بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
কানযুল ঈমান
০. আল্লাহ্র নামে আরম্ভ, যিনি পরম দয়ালু, করুণাময় (১)
ইরফানুল কুরআন
০. আল্লাহর নামে শুরু, যিনি পরম করুণাময়, সতত অসীম দয়ালু।
الٓرٰ ۟ تِلۡکَ اٰیٰتُ الۡکِتٰبِ الۡمُبِیۡنِ ۟﴿۱﴾
কানযুল ঈমান
১. আলিফ লা---ম রা-; এগুলো সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত।
ইরফানুল কুরআন
১. আলিফ-লাম-রা (প্রকৃত অর্থ আল্লাহ তা’আলা এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামই অধিক অবগত)। এগুলো আলোকোজ্জ্বল কিতাবের আয়াতসমূহ।
اِنَّاۤ اَنۡزَلۡنٰہُ قُرۡءٰنًا عَرَبِیًّا لَّعَلَّکُمۡ تَعۡقِلُوۡنَ ﴿۲﴾
কানযুল ঈমান
২. নিশ্চয়, আমি সেটাকে আরবী ক্বোরআন অবতীর্ণ করেছি, যাতে তোমরা বুঝতে পারো।
ইরফানুল কুরআন
২. নিশ্চয়ই আমরা এ কিতাব কুরআনের আকারে আরবী ভাষায় অবতীর্ণ করেছি, যাতে তোমরা (এ কুরআন সরাসরি) বুঝতে পারো।
نَحۡنُ نَقُصُّ عَلَیۡکَ اَحۡسَنَ الۡقَصَصِ بِمَاۤ اَوۡحَیۡنَاۤ اِلَیۡکَ ہٰذَا الۡقُرۡاٰنَ ٭ۖ وَ اِنۡ کُنۡتَ مِنۡ قَبۡلِہٖ لَمِنَ الۡغٰفِلِیۡنَ ﴿۳﴾
কানযুল ঈমান
৩. আমি আপনাকে সর্বোত্তম বর্ণনা শুনাচ্ছি এজন্য যে, আমি আপনার প্রতি এ ক্বোরআনের ওহী প্রেরণ করেছি; যদিও নিশ্চয় ইতোপূর্বে আপনার নিকট খবর ছিলো না।
ইরফানুল কুরআন
৩. (হে হাবীব!) আমরা আপনাকে এক সর্বোৎকৃষ্ট ঘটনা বর্ণনা করছি এ কুরআনের মাধ্যমে, যা আমরা আপনার প্রতি প্রত্যাদেশ করেছি। যদিও আপনি এরপূর্বে (এ ঘটনা সম্পর্কে) অনবহিত ছিলেন।
اِذۡ قَالَ یُوۡسُفُ لِاَبِیۡہِ یٰۤاَبَتِ اِنِّیۡ رَاَیۡتُ اَحَدَعَشَرَ کَوۡکَبًا وَّ الشَّمۡسَ وَ الۡقَمَرَ رَاَیۡتُہُمۡ لِیۡ سٰجِدِیۡنَ ﴿۴﴾
কানযুল ঈমান
৪. স্মরণ করুন! যখন ইয়ূসুফ তার পিতাকে বললো, ‘হে আমার পিতা! আমি এগারটা নক্ষত্র, সূর্য ও চন্দ্র দেখেছি, সেগুলোকে আমার জন্য সাজদা করতে দেখেছি।
ইরফানুল কুরআন
৪. (সে ঘটনা এই যে,) যখন ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) তাঁর পিতাকে বললেন, ‘হে আমার সম্মানিত পিতা! আমি (স্বপ্নে) এগারোটি তারকা, একটি সূর্য এবং একটি চন্দ্র দেখেছি; আমি এগুলোকে দেখেছি আমার প্রতি সেজদাবনত।’
قَالَ یٰبُنَیَّ لَا تَقۡصُصۡ رُءۡیَاکَ عَلٰۤی اِخۡوَتِکَ فَیَکِیۡدُوۡا لَکَ کَیۡدًا ؕ اِنَّ الشَّیۡطٰنَ لِلۡاِنۡسَانِ عَدُوٌّ مُّبِیۡنٌ ﴿۵﴾
কানযুল ঈমান
৫. বললো, ‘হে আমার পুত্র! তোমার স্বপ্ন আপন ভাইদের নিকট বর্ণনা করো না। তারা তোমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবে। নিশ্চয় শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু।
ইরফানুল কুরআন
৫. তিনি বললেন, ‘হে আমার পুত্র! তোমার এ স্বপ্ন তোমার ভাইদের কাছে বর্ণনা করো না; নচেৎ তারা তোমার বিরুদ্ধে চক্রান্তের চাল চালবে। নিশ্চয়ই শয়তান মানুষের প্রকাশ্য দুশমন।
وَ کَذٰلِکَ یَجۡتَبِیۡکَ رَبُّکَ وَ یُعَلِّمُکَ مِنۡ تَاۡوِیۡلِ الۡاَحَادِیۡثِ وَ یُتِمُّ نِعۡمَتَہٗ عَلَیۡکَ وَ عَلٰۤی اٰلِ یَعۡقُوۡبَ کَمَاۤ اَتَمَّہَا عَلٰۤی اَبَوَیۡکَ مِنۡ قَبۡلُ اِبۡرٰہِیۡمَ وَ اِسۡحٰقَ ؕ اِنَّ رَبَّکَ عَلِیۡمٌ حَکِیۡمٌ ﴿۶﴾
কানযুল ঈমান
৬. এবং এভাবে তোমাকে তোমার রব মনোনীত করবেন আর তোমার কথার পরিণাম বের করা শিক্ষা দেবেন; এবং তোমার উপর আপন অনুগ্রহ পূর্ণ করবেন আর ইয়া’কূবের পরিবার পরিজনের উপরও, যেভাবে তোমার পূর্বে তোমার পিতা ও পিতামহ ইব্রাহীম ও ইসহাক্ব উভয়ের উপর তা পূর্ণ করেছেন। নিশ্চয়ই তোমার রব সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
ইরফানুল কুরআন
৬. এভাবে তোমার প্রতিপালক তোমাকে (সম্মানজনক অবস্থানে) মনোনীত করবেন এবং তোমাকে বাণীর পরিণাম ব্যাখ্যা করা (অর্থাৎ স্বপ্নের ব্যাখ্যার জ্ঞান) শিক্ষা দেবেন। আর তোমার প্রতি এবং ইয়াকুবের সন্তান-সন্ততির প্রতি তাঁর নিয়ামত পূর্ণ করবেন, যেভাবে তিনি ইতোপূর্বে তোমার পিতৃপুরুষ (অর্থাৎ প্রপিতামহ ও পিতামহ) ইবরাহীম ও ইসহাক (আলাইহিমাস সালাম)-এঁর প্রতি পূর্ণ করেছিলেন। নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক খুবই পরিজ্ঞাত, বড়ই প্রজ্ঞাময়।
لَقَدۡ کَانَ فِیۡ یُوۡسُفَ وَ اِخۡوَتِہٖۤ اٰیٰتٌ لِّلسَّآئِلِیۡنَ ﴿۷﴾
কানযুল ঈমান
৭. নিশ্চয় ইয়ূসুফ এবং তার ভাইদের মধ্যে জিজ্ঞাসা কারীদের জন্য বহু নিদর্শন রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৭. নিশ্চয়ই ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) এবং তাঁর ভাইদের (ঘটনার) মধ্যে অনুসন্ধিৎসুদের জন্যে (অনেক) নিদর্শন রয়েছে।
اِذۡ قَالُوۡا لَیُوۡسُفُ وَ اَخُوۡہُ اَحَبُّ اِلٰۤی اَبِیۡنَا مِنَّا وَ نَحۡنُ عُصۡبَۃٌ ؕ اِنَّ اَبَانَا لَفِیۡ ضَلٰلٍ مُّبِیۡنِۣ ۚ﴿ۖ۸﴾
কানযুল ঈমান
৮. যখন তারা বললো, ‘অবশ্যই ইয়ূসুফ ও তার ভাই আমাদের পিতার নিকট আমাদের চেয়ে অধিক প্রিয় অথচ আমরা একটা দল, নিশ্চয় আমাদের পিতা স্পষ্টতঃ তাদের ভালোবাসায় নিমজ্জিত রয়েছেন।
ইরফানুল কুরআন
৮. (সে সময়ের কথা স্মরণ করুন) যখন ইউসুফ (আলাইহিস সালাম)-এঁর ভাইয়েরা বললো, ‘অবশ্যই ইউসুফ ও তাঁর ভাই আমাদের পিতার নিকট অধিকতর প্রিয়। অথচ আমরা (দশ সদস্যবিশিষ্ট) শক্তিশালী দল। নিশ্চয়ই আমাদের পিতা (তাঁর ভালোবাসায়) সুস্পষ্ট আত্মবিস্মৃতির বিভ্রান্তিতে রয়েছেন।
اقۡتُلُوۡا یُوۡسُفَ اَوِ اطۡرَحُوۡہُ اَرۡضًا یَّخۡلُ لَکُمۡ وَجۡہُ اَبِیۡکُمۡ وَ تَکُوۡنُوۡا مِنۡۢ بَعۡدِہٖ قَوۡمًا صٰلِحِیۡنَ ﴿۹﴾
কানযুল ঈমান
৯. ইয়ূসুফকে মেরে ফেলো অথবা অন্য কোথাও যমীনে ফেলে এসো, এতে তোমাদের পিতার দৃষ্টি শুধু তোমাদের দিকেই থাকবে এবং এরপর যেনো তোমরা আবার ভালো লোক হয়ে যাও!’
ইরফানুল কুরআন
৯. (এখন সমাধান এই যে,) তোমরা ইউসুফ (আলাইহিস সালাম)-কে হত্যা করো অথবা দূরে কোনো অপরিচিত স্থানে নির্বাসন দাও, (এভাবে) তোমাদের পিতার মনোনিবেশ বিশেষভাবে তোমাদের প্রতি নিবিষ্ট হবে। আর এরপর তোমরা (তওবা করে) সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।’
قَالَ قَآئِلٌ مِّنۡہُمۡ لَا تَقۡتُلُوۡا یُوۡسُفَ وَ اَلۡقُوۡہُ فِیۡ غَیٰبَتِ الۡجُبِّ یَلۡتَقِطۡہُ بَعۡضُ السَّیَّارَۃِ اِنۡ کُنۡتُمۡ فٰعِلِیۡنَ ﴿۱۰﴾
কানযুল ঈমান
১০. তাদের মধ্যে একজন বক্তা বললো, ‘ইয়ূসুফকে হত্যা করো না এবং তাকে গভীর কূপের মধ্যে নিক্ষেপ করো, যাতে কোন যাত্রী এসে তাকে নিয়ে যায়, যদি তোমরা কিছু করতে চাও’।
ইরফানুল কুরআন
১০. তাদের মধ্যে একজন আলোচক বললো, ‘ইউসুফ (আলাইহিস সালাম)-কে হত্যা করো না, বরং তাঁকে কোনো অন্ধকার কূপের গভীরে নিক্ষেপ করো। কোনো মুসাফির পথিক তাঁকে উঠিয়ে নিয়ে যাবে। যদি তোমরা (কিছু) করতেই চাও (তবে এটি করো)।’
قَالُوۡا یٰۤاَبَانَا مَا لَکَ لَا تَاۡمَنَّا عَلٰی یُوۡسُفَ وَ اِنَّا لَہٗ لَنٰصِحُوۡنَ ﴿۱۱﴾
কানযুল ঈমান
১১. বললো, ‘হে আমাদের পিতা! আপনার কি হয়েছে যে, ইয়ূসুফের ব্যাপারে আমাদেরকে বিশ্বাস করছেন না? অথচ আমরা তো তার শুভাকাঙ্ক্ষী।
ইরফানুল কুরআন
১১. তারা বললো, ‘হে আমাদের পিতা! আপনার কি হলো যে, আপনি ইউসুফ (আলাইহিস সালাম)-এঁর ব্যাপারে আমাদের উপর ভরসা করছেন না, যদিও আমরা তাঁর হিতাকাঙ্ক্ষী।
اَرۡسِلۡہُ مَعَنَا غَدًا یَّرۡتَعۡ وَ یَلۡعَبۡ وَ اِنَّا لَہٗ لَحٰفِظُوۡنَ ﴿۱۲﴾
কানযুল ঈমান
১২. আগামীকাল তাকে আমাদের সাথে প্রেরণ করুন, সে ফলমূল খাবে ও খেলাধূলা করবে এবং নিশ্চয় আমরা তার রক্ষণাবেক্ষণকারী’।
ইরফানুল কুরআন
১২. আপনি তাঁকে আগামীকাল আমাদের সাথে প্রেরণ করুন, সে তৃপ্তিসহকারে খাবে এবং খেলাধুলা করবে; আর নিশ্চয়ই আমরা তাঁর রক্ষণাবেক্ষণকারী।’
قَالَ اِنِّیۡ لَیَحۡزُنُنِیۡۤ اَنۡ تَذۡہَبُوۡا بِہٖ وَ اَخَافُ اَنۡ یَّاۡکُلَہُ الذِّئۡبُ وَ اَنۡتُمۡ عَنۡہُ غٰفِلُوۡنَ ﴿۱۳﴾
কানযুল ঈমান
১৩. বললো, ‘নিশ্চয় একথা আমাকে কষ্ট দেবে যে, তোমরা তাকে নিয়ে যাবে এবং আমি আশঙ্কা করছি যে, তাকে নেকড়ে বাঘ খেয়ে ফেলবে আর তোমরা তার প্রতি অমনোযোগী হয়ে থাকবে’।
ইরফানুল কুরআন
১৩. তিনি বললেন, ‘নিশ্চয়ই এ ধারণা আমাকে চিন্তিত করে যে, তোমরা তাঁকে নিয়ে যাবে আর আমি (এ ধারণাতেও) ভীত হই যে, তাঁকে নেকড়ে খেয়ে ফেলবে আর তোমরা তাঁর (রক্ষণাবেক্ষণ) থেকে উদাসীন থাকবে’।
قَالُوۡا لَئِنۡ اَکَلَہُ الذِّئۡبُ وَ نَحۡنُ عُصۡبَۃٌ اِنَّاۤ اِذًا لَّخٰسِرُوۡنَ ﴿۱۴﴾
কানযুল ঈমান
১৪. (তারা) বললো, ‘যদি তাকে নেকড়ে বাঘ খেয়ে ফেলে, অথচ আমরা হলাম একটা দল, তখন তো আমরা কোন কাজের লোকই হবো না’।
ইরফানুল কুরআন
১৪. তারা বললো, ‘আমরা এক শক্তিশালী দল (বিদ্যমান) থাকা সত্তেও যদি তাঁকে নেকড়ে খেয়ে ফেলে তবে তো আমরা সম্পূর্ণরূপে অকর্মণ্য’।
فَلَمَّا ذَہَبُوۡا بِہٖ وَ اَجۡمَعُوۡۤا اَنۡ یَّجۡعَلُوۡہُ فِیۡ غَیٰبَتِ الۡجُبِّ ۚ وَ اَوۡحَیۡنَاۤ اِلَیۡہِ لَتُنَبِّئَنَّہُمۡ بِاَمۡرِہِمۡ ہٰذَا وَ ہُمۡ لَا یَشۡعُرُوۡنَ ﴿۱۵﴾
কানযুল ঈমান
১৫. অতঃপর যখন তাকে নিয়ে গেলো এবং সবার সিদ্ধান্ত এটাই হলো যে, তাকে অন্ধ কূপে নিক্ষেপ করবে এবং আমি তার প্রতি ওহী প্রেরণ করলাম, ‘নিশ্চয় তাদেরকে তুমি তাদের এ কাজের কথা জানিয়ে দেবে এমনি সময়ে যে, তারা অনুধাবন করতে পারবে না’।
ইরফানুল কুরআন
১৫. অতঃপর যখন তারা তাঁকে নিয়ে গেল এবং সবাই একমত হলো যে, তাঁকে অন্ধকার কূপের গভীরে নিক্ষেপ করবে, তখন আমরা তাঁর প্রতি ওহী প্রেরণ করলাম, ‘(হে ইউসুফ! উদ্ভিগ্ন হয়ো না, একটি সময় আসবে যখন) তুমি তাদেরকে তাদের এ বিষয়টির কথা স্মরণ করিয়ে দেবে, আর (তোমার উচ্চ মর্যাদা সম্পর্কে) তাদের কোনোও ধারণা থাকবে না।’
وَ جَآءُوۡۤ اَبَاہُمۡ عِشَآءً یَّبۡکُوۡنَ ؕ﴿۱۶﴾
কানযুল ঈমান
১৬. এবং রাত হলো। তারা তাদের পিতার নিকট কাদতে কাদতে এলো।
ইরফানুল কুরআন
১৬. আর (ইউসুফ আলাইহিস সালামকে কূপে ফেলে দিয়ে) তারা রাতের বেলা (ছলনার কান্না) কাঁদতে কাঁদতে তাদের পিতার নিকট এলো।
قَالُوۡا یٰۤاَبَانَاۤ اِنَّا ذَہَبۡنَا نَسۡتَبِقُ وَ تَرَکۡنَا یُوۡسُفَ عِنۡدَ مَتَاعِنَا فَاَکَلَہُ الذِّئۡبُ ۚ وَ مَاۤ اَنۡتَ بِمُؤۡمِنٍ لَّنَا وَ لَوۡ کُنَّا صٰدِقِیۡنَ ﴿۱۷﴾
কানযুল ঈমান
১৭. (তারা) বললো, ‘হে আমাদের পিতা! আমরা দৌড়ের প্রতিযোগিতায় দূরে চলে গিয়েছি এবং ইয়ূসুফকে আমাদের মালপত্রের নিকট রেখে গিয়েছি, অতঃপর তাকে নেকড়ে বাঘ খেয়ে ফেলেছে; এবং আপনি কোন মতেই আমাদেরকে বিশ্বাস করবে না যদিও আমরা সত্যবাদী হই’।
ইরফানুল কুরআন
১৭. বলতে লাগলো, ‘হে আমাদের পিতা! আমরা পরস্পরে দৌঁড়-প্রতিযোগিতা করতে চলে গিয়েছিলাম আর ইউসুফ (আলাইহিস সালাম)-কে আমাদের সরঞ্জামের নিকট রেখে গিয়েছিলাম, অতঃপর তাঁকে নেকড়ে খেয়ে ফেলেছে। আর আপনি (তো) আমাদের কথা বিশ্বাস করবেন না, যদিও আমরা সত্যবাদী।’
وَ جَآءُوۡ عَلٰی قَمِیۡصِہٖ بِدَمٍ کَذِبٍ ؕ قَالَ بَلۡ سَوَّلَتۡ لَکُمۡ اَنۡفُسُکُمۡ اَمۡرًا ؕ فَصَبۡرٌ جَمِیۡلٌ ؕ وَ اللّٰہُ الۡمُسۡتَعَانُ عَلٰی مَا تَصِفُوۡنَ ﴿۱۸﴾
কানযুল ঈমান
১৮. এবং তারা তার জামায় এক মিথ্যা রক্ত লেপন করে নিয়ে এলো। বললো, ‘বরং তোমাদের অন্তরগুলো একটা কাহিনী তোমাদের জন্য সাজিয়ে দিয়েছে; সুতরাং ধৈর্যই শ্রেয়; এবং আল্লাহ্রই নিকট সাহায্য প্রার্থনা করছি ওই বিষয়ে, যা তোমরা বলছো’।
ইরফানুল কুরআন
১৮. আর তারা তাঁর জামায় মিথ্যা রং লাগিয়ে নিয়ে এসেছিল। (ইয়াকুব আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘(এটি প্রকৃত সত্য নয়) বরং তোমাদের (হিংসুক) নাফস্ এ (গর্হিত) কাজ তোমাদের জন্যে সহজ ও মনোরম করে দিয়েছে (যা তোমরা সম্পাদন করেছো)। অতঃপর (এ ঘটনায়) ধৈর্য ধারণই উত্তম। আর এ ব্যাপারে আল্লাহ্রই নিকট সাহায্য চাই যা তোমরা বর্ণনা করছো।’
وَ جَآءَتۡ سَیَّارَۃٌ فَاَرۡسَلُوۡا وَارِدَہُمۡ فَاَدۡلٰی دَلۡوَہٗ ؕ قَالَ یٰبُشۡرٰی ہٰذَا غُلٰمٌ ؕ وَ اَسَرُّوۡہُ بِضَاعَۃً ؕ وَ اللّٰہُ عَلِیۡمٌۢ بِمَا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۹﴾
কানযুল ঈমান
১৯. এবং একটা কাফেলা এলো, তারা তাদের পানি সংগ্রহকারীকে প্রেরণ করলো; অতঃপর সে তার বালতি নামিয়ে দিলো। (সে) বলে উঠলো, ‘আহ্, কেমন সুখবর! এ যে এক কিশোর!’ এবং (তারা) তাকে একটা মূলধন বানিয়ে লুকিয়ে রাখলো; আর আল্লাহ্ সবিশেষ অবহিত সে সম্পর্কেই যা তারা করছে।
ইরফানুল কুরআন
১৯. আর (এদিকে) ভ্রমণকারীদের একটি দল এসে পৌঁছলো, তখন তারা তাদের পানি উত্তোলককে প্রেরণ করলো; সে তার বালতি (এ কূপে) নামিয়ে দিলো। সে বলে উঠলো, ‘সুসংবাদ, এ এক বালক!’ অতঃপর তারা তাঁকে মূল্যবান ব্যবসা-সামগ্রী মনে করে লুকিয়ে ফেললো। আর আল্লাহ্ এ কর্মকান্ড সম্পর্কে সম্যক অবগত যা তারা করছিল।
وَ شَرَوۡہُ بِثَمَنٍۭ بَخۡسٍ دَرَاہِمَ مَعۡدُوۡدَۃٍ ۚ وَ کَانُوۡا فِیۡہِ مِنَ الزَّاہِدِیۡنَ ﴿۲۰﴾
কানযুল ঈমান
২০. এবং ভাইয়েরা তাকে নগণ্য মূল্যে-মাত্র কয়েক দিরহামের বিনিময়ে বিক্রি করে দিলো এবং তাদের মধ্যে এতে কোন আগ্রহই ছিলো না।
ইরফানুল কুরআন
২০. আর ইউসুফ (আলাইহিস সালাম)-এঁর ভাইয়েরা (যারা ঘটনাস্থলে এসে গিয়েছিল, তাঁকে তাদের পলাতক গোলাম হিসেবে কাফেলার কাছে) স্বল্প মূল্যে - মাত্র কয়েক দিরহামের বিনিময়ে বিক্রি করে দিল, কেননা সেসব ভ্রমণকারীরা (ইউসুফ আলাইহিস সালামকে ক্রয়) এর ব্যাপারে (আগে থেকেই) অনাগ্রহী ছিল। (অতঃপর ভ্রমণকারীরা তাঁকে মিশরে নিয়ে বিক্রি করে দিল)।
وَ قَالَ الَّذِی اشۡتَرٰىہُ مِنۡ مِّصۡرَ لِامۡرَاَتِہٖۤ اَکۡرِمِیۡ مَثۡوٰىہُ عَسٰۤی اَنۡ یَّنۡفَعَنَاۤ اَوۡ نَتَّخِذَہٗ وَلَدًا ؕ وَ کَذٰلِکَ مَکَّنَّا لِیُوۡسُفَ فِی الۡاَرۡضِ ۫ وَ لِنُعَلِّمَہٗ مِنۡ تَاۡوِیۡلِ الۡاَحَادِیۡثِ ؕ وَ اللّٰہُ غَالِبٌ عَلٰۤی اَمۡرِہٖ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۲۱﴾
কানযুল ঈমান
২১. এবং মিশরের যে ব্যক্তি তাকে ক্রয় করলো সে তার স্ত্রীকে বললো, ‘তাকে সসম্মানে রাখো, সম্ভবতঃ তিনি আমাদের উপকারে আসবেন অথবা আমরা তাকে পুত্ররূপে গ্রহণ করবো’। এবং এভাবে আমি ইয়ূসুফকে ওই যমীনে প্রতিষ্ঠিত করেছি এবং এ জন্য যে, তাকে কথার পরিণাম শিক্ষা দেবো; আর আল্লাহ্ আপন কার্য-সম্পাদনে পরাক্রমশালী; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না।
ইরফানুল কুরআন
২১. আর মিশরের যে ব্যক্তি তাঁকে ক্রয় করেছিল (তার নাম ছিল ক্বাতফীর। সে ছিল মিশরের বাদশাহ্ রিয়ান বিন ওয়ালিদের অর্থমন্ত্রী। তাকে সাধারণত আযিযে মিশর বলা হতো, সে) তার স্ত্রী (যুলাইখা)-কে বললো, ‘তাঁকে সম্মান ও মর্যাদার সাথে অবস্থান করতে দাও! হয়তো সে আমাদের কল্যাণ করবে অথবা আমরা তাঁকে পুত্র রূপেও গ্রহণ করতে পারি।’ আর এভাবে আমরা ইউসুফ (আলাইহিস সালাম)-কে (মিশরের) ভুমিতে সুপ্রতিষ্ঠিত করলাম, যাতে আমরা তাঁকে বাণীর পরিণাম বের করা (অর্থাৎ স্বপ্নের ব্যাখ্যার জ্ঞান) শিক্ষা দেই। আর আল্লাহ্ তাঁর কাজের উপর আধিপত্যশীল, কিন্তু অধিকাংশ লোক তা জানে না।
وَ لَمَّا بَلَغَ اَشُدَّہٗۤ اٰتَیۡنٰہُ حُکۡمًا وَّ عِلۡمًا ؕ وَ کَذٰلِکَ نَجۡزِی الۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿۲۲﴾
কানযুল ঈমান
২২. এবং যখন আপন পূর্ণ শক্তিতে উপনীত হলো, তখন আমি তাকে হুকুম ও জ্ঞান দান করেছি; আর আমি এভাবেই পুরস্কার দিই সৎকর্মপরায়ণদেরকে।
ইরফানুল কুরআন
২২. আর যখন তিনি তাঁর পূর্ণ যৌবনে পদার্পণ করলেন, (তখন) আমরা তাঁকে (নবুয়্যতের) প্রজ্ঞা এবং (স্বপ্নের ব্যাখ্যার) জ্ঞান দান করলাম। আর এভাবেই আমরা নেক্কারদেরকে প্রতিদান প্রদান করি।
وَ رَاوَدَتۡہُ الَّتِیۡ ہُوَ فِیۡ بَیۡتِہَا عَنۡ نَّفۡسِہٖ وَ غَلَّقَتِ الۡاَبۡوَابَ وَ قَالَتۡ ہَیۡتَ لَکَ ؕ قَالَ مَعَاذَ اللّٰہِ اِنَّہٗ رَبِّیۡۤ اَحۡسَنَ مَثۡوَایَ ؕ اِنَّہٗ لَا یُفۡلِحُ الظّٰلِمُوۡنَ ﴿۲۳﴾
কানযুল ঈমান
২৩. এবং সে যে স্ত্রীলোকের ঘরে ছিলো সে তাকে প্রলোভিত করলো যেন তার কামনায় বাধা না দেয় এবং দরজাগুলো সবই বন্ধ করে দিলো আর বললো, ‘এসো! তোমাকেই বলছি!’ বললো, ‘আল্লাহ্রই আশ্রয়! সেই ‘আযীয’ তো আমার প্রভু অর্থাৎ লালনকারী। তিনি আমাকে ভালো মতে রেখেছেন; নিশ্চয় যালিমদের মঙ্গল হয় না’।
ইরফানুল কুরআন
২৩. আর এই (যুলাইখা নাম্নী) নারী, যার ঘরে তিনি অবস্থান করতেন, তাঁকে তীব্রভাবে কামনা করলো। আর সে দরজা বন্ধ করে দিল এবং বলতে লাগলো, ‘(আমি তোমাকে বলছি,) তাড়াতাড়ি এসো’! ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘আল্লাহ্র আশ্রয় চাই! নিশ্চয়ই তিনি (যে তোমার স্বামী) আমার লালন-পালনকারী, তিনি আমাকে অত্যন্ত সম্মানজনক ভাবে রেখেছেন। প্রকৃতপক্ষে সীমালঙ্ঘনকারীরা সফলতা পাবে না।’
وَ لَقَدۡ ہَمَّتۡ بِہٖ ۚ وَ ہَمَّ بِہَا لَوۡ لَاۤ اَنۡ رَّاٰ بُرۡہَانَ رَبِّہٖ ؕ کَذٰلِکَ لِنَصۡرِفَ عَنۡہُ السُّوۡٓءَ وَ الۡفَحۡشَآءَ ؕ اِنَّہٗ مِنۡ عِبَادِنَا الۡمُخۡلَصِیۡنَ ﴿۲۴﴾
কানযুল ঈমান
২৪. এবং নিশ্চয় স্ত্রীলোকটা তার কামনা করেছিলো এবং সেও স্ত্রীলোকের ইচ্ছা করতো যদি আপন রবের নিদর্শন না দেখতো। আমি এরূপ এজন্যই করেছি যেন তার থেকে মন্দ ও অশ্লীলতাকে দূরে রাখি। নিশ্চয় সে আমার মনোনীত বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত।
ইরফানুল কুরআন
২৪. (ইউসুফ আলাইহিস সালাম অস্বীকৃতি জানালেন) আর নিশ্চিত সে (যুলাইখা তো) এর কামনাই করেছিল। (হয়তো) তিনিও এরূপ কামনা করতেন, যদি না তিনি তাঁর প্রতিপালকের সুস্পষ্ট নিদর্শন দেখতেন।* এভাবে (এ জন্যে করা হয়েছে), যাতে আমরা তাঁর থেকে কষ্ট ও অশ্লীলতা (উভয়টি) দূরীভুত করি। নিশ্চয়ই তিনি আমাদের নির্বাচিত (সম্মানিত) বান্দাদের মধ্যে গণ্য।* অথবা তিনিও তাকে শক্তিমত্তা দিয়ে দূর করার ইচ্ছা করেছিলেন। যদি তিনি স্বীয় প্রতিপালকের সুস্পষ্ট নিদর্শন না দেখতেন, তবে তা প্রতিহত করায় জোর খাটাতে যেতেন এবং সম্ভাবনা ছিল যে, এর মধ্যে তাঁর জামা সামনের দিকে ছিড়ে যেতো, যা পরবর্তীতে তাঁর বিরুদ্ধে সাক্ষী এবং কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়াতো। সুতরাং আল্লাহর নিদর্শন তাঁর জোর খাটানো রুখে দিল।
وَ اسۡتَبَقَا الۡبَابَ وَ قَدَّتۡ قَمِیۡصَہٗ مِنۡ دُبُرٍ وَّ اَلۡفَیَا سَیِّدَہَا لَدَا الۡبَابِ ؕ قَالَتۡ مَا جَزَآءُ مَنۡ اَرَادَ بِاَہۡلِکَ سُوۡٓءًا اِلَّاۤ اَنۡ یُّسۡجَنَ اَوۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ﴿۲۵﴾
কানযুল ঈমান
২৫. এবং তারা উভয়ে দরজার দিকে দৌড়ে গেলো এবং স্ত্রীলোকটা তার জামা পেছন থেকে ছিড়ে ফেললো আর তারা উভয়েই স্ত্রীলোকটার স্বামীকে দরজার নিকট পেয়েছিলো। (স্ত্রী লোকটা) বললো, ‘কি শাস্তি হতে পারে তার, যে তোমার গৃহিণীর সাথে কুকর্ম কামনা করে, কিন্তু এ যে, তাকে কারাগারে বন্দী করা হোক কিংবা কষ্টদায়ক শাস্তি।
ইরফানুল কুরআন
২৫. আর তারা উভয়ে দরজার দিকে (অগ্রে-পশ্চাতে) দৌঁড়াতে লাগলো এবং সে (যুলাইখা) তাঁর জামা পিছন দিকে ছিড়ে ফেললো। আর উভয়ে তার স্বামী (আযিযে মিশর)-কে দরোজার নিকট পেয়ে সে (ততক্ষণাৎ) বলে উঠলো, ‘যে তোমার স্ত্রীর সাথে অনিষ্টের ইচ্ছা করে, তাকে জেলখানায় বন্দী করা অথবা (তাকে) যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দেয়া ছাড়া তাঁর জন্যে আর কী দন্ড হতে পারে?’
قَالَ ہِیَ رَاوَدَتۡنِیۡ عَنۡ نَّفۡسِیۡ وَ شَہِدَ شَاہِدٌ مِّنۡ اَہۡلِہَا ۚ اِنۡ کَانَ قَمِیۡصُہٗ قُدَّ مِنۡ قُبُلٍ فَصَدَقَتۡ وَ ہُوَ مِنَ الۡکٰذِبِیۡنَ ﴿۲۶﴾
কানযুল ঈমান
২৬. বললো, ‘সে-ই আমাকে প্রলোভিত করেছে, যেন আমি আত্নসংবরণ না করি; এবং স্ত্রী লোকটার পরিবারের একজন সাক্ষী সাক্ষ্য দিলো- ‘যদি তার জামার সম্মুখ দিক ছিন্ন করা হয়ে থাকে তবে স্ত্রীলোকটি সত্য কথা বলেছে আর ইনি মিথ্যা বলেছেন।
ইরফানুল কুরআন
২৬. ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘(না বরং) সে নিজে আমার নিকট উদ্দেশ্য হাসিলের জন্যে আমাকে ফুসলাতে চেয়েছিল’। আর (ইতিমধ্যে স্বয়ং) তার গৃহের অধিবাসীদের মধ্য থেকে এক সাক্ষী (যে ছিল দুগ্ধপোষ্য শিশু) সাক্ষ্য দিল, ‘যদি তাঁর জামা সামনে ছেড়া থাকে তবে সে সত্যবাদী আর তিনি মিথ্যাবাদীদের মধ্যে গণ্য।
وَ اِنۡ کَانَ قَمِیۡصُہٗ قُدَّ مِنۡ دُبُرٍ فَکَذَبَتۡ وَ ہُوَ مِنَ الصّٰدِقِیۡنَ ﴿۲۷﴾
কানযুল ঈমান
২৭. এবং যদি তার জামার পেছন দিক থেকে ছিন্ন করা হয় তবে স্ত্রীলোকটা মিথ্যাবাদী আর ইনি সত্যবাদী’।
ইরফানুল কুরআন
২৭. আর যদি তাঁর জামা পিছনে ছেড়া থাকে তবে সে মিথ্যাবাদী এবং তিনি সত্যবাদীদের মধ্যে গণ্য।’
فَلَمَّا رَاٰ قَمِیۡصَہٗ قُدَّ مِنۡ دُبُرٍ قَالَ اِنَّہٗ مِنۡ کَیۡدِکُنَّ ؕ اِنَّ کَیۡدَکُنَّ عَظِیۡمٌ ﴿۲۸﴾
কানযুল ঈমান
২৮. অতঃপর যখন ‘আযীয’ তার জামা পেছন দিক থেকে ছিন্নকৃত দেখলো তখন বললো, ‘নিশ্চয় এটা তোমাদের নারীদের ষড়যন্ত্র; নিঃসন্দেহে, তোমাদের ষড়যন্ত্র ভীষণ’।
ইরফানুল কুরআন
২৮. অতঃপর যখন সে (আযীযে মিশর) দেখল (যে) তাঁর জামা পিছন দিকে ছেড়া, তখন সে বললো, ‘নিশ্চয়ই এ তোমাদের নারীদের চক্রান্ত। অবশ্যই তোমাদের নারীদের চক্রান্ত ভীষণ (বিপদজনক) হয়ে থাকে।
یُوۡسُفُ اَعۡرِضۡ عَنۡ ہٰذَا ٜ وَ اسۡتَغۡفِرِیۡ لِذَنۡۢبِکِ ۚۖ اِنَّکِ کُنۡتِ مِنَ الۡخٰطِئِیۡنَ ﴿۲۹﴾
কানযুল ঈমান
২৯. হে ইয়ূসুফ! তুমি এটার প্রতি ভ্রূক্ষেপ করো না। এবং হে নারী! তুমি আপন পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করো; নিশ্চয় তুমি অপরাধীদের অন্তর্ভুক্ত।
ইরফানুল কুরআন
২৯. হে ইউসুফ! তুমি এ বিষয়টি উপেক্ষা করো, আর (হে যুলাইখা!) তুমি তোমার গোনাহের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তুমিই অপরাধী।’
وَ قَالَ نِسۡوَۃٌ فِی الۡمَدِیۡنَۃِ امۡرَاَتُ الۡعَزِیۡزِ تُرَاوِدُ فَتٰىہَا عَنۡ نَّفۡسِہٖ ۚ قَدۡ شَغَفَہَا حُبًّا ؕ اِنَّا لَنَرٰىہَا فِیۡ ضَلٰلٍ مُّبِیۡنٍ ﴿۳۰﴾
কানযুল ঈমান
৩০. এবং শহরে কিছু নারী বললো, ‘আযীযের স্ত্রী তার যুবকের হৃদয়কে প্রলোভিত করছে; নিশ্চয় তার প্রেম তার অন্তরকে উন্মত্ত করেছে, আমরা তো তাকে সুস্পষ্ট প্রেম-বিভোর দেখতে পাচ্ছি।
ইরফানুল কুরআন
৩০. আর শহরে (অভিজাতদের মধ্য থেকে) কিছু নারী বলতে শুরু করলো, ‘আযীযের স্ত্রী তার দাসকে তার উদ্দেশ্য হাসিলের জন্যে ফুসলিয়েছে। (এ দাস)-এর ভালোবাসা তার অন্তরের গভীরে চলে গিয়েছে। নিশ্চয়ই আমরা তাকে সুস্পষ্ট গোমরাহীতে দেখছি।’
فَلَمَّا سَمِعَتۡ بِمَکۡرِہِنَّ اَرۡسَلَتۡ اِلَیۡہِنَّ وَ اَعۡتَدَتۡ لَہُنَّ مُتَّکَاً وَّ اٰتَتۡ کُلَّ وَاحِدَۃٍ مِّنۡہُنَّ سِکِّیۡنًا وَّ قَالَتِ اخۡرُجۡ عَلَیۡہِنَّ ۚ فَلَمَّا رَاَیۡنَہٗۤ اَکۡبَرۡنَہٗ وَ قَطَّعۡنَ اَیۡدِیَہُنَّ وَ قُلۡنَ حَاشَ لِلّٰہِ مَا ہٰذَا بَشَرًا ؕ اِنۡ ہٰذَاۤ اِلَّا مَلَکٌ کَرِیۡمٌ ﴿۳۱﴾
কানযুল ঈমান
৩১. অতঃপর যখন যুলায়খা তাদের এ চর্চা শুনতে পেলো, তখন ওই সব নারীকে ডেকে পাঠালো আর তাদের জন্য আসন প্রস্তুত করলো এবং তাদের প্রত্যেককে একটা ছুরি দিলো আর ইয়ূসুফকে বললো, ‘তাদের সম্মুখে বের হও’। যখন নারীরা ইয়ূসুফকে দেখলো তখন তারা তার মহত্ব বর্ণনা করতে লাগলো এবং নিজেদের হাত কেটে ফেললো আর বললো, ‘আল্লাহ্রই জন্য পবিত্রতা, এটাতো মানব জাতির কেউ নয়, এটাতো নয়, কিন্তু কোনো সম্মানিত ফিরিশ্তা!’
ইরফানুল কুরআন
৩১. অতঃপর যখন সে (যুলাইখা) তাদের চক্রান্তপূর্ণ কথা শুনলো, (তখন) সে তাদেরকে ডেকে পাঠালো এবং তাদের জন্যে মজলিস সাজালো। (অতঃপর তাদের সামনে ফল রেখে দিল) আর তাদের প্রত্যেককে একটি করে ছুরি প্রদান করলো এবং (ইউসুফ আলাইহিস সালামের কাছে) আরয করলো, ‘তাদের সম্মুখে বের হও (যাতে তারাও আমার অবস্থার কারণ অবগত হতে পারে)’। সুতরাং যখন তারা ইউসুফ (আলাইহিস সালামের নিটোল সৌন্দর্য)-কে অবলোকন করলো তখন তাঁর (বিচ্ছুরিত সৌন্দর্যের) মহত্ব বর্ণনা করতে লাগলো। আর তারা (মোহাবিষ্ট হয়ে ফল কাটার পরিবর্তে) নিজেদের হাত কেটে ফেললো এবং (তা খেয়াল করার পর স্বতস্ফূর্তভাবে) বলে উঠলো, ‘আল্লাহ্র পানাহ্ চাই! তিনি তো মানুষ নন। তিনি তো কোনো সম্মানিত ফেরেশতা (অর্থাৎ উর্ধ্বজগত থেকে নেমে আসা নূরের চেহারা)।’
قَالَتۡ فَذٰلِکُنَّ الَّذِیۡ لُمۡتُنَّنِیۡ فِیۡہِ ؕ وَ لَقَدۡ رَاوَدۡتُّہٗ عَنۡ نَّفۡسِہٖ فَاسۡتَعۡصَمَ ؕ وَ لَئِنۡ لَّمۡ یَفۡعَلۡ مَاۤ اٰمُرُہٗ لَیُسۡجَنَنَّ وَ لَیَکُوۡنًا مِّنَ الصّٰغِرِیۡنَ ﴿۳۲﴾
কানযুল ঈমান
৩২. যুলায়খা বললো, ‘এই তো সে, যার সম্বন্ধে তোমরা আমার নিন্দা করছিলে এবং নিশ্চয় আমি তাকে প্রলোভিত করতে চেয়েছি। অতঃপর তিনি নিজেই নিজেকে পবিত্র রেখেছেন; এবং নিশ্চয় যদি তিনি সেই কাজ না করেন, যা আমি তাকে বলছি, তবে অবশ্যই তিনি কারারুদ্ধ হবেন এবং তিনি নিশ্চয় লাঞ্ছনা ভোগ করবেন’।
ইরফানুল কুরআন
৩২. (যুলাইখার কৌশল সফল হলে) সে বলে উঠলো, ‘তিনিই সেই (নূরের মুখচ্ছবি), যার ব্যাপারে তোমরা আমাকে তিরস্কার করতে। আর নিশ্চয়ই আমিই (আমার কামনার আধিক্যের কারণে) তাঁকে ফুঁসলানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু তিনি আপাদমস্তক পবিত্রই থেকে গেলেন। আর যদি (এখনো) তিনি তা না করেন, যা আমি তাঁকে বলছি, তবে তাঁকে অবশ্যই বন্দী করা হবে এবং তাঁকে অপমানিত করা হবে।’
قَالَ رَبِّ السِّجۡنُ اَحَبُّ اِلَیَّ مِمَّا یَدۡعُوۡنَنِیۡۤ اِلَیۡہِ ۚ وَ اِلَّا تَصۡرِفۡ عَنِّیۡ کَیۡدَہُنَّ اَصۡبُ اِلَیۡہِنَّ وَ اَکُنۡ مِّنَ الۡجٰہِلِیۡنَ ﴿۳۳﴾
কানযুল ঈমান
৩৩. ইয়ূসুফ আরয করলো, ‘হে আমার রব! আমার নিকট কারগারই অধিক প্রিয় ওই কর্ম থেকে, যার প্রতি তারা আমাকে আহ্বান করছে; এবং যদি তুমি আমাকে তাদের ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা না করো তবে আমি তাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়বো এবং অজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবো’।
ইরফানুল কুরআন
৩৩. (এখন মিশরের অভিজাত নারীরা যুলাইখার সম-দৃষ্টিভঙ্গির হয়ে গেল।) ইউসুফ (আলাইহিস সালাম সকলের কথা শুনে) আরয করলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমার কাছে জেলখানা উত্তম, যার দিকে তারা আমাকে আহ্বান করছে তার চেয়ে। আর যদি তুমি তাদের ছলনা থেকে আমাকে রক্ষা না করো তবে আমি তাদের (কথার) প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়বো এবং অজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবো।’
فَاسۡتَجَابَ لَہٗ رَبُّہٗ فَصَرَفَ عَنۡہُ کَیۡدَہُنَّ ؕ اِنَّہٗ ہُوَ السَّمِیۡعُ الۡعَلِیۡمُ ﴿۳۴﴾
কানযুল ঈমান
৩৪. অতঃপর তার রব তার প্রার্থনা কবূল করলেন এবং তাকে নারীদের ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করলেন। নিশ্চয় তিনি সব শুনেন, জানেন।
ইরফানুল কুরআন
৩৪. সুতরাং তাঁর প্রতিপালক তাঁর দুয়া কবুল করলেন এবং নারীদের ছলনা ও প্রতারণা থেকে তাঁকে রক্ষা করলেন। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
ثُمَّ بَدَا لَہُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ مَا رَاَوُا الۡاٰیٰتِ لَیَسۡجُنُنَّہٗ حَتّٰی حِیۡنٍ ﴿۳۵﴾
কানযুল ঈমান
৩৫. অতঃপর সব নিদর্শন পরীক্ষা করার পর তাদের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত এ-ই হলো যে, অবশ্যই একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তাকে কারাগারে আবদ্ধ করতে হবে।
ইরফানুল কুরআন
৩৫. অতঃপর (ইউসুফ আলাইহিস সালামের পূতঃপবিত্রতার) নিদর্শনসমূহ দেখার পরও তাঁকে একটি সময় পর্যন্ত বন্দী করে রাখা তাদের নিকট উপযুক্ত মনে হলো। (যাতে জনসাধারণের মাঝে তাঁর আলোচনা বন্ধ হয়ে যায়)।
وَ دَخَلَ مَعَہُ السِّجۡنَ فَتَیٰنِ ؕ قَالَ اَحَدُہُمَاۤ اِنِّیۡۤ اَرٰىنِیۡۤ اَعۡصِرُ خَمۡرًا ۚ وَ قَالَ الۡاٰخَرُ اِنِّیۡۤ اَرٰىنِیۡۤ اَحۡمِلُ فَوۡقَ رَاۡسِیۡ خُبۡزًا تَاۡکُلُ الطَّیۡرُ مِنۡہُ ؕ نَبِّئۡنَا بِتَاۡوِیۡلِہٖ ۚ اِنَّا نَرٰىکَ مِنَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿۳۶﴾
কানযুল ঈমান
৩৬. এবং তার সাথে কারাগারে দু’জন যুবক প্রবেশ করলো। তাদের একজন বললো, ‘আমি স্বপ্নে দেখলাম- আমি আংগুর নিংড়িয়ে রস বের করছি। আর অপরজন বললো- আমি স্বপ্নে দেখলাম, আমার মাথার উপর কিছু রুটি বহন করছি, যেগুলো থেকে পাখী খাচ্ছে। আমাদেরকে এর ব্যাখ্যা বলে দিন! নিশ্চয় আমরা আপনাকে সৎকর্মপরায়ণ দেখছি’।
ইরফানুল কুরআন
৩৬. আর তাঁর সাথে দু’জন যুবকও জেলখানায় প্রবেশ করলো। তাদের মধ্য থেকে একজন বললো, ‘আমি (স্বপ্নে) দেখলাম যে, আমি (আঙ্গুর দ্বারা) মদ নিংড়াচ্ছি’। আর অন্যজন বললো, ‘আমি (স্বপ্নে) দেখলাম যে, আমি আমার মাথার উপর রুটি বহন করছি, তা থেকে পাখি ঠুকরাচ্ছে। (হে ইউসুফ!) আমাদেরকে এর ব্যাখ্যা বলে দিন। নিশ্চয়ই আমরা আপনাকে সৎকর্মপরায়ণ দেখছি।’
قَالَ لَا یَاۡتِیۡکُمَا طَعَامٌ تُرۡزَقٰنِہٖۤ اِلَّا نَبَّاۡتُکُمَا بِتَاۡوِیۡلِہٖ قَبۡلَ اَنۡ یَّاۡتِیَکُمَا ؕ ذٰلِکُمَا مِمَّا عَلَّمَنِیۡ رَبِّیۡ ؕ اِنِّیۡ تَرَکۡتُ مِلَّۃَ قَوۡمٍ لَّا یُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰہِ وَ ہُمۡ بِالۡاٰخِرَۃِ ہُمۡ کٰفِرُوۡنَ ﴿۳۷﴾
কানযুল ঈমান
৩৭. ইয়ূসুফ বললো, ‘যে খাদ্য তোমরা পেয়ে থাকো, সে খাদ্য তোমাদের নিকট আসার পূর্বেই তোমাদেরকে এর ব্যাখ্যা বলে দেবো। এটা ওই সব জ্ঞান থেকেই, যা আমাকে আমার রব শিক্ষা দিয়েছেন। নিশ্চয় আমি সেসব লোকের ধর্ম মেনে নিই নি, যারা আল্লাহ্র উপর ঈমান আনে না এবং তারা পরকালে অবিশ্বাসী।
ইরফানুল কুরআন
৩৭. ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘যে খাবার (প্রতিদিন) তোমাদেরকে খাওয়ানো হয় তা তোমাদের নিকট আসেওনি, তোমাদের নিকট তা আগমনের পূর্বেই আমি তোমাদের উভয়কে এর ব্যাখ্যা বলে দিব। এ (ব্যাখ্যা) এমন জ্ঞান যা আমার প্রতিপালক আমাকে শিখিয়েছেন। নিশ্চয়ই আমি সে সম্প্রদায়ের ধর্ম (প্রথম থেকেই) পরিহার করে এসেছি যারা আল্লাহতে বিশ্বাস স্থাপন করে না এবং পরকালেও অবিশ্বাসী।
وَ اتَّبَعۡتُ مِلَّۃَ اٰبَآءِیۡۤ اِبۡرٰہِیۡمَ وَ اِسۡحٰقَ وَ یَعۡقُوۡبَ ؕ مَا کَانَ لَنَاۤ اَنۡ نُّشۡرِکَ بِاللّٰہِ مِنۡ شَیۡءٍ ؕ ذٰلِکَ مِنۡ فَضۡلِ اللّٰہِ عَلَیۡنَا وَ عَلَی النَّاسِ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا یَشۡکُرُوۡنَ ﴿۳۸﴾
কানযুল ঈমান
৩৮. এবং আমি আপন পিতৃপুরুষগণ- ইব্রাহীম, ইসহাক্ব এবং ইয়া’ক্বুবের ধর্মকে গ্রহণ করেছি। আমাদের জন্য একথা শোভা পায় না যে, কোন বস্তুকে আল্লাহ্র শরীক স্থির করবো, এটা আল্লাহ্র এক অনুগ্রহ আমাদের উপর এবং মানবকূলের উপর, কিন্তু অধিকাংশ লোক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না।
ইরফানুল কুরআন
৩৮. আর আমি তো আমার পিতৃপুরুষ ইবরাহীম, ইসহাক এবং ইয়াকুব (আলাইহিমুস সালাম)-এঁর ধর্মের অনুসরণ করি। আমাদের কোনো অধিকার নেই যে, আমরা কোনো কিছুকেও আল্লাহ্র সাথে অংশীদার সাব্যস্ত করি। এ (একত্ববাদ) আমাদের প্রতি এবং মানুষের প্রতি আল্লাহ্র (বিশেষ) অনুগ্রহ। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না।
یٰصَاحِبَیِ السِّجۡنِ ءَاَرۡبَابٌ مُّتَفَرِّقُوۡنَ خَیۡرٌ اَمِ اللّٰہُ الۡوَاحِدُ الۡقَہَّارُ ﴿ؕ۳۹﴾
কানযুল ঈমান
৩৯. হে আমার কারা সঙ্গীদ্বয়! ভিন্ন ভিন্ন রব শ্রেয়, না এক আল্লাহ্, যিনি সবার উপর পরাক্রমশালী?
ইরফানুল কুরআন
৩৯. হে আমার কারা সঙ্গীদ্বয়! (বলো) ভিন্ন ভিন্ন বহু উপাস্য উত্তম, না এক আল্লাহ্, যিনি সবার উপর আধিপত্যশীল?’
مَا تَعۡبُدُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِہٖۤ اِلَّاۤ اَسۡمَآءً سَمَّیۡتُمُوۡہَاۤ اَنۡتُمۡ وَ اٰبَآؤُکُمۡ مَّاۤ اَنۡزَلَ اللّٰہُ بِہَا مِنۡ سُلۡطٰنٍ ؕ اِنِ الۡحُکۡمُ اِلَّا لِلّٰہِ ؕ اَمَرَ اَلَّا تَعۡبُدُوۡۤا اِلَّاۤ اِیَّاہُ ؕ ذٰلِکَ الدِّیۡنُ الۡقَیِّمُ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۴۰﴾
কানযুল ঈমান
৪০. তোমরা তিনি ব্যতীত পূজা করছো না, কিন্তু নিছক কতগুলো নামের, যেগুলো তোমরা এবং তোমাদের পিতৃ-পুরুষগণ গড়ে নিয়েছো; আল্লাহ্ সেগুলোর কোন প্রমাণ অবতারণ করেন নি। কিন্তু নির্দেশ দেবার অধিকার আল্লাহ্রই। তিনি বলেছেন- ‘তিনি ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত করো না। এটাই সরল দ্বীন; কিন্তু অধিকাংশ লোক জানে না’।
ইরফানুল কুরআন
৪০. তোমরা (প্রকৃতপক্ষে) আল্লাহকে বাদ দিয়ে কতিপয় নামের ইবাদত করো, যা তোমরা নিজেরা এবং তোমাদের পিতৃপুরুষেরা (নিজ থেকে) রেখেছো। আল্লাহ্ এগুলোর কোনো কর্তৃত্ব অবতীর্ণ করেননি। নির্দেশ কেবল আল্লাহ্রই। তিনিই নির্দেশ দিয়েছেন যে, তাঁকে ছাড়া কারো ইবাদত করো না। এটিই সরল পথ (সঠিক ধর্ম)। কিন্তু অধিকাংশ লোক জানে না।
یٰصَاحِبَیِ السِّجۡنِ اَمَّاۤ اَحَدُ کُمَا فَیَسۡقِیۡ رَبَّہٗ خَمۡرًا ۚ وَ اَمَّا الۡاٰخَرُ فَیُصۡلَبُ فَتَاۡکُلُ الطَّیۡرُ مِنۡ رَّاۡسِہٖ ؕ قُضِیَ الۡاَمۡرُ الَّذِیۡ فِیۡہِ تَسۡتَفۡتِیٰنِ ﴿ؕ۴۱﴾
কানযুল ঈমান
৪১. হে কারা-সঙ্গীদ্বয়! তোমাদের মধ্যে একজন আপন প্রভু (বাদশাহ) কে মদ্যপান করাবে; রইলো অপরজন। তাকে শূলে চড়ানো হবে; অতঃপর পাখী তার মস্তক খাবে। সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে ওই কথারই, যেটা সম্পর্কে তোমরা জিজ্ঞাসা করছিলে’।
ইরফানুল কুরআন
৪১. হে আমার কারা সঙ্গীদ্বয়! তোমাদের মধ্য থেকে একজন (এর স্বপ্নের ব্যাখ্যা হলো এই যে, সে) তার প্রভুকে (অর্থাৎ বাদশাহকে) মদ পান করাবে। আর দ্বিতীয়জন, (যে মাথার উপর রুটি বহন করতে দেখেছে) তাকে ফাঁসি দেয়া হবে; অতঃপর পাখি তার মাথা থেকে (মাংস ছিড়ে) খাবে। (অকাট্য) সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে, যে ব্যাপারে তোমরা জিজ্ঞেস করছিলে।’
وَ قَالَ لِلَّذِیۡ ظَنَّ اَنَّہٗ نَاجٍ مِّنۡہُمَا اذۡکُرۡنِیۡ عِنۡدَ رَبِّکَ ۫ فَاَنۡسٰہُ الشَّیۡطٰنُ ذِکۡرَ رَبِّہٖ فَلَبِثَ فِی السِّجۡنِ بِضۡعَ سِنِیۡنَ ﴿ؕ۴۲﴾
কানযুল ঈমান
৪২. এবং ইয়ূসুফ এদের উভয়ের মধ্যে যে মুক্তি পাবে বলে মনে করলো তাকে বললো, ‘তোমার প্রভু (বাদশাহ) এর নিকট আমার কথা উল্লেখ করো!’ অতঃপর শয়তান তাকে ভুলিয়ে দিলো যে, সে তার প্রভু (বাদশাহ) এর সামনে ইয়ূসুফের কথা উল্লেখ করবে; সুতরাং ইয়ূসুফ আরো কয়েক বছর কারাগারে রইলো।
ইরফানুল কুরআন
৪২. আর ইউসুফ (আলাইহিস সালাম), এ দু’জনের মধ্যে যে মুক্তি পাবে বলে মনে করলেন তাকে বললেন, ‘তোমার বাদশাহর নিকট আমার কথা স্মরণ করো। (হয়তো তার স্মরণ হবে যে, আরো একজন নিষ্পাপ ব্যক্তি জেলখানায় রয়ে গেছে)।’ কিন্তু শয়তান তাকে তার বাদশাহর নিকট (তাঁর কথা) উল্লেখ করার বিষয়টি ভুলিয়ে দিল। ফলে ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) কয়েক বছর পর্যন্ত জেলখানায় অবস্থান করলেন।
وَ قَالَ الۡمَلِکُ اِنِّیۡۤ اَرٰی سَبۡعَ بَقَرٰتٍ سِمَانٍ یَّاۡکُلُہُنَّ سَبۡعٌ عِجَافٌ وَّ سَبۡعَ سُنۡۢبُلٰتٍ خُضۡرٍ وَّ اُخَرَ یٰبِسٰتٍ ؕ یٰۤاَیُّہَا الۡمَلَاُ اَفۡتُوۡنِیۡ فِیۡ رُءۡیَایَ اِنۡ کُنۡتُمۡ لِلرُّءۡیَا تَعۡبُرُوۡنَ ﴿۴۳﴾
কানযুল ঈমান
৪৩. এবং বাদশাহ বললো, ‘আমি স্বপ্নে দেখলাম-সাতটা মোটা স্থূলকায় গাভী, সেগুলোকে সাতটা শীর্ণকায় গাভী ভক্ষণ করছে এবং সাতটা সবুজ শীষ আর অপর সাততা শুষ্ক। হে সভাষদমণ্ডলী! আমার স্বপ্নের জবাব দাও যদি তোমরা স্বপ্নের ব্যাখ্যা করতে পারো’।
ইরফানুল কুরআন
৪৩. আর (একদিন) বাদশাহ্ বললেন, ‘আমি (স্বপ্নে) সাতটি মোটা-তাজা গাভী দেখেছি, এগুলোকে সাতটি শুকনা-পাতলা গাভী খেয়ে ফেলছে। আর সাতটি সবুজ শীষ (দেখেছি) এবং অপরাপর (সাতটি) শুকনো। হে পরিষদবর্গ! তোমরা আমাকে আমার স্বপ্ন সম্পর্কে অভিমত দাও যদি তোমরা স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানো।’
قَالُوۡۤا اَضۡغَاثُ اَحۡلَامٍ ۚ وَ مَا نَحۡنُ بِتَاۡوِیۡلِ الۡاَحۡلَامِ بِعٰلِمِیۡنَ ﴿۴۴﴾
কানযুল ঈমান
৪৪. (তারা) বললো, ‘দুশ্চিন্তার স্বপ্ন এবং আমরা স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানি না’।
ইরফানুল কুরআন
৪৪. তারা বললো, ‘(এটি) বিভ্রান্তিকর স্বপ্ন। আর আমরা বিভ্রান্তিকর স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানি না।’
وَ قَالَ الَّذِیۡ نَجَا مِنۡہُمَا وَ ادَّکَرَ بَعۡدَ اُمَّۃٍ اَنَا اُنَبِّئُکُمۡ بِتَاۡوِیۡلِہٖ فَاَرۡسِلُوۡنِ ﴿۴۵﴾
কানযুল ঈমান
৪৫. এবং বললো ওই ব্যক্তি, যে এ দু’জনের মধ্য থেকে মুক্তি পেয়েছিলো এবং এক দীর্ঘকাল পরে তার স্মরন হলো, ‘আমি তোমাদেরকে এর ব্যাখ্যা জানিয়ে দেবো আমাকে প্রেরণ করো’।
ইরফানুল কুরআন
৪৫. আর ওই দু’জনের মধ্যে যে ব্যক্তি মুক্তি পেয়েছিল (এখন) দীর্ঘ সময়ের পর (ইউসুফ আলাইহিস সালামের সাথে কৃত অঙ্গীকার) তার স্মরণে এলো। সে বললো, ‘আমি তোমাদেরকে এর ব্যাখ্যা বলে দেবো, কাজেই তোমরা আমাকে (ইউসুফ আলাইহিস সালামের নিকট) প্রেরণ করো।’
یُوۡسُفُ اَیُّہَا الصِّدِّیۡقُ اَفۡتِنَا فِیۡ سَبۡعِ بَقَرٰتٍ سِمَانٍ یَّاۡکُلُہُنَّ سَبۡعٌ عِجَافٌ وَّ سَبۡعِ سُنۡۢبُلٰتٍ خُضۡرٍ وَّ اُخَرَ یٰبِسٰتٍ ۙ لَّعَلِّیۡۤ اَرۡجِعُ اِلَی النَّاسِ لَعَلَّہُمۡ یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۴۶﴾
কানযুল ঈমান
৪৬. ‘হে ইয়ূসুফ! হে বড় সত্যবাদী! আমাদেরকে ব্যাখ্যা দিন-সাতটা স্থূলকায় মোটা তাজা গাভীর, যেগুলোকে সাতটা শীর্ণকায় গাভী ভক্ষণ করছে এবং সাতটা সবুজ শীষ ও অপর সাতটা শুষ্ক। হয় তো আমি লোকদের নিকট ফিরে যাবো, তো তারা অবগত হতে পারবে’।
ইরফানুল কুরআন
৪৬. (জেলখানায় পৌঁছে সে বলতে লাগলো) ‘হে ইউসুফ, হে সত্যের বাস্তবরূপ আপনি আমাদেরকে (এ স্বপ্নের) ব্যাখ্যা বলে দিন; সাতটি মোটা-তাজা গাভীকে সাতটি শুকনো-পাতলা গাভী খেয়ে ফেলছে, আর সাতটি সবুজ শীষ এবং অপর সাতটি শুকনো; যাতে আমি (এ ব্যাখ্যা নিয়ে) লোকদের কাছে ফিরে যেতে পারি, হয়তো তারা (আপনার সম্মান ও মর্যাদা) বুঝতে পারবে।’
قَالَ تَزۡرَعُوۡنَ سَبۡعَ سِنِیۡنَ دَاَبًا ۚ فَمَا حَصَدۡتُّمۡ فَذَرُوۡہُ فِیۡ سُنۡۢبُلِہٖۤ اِلَّا قَلِیۡلًا مِّمَّا تَاۡکُلُوۡنَ ﴿۴۷﴾
কানযুল ঈমান
৪৭. (ইয়ূসুফ) বললো, ‘তোমরা চাষাবাদ করবে একাদিক্রমে সাত বছর। সুতরাং যা কাটবে তাকে সেটার শীষের মধ্যেই রেখে দাও; কিন্তু অল্প যতটুকু খাবে।
ইরফানুল কুরআন
৪৭. ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘তোমরা যথারীতি ধারাবাহিক সাত বছর পর্যন্ত চাষাবাদ করবে, অতঃপর যে শষ্য তোমরা কাটবে সেগুলোকে তার শীষের মধ্যেই (সংরক্ষিত আকারে) রেখে দেবে, সামান্য কিছু ব্যতীত যা তোমরা (প্রতি বছর) ভক্ষণ করো।
ثُمَّ یَاۡتِیۡ مِنۡۢ بَعۡدِ ذٰلِکَ سَبۡعٌ شِدَادٌ یَّاۡکُلۡنَ مَا قَدَّمۡتُمۡ لَہُنَّ اِلَّا قَلِیۡلًا مِّمَّا تُحۡصِنُوۡنَ ﴿۴۸﴾
কানযুল ঈমান
৪৮. অতঃপর সাতটা বছর এর পরে কঠিন আসবে, যেগুলোতে সেগুলোর জন্য তোমরা যা পূর্বে সঞ্চয় করে রেখেছিলে তা খেয়ে ফেলবে কিন্তু অল্প, যা তোমরা বাচিয়ে রাখবে।
ইরফানুল কুরআন
৪৮. অতএব এরপর সাত বছর খুবই কঠিন (দূর্ভিক্ষের বছর) আসবে, যেসব (শষ্য) তোমরা এ বছরগুলোতে পূর্বে জমা করে রেখেছিলে তা নিঃশেষ করে ফেলবে, তবে সামান্য (বেঁচে যাবে) যা তোমরা সংরক্ষণ করবে।
ثُمَّ یَاۡتِیۡ مِنۡۢ بَعۡدِ ذٰلِکَ عَامٌ فِیۡہِ یُغَاثُ النَّاسُ وَ فِیۡہِ یَعۡصِرُوۡنَ ﴿۴۹﴾
কানযুল ঈমান
৪৯. অতঃপর সেগুলোর পর এক বছর আসবে, যাতে লোকদেরকে বৃষ্টি প্রদান করা হবে এবং সেটার মধ্যে তারা (প্রচুর ফলের) রস নিংড়াবে’।
ইরফানুল কুরআন
৪৯. অতঃপর পরবর্তী একটি বছর আসবে যাতে লোকদেরকে (প্রচুর) বৃষ্টি দিয়ে অনুগ্রহ করা হবে। আর (সে বছর এমন ফল উৎপন্ন হবে যে,) মানুষ তাতে (ফলের) রস নিংড়াবে।’
وَ قَالَ الۡمَلِکُ ائۡتُوۡنِیۡ بِہٖ ۚ فَلَمَّا جَآءَہُ الرَّسُوۡلُ قَالَ ارۡجِعۡ اِلٰی رَبِّکَ فَسۡـَٔلۡہُ مَا بَالُ النِّسۡوَۃِ الّٰتِیۡ قَطَّعۡنَ اَیۡدِیَہُنَّ ؕ اِنَّ رَبِّیۡ بِکَیۡدِہِنَّ عَلِیۡمٌ ﴿۵۰﴾
কানযুল ঈমান
৫০. এবং বাদশা বললো, ‘তাকে আমার নিকট নিয়ে এসো! অতঃপর যখন তার নিকট দূত এলো তখন সে বললো, ‘আপন প্রভু-বাদশার নিকট ফিরে যাও, অতঃপর তাকে জিজ্ঞাসা করো, কী অবস্থা ওইসব নারীর, যারা তাদের হাত কেটে ফেলেছিলো। নিশ্চয় আমার রব তাদের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে অবগত আছেন’।
ইরফানুল কুরআন
৫০. আর (এ ব্যাখ্যা শুনেই) বাদশাহ্ বলে উঠলো, ‘ইউসুফ (আলাইহিস সালাম)-কে (এখনি) আমার নিকট নিয়ে এসো’। অতঃপর ইউসুফ (আলাইহিস সালাম)-এঁর নিকট দূত এলে তিনি বললেন, ‘তোমার বাদশাহর কাছে ফিরে যাও এবং তাকে জিজ্ঞেস করো (যে,) সে সকল নারীদের (এখন) কী অবস্থা, যারা তাদের হাত কেটে ফেলেছিল? নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক তাদের ছলনা ও প্রতারণা সম্পর্কে সম্যক অবগত।’
قَالَ مَا خَطۡبُکُنَّ اِذۡ رَاوَدۡتُّنَّ یُوۡسُفَ عَنۡ نَّفۡسِہٖ ؕ قُلۡنَ حَاشَ لِلّٰہِ مَا عَلِمۡنَا عَلَیۡہِ مِنۡ سُوۡٓءٍ ؕ قَالَتِ امۡرَاَتُ الۡعَزِیۡزِ الۡـٰٔنَ حَصۡحَصَ الۡحَقُّ ۫ اَنَا رَاوَدۡتُّہٗ عَنۡ نَّفۡسِہٖ وَ اِنَّہٗ لَمِنَ الصّٰدِقِیۡنَ ﴿۵۱﴾
কানযুল ঈমান
৫১. (বাদশাহ) বললো, ‘হে নারীরা! তোমাদের কি কাজ ছিলো, যখন তোমরা ইয়ূসুফের অন্তরকে প্রলোভিত করতে চেয়েছিলে? (তারা) বললো, ‘আল্লাহ্র জন্য পবিত্রতা! আমরা তার মধ্যে কোন দোষ দেখতে পাই নি’, আযীযের স্ত্রী বললো, ‘এখনই আসল কথা প্রকাশ হলো। আমিই তার মনকে প্রলোভিত করতে চেয়েছিলাম এবং তিনি নিঃসন্দেহে সত্যবাদী’।
ইরফানুল কুরআন
৫১. বাদশাহ্ (যুলাইখাসহ সকল নারীদেরকে ডেকে) বললেন, ‘তোমাদের কী ঘটেছিল, যখন তোমরা (সকলে) ইউসুফ (আলাইহিস সালাম)-কে তাঁর সঠিক পথ থেকে বিচ্যুৎ করতে চেয়েছিলে (বলো সে বিষয়টি কী ছিল)?’ তারা সকলে (এক বাক্যে) বললো, ‘আল্লাহ্র আশ্রয় চাই! আমরা (তো) ইউসুফ (আলাইহিস সালাম)-এঁর মাঝে মন্দ কিছু পাইনি।’ আযীযে মিশরের স্ত্রী (যুলাইখাও) বলে উঠলো, ‘এখন তো সত্য প্রকাশিত হয়ে গিয়েছে। (প্রকৃত সত্য এ যে,) আমিই তাঁকে আমার উদ্দেশ্য হাসিলের জন্যে ফুঁসলাতে চেয়েছিলাম। আর নিশ্চয় তিনিই সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত।’
ذٰلِکَ لِیَعۡلَمَ اَنِّیۡ لَمۡ اَخُنۡہُ بِالۡغَیۡبِ وَ اَنَّ اللّٰہَ لَا یَہۡدِیۡ کَیۡدَ الۡخَآئِنِیۡنَ ﴿۵۲﴾
কানযুল ঈমান
৫২. ইয়ূসুফ বললো, ‘এটা আমি এ জন্য করেছি যাতে আযীয অবগত হয়ে যায় এ মর্মে যে, আমি তার অনুপস্থিতিতে তার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করিনি এবং আল্লাহ্ প্রতারকদের ষড়যন্ত্র সফল হতে দেন না।
ইরফানুল কুরআন
৫২. (ইউসুফ আলাইহিস সালাম বললেন, ‘আমি) এটি এ জন্যে (করেছি) যে, সে (আযীযে মিশর যে আমার প্রতি অনুগ্রহকারী ও লালনকারী ছিল) জানুক যে, আমি তার অনুপস্থিতিতে (পশ্চাতে) তার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করিনি। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বিশ্বাসঘাতকদের চক্রান্ত ও প্রতারণা সফল হতে দেন না।’
وَ مَاۤ اُبَرِّیٴُ نَفۡسِیۡ ۚ اِنَّ النَّفۡسَ لَاَمَّارَۃٌۢ بِالسُّوۡٓءِ اِلَّا مَا رَحِمَ رَبِّیۡ ؕ اِنَّ رَبِّیۡ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۵۳﴾
কানযুল ঈমান
৫৩. এবং আমি নিজ প্রবৃত্তিকে নির্দোষ বলছি না। নিশ্চয় প্রবৃত্তি তো মন্দকর্মের বড় নির্দেশদাতা, কিন্তু যার প্রতি আমার রব দয়া করেন, নিশ্চয় আমার রব ক্ষমাশীল দয়ালু।
ইরফানুল কুরআন
৫৩. ‘আর আমি আমার নিজেকে নিষ্কলুষ (দাবী) করছি না। অবশ্যই নাফস্ অধিক পরিমাণে খারাপ কাজে প্রলুব্ধ করে, তবে সে ব্যক্তি ছাড়া যার প্রতি আমার প্রতিপালক অনুগ্রহ করেন। নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক মহাক্ষমাশীল ও অসীম দয়ালু।’
وَ قَالَ الۡمَلِکُ ائۡتُوۡنِیۡ بِہٖۤ اَسۡتَخۡلِصۡہُ لِنَفۡسِیۡ ۚ فَلَمَّا کَلَّمَہٗ قَالَ اِنَّکَ الۡیَوۡمَ لَدَیۡنَا مَکِیۡنٌ اَمِیۡنٌ ﴿۵۴﴾
কানযুল ঈমান
৫৪. এবং বাদশাহ বললো, ‘তাকে আমার নিকট নিয়ে এসো! আমি তাকে বিশেষ করে আমার জন্য নির্বাচিত করে নেবো’। অতঃপর যখন তার সাথে কথা বললো, তখন বললো, ‘নিশ্চয় আজ আপনি আমাদের নিকট সম্মানিত ও নির্ভযোগ্য হলেন’।
ইরফানুল কুরআন
৫৪. আর বাদশাহ্ বললো, ‘তাঁকে আমার কাছে নিয়ে এসো। আমি তাঁকে আমার একান্ত (পরামর্শক) নিযুক্ত করবো।’ অতঃপর যখন বাদশাহ্ তাঁর সাথে (সরাসরি) কথা বললো, (তখন সে খুব প্রভাবান্বিত হলো এবং) তখন বললো, ‘(হে ইউসুফ!) নিশ্চয়ই আপনি আজ থেকে আমাদের নিকট ক্ষমতাবান (এবং) বিশ্বস্ত (অর্থাৎ আপনাকে শাসন ক্ষমতায় অংশীদার করা হলো)।’
قَالَ اجۡعَلۡنِیۡ عَلٰی خَزَآئِنِ الۡاَرۡضِ ۚ اِنِّیۡ حَفِیۡظٌ عَلِیۡمٌ ﴿۵۵﴾
কানযুল ঈমান
৫৫. ইয়ূসুফ বললো, ‘আমাকে রাজ্যের ধন-ভাণ্ডারের কর্তৃত্ব প্রদান করো। নিশ্চয় আমি সুরক্ষক, সুবিজ্ঞ’।
ইরফানুল কুরআন
৫৫. ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘(যদি আপনি প্রকৃতই আমার দ্বারা কোনো বিশেষ কাজ করিয়ে নিতে চান তবে) আমাকে (মিশর) ভুমির কোষাগারের দায়িত্বে (মন্ত্রী ও বিশ্বস্ত ব্যক্তি হিসেবে) নিযুক্ত করুন। নিশ্চয়ই আমি (এর) খুব ভালো রক্ষণাবেক্ষণকারী (এবং অর্থনৈতিক বিষয়ে) খুবই দক্ষ।’
وَ کَذٰلِکَ مَکَّنَّا لِیُوۡسُفَ فِی الۡاَرۡضِ ۚ یَتَبَوَّاُ مِنۡہَا حَیۡثُ یَشَآءُ ؕ نُصِیۡبُ بِرَحۡمَتِنَا مَنۡ نَّشَآءُ وَ لَا نُضِیۡعُ اَجۡرَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿۵۶﴾
কানযুল ঈমান
৫৬. এবং এভাবেই আমি ইয়ূসুফকে ওই দেশের উপর ক্ষমতা দান করেছি এর মধ্যে যেখানে ইচ্ছা অবস্থান করবে। আমি আপন দয়া যাকে ইচ্ছা পৌছাই এবং আমি সৎকর্মপরায়ণদের শ্রমফল বিনষ্ট করি না।
ইরফানুল কুরআন
৫৬. আর এভাবে আমরা ইউসুফ (আলাইহিস সালাম)-কে (মিশর) ভুমিতে ক্ষমতাবান করলাম, (যাতে) তিনি যেখানে ইচ্ছে বসবাস করতে পারেন। আমরা যাকে চাই তাকে আমাদের অনুগ্রহ দ্বারা সম্মানিত করি এবং আমরা নেক্কারদের প্রতিদান নষ্ট করি না।
وَ لَاَجۡرُ الۡاٰخِرَۃِ خَیۡرٌ لِّلَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ کَانُوۡا یَتَّقُوۡنَ ﴿۵۷﴾
কানযুল ঈমান
৫৭. এবং নিশ্চয় পরকালের পুরস্কার তাদের জন্য উত্তম, যারা ঈমান এনেছে এবং পরহেয্গার রয়েছে।
ইরফানুল কুরআন
৫৭. আর অবশ্যই পরকালের প্রতিদান সেসব লোকদের জন্যে উত্তম যারা ঈমান আনয়ন করে এবং খোদাভীতির পথে পদার্পণকারী।
وَ جَآءَ اِخۡوَۃُ یُوۡسُفَ فَدَخَلُوۡا عَلَیۡہِ فَعَرَفَہُمۡ وَ ہُمۡ لَہٗ مُنۡکِرُوۡنَ ﴿۵۸﴾
কানযুল ঈমান
৫৮. এবং ইয়ূসুফ ভ্রাতাগণ এলো অতঃপর তার নিকট উপস্থিত হলো। তখন ইয়ূসুফ তাদেরকে চিনে ফেললো এবং তারা তাকে চিনতে পারলো না।
ইরফানুল কুরআন
৫৮. আর (দুর্ভিক্ষের বছরে) ইউসুফ (আলাইহিস সালাম)-এঁর ভাইয়েরা (শস্য নেয়ার জন্যে মিশরে) আগমন করলো এবং তাঁর নিকট উপস্থিত হলো। অতঃপর ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) তাদেরকে চিনে ফেললেন, কিন্তু তারা তাঁকে চিনতে পারলো না।
وَ لَمَّا جَہَّزَہُمۡ بِجَہَازِہِمۡ قَالَ ائۡتُوۡنِیۡ بِاَخٍ لَّکُمۡ مِّنۡ اَبِیۡکُمۡ ۚ اَلَا تَرَوۡنَ اَنِّیۡۤ اُوۡفِی الۡکَیۡلَ وَ اَنَا خَیۡرُ الۡمُنۡزِلِیۡنَ ﴿۵۹﴾
কানযুল ঈমান
৫৯. এবং যখন তাদের সামগ্রীর ব্যবস্থা করে দিলো তখন বললো, তোমাদের সৎ ভাইকে আমার নিকট নিয়ে এসো। তোমরা কি দেখছো না যে, আমি মাপে পূর্ণ মাত্রায় দিচ্ছি এবং আমি সবার চেয়ে উত্তম অতিথিপরায়ণ?
ইরফানুল কুরআন
৫৯. আর যখন ইউসুফ (আলাইহি সালাম) তাদেরকে তাদের সরঞ্জাম (পাথেয় ও উপকরণ) সাজিয়ে দিলেন (তখন) বললেন, ‘তোমাদের বৈমাত্রেয় ভ্রাতা (বিনইয়ামীন)-কে আমার নিকট নিয়ে এসো। তোমরা কি দেখছো না যে, আমি পরিমাপ (কী পরিমাণ) পূর্ণ করে দেই? আর আমি মেহমানের উত্তম আপ্যায়নকারী(ও)।
فَاِنۡ لَّمۡ تَاۡتُوۡنِیۡ بِہٖ فَلَا کَیۡلَ لَکُمۡ عِنۡدِیۡ وَ لَا تَقۡرَبُوۡنِ ﴿۶۰﴾
কানযুল ঈমান
৬০. অতঃপর যদি না তাকে আমার নিকট নিয়ে এসো, তবে তোমাদের জন্য আমার এখানে কোন পরিমাণ (বরাদ্ধ) নেই এবং আমার নিকটে এসো না’।
ইরফানুল কুরআন
৬০. সুতরাং যদি তোমরা তাকে আমার নিকট নিয়ে না আসো, তবে (আগামীতে) না তোমাদের জন্যে আমার নিকট কোনো রসদ (শস্য) থাকবে, আর না তোমরা আমার নিকটবর্তী হতে পারবে।’
قَالُوۡا سَنُرَاوِدُ عَنۡہُ اَبَاہُ وَ اِنَّا لَفٰعِلُوۡنَ ﴿۶۱﴾
কানযুল ঈমান
৬১. (তারা) বললো, ‘আমরা এর কামনা করবো তার পিতার নিকট এবং অবশ্যই এটা আমাদের করা উচিত’।
ইরফানুল কুরআন
৬১. তারা বললো, ‘আমরা তাকে পাঠানোর ব্যাপারে তার পিতাকে রাজি করাবো। আর আমরা অবশ্যই (এমনটি) করবো।’
وَ قَالَ لِفِتۡیٰنِہِ اجۡعَلُوۡا بِضَاعَتَہُمۡ فِیۡ رِحَالِہِمۡ لَعَلَّہُمۡ یَعۡرِفُوۡنَہَاۤ اِذَا انۡقَلَبُوۡۤا اِلٰۤی اَہۡلِہِمۡ لَعَلَّہُمۡ یَرۡجِعُوۡنَ ﴿۶۲﴾
কানযুল ঈমান
৬২. এবং ইয়ূসুফ নিজ ভৃত্যদেরকে বললো, ‘তাদের মূলধন (পণ্যমূল্য) তাদেরই (মালপত্রের) ঝুলির মধ্যে রেখে দাও হয় তো তারা এটা বুঝতে পারবে যখন তারা আপন ঘরের দিকে ফিরে যাবে হয় তো তারা ফিরে আসবে’।
ইরফানুল কুরআন
৬২. আর ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) তাঁর ভৃত্যগণকে বললেন, ‘তাদের পণ্যমূল্য (যা তারা শস্যের বিনিময়ে আদায় করেছিল তা) তাদের বস্তায় রেখে দাও, যখন তারা নিজেদের স্বজনদের নিকট প্রত্যাবর্তন করবে তখন যেন এগুলো শনাক্ত করতে পারে (যে, তাদের পণ্যমূল্য তো ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে), হয়তো তারা (এ কারণেই) আবার ফিরে আসবে।’
فَلَمَّا رَجَعُوۡۤا اِلٰۤی اَبِیۡہِمۡ قَالُوۡا یٰۤاَبَانَا مُنِعَ مِنَّا الۡکَیۡلُ فَاَرۡسِلۡ مَعَنَاۤ اَخَانَا نَکۡتَلۡ وَ اِنَّا لَہٗ لَحٰفِظُوۡنَ ﴿۶۳﴾
কানযুল ঈমান
৬৩. অতঃপর যখন তারা তাদের পিতার নিকট ফিরে গেলো, তখন বললো, ‘হে আমাদের পিতা! আমাদের জন্য খাদ্য শস্য (এর বরাদ্দ) নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়েছে; সুতরাং আমাদের ভাইকে আমাদের সাথে পাঠিয়ে দিন, যাতে আমরা রসদ আনতে পারি এবং আমরা অবশ্যই তার রক্ষণাবেক্ষণ করবো’।
ইরফানুল কুরআন
৬৩. সুতরাং যখন তারা তাদের পিতার নিকট ফিরে আসলো, (তখন) তারা বললো, ‘হে আমাদের পিতা! (বিনইয়ামীন আমাদের সাথে গমন না করলে ভবিষ্যতে) আমাদের জন্যে শস্য নিষেধ করা হয়েছে। কাজেই আমাদের ভাই (বিনইয়ামীন)-কে আমাদের সাথে প্রেরণ করুন (যাতে) আমরা (আরো) শস্য পেতে পারি। আর আমরা অবশ্যই তার রক্ষণাবেক্ষণ করবো।’
قَالَ ہَلۡ اٰمَنُکُمۡ عَلَیۡہِ اِلَّا کَمَاۤ اَمِنۡتُکُمۡ عَلٰۤی اَخِیۡہِ مِنۡ قَبۡلُ ؕ فَاللّٰہُ خَیۡرٌ حٰفِظًا ۪ وَّ ہُوَ اَرۡحَمُ الرّٰحِمِیۡنَ ﴿۶۴﴾
কানযুল ঈমান
৬৪. বললো, ‘আমি কি তার সম্পর্কে তোমাদেরকে তেমনই বিশ্বাস করবো, যেমনপূর্বে তার ভাই সম্বন্ধে করেছিলাম? সুতরাং আল্লাহ্ সর্বাধিক উত্তম রক্ষণাবেক্ষণকারী এবং তিনি সব দয়ালুর শ্রেষ্ঠ দয়ালু’।
ইরফানুল কুরআন
৬৪. ইয়াকুব (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘আমি কি তার ব্যাপারে(ও) তোমাদের উপর সেরূপ ভরসা করবো যেরূপ ভরসা ইতিপূর্বে তার ভাই (ইউসুফ আলাইহিস সালাম)-এঁর ব্যাপারে তোমাদের উপর করেছিলাম? তবে আল্লাহ্ই উত্তম রক্ষণাবেক্ষণকারী। আর তিনিই সকল দয়ালুর চেয়ে শ্রেষ্ঠ দয়ালু।’
وَ لَمَّا فَتَحُوۡا مَتَاعَہُمۡ وَجَدُوۡا بِضَاعَتَہُمۡ رُدَّتۡ اِلَیۡہِمۡ ؕ قَالُوۡا یٰۤاَبَانَا مَا نَبۡغِیۡ ؕ ہٰذِہٖ بِضَاعَتُنَا رُدَّتۡ اِلَیۡنَا ۚ وَ نَمِیۡرُ اَہۡلَنَا وَ نَحۡفَظُ اَخَانَا وَ نَزۡدَادُ کَیۡلَ بَعِیۡرٍ ؕ ذٰلِکَ کَیۡلٌ یَّسِیۡرٌ ﴿۶۵﴾
কানযুল ঈমান
৬৫. এবং যখন তারা তাদের মালপত্র খুললো, তখন তারা তাদের মূলধন (পণ্যমূল্য) দেখতে পেলো যে, তাদেরকে ফেরত দেওয়া হয়েছে; এবং তারা বললো, ‘হে আমাদের পিতা! এখন আর কি চাইবো- এই হচ্ছে আমাদের মূলধন (পণ্যমূল্য), যা আমাদেরকে ফেরত দেওয়া হয়েছে; এবং আমরা আমাদের ঘরের জন্য খাদ্য সামগ্রী আনবো এবং আমাদের ভাইয়ের রক্ষণাবেক্ষণ করবো আর আমরা অতিরিক্ত আরেক ঊষ্ট্র বোঝাই পণ্য পাবো, এ দান বাদশাহর সম্মুখে কিছুই নয়’।
ইরফানুল কুরআন
৬৫. যখন তারা নিজেদের সামগ্রী খুললো, (তখন তাতে) তাদের পণ্যমূল্য দেখতে পেল (যা) তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছিল। তারা বলতে লাগলো, ‘হে আমাদের সম্মানিত পিতা! আমরা আর কী চাই? আমাদের পণ্যমূল্যও আমাদেরকে ফেরত দেয়া হয়েছে। আর (এখন তো) আমরা আমাদের পরিবারের জন্যে (অবশ্যই) শস্য আনয়ন করবো। আর আমরা আমাদের ভাইকে রক্ষণাবেক্ষণ করবো এবং আরো এক উট-বোঝাই পণ্য অতিরিক্ত নিয়ে আসবো। আর এ (শস্য যা আমরা ইতিপূর্বে এনেছি) পরিমাণে সামান্য।’
قَالَ لَنۡ اُرۡسِلَہٗ مَعَکُمۡ حَتّٰی تُؤۡتُوۡنِ مَوۡثِقًا مِّنَ اللّٰہِ لَتَاۡتُنَّنِیۡ بِہٖۤ اِلَّاۤ اَنۡ یُّحَاطَ بِکُمۡ ۚ فَلَمَّاۤ اٰتَوۡہُ مَوۡثِقَہُمۡ قَالَ اللّٰہُ عَلٰی مَا نَقُوۡلُ وَکِیۡلٌ ﴿۶۶﴾
কানযুল ঈমান
৬৬. বললো, ‘আমি কখনো তাকে তোমাদের সাথে পাঠাবো না যতক্ষণ না তোমরা আমার নিকট আল্লাহ্র নামে এ অঙ্গীকার করো যে, অবশ্যই তোমরা তাকে নিয়ে আসবে; কিন্তু যদি তোমরা পরিবেষ্টিত হয়ে পড়ো’। অতঃপর যখন তারা ইয়া’কূবের নিকট প্রতিজ্ঞা করলো তখন বললো, ‘আল্লাহ্রই যিম্মা এ কথার উপর, যা আমরা বলছি’।
ইরফানুল কুরআন
৬৬. ইয়াকুব (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘আমি তাকে কখনো তোমাদের সাথে পাঠাবো না যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা আল্লাহ্র নামে আমাকে দৃঢ় অঙ্গীকার প্রদান করো যে, তোমরা অবশ্যই তাকে আমার নিকট (ফিরিয়ে) নিয়ে আসবে, অবশ্য যদি না তোমরা (সকলে) একান্তই অসহায় হয়ে পড়ো (অথবা তোমাদেরকে ধ্বংস করে দেয়া হয়)।’ অতঃপর যখন তারা ইয়াকুব (আলাইহিস সালাম)-কে তাদের দৃঢ় অঙ্গীকার প্রদান করলো, তখন ইয়াকুব (আলাইহি সালাম) বললেন, ‘যা কিছু আমরা বলছি, তার উপর আল্লাহ্ অভিভাবক।’
وَ قَالَ یٰبَنِیَّ لَا تَدۡخُلُوۡا مِنۡۢ بَابٍ وَّاحِدٍ وَّ ادۡخُلُوۡا مِنۡ اَبۡوَابٍ مُّتَفَرِّقَۃٍ ؕ وَ مَاۤ اُغۡنِیۡ عَنۡکُمۡ مِّنَ اللّٰہِ مِنۡ شَیۡءٍ ؕ اِنِ الۡحُکۡمُ اِلَّا لِلّٰہِ ؕ عَلَیۡہِ تَوَکَّلۡتُ ۚ وَ عَلَیۡہِ فَلۡیَتَوَکَّلِ الۡمُتَوَکِّلُوۡنَ ﴿۶۷﴾
কানযুল ঈমান
৬৭. এবং বললো, ‘হে আমার পুত্রগণ! তোমরা এক দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না; বরং ভিন্ন ভিন্ন দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে। আমি তোমাদেরকে আল্লাহ্ থেকে বাচাতে পারি না। নির্দেশ তো সব আল্লাহ্রই। আমি তারই উপর ভরসা করেছি; এবং ভরসাকারীদের তারই উপর ভরসা করা উচিত’।
ইরফানুল কুরআন
৬৭. আর তিনি বললেন, ‘হে আমার পুত্রগণ! এক দরোজা দিয়ে (শহরে) প্রবেশ করো না, বরং ভিন্ন ভিন্ন দরোজা দিয়ে (বিচ্ছিন্নভাবে) প্রবেশ করো। আর আমি তোমাদেরকে আল্লাহ্ (-এঁর ফরমান) থেকে কোনো উপায়েই বাঁচাতে পারবো না। কেননা, (ভাগ্যলিপির) সিদ্ধান্ত কেবল আল্লাহ্র কর্তৃকই। আমি এর উপরই ভরসা করেছি, আর ভরসাকারীদের এর উপরই ভরসা করা উচিত।’
وَ لَمَّا دَخَلُوۡا مِنۡ حَیۡثُ اَمَرَہُمۡ اَبُوۡہُمۡ ؕ مَا کَانَ یُغۡنِیۡ عَنۡہُمۡ مِّنَ اللّٰہِ مِنۡ شَیۡءٍ اِلَّا حَاجَۃً فِیۡ نَفۡسِ یَعۡقُوۡبَ قَضٰہَا ؕ وَ اِنَّہٗ لَذُوۡ عِلۡمٍ لِّمَا عَلَّمۡنٰہُ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۶۸﴾
কানযুল ঈমান
৬৮. এবং যখন তারা প্রবেশ করলো যেভাবে তাদের পিতা নির্দেশ দিয়েছিলো সে তো তাদেরকে আল্লাহ্ থেকে কিছুই রক্ষা করতে পারতো না; তবে হ্যাঁ, ইয়া’কুবের অন্তরের একটা অভিপ্রায় ছিলো, যা সে পূর্ণ করে নিয়েছে এবং নিশ্চয় সে জ্ঞানী, আমার শিক্ষা দানের ফলে; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না।
ইরফানুল কুরআন
৬৮. আর যখন তারা (মিশরে) প্রবেশ করলো, যেভাবে তাদের পিতা তাদেরকে নির্দেশ দিয়েছিলেন সেভাবে, এ (নির্দেশ) তাদেরকে আল্লাহ্ (-এঁর ভাগ্যলিপি) থেকে কোনো উপায়েই বাঁচাতে পারলো না। তবে এটি ছিল ইয়াকুব (আলাইহিস সালাম)-এঁর অন্তরের একটি ইচ্ছা মাত্র যা তিনি পূর্ণ করেছেন। আর (এ ইচ্ছা বা এ কৌশলকে অনর্থকও মনে করো না, তোমাদের নিকট কী সংবাদ আছে!) নিশ্চয়ই ইয়াকুব (আলাইহিস সালাম) জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন, কারণ, আমরা তাঁকে (বিশেষ) জ্ঞান দিয়ে অনুগ্রহ করেছিলাম। কিন্তু অধিকাংশ লোক (এ প্রকৃত বিষয়াদি) জানে না।
وَ لَمَّا دَخَلُوۡا عَلٰی یُوۡسُفَ اٰوٰۤی اِلَیۡہِ اَخَاہُ قَالَ اِنِّیۡۤ اَنَا اَخُوۡکَ فَلَا تَبۡتَئِسۡ بِمَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۶۹﴾
কানযুল ঈমান
৬৯. এবং যখন তারা ইয়ূসুফের নিকট গেলো, তখন সে আপন সহোদরকে নিজের পাশে স্থান দিলো, বললো, ‘বিশ্বাস করো আমিই তোমার সহোদর, সুতরাং এরা যা কিছু করছে তার জন্য দুঃখ করো না’।
ইরফানুল কুরআন
৬৯. আর যখন তারা ইউসুফ (আলাইহিস সালাম)-এঁর নিকট হাযির হলো, তখন ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) তাঁর ভাই (বিনইয়ামীন)-কে নিজের কাছে স্থান দিলেন। (তাকে শান্তভাবে) বললেন, ‘আমিই তোমার ভাই (ইউসুফ)। সুতরাং তারা যা করছে এর জন্যে চিন্তিত হয়ো না।’
فَلَمَّا جَہَّزَہُمۡ بِجَہَازِہِمۡ جَعَلَ السِّقَایَۃَ فِیۡ رَحۡلِ اَخِیۡہِ ثُمَّ اَذَّنَ مُؤَذِّنٌ اَیَّتُہَا الۡعِیۡرُ اِنَّکُمۡ لَسٰرِقُوۡنَ ﴿۷۰﴾
কানযুল ঈমান
৭০. অতঃপর যখন তাদের সামগ্রীর ব্যবস্থা করে দিলো, তখন পেয়ালা সে আপন সহোদরের হাওদার মধ্যে রেখে দিলো, অতঃপর এক ঘোষক চিৎকার করে বললো, ‘হে যাত্রীদল! নিশ্চয় তোমরা চোর’।
ইরফানুল কুরআন
৭০. অতঃপর যখন (ইউসুফ আলাইহিস সালাম) তাদেরকে তাদের সামগ্রী সাজিয়ে দিলেন তখন (রাজকীয়) পানপাত্র তাঁর ভাই (বিনইয়ামীন)-এর বস্তায় রেখে দিলেন। অতঃপর এক আহ্বানকারী চিৎকার করে উঠলো, ‘হে যাত্রীদল! (থামো! মনে হয়) তোমরা নিশ্চয়ই চোর।’
قَالُوۡا وَ اَقۡبَلُوۡا عَلَیۡہِمۡ مَّا ذَا تَفۡقِدُوۡنَ ﴿۷۱﴾
কানযুল ঈমান
৭১. তারা বললো, এবং তাদের দিক মুখ ফেরালো, ‘তোমরা কি পাচ্ছো না?’
ইরফানুল কুরআন
৭১. তারা তার অভিমুখী হয়ে বলতে লাগলো, ‘তোমাদের কী জিনিস হারিয়েছে?’
قَالُوۡا نَفۡقِدُ صُوَاعَ الۡمَلِکِ وَ لِمَنۡ جَآءَ بِہٖ حِمۡلُ بَعِیۡرٍ وَّ اَنَا بِہٖ زَعِیۡمٌ ﴿۷۲﴾
কানযুল ঈমান
৭২. (তারা) বললো, ‘বাদশাহ্র পরিমাপ পাত্র পাওয়া যাচ্ছে না এবং যে তা এনে দেবে তার জন্য এক উট বোঝাই মাল রয়েছে এবং আমি সেটার জামিন’।
ইরফানুল কুরআন
৭২. তারা (রাজ কর্মচারীরা) বললো, ‘আমাদের বাদশাহর পানপাত্র খুঁজে পাচ্ছি না। যে এটি (খুঁজে) নিয়ে আসবে, তার জন্যে (পুরস্কার) রয়েছে এক উট-বোঝাই শস্য। আর আমি এর জিম্মাদার।’
قَالُوۡا تَاللّٰہِ لَقَدۡ عَلِمۡتُمۡ مَّا جِئۡنَا لِنُفۡسِدَ فِی الۡاَرۡضِ وَ مَا کُنَّا سٰرِقِیۡنَ ﴿۷۳﴾
কানযুল ঈমান
৭৩. তারা বললো, ‘আল্লাহ্র শপথ তোমরা ভালভাবে জানো যে, আমরা যমীনে ফ্যাসাদ করার জন্য আসি নি এবং না আমরা চোর’।
ইরফানুল কুরআন
৭৩. তারা বলতে লাগলো, ‘আল্লাহ্র শপথ! নিশ্চয়ই তোমরা জানো আমরা এ দেশে (অপরাধ করে) বিপর্যয় সৃষ্টি করতে আসিনি, আর আমরা চোরও নই।’
قَالُوۡا فَمَا جَزَآؤُہٗۤ اِنۡ کُنۡتُمۡ کٰذِبِیۡنَ ﴿۷۴﴾
কানযুল ঈমান
৭৪. তারা বললো, ‘তবে এর কী শাস্তি, যদি তোমরা মিথ্যাবাদী হও?’
ইরফানুল কুরআন
৭৪. সে সকল (কর্মচারী) বলে উঠলো, ‘(তোমরাই বলো, চোর)-এর শাস্তি কী যদি তোমরা মিথ্যাবাদী হও?’
قَالُوۡا جَزَآؤُہٗ مَنۡ وُّجِدَ فِیۡ رَحۡلِہٖ فَہُوَ جَزَآؤُہٗ ؕ کَذٰلِکَ نَجۡزِی الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۷۵﴾
কানযুল ঈমান
৭৫. (তারা) বললো, ‘এর শাস্তি এই যে, যার মালপত্রের মধ্যে তা পাওয়া যাবে সে-ই পরিণামে দাস হয়ে থাকবে। আমাদের এখানে যালিমদের এই শাস্তি’।
ইরফানুল কুরআন
৭৫. তারা বললো, ‘এর শাস্তি এই যে, যার বস্তা থেকে এটি (অর্থাৎ পানপাত্রটি) পাওয়া যাবে, সে নিজেই এর প্রতিদান (অর্থাৎ তাকেই এর বিনিময় হিসেবে রেখে দেয়া হবে)। আমরা যালিমদের এভাবে শাস্তি দেই।’
فَبَدَاَ بِاَوۡعِیَتِہِمۡ قَبۡلَ وِعَآءِ اَخِیۡہِ ثُمَّ اسۡتَخۡرَجَہَا مِنۡ وِّعَآءِ اَخِیۡہِ ؕ کَذٰلِکَ کِدۡنَا لِیُوۡسُفَ ؕ مَا کَانَ لِیَاۡخُذَ اَخَاہُ فِیۡ دِیۡنِ الۡمَلِکِ اِلَّاۤ اَنۡ یَّشَآءَ اللّٰہُ ؕ نَرۡفَعُ دَرَجٰتٍ مَّنۡ نَّشَآءُ ؕ وَ فَوۡقَ کُلِّ ذِیۡ عِلۡمٍ عَلِیۡمٌ ﴿۷۶﴾
কানযুল ঈমান
৭৬. অতঃপর সে প্রথমে আপন ভাই এর থলের তল্লাশির পূর্বে তাদের থলে থেকে তল্লাশী শুরু করলো। অতঃপর সেটা তার ভাইয়ের থলে থেকে বের করে নিলো। আমি ইয়ূসুফকে এই কৌশল বলে দিয়েছি। বাদশাহী আইনের মধ্যে তার পক্ষে সম্ভব ছিলো না তার সহোদর আটক করা, কিন্তু যদি আল্লাহ্ ইচ্ছা করেন। আমি যাকে ইচ্ছা মর্যাদায় উন্নীত করি। এবং প্রত্যেক জ্ঞানবান ব্যক্তির উপর আছেন একজন অধিক জ্ঞানী।
ইরফানুল কুরআন
৭৬. সুতরাং ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) তাঁর ভাইয়ের বস্তার পরিবর্তে তাদের বস্তায় খোঁজা শুরু করলেন। পরে তিনি এটি (অর্থাৎ পানপাত্রটি) তাঁর (সহোদর) ভাই (বিনইয়ামীন)-এর বস্তা থেকে বের করলেন। এভাবে আমরা ইউসুফ (আলাইহিস সালাম)-কে কৌশল শিখিয়ে দিয়েছিলাম। আল্লাহ্র (এরূপ) ইচ্ছা ব্যতীত (মিশরের) বাদশাহর বিধান অনুযায়ী তিনি তাঁর ভাইকে (বন্দী হিসেবে) রাখতে পারতেন না। আমরা যাকে ইচ্ছা মর্যাদায় সমুন্নত করি। আর প্রত্যেক জ্ঞানবান ব্যক্তির উপর(ই) আছেন অধিকতর জ্ঞানবান।
قَالُوۡۤا اِنۡ یَّسۡرِقۡ فَقَدۡ سَرَقَ اَخٌ لَّہٗ مِنۡ قَبۡلُ ۚ فَاَسَرَّہَا یُوۡسُفُ فِیۡ نَفۡسِہٖ وَ لَمۡ یُبۡدِہَا لَہُمۡ ۚ قَالَ اَنۡتُمۡ شَرٌّ مَّکَانًا ۚ وَ اللّٰہُ اَعۡلَمُ بِمَا تَصِفُوۡنَ ﴿۷۷﴾
কানযুল ঈমান
৭৭. ভ্রাতাগণ বললো, ‘যদি সে চুরি করে তবে নিশ্চয় এর পূর্বে তার ভাইও চুরি করেছিলো’। তখন ইয়ূসুফ একথা নিজের মনে গোপন রাখলো এবং তাদের নিকট প্রকাশ করেনি, মনে মনে বললো, ‘তোমরা তো মর্যাদায় হীনতর এবং আল্লাহ্ ভালভাবে জানেন যে কথা তোমরা রচনা করছো’।
ইরফানুল কুরআন
৭৭. তারা বললো, ‘যদি সে করে থাকে (তবে তা কোনো আশ্চর্যের বিষয় নয়) তার সহোদর (ইউসুফ)ও তো পূর্বে চুরি করেছিল’। সুতরাং ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) এ বিষয়টি স্বীয় অন্তরে (সুপ্ত) রাখলেন এবং তাদের সামনে তা প্রকাশ করলেন না। (মনে মনেই) বললেন, ‘তোমাদের অবস্থা তো হীনতর। আর আল্লাহ্ সম্যক অবগত যা কিছু তোমরা বর্ণনা করছো।’
قَالُوۡا یٰۤاَیُّہَا الۡعَزِیۡزُ اِنَّ لَہٗۤ اَبًا شَیۡخًا کَبِیۡرًا فَخُذۡ اَحَدَنَا مَکَانَہٗ ۚ اِنَّا نَرٰىکَ مِنَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿۷۸﴾
কানযুল ঈমান
৭৮. (তারা) বললো, ‘হে আযীয! তার এক পিতা আছেন অতিশয় বৃদ্ধ; সুতরাং আমাদের একজনকে তার স্থলে রেখে দিন। নিশ্চয়, আমরা আপনার অনুগ্রহ প্রত্যক্ষ করছি’।
ইরফানুল কুরআন
৭৮. তারা বললো, ‘হে আযীযে মিশর! তার পিতা অতিশয় বয়স্ক বৃদ্ধ, আপনি তার স্থলে আমাদের মধ্য থেকে কাউকে আটকে রাখুন। নিশ্চয়ই আমরা আপনাকে দেখছি মহানুভব ব্যক্তিদের একজন।’
قَالَ مَعَاذَ اللّٰہِ اَنۡ نَّاۡخُذَ اِلَّا مَنۡ وَّجَدۡنَا مَتَاعَنَا عِنۡدَہٗۤ ۙ اِنَّاۤ اِذًا لَّظٰلِمُوۡنَ ﴿۷۹﴾
কানযুল ঈমান
৭৯. বললো, ‘আল্লাহ্রই আশ্রয় নিচ্ছি এ থেকে যে, আমরা যার নিকট আমাদের মাল পেয়েছি তাকে ছাড়া অন্য কাউকে রাখবো এরূপ করলে তো আমরা যালিম হয়ে যাবো’।
ইরফানুল কুরআন
৭৯. ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘আল্লাহ্র আশ্রয় চাই, আমরা যার কাছে আমাদের সামগ্রী পেয়েছি তাকে ছাড়া (অন্য) কাউকে যদি আটকে রাখি, তবে তো আমরা যালিমদের মধ্যে গণ্য হবো’।
فَلَمَّا اسۡتَیۡـَٔسُوۡا مِنۡہُ خَلَصُوۡا نَجِیًّا ؕ قَالَ کَبِیۡرُہُمۡ اَلَمۡ تَعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اَبَاکُمۡ قَدۡ اَخَذَ عَلَیۡکُمۡ مَّوۡثِقًا مِّنَ اللّٰہِ وَ مِنۡ قَبۡلُ مَا فَرَّطۡتُّمۡ فِیۡ یُوۡسُفَ ۚ فَلَنۡ اَبۡرَحَ الۡاَرۡضَ حَتّٰی یَاۡذَنَ لِیۡۤ اَبِیۡۤ اَوۡ یَحۡکُمَ اللّٰہُ لِیۡ ۚ وَ ہُوَ خَیۡرُ الۡحٰکِمِیۡنَ ﴿۸۰﴾
কানযুল ঈমান
৮০. অতঃপর যখন (তারা) তার নিকট থেকে নিরাশ হলো, তখন তারা নির্জনে গিয়ে কানাঘুষা করতে লাগলো। তাদের বড়ভাই বললো, ‘তোমরা কি জানো না যে, তোমাদের পিতা তোমাদের কাছ থেকে আল্লাহ্র নামে অঙ্গীকার নিয়েছেন এবং ইতোপূর্বে ইয়ূসুফের ব্যাপারে তোমরা কেমন ত্রুটি করেছিলে? সুতরাং আমি কিছুতেই এ স্থান ত্যাগ করবো না, যতক্ষণ না আমার পিতা আমাকে অনুমতি দেন অথবা আল্লাহ্ আমাকে নির্দেশ দেন এবং তার নির্দেশ সবচেয়ে উত্তম’।
ইরফানুল কুরআন
৮০. অতঃপর যখন তারা ইউসুফ (আলাইহিস সালাম)-এঁর নিকট হতে নিরাশ হলো, তখন নির্জনে (পরস্পর) পরামর্শ করতে লাগলো। তাদের মধ্যে বয়োজ্যেষ্ঠ (এক ভাই) বললো, ‘তোমরা কি জানো না যে, তোমাদের পিতা তোমাদের নিকট থেকে আল্লাহ্র নামে দৃঢ় অঙ্গীকার নিয়েছিলেন। আর ইতোপূর্বে তোমরা ইউসুফের ব্যাপারে যে বাড়াবাড়ি করেছিলে (তোমরা তাও জানো)। সুতরাং আমি কখনো এ ভুমি ত্যাগ করবো না, যতক্ষণ পর্যন্ত না আমাকে আমার পিতা অনুমতি দিবেন অথবা আমার জন্যে আল্লাহ্ কোনো ফায়সালা প্রদান করবেন। আর তিনি সবচেয়ে উত্তম ফায়সালাকারী।
اِرۡجِعُوۡۤا اِلٰۤی اَبِیۡکُمۡ فَقُوۡلُوۡا یٰۤاَبَانَاۤ اِنَّ ابۡنَکَ سَرَقَ ۚ وَ مَا شَہِدۡنَاۤ اِلَّا بِمَا عَلِمۡنَا وَ مَا کُنَّا لِلۡغَیۡبِ حٰفِظِیۡنَ ﴿۸۱﴾
কানযুল ঈমান
৮১. ‘তোমরা নিজ পিতার নিকট ফিরে যাও। অতঃপর আরয করো, ‘হে আমাদের পিতা! নিশ্চয় আপনার ছেলে চুরি করেছে এবং আমরা তো এতটুকু কথারই সাক্ষী হয়েছিলাম যতটুকু আমাদের জ্ঞানে ছিলো এবং আমরা অদৃশ্যের রক্ষণাবেক্ষণকারী ছিলাম না।
ইরফানুল কুরআন
৮১. তোমরা তোমাদের পিতার কাছে ফিরে যাও। অতঃপর (গিয়ে) বলো: হে আমাদের পিতা! নিশ্চয়ই আপনার পুত্র চুরি করেছে (তাই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে)। আর আমরা কেবল এ বিষয়েরই সাক্ষ্য দিয়েছিলাম, যা আমরা জানতাম। আর আমরা অদৃশ্য বিষয়ের রক্ষণাবেক্ষণকারী ছিলাম না।
وَ سۡـَٔلِ الۡقَرۡیَۃَ الَّتِیۡ کُنَّا فِیۡہَا وَ الۡعِیۡرَ الَّتِیۡۤ اَقۡبَلۡنَا فِیۡہَا ؕ وَ اِنَّا لَصٰدِقُوۡنَ ﴿۸۲﴾
কানযুল ঈমান
৮২. এবং ওই বস্তিকে জিজ্ঞাসা করে দেখুন যার মধ্যে আমরা ছিলাম এবং ওই কাফেলাকে, যার সাথে আমরা এসেছি; এবং আমরা নিঃসন্দেহে সত্যবাদী’।
ইরফানুল কুরআন
৮২. আর (যদি আপনার বিশ্বাস না হয় তবে) এ জনপদের (অধিবাসীদের) নিকট জিজ্ঞেস করুন, যেখানে আমরা ছিলাম। আর এ যাত্রীদল থেকে (জেনে নিন) যার সাথে আমরা এসেছি। আর আমরা (আমাদের বক্তব্যের ব্যাপারে) নিশ্চয়ই সত্যবাদী।’
قَالَ بَلۡ سَوَّلَتۡ لَکُمۡ اَنۡفُسُکُمۡ اَمۡرًا ؕ فَصَبۡرٌ جَمِیۡلٌ ؕ عَسَی اللّٰہُ اَنۡ یَّاۡتِـیَنِیۡ بِہِمۡ جَمِیۡعًا ؕ اِنَّہٗ ہُوَ الۡعَلِیۡمُ الۡحَکِیۡمُ ﴿۸۳﴾
কানযুল ঈমান
৮৩. বললো, ‘তোমাদের মন তোমাদের জন্য কোন বাহান তৈরী করে দিয়েছে; সুতরাং ধৈর্যই শ্রেয়, হয় তো অদূর ভবিষ্যতে আল্লাহ্ তাদের সবাইকে আমার সাথে সাক্ষাৎ করাবেন। নিশ্চয় তিনি-ই সর্বজ্ঞ ও প্রজ্ঞাময়’।
ইরফানুল কুরআন
৮৩. ইয়াকুব (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘(তা নয়) বরং তোমাদের মন্দ সত্তা এ বিষয়টি তোমাদের জন্যে আকর্ষণীয় করে দিয়েছে। এখন ধৈর্য ধারণই উত্তম। হয়তো আল্লাহ্ এদের সকলকে আমার কাছে নিয়ে আসবেন। নিশ্চয়ই তিনি সর্বজ্ঞ, অত্যন্ত প্রজ্ঞাবান।’
وَ تَوَلّٰی عَنۡہُمۡ وَ قَالَ یٰۤاَسَفٰی عَلٰی یُوۡسُفَ وَ ابۡیَضَّتۡ عَیۡنٰہُ مِنَ الۡحُزۡنِ فَہُوَ کَظِیۡمٌ ﴿۸۴﴾
কানযুল ঈমান
৮৪. এবং তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলো আর বললো, ‘হায় আফ্সোস ইয়ূসুফের বিচ্ছেদের জন্য!’ এবং তার চক্ষুদ্বয় শোকে সাদা হয়ে গেলো। সে রাগ সংবরণ করছিলো।
ইরফানুল কুরআন
৮৪. আর ইয়াকুব (আলাইহিস সালাম) তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন এবং বললেন, ‘হায় আফসোস! ইউসুফ (আলাইহিস সালামের বিচ্ছেদ)-এঁর জন্যে।’ আর তাঁর চক্ষু বিষাদে সাদা হয়ে গেল এবং তিনি ছিলেন অসহনীয় মনস্তাপে ক্লিষ্ট।
قَالُوۡا تَاللّٰہِ تَفۡتَؤُا تَذۡکُرُ یُوۡسُفَ حَتّٰی تَکُوۡنَ حَرَضًا اَوۡ تَکُوۡنَ مِنَ الۡہٰلِکِیۡنَ ﴿۸۵﴾
কানযুল ঈমান
৮৫. বললো, ‘আল্লাহ্র শপথ! আপনি সব সময় ইয়ূসুফকে স্মরণ করতে থাকবেন যতক্ষণ না আপনি কবরের পার্শ্বে গিয়ে লাগবেন, অথবা মৃত্যুবরণ করবেন’।
ইরফানুল কুরআন
৮৫. তারা বললো, ‘আল্লাহ্র কসম! আপনি সর্বদা ইউসুফকে(ই) স্মরণ করতে থাকবেন, যতক্ষণ না আপনি মুমূর্ষ হবেন অথবা মৃত্যুবরণ করবেন।’
قَالَ اِنَّمَاۤ اَشۡکُوۡا بَثِّیۡ وَ حُزۡنِیۡۤ اِلَی اللّٰہِ وَ اَعۡلَمُ مِنَ اللّٰہِ مَا لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۸۶﴾
কানযুল ঈমান
৮৬. বললো, ‘আমি তো আমার বেদনা ও দুখের ফরিয়াদ আল্লাহ্রই নিকট করছি এবং আল্লাহ্র ওই সব মহিমা আমার জানা আছে, যেগুলো তোমরা জানো না।
ইরফানুল কুরআন
৮৬. তিনি বললেন, ‘আমি তো কেবল আল্লাহ্র সমীপে আমার পেরেশানী ও দুশ্চিন্তার ফরিয়াদ করছি। আর আমি আল্লাহ্র নিকট থেকে এমন কিছু জানি, যা তোমরা জানো না।
یٰبَنِیَّ اذۡہَبُوۡا فَتَحَسَّسُوۡا مِنۡ یُّوۡسُفَ وَ اَخِیۡہِ وَ لَا تَایۡـَٔسُوۡا مِنۡ رَّوۡحِ اللّٰہِ ؕ اِنَّہٗ لَا یَایۡـَٔسُ مِنۡ رَّوۡحِ اللّٰہِ اِلَّا الۡقَوۡمُ الۡکٰفِرُوۡنَ ﴿۸۷﴾
কানযুল ঈমান
৮৭. হে আমার পুত্ররা! যাও ইয়ূসুফ ও তার সহোদরের অনুসন্ধান করো এবং আল্লাহ্র দয়া থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ্র দয়া থেকে নিরাশ হয় না- কিন্তু কাফিরগণ’।
ইরফানুল কুরআন
৮৭. হে আমার পুত্রগণ! তোমরা যাও (যে কোনোও স্থান থেকে) ইউসুফ এবং তাঁর সহোদরের খবর নিয়ে এসো। আর আল্লাহ্র রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ্র রহমত থেকে তারাই নিরাশ হয় যারা কাফের।’
فَلَمَّا دَخَلُوۡا عَلَیۡہِ قَالُوۡا یٰۤاَیُّہَا الۡعَزِیۡزُ مَسَّنَا وَ اَہۡلَنَا الضُّرُّ وَ جِئۡنَا بِبِضَاعَۃٍ مُّزۡجٰىۃٍ فَاَوۡفِ لَنَا الۡکَیۡلَ وَ تَصَدَّقۡ عَلَیۡنَا ؕ اِنَّ اللّٰہَ یَجۡزِی الۡمُتَصَدِّقِیۡنَ ﴿۸۸﴾
কানযুল ঈমান
৮৮. অতঃপর যখন তারা ইয়ূসুফের নিকট পৌছালে, তখন বললো, ‘হে আযীয! আমরা ও আমাদের পরিবারবর্গ বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েছি এবং আমরা তুচ্ছ পণ্যমূল্য নিয়ে এসেছি; সুতরাং আপনি আমাদের রসদ পূর্ণমাত্রায় দিন এবং আমাদেরকে দান করুন! নিশ্চয় আল্লাহ্ দাতাদেরকে পুরস্কৃত করেন’।
ইরফানুল কুরআন
৮৮. অতঃপর যখন তারা (দ্বিতীয়বার) ইউসুফ (আলাইহিস সালাম)-এঁর নিকট হাযির হলো তখন বলতে লাগলো, ‘হে আযীযে মিশর! আমাদের উপর, আমাদের পরিবারের উপর বিপদ নেমে এসেছে। (আমরা কঠিন দুর্ভিক্ষে পতিত,) আর আমরা (এ) সামান্য টাকা-কড়ি নিয়ে এসেছি, কাজেই (এর বিনিময়ে) আমাদেরকে (শস্যের) পুরোপুরি পরিমাণ দান করুন। আর (এ ছাড়া) আমাদের উপর (কিছু) সাদকাহ্(ও) করুন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সাদকাহ্কারীদের প্রতিদান প্রদান করেন।’
قَالَ ہَلۡ عَلِمۡتُمۡ مَّا فَعَلۡتُمۡ بِیُوۡسُفَ وَ اَخِیۡہِ اِذۡ اَنۡتُمۡ جٰہِلُوۡنَ ﴿۸۹﴾
কানযুল ঈমান
৮৯. বললো ‘কিছু খবর আছে কি, তোমরা ইয়ূসুফ ও তার সহোদর প্রতি কিরূপ আচরণ করেছিলে, যখন তোমরা অজ্ঞ ছিলে?’
ইরফানুল কুরআন
৮৯. ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘তোমরা কি জানো যে, তোমরা ইউসুফ এবং তাঁর ভাইয়ের সাথে কি (আচরণ) করেছিলে? তোমরা কি (সে সময়) অজ্ঞ ছিলে?’
قَالُوۡۤا ءَاِنَّکَ لَاَنۡتَ یُوۡسُفُ ؕ قَالَ اَنَا یُوۡسُفُ وَ ہٰذَاۤ اَخِیۡ ۫ قَدۡ مَنَّ اللّٰہُ عَلَیۡنَا ؕ اِنَّہٗ مَنۡ یَّـتَّقِ وَ یَصۡبِرۡ فَاِنَّ اللّٰہَ لَا یُضِیۡعُ اَجۡرَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿۹۰﴾
কানযুল ঈমান
৯০. তারা বললো, ‘তবে কি সত্যি সত্যি আপনি-ই ইয়ূসুফ?’ বললো, ‘আমি ইয়ূসুফ এবং এই আমার সহোদর; নিশ্চয় আল্লাহ্ আমাদের উপর অনুগ্রহ করেছেন। নিশ্চয় যে ব্যক্তি পরহেযগারী ও ধৈর্যধারণ করে, তবে আল্লাহ্ সৎকর্মপরায়ণদের শ্রমফল বিনষ্ট করেন না’।
ইরফানুল কুরআন
৯০. তারা বললো, ‘আসলে তুমিই ইউসুফ?’ তিনি বললেন, ‘(হাঁ) আমি ইউসুফ এবং এ আমার ভাই। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ আমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। নিশ্চয়ই যে আল্লাহকে ভয় করে এবং ধৈর্য ধারণ করে, আল্লাহ্ অবশ্যই নেক্কারদের প্রতিদান নষ্ট করেন না। ’ইউসুফকে(ই) স্মরণ করতে থাকবেন, যতক্ষণ না আপনি মুমূর্ষ হবেন অথবা মৃত্যুবরণ করবেন।’
قَالُوۡا تَاللّٰہِ لَقَدۡ اٰثَرَکَ اللّٰہُ عَلَیۡنَا وَ اِنۡ کُنَّا لَخٰطِئِیۡنَ ﴿۹۱﴾
কানযুল ঈমান
৯১. তারা বললো, ‘আল্লাহ্র শপথ! নিশ্চয় আল্লাহ্ আপনাকে আমাদের উপর প্রাধান্য দিয়েছেন এবং নিশ্চয় আমরা অপরাধী ছিলাম’,
ইরফানুল কুরআন
৯১. তারা বলে উঠলো, ‘আল্লাহ্র কসম! নিশ্চয়ই আল্লাহ্ আপনাকে আমাদের উপর মর্যাদাবান করেছেন। আর নিশ্চয়ই আমরাই অপরাধী ছিলাম।’
قَالَ لَا تَثۡرِیۡبَ عَلَیۡکُمُ الۡیَوۡمَ ؕ یَغۡفِرُ اللّٰہُ لَکُمۡ ۫ وَ ہُوَ اَرۡحَمُ الرّٰحِمِیۡنَ ﴿۹۲﴾
কানযুল ঈমান
৯২. বললো, ‘আজ তোমাদেরকে কোনরূপ তিরস্কার করা হবে না। আল্লাহ্ তোমাদেরকে ক্ষমা করুন এবং তিনি সমস্ত দয়ালুর চেয়ে অধিক দয়ালু।
ইরফানুল কুরআন
৯২. ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘আজকের দিনে তোমাদের উপর কোনো অভিযোগ (এবং শাস্তি) নেই। আল্লাহ্ তোমাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন। আর তিনি সকল দয়ালুর চেয়ে শ্রেষ্ঠ দয়ালু।
اِذۡہَبُوۡا بِقَمِیۡصِیۡ ہٰذَا فَاَلۡقُوۡہُ عَلٰی وَجۡہِ اَبِیۡ یَاۡتِ بَصِیۡرًا ۚ وَ اۡتُوۡنِیۡ بِاَہۡلِکُمۡ اَجۡمَعِیۡنَ ﴿۹۳﴾
কানযুল ঈমান
৯৩. আমার এই জামা নিয়ে যাও। এটা আমার পিতার মুখমণ্ডল এর উপর রেখে দিও, তিনি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবেন। আর তোমাদের পরিবারের সকলকে আমার নিকট নিয়ে এসো’।
ইরফানুল কুরআন
৯৩. আমার এ জামাটি নিয়ে যাও, অতঃপর এটি আমার পিতার মূখমন্ডলের উপর রেখে দাও, তিনি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবেন। (এরপর) তোমাদের পরিবারের সকলকে আমার নিকট নিয়ে এসো।’
وَ لَمَّا فَصَلَتِ الۡعِیۡرُ قَالَ اَبُوۡہُمۡ اِنِّیۡ لَاَجِدُ رِیۡحَ یُوۡسُفَ لَوۡ لَاۤ اَنۡ تُفَنِّدُوۡنِ ﴿۹۴﴾
কানযুল ঈমান
৯৪. যখন কাফেলা মিশর থেকে বের হয়ে পড়লো, এখানে তাদের পিতা বললো, ‘নিশ্চয় আমি ইয়ূসুফের খুশবু পাচ্ছি, যদি আমাকে তোমরা এ কথা না বলো যে, আমার স্বাভাবিক অবস্থা লোপ পেয়েছে’।
ইরফানুল কুরআন
৯৪. আর যখন যাত্রীদল (মিশর থেকে) রওয়ানা হলো, তাদের পিতা (ইয়াকুব আলাইহিস সালাম কেনানে বসেই) বলে দিলেন, ‘নিশ্চয়ই আমি ইউসুফের সুগন্ধি পাচ্ছি, যদি তোমরা আমাকে বার্ধক্যের কারণে বিভ্রান্ত মনে না করো’।
قَالُوۡا تَاللّٰہِ اِنَّکَ لَفِیۡ ضَلٰلِکَ الۡقَدِیۡمِ ﴿ٙ۹۵﴾
কানযুল ঈমান
৯৫. পুত্রগণ বললো, ‘আল্লাহ্র শপথ! আপনি আপনার ওই পুরানো পুত্রস্নেহের মধ্যে বিভোর রয়েছেন’।
ইরফানুল কুরআন
৯৫. তারা বললো, ‘আল্লাহ্র কসম! অবশ্যই আপনি আপনার (সেই) পুরনো ভালোবাসার আত্ম-বিস্মৃতিতে রয়েছেন।’
فَلَمَّاۤ اَنۡ جَآءَ الۡبَشِیۡرُ اَلۡقٰىہُ عَلٰی وَجۡہِہٖ فَارۡتَدَّ بَصِیۡرًا ۚ قَالَ اَلَمۡ اَقُلۡ لَّکُمۡ ۚۙ اِنِّیۡۤ اَعۡلَمُ مِنَ اللّٰہِ مَا لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۹۶﴾
কানযুল ঈমান
৯৬. অতঃপর যখন সুসংবাদদাতা উপস্থিত হলো তখন সে জামাটা ইয়া’কুবের মুখের উপর রাখলো। তখনই তার দৃষ্টিশক্তি ফিরে এলো। বললো, ‘আমি কি বলতাম না যে, আল্লাহ্র সে সব মহিমা আমার জানা আছে, যা তোমরা জানো না?’
ইরফানুল কুরআন
৯৬. অতঃপর যখন সুসংবাদদাতা এসে পৌঁছলো, তখন সে এ জামাটি ইয়াকুব (আলাইহিস সালাম)-এঁর মূখমন্ডলের উপর রাখলো, ততক্ষণাৎ তাঁর দৃষ্টিশক্তি ফিরে এলো। ইয়াকুব (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘আমি কি তোমাদেরকে বলিনি যে, নিশ্চয়ই আমি আল্লাহ্র পক্ষ থেকে এমন কিছু জানি, যা তোমরা জানো না?’
قَالُوۡا یٰۤاَبَانَا اسۡتَغۡفِرۡ لَنَا ذُنُوۡبَنَاۤ اِنَّا کُنَّا خٰطِئِیۡنَ ﴿۹۷﴾
কানযুল ঈমান
৯৭. (তারা) বললো, ‘হে আমাদের পিতা! আমাদের পাপরাশির জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করুন! নিশ্চয় আমরা অপরাধী’।
ইরফানুল কুরআন
৯৭. তারা বললো, ‘হে আমাদের পিতা! (আল্লাহ্র নিকট) আমাদের গোনাহের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। নিশ্চয়ই আমরাই অপরাধী।’
قَالَ سَوۡفَ اَسۡتَغۡفِرُ لَکُمۡ رَبِّیۡ ؕ اِنَّہٗ ہُوَ الۡغَفُوۡرُ الرَّحِیۡمُ ﴿۹۸﴾
কানযুল ঈমান
৯৮. বললো, ‘শিগগির আমি তোমাদের ক্ষমা আমার রবের নিকট চাইবো (নিশ্চয়) তিনিই ক্ষমাশীল, দয়ালু’।
ইরফানুল কুরআন
৯৮. ইয়াকুব (আলাইহিস সালাম) বললেন, ‘আমি অচিরেই তোমাদের জন্যে আমার প্রতিপালকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করবো। নিশ্চয়ই তিনিই মহাক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু।’
فَلَمَّا دَخَلُوۡا عَلٰی یُوۡسُفَ اٰوٰۤی اِلَیۡہِ اَبَوَیۡہِ وَ قَالَ ادۡخُلُوۡا مِصۡرَ اِنۡ شَآءَ اللّٰہُ اٰمِنِیۡنَ ﴿ؕ۹۹﴾
কানযুল ঈমান
৯৯. অতঃপর যখন তারা সবাই ইয়ূসুফের নিকট পৌছালো, তখন সে আপন মাতা ও পিতাকে নিজের পাশে স্থান দিলো এবং বললো, ‘মিশরে প্রবেশ করুন, আল্লাহ্ যদি চান, নিরাপদ অবস্থায়’।
ইরফানুল কুরআন
৯৯. অতঃপর (পরিবারের সকল সদস্য) যখন ইউসুফ (আলাইহিস সালাম)-এঁর নিকট আগমন করলো, (তখন) ইউসুফ (আলাইহিস সালাম শহর থেকে বাইরে এসে হাজার হাজার সওয়ারী, সৈনিক এবং জনসাধারণ সহকারে রাজকীয় শোভাযাত্রার মাধ্যমে তাদেরকে অভ্যর্থনা জানালেন এবং) তাঁর পিতা-মাতাকে সম্মানার্থে স্বীয় নিকটবর্তী আসনে বসালেন (অথবা তাদেরকে আলিংগন করলেন) এবং (স্বাগত জানিয়ে) বললেন, ‘আপনারা মিশরে প্রবেশ করুন, যদি আল্লাহ্ ইচ্ছা করেন (তবে) নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দের সাথে (এখানে অবস্থান করুন)’।
وَ رَفَعَ اَبَوَیۡہِ عَلَی الۡعَرۡشِ وَ خَرُّوۡا لَہٗ سُجَّدًا ۚ وَ قَالَ یٰۤاَبَتِ ہٰذَا تَاۡوِیۡلُ رُءۡیَایَ مِنۡ قَبۡلُ ۫ قَدۡ جَعَلَہَا رَبِّیۡ حَقًّا ؕ وَ قَدۡ اَحۡسَنَ بِیۡۤ اِذۡ اَخۡرَجَنِیۡ مِنَ السِّجۡنِ وَ جَآءَ بِکُمۡ مِّنَ الۡبَدۡوِ مِنۡۢ بَعۡدِ اَنۡ نَّزَغَ الشَّیۡطٰنُ بَیۡنِیۡ وَ بَیۡنَ اِخۡوَتِیۡ ؕ اِنَّ رَبِّیۡ لَطِیۡفٌ لِّمَا یَشَآءُ ؕ اِنَّہٗ ہُوَ الۡعَلِیۡمُ الۡحَکِیۡمُ ﴿۱۰۰﴾
কানযুল ঈমান
১০০. এবং আপন পিতা ও মাতাকে তার সিংহাসনে বসালো এবং সবাই তার জন্য সাজদায় পড়লো; আর ইয়ূসুফ বললো, ‘হে আমার পিতা! এটাই আমার পূর্বেকার স্বপ্নের ব্যাখ্যা; নিশ্চয় আমার রব সেটা সত্যে পরিণত করেছেন এবং নিশ্চয় তিনি আমার উপর অনুগ্রহ করেছেন যে, আমাকে কারাগার থেকে মুক্ত করেছেন এবং আপনাদের সবাইকে গ্রামাঞ্চল থেকে নিয়ে এসেছেন এরপর যে, শয়তান আমার মধ্যে এবং আমার ভাইদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব সম্পর্ক নষ্ট করে দিয়েছিলো। নিশ্চয় আমার রব যে বিষয় চান তা সহজ করে দেন। নিশ্চয় তিনিই সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
ইরফানুল কুরআন
১০০. আর ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) তাঁর পিতা-মাতাকে উচ্চাসনে বসালেন এবং তারা (সকলে) ইউসুফ (আলাইহিস সালাম)-এঁর সামনে সেজদায় লুটিয়ে পড়লো। আর ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) বললেন
ذٰلِکَ مِنۡ اَنۡۢبَآءِ الۡغَیۡبِ نُوۡحِیۡہِ اِلَیۡکَ ۚ وَ مَا کُنۡتَ لَدَیۡہِمۡ اِذۡ اَجۡمَعُوۡۤا اَمۡرَہُمۡ وَ ہُمۡ یَمۡکُرُوۡنَ ﴿۱۰۲﴾
কানযুল ঈমান
১০২. এ কিছু অদৃশ্যের সংবাদ, যা আপনার প্রতি ওহী করেছি এবং আপনি তাদের নিকট ছিলেন না যখন তারা নিজেদের কাজের সিদ্ধান্ত পাকাপাকি করেছিলো এবং তারা চক্রান্ত করছিলো।
ইরফানুল কুরআন
১০২. (হে সম্মানিত হাবীব!) এ (ঘটনা) অদৃশ্যের সংবাদ, যা আমরা আপনার কাছে প্রত্যাদেশ করেছি। আর আপনি তাদের নিকট ছিলেন না, যখন তারা (ইউসুফের ভাইয়েরা) নিজেদের ষড়যন্ত্রকালে মতৈক্যে পৌঁছেছিল, আর তারা চক্রান্ত ও প্রতারণা করছিল।
وَ مَاۤ اَکۡثَرُ النَّاسِ وَ لَوۡ حَرَصۡتَ بِمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۰۳﴾
কানযুল ঈমান
১০৩. এবং অধিকাংশ লোক, আপনি যতোই চান না কেন ঈমান আনবে না।
ইরফানুল কুরআন
১০৩. আর অধিকাংশ লোক ঈমান আনয়ন করবে না, যদিও আপনি (প্রবলভাবে) আকাঙ্ক্ষা করেন।
وَ مَا تَسۡـَٔلُہُمۡ عَلَیۡہِ مِنۡ اَجۡرٍ ؕ اِنۡ ہُوَ اِلَّا ذِکۡرٌ لِّلۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۱۰۴﴾
কানযুল ঈমান
১০৪. এবং আপনি এর বিনিময়ে তাদের নিকট থেকে কোন পারিশ্রমিক চাচ্ছেন না। এ তো নয়, কিন্তু সমগ্র বিশ্বের প্রতি উপদেশ।
ইরফানুল কুরআন
১০৪. আর আপনি তাদেরকে এ (দাওয়াত ও রিসালাতের প্রচার)-এর কোনো প্রতিদান কামনা করছেন না। এ কুরআন সমস্ত জগতবাসীদের জন্যে কেবলই উপদেশ।
وَ کَاَیِّنۡ مِّنۡ اٰیَۃٍ فِی السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ یَمُرُّوۡنَ عَلَیۡہَا وَ ہُمۡ عَنۡہَا مُعۡرِضُوۡنَ ﴿۱۰۵﴾
কানযুল ঈমান
১০৫. এবং কতো নির্দশনই রয়েছে আসমানসমূহ এবং যমীনের মধ্যে যে, অধিকাংশ লোক এগুলোর উপর দিয়ে অতিক্রম করে অথচ এগুলো হতে উদাসীন থেকে যায়।
ইরফানুল কুরআন
১০৫. আর আকাশমন্ডলী এবং পৃথিবীতে কতোই না নিদর্শনাবলী রয়েছে, যার পাশ দিয়ে এসব লোক অতিক্রম করছে অথচ তারা এগুলোর প্রতি উদাসীন।
وَ مَا یُؤۡمِنُ اَکۡثَرُہُمۡ بِاللّٰہِ اِلَّا وَ ہُمۡ مُّشۡرِکُوۡنَ ﴿۱۰۶﴾
কানযুল ঈমান
১০৬. এবং তাদের মধ্যে অধিকাংশ লোক তারাই, যারা আল্লাহ্কে বিশ্বাস করে না, কিন্তু শিরক করে।
ইরফানুল কুরআন
১০৬. আর তাদের মধ্য থেকে অধিকাংশ লোক আল্লাহ্তে বিশ্বাস স্থাপন করে না, বরং তারা মুশরিক।
اَفَاَمِنُوۡۤا اَنۡ تَاۡتِیَہُمۡ غَاشِیَۃٌ مِّنۡ عَذَابِ اللّٰہِ اَوۡ تَاۡتِیَہُمُ السَّاعَۃُ بَغۡتَۃً وَّ ہُمۡ لَا یَشۡعُرُوۡنَ ﴿۱۰۷﴾
কানযুল ঈমান
১০৭. তবে কি তারা এ থেকে নির্ভীক হয়ে বসে আছে যে, আল্লাহ্র শাস্তি এসে তাদেরকে গ্রাস করে বসবে অথবা ক্বিয়ামত তাদের উপর আকস্মিকভাবে এসে পড়বে, অথচ তাদের খবরই থাকবে না।
ইরফানুল কুরআন
১০৭. তারা কি এ আশংকা থেকে নিরাপদ হয়ে গিয়েছে যে, তাদের উপর আল্লাহ্র শাস্তির প্রচ্ছন্ন বিপদ আগমন করবে; অথবা তাদের উপর অকস্মাৎ কিয়ামত সংঘটিত হবে, আর তারা বুঝতেও পারবে না?
قُلۡ ہٰذِہٖ سَبِیۡلِیۡۤ اَدۡعُوۡۤا اِلَی اللّٰہِ ۟ؔ عَلٰی بَصِیۡرَۃٍ اَنَا وَ مَنِ اتَّبَعَنِیۡ ؕ وَ سُبۡحٰنَ اللّٰہِ وَ مَاۤ اَنَا مِنَ الۡمُشۡرِکِیۡنَ ﴿۱۰۸﴾
কানযুল ঈমান
১০৮. আপনি বলুন, ‘এটা আমার পথ, আমি আল্লাহ্র প্রতি আহ্বান করি। আমি অন্তর চক্ষু সম্পন্ন- এবং যারা আমার পদাঙ্ক অনুসরণ করে, আর আল্লাহ্র জন্যই পবিত্রতা, এবং আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই।
ইরফানুল কুরআন
১০৮. (হে সম্মানিত হাবীব!) বলে দিন, ‘এটিই আমার পথ। আমি আল্লাহ্র দিকে আহ্বান করছি; আমি এবং আমার আনুসারীগণ পূর্ণ অন্তর্দৃষ্টির উপর (অটল) রয়েছি। আল্লাহ্ পূতঃপবিত্র আর আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই।’
وَ مَاۤ اَرۡسَلۡنَا مِنۡ قَبۡلِکَ اِلَّا رِجَالًا نُّوۡحِیۡۤ اِلَیۡہِمۡ مِّنۡ اَہۡلِ الۡقُرٰی ؕ اَفَلَمۡ یَسِیۡرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ فَیَنۡظُرُوۡا کَیۡفَ کَانَ عَاقِبَۃُ الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِہِمۡ ؕ وَ لَدَارُ الۡاٰخِرَۃِ خَیۡرٌ لِّلَّذِیۡنَ اتَّقَوۡا ؕ اَفَلَا تَعۡقِلُوۡنَ ﴿۱۰۹﴾
কানযুল ঈমান
১০৯. আর আমি আপনার পূর্বে যতো রসূল প্রেরণ করেছি সবই পুরুষ ছিলো যাদেরকে আমি ওহী করতাম এবং সবাই শহরের অধিবাসী ছিলো। তবে কি এসব লোক যমীনে ভ্রমণ করে না? তবে তো দেখতো তাদের পূর্ববর্তীদের কী পরিণাম হয়েছে। এবং নিশ্চয় পরকালের ঘর পরহেয্গারদের জন্য শ্রেয়। তবে কি তোমাদের বিবেক নাই?
ইরফানুল কুরআন
১০৯. আর আমরা আপনার পূর্বেও (বিভিন্ন) জনপদের অধিবাসীদের মধ্য থেকে পুরুষদেরকেই প্রেরণ করেছিলাম, যাদের কাছে আমরা ওহী প্রেরণ করতাম। তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করে না, অতঃপর (নিজেরা) দেখে না যে, তাদের পূর্ববর্তী লোকদের পরিণতি কী হয়েছিল? আর নিশ্চয়ই পরকালের আবাস খোদাভীতি অবলম্বনকারীদের জন্যে উত্তম। তোমরা কি বুঝো না?
حَتّٰۤی اِذَا اسۡتَیۡـَٔسَ الرُّسُلُ وَ ظَنُّوۡۤا اَنَّہُمۡ قَدۡ کُذِبُوۡا جَآءَہُمۡ نَصۡرُنَا ۙ فَنُجِّیَ مَنۡ نَّشَآءُ ؕ وَلَا یُرَدُّ بَاۡسُنَا عَنِ الۡقَوۡمِ الۡمُجۡرِمِیۡنَ ﴿۱۱۰﴾
কানযুল ঈমান
১১০. অবশেষে, যখন রসূলগণের নিকট প্রকাশ্য কোন উপায় উপকরণের আশা রইলো না এবং লোকেরা ভাবলো যে, রসূলগণ তাদেরকে ভুল বলেছিলো, তখন আমার সাহায্য এলো। অতঃপর আমি যাকে চেয়েছি তাকে উদ্ধার করা হয়েছে। এবং আমার শাস্তি অপরাধী সম্প্রদায় থেকে রদ্দ করা যায় না।
ইরফানুল কুরআন
১১০. অবশেষে যখন রাসূলগণ (স্বীয় নাফরমান সম্প্রদায় থেকে) নিরাশ হয়ে গেলেন এবং সে অস্বীকারকারী সম্প্রদায় ধারণা করে নিল যে, তাদেরকে মিথ্যা আশ্বাস দেয়া হয়েছে (অর্থাৎ তাদের উপর কোনো শাস্তি নেমে আসবে না) তখন রাসূূলগণের নিকট আমাদের সাহায্য এসে পৌঁছলো। অতঃপর আমরা যাকে ইচ্ছা (তাকে) মুক্তি দিয়েছি। আর আমাদের শাস্তি অপরাধী সম্প্রদায় থেকে প্রতিহত হয় না।
لَقَدۡ کَانَ فِیۡ قَصَصِہِمۡ عِبۡرَۃٌ لِّاُولِی الۡاَلۡبَابِ ؕ مَا کَانَ حَدِیۡثًا یُّفۡتَرٰی وَ لٰکِنۡ تَصۡدِیۡقَ الَّذِیۡ بَیۡنَ یَدَیۡہِ وَ تَفۡصِیۡلَ کُلِّ شَیۡءٍ وَّ ہُدًی وَّ رَحۡمَۃً لِّقَوۡمٍ یُّؤۡمِنُوۡنَ ﴿۱۱۱﴾
কানযুল ঈমান
১১১. নিশ্চয়, তাদের খবরাদি দ্বারা বিবেকবানদের চক্ষু খুলে যায়। এটা কোন বানোয়াট কথা নয়; কিন্তু নিজের পূর্ববর্তী বানীগুলোর সত্যায়ন এবং প্রত্যেক বস্তু বিশদ বিবরণ আর মুসলমানদের জন্য হিদায়ত ও রহমত।
ইরফানুল কুরআন
১১১. নিশ্চয়ই তাদের ঘটনাবলীতে বোধশক্তিসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্যে রয়েছে উপদেশ। এ (কুরআন) মনগড়া বাক্য নয়, বরং (এ তো) ইতোপূর্বে (অবতীর্ণ আসমানী কিতাব)-এর সত্যায়ন, আর বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্যে সকল কিছুর বিস্তারিত বর্ণনা, হেদায়াত এবং রহমত।