হয়ে পড়েছি, এদিকে (সূর্য রাতের) আবরণে ঢেকে গেছে।’
رُدُّوۡہَا عَلَیَّ ؕ فَطَفِقَ مَسۡحًۢا بِالسُّوۡقِ وَ الۡاَعۡنَاقِ ﴿۳۳﴾
কানযুল ঈমান
৩৩. অতঃপর নির্দেশ দিলো, ‘সেগুলোকে আমার নিকট ফিরিয়ে আনো’। অতঃপর সেগুলোর গোছ ও গর্দানগুলোর উপর হাত বুলাতে লাগলো।
ইরফানুল কুরআন
৩৩. তিনি বললেন, ‘ওগুলোকে পুনরায় আমার নিকট নিয়ে আসো’। অতঃপর তিনি (তলোয়ার দিয়ে) এগুলোর পদদেশ এবং গলদেশ ছেদন করলেন। (এমনিভাবে তিনি স্বীয় ভালোবাসাকে আল্লাহ্র নৈকট্যের জন্যে উৎসর্গ করে দিলেন।)
وَ لَقَدۡ فَتَنَّا سُلَیۡمٰنَ وَ اَلۡقَیۡنَا عَلٰی کُرۡسِیِّہٖ جَسَدًا ثُمَّ اَنَابَ ﴿۳۴﴾
কানযুল ঈমান
৩৪. এবং নিশ্চয় আমি সুলায়মানকে পরীক্ষা করলাম এবং তার সিংহাসনের উপর একটা প্রাণহীন ধড় রেখে দিলাম, অতঃপর সে প্রত্যাবর্তন করলো।
ইরফানুল কুরআন
৩৪. আর আমরা তো সুলাইমান (আলাইহিস সালাম)-কে পরীক্ষা করলাম এবং তাঁর সিংহাসনে (অদ্ভুত) এক দেহ রেখে দিলাম। অতঃপর তিনি দ্বিতীয়বার (রাজত্ব) পেলেন।
قَالَ رَبِّ اغۡفِرۡ لِیۡ وَ ہَبۡ لِیۡ مُلۡکًا لَّا یَنۡۢبَغِیۡ لِاَحَدٍ مِّنۡۢ بَعۡدِیۡ ۚ اِنَّکَ اَنۡتَ الۡوَہَّابُ ﴿۳۵﴾
কানযুল ঈমান
৩৫. আরয করলো, ‘হে আমার রব! আমাকে ক্ষমা করো এবং আমাকে এমন রাজ্য দান করো, যা আমার পর কারো জন্য উপযোগী না হয়, নিশ্চয় তুমি মহান দাতা’।
ইরফানুল কুরআন
৩৫. তিনি আরয করলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে ক্ষমা করো এবং আমাকে দান করো এমন এক রাজ্য যা আমার পর আর কারোরই হবে না। তুমি তো মহান দাতা।
فَسَخَّرۡنَا لَہُ الرِّیۡحَ تَجۡرِیۡ بِاَمۡرِہٖ رُخَآءً حَیۡثُ اَصَابَ ﴿ۙ۳۶﴾
কানযুল ঈমান
৩৬. অতঃপর আমি বায়ুকে তার অধিন করে দিলাম, যা তার নির্দেশে মৃদু মৃদু গতিতে প্রবাহিত হতো, যেখানেই সে চাইতো;
ইরফানুল কুরআন
৩৬. অতঃপর আমরা বায়ুকে তাঁর অনুগত করে দিলাম। এ বায়ু তাঁর নির্দেশে মৃদুমন্দভাবে প্রবাহিত হতো, যেখানে(ই) তিনি যেতে চাইতেন।
وَ الشَّیٰطِیۡنَ کُلَّ بَنَّآءٍ وَّ غَوَّاصٍ ﴿ۙ۳۷﴾
কানযুল ঈমান
৩৭. এবং অধীন করে দিয়েছি শয়তানদেরকে- প্রত্যেক প্রাসাদ নির্মাণকারী ও ডুবুরী;
ইরফানুল কুরআন
৩৭. আর সমস্ত শয়তানকে (ও জ্বিনকে তাঁর অনুগত করেছিলাম), সকল স্থপতি এবং ডুবুরীদেরকে(ও)।
وَّ اٰخَرِیۡنَ مُقَرَّنِیۡنَ فِی الۡاَصۡفَادِ ﴿۳۸﴾
কানযুল ঈমান
৩৮. এবং অন্যদেরকে শৃঙ্খলে আবদ্ধাবস্থায়।
ইরফানুল কুরআন
৩৮. আর (জ্বিনদের) অন্যান্যদেরকেও যারা ছিল শৃঙ্খলে আবদ্ধ।
ہٰذَا عَطَآؤُنَا فَامۡنُنۡ اَوۡ اَمۡسِکۡ بِغَیۡرِ حِسَابٍ ﴿۳۹﴾
কানযুল ঈমান
৩৯. এ’টা আমার দান। এখন তুমি ইচ্ছা করলে অনুগ্রহ করো অথবা রুখে দাও! তোমার উপর কোন হিসাব নেই।
ইরফানুল কুরআন
৩৯. (এরশাদ হলো,) ‘এ আমার দান, হয় (তুমি অন্যদেরকে) দান করে দাও কিংবা (নিজের কাছে) রেখে দাও, (উভয় অবস্থাতেই) কোনো হিসেব নেই।’
وَ اِنَّ لَہٗ عِنۡدَنَا لَزُلۡفٰی وَ حُسۡنَ مَاٰبٍ ﴿۴۰﴾
কানযুল ঈমান
৪০. এবং নিশ্চয় তার জন্য আমার দরবারে নৈকট্য ও উত্তম ঠিকানা রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৪০. আর নিশ্চয়ই তাঁর জন্যে আমাদের নিকট রয়েছে বিশেষ নৈকট্য ও পরকালে উৎকৃষ্ট অবস্থান।
وَ اذۡکُرۡ عَبۡدَنَاۤ اَیُّوۡبَ ۘ اِذۡ نَادٰی رَبَّہٗۤ اَنِّیۡ مَسَّنِیَ الشَّیۡطٰنُ بِنُصۡبٍ وَّ عَذَابٍ ﴿ؕ۴۱﴾
কানযুল ঈমান
৪১. এবং স্মরণ করুন আমার বান্দা আইয়ূবকে, যখন সে তার রবকে আহ্বান করেছে, ‘আমাকে শয়তান যন্ত্রণা ও কষ্টে ফেলেছে।
ইরফানুল কুরআন
৪১. আর স্মরণ করুন আমার বান্দা আইয়ূব (আলাইহিস সালাম)-কে, যখন তিনি তাঁর প্রতিপালককে ডাকলেন, ‘শয়তান আমাকে বড়ই কষ্ট ও দুর্দশায় ফেলেছে’।
اُرۡکُضۡ بِرِجۡلِکَ ۚ ہٰذَا مُغۡتَسَلٌۢ بَارِدٌ وَّ شَرَابٌ ﴿۴۲﴾
কানযুল ঈমান
৪২. আমি বললাম, ‘তোমার পা দ্বারা ভূমিকে আঘাত করো!’ এটা হচ্ছে সুশীতল প্রস্রবণ গোসল ও পান করার জন্য’।
ইরফানুল কুরআন
৪২. (এরশাদ হলো:) ‘তোমার পা দ্বারা ভূমিতে আঘাত করো, এ (সুশীতল পানির) ঝরনাধারা গোসল এবং পান করার জন্যে।’
وَ وَہَبۡنَا لَہٗۤ اَہۡلَہٗ وَ مِثۡلَہُمۡ مَّعَہُمۡ رَحۡمَۃً مِّنَّا وَ ذِکۡرٰی لِاُولِی الۡاَلۡبَابِ ﴿۴۳﴾
কানযুল ঈমান
৪৩. এবং আমি তাকে পরিবার পরিজন এবং তাদের সমসংখ্যক আরো অধিক দান করলাম আপন অনুগ্রহ প্রদর্শনরূপে এবং বোধশক্তিসম্পন্নদের উপদেশের জন্য।
ইরফানুল কুরআন
৪৩. আর আমরা তাঁকে দান করলাম তাঁর পরিবার-পরিজন এবং তাদের সাথে তাদের মতো আরো (পরিবারবর্গ), আমাদের পক্ষ থেকে বিশেষ রহমত স্বরূপ এবং জ্ঞানীদের জন্যে উপদেশ স্বরূপ।
وَ خُذۡ بِیَدِکَ ضِغۡثًا فَاضۡرِبۡ بِّہٖ وَ لَا تَحۡنَثۡ ؕ اِنَّا وَجَدۡنٰہُ صَابِرًا ؕ نِعۡمَ الۡعَبۡدُ ؕ اِنَّہٗۤ اَوَّابٌ ﴿۴۴﴾
কানযুল ঈমান
৪৪. এবং বললাম ‘আপন হাতে একটা ঝাড়ু নিয়ে তা দ্বারা আঘাত করো এবং শপথ ভঙ্গ করো না’। নিশ্চয় আমি তাকে ধৈর্যশীল পেয়েছি। কতোই উত্তম বান্দা! নিশ্চয় সে অতি প্রত্যাবর্তনকারী।
ইরফানুল কুরআন
৪৪. (হে আইয়ূব!) তোমার হাতে (একশত) খড়ের এক ঝাড় নাও এবং (তোমার শপথ পূর্ণ করতে) এর দ্বারা (তোমার স্ত্রীকে একবার) আঘাত করো এবং শপথ ভঙ্গ করো না। নিশ্চয়ই আমরা তাঁকে ধৈর্যশীল পেয়েছি। (আইয়ূব আলাইহিস সালাম) কতো উত্তম বান্দা ছিলেন! নিশ্চয়ই (আমার নিকট) তিনি ছিলেন অধিক পরিমাণে তওবাকারী।
وَ اذۡکُرۡ عِبٰدَنَاۤ اِبۡرٰہِیۡمَ وَ اِسۡحٰقَ وَ یَعۡقُوۡبَ اُولِی الۡاَیۡدِیۡ وَ الۡاَبۡصَارِ ﴿۴۵﴾
কানযুল ঈমান
৪৫. এবং স্মরণ করুন! আমার বান্দাগণ- ইব্রাহীম, ইস্হাক্ব ও ইয়া’ক্বূব ক্ষমতা ও জ্ঞানসম্পন্নদেরকে।
ইরফানুল কুরআন
৪৫. আর স্মরণ করুন আমার বান্দা ইবরাহীম, ইসহাক এবং ইয়াকুব (আলাইহিমুস সালাম)-কে; যাঁরা ছিলেন খুবই শক্তিশালী এবং দূরদৃষ্টিসম্পন্ন।
اِنَّاۤ اَخۡلَصۡنٰہُمۡ بِخَالِصَۃٍ ذِکۡرَی الدَّارِ ﴿ۚ۴۶﴾
কানযুল ঈমান
৪৬. নিশ্চয় আমি তাদেরকে এক খাটি বাণি দ্বারা স্বাতন্ত্র্য (বিশেষত্ব) দান করেছি, তা হচ্ছে ওই জগতের স্মরণ।
ইরফানুল কুরআন
৪৬. নিশ্চয়ই আমরা তাঁদেরকে নির্বাচন করেছিলাম বিশেষ (বৈশিষ্ট্যের) জন্যে, তা ছিল পরকালের আবাসের স্মরণ।
وَ اِنَّہُمۡ عِنۡدَنَا لَمِنَ الۡمُصۡطَفَیۡنَ الۡاَخۡیَارِ ﴿ؕ۴۷﴾
কানযুল ঈমান
৪৭. এবং নিশ্চয় তারা আমার নিকট মনোনীত পছন্দনীয়।
ইরফানুল কুরআন
৪৭. আর অবশ্যই তাঁরা আমার নিকট ছিলেন নির্বাচিত, মনোনীত (এবং) অতি পছন্দনীয় বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত।
وَ اذۡکُرۡ اِسۡمٰعِیۡلَ وَ الۡیَسَعَ وَ ذَاالۡکِفۡلِ ؕ وَ کُلٌّ مِّنَ الۡاَخۡیَارِ ﴿ؕ۴۸﴾
কানযুল ঈমান
৪৮. এবং স্মরণ করুন ইসমাঈল, ইয়াসা’ ও যুল-কিফলকে এবং সবই সজ্জন।
ইরফানুল কুরআন
৪৮. আর (আরো) স্মরণ করুন ইসমাঈল, আল-ইয়াসা’ এবং যুল-কিফল (আলাইহিমুস সালাম)-কে। তাঁরা প্রত্যেকেই ছিলেন পছন্দীয় বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত।
ہٰذَا ذِکۡرٌ ؕ وَ اِنَّ لِلۡمُتَّقِیۡنَ لَحُسۡنَ مَاٰبٍ ﴿ۙ۴۹﴾
কানযুল ঈমান
৪৯. এটা উপদেশ এবং নিশ্চয় খোদাভীরুদের ঠিকানা উত্তম;
ইরফানুল কুরআন
৪৯. এ আলোচনা ও উপদেশ (যার বর্ণনা এ সূরার প্রথম আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে)। আর নিশ্চয়ই পরহেযগারদের জন্যে রয়েছে উৎকৃষ্ট ঠিকানা।
جَنّٰتِ عَدۡنٍ مُّفَتَّحَۃً لَّہُمُ الۡاَبۡوَابُ ﴿ۚ۵۰﴾
কানযুল ঈমান
৫০. বসবাসের বাগান। তাদের জন্য সমস্ত দরজা উন্মুক্ত।
ইরফানুল কুরআন
৫০. (যা) স্থায়ী অবস্থানের আদন উদ্যানসমূহ, যেগুলোর দ্বার তাদের জন্যে উন্মুক্ত থাকবে।
مُتَّکِـِٕیۡنَ فِیۡہَا یَدۡعُوۡنَ فِیۡہَا بِفَاکِہَۃٍ کَثِیۡرَۃٍ وَّ شَرَابٍ ﴿۵۱﴾
কানযুল ঈমান
৫১. ওইগুলোর মধ্যে হেলান দিয়ে, ওই গুলোর মধ্যে প্রচুর ফলমূল ও পানীয় চাইবে।
ইরফানুল কুরআন
৫১. তাঁরা তাতে (আসনসমূহে) হেলান দিয়ে আসীন হবে, (ক্ষাণিক পরপর) বহুবিধ উৎকৃষ্ট ফলমূল এবং (সুস্বাদু) পানীয় চাইতে থাকবে।
وَ عِنۡدَہُمۡ قٰصِرٰتُ الطَّرۡفِ اَتۡرَابٌ ﴿۵۲﴾
কানযুল ঈমান
৫২. এবং তাদের নিকট এমনসব স্ত্রী রয়েছে যারা আপন স্বামী ব্যতীত অন্য কারো দিকে চোখ তুলে দেখে না, একই বয়সের।
ইরফানুল কুরআন
৫২. আর তাদের নিকট থাকবে আনতনয়না (লজ্জাশীলা) সমবয়স্কা (হুরগণ)।
ہٰذَا مَا تُوۡعَدُوۡنَ لِیَوۡمِ الۡحِسَابِ ﴿ؓ۵۳﴾
কানযুল ঈমান
৫৩. এটা হচ্ছে তা-ই, যেটার প্রতিশ্রুতি তোমাদেরকে দেওয়া হয় হিসাবের দিনে।
ইরফানুল কুরআন
৫৩. এসব নিয়ামতরাজি হিসাব দিবসের জন্যে তোমাদেরকে দেয়া প্রতিশ্রুতি।
اِنَّ ہٰذَا لَرِزۡقُنَا مَا لَہٗ مِنۡ نَّفَادٍ ﴿ۚۖ۵۴﴾
কানযুল ঈমান
৫৪. নিশ্চয় এটা আমার রিয্ক, যা কখনো নিঃশেষ হবে না।
ইরফানুল কুরআন
৫৪. নিশ্চয়ই এ তো আমাদের দেয়া রিযিক যা কখনোই শেষ হবার নয়।
ہٰذَا ؕ وَ اِنَّ لِلطّٰغِیۡنَ لَشَرَّ مَاٰبٍ ﴿ۙ۵۵﴾
কানযুল ঈমান
৫৫. তাদের জন্য তো এটাই। এবং নিশ্চয় অবাধ্যদের নিকৃষ্টতম ঠিকানা-
ইরফানুল কুরআন
৫৫. এ (তো মুমিনদের জন্যে), আর অবশ্যই সীমালঙ্ঘনকারীদের জন্যে রয়েছে নিকৃষ্টতম ঠিকানা।
جَہَنَّمَ ۚ یَصۡلَوۡنَہَا ۚ فَبِئۡسَ الۡمِہَادُ ﴿۵۶﴾
কানযুল ঈমান
৫৬. জাহান্নাম, যাতে তারা প্রবিষ্ট হবে; সুতরাং কতোই মন্দ বিছানা!
ইরফানুল কুরআন
৫৬. (তা হচ্ছে) জাহান্নাম, তাতে তারা প্রবেশ করবে; সুতরাং অত্যন্ত নিকৃষ্ট বিশ্রামস্থল।
ہٰذَا ۙ فَلۡیَذُوۡقُوۡہُ حَمِیۡمٌ وَّ غَسَّاقٌ ﴿ۙ۵۷﴾
কানযুল ঈমান
৫৭. তাদের জন্য এটাই; অতঃপর তারা সেটা আস্বাদন করুক-ফুটন্ত পানি ও পুঁজ।
ইরফানুল কুরআন
৫৭. এ (শাস্তি) ; সুতরাং তারা তা আস্বাদন করুক, ফুটন্ত পানি ও পূঁজ।
وَّ اٰخَرُ مِنۡ شَکۡلِہٖۤ اَزۡوَاجٌ ﴿ؕ۵۸﴾
কানযুল ঈমান
৫৮. এবং এই আকৃতির আরো বহু জোড়া।
ইরফানুল কুরআন
৫৮. আরো আছে এরূপ বিভিন্ন ধরণের (শাস্তি)।
ہٰذَا فَوۡجٌ مُّقۡتَحِمٌ مَّعَکُمۡ ۚ لَا مَرۡحَبًۢا بِہِمۡ ؕ اِنَّہُمۡ صَالُوا النَّارِ ﴿۵۹﴾
কানযুল ঈমান
৫৯. তাদেরকে বলা হবে, ‘এটা অন্য একটা বাহিনী, তোমাদের সাথে ধ্বসে পড়েছে, যা তোমাদেরই ছিলো। তারা বলবে, ‘তারা যেন উন্মুক্ত স্থান না পায়’। আগুনে তো তাদেরকে যেতেই হবে। সেখানেও সংকীর্ণ স্থানে থাকবে।
ইরফানুল কুরআন
৫৯. (দোযখের রক্ষী অথবা পূর্বেই অবস্থানকারী জাহান্নামীরা বলবে:) ‘এ তো (ভিন্ন) এক বাহিনী যারা তোমাদের সাথে (জাহান্নামে) প্রবেশ করছে। তাদের জন্যে কোনো অভিবাদন নেই। নিশ্চয়ই তারা(ও) জাহান্নামে প্রবেশকারী।
قَالُوۡا بَلۡ اَنۡتُمۡ ۟ لَا مَرۡحَبًۢا بِکُمۡ ؕ اَنۡتُمۡ قَدَّمۡتُمُوۡہُ لَنَا ۚ فَبِئۡسَ الۡقَرَارُ ﴿۶۰﴾
কানযুল ঈমান
৬০. অনুসারীরা বলবে, ‘বরং তোমরা যেন উত্তম স্থান না পাও! এ বিপদ তোমরাই আমাদের সম্মুখে এনেছো। সুতরাং কতোই মন্দ ঠিকানা!’
ইরফানুল কুরআন
৬০. তারা (আগমনকারীরা) বলবে, ‘বরং তোমরাই, যাদের কোনো অভ্যর্থনা নেই। তোমরাই এ (কুফরী ও শাস্তি) আমাদের কাছে নিয়ে এসেছো। সুতরাং (এ) নিকৃষ্ট আবাসস্থল।’
قَالُوۡا رَبَّنَا مَنۡ قَدَّمَ لَنَا ہٰذَا فَزِدۡہُ عَذَابًا ضِعۡفًا فِی النَّارِ ﴿۶۱﴾
কানযুল ঈমান
৬১. তারা বলবে, ‘হে আমাদের রব! যারা এ বিপদ আমাদের সামনে এনেছে তাদেরকে আগুনের মধ্যে দ্বিগুণ শাস্তি বৃদ্ধি করো।
ইরফানুল কুরআন
৬১. তারা বলবে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! যারা এ (কুফরী ও শাস্তি) আমাদের কাছে নিয়ে এসেছিল, জাহান্নামে তাদের শাস্তি দ্বিগুণ বর্ধিত করো।’
وَ قَالُوۡا مَا لَنَا لَا نَرٰی رِجَالًا کُنَّا نَعُدُّہُمۡ مِّنَ الۡاَشۡرَارِ ﴿ؕ۶۲﴾
কানযুল ঈমান
৬২. এবং বলবে, ‘আমাদের কী হলো যে, আমরা ওই সব পুরুষকে দেখছি না যাদেরকে আমরা মন্দ বলে মনে করতাম!
ইরফানুল কুরআন
৬২. আর তারা বলবে, ‘আমাদের কী হলো, আমরা (সেসব) লোকদেরকে (এখানে) দেখতে পাচ্ছি না, যাদেরকে আমরা নিকৃষ্ট বলে গণ্য করতাম?
اَتَّخَذۡنٰہُمۡ سِخۡرِیًّا اَمۡ زَاغَتۡ عَنۡہُمُ الۡاَبۡصَارُ ﴿۶۳﴾
কানযুল ঈমান
৬৩. ‘আমরা কি তাদেরকে ঠাট্টা বিদ্রূপের পাত্রে পরিণত করে নিয়েছি, না তাদের দিক থেকে দৃষ্টি ফিরে গেছে?’
ইরফানুল কুরআন
৬৩. তবে কি আমরা তাদেরকে (অন্যায়) উপহাস করতাম, নাকি তাদের ব্যাপারে আমাদের দৃষ্টিভ্রম হয়েছিল?’ (তারা ছিলেন আম্মার, খুবাইব, সুহাইব, বিলাল এবং সালমান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমের মতো ফকির-দরবেশ।)
اِنَّ ذٰلِکَ لَحَقٌّ تَخَاصُمُ اَہۡلِ النَّارِ ﴿۶۴﴾
কানযুল ঈমান
৬৪. নিশ্চয় এটা অবশ্যই সত্য, দোযখীদের পারস্পরিক ঝগড়া।
ইরফানুল কুরআন
৬৪. অবশ্যই জাহান্নামীদের পারস্পরিক ঝগড়া-বিবাদ নির্ঘাত সত্য।
قُلۡ اِنَّمَاۤ اَنَا مُنۡذِرٌ ٭ۖ وَّ مَا مِنۡ اِلٰہٍ اِلَّا اللّٰہُ الۡوَاحِدُ الۡقَہَّارُ ﴿ۚ۶۵﴾
কানযুল ঈমান
৬৫. আপনি বলুন, ‘আমি সতর্ককারীই; এবং উপাস্য কেউ নেই, কিন্তু (আছেন) এক আল্লাহ্, সবার উপর বিজয়ী।
ইরফানুল কুরআন
৬৫. বলে দিন, ‘আমি তো কেবল একজন সতর্ককারী এবং আল্লাহ্ ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই, যিনি এক, সবার উপর পরাক্রমশালী,
رَبُّ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ وَ مَا بَیۡنَہُمَا الۡعَزِیۡزُ الۡغَفَّارُ ﴿۶۶﴾
কানযুল ঈমান
৬৬. মালিক আসমানসমূহ ও যমীনের এবং যা কিছু সেগুলোর মাঝখানে রয়েছে, সম্মানিত, মহাক্ষমাশীল’।
ইরফানুল কুরআন
৬৬. আকাশমন্ডলী, পৃথিবী এবং এ দু’য়ের মধ্যস্থিত সৃষ্টিজগতের (সবকিছুর) প্রতিপালক; পরাক্রমশালী, মহাক্ষমাশীল।’
قُلۡ ہُوَ نَبَؤٌا عَظِیۡمٌ ﴿ۙ۶۷﴾
কানযুল ঈমান
৬৭. আপনি বলুন! ‘তা এক মহা সংবাদ।
ইরফানুল কুরআন
৬৭. বলে দিন, ‘এ (কিয়ামত) এক মহাসংবাদ।
اَنۡتُمۡ عَنۡہُ مُعۡرِضُوۡنَ ﴿۶۸﴾
কানযুল ঈমান
৬৮. তোমরা তা থেকে উদাসীন রয়েছো।
ইরফানুল কুরআন
৬৮. তোমরা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছো।
مَا کَانَ لِیَ مِنۡ عِلۡمٍۭ بِالۡمَلَاِ الۡاَعۡلٰۤی اِذۡ یَخۡتَصِمُوۡنَ ﴿۶۹﴾
কানযুল ঈমান
৬৯. আমার নিকট ঊর্ধ্ব জগতের কি খবর ছিলো যখন তারা বিতণ্ডা করছিলো?
ইরফানুল কুরআন
৬৯. আমার তো উর্ধ্বলোকের (ফেরেশতাদের ব্যাপারে নিজ থেকে) কোনো জ্ঞান ছিল না, যখন তারা (আদম সৃষ্টির ব্যাপারে) বাক-বিতন্ডা করছিল।
اِنۡ یُّوۡحٰۤی اِلَیَّ اِلَّاۤ اَنَّمَاۤ اَنَا نَذِیۡرٌ مُّبِیۡنٌ ﴿۷۰﴾
কানযুল ঈমান
৭০. আমার প্রতি তো এ-ই ওহী হয় যে, ‘আমি নয়, কিন্তু সুস্পষ্ট সতর্ককারী।
ইরফানুল কুরআন
৭০. আমার নিকট তো (আল্লাহ্র পক্ষ থেকে) প্রত্যাদেশ করা হয় যে, আমি কেবল সুস্পষ্ট সতর্ককারী।’
اِذۡ قَالَ رَبُّکَ لِلۡمَلٰٓئِکَۃِ اِنِّیۡ خَالِقٌۢ بَشَرًا مِّنۡ طِیۡنٍ ﴿۷۱﴾
কানযুল ঈমান
৭১. যখন আপনার রব ফিরিশ্তাদেরকে বললেন, ‘আমি মাটি থেকে মানব সৃষ্টি করবো।
ইরফানুল কুরআন
৭১. (স্মরণ করুন, সে সময়ের কথা) যখন আপনার প্রতিপালক ফেরেশতাদেরকে বললেন, ‘আমরা (কাঁদা) মাটি থেকে এক মানব অবয়ব সৃষ্টি করবো।
فَاِذَا سَوَّیۡتُہٗ وَ نَفَخۡتُ فِیۡہِ مِنۡ رُّوۡحِیۡ فَقَعُوۡا لَہٗ سٰجِدِیۡنَ ﴿۷۲﴾
কানযুল ঈমান
৭২. অতঃপর যখন আমি তাকে সুঠাম করে নেবো, এবং তাতে আমার নিকট থেকে রূহ ফুঁৎকার করবো তখন তোমরা তাঁরই প্রতি সাজদাবনত হও!’
ইরফানুল কুরআন
৭২. অতঃপর যখন আমরা একে (বাহ্যিক দেহ) সুষম করবো এবং এতে (এর অভ্যন্তরে) আমার (নূরানী) রূহ ফুকে দেবো, তখন তোমরা তাঁর প্রতি (সম্মানার্থে) সেজদাবনত হবে।’
فَسَجَدَ الۡمَلٰٓئِکَۃُ کُلُّہُمۡ اَجۡمَعُوۡنَ ﴿ۙ۷۳﴾
কানযুল ঈমান
৭৩. তখন সমস্ত ফিরিশ্তা সাজদা করলো একেক করে, কেউ অবশিষ্ট রইলো না;
ইরফানুল কুরআন
৭৩. অতঃপর ফেরেশতাগণ সকলেই একসাথে সেজদাবনত হলো,
اِلَّاۤ اِبۡلِیۡسَ ؕ اِسۡتَکۡبَرَ وَ کَانَ مِنَ الۡکٰفِرِیۡنَ ﴿۷۴﴾
কানযুল ঈমান
৭৪. কিন্তু ইবলীস। সে অহঙ্কার করলো এবং সে ছিলোই কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত।
ইরফানুল কুরআন
৭৪. কেবল ইবলীস ব্যতীত, সে (নবুয়্যতের মর্যাদার সামনে) অহঙ্কার করলো এবং কাফেরদের অন্তর্ভুক্ত হলো।
قَالَ یٰۤاِبۡلِیۡسُ مَا مَنَعَکَ اَنۡ تَسۡجُدَ لِمَا خَلَقۡتُ بِیَدَیَّ ؕ اَسۡتَکۡبَرۡتَ اَمۡ کُنۡتَ مِنَ الۡعَالِیۡنَ ﴿۷۵﴾
কানযুল ঈমান
৭৫. বললেন, ‘হে ইবলীস! তোমাকে কোন জিনিসটা বাধা দিলো তাকে সাজদা করতে, যাকে আমি নিজ হাতে সৃষ্টি করেছি? তোমার মধ্যে কি অহঙ্কার এসেছে, না তুমি ছিলেই অহঙ্কারীদের অন্তর্ভুক্ত?’
ইরফানুল কুরআন
৭৫. (আল্লাহ) ইরশাদ করলেন, ‘হে ইবলীস! তোমাকে কিসে (এ সম্মানিত সত্তাকে) সেজদা করতে বাধা দিল, যাঁকে আমি স্বয়ং নিজ (মর্যাদাসম্পন্ন) হাতে সৃষ্টি করেছি? তৃমি কি (তাঁর প্রতি) ঔদ্ধত্য প্রকাশ করলে, নাকি (নিজের ধারণায়) তুমি ছিলে উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন (সৃষ্ট)?’
قَالَ اَنَا خَیۡرٌ مِّنۡہُ ؕ خَلَقۡتَنِیۡ مِنۡ نَّارٍ وَّ خَلَقۡتَہٗ مِنۡ طِیۡنٍ ﴿۷۶﴾
কানযুল ঈমান
৭৬. সে বললো, ‘আমি তার চেয়ে শ্রেষ্ঠ। তুমি আমাকে আগুন থেকে সৃষ্টি করেছো। আর তাকে সৃষ্টি করেছো মাটি থেকে’।
ইরফানুল কুরআন
৭৬. সে (নবীর সাথে নিজের তুলনা করে) বললো, ‘আমি তাঁর থেকে শ্রেষ্ঠ। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছো আগুন থেকে আর তাঁকে সৃষ্টি করেছ মাটি থেকে।’
قَالَ فَاخۡرُجۡ مِنۡہَا فَاِنَّکَ رَجِیۡمٌ ﴿ۚۖ۷۷﴾
কানযুল ঈমান
৭৭. বললেন, ‘তুমি জান্নাত থেকে বের হয়ে যাও! নিশ্চয় তুমি বিতাড়িত।
ইরফানুল কুরআন
৭৭. ইরশাদ হলো, ‘অতঃপর (নবীর সাথে বেয়াদবীর অপরাধে) এখান থেকে বের হয়ে যাও, নিশ্চয়ই তুমি বিতাড়িত।
وَّ اِنَّ عَلَیۡکَ لَعۡنَتِیۡۤ اِلٰی یَوۡمِ الدِّیۡنِ ﴿۷۸﴾
কানযুল ঈমান
৭৮. এবং নিশ্চয় তোমার উপর আমার অভিসম্পাত রইলো ক্বিয়ামত পর্যন্ত।
ইরফানুল কুরআন
৭৮. আর অবশ্যই তোমার প্রতি আমার অভিশাপ বলবৎ থাকবে কিয়ামত দিবস পর্যন্ত।’
قَالَ رَبِّ فَاَنۡظِرۡنِیۡۤ اِلٰی یَوۡمِ یُبۡعَثُوۡنَ ﴿۷۹﴾
কানযুল ঈমান
৭৯. বললো, ‘হে আমার রব! এমনি হলে তুমি আমাকে অবকাশ দাও ওই দিন পর্যন্ত, যেদিন উঠানো হবে’।
ইরফানুল কুরআন
৭৯. সে বললো, ‘হে প্রতিপালক! তাহলে আমাকে (জীবিত থাকার) অবকাশ দিন সেদিন পর্যন্ত যেদিন মানুষকে কবর থেকে উত্তোলন করা হবে।’
قَالَ فَاِنَّکَ مِنَ الۡمُنۡظَرِیۡنَ ﴿ۙ۸۰﴾
কানযুল ঈমান
৮০. (তিনি) বললেন, ‘তুমি অবকাশ প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত;
ইরফানুল কুরআন
৮০. ইরশাদ হলো, ‘(যাও) তুমি নিশ্চিত অবকাশ প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হলে,
اِلٰی یَوۡمِ الۡوَقۡتِ الۡمَعۡلُوۡمِ ﴿۸۱﴾
কানযুল ঈমান
৮১. ওই জ্ঞাত সময়ের দিন পর্যন্ত’।
ইরফানুল কুরআন
৮১. সে সময় উপস্থিত হবার দিন পর্যন্ত যা নির্ধারিত (এবং জ্ঞাত)।’
قَالَ فَبِعِزَّتِکَ لَاُغۡوِیَنَّہُمۡ اَجۡمَعِیۡنَ ﴿ۙ۸۲﴾
কানযুল ঈমান
৮২. সে বললো, ‘তোমার সম্মানের শপথ! অবশ্যই আমি ওই সবকে পথভ্রষ্ট করে ফেলবো;
ইরফানুল কুরআন
৮২. সে বললো, ‘অতঃপর তোমার ইজ্জতের শপথ! আমি তাদের সবাইকে অবশ্যই পথভ্রষ্ট করবো,
اِلَّا عِبَادَکَ مِنۡہُمُ الۡمُخۡلَصِیۡنَ ﴿۸۳﴾
কানযুল ঈমান
৮৩. কিন্তু যারা তাদের মধ্যে তোমার মনোনীত বান্দা রয়েছে’।
ইরফানুল কুরআন
৮৩. তবে তোমার সে সকল বান্দা ব্যতীত যারা মনোনীত ও নির্বাচিত।’
قَالَ فَالۡحَقُّ ۫ وَ الۡحَقَّ اَقُوۡلُ ﴿ۚ۸۴﴾
কানযুল ঈমান
৮৪. বললেন, ‘সুতরাং সত্য এটাই এবং আমি সত্যই বলি।
ইরফানুল কুরআন
৮৪. ইরশাদ হলো, ‘অতঃপর সত্য (এই), আর আমি সত্যই বলি,
لَاَمۡلَـَٔنَّ جَہَنَّمَ مِنۡکَ وَ مِمَّنۡ تَبِعَکَ مِنۡہُمۡ اَجۡمَعِیۡنَ ﴿۸۵﴾
কানযুল ঈমান
৮৫. নিশ্চয় নিশ্চয় আমি জাহান্নাম পূরণ করবো তোমার দ্বারা এবং তাদের মধ্যে যতোজন তোমার অনুসরণ করবে- সবার দ্বারা’।
ইরফানুল কুরআন
৮৫. আমি তোমাকে এবং যারা (বেয়াদবীর সংকল্পে) তোমার অনুসরণ করবে, তাদের সকলকে দিয়ে জাহান্নাম পূর্ণ করবোই।’
قُلۡ مَاۤ اَسۡـَٔلُکُمۡ عَلَیۡہِ مِنۡ اَجۡرٍ وَّ مَاۤ اَنَا مِنَ الۡمُتَکَلِّفِیۡنَ ﴿۸۶﴾
কানযুল ঈমান
৮৬. আপনি বলুন, ‘আমি এ ক্বোরআনের জন্য তোমাদের নিকট থেকে কোন প্রতিদান চাই না এবং আমি কপট লোকদের অন্তর্ভুক্ত নই’।
ইরফানুল কুরআন
৮৬. বলে দিন, ‘আমি এর জন্যে (এ সত্য প্রচারে) তোমাদের নিকট কোনো প্রতিদান চাই না, আর আমি তাদের অন্তর্ভুক্তও নই যারা মিথ্যা দাবি করে।
اِنۡ ہُوَ اِلَّا ذِکۡرٌ لِّلۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۸۷﴾
কানযুল ঈমান
৮৭. তা-তো নয়, কিন্তু উপদেশ সমগ্র জাহানের জন্য।
ইরফানুল কুরআন
৮৭. এ (কুরআন) তো বিশ্ব-জগতের জন্যে উপদেশ ও হেদায়াত মাত্র।
وَ لَتَعۡلَمُنَّ نَبَاَہٗ بَعۡدَ حِیۡنٍ ﴿۸۸﴾
কানযুল ঈমান
৮৮. এবং অবশ্যই একটা সময়ের পর তোমরা সেটার সংবাদ জানবে।
ইরফানুল কুরআন
৮৮. আর কিছু সময় পরই তুমি নিজেই এর সত্যতা অবগত হবে।’