بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
কানযুল ঈমান
০. আল্লাহ্র নামে আরম্ভ, যিনি পরম দয়ালু, করুণাময় (১)
ইরফানুল কুরআন
০. আল্লাহর নামে শুরু, যিনি পরম করুণাময়, সতত অসীম দয়ালু।
طٰہٰ ۚ﴿۱﴾
কানযুল ঈমান
১. ত্বোয়া-হা।
ইরফানুল কুরআন
১. ত্বা-হা। (প্রকৃত অর্থ আল্লাহ তা’আলা এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লামই অধিক অবগত।)
مَاۤ اَنۡزَلۡنَا عَلَیۡکَ الۡقُرۡاٰنَ لِتَشۡقٰۤی ۙ﴿۲﴾
কানযুল ঈমান
২. হে মাহবূব আমি আপনার উপর এ ক্বোরআন এ জন্য অবতীর্ণ করিনি যে, আপনি ক্লেশে পড়বেন;
ইরফানুল কুরআন
২. (হে সম্মানিত মাহবুব!) আমরা আপনার প্রতি কুরআন এ জন্যে অবতীর্ণ করিনি যে, আপনি কষ্টে পতিত হবেন।
اِلَّا تَذۡکِرَۃً لِّمَنۡ یَّخۡشٰی ۙ﴿۳﴾
কানযুল ঈমান
৩. হাঁ, তাঁরই জন্য উপদেশ, যে ভয় করে;
ইরফানুল কুরআন
৩. তবে (এটি) ওই ব্যক্তির জন্যে উপদেশ (হিসেবে অবতীর্ণ) যে (স্বীয় প্রতিপালককে) ভয় করে।
تَنۡزِیۡلًا مِّمَّنۡ خَلَقَ الۡاَرۡضَ وَ السَّمٰوٰتِ الۡعُلٰی ؕ﴿۴﴾
কানযুল ঈমান
৪. তাঁরই অবতীর্ণ, যিনি যমীন ও সমুচ্চ আসুমানসমূহ সৃষ্টি করেছেন।
ইরফানুল কুরআন
৪. (এটি) অবতীর্ণ হয়েছে সে সত্তা (আল্লাহ্) কর্তৃক, যিনি পৃথিবী এবং সুউচ্চ ও সমুন্নত আকাশমন্ডলী সৃষ্টি করেছেন।
اَلرَّحۡمٰنُ عَلَی الۡعَرۡشِ اسۡتَوٰی ﴿۵﴾
কানযুল ঈমান
৫. তিনি পরম করুণাময়, তিনি আরশের উপর ইস্তিওয়া করেন (সমাসীন হন) যেমনই তাঁর মর্যাদার জন্য শোভা পায়।
ইরফানুল কুরআন
৫. (তিনি) অতিশয় অনুগ্রহশীল, যিনি (মহাবিশ্বের সমস্ত ব্যবস্থাপনার উপরে শক্তি ও সর্বোচ্চ কর্তৃত্বের) সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন।
لَہٗ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الۡاَرۡضِ وَ مَا بَیۡنَہُمَا وَ مَا تَحۡتَ الثَّرٰی ﴿۶﴾
কানযুল ঈমান
৬. তাঁরই, যা কিছু আসমানসমূহে রয়েছে, যা কিছু যমীনে, যা কিছু সেগুলোর মধ্যখানে রয়েছে এবং যা কিছু এ ভেজা মাটির নিচে রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৬. (অতঃপর) যা কিছু আকাশমন্ডলী (-এর অভ্যন্তরের সুউচ্চ আলোকসর্বস্ব নৈর্ব্যক্তিক জগত এবং শূণ্যমন্ডলের বস্তুজগতে) এবং যা কিছু পৃথিবীতে এবং যা কিছু এ দু’য়ের মাঝে (বায়ূমন্ডলে) রয়েছে এবং যা কিছু রয়েছে ভুগর্ভের সর্বশেষ স্তর পর্যন্ত, সবকিছু তাঁরই (আদেশ এবং নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার অনুগামী)।
وَ اِنۡ تَجۡہَرۡ بِالۡقَوۡلِ فَاِنَّہٗ یَعۡلَمُ السِّرَّ وَ اَخۡفٰی ﴿۷﴾
কানযুল ঈমান
৭. আর যদি তুমি কথা উচ্চ কণ্ঠে বলো তবে তিনি তো গোপন রহস্য জানেন এবং তা-ও, যা তদপেক্ষাও অধিক গোপন।
ইরফানুল কুরআন
৭. আর যদি আপনি প্রকাশ্যে (উচ্চ স্বরে) যিকির ও দুয়া করেন (তবুও কোনো অসুবিধা নেই), তিনি তো (অন্তরের) গোপন ভেদ এবং অধিকতর গুপ্তরহস্যও (অর্থাৎ সর্বাধিক গোপন ভেদও) জানেন। (সুতরাং তিনি সুউচ্চ স্বরে প্রার্থনা কেন শুনবেন না!)
اَللّٰہُ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا ہُوَ ؕ لَہُ الۡاَسۡمَآءُ الۡحُسۡنٰی ﴿۸﴾
কানযুল ঈমান
৮. আল্লাহ্, তিনি ব্যতীত কারো বন্দেগী নেই, তাঁরই রয়েছে সব উত্তম নাম।
ইরফানুল কুরআন
৮. আল্লাহ্ (তাঁরই সত্তাগত নাম) যিনি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই (অর্থাৎ তোমরা শুধু তাঁকেই মেনে নাও আর বাকী সকল মিথ্যা উপাস্যকে পরিত্যাগ করো)। তাঁর জন্যে রয়েছে (আরো) অনেক সুন্দর নাম (যা তাঁর সুন্দর ও মনোরম গুণাবলীর সন্ধান দেয়)।
وَ ہَلۡ اَتٰىکَ حَدِیۡثُ مُوۡسٰی ۘ﴿۹﴾
কানযুল ঈমান
৯. এবং আপনার নিকট কি মূসার কোন সংবাদ এসেছে?
ইরফানুল কুরআন
৯. আপনার নিকট কি মুসা (আলাইহিস সালাম)-এঁর বৃত্তান্ত এসেছে?
اِذۡ رَاٰ نَارًا فَقَالَ لِاَہۡلِہِ امۡکُثُوۡۤا اِنِّیۡۤ اٰنَسۡتُ نَارًا لَّعَلِّیۡۤ اٰتِیۡکُمۡ مِّنۡہَا بِقَبَسٍ اَوۡ اَجِدُ عَلَی النَّارِ ہُدًی ﴿۱۰﴾
কানযুল ঈমান
১০. যখন সে এক আগুন দেখলো, তখন তাঁর স্ত্রীকে বললো, ‘দাড়াও, এক আগুন আমার নজরে পড়েছে। সম্ভবতঃ আমি তোমাদের জন্য তা থেকে কিছু জ্বলন্ত অঙ্গার নিয়ে আসবো অথবা আগুনের উপর রাস্তা পাবো’।
ইরফানুল কুরআন
১০. মূসা (আলাইহিস সালাম মাদইয়ান থেকে মিশর আসার পথে) যখন আগুন দেখতে পেলেন, তখন তিনি তাঁর পরিবারকে বললেন, ‘তোমরা এখানে অবস্থান করো, আমি আগুন দেখতে পেয়েছি (অথবা আমি এক অগ্নিশিখায় প্রগাঢ় স্নেহ ও ভালোবাসার ঝলক হৃদয়ঙ্গম করেছি)। হয়তো আমি তা থেকে কোনো অঙ্গার তোমাদের জন্যে(ও) নিয়ে আসবো অথবা আমি এ আগুনে পথনির্দেশনা পেয়ে যাবো (যার অন্বেষণে আমি অধীর)।
فَلَمَّاۤ اَتٰىہَا نُوۡدِیَ یٰمُوۡسٰی ﴿ؕ۱۱﴾
কানযুল ঈমান
১১. অতঃপর যখন আগুনের নিকট আসলো, আহ্বান করা হলো, ‘হে মূসা!
ইরফানুল কুরআন
১১. অতঃপর যখন তিনি (এ আগুন) এর নিকটবর্তী হলেন, তখন আহ্বান করা হলো, ‘হে মূসা!
اِنِّیۡۤ اَنَا رَبُّکَ فَاخۡلَعۡ نَعۡلَیۡکَ ۚ اِنَّکَ بِالۡوَادِ الۡمُقَدَّسِ طُوًی ﴿ؕ۱۲﴾
কানযুল ঈমান
১২. নিশ্চয় আমি তোমার রব। সুতরাং তুমি আপন জুতা খুলে ফেলো; নিশ্চয় তুমি পবিত্র উপত্যকা ‘তুওয়া’ এর মধ্যে এসেছো।
ইরফানুল কুরআন
১২. নিশ্চয়ই আমিই তোমার প্রতিপালক, সুতরাং তুমি তোমার জুতা খুলে ফেল; নিশ্চয়ই তুমি পবিত্র ‘তুয়া’ উপত্যকায় রয়েছো।
وَ اَنَا اخۡتَرۡتُکَ فَاسۡتَمِعۡ لِمَا یُوۡحٰی ﴿۱۳﴾
কানযুল ঈমান
১৩. এবং আমি তোমাকে মনোনীত করেছি। এখন কান পেতে শুনো যা তোমার প্রতি ওহী করা হয়।
ইরফানুল কুরআন
১৩. আর আমি তোমাকে (আমার রেসালাতের জন্যে) মনোনীত করেছি, সুতরাং তোমার প্রতি যা প্রত্যাদেশ করা হচ্ছে তা তুমি পূর্ণ মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করো।
اِنَّنِیۡۤ اَنَا اللّٰہُ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّاۤ اَنَا فَاعۡبُدۡنِیۡ ۙ وَ اَقِمِ الصَّلٰوۃَ لِذِکۡرِیۡ ﴿۱۴﴾
কানযুল ঈমান
১৪. নিশ্চয়, আমি হলাম ‘আল্লাহ্’, আমি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই। সুতরাং তুমি আমার বন্দেগী করো এবং আমার স্মরণার্থে নামায কায়েম রাখো।
ইরফানুল কুরআন
১৪. নিশ্চয়ই আমিই আল্লাহ্, আমি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই। সুতরাং তুমি আমার ইবাদত করো এবং আমার স্মরণার্থে নামায কায়েম করো।
اِنَّ السَّاعَۃَ اٰتِیَۃٌ اَکَادُ اُخۡفِیۡہَا لِتُجۡزٰی کُلُّ نَفۡسٍۭ بِمَا تَسۡعٰی ﴿۱۵﴾
কানযুল ঈমান
১৫. নিশ্চয় ক্বিয়ামত আগমনকারী এটা নিকটবর্তী ছিলো যে, আমি সেটাকে সবার নিকট থেকে গোপন রেখে দিই যেন প্রত্যেকে আপন প্রচেষ্টার প্রতিদান পায়।
ইরফানুল কুরআন
১৫. নিশ্চয়ই কিয়ামতের মূহূর্ত আসন্ন। আমি একে গোপন রাখতে চাই যাতে প্রত্যেককে (স্বীয় কর্মে) পুরস্কৃত করা যায়, যার জন্যে তারা সচেষ্ট।
فَلَا یَصُدَّنَّکَ عَنۡہَا مَنۡ لَّا یُؤۡمِنُ بِہَا وَ اتَّبَعَ ہَوٰىہُ فَتَرۡدٰی ﴿۱۶﴾
কানযুল ঈমান
১৬. সুতরাং কখনো তোমাকে যেন সেটা মান্য করা থেকে নিবৃত্ত না করে ওই ব্যক্তি, যে সেটার উপর ঈমান আনে না এবং আপন কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করেছে, সুতরাং নিবৃত্ত হলে তুমি ধ্বংস হয়ে যাবে।
ইরফানুল কুরআন
১৬. অতঃপর তোমাকে কেউ যেন এ (ধ্যান) থেকে প্রতিহত না করে, যে (নিজে) এর প্রতি ঈমান রাখে না এবং নিজের কুপ্রবৃত্তির অনুগামী; নচেৎ তুমি(ও) ধ্বংস হয়ে যাবে।
وَ مَا تِلۡکَ بِیَمِیۡنِکَ یٰمُوۡسٰی ﴿۱۷﴾
কানযুল ঈমান
১৭. এবং হে মূসা! তোমার ডান হাতে এটা কি?’
ইরফানুল কুরআন
১৭. আর তোমার ডান হাতে এটি কী, হে মুসা?’
قَالَ ہِیَ عَصَایَ ۚ اَتَوَکَّوٴُا عَلَیۡہَا وَ اَہُشُّ بِہَا عَلٰی غَنَمِیۡ وَ لِیَ فِیۡہَا مَاٰرِبُ اُخۡرٰی ﴿۱۸﴾
কানযুল ঈমান
১৮. আরয করলো, ‘এটা আমার লাঠি আমি সেটার উপর ভর করি এবং তা দিয়ে আমি আপন মেষ পালের উপর গাছের পাতা ঝেড়ে থাকি আর তাতে আমার আরো কাজ আছে’।
ইরফানুল কুরআন
১৮. তিনি বললেন, ‘এটি আমার লাঠি, আমি এর উপর ভর দেই এবং এটি দ্বারা আমি আমার ছাগপালের জন্যে বৃক্ষপত্র ফেলে থাকি এবং এতে আমার অন্যান্য উপকারও হয়’।
قَالَ اَلۡقِہَا یٰمُوۡسٰی ﴿۱۹﴾
কানযুল ঈমান
১৯. এরশাদ করলেন, ‘সেটা নিক্ষেপ করো, হে মূসা!’
ইরফানুল কুরআন
১৯. এরশাদ হলো, ‘হে মূসা! এটি (ভূমিতে) নিক্ষেপ করো।’
فَاَلۡقٰہَا فَاِذَا ہِیَ حَیَّۃٌ تَسۡعٰی ﴿۲۰﴾
কানযুল ঈমান
২০. অতঃপর মূসা তা নিক্ষেপ করলো। তখনই তা সাপ হয়ে ছুটতে লাগলো।
ইরফানুল কুরআন
২০. অতঃপর তিনি একে (ভূমিতে) নিক্ষেপ করলেন, তখন এটি অকস্মাৎ সাপে পরিণত হয়ে (এদিক ওদিক) ছোটাছুটি করতে লাগলো।
قَالَ خُذۡہَا وَ لَا تَخَفۡ ٝ سَنُعِیۡدُہَا سِیۡرَتَہَا الۡاُوۡلٰی ﴿۲۱﴾
কানযুল ঈমান
২১. বললেন, ‘সেটা তুলে নাও এবং ভয় করো না; এখনই আমি সেটাকে আবার পূর্বের ন্যায় করে দেবো।
ইরফানুল কুরআন
২১. ইরশাদ হলো, ‘একে ধরো এবং ভয় পেয়ো না, আমি একে এখনই তার পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দেবো’।
وَ اضۡمُمۡ یَدَکَ اِلٰی جَنَاحِکَ تَخۡرُجۡ بَیۡضَآءَ مِنۡ غَیۡرِ سُوۡٓءٍ اٰیَۃً اُخۡرٰی ﴿ۙ۲۲﴾
কানযুল ঈমান
২২. এবং আপন হাত আপন বাহুর সাথে মিলিয়ে নাও, তা অতি শুভ্র হয়ে বের হবে, কোন রোগের কারণে নয়; অপর একটা নিদর্শনরূপে।
ইরফানুল কুরআন
২২. আর (নির্দেশ হলো:) ‘তোমার হাত বগলে চেপে ধরো, এটি কোনো অসুস্থতা ছাড়াই শুভ্রোজ্জ্বল হয়ে বের হবে, (এটি) আরেকটি নিদর্শন।
لِنُرِیَکَ مِنۡ اٰیٰتِنَا الۡکُبۡرٰی ﴿ۚ۲۳﴾
কানযুল ঈমান
২৩. এ জন্য যে, আমি তোমাকে বড় বড় নিদর্শন দেখাবো।
ইরফানুল কুরআন
২৩. এটি এ জন্যে (করছি) যে, আমরা তোমাকে আমাদের (কুদরতের) বড় বড় নিদর্শনাবলী দেখাবো।
اِذۡہَبۡ اِلٰی فِرۡعَوۡنَ اِنَّہٗ طَغٰی ﴿۲۴﴾
কানযুল ঈমান
২৪. ফির’আউনের নিকট যাও, সে মাথাচাড়া দিয়েছে’।
ইরফানুল কুরআন
২৪. ফেরাউনের নিকট যাও। সে (নাফরমানী ও অবাধ্যতায়) সীমালঙ্ঘন করেছে।’
قَالَ رَبِّ اشۡرَحۡ لِیۡ صَدۡرِیۡ ﴿ۙ۲۵﴾
কানযুল ঈমান
২৫. আরয করলো, ‘হে আমার রব! আমার জন্য আমার বক্ষ খুলে দাও।
ইরফানুল কুরআন
২৫. (মূসা আলাইহিস সালাম) আরয করলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমার জন্যে আমার বক্ষকে প্রশস্ত করে দাও।
وَ یَسِّرۡ لِیۡۤ اَمۡرِیۡ ﴿ۙ۲۶﴾
কানযুল ঈমান
২৬. এবং আমার জন্য আমার কর্ম সহজ করে দাও!
ইরফানুল কুরআন
২৬. আর আমার (রেসালাতের) কাজ আমার জন্যে সহজ করে দাও।
وَ احۡلُلۡ عُقۡدَۃً مِّنۡ لِّسَانِیۡ ﴿ۙ۲۷﴾
কানযুল ঈমান
২৭. আর আমার জিহ্বার জড়তা দূর করে দাও,
ইরফানুল কুরআন
২৭. আর আমার জিহ্বার জড়তা দূর করে দাও,
یَفۡقَہُوۡا قَوۡلِیۡ ﴿۪۲۸﴾
কানযুল ঈমান
২৮. যাতে সে আমার কথা বুঝতে পারে।
ইরফানুল কুরআন
২৮. যাতে লোকেরা আমার কথা (সহজে) বুঝতে পারে।
وَ اجۡعَلۡ لِّیۡ وَزِیۡرًا مِّنۡ اَہۡلِیۡ ﴿ۙ۲۹﴾
কানযুল ঈমান
২৯. এবং আমার জন্য আমার পরিবারবর্গের মধ্য থেকে একজন উযীর করে দাও!
ইরফানুল কুরআন
২৯. আর আমার পরিবারের মধ্য থেকে আমার জন্যে এক উযির বানিয়ে দাও।
ہٰرُوۡنَ اَخِی ﴿ۙ۳۰﴾
কানযুল ঈমান
৩০. সে কে? আমার ভাই হারূন;
ইরফানুল কুরআন
৩০. (তিনি) আমার ভাই হারুন (আলাইহিস সালাম)।
اشۡدُدۡ بِہٖۤ اَزۡرِیۡ ﴿ۙ۳۱﴾
কানযুল ঈমান
৩১. তাঁর দ্বারা আমার কোমর শক্ত করো!
ইরফানুল কুরআন
৩১. তাঁর মাধ্যমে আমার শক্তি-সামর্থ্য সুদৃঢ় করো।
وَ اَشۡرِکۡہُ فِیۡۤ اَمۡرِیۡ ﴿ۙ۳۲﴾
কানযুল ঈমান
৩২. এবং তাকে আমার কর্মে অংশীদার করো,
ইরফানুল কুরআন
৩২. আর তাঁকে আমার (রেসালাতের) কাজে অংশীদার করো,
کَیۡ نُسَبِّحَکَ کَثِیۡرًا ﴿ۙ۳۳﴾
কানযুল ঈমান
৩৩. যাতে আমরা তোমার প্রচুর পবিত্রতা ঘোষণা করতে পারি;
ইরফানুল কুরআন
৩৩. যাতে আমরা (উভয়ে) অধিক পরিমাণে তোমার মহিমা ঘোষণা করতে পারি।
وَّ نَذۡکُرَکَ کَثِیۡرًا ﴿ؕ۳۴﴾
কানযুল ঈমান
৩৪. এবং অধিকভাবে তোমাকে স্মরণ করি।
ইরফানুল কুরআন
৩৪. এবং তোমাকে অধিক স্মরণ করতে পারি।
اِنَّکَ کُنۡتَ بِنَا بَصِیۡرًا ﴿۳۵﴾
কানযুল ঈমান
৩৫. নিশ্চয় তুমি আমাদেরকে দেখেছো।
ইরফানুল কুরআন
৩৫. নিশ্চয়ই তুমি (সকল অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে) আমাদেরকে ভালোভাবে দেখো।’
قَالَ قَدۡ اُوۡتِیۡتَ سُؤۡلَکَ یٰمُوۡسٰی ﴿۳۶﴾
কানযুল ঈমান
৩৬. বললেন, ‘হে মূসা! তোমার প্রার্থনা তোমাকে প্রদান করা হলো।
ইরফানুল কুরআন
৩৬. (আল্লাহ্) ইরশাদ করেন, ‘হে মূসা! তোমার সকল চাওয়া তোমাকে প্রদান করা হলো।
وَ لَقَدۡ مَنَنَّا عَلَیۡکَ مَرَّۃً اُخۡرٰۤی ﴿ۙ۳۷﴾
কানযুল ঈমান
৩৭. এবং নিশ্চয় আমি তোমার উপর আরো একবার অনুগ্রহ করেছি;
ইরফানুল কুরআন
৩৭. আর নিশ্চয়ই আমরা তোমার প্রতি (এরপূর্বেও) আরো একবার অনুগ্রহ করেছিলাম।
اِذۡ اَوۡحَیۡنَاۤ اِلٰۤی اُمِّکَ مَا یُوۡحٰۤی ﴿ۙ۳۸﴾
কানযুল ঈমান
৩৮. যখন আমি তোমার মায়ের অন্তরে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছি যা অনুপ্রেরণা যোগাবার ছিলো।
ইরফানুল কুরআন
৩৮. যখন আমরা তোমার মাতার অন্তরে সে বিষয়ে অনুপ্রেরণা দিয়েছিলাম, যার অনুপ্রেরণা দেয়ার ছিল
اَنِ اقۡذِفِیۡہِ فِی التَّابُوۡتِ فَاقۡذِفِیۡہِ فِی الۡیَمِّ فَلۡیُلۡقِہِ الۡیَمُّ بِالسَّاحِلِ یَاۡخُذۡہُ عَدُوٌّ لِّیۡ وَ عَدُوٌّ لَّہٗ ؕ وَ اَلۡقَیۡتُ عَلَیۡکَ مَحَبَّۃً مِّنِّیۡ ۬ۚ وَ لِتُصۡنَعَ عَلٰی عَیۡنِیۡ ﴿ۘ۳۹﴾
কানযুল ঈমান
৩৯. যে, ‘তুমি এ শিশুকে সিন্দুকের মধ্যে রেখে সমুদ্রে ভাসিয়ে দাও, অতঃপর সমুদ্র সেটাকে তীরে ঠেলে দিবে, সেটাকে ঊঠিয়ে নেবে ওই ব্যক্তি, যে আমার শত্রু এবং তাঁরও শত্রু, আর আমি তোমার উপর আমার নিকট থেকে ভালবাসা ঢেলে দিয়েছি; এবং এ জন্য যে, তুমি আমার দৃষ্টির সামনেই তৈরী (লালিত-পালিত) হও!
ইরফানুল কুরআন
৩৯. যে, ‘তুমি তাকে (অর্থাৎ মূসা আলাইহিস সালামকে) সিন্ধুকে রাখো, অতঃপর তা নদীতে ভাসিয়ে দাও; এরপর নদী একে তীরে ঠেলে দেবে। আমার দুশমন এবং তাঁর দুশমন তাঁকে উঠিয়ে নেবে।’ আর আমি আমার পক্ষ থেকে তোমার প্রতি (বিশেষ) ভালোবাসার প্রতিবিম্ব সঞ্চারিত করেছিলাম (অর্থাৎ তোমার আকৃতিকে এতো আকর্ষণীয় ও মোহনীয় করে দিয়েছিলাম যে, যে-ই তোমাকে দেখবে সে-ই মুগ্ধ হয়ে যাবে)। আর (তা এ জন্যে যে,) যাতে তোমার লালনপালন আমার চোখের সামনে হয় ।
اِذۡ تَمۡشِیۡۤ اُخۡتُکَ فَتَقُوۡلُ ہَلۡ اَدُلُّکُمۡ عَلٰی مَنۡ یَّکۡفُلُہٗ ؕ فَرَجَعۡنٰکَ اِلٰۤی اُمِّکَ کَیۡ تَقَرَّ عَیۡنُہَا وَ لَا تَحۡزَنَ ۬ؕ وَ قَتَلۡتَ نَفۡسًا فَنَجَّیۡنٰکَ مِنَ الۡغَمِّ وَ فَتَنّٰکَ فُتُوۡنًا ۬۟ فَلَبِثۡتَ سِنِیۡنَ فِیۡۤ اَہۡلِ مَدۡیَنَ ۬ۙ ثُمَّ جِئۡتَ عَلٰی قَدَرٍ یّٰمُوۡسٰی ﴿۴۰﴾
কানযুল ঈমান
৪০. তোমার বোন চললো অতঃপর বললো, ‘আমি কি তোমাদেরকে তাঁরই কথা বলে দেবো, যে এ শিশুর প্রতিপালন করবে? তখন আমি তোমাকে তোমার মায়ের নিকট ফিরিয়ে দিয়েছি, যাতে তাঁর চোখ জুড়ায় ও দুঃখ না পায়; এবং তুমি একটা প্রাণ বধ করেছিলে, অতঃপর আমি তোমাকে মনঃপীড়া থেকে মুক্তি দিয়েছি এবং তোমাকে বহু পরীক্ষা করেছি; অতঃপর তুমি কয়েক বছর মাদ্য়ানবাসীদের মধ্যে ছিলে, এরপর তুমি এক নির্ধারিত প্রতিশ্রুত সময় উপস্থিত হয়েছো, হে মূসা!
ইরফানুল কুরআন
৪০. আর যখন তোমার বোন (অপরিচিত অবস্থায়) চলতে চলতে (ফেরাউনের পরিবারকে) বলতে লাগলো, ‘আমি কি তোমাদেরকে (এমন) কারো সন্ধান দেবো যে একে (এ শিশুকে) লালন-পালন করবে?’ অতঃপর (লালন-পালনের বাহানায়) আমরা তোমাকে তোমার মাতার কাছে ফিরিয়ে দিলাম, যাতে তাঁর চক্ষুও শীতল থাকে এবং তিনি চিন্তিতও না হন। আর তুমি (ফেরাউনের সম্প্রদায়ের) এক (কাফের) ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলে; অতঃপর আমরা তোমাকে (সে) দুশ্চিন্তা থেকে(ও) মুক্তি দিয়েছিলাম। আর আমরা তোমাকে বহু পরীক্ষা নিয়ে ভালোভাবে পরখ করেছি। এরপর তুমি কয়েক বছর মাদইয়ানবাসীদের মাঝে অবস্থান করেছিলে। অতঃপর হে মূসা! তুমি (আল্লাহ্র) নির্ধারিত সময়ে (এখানে) চলে এসেছো। [সে সময় তাঁর বয়স ঠিক চল্লিশ বছরে উপনীত হয়েছিল।]
وَ اصۡطَنَعۡتُکَ لِنَفۡسِیۡ ﴿ۚ۴۱﴾
কানযুল ঈমান
৪১. এবং আমি তোমাকে বিশেষ করে আমার জন্য প্রস্তুত করে নিয়েছি।
ইরফানুল কুরআন
৪১. আর (এখন) আমি তোমাকে আমার (রেসালাত এবং বিশেষ অনুগ্রহের) জন্যে মনোনীত করেছি।
اِذۡہَبۡ اَنۡتَ وَ اَخُوۡکَ بِاٰیٰتِیۡ وَ لَا تَنِیَا فِیۡ ذِکۡرِیۡ ﴿ۚ۴۲﴾
কানযুল ঈমান
৪২. তুমি ও তোমার ভাই-উভয়ে আমার নিদর্শনসমূহ নিয়ে যাও এবং আমার স্মরণে আলস্য করো না।
ইরফানুল কুরআন
৪২. তুমি এবং তোমার ভাই (হারুন) আমার নিদর্শনাবলী নিয়ে যাও এবং আমার স্মরণে শৈথিল্য করো না।
اِذۡہَبَاۤ اِلٰی فِرۡعَوۡنَ اِنَّہٗ طَغٰی ﴿ۚۖ۴۳﴾
কানযুল ঈমান
৪৩. তোমরা দু’জন ফির’আউনের নিকট যাও, নিশ্চয় সে মাথাচড়া দিয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৪৩. তোমরা উভয়ে ফেরাউনের কাছে যাও, নিশ্চয়ই সে অবাধ্যতায় সীমালঙ্ঘন করেছে।
فَقُوۡلَا لَہٗ قَوۡلًا لَّیِّنًا لَّعَلَّہٗ یَتَذَکَّرُ اَوۡ یَخۡشٰی ﴿۴۴﴾
কানযুল ঈমান
৪৪. অতঃপর তাঁর সাথে নম্র কথা বলবে, এ আশায় যে, সে মনোযোগ দেবে অথবা কিছুটা ভয় করবে।
ইরফানুল কুরআন
৪৪. সুতরাং তোমরা উভয়ে তার সাথে নম্র (পন্থায়) কথা বলো। হয়তো সে নসিহত গ্রহণ করবে অথবা (আমার ক্রোধকে) ভয় করতে শুরু করবে।
قَالَا رَبَّنَاۤ اِنَّنَا نَخَافُ اَنۡ یَّفۡرُطَ عَلَیۡنَاۤ اَوۡ اَنۡ یَّطۡغٰی ﴿۴۵﴾
কানযুল ঈমান
৪৫. তারা দু’জন আরয করলো, ‘হে আমাদের রব! নিশ্চয় আমরা আশঙ্কা করছি যে, সে আমাদের উপর সীমালঙ্ঘন করবে অথবা অন্যায় আচরণ সহকারে অগ্রসর হবে’।
ইরফানুল কুরআন
৪৫. উভয়ে আরয করলেন, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! নিশ্চয় আমরা আশঙ্কা করছি যে, সে আমাদের প্রতি বাড়াবাড়ি করবে অথবা (আরো) অবাধ্য হবে।’
قَالَ لَا تَخَافَاۤ اِنَّنِیۡ مَعَکُمَاۤ اَسۡمَعُ وَ اَرٰی ﴿۴۶﴾
কানযুল ঈমান
৪৬. বললেন, ‘ভয় করো না, আমি তোমাদের সাথে আছি, শুনছি ও দেখছি।
ইরফানুল কুরআন
৪৬. ইরশাদ হলো, ‘তোমরা ভয় করো না, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের দু’জনের সাথেই আছি, আমি (সবকিছু) শুনছি এবং দেখছি’।
فَاۡتِیٰہُ فَقُوۡلَاۤ اِنَّا رَسُوۡلَا رَبِّکَ فَاَرۡسِلۡ مَعَنَا بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ ۬ۙ وَ لَا تُعَذِّبۡہُمۡ ؕ قَدۡ جِئۡنٰکَ بِاٰیَۃٍ مِّنۡ رَّبِّکَ ؕ وَ السَّلٰمُ عَلٰی مَنِ اتَّبَعَ الۡہُدٰی ﴿۴۷﴾
কানযুল ঈমান
৪৭. সুতরাং তাঁর নিকট যাও! আর তাকে বলো- আমরা তোমার রবের প্রেরিত হই; সুতরাং আমাদের সাথে ইয়া’ক্বূবের সন্তানদেরকে ছেড়ে দাও; এবং তাদেরকে কষ্ট দিও না। নিশ্চয় আমরা তোমার নিকট তোমার রবের পক্ষ থেকে নিদর্শন নিয়ে এসেছি এবং শান্তি তাদেরই প্রতি, যারা হিদায়তের অনুরসরণ করে’।
ইরফানুল কুরআন
৪৭. অতঃপর তোমরা তার কাছে যাও এবং বলো, ‘আমরা তোমার প্রতিপালকের প্রেরিত (রাসূল), সুতরাং তুমি বনী ইসরাঈলকে (তোমার দাসত্ব থেকে মুক্ত করে) আমাদের সাথে প্রেরণ করো এবং তাদেরকে (আর) কষ্ট দিও না। নিশ্চয় আমরা তোমার কাছে তোমার প্রতিপালকের নিকট থেকে নিদর্শন নিয়ে এসেছি। আর ঐ ব্যক্তির প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক যে হেদায়াতের পথ অনুসরণ করে।
اِنَّا قَدۡ اُوۡحِیَ اِلَیۡنَاۤ اَنَّ الۡعَذَابَ عَلٰی مَنۡ کَذَّبَ وَ تَوَلّٰی ﴿۴۸﴾
কানযুল ঈমান
৪৮. ‘নিশ্চয় আমাদের প্রতি ওহী করা হয়েছে যে, শাস্তি তাঁরই জন্য, যে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে এবং মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে’।
ইরফানুল কুরআন
৪৮. নিশ্চয়ই আমাদের নিকট ওহী প্রেরণ করা হয়েছে যে, এমন (প্রত্যেক) ব্যক্তির প্রতি শাস্তি নেমে আসবে, যে (রাসূলকে) মিথ্যাপ্রতিপন্ন করে এবং (তাঁর থেকে) মুখ ফিরিয়ে নেয়।’
قَالَ فَمَنۡ رَّبُّکُمَا یٰمُوۡسٰی ﴿۴۹﴾
কানযুল ঈমান
৪৯. সে বললো, ‘তোমরা দু’জনের খোদা কে, হে মূসা?’
ইরফানুল কুরআন
৪৯. (ফেরাউন) বললো, ‘হে মূসা! কে তোমাদের দু’জনের প্রতিপালক?’
قَالَ رَبُّنَا الَّذِیۡۤ اَعۡطٰی کُلَّ شَیۡءٍ خَلۡقَہٗ ثُمَّ ہَدٰی ﴿۵۰﴾
কানযুল ঈমান
৫০. বললো, ‘আমাদের রব তিনিই যিনি প্রত্যেক বস্তুকে সেটার উপযোগী আকৃতি প্রদান করেছেন অতঃপর পথপ্রদর্শন করেছেন’।
ইরফানুল কুরআন
৫০. (মূসা আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘আমাদের প্রতিপালক তিনিই যিনি সকল কিছুর (উপযুক্ত) অস্তিত্ব দান করেছেন। অতঃপর (এর অবস্থা অনুযায়ী) পথনির্দেশনা দিয়েছেন।’
قَالَ فَمَا بَالُ الۡقُرُوۡنِ الۡاُوۡلٰی ﴿۵۱﴾
কানযুল ঈমান
৫১. বললো, ‘পূর্ববর্তী যুগের লোকদের অবস্থা কি?’
ইরফানুল কুরআন
৫১. (ফেরাউন) বললো, ‘তবে (সেসব) পূর্ববর্তী সম্প্রদায়ের কী অবস্থা (যারা তোমাদের প্রতিপালককে মানতো না)?’
قَالَ عِلۡمُہَا عِنۡدَ رَبِّیۡ فِیۡ کِتٰبٍ ۚ لَا یَضِلُّ رَبِّیۡ وَ لَا یَنۡسَی ﴿۫۵۲﴾
কানযুল ঈমান
৫২. বললো, ‘এর জ্ঞান আমার রবের নিকট একটি কিতাবের মধ্যে রয়েছে। আমার রব না পথভ্রষ্ট হন, না ভুলে যান।
ইরফানুল কুরআন
৫২. (মূসা আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘এর জ্ঞান আমার প্রতিপালকের নিকট কিতাবে (সংরক্ষিত) রয়েছে। না আমার প্রতিপালক পথভ্রষ্ট হন, না তিনি ভুলে যান।’
الَّذِیۡ جَعَلَ لَکُمُ الۡاَرۡضَ مَہۡدًا وَّ سَلَکَ لَکُمۡ فِیۡہَا سُبُلًا وَّ اَنۡزَلَ مِنَ السَّمَآءِ مَآءً ؕ فَاَخۡرَجۡنَا بِہٖۤ اَزۡوَاجًا مِّنۡ نَّبَاتٍ شَتّٰی ﴿۵۳﴾
কানযুল ঈমান
৫৩. তিনিই, যিনি তোমাদের জন্য যমীনকে বিছানা করেছেন এবং তোমাদের জন্য দিয়েছেন আর আকাশ থেকে বারি বর্ষণ করেছেন’। অতঃপর আমি তা দ্বারা বিভিন্ন প্রকারের উদ্ভিদের জোড়া উৎপন্ন করেছি।
ইরফানুল কুরআন
৫৩. তিনিই তোমাদের জন্যে পৃথিবীকে করেছেন বসবাসের স্থান আর তোমাদের (সফরের) জন্যে এতে তৈরি করেছেন পথ, আর আকাশ থেকে বর্ষণ করেছেন পানি। সুতরাং আমরা এর দ্বারা (ভুমি থেকে) উৎপন্ন করি বিভিন্ন প্রকারের উদ্ভিদ।
کُلُوۡا وَ ارۡعَوۡا اَنۡعَامَکُمۡ ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیٰتٍ لِّاُولِی النُّہٰی ﴿۵۴﴾
কানযুল ঈমান
৫৪. তোমরা আহার করো এবং নিজেদের পশু চরাও। নিশ্চয় তাতে নিদর্শন রয়েছে বিবেকসম্পন্নদের জন্য।
ইরফানুল কুরআন
৫৪. তোমরা আহার করো এবং তোমাদের গবাদিপশু চরাও; নিশ্চয়ই এতে বুদ্ধিমানদের জন্যে রয়েছে নিদর্শনাবলী।
مِنۡہَا خَلَقۡنٰکُمۡ وَ فِیۡہَا نُعِیۡدُکُمۡ وَ مِنۡہَا نُخۡرِجُکُمۡ تَارَۃً اُخۡرٰی ﴿۵۵﴾
কানযুল ঈমান
৫৫. আমি যমীন থেকেই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, সেটার মধ্যেই তোমাদেরকে আবার নিয়ে যাবো এবং সেটা থেকে পুনরায় তোমাদেরকে বের করবো।
ইরফানুল কুরআন
৫৫. তোমাদেরকে এ (মাটি) থেকেই সৃষ্টি করেছি এবং এতেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে দেবো এবং এ থেকেই তোমাদেরকে দ্বিতীয়বার (পুনরায়) বের করবো।
وَ لَقَدۡ اَرَیۡنٰہُ اٰیٰتِنَا کُلَّہَا فَکَذَّبَ وَ اَبٰی ﴿۵۶﴾
কানযুল ঈমান
৫৬. এবং নিশ্চয় আমি তাকে আপন সমস্ত নিদর্শন দেখিয়েছি, অতঃপর সে অস্বীকার করেছে এবং অমান্য করেছে।
ইরফানুল কুরআন
৫৬. আর নিশ্চিৎভাবে আমরা একে (ফেরাউনকে) আমার সকল নিদর্শনাবলী দেখিয়েছি (যা মূসা এবং হারুন আলাইহিমাস সালামকে দেয়া হয়েছিল), কিন্তু সে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছিল এবং (মেনে নিতে) অস্বীকার করেছিল।
قَالَ اَجِئۡتَنَا لِتُخۡرِجَنَا مِنۡ اَرۡضِنَا بِسِحۡرِکَ یٰمُوۡسٰی ﴿۵۷﴾
কানযুল ঈমান
৫৭. বললো, ‘তুমি কি আমাদের নিকট এ জন্য এসেছো যে, আমাদেরকে তোমার যাদু দ্বারা আমাদের ভূমি থেকে বের করে দেবে, হে মূসা?’
ইরফানুল কুরআন
৫৭. সে বললো, ‘হে মূসা! তুমি কি আমার নিকট এ জন্যে এসেছো যে, তুমি তোমার যাদু দ্বারা আমাদেরকে আমাদের ভুমি থেকে বের করে দেবে?’
فَلَنَاۡتِیَنَّکَ بِسِحۡرٍ مِّثۡلِہٖ فَاجۡعَلۡ بَیۡنَنَا وَ بَیۡنَکَ مَوۡعِدًا لَّا نُخۡلِفُہٗ نَحۡنُ وَ لَاۤ اَنۡتَ مَکَانًا سُوًی ﴿۵۸﴾
কানযুল ঈমান
৫৮. অতঃপর আমরাও অবশ্যই তোমার সামনে অনুরূপ যাদু উপস্থিত করবো। সুতরাং আমাদের মধ্যে ও তোমার মধ্যে একটা প্রতিশ্রুতি স্থির করো, যাকে না আমরা ভঙ্গ করবো, না তুমি; (তা হচ্ছে) সমতল ভূমি (-তে জমায়েত হওয়া)।
ইরফানুল কুরআন
৫৮. সুতরাং আমরাও তোমার নিকট অনুরূপ যাদু নিয়ে আসবো; তুমি আমাদের এবং তোমাদের মাঝে (মুকাবিলার জন্যে) প্রতিশ্রুত ক্ষণ নির্ধারণ করো, যার লঙ্ঘন না আমরা করবো আর না তুমি; (মুকাবিলার জায়গা) উন্মুক্ত ও সমতল ময়দান হবে।’
قَالَ مَوۡعِدُکُمۡ یَوۡمُ الزِّیۡنَۃِ وَ اَنۡ یُّحۡشَرَ النَّاسُ ضُحًی ﴿۵۹﴾
কানযুল ঈমান
৫৯. মূসা বললো, ‘তোমার প্রতিশ্রুত মেয়াদ হচ্ছে মেলার দিন এবং এ যে, লোকদেরকে পূর্বাহ্নে সমবেত করা হবে’।
ইরফানুল কুরআন
৫৯. (মূসা আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘তোমাদের অঙ্গীকারের দিবস হলো ঈদের দিন (তথা বাৎসরিক উৎসবের দিন)। আর এ যে, (সে দিন) সকল মানুষ দ্বি-প্রহরের সময় একত্রিত হবে।’
فَتَوَلّٰی فِرۡعَوۡنُ فَجَمَعَ کَیۡدَہٗ ثُمَّ اَتٰی ﴿۶۰﴾
কানযুল ঈমান
৬০. অতঃপর ফির’আউন ফিরে গেলো এবং নিজের চক্রান্তসমূহ একত্রিত করলো, আবার আসলো।
ইরফানুল কুরআন
৬০. অতঃপর ফেরাউন (মজলিস থেকে) ফিরে গেল; সে তার ছল-চাতুরী (পরিকল্পনা) একত্রিত করলো এবং (নির্ধারিত সময়ে) চলে এলো।
قَالَ لَہُمۡ مُّوۡسٰی وَیۡلَکُمۡ لَا تَفۡتَرُوۡا عَلَی اللّٰہِ کَذِبًا فَیُسۡحِتَکُمۡ بِعَذَابٍ ۚ وَ قَدۡ خَابَ مَنِ افۡتَرٰی ﴿۶۱﴾
কানযুল ঈমান
৬১. তাদেরকে মূসা বললো, ‘তোমাদের ধ্বংস হোক! আল্লাহ্র প্রতি মিথ্যা আরোপ করো না, যাতে তিনি তোমাদেরকে শাস্তি দ্বারা ধ্বংস করে দেন এবং নিশ্চয় ব্যর্থ হয়েই রয়েছে যে মিথ্যা রচনা করেছে’।
ইরফানুল কুরআন
৬১. মূসা (আলাইহিস সালাম) এদেরকে (এ যাদুকরদেরকে) বললেন, ‘তোমাদের জন্যে আফসোস! (খবরদার!) আল্লাহ্র প্রতি মিথ্যা অপবাদ আরোপ করো না, নচেৎ তিনি তোমাদেরকে শাস্তির মাধ্যমে ধ্বংস ও বরবাদ করে দেবেন। আর বাস্তবিকই যে ব্যক্তি (আল্লাহ্র প্রতি) মিথ্যা অপবাদ আরোপ করে সে ব্যর্থ হয়।’
فَتَنَازَعُوۡۤا اَمۡرَہُمۡ بَیۡنَہُمۡ وَ اَسَرُّوا النَّجۡوٰی ﴿۶۲﴾
কানযুল ঈমান
৬২. অতঃপর নিজেদের ব্যাপারে পরস্পর বিরোধকারী হয়ে গেলো এবং গোপনে পরামর্শ করলো।
ইরফানুল কুরআন
৬২. ফলে সে সকল (যাদুকর) নিজেদের ব্যাপারে পরস্পরে ঝগড়ায় লিপ্ত হলো এবং গোপনে পরামর্শ করতে লাগলো।
قَالُوۡۤا اِنۡ ہٰذٰىنِ لَسٰحِرٰنِ یُرِیۡدٰنِ اَنۡ یُّخۡرِجٰکُمۡ مِّنۡ اَرۡضِکُمۡ بِسِحۡرِہِمَا وَ یَذۡہَبَا بِطَرِیۡقَتِکُمُ الۡمُثۡلٰی ﴿۶۳﴾
কানযুল ঈমান
৬৩. তারা বললো, ‘নিশ্চয় এ দু’জন অবশ্যই যাদুকর, এরা চায় যে, তোমাদেরকে তোমাদের ভূমি থেকে আপন যাদুর জোরে বের করে দেবে এবং তোমাদের উত্তম দ্বীন নিয়ে যাবে।
ইরফানুল কুরআন
৬৩. বলতে লাগলো, ‘এ দু’জন প্রকৃতই যাদুকর, যারা চায় যাদুর মাধ্যমে তোমাদেরকে তোমাদের ভুমি থেকে বের করে দিতে এবং তোমাদের উৎকৃষ্ট জীবন ব্যবস্থা ও সংস্কৃতিকে বিলীন করতে।’
فَاَجۡمِعُوۡا کَیۡدَکُمۡ ثُمَّ ائۡتُوۡا صَفًّا ۚ وَ قَدۡ اَفۡلَحَ الۡیَوۡمَ مَنِ اسۡتَعۡلٰی ﴿۶۴﴾
কানযুল ঈমান
৬৪. অতএব, তোমরা তোমাদের চক্রান্তগুলোকে পাকাপোক্ত করে নাও, অতঃপর সারিবদ্ধ হয়ে উপস্থিত হও! এবং আজ সফলকাম হবে যে জয়ী হবে’।
ইরফানুল কুরআন
৬৪. (তারা পরস্পরে সিদ্ধান্ত নিলো:) ‘অতঃপর তোমরা তোমাদের (যাদুর) সকল পরিকল্পনা একত্রিত করো, এরপর সারিবদ্ধ হয়ে (একসাথেই) মাঠে আগমন করো। আর আজকের দিনে সেই সফল হবে, যে বিজয়ী হবে।’
قَالُوۡا یٰمُوۡسٰۤی اِمَّاۤ اَنۡ تُلۡقِیَ وَ اِمَّاۤ اَنۡ نَّکُوۡنَ اَوَّلَ مَنۡ اَلۡقٰی ﴿۶۵﴾
কানযুল ঈমান
৬৫. তারা বললো, ‘হে মূসা! হয় তো আপনি নিক্ষেপ করুন, নয় তো আমরা প্রথমে নিক্ষেপ করবো’।
ইরফানুল কুরআন
৬৫. (যাদুকরেরা) বললো, ‘হে মূসা! হয় তোমরা (তোমাদের সামগ্রী) নিক্ষেপ করো অথবা আমরাই আগে নিক্ষেপ করি’।
قَالَ بَلۡ اَلۡقُوۡا ۚ فَاِذَا حِبَالُہُمۡ وَ عِصِیُّہُمۡ یُخَیَّلُ اِلَیۡہِ مِنۡ سِحۡرِہِمۡ اَنَّہَا تَسۡعٰی ﴿۶۶﴾
কানযুল ঈমান
৬৬. মূসা বললো, ‘বরং তোমরাই নিক্ষেপ করো!’ যখনই তাদের দড়িগুলো ও লাঠিগুলো তাদের যাদুর জোরে তাঁর ধারনায় ছুটাছুটি করছে বলে মনে হলো,
ইরফানুল কুরআন
৬৬. (মূসা আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘বরং তোমরাই নিক্ষেপ করো’। অকস্মাৎ মূসা (আলাইহিস সালাম)-এঁর মনে হতে লাগলো যেন তাদের রশি ও লাঠিগুলো তাদের যাদুর প্রভাবে (ময়দানে) ছুটোছুটি করছে।
فَاَوۡجَسَ فِیۡ نَفۡسِہٖ خِیۡفَۃً مُّوۡسٰی ﴿۶۷﴾
কানযুল ঈমান
৬৭. তখন মূসা আপন অন্তরে ভয় অনুভব করলো।
ইরফানুল কুরআন
৬৭. তখন মূসা (আলাইহিস সালাম) নিজের অন্তরে কিছুটা ভীতি অনুভব করতে লাগলেন।
قُلۡنَا لَا تَخَفۡ اِنَّکَ اَنۡتَ الۡاَعۡلٰی ﴿۶۸﴾
কানযুল ঈমান
৬৮. আমি বললাম, ‘ভয় করো না, নিশ্চয় তুমিই জয়ী।
ইরফানুল কুরআন
৬৮. আমরা (মূসা আলাইহিস সালামকে) বললাম, ‘ভয় করো না, নিশ্চিত তুমিই বিজয়ী হবে’।
وَ اَلۡقِ مَا فِیۡ یَمِیۡنِکَ تَلۡقَفۡ مَا صَنَعُوۡا ؕ اِنَّمَا صَنَعُوۡا کَیۡدُ سٰحِرٍ ؕ وَ لَا یُفۡلِحُ السَّاحِرُ حَیۡثُ اَتٰی ﴿۶۹﴾
কানযুল ঈমান
৬৯. এবং নিক্ষেপ করো যা তোমার ডান হাতে রয়েছে এবং তা তাদের কৃত্রিম বস্তুগুলোকে গ্রাস করে ফেলবে। তারা যা কিছুই তৈরী করে এনেছে তা তো যাদুর প্রতাঁরণা। যাদুকরের মঙ্গল হয় না যেখানেই আসুক’।
ইরফানুল কুরআন
৬৯. আর তোমার ডান হাতে যা রয়েছে তা (এ লাঠি, ভূমিতে) নিক্ষেপ করো, তারা (কৃত্রিমভাবে) যা বানিয়ে রেখেছে এটি সেসব (ধোঁকাবাজিকে) গ্রাস করবে। যা কিছু তারা বানিয়ে রেখেছে (তা তো) কেবল যাদুকরের ধোঁকা। আর যাদুকর যেখান থেকেই আসুক, সফলতা পাবে না।’
فَاُلۡقِیَ السَّحَرَۃُ سُجَّدًا قَالُوۡۤا اٰمَنَّا بِرَبِّ ہٰرُوۡنَ وَ مُوۡسٰی ﴿۷۰﴾
কানযুল ঈমান
৭০. অতঃপর সমস্ত যাদুকরকে সাজদাবনত করানো হলো, তারা বললো, ‘আমরা তাঁরই উপর ঈমান আনলাম, যিনি হারূন ও মূসার রব’।
ইরফানুল কুরআন
৭০. (অতঃপর এমনটিই হলো) সকল যাদুকর সেজদায় লুটিয়ে পড়ে বলতে লাগলো, ‘আমরা হারুন এবং মূসা (আলাইহিমাস সালাম)-এঁর প্রতিপালকে বিশ্বাস স্থাপন করলাম’।
قَالَ اٰمَنۡتُمۡ لَہٗ قَبۡلَ اَنۡ اٰذَنَ لَکُمۡ ؕ اِنَّہٗ لَکَبِیۡرُکُمُ الَّذِیۡ عَلَّمَکُمُ السِّحۡرَ ۚ فَلَاُقَطِّعَنَّ اَیۡدِیَکُمۡ وَ اَرۡجُلَکُمۡ مِّنۡ خِلَافٍ وَّ لَاُصَلِّبَنَّکُمۡ فِیۡ جُذُوۡعِ النَّخۡلِ ۫ وَ لَتَعۡلَمُنَّ اَیُّنَاۤ اَشَدُّ عَذَابًا وَّ اَبۡقٰی ﴿۷۱﴾
কানযুল ঈমান
৭১. ফির’আউন বললো, ‘তোমরা কি আমি অনুমতি দেওয়ার পূর্বেই তাঁর উপর ঈমান এনেছো? নিশ্চয় সে তোমাদের প্রধান, যে তোমাদের সবাইকে যাদু শিক্ষা দিয়েছে। সুতরাং আমি শপথ করছি, অবশ্যই আমি তোমাদের এক পার্শ্বের হাত ও অপর পার্শ্বের পা কর্তন করবো এবং আমি তোমাদেরকে খেজুর গাছের কাণ্ডের উপর শূলবিদ্ধ করবোই এবং নিশ্চয় তোমরা জেনে যাবে আমাদের মধ্যে কার শাস্তি কঠোরতর ও অধিক স্থায়ী’।
ইরফানুল কুরআন
৭১. (ফেরাউন) বলতে লাগলো, ‘আমি অনুমতি দেয়ার পূর্বেই তোমরা তাঁর প্রতি ঈমান আনয়ন করলে? নিশ্চয়ই সে (মূসা) তোমাদের(ও) বড় উস্তাদ, যে তোমাদেরকে যাদু শিখিয়েছে। অতঃএব (এখন) আমি অবশ্যই তোমাদের হাত এবং তোমাদের পা বিপরীত দিক থেকে কেটে ফেলবো এবং তোমাদেরকে খেজুরের কান্ডে শুলিতে চড়াবোই। আর তোমরা অবশ্যই জানবে যে, আমাদের মধ্যে কে শাস্তি দেয়ার ক্ষেত্রে অধিক কঠোর এবং অধিক স্থায়ী।’
قَالُوۡا لَنۡ نُّؤۡثِرَکَ عَلٰی مَا جَآءَنَا مِنَ الۡبَیِّنٰتِ وَ الَّذِیۡ فَطَرَنَا فَاقۡضِ مَاۤ اَنۡتَ قَاضٍ ؕ اِنَّمَا تَقۡضِیۡ ہٰذِہِ الۡحَیٰوۃَ الدُّنۡیَا ﴿ؕ۷۲﴾
কানযুল ঈমান
৭২. তারা বললো, ‘আমরা কখনো তোমাকে প্রাধান্য দেবো না এসব স্পষ্ট প্রমাণাদির ওপর, যেগুলো আমাদের নিকট এসেছে, আমাদের সৃষ্টিকর্তার নামে আমাদে শপথ! সুতরাং তুমি করো যা তোমার করার আছে। তুমি এ পার্থিব জীবনেই তো করবে!
ইরফানুল কুরআন
৭২. (যাদুকরেরা) বললো, ‘আমরা তোমাকে কখনো এ সুস্পষ্ট প্রমাণাদির উপর প্রাধান্য দেবো না, যা আমাদের নিকট এসেছে। সে (প্রতিপালক) সত্তার কসম, যিনি আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন! তুমি যা ফায়সালা করার, করে নাও। তুমি তো কেবল (এ কয়েক দিনের) পার্থিব জীবন সম্পর্কেই ফায়সালা করতে পারো।
اِنَّـاۤ اٰمَنَّا بِرَبِّنَا لِیَغۡفِرَ لَنَا خَطٰیٰنَا وَ مَاۤ اَکۡرَہۡتَنَا عَلَیۡہِ مِنَ السِّحۡرِ ؕ وَ اللّٰہُ خَیۡرٌ وَّ اَبۡقٰی ﴿۷۳﴾
কানযুল ঈমান
৭৩. নিশ্চয় আমরা আমাদের রবের প্রতি ঈমান এনেছি, যাতে তিনি আমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করে দেন এবং ওই যাদু যা করার জন্য তুমি আমাদেরকে বাধ্য করেছো। এবং আল্লাহ্ শ্রেষ্ঠ আর সর্বাধিক স্থায়ী’।
ইরফানুল কুরআন
৭৩. অবশ্যই আমরা আমাদের প্রতিপালকে বিশ্বাস স্থাপন করেছি, যাতে তিনি আমাদের ত্রুটিসমূহ ক্ষমা করে দেন এবং তাও (ক্ষমা করে দেন) যে যাদু তুমি আমাদেরকে করতে বাধ্য করেছিলে। আর আল্লাহ্ই উত্তম এবং চিরস্থায়ী।’
اِنَّہٗ مَنۡ یَّاۡتِ رَبَّہٗ مُجۡرِمًا فَاِنَّ لَہٗ جَہَنَّمَ ؕ لَا یَمُوۡتُ فِیۡہَا وَ لَا یَحۡیٰی ﴿۷۴﴾
কানযুল ঈমান
৭৪. নিশ্চয় যে আপন রবের নিকট অপরাধী হয়ে উপস্থিত হয়, তবে তাঁর জন্য অবশ্যই জাহান্নাম রয়েছে, যেখানে সে না মরবে, না বাচবে।
ইরফানুল কুরআন
৭৪. নিশ্চয়ই যে ব্যক্তি তার প্রতিপালকের নিকট অপরাধী হয়ে আসবে, তার জন্যে তো রয়েছে জাহান্নাম। (আর তা এমন শাস্তি যে,) না সে তাতে মৃত্যুবরণ করবে আর না বেঁচে থাকবে।
وَ مَنۡ یَّاۡتِہٖ مُؤۡمِنًا قَدۡ عَمِلَ الصّٰلِحٰتِ فَاُولٰٓئِکَ لَہُمُ الدَّرَجٰتُ الۡعُلٰی ﴿ۙ۷۵﴾
কানযুল ঈমান
৭৫. এবং যে তাঁর নিকট ঈমান সহকারে উপস্থিত হয় এমতাবস্থায় যে, সে সৎকর্ম করেছে, তবে তাদেরই মর্যাদা সমুচ্চ।
ইরফানুল কুরআন
৭৫. আর যে ব্যক্তি তাঁর সমীপে মুমিন হিসেবে আগমন করবে, (অধিকন্তু) নেক আমল করবে; সেসকল লোকেদের জন্যেই রয়েছে সুউচ্চ মর্যাদা।
جَنّٰتُ عَدۡنٍ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہَا الۡاَنۡہٰرُ خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَا ؕ وَ ذٰلِکَ جَزٰٓؤُا مَنۡ تَزَکّٰی ﴿۷۶﴾
কানযুল ঈমান
৭৬. বসবাসের বাগান, যেগুলোর পাদদেশে নহরসমূহ প্রবহমান সর্বদা সেগুলোর মধ্যে থাকবে; এবং এটা পুরস্কার তাঁরই জন্য, যে পবিত্র হয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৭৬. (সেগুলো) চিরসবুজ উদ্যান, যার তলদেশে স্রোতধারা প্রবাহিত; (তারা) তাতে চিরদিন বসবাসকারী। আর সে পুরস্কার এমন ব্যক্তির জন্যে, যে (কুফরী ও পাপাচারের অপবিত্রতা থেকে) নিজেকে পূতঃপবিত্র করেছে।
وَ لَقَدۡ اَوۡحَیۡنَاۤ اِلٰی مُوۡسٰۤی ۬ۙ اَنۡ اَسۡرِ بِعِبَادِیۡ فَاضۡرِبۡ لَہُمۡ طَرِیۡقًا فِی الۡبَحۡرِ یَبَسًا ۙ لَّا تَخٰفُ دَرَکًا وَّ لَا تَخۡشٰی ﴿۷۷﴾
কানযুল ঈমান
৭৭. এবং নিশ্চয় আমি মূসার প্রতি ওহী করেছি, ‘আমার বান্দাদেরকে রাতারাতি নিয়ে চলো। এবং তাদের জন্য সমুদ্রের মধ্যে শুষ্ক রাস্তা বের করে দাও। তোমার এ ভয় থাকবে না যে, ফির’আউন এসে পেয়ে যাবে এবং না তোমার ভয় থাকবে’।
ইরফানুল কুরআন
৭৭. আর আমরা নিশ্চিতভাবে মূসা (আলাইহিস সালাম)-এঁর প্রতি ওহী প্রেরণ করেছিলাম যে, আমার বান্দাদেরকে নিয়ে নিশীথে বের হয়ে যাও। সুতরাং তাদের জন্যে (তোমার লাঠির আঘাতে) সমুদ্রে শুষ্ক পথ তৈরি করো। (ফেরাউন) পেছনে এসে পাকড়াও করবে এ ভয় করো না এবং (ডুবে যাওয়ার) আশঙ্কাও করো না।
فَاَتۡبَعَہُمۡ فِرۡعَوۡنُ بِجُنُوۡدِہٖ فَغَشِیَہُمۡ مِّنَ الۡیَمِّ مَا غَشِیَہُمۡ ﴿ؕ۷۸﴾
কানযুল ঈমান
৭৮. অতঃপর ফির’আউন তাদের পশ্চাদ্ধাবন করলো আপন সৈন্য বাহিনী নিয়ে, অতঃপর তাদেরকে সমুদ্র গ্রাস করে নিলো যেমনিভাবে গ্রাস করার ছিলো।
ইরফানুল কুরআন
৭৮. অতঃপর ফেরাউন তার বাহিনী নিয়ে তাদের পশ্চাদ্ধাবন করলো, তখন সমুদ্র (-এর ঢেউ) তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে গ্রাস করলো।
وَ اَضَلَّ فِرۡعَوۡنُ قَوۡمَہٗ وَ مَا ہَدٰی ﴿۷۹﴾
কানযুল ঈমান
৭৯. এবং ফির’আউন আপন সম্প্রদায়কে পথভ্রষ্ট করেছে এবং সৎপথ দেখায় নি।
ইরফানুল কুরআন
৭৯. আর ফেরাউন তার সম্প্রদায়কে গোমরাহ করেছিল এবং তাদেরকে সরল পথে পরিচালিত করেনি।
یٰبَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ قَدۡ اَنۡجَیۡنٰکُمۡ مِّنۡ عَدُوِّکُمۡ وَ وٰعَدۡنٰکُمۡ جَانِبَ الطُّوۡرِ الۡاَیۡمَنَ وَ نَزَّلۡنَا عَلَیۡکُمُ الۡمَنَّ وَ السَّلۡوٰی ﴿۸۰﴾
কানযুল ঈমান
৮০. হে বনী ইস্রাঈল! নিশ্চয় আমি তোমাদেরকে তোমাদের শত্রু থেকে উদ্ধার করেছি, তোমাদেরকে ‘তুর’ পর্বতের ডান পার্শ্বের প্রতিশ্রুতি দিয়েছি এবং তোমাদের প্রতি ‘মান্’ ও ‘সালওয়া’ অবতীর্ণ করেছি।
ইরফানুল কুরআন
৮০. হে বনী ইসরাঈল! (দেখো!) নিশ্চয়ই আমরা তোমাদেরকে তোমাদের দুশমন থেকে মুক্তি দিয়েছিলাম এবং আমরা তোমাদেরকে তূর (পাহাড়)-এর দক্ষিণপার্শ্বে (আগমনের) অঙ্গীকার করেছিলাম। আর (সেখানে) আমরা তোমাদের নিকট প্রেরণ করেছিলাম ‘মান্না’ এবং ‘সালওয়া’।
کُلُوۡا مِنۡ طَیِّبٰتِ مَا رَزَقۡنٰکُمۡ وَ لَا تَطۡغَوۡا فِیۡہِ فَیَحِلَّ عَلَیۡکُمۡ غَضَبِیۡ ۚ وَ مَنۡ یَّحۡلِلۡ عَلَیۡہِ غَضَبِیۡ فَقَدۡ ہَوٰی ﴿۸۱﴾
কানযুল ঈমান
৮১. আহার করো যেসব পবিত্র বস্তু আমি তোমাদেরকে জীবিকা দিয়েছি এবং তাতে সীমালঙ্ঘন করো না! করলে, তোমাদের উপর ক্রোধ অবতীর্ণ হবে; এবং যার উপর আমার ক্রোধ অবতীর্ণ হয়েছে, নিঃসন্দেহে সে পতিত হয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৮১. (আর তোমাদেরকে বলেছিলাম:) ‘পাক-পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো, যা তোমাদেরকে রিযিক হিসেবে দিয়েছি আর এতে সীমালঙ্ঘন করো না, নচেৎ তোমাদের প্রতি আমার ক্রোধ অবধারিত হয়ে যাবে। আর যার প্রতি আমার ক্রোধ অবধারিত হয়, সে বাস্তবিকই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।’
وَ اِنِّیۡ لَغَفَّارٌ لِّمَنۡ تَابَ وَ اٰمَنَ وَ عَمِلَ صَالِحًا ثُمَّ اہۡتَدٰی ﴿۸۲﴾
কানযুল ঈমান
৮২. এবং নিঃসন্দেহে আমি অতীব ক্ষমাশীল তাঁর প্রতি, যে তাওবা করেছে, ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে অতঃপর সৎপথের উপর (অবিচল) রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৮২. আর নিশ্চয়ই আমি সেসব ব্যক্তির প্রতি অত্যধিক ক্ষমাশীল যে তওবা করে, ঈমান আনয়ন করে এবং সৎকর্ম করে; অতঃপর হেদায়াতের উপর (অবিচল) থাকে।
وَ مَاۤ اَعۡجَلَکَ عَنۡ قَوۡمِکَ یٰمُوۡسٰی ﴿۸۳﴾
কানযুল ঈমান
৮৩. এবং তুমি আপন সম্প্রদায় থেকে কেন ত্বরা করলে, হে মূসা?
ইরফানুল কুরআন
৮৩. আর হে মূসা! তুমি তোমার সম্প্রদায় থেকে (অগ্রে, তূরে আসার ক্ষেত্রে) কেন ত্বরা করলে?
قَالَ ہُمۡ اُولَآءِ عَلٰۤی اَثَرِیۡ وَ عَجِلۡتُ اِلَیۡکَ رَبِّ لِتَرۡضٰی ﴿۸۴﴾
কানযুল ঈমান
৮৪. আরয করলো, ‘তারা এই তো আমার পেছনে এবং হে আমার রব! তোমার প্রতি আমি ত্বরা করে হাযির হয়েছি, যাতে তুমি রাজি হও।
ইরফানুল কুরআন
৮৪. (মূসা আলাইহিস সালাম) আরয করলেন, ‘তারাও আমার পশ্চাতে আসছে, আর আমি (অধিক উল্লাস ও অনুরাগে) তোমার সমীপে পৌঁছতে ত্বরা করেছি, হে আমার প্রতিপালক! যাতে তুমি সন্তুষ্ট হও।’
قَالَ فَاِنَّا قَدۡ فَتَنَّا قَوۡمَکَ مِنۡۢ بَعۡدِکَ وَ اَضَلَّہُمُ السَّامِرِیُّ ﴿۸۵﴾
কানযুল ঈমান
৮৫. বললেন, ‘সুতরাং আমি তোমার চলে আসার পর তোমার সম্প্রদায়কে পরীক্ষায় ফেলেছি; এবং তাদেরকে সামেরী পথভ্রষ্ট করেছে’।
ইরফানুল কুরআন
৮৫. ইরশাদ হলো, ‘নিশ্চয়ই তোমার (আগমনের) পর আমরা তোমার সম্প্রদায়কে পরীক্ষায় ফেলেছি এবং সামিরী তাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছে’।
فَرَجَعَ مُوۡسٰۤی اِلٰی قَوۡمِہٖ غَضۡبَانَ اَسِفًا ۬ۚ قَالَ یٰقَوۡمِ اَلَمۡ یَعِدۡکُمۡ رَبُّکُمۡ وَعۡدًا حَسَنًا ۬ؕ اَفَطَالَ عَلَیۡکُمُ الۡعَہۡدُ اَمۡ اَرَدۡتُّمۡ اَنۡ یَّحِلَّ عَلَیۡکُمۡ غَضَبٌ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ فَاَخۡلَفۡتُمۡ مَّوۡعِدِیۡ ﴿۸۶﴾
কানযুল ঈমান
৮৬. অতঃপর মূসা তাঁর সম্প্রদায়ের প্রতি ফিরে গেলো ক্রোধে ভরা অনুতাপ করতে করতে; বললো, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমাদেরকে কি তোমাদের রব উত্তম প্রতিশ্রুতি দেন নি? তবে কি তোমাদের উপর প্রতিশ্রুতিকাল সুদীর্ঘ হয়ে অতিবাহিত হয়েছে, না তোমরা চেয়েছিলে যে, তোমাদের উপর তোমাদের রবের ক্রোধ আপতিত হোক, যে কারণে তোমরা আমার (প্রতি প্রদত্ত) অঙ্গীকার ভঙ্গ করলে?’
ইরফানুল কুরআন
৮৬. অতঃপর মূসা (আলাইহিস সালাম) অত্যধিক ক্রুদ্ধ (এবং) বিষাদগ্রস্ত হয়ে তাঁর সম্প্রদায়ের নিকট ফিরে এলেন (এবং) বললেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমাদের প্রতিপালক কি তোমাদেরকে এক উত্তম প্রতিশ্রুতি দেননি? তবে কি তোমাদের নিকট প্রতিশ্রুতি (পূর্ণ হতে) সুদীর্ঘ মনে হয়েছিল? নাকি তোমরা চেয়েছিলে যে, তোমাদের প্রতি তোমাদের প্রতিপালকের ক্রোধ অবধারিত (এবং প্রেরিত) হোক? সুতরাং তোমরা আমার সাথে করা অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছো।’
قَالُوۡا مَاۤ اَخۡلَفۡنَا مَوۡعِدَکَ بِمَلۡکِنَا وَ لٰکِنَّا حُمِّلۡنَاۤ اَوۡزَارًا مِّنۡ زِیۡنَۃِ الۡقَوۡمِ فَقَذَفۡنٰہَا فَکَذٰلِکَ اَلۡقَی السَّامِرِیُّ ﴿ۙ۸۷﴾
কানযুল ঈমান
৮৭. তারা বললো, ‘আমরা আপনার অঙ্গীকার স্বেচ্ছায় ভঙ্গ করি নি; তবে, আমাদের উপর কিছু বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে এ সম্প্রদায়ের গয়নার; তখন আমরা সেগুলো নিক্ষেপ করেছি; অতঃপর অনুরূপভাবে সামেরীও নিক্ষেপ করলো;
ইরফানুল কুরআন
৮৭. তারা বললো, ‘আমরা স্বেচ্ছায় আপনাকে প্রদত্ত অঙ্গীকার ভঙ্গ করিনি। তবে (যা ঘটেছিল তা হলো) আমাদের উপর লোকের অলঙ্কারাদির ভারী বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল, তখন আমরা এগুলোকে (আগুনে) নিক্ষেপ করি। অনুরূপভাবে সামিরীও নিক্ষেপ করে।’
فَاَخۡرَجَ لَہُمۡ عِجۡلًا جَسَدًا لَّہٗ خُوَارٌ فَقَالُوۡا ہٰذَاۤ اِلٰـہُکُمۡ وَ اِلٰہُ مُوۡسٰی ۬ فَنَسِیَ ﴿ؕ۸۸﴾
কানযুল ঈমান
৮৮. অতঃপর সে তাদের জন্য একটি গরু বাছুর গড়ে আনলো, প্রাণহীন দেহ, গাভীর মতো ডাকতো; অতঃপর বললো, ‘এটাই হচ্ছে তোমাদের উপাস্য এবং মূসার উপাস্য; মূসা তো ভুলে গেছে’।
ইরফানুল কুরআন
৮৮. অতঃপর সে (সামিরী এসব গলিত অলঙ্কারাদি দিয়ে) তাদের জন্যে বাছুরের এক ভাস্কর্য গড়লো যা গাভীর ন্যায় শব্দ করতো। তখন তারা বললো, ‘এটি তোমাদের উপাস্য এবং মূসা (আলাইহিস সালাম)-এঁরও উপাস্য। সুতরাং সে (সামিরী এ স্থলে) ভুলে গেল।’
اَفَلَا یَرَوۡنَ اَلَّا یَرۡجِعُ اِلَیۡہِمۡ قَوۡلًا ۬ۙ وَّ لَا یَمۡلِکُ لَہُمۡ ضَرًّا وَّ لَا نَفۡعًا ﴿۸۹﴾
কানযুল ঈমান
৮৯. তবে কি তারা দেখছে না যে, তা তাদেরকে কোন কথার জবাব দিচ্ছে না এবং তাদের কোন ভালমন্দের ক্ষমতাও রাখে না?
ইরফানুল কুরআন
৮৯. অতঃপর তারা কি (এতটুকুও) ভেবে দেখেনি যে, এ (বাছুর) না তাদের কোনো কথার জবাব দিতে পারে, আর না তাদের কোন ক্ষতি কিংবা উপকারের ক্ষমতা রাখে?
وَ لَقَدۡ قَالَ لَہُمۡ ہٰرُوۡنُ مِنۡ قَبۡلُ یٰقَوۡمِ اِنَّمَا فُتِنۡتُمۡ بِہٖ ۚ وَ اِنَّ رَبَّکُمُ الرَّحۡمٰنُ فَاتَّبِعُوۡنِیۡ وَ اَطِیۡعُوۡۤا اَمۡرِیۡ ﴿۹۰﴾
কানযুল ঈমান
৯০. এবং নিশ্চয় তাদেরকে হারূন ইতোপূর্বে বলেছিলো, ‘হে আমার সম্প্রদায়! এমনি যে, তোমরা এর কারণে পরীক্ষায় পড়েছো! এবং নিঃসন্দেহে তোমাদের রব ‘রাহমান’ (পরম করুণাময়) সুতরাং আমার অনুসরণ করো এবং আমার নির্দেশ মান্য করো।
ইরফানুল কুরআন
৯০. আর হারুন (আলাইহিস সালামও) পূর্বেই তাদেরকে (সতর্ক করে) বলেছিলেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা তো এ (বাছুর) দ্বারা ফিতনায় পতিত হয়ে গেলে। আর নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক (এ নয়, বরং সেই) অনুগ্রহশীল। সুতরাং তোমরা আমার আনুগত্য করো এবং আমার নির্দেশ মেনে চলো।’
قَالُوۡا لَنۡ نَّبۡرَحَ عَلَیۡہِ عٰکِفِیۡنَ حَتّٰی یَرۡجِعَ اِلَیۡنَا مُوۡسٰی ﴿۹۱﴾
কানযুল ঈমান
৯১. (তারা) বললো, ‘আমরা তো এর উপর আসন পেতে জমে থাকবো যতক্ষণ না মূসা আমাদের নিকট ফিরে আসেন’।
ইরফানুল কুরআন
৯১. তারা বললো, ‘মূসা (আলাইহিস সালাম) ফিরে না আসা পর্যন্ত আমরা এর (পূজার) উপর অটল থাকবো’।
قَالَ یٰہٰرُوۡنُ مَا مَنَعَکَ اِذۡ رَاَیۡتَہُمۡ ضَلُّوۡۤا ﴿ۙ۹۲﴾
কানযুল ঈমান
৯২. মূসা বললো, ‘হে হারূন! তোমাকে কোন বিষয় নিবৃত্ত রেখেছিলো যখন তুমি তাদেরকে পথভ্রষ্ট হতে দেখেছিলে?
ইরফানুল কুরআন
৯২. (মূসা আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘হে হারুন! যখন তুমি দেখলে তারা পথভ্রষ্ট হচ্ছিল, তখন তোমাকে কিসে নিবৃত্ত করলো,
اَلَّا تَتَّبِعَنِ ؕ اَفَعَصَیۡتَ اَمۡرِیۡ ﴿۹۳﴾
কানযুল ঈমান
৯৩. যে, আমার পশ্চাদানুসারণ করতে! তবে কি তুমি আমার নির্দেশ মানলে না?’
ইরফানুল কুরআন
৯৩. (তাছাড়া, তাদেরকে কঠোরভাবে প্রতিহত করতে তোমাকে কে নিষেধ করেছে) আমার পদ্ধতির অনুসরণ করতে? তবে কি তুমি আমার আদেশ অমান্য করলে?’
قَالَ یَبۡنَؤُمَّ لَا تَاۡخُذۡ بِلِحۡیَتِیۡ وَ لَا بِرَاۡسِیۡ ۚ اِنِّیۡ خَشِیۡتُ اَنۡ تَقُوۡلَ فَرَّقۡتَ بَیۡنَ بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ وَ لَمۡ تَرۡقُبۡ قَوۡلِیۡ ﴿۹۴﴾
কানযুল ঈমান
৯৪. বললো, ‘হে আমার সহোদর! না আমার দাড়ি ধরো, না আমার মাথার চুল! আমি আশঙ্কা করেছিলাম যে, তুমি বলবে, ‘তুমি বনী ইস্রাঈলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছো ও তুমি আমার কথার অপেক্ষা করলে না’।
ইরফানুল কুরআন
৯৪. (হারুন আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘হে আমার সহোদর! আপনি আমার দাড়ি এবং আমার মাথা ধরে পাকড়াও করবেন না। আমি (কঠোরতা অবলম্বনের ক্ষেত্রে) অশংকা করেছিলাম যে, আপনি (না) বলেন যে, তুমি বনী-ইসরাঈলদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করে দিয়েছো, আর আমার কথা পালনে যত্নবান হওনি।’
قَالَ فَمَا خَطۡبُکَ یٰسَامِرِیُّ ﴿۹۵﴾
কানযুল ঈমান
৯৫. মূসা বললো, এখন তোমার কি অবস্থা, হে সামেরী!’
ইরফানুল কুরআন
৯৫. (মূসা আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘হে সামিরী! তোমার ব্যাপার কী (বলো)?’
قَالَ بَصُرۡتُ بِمَا لَمۡ یَبۡصُرُوۡا بِہٖ فَقَبَضۡتُ قَبۡضَۃً مِّنۡ اَثَرِ الرَّسُوۡلِ فَنَبَذۡتُہَا وَ کَذٰلِکَ سَوَّلَتۡ لِیۡ نَفۡسِیۡ ﴿۹۶﴾
কানযুল ঈমান
৯৬. সে বললো, ‘আমি তাই দেখেছি যা লোকেরা দেখে নি; অতঃপর আমি এক মুষ্টি ভরে নিলাম ফিরিশ্তার পদচিহ্ন থেকে। অতঃপর তা নিক্ষেপ করলাম। এবং আমার মনে এটাই ভাল লেগেছে’।
ইরফানুল কুরআন
৯৬. সে বললো, ‘আমি এমন কিছু দেখেছিলাম, যা তারা দেখেনি, সুতরাং আমি (আপনার নিকট) প্রেরিত ফেরেশতার পদচিহ্ন থেকে এক মুষ্টি (ধূলা) হস্তগত করেছিলাম। অতঃপর আমি তা (বাছুরের ছাঁচে) নিক্ষেপ করেছিলাম এবং এভাবে আমার মন আমাকে (এরূপ করা) আকর্ষণীয় করে দেখিয়েছিল।’
قَالَ فَاذۡہَبۡ فَاِنَّ لَکَ فِی الۡحَیٰوۃِ اَنۡ تَقُوۡلَ لَا مِسَاسَ ۪ وَ اِنَّ لَکَ مَوۡعِدًا لَّنۡ تُخۡلَفَہٗ ۚ وَ انۡظُرۡ اِلٰۤی اِلٰـہِکَ الَّذِیۡ ظَلۡتَ عَلَیۡہِ عَاکِفًا ؕ لَنُحَرِّقَنَّہٗ ثُمَّ لَنَنۡسِفَنَّہٗ فِی الۡیَمِّ نَسۡفًا ﴿۹۷﴾
কানযুল ঈমান
৯৭. বললো, ‘দূর হও! পার্থিব জীবনে তোমার শাস্তি এই যে, তুমি বলবে, ‘স্পর্শ করে যেও না!’ এবং নিঃসন্দেহে তোমার জন্য একটা প্রতিশ্রুত কাল রয়েছে, তোমার বেলায় যার ব্যতিক্রম হবে না; আর তোমার ওই উপাস্যের প্রতি লক্ষ্য করো, যার সামনে তুমি দিনভর আসন পেতে বসেছিলে। শপথ রইলো যে, অবশ্যই আমরা সেটাকা জ্বালিয়ে দেবো, অতঃপর টুকরো টুকরো করে সাগরে ভাসিয়ে দেবো।
ইরফানুল কুরআন
৯৭. (মূসা আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘তুমি (এখান থেকে) দূর হও। তোমার জন্যে (সারা) জীবনভর এই (শাস্তি) রইলো যে, তুমি (প্রত্যেককে এ কথা) বলবে, “(আমাকে) স্পর্শ করো না (আমাকে স্পর্শ করো না)”। আর তোমার জন্যে আরো এক (শাস্তির) অঙ্গীকারও রয়েছে, যার ব্যত্যয় কখনো ঘটবে না। আর তুমি তোমার এ (মনগড়া) উপাস্যের প্রতি লক্ষ্য করো, যার প্রতি (পূজায়) তুমি নিবিষ্ট ছিলে। আমরা অবশ্যই একে জ্বালিয়ে দেবো, অতঃপর (এর ছাই) বিক্ষিপ্ত করে সাগরে নিক্ষেপ করবো।’
اِنَّمَاۤ اِلٰـہُکُمُ اللّٰہُ الَّذِیۡ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا ہُوَ ؕ وَسِعَ کُلَّ شَیۡءٍ عِلۡمًا ﴿۹۸﴾
কানযুল ঈমান
৯৮. তোমাদের মা’বূদ তো ওই আল্লাহ্ই, যিনি ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত নেই। প্রত্যেক কিছুকেই তাঁর জ্ঞান পরিবেষ্টনকারী।
ইরফানুল কুরআন
৯৮. (হে মানুষ সকল!) তোমাদের উপাস্য কেবল (সেই) আল্লাহ্, যিনি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই। তিনি সকল কিছুকে (স্বীয়) জ্ঞানে বেষ্টন করে আছেন।
کَذٰلِکَ نَقُصُّ عَلَیۡکَ مِنۡ اَنۡۢبَآءِ مَا قَدۡ سَبَقَ ۚ وَ قَدۡ اٰتَیۡنٰکَ مِنۡ لَّدُنَّا ذِکۡرًا ﴿ۖۚ۹۹﴾
কানযুল ঈমান
৯৯. আমি এভাবেই আপনার সামনে পূর্বেকার সংবাদসমূহ বর্ণনা করি; এবং আমি আপনাকে আমার নিকট থেকে একটা উপদেশ দান করেছি।
ইরফানুল কুরআন
৯৯. (হে সম্মানিত হাবীব!) এভাবে আমরা আপনাকে সেসব (সম্প্রদায়ের) সংবাদ শুনাই, যারা অতিবাহিত হয়েছে। আর নিশ্চয়ই আমরা আপনাকে আমার পক্ষ থেকে যিকির (অর্থাৎ উপদেশনামা) প্রদান করেছি।
مَنۡ اَعۡرَضَ عَنۡہُ فَاِنَّہٗ یَحۡمِلُ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ وِزۡرًا ﴿۱۰۰﴾ۙ
কানযুল ঈমান
১০০. যে তা থেকে বিমুখ হয়, অতঃপর নিঃসন্দেহে সে ক্বিয়ামত দিবসে একটি বোঝা বহন করবে।
ইরফানুল কুরআন
১০০. যে ব্যক্তি এ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, সে নিশ্চিতভাবে কিয়ামতের দিন কঠিন বোঝা বহন করবে।
خٰلِدِیۡنَ فِیۡہِ ؕ وَ سَآءَ لَہُمۡ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ حِمۡلًا ﴿۱۰۱﴾ۙ
কানযুল ঈমান
১০১. তারা তাতে স্থায়ীভাবে থাকবে এবং তা ক্বিয়ামত দিবসে তাদের জন্য কতই মন্দ বোঝা হবে!
ইরফানুল কুরআন
১০১. তারা এতে (এ শাস্তিতে) চিরস্থায়ী (পড়ে) থাকবে। আর এ বোঝা কিয়ামত দিবসে তাদের জন্যে কতোই না নিকৃষ্ট হবে।
یَّوۡمَ یُنۡفَخُ فِی الصُّوۡرِ وَ نَحۡشُرُ الۡمُجۡرِمِیۡنَ یَوۡمَئِذٍ زُرۡقًا ﴿۱۰۲﴾ۚۖ
কানযুল ঈমান
১০২. যে দিন শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেওয়া হবে এবং আমি সেদিন অপরাধীদেরকে উঠাবো তাদের চক্ষুগুলো নীলাভ অবস্থায়।
ইরফানুল কুরআন
১০২. যেদিন সিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে, সেদিন সকল অপরাধীকে এমনভাবে একত্রিত করবো যে, তাদের শরীর এবং চক্ষুসমূহ (প্রচন্ড ভীতি এবং অন্ধত্বের কারণে) নীলবর্ণ ধারণ করবে।
یَّتَخَافَتُوۡنَ بَیۡنَہُمۡ اِنۡ لَّبِثۡتُمۡ اِلَّا عَشۡرًا ﴿۱۰۳﴾
কানযুল ঈমান
১০৩. তারা নিজেদের মধ্যে চুপিচুপি বলাবলি করবে, ‘তোমরা পৃথিবীতে ছিলে না, কিন্তু দশটা রাত মাত্র’।
ইরফানুল কুরআন
১০৩. তারা পরস্পরে চুপি চুপি বলাবলি করবে, ‘তোমরা দুনিয়াতে বড়জোড় দশ দিনই অবস্থান করেছিলে’।
نَحۡنُ اَعۡلَمُ بِمَا یَقُوۡلُوۡنَ اِذۡ یَقُوۡلُ اَمۡثَلُہُمۡ طَرِیۡقَۃً اِنۡ لَّبِثۡتُمۡ اِلَّا یَوۡمًا ﴿۱۰۴﴾
কানযুল ঈমান
১০৪. আমি খুব ভালভাবে জানি যা তারা বলবে যখন তাদের মধ্যে সর্বাধিক ন্যায় বিচারক ব্যক্তি বলবে, ‘তোমরা শুধু একদিন অবস্থান করেছিলে’।
ইরফানুল কুরআন
১০৪. আমরা ভালোভাবে জানি তারা যা কিছু বলবে; তাদের মধ্যে বুদ্ধিমত্তায় ও আমলে অপেক্ষাকৃত উত্তম এক ব্যক্তি বলবে, ‘তোমরা একদিনের বেশী (দুনিয়াতে) অবস্থানই করনি’।
وَ یَسۡـَٔلُوۡنَکَ عَنِ الۡجِبَالِ فَقُلۡ یَنۡسِفُہَا رَبِّیۡ نَسۡفًا ﴿۱۰۵﴾ۙ
কানযুল ঈমান
১০৫. এবং তারা আপনাকে পর্বতগুলো সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করছে। আপনি বলুন, ‘আমার রব সেগুলোকে টুকরো টুকরো করে উড়িয়ে দেবেন;
ইরফানুল কুরআন
১০৫. আর তারা আপনাকে পর্বতমালা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে, সুতরাং বলে দিন, ‘আমার প্রতিপালক এগুলোকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে বিক্ষিপ্ত করবেন’।
فَیَذَرُہَا قَاعًا صَفۡصَفًا ﴿۱۰۶﴾ۙ
কানযুল ঈমান
১০৬. অতপর যমীনকে (এমনই) মসৃণ সমতল ভূমিতে পরিণত করে ছাড়বেন
ইরফানুল কুরআন
১০৬. অতঃপর একে পরিণত করবেন সমতল ও বিরানভুমিতে।
لَّا تَرٰی فِیۡہَا عِوَجًا وَّ لَاۤ اَمۡتًا ﴿۱۰۷﴾ؕ
কানযুল ঈমান
১০৭. যে, তুমি তাতে নিচু-উচু কিছুই দেখতে পাবে না’।
ইরফানুল কুরআন
১০৭. যাতে আপনি না কোনো বক্রতা দেখবেন, আর না কোনো উচ্চতা।
یَوۡمَئِذٍ یَّتَّبِعُوۡنَ الدَّاعِیَ لَا عِوَجَ لَہٗ ۚ وَ خَشَعَتِ الۡاَصۡوَاتُ لِلرَّحۡمٰنِ فَلَا تَسۡمَعُ اِلَّا ہَمۡسًا ﴿۱۰۸﴾
কানযুল ঈমান
১০৮. সেদিন (তারা) আহ্বানকারীর পেছনে দৌড়াবে, তাঁর মধ্যে বক্রতা থাকবে না এবং সকল শব্দ পরম করুণাময়ের সামনে নিচু হয়ে থেকে যাবে; সুতরাং তুমি শুনতে পাবে না, কিন্তু অত্যন্ত মৃদু শব্দ।
ইরফানুল কুরআন
১০৮. সেদিন মানুষজন আহ্বানকারীর পশ্চাতে চলতে থাকবে, তার (অনুসরণের) মধ্যে কোনো বিচ্যুতি হবে না। আর করুণাময় (আল্লাহ্)-এঁর মহিমায় সকল আওয়াজ ক্ষীণ হয়ে যাবে। অতঃপর (হে শ্রোতা!) তুমি মৃদু গুঞ্জন ছাড়া কিছুই শুনবে না।
یَوۡمَئِذٍ لَّا تَنۡفَعُ الشَّفَاعَۃُ اِلَّا مَنۡ اَذِنَ لَہُ الرَّحۡمٰنُ وَ رَضِیَ لَہٗ قَوۡلًا ﴿۱۰۹﴾
কানযুল ঈমান
১০৯. সেদিন কারো সুপারিশ কাজে আসবে না কিন্তু তাঁরই, যাকে পরম করুণাময় অনুমতি দিয়েছেন এবং যার কথা পছন্দ করেছেন।
ইরফানুল কুরআন
১০৯. সে দিন কোনো সুপারিশ উপকারে আসবে না, তাঁর (সুপারিশ) ছাড়া যাকে অনুগ্রহশীল (আল্লাহ্) সম্মতি (ও অনুমতি) দিয়েছেন এবং যার কথার উপর তিনি সন্তুষ্ট হয়েছেন। (যেমন নবী, রাসূল, আউলিয়া, মুত্তাকী, নিষ্পাপ শিশু ও অন্যান্য আরো কয়েক প্রকারের বান্দার শাফায়াত বৈধ।)
یَعۡلَمُ مَا بَیۡنَ اَیۡدِیۡہِمۡ وَ مَا خَلۡفَہُمۡ وَ لَا یُحِیۡطُوۡنَ بِہٖ عِلۡمًا ﴿۱۱۰﴾
কানযুল ঈমান
১১০. এবং তিনি জানেন যা কিছু তাদের সামনে রয়েছে এবং যা কিছু তাদের পশ্চাতে আর তাদের জ্ঞান তাকে পরিবেষ্টিত করতে পারে না।
ইরফানুল কুরআন
১১০. তিনি ঐসব (কিছু) অবগত যা কিছু তাদের অগ্রে রয়েছে এবং যা কিছু তাদের পশ্চাতে রয়েছে। আর তারা (নিজেদের) জ্ঞান দিয়ে তাঁকে (অর্থাৎ তাঁর জ্ঞানকে) বেষ্টন করতে পারে না।
وَ عَنَتِ الۡوُجُوۡہُ لِلۡحَیِّ الۡقَیُّوۡمِ ؕ وَ قَدۡ خَابَ مَنۡ حَمَلَ ظُلۡمًا ﴿۱۱۱﴾
কানযুল ঈমান
১১১. এবং সকল মুখ ঝুকে পড়বে ওই চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী-বিশ্বের যথার্থ ব্যবস্থাপকের সম্মুখে এবং নিশ্চয় নিশ্চয় হয়ে থাকবে যে যুল্মের ভার বহন করবে।
ইরফানুল কুরআন
১১১. আর (সকল) চেহারা সে চিরঞ্জীব (এবং) বিদ্যমান (প্রতিপালক) সত্তার সমীপে ঝুঁকে যাবে। আর সে ব্যক্তিই ব্যর্থ হবে, যে যুলুমের বোঝা বহন করছে।
وَ مَنۡ یَّعۡمَلۡ مِنَ الصّٰلِحٰتِ وَ ہُوَ مُؤۡمِنٌ فَلَا یَخٰفُ ظُلۡمًا وَّ لَا ہَضۡمًا ﴿۱۱۲﴾
কানযুল ঈমান
১১২. এবং যে কিছু সৎকর্ম করে এবং হয় মুসলমান, তবে না তাঁর প্রতি অবিচারের ভয় থাকবে, না ক্ষতির।
ইরফানুল কুরআন
১১২. আর যে ব্যক্তি সৎকর্ম করছে এবং সে ঈমানদারও, তবে সে না কোনো যুলুমককে ভয় করবে আর না ক্ষতিকে।
وَ کَذٰلِکَ اَنۡزَلۡنٰہُ قُرۡاٰنًا عَرَبِیًّا وَّ صَرَّفۡنَا فِیۡہِ مِنَ الۡوَعِیۡدِ لَعَلَّہُمۡ یَتَّقُوۡنَ اَوۡ یُحۡدِثُ لَہُمۡ ذِکۡرًا ﴿۱۱۳﴾
কানযুল ঈমান
১১৩. আর এভাবেই আমি সেটাকে আরবী ক্বোরআন অবতীর্ণ করেছি এবং তাতে বিভিন্নভাবে শাস্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, যাতে তারা ভয় করে কিংবা তাদের অন্তরে কিছু চিন্তা ভাবনা সৃষ্টি করে।
ইরফানুল কুরআন
১১৩. আর এভাবে আমরা একে (এ সর্বশেষ ওহীকে) আরবী ভাষায় কুরআন (আকারে) অবতীর্ণ করেছি আর আমরা তাতে (শাস্তিকে) ভয় করার বিষয়ে (বিভিন্ন পন্থায়) বারংবার বর্ণনা করেছি যাতে তারা পরহেযগার হয় অথবা (এ কুরআন) তাদের (অন্তরের) মধ্যে (আখেরাতের) স্মরণ (অথবা উপদেশ গ্রহণের প্রবল আগ্রহ) সৃষ্টি করে।
فَتَعٰلَی اللّٰہُ الۡمَلِکُ الۡحَقُّ ۚ وَ لَا تَعۡجَلۡ بِالۡقُرۡاٰنِ مِنۡ قَبۡلِ اَنۡ یُّقۡضٰۤی اِلَیۡکَ وَحۡیُہٗ ۫ وَ قُلۡ رَّبِّ زِدۡنِیۡ عِلۡمًا ﴿۱۱۴﴾
কানযুল ঈমান
১১৪. অতঃপর সর্বাধিক মহান হন আল্লাহ্, সত্য বাদশাহ। আর, ক্বোরআনে ত্বরা করবেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত তাঁর ওহী আপনার প্রতি সম্পূর্ণ না হয় এবং আরয করুন, ‘হে আমার রব ! আমাকে জ্ঞান বেশি দাও’।
ইরফানুল কুরআন
১১৪. সুতরাং আল্লাহ্ উচ্চমর্যাদা সম্পন্ন, তিনিই প্রকৃত বাদশাহ্। আর আপনার প্রতি পুরোপুরি ওহী অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বে আপনি কুরআন (পাঠের) বিষয়ে তাড়াহুড়ো করবেন না। আর আপনি (প্রতিপালকের সমীপে এ) আরয করুন: ‘হে আমার প্রতিপালক! আমার জ্ঞান আরো বাড়িয়ে দিন।’
وَ لَقَدۡ عَہِدۡنَاۤ اِلٰۤی اٰدَمَ مِنۡ قَبۡلُ فَنَسِیَ وَ لَمۡ نَجِدۡ لَہٗ عَزۡمًا ﴿۱۱۵﴾
কানযুল ঈমান
১১৫. এবং নিশ্চয় আমি আদমকে ইতোপূর্বে তাকীদ সহকারে একটা নির্দেশ দিয়েছিলাম। অতঃপর সে তা ভুলে গেলো এবং আমি তাতে আর ইচ্ছা পাই নি।
ইরফানুল কুরআন
১১৫. আর প্রকৃতপক্ষে আমরা এর (অনেক) পূর্বে আদম (আলাইহিস সালাম)-কে কঠোর নির্দেশ প্রদান করেছিলাম, কিন্তু তিনি ভুলে গিয়েছিলেন। আর আমরা তাঁর মধ্যে কোনোক্রমে (অবাধ্যতার) কোনো অভিপ্রায় লক্ষ্য করিনি। (এটি কেবলই একটি ভুল ছিল।)
وَ اِذۡ قُلۡنَا لِلۡمَلٰٓئِکَۃِ اسۡجُدُوۡا لِاٰدَمَ فَسَجَدُوۡۤا اِلَّاۤ اِبۡلِیۡسَ ؕ اَبٰی ﴿۱۱۶﴾
কানযুল ঈমান
১১৬. এবং যখন আমি ফিরিশ্তাদেরকে বললাম ‘আদমকে সাজদা করো’। তখন সবাই সাজদাবনত হলো, কিন্তু ইবলীস; সে মানলো না!
ইরফানুল কুরআন
১১৬. আর (স্মরণ করুন সে সময়ের কথা) যখন আমরা ফেরেশতাদেরকে বলেছিলাম, ‘আদম (আলাইহিস সালাম)-কে সেজদা করো’, তখন ইবলীস ব্যতীত সবাই সেজদা করলো। সে অস্বীকার করলো।
فَقُلۡنَا یٰۤـاٰدَمُ اِنَّ ہٰذَا عَدُوٌّ لَّکَ وَ لِزَوۡجِکَ فَلَا یُخۡرِجَنَّکُمَا مِنَ الۡجَنَّۃِ فَتَشۡقٰی ﴿۱۱۷﴾
কানযুল ঈমান
১১৭. (অতঃপর) আমি বললাম ‘হে আদম! নিশ্চয় এ তোমার ও তোমার স্ত্রীর শত্রু। সুতরাং এমন যেন না হয় যে, সে তোমাদের দু’জনকে জান্নাত থেকে বের করে দেবে, অতঃপর তুমি কষ্টে পড়বে’।
ইরফানুল কুরআন
১১৭. অতঃপর আমরা বললাম, ‘হে আদম! নিশ্চয়ই এ (শয়তান) তোমার এবং তোমার স্ত্রীর দুশমন। সুতরাং সে যেন তোমাদেরকে জান্নাত থেকে বের করে না দেয়। তাহলে তোমরা কষ্টে পতিত হবে।’
اِنَّ لَکَ اَلَّا تَجُوۡعَ فِیۡہَا وَ لَا تَعۡرٰی ﴿۱۱۸﴾ۙ
কানযুল ঈমান
১১৮. নিশ্চয় তোমার জন্য জান্নাতের মধ্যে এটা রয়েছে যে, না তুমি ক্ষুধার্ত হবে, না নগ্ন;
ইরফানুল কুরআন
১১৮. নিশ্চয়ই তোমার জন্যে এ (জান্নাত) অঙ্গনে এ (স্বস্তি) রয়েছে যে, তুমি ক্ষুধার্তও হবে না এবং বিবস্ত্রও হবে না।
وَ اَنَّکَ لَا تَظۡمَؤُا فِیۡہَا وَ لَا تَضۡحٰی ﴿۱۱۹﴾
কানযুল ঈমান
১১৯. এবং এ যে, তাতে না তোমার পিপাসা হবে, না রোদের তাপ (অনুভূত হবে)’।
ইরফানুল কুরআন
১১৯. আর এ যে, এখানে তুমি পিপাসার্তও হবে না এবং রৌদ্র-ক্লিষ্টও হবে না।
فَوَسۡوَسَ اِلَیۡہِ الشَّیۡطٰنُ قَالَ یٰۤـاٰدَمُ ہَلۡ اَدُلُّکَ عَلٰی شَجَرَۃِ الۡخُلۡدِ وَ مُلۡکٍ لَّا یَبۡلٰی ﴿۱۲۰﴾
কানযুল ঈমান
১২০. অতপর শয়তান তাকে কুমন্ত্রনা দিলো- বললো, ‘হে আদম! আমি কি তোমাকে বলে দেবো চিরস্থায়ী জীবন বৃক্ষের কথা এবং ওই বাদশাহীর কথা, যা পুরাতন হবে না?’
ইরফানুল কুরআন
১২০. অতঃপর শয়তান তাকে (এক) ধারণা দিল; সে বললো, ‘হে আদম! আমি কি তোমাকে (আল্লাহ্র নিকটবর্তী জান্নাতে) অনন্ত জীবনপ্রদ বৃক্ষের কথা বলবো এবং (স্বর্গীয়) রাজত্ব (লাভের গোপন কথাও) যা অফুরন্ত, অক্ষয়?’
فَاَکَلَا مِنۡہَا فَبَدَتۡ لَہُمَا سَوۡاٰتُہُمَا وَ طَفِقَا یَخۡصِفٰنِ عَلَیۡہِمَا مِنۡ وَّرَقِ الۡجَنَّۃِ ۫ وَ عَصٰۤی اٰدَمُ رَبَّہٗ فَغَوٰی ﴿۱۲۱﴾۪ۖ
কানযুল ঈমান
১২১. অতঃপর তারা দু’জন তা থেকে ভক্ষণ করলো, লজ্জার বস্তুসমূহ প্রকাশ হয়ে পড়লো। আর জান্নাতের গাছের পাতা দিয়ে নিজেদেরকে আবৃত করতে লাগলো এবং আদম থেকে আপন রবের নির্দেশের ক্ষেত্রে পদস্থুলন ঘটলো; তখন যে উদ্দেশ্য চেয়েছিলো সেটার পথ পায় নি।
ইরফানুল কুরআন
১২১. সুতরাং উভয়ে (আল্লাহ্র নিকটবর্তী অনন্ত জীবনের প্রবল আগ্রহে) সে বৃক্ষের ফল ভক্ষণ করলেন। অতঃপর তাদের লজ্জাস্থান তাদের নিকট প্রকাশ হয়ে পড়লো এবং উভয়ে তাদের (শরীরের) উপর জান্নাতের (বৃক্ষ) পত্র জড়াতে লাগলেন। আর আদম (আলাইহিস সালাম) তাঁর প্রতিপালকের নির্দেশ (বুঝতে) ভুল করলেন।* সুতরাং তিনি (জান্নাতে অনন্ত জীবনের) লক্ষ্য অর্জন করতে পারলেন না।* নিষেধাজ্ঞা কেবল এক নির্দিষ্ট বৃক্ষের ছিল অথবা পুরো এক ধরণের বৃক্ষের ছিল। কেননা আদম আলাইহিস সালাম এ বিশেষ বৃক্ষের ফল ভক্ষণ করেননি বরং একই প্রকারের অন্য আরেকটি গাছ থেকে খেয়েছিলেন, এ কথা মনে করে যে, হয়ত নিষেধাজ্ঞা কেবল এক বিশেষ গাছের ছিল।
ثُمَّ اجۡتَبٰہُ رَبُّہٗ فَتَابَ عَلَیۡہِ وَ ہَدٰی ﴿۱۲۲﴾
কানযুল ঈমান
১২২. অতঃপর তাঁর রব তাকে মনোনীত করলেন; তাঁরপর তাঁর দিকে কৃপা দৃষ্টি ফেরালেন এবং আপন বিশেষ নৈকট্যের পথ প্রদর্শন করলেন।
ইরফানুল কুরআন
১২২. অতঃপর তাঁর প্রতিপালক (নিজের নৈকট্য ও নবুয়্যতের জন্যে) তাঁকে মনোনীত করলেন এবং তাঁর প্রতি (ক্ষমা ও অনুগ্রহপূর্ণ বিশেষ) মনোনিবেশ প্রদান করলেন এবং অভীষ্ট লক্ষ্যের পথ দেখালেন।
قَالَ اہۡبِطَا مِنۡہَا جَمِیۡعًۢا بَعۡضُکُمۡ لِبَعۡضٍ عَدُوٌّ ۚ فَاِمَّا یَاۡتِیَنَّکُمۡ مِّنِّیۡ ہُدًی ۬ۙ فَمَنِ اتَّبَعَ ہُدَایَ فَلَا یَضِلُّ وَ لَا یَشۡقٰی ﴿۱۲۳﴾
কানযুল ঈমান
১২৩. (তিনি) বললেন, ‘তোমরা উভয়ে এক সাথে জান্নাত থেকে নেমে যাও! তোমরা একে অপরের শত্রু। অতঃপর যদি তোমাদের সবার নিকট আমার পক্ষ থেকে সৎপথের নির্দেশ আসে, তবে যে আমার হিদায়তের অনুসারী হয় সে না বিপথগামী হবে, না হতভাগ্য।
ইরফানুল কুরআন
১২৩. ইরশাদ হলো, ‘তোমরা সকলে এখান থেকে নেমে যাও; তোমরা পরস্পর পরস্পরের শত্রু। এরপর যখন আমার পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট (প্রত্যাদেশসূচক) কোনো হেদায়াত আসবে, যে ব্যক্তি আমার হেদায়াতের অনুসরণ করবে, সে না (দুনিয়াতে) গোমরাহ্ হবে, আর না (পরকালে) দুর্ভাগা হবে।
وَ مَنۡ اَعۡرَضَ عَنۡ ذِکۡرِیۡ فَاِنَّ لَہٗ مَعِیۡشَۃً ضَنۡکًا وَّ نَحۡشُرُہٗ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ اَعۡمٰی ﴿۱۲۴﴾
কানযুল ঈমান
১২৪. আর যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তবে তাঁর জন্য রয়েছে সংকুচিত জীবন যাপন এবং আমি তাকে ক্বিয়ামতে অন্ধ অবস্থায় উঠাবো’।
ইরফানুল কুরআন
১২৪. আর যে আমার নির্দেশনা (অর্থাৎ আমার স্মরণ ও উপদেশ) থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার পার্থিব জীবিকাও সংকীর্ণ করে দেয়া হবে এবং আমরা তাকে কিয়ামতের দিনে(ও) অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করবো।’
قَالَ رَبِّ لِمَ حَشَرۡتَنِیۡۤ اَعۡمٰی وَ قَدۡ کُنۡتُ بَصِیۡرًا ﴿۱۲۵﴾
কানযুল ঈমান
১২৫. সে বলবে, হে আমার রব! আমাকে তুমি কেন অন্ধ অবস্থায় উঠালে? আমি তো চক্ষুষ্মান ছিলাম’!
ইরফানুল কুরআন
১২৫. সে বলবে, ‘হে আমার প্রতিপালক! তুমি কেন (আজ) আমাকে অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করলে, অথচ আমি (দুনিয়াতে) ছিলাম চক্ষুষ্মান?’
قَالَ کَذٰلِکَ اَتَتۡکَ اٰیٰتُنَا فَنَسِیۡتَہَا ۚ وَکَذٰلِکَ الۡیَوۡمَ تُنۡسٰی ﴿۱۲۶﴾
কানযুল ঈমান
১২৬. তিনি বলবেন, ‘এভাবেই তোমার নিকট আমার নিদর্শনসমূহ এসেছিলো, তুমি সেগুলো ভুলে গিয়েছো এবং অনুরূপভাবেই আজ কেউ তোমার খোজ খবর নেবে না।
ইরফানুল কুরআন
১২৬. ইরশাদ হবে, ‘এভাবেই (দুনিয়াতে) তোমার নিকট আমাদের নিদর্শনাবলী এসেছিল, আর তুমি সেগুলো ভুলে গিয়েছিলে এবং আজ সেভাবেই তোমাকে(ও) ভুলে যাওয়া হবে।’
وَ کَذٰلِکَ نَجۡزِیۡ مَنۡ اَسۡرَفَ وَ لَمۡ یُؤۡمِنۡۢ بِاٰیٰتِ رَبِّہٖ ؕ وَ لَعَذَابُ الۡاٰخِرَۃِ اَشَدُّ وَ اَبۡقٰی ﴿۱۲۷﴾
কানযুল ঈমান
১২৭. আর আমি এভাবেই প্রতিফল দিই তাকে, যে সীমাতিক্রম করেছে এবং আপন রবের নিদর্শনসমূহের উপর ঈমান আনে নি; এবং নিঃসন্দেহে পরকালের শাস্তি সর্বাপেক্ষা কঠিন এবং সর্বাধিক স্থায়ী।
ইরফানুল কুরআন
১২৭. আর এভাবেই আমরা সে ব্যক্তির প্রতিফল দেই, যে (গোনাহে) সীমালঙ্ঘন করে এবং তার প্রতিপালকের নিদর্শনে বিশ্বাস স্থাপন করে না। আর পরকালের শাস্তি তো অবশ্যই বড় কঠিন এবং চিরস্থায়ী।
اَفَلَمۡ یَہۡدِ لَہُمۡ کَمۡ اَہۡلَکۡنَا قَبۡلَہُمۡ مِّنَ الۡقُرُوۡنِ یَمۡشُوۡنَ فِیۡ مَسٰکِنِہِمۡ ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیٰتٍ لِّاُولِی النُّہٰی ﴿۱۲۸﴾
কানযুল ঈমান
১২৮. তবে কি তাদের এটা থেকে সৎপথ পাওয়া গেলো না যে, আমি তাদের পূর্বে কতো জনগোষ্ঠীকে ধ্বংস করেছি, যাদের বসবাসের স্থানে এরা বিচরণ করছে? নিঃসন্দেহে তাতে নিদর্শনসমূহ রয়েছে বিবেকবানদের জন্য।
ইরফানুল কুরআন
১২৮. তাদেরকে কি (এ বিষয়টি) হেদায়াত প্রদান করেনি যে, আমরা তাদের পূর্বে কতো মানবগোষ্ঠীকে ধ্বংস করে দিয়েছি, যাদের আবাসস্থলে (এখন) এরা বিচরণ করছে? নিশ্চয়ই এতে বুদ্ধিমানদের জন্যে রয়েছে (বহু) নিদর্শন।
وَ لَوۡ لَا کَلِمَۃٌ سَبَقَتۡ مِنۡ رَّبِّکَ لَکَانَ لِزَامًا وَّ اَجَلٌ مُّسَمًّی ﴿۱۲۹﴾ؕ
কানযুল ঈমান
১২৯. এবং যদি আপনার রবের একটা বাণী (চূড়ান্তভাবে) গত না হতো, তবে অবশ্যই শাস্তি তাদেরকে জড়িয়ে ফেলতো এবং যদি না থাকতো একটা নির্ধারিত প্রতিশ্রুতি (তবেও)।
ইরফানুল কুরআন
১২৯. আর যদি আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে পূর্বেই তা নির্ধারিত না থাকতো এবং (তাদের শাস্তির জন্যে কিয়ামতের) সময় নির্ধারিত না হতো, তবে (এখনই তাদের প্রতি শাস্তি অবতীর্ণ) আবশ্যক হয়ে যেতো।
فَاصۡبِرۡ عَلٰی مَا یَقُوۡلُوۡنَ وَ سَبِّحۡ بِحَمۡدِ رَبِّکَ قَبۡلَ طُلُوۡعِ الشَّمۡسِ وَ قَبۡلَ غُرُوۡبِہَا ۚ وَ مِنۡ اٰنَآیِٔ الَّیۡلِ فَسَبِّحۡ وَ اَطۡرَافَ النَّہَارِ لَعَلَّکَ تَرۡضٰی ﴿۱۳۰﴾
কানযুল ঈমান
১৩০. সুতরাং আপনি ওই সব লোকের কথার উপর ধৈর্যধারণ করুন এবং আপন রবের প্রশংসা সহকারে তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করুন সূর্যোদয়ের পূর্বে এবং তা অস্তমিত হবার পূর্বে; আর রাতের মুহূর্তগুলোতে তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করুন এবং দিনের প্রান্তগুলোতে, এ আশায় যে, আপনি সন্তুষ্ট হবেন।
ইরফানুল কুরআন
১৩০. অতঃপর আপনি তাদের (হৃদয় বিদারক) কথায় ধৈর্য ধারণ করুন এবং আপনার প্রতিপালকের সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করুন; সূর্যোদয়ের পূর্বে (ফযর নামাযে) এবং সূর্যাস্তের পূর্বে (আসর নামাযে)। আর রাতের প্রথম প্রহরেও (অর্থাৎ মাগরিব এবং এশায়) পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করুন; আর দিবসের দ্বিপ্রহরেও (যোহর নামাযে, যখন দিনের প্রথম অর্ধাংশ শেষ এবং দ্বিতীয় অর্ধাংশ শুরু হয়। হে সম্মানিত হাবীব! এ সকল কিছু এ জন্যে যে) যাতে আপনি সন্তুষ্ট হতে পারেন।
وَ لَا تَمُدَّنَّ عَیۡنَیۡکَ اِلٰی مَا مَتَّعۡنَا بِہٖۤ اَزۡوَاجًا مِّنۡہُمۡ زَہۡرَۃَ الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا ۬ۙ لِنَفۡتِنَہُمۡ فِیۡہِ ؕ وَ رِزۡقُ رَبِّکَ خَیۡرٌ وَّ اَبۡقٰی ﴿۱۳۱﴾
কানযুল ঈমান
১৩১. এবং হে শ্রোতা! তোমার চক্ষুদ্বয় কখনো প্রসারিত করো না সেটার দিকে, যা আমি কাফিরদের জোড়াগুলোকে ভোগ করার জন্য দিয়েছি পার্থিব জীবনের সজীবতা স্বরূপ; এজন্য যে, আমি তাদেরকে এরই কারণে পরীক্ষায় ফেলবো এবং তোমার রবের রিয্ক্ব সর্বাপেক্ষা উত্তম ও সর্বাধিক স্থায়ী।
ইরফানুল কুরআন
১৩১. আর আপনি পার্থিব জীবনে সৌন্দর্য ও সাজ-সজ্জার সেসব উপকরণের প্রতি বিষ্ময়াভিভুত দৃষ্টি দেবেন না, যেগুলো আমরা কতক শ্রেণীর (কাফের দুনিয়াদার) লোককে (ক্ষণস্থায়ী) ভোগ বিলাসের জন্যে দিয়েছি, যাতে আমরা এতে (এসব বিষয়ে) তাদেরকে পরীক্ষা করতে পারি। আর আপনার প্রতিপালকের (পরকালীন) জীবনোপকরণ উত্তম এবং চিরস্থায়ী।
وَ اۡمُرۡ اَہۡلَکَ بِالصَّلٰوۃِ وَ اصۡطَبِرۡ عَلَیۡہَا ؕ لَا نَسۡـَٔلُکَ رِزۡقًا ؕ نَحۡنُ نَرۡزُقُکَ ؕ وَ الۡعَاقِبَۃُ لِلتَّقۡوٰی ﴿۱۳۲﴾
কানযুল ঈমান
১৩২. এবং আপন পরিবারবর্গকে নামাযের আদেশ দাও এবং নিজেও সেটার উপর অবিচল থাকো। আমি তোমার নিকট কোন জীবিকা চাই না; আমি তোমাকে জীবিকা দেবো; এবং শুভ পরিণাম খোদা ভীরুতার জন্য।
ইরফানুল কুরআন
১৩২. আর আপনি আপনার পরিবারবর্গকে নামাযের নির্দেশ দিন এবং এর উপর সুদৃঢ় থাকুন। আমরা আপনার নিকট রিযিক চাই না, (বরং) আমরা আপনাকে রিযিক দেই। আর খোদাভীরুতারই রয়েছে উত্তম পরিণতি।
وَ قَالُوۡا لَوۡ لَا یَاۡتِیۡنَا بِاٰیَۃٍ مِّنۡ رَّبِّہٖ ؕ اَوَ لَمۡ تَاۡتِہِمۡ بَیِّنَۃُ مَا فِی الصُّحُفِ الۡاُوۡلٰی ﴿۱۳۳﴾
কানযুল ঈমান
১৩৩. এবং কাফিরগণ বললো, ‘ইনি আপন রবের নিকট থেকে কোন নিদর্শন কেন নিয়ে আসছেন না?’ তাদের নিকট কি এর বিবরণ আসে নি, যা পূর্ববর্তী সহীফাসমূহে রয়েছে?
ইরফানুল কুরআন
১৩৩. আর (কাফেরেরা) বলে, ‘এ (রাসূল) তাঁর প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আমাদের নিকট কোনো নিদর্শন কেন নিয়ে আসে না?’ তাদের নিকট কি এ বিষয়ের সুস্পষ্ট প্রমাণ (অর্থাৎ কুরআন) আসেনি, যা পূর্ববর্তী কিতাবসমূহে (উল্লেখিত) রয়েছে?
وَ لَوۡ اَنَّـاۤ اَہۡلَکۡنٰہُمۡ بِعَذَابٍ مِّنۡ قَبۡلِہٖ لَقَالُوۡا رَبَّنَا لَوۡ لَاۤ اَرۡسَلۡتَ اِلَیۡنَا رَسُوۡلًا فَنَتَّبِعَ اٰیٰتِکَ مِنۡ قَبۡلِ اَنۡ نَّذِلَّ وَ نَخۡزٰی ﴿۱۳۴﴾
কানযুল ঈমান
১৩৪. এবং যদি আমি তাদেরকে কোন শাস্তি দ্বারা ধ্বংস করে দিতাম রসূল আসার পূর্বে, তবে তারা অবশ্যই বলতো, ‘হে আমাদের রব! তুমি আমাদের প্রতি কোন রসূল কেন প্রেরণ করো নি, যাতে আমরা চলতাম লাঞ্ছিত ও অমানিত হওয়ার পূর্বে।
ইরফানুল কুরআন
১৩৪. আর যদি আমরা এ লোকদেরকে এর পূর্বে(ই) কোনো শাস্তি দ্বারা ধ্বংস করে দিতাম, তখন তারা বলতো, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি আমাদের নিকট কেন কোনো রাসূল প্রেরণ করোনি, তাহলে আমরা লাঞ্ছিত ও অপমানিত হওয়ার পূর্বেই তোমার আয়াতসমূহের আনুগত্য করতে পারতাম?’
قُلۡ کُلٌّ مُّتَرَبِّصٌ فَتَرَبَّصُوۡا ۚ فَسَتَعۡلَمُوۡنَ مَنۡ اَصۡحٰبُ الصِّرَاطِ السَّوِیِّ وَ مَنِ اہۡتَدٰی ﴿۱۳۵﴾
কানযুল ঈমান
১৩৫. আপনি বলুন! ‘প্রত্যেকেই প্রতীক্ষা করছে, সুতরাং তোমরা প্রতীক্ষা করো; তবে অবিলম্বে জেনে যাবে কারা হচ্ছে সরল পথের এবং কে হিদায়ত পেয়েছে’।
ইরফানুল কুরআন
১৩৫. বলে দিন, ‘প্রত্যেকেই অপেক্ষমান, সুতরাং তোমরা অপেক্ষা করতে থাকো, অতঃপর তোমরা সত্বরই জানতে পারবে কোন ব্যক্তি সঠিক পথে এবং কোন ব্যক্তি হেদায়াত প্রাপ্ত।’